কী কখন বলে বাঁশি---

অনিকেত এর ছবি
লিখেছেন অনিকেত (তারিখ: শুক্র, ১০/০১/২০১৪ - ৯:৫৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলা আধুনিক গানের ইতিহাসে এক উপেক্ষিত ঈশ্বরের নাম জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়!

একই সাথে গীতিকার এবং সুরকার---পঞ্চাশের দশক আর ষাটের দশকের পর থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসা এমন সব সঙ্গীতস্রষ্টাদের খুব সম্ভবত শেষ দীপশিখাটির নাম জটিলেশ্বর। ১৯৩৪ এর ১৩ ডিসেম্বরে তাঁর জন্ম পশ্চিমবঙ্গের চন্দননগরে। আশি পেরিয়ে আসা এই নিভৃতচারী সঙ্গীতসাধক নিজের মনেই থাকতে হয়ত পছন্দ করেন। একটু পুরনো দিনের গানের সাথে যাদের যোগাযোগ আছে, তার সকলেই এই লোকটির নাম শুনে থাকবেন--অনেকে হয়ত গুনগুন করে গেয়ে দিতে পারবেন তাঁর লেখা, সুর করা দু'একটা গানের কলিও। কিন্তু তাঁর সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানেন এমন লোক আমি খুব বেশি পাইনি। গানের সমঝদার অনেকেই বলেছেন--লোকটা কী ভীষন প্রতিভাবান ছিল! কিন্তু আমার কেন জানি মনে হয়---জটিল বাবু যতটা প্রতিভা নিয়ে এসেছিলেন--তার সিকিভাগেরও মূল্যায়ন আমরা করতে পারিনি।

জটিলেশ্বরের প্রথম যে গানটা আমার শোনা হয়--সেইটা অনেকেরই শোনা এবং প্রিয় গান---

বঁধুয়া আমার চোখে জল এনেছে, হায়, বিনা কারণে
নীলাকাশ থেকে এ কী বাজ হেনেছে, হায়, বিনা কারণে---

গানটা শুনেই আমার প্রথম যে কথাটা মনে হয়েছিল সেটা হল, পুরনো দিনের গান শুনলে কথা ও সুরের মাঝে কেমন একটা 'পুরনো-পুরনো' গন্ধ থাকে----এঁর গানের মাঝে এই জিনিসটা নেই! কী ভীষন আধুনিক আর কী ভীষন সহজ তাঁর উচ্চারণ! ১৯৬৮ সালে বের হওয়া এই গানটি এখনো সুরে-কথায় কতটা সাম্প্রতিক, কতটা আবেদনময়--ভাবলে অবাক হতে হয়। এই এক গানই হয়ত যথেষ্ট ছিল তাঁকে তারকাখ্যাতি এনে দেবার জন্যে এবং খুব সম্ভবত বাংলা গানের জগতে অমরত্বটাও তিনি এই এক গানের জন্যেই দাবী করতে পারেন। কিন্তু জটিলেশ্বর আরো অসংখ্য গান রচনা করে গেছেন নিরলস ভাবে। আরো অনেক গান তৈরী করেছেন যা হয়ত ছাপিয়ে গেছে 'বঁধুয়া'-কেও!

জটিল বাবুর দ্বিতীয় গানটির সাথে পরিচয় হয়েছিল এক বৃষ্টির দিনে।
তখন কুমিল্লায় এক অখ্যাত গ্রামের এক কোনায় পড়ে আছি আমি। গ্রামের সরকারী এক কলেজে পড়াই। সেদিন সারাদিন ধরে বৃষ্টি পড়েছে। ছুটির দিন বলে বাসায় আটকা পড়ে আছি। আমরা চার শিক্ষক একটা হোস্টেলের মত জায়গায় থাকি। ইংরেজির শিক্ষক হায়দর ভাই ভীষন সুরসিক এবং সুরেলা গায়ক। দুপুরে খাবার পরে কি মনে করে জানি আমার ঘরে আসলেন। রবীন্দ্রনাথের শাপমোচন নৃত্যনাট্যটি তার পুরোটাই মুখস্থ এবং কন্ঠস্থ! এমনি এক বৃষ্টির দিনে এক বসাতে আমাকে পুরোটা গেয়ে শুনিয়ে দিয়েছিলেন। সেই থেকে এই লোকটাকে গুরু বলে মানি!

