এসো নিজে করি ১২ - কিভাবে আধুনিক কবি হবেন / How to be a Son of Kaykaus

চরম উদাস এর ছবি
লিখেছেন চরম উদাস (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৫/০২/২০১৫ - ২:৪০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দেশে কবি বেশী না কাক, এই গুরুতর প্রশ্নের উত্তর জানা নেই। তবে জানা আছে কিভাবে কবি হওয়া যায়, বিশেষ করে কিভাবে আধুনিক কবিতা লিখা যায়। এসো নিজে করির প্রথম লেখাই ছিল কিভাবে লেখালেখি করবেন। সেটার আবার বড় অংশ জুড়েই ছিল 'কিভাবে কবিতা লিখবেন'। সেখানে এনালগ ও ডিজিটাল উপায়ে কবিতা লেখার উপায় নিয়ে বেশ খানিক আলোচনা করেছিলাম। সফটওয়্যার দিয়ে কাব্য রচনার পদ্ধতি হাতে কলমে করে দেখিয়েছিলাম।প্রশ্ন হচ্ছে এতদিন পরে এসে আবার কবিদের পিছে লাগলাম কেন? সেই এসো নিজে করি আজ থেকে পাক্কা তিন বছর আগে লিখা। এই সময়ের মধ্যে কবিরা আরও আধুনিক হয়েছে, কবিতারা অত্যাধুনিক হয়েছে, দেশের কয়েক লাখ কাক বিলুপ্ত হয়ে গেছে, কয়েক কোটি কবি পয়দা হয়েছে। তাই সময়ের দাবীতে আরও একখানা ইস্পিশাল এসো নিজে করি লিখতে বসলাম। অন্য কোন সাহিত্য না, শুধুই কবিতা, তাও আবার শুধুই আধুনিক কবিতা লিখার কলাকৌশল শেখাতে।

কেন লিখবেন?

অবান্তর প্রশ্ন। বরং প্রশ্ন করা উচিৎ কেন কবিতা লিখবেন না? ওসব 'সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি' ধরণের নেগেটিভ কথাবার্তা ছুড়ে ফেলে দিন তাই। মানুষ মাত্রই কমবেশি সবাই কবি। যেনতেন কবিতা বাদ দিয়ে বরং আধুনিক কবিতার কথা বলি। আধুনিক কবিতা মানুষ কেন লিখে? নানা কারণ আছে লিখার। তবে গবেষণায় দেখা গেছে মূলত তিনটি কারণ কবিরা আধুনিক কবিতা লিখে থাকে।

১ পেট গরম হলে - অত্যধিক ভাজাপোড়া খেলে গ্যাস হয়। সেই গ্যাস থেকে কবিতা তৈরি হতে পারে। কবিতার অপর নাম বেহেশতি বায়ু! কারণ ব্যাখ্যা করি। স্কুলে থাকতে হুজুর একবার বেহেশতের বেনিফিট প্যাকেজের বর্ণনা দিচ্ছিলেন ঢুলুঢুলু চোখে। চোর চুরি করতে ঢুকলে বের হবার রাস্তা দেখে নেয় আগে। আমাদের নাজিম কোন বাসায় দাওয়াত খেতে গেলে আগে বাথরুমের ডিরেকশন দেখে নেয়। বারোমাসের পেটরোগা নাজিমের তাই হন্তদন্ত হয়ে প্রশ্ন - হুজুর বেহেশতে হাগুমুতুর ব্যবস্থা কি? হুজুর বর্ণনা দিচ্ছিলেন বেহেশতি আঙ্গুরের। মুডটাই নষ্ট হয়ে গেল। বিরক্ত গলায় জানালেন, বেহেশতে বাথরুমের কোন ব্যবস্থা নাই। যা ইনপুট সেটা বায়ু হয়ে বের হয়ে যাবার ব্যবস্থা। তবে সেটা মোটেও বদ টাইপের বায়ু নয়। মিষ্টি সুগন্ধি বায়ু। এই হচ্ছে বেহেশতি বায়ুর ঘটনা। আধুনিক কবিরা সমস্ত শৈল্পিক গুন সম্পন্ন মানুষ। কবিদের পেট গরম হলে তাই 'বেহেশতি বায়ু' হয়ে যা বের হয় সেটাই কবিতা। এক্ষেত্রে একে কবিতা সৃষ্টি করা বা জন্ম দেয়া না বলে কবিতা ত্যাগ করা বলাই উত্তম।

২ শরীর গরম হলে - পেট শরীরের অংশ হলেও এখানে কবি শরীর গরম হওয়া বলতে কি বুঝিয়েছেন, বুঝেনইতো! শরিয়াতে নির্দেশ দেয়া আছে যৌবনপ্রাপ্ত প্রতিটি পুরুষ মানুষের উপর বিবাহ করা অত্যাবশ্যক বলে। এখন কোন কারণে যদি বিবাহ করার ক্ষমতা বা উপায় না থাকে তবে পরবর্তী সল্যুশন আধুনিক কবিতা লেখা। গবেষণায় দেখা গেছে বেশীরভাগ আধুনিক কবিরা অবিবাহিত কাম-তাড়িত হনুমান গোত্রীয়। সদ্য বিবাহিতরা আধুনিক কবিতা লিখতে পারেনা। চল্লিশ পার হলে আবার শরীরের জ্বলুনি বাড়ে, সেই সাথে আধুনিক কবিতা লিখার ক্ষমতাও। সুতরাং আধুনিক কবিতা লিখার গড় বয়স হচ্ছে ১৮ থেকে ৩০ এবং ৪৫ থেকে আমৃত্যু। এবং যুক্তিযুক্ত কারণেই আধুনিক কবিদের বড় অংশ পুরুষ।

৩ মন গরম হলে - সহজ ভাষায় ছ্যাঁকা বা হাফসোল খেলে। সাধারণ মিষ্টি ছ্যাঁকা হলে সেটার পরিণতি হিসেবে সাধারণ মিষ্টি মিষ্টি কবিতা লেখা যেতে পারে, আধুনিক কবিতা নয়। কিন্তু একটু হাই ডোজ ছ্যাকা যেমন প্রেমিকা 'ওগো আমি তোমাকে বড় ভাইয়ের মতো দেখি' বা 'আমি তোমার যোগ্য নই, তুমি আরও ভালো মেয়ে পাইবে' টাইপের কথা বলে অন্য কারো হাত ধরে ঢ্যাংঢ্যাং করে চলে গেলে তখন সমাধান আধুনিক কবিতা লিখা। কবিতার শক্ত শক্ত জ্বালাময়ী শব্দের মাধ্যমে মনের জ্বলুনি কিছুটা কমানো আরকি।

কিভাবে লিখবেন?

