টিপাইমুখ বাঁধ ও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট-৭ (শেষ পর্ব)

সচল জাহিদ এর ছবি
লিখেছেন সচল জাহিদ (তারিখ: শুক্র, ০৭/০৮/২০০৯ - ৪:২৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


প্রিয় পাঠক, টিপাইমুখ প্রকল্প নিয়ে লেখার যে কাজটি শুরু করেছিলাম তা আজকে শেষ করছি। আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করছি এই পোষ্টে আপনারা আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য দিন যার উপর ভিত্তি করে আমরা এই ইস্যুটিকে নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হব। এই পর্বে আমি এই মুহুর্তে আমাদের কি করনীয় তার উপর মূলত আলোক পাত করেছি। আমি বিশ্বাস করি সচলের অগনিত পাঠক আমার এই প্রস্তাবগুলিকে আরো সমৃদ্ধ করবেন।তার উপর ভিত্তি করেই আমি সব পর্বগুলিকে একত্র করে একটি সমন্বিত লেখা বা ই-বুকের প্রাথমিক কাজ শুরু করব যা আন্তর্জালে মাধ্যমে ছড়িয়ে দেব দেশের মানুষদের কাছে। আমার এই সিরিজ লেখার জন্য সচলের অগনিত পাঠক, লেখক, সদস্যদের কাছ থেকে সাহায্য, সহযোগীতা, উৎসাহ, গঠনমূলক সমালোচনা, পরামর্শ পেয়েছি যা আমার লেখাকে সমৃদ্ধ করেছে। সেই জন্য আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ।

টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে সিরিজের গত ছয়টি পর্বে ভূমিকা ও কিছু সাধারন আলোচনার পরে আমি মূলতঃ বাংলাদেশে এই বাঁধের সম্ভাব্য প্রভাবের উপর আলোকপাত করেছি। সেক্ষেত্রে সাহায্য নিয়েছি কিছু প্রকাশিত গবেষণার, বাংলাদেশের কয়েকজন বরেণ্য বিশেষজ্ঞের মতামত আর সেই সাথে নিজের কিছু প্রকৌশলগত জ্ঞাণ।এই আলোচনা থেকে এটি নিঃসন্দেহে প্রতীয়মান হয় যে এই বাঁধ ও প্রস্তাবিত ফুলেরতল ব্যারেজের ফলে বাংলাদেশে অদূর ভবিষ্যতে এক ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সেই আলোকে এই মূহুর্তে জাতি হিসেবে আমাদের কি করনীয় সেটিই সবচাইতে গুরুত্ত্বপূর্ণ। আমি এই পর্বে চেষ্টা করব সেই বিষয়ে কিছু দিক নির্দেশনা দিতে।

কার কার ভূমিকা গুরুত্ত্বপূর্ণ?

এটি একটি জাতীয় সমস্যা যার সাথে জড়িয়ে আছে আন্তর্জাতিক কিছু ইস্যু। আর যেহেতু এটি দুই দেশের মধ্যকার সমস্যা তাই আমাদেরকে খুবই সাবধানতা ও দক্ষতা আর সেই সাথে কুটনৈতিক ভাবে এগোতে হবে। আমি বিশ্বাস করি যে এই ইস্যুটি নিয়ে আমাদের মধ্যে আবেগ কাজ করবে কিন্তু সমস্যাটি সমাধান করতে আবেগের চেয়ে তথ্য ও যুক্তির প্রয়োগ বেশী প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। এক্ষেত্রে যাদের একসাথে কাজ করতে হবে তার হলোঃ

  • সরকার
  • বিশেষজ্ঞ
  • রাজনীতিবিদ
  • গণ ও প্রচার মাধ্যম
  • প্রভাবিত এলাকার বিভিন্ন পেশার জনগণ
  • দেশের সাধারণ জনগণ

প্রথমত এই বিষয়টি যেহেতু দু'টি দেশের মধ্যে বিদ্যমান তাই যেকোন যোগাযোগ রক্ষার কাজটি সরকারের কূটনৈতিক পর্যায় থেকে হতে হবে। কিন্তু যেহেতু বিষয়টা পুরোপুরি কৌশলগত তাই কুটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা কি হবে সেটি ঠিক করে দেবে আমাদের বিশেষজ্ঞরা। সরকার এই কাজটি সঠিকমত করছে কিনা তার গঠনমূলক তদারকি করবে রাজনীতিবিদেরা । জনগণকে এই বিষয়ে সাম্যক জ্ঞান দিয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে গণ আর প্রচার মাধ্যমগুলো আর সচেতন জনগণ দেশের প্রয়োজনে যেকোন প্রকার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করবে।

সরকারের সাম্প্রতিক ভূমিকা ও কিছু সমালোচনাঃ

এই ইস্যুটি নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা আর গবেষণার কোন বিকল্প নেই আর এই দায়িত্ত্ব একমাত্র নিয়ে পারে সরকার। ইতিমধ্যে আমরা দেখেছি যে সংসদীয় কমিটি ভারত সফর করেছেন যার মধ্যে সরকারের সাংসদ, আমলা, বিশেষজ্ঞরাও ছিলেন। তাদের সাথে বিশদ কি আলোচনা হয়েছে সেটি আমাদের মত সাধারণ মানুষদের জানার অধিকার আছে নিশয়ই। আমরা যতটুকু সংবাদপত্রের মাধ্যমে জেনেছি তার কিছুটা নিচে বিশ্লেষণ করছিঃ

সংসদীয় কমিটির সম্প্রতি ভারত সফরের সময় পানিসম্পদ মন্ত্রনালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক এর এক বিবৃতি পড়ে হতাশ হলাম,


"টিপাইমুখ বাঁধটি যদি সেচ প্রকল্প হয় তাহলে তা অবশ্যই ক্ষতিকর হবে, এর বিরোধিতা জাতীয়ভাবে করা উচিৎ। কিন্তু বিদ্যুৎ প্রকল্প হলে আরো সমীক্ষা চালিয়ে পর্যালোচনা করে দেখতে হবে।” (প্রথম আলোঃ ৩০ জুলাই)"

এই মন্তব্যটিকে বিশ্লেষণ করলে কি এরকম দাঁড়ায় যে সেচ প্রকল্প না হলে সেটি বাংলাদেশের জন্য কম ক্ষতিকর হবে? আমি আমি পঞ্চম ও ষষ্ঠ পর্বে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি ফুলেরতল ব্যারেজ ছাড়াও এই প্রকল্প বাংলাদেশের জন্য কি ভয়াবহ প্রভাব বয়ে আনতে পারে।

পরবর্তীতে এই সফর শেষে ফিরে এসে তিনি আবার বিবৃতি দিলেন,

"We are convinced by India's assurance that they won't do anything that harms the interests of Bangladesh," (The Daily Star, August 5)

অর্থাৎ আমাদের সংসদীয় টিম এই মর্মে নিশ্চিত যে ভারত আমাদের বাংলাদেশের জন্য খারাপ হবে এমন কিছু করবেনা। সংসদীয় টিমের মাননীয় সদস্যের কাছে একজন সাধারন জনগণ হিসেবে আমি যদি প্রশ্ন করিঃ

১) আমাকে বুঝিয়ে বলুন এখানে " Harm" বা "ক্ষতি" বলতে আপনি আসলে কি বুঝিয়েছেন ?

২) আর এই কথা যদি সত্যি হয় যে ভারত আমাদের জন্য ক্ষতিকর কিছুই করবেনা তাহলে আমি যদি টিপাইমুখ প্রকল্পের একটিও ক্ষতিকর দিক ভারতের কাছে তুলে ধরতে পারি তাহলে কি ভারত এই প্রকল্প বন্ধ করে দেবে ?

তিনি এরপর আরো বলেছেন,

"They said they have conducted environmental impact assessment, and will do more. India will be the first to be affected, if any"(The Daily Star, August 5)

মাননীয় সদস্য আপনি কি একবারও ঐ রিপোর্টটা পড়েছেন? পাঠকদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি এটি সেই রিপোর্ট সেখানে একটি প্যারাগ্রাফে বাংলাদেশে প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং আমি আমার সিরিজের চতুর্থ পর্বে যা উল্লেখ করেছি।

একই খবরে ঐ দলের সদস্য এ বি এম রুহুল আমীন বললেন,

"The project is just at its initial stage. I don't think it could be implemented in my lifetime"(The Daily Star, August 5)

মাননীয় সদস্য আপনার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি এরকম মন্তব্য করার জন্যই কি আপনাকে দেশের টাকা খরচ করে পাঠানো হয়েছে ? আপনার জীবদ্দশায় এই প্রকল্প হবেনা এই মর্মে আপনি কিভাবে নিশ্চিত হলেন ?

এই সংসদীয় কমিটি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিদ্যুৎমন্ত্রীর সাথে দেখা করে 'ফুলেরতল ব্যারেজ না নির্মানের' আশ্বাসকে তাদের সবচেয়ে বড় সফলতা মনে করছে (প্রথম আলো, ৫ আগষ্ট ২০০৯ ) অথচ আমরা এর অনেক আগে থেকেই ভারতের কাছ থেকে এই ধরনের আশ্বাস শুনে আসছি।

দশ সদস্যের এই সংসদীয় টিমে পানিবিশেষজ্ঞ হিসেবে ছিলেন বুয়েটের প্রফেসর মনোয়ার হোসেন। ডঃ হোসেন ব্যাক্তিগত জীবনে আমার শিক্ষক ও সহকর্মী এবং আমার মাষ্টার্সের গবেষণাও তার সাথে করা। এখানে সবচেয়ে অবাক বিষয় হচ্ছে আমি এখন পর্যন্ত এই সফর সংক্রান্ত বিষয়ে মনোয়ার সারের কোন বিবৃতি দেখিনি ( আমি ভুল করে থাকলে সংশোধন করে দেবেন)। তবে এই সফরের পূর্বে ১২ জুন ২০০৯ সাপ্তাহিক ২০০০ এ এক সাক্ষাৎকারে তিনি কয়েকটি মন্তব্য করেছেন যা আসলে তার কাছ থেকে আশা করিনা,

" য়েহেতু জলাধারে পানি সংরক্ষণ করা হবে তাই এর কিছু প্রভাব ভাটিতে পড়বে। তবে সেই প্রভাব টিপাইমুখ পানি বিদ্যুত প্রকল্পের সারপ্লাস বিদ্যুত বাংলাদেশ ব্যবহারের মাধ্যমে পুষিয়ে নেওয়া যেতে পারে" ( ভিন্নচিন্তা, সামহোয়ার ইন ব্লগ, ২০ জুলাই )

এখানে সারপ্লাস বিদ্যুতের প্রসংগই বা কোত্থেকে আসল আর আসলেই তা বাংলাদেশে বিতরনের বা ব্যবহারের প্রসংগের অবতারণা হলো কিভাবে আমার বোধগম্য নয়। ভারত কি এই বিষয়ে কখনো কোন বিবৃতি দিয়েছে ?

এই সফরের আরো একটি বিষয় যা আমার কাছে পরিষ্কার নয় তা হলো বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এরকম কোন কিছুই ভারতের কাছে তুলে ধরা হলোনা যে কেন নিপোকোর টিপাইমুখ প্রকল্পের পরিবেশগত রিপোর্টে ভাটি অঞ্চল (বাংলাদেশ) উপেক্ষিত হল। একটি বাঁধের ভাটি অঞ্চলকে সম্পূর্ণরূপে অগ্রাহ্য করে এই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে অথচ এর কোন কিছুই তারা উল্লেখ করেনি।

ভারতের সাম্প্রতিক ভূমিকাঃ ইতিবাচক না নেতিবাচক?

