ফারুকী ও তার ভাই বেরাদার কেচ্ছা কাহিনী- ০

জাহামজেদ এর ছবি
লিখেছেন জাহামজেদ [অতিথি] (তারিখ: বুধ, ২৯/০৯/২০১০ - ৯:২৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto

ভাই বেরাদার শব্দযুগল কবে কখন কোথায় জন্ম হইছে আমার জানা নাই, তবে এই শব্দ যুগলের সঙ্গে আমি ব্যাপক ভাবে পরিচিত হইছি চ্যানেল ওয়ানের ছবিয়াল উৎসব শুরুর পর থাইকা। চ্যানেল ওয়ান অন এয়ারে আসার পর কর্তৃপক্ষ চিন্তা করলো, এই চ্যানেলে এমন কিছু দেখাতে হবে যাতে চ্যানেলটা একবারেই হিট মাইরা যায়। তাই তারা নিজেদের বিজ্ঞাপনের জন্য পণ্য হিসেবে হাতে নিল ফারুকীরে। মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী তখন সিনেমা নাটকের সুপার ডুপার ব্লকবাস্টার হিট পরিচালক, কাজ করেন যুগলবন্দী, আনিসুল হকের সঙ্গে জুটি বেঁধে ইতিমধ্যে তৈরি করে ফেলেছেন বেশ কিছু ফিকশন, কোনটা দর্শকপ্রিয়তা পাইছে, কোনটা দেইখা সমালোচকরা আবার বলছেন, বাহ্ ভালো বানাইছে তো। কোনটা দেইখা আবার কেউ বলছে, গেল গেল, আমাদের নাটক সিনেমা গেল। ততদিনে ফারুকী এফডিসির সিন্ডিকেট ভেঙ্গে বানাইয়া ফেলছেন ব্যাচলের নামের একটা সিনেমাও। কিন্তু এতকিছুর পরও বিজ্ঞাপনের জগতে ফারুকী তখনো ঢুকতেই পারেননি, অই সময়টাতে আফজাল হোসেন, আপন, অমিতাভ আর বেশ কজন ভারতীয় নির্মাতা দখল করে রেখেছিলেন বিজ্ঞাপন বাজারের পুরোটাই।

অন্যরা যখন শুরুর দিকে ভালো কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিজ্ঞাপন বানাইতে শুরু করলো, ফারুকী তখন পুরোদস্তুর নাট্য পরিচালক, তিনি টিভি নাটকরে তখন নাটকই কইতেন, পরবর্তীতে আবার এই টিভি নাটকরেই ফারুকী ভিডিও ফিল্ম নামক আলাদা ট্যাগ লাগাইয়া দিছেন।

ফারুকী অনেকগুলো ভালো কাজে দর্শক মাতিয়ে কম সময়েই টেলিভিশন জগতের জনপ্রিয় নির্মাতা, একুশে টেলিভিশনের পর্দায় একঝাঁক নতুনের সঙ্গে তিনিও একজন তরুণ তুর্কি, অনেকে যখন কাজ করতে আইসা যুদ্ধের মুখোমুখি, প্রত্যাবর্তন, ওয়েটিং রুম, আয়নামহল ইত্যাদি নাটক বানিয়ে ফারুকী তখন যুদ্ধের সেনাপতি।

প্রত্যাবর্তন, আয়নামহল, ওয়েটিং রুম- দর্শক সমালোচকের কাছে আলোচিত সমালোচিত নাটক, হুমায়ুন আহমেদ আর অরুণ বরুণের যা ইচ্ছা তা দেখাইলাম নাটক দেখে মানুষ যখন বিরক্ত হইয়া উঠছে তখন এইগুলাই ছিল ফারুকীর জন্য বাঙ্গালির ড্রয়িংরুমের এন্ট্রি পাস। ফারুকী ড্রয়িংরুমে ঢুকে খুব কম সময়েই হয়ে গেলেন পরিবারের একজন, ঘরের কর্তা রাতের খাবারের আগে সিএনএন বিবিসি রাইখা ফারুকীর নাটক দেখলেন, ছোট ছেলেটা ঘুমজড়ানো চোখে টিভির সামনে বসে থাকল, তখন মোবাইল ফোনে প্রেমের যুগ শুরু হয় নাই বলে পড়ার টেবিল ছেড়ে কলেজ পড়ুয়া মেয়েটাও এসেও বসলো বাবা, মা, ভাইয়ের পাশে, টিভিতে চলছে ফারুকীর নাটক, টেলিভিশনের এই ভালো কাজগুলাই ছিল আসলে ফারুকীর ইনভেস্টমেন্ট, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর মতো দীর্ঘমেয়াদে।

ভালো কাজে ফারুকী ছড়িয়েছেন বাঙ্গালির ড্রয়িংরুমে, নগর সভ্যতার অলিতে গলিতে। যেহেতু স্যাটলাইট চ্যানেল ছিল তার নির্মাণ প্রচারের মাধ্যম তাই তিনি শহরে নগরে বিস্তৃত হয়েছেন খুব কম সময়েই, অথচ কম টাকা পাওয়া যায় বলে বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে বরাবরই দুরত্ব বজায় রেখে চলেছেন, গ্রামে যাননি, মেঠোপথে শহুরে যুবকের পায়ে বৃষ্টির দিনে কাদা লাগতে পারে, শীতে হেমন্তে ধূলো। ফারুকী তাই শহুরে নির্মাতা, গ্রামের জীবনে অনভ্যস্থ যুবক, নির্মাণে গল্প আর কাহিনী বেছে নিলেন শহর সভ্যতার। শুরুতেই হাতে ট্রাম্পকার্ড পাইছিলেন, আনিসুল হক-ফারুকী তাই আজ জনপ্রিয় জুটি, ফারুকীর নাটক মানে বিশেষ পত্রিকার বিশেষ প্রচারণা, আলাদা আর্টিকেল, আলাদা স্টোরি, খ্যাতিমান সঙ্গী পাইয়া ফারুকী টেলিভিশন মিডিয়ার তিন তাসে বিজয়ী, শেষ দৃশ্যে তার হাতে টেক্কা কালার !

যেহেতু বিশেষ পত্রিকার বিশেষ মানুষ সঙ্গে আছেন তাই চিন্তা নাই, ফারুকী ভালো কাজে দৌড়াইতে লাগলেন, টেলিভিশন নাটকের উসাইন বোল্ড দৌড়াইতে দৌড়াইতে সবার আগে ঠিকই, তবে দৌড়াইতেছেন স্টেডিয়ামের বাইরে একা একা, অন্যরা সবাই স্টেডিয়ামে এক পথে এক ট্র্যাকে। ফারুকী বানাইয়া ফেললেন নিজের জন্য আলাদা ট্র্যাক, ভিন্ন পথ। টেলিভিশন নাটক নিয়া ফারুকীর শুরু হইলো বিশেষ এক্সপেরিমেন্ট, টেলিভিশন নাটক হইয়া গেল গিনিপিগ, শুরু হলো ফারুকীর নিজস্ব ভাষার প্রয়োগ। এক্ষেত্রে একটা জিনিষ খেয়াল করতেই হবে, বিশেষ পত্রিকা যখন ভাষা প্রয়োগ, প্রতিযোগ, বাংলা ভাষার সঠিক বানান, সিনেমার অশ্লীলতা নিয়া দেশব্যাপী তুমুল তোলপাড় শুরু করলো, তখন মিস্টার ফারুকী দৌড়ের মাঠ একা করে নিছেন, সবাই এক লাইনে, তিনি দৌড়াইতেছেন তার নিজস্ব লাইনে, টেলিভিশন নাটকে তার এই নিজস্ব ভাষা প্রয়োগে দর্শকদের কেউ আনিন্দিত হইলেন, সমালোচকরা বললেন, গেল গেল, যা আছিলো সবই গেল, দর্শক বিনোদনে পরিপূর্ণ হইয়া ফারুকীর নাটকে পুরোপুরি মজে গেলেন, তখন অনেকরেই আমি বলতে শুনছি, এতো দেখি টিভি নাটকে আমাদের ঘরে ব্যবহৃত ভাষা, নাটক না, মনে হইতাছে যা দেখাচ্ছে তা আমার চোখের সামনেই ঘটতেছে। কিন্তু জাত গেল জাত বলে যারা অন্য কিছুতে চিৎকার করে, বাঙ্গালি শিশু কিশোরদের যারা শুদ্ধ বানানের চর্চা শেখাইতেছে দিনের পর দিন, এই বিষয়ে তারাই চুপ, বিশেষ পত্রিকায় ফারুকীর নিজস্ব ভাষাজ্ঞানের বিরুদ্ধে কিছু না লিখে ছাপা হইতে লাগলো তারে নিয়া বিশেষ বিশেষ স্টোরি, থ্রি সি ফোর সি বক্স আইটেম, ঐ নতুনের কেতন ওড়ে !

ফারুকী জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠেন টেলিভিশন সিরিয়াল বানাতে এসে, ৫১ বর্তী দিয়ে তিনি শুরু করেন তার টেলিভিশন সাম্রাজ্য দখলের ম্যারাথন দৌড়। ৫১ বর্তী নাটকে টেলিভিশনের নিয়মিত অভিনেতা অভিনেত্রীর সঙ্গে ফারুকী পর্দায় নিয়ে আসেন একেবারে নতুন কিছু মানুষকে, এই নতুন মানুষগুলোই একটা সময়ে পেশাদার অভিনেতা অভিনেত্রীর থেকেও দর্শকদের বেশি আনন্দ দিতে শুরু করলো , দর্শক যখন বিনোদনে বিনোদনে পরিপূর্ণ ততদিনে ফারুকী দৌড়ের ট্র্যাক পুরোপুরি নিজের করে নিয়েছেন, বদলে গেছে তার নাটকের ভাষা, শাহবাগে সারাদিন শুয়ে বসে থাকা কবি মারজুক, নড়াইল থেকে ঢাকায় আসা কাঁচা পাকা দাঁড়ির কচি খন্দকার, শাহবাগে আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কবিতা কবিতা বলে গলা ফাটানো কবি রিফাত চৌধুরী, সাংবাদিক হাসান মাসুদ- ফারুকীর বদৌলতে ততদিনে টিভি নাটকের জনপ্রিয় মুখ। দর্শক আনন্দিত হইলো এসব অভিনেতাদের অভিনয় দেখে, মুগ্ধ হইলো, কেউ কেউ গলা ফাটাইয়া বললো, এরা তো অভিনয় করে না, বাস্তবে যা করে তা-ই টিভির পর্দায় চালাইয়া দেয়। এদেরই তো দরকার ছিলো, এরা এতদিন কই আছিলো !

৫১ বর্তী দিয়ে ফারুকী জনপ্রিয়, কেচ্ছা কাহিনী লিখছেন বিশেষ পত্রিকার বিশেষ মানুষ, পর্দায় শাহবাগে আজিজ মার্কেটে-জাতীয় জাদুঘরের সামনে শুয়ে বসে দিন কাটানো কবি মারজুকের সংলাপ, আরে ব্যাপার না, এইডা একটা ব্যাপার হইলো- মারজুকের যে ভাষা নিয়া আমরা ছবির হাটে-মোল্লার দোকানে-আজিজে বসে হাসাহাসি করতাম, তার হাঁটার স্টাইল দেইখা কইতাম, হালার পায়ে সমস্যা আছে- সেই মারজুকের সংলাপ, হাঁটার স্টাইল নাটকের প্রিয় দৃশ্য হইয়া গেল, অই সময়টাতে আমরা অবাক হইয়া দেখতাম, ফারুকীর উৎপাদিত টেলিভিশন নাটকের তার নিজস্ব মুখ সঙ্গী সাথীদের মধ্যে মারজুক সর্বপ্রথম স্টার হইয়া গেল, শাহবাগে দাঁড়াইয়া দাঁড়াইয়া মারজুক অটোগ্রাফ দেয়, মারজুকের অটোগ্রাফ হাতে তরুণী খুশিতে ঝিলিক মারে, কেউ একজন আইসা মারজুকরে জিগায়, ভাই কেমন আছেন, আপনার অভিনয় আমার খুব ভালো লাগে। মারজুক বলে উঠে, আরে অভিনয়, ব্যাপার না !

ফারুকীর ভাই বেরাদার কোম্পানির যাত্রা শুরু মূলত মারজুক জনপ্রিয় হয়ে যাওয়ার পর থাইকা, মারজুক তখন শাহবাগে তার সঙ্গে যারা থাকতো, অথবা পরিচিত কারো সঙ্গে দেখা হইলেই কইতো, আরে মিয়া এইডা একটা কথা হইলো, দেখা হয় নাই তো কি হইছে, তুমি তো আমাগো ভাই বেরাদার।

মারজুকের এই ভাই বেরাদার কথাটাই পরবর্তী সময়ে ফারুকীর জনপ্রিয়তার সঙ্গে পাল্লা দিয়া জনপ্রিয় হয়ে উঠে। এখান থেকেই পরবর্তীতে জন্ম হয় বিশাল এক ভাই বেরাদার বাহিনী।

(চলবে)


মন্তব্য

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

চালাইতে যখন চান, তখন চলুক। মাগার কতা কিন্তু কিছু আছে ... আগে দেইখা লই চলতে চলতে কই গিয়া থামে ... গাড়ি বেরেক করলে আসল ষ্টপেজে নামুমনি ... মাঝ রাস্তায় নামতে চাই না ... ...

===============================================
ভাষা হোক উন্মুক্ত

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

জাহামজেদ এর ছবি

গাড়ি বেরেক করলে আসল ষ্টপেজে নামুমনি

আপনিও ভাই বেরাদার নাকি ?

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

সচল জাহিদ এর ছবি

ব্যাপারনা, লগে আছি !!

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।

সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

হাসিব এর ছবি

বিশেষ মন্তব্য নেই। ভাষার বিষয়টা এসেছে। ভাইবেরাদর অর্থে গোষ্ঠিপরায়ণতার কথা এসেছে। কয়েকজনের হুট করে হিট হবার কথা এসেছে। এগুলো কীভাবে ফারুকী এন্ড কোংকে বাকি সবাই থেকে আলাদা (নেতি/ইতিবাচক যেকোন অর্থে) করলো সেটা অন্তত এই পর্বে পরিস্কার না।

________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি

জাহামজেদ এর ছবি

পরবর্তী পর্বে হয়তো বিষয়গুলো পরিস্কার হয়ে যাবে।

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

অতিথি লেখক এর ছবি

ফারুকীর কাজের সাথে আমি বিশেষ পরিচিত না। বিচ্ছিন্নভাবে এবং অপরিকল্পিতভাবে দু-এক খন্ড নাটকের দৃশ্য ছাড়া। তাই তার কাজ নিয়ে আমার আগ্রহ এবং অনাগ্রহ নেই। মারজুক আর রিফাত ভাইকে বহুকাল ধরে চিনি, মারজুক-আমি সমসাময়িক এবং একই এলাকার মানুষ আর রিফাত ভাই আমার অতি প্রিয় একজন মানুষ প্রয়াত রূদ্র'দার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তবে মারজুক আর রিফাত ভাই কমনলি একটা বিশেষ কাজে দক্ষ, এটা জানি। আমি এদের ঘনিষ্ঠ না হলেও এদেরকে আমার ভালোই লাগে। আর হাসান মাসুদ সাহেব আর্মি অফিসার ছিলেন আগে, এখন বিবিসিতে চাকরি করছেন। তাকে ব্যাক্তিগতভাবে চিনিনা।

তবে ফারূকীর কারনে আমি নিজে বিরাট এক সমস্যার মধ্যে আছি। বিষয়টা ফারুকী উদ্ধাবিত এবং প্রচলিত 'ঘরোয়া বাংলা' ভাষা নিয়ে। পারিবারিকভাবে আমরা বাড়িতে খুলনার ভাষায় কথা বলি। ঢাকায় অফিসিয়াল বা অপরিচিত সমাজে গেলে 'করেছি', গিয়েছি', এইসব বলার চেষ্টা করি। কিন্তু আমার ৫ বছরের রাফিন (এই অক্টোবরে ৬ হবে) কিভাবে যে এই আজব বাংলা রপ্ত করেছে, আমরা তা অনুসন্ধান করতে করতে রাফিন মোটামুটি 'ফারুকীয় বাংলা' ভালোভাবেই রপ্ত করে ফেলেছে। আমি ২ প্রতি মাস পর পর যখন দেশে যাই তখন দেখি রাফিন কি প্রাণান্ত চেষ্টা করছে আমার সাথে ওই বাংলা এড়িয়ে কথা বলতে কিন্তু পারছে না। কি এক অবস্থা বলেন ........... আমার এই বাংলা মোটেও ভালো লাগে না।

সিলেটে বসবাসরত অনেক বাঙালি পরিবার তাদের ভাষা বাংলা এটা বলেন না; তারা বলেন 'সিলহডি'। আল্লাহ জানেন কোনদিন আবার 'করসি', 'খাইসি' এই বাংলা 'ফারুকীঁয় বাংলা' নামে চালু না হয়ে যায়।

রাতঃস্মরণীয়

নুসদিন এর ছবি

এখন আর বিবিসিতে চাকরী করেন না। কয়েক মাস আগে ঘোষনা দিয়ে চাকরী ছেড়ে দিয়েছেন, সিরিয়াসলি নাটক করবেন বলে হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে, আমি এই খবর জানতাম না।

রাতঃস্মরণীয়

জাহামজেদ এর ছবি

রাফিনের কথা বাদ দেন, ইউনিভার্সিটি আর কলেজ পড়ুয়া ছেলে মেয়েদের কথ্য ভাষা এখন এটাই ! এই ভাষাটা টিনএজ পুলাপানের কাছে তুমুল জনপ্রিয় !

সিলেটে বসবাসরত অনেক বাঙালি পরিবার তাদের ভাষা বাংলা এটা বলেন না; তারা বলেন 'সিলহডি'

ভাই সিলেটের মানুষ সিলেটি কথা বলে ঠিক, কিন্তু নিজেদের ভাষাকে বাংলা না বলে সিলেটি বলে এই তথ্য আপনি পাইলেন কই ?

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রথম শুনেছিলাম লন্ডনে পড়তে যাওয়া ডাক্তার বন্ধুর কাছে। এক দোকানে কর্মরত একজনের বাঙালী পরিচয় পেয়ে বন্ধু আমার উচ্ছসিত হয়ে বাংলা বলা শুরু করলে তিনি গম্ভীর হয়ে উত্তর দিয়েছিলেন, আ ক্যান স্পিক ওনলি ইংলিশ এন্ড সিলহডিজ।

এরপর কেনিয়াতে আমার ডাইরেক্ট বস। জন্মসূত্রে স্কটিশ। প্রথম আলাপের পর তাকে যখন বললাম ভাই আপনি তো বেশ ভালোই বাংলা বলেন। বস আমার উত্তরে বললেন যে বাংলা কইতে পারলে তো ভাই বালোই হইতো কিন্তু বাংলা তো আমার হয়না। শুধু একটু সিলহডিই কইতে পারি তাও ভালোমতো না।

রাতঃস্মরণীয়

অতিথি লেখক এর ছবি

সিলেটে বসবাসরত অনেক বাঙালি পরিবার তাদের ভাষা বাংলা এটা বলেন না; তারা বলেন 'সিলহডি'

একটু কারেকশন দেই, কথাটা হবে ইউকেতে বসবাসরত, সিলেটে না। দুঃখিত টাইপিং ভূলের জন্যে।

রাতঃস্মরণীয়

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আরেকটা কারেকশন করেন। শব্দটা 'সিলহডি' না 'সিলটি' কিংবা 'সিলেটি'।

ইউকে বসবাসরত যে বাঙ্গালী পরিবারগুলোর কথা বলছেন তারা তিনপুরুষ থেকে ইউকেতে অভিবাসী। পূর্বপুরুষের সুত্র ধরে তারা হয়তো বাংলাদেশের নাগরিক এখনো কিন্তু মুলতঃ তারা বৃটিশ। বর্তমান প্রজন্ম এবং এর পরের দু এক প্রজন্মে বাংলাদেশের সাথে তাদের সম্পর্ক ঐ 'সিলটি' দিয়েই, এর বেশী কিছু নয়। দু এক প্রজন্ম পর এই সম্পর্ক ও ঘুচে টুচে যাবে। তার আগে পর্যন্ত ও এটি তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়।

অপরদিকে নাট্যনির্মাতা ফারুকীর নির্মান এবং ভাষারীতি এদেশের জাতীয় মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারিত- সুতরাং এর প্রভাব(সু কিংবা কু) অস্বীকার করার সুযোগ নেই।

তাই এ প্রসঙ্গে অভিবাসী সিলেটীদের 'সিলটী' উদাহরন এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক ঠেকলোনা।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ হাসান মোরশেদ ভাই, আমি 'সিলহডিজ' শব্দটা উনাদের উচ্চারন থেকে কপি করেছি। আমার মতো করে লিখলে অবশ্যই 'সিলেটি' লিখবো। তবে বিলেতে এই দলের সংখ্যা কিন্তু কম না। আমার পরিবারের কিছু সদস্য আছেন বৃটিশ, তাদের কাছ থেকে এবং বিলেতি-বাঙালি বন্ধুদের কাছ থেকে শুনেছি যে তারা এখনও পরিবারের মধ্যে বাংলা (বা তাদের ভাষায় সিলহডিজ) বলার সংস্কৃতি বজায় রেখেছেন। আমি বিষয়টাটে প্রাসঙ্গিক ধরেছি একটা ভিন্নধারার বাংলা উচ্চারণ, সেই পয়েন্ট অব ভিউ থেকে।

রাতঃস্মরণীয়

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

ভাই সিলেটের মানুষ সিলেটি কথা বলে ঠিক, কিন্তু নিজেদের ভাষাকে বাংলা না বলে সিলেটি বলে এই তথ্য আপনি পাইলেন কই ?

নিজের একটা অভিজ্ঞতা বলি ...

কানাডার ওয়াটারলু ইউনিভার্সিটির পাশে তুমুল জনপ্রিয় একটা রেস্টুরেন্ট আছে, আমি শুনছিলাম সেটা ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট, কিন্তু একদিন খুঁজে বের করে দেখি সাইনবোর্ডে লেখা "বাংলাদেশী কুইজিন" ... দেখেই খুশি হয়ে গেলাম ... তো কাউন্টারে তিরিশের আশেপাশে বয়স এক ছেলে অর্ডার নিচ্ছিলো, অর্ডার দিয়ে (ইংলিশেই) বললাম, আপনি কি বাংলাদেশি? ছেলে বললো, ইয়া ... বল্লাম, বাংলা পারেন? ছেলেটা হাসিমুখে বললো, না, সিলোটি ...

এখন বুঝেন দেঁতো হাসি
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

জাহামজেদ এর ছবি

হাসান মাসুদ বিবিসি থেকে অবসর নিয়েছেন ২০০৮ সালের জুলাই মাসে। এরপর থেকে উনি পেশাদার সাংবাদিক পরিচয় ছেড়ে পেশাদার অভিনেতা হয়ে উঠেছেন দিনে দিনে। বিবিসি ছাড়ার পর তার সাথে একদিন কাওরান বাজারে দেখা, চা খেতে খেতে দুজনের গল্প শুরু হলো, কথায় কথায় বললেন, সাংবাদিকতা করে অভিনয় করার জন্য সময় বের করতে পারি না, অন্যদিকে অভিনয় চালিয়ে যেতে চাই, অভিনয়টা এনজয় করতেছি, মানুষের কাছে তাড়াতাড়ি যাওয়া যায়। তাই চাকরিটাই ছেড়ে দিলাম !

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

নুসদিন এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি ভালো একটা সিরিজ শুরু করসেন। ফারুকীর একটা ঘটনা শেয়ার না করে পারলাম না। এক মেয়ে রিপোর্টার ফারুকীর ইন্টারভিউ নিতে গিয়েছিল। ফারুকী নাকি বলে, "চলেন, লং ড্রাইভে যাই, যেতে যেতে প্রশ্ন করেন (ইন্টারভিউটা আর হয়নি)" আর এক সপ্তাহ আগে দেখি বউ তিশাকে নিয়ে টিভিতে বলছে, "মিডিয়ার মানুষকে অনেক সংযত হতে হয়, আমাদের অনেক কিছু হাতছানি দিবে, কিন্তু আমাদের গা ভাসিয়ে দিলে হবে না।

জাহামজেদ এর ছবি

আপনার লেখায় তো কিছুটা আভাস পাইছিলাম। দেখি আমার ঝুলিতেও এমন কিছু গল্প আছে, পর্বে পর্বে (গুড়) হিসেবে কিছুটা দেয়া হবে।

লং ড্রাইভের জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

জাহামজেদ এর ছবি

আমাকেও একবার বাংলা ফিলোমর এক হিরোইন বলেছিল, চলেন গাড়িতে গল্প করতে করতে যাই। আমি গিয়েছিলাম, এবং ব্যাপক মজা পেয়েছিলাম। তার নিয়ে একটা স্টোরি করার দায়িত্ত ছিলো আমার উপরে, কথা প্রসঙ্গে আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনার লেখাপড়া কোথায় ? হিরোইন আমাকে প্রতিউত্তরে বলেছিলো, সিদ্ধেশ্বরী কলেজ থেকে এমবিএ করছি ! এই কথা শুনে তো আমি তাজ্জব ! সিদ্ধেশ্বরী কলেজে এমবিএ পড়ানো হয় কবে থেকে ! পরে এই বিষয়টা নিয়ে আমরা অফিসে খুব হাসাহাসি করতাম ।

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

তেনার বেরাদার ইফতেখার আহমেদ ফাহমির 'পেন্ডুলাম' নামের নাটক দেখে - সে নাটকে প্যারেন্টাল গাইডেন্সের বয়সসীমার প্রয়োজন বোধ করে- এই জাতীয় একটা লেখার প্রয়োজন বোধ করেছিলাম। সময়ে এবং খোঁজ-দা সার্চের পরিশ্রমে কুলোয়নি ...

ফারুকী সাহেবের ব্যাচেলার এবং চড়ুইভাতি দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম, আশান্বিতও। ভেবেছিলাম বাংলা নাটকে জীবনমুখী নাটকের কাল শুরু হয়েছে। সে ধারণা ভেঙ্গেছে। যখন বুঝেছি উনার মূল পুঁজি হলো ফ্লেক্সি লোডের দোকান, পাশের বাড়ির অতৃপ্ত ভাবী আর ভালোবাসা পাল্টানোর পথ দেখানো- তখন থেকে মুগ্ধতার বদলে বিবমিষা এসেছে। ...

আমি দীনহীন দর্শক। আব্বাস কিয়োরুস্তোমি যার ছবি দেখে প্রশংসা করেছেন বলে যিনি দাবি করেন, তার সম্পর্কে বলা আমার হয়তো সাজে না। নিজের মতের স্বাধীনতা নিয়ে কেবল বলি- শিল্প কখনো খালি জীবনের কুৎসিত/অন্ধকার দিকটিই দেখায় না, যেটা সর্বদা সেটিই দেখায়, সেটা শিল্প নয়...

_________________________________________

সেরিওজা

জাহামজেদ এর ছবি

চড়ুইভাতি একটা ভালো প্রোডাকশন ছিলো, এগুলো ছিলো টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে তার ইনভেস্টমেন্ট, পরবর্তীতে তার কাজে এমন যত্নের ছোঁয়া পাওয়া যায়নি, সময়ের সাথে তাল রেখে তিনি পুরোপুরি বাণিজ্যিক হয়ে গেছেন।

মূল পুঁজি হলো ফ্লেক্সি লোডের দোকান, পাশের বাড়ির অতৃপ্ত ভাবী আর ভালোবাসা পাল্টানোর পথ দেখানো

এগুলোই দিনে দিনে সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

চলুক ভাই। দেখি কই গিয়া থামে ......

ফারুক হাসান এর ছবি

মারজুক একজন কবি?
কত কী যে জানি না!

অতিথি লেখক এর ছবি

মারজুক একজন ব্যার্থ কবি। অনেক কবির ভিড়ে তার সুবিধা হয়নি এবং আজিজ তাকে আনুকূল্য দেয়নি। তবে অল্প কিছু গান সে লিখেছিলো যেগুলো জেমস গেয়েছিলো, সেগুলো কিন্তু হিট!

রাতঃস্মরণীয়

রোমেল চৌধুরী [অতিথি] এর ছবি

মারজুক একজন কবি?
কত কী যে জানি না!

"আগাছার মতো উঠিছে বাড়িয়া কবি ও কাব্য সমালোচক"

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

আমি কিন্তু কবিতা বুঝি না। মারজুকের অভিনয়ও পোষায় না। আগে জানতাম কবিতা লিখলেই কবি হওয়া যায়, পরে শুনলাম দেশে নাকি কাক আর কবির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, নাঁক উচু কবিরা দোয়েল পাখি আর বাকীরা সব কাক।

অ ট: সচল নয় এরকম কারও কাব্য প্রতিভা নিয়ে কে এ ধরনের মন্তব্য গ্রহনযোগ্য? "ফা-হাও উপন্যাসিক, কত কি যে জানা বাকি" - এ মন্তব্য কি গ্রহনযোগ্য?

ফারুক হাসান এর ছবি

অ ট উঃ ফা-হা এখন পর্যন্ত জীবনে কোনো উপন্যাস লিখে নাই। সবচেয়ে বড় কথা, সে দাবিও সে কোথায়ো করে নাই। মারজুক রাসেল যে একজন কবিও সেটা আমার জানা ছিল না। সেটাই আমি বলেছি। সচল কিংবা নিশ্চল, যে কোনো কবি এবং কবি দাবিদার সম্পর্কেই আমি জানতে আগ্রহী। আশা করি আমার এই আগ্রহ আপনার কাছে "গ্রহনযোগ্য"। এইবার 'কবি' মারজুক সম্পর্কে আমাকে আলোকিত করুন।

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

আগেই তো বল্লাম ভাই আমি কবিতা পড়িও না বুঝিও না। তবে এক্টা গুগল সার্চ করে পেলাম তার ৩ টা বই বের করেছে অনন্যা, সময় প্রকাশন আর অন্যপ্রকাশ। সেটাও আবার ২০০৫ সালের তথ্য। এর পরে আরও বের হতেও পারে।

ইভা রহমানের সমালোচনা করার সময় দেখা যায় প্রায় সব অডিও বের করে এটিএন মিউজিক, মারজুকের বেলায় সেটাও বলা যাচ্ছে না।

ফারুক হাসান এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ!

জাহামজেদ এর ছবি

গীতিকার, গায়ক, অভিনেতা, মডেল এবং ফারুকীর পরিচালনা সহকারী হিসেবেও ভদ্রলোক কাজ করেন !

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

এই পর্ব পড়ে মনে হচ্ছে, সিরিজটা খুব একটা প্রয়োজনীয়

মন খারাপ

অনুসন্ধিৎসু এর ছবি

সচলে যারা ব্লগান তাদের বেশির ভাগই উচ্চ শিক্ষিত এবং শুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চার প্রতি তাদের একপ্রকার অবসেশন আছে বলেই প্রতিয়মান হয় কাজেই ফারুকির কাজের প্রতি এক প্রকার নাক সিটকানো ভাব অনেক লেখায় মাঝে মাঝে ফুটে উঠে, কিন্তু বাশ্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের ভাষা সংস্কৃতি গড়াতে তার প্রভাব বলা যায় রাসপুটিনের মতো, তার দেখাদেখিতে বাকি নির্মাতাগণও ভাই ব্রাদার মার্কা নাটক ফিলমে বানাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে সমস্যা হচ্ছে লেবু বেশি চিপাচিপি করলে টক হয়ে যায় এটা সবার মনে থাকে না, ফারুকি এই ঝড়ও মনে হয় এক সময় থেমে যাবে।

অতিথি লেখক এর ছবি

কিন্তু বাশ্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের ভাষা সংস্কৃতি গড়াতে তার প্রভাব বলা যায় রাসপুটিনের মতো

তাই নাকি! ভালোই বলেছেন জনাব অনুসন্ধিৎসু। বাংলা ভাষার হাজার বছরের যে বিবর্তন, উৎকর্ষতা, আধুনিকতা; সব তাহলে ফারুকী ঝড়ে উড়ে যাবে! বাংলাদেশে দুটো পেশাজীবি গোষ্ঠী আছেন যাদের অনেকেই খাঁটি বাঙালির সন্তান হলেও এদের অধিকাংশই বাংলা কথা বলেন বিহারী এ্যাকসেন্টে। এরা হচ্ছেন সুইপার আর ডেকোরেটরের বাবুর্চি। আমি তাদের শ্রদ্ধা করি কিন্তু তাদের বাংলা বলার ষ্টাইলকে না। এদের বাংলা কিন্তু এদের সার্কেলেই সীমাবদ্ধ।

আপনি তাকে রাসপুটিনের সাথে তুলনা করাতে একটু বিষ্মিতই হলাম। মনে হচ্ছে রাসপুটিন সম্পর্কে ২০ বছর আগে যা পড়েছিলাম, তা অনেক পরিবর্তিত হয়েছে। ইতিহাসবিকৃতি অবশ্য হতেই পারে, হরহামেশা হচ্ছে।

সমস্যা হচ্ছে লেবু বেশি চিপাচিপি করলে টক হয়ে যায় এটা সবার মনে থাকে না, ফারুকি এই ঝড়ও মনে হয় এক সময় থেমে যাবে।

আপনি যথার্থ বলেছেন জনাব, ফারুকী ঝড়ও একসময় থেমে যাবে। তবে তার উদ্ধাবিত বাংলা শুধু রয়ে যাবে একটা 'ফাউল' সার্কেলের ভাষা হিসেবে এই সার্কেলকে সম্ভবত তেমন কেইউ শ্রদ্ধা করবে না। আমি তো না-ই।

রাতঃস্মরণীয়

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

তবে তার উদ্ধাবিত বাংলা শুধু রয়ে যাবে একটা 'ফাউল' সার্কেলের ভাষা হিসেবে এই সার্কেলকে সম্ভবত তেমন কেইউ শ্রদ্ধা করবে না। আমি তো না-ই।

হুমম আপনার জন্য।

ভাষা নিয়ে অনেকের অনেক মতামত আছে। ফারুকী আসার আগে নাটকের ভাষা কেন এতো রিজিড ছিলো? কোন কিছু রিজিড থাকলে এধরনের প্রতিক্রিয়াও অস্বাভাবিক নয়। ফারুকীর এবং তাদের ভাই-বেরাদারদের মেকিং এ অগনিত খুঁত বের করা যাবে। এও বলা যাবে নাই সিংহের বনে শিয়ালই রাজা। তবে ভাষা নিয়ে পিউরিটান চিন্তা ভাবনা কোন আঢুনিকতার লক্ষন নয় সেটাও ঢের বুঝতে পারি। কোন ক্যারেক্টার কি ভাবে কথা বলবে সেটার দিকে কারও মনোযোগ দেখা যাচ্ছে না। যেমন জয়া মাসউদ যখন তার নাটকে অভিনয় করে তার মুখের ভাষা কি আরোপিত মনে হয়? অথবা হাসান মাসুদ? অথবা তিশা? অথবা কচি খন্দকার? আর কিছু তরুন/কিশোরদের মুখের ভাষা ওরকমই, আপনার/আমার পছন্দ হোক বা না হোক।

তবে তার প্রথম কিছু সৃষ্টিতে যথেষ্ট যত্নের ছাপ ছিলো

প্রত্যাবর্তন, প্রতি চুনিয়া, আয়নামহল, ওয়েটিং রুম (পুরোনো ভার্সান- একুশে টিভির জন্য বানানো ছিলো), ব্যচেলরের কমেডি অবশ্যই একটা রিফ্রেশিং ধারা তৈরী করেছিলো। তার বেশ কিছু বিজ্ঞাপনও দৃষ্টি নন্দন, ইন্টারেস্টিং। ফারুকীকে বুঝতে চাইলে সমগ্রকে নিয়েই বোঝা উচিৎ।

জাহামজেদ এর ছবি

প্রত্যাবর্তন, প্রতি চুনিয়া, আয়নামহল, ওয়েটিং রুম

তার এই কাজগুলো অসম্ভব যত্ন নিয়ে করা। একথা আমি এই লেখাতে বলেছি, কিন্তু পরবর্তীতে ?

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

জাহামজেদ এর ছবি

বাকি নির্মাতা বলতে কি নতুনদের কথা বলছেন ?

লেবু বেশি চিপাচিপি করলে টক হয়ে যায় এটা সবার মনে থাকে না, ফারুকি এই ঝড়ও মনে হয় এক সময় থেমে যাবে

এখনই প্রায় থেমে যাচ্ছে। ফারুকী ঘরানার অনেকেই ( ভাই বেরাদার ) এখন মূলধারায় ফিরে এসেছেন।
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

কানা বাবা এর ছবি

চড়ুইভাতি দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম আমিও, কিন্তু ভাই-বেরাদারগো এখনকার অবস্হা দেইখা মিজাজটা এক্কেবারে বিলা হইয়া গেছে। যাউকগা, ব্যাপার না।

/----------------------------------------------------
ওইখানে আমিও আছি, যেইখানে সূর্য উদয়
প্রিয়দেশ, পাল্টে দেবো, তুমি আর আমি বোধহয়
কমরেড, তৈরি থেকো,গায়ে মাখো আলতা বরণ
আমি তুমি, আমি তুমি, এভাবেই লক্ষ চরণ।।

/----------------------------------------------------
ওইখানে আমিও আছি, যেইখানে সূর্য উদয়
প্রিয়দেশ, পাল্টে দেবো, তুমি আর আমি বোধহয়
কমরেড, তৈরি থেকো,গায়ে মাখো আলতা বরণ
আমি তুমি, আমি তুমি, এভাবেই লক্ষ চরণ।।

জাহামজেদ এর ছবি

ব্যাপার না, দিনে দিনে আরো বিলা হয়ে যাবে !

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

কামরুল হাসান রাঙা [অতিথি] এর ছবি

চালাতে চাইলে চালান, দেখা যাক কোন দিকে যান।

মফিজ এর ছবি

হুমম....ফারুকীর নাটকের ভাষার সমালোচনা করলেন কিনা, ঠিক বুঝলাম না। তবে আপনার লেখার ভাষা আর ফারুকীর নাটকের ভাষায় তো কোন পার্থক্য দেখলাম না। 'আপনি আচরি পরেরে শেখাও' কথাটা মনে থাকলেই হল।

জাহামজেদ এর ছবি

কথাটা মনে আছে, কিন্তু এভাবে লিখছি কারণ, উনার ফ্যানরা ( পাঙ্খা না) আবার এই ভাষাতে না লিখলে বুঝতে নাও পারে !