এবারে মূল বিষয়ে আসি - কিভাবে আধুনিক কবিতা লিখবেন। প্রাচীন কবিতায় ছন্দের ব্যাপার স্যাপার ছিল। আধুনিক কবিতায় ছন্দ হারাম। তাই আধুনিক কবিতা লিখাও বড় আরাম।এখন আর আলু লিখলে সেটার সাথে বালু বা ফালুকে মেশাতে হয়না, আলুর সাথে দিব্যি পটলকে মেশানো যায়।আর বেশী কথা না বাড়িয়ে, কিভাবে আধুনিক কবিতা লিখবেন সেটার দশটি ধাপ একেবারে ধাপে ধাপে শিখিয়ে দিচ্ছি। আধুনিক কবিতা লিখতে চাইলে এই টেন কমান্ডমেন্ট অনুসরণ করুন।

১ কবিতার নাম, কবির নাম

কবিতা লিখতে হলে প্রথমেই দুটি জিনিস লাগবে, এক কবির নাম, দুই কবিতার নাম।

কবির নাম কেমন হওয়া উচিৎ সে সম্পর্কে মহাস্থবির জাতকের মাস্টারপিস লেখায়( উত্তরাধুনিক লেখালেখির সহজ কৌশল, বা, উত্তরাধুনিক লেখা এতোই সহজ! ) বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তার লেখা থেকেই কোট করছি -

প্রথম অক্ষরে থাকবে চমকদার বা কোমল একটা তৎসম শব্দ। যেমন: শৃঙ্গার, অশ্মন, নিতম্ব ইত্যাদি। সাধারণত, আর্যদের প্রতি বিদ্রোহসূচক জাতিবাচক শব্দ আসতে পারে, যেমন: ব্রাত্য, দ্রাবিড়, অনার্য, শূদ্র ইত্যাদি। তবে এসব ব্যবহৃত হয়ে যাওয়ায় অন্য কিছু রাখতে পারেন। কিন্তু, দেশীয় কোন আদিম জাতিগোষ্ঠীর নাম চলবে না। যেমন: সাঁওতাল, চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যা, মুরং ইত্যাদি শুরুতে আসবে না। সমাসবদ্ধ পদ না আসাই ভালো।
নামের দ্বিতীয় অংশে আপনার পিতৃপ্রদত্ত নামের কোন অংশ রাখতে পারেন। যেমন: ইসলাম, রহমান, চৌধুরী, অথবা, আপনার প্রকৃত নামের আদিপদ বা তার অংশবিশেষও চলবে। যেমন: নজরুল হলে নজরু, মোজাম্মেল হলে মজম ইত্যাদি। পুরোটাও চলবে। আজকাল এই তৎসম-আরবি/ফারসি মিশ্রণ বেশ উত্তরাধুনিক গন্ধ আনে। ভাবুন তো: ব্যলীক সোলায়মান কিংবা, দারুক য়ামিন। হ্যাঁ, নামের ভিন্ন বানানও গ্রহণযোগ্য। যেমন: আসলামের বদলে য়াছলাম, কিংবা, ফরিদ না লিখে ফহ্রিদ, অথবা, ইয়াকুবের পরিবর্তে য়্যাকুব কি ইরশাদ না হয়ে ইর্শাদ। অভিভাবকীয় নাম উল্টো করেও লিখতে পারেন, যেমন: নাজিম উদ্দিন-এর জায়গায় উদ্দিন নাজিম (হুমায়ুনের অমর সৃষ্টি উজবেক কবি নদ্দিউ নতিম-এর কথা মনে পড়ে গেলো)।

সুতরাং বুঝতেই পারছেন কবির নাম কত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এবারে আসি কবিতার নামে। কবিতার নাম আরও বেশী গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনেকের ধারণা কবিতার নাম গুরুত্বপূর্ণ না। সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। শিরোনাম কবিতার থেকেও বেশী গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বেশীরভাগ মানুষ শিরোনাম পড়ে, কবিতা পড়ে না। আঁতকে ওঠার কিছু নেই। মনে করে দেখুন তো শেষ কবে কবিতার বই কিনেছেন? এবার মনে করে দেখুন কেনার পর কি করেছেন। কাব্য সাহিত্যের জন্ম হয়েছে অন্যকে উপহার দেয়ার জন্য। বইয়ের দোকানে গিয়ে হন্তদন্ত হয়ে মানুষ কবিতার বই কিনে, সাথে একটা গিফট র‍্যাপ কিনে। তারপর আচ্ছা করে প্যাকেট করে। ভুলোনা আমায় টাইপের কিছু লিখে প্রেমিকাকে গিফট দেয়। প্রেমিকা সেই বই পেয়ে আহ্লাদে গদগদ হয়ে পাতা উল্টায়। তারপর কয়েকটা কবিতার শিরোনাম পরে বুক সেলফে সাজিয়ে রেখে দেয়। পরদিন প্রেমিকের সাথে দেখা হলে বলে, হ্যাঁগো, বইটা কি মিষ্টি। সবচেয়ে ভালো লেগেছে 'হারানো মগজ' আর 'রিমার নীল পায়জামার লাল ফিতে' কবিতা দুটা।
তো এই হচ্ছে ঘটনা। শতকরা নব্বই ভাগ ক্ষেত্রে নতুন কবিদের বই বিক্রি হয় বিশ থেকে পঁচিশ কপি। আর সেই বইতে যদি গোটা বিশেক কবিতা থাকে তবে পড়া হয় তার দুই থেকে তিনটি কবিতার শিরোনাম।তাই শিরোনামের প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগ দিন। কথিত আছে এক বদ প্রকাশক এক আধুনিক কবির বই প্রকাশ করার পর সূচিপত্র আর প্রথম কয়েকটি পাতা ছাড়া বাকি সব পাতা একটির সাথে আরেকটি গ্লু দিয়ে আটকে দিলেন। মোটামুটি গোটা পঞ্চাশেক বই বিক্রির পরও দেখা গেল কেউ এই ব্যাপারে কোন অভিযোগ জানাচ্ছে না। পরিচিত এক পাঠকের বাসায় গিয়েও দেখলেন সেই বই। কৌতূহল নিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, বইটা পড়েছে কিনা। পাঠক হাসিমুখে বললেন, আবার জিগায়। অবশ্যই পড়েছি। সবচেয়ে ভালো লেগেছে 'আবুলের হাফপ্যান্ট' আর 'হারানো আণ্ডারপ্যান্ট' কবিতা দুটি। প্রকাশক সেই পাঠকের সেলফে গিয়ে বইটি একটু নাড়াচাড়া করে দেখলেন পাতাগুলো এখনও আঠা গিয়ে জোড়াই আছে! সুতরাং আবারও বলছি আধুনিক কবিতার বই এর সবচেয়ে বেশী পঠিত ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে এর সূচীপত্র। তাই শিরোনামের প্রতি মন দিন, সূচীপত্রকে আকর্ষণীয় করে তুলুন।

২ শব্দের প্রতি মন দিন, বাক্য নয়

এটা যাকে বলে একেবারে গোল্ডেন রুল। তাই বড় বড় হরফে লিখে দিচ্ছি -
আধুনিক কবিতায় শব্দ গুরুত্বপূর্ণ, বাক্য নয়।

বাক্য নিয়ে কাজ করে পিনপিনে গল্পকাররা, কবির কাজ হচ্ছে শব্দ নিয়ে। তাই শব্দের প্রতি মন দিন। একটা একটা করে শব্দ ডেলিভারি দিবেন, আর বলবেন - 'যা ব্যাটা যা জিলে তেরি জিন্দেগী'। সেই শব্দ আপনার কলম বা কীবোর্ড থেকে বের হয়ে নিজের জিন্দেগীর নিজে খুঁজে নিবে। সে গিয়ে অন্য কোন শব্দের সাথে গাঁট বাঁধল বা অন্য কোন বাক্যের কোলে ঠাই নিলো সেটা নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। কিভাবে একটার সাথে আরেকটা র‍্যান্ডম শব্দ জোড়া দিয়ে সফটওয়্যার দিয়ে কবিতা লিখবেন সেটা এই লেখার আগের পর্ব 'এসো নিজে করি- কিভাবে লেখালেখি করবেন' এ শিখিয়েছি। আর ডিজিটাল পদ্ধতি ভালো না লাগলে এনালগ পদ্ধতিতে কবিতা লিখার জন্য আপনাকে কিনতে হবে একটি শব্দকোষ। তারপর ওবু দশ বিশ তিরিশ করতে করতে শব্দকোষের যেকোনো পাতার যেকোনো শব্দে গিয়ে থামুন। শব্দ তুলুন। তারপর আবার শব্দকোষের পাতা উল্টে একইভাবে শব্দ বাছাই করে যান। এভাবে একটা একটা করে শব্দ ডেলিভারির পর পুর বাক্য গিয়ে কোথায় দাঁড়ালো সেটার দিকে একেবারেই তাকাবেন না, কবিতার শিল্পগুণ নষ্ট হয়ে যাবে।

