স্মৃতির শহর ৫: ইশকুল

তাসনীম এর ছবি
লিখেছেন তাসনীম (তারিখ: বুধ, ৩১/০৩/২০১০ - ১০:০৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমাদের ইশকুলে যাবেন? আচ্ছা আচ্ছা বলে দিচ্ছি কিভাবে যেতে হবে। ফার্মগেট থেকে ঢাকা কলেজে যাওয়ার টেম্পো ধরবেন, এটাকে আমরা হেলিকপ্টার বলি। উঠলেই বুঝবেন নামকরণ কতখানি সার্থক। ভট ভট শব্দে কানের পোকা আর ঝাঁকানিতে বাতের ব্যথার অনেকখানি উপশম হতে পারে। যাওয়ার পথটা কিন্তু দারুন, একদম "সিনিক"। হেলিকপ্টার আপনাকে গ্রীন রোড ধরে সোজা কাঁঠাল বাগান পার করে উড়িয়ে নিয়ে যাবে গ্রীন কর্নারের সামনে দিয়ে, পাশে ধানমন্ডি সাত নম্বর রোডের দীঘির মত বড় পুকুর একটা। একটা জমজমাট রেঁস্তোরা পড়বে পথে, নাম ভুলে গেছি, ইচ্ছে ছিল বড় হয়েই কাবাব খাব ওই দোকানের, কিন্তু আমি বড় হতেই ওটার পঞ্চত্বপ্রাপ্তি ঘটেছে। সাইন্স ল্যাব পার হয়ে যখন আপনি ঢাকা কলেজের সামনে নেমেছেন, মাত্র দশ মিনিট পার হয়েছে! বিশ্বাস হচ্ছে না ? না হওয়ারই কি কথা, এখন বিএমডাব্লিউ হাঁকিয়েও আপনি এই পথ দশ মিনিটে পার হতে পারবেন না। স্মৃতির শহরে মনে হয় প্রতিদিনই হরতাল চলে!

ঢাকা কলেজের সামনে নেমে মরণচাঁদের মিষ্টির দোকানে একটু খাবেন নাকি? ইশকুল শুরু হতে বাকি আছে আরো কিছু সময়। ঠিক সাড়ে দশটায় মালুম ভাই ঘন্টা পিটাবেন। মালুম ভাই হচ্ছেন আমাদের স্থায়ী ঘন্টাবাদক, বয়স মনে হয় একশ-টেকশ হবে। পাকিস্তানি সেনারা বন্দুক দিয়ে পিটিয়ে সামনের দাঁতগুলো ভেঙ্গে দিয়েছে, কিন্ত তাও হাসিটা কি অমলিন! আমার নাম বললে চোখ ছলছল করে পুরানো গল্প বলা শুরু করবে, গায়ে হাত বুলিয়ে আদরও করতে পারে। স্মৃতির শহরে দয়া, মায়া আর ভালোবাসা সব এখনো অটুট আছে, ওখানে আমরা কাউকেই ভুলিনি অথবা কেউ কাউকে ছেড়ে যাইনি।

দেরি হয়ে যাচ্ছে না? আমার তাড়া নেই যদিও। যাহোক ইশকুলে ঢুকতে হবে কিন্তু মূল দরজা দিয়ে নয় বরং ব্যাকডোর দিয়ে। কেন? আমরা তাই করি যে। আপনি করবেন কি, ঢাকা কলেজের পাশের টিচার্স ট্র্বেইনিং কলেজের গেট দিয়ে ঢুকবেন। ঢুকেই মনে হবে ইন্দ্রপুরী! কি সুন্দর একটা বাগান। দুই দিকে উঁচু উঁচু গাছ আর মাঝখান দিয়ে চলে গেছে সরু রাস্তা বড় একটা মাঠের পাশ দিয়ে, এইটা গাড়িওয়ালা লোকের জন্য না বরং আম জনতার পায়ে চলার রাস্তা। আপনি হাঁটতে থাকুন রাস্তা ধরে পশ্চিম দিকে। আমি দশ বছর হেঁটেছি এই পথে, এখনও মাঝে মাঝে একটু আধটু যাই ওই দিকে। পথের শেষ মাথায় কিন্তু কয়েকজন ভি আই পি এর দেখা পাবেন। এঁরা হচ্ছে, যথাক্রমে চটপটি মামু, আমড়া মামু, আচার মামু আর আইসক্রিম মামু। এদের নামই বলে দেয় উনাদের কি পেশা। আমার নাম বললে বাকিতে খেতে পারবেন সব জায়গায়, শুধু আইসক্রিম মামু কোন বাকির ব্যবসা করেন না। আমড়া মামু নিজেও দুপুরে আমড়া খান, সেই সি-ভিটামিনের জোরেই হয়ত দশ বছর আগেও আমার চেয়ে জোয়ান ছিলেন। চটপটি মামুও মাটির মানুষ, টক দিতে কোন কার্পণ্য নেই তার। আচার মামু প্রায় ম্যাজিশিয়ান, কবিরাজি ওধুধের মত একটা পুরিয়া মিকচার করে দেবে, একদম যেন অমৃত।

