নীল রোদ্দুর, রাঙা মেঘ

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: শুক্র, ২৭/০৮/২০১০ - ৩:০৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

"মা, তোমার কাছে সেফটিপিন হবে একটা? " তানিয়ার গলার স্বরে বর্তমানে ফিরে আসে দীপান্বিতা, একটু অপ্রস্তুত হয় মেয়ের অবাক আর প্রশ্নময় চোখ দেখে। তানিয়া এত অবাক কেন? মাকে কি সে খুব অন্যরকম দেখছে?

তানিয়া স্কুলের জন্য তৈরী হচ্ছে, সেফটিপিন চাইছে কাঁধে ওড়না আটকাবার জন্য। হাতের চুড়ি থেকে সেপটিপিন খুলে ওর দিকে এগিয়ে দেয় দীপান্বিতা।
"মা, কী হয়েছে তোমার? খুব অন্যমনস্ক দেখাচ্ছে তোমায়।" তানিয়া জিজ্ঞেস করে, কিছুটা উদ্বেগ ওর স্বরে জড়িয়ে আছে।
মাথা নাড়ে দীপান্বিতা, বলে, " না, কিছু হয় নি। পুরানো দিনের কথা মনে পড়ছিল। তোর হলো? সাইকেল বের করে দেবো?"
" না, আজকে সাইকেল নেবো না। আজকে আমরা চার বন্ধু মিলে স্কুলের পরে মিমির জন্মদিনের নেমন্তন্নে যাবো, কাল রাতে তোমায় বললাম না? মনে নেই তোমার? "
"মনে আছে রে তানি, সাবধানে যাস।"

তানিয়া স্কুলের দিকে চলে গেল, অভী আর ওদের বাবা আরো আগেই বেরিয়ে গেছে। এখন বাড়ী ফাঁকা। সদরদরজা বন্ধ করে এসে চিঠিটা বার করে দীপান্বিতা, অনেক আগের লেখা চিঠি, জীর্ণ হলদেটে হয়ে গেছে কাগজ, শব্দগুলো ঝাপসা হয়ে গেছে। বিয়ে হয়ে প্রবাসে চলে যাবার পারমিতা অনেক চিঠি লিখেছিল, প্রিয় নীতু লিখে শুরু করতো আর শেষে ইতি লিখে ডাকনামটাই দিতো সবসময়-মিতুল। এটাই শেষ চিঠি। কেজানে এ চিঠির উত্তর গিয়ে তার কাছে পৌঁছেছিল কিনা!

চিঠিটা চোখের উপরে চেপে ধরে চুপ করে বসে থাকে দীপান্বিতা, বর্তমান মুছে গিয়ে তার সামনে ফুটে উঠতে থাকে সেই সময়, সেইসব দিনরাত, সেইসব খেলা, সেই আলোছায়া। দীপান্বিতা আর পারমিতা। তখন তারা নীতু আর মিতুল, অভিন্নহৃদয় বন্ধু।

*****

গড়ানে জমির উপর ঘাসফুলেদের লালনীলবেগুনীহলদে নকশা যতদূর চোখ যায় ছড়িয়ে আছে, কখন কোনটা জ্বলজ্বল করে ওঠে, গল্পের সুতো খুঁজে পাওয়া যায়। আবার কখন হারিয়ে যায়, তখন আর নেই। কেমন অদ্ভুত মজার যাদু! ছড়ানো ঘাসজমিতে আগে পরে বলেও কি কিছু হয়? কোন্ ঘটনা আগে ঘটেছিলো, কোন্ টা পরে, পক্ষীদৃষ্টিতে দেখলে এই প্রশ্নের কোনো মানেই হয় কি?