ভারত সাম্পতিক কালে যে বিষয়টা বার বার বলে যাচ্ছে তা হলো টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে কোন বিতর্কের সূচনা হলেই তারা ফুলেরতল ব্যারেজ না করার আশ্বাস দিচ্ছে কিন্তু তারা একটি বারও শুধু বাঁধের জন্য বাংলাদেশের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে কোন কিছু বলছেনা। আমরা দেখেছি নিপকোর টিপাইমুখ প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাবের গবেষণায় বাংলাদেশ কিভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে। ভারতের ভাটি অঞ্চল উপেক্ষা করার এই প্রবণতা নিঃসন্দেহে নেতিবাচক।

সংসদীয় টিম ভারত সফরের সময় ভারতের কাছ থেকে কিছু ইতিবাচক বিষয় বের হয়ে এসেছেঃ

  • প্রথমতঃ ভারতের কাছ থেকে তথ্য ও উপাত্ত প্রাপ্তির আশ্বাস তবে তা "বাংলাদেশী বিশেষজ্ঞদের" প্রয়োজন অনুযায়ী। এখানে লক্ষ্য রাখতে হবে আমরা কি কি উপাত্তের জন্য অনুরোধ পাঠাবো ?

  • দ্বিতীয়তঃ যৌথ নদী কমিশনের ভারতের সাবেক সদস্য বি জি ভার্গিস বলেছেন যে টিপাইমুখ বাঁধের কারনে বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের হাওড় এলাকার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্থ হবে এই মর্মে বাঁধের বিরোধিতা করতে হলে বাংলাদেশকে তা পর্যাপ্ত গবেষণা করে তুলে ধরতে হবে (প্রথম আলো, ৫ অগাষ্ট ২০০৯)। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই মন্তব্যকে কি ভারতের আনুষ্ঠানিক মন্তব্য হিসেবে ধরে নেব ? যদি তাই হয় তাহলে বাংলাদেশের সানন্দে এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে হবে। আমার বিশ্বাস পর্যাপ্ত গবেষণা করে একথা প্রমান করা সম্ভব এই টিপাইমুখ বাঁধ বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের কতটা ক্ষতি করবে।

এই মূহুর্তে আমাদের কি করণীয়ঃ

ঠিক এই মূহুর্তে বাংলাদেশের যা করা উচিৎ তা পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করছিঃ

  • প্রথমতঃ সংসদীয় দলের ভারত সফরের মধ্য দিয়ে একটি আলোচনার সুত্রপাত হয়েছে। ভারত বলেছে আমাদের কি কি উপাত্ত লাগবে তা জানাতে। সুতরাং সরকারের এই মূহুর্তে উচিৎ টিপাইমুখ নিয়ে একটি সমন্বিত বিশেষজ্ঞ দল গঠন করা। এই বিশেষজ্ঞ দলে যেসব অনুষদ থেকে লোক থাকবেন তা হলোঃ

    • পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ
    • প্রকৌশল ভূতত্ত্ববিদ
    • পরিবেশবিদ
    • বাস্তুতন্ত্রবিদ ( উদ্ভিজ ও প্রাণিজ)
    • প্রানীবিশেষজ্ঞ
    • কৃষিবিদ
    • নৃবিজ্ঞানী
    • অর্থনীতিবিদ
    • আইনবিদ
  • কারা এই দলে থাকবে সেটি নির্ণয়ের দায়িত্ত্ব সরকারের তবে আমি অনুরোধ করব বিশেষজ্ঞ হিসেবে তাদেরকেই রাখতে যাদের তাদের স্ব স্ব বিষয়ে বিস্তর গবেষণা আছে, সেই সাথে এই জাতীয় ইস্যু নিয়ে অতীতে যারা কাজ করেছেন তাদের অভিজ্ঞতার মূল্য দেওয়াটাকেও বাঞ্ছনীয় বলে মনে করি।

  • দ্বিতীয়তঃ গঠিত বিশেষজ্ঞ দল সরকারের কাছে রিপোর্ট প্রদান করবে যে টিপাইমুখ বাঁধ বা ফুলেরতল ব্যারেজের ফলে বাংলাদেশে কি কি নেতিবাচিক প্রভাব পড়বে তা গবেষণার জন্য তাদের কি পরিমান তথ্য প্রয়োজন ?

  • তৃতীয়তঃ সমন্বিত বিশেষজ্ঞ দলের পরামর্শের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকার ভারতের কাছে দু'টি বিষয়ে প্রস্তাব পাঠাবেঃ

    • একঃ বাংলাদেশের গবেষণা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভারত টিপাইমুখ প্রকলের কোন কাজ শুরু করতে পারবেনা।

    • দুইঃ ভারত বাংলাদেশকে আমাদের বিশেষজ্ঞ দলের পরামর্শ অনুযায়ী জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় উপাত্ত প্রদান করবে।
  • চতুর্থতঃ তৃতীয় ধাপ সফল হলে আমরা সকল উপাত্ত নিয়ে টিপাইমুখ বাঁধের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে গবেষণা শুরু করব। এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য থাকবেঃ

    • বাঁধের ও ব্যারেজের কারনে প্রবাহের কি পরিবর্তন হবে ?
    • এই প্রবাহ হ্রাস ও জলাধারে পলিহ্রাসের প্রভাবে বাঁধের ভাটিতে ব্যাপক নদীক্ষয়ের কি প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে ?
    • প্রবাহ পরিবর্তনের ফলে সিলেট ও মৌলভীবাজার অঞ্চলের হাওড় গুলির বাস্তুতন্ত্রে কি পরিবর্তন আসব ?
    • এই এলাকার সাথে মানুষের জীবন ও জীবিকার উপর তার কি প্রভাব পড়বে ?
  • বস্তুত এই সবকিছু নিয়ে সমীক্ষার পরই জানা যাবে এই বাঁধ হলে বাংলাদেশের কি পরিমান ক্ষতি হবে।

  • পঞ্চমতঃ এই পর্যায়ে বাঁধের কারনে বাংলাদেশে সম্ভাব্য ক্ষতি ন্যুনতম পর্যায়ে আনা আদৌ সম্ভব হবে কিনা সেটি খতিয়ে দেখতে হবে। এক্ষেত্রে যৌথ গবেষণার প্রস্তাব আসতে পারে।

  • ষষ্ঠতঃ এই সব রিপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে বা ভারতে সরকার পর্যায়ে বৈঠক করতে হবে যেখানে বাংলাদেশী বিশেষজ্ঞ দল তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। যদি বাঁধের ফলে সম্ভাব্য ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য এর ডিজাইনে কোন পরিবর্তন পরিবর্ধন সম্ভব থাকে তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে বাংলাদেশী বিশেষজ্ঞদলের পরামর্শ অনুযায়ী যদি বাঁধের ডিজাইন পরিবর্তন করা হয় যাতে করে এর ভাটিতে প্রভাব ন্যুনতম পর্যায়ে আসবে তাহলে সেই পরবর্তিত ডিজাইন নিয়ে বিশেষজ্ঞ দল আরেক দফা গবেষণা করবে।

    আর তা না হলে, অর্থাৎ বিশেষজ্ঞ দল যদি মনে করে এই ক্ষতি সহনীয় মাত্রায় আনা সম্ভব নয় তাহলে বাংলাদেশের কাছ থাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার প্রস্তাব ভারতের কাছে উত্থাপন করতে হবে।

  • সপ্তমতঃ প্রকল্প বন্ধ করার বাংলাদেশের প্রস্তাব কুটনৈতিক ভাবে ভারত প্রত্যাখ্যান করলে জাতিসংঘের মাধ্যমে আইনগতভাবে কিভাবে আমরা প্রচেষ্টা চালাতে পারি তারো খসড়া প্রনয়ন করতে হবে। বিশেষজ্ঞ দলের আইনবিদেরা এক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন।

  • অষ্টমতঃ ভারতের সাথে আইনগত ভাবে এই সমস্যা মোকাবেলা করার সময় দেশের রাজনীতিবিদ, সংবাদ মাধ্যম, সাধারণ জনগণকে দেশের প্রেক্ষাপটে এক থাকতে হবে। জাতিগত ভাবে আমাদের সমস্যা আমরা অনেক সময়ই না বুঝে বা ভবিষ্যৎ আঁচ না করে সংবাদ মাধ্যমে বিভিন্ন বিবৃতি দিয়ে থাকি যা কখনই দেশের জন্য ভাল কিছু বয়ে আনেনা।

আইনগত কি কি দিক আমাদের হাতে আছে ?

পাঠক আগ্রহী হতে পারে টিপাইমুখ প্রকল্প বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত ( সপ্তম ধাপ) হবার পরেও ভারত যদি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায় সেক্ষেত্রে আমাদের আইনগত ভাবে কি করার আছে। এই বিষয়ে সবথেকে ভাল লেখা আমি পেয়েছি ডঃ আসিফ নজরুলের কাছ থেকে[৫]। আমি এর আলোকে কিছু তথ্য দিচ্ছিঃ

  • ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসের সংবিধির ৩৮ ধারা অনুযায়ী দ্বিপাক্ষিক বা আঞ্চলিক বা বৈশ্বিক যেকোন চুক্তি আনর্জাতিক আইনের উৎস। এই বিচারে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ও ভারতে সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত গঙ্গা চুক্তি একটি সর্বোচ্চ পর্যায়ের চুক্তি ( Vienna Convention on the Law of Treaties 1969) এবং এই দুই দেশের জন্য আন্তর্জাতিক আইন যা কিনা ২০২৬ সাল পর্যন্ত মেনে চলতে দুই দেশই বাধ্য।

  • গঙ্গাচুক্তির অনুচ্ছেদ ৯ ( বিস্তারিত চুক্তির জন্য পড়ুন) লক্ষ্য করুনঃ

    "পক্ষপাত বিহীন ও সাম্যতা প্রসুত এবং কোন পক্ষেরই ক্ষতি না করে দুই সরকারই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বহমান অন্যান্য আন্তসীমান্ত নদীসমুহের চুক্তির ব্যাপারে একক সিদ্ধান্তে উপনীত হবার ব্যাপারে একমত"

    অর্থাৎ এই চুক্তি অনুযায়ী আমরা গঙ্গা ছাড়াও অন্য আন্তঃসীমান্ত নদী যেমন বরাক নদীর ক্ষেত্রে "সাম্যতা" ও " কোন পক্ষেরই ক্ষতি" এই দু'টি পয়েন্টের ভিত্তিতে আইনের আশ্রয় নিতে পারি। বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ দল যদি প্রমান করতে পারে টিপাইমুখ বাঁধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ক্ষতি হচ্ছে ও সাম্যতা বিনষ্ট হচ্ছে তাহলে তার পরেও টিপাইমুখ বাঁধ করতে গেলে তা গঙ্গাচুক্তি ভঙ্গের কারন হবে যা ভারত ২০২৬ সালের আগে পারেনা।

  • প্রশ্ন উঠতে পারে ২০২৬ সালের পরে কি হবে? সেটির জন্য গঙ্গা চুক্তির অনুচ্ছেদ ১২ লক্ষ্য করুনঃ

    "দুই পক্ষের স্বাক্ষরের ভিত্তিতে এই চুক্তি বাধ্যবাধকতায় যাবে ও তা বলবৎ থাকবে ত্রিশ বছর পর্যন্ত, এবং পারস্পরিক প্রচেষ্টায় তা নবায়ন যোগ্য।"

    অর্থাৎ নবায়নের বিষয়টিও চুক্তির মধ্যে আছে এবং সেক্ষেত্রে দুই দেশকেই সচেষ্ট হতে হবে।

