বোদরুম, তুরস্ক: এজিয়ান সাগরধারে ওরিয়েন্ট আর ইউরোপ (এক)

তীরন্দাজ এর ছবি
লিখেছেন তীরন্দাজ (তারিখ: শুক্র, ১২/১০/২০১২ - ১১:০৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


তুরস্কের বোদরুমে যে সূর্য সারাদিন আলো দেয়, দিনশেষে অস্ত যায় গ্রীসের কোনো এক পাহাড়ের আড়ালে। না গিয়েও উপায় নেই। তুরস্কের আশেপাশে এজিয়ান সাগরের বুক ফুড়ে ভেসে ওঠা যত পাহাড়, তাদের নব্বুই ভাগই গ্রীসের দখলে। এসবের কারণ জানতে হলে ইতিহাস ঘাটতে হয়। আপাতত নাহয় নাই ঘাটলাম। তবে আতাতুর্কের দেশ তুরস্কে এসে ইউরোপ আর ওরিয়েন্টাল মানসিকতার সংমিশ্রণে যে সমাজ তৈরি, আমাকে টানছে খুব। আমার নিজের ভেতরে মিলেমিশে যা সৃষ্টি হয়েছে এত বছরের প্রবাসী জীবনে, এখানকার দৈনন্দিন জীবনধারা অনেকটা সেই মালাতেই গাঁথা।

তুরস্কে আসি আসি করেও অনেকদিন ধরেই আসা হয়নি। বছরের কর্মব্যস্ত দিনগুলোর পর যতোটা বিশ্রাম দরকার, ততোটা এখানে পাব কি না, এই নিয়ে সন্দেহই হয়তো তার কারণ। তবে অক্টোবরের এই শুরুতে শীতের আগে বাকী উষ্ণতার রেশটুকু কোথায় এখনও বিদ্যমান, সেটি খুঁজতে খুঁজতে বোদরুমই বেছে ফেললাম। “অল ইনক্লুসিভ” ট্যুরিজমে আমার তেমন একটা আগ্রহ নেই। আজকালের কর্পোরেট বিশ্বের সুপারমার্কেটের তাকে থরে থরে সাজান হাজারো ভোগ্য দ্রব্যের মতোই এই “অল ইনক্লুসিভ” ট্যুরিজম। এর ভেতরে নিজস্ব কোনো স্বকীয়তা থাকে না, বাকী সবার সাথে মিলে মিশে গড্ডালিকা প্রবাহের মতো ভাসিয়ে দেয়া নিজেকে পছন্দ হয় না আমার। তারপরও সেটিই বেছে নিলাম। তবে হোটেলের গণ্ডি পেরিয়ে নিজের ইচ্ছেমত এদিক সেদিক চোখ মেলে তাকানো ও ঘুরে বেড়ানোর অধিকার হরণ করে কে? এ বিষয়ে আমরা দুজনেরই একই রুচিবোধ।

তেতালার বারান্দায় বসে এজিয়ান সমুদ্রে চোখ রেখে লিখছিলাম। পাহাড় ঘেঁসে একটু উঁচুতে আমাদের এই হোটেল। আশে পাশে পাহাড়ের গা ঘেঁসে ঘেঁসে একই আদলের হাজারে হাজারে বাড়ী। বেশিরভাগই অবকাশ যাপনের জন্যে তৈরি। ধণাট্য তুর্কী থেকে শুরু করে ইউরোপের অনেকেই বাড়ি কেনে এখানে। কেউ কেউ বছরে একবার দুবার এসেই খুশি, কিছু কিছু ভাড়াও দেয়া হয়। যেহেতু তুরস্ক ইউরো-ভুক্ত দেশ নয়, সুলভে টুরিস্টদের টানার সুযোগ এখনও তাদের হাতে, সে সুযোগটিই তারা নিচ্ছে ব্যাপক হারে। মাঝে মাঝে ইউরোপের অনুকরণে এতো বাড়াবাড়ি, রুচিশীল তা টুরিস্টদের বিরক্তই করে। বারান্দায় বসে মাঝে মাঝে সমুদ্রে চোখ রেখে লিখছিলাম। বাঁদিকে সুইমিং পুলে বিকট আওয়াজে বাদ্য-বাজনা শুরু হয়ে গেল। যারা সকালের রোদো সাঁতার কাটতে নেমেছে, তাদের জন্যে এই গানবাজনা সুখকর হলেও আমার বউ বারান্দা ছেড়ে পালাল ঘরে। আমিও এই বাক্যটি লিখেই তারই পথ ধরব। হয়তো কোনো গাড়ী বা ডলমুশ (পাবলিক মাইক্রো-বাস) ধরে ঘুরে বেড়াবো আশে পাশে কোথাও। বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়াতেই আনন্দ বেশি।