৩ নিজের কবিতা নিজে পড়বেন না

গবেষণায় দেখা গেছে পৃথিবীতে প্রতি সেকেন্ডে ৪ টির মত শিশুর জন্ম হয়, আর প্রায় সাড়ে চারশোটির মত আধুনিক কবিতার জন্ম হয়। এই সাড়ে চারশো কবিতার মধ্যে চারশোটির জন্মই আবার পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনকবিবসতিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশে হয়। আর মিনিটে জন্মানো এই সাড়ে চারশোটি নবজাতকের মধ্যে চারশো উনপঞ্চাশ দশমিক নয় নয় নয় নয় পৌনঃপুনিক টি কবিতার নাম ছাড়া অন্য কোন অংশ কবি ছাড়া অন্য কেউ পাঠ করে দেখেন না। এমনকি বড় একটা সময় আধুনিক কবিরা তার নিজেদের কবিতাও নিজে পড়ে দেখেন না। ওতে নাকি কবিতার শিল্পগুণের হানি হয়। নিজের কবিতা নিজে না পড়েও কিভাবে কবিতা লেখা সম্ভব এটা নিয়ে অনেকে হয়তো ধন্ধে পড়ে গেছেন।ওই যে আগের পয়েন্টে যে বললাম, শব্দের প্রতি মন দিন, বাক্য নয়। তাই শব্দ জোড়া দিতে দিতে বাক্য কি হল সেটা পড়ে সময় নষ্ট করার কোন মানে নেই। যাই লিখুন না কেন, সমালোচকরা মানে খুঁজে বের করে নিবে। আপনাকে কষ্ট করতে হবে না।

৪ অদ্ভুত বর্ণ, গন্ধ, উপমা, বিশেষণের ব্যবহার

বর্ণ, গন্ধ, উপমা, বিশেষণ এসব কবিতার প্রাণ। এক শব্দের ঘাড়ে ব্যাক-প্যাকের মত আরেক শব্দ চাপিয়ে দিন। মানে নিয়ে মাথা ঘামানোর মানে হয়না। শুনতে ভালো লাগলেই হল। যেমন,
বৃষ্টির ফুল
মেঘের জোছনা
আধারের আলো
নিশ্চুপ কোলাহল
অমাবস্যার সূর্য

যার গায়ে যেমন খুশি তেমন রঙ মাখাতে পারেন। যেমন,
সবুজ শালিক
লাল চড়ুই
হলুদ কাক
বেগুনী দোয়েল
লাল মানুষ
নীল নারী
ধূসর বালক
রঙধনু কিশোরী

উপমা দিন মনে খুলে,
নদীর জলের ঢেউয়ের মত চোখ
ভোররাতের বৃষ্টির ফোটার মত মুখ
শেষ বিকেলের আলোর মত নাক

প্রাচীন কবিরা চোখ এবং নাক-কান-গলা (ENT) ডিপার্টমেন্টের বাইরে বের হবার সাহস পেতেন না। মধ্যযুগের কবিরা আরও সাহসী হয়ে বডির সাহসী সাহসী অংশ নিয়ে সাহসী কবিতা লিখে ফেলেছেন। আধুনিক কবি হতে হলে আপনাকে নতুন কিছু করে দেখাতে হবে। নতুন নতুন বডি পার্টকে নানা উপমা দিয়ে কবিতা ফাঁদতে হবে। বডির এক্সটারনাল পার্ট সব দখল হয়ে গেছে, ইন্টারনাল পার্ট খুঁজে বের করুন। যেমন,
কচি কাঁঠাল পাতার মত অগ্নাশয়
শীতের প্রথম শিমের মত কিডনি
অমাবস্যার পিংপং বলের মতো ইয়ে মানে কিছুনা

আরও বোল্ড হতে চাইলে নাকের লোম, কানের ময়লা, চর্মের রোগ ইত্যাদি নিয়েও কবিতা ফেঁদে বসতে পারেন।

৫ ইংরেজি শব্দের ব্যবহার

প্রচুর পরিমাণে ইংরেজি শব্দের ব্যবহার আধুনিক কবিতায় অত্যাবশ্যক। তাকিয়ে দেখুন এই বছরের জীবনানন্দ আলু পুরস্কার পাওয়া কবিতার বই কায়কাউসের ছেলের কবিতার শিরোনামের দিকে। মূল বইতে নিশ্চয়ই আরও পাবেন কিন্তু হাপিশ হয়ে যাবার আগে অনলাইন পাণ্ডুলিপিতে যে কয়টি আধুনিক কবিতা ছিল তার শিরোনাম হচ্ছে -

মিসিং পারসন
মানুষ
অবকাশ যাপনের ভঙ্গি
নিমগাছ
কিলুর মগজ
দ্যা স্পিরিট অব ইসলাম
হারানো জুতার শোক
ক্রমশ ফ্রেম আউট
জুলহাস
লাইভ আফটার কায়কাউস
দুধভাই
প্যালিওলিথিক
এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স
জংধরা মগজ ও বিবিধ সমীকরণ
ফাকার
ফরেস্ট বাংলোয় কফি খেতে খেতে লিখিত

কি নেই? মিসিং পারসন, স্পিরিট থেকে শুরু করে ফাকার পর্যন্ত শিরোনামের অর্ধেক জুড়েই ইংরেজি শব্দ। কবিতার ভেতরে গেলে, আরও অনেক পাবেন। সুতরাং এটাই স্টাইল। যেভাবে পারেন ইংরেজি শব্দ শিখুন। দরকার হলে TOEFL দেন, GRE দেন, IELTS দেন, সাইফুরস এ গিয়ে ইংরেজি শেখার কোচিং করেন। তারপর ইচ্ছামতো সাকার, ফাকার থেকে শুরু করে যেমন খুশি তেমন ইংরেজি শব্দ কবিতায় ঢুকান।

৬ যুগলবন্দী

কবিতায় যুগলবন্দী অত্যন্ত মূল্যবান টেকনিক। যুগলবন্দী কি জিনিস? দুইটা বস্তু নিয়ে তাদেরকে একসাথে জোড়া দেয়া ও তাদেরকে নিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে বাক্য রচনা করা। প্রাচীন কবিতায় যুগলবন্দী হত আমি আর তুমি নিয়ে। আধুনিক কবিতায় উট, গরু, খাসী, গোলাপ ফুল, ঢোল কলমি, মেঘ, বৃষ্টি, গাজরের হালুয়া, আণ্ডারপ্যান্ট, লুঙ্গী, ঘরের চাল, গাছের ডাল ইত্যাদি যে কারো সাথেই যে কারো যুগলবন্দী হতে পারে। যুগলবন্দী দুই রকমের হতে পারে, পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত যুগল ও পারস্পরিক সম্পর্ক বিহীন যুগল।

পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত যুগল নিয়ে বলি প্রথমে। নামেই পরিচয়। এক্ষেত্রে দুই বস্তুর মধ্যে সম্পর্ক থাকতে হবে। যেমন,
ভাত - ডাল
প্রেমিক - প্রেমিকা
মেঘ - বৃষ্টি
লুঙ্গী - গিঁট
পেট্রোল - বোমা

যুগলবন্দীর পর এই জুটিকে নিয়ে কবিতা বানাতে হবে। কঠিন মনে হচ্ছে? আচ্ছা, নিজে করে দেখাচ্ছি। চটপট লিখেই ফেলি একখানা আধুনিক কবিতা। কবিতায় যুগলবন্দী হবে কানের ময়লা ও কান খুঁচানোর কাঠি বা কটন বাডের মধ্যে।

বিলুর কানের ময়লা ও একটি কটন বাড

বিলুকে আমি দেখেছিলাম প্রথম অমাবস্যার সূর্যে
আমাকে দেখেই বিলু বলে,
একটা কটন বাড হবে? কান চুলকাবো
পরনে আমার ট্র্যাভেল প্যান্ট
তার ষোলটি পকেট আঁতিপাঁতি ঘেঁটে
পেলাম খুঁজে শীর্ণ জীর্ণ ধূসর কটন বাড
বিলু সেটা দিয়ে কান খুঁচিয়ে
একশ একটি ময়লা বের করে হেসে বলে,
আই লাভ ইউ
ডু ইউ লাভ মি?

