সহস্র দিনের নির্বাসন

অনিকেত এর ছবি
লিখেছেন অনিকেত (তারিখ: সোম, ০৭/০৬/২০১০ - ১:৫০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই উইকেন্ডে আমার এক বন্ধুকে বিদায় দিতে গিয়েছিলাম নিউ ইয়র্ক।
সে দেশে ফিরছে গ্রীষ্মের ছুটিতে।
প্রায় এগারো মাস পর সে দেশে ফিরছে।

আজ থেকে প্রায় এগারো মাস আগে শাহান যখন ডেলাওয়ারে এসে হাজির হয়েছিল, তখন ডেলাওয়ারের মাত্র একজনের সাথে তার 'আনুষ্ঠানিক' পরিচয় ছিল। সে লোকটি আমি। এইখানে আসার আগে শাহান কোন ভাবে আমার ইমেল জোগাড় করে। সেইসূত্রে মাঝে মধ্যে পত্রালাপ হত। যতটুকু জানি, আমেরিকায় এই তার প্রথম আসা।

আমেরিকা নিয়ে তাই তার অনেক প্রশ্ন ছিল।
আর আমার ছিল পান্ডিত্য ফলানোর অশালীন আগ্রহ।
তার প্রশ্নগুলোর উৎপত্তি যদিবা ছিল উদবেগ-উৎকন্ঠার উর্বর ভূমিতে--- আমার উত্তর গুলো ছিল জ্ঞান ফলাতে পারার উৎকট আনন্দে সিঞ্চিত, এক বিরল আত্মপ্রসাদে জারিত হতে পারার সম্ভাবনায় উজ্জ্বল। সে আমাকে সরল মনে প্রশ্ন করে যেত। আমি গরল মনে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে উত্তর দিতাম। এই দেশটায় আমি যে দশ দশটি বছর কাটিয়েছি এবং সে কারণে আমি যে এক প্রকারের বোধিসত্ত্ব লাভ করেছি---এই ব্যাপারটা পই পই করে বুঝিয়ে দেবার চেষ্টায় আমার আন্তরিকতার অভাব ছিল না।

আজ থেকে প্রায় এগারো মাস আগে যখন শাহানের সাথে আমার দেখা হয়েছিল আমাদের ভার্সিটি ক্যাম্পাসে---তখন তার পরণে ছিল ফুলপ্যান্ট আর আমার পরণে ছিল হাফ প্যান্ট!

এর পরের ক'টি মাসে সে অস্বাভাবিক দ্রুততায় কেবল আমার নয়, এই ডেলাওয়ারের সকল বাংলাদেশীর জীবনের একটি অচ্ছেদ্য অংশে পরিনত হয়। আমি ডেলাওয়ারে আট আটটি বছর কাটিয়ে যেসব লোকের সাথে পরিচিত হয়ে উঠতে পারিনি, যেসব অসম্ভব সুন্দর স্থানে ঘুরতে যেতে পারিনি, শাহান ঈর্ষনীয় মসৃণতায় সেইসব 'ল্যান্ডমার্ক' স্পর্শ করে আসল। শাহান আসার আগে পর্যন্ত সাইফ-প্রজাপতিদের বাসায় ছিল আমার একচ্ছত্র আধিপত্য---ওদের উঠোনে ছিল আমার চিরস্থায়ী বন্দোবস্থ। তাদের দেবশিশু সামারার কাছে আমি ছিলাম একমেবাদ্বিতীয়ম 'থায়েক বাই'। শাহান দ্রুত আমার সে আসন টলিয়ে দিল। সামারা মাঝে মধ্যেই জন সমক্ষে "শাহান মামা"-র প্রতি তার দুর্নিবার পক্ষপাতিত্বের কথা সোল্লাসে প্রচার করতে লাগল।

মজার ব্যাপার হল, এইসব নিয়ে আমি মন খারাপ করার বদলে আবিষ্কার করলাম আমি নিজেও এই ছেলেটাকে বেশ খানিকটা পছন্দই করি। আর করবই বা না কেন? ২৪ ঘন্টার মাঝে ২৫ ঘন্টাই যার মুখে হাসি লেগে থাকে--এমন একজনকে কি অপছন্দ করে বেশিখন থাকা যায়?

এহেন শাহান কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমার কাছে ঠিকই এক বিরাট অপছন্দের লোকে পরিনত হল ! দেখা গেল তার হাসি দেখলেই আমার ভেতরে এক অন্ধ ক্রোধ চিড়বিড় করে ওঠে। তার কথা শুনলেই আমার চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। তার সাথে দেখা হওয়া মানেই আমার ঐ দিনটা খারাপ যাওয়া।

কিন্তু কেন এমনটা হল?

কারণ আর কিছুই না। যেদিন শাহান জানাল যে সে গ্রীষ্মের ছুটিতে দেশে যাবে সেইদিনই আমি তার উপর থেকে আমার সকল ভালবাসা আর সহানুভূতি প্রত্যাহার করে নিলাম।

আমি কোন মহাপুরুষ নই।তবে হ্যাঁ, এইটা সত্যি যে মাঝে মধ্যে বেশ খানিকটা চেষ্টা করলে পরে এই আমিও অন্যের বেশ কিছু ভুল-ত্রুটি উপেক্ষা করে যেতে পারি। তেমন দাঁতে দাঁত চেপে চেষ্টা করলে অনেককে মাঝে মধ্যে ক্ষমা-টমাও করে দিতে পারি।

কিন্তু আমার দুনিয়ায় কেবল একটি অপরাধের কোন ক্ষমা নেই। কেউ যখন এসে আমাকে বলে যে সে দেশে যাচ্ছে বেড়াতে--তখন আমি আর সহ্য করতে পারিনা। আমার ভেতরের হিংসুক সবুজ-চোখো ময়দানবটা তার দ্রংষ্টা-বিকট করাল মূর্ত্তি প্রকাশ করে গর্জন করতে থাকে। আমি যখনই শুনি আমার কোন চেনা লোক দেশে যাচ্ছে--আমার সকল ভদ্রতার লেবাস খুলে পড়ে। আমি তাকে শাপ-শাপান্ত করতে থাকি। নিজেকে মনে হতে থাকে অভিশম্পাতময় দুর্মুখ দুর্বাশা মুণি। আমি ঈশ্বর-দেবতা-মানুষ-পশু নির্বিশেষে সকলকে অভিশাপ দিতে থাকি। আমি আমার আপাত শ্যামল-সরস-সঘন মূর্ত্তি পরিত্যাগ করে পরিনত হই নির্মেঘ আষাঢ় মধ্যাহ্নের নির্মম খরতাপে।