বোদরুম বিমান বন্দরে বেরুনোর সাথে সাথেই ভেজা সোঁদা মাটির পরিচিত গন্ধ লাগে নাকে। এ গন্ধ আজ অবধি এশিয়ার বাইরে কোথাও পাই নি। দেশে যাবার সময় দুবাই বা আবু ধাবি বিমান বন্দর থেকে শুরু করে মাঝে মাঝে দিল্লি হয়ে ঢাকা বিমান বন্দর অবধি তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। বুকের ভেতরে তখন অন্যরকম এক ফিরে পাওয়ার অনুভূতি বাজে। বাইরে বেরিয়ে কিছু ঘরবাড়ি আর দোকানপাট দেখে সে অনুভূতি কিছুক্ষণ রয়ে গেলেও পরে কমে গেলো অনেক খানি। বোদরুমে অন্ততপক্ষে বাইরে বাইরে ইউরোপিয়ান প্রভাবই বেশী। ইউরোপের ধনী দেশের টুরিস্ট আসে সময় কাটাতে, সুতরাং সেটি না হলে চলবে কি করে। তবে ভেতরে ভেতরে ওরিয়েন্টাল, সেটি পরিষ্কার। এর খারাপ দিকটি হচ্ছে দাসত্ব। আর এখানেই মজা ইউরোপিয়ান টুরিস্টদের। অল্প খরচে প্রভুত্বের আস্বাদ! হোটেলে তুর্কী দাসের মতোই সেবা অতিথিদের। যেহেতু “অল ইনক্লুসিভ”, খাবার দাবারের সাথে দাসত্বও তারই একটি। হোটেল তো বটেই, হোটেলের জন্যে নির্ধারিত সমুদ্র সৈকতেও তার অন্যথা নেই। সেখানেও সবরকম পানীয় নিয়ে তুর্কিরা সেবার জন্যে তৈরি। তবে সবখানেই একটি পয়সা ফেলার বাক্স নজর কাড়ে। তার গায়ে লেখা, টিপ বক্স বা বকশিসের বাক্স! দাসদের যদি কেউ অনুকম্পা করে কিছু দেয়! সরাসরি যা চাওয়ার সেটি সময়মত তো সুপারমার্কেট ট্যুরিজমের হোতারাই নিয়ে নিয়েছে। এখন বকশিশই ভরসা। এসব হোটেলের মালিক বেশিভাগই রাশিয়ান, তুর্কি কর্মচারীরা তাদের দাস মাত্র। সেজন্যেই নাক সিঁটিয়েছিল আমার একুশ বছরের ছেলে রিশাল। তার কাছে তুরস্ক এভাবে যাওয়া অর্থ, দাসত্বপ্রথাকে উৎসাহিত করা।

ইতিহাসের দেশ তুরস্ক একসময়ের রোমান রাজত্বের ছোট এশিয়া। ট্রয় নগরীর ধ্বংসস্তুপ, আমরা যেখানে আছি, সেখান থেকে ছয়শ কিলোমিটার দূরে মাত্র। সময়ের অভাবে যাওয়া হবে না সেখানে। তবে বুধবারে পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের একটি দেখতে যাচ্ছি, সেটি এফেসাস। এই এফেসাসকে কেন্দ্র করেই ছোট এশিয়া স্থাপন করেছিল রোমান সম্রাট।

জার্মানিতে খুব উঁচু নজরে দেখা হয়না তুর্কীদের। ষাটের দশকে আদর করে ডেকে আনা তুর্কী শ্রমিক এখন জার্মান সমাজের চক্ষুশূল। বছর পনেরো আগে টাকাপয়সার লোভ দেখিয়ে বিদায়ও করা হয়েছে অনেককেই। এখনও সমাজে, এমনকি টিভি ও রেডিওতে যাদেরকে নিয়ে হাসি ঠাট্টার ঝড় ওঠে, তারা তুর্কী। আজ সৈকতে বসে কিছু তুর্কী শিশুর জোর চেঁচামেচি শুনে কানে লাগলো। সাথে সাথেই নিজের ভুল বুঝতে পারলাম। এটা এদেরই দেশ, এখানে এদেরকে কেউ কিছু বলতে আসবে না। জার্মানিতে শুধু আনন্দে উচ্ছলিত জার্মান শিশুদেরই চেঁচাতে শোনা যায়। তবে জার্মানির অতিথি শ্রমিক তুর্কীদের চাইতে এখানকার তুর্কীরা অনেক আলাদা। নিজের দেশে নিজের অধিকারের স্পষ্ট ছাপ এদের চলাফেরায়। মুসলিম হলেও এরা রক্ষণশীল নয়। পথে ঘাটে চলাফেরাতেও সেটি দেখা যায়।