কি বুঝলেন? একেবারে দুই মিনিটের মধ্যে সমস্ত গ্রামার মেনে লিখা গরম গরম কবিতা।

আবারে আসি পারস্পরিক সম্পর্ক বিহীন যুগলে। এক্ষেত্রে স্বাধীনতা আরও বেশী। যা ইচ্ছা খুশী দুটি জিনিসকে নিয়ে যুগলবন্দী করুন। নদীর সাথে গরু মিলান, তারপর আপনার গরুকে আপনি যেভাবে খুশী সেভাবে নদীতে নামান। কথা বেশী না বলে আবারও লিখছি ঝটপট। যুগলবন্দী হবে লাল পেটিকোট আর সবুজ শালিকের মধ্যে।

অন্তরার লাল পেটিকোট ও একটি সবুজ শালিক

অন্তরাকে দেখি প্রতিদিন
দেখি তার লাল পেটিকোট
ঠিক দুপুর একটায় গোসল শেষে
বারান্দায় নেড়ে দেয়
ঠিক দুপুর দুইটায় আসে
একটি সবুজ শালিক
অন্তরার পেটিকোটের উপর বসে
চঞ্চল শালিক
দুরন্ত শালিক
দুপা লাফিয়ে একবার ডানে সরে
একবার বামে
অন্তরা ছুটে এসে শালিক তাড়ায়
হুস শালিক হুস
শালিক চলে যায়
শালিক ফিরে আসে
অন্তরার পেটিকোটের উপর বসে
চঞ্চল শালিক
দুরন্ত শালিক
দুপা লাফিয়ে একবার ডানে সরে
একবার বামে
আমি অবাক হয়ে ভাবি
শালিকটা বড় রেস্টলেস
অন্তরাও তাই।

ভালো মতো খেয়াল করে দেখুন, দুই কবিতার মূল গ্রামার যদিও যুগলবন্দী। কিন্তু এখানে আগের বলা কয়েকটা গ্রামারও সুন্দরভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে।
প্রথম গ্রামার মেনে, বেশ পিলে চমকানো টাইপের শিরোনাম দেয়া হয়েছে উভয় কবিতার।
দ্বিতীয় গ্রামার মেনে শব্দের প্রতি মন দেয়া হয়েছে, বাক্যের অর্থকে গুল্লি মেরে।
তৃতীয় গ্রামার মানা হয়েছে বেশ। একেবারে দম বন্দ করে গড়গড় করে লিখে ফেলেছি এই কবিতা। নিজে আর পড়ে দেখার চেষ্টা করিনি দ্বিতীয়বার।
চতুর্থ গ্রামার মেনে এখানে অদ্ভুত বর্ণ, গন্ধ, উপমা বা জুটির ব্যবহার করা হয়েছে। ধূসর কটন বাড, অমাবস্যার চাঁদ, সবুজ শালিক ইত্যাদি।
পঞ্চম গ্রামার মেনে প্রচুর ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে - কটন বাড, ট্র্যাভেল প্যান্ট, আই লাভ ইউ, রেস্টলেস ইত্যাদি আরকি।
ষষ্ঠ গ্রামার তো শুরুতেই মানা হয়েছে, লাল পেটিকোট আর সবুজ শালিকের যুগলবন্দী।

৭ গালিগালাজ, হাগু মুতু শব্দের ব্যবহার, অশ্লীল শব্দের ব্যবহার

এই গ্রামারে এসে আপনি আরও বেশী স্বাধীন। আধুনিক কবিতা বিপ্লবের হাতিয়ার। পাশের বাড়ির বিলকিস কেন পাত্তা দেয় না থেকে শুরু করে বাকশাল কেন গণতন্ত্র ফেরত দেয় না পর্যন্ত সকল অন্যায় অনাচারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠুন কবিতার মাধ্যমে। আপনার রাগ, বিরক্তি, অবদমিত কামনা সবকিছুর প্রকাশ করুন তীব্র ভাষায় গালিগালাজ, হাগুমুতু ও অশ্লীল চ বর্গীয় শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে। নিজে করে দেখাই। ফটাফট লিখে ফেলি গরম গরম কবিতা, গ্রামার মেনে, কোন চিন্তাভাবনা না করে -

কাউসারের পুলা

আমি কাউসারের পুলা
ভাত খাই এত্ত গুলা
খেয়ে দেয়ে হাগু পেলে
হাগি কয়েক তুলা

আমি কাউসারের পুলা
আমার হাত পাও লুলা
দিন রাইত গাইল পারি
খানকি মাগির পুলা

চেষ্টা করেও কবিতা অতবেশি অশ্লীল আর গালি পূর্ণ করতে পারলাম না। এইটুকু গাল-টাল দিয়েই লজ্জায় কান হয়ে গেল। লজ্জা কমাতে আধুনিক কবিতার গ্রামার একটু ভেঙ্গে বেশ ছন্দও দিয়ে দিলাম কবিতায়। আধুনিক কবিতা লিখতে হলে আপনাকে লজ্জা শরমের মায়রে বাপ করে আরও অনেক বেশী গাল পাড়তে হবে।

৮ প্রতিশব্দ ব্যবহার করুন

প্রতিশব্দ আর উপমা কাহাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি তা করে দেখিয়ে গিয়েছেন ওস্তাদ মাইকেল মধুসূদন দত্ত।

কনক-উদয়াচলে দিনমণি যেন
অংশুমালী। চারিদিকে শোভিল কাঞ্চন-
সৌধ-কিরীটিনী লঙ্কা— মনোহরা পুরী!
হেমহর্ম্য সারি সারি পুষ্পবন মাঝে;

চার লাইন পড়তে চল্লিশবার ডিকশনারি খুলতে হবে। একবার কনক কেডা জানার জন্য, একবার দিনমণি খুঁজার জন্য, একবার অংশুমালীর রহস্যভেদ করার জন্য, তো একবার হেমহর্ম্য কি বস্তু বুঝার জন্য। মধুসূদন কাবিল লোক ছিলেন, তিনি এসব শব্দ জেনে বুঝেই লিখেছেন। আপনার আমার এত সময় কই? না জেনে বুঝেই তাই সহজ সহজ শব্দের কঠিন কঠিন প্রতিশব্দ খুঁজে বের করুন শব্দকোষ ঘেঁটে। সূর্যকে সূর্য বলে লজ্জা দিবেন না। রবি, দিবাকর, দিনমণি, দিননাথ, অর্ক, ভানু, তপন, আদিত্য, অংশু, প্রভাকর, কিরণমালী, অরুণ এমনকি চাইলে মিহির, পুষা, সুর, দিনমতি, ভাস্কর বা মার্তণ্ড বলুন কিন্তু সূর্য কোনভাবেই না। চাঁদকে চন্দ্র থেকে শুরু করে শশী, শশধর, শশাঙ্ক, সুধাংশু, সুধাকর, হিমাংশু, সোম, ইন্দু, মৃগাঙ্ক, নিশাকর, নিশাকান্ত, এমনকি বুকে পাটা থাকলে রজনীকান্তও বলতে পারেন তবে চাঁদ কখনোই না।