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

তুহিন [অতিথি] এর ছবি

যদিও আমি খুব বেশি নাটক দেখি না তবে ফারুকি তথা ভাই-বেরাদারগো দুই তিনটা নাটক বাদে কোন নাটক আমার কাছে ভাল লাগে নাই। আর আমার ব্যাচেলর সিনেমা বলে মনে হই না। এটাকে নাটক বা টেলিফ্লিম বলা যেতে পারে।

জাহামজেদ এর ছবি

ব্যাচেলর সিনেমা বলে মনে হই না। এটাকে নাটক বা টেলিফ্লিম বলা যেতে পারে

এটাকে চড়ুইভাতি'র সিক্যুয়েল হিসেবেই নির্মাণ করা হয়, তাই টেলিফিল্ম বললে খুব একটা অন্যায় হবে না। কিন্তু চড়ুইভাতি টেলিভিশনে ছিলো বলে টেলিফিল্ম, আর ব্যাচেলর থার্টি ফাইভে শুট করে সিনেমা হলে- মূলত পার্থক্য এখানেই !

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

ইশাণ [অতিথি] এর ছবি

একজন নির্মাতার সবকিছু যে মানোত্তীর্ণ হবে এটা আসলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়না।আর ফারুকীর অনেক কাজ ই হয়ত মানোত্তীর্ণ না। কিন্তু বাংলা ভাষার সংস্কারের দায় ভারটা খালি ফারুকীর/ভাই বেরাদারদের দিয়ে দিলে বেচারাদের উপর মনে হয় একটু বেশী অবিচার হয়ে যায়।

জাহামজেদ এর ছবি

কথাটা ঠিক, দায় যেমন তার আছে, তেমনি জুস জেনারেশনের কর্তাদেরও আছে। নিজেদের পণ্যের প্রচারে উনারা কি সহজেই আজাইরা প্যাঁচাল, পুরা ধাউর, ঝাউরামি, আজাইরা- এমন কিছু শব্দের জন্ম দিয়েছেন। পরবর্তীতে দেশের একটা জেনারেশনের কথ্য ভাষা এটাই হয়ে গিয়েছিলো !

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

তিথীডোর এর ছবি

টিভি দেখা হয়না সহজে...
'৫১বর্তী' থেকে হালের 'fnf', কোনটাই আধ পর্বের বেশি দেখিনি!

ফারুকী ও তার বেরাদারদের নাটকে পয়লা আটকে যাই ভাষায়|
'রিফাত_ কচি_ মারজুক' ত্রয়ী এবং অনান্য ক'জন কুশলী (!) শিল্পীদের বিশেষ অভিনয় (!) ধাঁচের কথা নাহয় বাদই দিলাম...

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

জাহামজেদ এর ছবি

রিফাত_ কচি_ মারজুক' ত্রয়ী এবং অনান্য ক'জন কুশলী (!) শিল্পীদের বিশেষ অভিনয় (!) ধাঁচের কথা নাহয় বাদই দিলাম...

উনাদের অভিনয় প্রতিভার কথা কমেন্টে যদি আসতো তাহলে হয়তো ভালোই হতো, অনেককিছুই জানা যেত।

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

অদ্রোহ এর ছবি

ফারুকীর শুরুর দিকের কাজে মোটামুটিভাবে যত্নের ছাপ ছিল, এটা মানতে হবে। প্রতিচুনিয়া, প্রত্যাবর্তন আর সে সময়ের তুমুল বিতর্কিত ওথেলো এবং ওথেলোর কথা আলাদাভাবে বলতেই হবে।

প্রথম পর্ব খুব একটা জমাটি হলোনা, পরেরটার অপেক্ষায়।

--------------------------------------------

আজি দুঃখের রাতে, সুখের স্রোতে ভাসাও তরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

জাহামজেদ এর ছবি

পরবর্তী পর্ব ভালো করার চেষ্টা করবো।

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

নীলকান্ত এর ছবি

শুধুমাত্র শিরোনামহীনের গান শুনে আমি ৫১ বর্তী দেখেছিলাম। এছাড়া আমি কোনকালেই ফারুকীর নাটক নিয়ে মাথা ঘামাই নাই।

ফারুকীর প্রধান অস্ত্র, সে শহরকেন্দ্রিক উৎকো ঝামেলাগুলোকে এমন এক রূপ দেয় যে মনে হয় এগুলো খুবই স্বাভাবিক এবং সবার সাথেই এটা হতে পারে। এবং এগুলো দেখানো হয় জীবনের মজা হিসেবে যেন এসব কাজকারবার ছাড়া আর উঠতি ছেলেমেয়েদের করবার কিছুই নেই। সাথে জুড়ে দেওয়া হয় একটু হাসির খোড়াক।

মফস্বলের উঠতিদের কাছে এসব হয়ে উঠেছে নগরজীবনের প্রতীক কারণ এগুলো এ যামানায় সুন্দরভাবে মানিয়ে যায়।একটি বিশেষ বয়সের এবং একটি বিশেষ শ্রেণীর মানুষকে লক্ষ্য করে বানানো এসব নাটক তাই হয়ে উঠে সুপার ডুপার হিট।

তাইতো আজ সকালে উঠে ছোট বোনকে কলেজে দিয়ে আসার পথে শুনি অভিভাবকদের আলাপের বিষয় হিন্দী সিরিয়াল সাথে ফারুকীর এসব নাটক, নাটকের অভিনেতা অভিনেত্রীদের নিয়ে সস্তা আলাপ, হাসি-ঠাট্টা। পড়াতে গেলে ছাত্রের মুখে শুনি "ফারুকীর নতুন সিনেমা দেখেছেন, বেশি জোশ না?"ফারুকীরাও খুশি, খ্যাতি যে তাদের হিন্দী সিরিয়ালের কাছাকাছি এনেছে!!!

অবশ্য ফারুকীরা ধোঁয়া তুলতেই পারে, তারা তরুণদের নিয়ে কাজ করছে!তাইতো তরুণ তরুণীরা আজ মনের সুখে এসব গিলছে তাদের মা, বাবা,ছোটভাই বোন সাথে নিয়ে। কি করবে বলুন, এসব যে দেখা চাই-ই চাই, না হলে সকালে উঠে ক্লাসে গিয়ে গল্প করবো কি নিয়ে? বাবা-মাই বা কি করবে?খবর আর সিরিয়ালের মাঝে এসে ছেলেমেয়ে কি দেখে চোখ কুঁচকে দেখতে হবে। ছোটগুলারও একই দশা, কার্টুনের মাঝখানে ভাই-বোন এসে জোর করে কেন রিমোর্ট কেড়ে নিচ্ছে, তাদেরও তো জানা চাই। কি সেই মধু?

জানি এখন যে দোষটা চাপাবো তা গুরুতর, কিন্তু সত্যি বলতে কি আমার মনে হয় এধরনের নাটকের সম্প্রচার এক অর্থে ইভটিজিংকে লাইসেন্স দিয়েছে এবং নারীদের সমস্যাগুলোকে এক প্রহসনে পরিণত করেছে। সবাই ধরে নিয়েছে সব জায়গায় এমন হয়, আমিও অফিসে আমার জুনিয়রের সাথে প্রেম প্রেম খেলা খেলবো। আমার বউ এর নিশ্চয়ই এসব ফেস করতে হয় আমাকে বলে না কেন?নিশ্চয় সে এগুলো মেনে নেয়।
ধোঁয়া তোলা যায়, যার মনে বিষ, তার উনিশেই কি আর বিশেই কি? মনে বিষ শুধুশুধু ঢুকে না, ঢোকানো হয়। আমাদের দেশে there is nothing better than a bad publicity এবং হয়ও তাই।

ইদানীংকালে মা-বাবার সাথে পোলাপানেরা উপরে উল্লেখিত ভাষায় কথা বলে। বলছি না ভাষাটা খারাপ, এমন নয় যে আমি কোনদিন বলিনি। এমনও নয় যে ফারুকী এটা নিজের হাতে বানিয়েছে। এই ভাষাটা আমরা আড্ডায়-পাড়া-মহল্লায় ব্যবহার করি। কিন্তু সবখানে নয়, সব অবস্থাতে নয় এবং সর্বোপরি সবার সাথে না। আমার ধারণা সব যুগেই সব দেশেই আড্ডার এক আলাদা ভাষা ছিল। আমাদেরও আছে। ফারুকীর কল্যাণে আমাদের এখন ঘর বাহির সব এক হয়ে গেছে।
যারা একটু উদার বা এসব ব্যাপারে উদাস মনের(!) তাদের অনেকেই ব্যপার না বলে উড়িয়ে দেন। কিন্তু ঐ যে...যারা উদাস না তাদের রাতঃস্মরণীয় ভাইয়ের মত ঝামেলায় পরতে হয়। একটা সময় হয়তো দেখা যাবে স্কুলের শিক্ষকের সাথেও ছেলেমেয়েরা এইভাবে কথা বলছে।
আরো অনেককিছু লেখা যায়, যদিও লাভের খাতায় শূন্য যোগ হবে। যার বানানোর সে বানাবে, যার দেখার সে দেখবে, আর যার ইমপ্লিমেন্ট করার সে করবেই।

কারো অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে থাকলে জানান দিয়েন এবং আগে থেকেই সেজন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।

প্রতিনিয়ত চিনছি নিজেকে


অলস সময়

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

কারও কারও মন্তব্য পাড়ছি আর ভাবছি আমাদের চিন্তাভাবনা এরকম কেন? বিদেশে বেশ কিছুদিন থাকার কারনে বিষয়গুলো বেশ চোখে পড়ছে। যেমন এখানে সংগীতে লেডি গাগাও আছে, ডাইডো ও আছে, বাখ-বিটোফেন-মোজার্টও আছে। টিভিতে ম্যাডমেনর মত সিরিয়াস ড্রামাও আছে, সুপারন্যচেরালের মত পপুলার হরর সিরিয়ালও আছে। সবকিছুতেই জঁনরা দেখে ম্যচিউরড কন্জিউমার রা। সে বিষয়টা দেশে এখনও গড়ে ওঠেনি। টিনদের/তরুনদের/থার্টি সামথিংদের/ফিফটি সামথিংদের জন্য একই রকম অডিও ভিসুয়াল প্রডাক্ট তৈরী হবে না। জেনারেশন গ্যাপ থাকবেই। আর শুধুমাত্র অডিও-ভিসুয়াল এন্টারটেইনমেন্ট প্রডাক্টের কাছে নৈতিকতা শিখতে চাওয়া একধরনের বালখিল্যতা। নতুন প্রজন্মের ম্যচিউরড পিতামাতারা এখন বলছে তারা সন্তানদের ভায়োলেন্ট ভিডিও গেম খেলতে দেয়/ নারীবাদী মা-ও কন্যাদের সুপারমডেল শো দেখতে দেয়। কেন দেয়?

সমালোচনা করুন যত খুশী। সাথে সাথে জেনারেশন গ্যাপও মেনে নিন। ডাইভার্সিটিও এম্ব্রেস করুন।

সবজান্তা এর ছবি

সব কয়টা মন্তব্য পড়তে পারি নি, তবে যেগুলি পড়েছি, তাতে মনে হলো ভাষার ব্যাপারে একটা আপত্তি কিংবা দ্বিধা অনেকের মধ্যেই কাজ করছে।

যদিও অপ্রয়োজনীয়, তবুও বলে রাখি, ফারুকী কিংবা তাঁর বন্ধু-বান্ধব বা সহ নির্মাতা কারো সাথেই আমার কোন প্রকার যোগাযোগ বা আলাপ নেই। আমি বেশ কিছুক্ষণ ধরেই আপনাদের অনেকের আপত্তির ব্যাপারটা নিয়ে ভাবলাম (এর আগেও ভাষার ব্যাপারে আপত্তি যখনই উঠেছে, তখনও ভেবেছি)।

আমি অত্যন্ত সরল চিত্তেই, শুধু মাত্র জানার আগ্রহেই একটা প্রশ্ন রাখতে চাই- নাটকের ভাষাকে কেন প্রমিত হতে হবে ? করসি/খাইসি এই ভাষাগুলি যদি দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করতে পারি, তবে নাটকে তা কোথায় আটকায় ? প্রায়ই অনেক বাবা মা-ই তাদের ছেলেমেয়েকে শুদ্ধ বাংলা শেখাতে চেষ্টা করেন, যদিও পারিপার্শ্বিকের কারণে খুব কমই তা টিকে থাকে। যাই হোক, আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকের মুখের ভাষা যদি করসি খাইসি হয়, তবে নাটকের চরিত্রের মুখে প্রমিত ভাষা কি একধরনের "অযথার্থ চিত্রায়ণ" হয় না ?

হয়তো প্রশ্ন উঠতে পারে লেখার ক্ষেত্রেও- আমি যে ভাষায় মন্তব্য করছি, তাও বহুলাংশে প্রমিতই। লেখার ক্ষেত্রেও আমার একই কথাই মনে হয়, কেউ করসি, খাইসি বললে মনে হয় না খুব একটা সমস্যা। ইন ফ্যাক্ট, অনেক ব্লগার সেভাবেই লিখেন।

আশা করছি, আমার প্রশ্নটা আমি বুঝাতে পেরেছি। উত্তরটা জানার ব্যাপারে কৌতুহল হচ্ছে।


অলমিতি বিস্তারেণ

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

ডেভিল'স অ্যাডভোকেসিটা ভালো লাগলো
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

সবজান্তা এর ছবি

বুঝলাম না। বিস্তারিত বলেন।


অলমিতি বিস্তারেণ

তিথীডোর এর ছবি

'ডেভিলস এডভোকেসি' স্ট্র্যাটেজিক ম্যানেজমেন্টের বহুল ব্যবহৃত একটা টার্ম! হুবহু তুলে দিচ্ছি--
"Devils advocacy requires the generation of both a plan and a critical analysis of the plan. One member of the decision -making group acts as the devil's advocate, bringing out all the reasons that might make the proposal unacceptable. In this way, decisionmakers can become aware of the possible perils of recommended courses of action."

সিমন ভাইয়ের ব্যাখা জানতে আগ্রহী.. হাসি ________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

শাহেনশাহ সিমন  [অতিথি] এর ছবি

ব্যাখ্যা উপরে দিয়েছি হাসি

অটঃ বাপরে! এ সংজ্ঞা মনে রাখলেন কিভাবে! আমি পারি না হাসি

শাহেনশাহ সিমন  [অতিথি] এর ছবি

বিস্তারিত'র কিছু নাই। গতরাতে যতদূর পর্যন্ত মন্তব্য পড়েছিলাম, তাতে করে এই মন্তব্যটি ভিন্নমত পোষন করেছিলো এ পোস্টে; যা হয়তো আলোচনাকে অন্যরকম করতে পারে বলে মনে হয়েছিলো। তাই একথা বলা হাসি

হাসান মোরশেদ এর ছবি

নাটকের ভাষাকে কেন প্রমিত হতে হবে ? করসি/খাইসি এই ভাষাগুলি যদি দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করতে পারি, তবে নাটকে তা কোথায় আটকায় ?

ভালো প্রশ্ন। এই প্রশ্নের সুত্রে গোটা বিষয়ে দুপয়সা যোগ করি।

প্রমিত ভাষার বদলে কথ্যভাষা নাটকে/সাহিত্যে ব্যবহার করলে সমস্যা কি? কোন সমস্যা নাই বরং জীবনঘনিষ্ঠ হলো। কিন্তু যদি উলটো প্রশ্ন উত্থাপিত হয় যে নির্দিষ্ট উচ্চারন রীতিকে আপনি কথ্যভাষা বলে দাবী করছেন( নাটকে ফারুকী, সাহিত্য আরো কেউ কেউ) সেটি কার কথ্য ভাষা? গোটা বাংলাদেশের মানুষের কথ্য ভাষা কি এই করসি/খাইসি? যদি হয় আমার কোন আপত্তি নাই।
কিন্তু আসলে তো তা নয়।
বাংলা ভাষার এই কথ্যরূপ ঢাকা ও এর পাশ্ববর্তী অঞ্চলের( অথবা অন্য কোন জেলার হতে পারে) মানুষের। ঘটনাক্রমে হয়তো এই মানুষেরা রাজধানীকেন্দ্রিক শিল্প ও সাহিত্যের অধূনানিয়ন্ত্রক। নিজেদের কথ্যভাষাটাকেই তারা জাতীয় কথ্যভাষা বলে চিন্তা করছেন( যেহেতু জাতীয় গনমাধ্যমে তারা এটি করছেন)। সিলেটের, চট্রগ্রামের, নোয়াখালীর মানুষের কথ্যভাষা তো এটি নয়! তাহলে কথ্যভাষা প্রতিষ্ঠার দাবীটি ধোপে টেকেনা।
পক্ষান্তরে এটি ও একপ্রকার ভাষিক নিয়ন্ত্রন হয়ে উঠছে। ঠিক এ কারনেই প্রমিত ভাষা নিরাপদ কারন এটি আমার সিলেটের ও না, চট্রগ্রামের ও না, আপনার ঢাকার ও না। এর মধ্যে একটা ইউনিফর্মিটি আছে যেখানে সকলের আত্নীকরন সম্ভব। জাতীয় গনমাধ্যম, সংস্কৃতি ও সাহিত্যের ভাষা তাই হওয়া উচিত যেখানে সকল মানুষ সহজবোধ করে।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

জাহামজেদ এর ছবি

করছি, খাইছি- এইগুলা সম্ভবত বৃহত্তর খুলনা অথবা নড়াইল গোপালগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষা। ফারুকী'র নিজস্ব অভিনেতাদের অনেকেই ঐ এলাকা থেকে উঠে আসা। পরবর্তী সময়ে তাই ফারুকীর নাটকে বিশেষ একটি অঞ্চলের ভাষাকেই জাতীয়করণের চেষ্টা করা হয়েছে। এই ভাষা প্রচলনের শুরু হয় মারজুক ও কচি খন্দকারের অভিনেতা হয়ে উঠার পর থেকেই। মারজুকের বাড়ি গোপালগঞ্জ, কচি খন্দকারের বাড়ি কুষ্টিয়াতে হলেও তিনি জীবনের বেশিরভাগ সময় নড়াইলেই কাটিয়েছেন।

আমরা কিন্তু ঢাকায় যখন চলাফেরা করি, আড্ডা মারি তখন কিন্তু করছি খাইছি এই ভাষাতে কথা বলি না, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের লোকও বলে না। দেশের একটা বড় অংশ যদি এই ভাষায় কথা না বলে তাহলে কি করে ভাষাটা আমাদের কথ্য ভাষা হলো। প্রমিত ভাষা সবার জন্য সহজবোধ্য, তাই ফারুকীর নাটকের ভাষাকে আমাদের কথ্য ভাষা না বলে দেশের একটি বিশেষ অঞ্চলের মানুষের কথ্য ভাষা বলা উচিৎ।

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

হাসান মোরশেদ এর ছবি

সে ক্ষেত্রে এগুলো নড়াইল গোলাপগঞ্জের স্থানীয় স্যাটেলাইট চ্যানেলে চালানোই ভালো যেমন সিলেটের চ্যানেলে সিলেটি নাটক।
জাতীয় মাধ্যমে কোন আঞ্চলিক হেজিমোনি চলা ঠিকনা।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

খেকশিয়াল এর ছবি

মোরশেদ ভাই, আঞ্চলিক হেজিমোনি কেন বলছেন? আমরা কি ব্যাপারটা একটু পজিটিভলি দেখতে পারি না?

এখানে অবশ্য ভাষার বোধগম্যতার পাশাপাশি ঠিকঠাকভাবে উপস্থাপনের ব্যাপারটাও চলে আসে। আর ব্যাপারটা কাজ করে হয়তো নাট্যকার, নির্মাতাদের উপর, যে তারা কি করে সবার সামনে একটা অঞ্চলের নাটককে উপস্থাপন করবেন, আঞ্চলিক ভাষাটাকে উপস্থাপন করবেন যাতে সবাই বুঝতে পারে, উপভোগ করতে পারে। (এখানে যেহেতু ফারুকীর নাটকের আঞ্চলিকতা প্রসঙ্গে কথাগুলো এসেছে তাই বলি, আমার মতে ফারুকীর এই উপস্থাপনটা ঠিকমত হয় না)

প্রমিত ভাষায় তো নাটক হচ্ছেই, আর এটাই মূলধারা। পাশাপাশি বিভিন্ন অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষাতেও আরো নাটক হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। আমার যেমন নিজস্ব একটা ভাললাগা, আগ্রহ কাজ করে বিভিন্ন আঞ্চলিকতার প্রতি, আঞ্চলিক ভাষার প্রতি। যেমন মাঝে মাঝে কিছু রাজশাহীর আঞ্চলিক ভাষায় নাটক দেখায়, আমার ভাল লাগে। এরকম সিলেটের, চাটগাঁর আঞ্চলিক ভাষাতেও নাটক দেখতে চাই। যেটুকু বুঝবো না, ওটুকু হয়তো আমারই ব্যর্থতা হবে, তবে তা সামনে কাটিয়ে নিতে আমার কোন আপত্তি নেই।

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

হাসান মোরশেদ এর ছবি

এটা ভালো নিঃসন্দেহে। জাতীয় মাধ্যমে সব অঞ্চলের কথ্যভাষায় অনুষ্ঠান হোক। সিলেটের, চট্রগ্রামের, বরিশালের, নোয়াখালীর, পাহাড়ের মানুষের নিজস্ব ভাষায়।
কিন্তু একটা নির্দিষ্ট প্যাটার্নের কথ্যরীতিই যখন মুখ্য হয়ে উঠে প্রচারনায়, সেটিই মুলধারা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবার ইঙ্গিত পাওয়া যায় তখন বিষয়টা হেজিমনি পর্যায়ের। এ ক্ষেত্রে তাই হচ্ছে- ফারুকীর নাটকে কিংবা কারো কারো সাহিত্যে কথ্যভাষার দোহাইয়ে যে ভাষা নির্মান হচ্ছে সেটি আঞ্চলিক ভাষা হিসেবে নয় বরং কেউ কেউ এগিয়ে গিয়ে বলছেন 'ইহা পূর্ববাংলার কথ্যরীতি'- যেনো পূর্ববাংলা খালি তাদের ভাই-বেরাদর আর চ্যালাচামুন্ডার মুখের কথাতেই। আমরা যারা ঐ রীতিতে বাংলা বলিনা তারা পশ্চিম-উত্তর-দক্ষিন থেকে উড়ে এসেছি।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

খেকশিয়াল এর ছবি

কিন্তু একটা নির্দিষ্ট প্যাটার্নের কথ্যরীতিই যখন মুখ্য হয়ে উঠে প্রচারনায়, সেটিই মুলধারা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবার ইঙ্গিত পাওয়া যায় তখন বিষয়টা হেজিমনি পর্যায়ের।

হ, ঠিক

এ ক্ষেত্রে তাই হচ্ছে- ফারুকীর নাটকে কিংবা কারো কারো সাহিত্যে কথ্যভাষার দোহাইয়ে যে ভাষা নির্মান হচ্ছে সেটি আঞ্চলিক ভাষা হিসেবে নয় বরং কেউ কেউ এগিয়ে গিয়ে বলছেন 'ইহা পূর্ববাংলার কথ্যরীতি'- যেনো পূর্ববাংলা খালি তাদের ভাই-বেরাদর আর চ্যালাচামুন্ডার মুখের কথাতেই। আমরা যারা ঐ রীতিতে বাংলা বলিনা তারা পশ্চিম-উত্তর-দক্ষিন থেকে উড়ে এসেছি।

কইলেই হইলো নাকি! পাগল-ছাগলে মনে মনে মনকলা খায়, খাইতে দেন।

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

অতিথি লেখক এর ছবি

তাহলে কি সালাউদ্দিন লাভলুর নাটক শুধুমাত্র ভবদহে দেখাতে হবে? আপনার এই মন্তব্যে একমত না।

আমরা বাসায় কোনদিন ভাত খেয়েছি, নাস্তা করেছি বলি নাই। সেইসময় শুধু বিটিভি দেখা যাইত আর ছাদের উপরে এলুমিনিয়ামের ঢাকনা ঝুলাইলে মাঝে মাঝে দূরদর্শনের ঝাপসা ঝিরঝির। এই করছি/খাইছি ভাষার জন্য বাইরের লোকের সামনে (মেহমান) মায়ের হাতে মাইরও খাইছি আবার ছুট-বুট পরা আন্কেল-আন্টিরদের বলতে শুনছি "বস্তির ভাষা" কোথ্থেকে শিখেছো??

ফারুকির দিন শেষ? এখন ফেসবুকে পোলাপান স্ট্যাটাস ঝুলায় থার্ড পারশন-সাকস!!

হুমায়ুন আহমেদ এর সময়ে একদল বলত "গেল, সব গেল" এখন ফারুকির সময়ও তাই। এর পরেও হয়ত যদু মিয়া হিট হবে, তখনও এই দলের লোকজন বলবে "গেল সব গেল"।

আসলে এখনকার জেনারেশন খুব অল্পতেই কোন কিছুর প্রতি আগ্রহ হারায়ে ফেলে। এই জেনারেশন গ্যাপটা বুঝতে হবে ঐ দলটাকে।

ফারুকি গ্রুপের দোষের শেষ নাই, মানি। কিন্তু একটা বিশাল পজেটিভ দিক আছে। বড় একটা গ্রুপকে বাংলাদেশী চ্যানেলে আটকাইয়া রাখা। আমি মনে করি প্রাইমটাইমে হিন্দি ঘষেটি সিরিয়াল না দেইখা ফারুকির "গু" দেখা ভাল!!

বাঙ্গাল

অতিথি লেখক এর ছবি

করছি, খাইছি- এইগুলা সম্ভবত বৃহত্তর খুলনা অথবা নড়াইল গোপালগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষা।

জাহামজেদ ভাই, ফর ইউর ইনফো, এগুলো উল্লেখিত এলাকারে আঞ্চলিক ভাষা না। বৃহত্তর খুলনায় বিভিন্ন ধরনের আঞ্চলিক বাংলার প্রচলন আছে তবে এই ভাষাগুলো তার মধ্যে পড়ে না। বাস্তবে আমি দেখিনা বাংলাদেশের কোনও এলাকার আঞ্চলিক ভাষাই এই করসি, খাইসি'র সাথে মেলে।

রাতঃস্মরণীয়

জাহামজেদ এর ছবি

মন্তব্যে সম্ভবত শব্দটা লেখা আছে। এমন বলার কারণ, মারজুক-কচি ছাড়াও ছবিয়ালে আর যারা আছেন নড়াইল-গোপালগঞ্জ-ঝিনাইদহ এলাকার তাদেরকে এই ভাষাতেই কথা বলতে শুনেছি। নাটকে পুরোপুরি এটাকে ব্যবহার করা হয় না, এটার সাথে ঢাকার কিছু কথ্য ভাষা, ধামরাই সাভারের কিছু কথ্য ভাষা, কিছু প্রমিত ভাষার বিকৃতি করে উদ্ভট একটা ভাষা তৈরি করা হয়েছে। এই উদ্ভট ভাষাটা সবচেয়ে ভালো বলতে পারে ফাহমি !

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

সবজান্তা এর ছবি

ধন্যবাদ। ভালো উত্তর, কিছু বিষয় জানা হলো। তবে পুরাপুরি একমত হতে পারছি না।

ফারুকীর দল যে শুধু "করসি খাইসি"কেই প্রোমোট করছেন, তা কিন্তু না। তাঁদের নাটকে প্রায়শই এক ভদ্রলোক থাকেন, নামটা ভুলে গেছি (বাংলালিংকের বিখ্যাত বিজ্ঞাপন ছিলো তাঁর, কতো কথা বলে রে)- সেই ভদ্রলোক কিন্তু বেশ নিপুণভাবেই একটি আঞ্চলিক ভাষায় (কোন অঞ্চলের ভাষা সেটি ? সম্ভবত ময়মনসিংহ কিংবা উত্তরাঞ্চলের অন্য কোন আঞ্চলিক রূপ) কথা বলে যান। এছাড়া একটি চরিত্রের কথা মনে করতে পারি, ফাহমির হাউজফুল নাটকের, খুবই সাবলীলভাবে নোয়াখালির ভাষায় কথা বলতো।

প্রশ্ন উঠতে পারে, সামগ্রিকভাবে করসি খাইসির তুলনায় এই অন্য অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব ঠিক কতোটা ? চিন্তা করে দেখলাম প্রায় সব নাটকই কিন্তু ঢাকা কেন্দ্রিক অর্থাৎ কেন্দ্রীয় চরিত্ররা সব রাজধানীতেই থাকে- সেক্ষেত্রে করসি খাইসি-ই কি বেশি বাস্তবিক না ? নাটকগুলি কেন দেশের অন্যান্য স্থানকে প্রাধান্য দিয়েও হচ্ছে না, সেটা নিয়ে চিন্তা করা যেতে পারে- কিন্তু ঢাকা কেন্দ্রিক এই নাটকে করেছি খেয়েছি কি আসলে যথার্থ? আমাদের আশে পাশের ঠিক কতজন মানুষ এইভাবে কথা বলে? মোদ্দা কথা, সার্বজনীন করার স্বার্থে কি আমরা নাটকের চরিত্রের সংলাপে এই ধরনের কৃত্রিমতা আরোপ করতে পারি কি না, সেটাই ভাবছিলাম।


অলমিতি বিস্তারেণ

জাহামজেদ এর ছবি

ঐ ভদ্রলোকের নাম সোহেল খান। তিনি ধামরাই সাভারের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন।

ফাহমির হাউজফুল নাটকের, খুবই সাবলীলভাবে নোয়াখালির ভাষায় কথা বলতো

তার নাম জিল্লু। নোয়াখালীর ভাষায় কথা বলা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। আপনি মনে হয় হাউজফুল নাটকটা দেখেছেন, একটু কি বলবেন জিল্লু নামের অভিনেতার করা কোনো দৃশ্যটাকে আপনার অভিনয় বলে নে হয়েছে আর এখনো সেটা আপনার মনে ধরে আছে ?

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

সবজান্তা এর ছবি

আলোচনাটা ভাষা নিয়ে, অভিনয় নিয়ে কিন্তু না। জিল্লুর অভিনয় তাই ভালো না খারাপ, তা কিন্তু এই আলোচনায় অপ্রাসংগিক।


অলমিতি বিস্তারেণ

সাইদ এর ছবি

অঃটঃ বানানটা কি সার্বজনীন না সর্বজনীন? এই বানানটা আমার প্রায়ই গোলমাল হয়।
ধন্যবাদ

গৌতম এর ছবি

শব্দটা সর্বজনীন।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

অতিথি লেখক এর ছবি

হাসান মোরশেদ ভাইয়ের সাথে সামান্য একটু যোগ করি। আমার বিশ্বাস আমার মতো সকলেই নিজের নিজের আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে গর্বিত। কিন্তু গণমাধ্যমের ভাষা হওয়া উচিত সবার কাছে বোধ্য এবং গ্রহনযোগ্য। ধরেন যখন দুজন চাটগাইয়া নিজেদের মধ্যে কথা বলেন, আমি তাদের কথায় ব্যবহৃত ইংরেজি ও আরবী শব্দগুলোই বুঝতে পারি। হয়তো আমরা দুজন খুলনার লোক কথা বললে চট্টগ্রামের মানুষেরও বুঝতে একই অবস্থা হবে। তাই গণমাধ্যমের ভাষা এক্সপেরিমেন্টাল বা ভিন্নধারার না হওয়াই বাঞ্ছনীয়।

ব্যাক্তিগতভাবে আমি খুলনার ভাষায় কথা বলি আর কিছুটা বরিশালের ভাষা বলতে পারি। তবে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরির কারনে অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষাগুলো শোনার সূযোগ হয়েছে। আমার মনে পড়েনা যে আমি বাংলাদেশের কোথ্থাও শুনেছি করসি, খাইসি, ইত্যাদি। এটা একান্তই ভাই-বেরাদর ঘরানার ভাষা।

রাতঃস্মরণীয়

তিথীডোর এর ছবি

সবজান্তা'দা,
নাটকে প্রমিত ভাষার ব্যবহার কেন 'অযথার্থ চিত্রায়ন' নয়, হাসান মোরশেদ ভাই দারুণ গুছিয়ে বলে দিয়েছেন!

আর ব্লগিং এর ক্ষেত্রেও যদি বলা হয়, কথ্য /প্রমিত দুই ভাষাতেই লেখা যেতেই পারে.. তবে পোস্ট বা মন্তব্যে লেখি /লিখসির পরিবর্তে লিখি /লিখেছি পড়তেই অন্তত আমি স্বাছন্দ্যবোধ করি! হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

জাহামজেদ এর ছবি

এক অর্থে ইভটিজিংকে লাইসেন্স দিয়েছে

সহমত।

আমি যে শহরে বড় হয়েছি সেখানে পাড়ার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে ছেলেরা মেয়েদেরকে টিজ করছে কখনো এমন দেখিনি। ঢাকা জীবনেও আমি যেখানে থাকি সেখানে এমন দৃশ্য খুব একটা চোখে পড়েনি। কিন্তু ফারুকীর নাটক মানেই, রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে ছেলেরা মেয়েদেরকে টিজ করছে, গভঅর রাতে মোবাইলে বলছে, তোমার সাথে কথা না বললে আমার চার্জ হয় না, তুমি আমার চার্জার !

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

শাহেনশাহ সিমন  [অতিথি] এর ছবি

তোমার সাথে কথা না বললে আমার চার্জ হয় না, তুমি আমার চার্জার !

হো হো হো

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি লেখাটা পড়ে বুঝতে পারছি না, আসলে লেখক ঠিক কি বোঝাতে চেয়েছেন। এটা হতে পারে আমার ব্যর্থতা।

এটা অনস্বীকার্য যে ফারুকীর শুরুর দিকের কাজগুলো বেশ ভালো। তখন টিভিতে যেরকম নাটক হচ্ছিল তার তুলনায় বেশ ভালো কিন্তু তার এখনকার কাজ অথবা তার ভাই-বেরাদার গোষ্ঠির কাজ সে তুলনায় যাচ্ছেতাই। তবুও আমি বলবো এখনো যে কয়েকটা ভালো নাটক হয় সেটা কিন্তু এই গ্রুপের দ্বারাই হয়। অন্যান্যদের নাটকতো আরো খারাপ, অনেকেতো হিন্দী সিরিয়ালের অনুকরণে বানায়।

আমার ঘোরতর সন্দেহ আছে যারা মন্তব্য করেছেন তাদের মধ্যে কতজন বাংলা নাটক নিয়মিত দেখেন। আমি নিজে আগে দেখতাম, মাঝখানে কিছুদিন বন্ধ ছিল, এবার দেশে গিয়ে আবার দেখেছি কিছুদিন।

নাটকের ভাষা নিয়ে দেখলাম অনেকেরই আপত্তি। আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা, সবকিছুই পুরান ঢাকায়। সেজন্য আমি ছোটবেলা থেকেই পুরান ঢাকার কথ্য ভাষায় কথা বলি তাতে তো কোন ক্ষতি হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। সারাদিন হিন্দী সিনেমা দেখলে কোন সমস্যা নেই, কথ্য ভাষায় কথা বললে সমস্যা?!

তার উদ্ধাবিত বাংলা শুধু রয়ে যাবে একটা 'ফাউল' সার্কেলের ভাষা হিসেবে এই সার্কেলকে সম্ভবত তেমন কেইউ শ্রদ্ধা করবে না। আমি তো না-ই।

ভাই/বোন রাতঃস্মরণীয়, আপনার একথাটা মানতে পারলাম না কেননা আমার নিজেকে "ফাউল" সার্কেলের বলে মনে হয় না।

পাগল মন

জাহামজেদ এর ছবি

লেখার নিচে লেখা আছে, (চলবে) একটু খেয়াল কইরা...

এখনো যে কয়েকটা ভালো নাটক হয় সেটা কিন্তু এই গ্রুপের দ্বারাই হয়। অন্যান্যদের নাটকতো আরো খারাপ, অনেকেতো হিন্দী সিরিয়ালের অনুকরণে বানায়।

সেই ভালো নাটকগুলোর নাম কি দয়া করে জানাবেন ?
আমিও তো দীর্ঘদিন এনাদের নাটক দেখলাম, ঘুরেফিরে তো যেই লাউ সেই কদু ! প্রেম, ডেটিং, রেস্টুরেন্টে বসে ইটিং, বন্ধুর দ্বারা বন্ধুকে ফিটিং, মোবাইলে রাত জেগে কথা বলা, এর বাইরে নতুন আর কি উনারা দেখাচ্ছেন ?

হিন্দি অনুকরণে তো এক চয়নিকাই নাটক বানান। আর যারা বানান তারা নিয়মিত না। তবে ভাই বেরাদাররা হলিউড আর বলিউডের কয়টা ছবি হুবহু নকল করেন, এমনকি চিত্রনাট্য পরিবর্তন করার প্রয়োজনবোধও করেন না- তার হিসেব কিন্তু আছে। যেহেতু একটা সিরিজ শুরু করছি, ধীরে ধীরে সবকিছুই আসবে। তাই হিন্দি ছবি নকলের অন্য কারো থেকে ভাই বেরাদাররা কিন্তু কম না!

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা, সবকিছুই পুরান ঢাকায়। সেজন্য আমি ছোটবেলা থেকেই পুরান ঢাকার কথ্য ভাষায় কথা বলি তাতে তো কোন ক্ষতি হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। সারাদিন হিন্দী সিনেমা দেখলে কোন সমস্যা নেই, কথ্য ভাষায় কথা বললে সমস্যা?!

আমার জন্ম, বেড়ে উঠা কোনকিছুই পুরান/নয়া ঢাকায় নয়। সেজন্য আমি কোনদিনই পুরান ঢাকার কথ্যভাষায় কথা বলিনা।
আপনি আপনার কথ্যভাষায় কথা বললে/সারাদিন ধরে শুনতে থাকলে আমার কোন সমস্যা নেই। কিন্তু জাতীয় বিনোদন মাধ্যমে আপনার কথ্য ভাষা আমাকে কেনো শুনতে হবে, যখন আপনার আর আমার কথ্য ভাষা এক নয়?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

অতিথি লেখক এর ছবি

জাতীয় বিনোদন মাধ্যমে কথ্যভাষাতো আর আমি চালু করিনি, তাই আপনার এপ্রশ্নের উত্তর আমি দিতে পারলাম না। চোখ টিপি

তবে এটা বলতে পারি যে, ফারুকী জনপ্রিয় হয়েছে দেখেইতো ভাষাটা টিভিতে স্থায়ীরূপ পাচ্ছে, তাই না?