যাক উনাদের বিজনেস স্পটটা পার হতেই দেখবেন তাঁর কাটার দেয়ালে এক চিলতে একটা ফাঁক, একটু ঢাল, নামতেই ব্যাস আমাদের ইশকুল। খান মুহাম্মদ সালেক স্যারের বানানো আর আমাদের ধ্বংস করা। শুনেছেন ছড়াটা, আমাদের স্কুলটা হলুদ, ছাত্রগুলো বলদ, বেঞ্চিগুলো সরু, মাস্টারগুলো গরু? ইশকুলটা আসলেই হলুদ, আর আমরা অল্প কয়েকটা বলদ আছি এইটুকই যা সত্য, বাকি সবই উর্বর মস্তিষ্কের কল্পনা!

আপনি তো ভাই স্কুলে ঢুকে পড়লেন, আপনার পরনে কি আছে? আমাদের ড্রেস কিন্তু সাদা সার্ট আর নীল প্যান্ট। জিন্স না পড়লেই ভালো, স্যাররা খুব ভালো চোখে দেখেন না এই বস্তু। উনারা পুরানো আমলের লোক, জিন্স পড়লে ভাববে আপনি পাট নিচ্ছেন। আচ্ছা বলুন তো কোন মানে হয়, জিন্সের মত সস্তা আর আরামের কাপড় আছে আর? যাহোক হাঁটতে থাকুন সামনে আরেকটু। আমাদের মাঠটা কত বড় দেখেছেন? তবে একটু সাবধানে যাবেন, দূর্ধর্ষ স্যার আছেন কয়েকজন। টাইগার স্যার, হালদার স্যার, রুহুল আমিন স্যার আর মতিউল্লাহ স্যার। যার টাইটেল টাইগার তার সামনে না পড়াই ভালো। হালদার স্যার এমনিতে ভাল মানুষ কিন্তু রেগে গেলেই রুদ্র মূর্তি। মতিউল্লাহ স্যার আপনাকে গত বার্ষিক পরীক্ষায় অঙ্কের নাম্বার জিজ্ঞেস করতে পারে, কম নম্বর পেলে বিপদের সমূহ সম্ভবনা। রুহুল আমিন স্যার একটু মুডি, সালাম দিয়ে সরে আসাটাই বরং ভালো। ভয় পাইয়ে দিয়েছি? ভয় নেই ভাই আমরাতো রোজ আসছি আর যাচ্ছি, প্রতিদিন কি আর মার খাই?

ওই যে বালকগুলো কে দেখছেন, ওরাই হচ্ছে আমরা। পরনে সাদা সার্ট আর নীল প্যান্ট, দূর থেকে সব একরকম লাগছে। এমনকি কাছে আসলেও একই রকম লাগতে পারে। আমার তো এখনো একই লাগে। ওইখানে বড়লোকের ছেলেও যেমন আছে আর আমাদের দারোয়ান মোখলেস ভাইয়ের ছেলে ইদ্রিসও আছে। সবাইকে একই হাঁড়িতে সিদ্ধ করেন স্যারেরা। ধনী গরিব কোন ভেদাভেদ নেই তাঁদের কাছে, সবাইকে মেরে তক্তা করে দেন, মনে হয় এইজন্যেই তো আমরা এতো সমাজতন্ত্রী। একই হাঁড়িতে সিদ্ধ না হলে আর কমরেড কিসের? ভাই মাথা নীচু করে বালকগুলোর হাফ প্যান্টের নীচে তাকাবেন না কিন্তু। গার্মেন্টস শিল্প বলে কিছু নেই স্মৃতির শহরে, গ্রামের গরিব মেয়েরা মানুষের বাসাতেই কাজ করে মরে, গার্মেন্টসে নয়। তাই আমাদের জামাগুলো দর্জি বাড়িতে বানানো, দুইটা লাফ দিলেই পটাস, একদম জায়গা মত প্যান্ট ছেঁড়া। আমরা লজ্জিত নই যদিও তবু ক্লাস টেনের দুষ্টু ছেলেগুলো কেন জানি হাসাহাসি করে।