৯ প্রথম অংশ শেষে - জেডাই মাস্টার Yoda স্টাইল

স্টার ওয়ার্স এর জেডাই মাস্টার Yoda কে চিনেন? না চিনলে চিনিয়ে দিচ্ছি। এই যে গুটুলি সাইজের সবুজ রঙের লম্বা কানওয়ালা ভদ্রলোক।

বিরাট জ্ঞানীগুণী, মারদাঙ্গা ফাইটার, একেবারে টপ জেডাই মাস্টর। কিন্তু তারচেয়েও বড় পরিচয় ভদ্রলোক একজন কবি। তার কথা বলার স্পেশাল স্টাইল আছে। তিনি সবসময় বাক্যের শেষ অংশ শুরুতে বলেন। যেমন You have become powerful না বলে তিনি বলেন, Powerful you have become। একইভাবে You must have patience হয়ে যায়, Patience you must have। কবিতা লিখে হবে এরকম Yoda স্টাইলে। প্রথম অংশ ঠেলে একটু পেছনে নিয়ে শেষ অংশ প্রথমে নিয়ে আসতে হবে।বুঝতে কষ্ট হচ্ছে? নিজে করে দেখাই বরং। ধরা যাক আপনার পিপাসা লেগেছে। আপনি বললেন, আমার পিপাসা লেগেছে। এই লাইনটিই হয়ে যেতে পারে একটি চমৎকার কবিতার লাইন। প্রথমে লাইনটিকে একটু বদলে একটু আবেগ দিন, ভেবে দেখুন কোন যুগলবন্দী করা যায় কিনা। পিপাসা এর সাথে বুকের হালকা সম্পর্ক আছে, বুক জুড়ে পিপাসা টাইপ ব্যাপার আরকি। তাই একটু বদলে ফেলুন এভাবে-

আমার পিপাসা লেগেছে -> আমার বুক জুড়ে পিপাসা

এবারে ভেবে দেখুন প্রতিশব্দ ব্যবহার করা যায় কিনা কোন। বুককে বক্ষ, পিপাসাকে তৃষ্ণা করে দাড়ায় -
আমার বুক জুড়ে পিপাসা - > আমার বক্ষ জুড়ে তৃষ্ণা

এবারে উপরে বলা জেডাই মাস্টার Yoda পদ্ধতি অনুসরণ করে করে প্রথম অংশ শেষে, আর শেষ অংশ প্রথমে নিয়ে আসুন।
আমার বক্ষ জুড়ে তৃষ্ণা -> তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে

ব্যাস, হয়ে গেল চমৎকার একটি লাইন 'তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে '।

১০ শয়তানের উকিল খুঁজুন

সর্বশেষ কিন্তু সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। ইংরেজিতে যাকে বলে Devil's Advocate সেরকম কিছু একটা লাগবে আপনার কবিতার দালালি করার জন্য। বিষয়টা সহজ। বিষ্ঠাকে রাস্তার ধারে ফেলে রাখলে সেটা বিষ্ঠা। লোকজন সেটাকে এড়িয়ে চলে, একসময় সেটা মাটির সাথে মিশে যায়। কিন্তু সেই বিষ্ঠাকে সুন্দর কাঁচের পাত্রে সাজিয়ে টেবিলে এনে রাখলে সেই বিষ্ঠাকেই সিন্নি ভেবে পূজা দেয়ার লোকের আকাল হয়না। জামাত যেমন গু। এই গু হারিয়ে যাবার কথা ছিল স্বাধীনতার পরপরই। কিন্তু এই গুকে দেশের আবাল লোকেদের কাছে সিন্নি বানিয়েছে বিএনপি নামক পাত্র। সে যাই হোক, কথা হচ্ছে আপনার গুবিতা থুক্কু কবিতার জন্য এরকম বাহারি পাত্র লাগবে। কবিতার মানের চেয়ে কবিতা কোন পাত্রে রাখছেন সেটা অনেক অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। কবিতায় আপনি কি লিখছেন তার চেয়ে আপনার ভাড়াটে এডভোকেট সেটাকে কিভাবে পরিবেশন করেছে সেটা বেশী গুরুত্বপূর্ণ।

উদাহরণ দিয়ে বুঝাই। ঘুরেফিরে ফেই কায়কাউসের ছেলের কাছেই ফিরে আসি। 'নিমগাছ' নামে এই কবিতা পড়ুন। ছোটদের পড়া বারণ। আমার মত অশ্লীল লোকেরও কানটান লালা হয়ে যায় এই কবিতা পড়লে।

নিমগাছ
স্ত্রীদুগ্ধ পান করতে করতে লোকটা ভাবলো,
পৃথিবীতে ইঞ্জিন আবিস্কারের পূর্বে যেসব নিমগাছ
জন্মেছিল সেসব নিমগাছ ইঞ্জিনের শব্দ শোনে নাই -
লোকটার ভাবনার ওপর দিয়ে তিনটে খরগোশ
দিগন্তের দিকে দৌড়ে গেল।
আর, দিগন্ত থেকে খসে পড়লো প্রকাণ্ড এক পুরুষাঙ্গ!
দিগন্ত থেকে খসে পড়া পুরুষাঙ্গের রঙ ঘন ও সুরেলা।

কবিতা পড়ে আমার কাছে শুরুতে মনে হয়েছিল কাম-তাড়িত হনুমানের প্রলাপ। পরে দেখলাম জনৈক শয়তানের উকিল সমালোচক ভূয়সী প্রশংসা করে ব্যাখ্যা করেছেন -

নিমগাছ কবিতায় অটোমেশানে হারিয়ে যাওয়া মৌলিক সুখের চাওয়া আছে, ইডেন গার্ডেনের প্রত্যাশা আছে। হয়তো এই অটোমেশানই আজকের এইসব কবিতার চার্চ ও যাজক তৈরি করেছে, যারা একটি সিলেবাস ঠিক করতে চায় প্রতিটি কবির জন্য। তাই কী হয়!

বোঝো অবস্থা! সমালোচক না বলে দিলে কি কখনো জানতাম কবিতায় অটোমেশন, ইডেন গার্ডেন, হারিয়ে যাওয়া মৌলিক সুখ ইত্যাদি ইত্যাদি ব্যাপার স্যাপার আছে? কবি নিজেও হয়তো জানতেন না।

একইভাবে কিলুর মগজ কবিতাখানা পড়লাম। একটু বেশীই ইয়ে বলে সেই কবিতা বরং এখানে আর না দেই। আমি পড়ে ভাবলাম, ধ্যার ব্যাটা, এইডা কিছু হইলো? কিন্তু সমালোচকের কথা শুনে চোখ খুলে গেল -

কিলুর মগজ কবিতাটি সরাসরি এইসব কবিদের নিয়ে লেখা যারা যৌন অবদমনের কারণে একে অপরের সঙ্গে কোন্দল করে। সুযোগের অভাবে ভদ্রলোক সেজে থাকলেও গোপনে গৃহকর্মী বা রাস্তার উন্মাদিনীকে তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করতে চায়, আবার জামিলকে তাদের কাচারী ঘরে ডেকে পাঠাতে চায়। এখানে তিনি হিংস্র কবিরা কীভাবে জটিল কবি ফরহাদ মজহারের খাদেম বা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের ভক্ত সেজে, কবিতা নয়, এর বিষয় নয়, সংগুপ্ত সাম্প্রদায়িকতার চর্চা করে তার চিত্রকল্পই তুলে ধরেছেন। এরা বুঝতেই চায়না কবির ধর্ম কবিতা, হিন্দু-মুসলমান নয়।

এবারে আমার উপরের লিখা কবিতাগুলোর সমালোচনায় আসি। অনেকের মনে হতে পারে এমনি আবোলতাবোল কবিতা লিখেছি। এবারে শয়তানের উকিল দিয়ে সমালোচনা বানালে কি দাড়ায় দেখি।

'বিলুর কানের ময়লা ও একটি কটন বাড' কবিতায় কবি অনবদ্য রূপকের মাধ্যমে এই সমাজের ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায়, আলো-অন্ধকারের প্রতিনিয়ত ঘাত প্রতিঘাতকে ফুটিয়ে তুলেছেন। কানের ময়লা এখানে অন্ধকারের প্রতীক, কটন বাড শুভ্রতার প্রতীক। কবিতার প্রথম লাইনেই কবি 'অমাবস্যার সূর্য' বলে আমাদের চিরায়ত প্রথাগত সভ্যতার মর্মমূলে আঘাতের মাধ্যমে ...