ঐ তো দেখা যাচ্ছে এক গ্রীষ্মবিকেল। দেখা যাচ্ছে ফ্রকপরা মিতুলকে, চারপশে কুচোকাঁচা আরো অনেক ছোটো ছোটো ছেলেমেয়ে, ওরা গানের রিহার্সাল দিচ্ছে আসন্ন রবীন্দ্রজয়ন্তীর---মিতুল হারমোনিয়াম বাজাতে বাজাতে গাইছে "স-অ-অ-ত্যমঙ্গল প্রে-এ-এ-এ-মময় তুমি ধ্রুবজ্যোতি তুমি অন্ধকা-আ-রে", চারিপাশে কচিকাঁচারা সঙ্গে সঙ্গে গলা মেলাচ্ছে,"স-অ-অ-ত্যমঙ্গল ... "

নীতু তখন কোথায়? এই গানের দলে সেতো নেই! সে তখন একটা টিনের সুটকেস হাতে নিয়ে মাঠ পেরিয়ে হেঁটে আসছে! ঐ সুটকেস সে রিক্সায় রেখেই ভুলে বাড়ী নেমে গেছিলো, এখন তাই উদ্ধার করতে একা একাই লোককে জিজ্ঞেস করে করে গেছিলো ওদের যে রিক্সা চালিয়ে ইস্কুলে পৌঁছে দিতো, সেই বিমল-ওরা বলতো বিমলদা, তার বাড়ী। ছোটো কুটির, টালির চাল, সে ঘরের মসৃণ মাটিলেপা দাওয়ায় বসে বিমলদা একটা ছোট্টো বাচ্চাকে কোলে নিয়ে অতি ক্ষুদ্র চামচ দিয়ে অতি ক্ষুদ্র বাটি থেক সুজি-দুধ খাওয়াচ্ছিলো। খেতে খেতে বাচ্চাটা নানা খুশীর আওয়াজ করছিলো।

নীতু দেখে অবাক ও মুগ্ধ, বাবারা যে কোনোদিন বাচ্চাদের খাওয়ায় এরকম সে আগে কোথাও দেখেনি, চারিপাশে সর্বদাই এই ধরনের কাজ করতে দেখেছে মায়েদের বা কাকীমাজ্যেঠিমাদের। বাবা-কাকা- জ্যেঠারা আপিসে যায়, বাজার করে ফেরে, চা খেতে খেতে খবরের কাগজ পড়ে, রেডিও শোনে-কিন্তু বাচ্চাদের কোলে নিয়ে খাওয়ানো-উঁহু, কস্মিনকালে সে দেখেনি!

সুটকেস ফিরে পেয়ে নীতু ভাস্কোদাগামার মতন উত্তেজিত ও খুশী, অনেক ধন্যবাদ দিয়ে একা একা ফিরে আসছে সুটকেস নিয়ে, মুখে দেশ আবিষ্কারের আনন্দ।

সুতো আবছা আবার, আবার জ্বলজ্বল করে অন্যখানে, মিতুল দৌড়াতে দৌড়াতে আসছে, " নীতু নীতু , আজকে দুষ্টুমিষ্টি দেখাবে টিভিতে সন্ধ্যেবেলা? যাবি না ভাস্করদাদের বাড়ী?"

তখন গোটা পাড়ায় খান কুড়িমাত্র বাড়ী, আর একটিমাত্র বাড়ীতে টিভি, সেই বাড়ী ভাস্করদাদের বাড়ী। নীতু লাফিয়ে উঠে দাঁড়ায়, "হ্যাঁ যাবো। লোডশেডিং হলে কী হবে?"

"না না সে হবে না, ভগবানকে বলা আছে।"

তারপরে সন্ধ্যেবেলা সেই দুষ্টু আর মিষ্টি আর তাদের সেই বোর্ডিং স্কুলের গল্প, সেই নানারকম দিদিমণি, সেই ছাত্রীদের দুষ্টুমি ... সেই গানগুলো ...

হলদেপাখির পালকের মতন নরম সেইসব দিন কমলামেঘের মতন কোমল সেইসব দিন ভেসে ভেসে চলে গেছে। মিতুলদের বাড়ীর ছাদের উপরে চিলেকোঠার ঘরের ছায়ায় বসে আছে নীতু আর মিতুল, মিতুল পড়ছে স্বেন হেদিনের তাকলামাকান অভিযানের গল্প, পড়ে শোনাচ্ছে নীতুকে। আহা, বইয়ে যে বড়ো অল্প আছে, ঐ শ্যেনপক্ষীর মতন চোখ নিয়ে কী দেখলো সঙ্গীলোকটি, মরুপারে সেটা কি সত্যিই নদীর সীমানা, বনের ছায়া? কী হলো ওদের?