একটু ঘুরে দেখা যেতে পারে চারিদিক । একটু দূরেই মাঠে মোখলেস ভাই জাতীয় পতাকা উঠিয়েছেন, স্কুল শুরুর পরেই আমরা এখানে এসে জাতীয় সংগীত গাইব। আমাদের যাদের গলা দিয়ে হাঁসের মত ফ্যাঁসফ্যাঁসে শব্দ বের হয় তারা শুধু ঠোঁট মেলাব। ভুল সুরে জোরে গাইলে আমাদের জোবেদ আলী স্যার গদাম করে মাথায় চাঁটি বসিয়ে দেবেন কিন্তু! উনি নিজে এ কাজটা করার সময়ও জাতীয় সঙ্গীত গাইতে থাকেন। এসেম্বলী শেষ হলেই ক্লাস শুরু হয়। ছোটদের চার পিরিয়ড আর বড়দের আট পিরিয়ড। মনে হয় এটাই সবচেয়ে বিপদজনক সময়; অংক, বাংলা, ইংরেজি অথবা বিজ্ঞান সব ভুলেরই একটাই শাস্তি, সেটা হল মার। স্কুলের অফিস রুমে নানান সাইজের বেত আছে, কখনো কখনো স্যাররা ক্ষেপে গেলে জবা গাছের ডাল ভেঙ্গেই হামলা চালান, কেউ কেউ আবার মাথার ছয় ইঞ্চি উপর থেকে এমন গাট্টা মারেন যে চোখে অন্ধকার দেখতে হয়। শিক্ষার যে কোন রাজকীয় পথ নেই তা বেশ বুঝেছি আমরা।

স্কুলের বিল্ডিংটা অনেক বড়, অনেকগুলো করিডোর। সবখানেই আমরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছি। আমাদের আপনি ক্লাস থ্রীর সামনে জবার বাগানেও পাবেন আবার স্কুলের পেছনের দিকে টিফিন ঘরের কাছেও পাবেন। স্কুলের সামনের দিকে হেড স্যারের রুমের আশে পাশে ঘুরঘুর করা বালকগুলোও আমরা, দোতলায় গেলেও আমরা আছি আবার স্কুলের দেওয়াল টপকে যেই ছেলেগুলো পালাচ্ছে তারা কিন্তু আমরাই। ঝমঝম বৃষ্টি হলে করিডোরগুলোতে পানি প্রায় উঠি উঠি অবস্থা আর আমাদেরও মহানন্দ তাতে; কেন জানি স্মৃতির শহরে প্রায়ই ধুম বৃষ্টি হয় আজকাল। আজকে সময় প্রায় শেষ, আমার বন্ধুদের সাথে আপনার শিগগির'ই পরিচয় করিয়ে দেব, এরাও অনেকে বালকবেলায় ফেরার জন্য আমারই মত ব্যাকুল।

[এই পর্ব আর এর আগের পর্ব প্রায় একই সময়ে লিখেছি, কিন্তু এই পর্ব লিখতে গিয়ে মন বিবশ হয়েছে অনেকবার। স্কুলের অনেক স্যার আর নেই, একজন সহপাঠীও ছেড়ে গেছেন আমাদের। স্মৃতির শহর ছাড়া আর কোথাও তাঁদের পাওয়া যায় না। একদিন আমরা সবাইতো শুধু স্মৃতির শহরেরই বাসিন্দা হব। অনেক স্যার দারিদ্র্যর সাথে শেষ বয়েসে এসে যুদ্ধ করেছেন, আমাদের অনেককেই প্রতিষ্ঠিত করেছেন কিন্তু প্রতিদানে কিছুই পাননি। আমরা স্বার্থপরের মত ভুলে গেছি যে একটা সাফল্যের পেছনে বহু মানুষের নীরব শ্রম থাকে, আমাদের সাফল্যগুলো আমাদের পুরো একার নয়। তেমনি হয়ত আমাদের ব্যর্থতাগুলোর সব দায়ও হয়ত আমাদের না। সাফল্যের প্রবল আনন্দে অথবা ব্যর্থতার বাঁধভাঙ্গা দুঃখে আমরা যে দুটোই ভুলে যাই।]

