স্মৃতির শহর-৯: কবি

তাসনীম এর ছবি
লিখেছেন তাসনীম (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৭/০৬/২০১০ - ৫:০১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


তিনি তল্লাবাগেই থাকতেন তখন। আমারও ওই পাড়ায় নিয়মিত আনাগোনা, উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে বসে আছি, ক্লাস শুরুর নাম নেই, পুরো বেকার। সারাদিন আড্ডা চলে, সুনীলের ভাষায় বন্ধুপ্রীতি প্রায় সমকামীদের মতই। গলির মাথায় সিগারেট কিনতে গেলে মাঝে মাঝে দেখা হয় তাঁর সাথে, কখনো কখনো তিনি পরিচিত হাসিও দেন, মনে হয় পাড়ার একজন বখাটে যুবকই ভাবেন আমাকে। আর আমিও তাঁকে বলতে পারিনি যে আমি তাঁকে যেটুকু চিনি, মনে হয় তার চেয়ে অনেক বেশি তিনি আমাকে চেনেন। তাঁর চেয়ে ভালো করে আমার কথাগুলো কেউ কোনদিন বলেনি, আমার দুঃখ, ক্রোধ আর ভালোবাসা আর কেউ তাঁর মত করে স্পর্শ করেনি, আমার স্মৃতির শহরকে আর কেউ আর এভাবে ভালোবাসেনি। সরকারি মিথ্যা প্রেসনোট আর স্বৈরাচারের বুটের নীচে বেড়ে ওঠা যৌবন যার, মনে হয় তার জন্যই তিনি লিখেছেন ...

প্রধান সড়কে আর প্রতিটি গলির মোড়ে মোড়ে
কাঁটামারা জুতো ঘোরে। এরই মধ্যে হতচ্ছাড়া মন
তোমার সংকেত পায়, হ‍‍‌দয়ের সাহসের তোড়ে
আমরা দু'জন ভেসে চলি রূঢ় পথে স্বপ্ন বেয়ে।
(পুলিশও প্রত্যক্ষ করে)

কবি সারাজীবন কাটিয়েছেন এই শহরে এবং সেই জীবনের প্রায় পুরোটাই দিয়েছেন কবিতার পিছনে। পুরানো ঢাকা শহরের অলিগলি উঁকি দিয়েছে কবিতায়, যত্রতত্র হানা দিয়েছে শৈশবের হলুদ রঙের বিকেল। নোংরা আর ময়লা মুছে ফেলে এই শহর যেন বিশুদ্ধ হয়েছে তাঁর কবিতায়। জয়দেবপুরের দিকে গেলে চৌরাস্তার মোড়ে আমি দেখি পোস্টারে ছাওয়া গোল চক্করে ঝালমুড়ি বিক্রেতার হাঁকডাক আর তার উপরে দাঁড়িয়ে আছে এক পাথুরে মুক্তিযোদ্ধা রাইফেল হাতে অবিচল, আর উনি দেখছেন...

কখনো কখনো মনে হয় তোমার পাথুরে বুক
ঘন ঘন স্পন্দিত নিশ্বাসে। হে অজ্ঞাত বীর, শোনো,
তোমার সংগ্রামী স্মৃতি মাছের কাঁটার মত লেগে
আছে আমাদের বিবেকের শীর্ণ গলায় নিয়ত।
(জয়দেবপুরের মুক্তিযোদ্ধা)

বিবেক মনে হয় আমাদের একটু শীর্ণই বটে, স্বৈরাচার কিনে নিয়েছিল বুদ্ধিজীবী থেকে ছাত্রনেতা, কবি থেকে টিভি উপস্থাপক। সেই একই বাণিজ্য আজো চলছে অবাধে, কাউকে কিনছে দুই ফ্লেভারের জাতীয়তাবাদ, কেউ নিজেকে বেচছে মৌলবাদের কাছে, ইতিহাস কিনছে ফোন কোম্পানী, কেউবা নতজানু খতিবের সামনে। শিক্ষকরাও নানান রঙে নিজেদের সাজিয়ে উপস্থিত এই মুক্তবাজারে। কবি কিভাবে এতকিছু দেখে ফেলেন?