শেষকথাঃ

ভারত এই টিপাইমুখ প্রকল্প বাস্তবায়নের দু'টি মূল প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেছে, একঃ বন্যা নিয়ন্ত্রন আর দুইঃ বিদ্যুৎ উৎপাদন। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আরো বিকল্প প্রযুক্তি ভারতের কাছেই আছে, উদাহরণ সরূপ Indo-Us Nuclear Agreement কথা বলা যেতে পারে।সেক্ষেত্রে ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য মরিয়া হয়ে এই প্রকল্প হাতে নেয়া কতটা যুক্তিযুক্ত যেখানে খোদ ভারতেই এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ বিদ্রোহ চলছে। বন্যা নিয়ন্ত্রনের কথা যদি বলি পৃথিবীতে এখন বন্যা নিয়ন্ত্রন এই কথাটিই ধীরে ধীরে উঠে যাচ্ছে তার পরিবর্তে আসছে বন্যা ব্যাবস্থাপনা। সেই আলোকে এটি এখন প্রমানিত যে বন্যা ব্যবস্থাপনার জন্য " স্ট্রাকচারাল" পদ্ধতির চেয়ে "নন-স্ট্রাকচারাল" পদ্ধতি অধিক পরিবেশ বান্ধব এবং তা ভবিষ্যতের জন্য ভাল। অর্থাৎ ভারত ইচ্ছে করলেই এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন না ঘটিয়েও তার দেশের সমস্যা সমাধান করতে পারে। সেক্ষেত্রে এই রকম একটি বিতর্কিত প্রকল্প হাতে নিয়ে দু'টি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে অহেতুক শত্রুতা বাড়িয়ে বিশ্বশান্তির বিঘ্ন ঘটানোর কোন অধিকার ভারতের নেই। বাংলাদেশ দেশ হিসেবে ছোট হতে পারে, দরিদ্র হতে পারে কিন্তু একটি কথা ভুলে গেলে চলবেনা এই দেশটির রয়েছে একটি গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্য। এ দেশের মানুষ তাদের নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য কখনো পিছপা হয়নি আর ভবিষ্যতেও হবেনা। দেশের যখনই প্রয়োজন পড়েছে এর সন্তানেরা ঝাপিয়েছে পড়েছে আন্দোলনে। আজ সময়ের প্রবাহে আমাদের আবারো প্রয়োজন পড়েছে ঝাপিয়ে পড়ার তবে এবার রাজপথে নয় বরং নিজেদের মনন, প্রজ্ঞা আর গবেষণা দিয়ে প্রমান করতে হবে এই টিপাইমুখ প্রকল্প আমাদের জন্য কতটা ভয়াবহ ভবিষ্যৎ বয়ে আনবে। আর সেই সাথে এই প্রকল্পের ভয়াবহতা সম্পর্কে আমাদের সাধারণ জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে আর সেই জন্য এই প্রকল্পের তথ্য মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌছে দিতে হবে। সরকারকে এক্ষেত্রে একই সাথে কুটনীতি আর আর বিচক্ষণতার আশ্রয় নিয়ে হবে, যোগ্য স্থানে যোগ্য লোককে রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে বিশেষজ্ঞের কাজ যেমন রাজনীতিবিদ দিয়ে হয়না তেমনি বিশেষজ্ঞদের রাজনীতিবিদ হওয়ার প্রয়োজন পড়েনা। দেশের প্রয়োজনে আমাদের ব্যাক্তিগত বা দলীয় স্বার্থকে বিসর্জন দিতে হবে তবেই আমরা একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে দিতে উপহার পারব।


( সমাপ্ত )

তথ্যসুত্রঃ
[১] উইকিপিডিয়া

[২]Environment Impact Assessment (EIA) of Tipaimukh HE(M) Project, submitted for North Eastern Electric Power Corporation Limited (NEEPCO)

[৩] ডঃ জ়হির উদ্দিন চৌধুরী, ১২ জুলাই ২০০৯, ‘বরাক নদী থেকে পানি প্রত্যাহার করা হলে তা হবে বিপদ জনক’, প্রথম আলোকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকার।

[৪] ডঃ আইনুন নিশাত, ২৮ জুন ২০০৯, ‘দুই দেশেই টিপাইমুখ বাঁধের পরিবেশগত প্রভাবের জরিপ চালাতে হবে’, প্রথম আলোকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকার।

[৫] ডঃ আসিফ নজরুল, ৫ জুলাই ২০০৯, ‘পিনাক রঞ্জনের ছোট ভুল, আমাদের বড় ভুল’ প্রথম আলো।

[৬] এম এ কাসেম,৬ জুলাই ২০০৯, ‘টিপাইমুখঃ যে কথা কেউ বলছেনা’প্রথম আলো।

[৭] ডঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম, ‘টিপাইমুখ বাঁধঃ কিছু শর্ত মানলে কম ক্ষতিকর হতে পারে’ প্রথম আলো।

[৮] Dr.Sara Bennett, Mujib Huq and Dr. David Mclean,1994, ‘Initial Environmental Evaluation, Appendix to the Northeast RegionalWater Management Plan, Bangladesh Flood Action Plan 6 ( IEE NERP FAP 6)’,Final Version.

[৯] Ma A Matin, 7 February 2006, ‘Another Farakka ? No, Tipaimukh Dam is different’ The Daily Star.

[১০] The Ecology of Dams

[১১]মোঃ গোলাম্ কিববিয়া " ISSUE-GAINING PUBLIC ACCEPTANCE FOR LARGE DAMS ON INTERNATIONAL RIVERS: THE CASE OF TIPAIMUKH DAM IN INDIA AND CONCERNS IN LOWER RIPARIAN", সেপ্টেম্বর ২০০৫, United Nations Environment Programme (UNEP) কতৃক আয়োজিত Dams and Development Project শীর্ষক কর্মশালা, নাইরবি, কেনিয়া।

[১২] Dogra, B. 1992. The Debate on Large Dams. Centre for Science and Environment, New Delhi.

[১৩] R.K. Ranjan Singh, ‘Tipaimukh’ in The Ecologist Asia, Vol. 11 No. 1 January-March 2003


মন্তব্য

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং অভিনন্দন এই চমৎকার সিরিজটির জন্য।
খুব ভাল একটা কাজ করলেন।
এখন কোন ভাবে যদি এই তথ্য সরকারের প্রতিনিধিদের কাছে পৌছান যায় খুব ভাল হয়।

সচল জাহিদ এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ।

এখন কোন ভাবে যদি এই তথ্য সরকারের প্রতিনিধিদের কাছে পৌছান যায় খুব ভাল হয়।

এই বিষয়ে আরো সচল মন্তব্য করেছেন ( যেমনঃ স্বাধীন, ইশতি)। আশা করি অন্যরাও একমত হবেন। আমরা সচল থেকে একটি আন্দোলন শুরু করতে পারি।অপেক্ষা করছি অন্য সবাই কি কি প্রস্তাব দেয় ।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

দিগন্ত এর ছবি

আমি দেখছি ভারতের মিডিয়ায় রাজ্জাকের বক্তব্য বহুল প্রচার পাচ্ছে। উনি তো একরকম ভাবে দাবীই জানিয়েছেন যে কোনো ক্ষতি হচ্ছে না বলে উনি নিশ্চিত। আমার ধারণা এরকম বক্তব্য টানা রাখতে থাকলে ভবিষ্যতে এই নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত বক্তব্য পেশ করার সময় সমস্যা হবে।

ভারত কি এই বিষয়ে কখনো কোন বিবৃতি দিয়েছে ?

জলবিদ্যুত রপ্তানীর কথা আমি কখনও শুনিনি। নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুত আমদানীর কথা হয়েছে কিন্তু সেই প্রকল্পটি (কোসি হাই ড্যাম) ভারত-নেপাল-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে হবার কথা। সম্প্রতি ত্রিপুরা থেকে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুত রপ্তানীর কথা হয়েছে - সেটাও অবশ্য সারপ্লাস বিদ্যুতই।

গঙ্গাচুক্তির অনুচ্ছেদ ৯

এটা আমি পড়েছি - কিভাবে সাম্য ও ক্ষতি না করা একইসাথে রাখা সম্ভব সেটাই আমি বুঝলাম না। ৯০% ক্ষেত্রেই (নৌ-চলাচল ছাড়া) উজানে জল ব্যবহার হলেই ভাটিতে তার প্রভাব পড়বেই। ম্যাকেফ্রির বইতে এই বিশেষ ধারা দিয়েই গঙ্গা-চুক্তির বর্ণনা সমাপ্ত হয়েছে। উনি ব্যাপারটাকে অন্যভাবে দেখছেন, লিখেছেন -
"In addition, it is of interest because of the way in which the 'no-harm' principle is formulated: by referring to 'no harm to either party', the two states recognize that harm may be caused to the upper, as well as the lower, riparian - for example, through insistence by the downstream country on a particular share despite the hardship that would cause upstream."

সেই আলোকে এটি এখন প্রমানিত যে বন্যা ব্যবস্থাপনার জন্য " স্ট্রাকচারাল" পদ্ধতির চেয়ে "নন-স্ট্রাকচারাল" পদ্ধতি অধিক পরিবেশ বান্ধব এবং তা ভবিষ্যতের জন্য ভাল। অর্থাৎ ভারত ইচ্ছে করলেই এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন না ঘটিয়েও তার দেশের সমস্যা সমাধান করতে পারে।

এইটা নিয়ে আরো জানতে ইচ্ছুক - অর্থাৎ বরাক-সুরমা-কুশিয়ারা অববাহিকায় বন্যা ব্যবস্থাপনায় বিকল্পগুলো ... এগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সচল জাহিদ এর ছবি


কিভাবে সাম্য ও ক্ষতি না করা একইসাথে রাখা সম্ভব সেটাই আমি বুঝলাম না।

চুক্তিতে এই বিষয়টি আরো পরিষ্কার করা উচিৎ ছিল এবং সংযুক্ত আকারে কিছু সংগায়ন হিসেবে রাখতে পারত। আমি যতটুকু বুঝি তা হলো, আন্তঃসীমান্ত নদীর ক্ষেত্রে উজানে নদীর পানি অপসারণ করলে বা বাঁধ দিলে এর প্রভাব ভাটিতে পড়বে। এখন প্রথমে দেখতে হবে উজানে ও ভাটিতে এই পানি অপসারন বা বাঁধের ফলে কি কি ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক আসছে? এরপরঃ

১) যদি দেখা যায় যে একপক্ষে শুধু নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সেক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়ন বন্ধ করা উচিৎ।

২) যদি সম্মিলিত নেতিবাচক দিক সম্মিলিত ইতিবাচক দিক থেকে বেশী হয় আমার মতামত সেক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা বন্ধ করা উচিৎ।

৩) আর যদি দেখা যায় সম্মিলিতি ইতিবাচক দিক সম্মিলিত নেতিবাচক দিকের থেকে বেশী হয় সেক্ষেত্রে যে পক্ষ বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তাকে অন্য পক্ষের ইতিবাচক দিকের কিছু সুবিধার অংশীদার করতে হবে।

তবে এই বিষয়ে সবচেয়ে কঠিন দিক হলো অনেক নেতিবাচক দিক আছে বিশেষ করে পরিবেশ বিপর্যয় যার ক্ষতির পরিমান মুদ্রা দিয়ে হিসেব করা প্রায় অসম্ভব। তারপরেও দুই দেশের স্বার্থে আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে।

এইটা নিয়ে আরো জানতে ইচ্ছুক - অর্থাৎ বরাক-সুরমা-কুশিয়ারা অববাহিকায় বন্যা ব্যবস্থাপনায় বিকল্পগুলো ... এগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