শাহান না জেনে শুনে এই 'গর্হিত' কাজটি করে ফেলল। সে খুশি মনে দেশে যাবার প্রস্তুতি নিতে থাকল। তার উৎসাহ-আনন্দ দেখি আর আমার বুকে দুখের হুতাশন বয়ে যায়।

আজ প্রায় এক সহস্র দিন হয়, আমি দেশে যাই না।
আজ প্রায় এক সহস্র দিন হয়, আমার মা আমার মাথায় হাত রাখে না।
আজ প্রায় এক সহস্র দিন হয়, আমার পিতার মুখ দেখি না।
আজ প্রায় এক সহস্র দিন হয়, আমি শুনিনা আমার বোনের আনমনে গেয়ে যাওয়া গান-----

আজ প্রায় এক সহস্র দিন শোনা হয় না ঘরের চালে মেঘ মল্লার, ভোরের আলোয় কোমল রেখাব!

আজ প্রায় এক সহস্র দিন হয়, এই নগরে আমি প্রেতাত্মা হয়ে ঘুরে বেড়াই।

আজ প্রায় এক সহস্র দিন এই রূপনগরে আমার অলৌকিক নির্বাসন।

তাই যখনি শুনি কেউ যাচ্ছে আমার অলকধামে, আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারি না। অভিমানে,রাগে,হতাশায় আমার ঠোঁট ফুলে ওঠে।

সব কিছুর পরও আমি শাহানের সাথে নিউ ইয়র্ক যাই। সারা রাত আড্ডা দেই। উচ্ছল হাসির ফোয়ারায় আড়াল করে রাখি বুক ভাঙ্গার শব্দ। তারপর খুব সকালে যখন জেএফকে এয়ারপোর্টে তাকে নামিয়ে দিতে যাই তখন সবার অলক্ষ্যে তার কাঁধ ছুঁয়ে দিয়ে মনে মনে বলি---যাও পাখি, তুমি ছুঁয়ে আস আমার দেশের ঘাস-ফুল-মাটি। তুমি ছুঁয়ে দিয়ে আস আমার দেশের পথ,মেঘ,হাওয়া। তুমি বলে এস উজ্জয়িনী নদী তীরে আমার প্রেমিকাকে যে, তার যক্ষ প্রেমিক এখনো প্রগাঢ় প্রেম ধরে রাখে বুকে। তাকে বলে এসো---- এখানের হাজারো সুরম্য অভ্রভেদী অট্টালিকার ভীড়ে আমি আজো হয়ে আছি 'অনিকেত'!

আমি অপেক্ষায় আছি আমার শাপ মোচনের--!
আমি অপেক্ষায় আছি আমার দেশে ফেরার সেই সুবর্ণ মুহূর্ত্তটির!


মন্তব্য

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

দশ বছর হলে তো হিসেবে প্রায় সাড়ে তিন হাজার দিন হওয়ার কথা, মানে আপনার ভাষায় সার্ধ ত্রিসহস্র অহর্নিশি।

আপনার বেদনা বোঝার প্রতিভা নেই, তবে, আপনার আর্তনাদটা শুনতে পাচ্ছি স্পষ্ট।

"বোধিসত্ত্ব লাভ করেছি" না বলে 'বোধিজ্ঞান/বোধি লাভ করেছি'ই বোধহয় ঠিক।

আপনি আপনার বুকের ভেতর স্বপ্নের যে-দেশ তৈরি করেছেন, তা দেশে এলে কিন্তু পাবেন না। আপনি দেশটা আপনার হৃদয়ের অতনুরসায়নে জাড়িত করে স্বপ্নময় রূপকথার রাজ্য করে তুলেছেন।

তবে, হ্যাঁ, অপার শান্তি পাবেন।

অনেক দিন পর আপনার লেখা, ভাল লাগলো। ভালো থাকবেন।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

অনিকেত এর ছবি

মহাস্থবির'দা,
অনেক ধন্যবাদ এই লেখাটা পড়ার জন্যে।

কিছু জিনিস আমি স্পষ্ট করে বলি নি লেখাটায়। আমি দেশে শেষবার গিয়েছিলাম প্রায় বছর তিনেক আগে। সেই কারণেই সহস্র দিনের কথা বলছিলাম।

আমার ভিসা ফুরিয়েছে। তাই দেশে ফেরার ইচ্ছে থাকলেও ফিরতে পারি না।
শুধু যা করতে পারি সেটা হল বন্ধুদের তুলে দিয়ে আসতে পারি এয়ারপোর্টে আর মনে মনে আমার একটা অংশ পাঠিয়ে দিই তাদের সাথে দেশে---