শুনেছি স্বৈরাচারের প্রতিবাদে সরকারী চাকরী ছেড়ে দিয়েছিলেন উনি। কবিতা ছাড়া অন্য কিছুতে বেশিতে মন দেন নি, ফলে নিদারুণ অর্থকষ্টে পড়তে হয়েছে অনেকবার, তবু পণ্য হয়নি তাঁর প্রতিভা। তাই যখন নূর হোসেন গুলি খেয়ে লুটিয়ে পড়ে জিরো পয়েন্টে, আমার অসীম ক্রোধ আর অসহায়তা যেন তাঁরই কলমের নিবে...

শহরের টহলদার ঝাঁক ঝাঁক বন্দুকের সীসা
নূর হোসেনের বুক নয় বাংলাদেশের হৃদয়
ফুটো করে দেয়ে; বাংলাদেশ
বনপোড়া হরিণীর মতো আর্তনাদ করে, তার
বুক থেকে অবিরল রক্ত ঝরতে থাকে, ঝরতে থাকে।
(বুক তার বাংলাদেশের হৃদয়)

বেঁচে থাকলে কেমন লাগত আজ তাঁর ক্ষমতার সমীকরণে স্বৈরাচারকে মসনদের কাছাকাছি দেখে?

তাঁর কবিতায় দেশচিন্তা এসেছে বহু বার। উদ্ভট যে উটের পিঠে সওয়ার হয়ে আমরা যাত্রা শুরু করেছিলাম উলটো পথে, সেই যাত্রা মনে হয় শুধুই বেগবান হয়েছে। আমি বিষাদে ও বিবমিষায় উগরে দিয়েছি খিস্তি, আর তিনি চেয়েছেন দেশদ্রোহী হতে...

হে-পাক পারওয়ার দিগার, হে বিশ্বপালক,
আপনি আমাকে লহমায়
একজন তুখোড় রাজাকার করে দিন। তাহলেই আমি
দ্বীনের নামে দিনের পর দিন তেলা মাথায়
তেল ঢালতে পারবো অবিরল,
গরিবের গরিবী কায়েম রাখবো চিরদিন আর
মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ের চামড়া দিয়ে
ডুগডুগি বানিয়ে নেচে বেড়াবো দিগবিদিক আর সবার নাকের তলায়
একনিষ্ঠ ঘুণপোকার মত অহর্নিশ
কুরে কুরে খাবো রাষ্ট্রের কাঠামো, অব-কাঠামো।
(একটি মোনাজাতের খসড়া)

তাইতো মনে হয় সাদামাটা আর নির্বিরোধী জীবন যাপন করেও শিকার হয়েছিলেন মৌলবাদী হামলার, বেঁচেও গেছেন ভাগ্য আর হয়ত মানুষের ভালোবাসার জোরে। পরিণত বয়েসেই তাঁর মৃত্যু হয়। টিভিতে দেখেছি তাঁর শেষ শ্রদ্ধায় হাজার মানুষের ঢল, অনেকেই হয়ত পড়েননি তাঁর কবিতা তবু নাগরিক শহরের খুব কাছের মানুষই তিনি। আমি তার অনেক আগেই ছেড়ে এসেছি স্মৃতির শহর, কবি ও কবিতা দুই থেকেই দূরে। প্রাত্যহিক জীবনের চাপে আমি প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম ফেলে আসা জীবনের কথা। তিনি গত হওয়ার পরদিন পরবাস পত্রিকার সমীরদার কাছ থেকে তাঁর একটা বই জোগাড় করি, পরবাসে ছোট একটা লেখাও লেখেছিলাম তাঁকে নিয়ে। আবার বহু বছর পর তাঁর কবিতা ফিরে এল আমার কাছে পুরানো প্রেয়সির মত। আর গতজন্মের স্মৃতির মত ফিরে এল শৈশব, কৈশোর এবং প্রথম যৌবনের গল্পগুলো। কাঠখোট্টা এই বাস্তবের পাশেই আরশি নগরের মত স্মৃতির শহরের খোঁজ পেয়ে গেলাম।