হায়দর ভাই ঘরে ঢুকে কোন কিছু না বলে জানালার পাশে চেয়ারটা টেনে নিয়ে বসলেন। হাতে সিগারেট জ্বলছে। চোখ তার বৃষ্টি পেরিয়ে দূরে কোথাও হারিয়ে গেছে---এমন সময় তিনি খুব হালকা করে গুনগুন করে উঠলেন একটা গান--ধীরে ধীরে সুরের আগুন জ্বলে উঠল চারপাশে--
হায়দর ভাইয়ের মন্দ্রিত কন্ঠে সেদিন বেজেছিল অনাদি কালের বিরহ বেদনা--

তোমার সঙ্গে দেখা না হলে, ভালবাসার দেশটা আমার দেখা হতো না
তুমি না হাত বাড়িয়ে দিলে, এমন একটি পথে চলা শেখা হতো না

গান শেষ হবার পরও আমি অনেকখন কথা বলতে পারিনি। অনেকখন পরে কেবল বলতে পেরেছিলাম, ' হায়দর ভাই, আরেক বার গাইবেন? প্লীজ?'

হায়দর ভাইয়ের কাছ থেকে তখন জানা হল যে এই অসামান্য গানটারও সুরকার ও রচয়িতা জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। হায়দার ভাইয়ের কাছে জটিল বাবুর আরো কিছু গান ছিল ক্যাসেটে ( হায়রে ক্যাসেটের দিন!!)। সেইখান থেকে শোনা হল আরো কিছু অসামান্য গান--

এ কোন সকাল রাতের চেয়েও অন্ধকার--

আমার স্বপন কিনতে পারে এমন আমীর কই--

আমি ফুলকে যেদিন---

'বঁধুয়া' আর 'ভালবাসার দেশ' গান দুটোর পরেই আমি এগিয়ে রাখব 'আমি ফুলকে যেদিন' গানটাকে। যদিও এই গানটার আদি গায়ক ছিলেন পিন্টু ভট্টাচার্য্য, কিন্তু আমার শোনা হয়েছিল পন্ডিত অজয় চক্রবর্ত্তীর গাওয়া ভার্সনটা। পন্ডিতজির গাওয়া ভার্সনের শুরুতে যে বেহালার পিসটা বেজেছে, সেটা এক মূহুর্তে আপনার মনটাকে বিবশ করে দেবে---আর তার পর পরই যখন অজয় সুর ধরবেন--

আমি ফুলকে যেদিন ধরে বেঁধে আমার সাজি ভরেছি
আমি সেদিন থেকে জেতা বাজি হেরেছি
আমি ঝড়কে যেদিন কেঁদে সেধে আমার মাঝি করেছি
আমি সেদিন থেকে জেতা বাজি হেরেছি

আপনার তখন এই অসাধারণ কম্পোজিশানের সামনে অসহায় আত্মসমর্পন করা ছাড়া কিছুই করার থাকবে না! কিঞ্চিৎ অপ্রাসঙ্গিক হলেও বলে ফেলি---এই গানের শুরুতে বেহালার যে পিসটা বেজেছে--সেইটা অনেকদিন আমার ফোনের রিং টোন হয়েছিল--যতবার কোন কল আসত--বিনা কারনেই মনটা ভাল হয়ে যেত!