এইসব নিয়েই এখন আমার বেঁচে থাকা---

ভাল থাকবেন সব সময়।

s-s এর ছবি

অনেক কিছু মাথায় ঘুরছে।
"লেখাটা পড়ে বিষণ্ণতা আক্রান্ত" ধরনের ক্লিশে লাইন আর লিখতে ইচ্ছে করেনা। কিন্তু ছুঁয়ে যাওয়া কোথাও-এক্টুখানিক মৃদু বাতাসের মতো--ক্ষতে শুশ্রূষার প্রলেপ লাগানো লেখা পড়ে,কীই'বা বলার থাকে। তারপরও অক্ষমের আস্ফালনের মতো,বা বামনের চাঁদ ধরার বাসনাকে উস্‌কে দিয়ে বলি।
স্মৃতি যেমন,বিস্মৃতিও তেমনি। সময়ে সবই ঠিক হয়ে যায়।সয়ে যায়,সইয়ে নেয়া যায়।
প্রায় দশ বছরের অনভ্যাস একটুও কি টলায় না?
মনের ভেতর একটুও কি শেকড় গজায় না?
জানিনা।
যতদিনের দূরত্ব,ততদিনের নৈকট্য হলে ভালো লাগতো খুবই,কিন্তু জানেন, আজকের বাংলাদেশটাকে আর নিজের বলে ভাবতে কষ্ট হয়।মানুষ,পরিপার্শ্ব আর জীবন এমনভাবে পালটে গ্যাছে সবার,ওই ভূখণ্ডের শেকড়ে নিজের জায়গাটুকু খুঁজে পাবার তৃপ্তি পাইনা আর,কেবল পুরনো দিনের হারানো বেদনার হাহাকারটুকু পাই কেবল। আরও দশ বছর যাক্‌,তারপর দেখবো আর কী অবশিষ্ট থাকে। এই অংশটুকু আমার নিজের আত্মোপলব্ধি কেবল,অন্য কারুর জীবন ভিন্ন হতেই পারে। তারপরেও আপনার এই লেখা পড়ে মনেপ্রাণে চাই,অনিকেতের ঘর খুঁজে পাওয়া সার্থক হোক।
ভালো থাকুন।

অনিকেত এর ছবি

রাজকণ্যে,

আপনার মন্তব্যটা পড়ে অনেক খন চুপ করে বসেছিলাম।

কী যে চমৎকার করে বলেন আপনি!
জানেন, আমি চেষ্টা করছি। আমি চেষ্টা করছি গত দশ বছর ধরে এখানে শেকড় গজাতে। হয়ত কিছুটা গজিয়েছেও। কিন্তু সেটা আমার মনটার পায়ে শেকল পরানোর মত শক্তিশালী নয়।

আর আরেকটা সত্যি কথা বলি? আমি চাইও না আমার মনে শেকড় গজাক।
আমি জানি যে দেশের ছবি আমি বুকে ধরে রেখেছি, বাস্তব হয়ত অনেকটাই আলাদা। এখন দেশে ফিরলে হয়ত বুক ভাঙ্গবে আরো বেশি, তবুও আমার ভাঙ্গা বুকের টুকরোগুলো ছড়িয়ে দিতে চাই ঐ দেশের মাটিতেই---আর কোথাও নয়।

ভাল থাকুন রাজকণ্যে!

রেশনুভা এর ছবি

বাহ অনিকেত'দা। পড়ে তো, দেশে এখনই ছুটে যেতে ইচ্ছে করছে আবার।

অনিকেত এর ছবি

তাহলে তোমাকেও কিন্তু আগাম হিংসে!

ভাল থেকো বস।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ঐ মিয়া, আপনে তো মহা কালপ্রিট হো হো হো, সেইদিন না ফিরলেন ঢাকা থিক্কা, আবার যাইতাম চান, আপনারে কইষ্যা মাইনাস চোখ টিপি
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

গৌতম এর ছবি

আহা! মন ছুঁয়ে যাওয়া লেখা! দেশের বাইরে থেকে দেশকে উপলব্ধি করেন বলেই দেশের প্রতি এই প্রাণ-নিংড়ানো ভালোবাসার প্রকাশ, এই আবেগ, এই অনুভূতি! আর আমি! দিন দিন কাটখোট্টা হয়ে যাচ্ছি দেশের ব্যাপারে! একের পর এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট নষ্ট কীর্তিকলাপগুলো দেশের প্রতি জমে থাকা অনুভূতিগুলোকে দিন দিন ভোঁতা করে দিচ্ছে। এখন আর অনেক কিছুতেই অনেক কিছু হয় না, যেখানে আগে, ছোটবেলায়, বোধহয় সব কিছুতেই সব কিছু হতো! পুকুরপাড়ে কাঁতরাতে থাকা ব্যাঙকেও দৌড়ানি দিয়ে পুকুরের পানিতে নামিয়ে দিয়েছি কতোবার, ভেবেছি বেচারা এখন শান্তিতে সাঁতরাবে; আর এখন শীতাতপ-নিয়ন্ত্রিত গাড়ির কাচের ওপাশে অক্ষম পড়ে থাকা মানুষগুলোর প্রতি তাকাতেও রাজ্যের আলস্য ভর করে! মন খারাপ

বন্ধুর মাধ্যমে নাকি বন্ধুকে দেখা যায়। শাহান যদি কখনো সচলাড্ডায় আসেন, তাহলে নিশ্চয়ই তাঁর সাথে দেখা হবে, আর তাঁকে দেখে নিশ্চয়ই আরো বেশি করে উপলব্ধি করতে পারবো আমাদের 'থায়েক বাই'-এর অনুরণনগুলো। হাসি

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

অনিকেত এর ছবি

গৌতম'দা,
অনেক ধন্যবাদ লেখাটা পড়ার জন্যে।

আমি আপনার কথা বুঝতে পারছি। খুব ভাল ভাবেই পারছি।
কারণ এক সময় আমি নিজে ছিলাম ওই জায়গাটায়। দেশে যখন ছিলাম তখন সবকিছু মনে হচ্ছিল আমাকে বোধ-বুদ্ধি হীন এক পাথরে পরিনত করছিল। কিন্তু যেই পেরিয়ে এলাম তেরো নদী আর সাত সমুদ্র, যেই পা রাখলাম এই নন্দনকাননে---বিশ্বাস করবেন না হয়ত, আমার প্রথম অনুভূতিটাই ছিল, 'এ কী করেছি আমি!'