পাগল মন

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আপনি কথ্যভাষার পক্ষে যুক্তি দিচ্ছিলেন। ব্যক্তির ভাষা ব্যবহার আর জাতীয় মাধ্যমের ভাষা ব্যবহার আলাদা জিনিস- বুঝা দরকার আছে।

আপনি জনপ্রিয়তাকে ঔচিত্যের মানদন্ড হিসেবে বিবেচনা করছেন।এটি ভুল।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাই/বোন রাতঃস্মরণীয়, আপনার একথাটা মানতে পারলাম না কেননা আমার নিজেকে "ফাউল" সার্কেলের বলে মনে হয় না।

ভাই পাগল মন, আপনি ফাউল সার্কেলের মেম্বার হতে চাইলেও তা হতে পারছেন না। কারন আপনি নিজেই বলেছেন-

আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা, সবকিছুই পুরান ঢাকায়। সেজন্য আমি ছোটবেলা থেকেই পুরান ঢাকার কথ্য ভাষায় কথা বলি তাতে তো কোন ক্ষতি হয়েছে বলে আমার মনে হয় না।

আপনি যেহেতু পুরান ঢাকার কথ্যভাষা চর্চাকারী, আপনার ফাউল সার্কেলে প্রবেশাধিকার আপাতত নেই। আমি ফাউল সার্কেল বলেছি ভাই-বেরাদার ঘরানার বাংলার ধারক-বাহক-চর্চাকারীদের সার্কেলকে। আমি এই সার্কেলের কোনও মেম্বারকে ফাউল বলছিনা।

রাতঃস্মরণীয়

হিমু এর ছবি

কিছুদিন পর দেশে কুড়িটার মতো টিভি চ্যানেল চালু হয়ে যেতে পারে। যা বুঝলাম, দেশে টিভি চ্যানেলের প্রোডাক্ট তিনটি, সংবাদ, টকশো আর নাটক। কুড়িটা চ্যানেলের জন্যে প্রত্যেকদিন কুড়িটা নাটক যদি নির্মাণ করতে হয়, সেগুলোর মান বজায় রাখা দুঃসাধ্য ব্যাপার হবে। গু-মুত সবই তখন তশতরীতে করে পরিবেশন করা হবে। সেদিন আর "ভাঙনের শব্দ শুনি" কিংবা "একদিন হঠাৎ" এর নাম শোনা যাবে না, ফারুকির বেলাল্লা "চড়ুইভাতি" আর "একান্নবর্তী" হয়ে যাবে ক্লাসিক। কারণ ফারুকির চেয়েও ফাউল নাটক বানানোর মতো লোকের অভাব নাই, তার ভাইবেরাদাররা সম্ভবত এই কাজটি করতেই মাঠে নেমেছে।

এই কুড়িটা টিভি চ্যানেল একটা সিণ্ডিকেশনে আসুক। তারা একটা নাটক নির্বাচন প্যানেল তৈরি করে কয়েকটা ভালো নাটক নিজেরা সিণ্ডিকেশন করে দেখাক। এতে করে দর্শকের রিমোটের ব্যাটারির আয়ু বাড়বে, নাটকের মানও বাড়বে, নাটকের পেছনে প্রযোজনার মান উন্নত হবে।

মোস্তফা সরোয়ার ফারুকিকে ফাউল নাট্যনির্মাতা বা বিখাউজ সিনেমানির্মাতা হিসেবে না দেখে একজন প্রতিভাবান ও গুণবান টিভিবিজ্ঞাপননির্মাতা হিসেবে দেখতে পছন্দ করি। বিজ্ঞাপন তিনি বেশ ভালো বানান। শুধু বিরক্ত লাগে যখন কোথাও কিছু বলার সুযোগ পেলে আব্বাস কিয়োরোস্তামিকে টেনে এনে নিজে বাংলার আব্বাস সাজার চেষ্টা করেন।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

জাহামজেদ এর ছবি

থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার দেখে নাকি আব্বাস কিয়োরোস্তামি অনেক প্রশংসা করেছেন ! গড়াগড়ি দিয়া হাসি

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

হাসান মোরশেদ এর ছবি

উপরে পলাশ রঞ্জন সান্যালের মন্তব্যে সহমত জানিয়ে একটু যোগ করিঃ-
ব্যক্তিক, পারিবারিক, সামাজিক জীবনে অস্থিরতা, অন্ধকার সবসময়ই ছিলো এখনো আছে। অজু করে সাহিত্য রচনা করা যায়না যেমন ঠিক তেমনি রগরগে দিকগুলোকে আরো রগড়ে উপস্থাপন করার মধ্যে ও কোন কৃতিত্ব নেই।
কোন এক বিপুল জনপ্রিয় হিন্দী সিনেমায় দেখছিলাম শাহরুখ খান ছাত্র আর সুস্মিতা সেন ম্যাডাম।ছাত্র ক্লাশ রুমে বসে ম্যাডামকে নিয়ে কল্পনায় নাচছেন, ম্যাডামের নাভী নিম্নে শাড়ি ইত্যাদি।
এই দৃশ্যে মধ্যবয়সে এসে আমার কোন বিকার হবেনা কিন্তু একটা কিশোর তার ক্লাশ ম্যাডামকে নিয়ে অনুরূপ যৌন ফ্যান্টাসীতে ভোগার প্রনোদনা পাবে।

ফারুকীর ব্যাচেলর এ ম্যাডামের সাথে ছাত্রের প্রেম, লং ড্রাইভ-এগুলো একেবারে নেই, হচ্ছেনা তা হয়তো নয় কিন্তু পরিবারের সবার সাথে শেয়ার করার মতো অতোটা সহজলভ্য হয়নি নিশ্চয়। শোভনতার প্রশ্ন না হয় নাই তুললাম। ইভটিজিং করা, অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়াকে যদি নায়কোচিত অনুসঙ্গ হিসেবে দেখানো হয় কেউ না কেউ যে এতে প্রভাবিত হবেনা- সেটা নিশ্চিত করে বলা যায়না। ছোটবেলার টারজান কিংবা কৈশোরে ম্যাকগাইভারের ফ্যান্টাসীর স্বাক্ষী আমরা নিজেরাই।

আমার মন্তব্য রক্ষনশীল মনে হতে পারে, কিন্তু এই রক্ষনশীলতা, শ্লীলতা-অশ্লীলতার সীমানা সব সমাজেই আছে। আমাদের প্রাচ্যের সমাজেও যেমন, পাশ্চাত্যে আছে।
এই সীমানা নিয়ন্ত্রনের জন্য পাশ্চাত্য সমাজে আইন এবং তার প্রয়োগ আছে। আপনি একজন পূর্নবয়স্ক নারীর সাথে যা খুশী করতে পারেন যতোক্ষন তার সম্মতি আছে কিন্তু সে বিরক্ত হবে এমন মৌখিক প্রশংসা ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং এই শাস্তি আপনি নগদে পেয়ে যাবেন।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

হিমু এর ছবি

একটা ব্যাপার যোগ করি।

একটা অলীক পৃথিবী ক্রমশ তৈরি হয়ে যাচ্ছে, যে পৃথিবীর চর্চাগুলো খুব দ্রুত বাস্তবের পৃথিবীতে চলে আসে। এই অলীক পৃথিবীতে স্মার্ট যুবক প্রেম করে বিছানায় নিতে চাইছে বান্ধবী/প্রতিবেশিনী/বন্ধুপত্নীকে। স্মার্ট তরুণী যৌনতার টোপ দেখিয়ে সুবিধা আদায় করছে একাধিক লুলপুরুষ প্রেমার্থীকে। সুরুচিবান পিতা নিজের সন্তানদের হাতে বকরি হচ্ছেন আর আবুল হচ্ছেন। মা তারস্বরে ঝগড়া করছেন মেয়ের সাথে।

এগুলো আমাদের সমাজে যে ঘটে না, এমনটা নয়। কিন্তু সেগুলো ক'জন দেখে বা জানে? কিংবা তাতে কতটুকু গ্ল্যামার থাকে? নির্জন ফ্ল্যাটে বান্ধবীকে নিয়ে গিয়ে সঙ্গম করার ব্যাপারটা ফ্যান্টাসিতে থাকতে পারে, কিন্তু একে গ্ল্যামারের গুড় মাখিয়ে কি কেউ লক্ষজনের কাছে পরিবেশন করে? বড়জোর দুই চারজন বন্ধুর আড্ডায় সীমাবদ্ধ থাকে ব্যাপারটা। কিন্তু এই একই জিনিস যখন নাটকে ওঠে, যখন জনপ্রিয় কয়েকটি মুখ এই চর্চাটাকে ইমিউলেট করে, এটা চট করে একটা আরাধ্য ব্যাপার হয়ে যায়। দূর মফস্বলের কিশোর ভাবে, বড় শহরে এমনটাই ঘটে হরহামেশা, আমাকেও হতে হবে তাহাদের মত। এই যে অলীক পৃথিবীর চর্চাকে আত্মস্থ করার মরিয়া উন্মাদনা, এটার প্রমাণ মেলে যখন প্রেমিক-প্রেমিকা নিজেদের সঙ্গমদৃশ্য ভিডিও করা শুরু করে কোনো অলীক পর্নোগ্রাফিক জগতকে অভীষ্ট ধরে।

অডিও-ভিজ্যুয়াল এনটারটেইনমেন্ট দায়িত্ববিবর্জিত নয়। ফারুকির নাটকসিনেমার দায় ফারুকির একারও নয়, প্রচারক চ্যানেল আর দর্শকেরও।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

হাসান মোরশেদ এর ছবি

একদম ঠিক।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

নীলকান্ত এর ছবি

এরচেয়ে ভালোভাবে ব্যাখ্যাটা হতে পারতো না। হাসি
চলুক
প্রতিনিয়ত চিনছি নিজেকে


অলস সময়

জাহামজেদ এর ছবি

এখানে চ্যানেলওয়ালাদের দায় সবচেয়ে বেশি।

চ্যানেলগুলো যদি ফারুকীর এসব প্রোডাকশনে আগ্রহ না দেখায় তাহলে ফারুকী অবশ্যই তার আগের স্টাইলে ফিরে যেত। কিন্তু তারা এটা না করে আরেকটি বিশাল বাহিনীকে ঠেলে দিলো একই স্টাইলে নাটক নির্মাণে। যার ফলে পরবর্তী সময়ে নতুন যে ছেলেরা টেলিভিশন মিডিয়াতে কাজ করতে এলো তাদের অনেকেই প্রমিত ভাষার বদলে বেছে নিল ফারুকীর ভাষাটাকেই। এখন যে ছেলে হয়তো ভালো একটি নাটক অথবা সিনেমা বানানোর যোগ্যতা রাখে চ্যানেলওয়ালাদের চাহিদা মেটাতে গিয়ে সেও স্রোতে গা ভাসালো। তার নাটকে প্রমিত বাংলার বদলে উঠে এলো খাইছি মামা, লাগবে মামা এমন শব্দ!

চ্যানেলওয়ালারা একটা নতুন ছেলেকে ফারুকী ভাষায় নাটক নির্মাণে অনুৎসাহিত করেন না, আর তারা উৎসাহ দেন বলেই আমরা কথ্য ভাষায় ভাই বেরাদারের কারো নাটকে কেউ একজনের পত্রিকায় ছাপা হওয়া গল্প চুরি হতে দেখি, হিন্দি সিনেমা ভেজা ফ্রাইয়ের বাংলা ভার্সন দেখি...ফার্স্টডেটে ঘরের ভিতরে বন্দি মেয়েটার ময়ুরী মার্কা জিহবা চাটার দৃশ্য টিভি ক্যামেরার পিপহোলে দেখি !

চ্যানেলওয়ালাদের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনদাতাদেরও দায় আছে। এখানে নিজের নাটকে বিজ্ঞাপনের কাটতি বাড়াতে ফারুকীর নিজস্ব একটা পন্থা আছে। পরবর্তী পোস্টগুলোতে অনেককিছুই আসবে।

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

দূর মফস্বলের কিশোর ভাবে, বড় শহরে এমনটাই ঘটে হরহামেশা, আমাকেও হতে হবে তাহাদের মত

সেটার দায়িত্ব নির্মাতাদের দিতে আমি রাজী নই। একই যুক্তি উপন্যাস লেখার সময়ও গুনবান লেখকরাও মানে না। টার্গেট অডিয়েন্স যদি মফস্বলের ছেলে না হয় সেটা নিয়ে সাইকোলজিকাল এনালিস্টের সার্টিফিকেট নিয়ে ফিকশন নির্মাতাদের ফিকশন নির্মান করতে হলে সেটা খুবই দু:খজনক হবে।

ফারুকির নাটকসিনেমার দায় ফারুকির একারও নয়, প্রচারক চ্যানেল আর দর্শকেরও।

সেটা বুঝতে পারলাম না। বল্গ/উপন্যাস লেখকের কোন লেখার দায় যদি ব্লগ/উপন্যাস প্রকাশক/পাঠক না নেয় তাহলে প্রচারক চ্যানেলের/দর্শকের এতো দায় কেন?

হিমু এর ছবি

আপনার ভাবনাটা দেশে অনেক চ্যানেলের নিউজ এডিটরের মধ্যেও আছে। এ কারণে তারা অনায়াসে টুকরো করা লাশের ছবি দেখায়, ক্রসফায়ারে নিহত সন্ত্রাসীর হাঁ করা মুখে মাছি উড়ে এসে বসার দৃশ্য দেখায়। এবং দায়িত্বটা তারপরে সবাই পিলো পাস করে দিতে চায়। নির্মাতারা কোনো দায়িত্ব নিতে চান না কেন? তাদের নাটকে কি অডিয়েন্স কোন বয়স গ্রুপের হবে, সেটা নির্দিষ্ট করা থাকে?

প্রচারক চ্যানেলের দায় না থাকলে দায়টা শেষ পর্যন্ত কার? টিভি বাংলাদেশে অনেক শক্তিশালী মাধ্যম। উঠতে বসতে এতে শিক্ষণীয় জিনিস দেখানোর কথা বলছি না, কিন্তু টিভিতে কী দেখানো হবে, কী দেখানো হবে না, সেটা বহুলাংশে দেশের দর্শকদের একটা বড় অংশের মনস্তত্ত্বের ওপর প্রভাব ফেলে। আপনি সেটা অস্বীকার করে বসে থাকলে এ নিয়ে আর তর্ক করবো না।

দর্শকের দায় হচ্ছে রেগুলেশনের দায়। ওপরে দেখুন একজন অতিথি বলেছেন, তার শিশুপুত্র ফারুকির বাংলায় কথা বলে, যা তার জন্যে একটু অস্বস্তিকর। ঐ শিশুটির তো টিভির সামনে বসে ফারুকির নাটক দেখার কথা নয়। এই অসচেতনতার দায়টুকুই দর্শকের।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

অতিথি লেখক এর ছবি

ওপরে দেখুন একজন অতিথি বলেছেন, তার শিশুপুত্র ফারুকির বাংলায় কথা বলে, যা তার জন্যে একটু অস্বস্তিকর। ঐ শিশুটির তো টিভির সামনে বসে ফারুকির নাটক দেখার কথা নয়। এই অসচেতনতার দায়টুকুই দর্শকের।

বিষয়টা টিভির পর্দা থেকে এখন আরও অনেক বিস্তৃত হয়ে গেছে হিমু ভাই। আমার শিশু কখোনোই টিভিতে ফারুকীর নাটক দেখে না। ও শুধু ডিভিডিতে কার্টুন দেখে এবং যার অধিকাংশই বাংলা। কিন্তু ও বাইরে যায় খেলতে, ওর বন্ধুরা, ওর থেকে ছোট এবং বড় বয়সী কাজিনগুলোও এই ভাষা আত্মস্থ করেছে। এভাবেই এই ভাষার বিস্তার ঘটেছে। হয়তো আগামীতে রাফিনকে শুনে ওর ছোটরাও এটা শিখবে। কাজেই রেগুলেশনও খুব একটা কাজ করছে না। আমার টিভি চ্যানেল রেগুলেট করার ক্ষমতা আছে আছে কিন্তু সোসাইটি রেগুলেট করতে পারছি না। এজন্যেই সবার সচেতনতা প্রয়োজন।

রাতঃস্মরণীয়

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

নিউজ চ্যানেল এডিটরের আর নাটকের প্রডিউসারের জব ডেসক্রিপশন সেইম নয়। আমি কি চাই না কোন নীতিমালা থাকুক? চাই। আমি শহুরে নাটকের গল্পে/চিত্রায়নে মফস্বলের দর্শকের ম্যাচুরিটি মাপতে চাই? নাহ চাই না।

কিন্তু টিভিতে কী দেখানো হবে, কী দেখানো হবে না, সেটা বহুলাংশে দেশের দর্শকদের একটা বড় অংশের মনস্তত্ত্বের ওপর প্রভাব ফেলে।

এটা অস্বীকার করছিওনা। তবে ম্যচিরউরড কোন অনুষ্ঠান-প্রচার-নীতিমালাতে মফস্বলের-তরুনের-মনস্তত্ব-বান্ধব কোন ক্লজ সংযোজন করা যাবে বলেও মনে করছি না। ২০৩০ সালে পৃথিবীর ৪‌‌‌‌ দশমিক ৬ বিলিয়ন জনসংখ্যা বসবাস করবে আরবান এরিয়াতে বিষয়টা অনুধাবন করলে ২০১০ সালে এরকম এক্সপেটেশনটাও ঠিক যায় না। আমরা কি ২৪ ঘন্টার এমটিভি শুধু শহুরে দর্শকেই দেখতে দেবো? মফস্বলে ডাউনলিংক নিষিদ্ধ করব? মফস্বলে এমটিভি চালু রেখে দেশীয় নাট্য নির্মাতার ফ্রিডম-অব-এক্সপ্রেশনে এরকম রিজিড মনোভাবের যৌক্তিকতা দেখতে পাচ্ছি না।

তো সমাধান খুঁজবো কোথায়? অবশ্যই পশ্চিমে। ডিফরেন্ট ডেমোগ্রাফি/জনঁরা/রেটিং অনুযায়ী প্রোগ্রাম তৈরী হবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দর্শক-কে টার্গেট করে। হিসাব সহজ। আকাশ মুক্ত রেখে রিজিড জাতীয়-সম্প্রচার-নীতিমালার কোন বেইল নাই।

হিমু এর ছবি

নিউজ চ্যানেলের এডিটর আর নাটকের প্রডিউসারের জব ডেসক্রিপশন তো আলোচ্য নয়, আলোচ্য হচ্ছে তারা কী এয়ার করতে চাইছেন শেষ পর্যন্ত, তার কনটেন্ট। নাট্যনির্মাতা কি শুধু শহরের মানুষকে দেখাবেন বলেই নাটক বানাচ্ছেন? মোটেও নয়। পরিষ্কার করে বললে, নাটকের জীবন ঢাকাকে রিপ্রেজেন্ট করার ভান করে, আর সেটাকে প্রোজেক্ট করে গোটা দেশে। সেখানে মানুষ শেখে, শহুরে হতে গেলে মানুষকে এই নাটকে বিধৃত জীবনাচরণ রপ্ত করতে হবে। এটা যে প্রডিউসার বোঝেন না, তার হাতে বানানো নাটক আমাদের জন্যে সামান্য হলেও বিপদজনক হতে পারে।

অনুষ্ঠানগুলো যতদিন পর্যন্ত মফস্বলবহুল বাংলাদেশের সর্বত্র দেখানো হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত এর প্রচার নীতিমালাতে মফস্বলের ওপর অনুষ্ঠানের প্রভাব নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। আমি বানাইলাম, দেখলে দ্যাখেন নাহলে নাই, এটা বলার বিলাসিতা সম্প্রচার মাধ্যমগুলোর নেই।

মফস্বলে এমটিভি চালু আছে অতএব আমাদের নাটকগুলোকেও এমটিভির অনুকরণে করতে গিয়ে বিশ্রী অনুকৃতি বানিয়ে ফেলতে হবে, এরকম যদি আমরা ভাবি, তাহলে কেন নাটকে পর্ন যুক্ত করি না? মফস্বলে পর্নও দেদার চলে।

আমার আপত্তি নাটকের কনটেন্টে নয়, সেই কনটেন্ট উপস্থাপনে অসতর্কতায়। নাটকটা কোন বয়সের দর্শকদের জন্যে তৈরি, সেটা পরিষ্কারভাবে নাটকের শুরুতে এবং পত্রিকায় নাটকের বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করতে অসুবিধা কী?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

নীলকান্ত এর ছবি

আমিও প্রথমে এই রক্ষণশীলতার কথা ভেবে দ্বিধায় ছিলাম কমেন্ট করবো কিন করবো না।
ফ্যান্টাসীর বিষয়টাতে সম্পূর্ণরূপে একমত। সবকিছু সবার হজমের জন্য নয়, হজম হয়ও না।

প্রতিনিয়ত চিনছি নিজেকে


অলস সময়

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, বাংলাদেশে নাটক সিনেমা দেখানোর ক্ষেত্রে "প্যারেন্টাল গাইডেন্স" ব্যাবহার শুরু করা উচিত।

নাটক সিনেমাতো আর বাস্তব না, সেটাকে বাস্তবতা মনে করাটাই হচ্ছে আসল সমস্যা। আমাদের দেশে এখন বেশিরভাগ জায়গাতেই স্যাটেলাইট চ্যানেল চলে এসেছে, আর হিন্দী চ্যানেলগুলোতে কি দেখায় সেটাতো আমরা সবাই কমবেশি জানি। সেক্ষেত্রে কি আমাদের কিছু করার আছে? না, নেই। তাহলে কেন আমরা আজ ফারুকীর নাটকে কি দেখানো হচ্ছে না হচ্ছে সেটা নিয়ে আতংকিত হব। আর আতংকিত হলে, টিভি, ইন্টারনেট সবকিছু থেকে দূরে থাকাটাই মনে হয় উচিত কাজ হবে।

পাগল মন

হাসান মোরশেদ এর ছবি

জ্বি। "প্যারেন্টাল গাইডেন্স" বলে একটা জিনিস উন্নত দেশগুলোতে চালু আছে। যেকোন টিভি/ভিডিও প্রোগ্রাম/ মুভি/নাটক দেখার আগে নিশ্চিত করতে হবে এটি সববয়সের দেখার জন্য উপযুক্ত কিনা।

ইভটিজিং, অবৈধ সম্পর্ক, যৌন সুড়সুড়ি এগুলো মায়ে-ঝিলে,বাপে-পুতে একসাথে বসে দেখতে যদি আপনার কোন সমস্যা না থাকে, আমার কিছু বলার নেই। একসময় আমাদের টিভিগুলো ছিলো একেবারেই পারিবারিক বিনোদনের মাধ্যম যেখানে পরিবারের সবাই একসাথে বসতো।
এখন যেহেতু এটি থাকছেনা সুতরাং অনুষ্ঠানগুলোতে এরকম রেটিং এর দরকার আছে।

নাটক সিনেমাতো আর বাস্তব না, সেটাকে বাস্তবতা মনে করাটাই হচ্ছে আসল সমস্যা।

কথা ঠিক কিন্তু এই ঠিক কথা একটা কিশোর বা সদ্য তরুন বুঝবেনা। সেজন্যই সতর্কতা দরকার হয়।

আমাদের দেশে এখন বেশিরভাগ জায়গাতেই স্যাটেলাইট চ্যানেল চলে এসেছে, আর হিন্দী চ্যানেলগুলোতে কি দেখায় সেটাতো আমরা সবাই কমবেশি জানি। সেক্ষেত্রে কি আমাদের কিছু করার আছে? না, নেই।

আপনি মনে করছেন কিছু করার নেই। সবখুলে দে গরুর গা ধুইয়ে।
কেউ কেউ মনে করছেন কিছু করার দরকার আছে। তারাই এখানে কথাবার্তা বলছেন।

আর আতংকিত হলে, টিভি, ইন্টারনেট সবকিছু থেকে দূরে থাকাটাই মনে হয় উচিত কাজ হবে।

টিভি, ইন্টারনেট হচ্ছে মাধ্যম। ইন্টারনেটে আপনি হকিংকে জানবেন নাকি পিডোফাইলিং করবেন সেটা নির্ধারন করবে আপনার শিক্ষা, মানসিকতা, মুল্যবোধ এবং আইন।
ইন্টারনেটে চাইল্ড পর্নোগ্রাফীর সুযোগ নিয়ন্ত্রন করতে হবে, কেউ করলে তার শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে- কিন্তু তার জন্য ইন্টারনেট থেকে দূরে থাকার কথাতো কেউ বলছেনা।

আপনার যুক্তিতে ভুল আছে।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমিওতো প্যারেন্টাল গাইডেন্সের কথাই বললাম। বাংলাদেশে এটার দরকার সবচেয়ে বেশি যদিও তাহলে ছেলেপেলে আরো বেশি করে দেখবে, নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আকর্ষন বেশিই থাকে।

যুগের সাথে সাথে অনেক কিছুই পরিবর্তন হচ্ছে, এটা মেনেই বলতে চাচ্ছি যে একসময় বাবার সাথে বসে হিন্দী সিনেমা দেখতাম না (কিছুটা ভয়ে, কিছুটা লজ্জায়), কিন্তু এখন আমার হাঁটুর বয়সী ভাতিজাও একসাথে বসে হিন্দী সিনেমা দেখে। এই পরিবর্তন কারো পক্ষেই রোধ করা সম্ভব না। আপনি যদি চিন্তা করে থাকেন দশ/বিশ বছর আগে যা করা সম্ভব ছিল এখনো তা-ই করা সম্ভব তাহলে আমার আর কিছু বলার নেই।

আমি হিন্দী চ্যানেলগুলো নিয়ে বলতে চেয়েছি যে আমরা চাইলেই হিন্দী চ্যানেলে সেসব দেখানো বন্ধ করতে পারবো না। আর আমার মনে হয় না কোন সরকারই হিন্দী চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধ করে দিতে পারবে যদিও সেটা করতে পারলে সবচেয়ে ভালো হতো।

টিভি, ইন্টারনেট হচ্ছে মাধ্যম। ইন্টারনেটে আপনি হকিংকে জানবেন নাকি পিডোফাইলিং করবেন সেটা নির্ধারন করবে আপনার শিক্ষা, মানসিকতা, মুল্যবোধ এবং আইন।

এই শিক্ষাটাই সবার আগে সবাইকে দেয়া দরকার তাহলেই আর কোন সমস্যা থাকবে না।

পাগল মন

নাদির জুনাইদ এর ছবি

এই পরিবর্তন কারো পক্ষেই রোধ করা সম্ভব না। আপনি যদি চিন্তা করে থাকেন দশ/বিশ বছর আগে যা করা সম্ভব ছিল এখনো তা-ই করা সম্ভব তাহলে আমার আর কিছু বলার নেই।

সময়ের সাথে সমাজের অনেক দিকে পরিবর্তন আসবে, গণমাধ্যমের বিষয়বস্তুতেও সেই পরিবর্তন গুলি প্রতিফলিত হবে তা স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু ইতিবাচক আর নেতিবাচক পরিবর্তনের মধ্যকার পার্থক্য বোঝাও কোন কঠিন ব্যাপার নয়, আর নেতিবাচক পরিবর্তনকে রোধ করাটাই যৌক্তিক এবং জরুরি। অনেক কম কারিগরি সুবিধা ছাড়াই সত্তর এবং আশি'র দশকে আমাদের দেশে অনেক উঁচু মানের টিভি নাটক নির্মিত হয়েছিল; বর্তমান সময়ে অনেক অর্থ ব্যয়ে নির্মিত বহু নাটক মানের দিক থেকে অতীতের সেইসব নাটক থেকে বহুগূণ পিছিয়ে আছে। আমাদের দেশের সুনির্মিত চলচ্চিত্রের কথা বলতে গেলেও বেশির ভাগ উদাহরণ উঠে আসে ষাট, সত্তর, আশি'র দশক থেকেই। অতীতের সফলতার আলোকে তাই বর্তমান সময়ের এই পিছিয়ে-যাওয়া পরিবর্তনকে বুঝতে হবে, আর এই পরিবর্তন মানকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলেই তাকে 'সময়ের পরিবর্তন' বলে চুপচাপ মেনে নেয়া চলবে না।

একই কথা আমাদের মানসিকতার ক্ষেত্রেও। দশ-বিশ বছর আগে যা করা সম্ভব ছিল তার চাইতে এখন আরো ভাল কিছু করাই সহজ হবে, কিন্তু সময়ের এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে আমাদের ভাল মূল্যবোধ বা উচিৎ-অনুচিৎ বোধ হারিয়ে ফেলার তো কোন কারণ নেই। বিভিন্ন মুনাফালোভী গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য অনেক অগভীর এবং অসার বিষয়বস্তু আর আচরণকে আধুনিক সময়ের ফ্যাশন বলে প্রচার করলেই তো আর সেইসব দিককে কোন বিবেচনা ছাড়া সময়ের অপরিহার্য পরিবর্তন বলে আমরা গ্রহণ করতে পারি না। বর্তমান সময়ে 'হাঁটুর বয়সী ভাতিজা' একসাথে বসে হিন্দী ছবি দেখলেও ক্ষতি নেই, শুধু প্রয়োজন কী স্থূলতা এবং কেন তা অর্থহীন এই বোধটি অর্জনে তাকে সাহায্য করা। কিন্তু তা না করলেই সমস্যা তৈরি হবে।

আধুনিক সময়ের কিছু পরিবর্তন আসলে আমাদের কতোখানি পিছিয়ে দিচ্ছে তা বোঝা কঠিন কোন কাজ নয়। এই সময়ের নানা অসঙ্গতি আর মানের অধঃপতন প্রতিনিয়তই আমাদের সেই ধারণা দিচ্ছে। সব ধরনের নেতিবাচক পরিবর্তনকেই রোধ করা সম্ভব, যদি আমরা সত্যিকারভাবে সচেষ্ট হই। আর কী ভাল আর কী মন্দ তা তো আর সবসময়, সব ক্ষেত্রে আপেক্ষিক নয়।

মঈনুল ইসলাম [অতিথি] এর ছবি

ফারুকি সমালোচনায় সব সময়ই মুখর আমি। "সমালোচনা" শব্দটিকে "ছিদ্রান্বেষণ" (negative scrutiny) অর্থে না নিয়ে "বিচার" (judgment) অর্থে বিবেচনার অনুরোধ রাখবো। ...তবে শেষটায় গিয়ে সেটা ছিদ্রান্বেষণেই পর্যবষিত হয় এবং ফারুকির মাহাত্ম ধরা পড়ে না। তাই এই পোস্টের লেখাগুলো ভালো না লাগার কোনো কারণ থাকতে পারে না। উপরের অধিকাংশ মন্তব্য দেখেই এটা মনে হয়েছে যে, যারা পোস্টটা পড়তে এসেছেন, তাদের কেউই ফারুকিকে ভালোবেসে পড়তে আসেননি, এসেছেন নিজের মতটাকেই আরেকটু প্রতিষ্ঠিত করতে। সে হিসেবে এই পোস্টটা মোটেই সফল কোনো পোস্ট না।

বরং পোস্টটা সফল হতো, যদি ৪৪ নম্বর মন্তব্যটার (সবজান্তার) মতো প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে দেখিয়ে দেয়া যেতো যে, ফারুকি আসলেই ঠিক গ্রহণযোগ্য নন।

যদি এই পোস্টে কিছু "ফারুকি-অন্ধভক্ত"র মন্তব্য পেতাম, তবেই পোস্টটা সফল হতো, কেননা লেখকের উদ্দেশ্য তাদেরকে ছোঁয়া। এখন পর্যন্ত মন্তব্যে সেটা ঠিক তিনি সফলভাবে করতে পারেননি বলে মনে হচ্ছে।

তবে, যেহেতু শুরু হয়েছে, শেষটাও হোক। তাহলে একটা উত্তর হয়তো আমরা পাবো। আগামী পর্বের দিকে চেয়ে থাকলাম।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

যারা পোস্টটা পড়তে এসেছেন, তাদের কেউই ফারুকিকে ভালোবেসে পড়তে আসেননি, এসেছেন নিজের মতটাকেই আরেকটু প্রতিষ্ঠিত করতে।

ফারুকিকে 'ভালোবেসে' পড়তে আসতে হবে কেনো? এটা মত প্রকাশের জায়গা, সবাই নিজের মত প্রকাশ এবং যৌক্তিক প্রতিষ্ঠার জন্য আসে।

যদি এই পোস্টে কিছু "ফারুকি-অন্ধভক্ত"র মন্তব্য পেতাম, তবেই পোস্টটা সফল হতো, কেননা লেখকের উদ্দেশ্য তাদেরকে ছোঁয়া। এখন পর্যন্ত মন্তব্যে সেটা ঠিক তিনি সফলভাবে করতে পারেননি বলে মনে হচ্ছে।

মন্তব্য করবেন পাঠক। পোষ্টের লেখক মন্তব্যে কিভাবে সফল হবেন?

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

দ্রোহী এর ছবি

ইউটিউবে "most watched videos of all time" লিস্টের প্রথম পাঁচটি ভিডিওর মধ্যে চারটি ভিডিওর বিষয়বস্তু হচ্ছে জাস্টিন বিবার, লেডি গাগা, শাকিরা, ও মাইলি সাইরাস!

মানবজাতির গড় রুচি নিয়ে কিছু বলার থাকে না আর।

ঠিক একই কারণে মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী যে সত্যজিত রায়ের তুলনায় বেশি জনপ্রিয় হবেন সেটা সহজবোধ্য বিষয়।


কাকস্য পরিবেদনা

স্পর্শ এর ছবি

উত্তম জাঝা!
দ্রোহীভাই কাহিনিটা কী কন তো? সুপার ডুপার সব মন্তব্য করতেসেন!


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

দ্রোহী এর ছবি

ব্যাপার কিছু না। হরলিক্স খেয়ে মন্তব্য লিখতে বসেছিলাম। দেঁতো হাসি


কাকস্য পরিবেদনা

বোহেমিয়ান এর ছবি

হাহা! আমিও হরলিক্স খামু!
_________________________________________

_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!

সাইফ তাহসিন এর ছবি

পরের পর্বের নিগা ইটা থুইয়া গেলাম চোখ টিপি

অটঃ উপ্রের আফগানি যুবকটা ক্যাঠা? হাসি , মনে হয়, অনেকদিন ভাত খায় নাইকা ইয়ে, মানে...

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

জাহামজেদ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

ধুসর গোধূলি এর ছবি

নীড়পাতায় (সাইজে একটু বড়) ছবিটা দেখতে ভালো লাগছে না। এটা কোনো নেতিবাচক দিক থেকে না, খুবই সাধারণ একটা দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলা।



বিএসএফ—
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

চলুক!

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

জাহামজেদ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

নিঃসঙ্গ গ্রহচারী [অতিথি] এর ছবি

তিনজন পরিচালকের বানানো সিনেমা দেখার খুব আগ্রহ ছিল। ফারুকী, গিয়াসউদ্দীন সেলিম আর অমিতাভ রেজা।

ফারুকীর সিনেমা দেখার কোন শখ আর নাই।

সেলিমের মনপুরা অত ভাল না লাগলেও হতাশ না। আশা করি পরের ছবিটা আরও ভাল হবে।

অমিতাভ রেজা এখনো ছবি বানাচ্ছে না কেন এইটা বুঝি না।

জাহামজেদ এর ছবি

অমিতাভ রেজা এখনো ছবি বানাচ্ছে না কেন এইটা বুঝি না

ভালো সিনেমা বানাবে বলে হয়তো শপথ নিয়েছেন। তবে আমি এটা খুব ভালো করে বিশ্বাস করি, অমিতাভ রেজা যখন সিনেমা বানাবেন তখন মানের দিক থেকে সেটা এদেশীয় সমকালীন সব নির্মাতাকেই অতিক্রম করে যাবে।

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আগামী পর্বের অপেক্ষায়...

সেলিব্রিটিদের নিয়ে লেখার একটা সমস্যা হলো (সচলায়তনে না - অন্য ব্লগে খেয়াল করেছি) - শেষ পর্যন্ত আলোচনাটা ব্যক্তি আক্রমণ, কুৎসা আর কূটতর্কে চলে যায়।
আশা করছি, আপনি এ বিষয়ে নজর রাখবেন...।

জাহামজেদ এর ছবি

ধন্যবাদ শিমুল ভাই...

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক ................. পুরোটা পড়ে মন্তব্য করব।

বাউলিয়ানা এর ছবি

প্রথম ধাক্কায় ফারুকী গংরা কিছু তেলেসমাতি দেখালেও আস্তে আস্তে বোধহয় সেরকম নাটক বানানোর ধারা কমে এসেছে। কারনটা সুহান রিজওয়ান লিখেছেন,

...মূল পুঁজি হলো ফ্লেক্সি লোডের দোকান, পাশের বাড়ির অতৃপ্ত ভাবী আর ভালোবাসা পাল্টানোর পথ দেখানো-

ঘটে মাল থাকলেতো নতুন কিছু বানাবে।

ভাই বেরাদার এর ছবি

এর পরের পর্ব লেখার সময় ফারুকীর ভাই বেরাদারের লিস্টি দিয়েন।

জাহামজেদ এর ছবি

এমএস ফারুকীর কাছে এই লিস্ট আছে নাকি ?

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

হুমম

ইফতেখার আহমেদ ফাহমী আর রেদোয়ান রনী সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয়।
এর পরে আছে মোহাম্মাদ মোস্তফা কামাল রাজ, আশুতোষ সুজন, আলী ফিদা একরাম তোজো(মনে হয় ভাই ব্রাদার গ্রুপে জয়েন করার আগে থেকেই নাটক বানাতো), মারজুক/কচি খন্দকারও মনে হয় ২-১ টা ডাইরকেশন দিয়েছে। আরো কয়েকজন থাকতে পারে আমার নাম জানা নাই।

রাগিব এর ছবি

নাটক দেখা হয় কদাচিৎ, তাই ফারুকীর নাটকের মান নিয়ে কিছু বলছি না। তবে নাটকের ভাষা নিয়ে কিছু কথা আছে।

বহুকাল আগে আটকে পড়া ট্রেনে এক লোকের সাথে বাদানুবাদে জড়িয়ে গেছিলাম, তার কথা ছিলো, ভাষার "শুদ্ধ" রূপ আছে, আর বাংলাদেশের "অমুক" জায়গার লোকেরা "শুদ্ধ" ভাষায় কথা বলে, যে ভাষায় তমুক মহাকবিরা লিখে গেছেন।

সমস্যাটা এখানেই। ভাষার "শুদ্ধ" রূপ বলে কিছু নেই। আছে কেবল প্রমিত রূপ। রবি ঠাকুর, প্রমথ চৌধুরী, এদের বাড়ি চট্টগ্রামে হলে আজ চট্টগ্রামের ভাষাই "শুদ্ধ" হতো।
আর প্রমিত মানেই কিন্তু অপরিবর্তনীয় নয়। সময়, সংস্কৃতি এসবের ভেদে ভাষা বিবর্তিত হবেই।

প্রশ্ন হলো, কোন হিসাবে "করসি" খারাপ কিন্তু "করেছি" ভালো? একটা প্রমিত আরেকটা না? কিন্তু প্রমিত করাটা তো আমরাই করেছি, তাই না? আগে প্রচলিত প্রমিত রূপ পাল্টে নতুন প্রমিত কিছু কি কখনোই আসবে না?