বন্যা ব্যবস্থাপনার "নন-স্ট্রাকচারাল" দিকগুলির মূল কথা হলো বন্যার সাথে বসবাস করা। খুব ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করি বন্যা আসলে আমার কি কি ক্ষতি হবে ? উদাহরণরূপঃ আমার ফসল ডুবে যাবে, ঘড়বাড়ি ভেসে যাবে, গবাদী পশু হারিয়ে যাবে, রাস্তাঘাট ভেঙ্গে যাবে, স্কুল কলেজ বন্ধ হয়ে যাবে এবং আরো অনেক কিছু। এক্ষেত্রে দুটি জিনিস লাগবে এক প্রতিষেধক আর দুই প্রতিরোধক।

প্রতিষেধক হলো যা আগে থেকেই করা থাকবে, যেমনঃ

১) বিস্তৃত এলাকাকে বিভিন্ন বন্যা জোনে ভাগ করা। যেখানে প্রায়শই বড় আঙ্গিকের বন্যা হয় সেখানে বড় কোন স্থাপনা বা মানুষের বসতিকে নিরুৎসাহিত করা হোক।

২) যেখানে স্বাভাবিক বন্যা হয় যেখানে ঘরবাড়ি, স্কুল কলেজ, বাজার রাস্তাঘাট, টিউবওয়েল গুলো উচু করে তৈরী করতে হবে।

৩) স্বাভাবিক বন্যার ( যা কিনা বাৎসরিক বন্য) ফসলের ক্ষতি হয়না বা কম হয় কারন ঐ অঞ্চলের ফসলগুলি এই স্বাভাবিক বন্যার সাথে অভযোজিত। সুতরাং ক্ষতি হয় অস্বাভাবিক বন্যার সময় যা কিনা কয়েক বছর পর পর আসে আর হলো ফ্ল্যাশ ফ্লাডের কারনে যা হঠাৎ করে ধেয়ে আসে। এক্ষেত্রে এখন ফ্লাড ইন্সিওরেন্স এর কথা ভাবা যেতে পারে , অর্থাৎ কৃষকরা একটি নির্দীষ্ট পরিমান প্রিমিয়াম দেবে অথবা সরকার এক্ষেত্রে ভর্তুকি দেবে যার বিনিময়ে তারা বন্যার সময় ক্ষয়ক্ষতির অনেকটাই ফেরত পাবে।

৪) বন্যা প্রবণ এলাকায় বন্যা সতর্কীকরণ ব্যবস্থা আধুনিকায়করন করা।

৫) বন্যা প্রবণ এলাকায় মানুষদের বন্যার সময় বিকল্প যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে নৌকা সংগ্রহে রাখা।

একটি ব্যাক্তিগত উদাহরণ দেই,

আমার নানা বাড়ি টাঙ্গাইলের একটি নিম্নাঞ্চলে। মজার বিষয় হলো ঐ এলাকার সব পাড়াগুলোই মাটির স্বাভাবিক উচ্চতা থেকে ৭ -৮ ফুট উচুতে। আমি ছোটবেলায় দেখতাম মামারা শুষ্ক কালে পুকুরে নৌকা ডুবিয়ে রাখত আর বর্ষাকালে স্বাভাবিক বন্যার সময় তা ব্যবহার করত। ঐ এলাকার সবাই একই কাজ করত কারন এটা সবারই প্রতি বছর লাগত।

প্রতিরোধক হলো যা বন্যার সময় করতে হবে, যেমনঃ ত্রান ব্যবস্থা, জরুরী চিকিৎসা ব্যবস্থা ইত্যাদি।

দিগন্ত আসলে উপরের তথ্যগুলো বন্যা ব্যবস্থাপনার কিছু ধারনা। এটি এলাকা ভেবে পরিবর্তিত হয় তবে মূল লক্ষ্যকে ঠিক রেখে আর তা হলো বন্যার সাথে বসবাস। আপনি ইচ্ছে করলে এই লিঙ্কটি দেখতে পারেন, কিছু সাধারণ ও প্রাথমিক ধারনার জন্য।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

দিগন্ত এর ছবি

চুক্তিতে এই বিষয়টি আরো পরিষ্কার করা উচিৎ ছিল এবং সংযুক্ত আকারে কিছু সংগায়ন হিসেবে রাখতে পারত।

এটা আসবে আন্তর্জাতিক আইনে প্রদত্ত সংজ্ঞা থেকেই।

এখন প্রথমে দেখতে হবে উজানে ও ভাটিতে এই পানি অপসারন বা বাঁধের ফলে কি কি ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক আসছে

আপনি যেরকম বলেছেন তাতে উজানের দেশের পক্ষে ক্ষতিপূরণ না দিয়ে কখনই জল ব্যবহার (Consumptive use) করা সম্ভব হবে না (গঙ্গাচুক্তি সত্ত্বেও বাংলাদেশের ক্ষতি হচ্ছে)। কিন্তু এটা কোনোভাবেই equitable নয়। আমি আগেও এ নিয়ে নেপালের উদাহরণ দিয়েছি, বর্তমানে ইথিওপিয়ার উদাহরণ দিচ্ছি।

ইথিওপিয়া ও মিশরের জল-বিবাদ সর্বজনবিদিত। নীলনদের জলের ৭৫% আসে ইথিওপিয়া থেকে আর ব্যবহার করে মূলত মিশর (৫০% এরও বেশী)। ইথিওপিয়া প্রতি পাঁচ বছরে একবার করে খরা কবলিত হয় কারণ নীলের জল তারা ব্যবহার করতে পারে না। আবার তারা যদি নীলের জল ব্যবহার করা শুরু করে তাহলে মিশরের সমূহ ক্ষতি। মিশরের ব-দ্বীপ অঞ্চলে লবণাক্ততা ঢুকে পড়বে, চাষের বিপুল ক্ষতি তো হবেই - এমনকি পানীয় জলেও টান পড়তে পারে। মিশর নরমে গরমে ইথিওপিয়ার সাথে এই সমস্যা জারি রেখেছে। তারা ইথিওপিয়ার নীল-অববাহিকার বিপ্লবীদের সরাসরি অর্থসাহায্য করে, ইথিওপিয়ার সেচ বা বাঁধ প্রকল্পের ফান্ডিং সব আর্থিক সংস্থায় আটকে দেয়। আরো একটি দেশ জলবিদ্যুত উৎপাদনের প্রকল্প করতে চাইলে তাতে ভাটিতে সেচের ক্ষতি না হবার জন্য বাঁধের নকশা পরিবর্তন করতে হয়েছে - তার জন্য মিশর তাদের ক্ষতিপূরণও দিয়েছে।

এইখানে যদি বলা যায় ইথিওপিয়ার উচিত জল ব্যবহারের জন্য মিশরকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া - তাহলে সেটা সাম্য হয় না। কারণ এখানে অববাহিকার সব মানুষেরই নীলের জলে সমান অধিকার - সেই সাম্যই লঙ্ঘিত হয়। আপনি প্রশ্ন করতে পারেন তাহলে এই সমস্যাটা কেন? সমস্যার মূল কারণ জনসংখ্যা - গত পঞ্চাশ বছরে নীল অববাহিকায় জনসংখ্যা বেড়ে তিনগুণ হয়েছে। তাদের জন্য খাদ্য ও পানীয় জলের চাহিদাও বেড়েছে। নীলের জল বাড়েনি। তাই মাথাপিছু জলের প্রাপ্যতা কমে গেছে। উজানে অতিরিক্ত জল ব্যবহারের জন্য বাঁধ অবশ্য প্রয়োজন। তাই তিনগুণ জনসংখ্যা বাড়লেও ইথিয়োপিয়া জলের ব্যবহার বাড়াতে পারেনি কারণ তারা বাঁধ দেয় নি। তারা নিজেদের মোট জলসম্পদের মাত্র ২% জল ব্যবহার করে। মিশর বাঁধে জলের ব্যবহার বাড়িয়ে কৃষি ও পানীয় জলের ব্যবহার অপরিবর্তিত রেখেছে। সুতরাং ইথিওপিয়ার বাঁধ নির্মাণ ও জল প্রত্যাহার যুক্তিযুক্ত।

আসলে সমস্যার সমাধানে ক্ষতিটা দুজনের মধ্যে ভাগ করে নিতে হবে। জাতিসংঘে আন্তর্জাতিক আইনের আলোচনায় এই প্রসঙ্গ আলোচনা হয়েছে। আপনি ব্যাখ্যা দেখতে পারেন (পৃষ্ঠা ১০৩/১৬) -

"that the fact that an activity involves
significant harm would not of itself necessarily constitute a basis for barring it. In certain circumstances "equitable and reasonable utilization" of an international watercourse may still involve significant harm to another watercourse State. Generally, in such instances, the principle of equitable and reasonable utilization remains the guiding criterion in balancing the interests at stake"

সেইজন্য আইনে ক্ষতি এড়াতে সব ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা আছে কিন্তু ক্ষতি যে হতেই পারে তাও স্বীকার করা আছে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সচল জাহিদ এর ছবি

(গঙ্গাচুক্তি সত্ত্বেও বাংলাদেশের ক্ষতি হচ্ছে)।

বাংলাদেশের ক্ষতি মূলত হয়েছে ১৯৭৫-১৯৯৬ পর্যন্ত যখন ভারত ইচ্ছেমত পানি অপসারন করেছে। বিশেষ করে ফারাক্কা বাঁধ করার পর পরই শুষ্ক মৌসুমে পানি অপসারনের হার ছিল অত্যাধিক। সেই কৃত্রিম পরিস্থিতির খেসারত দিয়ে গিয়ে গঙ্গার শাখানদী গড়াই শুকিয়ে গেছে কারন গঙ্গা আর গড়াইয়ের কনফ্লুয়েন্সে পলি জমা হয়েছে। এই চুক্তি ১৯৭৫ সালেই হলে ক্ষতি হয়ত এর চেয়ে কম হত।


আপনি যেরকম বলেছেন তাতে উজানের দেশের পক্ষে ক্ষতিপূরণ না দিয়ে কখনই জল ব্যবহার (Consumptive use) করা সম্ভব হবে না

এটি নির্ভর করে আপনি কি পরিমান জল ব্যবহার করতে চাচ্ছেন তার উপর। যদি আপনি অধিক পরিমান জল অপসারন করতে চান তাহলে অবশ্যই ভাটির কথা ভাবতে হবে অন্তত আজকের বৈশ্যিক প্রেক্ষাপটে। আর আপনার জলের ব্যবহার যদি সীমিত হয় তাহলে ভাটির ক্ষতির পরিমান কম হবে।

নীলনদের জলের ৭৫% আসে ইথিওপিয়া থেকে আর ব্যবহার করে মূলত মিশর (৫০% এরও বেশী)।

শতকরা পানি কোত্থেকে আসে সেটি দিয়ে আপনি নদীর পানির ব্যবহার বের করতে পারেননা। ধরুন ব্রহ্মপুত্র নদী উৎপন্ন হয়েছে তিব্বতে তার মানে কি এর ১০০% পানি তার অধিকারে ? আর আপনি যে উদাহরন দিলেন খোঁজ নিয়ে দেখুন এর মান বর্ষা কালে আর শুষ্ক কালে কি পরিমান পরিবর্তিত হয়। বর্ষা কালে মিশরকে ৫০% ব্যবহার করতে দিন দেখুন কি হয় !!

সেইজন্য আইনে ক্ষতি এড়াতে সব ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা আছে কিন্তু ক্ষতি যে হতেই পারে তাও স্বীকার করা আছে।

হ্যা ক্ষতি হবে ঠিক আছে। সেক্ষেত্রে লাভও ভাগাভাগি করতে হবে । শুধু ক্ষতির ভাগ নেব আর লাভের অংশটা ছেড়ে দেব ??