দুজনে জল্পনা করে নিশ্চয় ওরা বেঁচেছিলো, নইলে এসব বেরোলো কেমন করে? সাহেব তো আর ডাইরিতে ডানা লাগিয়ে দিয়ে বলে নি, হে ডাইরি, তুমি ইউরোপে উড়ে যাও গিয়ে বই হয়ে বেরোও । নীতু আর মিতুল হি হি হি হি করে হাসছে, ওদের উপরে শরৎ মেঘের ছায়া পড়েছে।

****

তানিয়াকে কোনোদিন দীপাণ্বিতা বলতে পারে নি সব কথা। একমাস বয়স থেকে তানিয়া তার কোলে মানুষ হয়েছে। নিজের মেয়ে যে সে নয় একথা সে নিজেও ভুলে গেছিল।

বারো বছর পরে তানভীর দেশে আসছে, তানিয়াকে নিয়ে যেতে। কাল তার ফোন এসেছে। চোখের ভিতরে ধরে রাখা জল চোখ ছাপিয়ে ওঠে, ঝরে পড়ে। দীপাণ্বিতা বাধা দেয় না। এই একলা ঘর সাক্ষী থাকুক এ অশ্রুর! অভীও তো জানে না তানিয়া তার নিজের দিদি নয়! আট বছরের ছেলেটা হঠাৎ তার জগৎ বদলে যেতে দেখে কি ভাবে তা গ্রহণ করবে?

তানভীরকে বিয়ে করা নিয়ে পারমিতাদের পরিবারে যে ঝড় উঠেছিল, তার কিছুটা ঝাপ্টা দীপাণ্বিতাও পেয়েছিলো। সে তখন অন্য শহরে থাকতো পড়াশোনার জন্য, কিন্তু মিতুল চিঠিতে লিখতো তাকে সব টানাপোড়েনের কথা। এখনো নীতুর মনে হয় সে যদি সেইসব দিনে মিতুলের কাছে থাকতে পারতো! মানুষের জীবন খুব কঠিন! কত কিছুই করা যায় না ইচ্ছা থাকলেও!

সকলের অমতে তানভীরকে বিয়ে করায় পারমিতার বাবামাদাদা সবাই তাকে ত্যাগ করলো, অন্যান্য আত্মীয়পরিজনদের তো কথাই নেই। পারমিতা স্বামীর সঙ্গে চলে গেলো অনেক দূরের শহরে, সেখানে তখন পোস্টিং তানভীরের।

ইতিমধ্যে দীপাণ্বিতার পড়াশোনা শেষ, চাকরি শুরু। রূপমের সঙ্গে পরিচয় ও বন্ধুত্ব। বন্ধুত্বের সীমানা পেরিয়ে একদিন বিবাহ। মিতুলের সঙ্গে নীতুর চিঠিতে যোগাযোগ ছিলো ভালোই। বিয়ের তিনবছর পরে মিতুল সন্তানসম্ভবা হয়েছিলো, সেই সময়ের দু'খানা চিঠির মধ্যে নীতুর হাতে ধরা চিঠিটিই শেষ চিঠি।

পারমিতা আর তানভীর যে শহরে থাকতো সেইখানেই ট্রান্সফার হয়েছিল দীপাণ্বিতা আর রূপমের। দেখা হবে, দেখা হবে বলে কী আশার দোলন তখন নীতুর মনের মধ্যে! কিন্তু মানুষের ভাগ্য! তারা গিয়ে শুনলো মর্মান্তিক সংবাদ! তানিয়া জন্মাবার পরেই নানা কমপ্লিকেশন দেখা দেয় পারমিতার, ডাক্তারদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে সে জীবনের কাছ থেকে বিদায় নেয়।