'অন্তরার লাল পেটিকোট ও একটি সবুজ শালিক' সাধারণ শব্দ দিয়ে গড়া একটি অসাধারণ কবিতা। পাঠকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে শালিক কি কখনো সবুজ হয়? কবি এখানে সচেতনভাবেই শালিককে সবুজ বলে পাঠকের কৌতূহল ও কল্পনার দুয়ার উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। সবুজ শালিক আর লাল পেটিকোট কবির তৈরি এক সুরিয়াল জগত যা সহজেই আমাদের লাল সবুজ বাংলাদেশের কথা মনে করিয়ে দেয়। অন্তরা কেন প্রতিদিন দুপুর একটায় গোসল করে? শালিক কেন ঠিক দুপুর দুইটায় এসে হাজির হয়? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে আমাদের পরা-বাস্তবতার জগতকে পেছনে ফেলে জাদু-বাস্তবতার জগতে ঢু মেরে দেখতে হবে ...

'কাউসারের পুলা' শুধু একটি কবিতা নয়। এটি একটি স্ফুলিঙ্গ, এটি একটি বিপ্লব। অক্ষম বিপ্লবীর ক্রোধ, তার অক্ষমতা ফুটে উঠেছে কবিতার প্রতি লাইনে। সেই ক্রোধ আর হতাশা পূর্ণতা পেয়েছে, অত্যাচারীকে খানকি মাগির পুলা বলে গালি দেয়া ও নিজেকে 'আমার হাত পাও লুলা' বলার মাধ্যমে। অপরদিকে কবিতার গু এখানে আসলে সেই গু নয়, এই গু হচ্ছে ...

শেষকথা

হালকার উপর ঝাপসা একটু পচানি দিয়ে ফেললাম আধুনিক কবিদের। হয়তো সমস্যা কবিদের না, সমস্যা আমারই। আজকালের কিছুকিছু কবিতা এতই আধুনিক, এতই শৈল্পিক যে সেই শিল্পের সূক্ষ্ম কারুকাজ অধরাই রয়ে যায়। আধুনিক কবিরা তাদের কবিতার পোশাক গায়ে দিয়ে নাক উঁচিয়ে হাঁটাহাঁটি করেন। আর আমার সেই রাজামশাইয়ের পোশাক গল্পের ছোট্ট ছেলেটির মত চিৎকার করে বলতে মন চায়, একি! রাজামশাই ন্যাংটো !কবিমশাইরা ন্যাংটোই থাকুক আর ফিনফিনে কারুকাজ করা পোশাকই পরে থাকুক কিছু আসে যায় না। যতদিন না বিজ্ঞানীরা কবিতা কনডম বা কবিতা নিয়ন্ত্রণ পিল টাইপ কোন কিছু আবিষ্কার না করছে লাখে লাখে কাতারে কাতারে আধুনিক কবিতার হ্যাপা আমাদের সামলাতেই হবে।


মন্তব্য

মাসুদ সজীব এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি
গুল্লি গুল্লি

'বিলুর কানের ময়লা ও একটি কটন বাড' কবিতায় কবি অনবদ্য রূপকের মাধ্যমে এই সমাজের ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায়, আলো-অন্ধকারের প্রতিনিয়ত ঘাত প্রতিঘাতকে ফুটিয়ে তুলেছেন। কানের ময়লা এখানে অন্ধকারের প্রতীক, কটন বাড শুভ্রতার প্রতীক। কবিতার প্রথম লাইনেই কবি 'অমাবস্যার সূর্য' বলে আমাদের চিরায়ত প্রথাগত সভ্যতার মর্মমূলে আঘাতের মাধ্যমে ...

সঠিক ব্যাখা। লেখে ফেলেন, আমরাও ব্যাখা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়বো।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

চরম উদাস এর ছবি

দেঁতো হাসি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি
এইটা কি বইতে আছে? না থাকলে সাপ্লিমেন্টারী ছাপান।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

চরম উদাস এর ছবি

নাহ বইতে নাই। গরম গরম লিখলাম তো, গরীব পাঠকদের কথা চিন্তা কইরা।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

তাইলে এইটা প্রিন্ট কইরা বইয়ের পিছে স্ট্যাপল কইরা নিমু চাল্লু

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তারেক অণু এর ছবি
হাসিব এর ছবি

আগেই বল‌ছিলাম, এই ফেব্রুয়ারি মাসটা কোবিদের জন‌্য খারাপ যাবে।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হিমু ভাই খেঁকুদার পুস্টে ফেব্রুয়ারিতে "কোবি সপ্তাহ" পালনের কথা কইছিল না? দেঁতো হাসি
হৈডা শুরু হৈল নাকি? তাইলে মাথায় লুঙ্গি বাঁইধা কোবিদের নিয়া কোবিতা লিখি গা শয়তানী হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

চরম উদাস এর ছবি

বুঝেনিতো চোখ টিপি

তিথীডোর এর ছবি

কোবিতা + কোবি = কায়কাউস।
কথা শেষ। দেঁতো হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

চরম উদাস এর ছবি

খাইছে

আয়নামতি এর ছবি

তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে '

ব্যাস, হয়ে গেল চমৎকার একটি লাইন

ইশশ বললেই হলো আর কি!
এই লাইন আমাদের জন্মের অনেক অনেক আগেই জন্ম নিয়ে বসে আছে হে!
রবিবুড়োর

চোখে আমার তৃষ্ণা, তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে

শোন্নেনাই ইহা? শয়তানী হাসি
সাধেই কি কোবিদের রাগ ওঁর উপর!
আপনি ব্যবহার বানানটা ঠিক করেন তো রে ভাই রেগে টং
কবি ও কবিতা ভালু পাই, কিন্তু কোবিদের নয়। এদের দৌড়ের উপর রাখেন যত পারেন।
লেখায় লেখা -গুড়- হয়েছে

চরম উদাস এর ছবি

রবিবুড়ো আমার টিউটরিয়াল ফলো করে গান কবিতা লিখলে আমার কি দুষ? ইয়ে, মানে...
ব্যবহার এর গেঞ্জাম ঠিক করে দিচ্ছি।

অতিথি লেখক এর ছবি

পড়ার পর থেকে হাসতেই আছি। আধুনিক কবিতা লেখা তাইলে এতই সহজ!

গোঁসাইবাবু

চরম উদাস এর ছবি

সহজইতো খাইছে

অতিথি লেখক এর ছবি

মহাকোবির কোবিতা পড়ে কয়দিন কিছু পড়ার শক্তিই হারাইয়া ফেলসিলাম।
আপনার গ্রামার মেনে গরম গরম কবিতা গুলো গরমই। হাহাহা
কবিতারা স্বরূপে বেঁচে থাকুক আমাদের মাঝে।

অপর্ণা মিতু

চরম উদাস এর ছবি

চোখ টিপি

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাইরে, আশীর্বাদ করেন যেন কোনদিন আপানার অন্তত ১০০ মাইল কাছের লেখক হইতে পারি !!
এই অংশটা চরম লাগছে -
" জামাত যেমন গু। এই গু হারিয়ে যাবার কথা ছিল স্বাধীনতার পরপরই। কিন্তু এই গুকে দেশের আবাল লোকেদের কাছে সিন্নি বানিয়েছে বিএনপি নামক পাত্র।"

চরম উদাস এর ছবি

দুয়া করে দিলাম খাইছে

অতিথি লেখক এর ছবি

এটা কী লিখলেন, ভাই? অ্যাঁ অফিসে বসে এইভাবে হাসতে থাকলে আমার চাকুরি চলে যাবার দায় কে নেবে???