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

দিগন্ত এর ছবি

আর আপনার জলের ব্যবহার যদি সীমিত হয় তাহলে ভাটির ক্ষতির পরিমান কম হবে।

এইখানে আপনি ভাবুন, ক্ষতি কিন্তু ভাটিতে হচ্ছেই - কিন্তু সেই লাভটা কি ভাগাভাগি হচ্ছে?

ধরুন ব্রহ্মপুত্র নদী উৎপন্ন হয়েছে তিব্বতে তার মানে কি এর ১০০% পানি তার অধিকারে ?

এটা প্রাসঙ্গিক একটা মন্তব্য। আমি এই অনুপাতে ভাগের কথা বলিনি। ভাগ বিকল্প, জনসংখ্যা, পরিবেশ ও অন্যান্য হিসাবে মেনে করতে হবে - যেমন আইনে বলা আছে। তিব্বতের জনসংখ্যা ভারত বা বাংলাদেশের তুলনায় নগণ্য, তাই তাদের জল ব্যবহারের অধিকারও সীমিত হওয়া উচিত।

আর আপনি যে উদাহরন দিলেন খোঁজ নিয়ে দেখুন এর মান বর্ষা কালে আর শুষ্ক কালে কি পরিমান পরিবর্তিত হয়। বর্ষা কালে মিশরকে ৫০% ব্যবহার করতে দিন দেখুন কি হয় !!

এটা বুঝলাম না। আপনার কাছে ঠিক কি প্রস্তাব যুক্তিযুক্ত মনে হচ্ছে?


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

দিগন্ত এর ছবি

বন্যা ব্যবস্থাপনা নিয়ে পড়লাম। আরো একটি লিঙ্ক থেকেও পড়লাম। আমার মনে হয়ছে নন-স্ট্রাকচারাল বন্যা ব্যবস্থাপনা যদি বাংলাদেশের ভবিষ্যতের উদ্দেশ্য হয় তাহলে টিপাইমুখ একটা বড়সড় ক্ষতি। কারণ টিপাইমুখের সরাসরি ক্ষতিগুলো মোটামুটি সবই প্লাবনভূমির বাস্তুতন্ত্রকে ঘিরেই (জলাভূমি শুকিয়ে যাওয়া, উর্বরতা হ্রাস বা মৎস-উৎপাদন হ্রাস)। তবে এইটা নিয়ে বাংলাদেশে ভাল বিতর্ক হওয়া উচিত কারণ বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে যথেষ্ট পরিমাণ স্ট্রাকচারাল পদ্ধতি ব্যবহার করে বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য। এর প্রভাবে বাংলাদেশে প্লাবনভূমির গড় আয়তন প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে (দেশের মোট জমির ২০% আগে স্বাভাবিকভাবে প্লাবিত হত, এখন গড়ে ১০% প্লাবিত হয়)। একই ভাবে এই প্রকল্পগুলোর অধীনে বড় এম্ব্যাঙ্কমেন্টও তৈরী করা হয়েছে (সুরমা-কুশিয়ারা অববাহিকাতেও হচ্ছে) যা মাছের উৎপাদন ও জৈববৈচিত্র্য কমিয়ে দিয়েছে (FAP 17)। আরো খারাপ ব্যাপার হল এই স্ট্রাকচারাল পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করার জন্য বাংলাদেশ সরকার বৈদেশিক ঋণ নেয় আর বাজেটের প্রায় ৩-৫% বরাদ্দ রাখে।

আপনি যে ঝুঁকিগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন বাংলাদেশেও সেরকমই ঘটেছে। ২০০৪ সালের বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি আড়াই বিলিয়ন ডলার কিন্তু মাত্র ৩০% প্লাবিত হয়েছিল। আগের ১৯৯৮ সালের বন্যায় ক্ষতি ছিল সমপরিমাণ কিন্তু ৮০% প্লাবিত হয়েছিল। ২০০৪ সালের বন্যায় ক্ষতি হয়েছে পরিকাঠামোর - কারণ এরই মধ্যে প্লাবনভূমিতে পরিকাঠামোগত ও বন্যা-নিয়ন্ত্রণের কাঠামো তৈরী হয়েছে যা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে। বন্যার আশঙ্কা কমায় বাংলাদেশে প্লাবনভূমিতে অপরিকল্পিত উন্নয়ন হয়েছে - যা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আপনি আগের পর্বে ঠিক এই আশঙ্কাই করেছেন। বন্যা নিয়ন্ত্রিত হলেই যে ক্ষয়ক্ষতি কমে তা নয়।

ওপরের বর্ণনায় বোঝা যায় স্ট্রাকচারাল পদ্ধতিতে বাংলাদেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। এই ব্যাপারটাই ভাল করে তুলে ধরতে হবে ভারতের প্রতিনিধিদলের সামনে - কারণ তারা সবাই বন্যা নিয়ন্ত্রণকেই বড় লাভ বলার চেষ্টা করবেন। এর জন্য বাংলাদেশকে বর্তমান পদ্ধতিগুলো ছাড়তে হবে। আপনারাও এ নিয়ে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তনের প্রচেষ্টা করুন।

তবে স্ট্রাকচারাল পদ্ধতি অবলম্বন করেও সাফল্য আসে - জাপান বা হল্যান্ডের উদাহরণে তা পাওয়া যায়। হল্যান্ড নিজের দেশের জলাভূমি ধ্বংস করেছে, রাইন নদীতে স্যামন মাছের আনাগোনা বন্ধ করে দিয়েছে - কিন্তু ক্ষতি সত্ত্বেও তারা বন্যা নিয়ন্ত্রণ করেছে কারণ তাদের লক্ষ্য ছিল নগরভিত্তিক দেশ তৈরী করা। হল্যান্ডের যেহেতু গোটা দেশই বন্যা কবলিত হয়, তাই তাদের কোনো উপায় থাকে না এ ছাড়া। একই ঘটনা জাপানেও (৫৪% মানুষ বন্যা কবলিত হয়)। তারাও একের পর এক বাঁধ দিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ করেছে। ফলে জাপানের ৪০% জলাভূমি বিনষ্ট হয়ে গেছে। জাপান বা হল্যান্ড উভয়েই ঘনবসতিপূর্ণ অথচ কেউই কৃষিভিত্তিক সমাজ নয়, তাই বিরূপ প্রভাবগুলোর তুলনায় তাদের শিল্প ও বসতি স্থাপনের জন্য অতিরিক্ত স্থানের গুরুত্ব বেশী বলে মনে হয়েছে।

বাংলাদেশ কোন পথ হাঁটবে সেটা আপনারা ঠিক করুন। সেইমত পদক্ষেপ নিন। সরকারকে মত পরিবর্তনের জন্য বলুন। শুধু টিপাইমুখ নয়, দেশের মধ্যের স্ট্রাকচারাল বন্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা হোক। বরাক-সুরমা-কুশিয়ারা উপত্যকায় ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের জনসংখ্যা অনেক বেশী। তাই ভারতের চাপিয়ে দেওয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কখনই equitable হতে পারে না। বরং ভারতের বন্যা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হওয়া উচিত বাংলাদেশের জনসাধারণের দাবীর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। আমি আপনার সাথে সম্পূর্ণ সহমত এ বিষয়ে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

স্বাধীন এর ছবি

তাই ভারতের চাপিয়ে দেওয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কখনই equitable হতে পারে না। বরং ভারতের বন্যা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি হওয়া উচিত বাংলাদেশের জনসাধারণের দাবীর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। আমি আপনার সাথে সম্পূর্ণ সহমত এ বিষয়ে।

ধন্যবাদ দিগন্ত সহমতের জন্য।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

কয়েক পর্বের লেখা দেখে পড়তে ভয়ই পাচ্ছিলাম। কিন্তু শেষ পর্ব থেকে উল্টা দিকে যেতে যেতে সবকটা পর্ব পড়া হয়ে গেল। হাতির ছবি দিয়ে হিমু প্রায় যেরকম হাতিসদৃশ লেখা দেয় সেরকম করে না দিয়ে পর্ব করে দেয়ায় পাঠকদের নিশ্চই সুবিধা হয়েছে পড়তে।

যেহেতু টিপাইমুখ বাঁধ সম্পর্কে প্রায় কোনো তথ্যই হাতে নেই সেহেতু এত বড় একটা লেখা দাঁড় করাতে আপনাকে বেশ খাটতে হয়েছে, সেজন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পানি-প্রকৌশলী পেশার সাথে পরিবেশভাবনা ও দেশপ্রেম যুক্ত হয়েই হয়তো প্রণোদনা দিয়েছে এই লেখার। বিষয়টি নিয়ে অনিশ্চিয়তার মধ্যে থাকা দেশবাসী ও সচেতন জনগোষ্ঠীর উদ্বিগ্নতাকে ধারণ করে আছে লেখাটা। আরো কী কী বিষয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত সে সম্পর্কে এই লেখা একটা প্রাথমিক ধারণা তৈরি করেছে।

স্বাভাবিকভাবে যেকোনো বাঁধের বিরুদ্ধে বাঁধবিরোধী সমাজবিজ্ঞানী বা পরিবেশকর্মীরা যেসব যুক্তি তুলে ধরেন সেসব যুক্তি টিপাইমুখ বাঁধের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যায় নিশ্চয়ই, যেহেতু এর নামের মধ্যেই বাঁধ শব্দটি আছে। আপনি সেসব যুক্তি প্রয়োগ করেছেন এবং এর ফলে ভাটি ও উজানে যেসব ক্ষতিকর প্রক্রিয়া দেখা দিতে পারে তার বর্ণনাও যুক্ত করেছেন।

কিন্তু পানি-প্রকৌশলী হিসেবে এসব ক্ষতিকর প্রভাবমুক্ত করে কীভাবে বাঁধ নির্মাণ করতে হয় সেসব শিক্ষাও নিশ্চয়ই আপনার ডিসিপ্লিন থেকে পান। আমরা অনুমান করতে পারি এরকম শিক্ষা থেকে পাওয়া যুক্তি দিয়েই বাঁধের পক্ষের লোকজন (ধরা যাক ভারতীয় কর্তৃপক্ষ) আপনার বর্ণিত বাঁধবিরোধী যুক্তিকে খন্ডন করবেন। তো সেসব পাল্টাযুক্তি যা তারা উপস্থাপন করতে পারে সে সম্পর্কে যদি আলোকপাত করতেন তবে আমাদের বাংলাদেশের নেতা ও বিশেষজ্ঞরা একটা প্রাক-প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে পারতেন বাহাসের।

কোনো সন্দেহ নাই, এই লেখাটি একটি প্রথম ধাপ। আরো অনেক কথা অনেক যুক্তি পাল্টা-যুক্তি নিয়ে অনেক আলোচনা হবে - হয়তো ব্লগে এত গভীর আলোচনার সুযোগ নাই। বর্তমান উত্তেজনা একটু থিতিয়ে আসলে হয়তো এই বিষয়ের সাথে জনসম্পৃক্ততাও কমে যাবে। কিন্তু এই জনসম্পৃক্ততা শেষ বিজয়ের জন্য ভীষণ জরুরি।

সব মিলিয়ে আমার প্রশ্ন হলো,

১. আন্তর্জাতিক নদীতে উজানে কোনো ধরণের বাঁধ করা যাবে কি যাবে না।

২. যদি না যায় তো ফুলস্টপ। যদি যায় তবে সেটা কোন ধরণের বাঁধ? এর কোনো সর্বসম্মত মডেল বা ধারণা আছে কি?

এখন যদি দুইপক্ষের বিশেষজ্ঞের সম্মতি আর পরামর্শ নিয়ে বাঁধ বানালে বিষয়টার সমাধান হয় তাহলে আমাদের বিশেষজ্ঞের খরচ কে দেবে? উজানের দেশ বা আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষ?

