রাবেয়া আখতারঃ
গার্মেন্টসের চাকরীটা চলে গেছে গতমাসে। জমানো টাকা প্রায় শেষ। নতুন এক জায়গায় চেষ্টা করছিল কদিন ধরে। আজকে যোগ দেবার কথা। ৩ বছরের ছোট ছেলেটাকে পাশের ঘরে রেখে বেরিয়েছিল। মাঝপথে বাসটা হঠাৎ চাকায় তীব্র আর্তনাদ করে থেমে গেল। বাসের উপর একের পর এক ইট এসে পড়তে লাগলো। যাত্রীরা আতংকিত। প্রাণ নিয়ে বেরিয়ে পড়ছে। চালক জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে পালিয়েছে। বাসের সবগুলো জানালা ভেঙ্গে ফেলেছে। ইটের আঘাতে বেশ কজন আহত। পেছনের জানালা ভেদ করে এটা ইটের টুকরো তার মাথায়ও এসে পড়লো। মাথা ফেটে রক্ত পড়ছে। বাসের মধ্যে আগুন দেখা গেল। কোনমতে লাফ দিয়ে পড়লো বাস থেকে। ফাটা মাথা নিয়ে আধখানা জীবন নিয়ে দৌড়ে পাশের ফুটপাতে হুমড়ি খেয়ে পড়লো। আর কিছু মনে নেই। রাবেয়ার ফাটা কপাল জোড়া লাগতে মাস খানেক লেগেছে। আসলে জোড়া লাগেনি। স্বামী পরিবার সহায়সম্বলহীন রাবেয়ার চাকরীটা পাওয়া হয়নি। মাথার চিকিৎসা করাতে গিয়ে জমানো টাকা শেষ। ছেলেটার জন্য দুধ কেনা হয়নি এই এক মাস, আর কখনো কেনা হবে কিনা জানে না সে। জমানো টাকা শেষ হয়ে কর্জের শুরু। এরপর ভিক্ষা করতে হবে, নইলে শরীর বেচতে হবে। কোনটা সহজ রাবেয়া এখনো জানে না।
শিশু পালন একটা চব্বিশ ঘণ্টার কাজ। তার সাথে অন্য কোন কাজ করতে হলে চব্বিশ ঘণ্টায় আর কুলিয়ে উঠতে পারি না। মনে হয় দিনটি ৮৪ ঘণ্টার হলে ভাল হতো। বড়টাকে ঘুম পাড়িয়ে ভাত নিয়ে বসেছি। ছোটটা মায়ের দুধ খাচ্ছে। ফোন বাজছে। তাড়াতাড়ি ধরতে হবে, না হলে মেয়েটার ঘুম ভেঙ্গে যাবে। বাঁহাতের মুঠোয় ধরা কাঁচা লংকা টেবিলে রেখে ফোন ধরে বললাম; কায়সার বলছি...
ধু ধু শৈশব কেটেছে গ্রামে । বিশেষত্বহীন ছোট্ট একটি গ্রাম । সে গ্রামে ছিল বাড়ির পরে বাড়ি, স্বচ্ছ-তোয়া গভীর কালো জলে টইটুম্বুর পুকুর, উদার নীল আকাশ, মাঠের পরে মাঠ, খড়ের গাঁদা । গ্রামের সমান্তরালে বয়ে চলেছে শীতকালের শীর্ণ নদী । সেই নদীর ওপর গ্রামের এক মাত্র ইট সিমেন্টের স্থাপনা - পাকা ব্রিজ । শীতে যে নদীতে থাকে হাঁটু জল, বর্ষায় তার অন্য চেহারা । দুকূল ছাপিয়ে কখনও কখনও বাড়ির উঠোনে উঠে যায় নদীর জল । চৈত
৪২ বছরেও আমাদের ঘুম ভাঙেনি। অনেক হয়েছে এবার আমরা ভোর দেখতে চাই। প্রসঙ্গতই আমার এই লেখাটা যুদ্ধাপরাধী আর জামাত-শিবির নিয়ে। ব্যক্তিগত ভাবে জামাত-শিবির আমার খুবই অপছন্দের। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে জামাতে ইসলামের রাজনীতি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে দেয়া হয় আর ধীরে ধীরে বিভিন্ন কলাকৌশল অবলম্বন করে তারা আজ বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক দলের একটি। ২০০১ সালের সালে
[justify]সারা দেশে মন্দির পোড়ে, হিন্দুদের বাড়িতে হামলা হয়, রামুতে বৌদ্ধ পল্লীতে হামলা হলো, এরকম অনেক ঘটনাই অতীতে ঘটেছে- কোনটিরই বিচার হয়নি, দায়সারা তদন্ত হলেও দোষীদের ধরা হয়নি। অথচ ব্লগে-ফেসবুকে ইসলামের কটূক্তিকারীদের শনাক্ত করতে কমিটি হয়ে গেছে। কার কোন কথাটি উগ্র, কার কোন কথাটি ধর্মপ্রাণ মানুষের কোমল ধর্মানুভূতিতে আঘাত দিয়েছে- সেসব নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে বসবেন সরকার। বেশ ভাল কথা- কিন
আর কত চাস
মানুষের লাশ
লাল রক্তের ঢেউ?