সৈকতে সল্পবসনা ইউরোপিয়ান দেখে অবাক হয়না ওরা। বরং নিজেরাও সেভাবেই সাঁতার কাটতে নামে। যারা রক্ষণশীল, তারা নিজেরা সে ভাবে না করলেও কাউকে বাঁধা দিতে আসবে না। অন্যদিকে তুর্কী বীর কামাল পাশা যে আধুনিকতার আলোয় তুর্কিদের আলোকিত করে গিয়েছিলেন, জার্মানিতে এসে সে আলো শুধুমাত্র নিষ্প্রভ না, নিবেই যায় বলতে হয়। এদের রক্ষণশীলতা হয়তো জার্মান সমাজের অবহেলার প্রতিবাদ। সংখ্যালঘুরা সবখানেই রক্ষণশীল, এটি পৃথিবী নানা সমাজেই প্রমাণিত। লন্ডনে সিলেটী বাংলাদেশি দেখে এই সত্যটির প্রমাণ মাসখানেক দারুণভাবে নিজেই পেয়েছি। তবে এশিয়ান তুরস্ক যে রক্ষণশীল, এখানকার মতো নয়, এটিও সত্য। এক তুর্কি ড্রাইভারকে এ কথা বলাতে সে বলল, আমরা সব খারাপ তুর্কদের পাঠিয়ে দিয়েছি জার্মানি।

এখানকার খাবারদাবারেও ওরিয়েন্টাল ও দক্ষিণ ইউরোপীয় প্রভাব স্পষ্ট। নানা ধরণের কাবাব, ভাজা গোশত, একটু মশলা, তেল ওরিয়েন্টাল, সেই সাথে প্রচুর সালাদ, জলপাই তেল, দক্ষিণ ইউরোপীয় প্রভাব। আমার জন্যে ঝাল মশলাহীন সাদাসিদা হলেও একটু ঝাল ঝাল মরিচগুড়ো মিশিয়ে উপাদেয় করার সুযোগ রয়েছে। যেহেতু ইউরোপীয় তুরস্কের টুরিস্ট এলাকাতে আছি, হয়তো হোটেলের খাবার সেদিকে নজর রেখেই তৈরি। তবে গতকাল বোদরুমের এক সাধারণ রেস্টুরেন্টে আদনা কাবাব খেয়ে খুব আলাদা বলে মনে হলো না। মিষ্টি জাতীয় খাবার আমাদের দেশের মতোই অতিরিক্ত মিষ্টি। তবে বাংলাদেশে ছানা আর চিনির বদলে এখানে বিভিন্ন ফলের ঘন সিরাপ আর ময়দার ব্যবহার সে মিষ্টিতে।

ভালো লেগেছে এখান সহজ জীবন ধারণ। জার্মানির মতো সময়ের পেছনে এখানকার লোক এতটা দৌড়ায় না। হাত দেখালে ডলমুশ যেখানে সেখানে থামে। কোনো বয়েসী কেউ ডলমুশে উঠানামায় সময় নিলে কখনো চালককে ব্যতিব্যস্ত হতে দেখিনি একবারও। অনেক সময় তাদের কাছ থেকে ভাড়াও নেয়া হয়না। মোদ্দা কথা, ইউরোপের যান্ত্রিক জীবন যাদের ভালো না লাগে, অন্ততপক্ষে তুরস্কের এই এলাকায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবে তারা।


মন্তব্য

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

ফটুকগুলা অনেক সুন্দর হইছে।

তীরন্দাজ এর ছবি

ধন্যবাদ! ভালো থাকবেন!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

ক্লোন৯৯ এর ছবি

চলুক
টার্কিস কফির ছবি কৈ?