মাঝে মাঝে কিছু জিনিস স্পষ্ট করে দেখার জন্যে একটু দূরে সরে যেতে হয়।
মাঝে মাঝে 'ফিরে আসা'র জন্যে 'চলে যেতে' হয়----

কিন্তু এইটুকু বিশ্বাস করুণ গৌতম'দা, দূরে গিয়ে অনুধাবন করার মত কষ্টের কিছু আর নেই। বিশেষ করে যখন ফিরে আসার সুযোগ থাকে না।

আপনি ভাল থাকুন।
সকল সময়

রণদীপম বসু এর ছবি

মাঝে মাঝে কিছু জিনিস স্পষ্ট করে দেখার জন্যে একটু দূরে সরে যেতে হয়।
মাঝে মাঝে 'ফিরে আসা'র জন্যে 'চলে যেতে' হয়----

এটাই ঠিক।
লেখাটা সুন্দর হয়েছে অনিকেত দা।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ রণ'দা!

সিরাত এর ছবি

আহা তো এসে ঘুরে যান না, কে মানা করসে! হাসি

লেখাটা ভাল হইসে।

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ সিরাত লেখাটা পড়ার জন্য।

এসে ঘুরে যান না, কে মানা করসে!

মানা করছে আম্রিকার সরকার! আমার ভিসা শেষ রে ভাই। চাইলেও তাই আসতে পারছি না---

তুমি ভাল থেকো, সকল সময়

সেন এর ছবি

অসাধারন একটা লেখা অনিকেতদা। আমার দিনটা আপনি আলো করে দিলেন। ভাষার উপর আপনার দখল খুবই ভাল। যান মুখেই আপনাকে বিশ লাখ তারা দিলাম।

আপনার কাছে আরো বেশি নিয়মিত লেখা চাই।
মঙ্গল হোক।

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ সেন।
দাদা বলে ডাকছ বলে তোমাকে আমিও 'তুমি' করে বলছি---
ভাল থেকো ভাই আমার--!

দুর্দান্ত এর ছবি

দেশে যাচ্ছেন না কেন?

অনিকেত এর ছবি

দুর্দান্ত'দা,
আমার ভিসা শেষ। কিন্তু এইখানের 'কাজ' (পড়ুন, পি এইচ ডি) এখনো শেষ হয় নাই। সেইজন্যেই এই হাপিত্যেশ করা---সেইজন্যেই দেশে যেতে না পারা

ভাল থাকেন বস!

বাউলিয়ানা এর ছবি

ইশরে... কী লিখছেন এগুলা!

এখন থেকে দেশে যাবার জন্য এরকম মন আকুপাকু করা লেখা দিলে কঠিন শাস্তি হবে, কঠিন!

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা
জ্বী আচ্ছা বাউলিয়ানা

তুমি ভাল আছো তো?

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলে আসেন অনিদা...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অনিকেত এর ছবি

আসুম বস
একদিন ঠিকই চলে আসমু

তিথীডোর এর ছবি

"চলে আসেন অনিদা..."
হুম, ফিরে আসুন ভাইয়া.. যত শিগগির পারা যায়!!!
আর ভালো থাকুন স--ব সময়।।

_______________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আমি ভাবছি, শাহানও কী একসময় এভাবে অন্য একজনকে শাপ-শাপান্ত করবে দেশে আ্সতে পারার জন্যে? চিন্তিত
এত দুঃখী লেখা লিখে মন খারাপ করে দেয়ার জন্যে তো আপনাকে তারা দেবার বন্দোবস্ত নাই দেখছি! চাইলে হয় না এমন কিছু এখনো দেখি নাই। তাই দোয়া করি শাপ-মোচনের পথ নিষ্কন্টক হোক শীঘ্রই। আরও দোয়া করি, দেশে যখন আসবেন, তখনো যেন দেশের পথ, মেঘ, হাওয়া, উজ্বয়িনী নদী তীরে আপনার প্রেমিকাকে যেমন কল্পনায় দেখেন, অমনটাই দেখবার মনের চোখটাও বেঁচে থাকে। ভাল থাকুন অনিকেত ভাই, আর স্বপ্নটা ধরে রাখুন। সহস্রদিবস আর এমন কত কাল? আরো বেশি সময় ধরেও নির্বাসিত যাঁরা, বিশেষ করে দেশে থেকেও যাদের দেশের কথা মনে পড়ে না, তাঁদের থেকেতো আপনি ভাল আছেন!

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অনিকেত এর ছবি

ভাই যাযাবর
অনেক ধন্যবাদ লেখাটা পড়ার জন্য আর এমন দয়ার্দ্র কিছু কথা বলার জন্যে।
তুমি বয়েসে ছোট হবে ধরে নিয়ে, তোমাকেও 'তুমি' করে বলছি।

নির্বাসনটা বড় অদ্ভূত জিনিস, তাই না?
যে দেশ থেকে আমাকে নির্বাসন দেয়া হল, আমি যদি সেই দেশটাকে 'মিস' না করি তাহলে কী আর সেটা নির্বাসন বলে বিবেচিত হবে? নির্বাসন তো হয়---যখন আমার ফেরার টানটা রয়। সেইজন্যেই তো সেটা শাস্তি!

তুমি ভাল থেকো বস। সকল সময়

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হুম, তুমি করেই বলবেন, একশ বার বলবেন।
আপনার মত একই ধরণের নির্বাসিত জীবন যাপন করছে আমার ছোট বেলার এক বন্ধু, স্কুল-বেলার একদম... তার কষ্ট আরো বেশি মনে হয়, মেয়ে হবার কারণে আরো অনেক বেশি অনেক অন্য ধরণের ঝামেলা মোকাবেলা করে টিকে থাকতে হয়, আর এখনো আন্ডারগ্র্যাডের ঝামেলাটাই লটকে আছে তার ভাগ্যে। অনেকদিন কথা হয় নাই...

নির্বাসন ... আমার ভাগ্য ভাল আর দুটো মাস আগে এই পোস্ট আপনি লিখেন নাই... আমি হয়ত নির্ঘাত হৃতপীড়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা পড়তাম বা আর কিছু... নির্বাসন... দেশের মাঝেও কতজন নির্বাসিত হয়ে থাকেন... আপনি সত্যি অনেক ভাল আছেন অনিকেত ভাই... সত্যি...

ধন্যবাদ শুভেচ্ছার জন্যে... আরো বেশি বেশি ওর ডাবল রইল আপনার নিজের জন্যে... ভাল থাকুন সবসময়।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অতিথি লেখক এর ছবি

বাচনভঙ্গি প্রাঞ্জল এবং চমৎকার, বেশ লাগল পড়তে, শুভকামনা..