উনিশ শতকে লেখা "হুতোম পেচার নকশা" পড়লে দেখা যায়, তখনকার সাহিত্যে সহজেই ব্যবহার করা হয়েছে কলকাতার স্থানীয় ভাষা। হুতোম অনলাইনে পেলাম না, হাতের কাছে পেলে পড়ে দেখবেন।

---

সবশেষে আরেকটা ব্যাপার ভাবুন, মনে করুন ৭ম শতকের কথা, প্রমিত ভাষা সংস্কৃত এর বদলে আম জনতা অশুদ্ধ প্রাকৃত ভাষা বলে বেড়াচ্ছে, আমি নিশ্চিত, সে আমলের সংস্কৃত-জানা বিজ্ঞজনেরাও হা হুতাশ করে বেড়াতেন, ভাষা জলে গেলো বলে, ঠিক অনেকে এখন যেমন কথ্য বা রাস্তার ভাষা নাটকে আসা নিয়ে হা হুতাশ করেন।

---
সময়াভাবে গুছিয়ে লিখতে পারলামনা মন্তব্য, দু:খিত।

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | টুইটার

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

কাজী মামুন এর ছবি

ভাষা আন্দোলন হয়েছে বিংশ শতাব্দীতে, একবিংশ শতাব্দীতে শুরু হয়েছে ফাষা আন্দোলন, মানে ফারুকী ভাষা আন্দোলন।মূলত Bachelor নামক এক বস্কার(বাংলাদেশী অস্কার) -জয়ী ছিঃনেমার মাধ্যমে এই ফাষার লড়াই শুরু। এর আগে এই ফাষা কদাচিত বন্ধুমহলে বদমাইশির স্থলে ব্যবহৃত হলেও এখন ঢাকাবাসী একদল ডিজুস জেনারেশনে এই ভাষা ব্যপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আমাদের মহান দায়িত্ব এই ফাষা-আন্দোলন কে জোরদার করা এবং এর জয়কে সুনিশ্চিত করা। এর জন্য নতুন কিছু কার্যকরী আইডিয়াঃ

এক. এখনো অনেকে ফারুকী-গং নাটক দেখা থেকে বঞ্চিত আছেন তাই, ঘরে ঘরে অন্ততঃ একটি করে ফারুকী-গং নাটক দেখানোর ব্যবস্থা করতে হবে, প্রয়োজনে বাধ্যতামূলক ভাবে প্রতি পরিবারে পয়সা দিয়ে কেনা একটি CD'র ব্যবস্থা করতে হবে।

দুই. ফাষা-সাহিত্য (মানে ফারুকী-ভাষার নাট্য-জয় দেখে সপ্নাতুর সাহিত্যিকের ফাষায় রচিত সাহিত্য) ব্যঙ এর পোনার মতো গজিয়ে উঠা মিডিয়া'র আনাচে কানাচে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে, মানুষ পয়সা দিয়ে না কিনলে বিনামূল্যে বিতরনের ব্যবস্থা করতে হবে।

তিন. Bachelor নামক মহান ছবি নির্মানের পর ফারুকী সাহেব কে নাকি চলচ্চিত্র-বোদ্ধারা বলেছেন- 'আপনার ছবিতো ছবি হয় নি'।
জবাবে ফারুকী সাহেব বলেছেন, 'কেন! আমিতো ৩৫মিমি এই বানাইছি!'।
এখন ঐসব চলচ্চিত্র-বোদ্ধাদের খুজে খুজে তাদের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে এবং ৩৫মিমি এ নির্মিত হলেই একে সিনেমার স্বীকৃতি দিতে হবে।

চার. অবিলম্বে ৬৪জেলায় সিরিজ ফাষা-উৎসব উদযাপন এর ব্যবস্থা করতে হবে।যেখানে শুধুমাত্র প্রদর্শিত হবে ফারুকী গংদের চলচ্চিত্র এবং বোর্ডে চিত্রায়িত হবে ফাষা-সাহিত্য।

পাঁচ. ফারুকী-গং দের জন্য অবিলম্বে নোবেইল(ফাষা ভাষায় নোবেল কে নাকি তাই বলা হয়) অথবা অস্কার পুরষ্কার এর ব্যবস্থা করতে হবে, তাও সম্ভব না হলে ফস্কার নামে নতুন পুরষ্কার এর সুচনা করতে হবে, যেখানে একমাত্র ফাষায় নির্মিত চলচ্চিত্র এবং ফাষা-সাহিত্য ঠাই পাবে।

ছয়. একুশে'র বইমেলার মতো ফাষা-সাহিত্য মেলা'র প্রচলন করা যেতে পারে।

সাত. একটি বিশেষ দিবসকে বেছে নিয়ে(Bachelor মুক্তির দিবসকে ভাবা যেতে পারে) ফাষা-দিবস কর্মসূচী চালু করতে হবে।

আট. যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি ফাষা-Dickশনারী প্রকাশের ব্যবস্থা নিতে হবে, এবং স্কুল-কলেজ থেকে যেন ছেলে মেয়েরা বাধ্যতা মুলক ভাবে এই ভাষা শেখে এটা নিশ্চিত করতে হবে.

=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"

=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"

জাহামজেদ এর ছবি

কেন! আমিতো ৩৫মিমি এই বানাইছি!

বাংলাদেশের বেশিরভাগ টিভি কমার্শিয়াল বানানো হয় ৩৫ এমএম ক্যামেরা ব্যবহার করে। এখন যদি কেউ এসে বলে ৩৫ যা বানানো হবে তা-ই সিনেমা তাহলে তো আর এত টাকা খরচ করে সিনেমা বানানোর দরকার নাই। আমরা টিকেট কেটে সিনেমা হলে বসে ১ মিনিটের টিভি কমার্শিয়াগুলোরে সিনেমা হিসেবে দেখি !

৩৫ এমএম এ যখন বানানো, তাহলে তো এটাও সিনেমা !

অফটপিক : তোমার কমেন্টে (গুড়)

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

১ ...

বেশ কিছু মন্তব্য পড়ে মনে হইলো যে এই করসি-খাইসি টাইপ ভাষা ফারুকী আর তার ভাই-বেরাদারদের উদ্ভাবন এবং তাদের প্রভাবেই এখনকার তরুণ প্রজন্ম এই ভাষায় কথা বলে, আমার অবজারভেশন কিন্তু বলে যে এই কথাটা সত্যি না ... ফারুকী মিডিয়ায় এই ভাষা প্রমোট করার অনেক আগে থেকেই ঢাকার পোলাপান এই করসি-খাইসি ব্যবহার করে আসছে, ফারুকী শুধুমাত্র সেটাকে মিডিয়ায় তুলে নিয়ে গেছেন ...

আর এই করসি-খাইসি টাইপ ভাষাটা কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলের ভাষা কিনা আমার জানা নাই, কারণ আমি নিজে বেড়ে উঠেছি প্রধানত ঢাকা আর চিটাগাংয়ে; ইউনিভার্সিটির বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে অনেকেই উত্তরবঙ্গ কিংবা সিলেট কিংবা চিটাগাং থেকে আসা ... এদের কথায় নিজ নিজ অঞ্চলের ভাষার একটা সূক্ষ্ম টান থাকে ঠিকই [একবার একজন বলেছিল আমার কথায় নাকি হালকা ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার টান আছে, যদিও আমি সাত-আট বছর বয়সের পর আর সেদিকে যাই নাই], কিন্তু মোটের উপর তাদের ভাষাও এই করসি-খাইসি ক্যাটাগরিতেই পড়ে ... এজন্য আমার ধারণা, এই করসি-খাইসিটাকে আর কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলের "হেজেমোনি" হিসাবে ধরা যায় না, বরং এইটা আরেকটা নতুন প্রমিত ভাষার হওয়ার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে ...

স্কুলে পড়ার সময় যখন স্যারদের সাথে [বা আরও উপরে, প্রিন্সিপাল-ভাইস প্রিন্সিপালদের সাথে] কথা বলতাম, বা বাসায় আসা কোন গেস্টের সাথে কথা বলার দরকার হইতো, তখন খুব চেষ্টা করতাম "শুদ্ধ" ভাষায় কথা বলার; কারণ তখন সেটাই ছিল বাবা-মার নির্দেশ ... কিন্তু এখন অফিসিয়াল বা ফর্মাল এনভায়রনমেন্টেও আর করেছি-খেয়েছি বলার দরকার দেখি না, করসি-খাইসিতেই কাজ চলে; বিশুদ্ধ প্রমিত ভাষা খুব কম মানুষই ব্যবহার করেন এবং তারাও প্রধানত একটু বয়স্ক বা সিনিয়র মানুষেরা ...

যাই হোক, এত কথা বলার কারণ হচ্ছে, আমি এবং আমার আশেপাশের মানুষেরা ফারুকী আর তার ভাই-বেরাদাররা আসার অনেক আগে থেকেই করসি-খাইসিতে কথা বলি; এবং এইখানে অনেকে যদিও এটাকে "ফালতু" কিংবা "ডিজুস" পোলাপানের লক্ষণ বলে মনে করেন, আমি নিজে নিজেকে এই দুই দলের কোনটারই অন্তর্ভুক্ত বলে মনে করি না দেঁতো হাসি

সো ফারুকী গংয়ের কারণে তরুণ প্রজন্মের ভাষা বিকৃত হয়ে যাচ্ছে, কিংবা ফারুকীর নাটক না থাকলে বাচ্চা বাচ্চা পোলাপানেরা সবাই শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতো, এই ধারণাটার সাথে একমত হতে পারলাম না ... হ্যাঁ, বাচ্চারা যতদিন শুধু বাসাতেই থাকতো ততদিন হয়তো প্রমিত ভাষায় কথা বলতো, কিন্তু আস্তে আস্তে যখন তারা বাড়ির বাইরে যাবে, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গ পাবে, তখন তার প্রভাব তাদের ভাষাতেও পড়তে বাধ্য ... মনে হয় না এইখানে কিছু করার আছে ... [আর কিছু করা লাগবে কেন সেটাও আসলে বুঝলাম না ... করেছি-খেয়েছির চেয়ে করসি-খাইসি ঠিক কোন দিক দিয়ে খারাপ? দেঁতো হাসি ]

২ ...

একান্নবর্তী, চড়ুইভাতি আর দুই-এক্টা একপর্বের নাটক ছাড়া ফারুকীর তেমন কোন নাটক দেখি নাই, তাই তার নাটকের ভাষার এখনকার কি অবস্থা সেটা বলতে পারবো না ... তবে একান্নবর্তীতে যদ্দূর মনে আছে, মাসুদ আলী খান আর শহীদুজ্জামান সেলিম একেবারে বিশুদ্ধ প্রমিত ভাষায় কথা বলতেন, আবার অপি করিমের কথা ছিল "করসি-খাইসি" টাইপের ... আমার কাছে জিনিসটা অস্বাভাবিক লাগে নাই কারণ বাস্তবেও সবাই প্রমিত ভাষায় কথা বলে না, কেউ কেউ বলে; বরং বহু বহুকাল আগে বিটিভির কোন একটা নাটকে আলী যাকেরকে জেলে চরিত্রে অভিনয়ের সময় বিশুদ্ধ প্রমিত বাংলায় কথা বলতে দেখেছিলাম এবং জিনিসটাকে খুবই হাস্যকার লেগেছিল ...

৩ ...

নাটক যেহেতু পরিবারের সবার দেখার কথা তাই তার বিষয়বস্তু নিয়ে কিছুটা কনসার্ন থাকা স্বাভাবিক; তবে এক্ষেত্রে দায়টা কিন্তু চ্যানেল কর্তৃপক্ষ এবং সরকার এবং দর্শক [প্যারেন্টাল গাইডেন্স] এর উপরেও বর্তায় ... বাংলাদেশের নাটকে কোন বিষয় দেখানো যাবে আর কোন বিষয় যাবে না সেটা নিয়ে কোন নীতিমালা আছে কি?

৪ ...

ভাই-বেরাদারদের বানানো নাটক নিয়ে "ছবিয়াল উৎসব" নামে একটা সিরিজ ছিল (মনে হয় চ্যানেল আইয়ে), সেটার অন্তত তিনটা নাটকের কথা এখনও মনে আছে যেগুলি বেশ ভালো লেগেছিল ... চড়ুইভাতি ভালো লেগেছিল, একান্নবর্তীর যে কয়টা পর্ব দেখেছিলাম খারাপ লাগে নাই; ব্যাচেলর ভালো লাগে নাই আবার একেবারে অখাদ্যও লাগে নাই, শেষ করতে পেরেছিলাম; ক্যারাম ভালো লেগেছিল, ক্যারাম-টু লাগে নাই ... এর পর মনে হয় ফারুকী গ্রুপের আর কোন নাটক দেখি নাই ... তবে ফারুকীর কিছু বিজ্ঞাপন খুব ভালো লাগে ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

নুসদিন এর ছবি

তিনে কিছু কথা অ্যাড করি। এইবার ঈদের দিন এন টিভিতে রাত আটটায় ডালিম কুমার নামে একটা নাটক দেখানো হয়। নাটকের বিষয়বস্তু ডালিম কুমার বীমা পলিসি বিক্রি করেন, সেই পলিসি আবার দেখি শুধু বিক্রি করতে যায় আপার ক্লাস ভাবীদের কাছে। ভাবীরা ভোলা-ভালা ডালিম কুমারের মজা নেয়। একদিন এক ভাবী তাকে বাসায় ডেকে নিয়ে......প্রস্তাব দেয়। ভাবী তার পায়ে হাত রাখে, সেই দৃশ্য বারবার ক্লোজ শটে দেখানো হয়। শাড়ীর আঁচল পড়ে আছে, সেটাও বোঝানো হয়। আর ডালিমের সাথে যে ভাবী জোরজবস্তি করে সেটাও দেখানো হয়। এটা মাত্র একটা নাটকের কথা বললাম। ঈদে এইরকম আরো বেশ কয়েকটা দেখেছি। এখন কথা হল, আমরা বুঝবো কিভাবে যে নাটকের বিষয়বস্তু সবাই মিলে দেখার মত কিনা। ঈদের দিনতো সবাই একসাথেই নাটক দেখতে বসে। এখন যদি নির্মাতা ঈদকে মাথায় রেখে এইরকম নাটক বানায় আর চ্যানেল কর্তৃপক্ষও এইরকম নাটক দেখায়, দর্শক আগে-ভাগে কিভাবে বুঝবে যে ডালিম কুমারের ভেতরের ঘটনা কী খাইছে

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

হুম রেটিং সিস্টেম এখন সময়ের দাবী। ইন্টারটেইমেন্টও এখন ব্যক্তিগত। হলিউডের বেশীভাগ মুভি যদি ফ্যামিলী ছাড়া দেখতে পারেন, নাটকও পারবেন।

হিমু এর ছবি

একটু দ্বিমত করি। লোকে ঘরে বসে দরজা আটকে পিসিতে মুভি দেখতে পারে, সত্য কথা, কিন্তু নাটক নিভৃতে বসে দেখবে দর্শক, এমনটা ভেবে নির্মিত হয় না। বাংলাদেশে মানুষের ঘরে টিভি সাধারণত বেশিরভাগ পরিবারেই একটি, সেটি সকলে কমবেশি সমবেত হয়ে দেখেন। নাটকগুলো এই সমাবেশকে উদ্দেশ করে প্রচারিত হয়। আপনি ফালতু নাটক বানিয়ে লোকজনকে পরামর্শ দিতে পারেন না, এগুলি একা দেখেন, তাও ঈদের দিন।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

তাহলে একটা সেন্সর বোর্ড টাইপ ব্যবস্থা লাগবে, কারণ কোনটা ফালতু আর কোনটা ফালতু না এই ব্যপারটায় কখনো সবাই একমত হবে না; এক এক জনের গ্রহনযোগ্যতার সীমা এক এক রকম [আবার একই ব্যক্তিই বাংলা নাটকে পরকীয়া প্রেম দেখলে আতংকে লাফ দিবে কিন্তু সুড়সুড়ি দেয়া হিন্দি নাচগান পুলাপান নিয়ে দেখবে ...]
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

হিমু এর ছবি

ব্যাপারটা যত না নিজস্ব গ্রহণযোগ্যতার সীমার, তারচেয়ে বেশি মাইনরদের গ্রহণযোগ্যতার সীমা কী হওয়া উচিত সে ব্যাপারে আমাদের সচেতনতার। নাটকে নায়িকাকে নেংটো দেখালেও আমার অসুবিধা নেই, সেটা আমার ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতার সীমার মধ্যে পড়তে পারে। কিন্তু আমার ভাইয়ের বাচ্চা ছেলে যদি ঈদের দিন আমার সাথে নাটক দেখতে বসে সেটা দেখে ফেলে, আমি প্রশ্ন করতেই পারি, এই পরিস্থিতিটা এড়ানোর জন্যে আমাকে কোনো অপশন দেয়া হয়েছিলো কি না। আমার কি নাটকের শুরুটা দেখে এই সিদ্ধান্তের সুযোগ ছিলো যে আমি আমার ভায়ের ছেলেকে ঘর থেকে চলে যেতে বলবো? কিংবা সবাই মিলে অন্য চ্যানেলে অন্য কিছু দেখবো?

আমি যৌনতাবিষয়কশুচিবায়ু প্রমোট করার পক্ষে নই, শুধু সুযোগ চাই, আমার পরিবারের মাইনরদের সংস্পর্শে থাকাকালীন যেন এন্টারটেইনমেন্টের কনটেন্ট বিচার করে সেটা তাদের অনুমোদন বা অননুমোদনের সুযোগ পাই। যে হিন্দি নাচগান পুলাপান নিয়ে অসচেতন আমরা বসে বসে দেখি, সেই হিন্দি সিনেমার শুরুতে কিন্তু হিন্দি চ্যানেলগুলো রেটিং দেখায়।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

আপনি আর আমি তো একই কথা বলতেসি ... আপনি রেটিং চাচ্ছেন, আমি বলতেসি একটা সেন্সর বোর্ড লাগবে যারা প্রচারের আগে নাটকটা দেখে সিদ্ধান্ত দিবে এইটা দেখানোর উপযোগী কিনা ...

[আর নায়িকাকে ন্যাংটা দেখানো যাবে কিনা এইটা নিয়ে কোন বিতর্ক আছে বলে মনে হয় না; কিন্তু নায়ক-নায়িকা অভিসারে যাচ্ছে এইটা দেখানো যাবে কিনা, দেখাইলে সেই প্রেম কি নায়কের এপার্টমেন্টে নাকি চাইনিজ রেস্তোরায় হবে এইগুলির উত্তর এত সহজ না ... এইজন্যই এইটা ফারুকীর হাতে ছেড়ে না দিয়ে অন্য কোন ওয়েল-ডিফাইনড কর্তৃপক্ষের হাতে ছাড়তে হবে ... ]
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

হিমু এর ছবি

নায়কনায়িকার অভিসারের ব্যাপারটা একটা নাটকে খুবই বিরক্ত লেগেছে দেখে। ফার্স্ট ডেট বা এইরকম কিছু। সেখানে এক ছেলে এক মেয়ের সাথে শোয়ার জন্য হন্যে হয়ে গেছে। আমার জন্য এই নাটকটা এন্টারটেইনিং হয়তো, বয়সের কারণে, কিন্তু যে মেয়েটার বয়স পনেরো, বা যে ছেলেটার বয়স আঠারো, তার জন্যে এই নাটকে কিছু মিসলিডিং কিউ আছে। রূপালি পর্দা উদ্ভট জিনিসকে গ্রহণযোগ্য করে তোলে। আমরা ক্লাস সিক্সে থাকতে একবার একটা ইংরেজি সিনেমায় মারপিটের দৃশ্য দেখে নাইফ থ্রোয়িঙে এত উৎসাহ পেয়েছিলাম যে এক বন্ধুর নানার কলাগাছের বাগান পুরো দফারফা করে দিয়েছিলাম। ড়্যাভেন দেখে উৎসাহিত হয়ে ক্লাস এইটে বা নাইনে থাকতে এক বন্ধুকে হিপ থ্রো করে ছুঁড়ে ফেলেছিলাম গলফ ক্লাবের টিলা থেকে, তার ঘাড়ে সিরিয়াস ইনজুরি নিয়ে সে সপ্তাহদুয়েক অচল হয়ে পড়েছিলো। আমি নিজেকে দিয়েই বিচার করছি, ঐ বয়সটায় এইসব মিসলিডিং জিনিস এমন আচরণের দিকে ঠেলে দেয়, যেটা আমরা হয়তো করতাম না।

নাটকের একটা সিনোপসিস তো আগেই জমা দিতে হয়। চ্যানেল কর্তৃপক্ষ সেটা দ্যাখে নিশ্চয়ই। তাদের অনুমোদন ছাড়া এগুলো প্রচারিত হয় না। ফারুকিকে দায় দেয়ার পাশাপাশি তাদেরও দায়ী করতে চাই।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

তাসনীম এর ছবি

সিক্স মিলিয়ন ডলার ম্যান বা বায়োনিক ওয়ম্যানের মত তেতলা থেকে স্লো-মোশনে লাফ দিতে গিয়ে শিশুর মৃত্যু-- এটা খুব রেয়ার ঘটনা ছিল না আশির দশকে। নাটক বা সিনেমার সব দর্শক বোদ্ধা হবেন এটা ভাবার কারণ নেই। অনেকেই প্রভাবিত হন নাটক দেখে, যত জনপ্রিয় নাট্যকার ততই বেশি তার প্রভাবে।


ফার্স্ট ডেট বা এইরকম কিছু। সেখানে এক ছেলে এক মেয়ের সাথে শোয়ার জন্য হন্যে হয়ে গেছে।

এই নাটকটা আমি দেখেছি, এগুলো বাজে উদাহরণ ফারুকীর...এবং তিনি করেই চলেছেন।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

নায়কনায়িকার অভিসারের ব্যাপারটা একটা নাটকে খুবই বিরক্ত লেগেছে দেখে। ফার্স্ট ডেট বা এইরকম কিছু। সেখানে এক ছেলে এক মেয়ের সাথে শোয়ার জন্য হন্যে হয়ে গেছে।

স্পট অন ... এই নাটকটা আমারও চরম বিরক্তি লাগসে, উপস্থাপনাটাই বাজে ...

কিন্তু "নায়িকা নায়কের ফ্ল্যাটে যাচ্ছে" এই থীমটা সমস্যা না ... উদাহরণঃ জয়া আহসান আর ইন্তেখাব দিনারের একটা নাটক আছে, নাম ভুলে গেছি, ইউটিউবে আছে ... সেইখানে জয়া দিনারের ফ্ল্যাটে যায়, বাড়িওয়ালা সন্দেহ করে দেখে ছোটবোন হিসাবে পরিচয় দেয়, নাটকের একটা বড় অংশেই বদ্ধ ঘরের মধ্যে জয়া আর দিনার; কিন্তু সেই নাটকে আপত্তিকর কিছু আমার চোখে পড়ে নাই এবং এইটা আমি আমার বাপ-মা বা পোলাপানের সাথে দেখতে আপত্তি করবো ...

অর্থাৎ প্লট সিনোপসিস দিয়ে কাজ হবে না, একটা ফুলটাইম সেন্সর বোর্ড লাগবে [অবশ্যই বাংলা সিনেমার মত সেন্সর বোর্ড না দেঁতো হাসি ]
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

হিমু এর ছবি

আমরা যখন ছোটো ছিলাম, তখন টিভিতে নায়কনায়িকা প্রেম করতে ঘর থেকে বের হতো। এখন বড় হয়ে দেখি টিভিতে নায়কনায়িকা প্রেম করতে ঘরে ঢোকে দেঁতো হাসি

সেন্সরবোর্ড বানালে নাটকের মান আরেকটু খারাপ হবে। কারণ তখন নাটকের বাজেটের একটা অংশ আবার সেন্সরবোর্ডের অচলায়তনের বাউণ্ডারি পুশের কাজে খরচ হয়ে যাবে।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

কিন্তু সেই নাটকে আপত্তিকর কিছু আমার চোখে পড়ে নাই এবং এইটা আমি আমার বাপ-মা বা পোলাপানের সাথে দেখতে আপত্তি করবো ...

এই জায়গাটা ***আপত্তি করবো না*** হবে ... পুরা কমেন্টের অর্থই বদলায়ে ফেলসি দেখা যায় :-|

এই নাটকটা নিয়ে বলতেসিলাম ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

১৯৫০ সালে আমেরিকার টিভি দর্শকেরাও এভাবে ভাবতো। বাস্তবতাও সেরকম ছিলো। পুরো ফ্যামিলি মিলে একসাথে টিভি প্রোগ্রাম গিলতো। এখন আর সে সময় নাই। স্পোর্টস আর কিছু লাইভ ইভেন্ট ছাড়া প্রায় সব কিছুই ব্যাক্তিগত এন্টারটেইনমেন্ট।

হিমু এর ছবি

আগে বাংলাদেশকে ১৯৫০ এর আমেরিকা থেকে সামনে এগোতে দিন, তারপর অন্যভাবে ভাবতে বলুন। বাংলাদেশে এখনও সামষ্টিক এন্টারটেইনমেন্টের আধিপত্য চলছে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তিগত এন্টারটেইনমেন্টের রাজত্ব চলছে অতএব আমাদেরও পারিপার্শ্বিক বিচার না করে তাতে লাফ দিয়ে পড়তে হবে নাকি? ইয়োরোপে মাইনরদের কাছে সিগারেট বিক্রি করে না, বাংলাদেশে দেদারসে করে। ইয়োরোপে মুদি দোকানে মদ বিক্রি হয়, বাংলাদেশে হয় না। তো?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

ঢাকার শহুরে কিশোর/তরুনরা ১৯৯০ থেকে পর্ন দেখছে, ১৯৯৫ থেকে খালি বাসায় গার্লফ্রন্ডের সাথে ডেটিং করছে এখন ২০১০-এ শুনতে হচ্ছে এখনো সামষ্টিক এন্টারটেইনমেন্টর আধিপত্য? বটতলায় বা এসিরুমে বসে পারিপার্শ্বিক বিচার করা লোকের অভাব নাই। মার্কেট সেগমেন্টেশন/ডিফরেন্ট জনঁরা/টার্গেট অডিয়েন্স/রেটিং সিস্টেম এসব কিছুই আসতে বাধ্য। অডিয়েন্সের ম্যচিউরিটি বাড়াতেও সেটা জরুরী।

হিমু এর ছবি

বাংলাদেশে লোকে হয়তো দুই হাজার বছর আগে থেকে চুরি করছে, ডাকাতি করছে, ধর্ষণ করছে। তো ২০১০ সালে এসে এগুলোকে ব্যক্তিগত এন্টারটেইনমেন্টের সিল মেরে হালাল করে দিতে হবে নাকি?

খালি বাসায় গার্লফ্রেণ্ডের সাথে ডেট করা এন্টারটেইনমেন্টের যে জনরাঁরা মধ্যে পড়ে, তার সাথে সম্প্রচারিত এন্টারটেইনমেন্টের যোগসূত্র কোথায়? আমি আমার বান্ধবীর সাথে খালি বাড়িতে সঙ্গম করছি, অতএব টিভিতে প্রাইম টাইমে একই জিনিস কোনো ধরনের রেটিং ইন্ডিকেশন ছাড়া প্রচারিত হওয়া জায়েজ হয়ে গেলো?

অডিয়েন্সের ম্যাচিউরিটি বাড়ানোর আগে নির্মাতাদের এবং তাদের ল্যাংবোটদের ম্যাচিউরিটি বাড়ানো জরুরি। পনেরো বছরের একটা ছেলে বা মেয়েকে টার্গেট অডিয়েন্স বানিয়ে তাকে কুড়ি বছরের ছেলেমেয়েদের কনটেন্ট গেলানোর অসততা থেকে বেরিয়ে আসার মতো বিবেচনাবোধসম্পন্ন নির্মাতা প্রয়োজন এজন্যে।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

আপনার যুক্তি প্রতিষ্ঠা করতে এতো চরম উদাহরন আমদানী করতে হচ্ছে কেন বুঝলাম না? ১৫-১৬ বছর বয়স থেকে পর্ন দেখা/২০-২৩ বছর থেকে অনিয়মিত যৌন-সংগমে অভ্যস্হ কিশোর/কিশোরী/তরুন/তরুণীর দাবী এরকম নয় যে প্রাইম টাইমে দেশীয় যৌন মিলন না দেখালে চলবে না, অচলায়তনের বাউন্ডারি পুশ করাতে তাদের আগ্রহের কমতি নাই, এতটুকুই বলতে চাই।

পনেরো বছরের একটা ছেলে বা মেয়েকে টার্গেট অডিয়েন্স বানিয়ে তাকে কুড়ি বছরের ছেলেমেয়েদের কনটেন্ট গেলানোর অসততা থেকে বেরিয়ে আসার মতো বিবেচনাবোধসম্পন্ন নির্মাতা প্রয়োজন এজন্যে।

রেটিং সিস্টেম ছাড়া এই এবিউস বন্ধ করবেন কেমনে?

হিমু এর ছবি

আপনি উত্তরাধুনিক দর্শন নিয়ে কী যেন বলছিলেন নিচে? একটা টেক্সট মন দিয়ে পড়তে শিখুন। রেটিং সিস্টেমের কথাই বলেছি আমি।

অচলায়তনের বাউণ্ডারি পুশ করার আগ্রহ থাকা ভালো, যোগ্যতা আর বিবেচনাবোধ তার সাথে যোগ হলে আরো ভালো হয়। যে ঈভ টিজার মেয়েদের স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে, সেও হয়তো ভাবে সে অচলায়তনের বাউণ্ডারি পুশ করছে, হু নৌজ?

ফারুকী আর তার স্যাঙ্গাৎরা কোনো অচলায়তনের বাউণ্ডারি পুশ করতে পারেনি এখন পর্যন্ত। এদের মূল বাণিজ্য বিজ্ঞাপন নির্মাণ, আর দখল ধরে রাখার জন্য কালেভদ্রে অপটু চিৎকারসর্বস্ব নাটকসিনেমা ওগড়ানো। নাটকে বাল বলে সেটাকে বিপার দিয়ে মুছে দিলেই যদি অচলায়তনের বাউণ্ডারি পুশড হয়ে যেতো, তাহলে তো হয়েছিলোই। ঠুকেমারি যখন মুখেমারির বাড়ি গিয়েছিলো, মুখেমারির বৌ কিন্তু আঁচল টেনে বলেছিলো, কর্তা পাহাড় ঠেলতে বেরিয়েছেন।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

আগে বলেছিলাম সে হয়তো (নাই সিংহের বনে) শিয়াল-রাজা তবে বর্তমানে (সিংহের অভাবে) প্রায় সকল টিভি চ্যানেলর নাট্য প্রডিউসাররা স্বীকার করে সেরা ৩ জন নাটক ডাইরেক্টের মধ্যে ফারুকী থাকবে। শুধুমাত্র কালেভদ্রে-অপটু-চিৎকারসর্বস্ব-নাটকসিনেমা-ওগড়ানো দিয়েও তাহলে অমিতাভ রেজা আর গিয়াসউদ্দিন সেলিমের সাথে বাজার দখলে রাখা যায়? আর কোন কোয়ালিটি লাগে না?

হিমু এর ছবি

যে কয়েকটা কোয়ালিটি লাগে, তার মধ্যে বেশ বড়সড় একটা হচ্ছে কানেকটেড থাকার দক্ষতা । সেটা ফারুকি সাহেবের আছে। তিনি দৈনিক প্রথম আলোর আনিসুল হকের সাথে যৌগ গঠন করে এই কোয়ালিটির ছাপ রেখেছেন। প্রথম আলো বাংলাদেশের এন্টারটেইনমেন্ট ইণ্ডাস্ট্রির ওপর একটা গভীর প্রভাব বিস্তার করে আছে। ফারুকি আনিসুলের সাথে গাঁটছড়া না বাঁধলে এত বার উচ্চারিত হতেন না। তিনি শুরুর দিকে দারুণ কাভারেজ পেয়েছেন। আর উঠতে বসতে আব্বাস কিয়োরোস্তামির নাম জপেটপে এক শিহরণময় পরিস্থিতি তৈরি করে ফেলেছিলেন। আমরা তো কপর্দকশূন্য জাতি, কোথাও একটু ধোঁয়া দেখলেই দাবানল বলে ঝাঁপিয়ে পড়ি। ফারুকিই তাই আমাদের বাংলার আব্বাস।

আর সকল টিভি চ্যানেলের নাট্য প্রোডিউসারদের বক্তব্য আমার জানার উপায় নেই। আপনি কোথা থেকে জানলেন, একটু সূত্র দিয়ে যান না। নাহলে মনে হবে কথাটা টুপির নিচ থেকে বের করলেন।

একটা নাম উঠতে বসতে শুনতে হলে সেটার ওপর আমরা একটা গুরুত্ব আরোপ করে ফেলি। আপনি দৈনিক প্রথম আলোতে জনৈক সোলায়মান করাতির নাম ফারুকির পাশাপাশি রেখে উচ্চারণ করতে থাকুন, দেখবেন কোনো সিনেমা নাটক না বানিয়েই সে বাংলাদেশের হাফসত্যজিৎ হয়ে গেছে। পরীক্ষা প্রার্থনীয়।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

আপনার ডালিম কুমারের পরিচালিকার নাম 'মতিয়া বানু শুকু', উনি ভাই-বেরাদার গ্রুপের কেউ না। গুগুল সার্চ থেকে জানা যায়

Matia Banu Shuku is the composer of Labonya Probha, Bonophool, Jaal, Barobhuter Keccha, Mone Mone and other popular dramas.

তিনি আরেকজন বিশেষ নামকরা পরিচালক নুরুল আলম আতিক সাহেবের সাথেও যৌথ পরিচালনায় ফিকশন বানিয়েছেন।

আরো জানা যায় তিনি রং মিস্ত্রী গ্রুপের একজন ফাউন্ডার মেম্বার।

Animesh Aich, Matia Banu Shuku, Mezbaur Rahman Sumon, Tokon Thakur, Shibu Kumar Shil and Shah Newaz Kakoli are among the founding members of the group.

নুসদিন এর ছবি

জ্বী, আমি জানি উনি ডালিম কুমার নাটকের নির্মাতা। আর এটাও জানি উনি ভাই-বেরাদার গ্রুপের কেউ না। আমি কোথাও বলিনি ডালিম কুমার নাটক ভাই-বেরাদারদের কেউ বানিয়েছে। ডালিম কুমারের প্রসঙ্গ আমি ঈদের দিন টিভিতে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ কী দেখিয়েছে সেই প্রসঙ্গে বলেছি।

হ্যাঁ তবে, ঈদের দিন এন টিভিতে রাত ১১টার খবরের পর ক্লিক নামে একটি নাটক দেখানো হয়। যেটা ভাই বেরাদরদের কারো বানানো (সব গল্প প্রায় এক হওয়ায় এখন কে কোনটা বানিয়েছে মনে রাখা আর সম্ভব হয় না।) সেখানেও ক্যামেরার ক্লোজ শট আছে এবং সেটাও কোন সুন্দর দৃশ্য না। নায়িকা স্কিন টাইট জিন্স পড়ে হেঁটে যাচ্ছে আর পরিচালক তার পেছন দিকের ক্লোজ শট দেখাচ্ছে, সেটাও ডালিম কুমারের ঘটনা থেকে ভিন্ন কিছু মনে হয়নি।

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

নিয়মিত আর তাদের নাটক দেখি না। তবে অনেকে মনে করেন নাটকে হাসান মাসুদ/কচি খন্দকার/রিফাত বা ওরকম ২/৩ টা পরিচিত কেউ থাকলেই সেটা ভাই-বেরাদার দের নাটক। আসলে তা নয়। আজকেই সার্চ করতে গিয়ে দেখলাম 'গলির মোড়ে সিডির দোকান' নামক এক নাটকে ৩ জনই আছেন কিন্তু লেখক/ পরিচালক শাহরিয়ার নাজিম জয়। এরকম আরও দেখেছি আগে।

জাহামজেদ এর ছবি

ক্লিক নাটকের পরিচালক শাফায়েত মনসুর রানা। রানার টেলিভিশন জগতে প্রবেশ ঘটে রেদোয়ান রনির রেডিও জকি নিয়ে নির্মিত একটি নাটকের স্ক্রিপ্ট লেখার মাধ্যমে। পরবর্তীতে তিনিও নাট্য পরিচালক হয়ে যান এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরিবার নামে একটি নাটক তৈরি করেন। এরপর তৈরি করেন বাড়ি বাড়ি সারি সারি নামের একটি ধারাবাহিক নাটক। এই ঈদে তার ক্লিক ক্লিক নাটকটি সম্ভবত এনটিভিতে প্রচার করা হয়।

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

নাদির জুনাইদ এর ছবি

ফারুকী মিডিয়ায় এই ভাষা প্রমোট করার অনেক আগে থেকেই ঢাকার পোলাপান এই করসি-খাইসি ব্যবহার করে আসছে, ফারুকী শুধুমাত্র সেটাকে মিডিয়ায় তুলে নিয়ে গেছেন ...

আজ থেকে তিন দশক আগে সৈয়দ সালাউদ্দীন জাকী নির্মিত 'ঘুড্ডি' ছবির মূল চরিত্রটি ঢাকা শহরেরই এক তরুণ; সেই তরুণকেও আমরা ছবিটিতে মাঝে মাঝেই ঘরোয়া ভাষায় কথা বলতে শুনেছি; আবার কখনো কখনো সে কথা বলেছে প্রমিত ভাষায়। আলমগীর কবিরের 'ধীরে বহে মেঘনা' ছবিতে ঢাকার রাস্তায় বসে থাকা যুদ্ধফেরত এক মুক্তিযোদ্ধার মনে মনে ভাবা কথাগুলিও আমরা শুনি ঘরোয়া ভাষায়। টিভি নাটকেও মাঝে মাঝে ব্যবহার করা হয়েছে ঘরোয়া ভাষা, যা পুরোপুরি কোন বিশেষ জেলার ভাষা নয়, আবার প্রমিত বাংলাও নয়। কিন্তু সেই সব ছবি বা নাটকে সেই ঘরোয়া ভাষা ব্যবহারের সমালোচনা তো কেউ করেনি কখনো, অথচ ফারুকী'র নাটক বা বর্তমান সময়ের বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা কিছু ভাষার সমালোচনা বহু মানুষ করছেন কেন?