তীরন্দাজ এর ছবি

টার্কিস কফি ভালো লাগে না বলে ‌ছবি দেই নি। পরে দিয়ে দেব।

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

ওডিন এর ছবি

আপনার লেখার ব্যপারে নতুন করে কিছু বলার নেই, তবে খাবারদাবারের ছবিগুলো বেশি ভাল্লাগলো হাসি

পরের পর্বের অপেক্ষায় হাসি

তীরন্দাজ এর ছবি

ছবিতেই ভালো। কয়েকদিন খাবার পর একঘেয়ে লাগে।

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

তাপস শর্মা এর ছবি

ভাল লাগলো চলুক

তীরন্দাজ এর ছবি

ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

ফাহিম হাসান এর ছবি

ভ্রমণকথা ভালো লাগল - চলুক

তীরন্দাজ এর ছবি

ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

কড়িকাঠুরে এর ছবি

সূর্য ডোবার ছবিটা বেশ পছন্দ হয়েছে... চলুক

তীরন্দাজ এর ছবি

অনেকগুলো তোলার পর একটা ঠিক হয়েছে। ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

তারেক অণু এর ছবি

ভালো লাগল, তুরস্ক আমার খুবই প্রিয় জায়গা।

ইয়ে, একটা ব্যাপার বুঝি নাই-- নেরোর বাঁশীতে ধ্বংস যে ট্রয় নগরী, আমরা যেখানে আছি, সেখান থেকে ছয়শ কিলোমিটার দূরে মাত্র।- এটার কি ব্যাপার?

তীরন্দাজ এর ছবি

“যখন ধ্বংসের পথে ট্রয় নগরী, তখন বাঁশি বাজাচ্ছিলেন রাজা নেরোঁ”, এমন কিছু কথা পড়েছি বলে মনে হওয়াতে লিখেছি। অন্য কোনো কাহিনীর সাথে গুলিয়ে ফেললাম কি আনন্দের উত্তেজনায়? দেখতে হবে। বইপত্র হাতের কাছে নেই আপাততঃ।
আসলে আজ আমাদের শেষ দিন এখানে। একটু অন্ধকার থাকতেই বারান্দায় বসে দিন শুরু হওয়া দেখছি। ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

নগরীটা ট্রয়ের বদলে রোম হবার কথা না?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তীরন্দাজ এর ছবি

রোম অবশ্যই ঠিক। এটি আমার অতি উত্তেজনার ফসল। দৃঃখিত ও ধন্যবাদ!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আদানা কাবাব পরিবেশনের স্টাইলও তো দেখি জর্মন্দেশের মতোই। ইফেস-যে তুরস্কের ইক্ষুরসের ব্র্যান্ড, এইটা জানতাম না। আপনে আছেন বেশ মজাতে। আজ ইয়ানো তো কাল ঐয়ানো... মন খারাপ

তীরন্দাজ এর ছবি

তোমার নজর পড়ে খালি আসল জায়গায়! এই বার মজার কথা কই। তিন নম্বর ছবিটা যে বারান্দা থেকে তোলা, সে বাড়িটা কিনতে চাচ্ছি আমরা। দাম বেশী না বলেই চিন্তা করতে পারছি। পেনশনের সময়ের জন্যে। ঠান্ডার দেশে (জার্মান) থাকতে ইচছা করে না আর! সাথে সাথে তোমাদের চার কুতুবের সাথে ওখানে বসে আড্ডার লোভ!
আজ বিকেলে ফিরছি মিউনিখে।

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ইফেস - শব্দটার মানে কী? এই নামে ঢাকায় একটা রেস্তোরাঁ আছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

উইকি বলছে ইফেস এর হিব্রু মানে হলো শূন্য। তবে তুরস্কের ইফেস নামটা এসেছে প্রাচীন গ্রিক নগরী ইফেসিউস থেকে। এই নামে দেখছি তুরস্কের একটা পানীয় কোম্পানি আছে। এই কোম্পানির মতোই ছোট বড় খাবারের দোকানগুলোর নামও গ্রিক ইফেসিউসেরই তুর্কি সংস্করণ।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

Effes বিয়ার হিসাবে মোটেও ভালো না। আমি তুর্কি দোকানে গেলে কাবাবের সাথে জার্মান বিয়ারই খাই।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

অনেক কিছু পড়ে, অনেক কিছু শুনে আমার কাছে তুরস্ককে ইইউ-ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চা বলে মনে হয়। আপনার লেখা পড়ে সে ধারণা আরো দৃঢ় হলো। এত প্রাচীন সভ্যতার একটি দেশ, তার এমন পরিণতি ভাবতেই খারাপ লাগে।

এই ফেব্রুয়ারীতে কি ঢাকা আসবেন? এবার আপনার কী বই প্রকাশিত হবে?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তীরন্দাজ এর ছবি

জানিনা, তুরস্ককে ইইউ র তিন নম্বর ছাগলের বাচ্চা বলা যায় কি না। পুরো এজিয়ান এলকাটি ঐতিহাসিক কারণেই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রভাবে প্রভাবাহ্নিত। আর নিজস্ব উদারতার কারণে এ সমস্ত প্রভাবিয় স্রোত মিলে এমন একটি অবস্থা, যেখানে ভিন্ন ভিন্ন সাংস্কৃতিক ধারা কোনো বড়ো প্রতিবন্ধক ‌ছাড়াই পাশাপাশি বাস করতে পারছে। ভালেো অর্থনৈতিক অবস্থাও এই পারস্পরিক সহঅবস্থানের সহায়ক। তুরস্কের এশিয়া অঞ্চলে চিত্র অবশ্যই অন্যরকম।

