এই লোকটার সাথে আমার পরিচয় যখন, তখন আমি এক মানুষীর তুমুল প্রেমে আমূল ডুবে আছি।ঘটনাচক্রে হাতে এল রাজু আলাউদ্দীনের অনুদিত কিছু কবিতা। আর্নেস্টো কার্দেনালের কবিতা। আমি এমনিতেই কবিতা-কানা। কবিতা বোঝার জন্য আমি দিনের পর দিন জীবনানন্দের কবিতার বই হাতে নিয়ে বসে থাকি। কিছুই বুঝে উঠতে পারি না। 'ঊটের গ্রীবার মত' নিস্তব্ধতা , যুথচারী আঁধার, 'হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে---' এমন...
(কবিতাটি হাতে আসে হঠাৎ করেই। একটা উর্দু গজল পোস্টের রেশ ধরে রেনেট ভাই এই স্প্যানিশ কবিতাটি পোস্ট করেন। রসিকতার ঢংয়ে তখন তার একটা রম্যানুবাদ করার চেষ্টা করেছিলাম। পরে জানতে পারলাম এটা পাবলো নেরুদার কবিতা। তার Cien Sonetos de Amor (ভালোবাসার ১০০ টি সনেট) বইয়ের থেকে নেওয়া এই কবিতাটি। ইংরেজি অনুবাদটি সংগ্রহ করে বঙ্গানুবাদের চেষ্টা চালালাম। এই দাঁড়ালো ফলাফল...)
[center]
সনেট ৬৯
***
শূন্যতা মানে তোম...
অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে যবনের আকাশে একটা চাঁদ দেখতে পেলাম
তার পাশেই ভোজালি হাতে এক নেপালী গোর্খা
সমান্তরাল মেঘ আর তাকে ভ্রকুটি করা জলকণা
দীর্ঘ ছায়া হয়ে বুকের দুপাশে ঝুলে থাকা হাত, রেড ইন্ডিয়ান নারী আর ড্রামের তালে শরীর দোলানো ক্যারিবীয় বালিকা
সবকিছু ছবি নয়- সাজানো নয়
তবু যেন ছবি মনে হয়
তুচ্ছ এক লিপিকার হঠাৎ কিছু না ভেবে তুলি হাতে প্রান্তিক হয়ে গেলে যা হয়
-অর্জুন মান্না
arjun.manna@g...
ভ্রান্তিবশে রক্ত অলক্তক
কাছাকাছির আপ্ত তাড়নায়
বিধি ভেঙে বাতাস বিহঙ্গী
কোন লিপিতে কালের বসবাস?
কালের রথের চাকায় সূক্ষ্ম ফুঁটো
না হয় আমার ঝিমের রথেই ওঠো
আকাশ দেখুক আধখানা আর তুমি
প্রবর্তনার শয্যা শুধুই ভূমি।
পুঁথির মধ্যে বাক্য খাচ্ছে উঁই
পথেই শুয়ে তৃষ্ণাক্লান্ত ঘোড়া
উড্ডয়নের সংজ্ঞা মেনে নিয়েই
হলাম না হয় শ্রীরাধিকা, সই!
হচ্ছে কিছু ঘড়ির কাঁটার কথাও
দৃশ্যায়িত খাবার শোবার ...
সাহস
সৈয়দ আফসার
একদিন তুমিই বলেছিলে
এতো সাহস কোথা থেকে পেলে
তোমার সাহস দেখে বুক কাঁপে...
হেসে বলে ছিলাম সবই কেরামতি
গেল বছরের স্মৃতি
কারণ মাটির গন্ধে আহত আমি
দূরের বীথি
হাত না-ছুঁলে ব্যথা ভারী হয় বাদ বাকি
একটি দুটি
জলের ফোঁটা
বৃষ্টিধারা চশমা বেয়ে
একটি দুটি
একটি দুটি
অনেক দিনের গল্পকথা
ছন্নছাড়া, বৃষ্টিভেজা,
একটি দুটি
এমন দিনে যায় যে বলা
একটি দুটি প্রেমের কথা
বৃষ্টিদিনে
লক্ষ্মীসোনা, এমন দিনে
একটি দুটি
গোপন আদর
এমন দিনে
বন-বিতান
নলখাগড়া ঝিলের জলে
বৃষ্টি যদি একটু ধরে
একটি দুটি
পল অণুপল
হাজার বছর
এমনি করে জীবন কাটে
এমনি করেই বৃষ্টি ঝরে
স্মৃতির শহর, বৃষ্টিধারা
ধূসর স্...
যে দুজন গ্যাছে বনে
তাদের আর ফিরবার কোনো পথ নেই
কেননা অরণ্যের পথেরা আর নগরে ফেরেনা।
যারা সন্ন্যাস নিয়েছে প্রেমে
তাদের সম্ভবত সেখানেই থেকে যেতে হবে
কেননা প্রেমের তাবৎ পথই এখন ক্লেদে স্থিত।
আর যারা ভবঘুরে হয়ে গ্যাছে
ঘুরে ঘুরে যারা দেখেছে অনেক, তারাও
জেনেছে গন্তব্যের চেয়ে পথই বেশী মায়াবতী হয়।
আমি তাকে দেখতে যাই পাতার সংকলনে,
সফেন মেঘের অন্নে;
খামার উজানে দিয়ে দিই রাতুল দোয়েল।
আশাবরী সুর নিয়ে অনেক শহরের নাল হাঁটে
হাঁটে অজস্র ঘৌড়ার পা; পাঞ্জাবীর খুঁটে ঝুলে
থাকে সূর্য!
রোদের শরাব পানে হয়ে গেছি শিমের রঙনেশা
আমার হাতে নৃত্য করে নিদাঘ দুপুর
কাঁধে সোডিয়াম-বাতির ঝুনঝুন।
তার পাতার সংকলনে জানিয়ে দিই শহরের শ্লোক।
একই পথ এঁকে বেঁকে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে মরে গেছে
অশ্বের খুঁড়ের শব্দ সুদূরে মেলায়
জলার গলিত পাঁকে
নদীর উদ্যমী বুকে
মানুষের শিল্প পাতে বুক
আর নিঃসঙ্গ বৃদ্ধের সাথে নিঃসঙ্গ তরুনীর আনাগোনা
জলাভূমি বুক খুলে দাও
স্তনের বৃন্ত ছুঁয়ে দেখি
জন্মের কিঞ্চিৎ পরেই মাতৃস্তন দুর্গম যে ছিল
এখনো গোপনে তাই, মায়ের দুধের ঘ্রাণে কাঁপি
এখনো গোপনে তাই শরীরের ওম চাই
বাহুর বালিশ চাই, নিষ্কাম চুম্বনের আশা...
[right]মন্দাক্রান্তা নাম্বার আমি ফেলে আসছি ভুল জঙ্গলে। নতুন নতুন
আইডেন্টিটি কার্ড আর পায়ের ছাপে ঢেকে গেছে জঙ্গলের রাস্তা
পরিষ্কার হয়ে গেছে। পথে কোনো দূরত্ব নেই ওই রাস্তায়।
যেখানে গ্রামের শেষ হয়নি সেখানেও অচেনা মোটর সাইকেলে চ’ড়ে
নতুন আসা জঙ্গল ঘোরে বরাভয়। পুরনো প্রতিবেশিরা চ’লে গেছে
প্রত্যেকের নিজস্ব জঙ্গলে
যার যার নাম্বারের খোঁজে।
সেখানে আবার সবার দেখা হলো একা একা
জঙ্গল...