আরেকটা বিষয় আপনার লেখায় আসেনি সে হয়তো আপনি শুধু বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট দেখতে চেয়েছেন বলে, তা হলো এই বাঁধ হলে বাঁধের ভাটিতে থাকা ভারতের ভূমি ও জনগণের কী সমস্যা হবে। ঐ অঞ্চলের বিপুল জনগোষ্ঠীর ভূমিছাড়া হওয়ার কথা। তারা প্রতিবাদ করছে বলেও শুনেছি।

আপনাকে আরেকদফা ধন্যবাদ যে সচলায়তনে এই লেখাটা না থাকলে এ সম্পর্কে টিভিতে নেতাদের বক্তব্যের বাইরে কিছুই জানা হতো না। এখন একটা আগ্রহ তৈরি হলো আরো জানার।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

সচল জাহিদ এর ছবি

শোহেইল ভাই প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি দেরী হবার জন্য। বৌ ছেলের কানাডা আসা উপলক্ষ্যে এক সপ্তাহ ভয়াবহ ব্যস্ত ছিলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

কিন্তু পানি-প্রকৌশলী হিসেবে এসব ক্ষতিকর প্রভাবমুক্ত করে কীভাবে বাঁধ নির্মাণ করতে হয় সেসব শিক্ষাও নিশ্চয়ই আপনার ডিসিপ্লিন থেকে পান। আমরা অনুমান করতে পারি এরকম শিক্ষা থেকে পাওয়া যুক্তি দিয়েই বাঁধের পক্ষের লোকজন (ধরা যাক ভারতীয় কর্তৃপক্ষ) আপনার বর্ণিত বাঁধবিরোধী যুক্তিকে খন্ডন করবেন।

আসলে বলতে গেলে ক্ষতিকর প্রভাব মুক্ত বাঁধ নির্মান করা অসম্ভব, যেটা করা যায় তা হলো ক্ষতি কমানো। যেহেতু এই বাঁধের ভাটিতে পুরো একটা দেশ রয়েছে তাই এই ক্ষেত্রে ক্ষতি কমানো আসলেই কঠিন। যেটা করা যায় তা হলো ভারতের এই বাঁধ নির্মানের প্রয়োজনীয়তার যুক্তিকে খন্ডন করা যার কিছুটা করেছি শেষ কথায়।আর আমার বাঁধ বিরোধী যুক্তিকে খন্ডন করতে আসলেই এটি নিয়ে গবেষণা করতে হবে যৌথ ভাবে।

১. আন্তর্জাতিক নদীতে উজানে কোনো ধরণের বাঁধ করা যাবে কি যাবে না।

উজানের বাঁধ নির্মানে ভাটির কোন দেশের যদি আপত্তি থাকে সেইক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পানি আইনে পারস্পরিক সহযোগীতা ও আলোচনার কথা বলা হয়েছে। নিচের লাইনগুলি দেখুনঃ

Watercourse States shall participate in the use, development and protection of an international watercourse in an equitable and reasonable manner. Such participation includes both the right to utilize the watercourse and the duty to cooperate in the protection and development thereof, as provided in the present Convention.

২. যদি না যায় তো ফুলস্টপ। যদি যায় তবে সেটা কোন ধরণের বাঁধ? এর কোনো সর্বসম্মত মডেল বা ধারণা আছে কি?

আসলে আগেই বলেছি ক্ষতি হয়না এমন বাঁধ নেই যেটা করা যায় তা হলো ক্ষতি কমানো ও লাভ শেয়ার করা। তবে ক্ষতি যদি লাভের থেকে অনেক কম হয় আমরা সেটা অবশ্যই বর্জন করব।

এখন যদি দুইপক্ষের বিশেষজ্ঞের সম্মতি আর পরামর্শ নিয়ে বাঁধ বানালে বিষয়টার সমাধান হয় তাহলে আমাদের বিশেষজ্ঞের খরচ কে দেবে? উজানের দেশ বা আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষ?

আমার জানা মতে এইক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের খরচ আমাদেরকেই দিতে হবে। তবে দেশের স্বার্থে এই কাজগুলি আমাদের বিশেষজ্ঞদের বিনা খরচে করে দেয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি। অবশ্য কারিগরী দিকের জন্য কিছু খরচ আছে যা সরকারকেই হয়ত দিয়ে হবে। আর যৌথ গবেষণা হলে দুই পক্ষই খরচটা শেয়ার করতে পারে।

আরেকটা বিষয় আপনার লেখায় আসেনি সে হয়তো আপনি শুধু বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট দেখতে চেয়েছেন বলে, তা হলো এই বাঁধ হলে বাঁধের ভাটিতে থাকা ভারতের ভূমি ও জনগণের কী সমস্যা হবে। ঐ অঞ্চলের বিপুল জনগোষ্ঠীর ভূমিছাড়া হওয়ার কথা। তারা প্রতিবাদ করছে বলেও শুনেছি।

অবশ্যই এটি আমার লেখার একটি দুর্বল দিক আর এজন্যই শিরোনামটাতে বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট দিয়েছি। ভারতের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করতে যে পরিমান তথ্য ও সংবাদ দরকার তা এই মূহুর্তে নেই। বাংলাদেশের তথ্য যোগাড় করতেই অনেক পথ অবলম্বন করতে হয়েছে। ভবিষ্যতে তথ্য পেলে অবশ্যই যোগ করব।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ জাহিদ। আপনার সময় নিয়ে চমৎকার জবাবের জন্য কৃতজ্ঞতা। টিপাইমুখ বাঁধ সম্পর্কে আপনার এই দেশপ্রেমি চেষ্টা সফল হোক।

আন্তর্জাতিক পানি আইনের লিংকটা কাজ করছে না। এই আইনটি কি গৃহীত হয়েছে?
পিনাক রঞ্জন কেন রেটিফাইড না হওয়া সম্পর্কে কিছু একটা বলেছিলেন।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

সচল জাহিদ এর ছবি

দুঃখিত ভাইয়া। আন্তর্জাতিক পানি আইনের লিঙ্কটি এখানে ঠিক করে দিলাম। এটি ২১ মে, ১৯৯৭ এ জাতিসংঘের সাধারণ সম্মেলনে গৃহীত হয়।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অম্লান অভি এর ছবি

আমি তাদের মেনুফেস্ট পছন্দ করি কিন্তু বাস্তবায়ন!
তাই যদিও ডিজিটাল শব্দটা নিয়ে মাতামাতি হয় তথাপি ডিজিটাল রাজ্যে বিচরণ নেহাত কম বলে মনে হয়। তাই তাদের দৃষ্টি গোচর হওয়া অবান্তর।
আপনার এই লেখাটি সত্যিই তাদের হাতে তুলে দেয়া দরকার যারা দেশকে ভালোবাসে। অনেকেই বোঝে না অক্সিজেনের জন্য গাছ দরকার। কেউ কেউ তা বুঝিয়ে দিতে হয়। তেমনি এই বিষয়টি এমন যুক্তিগ্রাহী করে উপস্থাপন আমার কমই পড়া হয়েছে।
ধন্যবাদ।

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ অভি ভাই। চেষ্টা করেছি তথ্যবহুল ও যুক্তিসংগত কিছু লিখতে। আসলে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এর প্রভাব আসলেই ভয়াবহ হবে বাংলাদেশে। আমাদের যেকোন মূল্যে এটির বাস্তবায়ন বন্ধ করা উচিৎ।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

জাহিদ ভাই, আপনি যে কাজটা করলেন, এর কোনো তুলনা নাই।

এটা শেষপর্ব... মানে হইলো যে এরপরে আর আসবে না এই সিরিজটা। আস্তে ধীরে প্রথম পাতা থেকে হারিয়ে যাবে এই সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পোস্টটা।
তাই আমি প্রস্তাব করছি এটাকে সহি সালামতে নজরদারিতে রাখার মতো করে কোথাও লটকে রাখা যায় কি না? মডুগন যদি একটু ভেবে দেখেন...
আমাদের দেশজ নীতি নির্ধারকদের তো সাধারণত নিজেদের আখের ছাড়া আর কিছুই নজরে আসে না। তবু এটাকে লটকে ফটকে রেখে যদি একটু কারো চোখে পড়ে। আশা করি না, নিরাশ হইতেও মঞ্চায় না।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ নজু ভাই। মডারেটরদেরও অসংখ্য ধন্যবাদ লেখাটির মন্তব্য আহবান করে সেটিকে প্রথম পাতায় রাখতে।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

স্বাধীন এর ছবি

জাহিদের লেখাটি টিপাইমুখ বাঁধের সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব কি কি হতে পারে তার উপর এ পর্যন্ত পড়া সকল লেখার মধ্যে সেরা। লেখাটিতে অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং একজন পানি প্রকৌশলি হিসেবে লেখকের নিজের মতামতও এসেছে। সে জন্য জাহিদকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং আমার মতে লেখাটি স্টিকি করে রাখা উচিত যেন কেউ লেখাটি কোনভাবে মিস্‌ না করে। আমি নিজেও একজন পানি প্রকৌশলি এবং জাহিদের সকল বক্তব্যের সাথেই সহমত প্রকাশ করছি। আজকের লেখায় আমি আমাদের কি কি করণীয় হতে পারে সে সম্পর্কে আমার ব্যাক্তিগত কিছু মতামত দিচ্ছি। এবং আশা করি আমরা সকলেই যার যার মতামত গুলো তুলে ধরি এবং সেখান হতে আমরা একটি গাইডলাইন দাঁড় করাতে পারবো। আমরা আমাদের সেই স্বীদ্ধান্তগুলো আমাদের সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠাতে পারি।

বাঁধ বা ব্যারাজ এর ফলে কি হবে তা আমাদের সংসদীয় কমিটি অল্প বিস্তর জানেন বলেই আমার বিশ্বাস। IWM এর অপ্রকাশিত রিপোর্ট করা হয়েছে সরকারের নির্দেশে এবং সেটার রিপোর্ট একমাত্র সরকারের কাছেই আছে। তাছাড়া সংসদীয় কমিটিতে মনোয়ার স্যার আছেন যিনি নিজে একজন morphology বিশেষজ্ঞ। এ ছাড়া আরো অনেক বিশেষজ্ঞের বক্তব্য এর মাঝেই বেশ কিছু পত্রিকায় এসেছে। সুতরাং বাঁধের প্রভাব আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে কি হবে তা তাঁরা জানেন। তারপরও জাহিদের লেখার কপি আমরা তাঁদের কাছে পাঠাতে পারি। সে ক্ষেত্রে জাহিদকে বলবো লেখাটিকে পরিমার্জিত করে দশ পাতার মধ্যে নিয়ে এসে মূল কথাগুলো তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন বানাতে।

কথা হল সমাধাণ বিশেষজ্ঞদের হাতে খুব বেশি নয়। সমাধাণ রাজনীতিবিদ বা দেশের নেতৃত্বের হাতে। তাঁরা যদি দেশের পরিণাম জেনেও কিছু না করতে চায় তবে আমাদের বিকল্প পথ চিন্তা করতে হবে। আমরা বরং বিকল্প গুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করি।

আমি যদি ধাঁপে ধাঁপে চিন্তা করি –

প্রথমতঃ ইন্ডিয়ার কাছে বিদ্যুতের জন্য বা বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য বাঁধ বিকল্প কোন পথ আছে কিনা সেটা বের করা।

দ্বিতীয়তঃ বিদ্যুতের জন্য আমাদের কোন বিকল্প আছে কিনা সেটা জানা। বা বাঁধ যদি দেওয়াই হয় তবে আমাদের বিকল্প বা করণীয় কি হতে পারে?