তানভীর দীপাণ্বিতারও বন্ধু ছিলো কলেজজীবনে, ভেঙে চুর চুর হয়ে যাওয়া মানুষটাকে সে কী সান্ত্বনা দিতে পারতো সেদিন? কতটুকু সাহায্য দিতে পারতো? তারই জন্য নিজের সমস্ত আপনজনেদের ছেড়ে চলে আসা একলা মেয়েটির মৃত্যুর স্মৃতি তানভীরকে এত পীড়িত করলো, এত তীব্র অপরাধবোধে আচ্ছন্ন করলো যে সে নীতুর কাছে একটিমাত্র সাহায্য প্রার্থনা করলো, তানিয়াকে গ্রহণ করার। দীপাণ্বিতা সে প্রার্থনা অগ্রাহ্য করতে পারতো না, সে যে মিতুলের সঙ্গে বিনিসুতায় গাঁথা!

তার সংসারেও ঝড় উঠেছিলো, রূপম রাজী ছিলো না। দীপাণ্বিতা বলেছিলো দরকার হলে বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে সে তানিয়াকে মানুষ করবে একা একা। টাকাকড়ির জন্য আটকাবে না, তার নিজের চাকরি আছে। মেয়েরা যে দরকারে কত কঠিন হতে পারে দীপাণ্বিতা তার পরিচয় দিয়েছিল। রূপম শেষ পর্যন্ত মেনে নিয়েছিল।

তানভীর চলে গেল বিদেশে, ক্ষীণ যোগাযোগ ছিলো। তানিয়া বড় হলো, রূপমকে বাবা আর দীপাণ্বিতাকে মা জেনে। এতদিন পরে তানভীর ফিরছে। দীপাণ্বিতা বুঝতে পারে না সে কীভাবে বলবে! তানিয়া কীভাবে নেবে?

একটা সময়ে চাকরিও ছেড়ে দেয় দীপাণ্বিতা। টাকা টাকা করে ছুটে বেড়ানো কেন যেন আর ভালো লাগছিলো না তার। ছেলেমেয়েকে মানুষ করা রান্নাবান্না ঘরগোছানো উলবোনা এসবেই দিন কেটে যাচ্ছিল, ভালোও লাগতো বেশ। লম্বা চুল রাখলো, হাতখোঁপা করতে শিখলো! আশ্চর্য ব্যপার! এমন জীবন যে তার হবে সে নিজের স্কুলকলেজজীবনেও কল্পনা করেনি! মানুষের মন!

তানি মাঝে মাঝে জড়িয়ে ধরে বলে, " মা তুমি অন্যরকম! মিমির মা জিনির মায়েদের থেকে অনেক অন্যরকম।"

এবারে ধারা বেয়ে জল পড়ছে দীপাণ্বিতার চোখ থেকে, আঁচল দিয়ে মুছে মুছে ফুরায় না, সে কিভাবে তানিকে বলবে ?

নীতুর জলঝাপসা চোখের সামনে কিশোরী মিতুলের আলোর মতন উজল হাসি স্পষ্ট হয়ে ওঠে, সবুজ-সবুজ সেইসব শৈশবকৈশোরের দিন পাখা ঝাপটে কোথায় উড়ে গেল! জীবনের খররৌদ্রে সেঁকা হতে হতে কড়া পড়ে গেল মনের পরতে পরতে। কত স্বপ্ন, কত কল্পনা--সব কত সহজেই মিলিয়ে গেলো। তারা কল্পনা করতো তারা দু'জনে ভূপর্যটক হবে, তাকলামাকান অভিযানে যাবে! যাবে আন্টার্কটিকায়, দেখবে অরোরা! যাবে আফ্রিকার দেশে দেশে, যাবে ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত দেখতে! নীলনদের তীরে দাঁড়িয়ে একসঙ্গে ছবি তুলবে! প্রশান্ত মহাসাগরে পাড়ি দেবে ভেলায় চড়ে, থর হেয়ারডালের মতন! দীর্ঘশ্বাসে ভারী হয়ে আসে নীতুর বুক, সবচেয়ে বড় অভিযানেই একা পাড়ি দিল মিতুল!