দেবদ্যুতি

চরম উদাস এর ছবি

চাকরী করে কি লাভ? চিন্তিত

অতিথি লেখক এর ছবি

বাঁচালেন! গুরু গুরু চাকুরি করতে না চাইলে সব্বাই খালি কৈফিয়ত চায়। প্লিজ চাকুরি না করার কমপক্ষে দশটি উপকারিতা সম্পর্কে কিছু লিখুন এবার, সেই লেখাটা হাতে নিয়ে বসে থাকব, কেউ কেফিয়ত চাইবে না হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি
গুল্লি গুল্লি

চরম উদাস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

জি.এম.তানিম এর ছবি

হাসতেই আছি। কেমনে পারেন?

যাই কয়েকটা গুবিতা লিখে আসি দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

চরম উদাস এর ছবি

জুনিয়র হরলিক্স খেয়ে

মেঘলা মানুষ এর ছবি

হাততালি
আধুনিক কবিতা এত বেশি আধুনিক হয়ে গেছে যে আর বোঝাই যায় না। ছোটবেলায় রাদুগা প্রকাশনীর বইতে এরকম একটা গল্প পড়েছিলাম। এক ছেলে মিছি মিছি ছড়া বানায়, পরে সবাই মিলে তাকে জোর প্যাঁদানি দেয়।

ছড়া মনে আছে কয়েকটা:
নামগুলো আপনারটাই চালিয়ে দিলাম দেঁতো হাসি

"উদাস ভায়া ঘুরতে গেল বড় খালের ধারে,
খাপ পেড়োল লম্ফ দিয়ে ভেড়া ছানার ঘাড়ে"

"উদাস ভায়া করছিল খাই খাই,
তাইত সে ফেলল গিলে ঠান্ডা ইস্ত্রীটাই"

"উদাসের বালিশের তলে,
আছে মোয়া, লোকে তাই বলে"

একটা টাইপো আছে:
মন গরম হলে - সহজ ভাষায় ছ্যাঁকা কা বা হাফসোল খেলে।

চরম উদাস এর ছবি

কবিতা জটিল হইছে

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ভাষার মাসে হাসার বিরাম দিতেছেন্না দেখি দেঁতো হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

সুহান, তোর বই কোন স্টলে কবে পাবো জানা, আমি দেশের বাইরে- দেশ থেকে কিনে আনাবো কাউকে দিয়ে।

মাসরুফ ( তোর পুলিশ ভাই)

অতিথি লেখক এর ছবি

চউদা, আপনে আমার ক্যাডেট কলেজের বড়ভাই- ল্যাবে প্রফেসরের সামনে হাইসা ফেইলা ছাত্রত্ব ক্যানসেল হইলে কইলাম আপনের ঐখানে হত্যা দিয়া পইড়া থাকুম

মাসরুফ

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ইজম-এর চুদুরবুদুর এইখানে JUST ছৈলত ন শয়তানী হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

চরম উদাস এর ছবি

খাইছে

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আল্লার গজব পড়বে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

চরম উদাস এর ছবি

চোখ টিপি

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার লেখা প্রথম কবিতা

এবারে শালা লিখবই কবিতা
গান লিখলে এরা কবিতা ভাবে
বামপন্থীদের যেমন ভাবে কমিউনিস্ট।

এবারে, বুড়ো বয়সে লিখবই কবিতা
কী ব্যথা রে বাবা কোমর থেকে গোড়ালি
কবিতা লিখলে আরথ্রাইটিস কমে
কবিতা লিখলে আনন্দ পুরষ্কার পাওয়া যায়
কাগজের মালিক বুড়ো বয়সেও বেশ দেখতে
লোভে লোভে একটু তেল দিলাম
যদি একখানা দেন।

এবারে শালা লিখবই কবিতা
পুরষ্কারের লাখ পাঁচেক
নাকতলা স্টেটব্যাংকে ফিক্সড্‌
অর্থাৎ মাসে মোটামুটি হাজার চারেক সুদ
“আসলি নেহি, চুদ মাংতা”
এক দার্শনিক বন্ধু দশ টাকা ধার দিয়ে বলেছিল একবার
আমিও আনন্দ পুরষ্কারের আসলি নেহি
আসলি-মাফিক মাসিক চুদ মাংতা।

**********

কবীর সুমন ৪,২,২০১৫

আজ আমি এক গর্বিত কবীর সুমন। এই বুড়ো বয়সে প্রথম কবিতা লিখলাম। প্রকাশকরা তাড়াতাড়ি যোগাযোগ করুন।

কোবিতাটা কবির সুমনের টাইমলাইন থেকে পেলাম ! দেঁতো হাসি

রাসিক রেজা নাহিয়েন

চরম উদাস এর ছবি

হাততালি

নিহন আহসান এর ছবি

"কায়সারের পুলা " কভিতা রছনার জন্য আগামীতে আপনার সাহিত্তে নুবেল পাওয়া সময়ের বেফার।

চরম উদাস এর ছবি

সাহিত্যে না পেলেও দুই চাইরটা কবি মেরে লাল করে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য শান্তিতে নোবেল সুনিশ্চিত।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

যাই বলেন তাই বলেন, "অন্তরার লাল পেটিকোট ও একটি সবুজ শালিক" কবিতাটি কিন্তু চমেৎকার হয়েছে।

সবুজ শালিক হয়ে অন্তরার লাল পেটিকোটে গিয়ে বসা।

দুর্দান্ত!!

চরম উদাস এর ছবি

খাইছে

অতিথি লেখক এর ছবি

সামনের গিবনানন্দ পুরষ্কার পাওয়া সময়ের দাবি, আলুরে একটু তেল মারলেই হইবেক।
-হিমাদ্রি

চরম উদাস এর ছবি

সেটাই

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

মজা লইলাম। আর কিছু কমুনা। ও হ্যাঁ, লাইনে আছি। হাসি

চরম উদাস এর ছবি

হাসি

bashabi এর ছবি

অপেক্ষায় রইলাম , এস নিজে করি তে অল্প পরিশ্রমে স্ক্রিপ্ট ছাড়া সিনেমা বানিয়ে কিভাবে আন্তর্জাতিক পুরুস্কার জয় করা যায় তার উপর একটা tutorial এর।

শুধু কবিতা লিখে মনে হয় আধুনিক কবিরা আর সন্তুষ্ট হতে পারছে না. কারণ রবীন্দ্রনাথ এর কবিতা এ কয় জন পড়ে আর তো আধুনিক কবিতা। তাই আমার মনে হয় একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিক থেকে সম্ভাবনা ময় আধুনিক কবিরা তাদের profession চেঞ্জ করে প্রথমে (স্ক্রিপ্ট ছাড়া ) নাটক পরিচালক এবং অত:পর সিনেমা পরিচালক হিসেবে আত্ম প্রকাশ করছে। কারণ এসব সিনেমা র সাথে আধুনিক কবিতার প্রচন্ড মিল্ . কোনো খেই খুঁজে পাই না. কোথা থেকে শুরু হয়ে কোথায় শেষ হয় বুজতেই পারিনা।

চরম উদাস এর ছবি

সেটাও লিখে ফেলবো নে দেঁতো হাসি

শিশিরকণা এর ছবি

উফ্‌ফ্‌ফ্‌ফ! পারেনও বটে।
ভালো রাধুনি চাইলেও খারাপ রাধতে পারে না। আপনার আধুনিক কবিতা গুলার সেই দশা হয়েছে।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

চরম উদাস এর ছবি

লইজ্জা লাগে

সকাল রয় এর ছবি

কবি কিন্তু থেমে নেই। তা যাই হোক তবুও কিছু পাঠক কিন্তু থাকেই বিকারগ্রস্ত কে উসকে দেয় বিকারগ্রস্ততা। দল ভারী না হলে কি এমন সব লেখার জন্ম দেয়া যায়। বেশ ভালো লাগা। ধন্যবাদ

চরম উদাস এর ছবি

কবিদের থামানো জন্যই তো এই লেখা লিখলাম, তাও কেউ থামে না ইয়ে, মানে...