তৃতীয়তঃ আন্ত নদী গুলো সম্পর্কে দু'দেশের অবস্থান। তাঁরা সেঁচ করবেই কিনা বা ব্রম্মপুত্র হতেও পানি সরাবে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া। মোট কথা এক সাথে সকল আন্ত নদী সম্পর্কে একটি চুক্তিতে আসা। সেই চুক্তিতে বাংলাদেশের অবস্থান কি হবে তা ঠিক করা। আমরা একবার বরাক নিয়ে তারপর ব্রম্মপুত্র নিয়ে আন্দোলন করবো, এভাবে বারবার সময় নষ্ট করতে পারি না।

চতুর্থতঃ ইন্ডিয়া আমাদের কথা কেন শুনবে? ইন্ডিয়াকে কিভাবে আমাদের মতামত গ্রহন করানো / বা শুনানো যায় তার জন্য সম্ভাব্য পথ গুলো চিন্তা করা। তারপর ইন্ডিয়া যদি আমাদের কথা একদমই না মানতে চায় তবে আমাদের শেষ বিকল্প কি হতে পারে তা চিন্তা করা।

পঞ্চমতঃ আমাদের দেশের সরকার বা বিরোধী দল কি দেশের স্বার্থ দেখছে? যদি না দেখে তবে আমাদের কি করণীয়। এটা দুঃখজনক যে আমাদেরকেই আমাদের দেশের রাজনীতিবিদের বুঝানোর কথা চিন্তা করতে হচ্ছে।

আর কোন পয়েন্ট প্রয়োজন মনে করলে দয়া করে জানাবেন।

প্রথম পয়েন্টের জবাবে বলতে পারি ইন্ডিয়া আমেরিকার সাথে নিউক্লিয়ার এনার্জির চুক্তি করেছে বলে পেপারে দেখেছি, যেটা জাহিদের লেখায়ও এসেছে। যদি বিদ্যুতের সমাধাণ অন্যখাত হতে পাওয়া যায় তবে শুধু বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য বাঁধ অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। জাহিদের লেখায় যেটা এসেছে বাঁধ সাময়িক ভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও, লং টার্মে বন্যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। কারণ বাঁধের ফলে যে অতিরিক্ত ক্ষয় হবে তা আবার ভাটিতে জমে নদীর ভূমির তলদেশের উচ্চতা বাড়িয়ে দিবে। তখন আগে যে প্রবাহতে বন্যা হতো না, তাতেই এখন বন্যা হবে। মনে রাখতে হবে যে বন্যা অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে হয় না, হয় পানির উচ্চতার জন্য। নদীর তলদেশ উচ্চে উঠে আসার কারণে এখন অল্প প্রবাহেই পানির উচ্চতা আগের মতই হতে পারে এবং বন্যা হতে পারে। এ কারণেই এখন বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য বাঁধের কথা না বলে বলা হয় বন্যার সাথে বসবাস উপযোগী ব্যবস্থা নেওয়াই হল সবচেয়ে উত্তম। যেমন উচ্চস্থানে বাড়ি করা বা বেশি পানি উপযোগী ধান বা উচু রাস্তা এবং রাস্তার মাঝে মাঝে কালভার্ট করা যেন বন্যার পানির প্রবাহ ঠিক থাকে, নদীর তলদেশ খনন করে নদীর প্রবাহশক্তি বাড়ানো, হাওর, বিল বা পুকুর খনন করে বন্যার পানি সংরক্ষন ইত্যাদি। যেটাকে আমরা বলি non-structural measure। তবে পরিবেশের ক্ষতি কম করে বাঁধ বানানো সম্ভব বলে আমার জানা নেই। যে কারণে আজ উন্নত বিশ্বে আর কোন নতুন বাঁধ তৈরির প্রকল্প হাতে নেয় না। ইউরোপ বা আমেরিকায় যত বাঁধ হয়েছে তা হয়েছে তখন যখন জলবিদ্যুত ভিন্ন অন্য কোন বিকল্প ছিল না।

দ্বিতীয় পয়েন্টের জবাবে বলতে পারি বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য বিকল্প হিসেবে সচলে বেশ কিছু লেখা এসেছে। নিউক্লিয়ার এনার্জির কথা আমরাও চিন্তা করতে পারি। নিউক্লিয়ার এনার্জির প্রধান সমস্যা প্রাথমিক বিনোয়গের অর্থ এবং নিউক্লিয়ার বর্জ্য। প্রয়োজন মনে করলে আমেরিকার সাথে আমরাও চুক্তি করতে পারি নিউক্লিয়ার এনার্জির জন্য। আমাদের দেশে বিদ্যুতের চাহিদা যেভাবে বাড়ছে আমাদেরকে বিকপ্ল কিছু চিন্তা করতেই হবে। সবচেয়ে খারাপ যদি হয় যে আমরা কোনভাবেই ইন্ডিয়াকে বাঁধ করা থেকে বিরত রাখতে পারছি না তবে যেন মন্দের ভাল হিসেবে ক্ষতিপূরণ হিসেবে আমরা স্বল্প দামে বিদ্যুত কিনতে পারি তার জন্য নেগোসিয়েশন করা যেতে পারে। আমি বলেছি এটা হতে পারে একদম শেষ বিকল্প, এখানে ভারত প্রেম কিংবা আমেরিকা প্রেম আবিষ্কারের চিন্তা আমাদের আলোচনাকে শুধু ভিন্ন পথেই প্রবাহিত করবে। বাঁধ যদি দেওয়াই হয় তবে বাঁধের প্রভাব কি হবে তার জন্য পর্যাপ্ত ও নির্দিষ্ট ডাটা নিয়ে two-dimensional hydrodynamic and morphological model দিয়ে দেখতে হবে আমাদের হাওড় গুলো এবং নদী গুলোর কি হবে। IWM যে স্টাডি করেছিল তা শুধু হাইড্রোলজিকাল এবং হাইড্রোডাইনামিকাল মডেল এবং তারও তথ্য কল্পনা করে। কোন মর্ফোলজিকাল এন্যালাইসিস করা হয়নি। কিন্ত মর্ফোলজিকাল মডেল চালানো খুবই জরুরী। মর্ফোলজিকাল মডেল এর মাধ্যমে জানা যাবে নদীর কোথায় কোথায় ভাংগতে পারে আর কোথায় পলি পড়তে পারে। যদি শহরের আশে পাশে ভাঙ্গনের প্রেডিকশন থাকে তবে শহর রক্ষা বাঁধের জন্য চিন্তা করতে হবে। যেখানে পলি জমবে সেখানে ড্রেজিং করতে হবে। দরকার হলে হাওর এর পানি প্রবাহের জন্য কৃত্রিম খাল খনন করা যেতে পারে। মোট কথা যদি বাঁধ দেওয়াই হয় সেটাকে মোকাবেলা করার জন্য এ ধরণের স্টাডি করতেই হবে। এবং সেটা প্রতি বছর করতে হবে যতদিন না নদী তার নতুন প্রবাহের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছে। এ ধরণের স্টাডি সরকার লুকিয়ে না করে IWM এবং বুয়েটের পানি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে করতে পারেন। এবং স্টাডি থেকে আমাদের ক্ষয় ক্ষতির একটি আনুমানিক আর্থিক হিসেব করা প্রয়োজনীয়। যদি ইন্ডিয়াকে বাঁধ বানানো থেকে বিরত না রাখা যায় তবে সে ক্ষেত্রে এসব ক্ষতি পূরণ আদায়ের জন্য নেগোসোশিয়েন করা যেতে পারে। এই সব করণীয়র প্রশ্ন আসবে তখনই যদি ইন্ডিয়া বাঁধ বানায়ই তবে।

তৃতীয় পয়েন্টের জবাবে আন্তনদী সম্পর্কে আমার ব্যক্তিগত অবস্থান হচ্ছে আন্তঅর্জাতিক আইনে যা বলা আছে সে আলোকে দু’দেশের মধ্য সকল আন্তনদী নিয়ে চুক্তি করা বিশেষ প্রয়োজন। এবং সেটা এখন করাই সবচেয়ে উত্তম। এটা করার জন্য দু’দেশের সকল রাজনীতিবিদ দের নিয়ে করতে হবে কারণ চুক্তির মূল বিষয় থাকে সকল সরকারের সময় চুক্তির ধারাবাহিকতা। চুক্তি যেন অবশ্যই পাঁচ বা দশ বছর পর পর পর্যালোচনা করা হয় এবং তা নবায়ণ করা হয়।

চতুর্থ পয়েন্ট হল সবচেয়ে কঠিন আমার মতে। এ ব্যাপারে সকলের বাস্তব সম্মত মতামত কামনা করছি। এ ব্যাপারে আমার মতামত হল সময় এসেছে ইন্ডিয়াকে মেসেজ দেওয়া যে দেশের স্বার্থ বিরোধী কোন কিছু মেনে নেওয়ার দিন ফুঁরিয়ে গেছে। প্রথমত করণীয় সকল রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজ, পেশাজীবি, সুর্ব সাধারণের বিরোধ ভুলে দেখানো যে দেশের স্বার্থবিরোধী কিছুতে জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকে। আমাদের মাঝের হাসিনা বা খালেদা, বাম বা ডান এই সব বিরোধের ফায়দা লুটে বহিরাশক্তিরা। একদিকে পাকি মারে অন্যদিকে ভারত মারে। মাঝখানে নিরীহ মানুষ মরে। আমি মনে করি বহিরাশক্তি যদি দেখে যে দেশ স্বার্থ বিরোধী যে কোন কিছুতে আমরা ঐক্যবদ্ধ তখন যে কোন কিছু করার আগে দু’বার ভাববে। সমস্যা হল রাজনীতিবিদদের সকলকে এক সুঁরে কথা বলাতে বাধ্য করা। এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সেটার জন্যই আমার পঞ্চম পয়েন্টের অবতারণা। আশা করি আরো কিছু মতামত আসবে সকলের মন্তব্য হতে। আমরা কি হার্ড লাইনে যেতে পারি কিনা সেটাও আলোচনায় আসতে পারে। মনে রাখতে হবে আমরা অনেক ক্ষেত্রেই ভারতের উপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল। সুতরাং আমরা আসলে কতটুকু করতে পারি সেটা আলোচনায় আসতে পারে। হার্ড লাইন সম্পর্কে আমার নিজের বক্তব্য হল ভাটির পনের কোটি মানুষকে ধীরে ধীরে মেরে ফেলার কোন যুক্তি ইন্ডীয়ার থাকতে পারে না। এটা মানবিধাকারের চরম লঙ্ঘন। ফারাক্কার কারনে আজ দেশের একাংশ মরুভুমিতে পরিণত। এখন এই বাঁধ ও ফুলরতলের ব্যারাজের কারণে বাকি অংশও মরুভুমিতে পরিণত হবে। তারপর ব্রম্মপুত্র থেকে পানি সরালে এই পনের কোটি মানুষ এমনিতেই না খেয়ে ধুঁকে ধুঁকে মরবে। আমাদেরকে যদি দেয়ালে পিঠ ঠেকাতে তারা বাধ্য করেই তবে আমাদেরও যুদ্ধ বিনা কোন গতি নেই। আমি বলছি না আমরা যুদ্ধে যাচ্ছি, কিন্তু ইন্ডিয়াকে মেসেজ দেওয়া যে আমরা দেশের স্বার্থে সেটি চিন্তা করতে পিছপা হব না। এখন ইন্ডিয়ার ডিসিশন নেবার পালা তারা প্রতিবেশি দু’ই দেশের সাথে যুদ্ধে যাবার ঝুকি নিবে কি নিবে না। অনেকটা বল তাঁদের কোর্টে ঠেলে দিয়ে দেখা তারা কি করে। এই ব্যাপারে সকলের আরো সুচিন্তিত মতামত কামণা করছি। তবে হার্ড লাইনে যাবার আগে আর্ন্তজাতিক আদালতে যাবার বিকল্প আমাদের হাতে আছে, যদিও সেটা কতটুকু ফলপ্রসু হবে আমার ধারণা নেই।