এরপর ঢাকা থেকে এনেছি তাঁর শ্রেষ্ঠ কবিতার সংকলন, আনন্দ ও বেদনায় আঁকড়ে রাখি বইটাকে, কখনও চোখের জলে বইয়ের পাতা ভিজে গেলে সপ্তপর্ণে মুছে রেখে দেই শেলফে। মাঝে মাঝে ব্যস্ত দিনের কাজের ফাঁকে বাচ্চুর মত এক অবুঝ বালক এসে আমাকেও বড় জ্বালাতন করে। কাজ ফেলে সেই বালকের সংগে ঢুকে যাই স্মৃতির শহরে, মিথ্যা হয়ে যায় যা যা কিছু পার্থিব আছে এই সংসারে। ক্ষণিকের জন্য ভুলে যাই আমার সময়ও সুমিষ্ট পিঠের মতই ভাগ করে খাচ্ছে সবাই। কবি আপনার সাথেই যেন চলে আমার এই আশ্চর্য ভ্রমণ।

বাচ্চু তুমি, বাচ্চু তুই চলে যাও চলে যা সেখানে
ছেচল্লিশ মাহুৎটুলীর খোলা ছাদে। আমি ব্যস্ত, বড়ো ব্যস্ত,
এখন তোমার সংগে, তোর সংগে বাক্যালাপ করার মতন
একটুও সময় নেই। কেন তুই মিছেমিছি এখানে দাঁড়িয়ে
কষ্ট পাবি বল?
..................
চিনতিস তুই যাকে সে আমার
মধ্য থেকে উঠে
বিষম সুদূর ধু-ধু অন্তরালে চ'লে গেছে। তুইও যা, চ'লে যা।
(দুঃসময়ের মুখোমুখি)
###


মন্তব্য

সচল জাহিদ এর ছবি

কখনও আমার মাকে কোন গান গাইতে শুনিনি৷
সেই কবে শিশু রাতে ঘুম পাড়ানিয়া গান গেয়ে
আমাকে কখনও ঘুম পাড়াতেন কিনা আজ মনেই পড়ে না৷
যখন শরীরে তার বসন্তের সম্ভার আসেনি,
যখন ছিলেন তিনি ঝড়ে আম কুড়িয়ে বেড়ানো
বয়সের কাছাকাছি হয়তো তখনও কোন গান
লতিয়ে ওঠেনি মীড়ে মীড়ে দুপুরে সন্ধ্যায়,
পাছে গুরুজনদের কানে যায়৷ এবং স্বামীর
সংসারে এসেও মা আমার সারাক্ষণ
ছিলেন নিশ্চুপ বড়, বড় বেশি নেপথ্যচারিণী৷ যতদূর
জানা আছে, টপ্পা কি খেয়াল তাকে করেনি দখল
কোনদিন৷ মাছ কোটা কিংবা হলুদ বাটার ফাঁকে
অথবা বিকেলবেলা নিকিয়ে উঠোন
ধুয়ে মুছে বাসনকোসন
সেলাইয়ের কলে ঝুঁকে, আলনায় ঝুলিয়ে কাপড়,
ছেঁড়া শার্টে রিফু কর্মে মেতে
আমাকে খেলার মাঠে পাঠিয়ে আদরে
অবসরে চুল বাঁধবার ছলে কোন গান গেয়েছেন কিনা
এতকাল কাছাকাছি আছি তবু জানতে পারিনি৷
যেন তিনি সব গান দুঃখজাগানিয়া কোন কাঠের সিন্দুকে
রেখেছেন বন্ধ করে আজীবন, কালেভদ্রে সুর নয়, শুধু
ন্যাপথলিনের তীব্র ঘ্রাণ ভেসে আসে!

--কখনও আমার মাকে (শামসুর রাহমান)

স্মৃতির শহর থেকে যত দূরেই থাকি কিভাবে ভুলি এই কবিকে আর তার কবিতাকে?
----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ জাহিদ মন্তব্যের জন্য এবং এই অনবদ্য কবিতাটা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য।

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

কুলদা রায় এর ছবি

এ কবিতার তুলনা নেই। এই একটি কবিতার জন্য হলেও কবিকে মনে রাখব।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

তাসনীম এর ছবি

সত্যি তাই দাদা।

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

চলুক

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

তাসনীম এর ছবি

চলুক
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

প্রখর-রোদ্দুর এর ছবি

অনেক পিছু ফিরে কিছু কবিতায় আবার উকি ঝুকি -

ভালো লাগলো ।

তাসনীম এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ প্রখর-রোদ্দুর।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সুরঞ্জনা এর ছবি

খুব ভালো লাগলো।
শেষের কবিতাটা, অনবদ্য।
চলুক
...................................................................................
জগতে সকলই মিথ্যা, সব মায়াময়,
স্বপ্ন শুধু সত্য আর সত্য কিছু নয় ।