_______________________________________
বর্ণ অনুচ্ছেদ

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ বর্ণ
ভাল থাকুন, সকল সময়

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

সকালে ঘুম থেকে উঠে এই লেখা পড়ে মনে হলো আহমদ ছফার কোন লেখা পড়ছি।

দেশে ঘুরে আসেন। হাসি

--------------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

অনিকেত এর ছবি

পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ, শুভাশীষ'দা
ভাল থাকুন, অহর্নিশ

অতিথি লেখক এর ছবি

আচ্ছা আজকাল সবাই এইরকম মন খারাপ করা লেখা দিতেসে কেন? যাই হোক খুব ভাল লাগল আপনার লেখাটা। আমার খালাত ভাইটার কথা মনে পড়ে গেল। ফোনে কথা বলার সময় তার দেশে আসার আকুতিটা স্পষ্ট অনুভব করতে পারি। সময় অরে চলে আসুন না দেশে।
তার্কিক

অনিকেত এর ছবি

পড়ার জন্যে ধন্যবাদ তার্কিক।
দেশে ফেরার সময়ের অপেক্ষায় আমিও আছি।

ভাল থাকুন সকলকে নিয়ে, সকল সময়ে--

অপরাজিতা [অতিথি] এর ছবি

দেশে যাইতে চাই মন খারাপ
এতো ভাবতাম এইসব হিংসা শুধু আমি একাই করি

অনিকেত এর ছবি

না রে ভাই, আপনার আগে থেকে হিংসা আমি করি---
ভাল থাকেন

তাসনীম এর ছবি

আমিও আমেরিকাতে আসার ১১ মাস পরে প্রথম দেশে যাই। এরপর চার বছর দেশে যাইনি। তখন দিন গুনতাম...১৪৬০ দিনের মত। কত কিছুই পালটে গেছে এর মধ্যে...সবচেয়ে বেশি পাল্টেছি আমি।

ঘুরে আসুন একবার...

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অনিকেত এর ছবি

আমি দেশে শেষবার গিয়েছি প্রায় তিন বছর আগে
তাই আমার নির্বাসনকাল আপাতত এক সহস্র দিবসের--

ভাল থাকুন তাসনীম ভাই।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

মাশ্রুমাড্ডা (দেঁতো হাসি) তথা স্বদেশ ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখলাম...

চলে আসুন দিকি...

_________________________________________

সেরিওজা

অনিকেত এর ছবি

পড়ার জন্যে এবং আড্ডায় আমন্ত্রণের জন্যে অশেষ ধন্যবাদ সুহান।
ভাল থেকো সকল সময়

মুস্তাফিজ এর ছবি

আসুন আসুন, ব্যাপার না, চলে আসুন

...........................
Every Picture Tells a Story

অনিকেত এর ছবি

পড়ার জন্যে ধন্যবাদ মুস্তাফিজ ভাই
চলে আসতাম হয়ত এখুনি, কিন্তু আপনার ঐ 'আপনি' 'আপনি' বলা শুনে ডিসিশান বদলাতে হলো।

দয়া করে আমারে 'আপনি' বলা ছাড়েন
পিলিজ লাগে---

মেকা এর ছবি

চমৎকার লেখা ভাইয়া !

অনিকেত এর ছবি

পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ মেকা।
ভাল থাকুন অহর্নিশ

বইখাতা এর ছবি

আহা! কষ্ট লাগলো পড়ে। চলে আসুন দেশে, মায়ের মুখটা দেখে যান, মায়ের স্পর্শ নিয়ে যান, এমন শান্তির স্পর্শ আর কারো দেয়ার সাধ্য নাই।

অনিকেত এর ছবি

পড়ার জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ বইখাতা
ভাল থাকুন, সকল সময়ে, সকলকে নিয়ে

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

ভাইয়া, চলে আসোতো। আসলে পরে তোমার এইসব পঁচা লেখার জন্যে কতোশত কিল পরে পিঠে, দেখবা! হাসি

-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা
তোর কিল খাওয়ার জন্যে হলেও একবার দেশে আসতেই হবে
ভাল থাকিস তত দিন পর্যন্ত---

সচল জাহিদ এর ছবি

জন্মদিনে বাবা মার সাথে কথা হচ্ছিল। আমাদের মত ছেলেমেয়েদের জন্মদিন উৎযাপন সেই ছেলেবেলার পর একটা শীতনিদ্রায় যায় তারপর আবার শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার পর বন্ধুদের উৎসাহ আর উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে। বাবা মা তাই ভুলে যায় সেই দিনটির কথা প্রায়শই। এবারের জন্মদিনে মিতু বাবা মাকে ফোন করে মনে করিয়ে দেবার পর মায়ের সাথে কথাগুলি ঠিক এরকম ছিলঃ

-ভুলে গেছিলাম, কেমন কাটল?

'সমস্যা নাই, এইত ভাল'

-অনেক দূরে থাকিস তো বাবা, কতদিন দেখিনা, তাই ( মার গলায় ভুলে যাবার অপরাধবোধ)

'হুম'

এর পর আমি প্রসংগ ঘোরাই, বাড়ির আম গাছে আম এসেছে কিনা, কাঠাল পাকল কিনা জিজ্ঞেস করি। মা সব কিছুর জবাব দেয়। মাকে, বাবাকে বলি বাড়ির আম কাঠাল সবকিছু মিস করছি। বলি আপনার নাতি আম খুব পছন্দ করে। আমি বুঝি মাঝ রাত্রিরে বাংলাদেশের কোন এক মফস্বল শহর কিংবা গ্রামে আমার এই আক্ষেপগুলি কারো বুকে শেল হয়ে বিঁধে সেই আঘাত এসে এখানেও লাগে। আমি নিজেকে ব্যাস্ত করে ফেলি সারাদিনের বিভিন্ন কাজে, ভুলে থাকার চেষ্টা করি কিন্তু ...