আর কত চাস
করে হাঁসফাঁস
মৃতবৎ থাক কেউ?
ফেব্রুয়ারী মাসটা কেটেছে কেমন একটা ঘোর লাগা আনন্দে, উত্তেজনায়। আমরা পেরেছি। আমরা উচ্চকন্ঠে সবাই মিলে নিজেদের দাবী প্রকাশ করেছি। আমি থেকে প্রত্যেকটা মানুষ আমরা হয়ে গিয়েছি। প্রতিদিন এই আমরা একটু একটু করে আরো বড় হয়েছি। রাস্তায়-ঘরে-ক্লাসে-ব্লগে-ফেসবুকে সবাই একই কথা বলেছি। সবাই মিলে একই স্বপ্ন দেখেছি। বিয়াল্লিশ বছরের কলঙ্কমুক্তির স্বপ্ন। সবার ভেতরে দেখেছি অন্যরকম এক আত্মবিশ্বাস, প্রত্যয়ে দেখেছি
শাহবাগের সাথে একাত্মতায় এল রাজাকার বধাবলীর দ্বিতীয় পর্ব। এইখানে আছে সচলায়তনে প্রকাশিত নানান রাজাকার বিরোধী ছড়ার একটা সংকলন। আমি আলাদা করে তাদের নাম আর উল্লেখ করছি না।
তাঁদের সকলের কাছে আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা তাদের রচনা আমাকে ব্যবহার করতে দেবার জন্যে।
জয় বাংলা!!!
ছড়া আবৃত্তিঃ অনিকেত
রচনাঃ সচলায়তনের নানান ছড়াকার
যন্ত্রানুষঙ্গ আয়োজন, পরিচালনাঃ অনিকেত
একটা বিষয় নিশ্চয় সবার মনে আছে, স্কুল কলেজে বাংলা বইয়ের এক একটা গল্প কবিতার পর কিছু শব্দার্থ দেয়া থাকত। এদের মধ্যে কয়েকটা শব্দ হত এতটাই দূর্বোধ্য যে, শব্দার্থ দেয়া না থাকলে গল্প কবিতার আর কিছু বোঝা যেত না ।
-তোমাকে তো আজকাল পাওয়াই যায় না। ফোন ত করোই না আমি করলেও ধরনা। মোবাইল বাজতেই থাকে। কি করছ আজকাল?
-ক্লাস থাকে। সামনে পরীক্ষা...তার মধ্যে চলছে শাহবাগ...এই জন্যেই আরকি।
-শাহবাগে যাও তুমি?
-যাই তো। না গেলে কি ভাবে হবে? যুদ্ধপোরাধীদের পার পেয়ে যেতে দেয়া যাবে না।
এই হল আমার মেডিকেলে পড়ুয়া ছোট ভাইয়ের অবস্থা। সে রাজাকারের বিচারের দাবীতে শাহবাগ যায়। স্লোগান দেয়।
ওর আরেকটা পরিচয় ছোট্ট করে বলে রাখি.....ও একজন কোরআন এ হাফেয। সমস্ত কোরআন শরীফ বুকে ধারণ করেই সে শাহবাগে যায় এবং "ফাঁসি চাই" বলে স্লোগান দেয়।
-শাহবাগে নাকি অনেক আজেবাজে কিছু হয় আর মানুষ নাকি শব ফটোশপে বসানো?
-কে বলল উল্টাপাল্টা?
-ফেসবুকে দেখি আর আমার দেশের মাহমুদুর রহমানের টেলিফোনের লিক হওয়া কথায় জানলাম।
-আমি তো অতসব জানিনা। যতটুকই সময় পাই শাহবাগে যেয়ে স্লোগান দিয়ে আসি। আমি তো ওখানে লাখ লাখ মানুষ দেখি মহাসমাবেশে। ফেসবুক দেখার সময় ও পাইনা।