স্মৃতির শহর -৪ এখানে, যদিও এরা ধারাবাহিক নয়, লেখাগুলো স্মৃতির মতই ছন্নছাড়া


মন্তব্য

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

আমাদের ইশকুল, আমাদের গল্যাহাস মন খারাপ
---------------------
আমার ফ্লিকার

---------------------
আমার ফ্লিকার

তাসনীম এর ছবি

আমাদের গল্যাহাস মন খারাপ

গল্যাহাস নামটাও আপনার কাছ থেকে শেখা, বুঝতে মিনিট খানেক সময় লেগেছিল। আশ্চর্য যে এটা আগে কেন আবিষ্কার হয়নি।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

নিঃসঙ্গ গ্রহচারী [অতিথি] এর ছবি

আপনার কমেন্ট পড়ার পর হঠাৎ করেই বুঝতে পারলাম গল্যাহাস কী জিনিস ! হাসি

চলুক

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

তাসনীম ভাই আমারে তুমি করে বলবেন!! আপনি যখন এসএসসি পাশ করেন তখন আমার জন্ম হইছে কেবল! ইশকুলের বড় ভাই আপনি করে বললে শরম লাগে খাইছে
---------------------
আমার ফ্লিকার

---------------------
আমার ফ্লিকার

তাসনীম এর ছবি

ঠিকাছে হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তিথীডোর এর ছবি

পড়তে গিয়ে মজা পাইনি, নীড়পাতায় ঝোলার আগেই এ পর্বটা পড়া হয়ে গেছে কিনা.. দেঁতো হাসি

লেখায় উত্তম জাঝা! , এজ অলওয়েজ হাসি

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ এজ অলওয়েজ হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

আহমাদ ইমতিয়াজ এর ছবি

কত কিছু মনে পড়ে গেল।

ডে শিফিটে ছিলাম।

বেলায়েত স্যারের হাকডাক। মহসীন স্যার কর্তৃক এ্যাসেম্বলিতে না যেয়ে হাতে নাতে ধরা খাওয়া।

খালেক স্যারের হাতে যা মার খেয়েছিলাম তা জীবনেও ভুলবনা।

আর আমাদের ট্রেডমার্ক টুডু স্যারের কথা!!! খাইছে

আহমাদ ইমতিয়াজ

তাসনীম এর ছবি

আমারো। স্যারদের নাম গুলো ভিন্ন ঘটনাগুলো অভিন্ন।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

রেনেট এর ছবি

স্মৃতির শহরে ঘুরতে বেশ লাগছে। তাড়াতাড়ি পরের পর্ব চাই!
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

তাসনীম এর ছবি

আমারো বেশ লাগছে হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ফাহিম এর ছবি

সবচেয়ে মজা ছিল টিফিন পিরিয়ডে টেনিস বল দিয়ে ফুটবল!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

তাসনীম এর ছবি

টেনিস বল দিয়ে কেন? স্কুলের মাঠটাতো প্রকান্ড।

আমাদেরকে স্কুলের ড্রিল স্যার (আমরা বলতাম লেকু) ফুটবল দিতেন খেলার জন্য। অনেকে বাসা থেকেও নিয়ে আসত।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ফাহিম এর ছবি

আরে, আমরা তো খেলতাম পার্কিং এর ওই জায়গাটাতে, ওই যে, টিচার্স রুম থেকে বেরিয়ে ক্লাস রুমের দিকে যাওয়ার যেই করিডোরটা, ওটার বামপাশে। ওখানে মোটামুটি তিরিশ-পয়ত্রিশ জন টেনিস বলে নিয়ে নেমে পড়তাম। মাঠে গিয়ে পোস্ট বানিয়ে খেলা বহুত পরিশ্রমের কাজ, টিফিন টাইমে অত টাইম কই, তাছাড়া আমরা একটু আইলসা টাইপেরও ছিলাম... দেঁতো হাসি

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

বাউলিয়ানা এর ছবি

আপনি অনেক ভাগ্যবান একটা স্কুলেই স্কুল জীবন শেষ করতে পেরেছেন। আমরা যারা সরকারী চাকুরে বাবার সন্তান তাদের কিন্তু এই সৌভাগ্য হয় না। এই আমি পাঁচটা স্কুলে পড়েছি। আমার এক বন্ধু দশ বছরে আটটা স্কুলে পড়েছে!!