অনিকেতদা এই নিয়েই আমাদের প্রবাস জীবন, ঠিক নদীর ধারে অনাদরে বড় হওয়া বটগাছটিকে পরম যত্নে ড্রয়িং রুমে শোপিছ হিসেবে সাজিয়ে রাখার মত। নদীর কুল কুল শব্দ যাকে ডাকে কিন্তু ড্রয়িং রুমের এসির শীতল বাতাস কিংবা ল্যাভেন্ডারের সুবাস তাকে আঁকড়ে ধরে রাখে বছরের পর বছর...

শেষতক দেশে গিয়েছিলাম ঠিক দুবছর আগে, আবার যেতে পারব হয়ত আজ থেকে আরো দুই বছর পরে।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অনিকেত এর ছবি

এই নিয়েই আমাদের প্রবাস জীবন, ঠিক নদীর ধারে অনাদরে বড় হওয়া বটগাছটিকে পরম যত্নে ড্রয়িং রুমে শোপিছ হিসেবে সাজিয়ে রাখার মত। নদীর কুল কুল শব্দ যাকে ডাকে কিন্তু ড্রয়িং রুমের এসির শীতল বাতাস কিংবা ল্যাভেন্ডারের সুবাস তাকে আঁকড়ে ধরে রাখে বছরের পর বছর...

চোখটা ঝাপসা হয়ে এল জাহিদ এই কথাগুলো পড়ে
আমি কথা দিলাম, তুমি দেশে বেড়াতে গেলে অন্তত আমি তোমাকে হিংসে করব না। কারণ আমার মন বলছে, তুমি আমার চেয়ে কম দেশটাকে মিস করো না, হয়ত খানিকটা বেশিই করো--

ভাল থেকো বস
শুভেচ্ছা অহর্নিশ

ভাঙ্গামানুষ এর ছবি

মন খারাপ না করে দ্যাখেন না, পালিয়ে হলেও যদি দেশে আসতে পারেন। আপনার হিংসাতুর মুখটা দেখতে অবশ্য ইচ্ছে হচ্ছে, হা হা হা। কিছু মনে করবেন না; আপনি যেমন দেশে আসতে না পারার দুঃখে শোকাতুর, তেমনি আমি আমার ভাইকে কাছে পেয়ে আনন্দিত। তবুও আপনার দুঃখ কিছুটা অনুধাবন করলাম।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

যাক ভাঙ্গা মানুষ তার ভাইরে কাছে পাইয়া আবারো সচলে টিকি দেখাইছে, মিয়া বিয়ার পিড়িত বইয়া মহা ফুর্তিতে লেনোভো Y-550 দাবড়াইতেছেন আর চকলেট চিবাইতেছেন, ধুনফুন থুইয়া বিবাহ নিয়া গরমাগরম লেখা ছাড়েন। নাহইলে কইলাম চোখ টিপি

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা
পড়ার জন্যে ধন্যবাদ ভাঙ্গা মানুষ!
আমার হয়ে শাহানরে দুইটা কিল মাইরা দিয়েন তো বস
অনেক অনেক দিন ধরে তাকে মাইর দেবার প্ল্যান। কিন্তু কেন জানি সব সময়ে ভুলে যাই। এইবার যেহেতু আপনার কাছেই আছে, নিজের মনে কইরা দুইটা কিল মাইরা দিয়েন

আর হ্যাঁ, জীবনের নতুন ইনিংস শুরুর প্রাক্কালে শুভাশীষ রইল

ভাল থাকুন, সকল সময়ে, সকলকে নিয়ে--

ভাঙ্গামানুষ এর ছবি

সাইফ, সচলে আমি নিয়মিতই ল্যাজ ঘুরাতে ঘুরাতে আসতাম, শুধু শপাং শপাং করে ল্যাজটা আছড়াতাম না। বর্তমানে ল্যাজখানা খসে যাওয়াতে এখন আর শপাং করার জো নেই। তাই গরমাগরম লেখা তাওয়া-তে থাকলেও প্লেটে আসার সম্ভাবনা কম হাসি

অনিকেত (শাহানের তারেক ভাই, আমারও), শাহান স্বীকার করেছে যে, আপনি তাকে 'মাইর' দিতে চেয়েছিলেন। প্রবাসে দীর্ঘশ্বাস ফেলা বড় ভাইয়ের কথা ফেলি কী করে! আপনার 'অর্ডার' যথাসময়ে 'হোম ডেলিভারি' তবে চোখ টিপি আরেকটা কথা - 'আপনি' বলার আবার কী দরকার!

ভ্রম এর ছবি

খুব ভালো লাগলো অনিকেতদা। গত বছর প্রায় ৯ বছর পর বাংলাদেশ ঘুরে এলাম... সবকিছুই পালটে গেছে, খুব অবাক লাগে। এত সব পরিবর্তন উপেক্ষা করে সেই ৯ বছর আগে ফেলে আসা বাংলাদেশকেই মনে পরে।
আসলেই প্রবাসে থাকলে দেশকে অন্য ভাবে নতুন করে দেখা হয়, ভালোবাসা হয়।
ভালো থাকবেন।

অনিকেত এর ছবি

পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ ভ্রম
তুমিও ভাল থেকো
শুভেচ্ছা নিরন্তর

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আহা!

দেশে আসেন অনিদা তারপর দেখেন আমরা কীরকম নির্বিকার ভাবে কী পরিমাণ যন্ত্রণা করতে পারি হাসি
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা
তাহলে তো দেশে আসতেই হয় বস!