এর কারণ প্রথমত, ফারুকীর অনেক চলচ্চিত্র এবং নাটকে এবং দেশের কিছু বিজ্ঞাপনে যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করা হয় তা মোটেও ঢাকা শহরের বহু মানুষের ব্যবহার করা কথ্য বা ঘরোয়া ভাষা নয়, তা এক অন্য রকমের জগাখিচুড়ি মেশানো ভাষা। আমার জন্ম ঢাকা শহরে, ১৯৭৪ সালে। ঢাকা শহরে বড় হয়েছি, পড়ালেখা করেছি ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরী স্কুল-ঢাকা কলেজ-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। মনে হয় না ঢাকা শহরে এমন কোন জায়গা আছে যেখানে আমাদের কোন বন্ধু নেই। এই শহরের পুরনো-নতুন সব এলাকার আনাচে-কানাচে ছোটবেলা থেকে অনেক অনেক বন্ধুর সাথে আড্ডা দিয়ে, খেলাধুলা করে বড় হয়েছি। আমার নিজ শহরের মানুষ কেমন কথ্য বা ঘরোয়া ভাষায় কথা বলে তা আমি জানি। আর আমাদের সব বন্ধুই উচ্চশিক্ষিত নয়। আমাদের কিছু কিছু বন্ধু বেশি পড়ালেখা করেনি; এমন বন্ধুও আমাদের আছে যারা কেবলই এসএসসি পাশ। কিন্তু এই কথা বলতে পারি যে আমি বা আমাদের কোন বন্ধুই যেমন সবসময় প্রমিত বাংলায় কথা বলি না, তেমনি আমরা কেউই ফারুকীর নাটকে বা আজকালকার কিছু বিজ্ঞাপনে যেমন ভাষা ব্যবহার করা হয় সেই ভাষাতেও কথা কখনো বলিনা। এবং আমার দেখা এই শহরের বহু মানুষকেও আমি এমন ভাষায় কথা বলতে শুনিনি। দু'এক জন মানুষ যে ভাষায় কথা বলে বা বলতে পছন্দ করে তেমন ভাষা টিভি নাটকে ব্যবহার করে যদি বলা হয় যে ঢাকা শহরের মানুষের ঘরোয়া বা কথ্য ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে তা অনেক মানুষ যে মেনে নেবে না, এবং এমন কাজের সমালোচনা করবে তা খুবই স্বাভাবিক।

দ্বিতীয়ত, সালাউদ্দীন জাকী বা আলমগীর কবির কাহিনীর প্রয়োজন অনুযায়ী মানুষের ঘরোয়া ভাষা তাঁদের ছবিতে ব্যবহার করেছেন, কিন্তু তাদের কাজে প্রতিনিয়ত এমন আটপৌরে ভাষা ব্যবহার করে এমন ভাষায় কথা বলাকে মানুষের কাছে ফ্যাশনে পরিণত করেননি। গণমাধ্যমের জনপ্রিয় চরিত্ররা যেমন আচরণ করেন, তাদের পোষাক এবং কথা বলার ধরন সবই বহু দর্শক বিশেষ করে কমবয়সীরা অনুকরণ করতে শুরু করে। ফারুকী'র নাটক আর নানা বিজ্ঞাপন আজ এক জগাখিচুড়ি মেশানো ভাষাকে জনপ্রিয় করে তুলছে অনেক মানুষের কাছে। ক'বছর আগে ঢাকা'র এক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেয়ার সময় যখন ছাত্রছাত্রীদের অন্য একজন শিক্ষকের ক্লাসের কথা জিজ্ঞেস করেছি, তখন একজন ছাত্র বলে উঠলো ' জ্বি স্যার, ম্যাডাম তো একদম ঝাক্কাস!' আমি তাকিয়ে থাকলাম অল্পবয়সী ছাত্রটির দিকে; ছাত্রটির মুখের ভাবে দুষ্টুমি করার কোন ছাপ দেখলাম না। সে যেন ধরেই নিয়েছে এভাবে এমন শব্দ আজ শ্রেণীকক্ষে বসে শিক্ষকদের সম্পর্কেও ব্যবহার করা যায়, তা কোন অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়। টিভি নাটক এবং বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা নীচুমানের এই সব শব্দ আজ তাই আমাদের সমাজে অনেক তরুণ-তরুণীর কথাবার্তায় জায়গা করে নিচ্ছে। গণমাধ্যমের ব্যাপক প্রচারের মধ্য দিয়ে আজ এমন সস্তা ভাষাকে সমাজে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। কখনো কখনো ব্যবহার করা হচ্ছে ভুল ইংরেজি; ফারুকী'র 'মেড ইন বাংলাদেশ' ছবিতে আধুনিক বেশভূষার এক তরুণ বলে 'একটা ক্যাওয়াজ হইসে এইটা জানতাম'। Chaos শব্দের উচ্চারণ কী 'ক্যাওয়াজ'? আর যতদূর মনে পড়ে 'থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার' ছবিতে আরেক তরুণ বলে 'কোন্ অ্যাপার্টমেন্ট টা 'চুজ' হয় দ্যাখ' এ জাতীয় একটি সংলাপ। কাজেই এমন ভাষা গণমাধ্যমে আকর্ষণীয় ভাবে প্রদর্শন করা হলে তার সমালোচনা এবং বিরোধিতা করাটা জরুরি হয়ে পড়ে।

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লেখক কমলকুমার মজুমদার অত্যন্ত ভাল ফরাসি জানতেন। ভারতীয় সরকারী আমলাদের ফরাসি ভাষাও শেখাতেন তিনি। এবং অন্যদের ফরাসি ভাষা শেখাবার সময় খুবই গুরুত্ব দিতেন যথাযথ ভাবে ব্যাকরণ মেনে চলার প্রতি। আর কমলকুমার মজুমদার বাংলা লেখার সময়ও ব্যবহার করেছেন অত্যন্ত গুরুগম্ভীর এবং কঠিন ভাষা। অথচ ব্যক্তিগত জীবনে কমলকুমার তার পরিচিত জনদের সাথে কথা বলতেন অতি আটপৌরে ভাষায়। কিন্তু একথাও বলতেন সাহিত্য রচনার মধ্য দিয়ে আমি যোগাযোগ করি দেবী সরস্বতী'র সাথে; আর দেবীর সঙ্গে তো আর যেমন-তেমন ভাষায় কথা বলা যায় না।

নাটক-চলচ্চিত্র-বিজ্ঞাপন এর মধ্য দিয়ে অতি সস্তা, মানহীন যেমন-তেমন ভাষা প্রচার করে তা দেশের বহু মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে তোলার ক্ষতিকর দিক এই সব নির্মাতা এবং তাদের সমর্থক ও পৃষ্ঠপোষকদের কে বোঝাবেন যদি তাদের নিজেদের তা বোঝার ক্ষমতা তৈরি না হয়?

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

সৈয়দ সালাউদ্দীন জাকী নির্মিত 'ঘুড্ডি' আলমগীর কবিরের 'ধীরে বহে মেঘনা' নিয়ে আপনি আসছেন ১৯৯০ সালে জন্ম নেয়া ২০ বছরের তরুনের সাথে কমিউনিকেট করতে?


টিভি নাটক এবং বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা নীচুমানের এই সব শব্দ আজ তাই আমাদের সমাজে অনেক তরুণ-তরুণীর কথাবার্তায় জায়গা করে নিচ্ছে।

হুমম বেশ ধরতে পারছি সকল উন্নত দেশের মুললধার RAP সংগীত শিল্পীরা অচ্ছুত। কারন তারা নীচুমানের শব্দ নিয়ে কাজ করে।

কিন্তু একথাও বলতেন সাহিত্য রচনার মধ্য দিয়ে আমি যোগাযোগ করি দেবী সরস্বতী'র সাথে; আর দেবীর সঙ্গে তো আর যেমন-তেমন ভাষায় কথা বলা যায় না।

- বেশ সেল্ফ এক্সপ্লানেটরি। এটা যদি আপনার হাইট অভ ইন্সপিরেশন হয় তাহলে বলার নাই আর তেমন কিছুই।

নাদির জুনাইদ এর ছবি

যে কোন দেশের ২০ বছরের রুচিশীল তরুণরাই নিজ দেশের বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতাদের চলচ্চিত্র সম্পর্কে আলোচনায় আগ্রহ পেতে এবং অংশ নিতে সম্পূর্ণ সক্ষম। বাংলাদেশের রুচিশীল তরুণদের এর ব্যতিক্রম বলে মনে করার কোন যুক্তিযুক্ত কারণ আছে কী? আমাদের দেশের ২০ বছরের রচিশীল তরুণদের সাথে জহির রায়হান, আলমগীর কবির, সৈয়দ সালাউদ্দীন জাকী'র চলচ্চিত্র নিয়ে কেন কথা বলা যাবে না? আপনি কী বলতে চান ১৯৯০ সালে জন্ম নেয়া বাংলাদেশী তরুণ-তরুণীদের আর 'স্টপ জেনোসাইড', 'জীবন থেকে নেয়া' 'ধীরে বহে মেঘনা' বা 'ঘুড্ডি' পছন্দ হওয়া সম্ভব না? সব তরুণ-তরুণীরাই কেবল গতানুগতিক, ফর্মুলা-ভিত্তিক চলচ্চিত্রের দর্শক নয়। যারা হালকা ছবির ভক্ত তারা সবসময় হালকা ছবিই দেখবে। কিন্তু তাদের দিয়ে দেশের সব কমবয়সীদের বিচার করা যায় না।

হিপ হপ মিউসিক এর কিছু দিক বিশেষ করে গ্যাংস্টা র‌্যাপ এ অনেক আক্রমণাত্বক শব্দ ব্যবহার করা হয়, এবং মনে করার কোন কারণ নেই যে তার জন্য সেখানে তাদের কোনই সমালোচনা করা হয় না। বিভিন্ন গোষ্ঠী এজন্য তাদের সরাসরি সমালোচনা করছে; আর উন্নত দেশের তরুণ-তরুণীদের ভাষায়ও গণমাধ্যমের কারণে অনেক নীচু মানের শব্দই চলে এসেছে, আর যখন তারা সেই সব শব্দ ব্যবহার করে তখন তারা সেই সমাজে প্রশংসিত হয় না। তবে র‌্যাপ সঙ্গীতকাররা সমাজের অনেক ক্ষমতাশালী প্রতিষ্ঠানের সমালোচনাও করছেন, আর সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতির জোরালো, বাস্তবধর্মী সমালোচনা আমাদের দেশের মুনাফালোভী চলচ্চিত্রকারদের কাজে কতখানি দেখা যায়? আসল কথা হলো কোন দুর্বল দিককে সমালোচনা করার প্রয়োজন কে উপেক্ষা করা যায় না, তা সে উন্নত-অনুন্নত যে দেশেই হোক না কেন।

কমলকুমার মজুমদার যিনি ক্রমাগত আটপৌরে ভাষায় কথা বলতেন তাঁর এমন একটি মন্তব্য একটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। আর এমন একটি মন্তব্যের গুরুত্বটি যারা অনুধাবন করতে সক্ষম হবেন না তাদেরকে এই উদাহরণের ব্যাপারে আসলেই আর কিছু বলার নেই।

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

পশ্চিমের উদাহরন থেকে দেখা যায় এমি এওয়ার্ড পাওয়া আমেরিকার মূলধারার প্রায় প্রতিটা টিভি সিরিয়ালের(The Wire, Sopranos, Six feet under) ফা_/মাদার ফা__(বিপার সহ/ছাড়া) জাতীয় শব্দ চয়ন আছে। বাংলাদেশে এখনো চু_/তোর মায়রে __ ব্যবহার হয় না, যদিও সে সকল শব্দ আমরা বন্ধু/বান্ধবী মহলে ব্যবহার করি। বাস্তবতার সাথে টিভি-ফিকশনের এ দুরত্ব দিনে দিনে কমবে। পিউরিটান মনোভাব দিয়ে পপুলার কালচার নির্মান হয় না।

অফ টপিক: আমেরিকা/ইউ কের কোন সিরিয়াল আপনি দেখেন?

নাদির জুনাইদ এর ছবি

একবার বলছেন আমাদের দেশের ২০ বছরের তরুণদের সাথে কেন আলমগীর কবির আর সালাউদ্দীন জাকী'র ছবি নিয়ে কথা বলছি, আর এখন পশ্চিমী কিছু টিভি সিরিয়ালে আপত্তিকর, অশালীন শব্দ ব্যবহারের প্রসঙ্গকে টেনে আনছেন বাংলাদেশের গণমাধ্যম অনুষ্ঠানের ভাষা সংক্রান্ত আলোচনায়! আপনার বক্তব্যগুলি তাই মোটেও জোরালো বা গ্রহণযোগ্য কোন কথার ধারে কাছেও যেতে পারছে না। আমেরিকার সমাজ, তাদের সংস্কৃতি, তাদের কাজ আর ভাবনার ধরন দিয়ে আপনি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সৃষ্টিকে বিচার করবেন? সেই বিচারে যে পদে পদে গলদ থেকে যাবে সেটা বুঝতে তো আর অসুবিধা হয় না।

আর গণমাধ্যমে সামাজিক-সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে অশালীন আপত্তিকর এবং বেমানান বিভিন্ন শব্দ ব্যবহারের বিরোধিতা করা কোন পিউরিটানসুলভ আচরণ নয়, বরং একটি দেশের গণমাধ্যম অনুষ্ঠানকে তুচ্ছ, তরল, অনুকরণসর্বস্ব হওয়া থেকে রক্ষা করার জন্যই এই ধরনের প্রবণতাকে প্রতিরোধ করতে হয়। মার্কিনী সিরিয়ালে গালি দেয়া দেখালেই তো আর আমাদের নাটকেও তা দেখাবার জন্য আমাদের উদগ্রীব হওয়ার দরকার নেই। আর এই সমাজে কিছু মানুষ কেমন করে গালি ব্যবহার করে আর আটপৌরে ভাষায় কথা বলে তা দেখানোই কী সমাজের বাস্তবতা তুলে ধরার একমাত্র উপায় না কী? তাহলে তো সারা বিশ্বের পপুলার কালচার-ই গালি গালাজে ভরে উঠতো।

আমাদের সমাজের কতো বাস্তব সমস্যা যেমন দারিদ্র, দূর্নীতি, বেকারত্ব, আমলাতান্ত্রিক শোষণ, স্বজনপ্রীতি, সন্ত্রাস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মানহীনতা, মানুষের ধর্মীয় অন্ধত্ব, ছাত্ররাজনীতির নামে মাস্তানি, মানুষের মূল্যবোধের অবক্ষয়, মধ্যবিত্তের অর্থনৈতিক টানাপোড়েন, দুর্বলের ওপর অত্যাচার, সমাজে দ্রুত বেড়ে চলা অনুভুতিহীনতা, রাজনীতির কলুষতা এই সব দিককে ভিত্তি করে সরাসরি বা এমন কী রূপক ধর্মী নাটক-চলচ্চিত্র নির্মাণেরও কোন চেষ্টা চোখে পড়ে না, আর কিছু মানুষ কেমন করে গালি আর হালকা ভাষা ব্যবহার করে তা নাটকে দেখিয়ে বাস্তবতা নির্দেশ করার ব্যাপারে জোর গলায় কথা বলা হচ্ছে! সমাজের রূঢ় বাস্তবতা কী এবং কীভাবে তা নাটক-চলচ্চিত্রে দেখিয়ে মানুষকে সচেতন করা হয় তা ভালভাবে বোঝার চেষ্টা করুন এবং ভাবুন কিছু মানুষের গালিগালাজ নয়, বরং আমাদের এই রূঢ় বাস্তবতার সাথে টিভি নাটকের দূরত্ব কীভাবে দিনে দিনে কমানো যায়। কোন্ বাস্তবতা আমাদের নাটকে উঠে আসা জরুরি তা উপলব্ধি করাটা তো কঠিন কোন কাজ নয়।

গালি গণমাধ্যমে, চলচ্চিত্রে দেখানো যায় তবে তা উপযুক্ত ভাবে হতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে গণমাধ্যমে প্রচারিত অনুষ্ঠানের প্রভাব অনেক শক্তিশালী, এবং এই প্রভাব যেন নেতিবাচক না হয়। 'ব্যান্ডিট কুইন' ছবিতে ডাকাত সর্দার বাবু গুজ্জরের জন্য গালিসর্বস্ব সংলাপ ব্যবহার করা যায়, কিন্তু বাংলাদেশে আপনার কথা অনুযায়ী আপনারা সে সকল অশালীন শব্দ বন্ধু/বান্ধবী মহলে ব্যবহার করেন, সেসব শব্দ সমাজের 'কিছু মানুষের আচরণ' (অবশ্যই এই দেশের সবাই বন্ধু/বান্ধবী মহলে এমন শব্দ ব্যবহার করেন না) দেখাবার জন্য আমাদের নাটক-চলচ্চিত্রে খুব স্বাভাবিকভাবে এবং নিয়মিত দেখাবার কোন প্রয়োজন নেই। এবং মার্কিনী দেশে এমন সব আপত্তিকর শব্দ টিভি সিরিয়ালে নিয়মিতভাবে দেখানো হলে সেখানে যদি মানুষের সমস্যা নাও হয়, আমাদের দেশের টিভি সিরিয়ালে এমন শব্দের নিয়মিত প্রয়োগ দেখানো চলে না কারণ বাংলাদেশ আর আমেরিকার সমাজ এক নয়। আমেরিকার লেন্স দিয়ে বাংলাদেশ না দেখে আগে এই সহজ তথ্যটা অনুধাবনের চেষ্টা করুন।

আর পপুলার কালচার এর বিভিন্ন তত্ত্বের কোথায় দেখেছেন যে লেখা আছে সব টিভি সিরিয়াল মাত্রই পপুলার কালচার? পপুলার কালচার হতে হলে অনেক উপাদানের প্রয়োজন হয়, গণমাধ্যমে প্রদর্শিত সব কিছু্‌ই পপুলার কালচার নয়। লো কালচার বা কিশ্ (Kitsch) এর সাথে পপুলার কালচার কে গুলিয়ে ফেললে চলে না। Six Feet Under, The Wire ও The Sopranos এ প্রশংসা করার মতো অনেক দিকই আছে এবং পপুলার কালচার হিসেবেও এই টিভি সিরিজ গুলির বিশ্লেষণ সফলভাবেই করা যায়। কিন্তু আমাদের পপুলার কালচার কে, আর শুধু আমাদের কেন ভারতের, মালয়েশিয়ার, জাপানের, সেনেগালের বা ইরানের পপুলার কালচারকে তো আর এই মার্কিনী টিভি সিরিজগুলিতে প্রদর্শিত বিষয়বস্তুর মাপকাঠিতে বিচার করলে চলে না। পপুলার কালচার কে ব্যাপক গণমানুষের কাছে বোধগম্য ও উপভোগ্য হতে হয়, কাজেই কোন স্থানের মানুষের বহু দিন ধরে চলে আসা মানসিকতার সাথে খাপ খাওয়ানোর প্রশ্নটা এই ক্ষেত্রে জরুরি। ট্র্যাডিশন এর প্রশ্নটা পপুলার কালচার-এ খু্‌বই গুরুত্বপূর্ণ। আর এই কারণেই দেখা যায় কোরিয়াতে মার্কিনী ঢংয়ে নির্মিত টিভি সিরিয়ালগুলির চেয়ে কনফুসিয়ান ধারণাকে প্রাধান্য দেয়া নাটক-চলচ্চিত্র বেশি গ্রহণযোগ্য হচ্ছে, বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়াতে রামায়ণ, মহাভারতের কাহিনী ভিত্তিক পুতুল নাচ সব নাগরিকের কাছেই যুগের পর যুগ ধরে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ধর্মের চেয়েও শক্তিশালী হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে ট্র্যাডিশন। কাজেই পপুলার কালচার নির্মাণ ও সংরক্ষণ করতে হলে আগে এর অন্তর্নিহিত অনেক বিষয় বুঝতে হবে। আর তখনই স্পষ্ট হয়ে উঠবে কী পপুলার কালচার আর কী মুনাফালোভী মানহীন সস্তা গণমাধ্যম অনুষ্ঠান। গণমাধ্যমে বাস্তবতা প্রদর্শনের সঠিক পদ্ধতিটি উপলব্ধি করাও তখন সহজ হবে।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

সহমত । খুব ভালো পয়েন্ট উত্থাপন করসেন। সম্পূরক হিসাবে, উত্তরাধুনিকতার নামে লেট ক্যাপিটালিজমকে 'জাস্টিফাই' করার বুদ্ধিবৃত্তিক প্রবণতাকে জেমসন যেভাবে দেখায়া গেসেন, সেই দিকেও দৃষ্টি ফেলতে চাই। (পাঠক নামের এই মন্তব্যদাতাই বলসেন তিনি উত্তরাধুনিকতাকে টানসেন, কারণ তা কেন্দ্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। অথচ তার উত্তরাধুনিকতা ডাইরেক্ট কেন্দ্র - 'আমেরিকা-ইউকে' - থেকেই উৎপাদিত হয় দেখে বিস্ময় বোধ করতেসি।)


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

কেন্দ্ররে (একটু)প্রশ্নবিদ্ধ কইরা কেন্দ্রের কালচারাল একটা ডাইমেনশনরে পছন্দ করন যাইব না? নাকি পছন্দ/অপছন্দও অংক মাইপা করুম? আপনি জেমসন পড়েন, আমি ডাইভারসিটিরে এম্ব্রেস করলাম। ব্লাডি কাপিটালিজম কইয়া বেনসন/কোকাকোলা/স্মিরনফ খাওয়ার টাইমে আমারে স্মরনে নিয়েন।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

আমোদ পাইলাম। ভাই, পয়সা দিয়া কিনা মালে আইডিওলজি ফলানো যায় না। আপনি ডাইভার্সিটি বইলা ডাইভার্সিটিকে এম্ব্রেস করলেন, এইটা একটা পিওর আইডিওলজিকাল স্ট্যান্ড। আশা করি, আপনার বেনসন/কোকাকোলা/স্মিরনফ মাগনা আসে। মাগনা পাইলে, আমারেও স্মরণ কইরেন ওস্তাদ।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

জাহামজেদ এর ছবি

আপনার বেনসন/কোকাকোলা/স্মিরনফ মাগনা আসে। মাগনা পাইলে, আমারেও স্মরণ কইরেন ওস্তাদ।

(গুড়)

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

পাঠক [অতিথি] এর ছবি


মার্কিনী সিরিয়ালে গালি দেয়া দেখালেই তো আর আমাদের নাটকেও তা দেখাবার জন্য আমাদের উদগ্রীব হওয়ার দরকার নেই।

মার্কিন সিরিয়ালের কপি বলিনি, স্পষ্ট করে বলা হয়েছে 'আমরা' হর হামেশা চু_/তোর মায়রে চু_ ব্যবহার করি। সেটার প্রতিফলন আমার দেশের টিভিতেও আসবে। সেটা 'বাস্তবতা' আনার একমাত্র উপায় কি ১০০ মাত্র উপায় সে বিষয়ে অনর্থক তর্কে যাচ্ছি না।

আমাদের সমাজের কতো বাস্তব সমস্যা যেমন দারিদ্র, দূর্নীতি, বেকারত্ব, আমলাতান্ত্রিক শোষণ, স্বজনপ্রীতি, সন্ত্রাস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মানহীনতা, মানুষের ধর্মীয় অন্ধত্ব, ছাত্ররাজনীতির নামে মাস্তানি, মানুষের মূল্যবোধের অবক্ষয়, মধ্যবিত্তের অর্থনৈতিক টানাপোড়েন, দুর্বলের ওপর অত্যাচার, সমাজে দ্রুত বেড়ে চলা অনুভুতিহীনতা, রাজনীতির কলুষতা এই সব দিককে ভিত্তি করে সরাসরি বা এমন কী রূপক ধর্মী নাটক-চলচ্চিত্র নির্মাণেরও কোন চেষ্টা চোখে পড়ে না, আর কিছু মানুষ কেমন করে গালি আর হালকা ভাষা ব্যবহার করে তা নাটকে দেখিয়ে বাস্তবতা নির্দেশ করার ব্যাপারে জোর গলায় কথা বলা হচ্ছে!

বেশ 'আনাড়ি' ভাবে হলেও ভাই বেরাদার গ্রুপের অনেক নাটকেই দূর্নীতি, বেকারত্ব, স্বজনপ্রীতি, সন্ত্রাস, মানুষের ধর্মীয় অন্ধত্ব, মানুষের মূল্যবোধের অবক্ষয়, মধ্যবিত্তের অর্থনৈতিক টানাপোড়েন, দুর্বলের ওপর অত্যাচার, সমাজে দ্রুত বেড়ে চলা অনুভুতিহীনতা, রাজনীতির কলুষতা এসব বিষয় এসেছে উদাহরন ৪২০, মুড়ির টিন, ওয়েটিং রুম, নো ম্যানস ল্যান্ড, স্পার্টাকাস ৭১, উপসংহার, পারাপার, আয়েশামঙ্গল, কোথায় পাবো তারে, প্রত্যাবর্তন, লুকোচুরি ইত্যাদি। তারা ছাড়া দেশের কোন পরিচলাকেরা আরও ম্যচিউরড ভাবে এতোগুলো বিষয় ছুঁয়েছে সেটার উদাহরণ পেলে
ভালো লাগত। আর উপরোক্ত বিষয়গুলা আর গালি-দিয়ে-বাস্তবতা-নির্দেশক নাট্য নির্মান কি মিউচুয়ালি এক্সক্লুসিভ নাকি? আর আপনি কি নিয়মিত টিভি নাটক দর্শক? বলুন তো দেখি বাংলাদেশে গত দশ বছরের সেরা ১০ টা নাটকের নাম আর পরিচালকের নাম।

আমেরিকার লেন্স দিয়ে বাংলাদেশ না দেখে আগে এই সহজ তথ্যটা অনুধাবনের চেষ্টা করুন

সচলায়তন যারা পড়তে আসে তারা সবাই এসব বেসিক (ওরিয়ান্টিলেজম/সাব-অল্টার্ন কালচার/কালচারাল ইনভেশন/মিডিয়ার কোর্পেরেটাইজেশন/মোনোপলি) ইত্যাদি জেনেই আসে বলে প্রতিয়মান হয়। সো নো মোর টিচিং অন দ্যাট ইস্যু।


আর এই কারণেই দেখা যায় কোরিয়াতে মার্কিনী ঢংয়ে নির্মিত টিভি সিরিয়ালগুলির চেয়ে কনফুসিয়ান ধারণাকে প্রাধান্য দেয়া নাটক-চলচ্চিত্র বেশি গ্রহণযোগ্য হচ্ছে, বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়াতে রামায়ণ, মহাভারতের কাহিনী ভিত্তিক পুতুল নাচ সব নাগরিকের কাছেই যুগের পর যুগ ধরে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ধর্মের চেয়েও শক্তিশালী হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে ট্র্যাডিশন।

সমস্য হচ্ছে বুকিশ হতে হতে কারও 'কমন সেন্সে' লোপ পায়। ভিয়েতনাম/ইন্দোনেশিয়া/কোরিয়ার বড় একটা আরবান ইয়ুথ আপনার সেই কনফুসিান/রামায়ন ইন্সপায়ারড কালচারের চর্চার আসে পাশ দিয়ে যায় না যতটা আপন ভাবে যত্ন করে হিপহপ/টেকনো/রক বানায়/শোনে, যেমন বাংলাদেশে হানিফ সংকেতের 'ইত্যাদি' বা গিয়াসউদ্দিন সেলিমের 'মনপুরা' শহুরে-মধ্যবিত্তের-মেইনস্ট্রিম হতে পারে কিন্তু আরবান ইউথদের বড় একটা অংশকে টানে না যতটা টানে আর্টসেল বা ক্রিপটিক ফেইটের কনসার্ট। লালন/রবি/নজরুল/চর্যাপদ/গম্ভিরা/ভাটিয়ালি/মুরশিদি/মারফতি সহ সকল ইনডিজিনাস ইন্সপিরেশন নিয়ে যত খুশী অডিও-ভিসুয়াল মিডিয়াম ভরায় ফেলেন। সেটা আজকের তর্কের বিষয় না। বিষয় সহজ, মার্কেট সেগমেন্টেশন, প্রডাক্ট ডিফারেন্সিয়েশন। আমাদের আর্টসেল ১০ টা গান গেলে দেশীয় ইন্সপরেশনে হয়ত ২ টা গান থাকতে পারে বাট ৮ টা গানে ড্রিম থিয়েটার/পিংক ফ্লয়েডের ইন্পিরশন যথেষ্ট স্পষ্ট। অডিও বাজারে ডিফারেন্সিয়শন থাকবে, স্যাটেলাইট টিভিতে ভারতীয় এমটিভি চলবে কিন্তু ভিডিও বাজারে ট্রডিশানালিস্টদের জয়গান থাকবে কেন? সেটার পেছনে কী মহান যুক্তি? সেটাও ডিসরাপশনের মধ্য দিয়ে যাবে। পরিবর্তন অনিবার্য, আপনার পছন্দ হোক বা না হোক। এ বিষয়ে উদারনৈতিক অবস্হান ছাড়া আর কোন বিকল্পের যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছি না।

অ ট: আপনার পছন্দের টিভি সিরিজের নাম বল্লেন না?

নাদির জুনাইদ এর ছবি

আপনার কথায় যদি মনে হয় আপনি আমেরিকার লেন্স দিয়ে বাংলাদেশ দেখছেন, তাহলে সেই দিকটি নির্দেশ করতে বাধ্য হবো। আর যদি আপনি যেসব দিক উল্লেখ করেছেন যথা ওরিয়েন্টালিজম, সাবঅল্টার্ন কালচার, কালচারাল ইনভেশন, মিডিয়ার মোনোপলি এসব দিক সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল হন, তাহলে আপনার বক্তব্য এমনভাবে প্রকাশ করুন যেন এসব দিক বিশ্লেষণের আলোকে আপনার বক্তব্য যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য হয়। আর বক্তব্যে অসঙ্গতি থাকলে তা নিয়ে কথা বলা হবেই, সেটা আপনার 'টিচিং' মনে হলে তো কিছু করার নেই।

মার্কিন সিরিয়ালের কপি বলিনি, স্পষ্ট করে বলা হয়েছে 'আমরা' হর হামেশা চু_/তোর মায়রে চু_ ব্যবহার করি। সেটার প্রতিফলন আমার দেশের টিভিতেও আসবে। সেটা 'বাস্তবতা' আনার একমাত্র উপায় কি ১০০ মাত্র উপায় সে বিষয়ে অনর্থক তর্কে যাচ্ছি না।

এই বিষয়ে তর্ক আপনার কাছে অনর্থক মনে হচ্ছে এখন, কিন্তু আসল কারণ হচ্ছে এটা স্পষ্ট যে এইসব 'কতিপয়' লোকের লাইফস্টাইল বা গালিগালাজ ব্যবহারজনিত বাস্তবতা দেখানোই তো আর আমাদের দেশের মূল বাস্তবতা, বেশির ভাগ মানুষের বাস্তবতা দেখানো নয়। আমার আগের লেখাটির চার নম্বর প্যারাগ্র্রাফটি আবার পড়ুন। গণমাধ্যমের শক্তিশালী প্রভাব, তা নেতিবাচক হলে কী সমস্যা হতে পারে, আর আমেরিকায় যা করা যায় তা বাংলাদেশের সামগ্রিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক ভিন্নতার জন্যই করা যায় না, আর আমাদের দেশের নাটক-চলচ্চিত্রেও গালি কীভাবে আসতে পারে তার উপযুক্ত পদ্ধতি যেন সেই গালি দেয়ার ব্যাপারটা শহর-মফস্বল-গ্রামের তরুণ-তরুণীদের কাছে ফ্যাশনে পরিণত না হয় এইসব নিয়ে সেখানে কথা বলেছি। এইসব দিক উপেক্ষা করে কিছু লোকের গালিগালাজ-এর প্রতিফলন টিভিতে আনার ব্যাপারে ব্যগ্রতা দেখানো তো এই নির্দেশ করে যে মিডিয়ার সামাজিক দায়িত্ব এবং একটি দেশের সামাজিক-সাংস্কৃতিক ভিন্নতাকে মাথায় রেখে কথা বলছেন না।

অবশ্য আপনার কথা যুক্তিহীন আর দুর্বল তো হচ্ছে শুরু থেকেই। আপনি বার বার 'কিছু' লোকের উদাহরণ দিয়ে পুরো একটি গোষ্ঠীকে বিচার করছেন। আপনার কথা অনুযায়ী এই দেশের ২০ বছরের তরুণদের কাছে আলমগীর কবির, সালাউদ্দীন জাকীদের কাজ কোন অর্থই বহন করে না, আর তাই তাদের সাথে এদের কাজ নিয়ে কমিউনিকেট করা যাবে না। এই দেশের ২০ বছরের তরুণদের ওপর কতো বড় গবেষণা আপনি করেছেন যে তার ভিত্তিতে এমন একটি মন্তব্য করলেন? তারপর বলছেন বন্ধু/বান্ধবী মহলে বিভিন্ন অশালীন ভাষা ব্যবহারের কথা। দেশের সব শহরের সবাই নিয়মিত বন্ধু/বান্ধবী মহলে এমন শব্দাবলী ব্যবহার করে কথা বলে? আমার জন্ম বেড়ে ওঠা ঢাকা শহরে, গ্রামের সাথে সম্পর্ক বিহীন ভাবে বড় হয়েছি, জীবনে একটি রাতও এখন পর্যন্ত কোন গ্রামে কাটানো হয়নি, এই শহরে আমাদের অগণিত বন্ধুবান্ধব, সবাই স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়ালেখা করেছি এই ঢাকাতে। ঢাকার 'আরবান ইয়ুথ' এর পরিচয় কী তা আমি জানি। আর সেই জানার ভিত্তিতে নিশ্চিতভাবে বলতে পারি 'কতিপয়' তরুণ-তরুণীর অভ্যাস দিয়ে দেশের আরবান ইয়ুথদের বড় একটা অংশ সম্পর্কে কোন সিদ্ধান্ত টানবেন না। আপনি হরহামেশা এই কাজটি করছেন আপনার মন্তব্যগুলিই তাই প্রমাণ করে।

দেশের আরবান ইয়ুথরা বা অন্য যে কেউ ড্রিম থিয়েটার বা পিংক ফ্লয়েড, মেটালিকা বা প্যানটেরা, মরবিড অ্যানজেল বা ডার্ক অ্যানজেল, জুডাস প্রিস্ট বা ব্ল্যাক সাবাথ শুনলেই এমন কী মনে করার কোন কারণ আছে যে লালন বা রবীন্দ্র সঙ্গীত তারা পছন্দ করেন না বা শোনেন না? আর্টসেল যেই ধারার কাজ করছে, সেই ধারার প্রভাব তাদের উপর থাকবে। যারা আর্টসেল পছন্দ করেন করবেন, কিন্তু তার মানে তো এই নয় যে যারা আর্টসেল এর কনসার্ট-এ যান তারা কখনোই কোন লালন গীতি বা নজরুল সঙ্গীতের অনুষ্ঠানে যান না। দুই একজন এর অভ্যাস দিয়ে একটা পুরো গোষ্ঠী কে বিচার করলে চলবে না। আর অডিও-ভিডিও সব ক্ষেত্রেই মর্ডানিটির প্রতিফলন আসবে, তা স্বাভাবিক কিন্তু মনে রাখতে হবে এই মর্ডানিটি যেন কেবল গুটিকয়েক মানুষের অভ্যাসজনিত তথাকথিত 'মর্ডান' লাইফস্টাইলের প্রতিফলন না হয়ে যায়।

আর যতোই 'মর্ডানিটি' 'আরবানিটি' নিয়ে কথা বলি না কেন 'ট্রাডিশন' আর 'রুট' খুবই শক্তিশালী আর অপরিহার্য, এবং দেশের বেশির ভাগ মানুষের 'সাইকি', তাদের 'ওয়ার্ল্ড ভিউ' তে এর প্রভাব অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। এজন্যই কোরিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ সহ আরো বহু দেশে বহু শহুরে তরুণ পাশ্চাত্যের আকর্ষণীয় সাংস্কৃতিক উপাদান গ্রহণ ও চর্চার পাশাপাশি (আপনার বর্ণিত হিপহপ/টেকনো/রক) নিজ দেশীয় সাংস্কৃতিক উপাদানকেও কোনভাবেই উপেক্ষা করছে না এবং দেখা যায় একটি দেশের বেশির ভাগ মানুষ কিন্তু নির্ভর করছে সেই দেশের নিজস্ব সংস্কৃতিজনিত মূল্যবোধের উপরই, এই মূল্যবোধ বিলীন হচ্ছে না। যতোই বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক উপাদানের প্রভাব আজ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ুক না কেন। দু'এক জন হয়তো ভিন্ন মানসিকতার হতে পারেন, কিন্তু তাদের মানসিকতা দিয়ে তো আর তারা একটি দেশের অধিকাংশ মানুষের মনোভাব বা মূল্যবোধ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। আর পপুলার কালচার, ইন্ডিজেনাস কালচার, মিডিয়ার সাম্রাজ্যবাদ এই সব বিষয়ের গবেষণায় বার বার সেটাই দেখা যাচ্ছে।

কাজেই যদি ওইসব গালিগালাজ বা কিছু বিশেষ ঢংয়ের আটপৌরে কথাবার্তা আমাদের দেশের গণমানুষের মূল্যবোধ, চিন্তাধারা ও স্বাভাবিক অভ্যাসের অংশ হয়ে যায়, কেবল তাহলেই তা স্বাভাবিকভাবে আমাদের গণমাধ্যমে প্রতিফলিত হতে পারে। কিন্তু তা হয়নি এবং হচ্ছে না সেটা আমরা দেখতেই পাচ্ছি; এই দেশের ক'জন মানুষের জীবন কিছু প্রিভিলেজড্ আরবান ইয়ুথদের লাইফস্টাইলের মতো? কাজেই বেশির ভাগ মানুষকে তো আর 'কতিপয়' লোকের অভ্যাস হজম করতে বাধ্য করার দরকার নেই, সেই প্রশ্নই ওঠে না। আর 'ভাই বেরাদর' গ্রুপের আপনার নিজেরই ব্যবহার করা 'আনাড়ি' ভাবে সামাজিক বাস্তবতা দেখানোর উদাহরণ তো গ্রহণযোগ্য হবে না। যা 'আনাড়ি' তা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবো কেন? আর 'ভাই বেরাদর' গ্রুপ এর কাজ যদি উদাহরণ পাওয়ার দাবী রাখে তাহলে আর সামাজিক সমস্যা প্রদর্শনে তাদের কাজ 'আনাড়ি' হয় কেন? সামাজিক সমস্যা তুলে ধরায় এই আনাড়িত্বের নমুনা কী তা তো ভাই বেরাদরদের রোল মডেলের 'ব্যাচেলর', 'মেড ইন বাংলাদেশ' আর 'থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার' ছবি দেখেই বুঝেছি। হয়তো জিজ্ঞেস করবেন কেন এখানে ব্যাখ্যা করলাম না এই সব ছবির দু্র্বলতাগুলি। কারণ সচলায়তন, এবং দেশে প্রকাশিত চলচ্চিত্র বিষয়ক বই এবং বাংলা-ইংরেজি জাতীয় দৈনিকে এই নির্মাতার বিভিন্ন ছবির দুর্বলতা নিয়ে ইতিমধ্যেই আমি আমার বক্তব্য স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছি। অবশ্যই ভাই বেরাদরদের কিছু নাটকে এই সমাজে মানুষের অনুভুতিহীনতা নির্দেশ করার প্রবণতাটি প্রশংসনীয়। কিন্তু 'নাটক-চলচ্চিত্র' সিরিয়াস কাজ, সবসময় তা বিনোদনধর্মী নয়। আর সিরিয়াস সামাজিক সমস্যা নিয়ে কাজ করতে হলে তার বিশ্লেষণ, উপস্থাপনে অনেক গভীরতার আর পরিশ্রমের ছাপ থাকতে হয়, আর অল্পেই সীমাবদ্ধ থাকলে বা খুব সহজেই তৃপ্ত হলে চলে না। অল্পেই সীমাবদ্ধ থাকা, আর সহজে তৃপ্ত হয়ে যাওয়ার প্রবণতাই কাজকে 'আনাড়ি' করে তুলতে ভূমিকা রাখে।

আর আরেকটি কথা, অফ টপিক আলোচনায় আমার আগ্রহ নেই। আপনার অফ টপিক প্রশ্ন নিয়ে তাই কথা বলছি না।

অকুতোভয় বিপ্লবী এর ছবি

আমি রক, হার্ড্রক, হেভি মেটাল, থ্র্যাশ মেটাল, জ্যায, ব্লুয্, অপেরা, ফিউশন সব শুনি, পছন্দ করেই শুনি, বুঝেই শুনি, যতদূর সম্ভব জানার আর বুঝার চেষ্টাও করি।

কই, আমার তো কোনদিন রবীন্দ্র-নজরুল-লালন-হেমন্ত-আবদুল জব্বার-মাহমুদুন্নবী-বশির আহমেদদের গান শুনতে আপত্তি/অনীহা মনে হয় না !