লেখা যথারীতি চমতকার হয়েছে।

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ। আমিও নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি দশ বছর এক জায়গায় থাকতে পেরে। আমাদের সাথের প্রায় সব বন্ধুই অন্তত পাঁচ বছর পড়েছে, যার ফলে বন্ধুত্ব অনেক প্রগাঢ় হয়েছে, অনেকের সাথে এখনও বেশ ভালো যোগাযোগ আছে। বছর বছর স্কুল পালটানো বাচ্চাদের জন্য সুখকর না।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

রুশাফি [অতিথি] এর ছবি

অসাধারণ লেখা, সারাটা জীবন স্কুলের সাথে থাকতে পারলে আর কিছু চাইতাম না।

তাসনীম এর ছবি

আমিও, তবে আদুভাই টাইটেল পেতে হত যদিও হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

একটা মজার কথা মনে পড়লো! আমাদের সাথে এক বড় ভাই ছিলো উনি যে কয় ব্যাচের সাথে এসএসসি দিয়েছে খোদা মালুম! তো মাঝে এক্স গল্যাহাস ফুটবল টুর্নামেন্ট হয়েছিল। উনি আসলে সব ব্যাচের হয়েই খেলতে পারতো তো শেষমেশ যে ব্যাচে এসএসসি পাশ করছে সেই ব্যাচের হয়ে খেলেছেন।
---------------------
আমার ফ্লিকার

---------------------
আমার ফ্লিকার

সাফি এর ছবি

একটু আগেই রেনেটের লেখায় আমার কলেজের কথা পড়লাম, আর এখন আমার প্রাণের ইস্কুলের কথা। তাসনীম ভাই আপনি কোন ব্যাচ?

রেঁস্তোরা বলতে কি জিঞ্জিরা হোটেলের কথা বলছিলেন?

তাসনীম এর ছবি

দারুন, গল্যাহাস দেখি অনেক এখানে হাসি

আমি ১৯৮৬ মাধ্যমিক।

না ভাই জিঞ্জিরা হোটেল না, ওটাতে বড় হয়ে বিস্তর খেয়েছি, মনে হয় এখন টিকে আছে ওটা।

এই রেঁস্তোরাটা ছিল গ্রীন কর্নারের কাছে, ধানমন্ডি সাত নম্বর যেখানে মিশেছে গ্রীন রোডে।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

এই সিরিজটা মিস করতে চাইনা...বড্ড ভাল্লাগে... দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে আমার প্রাণের কাছে চলে আসি, বলি আমি এই হৃদয়েরে; সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ বালিকা, আমারো বড় ভালো লাগে লিখতে হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তাসনীম এর ছবি

...ডুপ্লিকেট কমেন্ট...(ডিলিট করুন)

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মুস্তাফিজ এর ছবি

অসাধারণ

...........................
Every Picture Tells a Story

তাসনীম এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মুস্তাফিজ ভাই।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সচল জাহিদ এর ছবি

তাসনীম ভাই, আপনার স্মৃতির শহর সিরিজ আর ঐদিকে পিপিদার কলেজ জীবন নিয়ে ইবুকের উদ্যোগ পুরোপুরি নস্টালজিক করে দিচ্ছে। স্কুল স্মৃতিগুলো বার বার আমাকে টাঙ্গাইলে নিয়ে যায়, খুব খুব অনুভব করি তখন শহরটাকে।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ জাহিদ। মাঝে মাঝে ফিরে দেখা খুবই জরুরী। তোমার নিজের শৈশব আর কৈশোর নিয়েও লিখ। আমার দারুন লাগে পড়তে।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অতনু এর ছবি

পড়লাম. না পড়লেই মনে হয় ভালো ছিল. মন খুব খারাপ হয়ে যায় এখন এরকম লেখা পড়লে.
অন্য সব কিছু বাদ দিলেও মনে হয় আমরা সবাই কখনো না কখনো চিন্তা করেছি স্যাররা কেমন আছেন. কিছু করিনি সেটা ঠিক.
এখন তো বোধহয় আর হলুদ বিল্ডিং নেই. শেষ গেছিলাম সাড়ে তিন বছর আগে, সরস্বতী পূজার সময়. সাদা বিল্ডিং, আর লোহার খাঁচা. তবে আর কিছু বদলায়নি, মনে হল.