কনীনিকা এর ছবি

গুল্লি হাসতে হাসতে পেটটা ব্যথা হয়ে গেল!!

------------------------------------------------------------------
It is impossible to be a mathematician without being a poet in soul.

চরম উদাস এর ছবি

খাইছে

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার লেখাগুলার আগে ডিসক্লেইমার থাকা উচিত - অফিসে বসে পড়া হারাম।
কলিগ জিগ্যেস করতেসে পাগল হয়ে গেলাম নাকি ?

- সো।

চরম উদাস এর ছবি

দেঁতো হাসি

তৃশিতা তৃশা এর ছবি

হাসতে হাসতে ঘুম ছুটে গেল!তবে একটা কথা বুঝলাম না-কবিতা কেমনে লিখতে হয়,সেইটা শিখাইলেন,নাকি কবিতারে কেমনে ঘরহারা করতে হয় সেইটা!

নীড় সন্ধানী এর ছবি

কায়কাউসের শপথ এবার একখান কোবিতা লিখবোই!! হো হো হো

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ইয়ে মানে, কি নিয়ে? (কিংবা, কি দিয়ে) চিন্তিত

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

চরম উদাস এর ছবি

চোখ টিপি

অতিথি লেখক এর ছবি

আধুনিক কাব্য
লিখে ফিরাও ভাগ্য।
অনবদ্য হাসির বটিকা এটি। তবে এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ না দিয়ে খা লেদা ম্যাডামকে ধন্যবাদ দিতে চাই। কারণ আমি নিশ্চিৎ যে তার দেয়া লাগাতার অবরোধ থেকেই আপনি হাসির এ পোস্টটিকে লাগাতার করার ধারণা চুরি করেছেন। আবারও প্রমান হ’ল যে চরম হিটলারীয় মন্দ কিছু থেকেও উপজাত দ্রব্য হিসেবে এধরণের ভাল কিছু পাওয়া যায়। কাজেই অবরোধ জিন্দাবাদ।

- পামাআলে

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আধুনিক হইতে না পাইরা কবিতা লেখা ছাইড়া দিছি;
আহা এমন গ্রামার যদি পড়তে পাইতাম ছোডুকালে...

০২
দুইটা চ্যাপ্টার কি ডরাইয়া বাদ দিছেন না কি পরে যোগ দিবেন (১) আধুনিক কবি হওয়ার জন্য বান্ধবীর প্রয়োজনীয়তা (২) কবিতায় মিডিয়ার ভূমিকা

চরম উদাস এর ছবি

ওহ বান্ধবীর প্রয়োজনীয়তা বাদ পড়ে গেছে আসলেই। আর মিডিয়ার ভূমিকা তো ওই দশ নাম্বার পয়েন্টেেই ফেলা যায়। মিডিয়ার চেয়ে বড় দালালী আর কে করে চোখ টিপি

মাহবুব লীলেন এর ছবি

একটু তরল টরল টানা কিংবা বায়ু সেবন আনবেন না? নাকি সেইগুলা ষাইটের দশকের বইলা বাদ্দিছেন?

চরম উদাস এর ছবি

ইয়ে, মানে...
লেখার দ্বিতীয় পর্ব নামাতে হবে এবার

মাহবুব লীলেন এর ছবি

দ্বিতীয় পর্ব নামাইলে সাক্ষাতকার/টকশোর (টিভি ও পত্রিকায়) গুরুত্ব ও নিয়মকানুনও দিয়ে দিয়েন স্যার। যেমন বেডামানুষের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়া যাবে না; নারী উপস্থাপকের ছবি ও পরিচিতসহ ফেসবুকে ব্যাপক প্রচার চালাইতে হবে; রবীন্দ্রনাথরে বাদ দিতে হবে; জীবনানন্দের ক্ষেত্রে কইতে হবে তিনি আঞ্চলিক কবি; কারণ তার বাড়ি আছিল বরিশাল...

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

আপনার লেখার আসল মজা যখন মন্তব্য ৫০ পার হয়ে যায়।
আমার একজন সহকর্মীকে সাথে নিয়ে সেদিন পড়লাম, সে আঁতকে উঠলো, আপা আপনি এইসব কবির কবিতা পড়েন? প্রতি কবিতা শেষে তো অজু করা লাগে!

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

ফাহমিদুল হান্নান রূপক  এর ছবি

ভাই ক্যামনে পারেন এইভাবে লিখতে? আপনার বইখানা কিনিয়া পড়িতে পড়িতে হাসিতে হাসিতে মুর্ছা যাইবার উপক্রম হইতেছে। যদি আমার কিছু হইয়া যায় তাহলে এর দায় কে নিবে জাতি সেইটা ঝানতে চায়।

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

অতিথি লেখক এর ছবি

আহ, এইভাবে ক্যামনে লিখেন ভ্রাতা? আমার তো কোবি হওয়ার জন্য মন আকুলি বিকুলি করিচ্ছে। উত্তরাধুনিক কুবিতা লিখার ১০১ টি উপায় (১ টা ফ্রি) লিখব নাকি ভাবছি। হেল্পাইবেন তো?

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

এক লহমা এর ছবি

চলুক
শয়তানের উকিল দিয়ে সমালোচনা না বানালে অবশ্য অনেক কিছুই জানতে পারা যায় না! হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেকদিন আগে যখন কবিতা লিখার খুব ইচ্ছা ছিল তখন একটা বই পড়েছিলাম যার নাম ছিল ‌কবিতার ক্লাস'। কবিতার ছন্দ সম্পর্কে এত মজা করে লেখা বই বোধহয় বাংলা সাহিত্যে আর দ্বিতীয়টি নেই। সচলায়তনে অতিথি হিসেবে এসে এত মজার একটা লেখা পড়ব ভাবতেই পারিনি।

shohojpachali

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লাগল, বেশ লাগল

তুষার রায়

Jaya Choudhury এর ছবি

চুমা দিলে কি ফৈজত হইব? আপনার ফেরেন্ড হইতে চাই। জীবন ধন্য করি। এমন লিখন!!!

কর্ণজয় এর ছবি

ভাড়ামো না করে হাসানোর প্রসঙ্গ উঠলে আপনার লেখার কথা মনে আসে।।।

কর্ণজয় এর ছবি

‘প্রভূ, আপনার কবিতা পড়তে ইচ্ছে করে’
আমি ম্লান হেসে প্রভূর (খালেদ চৌধুরী) দিকে তাকাই।
জানি, কবিতা কোনদিন হবে না।
চার বছর পর লেখাটা আবার পড়ে মনে হচ্ছে
চরম উদাস এতটা চরম উদাসী না হয়ে এক যুগ আগে যদি এ লেখাটা লিখতেন,
তাহলে ঠিক প্রভূকে দু একটা কবিতা শোনাতে পারতাম-
ভাবছি একটা নাম নিয়ে শুরু করবো কি না- --

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।