কী অসামান্য গান, অথচ তার জন্মের কাহিনী শুনবেন? জটিলেশ্বর উবাচ--

হাজরা মোড় থেকে ট্রামে করে টালিগঞ্জ যাচ্ছি। ট্রামটা প্রায় খালি। আমার পেছনের সিটে বসেছিলেন দুই অবাঙালি। একজন আরেকজনকে বলছেন, আরে ইয়ার, ম্যায়নে জিতিবাজি হারি। ‘জিতিবাজি’ শব্দটি আমার কাছে দারুণ লাগল। লোকটি জেতাবাজিতে হেরে গেছে। ট্রামে বসেই গানের অর্ধেক তৈরি করে ফেললাম। ‘আমি ফুলকে যেদিন ধরে বেঁধে আমার সাজি ভরেছি, আমি সেদিন থেকে জেতাবাজি হেরেছি।’ বাড়িতে যেতে যেতে পুরো গানটিই তৈরি হয়ে গেল।

জটিলেশ্বর কে নিয়ে আমার মুগ্ধতা কমার নয় কোন দিন। তাঁকে নিয়ে আমার আফসোসটাও কমার নয় কোনদিন। আমার মতে তাঁর যোগ্য সম্মান আমরা আসলে দিতেই পারিনি। এই নিভৃতচারী সঙ্গীত সাধক আশি পেরিয়েছেন গত বছরে। আমি কায়মনোবাক্যে চাইব তাঁর দীর্ঘতর সুস্থ জীবন--সেই সাথে চাইব তাঁর অসামান্য সৃষ্টি গুলোর যথাযোগ্য সমাদর হোক ( সমাদর মানেই যে পুরষ্কার দিতে হবে এমন নয়---একজন সঙ্গীত স্রষ্টার যোগ্যতম পুরস্কার তাঁর ভক্ত শ্রোতা)। জটিলেশ্বরকে নিয়ে আর কোন লেখায় যেন ' বাংলা গানের উপেক্ষিত ঈশ্বর' কথাটা ব্যবহার না করতে হয়।

জটিলেশ্বরের একটি গান--রাগ মালকোষে নিবদ্ধ--- 'কী কখন বলে বাঁশি'-- আমার সাধ্যমত গাইবার চেষ্টা করেছি এইখানে। এই গানটির যদি কোন সফলতা থাকে তার সবটুকু জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের প্রাপ্য---সকল ব্যর্থতা আমি মাথা পেতে নিচ্ছি---

গানটির কথা এইখানে দিলামঃ

কী কখন বলে বাঁশি, রাধা না হলে কেউ বোঝে না
আঁধারে কী ধন আছে, চোখ না জ্বেলে কেউ বোঝে না

চেনা পথ কেন তবু পথ যে ভোলে, কেউ বোঝে না
ঠিকানা ঠিকই থাকে, মনই টলে, কেউ বোঝে না

নিশীথে কখন সে কোন সূর্য জ্বলে কেউ বোঝে না
দু'চোখে রেখে দু'চোখ--সময় গেলেও কেউ বোঝে না

কী সুখে থেকে লোকে দুঃখ ভোলে কেউ বোঝে না
দু'চোখে সাগর আছে, জল না ঢেলে কেউ বোঝে না

সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা---

বরাবরের মত সঙ্গীতায়োজন, কন্ঠঃ অনিকেত
কথা ও সুরঃ জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়


মন্তব্য

তানিম এহসান এর ছবি

চমৎকার লাগলো।

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ তানিম বস!
শুভেচ্ছা নিরন্তর---

অতিথি লেখক এর ছবি

হাততালি

গানটার সংগীতয়ান দারুন হয়েছে, আর আপনার গাওয়া গান আমার ভালোলাগার নাম, আপনার গাওয়া হুমায়ূন আজাদের

ভালোথেকে ফুল মিষ্টি বকুল

গানটি খুব সম্ভব আমার জীবনে সবচেয়ে বেশিবার শোনা গান। আপনাকেও নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

মাসুদ সজীব

অনিকেত এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ মাসুদ সজীব আপনার সহৃদয় মন্তব্যের জন্যে---
ভাল থাকুন সকল সময়ে সকলকে নিয়ে---