এবারে তারও বেরিয়ে পড়ার সময় হলো। কাগজকলম টেনে নেয় দীপাণ্বিতা, লিখতে থাকে, " তানি সোনা, তোকে একটা কথা আমি কোনোদিন বলিনি, এবারে বলার সময় হয়েছে-----"

(শেষ)


মন্তব্য

সন্ধি [অতিথি] এর ছবি

বেশ লেখা ।ভালো লাগলো।

তুলিরেখা এর ছবি

ধন্যবাদ সন্ধি।
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

টিউলিপ এর ছবি

চমৎকার। পড়তে পড়তে নিজের ছোটবেলায় চলে গিয়েছিলাম। আমিও স্কুলে প্রায়ই একটা ম্যাপ নিয়ে যেতাম, আর ম্যাপ দেখে মনে মনে ভাবতাম কোথায় কোথায় ঘুরে বেড়াব। আজ কোথায় সেই ম্যাপ, কোথায় সেই ডানামেলা মন!
___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

তুলিরেখা এর ছবি

যে ডানার কুঁড়ি আমরা সবাই নিয়ে আসি কেজানে কোথা থেকে, কারুর কারুর ক্ষেত্রে তা থেকে ডানা ফোটে সত্যি করে। তারাই উড়ে যায় ট্রেন বাস জাহাজ হাওয়াই জাহাজ রকেট স্পেসশিপ অণুবীক্ষণ দূরবীক্ষণের পথে দুনিয়াকে জানতে, তাদের জানাটুকু নিয়েই আজ আমাদের এই দিন এসেছে।

বেশীরভাগেরই ডানার কুঁড়ি লুকানোই থেকে যায়, যে অজানা থেকে সে কুঁড়ি নিয়ে এসেছিল, যাবার সময় সেখানেই আবার সঙ্গে করে নিয়ে ফিরে যায়। কেজানে হয়তো কোথাও তারও ডানা ফোটে, এই চোখে দেখা কানে শোনা হাতে ছুঁতে পারা ছোট্টো জীবনটুকুই তো সব নয়, তার দু'পাশে অসীম সম্ভাবনা। তার কতুটুকুই বা আমরা জানতে পেরেছি আজ পর্যন্ত?

ভালো থাকবেন টিউলিপ।

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

[বিষণ্ণ বাউন্ডুলে] এর ছবি

মন ছুঁয়ে গেল,অসাধারন লিখেছেন।

তুলিরেখা এর ছবি

ধন্যবাদ বিষন্ন বাউন্ডুলে।

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

ভাল্লাগলো তুলিদি...আমিও অ্যাটলাস নিয়ে বসে থাকতাম ঘন্টার পর ঘন্টা! হাসি

-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

তুলিরেখা এর ছবি

আমার আবার ভ্রমণকাহিনি পড়তে ভালো লাগতো বেশী। একটু অন্যধরনের ভ্রমণ। তুমি শুনলে হাসবে আমার প্রথম পৃথিবী চেনার গাঢ় অনুভব হয়েছিলো ভূগোল পড়ে নয়, (ভূগোলের ক্লাস আমরা কেউ পছন্দ করতাম না! বাপরে ম্যাপ আঁকা, সমুদ্রস্রোত আঁকা, কোথাকার কোন আমাজন অববাহিকার ভূপ্রকৃতি মুখস্থ বলা! আমাদের দিদিমণি ছিলেন যাকে বলে মিলিটারি মেজাজের মন খারাপ ), ভূগোল পড়ে নয়, এরিক ফন দানিকেনের চ্যারিয়ট অব দ্য গডসের অনুবাদ "দেবতা কি গ্রহান্তরের মানুষ? "পড়ে। হাসি
পরে সাগানের কসমস পড়ে অনুভবটা আরো বিস্তৃত হয়েছিলো।
ঘোরাঘুরি আসলেই জরুরী দরকার। টাকাকড়ি নাই এই যা অসুবিধা! মন খারাপ
কোনো স্পনসর পেলে জানিও কিন্তু। হাসি