ভাল থেকো সঙ্গীত
শুভেচ্ছা অহর্নিশ

সাইফ তাহসিন এর ছবি

অনিকেতদা, যতই বদ্দোয়া করেন না কেন, কাম হইব না, আমিও তো কম বদ্দোয়া করলাম না চোখ টিপি তারমধ্যে গত ২ দিন ধইরা সামারা কান্দে আর 'শাহান মামা' 'শাহান মামা' করে, তাও দেখেন না পুলাডা তরতর কইরা প্লেনে উইঠা গেলগা :D। হাজার হইলেও পুলাডার বিয়ার ফুল ফুটছে, কুড়াল দিয়া খাট কুপাইতে কুপাইতে ঢাকা গেছে। তাই কই 'শকুনের দোয়ায় গরু মরে না', সেরাম আমার আপনার দোয়ায় কারো দেশে যাওয়া বন্ধ হয় না।

আর আমি আর আপনে শেষবার ঢাকায় ছিলাম একসাথেই, দু:খজনক ভাবে আপনারে চিন্তাম না, চিনলে বহুত ফুর্তি করতে পারতাম আমরা। আর ঢাকা যাবার ব্যাপারে আমার অবস্থা কিছুটা আপনার মতই, আমিও সহস্রাধিক দিন দেশে যাই নাই, আমার বাপরে দেখি নাই, আমার প্রাণপ্রিয় ভাতিজাদের কোলে নেই নাই, আমার ভাতিজিরে চোখেই দেখি নাই :(। তবে আমি চাইলে দেশে যাইতে পারব, আপনার মত মাইন্কা চিপায় পইড়া নাই ইয়ে, মানে.... তারপরেও আপনার কষ্টটা অনুভব করতে পারলাম, কারণ প্যাঁচে আটকায় আছি চাইলেই, "আয় চল যাইগা" কইয়া ঢাকার পথ ধরতে পারতেছি না। মিয়া আপনার এই লেখায় ১ ভোট দেওনের কাম, মহা মন খারাপ করাইন্যা লেখা, তবে এই না যাইতে পারার কষ্ট খালি আমার একার না, এই লেখা পইড়া আরো অনেকে কষ্টে ছটফট করবে, আর তাদের কষ্ট দেইখা মনে মনে আমি বলব, যাক আমার মত খারাপ অবস্থা আরো অনেকে আছে, হিংসা করতে ব্যাপক ভালু পাই কিনা!

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা
তুমি তো কিছুদিন পরে আমারে আরো গভীর শোকের সাগরে ভাসাবে
সেইসব দিন কী করে পার করব, সেই ভেবে আমি এখনই অস্থির হয়ে আছি

ভাল থাকো বস, সকল সময়

অতিথি লেখক এর ছবি

অনিকেতদা, আপনার লেখাটা পড়ে চোখে পানি আসি আসি করছে। এত মন খারাপ করা একটা লেখা দেয়ার জন্যে আপনাকে কষে মাইনাস।।

দেশ থেকে আমিও নির্বাসিত প্রায় দেড় বছর যাবৎ। কবে যে দেশে যেতে পারবো নিজেই জানি না। মাঝে মাঝে মনে হয় কি হবে এত চিন্তা করে, যাই চলে দেশে, মায়ের হাতের বানানো আচার খেয়ে আসি। আমি নেই দেখে আমার মা এখন আর আচার বানায় না।

ইচ্ছে আছে পড়ালেখা শেষ করে দেশে ফিরে যাবার কিন্তু ভয় হয় মাঝে মাঝে। মনে হয় যে দেশকে কল্পনা করে ফিরতে চাই, সে দেশকে হয়তো গিয়ে পাবো না। প্রতিদিন সংবাদপত্র পড়ে ভয়টা আরো চেপে বসে কিন্তু তবুও দেশে ফিরতে চাই আমি। সময়ই বলে দিবে সেটা করতে পারবো কিনা।

পাগল মন

আবদুর রহমান প্রবাসী এর ছবি

বিদেশে থাকলে দেশের জন্যে প্রাণ কান্দে। মন খারাপ হয়, মন উতলা হয়। কিন্তু সেইটারে আহাজারির পর্যায়ে নিয়া যাওয়াটা হাস্যকর লাগে। বছরের পর বছর বিদেশে বইসা থাকি, যতো সুযোগসুবিধা পাই, ব্যাবহার করি, কিন্তু চান্স পাইলেই গাইল দিই বিদেশরে, বিদেশবাসরে অভিশাপ কইতেও দ্বিধা করি না। অবাক লাগে ভাইবা, আমরা তো কচি শিশু না, আমাদের হাত-পা বাইন্দা কেউ আমাদের বিদেশ পাঠায়া দ্যায় নাই এবং বিদেশেও আমরা দাসখত দিয়া পইড়া নাই যে দেশে যাওনের সুযোগ নাই। ভাল না লাগলে চইলা গেলেই হয়! কেউ বাধা দিবো না। সিরাত সেই সরল কথাটাই কইছে। আর তাই হাহাকারের আতিশয্যরে বিলাসিতা বইলা মনে হইল।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ভাই আব্দুর রহমান, আহাজারি করল কেডা? তয় কেউ আহাজারি কইরা যদি ভালো অনুভব করে, তাতে তো কোন সমস্যা দেখি না। এখানে কেউ বিদেশকে গালি দিয়েছে এমন কোন মন্তব্যও তো দেখলাম না। মাইঙ্কা চিপায় আটকায় গেলে তখন বুঝবেন, তার আগ পর্যন্ত দেশে যাইতে না পারার দুঃখবোধটারে 'আহাজারি আতিশহ্যের বিলাসিতা" মনে হবে।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনিকেত এর ছবি

আর তাই হাহাকারের আতিশয্যরে বিলাসিতা বইলা মনে হইল।

হুমম, তাই হবে হয়ত।
পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

ওডিন এর ছবি

অনিকেতদা, আপনার সাথে অচিরেই একদিন বংশালের আল রাজ্জাক রেস্টুরেন্টে বইসা পরোটা, শিককাবাব আর ফালুদা খাবার ইচ্ছা রাখি। আর আপনার কোলেস্টেরল লেভেল ঠিক থাকলে এর সাথে খাসির গেলাসিও থাকতে পারে।

আর আমার ইচ্ছাটিচ্ছার কিন্তু আবার কেমনে কেমনে জানি পূরণ হয়ে যাবার একটা টেন্ডেন্সি আছে।

তো দেখা হচ্ছে খুব তাড়াতাড়িই। হাসি
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ওরে দুষ্টু ওডিন, আল-রাজ্জাক এর ঘিলু আর পায়ার কথা মনে পড়তেই জিভ দিয়ে এমন পানি পড়তেছে যে গান গাইতে হৈব "এক সাগরও লুলের বিনিময়ে"

আর কোলস্টেরলের কথা কি কমু, ঐটা ডেলাওয়ারে মাপা যায় না, রক্ত নিয়া ফিলাডেলফিয়া পাঠাইতে হয়, এইটা নিয়া অনিকেতদাকে লিখতে অনুরোধ রেখে গেলাম
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা ---
অবশ্যই ওডিন, দেখা হচ্ছে খুব তাড়াতাড়িই
ভাল থেকো সকল সময়

শিশিরকণা [অতিথি] এর ছবি

বাসায় যাব (মন খারাপ )!!!!!