আমি এসেছিলাম সেন্ট গ্রেগরি থেকে ক্লাস থ্রীতে, ভর্তি পরীক্ষায় মৌখিক প্রশ্ন হল, বলো দেশের প্রেসিডেন্ট কে. আমার জেনারেল নলেজ ভালো, বললাম সায়েম. আর বাজ পরার মতো ধমক, তোর আত্মীয় লাগে নাকি? বল রাষ্ট্রপতি (সামথিং) সায়েম. লিখতে গিয়ে বুঝলাম আমি এখনো সায়েম এর প্রথম নাম ভুলে গেছি. সেদিন যা হোক আমাকে নিয়েছিলো ভর্তি করে.

ক্লাস থ্রী তে ঢুকলাম, নতুন ছেলে হিসেবে বি সেকশনে যাবার কথা, তবে কি হিসেবে আমি, তমাল মান্নান, আর শাহরুখ (তাইতো মনে হয়) পড়ে গেলাম এ সেকশনে. আনোয়ারুল করিম স্যার এর ক্লাসে প্রথম দিন, অঙ্ক পারলাম কিছু একটা তোদের আগে, একটা চকলেট পেলাম. মহা খুশি, এ তো দারুন স্কুল, স্যার চকলেট দেয়. ক্লাস নাইন আগাগোড়া কাটলো ইলেক্টিভ ম্যাথস এ আনোয়ারুল করিম স্যার এর ডাস্টার এর বাড়ি খেয়ে. কি করা, নাইন এর ম্যাথস আমি বোঝা শুরু করি টেন এ উঠে.

পঁচিশ বছরের বেশি হয়ে গেছে আমরা বেরিয়েছি. কি করলাম জানিনা. মন ভারী, আর লিখবনা.

তাসনীম এর ছবি

নাহ অতনু তোরও লেখা শুরু করতে হবে, স্কুল নিয়ে লিখতে গেলে আরো কিছু স্কুলের বন্ধু লাগে। জানিনা তোর মনে আছে কিনা, তোর ল্যাবরেটরি স্কুলে প্রথম দিন ( ক্লাস থ্রীতে) তুই আমার পাশে বসেছিলি। খুব আস্তে কথা বলছিলি, তোর নাম বুঝতে অনেক সময় লেগেছিল। মনে হয় সেদিন, কখন এত বড় হয়ে গেলাম আমরা, আনওয়ারুল করিমের ডাস্টারই ভালো ছিল রে দোস্ত...

অনেকদিন আগে লালমোহন স্যারের সাথে দেখা হয়েছিল, স্যারের পরনে সেই একই ড্রেস কিন্তু আর সাদা নেই একদম ময়লা হয়ে গেছে। চোখে মুখে কষ্টের ছাপ, মাঝে মাঝে সেই বিবর্ণ মুখটা এখন মনে পড়ে আর অপরাধী মনে হয় নিজেকে।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

রণ এর ছবি

আরেব্বাস, ওইটা তো ডিম-পরোটার বাবার হোটেল (মোটা গনি এর ডাকনাম, আমাদের ব্যাচে ছিলো) হোটেলটার নাম মনে পড়ছে না আমারো, নিরালা হতে পারে, চাইল্ডের জানার কথা!!! একটা ষ্টারলেট গাড়ী ছিলো ওদের, ওর বাবা এতো চওড়া ছিলেন যে তিনি বসলে পেছনের সীটে আর কারুর জায়গা হতো না!

আর মেলা রাগ হচ্ছে বন্ধু, এই এত্তটুকুতে ইশকুল মেরে দিলে!
ফাঁকীবাজী চলবে না, এটা ওহাব স্যারের ক্লাশ নয় যে স্যার ঝিমুচ্ছেন আর পেছনের বেঞ্চে কাটাকুটি খেলছো, ঝেড়ে কাশো, লেখা ছাড়ো, আরো, আরো!!!