তারেক অণু এর ছবি
তারেক অণু এর ছবি

দারুণ, উনার সাথে দেখা হবার সম্ভাবনা ছিল কদিন আগেই, ফস্কে গেল! পরের বার অবশ্যই

অনিকেত এর ছবি

উনার সাথে দেখা হবার সম্ভাবনা ছিল কদিন আগেই, ফস্কে গেল! পরের বার অবশ্যই

---ইসস, আমরাও একটা চমৎকার সাক্ষাৎকার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হলাম! যাই হোক ত্রাকানু পরের বার যেন মিস না হয় বস---
অফুরান শুভেচ্ছা--

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুন লাগলো।আমিও জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায় এর একজন ক্ষুদ্র ভক্ত। তার অসাধারণ যে কম্পোজিশন টা আমার মোবাইল এ সেটা হলো 'আমার স্বপন কিনতে পারে'. যতবার শুনি ততবার এ ভালো লাগে। কখনো পুরনো মনে হয় না। তার দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

গবেষক

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ গবেষক ভাই---
"আমার স্বপন কিনতে পারে" গানটার শুধু কথা নয়, সুরটাও এত মর্মস্পর্শী-- কী বলব!
জটিলেশ্বর সহস্রকাল বেঁচে থাকুন---জন্ম দিয়ে যান এমন সব অসাধারণ গানের---এই কামনা

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আরি, প্রথম গানটা শুনেছি তো, বহুবার... অথচ জটিলেশ্বরের নাম জানতাম না
আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- অনিকেত ভাই হাততালি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ সাক্ষী সত্যানন্দ ভাই---
ভাল থাকুন সকল সময়ে---

অতিথি লেখক এর ছবি

এমনকি আমি এটাও জানতাম না যে 'কেউ বলে ফাল্গুন, কেউ বলে পলাশের মাস' এই গানটাও জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায় এর। এত দারুন কথা আর এত দারুন সুর। অসম্ভব সুন্দর একটা গান। এত ভালো লাগে আমার। তাকে আসলেই আমরা উপযুক্ত সম্মান দেখাতে পারিনি।তার গান 'বধুয়া আমার চোখে জল' এটা গেয়ে শ্রীকান্ত আচার্য বিখ্যাত হয়ে গেলেন। অথচ জটিলেশ্বর এর নাম শুনেন নি এরকমটাও হয়েছে এবং হচ্ছে । স্বীকার করতে লজ্জা নেই আমি নিজেও তার নাম জেনেছি খুব বেশি দিন হয়নি। এতটাই জনপ্রিয়তা বিমুখ একজন মানুষ আজকের যুগে খুব দুর্লভ।

গবেষক

অনিকেত এর ছবি

সেইটাই গবেষক---আমার চাওয়া, লোকটা বেঁচে থাকতে থাকতেই অন্তত আর কিছু না হোক আমাদের ভালোবাসাটুকু যেন জেনে যেতে পারেন---একজন শিল্পীর জীবনের সবচেয়ে বড় পুরস্কার বোধ করি এইটেই--
অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে---
শুভেচ্ছা নিরন্তর

নীলকমলিনী এর ছবি

আজকে কাজের পরে জটিলেশ্বরের গান শুনব. লেখাটি পড়ে স্কুল বয়েসী জীবনের কথা মনে হচ্ছে. তখন আকাশবাণী তে সকাল সাড়ে নটায় একেক দিন একেক শিল্পীর চারটে করে গান হত. সকালে সেই গান শুনে দৌড়াতে দৌড়াতে স্কুলে যেতাম. পঞ্চাশের দশক থেকে গানের স্বর্ণ যুগ শুরু হয়ে গেছে. তখন একসাথে কত ভালো ভালো গায়ক গায়িকা, গীতিকার সুরকার ছিলেন. আমাদের প্রিয় গায়ক কে নিয়ে সুন্দর লেখাটির জন্যে অনেক ধন্যবাদ. তোমার ভরাট গলার গান সবসময়ই ভালো লাগে.