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ সুরঞ্জনা।
++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

নাশতারান এর ছবি

ভীষণ ভালো লাগলো।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ বুনোহাঁস।

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মামুন হক এর ছবি

খুব ভালো লাগলো। কিন্তু এখনও আমি স্মৃতির শহর-৬ এর ঘোর থেকে বেরুতে পারি নি। এতটা নাড়া পাইনি অন্য কোনো ব্লগে অনেক দিন। তিনি বৃদ্ধ হলেন...বাঘার বাপ চলে যাবার পর থেকে প্রতিদিন এই গানটা শুনি...আমার বুড়াও না জানি কবে চলে যায়

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ মামুন ভাই। গানটা আমিও আজকাল শুনি, প্রায়ই।

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তানভীর হোসেন    এর ছবি

এমিল এই কবিতাটির শেষাংশ তোমার সাথে শেয়ার করছি

.. শামসুর রাহমান বলে আছে একজন, যার
প্রতি ইদানীং
বিমুখ নারীর ওষ্ঠ, শিল্পকলা বাগানের ফুল।
সবাই দরজা বন্ধ করে দেয় একে একে মুখের ওপর্,
শুধু মধ্যরাতে ঢাকা তার রহস্যের অন্তর্বাস খুলে বলে-
ফিরে এসো তুমি।
মধ্যরাতে ঢাকা বড়ো একা বড়ো ফাঁকা হয়ে যায়,
অতিকায় টেলিফোন নেমে আসে গহন রাস্তায় জনহীন
দীর্ঘ ফুটপাত
ছেয়ে যায় উচুঁ উচুঁ ঘাসে আর সাইনবোর্ডএর বর্ণমালা
কী সুন্দর পাখি হয়ে রেস্তরাঁর আশেপাশে ছড়ায় সংকেত
একজন পরী হ্যালো হ্যালো বলে ডায়াল করছে অবিরাম
মধ্যরাতে ঢাকা বড়ো একা বড়ো ফাঁকা হয়ে যায়।

(পারিপার্শিকের আড়ালে - শামসুর রাহমান)

তাসনীম এর ছবি

ভাইয়া, ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। এই কবিতাটাও আমার খুব প্রিয়, ঢাকা শহর নিয়ে এরকম সুন্দর কবিতা খুব কমই আছে। এই লেখাটার প্রথম ড্রাফটে এই কবিতাটা ছিল, পরে লেখাটা ছোট করার জন্য বাদ দিয়েছি।

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

দুর্দান্ত এর ছবি

আহ তল্লাবাগ। একটা সময়ে প্রতিদিন সাইকেল চালিয়ে সোবহানবাগ কলনি, তল্লাবাগ পেরিয়ে ইন্দিরা রোডে যেতাম টিউশানি করতে। অলস দুপুর রোদে সবুজ মসে ঢাকা কয়েকটি দেয়াল, দেয়াল ঘেঁষা খোলা ড্রেনের স্বচ্ছ বহতা পানিতে গাপ্পি মাছ, ম্যাজেন্টা কমলা থোকা থোকা বোগেনভেলিয়া মাথায় নিয়ে বসে থাকা কি যেন একটা ডেকোরেটরের দোকান মনে পড়ে। এসব নিশ্চই এখন বহুতল বস্তির নিচে ঢাকা পড়ে গেছে। আপনার পোস্টটির পাল্লায় পড়ে পুরোনো বইয়ের বাক্সখুলতে হবে। বাড়ী বদলানোর সময়ে সেই যে শামসুর রহমানের শ্রেষ্ঠা কবিতার বইটি বাক্সবন্দী হয়েছে, আর বেরয়নি।

তাসনীম এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ দুর্দান্ত। লিখুন না সেই সব দিন নিয়ে?

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

স্বৈরাচার কিনে নিয়েছিল বুদ্ধিজীবী থেকে ছাত্রনেতা, কবি থেকে টিভি উপস্থাপক। সেই একই বাণিজ্য আজো চলছে অবাধে, কাউকে কিনছে দুই ফ্লেভারের জাতীয়তাবাদ, কেউ নিজেকে বেচছে মৌলবাদের কাছে, ইতিহাস কিনছে ফোন কোম্পানী, কেউবা নতজানু খতিবের সামনে। শিক্ষকরাও নানান রঙে নিজেদের সাজিয়ে উপস্থিত এই মুক্তবাজারে। কবি কিভাবে এতকিছু দেখে ফেলেন?