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

ইশশ! দানিকেনের বইটা পড়া হলোনা আজও! এতো নাম শুনেছি! মন খারাপ

-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

তুলিরেখা এর ছবি

দানিকেনের ওই বই তো এখন সার্চ করলেই পেয়ে যাবে। তারপর নামিয়ে নিয়ে তোফা আরামে পড়ো। হাসি

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

জুয়েইরিযাহ মউ এর ছবি

ভালো লাগলো তুলিদি... শেষটুকু শেষ না হওয়ার আস্বাদে পূর্ণ...

-----------------------------------------------------------------
নির্জলা নৈবেদ্য


-----------------------------------------------------------------------------------------------------

" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি

তুলিরেখা এর ছবি

ধন্যবাদ মউ, শেষ হয়ে হইলো না শেষ। দাড়িদাদু কইয়া গেছেন। হাসি

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

তিথীডোর এর ছবি

স্কুলে যে ক'টা দিন ভূগোল পড়েছি কেনো যেন টানে নি একটুও, ইচ্ছে যায়নি ভিন দেশের সাগরে গা ভাসাবার.. বরং ভেবেছি ব্যাকপ্যাক ঝুলিয়ে আগে ঘুরে দেখতে বেরুবো আশেপাশের মাঠ আর ঘাসফড়িঙের ঝাঁক.. নিজের দেশটাই এখনো খুব একটা দেখা হয়নি যে...

এট্টুশখানি অন্যরকম মনে হলো লেখাটা !
বর্ণনা বরাবরের মতোই আদর- আদর, মায়ামাখা.. হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তুলিরেখা এর ছবি

আমারও দেখতে ইচ্ছা করে কাছেপিঠের জানা অজানাকে। আসলে ছোটোবেলা ধানক্ষেতে পাটক্ষেতে শিমুলতলায় খেজুরতলায় মাঠে বনে ঘুরে ঘুরে মাঠে ধুলাবালিতে গড়িয়ে খেলে পুকুরে স্নান করে কেটেছে বলে সে ব্যাপারে বেশ একটা কৃতজ্ঞতাই আছে। জীবনের একটা পর্যায়ে ঝুলি ভরে দিয়েছিলো বিধাতা, হিসাব কষা মানুষের কাছে হয়তো তার কোনো মূল্যই নেই, কিন্তু পিছনে ফিরে দেখলে কেবল বুঝি সেই দিনগুলি অমূল্যরতন।
ভালো থেকো।

----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

ধুর, মানুষের জীবনে খালি পেজগি আর পেজগি। পরের সন্তান বড়ো করে কোনো লাভ নাই, খালি জটিলতা বাড়ে। নানা বর্ণ-রূপ-রস-গন্ধভরা লাভেরই তো দুনিয়া! গল্প ভালু পাইলাম।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

তুলিরেখা এর ছবি

জীবনে এত পেজগি বইলাই না এত সব বৈচিত্র! "হাসি কান্নার হীরা পান্না দোলে ভালে/ নাচে ছন্দে ভালোমন্দ তালে তালে " হাসি

ভালা থাইকেন।
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

গড়ানে জমির উপর ঘাসফুলেদের লালনীলবেগুনীহলদে নকশা যতদূর চোখ যায় ছড়িয়ে আছে, কখন কোনটা জ্বলজ্বল করে ওঠে, গল্পের সুতো খুঁজে পাওয়া যায়। আবার কখন হারিয়ে যায়, তখন আর নেই। কেমন অদ্ভুত মজার যাদু! ছড়ানো ঘাসজমিতে আগে পরে বলেও কি কিছু হয়?

মায়ামাখা লেখা! অল্প কয়েকটা বাক্য, কিন্তু কি চমৎকার বিন্যাস!

ভালু পাইলাম তুলিদি। খুব ভালু পাইলাম।

---- মনজুর এলাহী ----

তুলিরেখা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মনজুর এলাহী।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।