আর প্রভু-ভৃত্যের যে কথা বললাম, সেটি শুধুমাত্র ইউরোপিয়ান-তুর্কীর বেলায় খাটে না, ধনী তুর্কী আর ধণাট্য তুর্কীর বেলাতেও খাটে। এটি ওরিয়েন্টাল মানসিকতা, ইউরোপের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। ইউরোপিয়ানরা সে সুষোগ নিচ্ছে খুব আনন্দেই।

আমাদের অবস্থা তো আরো বেশী শোচনীয়, যদি প্রভু-ভৃত‌্যের কথা বলতে যাই্

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমার কথায় একটু ফাঁক আছে বস্‌। ইইউ নিয়ে তুরস্কের সরকার যা কিছু করে সেগুলোকে ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার কথা মনে করিয়ে দেয়। তুরস্কের সাধারণ মানুষের আচরণ নিয়ে আমার কোন অশ্রদ্ধা নেই। ওরিয়েন্টাল মানসিকতা নিয়ে আপনার ব্যাখ্যা সঠিক।

ফেব্রুয়ারীতে আসবেন কিনা বললেন না যে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

উজানগাঁ এর ছবি

আপনার লেখা ভ্রমণকাহিনীগুলোতে অন্যরকম একটা আমেজ থাকে। পড়তে ভালো লাগে।

তীরন্দাজ এর ছবি

ধন‌্যবাদ উজানগাঁ, ভালো থাকবেন!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

রু এর ছবি

ছবি লেখা খুব সুন্দর। খাবারের ছবি দিয়ে এমন টর্চার না করলেও পারতেন।

তীরন্দাজ এর ছবি

"টর্চারিত" হবার কোনো কারণ নেই। আমাদের দেশের খাবার এর চাইতে অনেক অনেক ভালো!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

জুন এর ছবি

খাবারগুলোর আরও ডিটেইলস জানতে ইচ্ছে করছে। দেঁতো হাসি আর কোথায় কোথায় গেলেন, সেই সপ্তম আশ্চর্যের ছবির জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। লেখা আর ছবিতে উত্তম জাঝা!

যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...

তীরন্দাজ এর ছবি

খুব বেশি ঘোরা হয়নি এবার। এফেসুস আর বোদরুম: আরেকটা পর্ব হবে। ধন‌্যবাদ!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

শাব্দিক এর ছবি

খাবারের ছবিগুলে দেখে মুখে জল ইয়ে, মানে...

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

লেখাটা ছোট মনে হল তীরুদা। কিন্তু ভাল্লাগলো হাসি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তীরন্দাজ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ! কাল লিখেছি, পরের পর্ব হয়তো বড়ো হবে। আজ ফিরছি মিউনিখে।

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

তানিম এহসান এর ছবি

চার নাম্বার ছবিটা দারুণ লাগলো, ওখানে বসে থেকেই প্রচুর সময় কাটিয়ে দেয়া সম্ভব। পরের পর্ব দেন তাড়াতাড়ি।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

পরের পর্বের অপেক্ষায়।

মুস্তাফিজ এর ছবি

তীরু'দা, আপনার যৌবনে তুরষ্কের দিনগুলো আর বর্তমানের ভ্রমণ নিয়ে একটা তুলনামূলক লেখার দাবী করে গেলাম।

...........................
Every Picture Tells a Story

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা ও ছবি দারুণ হয়েছে। টার্কিতে গিয়েছিলাম দুমাস আগে তবে হাতে সময় নিয়ে যায়নি এটাই আফসোস। কয়েক ঘণ্টা ঘুরে যা মনে হয়েছে এখানে এসে প্রাণ খুলে নিঃশ্বাস নেয়া যায়।অনেকে রক্ষনশীল হলেও অপরের উদার মানসিকতায় তাদের কষ্ট নেই।

সপরিবারে বেড়াতে আসার ইচ্ছে আছে একবার। দেখি সেই সুযোগ কবে ধরা দেয়।

অমি_বন্যা

পুতুল এর ছবি

ভাল ভ্রমন এবং বর্ণনা। দুটোর কোনটাই জীবনে হল না। ভাল লাগল পড়ে। পরের বার সংঙ্গী হওয়ার চেষ্টা করব।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।