_প্রজাপতি এর ছবি

আপনার লেখাটা পড়ে সারা সকাল মন খারাপ ছিল। আমাদের অবস্থা হয়েছে "নদীর এপাড় কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাস" এর মত।

চলেন এরপর আমরা অন্য কোথাও ঘুরতে না গিয়ে একবারে দেশে যাবার প্ল্যান করি। অবশ্য সামারার যন্ত্রনায় আপনি এক ফ্লাইট কেনো এক এয়ারলাইন্সে টিকিট কাটবেন কিনা সন্দেহ আছে হাসি

-----------------------------------------------------------------------------
ছিন্ন পাতার সাজাই তরণী, একা একা করি খেলা ...

ছিন্ন পাতার সাজাই তরণী, একা একা করি খেলা ...

_প্রজাপতি এর ছবি

ছিন্ন পাতার সাজাই তরণী, একা একা করি খেলা ...

ওডিন লিখেছেন:
অনিকেতদা, আপনার সাথে অচিরেই একদিন বংশালের আল রাজ্জাক রেস্টুরেন্টে বইসা পরোটা, শিককাবাব আর ফালুদা খাবার ইচ্ছা রাখি। আর আপনার কোলেস্টেরল লেভেল ঠিক থাকলে এর সাথে খাসির গেলাসিও থাকতে পারে।

আর আমার ইচ্ছাটিচ্ছার কিন্তু আবার কেমনে কেমনে জানি পূরণ হয়ে যাবার একটা টেন্ডেন্সি আছে।

তো দেখা হচ্ছে খুব তাড়াতাড়িই। হাসি
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

ওডিন অনিকেতদার কোলেস্টেরল লেভেল কিন্তু সেইরকম, একেবারে ধরা ছোয়ার বাইরে।

ছিন্ন পাতার সাজাই তরণী, একা একা করি খেলা ...

শাহান এর ছবি

তারেক ভাই,

আসার আগে যে সত্যি সত্যি মাইর দেন নাই, এইজন্য কৃতজ্ঞতা হাসি ... তবে মাথা ঠান্ডা করতে আপনার যে বেশ কষ্ট হইসে এইটা বুঝতে পারছি যখন জানতে পারলাম ফেরার পথে ১০০ মাইল স্পীডে গাড়ি চালাইছেন খাইছে ..... আর আমারে দেইখা হিংসায়েন না, বছর কয়েক পরে আমিও একই মাইনকা চিপায় আটকাব মন খারাপ ... সহস্র দিনের প্যাঁচে গরু খুঁজতে আসা সবাই-ই কমবেশি পড়বে ...

আপনার সহস্র দিনের অপেক্ষা আর হয়ত খুব বেশিদিনের নাই। এখন থেকেই ফুর্তি করতে থাকেন, সামারে ভাল করে ঘুরে বেড়ান। সাইফ ভাই আর আপনে আমারে বদ্দোয়া দেয়া বাদ দিয়া বরং আর্জেন্টিনার জন্য দোয়া করেন, তাতে যদি কিছু লাভ হয়! হাসি

ভাল থাইকেন, কথা তো হবেই ...

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

পোস্ট নিয়ে কিছু বলবো না, আমি প্রায় সাতশো এগারো দিন পর দেশে গেসিলাম গত ডিসেম্বরে, দেশে যাইতে না পারলে কেমন লাগে বেশ ভালোই বুঝি ... আমি খুব একটা হোমসিক মানুষ না, কিন্তু আমারও এক পর্যায়ে গিয়ে হাঁপ ধরে গেসিলো ...

শাহানের ব্যপারে আমার একটা অবজার্ভেশন আছে ... শাহান হচ্ছে আমার দেখা একমাত্র মানুষ যাকে সবাই পছন্দ করে, একেবারে সবাই ... গত সাত বছরে আমি একটা মানুষ বের করতে পারি নাই যে শাহানের উপর কখনো রাগ করতে পারছে বা বিরক্ত হইসে বা সামান্য তর্কাতর্কিও করসে ... "এভরিবডি লাভস শাহান" দেঁতো হাসি
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

অতিথি লেখক এর ছবি

অনিদা আমি নির্বাসনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি,দোয়া রাইখেন য্যান মন শক্ত রাখতে পারি,তাও আবার উপরের এই ভাইয়াটার সাথে,ভেবেই কেমুন জানি লাগতিছে মন খারাপ

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

আপনার শাপমোচন ঘটুক।
ভালো থাকুন, অনিকেত'দা...

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

নীল নীল নির্বাসন গানটার কথাই শুধু মনে পড়লো!

অতিথি লেখক এর ছবি

মন খারাপ করা লেখা।
হয়তো সামনে আমাকে আপনাদের জায়গায় থাকতে হতে পারে।
আশা করি খুব শীঘ্রই আপনি যেন দেশে ফিরতে পারেন, অনিদা।
ভালো থাকবেন।

পলাশ রঞ্জন সান্যাল

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

মন খারাপ

তো বস, এখন এই সমস্যার সমাধান কী? আমি সিন্সিয়ারলি জিগাইতেছি, কারণ এই ধরনের বড় বিষয়ের পদ্ধতিগত ব্যাপারসাপার আমি একদমই জানি না।
মানে, প্রসেস-টা কী হবে এখন দেশে ফেরার জন্য?

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।