একাকী নদীটির ধারা আলোর সীমা ছাড়িয়ে সন্ধ্যার দিকে চলে গেছে চুপচাপ। গভীর, নীল, নির্জন স্রোত। আধা ঘুম, আধো জাগা সেই ধারা বয়ে চলেছে নিজেরই নীলাভ সবুজ স্বপ্নের ভিতর দিয়ে।
গল্পটা রহস্য পত্রিকা’র অক্টোবর-২০১০ সংখ্যায় প্রকাশ হয়।
আমি আনারুল। মা বলতেন ‘আনারুল হক’। বাবা ডাকতেন আনু নামে। গাঁয়ের লোকেরা বলত আনারুল পাগলা। ভাঙাচোরা অবয়ব। পাখির নীড়ের মত উষ্কখুষ্ক কেশশ্রী, সাপের খোলসের মত খসখসে ত্বক, অস্পষ্ট বাচনভঙ্গি, বোকাবোকা চাহনি আর বুদ্ধির ঘটে আমড়া কাঠের ঢেঁকি; সবমিলিয়ে গ্রামবাসীদের দেয়া পদবীটা ধারণ করার মত যথেষ্ট যোগ্যতা আমার ছিল। তাই আজও এই গাঁয়ে পাগল ও আনারুল সমার্থক দুটি শব্দ।
কুরেন্ত আর ক্রানিয়াৎস ঘুরে ঘুরে দেখছিল মহাপ্লাবনের (এইখানে প্রথম অংশ) পরের দুনিয়াটাকে। ডাঙা জেগে উঠেছে বটে কিন্তু কোনোখানে কেউ নেই। প্রাণশূন্য এক বিবর্ণ দুনিয়া। কেজানে কতদিন লাগবে আস্তে আস্তে গাছপালা পশুপাখিতে দুনিয়া ভরে যেতে। মানুষ জাতির মধ্যে আছে কেবল ক্রানিয়াৎস। সে এই বদলে যাওয়া দুনিয়া দেখে কেমন হতভম্ব হয়ে গেছে, মুখে কথা নেই। হাজার হোক, মানুষ ত
"দ্যাখেন আম্মু, এই লোকটার সাথে আমার অনেক মিল"... শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এর লেখা পার্থিব পড়তে পড়তে, বইটার একটা চরিত্র কৃষ্ণজীবনের ব্যাপারে আম্মুকে বললাম।
আম্মুর তেমন কোন আগ্রহ নেই বই-টইয়ের দিকে, তাও জিজ্ঞেস করলেন, "কেমন মিল?"
সে অনেকদিন আগের কথা, সেই সময় মানুষ পৃথিবীতে খুব আনন্দে থাকতো, পরম সুখে জীবনযাপন করতো। সে এক চমৎকার অবস্থা। কারুর কোনো কাজ করতে হতো না, যার যা দরকার সব হাতের কাছে এসে হাজির হতো। একথালা পোলাও চাই, এসে গেল ফার্স্ট ক্লাস পোলাও। এক প্লেট বিরিয়ানি চাই, এসে গেল দারুণ চমৎকার বেহেশতী বিরিয়ানি। এক বাটি পায়েস চাই, এসে গেল মনোরম স্বর্গীয় স্বাদের পায়েস। মখমলের তাকিয়া চাই, এসে গেল তাকিয়া। হীরার দুল চাই, এসে গেল
একদিন ঝড়ের রাতে মাতাল নাচের বৃত্তে তাকে দেখেছিলাম প্রথম। ভবঘুরে ধূমকেতুটির মতন নক্ষত্রারণ্যে একা। বুকে ঢেউ উঠেছিলো সেদিন ঝঞ্ঝা-উত্তাল সমুদ্রের মতন। পরে যখনই কাছাকাছি হয়েছি, তখনই জেগেছে ঢেউ, কখনো সমুদ্রে, কখনো বুনো ঘাসঝোপে।
কেমন একটা অবাক-ঠান্ডা লাগছিল, যেন এইমাত্র জন্মালাম। মায়ের উষ্ণ গর্ভগৃহ থেকে বেরিয়ে যেন এসে পড়েছি এক বিপুলবিস্তার জগতে। সেখানে অনেক আলো, অনেক হাওয়া আর অদ্ভুত কনকনে এক হঠাৎ শীত যাতে অভ্যস্ত হতে আরো সময় লাগবে। একটা পর্দা যেন সরে যাচ্ছিল মনের চোখের উপর থেকে। আর, এক আশ্চর্য কোমল সম্মোহনী শব্দ আসছিল, কোনো স্রোতের শব্দ। পরে সেই স্রোতের উৎস খুঁজে পেয়েছিলাম, একটা ছোট্টো ঝর্ণার মতন, দু'পাশে সারি সারি পাইনের