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু নীলু দিইই---নতুন বছরের শুভেচ্ছা আপনার জন্যে--
শুভেচ্ছা নিরন্তর---

অতিথি লেখক এর ছবি

নতুন গান শুনতে চাই ।

আফরিন আহমেদ

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা ---মাত্রই তো নতুন গান দিলাম!
শুভ কামনা জানবেন!

আয়নামতি এর ছবি

কী অসামান্য গান, অথচ তাঁর জন্মের কাহিনী শুনবেন?

চন্দ্রবিন্দুর হ্যাপাটা তুলে দিন।

'কী কখন বলে বাঁশি' আগে শুনিনি ভাইয়া। তাই আপনি কতটা ভালু বা খ্রাপ গাইলেন বুঝতে পারছিনা খাইছে
ইশশ কেমন পঁচা আপনি! আমার পিয় গানটার কথাই বললেন না রেগে টং
'তোমাকে না নিয়ে যেন আসে না সকাল' এটা বুঝি চমৎকার সুন্দর না??
'ফুল কে যেদিন' আমি পণ্ডিত অজয়ের ভার্সনটা শুনেছি, অসাধারণ একটা গান!
জটিলেশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা আর আপনার জন্য উত্তম জাঝা!

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ আয়নামতি---চন্দ্রবিন্দু হাপিস করে দিলাম--
"তোমাকে না নিয়ে যেন" গানটার কথা উল্লেখ না করা আসলেই অপরাধ হয়েছে---এইটে আমারো খুব পছন্দের গান----
জটিলেশ্বরের খুরে নমস্কার!!
আর আপনার জন্য অফুরান শুভ কামনা----

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

গতবছর শিল্পী দেশে এসেছিলেন। পত্রিকায় দু'একটা সাক্ষাতকার ছাপা হয়েছিলো, তাই দেখে অনেককে জটিলেশ্বর নামটা নিয়ে হাসাহাসি করেছে দেখেছি। বধূঁয়া গানটি অনেকেই শ্রীকান্ত আচার্যর গান হিসেবে জানেন মন খারাপ

আপনার গানটা ভালো হয়েছে। আপনার কণ্ঠটা এতো বস কেন বস? দিয়ে দেন আমারে।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ বস---- লইজ্জা লাগে
অহর্নিশ শুভ কামনা

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

জটিলেশ্বর আমারও খুব প্রিয় একজন শিল্পী।
চলুক

অনিকেত এর ছবি

আমারো তাই---
অনেক ধন্যবাদ লেখাটা পড়ার জন্যে---

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

আমি ফুলকে যেদিন ধরে বেঁধে আমার সাজি ভরেছি
আমি সেদিন থেকে জেতা বাজি হেরেছি
আমি ঝড়কে যেদিন কেঁদে সেধে আমার মাঝি করেছি
আমি সেদিন থেকে জেতা বাজি হেরেছি

সচলায়তনের বহু পোস্ট-ই আমি মুগ্ধ হয়ে পড়ি এবং পড়ে মুগ্ধ হই। কিন্তু স্বভাবজাত কারণে খুব কমই মন্তব্য করি। এই গানটির সাথে আমার একটি ধুসর স্মৃতি জড়িয়ে আছে। তাই মন্তব্য না করে আর পারলাম কই?

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

অনিকেত এর ছবি

রোমেল চৌধুরী, আপনার মন্তব্য পেয়ে আমার খুব ভাল লেগেছে---
আর আমার পছন্দের গানটা আপনার স্মৃতিময়তার একটা অংশ---হোক সে ধুসর--- এটা জেনেও ভাল লাগল!
ভাল থাকুন সকল সময়ে, সকলকে নিয়ে---