কী যে অসাধারণ লিখেছেন... আপনি কি তা জানেন?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তাসনীম এর ছবি

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ নজরুল ভাই।

শামসুর রাহমান আমার অন্যতম প্রিয় কবি। আমাদের আনন্দ, বেদনা আর পরাজয়ের গল্পগুলো ওনার মত কেউ আর লিখতে পারেননি। আমার সেই মুগ্ধতাই ধরতে চেয়েছি এই লেখায়। আপনার ভালো লেগেছে জেনে
খুব ভালো লাগলো।

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- "তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,
সাকিনা বিবির কপাল ভাঙলো,
সিঁথির সিঁদুর গেল হরিদাসীর।
তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,
শহরের বুকে জলপাইয়ের রঙের ট্যাঙ্ক এলো
দানবের মত চিত্কার করতে করতে"

আমি কবিতা-প্রতিবন্ধি মানুষ। মনেও থাকে না লাইনগুলো ঠিকঠাক। কিন্তু ঘরের দেয়ালে সাঁটানো একটা পোস্টারে তাঁর কবিতাখানির প্রথম লাইন কয়টা মনে গেঁথে আছে।

আপনাকে স্যালুট তাসনীম ভাই চলুক
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ ধুগো...স্যালুটটা কবির প্রাপ্য।

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তিথীডোর এর ছবি

গুরু গুরু

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তাসনীম এর ছবি

বানান সাইজ করার অফিসিয়াল ধন্যবাদ এইবেলা দিয়ে দিলাম হাসি

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

বোহেমিয়ান এর ছবি

চলুক
_________________________________________

_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!

তাসনীম এর ছবি

চলুক

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ওডিন এর ছবি

কিভাবে এইরকম লেখেন আপনি?

______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

তাসনীম এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ওডিন।

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

পড়লাম। একে একে ৮টা পর্বই পড়ে শেষ করলাম। ভালো লিখেছো। তবে তোমার শিশুপালন এর জবাব নাই।
এবার এক কাজ করো, সচলের হবু বাবাদের জন্য তুমি একটা সিরিজ চালু করে দাও। "হবু বাবাদের কী করণীয়।" এই টাইপের কিছু। সচলের বর্তমান বাবারা এখানে একটা একটা পর্ব যোগ করবে ভবিষ্যৎ বাবাদের জন্য। এখানে ভবিষ্যৎ বাবাদের তো দল ভারি হবে ক্রমেই।

--------------------------------------------------------------------------------

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ ভাবি সদয় মন্তব্যের জন্য।

শিশুপালনের একটা পর্ব থাকবে হবু বাবাদের জন্য। সচলের বর্তমান বাবারা বেশি কিছু লিখতে চান না, তাঁদের অভিজ্ঞতা কেন জানি লুকিয়ে রাখতেই বেশি ভালোবাসেন।

হবু বাবার পাশাপাশি অনেক সচল বর্তমানে তাঁদের বাচ্চার হবু মা খুঁজছেন। এঁরাই সবচেয়ে অবহেলিত গোষ্ঠি (এটার লিডার ধূগো), এঁদের জন্য মেয়ে দেখার কাজটা ভাবি হিসাবে আপনি করতে পারেন, ডালাসে প্রচুর মেয়ে আছে। সচলের এগিয়ে আসা উচিত এই সামাজিক কমিটমেন্টে হাসি

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তিথীডোর এর ছবি

'কখনো আমার মাকে কোনো গান গাইতে শুনিনি।
যেন তিনি সব গান দুঃখ-জাগানিয়া কোনো কাঠের সিন্দুকে রেখেছেন বন্ধ ক’রে আজীবন...
এখন তাদের গ্রন্থিল শরীর থেকে কালেভদ্রে সুর নয়, শুধু ন্যাপথলিনের তীব্র ঘ্রাণ ভেসে আসে
!'

একটু আগে নিউজ দেখতে গিয়ে দিনটা মনে পড়লো...
প্রিয় কবির জন্য শ্রদ্ধা!

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

মুগ্ধকর একটা লেখা পড়লাম!!!


_____________________
Give Her Freedom!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।