পয়েন্ট ধরিয়ে দিচ্ছি, খন্দকার স্যারের শনিবার হাটবার বিকিকিনি মেলা, শফিক স্যারের চিমটি, সাত্তার স্যারের জোড়া স্কেল হাঁটুতে (এখোনো জ্বলুনি টের পাচ্ছি), জিক স্যারের ট্রাউজারের টান, আনিস সিদ্দীকি স্যারের চিমটি এবং চিঠি লেখা, ড্রাকুলার মাইর, ফাট্টার নামাজ (স্যারের সাথে দেখা হয়েছিলো, মাসুদের কথা মনে পড়ে গেল, চোখে চোখ রাখতে পারিনি, স্যার পিঠে হাত রেখে কুঁজো হয়ে কথা বলছিলেন), চক্করবক্কর স্যারের পাঞ্জাবী, টেম্পু স্যারের কৃষিবিজ্ঞানের বই না এনে বেঞ্ছে দাঁড়ানো... কত চাও?

বন্ধুদের কথাও চাই, মরা গরু তোমাদের ব্যাচের নয়? সুপ্পি, লোদী, সোহেল, অমি... এদের কথা, আরো কতজন! আরশাদ, রেনেটা, আজিজ, এরা কমন...

মনটা ভিজে গেলো... ভালো থেকো বন্ধু...

তাসনীম এর ছবি

রণ,

অনেক ধন্যবাদ তোমাকে। হোটেলটা মনে হয় নিরালাই ছিল। মোটা গণিরা কি সেন্ট্রাল রোডে থাকত নাকি?

স্কুলের ঘটনা নিয়ে আর কিছু পর্ব লেখার ইচ্ছা আছে। ধারাবাহিক হবে না কিন্তু ছাড়া ছাড়া আরও লিখব। তোমার এই কমেন্ট কাজে লাগবে তখন।

মরা গরু আমাদের ব্যাচেরই, থাকে আমার শহরেই। আজিজ, আরশাদ মাস্ট। আজিজের রি-ইউনিয়নের ছবি দেখে চিনতে পারিনি একদম। বাকিদের সাথে যোগাযোগ আছে।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

হরফ এর ছবি

এ প্লাস দিলুম কিন্তু আপনি যে ভয়ানক মন খারাপ করে দিলেন স্যর তার কি হবে! আমার নিজের ইস্কুল-কলেজের ভয়ানক ট্যালেন্টেড আচার-আলুকাবলি-ফুচকা-ওয়ালার বিরহে "এ পরবাসে রবে কে" গাইতে ইচ্ছে করছে, নবকুমারের মত মনে হচ্ছে "এ জীবন লইয়া কি করিব"। ধুসসস
----------------------------------------------
"ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে"

ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ হরফ। এই বিরহে আমিও কাতর ছিলাম। প্রথমবার দেশে গিয়ে পর পর পাঁচ ফুল প্লেট চটপটি খেয়ে ফেলেছিলাম। ফলাফল খুব শুভ হয়নি। আশাকরি আপনিও দেশে যাবেন খুব তাড়াতাড়ি, চটপটি অর্ডার দেওয়ার আগে আমার এই ঘটনা মনে রাখবেন হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

কাকুল কায়েশ এর ছবি

তাসনীম ভাই, আপনার সিরিজটা অসাধারণ লাগছে। এই পর্বটা একটু বেশী ভাল লাগল।
এই পর্বের আরো একটা জিনিস ভাল লাগছে যে, আপনার স্কুলের বন্ধুরা এসে মন্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন।
স্কুললাইফের বন্ধুদের থেকে আপন বন্ধু আর কেউ হয় না সম্ভবত।

=========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ কাকুল। আমার স্কুলের বন্ধুদের অনেকের সাথে আমার খুব ভালো যোগাযোগ আছে। কয়েকজনএই প্রবাসেও ধারে কাছেই থাকেন, আমাদের রি-ইউনিয়নও হয়েছে। আমার দেশের বন্ধুদের অনেকের সাথেও ফেসবুকে যোগাযোগও আছে। আসলেই বাল্যবন্ধুদের মত আপন কেউ নেই।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মূলত পাঠক এর ছবি

দারুণ হচ্ছে!

তাসনীম এর ছবি

আবারও অনেক ধন্যবাদ মূলোদা...

