যাঁরা বড়ো হয়ে গেছেন তাঁদের জন্যে নয় কিন্তু !
.
স্ক্যান্ডিনেভিয়ার উপকথা অনুযায়ী আদিতে না ছিল পৃথিবী, না ছিল আকাশ, শুধু এক বিরাট শূন্যতা হা হা করতো, তার নাম ছিল গিন্নুঙ্গাগ্যাপ। তার দক্ষিণে ছিল আগুনের জগৎ মাস্পেল আর উত্তরে ছিল ঠান্ডা তুষারের জগৎ নিফলহেইম। মাস্পেল থেকে উষ্ণ বাতাস গিন্নুঙ্গাগ্যাপ পেরিয়ে এসে পড়তে থাকলো নিফলহেইমের তুষারে, জমাট তুষার গলতে থাকলো, খসে খসে পড়তে থাকলো গিন্নুঙ্গাগহ্বরে।
সে অনেকদিন আগের কথা। দূর দক্ষিণের এক ছোট্টো সবুজ শহরে তখন থাকতাম। আপনদেশের মাঠের থেকে শিকড়সমেত উপড়ে নেওয়া একলা একটা গাছের মতন গিয়ে সেখানে যখন প্রথম নামলাম, তখন ঘোর শীত। গাছপালা বেশীরভাগই পাতাহীন বিবর্ণ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শুধু চিরসবুজ পাইনেরা সবুজ করে রেখেছে শহরের আকাশরেখা। তারপরে প্রকৃতির অনিবার্য নিয়মে সূর্য সরে গেল উত্তরে, হয়তো কোনো দূর কাননের কুন্দকলি করুণ চোখে শেষ চাওয়া চেয়ে নিয়ে ঝরে গেল ধূলায়।
জীবনানন্দ দাশ 'স্বপ্নরে হাত'ে ধরা দয়ি েঅনুভব করছেলিনে : 'পৃথবিীর যত ব্যথা - বরিোধ - বাস্তব/ হৃদয় ভুলয়িা যায় সব!/চাহয়িাছ অনে্তর য-েভাষা/ যই ইেচ্ছা, - যইে ভালবাসা/ খুঁজয়িাছ িপৃথবিীর পার েপার েগয়িা,/ - স্বপ্ন েতাহা সত্য হয় েউঠছে েফলয়িা!'
লজ্জারাও ধুয়ে যায় বৃষ্টির জলে---
…
হঠাৎ দেখা হলো মধুরিমার সঙ্গে। মধুরিমার সঙ্গে ওর ফুটফুটে মেয়েটাকে দেখে আমার ভাইঝি রুন্তুলির কথা খুব মনে পড়লো। যখন দেশ ছেড়ে চলে আসি তখন রুন্তুলি প্রায় এই বয়সীই ছিল।
"কী নাম রেখেছিস মেয়ের?"
"ওকেই জিজ্ঞেস কর না। এমনিতে খুব টরটরি। আজকে তোকে নতুন দেখে চুপ করে গেছে। মামণি, বলে দাও তো তোমার নামটা।"
টরটরি চুপ করে দেখছে, তারপরে আরেকটু সাধ্যসাধনার পরে বললো "তোমাকে বলবো কেন?"
দাঁড়িয়ে আছি একটা মস্ত ঘরের মধ্যে, হা হা করছে ফাঁকা ঘর, কোনো জানালা নেই, শুধু অদ্ভুত সবুজ রঙের দেওয়াল ঘরের চারিদিকে। ছাদ অনেক উঁচুতে। ছাদ থেকে ঝুলছে একটা সোনালি শিকলি, তার ডগায় একটা অদ্ভুত আকৃতির পলকাটা ঝাড়বাতির মতন জিনিস, কিন্তু আলো জ্বলছে না সেখানে। শুধু কোথা থেকে লুকানো আলো এসে ওটার উপরে পড়ে চিকমিক করছে।
১।
সমুদ্রের তীর ধরে হেঁটে যাই, গভীর নীল ঢেউয়ে জ্বলজ্বল করে কীসের যেন দীপ্তি। আর, আবহসঙ্গীতের মতন অবিরল ঢেউপতনের শব্দ। আসে আর যায়, ওঠে আর পড়ে। স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের মতন, বিরতি নেই, ক্লান্তি নেই, অনন্ত কাল উঠছে আর পড়ছে।
এরপর তৃতীয়দিন। সকালবেলা ভেনাস এসে সাইকির হাত ধরে টেনে নিয়ে যান প্রাসাদের সামনে। প্রাসাদের সম্মুখ দিয়ে পথ চলে গেছে পাহাড়ের দিকে। দূরে পাহাড়ের নীল চূড়া।
সাইকির হাতে একটা শূন্য ঘট ধরিয়ে দিয়ে দেবী বলেন, "ঐ যে পাহাড়চূড়া, ঐখানে স্টিক্স নদীর উৎস। ঐ উৎসের কাছ থেকে জল ভরে আনবি এই ঘটে। যা, রওনা হ। ফিরতে হবে সন্ধ্যার আগেই, মনে রাখিস।"
[justify]