সবশেষে, কিভাবে সরকারকে এবং বিরোধী দলকে এবং অন্যান্য রাজনীতিবিদ বা সুশীল সমাজকে বাধ্য করা যায় জনগণের কথা শুনতে। জনগণের মেসেজটা কিভাবে সরকারের কানে প্রবেশ করা যায়। আমার মতে মিডিয়া চেষ্ট কছে, প্রতিটী ব্লগ মাধ্যম চেষ্টা করছে । বাম দল গুলো ও চেষ্টা করছে। সবাই বিচ্ছিন্ন ভাবে চিন্তা করছে এবং চেষ্টা করছে তাদের কথাগুলো বলার জন্য।

সচলের পক্ষ থেকে আমরা কি কিছু করতে পারি? আমরা যদি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সরব হতে পারি, মুক্তিযোদ্ধার সাহায্যে এক হতে পারি, তবে দেশের এ রকম ক্রান্তি লগ্নে কিছু করার চেষ্টা করতেই পারি। একবারেই সফলতা চলে আসবে এমন ভাবনা করিনা। কিন্তু নিজেকে তো বুঝাতে পারবো চেষ্টাতো করেছি। প্রথমত যেটা করতে পারি, এই আলোচনায় অংশগ্রহন করে নিজেদের মতামত দিতে পারি। আগামী এক মাসের বা দু’সপ্তাহের মাঝে আমরা সকলের মতামতের উপর ভিক্তি করে আমাদের দেশের কি কি করণীয় তার উপর একটি রিপোর্ট তৈরী করতে পারি। রিপোর্টে জাহিদের লেখাটির মূল বক্তব্য এবং আমাদের করণীয় সম্পর্কিত বক্তব্য থাকবে। এ জন্য জাহিদকে প্রধান করে তিন বা পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করতে পারি। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজের সুবাদে আমি জাহিদকে এ ব্যাপারে যথাসম্ভব সাহায্য করতে পারি। ইশতির যদি আপত্তি না থাকে তবে আমি ইশতিকেও বলবো আমাদের সাথে থাকতে। আর কেউ আগ্রহী হলে জানাতে পারেন বা অন্য কারোর নাম প্রস্তাব করতে পারেন।

দ্বিতীয়ত যেটা করতে পারি আমরা একটি দিন ঠিক করতে পারি, যে দিন বিশ্বের প্রতিটি শহরে বাজ্ঞালীরা গ্রিনিচ সময়ে এক সাথে প্রতিবাদ সমাবেশ করতে পারি এবং সে দিন আমাদের রিপোর্টটি সংসদীয় কমিটি বা সরকারের কাছে ও সকল পত্রিকায় পৌঁছে দিতে পারি। সেটা দশ জনের হোক বা একশত জনের হোক। আমরা সবাই যার যার পক্ষ থেকে জনসংযোগ শুরু করতে পারি। আমরা সকল মিডিয়ার কাছে যেতে পারি সাহায্যের জন্য, সকল ব্লগের সাহায্য নিতে পারি। আমরা সকল রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজ, পেশাজীবি, সর্ব সাধারণ এর কাছে আমাদের বার্তা পৌছে দিতে পারি। দিনটি আজ থেকে এক মাস পর হলে ভাল হয়। এর মাঝে আমরা জনসংযোগ করতে পারি এবং আমাদের রিপোর্টটি প্রস্তুত করতে পারি। প্রবাসীদের কথা চিন্তা করে শনি বা রোববার করতে পারি। বাংলাদেশের সকল বিভাগে বা জেলায় করতে পারি। যেখানেই সচলেরা আছেন তাঁরা দ্বায়িত্ব নিতে পারেন। এডমন্টণ শহরের দ্বায়িত্ব আমি এবং জাহিদ হাতে নিতে পারি।

আমার উদ্দেশ্য সকলের আলোচনা হতে একটি করণীয় ঠিক করা, যেটাকে আমরা সামনে রেখে এগোতে পারি। যে কোন কিছুতে নামার আগে সর্বপ্রথম লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। আসুন আমরা সকলে আগে সেই লক্ষ্যটি ঠিক করি, ঠিক করি আমরা আসলে কি চাই। দ্বিতীয়টি যদি আমাদের পক্ষে আয়োজন করা সম্ভব নাও হয় ক্ষতি নেই। আমরা রিপোর্টটি তৈরি করি এবং সেই রিপোর্ট আমরা সকল পত্রিকায় ও সরকারে কাছে এক সাথে তুলে দিব। তারপর দেশের জনগণ নিজেদের ভাগ্য বেছে নিক।

স্বাধীন এর ছবি

লেখাটি লিখেছিলাম নিজের ব্লগে প্রকাশ করবো বলে। কিন্তু জাহিদের লেখার পর মন্তব্যে দেওয়াই উত্তম মনে করলাম। যা হোক সকলের মতামত আশা করছি।

সচল জাহিদ এর ছবি

স্বাধীন ভাই আমি আপনাকে অনুরোধ করছি লেখাটি আপনার ব্লগে পুনর্প্রকাশ করতে। মন্তব্য হিসেবে নয় এটি পোষ্ট আকারে আশা উচিৎ যেখানে আমাদের সচল থেকে পরবর্তী আন্দোলনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রথমেই, হ্যাটস অফ টু ইউ রিপন! এবার বইটা তৈরি করা শুরু করে দাও।

আমি খুব আশাবাদী মানুষ না, তাই সচল থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম করার ব্যাপারে কিছু বলব না। আমার বোধ বলে ভারত যা করতে চায় (অন্তত নিজের দেশে এবং দুর্বল প্রতিবেশীদের সাথে), সে তাই করতে পারে এবং করে - তা সেটা ন্যায় হোক আর অন্যায় হোক। এতে ভারতের গুনাহ হয় না। অন্যায় করলেও ভারতকে সাজা দেবার কথা কারো পক্ষে ভাবা সম্ভব না।

প্রতিবেশী শক্তিশালী হলে এমন সব ঘটনায় কী হয় তা নীল নদের পানি বন্টনের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ভারত-নেপালের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে। তাই আমাদের ভবিষ্যতে এমন আরো হাজারোটা ইস্যু যেগুলো আসতে যাচ্ছে সেগুলো নিয়ে আমাদের ভিন্ন ধরণের চিন্তা-ভাবনা করতে হবে।

তোমার প্রাক্তন সহকর্মীর আচরণে বিস্মিত বা ক্ষুদ্ধ হয়োনা। এটা মনে হয় ইতিহাসের ধারা। তাঁর আরেক সহকর্মী (বর্তমানে প্রয়াত) ফারাক্কা বাঁধ নিয়ে যা করেছিলেন তা কলঙ্কজনক ইতিহাস হয়ে আছে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সচল জাহিদ এর ছবি

ভাইয়া সত্যি বলতে কি আমার ভারতের ভূমিকার চেয়ে বাংলাদেশের ভূমিকা নিয়েই বেশী চিন্তা হয়। মিডিয়ার কাছে উল্টা পাল্টা কথা বলে এরা না বিষয়টিকেই হাস্যকর করে তুলে। এরা হইয় পড়াশুনা করে কথা বলুক অথবা যারা বিষয়টা বুঝে তাদের দিয়ে বলাক। এরা কিছু না জেনে উল্টা পাল্টা কিছু বলে ফেললেত সরকারই বিপদে পড়বে, হাজার হোক সংসদীয় কমিটির প্রধানত। ইতিমধ্যে দিগন্তের মন্তব্যে পড়েছেন ভারতেই রাজ্জাক সাহেবের বিবৃতি নিয়ে সবাই দ্বিধা দ্বন্দে পড়ে গিয়েছে।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

ভুতুম এর ছবি

গঠনমূলক মন্তব্য করার জ্ঞান নাই, তাই উৎসাহ দিয়ে গেলাম শুধু। চমৎকার লেখা, আর ইবই প্রকাশ করার উদ্যোগটাও চমৎকার।

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

সচল জাহিদ এর ছবি

আসলে কিছুটা ফিডব্যাক আশা করছিলাম। যাই হোক উৎসাহ দেবার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

প্রিয়তে ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ নুরু ভাই ।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

সাতদিন ধরে পড়লাম। টিপাইমুখ নিয়ে যত লেখা পড়েছি, যত আলোচনা শুনেছি এর চেয়ে ভালো তথ্য কোথাও পাইনি। পুরো লেখাটা বই আকারে সরকারের কাছে উপস্থাপন করা উচিত। সংসদীয় কমিটির উপর আমাদের আস্থা নেই। সরকারের কর্তাদের কথাবার্তার মধ্যে ভারসাম্যের যথেস্ট অভাব রয়েছে। ভারসাম্য আনার জন্য এই সিরিজটা সংসদে পড়ানো উচিত বলে মনে করি আমি।

এরকম চমৎকার একটা সিরিজ দেয়ার জন্য জাহিদ ভাইকে অভিনন্দন!!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ নীড় সন্ধানী। বইয়ের কাজে হাত দিচ্ছি শীঘ্রই।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

রাফি এর ছবি

স্যার একটি কষ্টসাধ্য এবং উপভোগ্য সিরিজ উপহার দেয়ায় অভিনন্দন।
ই-বুক তো অবশ্যই হবে, হওয়া উচিত। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, শুধু অন্তর্জালে নয়; এই লেখাটার বহুল প্রচার হওয়া উচিত জাতীয় পত্রপত্রিকায়ও। স্যার আপনি প্রথম আলো এবং daily star এ এই লেখাটা দিয়ে দেখতে পারেন।
কোনভাবে biased না হলে ওরা ছাপবে।

ই-বুকের অপেক্ষায় রইলাম

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

সচল জাহিদ এর ছবি

রাফি চেষ্টা করছি প্রকাশের জন্য। নজু ভাই সাহায্য করছেন, দেখি কি হয়।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

হিমু এর ছবি

কারো কাছে শাহদীন মালিকের ইমেইল ঠিকানা থাকলে তাঁকে লিঙ্কটা দিতে পারেন। তিনি নাকি হন্যে হয়ে একটা বই খুঁজছেন।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সচল জাহিদ এর ছবি

হ্যা আমিও তার এই কলামটা পড়েছি। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ঘেটে তাকে ইমেইলে পাঠিয়ে দিলাম লিঙ্কগুলি।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

গঙ্গার পানিচুক্তি নিয়ে আপনার সিরিজটা পড়ার পর থেকে টিপাইমুখ নিয়ে আপনার একটা সিরিজের অপেক্ষায় ছিলাম, কারণ অন্তত একজন পানিসম্পদ প্রকৌশলীর কাছ থেকে একটা পর্যালোচনা দরকার ছিল, তাছাড়া আপনার একজন প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে জানারও কৌতুহল ছিল। একবার পড়েছি পুরোটা, আবার পড়তে হবে, তারপর হয়তো প্রশ্ন করতে পারি ২-১টা। ধন্যবাদ।

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ পাঠক। তোমার কিছু জিজ্ঞাস্য থাকলে অবশ্যই জানাবে, চেষ্টা করব তার উত্তর খুঁজে বের করতে।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

সচল জাহিদ এর ছবি

লেখাটির একটি সার সংক্ষেপ গত ২১ আগষ্ট প্রথম আলোতে প্রকাশিত হলো ।

এখানে দেখুন

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

প্রথম আলোয় পাঠিয়ে ‍‌দারুন কাজ করেছেন। আরো অনেক পাঠকের কাছে মেসেজগুলো যাবার দরকার ছিল।

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।