------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।

------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।

নাদির জুনাইদ এর ছবি

সেটাই... আপনার মতো আমারও একই অভ্যাস। স্কুলে পড়ার সময় থেকে রক-হার্ড রক-সাইকেডেলিক রক-কান্ট্রি-ব্লুজ-হেভি মেটাল-থ্র্যাশ মেটাল শুনে আসছি, অথচ কখনো লালন-রবীন্দ্র-নজরুল সঙ্গীতে তো উৎসাহ হারাইনি, আরো বহু দেশীয় ঘরানার সঙ্গীতকেও কম আকর্ষণীয় মনে হয়নি কোনদিন। শহরে বেড়ে উঠলে, আর শহুরে জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হলেই কেবল পাশ্চাত্যের বিভিন্ন উপাদান আর সিগনিফায়ার মনকে আচ্ছন্ন করে রাখবে সবসময় এমন তো কোন কথা নেই। কোন বিষয়েই সাধারণীকৃত উক্তি গ্রহণযোগ্য হয় না, আমাদের আরবান ইয়ুথদের বৈশিষ্ট্য নিয়েও তাই সাধারণ সিদ্ধান্ত টানা যায় না। আর সঙ্গত কারণেই গণমাধ্যমের অনুষ্ঠানকেও সাধারণীকৃত কোন ধারণার প্রভাবমুক্ত রাখা জরুরি।

নুসদিন এর ছবি

মার্কিন সিরিয়ালের কপি বলিনি, স্পষ্ট করে বলা হয়েছে 'আমরা' হর হামেশা চু_/তোর মায়রে চু_ ব্যবহার করি। সেটার প্রতিফলন আমার দেশের টিভিতেও আসবে।
আপনি মনে হয় "কবি" টেলিফিল্মটা দেখেননি। স্ক্রিপ্ট আনিসুল হক, ডিরেক্টর সম্ভবত ফারুকী (পুরোপুরি মনে নেই)। বেশ কয়েক বছর আগে ঈদে দেখানো হয়। সেখানে তোর মায়রে চু_ না থাকলেও আরো কিছু গালি-গালাজ ব্যবহার করা হয়েছে এবং এমন ভাবে বীপ ব্যবহার করা হয়েছে, হয় সেটা গালির আগে শোনা যায় অথবা পরে।

বলুন তো দেখি বাংলাদেশে গত দশ বছরের সেরা ১০ টা নাটকের নাম আর পরিচালকের নাম।

১। বিপ্রতীপ-গিয়াসউদ্দীন সেলিম (আরেকটা আছে-সংশয় বা এইরকম কিছু)
২। কুফা, সানগ্লাস, রাতের গল্প -অনিমেষ আইচ
৩। নদীর নাম নয়নতারা-মেজবাউর রহমান সুমন
৪। বিকল পাখির গান-নুরুল আলম আতিক (এটা অবশ্য টেলিফিল্ম ছিল)
৫। লাবণ্য প্রভা- নুরুল আলম আতিক এবং মাতিয়া বানু শুকু
৬।রঙের মানুষ-সালাহউদ্দীন লাভলু
৭। কুহক- বদরুল আনম সৌদ
৮। স্পর্শের বাইরে-শহীদুজ্জামান সেলিম
৯। ইট কাঠে খাঁচা, রমিজের আয়না- শিহাব শাহীন

আরো অনেক আছে... আপাতত এই কয়টা মনে পড়লো। আচ্ছা, মুড়ির টিন কী ঐ নাটকটা, একটা বাসে করে যে সবাই কোথায় যেন যায়? যদি সেটা হয়ে থাকে তাহলে বলবো সেটাতে আমি কোন সামাজিক বার্তা খুঁজে পাইনি বিরক্তি ছাড়া। আমি কিন্তু নিয়মত টিভি নাটক দর্শক।

জাহামজেদ এর ছবি

একটা ফোন করা যাবে প্লিজ ? - অমিতাভ রেজা
এই সময় - অমিতাভ রেজা
ইজ ইকুয়্যাল টু- অমিতাভ রেজা

গরম ভাত অথবা নিছক ভূতের গল্প- অনিমেষ আইচ

সাইকেলের ডানা- নুরুল আলম আতিক
চতুর্থমাত্রা- নুরুল আলম আতিক
পলায়নপর্ব- নুরুল আলম আতিক
জোড়া ইলিশ- নুরুল আলম আতিক

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

কিন্তু সেই সব ছবি বা নাটকে সেই ঘরোয়া ভাষা ব্যবহারের সমালোচনা তো কেউ করেনি কখনো, অথচ ফারুকী'র নাটক বা বর্তমান সময়ের বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা কিছু ভাষার সমালোচনা বহু মানুষ করছেন কেন?

হয়তো সেই কথ্য ভাষার ব্যবহারের পরিমাণ এখনকার চেয়ে অনেক কম ছিল, তাই ...

কিন্তু এই কথা বলতে পারি যে আমি বা আমাদের কোন বন্ধুই যেমন সবসময় প্রমিত বাংলায় কথা বলি না, তেমনি আমরা কেউই ফারুকীর নাটকে বা আজকালকার কিছু বিজ্ঞাপনে যেমন ভাষা ব্যবহার করা হয় সেই ভাষাতেও কথা কখনো বলিনা।

আমার জন্ম আপনার বছর দশেক পর, এবং দেখা যাচ্ছে এই দশ বছরে আমাদের মুখের ভাষা অনেক বদলে গেছে যে কারণে ফারুকীর ভাষাকে মোটেও নতুন বা আরোপিত কিছু মনে হচ্ছে না ... আপনি উদাহরণ দিলেন "ঝাক্কাস" শব্দটা নিয়ে, মজার ব্যপার হচ্ছে দুই হাজার দুইয়ে নটরডেমে পড়ার সময় আমাদের এক বন্ধুকে আমরা "আক্কাস" বলে ডাকতাম, কারণ সে ঝাক্কাস শব্দটা অতিরিক্ত ব্যবহার করতো ... সেই আক্কাস বেচারা এখন বিদেশী ব্যাংকের স্যুট-টাই লাগানো কর্মকর্তা, কিন্তু সে এখনো ঝাক্কাস বলে এবং তাকে এখনো আক্কাস বলা হয় ... কথা হচ্ছে, আপনার দৃষ্টিতে এই শব্দটা ক্লাসে [এবং মনে হয় গুরুজনদের সামনে] বলা অনুচিত, আমার দৃষ্টিতে এইটা মোটেও অফেন্সিভ কোন শব্দ না ... এখন আপনি বলেন, এই শব্দটা অফেন্সিভ নাকি অফেন্সিভ না, এইটা কেন আপনিই ঠিক করবেন? আমি না কেন? দেঁতো হাসি

ফারুকী'র 'মেড ইন বাংলাদেশ' ছবিতে আধুনিক বেশভূষার এক তরুণ বলে 'একটা ক্যাওয়াজ হইসে এইটা জানতাম'। Chaos শব্দের উচ্চারণ কী 'ক্যাওয়াজ'?

ক্যাওয়াজ শব্দটা হয়তো chaos থেকে আসছে, কিন্তু এখন এইটা একটা আলাদা শব্দ ... যে এই শব্দটা ব্যবহার করছে, সে chaos না, ক্যাওয়াজ শব্দটাই ব্যবহার করতে চাচ্ছে ... এবং এইটা মোটেও ফারুকীর আবিষ্কার না ...

কিন্তু একথাও বলতেন সাহিত্য রচনার মধ্য দিয়ে আমি যোগাযোগ করি দেবী সরস্বতী'র সাথে; আর দেবীর সঙ্গে তো আর যেমন-তেমন ভাষায় কথা বলা যায় না।

একসময় মনে হয় সংস্কৃতকেই শুধু দেব-দেবীর সাথে যোগাযোগের ভাষা ভাবা হইতো, কপাল ভালো যে অন্য রকম ভাবার মত মানুষও ছিল ...

নাটক-চলচ্চিত্র-বিজ্ঞাপন এর মধ্য দিয়ে অতি সস্তা, মানহীন যেমন-তেমন ভাষা প্রচার করে

সমস্যা হচ্ছে সস্তা, মানহীন, যেমন-তেমন ভাষার কোন সংজ্ঞা নাই, থাকা সম্ভবও না ... মানুষ যে ভাষায় কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে সেই ভাষাতেই বলে, এবং বলবে ... বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কথ্য ভাষার যে বিস্তারটা এখন হচ্ছে সেইটা ভাষার স্বাভাবিক বিবর্তনের চেয়ে বেশি কিছু বলে মনে হয় না ... আর এই ভাষা উদ্ভাবনের কৃতিত্ব ফারুকীকে দিয়ে দিলে যেইসব পোলাপান বহুদিন ধরেই এমনে কথা বলে আসছে সেই বেচারাদের খানিকটা ইনসাল্টই করা হয় দেঁতো হাসি

ফারূকীর ভাষা নিয়ে আপত্তি না, আপত্তি তার ইংগিতপূর্ণ ব্যবহার নিয়ে ... নিচে পঁয়তাল্লিশ নাম্বার কমেন্টে দ্যাখেনঃ "নায়ক বলছে নায়িকাকে, লাড়িস না, বেশি লাড়লে তো পইড়া যাইব। অথবা নায়িকা বলছে, আয় তোর ঋণ শোধ কইরা দিই।"
আমার দৃষ্টিতে এই জিনিসগুলি আপত্তিকর ... ভাষাটা না ...

................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

নাদির জুনাইদ এর ছবি

আমার মনে হয় না আশির দশকে বাংলাদেশের তরুণদের মুখের ভাষা অনেক বদলে গিয়েছিল তার আগের কয়েক দশক থেকে; পরিবর্তনটা হয়েছে ইদানীং। আর তার কারণ অনেক গণমাধ্যমের উপস্থিতি, আর সেখানে সম্পূর্ণ অন্য রকমের এক ভাষার ব্যাপক প্রচার। আর এই প্রচারের মধ্য দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে গুটিকয়েক মানুষজন; বিনিময়ে সমাজকে, ভাষাকে, তরুণ প্রজন্মকে যে তারা কী দিচ্ছেন সেটা তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি। অবশ্য অনেকে বলতে পারেন যে তাদের কাছে এই প্রাপ্তি মোটেও খারাপ মনে হচ্ছে না। ফারুকীর কাজে কিছু বিশেষ ইঙ্গিতপূর্ণ দিক ব্যবহার এর সমালোচনা আপনি করছেন, কিন্তু অনেকে হয়তো এইগুলিকেই বলবেন 'দারুণ', 'দুর্দান্ত কাজ'। কিন্তু ভাল আর মন্দ এই দুইয়ের পার্থক্য বোঝার ক্ষমতা আমাদের থাকা উচিৎ, আর কী ভাল আর কী মন্দ তা সব সময়, এবং সব ক্ষেত্রেই আপেক্ষিক নয়।

'ঝাক্কাস' গোছের শব্দ কেন শ্রেণীকক্ষে বা অন্য কোন আনুষ্ঠানিক পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা যায় না তা বোঝাতে যেয়ে আমি আপনাকে এই প্রশ্নটা করছি যে দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন বক্তৃতায় সেই বিশ্ববিদ্যালয় এর উপাচার্য কী এই শব্দটি ব্যবহার করতে পারেন? বা জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী? বা প্রতিদিন বেতার-টেলিভিশনে যে সংবাদ প্রচার করা হয় সেই সংবাদ এ? এই শব্দটি যদি কোন হালকা শব্দ নাই হবে তা হলে তো এমন পরিস্থিতিতে এই শব্দ ব্যবহার করা চলে। কিন্তু এ কথা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি যে কখনোই এমন হালকা তারল্যে-ভরা শব্দ কোন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ব্যবহার করা হবে না। কাজেই এই শব্দটি আপনার কাছে আপত্তিকর মনে না হলেও বেশির ভাগ মানুষ কিন্তু এমন শব্দকে গুরুত্বহীন শব্দ বলেই মনে করছে, আর তা না হলে এসব শব্দ গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতিতে ব্যবহার করতে মানুষ দ্বিধা করতো না। আপনি নিজেও গুরুত্বপূর্ণ কোন বক্তব্য রাখতে গেলে এমন ধরনের শব্দ ব্যবহার করবেন কী?

'ক্যাওয়াজ' এখন আলাদা শব্দ? সঠিকভাবে একটি ইংরেজি শব্দ উচ্চারণ করতে না পারার অক্ষমতা ঢাকতে যেয়ে একে বাংলা ভাষার আলাদা শব্দ বলে চালু করার চেষ্টা অতি হাস্যকর দেখায়, যেমন হাস্যকর শোনায় 'বাংরেজি' বলা, আর বিভিন্ন রেডিও জকি দের সংলাপ। Chaos বোঝাতেই যদি এই অদ্ভুত শব্দটি ব্যবহার করা হয় তাহলে আর এতো কষ্ট করে ইংরেজি শব্দের কাছাকাছি যাওয়ার দরকার কী? আমাদের বাংলায় কী 'ঝামেলা' বা এর আরো সমার্থক শব্দ নেই?

বাংলাদেশের অনেক তরুণের মধ্যে কথ্য ভাষার যে বিস্তার এর কথা আপনি বললেন তা মোটেও ভাষার কোন 'স্বাভাবিক বিবর্তন' নয়, তা গণমাধ্যম-সৃষ্ট এবং আরো স্পষ্ট করে বলতে গেলে এই সমাজের গুটিকয়েক মানুষ তাদের নিজস্ব পছন্দের ভাষা দিয়ে কিছু অনুষ্ঠান বানাচ্ছে যার নান্দনিক এবং সামাজিক গুরুত্ব কোনটাই নেই, আর সেসব অনুষ্ঠানের চাকচিক্যে আলোড়িত হয়ে দেশের কিছু তরুণ-তরুণী সেই ভাষাকে ফ্যাশন জনিত কারণে গ্রহণ করছে। তবে সুখের বিষয় এমন তরুণ-তরুণীদের সংখ্যাও দেশে কম নয়, যারা এই চাকচিক্য-সর্বস্ব অনুষ্ঠান দেখে মোহগ্রস্ত হচ্ছে না। পেশাগত কারণে দেশের বহু কমবয়সীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগের অভিজ্ঞতা আমাকে এমন ধারণাই দিচ্ছে।

সস্তা, মানহীন, যেমন-তেমন এই শব্দগুলির যেমন সংজ্ঞা আছে তেমনি এই শব্দগুলির আলোকে অনেক দিককেই সংজ্ঞায়িত করা যায়, আর ভাষাও তার মধ্যে পড়ে। আমার ভাল লাগে বলেই আমি একটি খারাপ, মানহীন কাজ করে তাকে মানসম্পন্ন বলে জাহির করতে পারি না। মান অর্জনের জন্য পরিশ্রম প্রয়োজন, কিছু গুণ ও প্রয়োজন। আমরা অবশ্যই ঘরোয়া ভাষায় কথা বলবো, কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে আমার ভাল লাগে বলেই ঘরোয়া ভাষায় আমি সব পরিস্থিতিতে, সব ক্ষেত্রে কথা বলাটাই প্রয়োজন বলে মনে করবো।

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

'ঝাক্কাস' গোছের শব্দ কেন শ্রেণীকক্ষে বা অন্য কোন আনুষ্ঠানিক পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা যায় না তা বোঝাতে যেয়ে আমি আপনাকে এই প্রশ্নটা করছি যে দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন বক্তৃতায় সেই বিশ্ববিদ্যালয় এর উপাচার্য কী এই শব্দটি ব্যবহার করতে পারেন? বা জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী? বা প্রতিদিন বেতার-টেলিভিশনে যে সংবাদ প্রচার করা হয় সেই সংবাদ এ? এই শব্দটি যদি কোন হালকা শব্দ নাই হবে তা হলে তো এমন পরিস্থিতিতে এই শব্দ ব্যবহার করা চলে। কিন্তু এ কথা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি যে কখনোই এমন হালকা তারল্যে-ভরা শব্দ কোন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ব্যবহার করা হবে না। কাজেই এই শব্দটি আপনার কাছে আপত্তিকর মনে না হলেও বেশির ভাগ মানুষ কিন্তু এমন শব্দকে গুরুত্বহীন শব্দ বলেই মনে করছে, আর তা না হলে এসব শব্দ গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতিতে ব্যবহার করতে মানুষ দ্বিধা করতো না। আপনি নিজেও গুরুত্বপূর্ণ কোন বক্তব্য রাখতে গেলে এমন ধরনের শব্দ ব্যবহার করবেন কী?

এখন সম্ভব না, কিন্তু আজকের তরুণ প্রজন্মের যখন উপাচার্য হওয়ার বয়স হবে তখন নতুন অনেক শব্দই আনুষ্ঠানিক ভাষায় ঢুকে পড়বে ... আর দ্বিতীয়ত, কোন শব্দ আনুষ্ঠানিক পরিবেশে যদি বলা নাও যায় তাহলেও সেটা ভাষা থেকে খারিজ হয়ে যায় না, বর্তমান প্রমিত ভাষাতেও নিশ্চই অনেক চটুল শব্দ আছে যেটা আপনি গুরুগম্ভীর কোন ভাষায় ব্যবহার করেন না, ঠিক না?

'ক্যাওয়াজ' এখন আলাদা শব্দ? সঠিকভাবে একটি ইংরেজি শব্দ উচ্চারণ করতে না পারার অক্ষমতা ঢাকতে যেয়ে একে বাংলা ভাষার আলাদা শব্দ বলে চালু করার চেষ্টা অতি হাস্যকর দেখায়, যেমন হাস্যকর শোনায় 'বাংরেজি' বলা, আর বিভিন্ন রেডিও জকি দের সংলাপ। Chaos বোঝাতেই যদি এই অদ্ভুত শব্দটি ব্যবহার করা হয় তাহলে আর এতো কষ্ট করে ইংরেজি শব্দের কাছাকাছি যাওয়ার দরকার কী? আমাদের বাংলায় কী 'ঝামেলা' বা এর আরো সমার্থক শব্দ নেই?

প্রথমত, বুরুশ বা ইস্কুল শব্দগুলিকে মনে হয় আপনি বাংলা শব্দ বলে মনে করেন না ... না করতেই পারেন, আপনার মর্জি ...
দ্বিতীয়ত, রেডিও জকিদের টেনে আনা এইখানে অপ্রাসংগিক ...
তৃতীয়ত, একটা প্রচলিত শব্দ থাকলেই আরেকটা নতুন শব্দ তৈরি করা যাবে না এমন নিয়ম কোথায় আছে জানার ইচ্ছা ছিল ...

বাংলাদেশের অনেক তরুণের মধ্যে কথ্য ভাষার যে বিস্তার এর কথা আপনি বললেন তা মোটেও ভাষার কোন 'স্বাভাবিক বিবর্তন' নয়, তা গণমাধ্যম-সৃষ্ট এবং আরো স্পষ্ট করে বলতে গেলে এই সমাজের গুটিকয়েক মানুষ তাদের নিজস্ব পছন্দের ভাষা দিয়ে কিছু অনুষ্ঠান বানাচ্ছে যার নান্দনিক এবং সামাজিক গুরুত্ব কোনটাই নেই, আর সেসব অনুষ্ঠানের চাকচিক্যে আলোড়িত হয়ে দেশের কিছু তরুণ-তরুণী সেই ভাষাকে ফ্যাশন জনিত কারণে গ্রহণ করছে।

ফারুকী আসার অনেক আগে থেকেই যে এই ভাষা আমরা ব্যবহার করে আসছি সে কথাটা এইখানে আমি ছাড়াও আরো বেশ কয়েকজন বলেছে, মন দিয়ে সবগুলি কমেন্ট পড়লেই দেখতে পাবেন ... তারপরও আপনি আপনার বক্তব্যে অটল থাকলে থাকতে পারেন, আপনার ইচ্ছা ... তবে যারা বলছে তাদের অনেকে জন্মই আপনার প্রায় বছর দশেক পর, এটা থেকে ভাবনার উপাদান খুঁজে পেলেও পেতে পারেন ...

সস্তা, মানহীন, যেমন-তেমন এই শব্দগুলির যেমন সংজ্ঞা আছে তেমনি এই শব্দগুলির আলোকে অনেক দিককেই সংজ্ঞায়িত করা যায়, আর ভাষাও তার মধ্যে পড়ে। আমার ভাল লাগে বলেই আমি একটি খারাপ, মানহীন কাজ করে তাকে মানসম্পন্ন বলে জাহির করতে পারি না।

হুতোম-প্যাঁচার নকশা সম্পর্কে বঙ্কিমচন্দ্রের মতামতঃ "হুতোমি ভাষা দরিদ্র, ইহার তত শব্দধন নাই; হুতোমি ভাষা নিস্তেজ, ইহার তেমন বাঁধন নাই; হুতোমি ভাষা অসুন্দর, এবং যেখানে অশ্লীল নয় সেখানে পবিত্রতাশূণ্য। হুতোমি ভাষায় কখনো গ্রন্থ প্রণীত হওয়া কর্তব্য নহে।" [রেফারেন্সঃ নিচে কূলদা রায়ের কমেন্ট]
ভাষাকে যে আসলে সুন্দর-অসুন্দর, দামি-সস্তা জাতীয় লেবেল চট করে দেয়া যায় না সেটা বোঝার জন্য মনে হয় এইটুকুই যথেষ্ট ...

আমরা অবশ্যই ঘরোয়া ভাষায় কথা বলবো, কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে আমার ভাল লাগে বলেই ঘরোয়া ভাষায় আমি সব পরিস্থিতিতে, সব ক্ষেত্রে কথা বলাটাই প্রয়োজন বলে মনে করবো।

যার যার চাহিদা তার তার কাছে, তাই না? আপনি ঘরে ঘরোয়া ভাষায় কথা বলবেন, বাইরে আনুষ্ঠানিক ... অন্য কেউ হয়তো বাইরেও করসি-খাইসি বলে আরাম পায় বলে সেভাবে বলাটাকে প্রাধান্য দেবে ... সময়ের সাথে সাথে যদি দ্বিতীয় দলের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় তাহলে ভাষার স্বাভাবিক নিয়মেই সেটা প্রমিত ভাষার জায়গা দখল করবে ... আপনি-আমি চাইলেও করবে, না চাইলেও ...

শেষ কথা, আমার মনে হয় আমরা একজন-আরেকজনের ভাষা বেশ ভালোই বুঝতে পারছি, এন্ড উই মে এগ্রী টু ডিজএগ্রী ...

................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

নাদির জুনাইদ এর ছবি

অ্যাবসোলিউটলি, উই মে অ্যাগ্রি টু ডিসঅ্যাগ্রি... শুধু অল্প একটু কথা, 'হুতোম-প্যাঁচার নকশা' সম্পর্কে বঙ্কিমচন্দ্রের মতামত দিয়ে আমার বলা 'সস্তা, মানহীন, যেমন-তেমন এই শব্দগুলির যেমন সংজ্ঞা আছে তেমনি এই শব্দগুলির আলোকে অনেক দিককেই সংজ্ঞায়িত করা যায়, আর ভাষাও তার মধ্যে পড়ে' এই কথাটির জবাবটি সম্পর্কে বলতে চাই যে ভাষারও একটি গুণ আছে, আর এই গুণটি কিছু বিশেষ উপাদানের উপস্থিতির সাপেক্ষেই বিবেচনা করা হয়। আর এই গুণের তারতম্যের মধ্য দিয়েই কোন ভাষার সৌন্দর্য বা মানহীনতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তাই আমি মনে করি এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত মতামত বা পছন্দের চাইতে যুক্তির আশ্রয় নেয়াই গ্রহণযোগ্য, যখন সেই সুযোগটি আমাদের জন্য বিদ্যমান।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

পোস্টে উনার নামের বানানটা ভুল আছে, মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী না, মোস্তফা সারয়ার ফারুকী হবে।

ফারুকীর বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ 'ভাষা' বিষয়ক। এই ভাষারীতি খারাপ না ভালো, বাংলা ভাষার জন্য হুমকী স্বরূপ কী না বা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে ধ্বংশ করে দিচ্ছে কী না সেই আলোচনা অনেক হয়েছে। এখানেও হলো, নতুন করে কিছু বলার নেই।

যদি এটা দায় হয় তাহলে ফারুকীর ওপর তা অবশ্যই বর্তাবে। কিন্তু আরেকটু অতীতে যাওয়া প্রয়োজন। এই ভাষা নিয়ে বিতর্কের শুরু ৯য়ের দশকের শুরুতে। আমার জানামতে লেখক এবাদুর রহমান প্রথম এ ভাষায় সাহিত্য চর্চা শুরু করেন। লিটল ম্যাগ অঞ্চলে তখন এটা নিয়ে ব্যাপক সরগরম আলাপ আলোচনা তর্ক বিতর্ক হয় [আমার ভুল হলে দয়া করে কেউ শুধরে দেবেন]। এবাদুর রহমান প্রথম আলোর ঘরানার লোক।
আনিসুল হক মূলত এবাদুর রহমানের কাছ থেকেই এই ভাষাটা পিক করে তুলে দেন ফারুকীর হাতে।

ফারুকীর বেশিরভাগ নাটকেরই নাট্যকার আনিসুল হক। পরিচালকের দায় অবশ্যই আছে, কিন্তু যদি ভাষাবিকৃতি হয়ে থাকে, তার প্রথম দায়টা নাট্যকারের কাঁধেও কি যায় না?
এবং আমরা এও জানি, টেলিভিশনে হক-ফারুকীর হাত ধরে যখন এ ভাষারীতি ঢুকলো তখন নানান টকশোতে আনিসুল হক এই ভাষারীতির পক্ষে বক্তব্য দিয়েছেন। একটা টেলিভিশন সাক্ষাতকার দেখেছিলাম তাঁর, যেখানে এই ভাষারীতিকে জায়েজ করার জন্য একাধিক বই নিয়ে হাজির হয়েছিলেন।
আমি জানি না আনিসুল হক তাঁর উপন্যাস এই ভাষারীতিতে লিখেন কি না...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বাংলাদেশে টেলিভিশন নাটকের শুরু থেকে ৯০ দশক পর্যন্ত প্রায় সবাই ছিলেন মঞ্চ নাটকের লোকজন। বছর দশেক ধরে মঞ্চের বাইরের লোকজন টিভি নাটকে কাজ করতে শুরু করেছে ব্যাপক ভাবে। তবু এখনো যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বড় অংশটাই মঞ্চের।

প্রসেনিয়ামের আঙ্গিক ভেঙ্গে খুব একটা বের হয়ে তারা আসতে পারেন নাই। এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের টিভি নাটকের মূল রাস্তাটা এদের হাতেই আছে, স্টাইলটাও।

কিন্তু মার্কেট সবসময়ই নতুন কিছু চায়, বাজারের চাহিদানুযায়ীই নতুন কিছু দরকার হয়, সেটা ভালো বা মন্দ। তাই যখন হুমায়ুন আহমেদ শুরু করলেন একেবারে নতুন একটা স্টাইল [নাট্যকার হুমায়ুন আহমেদ, পরিচালক না], দর্শক লুফে নিলো।

একটা পর্যায়ে হুমায়ুন আহমেদ যখন একঘেয়ে হয়ে গেলেন, এবং প্রযুক্তির ঠেলায় আমরা হুট করে অনেক বেশি আধুনিক হয়ে গেলাম, আমাদের নাটকের মার্কেটে নতুন চাহিদার জন্ম নিলো। এটা খুব স্বাভাবিক। তখন অন্য কেউ যদি নতুন কিছু নিয়ে হাজির হতে পারতেন, তাহলে তিনিই টিকতেন। হক-ফারুকী জুটি একটা নতুন স্টাইল তুলে দিলেন বাজারে। দর্শক এটাকে নিলো।

জনপ্রিয়তার এই ব্যাপারটাকে অস্বীকার করার কোনো জায়গা নাই। আমার আপনার পছন্দ হোক বা না হোক, জনপ্রিয়তার বিচারে ফারুকী এবং ভাই বেরাদররা একটা জায়গা তৈরি করে নিয়েছেন। সিডির বাজারে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় তাদের নাটকের সিডি। চ্যানেলগুলোতেও তাদের দাপট আছে।

একই সঙ্গে আরেকটা ধারা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে দেশে। যার উদ্যোগক্তা সালাহউদ্দিন লাভলু ভাই। রঙের মানুষ দিয়ে গ্রাম্য বিনোদনের একটা ধারা তিনি তৈরি করেন। অনেকে স্রেফ ভাঁড়ামো মনে করেন। কিন্তু একটা শ্রেণীর দর্শকের কাছে এটা ফারুকীর প্রায় সমানতালেই জনপ্রিয়।

বর্তমানে এ দুটো ধারাই চলছে। এবং সত্যি বলতে সময় হয়েছে নতুন ধারা তৈরি হওয়ার। সময় এবং বাজারের চাহিদাই নতুন কিছু সৃষ্টি করতে বাধ্য করবে। এবং আমার মনে হয় এটাই পিক টাইম। কারণ ফারুকীর এবং ভাই বেরাদর নিয়ে যারা খুব উচ্ছ্বসিত তারাও এখন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। তাদের জন্য এখন দরকার নতুন নাটক।

নতুন ভাবনা নিয়ে অনেকেই আসছেন। নতুন কিছু কাজ হচ্ছে, কোনোটাই এখনো পুর্ণাঙ্গ রূপগ্রহণ করেনি। দেখা যাক দর্শক নতুন কোন ধারা গ্রহণ করে।

আরো অনেকগুলো কথাই বলতে হবে আসলে, মন্তব্যে আরো দুটো কিস্তি দরকার। কিন্তু এখনি একটা জরুরী কাজে ছুটতে হবে। রাতে বাড়ি ফিরে এ বিষয়ে আরো দুটো কথা বলতে আগ্রহী।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

একমত। এখন অনিমেষ আইচ ও তার রং-মিস্ত্রী না এরকম এক নামে এক গ্রুপ আছে, যাদের কিছু নাটকের মেকিং ও ভালো।

জাহামজেদ এর ছবি

সালাউদ্দিন লাভলু হয়তো দর্শককে বিনোদন উপহার দেওয়ার জন্য কিছুটা ভাঁড়ামোর আশ্রয় নেন, কিন্তু নাটকগুলো দেখে কখনোই মনে হয় না তিনি পর্দায় অবাস্তব কিছু বলছেন। গ্রামের সহজ সরল মানুষের জীবনটাকে তুলে আনছেন নানাভাবে টিভি স্ক্রীণে। লিটনের ফ্ল্যাট আর তোমারে আমি পাঠ করতে চাই- এমন কোনো যৌন সুড়সুড়ি দেওয়া কথা তার নাটকে থাকে না। দর্শকের কাছে বাংলার গ্রামজীবনের গল্প নিয়ে তৈরি তার এসব নাটকের গ্রহনযোগ্যতাও অনেক, টিআরপি রেটিং এটাই বলে।

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

হতে পাত্তেম এর ছবি

ফারুকীর নাটকরে কখনোই সেইরম কিছু মনে অয় নাই, কাজেই সেই বিষয়ে প্যাঁচাল বাদ। তয় প্রমিত-অপ্রমিত ক্যাচালে ইট্টু আলোপোড়া খাইতে আইলাম।

কলিকাতার অদূরে ভাগীরথী নদীর তীরবর্তি (উচ্চশ্রেণীর) বাঙালি মনুষ্যজনের কথ্য ভাষারূপ যদি প্রমিত ভাষা হিসেবে দ্বিশতক ধরিয়া চলিতে পারে তবে,

বুড়িগঙ্গা গাঙের হেই পারের বাঙালগো চৌদ্দগুষ্ঠী ধইর‍্যা কইয়া আসা ভাষারে বাঙালদের লাইগ্যাই মানভাষা হিসাবে মাইন্যা নিতে সমস্যাডা কুথায়? কৌলিন্যে? অসামাজিকতায়? রথী-মহারথীদের অভাবে?(আমিতো জানতাম ভাষা টিকায়া রাখে থার্ড ক্লাস আমজনতাই!) আধিপত্য নিয়া কথা উঠতাছে, তাইলে আমি স্বাধীন দ্যাশের রাজধানীর কথ্য ভাষারে প্রমিত মানতে ব্যাজার হই, আর কোলকেতার মান ভাষা(তাও প্রায় পুরাডাই কাল্পনিক)রে আধিপত্য দিতে কুণ্ঠিত হইনা? বড়োই মজা পাইলাম।

সবচেয়া মজার কথা অইলো যে, খোদ বাংলা প্রদেশেই এহন রাবিন্দ্রীক বাংলায় কেউ কতা কয় না। হিন্দী ব্যাকরণের স্ট্রাকচার আর আংরেজির ফোড়ন মিশায়া এক অদ্ভুত বাংলায় তারা বাতচিত করে। এমনকি সংবাদপত্রে ভি ল্যাখেও।(ঈমান না আইলে তাগো পত্রিকা পইড়া দ্যাখতে পারেন।)

বাংলা ভাষা সুস্পষ্টভাবে তিনডা শ্রেণিতে বিভক্ত-

১. বাংলাদেশের ভাষা।(চিন্তায়-চেতনায়-গন্ধে-রঙে খাঁটি বাঙাল, হোক তা বিক্রমপুরী, সিলটি, রাজশাহী, নোয়াখাইল্যা, ঢাকাইয়া, রংপুরী, চাটগাইয়া, বরিশাইল্যা কিংবা কুষ্টিয়ার)
২. বাংলা প্রদেশের ভাষা।( কোলকাতার কসমোপলিটান আস্ফালন ও মিশামিশি, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম তথা খাঁটি রাঢ় অঞ্চলের মাইনসের ভাষা।)
৩. প্রবাসীদের ভাষা( মননে প্রবলভাবে ধারণ করলেও দীর্ঘদিনের স্বতঃস্ফূর্ত এবং বৈচিত্রময় কথকতার অভাবে বড্ড বেশি প্রথাগত, তাছাড়া বিদেশে স্বদেশীয়ানা কমপ্লেক্সের কারণে কিছুটা ছুৎমার্গপ্রবণও)

আমি বাঙাল। আমার চৌদ্দগুষ্ঠির, আশেপাশের কয়া যাওয়া যেকোনো একডা রূপরে প্রমিত রূপ ধরতে আমার কুনো আপত্তি নাইক্কা। হোক তা যেকুনো এট্টা অঞ্চলের। শিখ্যা লমু দরকার হইলে। কিন্তু কাল্পনিক ভগিরথীয় বাংলায় বাক্যালাপ নাটক, সিনেমা মায় গপ্প উপন্যাসে ব্যাভার কর্তে আমার অরুচি আছে। এইডাও একধরণের দাসত্ববৃত্তি। ভাষার দাসত্ববৃত্তি।

করছি/খাইছিরে যারা বঙ্কিম/মধুসুদন/দীনবন্ধু মিত্র থেইক্যা শুরু কইর‍্যা হালজামানার কলকাতার মুভি/সিরিয়ালে বাঙাল চরিত্রের মুখে বসানো এবং হাস্যকর ভাঁড়ামো উৎপাদনের বাইরে(অবশ্য ভানু বাঙাল বসে উলটা শোধই নিছেন! হে হে) অন্যকিছুতে দেখতে 'নজ্জা', 'অস্বস্তি', 'ছেলেপুলে বখে যাচ্ছে', 'ফাউল পোলাপানের ভাষা', 'নষ্ট প্রজন্মের ভাষা', 'ভাষার বেইজ্জতি' ইত্যাদি বোধের আগমন মনে করেন আমি তাদের জন্য করুণা করি।

বাঙালদের মানভাষা হইবো কুনো বাঙাল প্রধান অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষা। মান/প্রমিত ভাষা আকাশ থেইক্যা পয়দা হয়না, সেইডাও কুনো একটা আঞ্চলিক ভাষাই। কাজেই হীনমন্যতায় না ভোগাই মঙ্গল।

আমি আমার ভাষারে, সেই ভাষাভাষী চৌদ্দ গুষ্ঠির মানুষরে অশুদ্ধ/অপ্রমিত মনে করি না; আমারই আর কোনো বাঙাল ভাই-বইন যদি তা মনে করেন তাইলেও কিছু বলার নাই, স্রেফ কৌতুকমিশানো করুণা ছাড়া।

ভালা থাইকেন সবাই।

হিমু এর ছবি

আপনি যেটা লিখেছেন সেটাকে বাঙালদের নতুন মান ভাষা ধরে নিতে রাজি নই আমি। আমি চাপাইনবাবগঞ্জের ভাষাকে বাঙালের মানভাষা হিসেবে দেখতে চাই। ঢাকাই ভাষার দাসত্ব করতে চাই না।

এইবার আসেন বাকিটুকু চিন্তা করি।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

হতে পাত্তেম এর ছবি

তা মামুর যুদি চাঁপাইয়ের ভাছা ভালো লাগে তো ছেই ভাছাতেই বুইলবেন, লিখবেন। আপত্তি কইরবো কেনো?

কিন্তু মামুর যদি মুনে করেন যে কলকাতার ভাছার ছাথে এই ভাছার মিল আছে বুইলে এটা ব্যাবহার কইরবেন তাহলে তো মামু আমার আপত্তি আছে।

এখন মামু বুইললেই তো বুইলবেন যে বুইলছে, মান ভাছার পিছে জনগণের যে ইকটা ভূমিকা আছে তা কি মাইনবেন মামু? জনগণ যে ভাছায় কথা বুইলে মজা পায় ছেই ভাছাই কি মান ভাছা করা যায় না?

আর মামু কইলকেতার ভাছা মান ভাছা হিছাবে নিলে ঢাকাইয়া ভাছা নিতে ছমছ্যা কেনো ছিটাও ইকটু বুলেন। আমরা বেবুঝ বাঙাল ইট্টু বুঝি!সুম

হিমু এর ছবি

প্রশ্ন ১. কলকাতার ভাষা কোনটা?

প্রশ্ন ২. জনগণ কোন ভাষায় কথা বলে মজা পায়?

প্রশ্ন ৩. আমাদের বাঙাল ডাকে পশ্চিমবঙ্গের লোকজন। তাদের ডাকা শব্দে আমি কেন আমার পরিচয় চিহ্নিত করবো?

প্রশ্ন ৪. ঢাকাইয়া ভাষা কেন মান ভাষা হবে? কেন পটুয়াখালির ভাষা নয়?