এক লহমা এর ছবি

তোমার লেখাটা পড়েছিলাম আগেই কিন্তু গানটা শোনার অবসর মেলেনি আগে, তাই মন্তব্য জানাতে দেরী হয়ে গেল। তোমার সাথে পুরোই একমত যে জটিলেশ্বরের আরো সমাদর হওয়া উচিত ছিল। শ্রীকান্ত আচার্যদের আগের যুগের লোক যারা তাদের অর্থাৎ আমাদের সময়ে, কলকাতা বেতারকেন্দ্রের সম্প্রচারণার ফলে হতে পারে, এই মহান গীতিকার এবং সুরকারের নাম অনেক আলোচিত হত। পরের যুগে এসে সেটা হারিয়ে গেল। আমার পরিচিত গান সচেতন পরিবারগুলিতে সেইসময়ের মানুষেরা আজো তাঁর নাম শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় স্মরণ করে। কিন্তু আমাদের এই মনে করাগুলো চারপাশের জগতে কোন প্রতিফলন রাখে না। আর সেইখানেই তোমার কন্ঠ ও সংগীতায়োজনে ওনার এই গানটি সহযোগে তোমার সুন্দর পোস্টটি এক চমৎকার মন-কাড়া স্মরণ হয়ে উঠেছে।
আমি গানের কোন ব্যাকরণ জানি না। গান গাইতেও পারি না। তবে নিজের মত করে ভালবাসি। তোমার এই পোস্টের গান আমার যেমন লেগেছে সেটা হচ্ছে গানটা যত এগিয়েছে তত বেশী খুলেছে। হাসি
আর একটু বেশী করে শোনাবে, তোমার গান?

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অনিকেত এর ছবি

দাদা, অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আপনার মন্তব্য আমার জন্যে সকল সময়ে প্রেরনার উৎস। তাই সমসময়ে উন্মুখ অপেক্ষায় থাকি ---

আমার মনে হয় যারা এখন পুরনো সময়ের গান নতুন করে গাইছেন তাদের আরো একটু তৎপর হওয়া উচিত সঠিক জায়গায় শ্রদ্ধাটুকু পৌছে দেবার ব্যাপারে--কারণ পুরনোদের তৈরি করে দেয়া বুনিয়াদের উপর দাঁড়িয়েই তো আজ আমাদের উদ্ভাসন---

আবারো অনেক ধন্যবাদ এক লহমা দাদা--
ভাল থাকুন সকল সময়ে, সকলকে নিয়ে--

অতিথি লেখক এর ছবি

বঁধুয়া যে তাঁর গান সেটাই জানতাম না! কী লজ্জা!!! অথচ কত পছন্দের একটা গান। মন খারাপ

ধন্যবাদ দাদা... এবং দারুণ লাগল...

কড়িকাঠুরে

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকেও কড়িকাঠুরে বস--
শুভেচ্ছা নিরন্তর---

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

জটিলেশ্বরের গান খুব বেশী শুনিনি, এমনকি বঁধুয়া আমার চোখে জল এনেছে গানটিও শোনা শ্রীকান্তের কন্ঠে!

সার্চ দিয়ে দিয়ে অনেকগুলো গান শুনলাম। চমৎকার লাগলো। আপনাকে ধন্যবাদ এমন একজন শিল্পীর সাথে ভালোভাবে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য।

____________________________

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ প্রোফেসর সাহেব আপনার মন্তব্যের জন্যে--

শুভেচ্ছা অহর্নিশ--

তিথীডোর এর ছবি

আমার স্বপন কিনতে পারে এমন আমীর কই--- অতীব প্রিয়। এইটা আমার গানহাসি
ইয়ে, বঁধুয়া আমার চোখে জল এনেছে-- গানটা এতদিন শ্রীকান্তের বলেই জানতাম। [মাথা চুলকানোর ইমো]

পোস্টে (বিলম্বিত) পাঁচতারা। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ তিথী---
শিগগীরই তোর সাথে ভৌগলিক দূরত্ব কমে যাচ্ছে মনে হচ্ছে--
শুভ কামনা সব সময়েই তোর জন্যে তোলা রয়েছে রে--
ভাল থাকিস--

aalaapchari এর ছবি

তাঁর গলাটা বেশ ভারী । সাগর সেনের কথা মনে করিয়ে দেয়।
কেউ বলে ফাল্গুন কেউ বলে পলাশের মাস...
অসাধারণ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।