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আমি তিনটা স্কুলে শৈশব কাটিয়ে একটাতে এসে স্থিতু হয়েছিলাম। টানা পাঁচ বছর পড়েছি। অন্য স্কুলের বন্ধুদের সাথে আর দেখা হয়নি। তারা রয়ে গেছে আমার স্মৃতির স্কুলেই, এখনও হাফপ্যান্ট পরা! তাদের সাথে আমি এখনও গল্প করি, আড্ডা মারি, ছুটে বেড়াই নানা জায়গা। আশ্চর্য হয়ে খেয়াল করি তারা শরীরেও বাড়েনি এতোটুকু! কখনো আয়নায় তাকাই, নিজেকে দেখি, ভাবি আমার সেই বন্ধুগুলোও নিশ্চয় এতোদিনে চেহারায় শতাব্দীর সাক্ষর ধারণ করে ফেলেছে। পরক্ষণেই যখন স্মৃতিতে ডুব দেই, তারা একে একে ফিরে আসে গুটি গুটি পায়ে, ছোট্ট শরীরে, হাফপ্যান্ট পরে।

যেদিন নিজের একজন বেটার হাফ হবে, সেদিন যাবো তাঁকে সাথে করে। পুরনো হাফপ্যান্ট পরা বন্ধুদের খোঁজে, এটা আমার অনেকদিনের পরিকল্পনা।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

তাসনীম এর ছবি

ধূগো, আমার স্কুলের বন্ধুদের সাথে এখনো কথা এবং দেখা হয় মাঝে মাঝে। কিন্তু স্মৃতির শহরে ওরা সব হাফপ্যান্ট পড়া দুষ্ট বালক। বাস্তবে যদিও তারা ধূসর ভদ্রলোক, নানান কাজে কর্মে চাপা পড়ে আছে শৈশব। আমরা একসাথে হলে সবাই একসাথে সাঁ করে ঢুকে যাই একদম ক্লাসরুমে, যেখানে একজন কান ধরে দাঁড়িয়ে, আরেকজন ডাস্টার আঘাতে মুখ বিকৃত করে বসে আছে।

আশাকরি খুব শিগগরি বেটার হাফ আসবে, এবং তুমিও খুঁজতে যাবে হাফপ্যান্ট পড়া বালকের দলকে।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

Shafqat এর ছবি

Keep going. If I had to remembet one incident from each of the years, they will be the following:

Class 1. First day of school. Shohidur Rahman Sir makes us stand up and down on the chair.
Class 2. Shafiq Sir threatens to cur someone's tongue off (was it Lodi?). He even produces a blade!!
Class 3: BK gets married. Atanu, Tomal, Sharukh shows up
Class 4: No playing during tiffin break. Sattar Sir (Shomaj) and Shfiq Sir (Science) priods were after the tiffin period. Pitani was something to remember.
Class 5: Abedin Sir gets mad at Abid and hurls him towards the wall. Anis Siddiki Sir makes us stand up and down 200+ times.
Class Six: Had to sudy Arabic as a language. No understanding the language. Just memorize. Kaifa Haluka (kemon achen) - I think that's all I remember.
Class 7: Get beaten up for not singing the National anthem properly (not that I possessed any talent in that dept).
Class 8: Ruhul Amin Sir beats up Lodi for laughing too loudly. Sir himself cracked the joke.
Class 9: Many of us gets beaten up while trying to get out of BK's class. "Chakma's koi ta pa" - asked one of us after Abdul Haque Sir gave a lecture on the pribal population. Most hilarious memory of school life.
Class 10: Faruk Sir tells us jokes that only a class X student will enjoy! Cannot believe how lucky we are....

ধুসর গোধূলি এর ছবি
তাসনীম এর ছবি

না, এইটা আমার ক্লাস ওয়ানের বন্ধু শাফক্বাত...বাংলা মিডিয়াম কিন্তু অভ্র কানা।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

শরতশিশির এর ছবি

না, মোস্ট প্রবাবলি, তাসনীম ভাইয়ের ফ্রেন্ড। কারণ, কয়েকজন শিক্ষকের নাম আমি চিনেছি, যেমন ফারুক স্যার।

খালি সন্দেহ, না? চোখ টিপি
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

সিরাত এর ছবি

সেন্ট জোসেফ নিয়ে এরকম একটা লিখতে হবে।

তাসনীম এর ছবি

লিখে ফেলুন অপেক্ষায় রইলাম হাসি

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।