প্রশ্ন ৫. ঢাকাইয়া ভাষা কোনটা?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

হতে পাত্তেম এর ছবি

কামে লাগতে পারে ভাইব্যা আগে কিছু বয়ান দেই- তার্পরে আপনার কুশ্চেনের আন্সার দিমু-

ঢাকাইয়া ভাষা বলে আমি বুঝাইতেছি রাজধানী ঢাকা যে অঞ্চলটুকু ধারণ করে সেইখানকার মানুষের কথ্য ভাষা। ঢাকায় বংশপরম্পরায় থাকা বাঙালরা এখনই মুষ্টিমেয় হয়া যাইতাছে। সারা দ্যাশ থেইক্যা পিলপিল কইর‍্যা বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষাভাষী আইস্যা যোগ দিতাছে এইহানে। তাদের আঞ্চলিক রূপ, পুরান ঢাকাইয়া রূপ, ধামরাই, গাজিপুর, টাঙ্গাইলের রূপ মিলা মিশা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই একটা ককনি ভাষার জন্ম দিতাছে যা পুরা বাংলাদেশের সবাইই বোঝে।

যদি শাসনব্যবস্থায় আমূল বিকেন্দ্রীকরণ না হয়, তাইলে প্রত্যেক বছরই প্রায় সকল ছাত্রছাত্রীই ঢাকায় আইবো পড়াশুনা করতে। বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের এই সময়ে তাদের অনেকটা অচিন্তেই যে ব্লেণ্ডিংটা হইতাছে তা কুনোভাবেই স্রেফ আঞ্চলিক ভাষা বা অসামাজিক ফাউল ভাষা কয়া ইগনোর করা যাইবোনা। সহজবোধ্যতা তথা বক্তব্যরে গণমানুষের কাছে সবচেয়া আরামে পৌঁছায়া দেওয়ার লাইগ্যা তাই এইডাই সবাই বেশি প্রেফার করে। কাজেই আমরা নাটক-সিনেমায় এর প্রয়োগ দেখতাছি, দেখতাছি সাহিত্যেও। এর প্রভাব নিয়া নাকউঁচা বা ভুইল্যা থাকলে দ্যাখা যাইবো তার চেয়াও বিদ্ঘুইট্যা হিংলা(হিন্দি+বাংলা) বা আংলা(আংরেজি+বাংলা) আইস্যা অনায়াসেই রাবিন্দ্রীক বাংলারে হঠায়ে দিবো, যেইডা বাংলা প্রদেশে এহন হইতাছে এবং আলামত আমাদের দ্যাশেও দ্যাখা যাইতাছে।

কাজেই স্বরূপ আরেকবার আঞ্চলিক দলাদলি ভুইল্যা যাচাই করণ জরুরী।

হিমু এর ছবি

বয়ান তো শুনতে চাইনাই ভাইটু। প্রশ্ন করলাম পারলে উত্তর দ্যান।

আপনারে কে বললো এই ককনি ভাষা পুরা বাংলাদেশের সবাই বোঝে? পুরা বাংলাদেশের কয় জায়গায় গিয়া এই ককনি ভাষায় আপনি কথা বইলা দেখছেন? আর পুরা বাংলাদেশের কয় জায়গায় প্রমিত ভাষা যোগাযোগে ব্যর্থ? এমন একটা জায়গা দেখান যেইখানে কোনো মায়ের ছেলে প্রমিত ভাষা বুঝে না, কিন্তু আপনার ককনি ভাষা বুঝে এবং আপনারই ককনি ভাষায় সেইটার উত্তর দিতে পারে।

আপনি তো এই মিশ্র ঢাকাইয়ার আধিপত্যবাদই প্রচার করতে আসছেন। সিলেটের বা নোয়াখালির একটা লোক কোন দুঃখে প্রমিত ভাষা ছাইড়া আপনার এই ককনি গিলব? আর প্রমিত ভাষারে যদি হিংলা আংলা প্রতিস্থাপন করতে পারে, আপনার এই ককনি সেইটা ঠেকাইতে পারব, এই আশ্বাস আপনে ক্যামনে দ্যান?

আর এই ককনির দাসত্ব আপনি আঞ্চলিক ভাষাভাষী মানুষের কান্ধে ক্যান চাপাইতে চান? আপনার আবদার হইতেছে, মাইনষে ঢাকায় আইসা আপনের ভাষা শিখবো দুই চাইর বছর, তারপর সে আপনের লগে কথা কওনের যোগ্যতা অর্জন করবো। দেশের বাকি মাইনষের থিকা কয়েক বছর আগাইয়া থাকনের ফন্দি আপনার।

গণমানুষের সবচে আরাম কীসে? আপনের মুখের কথায় গণমানুষের আরাম কবে থিকা নির্ধারিত? আপনে ক্যাঠা?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

হাসান মোরশেদ এর ছবি

বয়ানদাতার বয়ানেই আঞ্চলিক হেজিমনি'র চেহারাটা ফুটে উঠলো। ঢাকায় বসে যে ককনি ভাষা বানালাম, গাজোয়ারী করে সেটারেই চালিয়ে দিলাম সারা দেশের মানুষের কথ্যভাষা হিসেবে।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

হিমু এর ছবি

কল্কেতা আর ঠাকুর্বাবুকে কইষ্যা গাইল্লাইয়া তারপরে মিহি আবদার, ডাহা শহরের কক্নি ভাষা আর ব্যর্থ রাইছুর কোবতে শিক্তে হপে।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

হতে পাত্তেম এর ছবি

আরেকবার এইডাও শিখ্যা ফালান হাসি
http://en.wikipedia.org/wiki/Ad_hominem

হিমু এর ছবি

আড হোমিনেম করলাম কই? আপনে কল্কেতা আর ঠাকুররে তো ঝাইড়াই শুরু করলেন। ঢাকার ককনি খাওয়াইবেন। আর প্রোমোট করতেছেন ব্যর্থ রাইছুর বাংলা।

আড হোমিনেম হইতো আপনারে রাইছু কইলে।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

হতে পাত্তেম এর ছবি

সারা দ্যাশের সকল শ্রেণী ও আঞ্চলিকতার সমন্বয়ে যে ভাষার বুনিয়াদ ঢাকায় গইড়া উঠতাছে তারে মানভাষা বানানি যদি আঞ্চলিক হেজিমনি হয় তাইলে পশ্চিমবঙ্গীয় কথ্য ভাষারে মান ভাষা হিসাবে বিনা বাক্যে মানারে কোন ধরণের হেজিমনি কওয়া যায় তা জানতে ইচ্ছা করতাছে!

আইছ্যা, ঢাকা বাদ দিয়া যদি চরকুকরিমুকরিতে সব বাঙাল জড়ো হইয়া এইডা বানাইতো তাইলে কি মানতেন? অথবা ভগীরথির হেই পারে জড়ো হয়া বানাইলে?

হিমু এর ছবি

আপনারে কে কইলো সব বাঙাল এই ভাষা তৈরি করছে? আমি তো এই ভাষায় সিলেটের লোক, নোয়াখালির লোক, চট্টগ্রামের লোকের অংশগ্রহণের ছাপ দেখি না। আপনে কইলেই হইবো? আপনে ক্যাঠা?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

হাসান মোরশেদ এর ছবি

সারা দ্যাশের সকল শ্রেণী ও আঞ্চলিকতার সমন্বয়ে যে ভাষার বুনিয়াদ ঢাকায় গইড়া উঠতাছে

তাই নাকি? কোন তথ্যের ভিত্তিতে আপনি দাবী করেন এই ককনি ভাষা দেশের সকল শ্রেনী ও আঞ্চলিকতার সমন্বয়ে গড়ে উঠছে? একেবারে প্রলেতারিয়েত ব্যাপার-স্যাপার। যান তো সিলেট, চট্রগ্রাম, বরিশাল, নোয়াখালী- সরেজমিন তথ্য এনে হাজির করুন কতো অংশ মানুষ আপনার কথিত সমন্বয়ের ভাষায় কথা বলছে কিংবা ভবিষ্যতে বলবে?
আজিজ মার্কেটের চিপা, ফারুকীর ক্যামেরা আর ফরহাদ মজহারের ভুয়া দর্শনের বাইরেই বাংলাদেশের বেশীর ভাগ অংশ থাকে।

প্রচলিত মান ভাষা যদি পশ্চিমবঙ্গীয় হয়ও- আমার কথ্যভাষার বাইরে শিখতে হলে আমি এটিই শিখবো কারন এটি প্রচলিত, প্রতিষ্ঠিত। প্রচলের বাইরে গিয়ে আপনার ককনি ভাষা শেখার কষ্ট করার জন্য যে আদর্শিক, প্রায়োগিক, বস্তুগত পক্ষপাতের প্রয়োজন- সেটি এখনো গড়ে উঠেনি।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

হতে পাত্তেম এর ছবি

আপনারে কে বললো এই ককনি ভাষা পুরা বাংলাদেশের সবাই বোঝে? পুরা বাংলাদেশের কয় জায়গায় গিয়া এই ককনি ভাষায় আপনি কথা বইলা দেখছেন? আর পুরা বাংলাদেশের কয় জায়গায় প্রমিত ভাষা যোগাযোগে ব্যর্থ?

সাতকাণ্ড রামায়ণ পইড়্যা সীতা কার শ্বশুর! যেইভাষা বাংলার সকল অঞ্চলের লোক মিল্যা বানায় সেই ভাষা তারা বোঝেনা ক্যামনে? আর এর উত্তরই বা দিমু ক্যামনে?

আপনি তো এই মিশ্র ঢাকাইয়ার আধিপত্যবাদই প্রচার করতে আসছেন। সিলেটের বা নোয়াখালির একটা লোক কোন দুঃখে প্রমিত ভাষা ছাইড়া আপনার এই ককনি গিলব? আর প্রমিত ভাষারে যদি হিংলা আংলা প্রতিস্থাপন করতে পারে, আপনার এই ককনি সেইটা ঠেকাইতে পারব, এই আশ্বাস আপনে ক্যামনে দ্যান?

হে হে। গিলান লাগবো না। এমনিতেই হয়া যাইবো। নাক সিঁটকাইলেও, না সিঁটকাইলেও। কারণডা এতবার কইসি যেঁ আর কইতে ইচ্ছা করতাছে না। উপ্রের কমেন্টে দ্যাহেন।

আর এই ককনির দাসত্ব আপনি আঞ্চলিক ভাষাভাষী মানুষের কান্ধে ক্যান চাপাইতে চান? আপনার আবদার হইতেছে, মাইনষে ঢাকায় আইসা আপনের ভাষা শিখবো দুই চাইর বছর, তারপর সে আপনের লগে কথা কওনের যোগ্যতা অর্জন করবো। দেশের বাকি মাইনষের থিকা কয়েক বছর আগাইয়া থাকনের ফন্দি আপনার।

কথা টুইস্ট কইর‍্যা লজিকাল ফ্যালাসী করতাছেন ক্যান? আমি কইসি-

যদি শাসনব্যবস্থায় আমূল বিকেন্দ্রীকরণ না হয়, তাইলে প্রত্যেক বছরই প্রায় সকল ছাত্রছাত্রীই ঢাকায় আইবো পড়াশুনা করতে। বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের এই সময়ে তাদের অনেকটা অচিন্তেই যে ব্লেণ্ডিংটা হইতাছে তা কুনোভাবেই স্রেফ আঞ্চলিক ভাষা বা অসামাজিক ফাউল ভাষা কয়া ইগনোর করা যাইবোনা।

"যান, তাগোরে থামান, কইয়া দ্যান, বাবা ও মায়েরা, তোমরা ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে বা কোচিং করতে গেলে দয়া করে আশেপাশের মানুষের কথা ধারণ কোরোনা। ওতে ভাষার অকল্যাণ হয়। হয় আঞ্চলিকতা টিকিয়ে রাখো, অথবা প্রমিত ভাষায় কথা বোলো; কেমন?"

গণমানুষের সবচে আরাম কীসে? আপনের মুখের কথায় গণমানুষের আরাম কবে থিকা নির্ধারিত? আপনে ক্যাঠা?

কী আর কমু বাই শরমের কথা! আমিই সেই গণমানুষ। ভাবছিলাম ইট্টূ গলা উঁচা কইরা কিছু কইতে পারুম! কিন্তু যে ধমক দিলেন, আমার তো ডর করতাছে!! মন খারাপ

হিমু এর ছবি

কোন ভাষা বাংলার সগলতে মিল্লা বানাইলো? আপনের এই ককনিতে নোয়াখাইল্যাগো কনট্রিবিউশন কট্টুক? রংপুইরাগো কনট্রিবিউশন কট্টুক?

পাইলাম না উত্তর। আরেকবার কন।

এই দেশটা কি খালি ঢাকায় আইসা পড়ালেখা করইন্যা ছাত্রছাত্রীগো নাকি? ঢাকায় আসে না এমন লোকের কান্ধে এই ককনি চাপান কিল্লেগা? আর আমার যেই বন্ধু সিলেট থিকা বা চট্টগ্রাম থিকা ঢাকায় আইসা পড়ালেখা চাকরি বিয়াশাদি কইরা একাকার অবস্থা, তার তো লব্জ এই ককনির ধারেকাছ দিয়াও যায় নাই। সে কয় অন্য ভাষা। এই ককনির লগে তার মিল নাই ক্যান?

আপনি গণমানুষের চামড়া গায়ে ককনিবাদী। রাইছুপন্থী। খ্যালতাম না।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

হতে পাত্তেম এর ছবি

প্রশ্ন ১. কলকাতার ভাষা কোনটা?

উদাহরণ চাইলে কলকাতার আমজনতার সিনেমা, সিরিয়াল, চটুল গান, উপস্থাপনা শুনতারেন।

প্রশ্ন ২. জনগণ কোন ভাষায় কথা বলে মজা পায়?
প্রশ্ন ৪. ঢাকাইয়া ভাষা কেন মান ভাষা হবে? কেন পটুয়াখালির ভাষা নয়?
প্রশ্ন ৫. ঢাকাইয়া ভাষা কোনটা?

নিচের কমেন্টে ব্যাখ্যা করছি। এইবার আপনি কন, বাংলাদেশের মানুষরা কি গণমাধ্যমে, সভা-সমিতিতে, বক্তৃতায় রাবিন্দ্রীক বাংলায় কতা কয় না আঞ্চলিক বাংলায়? যদি কোনোডাই না হয় তাইলে হেইডা কি? অশুদ্ধ প্রমিত ভাষা???? আর আপনার প্রমিত ভাষারে পশ্চিম বঙ্গীয় রাবিন্দ্রীক ভাষার আধিপত্য মনে হয়না কিন্তু ঢাকাইয়া ভাষারে মনে অয় ক্যান? এইরম বায়াসের কারণ কি?

প্রশ্ন ৩. আমাদের বাঙাল ডাকে পশ্চিমবঙ্গের লোকজন। তাদের ডাকা শব্দে আমি কেন আমার পরিচয় চিহ্নিত করবো?

আমি জাতিগতভাবে বাংলাদেশি। এথনিক রেস হিসাবে বাঙালি। এহন আপনে মানতে চান বা না চান, বাঙালি জাতির এই এথনিসিটি অনেক আগে থেইক্যাই মূলধারায় দুইভাগে বিভক্ত। পূর্ববঙ্গীয় আর পশ্চিমবঙ্গীয়। কারণ হিসাবে স্থানগত পার্থক্য আর ধর্মীয় বিভাজন, খাদ্যাভ্যাস এবং ভাষীক বিভিন্নতা মুখ্য। এইডা আজকালের কথা না। সুদুরকাল থেইক্যাই পূর্ববঙ্গীয় বাঙালিরা তাগোরে বাঙাল হিসাবে পরিচয় দ্যায়। পশ্চিমবঙ্গীয়রা এইডারে ক্যামনে দ্যাখে, হেয়বাদী বা তুচ্ছার্থক কীনা সেইডা নিয়া তারা কখনোই মাথা ঘামায় নাই। সৈয়দ মুজতবা আলী নিজেরে কইতেন খাজা বাঙাল। জগদীশ চন্দ্র বসু, দীনেশ চন্দ্র সেন, উপেন্দ্রকিশোর রায়, জসীমউদদীন কখনোই বাঙাল অভীধায় আপত্তি করেন নাই। বঙ+আল থেইক্যা যেঁ বাঙালের আবির্ভাব তারে আমি খারাপ মনে করুম ক্যান? বাংলার আইলেরই তো আমি মানুষ! তাই শুধু কইলকেতারা কীসব মনে কইর‍্যা কয় সেইডা দেইখ্যা আমিও নিজেরে শুদ্ধস্নান কইর‍্যা নিমু ক্যান?

কাজেই স্বরূপ আরেকবার আঞ্চলিক দলাদলি ভুইল্যা যাচাই করণ জরুরী।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

কারণ হিসাবে স্থানগত পার্থক্য আর ধর্মীয় বিভাজন, খাদ্যাভ্যাস এবং ভাষীক বিভিন্নতা মুখ্য।

হুম। বুঝা যাচ্ছে। তা ঐ যে অনেক আগে থাইক্যা বিভাজনের কথা বললেন সেই অনেক আগে পূববাংলায় হিন্দু-মুসলমান অনুপাত কেমন ছিলো বলেন তো? আপনার কথায় মনে হচ্ছে ঐ অনেক আগে থাইক্যা পূব বাংলা ছিলো খালি মুসলমানের আর পশ্চিম বাংলা ছিলো খালি হিন্দুর জন্য নির্ধারিত।

ভাষীক ভিন্নতা ঢাকাইয়া আর সিলেটে কিংবা সিলেটে আর চাঁটগাইয়াতে তো অনেক বেশী। এই সুত্রধরে তাহলে পূববাংলা ও কয়েকধারায় বিভক্ত-নাকি?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

হিমু এর ছবি

কলকাতার আমজনতার সিনেমা, সিরিয়াল, চটুল গান, উপস্থাপনা শুঞ্ছি। সেইটা কলকাতার কথ্য ভাষা। সেই ভাষার সাথে বাংলাদেশের প্রমিত ভাষার সাদৃশ্য ক্ষীণ। অতীতে ও বর্তমান কালের কনজুগেশনে এই পার্থক্য প্রকট।

নতুন প্রশ্ন, রাবীন্দ্রিক ভাষা কোনটা? আর বাংলাদেশে প্রমিত বাংলায় লেখার পর সেইটা বোঝে না এমন কে আছে? তারে নতুন কইরা প্রমিত ভুলাইয়া ব্যর্থরাইছুর বাংলা শিখাইতে হইব ক্যান?

তুর্কি-পাঠানরা আইসা মাইরাধইরা আমাগো মায়রে আম্মা আর বাপরে আব্বা ডাকা শিখাইছে। এখন কি এই আধিপত্য ভুলতে হইবো?

আমার প্রমিত ভাষারে রাবীন্দ্রিক আধিপত্য মনে হয় না কারণ এইটা প্রমিত ভাষা। শৈশব থিকা এই ভাষায় লিখতে শিখছি, আর দরকার পড়লে বলতে শিখছি। আপনি হাই কমোডে চইড়া হাগার সময় যে কারণে মনে হয় না ঐটা ইংরাজের আধিপত্য, আমারও একই কারণে এইটারে পশ্চিমবঙ্গীয় আধিপত্য মনে হয় নাই।

অপ্রমিত ভাষায় কথা কমু দেইখা অপ্রমিত ভাষায় লিখতেও হইবো নাকি? আপনের লিখতে ইচ্ছা করলে ল্যাখেন গিয়া। কে মানা করছে? কিন্তু আপনের প্রেসক্রাইব করা অপ্রমিত ভাষারে নতুন কইরা মান ভাষা বানাইতে হইবো ক্যান? আপনে ক্যাঠা?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

উত্তরাধুনিক দর্শনে সে প্রশ্নের উত্তরও আছে। এম্ব্রেস ডাইভার্সিটি এস লং এস ইট ডাস নট হ্যাম্পার দ্যা 'কমিউনিকেশন'। সাহিত্যে/ভিডিওতে কোন ভাষায় কথা বলতে হবে সেইটা নির্মাতা আর কনজিউমারই ভালো বুঝবে। 'কমিউনিকেশন' না করতে পারলে সেটার ইউটিলিটি থাকবে না, সহজ হিসাব।

এখন সরকারী ফাইলের ভাষা/দলিলের ভাষা যত খুশী প্রমিত করেন। কোনটা প্রমিত কোনটা না সেটা নিয়ে ক্যাচাল করেন, সেই ক্যচাল নিয়ে মনে হয় না আমরা কোন ক্যচাল করছি।

হিমু এর ছবি

আপনি যদি আমার কথাকে "ক্যাচাল" বলেন, ইট হ্যাম্পারস দ্য কমিউনিকেশন। এটা সবার আগে শিখে ফেলুন।

আপনি আমাকে সাহিত্য বা ভিডিওর নির্মাতা বা কনজিউমারের বাইরে ধরছেন কী কারণে? আপনার কথার টোনটা হচ্ছে এমন, এগুলো অন্য দুইটা লোকের ব্যাপার, আপনি নাক গলাইতে আইসেন না। ব্যাপারটা সেরকম নাকি? আমিও ফারুকি আর তার ল্যাংবোটদের প্রোডাক্টের কনজিউমার। এবং এটা নিয়ে আমার বলার কিছু থাকলে আমি এসে বলবো। ওপরে একটু খেয়াল করে পড়ে দেখে আসেন, ফারুকীর ভাষা নিয়ে আমি কিছুই বলছি না, বলছি কনটেন্ট উপস্থাপন নিয়ে।

শুধু "কমিউনিকেশন" করতে পারাটাই একমাত্র মানদণ্ড নয়। দুইটা মেয়ে একটা কাপে হেগে সেটা খাচ্ছে, এই জিনিস ইউটিউবে কোটি কোটি লোক দেখেছে। এই ভিডিওটা তো কমিউনিকেইট করতে পেরেছে বলেই ধরে নিতে হয়। বাস, আপনি এটাকে পাশমার্ক দিয়ে প্রাইম টাইমে দেখিয়ে দেবেন দেশের চ্যানেলে?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

"ফারুকীর ভাষা নিয়ে আমি কিছুই বলছি না, বলছি কনটেন্ট উপস্থাপন নিয়ে"

ভিডিওর নাম পেলে খুশী হতাম। কোন নাটকের কোন অংশের উপস্হাপনা আপনার ইুটিউবের-হাগুর মত মনে হচ্ছে।

প্রাইম-টাইমে-কাপে-হাগু-খাওয়া-ভিডিও নিয়ে আপনার সাথে একমত।
তবে হাগু ছাড়া বাউন্ডারী পুশ করতে আমার আপত্তি নাই।

হিমু এর ছবি

আচ্ছা। আমি আপনাকে লিঙ্ক আর টাইমস্ট্যাম্প দিয়ে যাবো এই পোস্টে। তবে সময় প্রার্থনা করি।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

উত্তরাধুনিক দর্শনটা কী বস্তু বুঝি নাই। সব কিসুতে এই মামারে না টানলে হয় না?


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

মামা কেন্দ্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে কয় তাই টানলাম। পোরোবলেম আছে নিহি?

অতিথি লেখক এর ছবি

আপা/ভাই হতে পাত্তেম, আপনার করুনাধারায় স্নাত হয়ে ধন্য হলেম। কথা হচ্ছিলো আসলে গণমাধ্যমে ব্যবহৃত ভাষার গ্রহনযোগ্যতা এবং বোধগম্যতা নিয়ে। আপনি দু'কাঠি এগিয়ে গেলেন। পশ্চিম বাংলার অনেক মানুষ যেমন বিক্রমপুরী-বরিশাইল্যা বাংলা বলেন তেমনই বাংলাদেশের অনেক মানুষ নদীয়া-শান্তিপুরী বাংলা বলেন।

বাঙালদের মানভাষা হইবো কুনো বাঙাল প্রধান অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষা। মান/প্রমিত ভাষা আকাশ থেইক্যা পয়দা হয়না, সেইডাও কুনো একটা আঞ্চলিক ভাষাই। কাজেই হীনমন্যতায় না ভোগাই মঙ্গল।

আপনার এই মন্তব্যে একমত। তবে যদি বলতে চান ভাই-বেরাদরদের ভাষা মানভাষা, তবে মানতে পারলাম না।

রাতঃস্মরণীয়

হতে পাত্তেম এর ছবি

ঐক্যমত্যের লাইগ্যা ধন্যবাদ।

ঐডা মানভাষা না, ইনফ্যাক্ট মানভাষা কেউই বানাইতে পারেনা, সেইডা লাখো লোকের বয়ানে গইড়া ওঠে।

আবারও ধন্যবাদ।

কুলদা রায় এর ছবি

হুতুম প্যাঁচার নকশা
auto
auto
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

Attiq Rarri এর ছবি

১০০% সহমত। আসলে -করছি, গেছি, ভাষাগুলো ফারুকির নাম শোনার অনেক আগে থেকেই ব্যাবহার করে আসছি আমি ও আমার বন্ধুরা এবং আমার বয়সী শত্রুরা। ফারুকি এটা তৈরী করেছেন শুনলে হাসি পায় আবার দুঃখও লাগে। তার নাটক নিয়ে কিছু বলার নাই। আগের গুলি ভাল ছিল এখন আর ভাল লাগে না। তবে ভাষার ব্যাপারে ফারুকি যেটা করেছে সেটা হচ্ছে প্রোমট। নতুন নির্মাতারা তা থেকে অনুপ্রানিত হচ্ছে বানিজ্যিক কারনে। এই প্রবনতা হয়তো থেমে যাবে কিন্তু ভাষা তার নিয়মেই পথ করে নেবে।

'ছ' বর্নের উপর অস্বাস্থকর চাপ এড়াতেই আমার মনে হয় আমরা -করছি, গেছির, ব্যাবহার শুরু করেছিলাম। অবশ্যই সচেতন ভাবে না। তবে বলে আরাম পেতাম।ঐ যে গুরুজনদের সামনে তথাকথিত শুদ্ধ বলতে প্রানে পানি থাকত না।

যেমনঃ খেয়ে-ছো.........আমরা বলি খাইছো। অনেক সহজ, শান্তিময় ছিলো ব্যাপারটা। ফারুকি এটাকে আঁৎলামির টপিক বানিয়ে দিলো।

কোনটা ভাষার মূল ট্রাক হয়ে উঠবে সেটা অবশ্যই গ্রহন-বর্যনের ব্যাপার, এই ভাষা, যেটাকে দুঃখজনক ভাবে ফারুকির ট্যাগ লাগানো হয়েছে, সেটা যাদের অপছন্দ তাদেরই দায়িত্ত্ব, যেটাকে তারা পছন্দ করেন তার প্রোমট করা। যদি যোগ্যতার অভাব হয় সে জন্য ফারুকিকে দায়ি করাটা ঠিক হবে না।

কোন একটা রেখাকে ছোট দেখানোর উপায় হচ্ছে তার পাশে বড় একটি রেখা টেনে দেয়া।

ইয়া হাবীবি এর ছবি

আমি জন্ম থেকেই ঢাকায় বড় হইছি। 'খাইসি/করসি' আমি বন্ধুদের সঙ্গে সবসময় বলে এসেছি। এখন এ ভাষাটার আবিষ্কারক হিসেবে ফারুকীরে ক্রেডিট দিতে আমি নারাজ। এরকম ভাষায় কথা বলাটা আগে থেকেই ছিল। ফারুকী সেটা টিভি স্ক্রীণে নিয়া আসছে। আমরা কইতাম/কই, দোস্ত হেভি জোস। ফারুকীর ভাই বেরাদার কয়, বেশি জোশ।

ফারুকীর প্রায় সব নাটক আমার দেখা হয়। নাটকে খাইসি গেসির প্রয়োগ ফ্যামিলির ছোট বাচ্চাদের শুদ্ধ বাংলা শেখার অন্তরায় এমনটি আমি মানি না। যে বিষয়টি সবাই এড়িয়ে যাচ্ছে সেটা হলো তার নাটকের সংলাপ। খাইসি করসি টাইপ ভাষা না। তার নাটকে অশ্লীল এবং যৌন ইংগিতপূর্ণ সংলাপ থাকে। নায়ক বলছে নায়িকাকে, লাড়িস না, বেশি লাড়লে তো পইড়া যাইব। অথবা নায়িকা বলছে, আয় তোর ঋণ শোধ কইরা দিই।

ফারুকীর প্রথম জীবনের কিছু নাটক এবং বিজ্ঞাপন ছাড়া বাকি সব কিছু গু হয়েছ। ইটিভিতে তিনি 'চোর চোর' নামে একটি অখাদ্য সিনেমা বানিয়েছিলেন। এরপর ব্যাচেলার নামে পূর্ণদৈঘ্যূ মোবাইল বিজ্ঞাপন বানিয়েছেন। মেই ইন বাংলাদেশ তার থার্ড ...

ভাই বেরাদারদের জন্য করুনা হয়। ফারুকী এখন তেমন নাটক বানান না, অথচ তার নামেই ভাই বেরাদারদের নাটক চলছে। ফাহমী আর রনির নাটক দেইখা লোকে বলে, ফারুকীর একটা নাটক দেখলাম। গুরু এমনভাবেই বেরাদারদের মাথায় ছায়া (?) হয়ে আছেন।

হিমু এর ছবি

আজকের নতুন শব্দ: ফারুকীয়া। এটি একটি বিশেষ ধরনের পরকীয়া, যা প্রতিবেশিনী অতৃপ্তা ভাবীদের সাথেই করণীয়।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

কুলদা রায় এর ছবি

বস এই পরকীয়া নিয়ে তপন রায়চৌধুরীর একটি গল্প আছে।

...হঠাৎ হোস্টেলে প্রচণ্ড উত্তেজনা। 'ঐ মহামানব আসে।' টোমোরি হস্টেলের কুণ্ডুবাবু ডাফে (হস্টেলে) আসছেন। কোনও প্রতিবেশীর বাড়ির উঁচু দেওয়াল টপকে তিনি গৃহবধূর সঙ্গে প্রেম করায়, ব্যবসায়ী স্বামী সুপারিনটেন্ডেন্ট কেলাস সাহেবের কাছে নালিশ করেছেন। সাহেব ন্যায্য উত্তর দিয়েছেন,'' How can I control fifty bulls, when you cannot control your cow?''--আমি এই অর্ধশতক ষণ্ড কি করে সামলাব? তুমি তোমার একটি গাই-ই সামলাতে পার না। কিন্তু কিছু একটা করতে হল। এক রবিবারের সকালে গোটা তিনেক স্টিলের ট্রাঙ্ক, একটা হোল্ডল এবং গলায় অপ্রত্যক্ষ প্রসূনমালা পরে বীরকুলতীলক কুণ্ডুবাবু ডাফ হস্টেলে আবির্ভূত হলেন। অবিলম্বে তাঁর ঘরে ভিড় জমল। শ্রীকুণ্ডুমাহাত্ম্য তাঁর মুখেই সবাই শুনতে চায়। কুণ্ডুবাবু ধীরেসুস্থে তাঁর কীর্তিকাহিনি সবিস্তারে বললেন। নিস্তব্ধ বিস্ময়ে আমরা শুনলাম। শুধু ভিক্টরীয় ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক সত্যমাধবের কাছে ব্যাপারটা নিন্দনীয় মনে হল। সে বলল, 'আচ্ছা কুণ্ডুবাবু, আপনি অন্যের স্ত্রীর সঙ্গে প্রেম করলেন, আপনার বিবেকে বাঁধল না?''কুণ্ডু ন্যায্য ক্রোধে ফেটে পড়লেন,''সত্যমাধববাবু, আপনি কি চান আমি কুমারী মেয়ের সর্বনাশ করি?''

আনিসুল হক এবং ফারুকী বোধহয় কুমারী মেয়েদের একটু সর্বনাশ করতে চান আপাতত। না কি বস?
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

জাহামজেদ এর ছবি

(গুড়)

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

জাহামজেদ এর ছবি

তারা নাটকে বৃদ্ধকে ডাকে চাচা, আবার চাচার স্ত্রীকে ভাবি ! পরকীয়ার এই বৃত্ত থেকে এরা কবে যে বের হবে !

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

অয়ন [অতিথি] এর ছবি

আমার জন্ম ৭৫ সালে, এর পর ঢাকাতেই বড় হইসি। করসি গেসি খাইসি .. এই ভাষায় কথা আগেও বলসি এখনও বলি। কিন্তু ফারুকি ঘরানার নাটকে এই সাধারন কথ্য ভাষাকেও বিকৃত করে বলেন পাত্র পাত্রীরা। কেউ কেউ "স" এর উপর বেশি চাপ দিয়ে বলেন কস্‌সি, গেস্‌সি ইত্যাদি, আর কেউ কেউ "স" এর বদল এ "ছ" দিয়ে বলেন, যেমন, করছস, দেখছস, ইত্যাদি। স জায়গায় ছ দিয়ে পুরান ঢাকার বাসিন্দারাও বলে থাকেন। সুতরাং যদি নাটকের পাত্র/পাত্রী সারাক্ষণ ঢাকাইয়া কুট্টি ভাষায় ডায়ালগ দিতে থাকেন, তাহলে করছস, দেখছস এ সমস্যা নাই। কিন্তু উচ্চারণ যখন আরোপিত শোনায়, তখন কানে বাজে, খারাপ লাগে।

আরেকটা বিরক্তিকর জিনিষ কমন এদের নাটকে, সেটা হল আজগুবি ভাবে ইংরেজী শব্দের প্রয়োগ। উদাহরনঃ কোন এপার্টমেন্টটা চুজ হয় দেখ, আমি তো সরি চাইসি। এখানে হয় নাট্যকার/পরিচালক চাচ্ছেন ভুলটা ইচ্ছা করে দেখাতে, নতুবা এই শব্দ প্রয়োগ যে ভুল সেটাই তার বোধগম্য নয়।

তাসনীম এর ছবি

একটু অফ-টপিকঃ আমার এক বন্ধু ছিল আহির আলম নামে, একুশে টিভিতে কাজ করত, জাফর ইকবালের "প্রেত" এর নাট্যরূপ দেয় সে। আমি শুনেছি সেখানে সে প্রথম আমাদের মুখের ভাষা ব্যবহার করে। শুনেছি বললাম, কারণ তার কোন কাজ দেখার সৌভাগ্য আমার হয় নি। আহির এক সড়ক দুর্ঘটনায় ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর ১১ মারা যায়। আমি তখন দেশের বন্ধুদের সাথে একটু ডিটাচড ছিলাম, ওর মৃত্যুসংবাদ আমি পাই মুহম্মদ জাফর ইকবালের একটা কলাম পড়ে। এটা আমার জন্য খুব দুঃখজনক একটা ব্যাপার ছিল। আরও দুঃখের বিষয় আমি আহিরের কোন কাজই এখন পর্যন্ত দেখিনি, কোন দোকানেই পাইনি ওর কাজের কোন ডিভিডি।

ওই কলাম থেকেই জানতে পারি যে আমরা যে ভাষায় কথা বলি সেই ভাষাই নাটকে ব্যবহার হয়েছে। এটা ঢাকা শহরের চলিত ভাষা (পুরানো ঢাকা নয়), যেটাকে অনেক "হইসে, খাইসে" ভাষা বলে অভিহিত করেন। ফারুকী হয়ত এই ধারাই ব্যবহার করেন যদিও মুখের ভাষার কোন সেট স্ট্যান্ডার্ড নেই। এটা নিশ্চিত গোটা দেশকে রিপ্রেজেন্ট করে না।

তবে ফারুকীর নাটকের সমস্যা ভাষা নয়...আমার মতে...

১/ সবাই অত্যন্ত উচ্চস্বরে কথা বলেন, এটা করলে অভিনয় ও এক্সপ্রেশন কম আনতে হয়।

২/ মহিলা চরিত্রগুলো প্রায় সর্বদাই কলহের সুরে কথা বলেন।

৩/ পুরুষ চরিত্রগুলো মোটামুটি প্রায় সবাই লুচ্চামি (এই ব্লগে বলা হয় লুলামি) করেন।

হুমায়ূন যুগের পর ফারুকী যুগের শুরু হয়েছে, এটাও শেষ হবে এক সময়। অনিমেষ আইচের কিছু ভালো নাটক চোখে পড়েছে, এছাড়াও বেশ কিছু ভালো নাটক দেখেছি সাম্প্রতিক সময়ে...অনেক নতুন নাট্যকার আসছেন।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

নুসদিন এর ছবি

স্ক্রিপ্টও থাকে না। ভাই বেরাদরদের মধ্যে দুই জন আছেন যারা সিনেমা বানাচ্ছেন। এদের সিনেমায় অভিনয় করছেন এমন একজনের সাথে বেশ কয়েক মাস আগে কাজ ছিল। যখন জিজ্ঞেস করলাম, গল্প কী? তখন সেই ভাইয়া উত্তর দিল, "তা তো জানিনা। আমাকে বললো অভিনয় করতে হবে, আমিও রাজী হয়ে গেলাম যেহেতু আগেও কয়েকটা নাটকে ওদের সাথে কাজ করেছি। শ্যুটিং এর দিন যাব, দৃশ্য বুঝিয়ে দিবে, ডায়লগ বলবো"! এই হচ্ছে অবস্থা।

জাহামজেদ এর ছবি

হাউজফুলের ট্রেলারে তো শিল্পীরা নিজেদের কন্ঠেই বলেন এই স্ত্রিপ্ট ছাড়া কাজের কথা !

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

জাহামজেদ এর ছবি

আহির আলম অনেক ভালো নির্মাতা ছিলেন, অভিনেত্রী সাবেরী আলমের ভাই। প্রেত নাটকে তিনি কিছু জায়গায় কথ্য ভাষার ব্যবহার করেছিলেন ঠিকই, তবে সেটা বাইরের কোনো দৃশ্যে না, পরিবারের লোকজনের ঘরোয়া আলাপে। সেসময়ে একুশে টিভির প্রেত, বিপ্রতীপ আর বন্ধন এই তিনটা নাটক খুব জনপ্রিয় ছিলো। প্রেতের নির্মাতা ছিলেন আহির আলম, বিপ্রতীপের গিয়াসউদ্দিন সেলিম আর বন্ধনের অমিতাভ রেজা। ফারুকী তখন টিভি নাটকে হাঁটি হাঁটি পা পা অবস্থায়।

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

রণদীপম বসু এর ছবি

সিরিজটা আগে শেষ হোক, তারপর দেখা যাবে নে !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

জি.এম.তানিম এর ছবি

১। ফারুকীর প্রথম দিকে একুশের জন্যে বানানো কিছু নাটক দারুণ লেগেছিল। গতানুগতিক মেলোড্রামাটিক নাটকের বাইরে তখন ফারুকী ছাড়াও আরও অনেক নতুন নির্মাতা কাজ করেছিলেন। সেখানেও তাকে আলাদা করে চোখে পড়েছিল কারণ নিজের একটা স্টাইল তৈরি করে নিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে তার কাজ আশানুরূপ হয় নি। চলচ্চিত্রগুলোতে অনেকগুলি ছোট ছোট ভালো উপাদান থাকলেও সেটা সব মিলিয়ে পরিপূর্ণতা পায় নি একেকটা একেক কারণে। কেবল বিজ্ঞাপন নির্মাণেই তার মুন্সিয়ানা প্রায় অপরিবর্তিত রয়ে গেছে। ভাই বেরাদার আইডিয়াটা আমার কাছে খারাপ মনে হয় নি। একসাথে কাজ করে উঠে আসার জন্যে যে প্লাটফর্ম দরকার সেটা তারা ফারুকীর কাছে পেয়েছে। অনেকে টিকতে পারে নি, কেউ কেউ টিকে গেছে, কেউ ভালো কাজও করেছে। তবে এখন অনেকটা রিপিটেশন মতো শুরু হয়ে গেছে, একই ধরণের গল্প ও চরিত্রের পুনরাবৃত্তি ইদানিং তাই অনেক বেশি।

২। ভাষা প্রসঙ্গে বলতে চাই, ফারুকীর খাইসি গেসি তার প্রচলিত নয়, তার প্রচারিত এবং আমার মতো অনেকেই সেটা কথ্য বাংলায় বহুল ব্যবহার করে। আমার কাছে নাটকে খাইসি গেসি শুনতে সবসময় খারাপও লাগে না, তবে অনেকেই শেষের স এ জোর দিয়ে খাইসসি গেসসি টাইপের উচ্চারণ করলে সেটা কানে লাগে।

ভাষার প্রমিত রূপ থাকতেই পারে, তবে সাহিত্য বা শিল্প প্রমিততেই হতে হবে সবসময় সেটা আশা করি না। সেটা আঞ্চলিক, ফেইক আঞ্চলিক (গ্রামের নাটকে একটা মিশ্র ভাষা ব্যবহার হয় বলে শুনেছিলাম কোথাও), খুব কম মানুষের ব্যবহৃত (সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ব্যবহার করে না এমন), এমন কি কাল্পনিক (স্টারট্রেকের ক্লিঙ্গন বা আভাটারের না'ভি)ও হতে পারে। নাটক বা চলচ্চিত্রেও তাই চাই না এমন কোন চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত। ভাষা সময়ের সাথে বদলাবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। এই পরিবর্তনটা তো আটকে রাখা যাবে না। তবে সেটা দুর্বোধ্য হয়ে উঠলে সমস্যা। ভাই বেরাদারের কোন এক নাটকে সম্ভবত চাটগাঁইয়া ভাষার সাথে সাবটাইটেল দেওয়া হতো। খাইসি গেসির মতো ভাষার ক্ষেত্রেও যদি দুর্বোধ্যতা ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় সেটা করা যেতে পারে বড়োজোর। জোর দিয়ে এমন পরিবর্তন ঠেকিয়ে রাখা যায় না।

৩। তবে সব দর্শককে সব কিছু দেখানো যায় না। এজন্যে আসলে প্রয়োজন একটা টেলিভিশন নীতি, আর রেটিং ব্যবস্থা। বয়স অনুযায়ী একটা রেটিং চালু করা যেতে পারে। সেটা বরং একটা ভালো ধাপ বলে মনে হয় আমার। আর মান নিয়ন্ত্রণের জন্যে সেন্সর নয়, বরং রেটিং কর্তৃপক্ষ বসানো যায়, যাতে উপরের মতো "লাড়িস না" শিশুর মুখে শুনতে না হয়। এটাকে আমি আপত্তিকর ভাষা বলবো, খাইসি গেসি কে নয়।

৪। নকল নাটক খালি ভাই বেরাদার না, অনেকেই এখন বানান। কোন কোন নাটকের ট্রেলার দেখেই বলে দেওয়া যায় কোন হিন্দি মুভি থেকে বানানো। মূলধারার অনেকেই এখন এই চুরির দোষে দোষী।

৫। আগের মতো টিভির সামনে নাটক দেখার জন্যে বসা হয় না। যদিও ঈদে চাঁদে বসি, বেশিক্ষণ টিভির সামনে বসে থাকার ধৈর্য হয় না। চ্যানেলের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে নাটকের মান গুণানুপাতিক হারে কমেছে। অভিনয় ও কাহিনীর দৈন্যতা অনেক পীড়া দেয়। ভালো কাজ হয়তো কেউ কেউ করছে, কিন্তু এই সংখ্যার ভীড়ে সেটি সামনে আসতেও পারছে না।

৬। জাহামজেদ ভাই, ভালো শুরু করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত এটা যেন আলোচনা না হয়ে ব্যক্তি আক্রমণে রূপ না নেয় সেদিকে চেষ্টা রাখবেন অনুরোধ রইল। আর যেখানে প্রয়োজন হয় দয়া করে রেফারেন্স দিবেন, রেফারেন্সবহুল লেখা পরবর্তীতে রেফারেন্সের কাজ করতে পারে।

লেখাটা পুরোটা কথ্য অথবা পুরোটা প্রমিত ভাষায় হলে ভালো লাগত। মাঝে মাঝে দুই একটা প্রমিত ঢুকে পরে একটু তাল কাটছে পড়তে গিয়ে। একটু দেখবেন দয়া করে। ভালো থাকুন। চলুক
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

হতে পাত্তেম এর ছবি

আলোচনা অহন রাইসু বিষয়ক ত্যানা পেঁচানো এবং একই কথার পুনরাবৃত্তি ছাড়া আর কিছুই হইতাছে না। কাজেই সর্বশেষ বয়ান দিয়া যাই- ত্যানা পেঁচানো ছাড়া যদি ভিন্ন কোনো প্রসঙ্গে কেউ বাতচিত করতে চান তো বান্দা হাজির থাকবো।

কথা হইতেছিলো মান ভাষা নিয়া। মান ভাষারে স্ট্যাটিক মনে কইর‍্যা লেইপ্যা পুঁইছ্যা ধুইয়া রাহাডা বড্ড অযৌক্তিক এবং হাস্যকর।

ঔপনিবেশিক ফোর্টউইলিয়ামের ভটচাজ বামুন আর ইংরেজ পাদ্রী আর এছলামী মোল্লারা যে বাংলা ভাষার গড়নের তেরোডা বাজাইয়া দিয়া গেছেন তা শহীদুল্লাহ আর হরপ্রসাদ শাস্ত্রী বারবার আতংকিত হইয়া কয়া গেছেন। তারপরে বঙ্কিমীয় আস্ফালনে আলালী বা হুতোমী বাংলা ভাত পায় নাই। প্রমথ চৌধুরী ভগিরথীয় কথ্য বাংলায়(তাও যদি ফরাসী উচুমার্গীয়তা না থাকতো তাইলে কল্কে পাইতেন না।) সবুজপত্রে বিপ্লব ঘটানোর পর উৎকট সাধু গদ্য ছাইড়া দলে দলে সবাই চলিতে মন দ্যান, মায় রবীন্দ্রনাথও। আশ্চর্য হইলো তখন কেউই এইডারে কলকাতার আঞ্চলিক ভাষার আধিপত্য কইয়া গোসসা করে নাই, হেজিমোনিও খুঁইজ্যা পায় নাই। একবাক্যে মাইনা নিছে(কারণ বিশ্লেষণ আপাতত বাদ থাউক।)।

মানভাষা গণমানুষের ভাষারই একটা সর্বপ্রচলিত সংস্করণ। কেউ চাপায়া দিলেও যেমুন কেউ খায়না, উদ্ভট কিছু এট্টা বানাইলেও কেউ খাইবো না। কিন্তু এই বিকাশডারে সনাক্ত কইর‍্যা তারে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিলে বিজাতীয় ভাষার আগ্রাসন বা ব্যাকরণিক শিক্ষার প্রয়াসডা অনেক সহজতর হয়। বক্তব্যও অধিক মানুষের কাছে সহজে পৌঁছানো যায়(এর মইদ্যে সাহিত্যরেও ধরতারেন)।

বাঙালগো ভাষা জিন্দেগীতেও পশ্চিমবংগরে ফলো করে নাই, তাইলে পশ্চিমবঙ্গীয় সাহিত্যরূপরেও বা করবো ক্যান? বা এতদিন ধইরা করছে ক্যান?(আহমদ ছফারে জিগাইলে ভালা উত্তর পাওয়া যাইবো।)

আমি সহ উপরে কমেন্টে অনেকেই উল্লেখ করসেন যে দ্যাশের বাংলা ভাষার সামগ্রিকরূপে একটা ব্লেণ্ডিং আসতাছে। মান ভাষা হিসাবে উঁচুতালার লোকে তারে আমল না দিলেও সেই ব্লেণ্ডিংএর ফলে একটা ভাষারীতির যে সৃষ্টি হইতাছে তাতে কুনো সন্দেহ নাই। প্রাথমিক রাইসু বা এবাদুর বা ফারুকীয় জাতীয় কিছু আবালীয় প্রচেষ্টার(প্রাসংগিক বা অপ্রাসংগিকভাবে আলালী-হুতোমী দ্রষ্টব্য) পাশাপাশি আরো অনেক লেখকই একটা নতুন ফর্ম খুজে পাওয়ার চেষ্টা করতেছেন। শহীদুল জহির নিজেও আগে প্রমিত ভাষাতেই ল্যাখতেন, চাটগাইয়া আর পুরান ঢাকার আঞ্চলিকতা নিয়া এক্সপেরিমেন্ট কইর‍্যা তারপর নিজেরে পূর্ণভাবে প্রকাশ করছেন(এইডা উনিই কইছেন।)।

কাজেই পরিবর্তন যে প্রকাশ্য তা অস্বীকার করণের কোনো উপায় নাই। এইখানে রাইসুর মত আমি চাপাইয়া ও দিতাছি না, আবার রাইসুপন্থী বইল্যা কাউরে ট্যাগিংও করতে চাইতেছি না। আমি স্রেফ চাইতেছি যে, এই পরিবর্তনরে আমি যেন স্বাভাবিকভাবে নিবার একটা পরিবেশ পাই। কেউ যদি আমার ভাষারে ফাউল, অমার্জিত ভাষা কইয়া নাক অন্তঃত আমার সামনে না সিঁটকায়, পোলা মাইয়ারে আমার পোলা মাইয়ার লগে মিশতে না দ্যায়।

রাবিন্দ্রীক বাংলা বা পশ্চিমবঙ্গীয় বাংলারে কেউ যদি মানভাষা মানে তো তার বিবেচনা, আমিতো তারে মানা করতাছিনা, কিন্তু আমার প্রস্তাবনারে আটকানো বা নাক সিঁটকানো বা রাইছুপন্থী বানাইয়া দ্যাওয়ার মাজেজা কি? ভাষা তো আর প্রমথীয় বা রাবিন্দ্রীক যুগে আটকায়া থাকবোনা বা রাইসু তার হাফ পেন্টালুন দিয়া পাল্টাইতেও পারবো না। তাইলে কিসের এই উষ্মা? আমিতো কইনাই যে, শুদ্ধ বাংলা শুনলে আমার নাক সিটকায় বা কমোডে হাগার মত আরাম পাওয়া যায়!

একটা প্রজন্মের শিক্ষার আলোকে, ভাষাব্যবহারের আলোকে যদি আমি পরবর্তী সবগুলা প্রজন্মের বাগবিধি, ভাষারীতি, প্রমিতরূপরে যাচাই করি, মানদণ্ড ঠিক করি, আঞ্চলিক হেজিমোনি খুইজ্যা পাই তাইলে এইটা কি আমার জেনারেশন গ্যাপ তথা ভাষিক বিচ্ছিন্নতারেই ইংগিত করে না? কতটুকু জোরেশোরে আমি কইতেছি যে আসলে দ্যাশের সকলেই প্রমিত ভাষাতেই ফর্মাল আলাপ-সালাপ করে বা পছন্দ করে বা চায়? ভাষা সময়ের সাথে যদি পালটায় তাইলে চাহিদাও কি পালটায় না?

আমি কখনোই ঢাকাইয়া ভাষাকেই মূল মান ভাষা কর্তে হবে এইরম কুনো দাবি করি নাই। আমি স্রেফ এই ট্রেন্ডটারে দেখাইছি এবং ভবিষৎতে প্রস্তুত থাকার আহবান জানাইছি। ভাষা যদি বহমান নদী হয় তাইলে তার একটা সঙ্গমস্থলও থাকে, আমার বিচারে সেইডা হইলো রাজধানী ঢাকা। এইখানে আধিপত্য আসে কীভাবে? মূলধারা ঢাকায় যে পরিমাণ আসতাছে, যে পরিমাণ ফ্যাশন, চিন্তা রে নিতাছে সেইডা যদি ঢাকা না হইয়া চর কুকরিমুকরিতে আইতো তাইলে আমি সেইডারেই মূল ট্রেন্ড কইতাম। এবং এই মূলধারা আবার দ্যাশেরই আনাচে কানাচে ছড়াইয়া যাইতাছে, ফলে ব্লেন্ডিং আরো বাড়তাছে। প্যারিস, কলকাতা, নিউইয়র্ক, লণ্ডনের ভাষিক প্রাতিষ্ঠানিকতা যদি আধিপত্যবাদী না হয় তাইলে আমার নিজের দ্যাশের রাজধানী ক্যামনে আধিপত্য করে?

ব্যক্তি আক্রমণের একটা সাফাই গাওয়া হইছে উপরে। পশ্চিমবঙ্গীয় ভাষা যে ভগীরথের তীরবর্তি লোকের মুখের ভাষা সেইডা এই অধম কওয়ারও অনেক আগে প্রমথ চৌধুরী, সুনীতিকুমার বইলা গেছেন। রাবিন্দ্রীক বাংলা শব্দডাও আমি কয়েন করি নাই, অনেকেই তা কইছেন, মায় আবু সইদ আইয়ুব ভী! তো তাদের যেহেতু কেউ এইগুলা কওয়ার কারণে গালাগালি করে বইল্যা বিকল্পে রাইসুর কোব্‌তে শিখার পরামর্শ দ্যায় না, কিন্তু আমারে দ্যায়, কাজেই এইডারে আমি ব্যক্তি আক্রমণ হিসেবেই দেখি। অধমের সরল জ্ঞান এইডাই কয়।

অহনই প্রত্যেক অন্তঃর্জালিক ভাষিক ফর্মে দুইডা অপশন থাকে, বাংলাদেশি বাংলা আর ভারতীয় বাংলা। আমূল পাল্টাইতেছে দুই বাংলার রূপ। এর ভবিষৎতের স্বীকৃতি দেখতে আমি প্রস্তুত(এর মানে এই না যে, বাংলা একাডেমির বা শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের প্রজ্ঞাপন জারী করা হইবো, আম-জনতার চাপেই লেখককুল এইসব ইতর ভাষায় ল্যাখবেন, ছবি হবে, নাটক হবে, সিনেমা হবে, সংবাদ পাঠ হবে, উপস্থাপনা হবে, ক্রীড়া সম্প্রচার হবে।) আপনারা প্রস্তুত তো?

হিমু এর ছবি

আপনে একাই রবীন্দ্রবাবুরে লইয়া ত্যানা প্যাচাইবেন, আর ভাসুরের নাম নিলে চ্যাতবেন, তা তো হবিনানি। রাইছুর বাংলার সাফাই গাইলে গায়ে রাইছুর ট্যাগ পড়বো না তো কারটা পড়বো?

মান ভাষা স্ট্যাটিক না, কিন্তু মান ভাষার গণেশ রাইছু অ্যাণ্ড কোং আইসা দশ বছর কাউকাউ কইরা উল্টাইয়া দিবো, সেইরকম পলকা জিনিসও সে না।

কে কোন জিনিস একবাক্যে মাইনা নিছিলো? আপনে তাগোর সামনে বইয়া ছিলেন নিকি? ঐ সময় কত বছরের মধ্যে কোন কোন সংঘর্ষের ভিতর দিয়া চলিত ভাষা বাংলার মান ভাষার চেহারা পাইলো, আপনে খাড়ায় খাড়ায় দেখছিলেন?

গত শ'খানেক বছর ধইরা যেই ভাষা একটু একটু কইরা মান ভাষার চেহারা পাইছে, সেইটারে রাবীন্দ্রিক বইলা বাতিল করতে চায় যেইসব অর্ধশিক্ষিত রাইছুবান্ধব লোকজন, তাদের প্রতি প্রশ্ন, এই মান ভাষা কি তার উদ্দেশ্য পালনে ব্যর্থ? আর এই মান ভাষা ঠিক কী কারণে "বিজাতীয়"?

আসল উত্তর আছে রবীন্দ্রনাথে। এই বুইড়ারে দুইটা গাইল দিয়া, হিন্দু ডাইকা, এই বুড়া যেই ভাষায় লিক্তো সেইটারেও পয়মাল করতে হবে। নতুন মান ভাষা সিলাই কইরা বানাইতে হবে, ঢাকাইয়া ককনি, যেই ভাষায় রবিপরবর্তী শ্রেষ্ঠ কপিবর ব্যর্থ রাইছু লেখেন। যদিও রাইছু সাহেব চাকরির ইন্টারভিউ দেয়ার সময় বিশুদ্ধ কলকাত্তাই বুলিতেই বাতচিত করে থাকেন বলে জানি। আর চাকরি হয়ে যাবার পর তার চামচারা এসে বলেন, রবীন্দরনাথের বাংলায় কথা কমু না, আমাগো পূর্ববঙ্গীয় বাংলায় কথা কমু, রবীন্দরনাথের বাংলা ইনডিয়ার বাংলা।

উদ্ভট কিছু বানাইলে পাবলিক খাইতো না, এই কারণেই তো রাইছুর বাংলার বদলে রবীন্দ্রর বাংলা এখনও চলমান। এইটারে এখন পশ্চিমবঙ্গীয় সাহিত্যের ভাষা ডাকনাম দিয়া গাইল দিয়া যদি হালে পানি পায় ফুটা কলসির দল।

আপনের নিজের ককনিই তো হয় না। কইল্কারে কল্কে লিখলেন ক্যান? আলখাল্লা বাতাসে উড়ে গিয়ে তো নিচে ঠিকই রাবীন্দ্রিক বাংলার লোম বাইর হয়া গেল।

ভাষা আলবাত সময়ের সাথে পাল্টায়। এইটাই মূল কথা। আর এইটারে পাল্টাইতে গেলে খাটাখাটনি করতে হয়। রবীন্দ্রনাথরে গালি না দিয়া তার রচনাসমগ্র খুইল্যা দ্যাখেন কী আসুরিক খাটাখাটনি সে করছে। আর আপনে আইছেন আকাশে কালিদাসের লগে মেগ দ্যাখতা সম্বল কইরা। কই চান্দে আর কই গোদা বান্দরের পোন্দে।

আপনে ঢাকারে যেমন নিজের দ্যাশের রাজধানী ভাইবা মনকলা খাইতেছেন, বাংলা ভাষারে যারা মান ভাষার চেহারা দিছিল তারা তখন বাংলার রাজধানী [তাবত বৃটিশ ইণ্ডিয়ার রাজধানী] কলিকেতায় বাস করতেন। ঐ সময় রাইছু সাহেবের পূর্বপুরুষেরা রবীন্দ্রর থিকা একটু বেশি পরিশ্রম করলেই তো আমাগো ঢাকাইয়া ককনি মান হইয়া যাইতো। মানা করছিলো ক্যাঠা?

এখন আইছেন, একটা প্রতিষ্ঠিত মান ভাষারে লাত্থি দিয়া ফালাইয়া দুই দিনের বৈরাগীগো ভাষা মাইনষের কলমে বহাইতে। আপনার স্টকে রাইছু এবাদুর বাদে আর আছে ক্যাঠা? শহীদুল জহির তো আপনের ককনিতে সাহিত্য করে নাই। হুদাই তারে টানেন ক্যান? আর আপনার আহমদ ছফারে খুইলা দ্যাহেন, সেও রবীন্দ্রের বাংলাতেই যা লেখার লিখছে।

আগে ছবি বানান, নাটক বানান, সাহিত্য করেন। কইরা দ্যাখান। রবীন্দ্র তো কইরা দ্যাখাইছিল।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

হতে পাত্তেম এর ছবি

প্রথমেই মডারেটরদের কাছে তীব্র আপত্তি জানালাম এই গালাগালি আর ব্যক্তি আক্রমণের জন্য।
************************************************************

আপনে একাই রবীন্দ্রবাবুরে লইয়া ত্যানা প্যাচাইবেন, আর ভাসুরের নাম নিলে চ্যাতবেন, তা তো হবিনানি। রাইছুর বাংলার সাফাই গাইলে গায়ে রাইছুর ট্যাগ পড়বো না তো কারটা পড়বো?

মান ভাষা স্ট্যাটিক না, কিন্তু মান ভাষার গণেশ রাইছু অ্যাণ্ড কোং আইসা দশ বছর কাউকাউ কইরা উল্টাইয়া দিবো, সেইরকম পলকা জিনিসও সে না।

.Ad Hominem (যুক্তি যখন যুক্তিদাতাকে নিয়ে)- এটা হয় যখন আমরা যুক্তিকে পাশ কাটিয়ে যুক্তিদাতাকে[কোনোরকম সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও] আক্রমন করি।

আক্রমণ যখন পরোক্ষ কিংবা দুর্বল-
উদাহরণ-
"কিছুই তো জানোসনা!!!!"
"নতুন নাকি!!!!"
"তর বয়সে এইরকমই ভাবতাম!!!"
"তরে তো এইরকম ছোটো বাচ্চা ভাবি নাই!!!"
"একটু মন দিয়া আবার পড়, তাইলেই হবে!!!"
"তর ইমোশন খুব বেশি, তাই বুঝলি না!!!!"

কে কোন জিনিস একবাক্যে মাইনা নিছিলো? আপনে তাগোর সামনে বইয়া ছিলেন নিকি? ঐ সময় কত বছরের মধ্যে কোন কোন সংঘর্ষের ভিতর দিয়া চলিত ভাষা বাংলার মান ভাষার চেহারা পাইলো, আপনে খাড়ায় খাড়ায় দেখছিলেন?

উপ্রে দ্যাখেন।


ভাষা আলবাত সময়ের সাথে পাল্টায়। এইটাই মূল কথা। আর এইটারে পাল্টাইতে গেলে খাটাখাটনি করতে হয়। রবীন্দ্রনাথরে গালি না দিয়া তার রচনাসমগ্র খুইল্যা দ্যাখেন কী আসুরিক খাটাখাটনি সে করছে। আর আপনে আইছেন আকাশে কালিদাসের লগে মেগ দ্যাখতা সম্বল কইরা। কই চান্দে আর কই গোদা বান্দরের পোন্দে।


আগে ছবি বানান, নাটক বানান, সাহিত্য করেন। কইরা দ্যাখান। রবীন্দ্র তো কইরা দ্যাখাইছিল।

কখনো আক্রমণ হয় ব্যক্তির বুদ্ধিমত্তা নিয়েও-
উদাহরণ-
"আগে আমার মতো দুইডা পি.এইচ.ডি. ডিগ্রী কইরা তারপরে এই বিষয়ে কিছু কইতে আসিস!!!!"

এবং এইবার আরো নগ্নভাবে আমাকে রাইসু ও এবাদুরের দালাল হিসাবে গালাগালি করসেন। এইডাও এড হোমিনেম।
**********************************************************

এইসব কুযুক্তি বাদ দিলে যা থাকে-

গত শ'খানেক বছর ধইরা যেই ভাষা একটু একটু কইরা মান ভাষার চেহারা পাইছে, সেইটারে রাবীন্দ্রিক বইলা বাতিল করতে চায় যেইসব অর্ধশিক্ষিত রাইছুবান্ধব লোকজন, তাদের প্রতি প্রশ্ন, এই মান ভাষা কি তার উদ্দেশ্য পালনে ব্যর্থ? আর এই মান ভাষা ঠিক কী কারণে "বিজাতীয়"?

আসল উত্তর আছে রবীন্দ্রনাথে। এই বুইড়ারে দুইটা গাইল দিয়া, হিন্দু ডাইকা, এই বুড়া যেই ভাষায় লিক্তো সেইটারেও পয়মাল করতে হবে। নতুন মান ভাষা সিলাই কইরা বানাইতে হবে, ঢাকাইয়া ককনি, যেই ভাষায় রবিপরবর্তী শ্রেষ্ঠ কপিবর ব্যর্থ রাইছু লেখেন। যদিও রাইছু সাহেব চাকরির ইন্টারভিউ দেয়ার সময় বিশুদ্ধ কলকাত্তাই বুলিতেই বাতচিত করে থাকেন বলে জানি। আর চাকরি হয়ে যাবার পর তার চামচারা এসে বলেন, রবীন্দরনাথের বাংলায় কথা কমু না, আমাগো পূর্ববঙ্গীয় বাংলায় কথা কমু, রবীন্দরনাথের বাংলা ইনডিয়ার বাংলা।

ক্যাডায় কইছে এইডা বিজাতীয়? রাইসুর চামচা বলে গালাগালি করার পরেও এইডা আমলে নিছি কারণ আপনে সুকৌশলে "ঠাকুর ঘরে কেরে, আমি কলা খাইনা" ভাবে সাম্প্রদায়িকতা টাইন্যা আনছেন। ইন্টারেস্টিং!

আপনে ঢাকারে যেমন নিজের দ্যাশের রাজধানী ভাইবা মনকলা খাইতেছেন, বাংলা ভাষারে যারা মান ভাষার চেহারা দিছিল তারা তখন বাংলার রাজধানী [তাবত বৃটিশ ইণ্ডিয়ার রাজধানী] কলিকেতায় বাস করতেন। ঐ সময় রাইছু সাহেবের পূর্বপুরুষেরা রবীন্দ্রর থিকা একটু বেশি পরিশ্রম করলেই তো আমাগো ঢাকাইয়া ককনি মান হইয়া যাইতো। মানা করছিলো ক্যাঠা?

এখন আইছেন, একটা প্রতিষ্ঠিত মান ভাষারে লাত্থি দিয়া ফালাইয়া দুই দিনের বৈরাগীগো ভাষা মাইনষের কলমে বহাইতে। আপনার স্টকে রাইছু এবাদুর বাদে আর আছে ক্যাঠা? শহীদুল জহির তো আপনের ককনিতে সাহিত্য করে নাই। হুদাই তারে টানেন ক্যান? আর আপনার আহমদ ছফারে খুইলা দ্যাহেন, সেও রবীন্দ্রের বাংলাতেই যা লেখার লিখছে।

আগের পুরা কমেন্ট পইড়াও স্রেফ এইডা খুইজ্যা পাইলেন? বাঙাল গো ইতিহাস নিয়া বয়ান শুনবার চান? আসলে আপনে কি কইবার চান, গালাগালি আর ট্যাগিং বাদ দিয়া কন না?
*************************************************************

দেহি, সময় কইর‍্যা কিছু বইয়ের রেফারেন্স আর আলোচনা কইরা যামু। এবং-

জনাব হিমু,

আমি রাইসু, এবাদুর বা ফারুকীর চৌদ্দগুষ্ঠির কারোসাথেই জড়িত না। ভদ্রতা জাতীয় সুশীলীয় হেজিমোনি আপনার কাছ থেইক্যা আশা না করলেও গঠনমূলক আলোচনার স্বার্থেই গালাগালি পরিহারের আশা করছিলাম। ব্যাপার নাহ্‌।

বাঙালদের স্বরূপ এখন রাইসু আর রবীন্দ্রনাথের ভোগদখলে গেছে। নতুন কারো কথা মানেই এদের কারো না কারো চামচা বা পুজক।

হিমু এর ছবি

উপ্রে খুব মন দিয়া দ্যাখেন, আনুষ্ঠানিক হইতে গিয়া রাবীন্দ্রিক বাংলা বাইর হয়া গেছে কীবোর্ড দিয়া। কেনু? রাইছুর বাংলা কই গেল এখন? ঢাকাইয়া ককনি সহ্য করতে পারেন না কেন? গাইল দিছি কইছে ক্যাঠা?

আপনে যতবার মান ভাষারে রাবীন্দ্রিক বাংলা কইবেন, আমি ততবার আপনের প্রস্তাবিত ঢাকাইয়া ককনিরে রাইছুর বাংলা কমু। এইটারে ট্যাগিং কন কিল্লেগা? আপনে রবীন্দ্রের ট্যাগ দিলে নিজের গায়ে রাইছুর ট্যাগ লইতে এত সমস্যা কী?

রাইছু আর এবাদুরের সুরে কথা কইলে আপনারে কি লোকে চিত্রনায়িকা পপির ট্যাগ দিবো? আজব!

আপনার বয়ান শুঞ্ছি তো। একই প্যাচাল। রবীন্দ্রবাবুর বাংলা ফালায় দিতে হবে। উহার বয়স হইয়াছে, পাকিয়াপুকিয়া একাকার। এখন চকচকা কর্পোরেটসমর্থিত রাইছুর বাংলা ওরফে ঢাকাইয়া ককনি এস্তেমাল করিতে হইবেক।

তো ভাইছাপ, আপনি এস্তেমাল করা শুরু করেন। সবুজ বাঘের নাম শুঞ্ছেন? সে গত তিন বছর ধইরা টাঙ্গাইলের ভাষায় নিজের মনে কবিতা আর গল্প লিখতেছে। সে আপনের মতো গোড়াতেই এই ভাষারে মান বানানোর চরদখলে নামে নাই। কাম কইরা দ্যাখাইতেছে। আপনে ঐ রাস্তায় না হাইটা আইসা বইসা পড়ছেন মাতবরের সিটে। ঢাকাইয়া ককনিকে মান বানাইতে হবে। কারণ এবাদুর ইহা বলিয়াছেন, বিবাদুর উহা লিখিয়াছেন, সিবাদুর উহা পড়িয়াছেন। আমাগেরও উহা করিতে হইবে। ব্যাপারটা পুলিশের মনোগ্রাম আর উর্দি পাল্টাইয়া পুলিশ উন্নয়নের থিকা উন্নত কিছু না।

আমার বক্তব্য তো সামান্য। কইরা দ্যাখান। চিক্কুর পাইরা লাভ নাই। রবীন্দ্রের বাংলা হঠাইতে গেলে রবীন্দ্রর থিকা বড় কিছু কইরা দ্যাখান। অ্যামনেই পাবলিক লাইন দিয়া খাড়াইবো আপনের পিছে।

আর এই বয়ানপ্রেম থিকা মুক্ত হন। এক্টু পর পর আইসা খণ্ডতথ্য দেওয়ার সাঈদীবৃত্তি থিকা নিজেরে বাচান। রাইছুবি তাগুত থিকা নিষ্কৃতি লন।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

অমিত এর ছবি

"আমার বক্তব্য তো সামান্য। কইরা দ্যাখান। চিক্কুর পাইরা লাভ নাই। রবীন্দ্রের বাংলা হঠাইতে গেলে রবীন্দ্রর থিকা বড় কিছু কইরা দ্যাখান। অ্যামনেই পাবলিক লাইন দিয়া খাড়াইবো আপনের পিছে।"

ঠিকাছে

হাসিব এর ছবি

ঔপনিবেশিক ফোর্টউইলিয়ামের ভটচাজ বামুন আর ইংরেজ পাদ্রী আর এছলামী মোল্লারা

এই ভটচাজ বামুন আর এছলামী মোল্লারা কারা? একটু বিস্তারিত যদি বলতেন ..
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি

হিমু এর ছবি

বাই দ্য ওয়ে ... ফরহাদ মগবাজারের পত্রিকা এখন থিকা ঢাকাইয়া ককনিতে দেক্তে চাই। আসিফ নিজামরুলের কলাম আর টকশো ককনিতে চাই। রাইছু যখন আবার চাকরি খুজতে বাইর হইব, ইন্টারভিউতে ককনি শুনতে চাই। আগে ঘরদোর ঠিক করেন।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

নীলকান্ত এর ছবি

শুদ্ধ-প্রমিত না রাস্তার ভাষা ব্যবহার করে ফারুকী নাটক বানাচ্ছে, বিষয়টা কিন্তু তা না। খাইসি, খাইসে টাইপ ভাষা অনেক আগে থেকেই ছিল। এ ভাষায় কথা বলতে আমরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। বিষয়টা হচ্ছে আপনাকে বুঝতে হবে কোন পরিস্থিতিতে ভাষাটা ব্যবহার করা হচ্ছে।
একজন খুনী খুনের সময় প্রমিত বা 'খাইসি/খাইসে' যে ভাষা ইচ্ছা ব্যবহার করতে পারে, সেটা তার উপর নির্ভর করছে।
ফারুকী "খাইসে, খাইসি" জাতীয় ভাষাতে একটা লেবেল লাগিয়ে দিয়েছে, যে যারা স্কুলের/বাসার/রাস্তার সামনে দাঁড়িয়ে টিজিং করছে, যারা পাশের বাড়ির ভাবীর সাথে প্রেম করছে বা কোন বস তার অফিসের কর্মচারীর ফায়দা লুটছে তাদের ভাষা এমনই। যে কেউ আমার এই কথা বিপরীতে একশো একটা যুক্তি দেখাতে পারবেন। কিন্তু আমাদের বয়ঃজ্যোষ্ঠ যারা, তারা এভাবেই চিন্তা করেন। আমারও খারাপ লাগে এরকম আরামদায়ক ভাষায় এজাতীয় লেবেল লেগে যাওয়ায়।

"বাল কেটে হাতে ধরিয়ে দিবো" টিভিতে বলে উঠলো, আমি শুনলাম, আপনি শুনলেন, আমাদের বাপ-মা শুনলো। ব্যাপার না। কিন্তু বাচ্চারা? যদি ১০ বছরের এক বালক যদি এখন আপনাকে প্রশ্ন করে, বালই বা কি, আর তা কেটে হাতে ধরিয়ে দিবে কেন?দিলেই বা কি হবে। কি উত্তর দিবেন। দিতে পারলে তো ভালই আমি আর এ নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য করবো না।

যে কেউ ধোঁয়া তুলবে বাচ্চাটাকে এসব দেখতে দেওয়া হচ্ছে কেন?আমি জিগাই বাংলাদেশের কোন টিভি চ্যানেলে ফারুকীর আগে কেউ নাটকে গালি দিয়েছে? দিবেনই যখন আগে থেকে জানাবেন না?দর্শকদের জানানো উচিত ছিল। বাংলা সিনেমার মত নাটকও তাইলে মানুষ আর দেখতো না।

আর কথাটা শুধু গালি নিয়ে নয়। কিশোর বয়সীদের নিয়েও। উপরে ২৪ এবং ২৪.১ এ এবিষয়ে হাসান ভাই এবং হিমুভাই যুক্তি তুলে ধরেছেন।
সব কিছুরই একটা বয়স আছে। আগেও বলেছি তাদের টার্গেট যে বয়সশ্রেণী, তাতে তাদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন এসে যায় বইকি।

আমি একটি নাটক বানালাম, প্রথম দিন নায়ক তার বন্ধুকে বলছে "তোর মা তো খুব জোশ।" বলতেই পারে, তার ইচ্ছা হয়েছে, ডায়ালগে আছে, বলতেই পারে। আমি দেখছি কোন রকম কমপ্লেন আসে কিনা কোথাও থেকে, আবার পজিটিভ রেসপন্স কেমন। দেখলাম রেসপন্স স্বাভাবিক। কয়েকদিন পর আর একটা নাটকে নাটক তার বন্ধুকে বলছে, ' তোর মাতো খুবই জোশ, আমি তার সাথে সঙ্গম করতে চাই।" গালি দেই নাই, চলিত ভাষায় বলেছি, মনের ইচ্ছা ব্যক্ত হয়েছে, আগেরটা গিললে দর্শক এটাও গিলবে। কি গিলতে পারছেন? অন এয়ার।

ফারুকী হয়তো এত দূর যাবে না। কিন্তু প্রথমে তারা শুরু করেছে খাইসি, খাইসে দিয়ে এখন গালি দেয়, সাহস তো বাড়ছেই।

মিডিয়ার কিছু কিছু কোড আছে যা সমাজ ও সংস্কৃতিভেদে ভিন্ন হয়। আমাদেরও থাকা উচিত। আমাদের ছেলেপেলে ১৮ এর পর আলাদা হয় না। ছেলেমেয়েরা বিয়ের পর বাবা-মার সাথেই থাকে, এবং পরিবারের সবাই এক রুমেই টিভি দেখে কেননা এখানে গড়ে প্রতি বাড়িতে টিভি একটাই, এবং সেটাই এখনও পর্যন্ত বিনোদনের প্রধান মাধ্যম।

আর একটা জিনিস এটা ইয়রোপ না। আশা রাখি হবেও না। সুতরাং কেউ দয়া করে লেডী গাগার কথা, র‌্যাপ আর্টিস্টের কথা টানবেন না। এখানে প্রতি রবিবার সবাই বারে বা ক্লাবে যায় না, ড্যান্স ফ্লোরেও নামে না, এখানে গ্যাং করতে করতে কেউ গুলি খেয়ে নিজের জীবন নিয়ে র‌্যাপও বানায় না।

প্রতিনিয়ত চিনছি নিজেকে


অলস সময়

কুলদা রায় এর ছবি

রবীন্দ্রনাথ আবুল ফজলকে লিখেছিলেন--
ভাষার নমনীয়তার একটা সীমা আছে। ভাষার যেটা মুল স্বভাব তার অত্রন্ত পতিকুলতা করলে ভাবপ্রকাশের বাহনকে অকর্মণ্য করে ফেলা হয়। প্রয়োজনের তাগিদে ভাষা বহুকাল থেকে বিস্তর নতুন কথা আমদানী করে এসেছে। বাংলা ভাষার পারসি আরবি শব্দের সংক্যঅ খশ নয় কিন্তু তারা সহজেই স্থান পেয়েছে। প্রতিদিন একটা দুটো করে ইংরেজি শব্দও আমাদের ব্যবহারের মদ্যে প্রবেশ করছে। ভাষার মূল প্রকৃতির মধ্যে একটা বিধান আছে যার দ্বারা নতুন শব্দের যাচাই হতে থাকে, গায়ের জোরে সেই বিধান না মানলে জারজ শব্দ কিছুতেই জাতে ওঠে না।

এরপর ঠাকুর ইংরেজি ভাষার উদাহরণ দিচ্ছেন--
ওয়েল স্কচ ভাষা ইংরেজি ভাষার ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী, ব্রিটেনের ওই সকল উপজাতীরা আপন আত্মীয় মহলে ওই সকল উপভাষা থেকে শব্দগ্রহণ করে স্বভাবতই ব্যবহার করে থাকেন কিন্তু সাধারণ ইংরেজি ভাষা তাঁদের সাহিত্যের ভাষা ওই শব্দগুলি তার আসরে জবরদস্তি করতে পারে না। এইজন্যই ওই সাধারণ ভাষা আপন নিত্য আদর্শ রক্ষা করে চলতে পেরেছে।

আরেকটি বিষয় কিন্তু মনে রাখা দরকার। ভাষা তার শব্দের মধ্যে বহুবিধ সামর্থ্য মহাবিন্দুর মত পুরে রেখে শমিত অবস্থায় অবস্থান করে হয়ে হঠে মান ভাষা। বাইরে থেকে তাকে নিরীহ মনে হতে পারে--কিন্তু যখন তার বিস্ফোরণ ঘটে তখন তার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে তার বহুরৈখিক দেশ আর সময়ের মত পরম্পরা। কলিম খান এজন্য শব্দের মধ্যে উঁকি দিতে বলেছেন।
আধুনিক বাংলাভাষায় 'অজ' শব্দের মানে ছাগল। কখনো সখনো অজ মানে নেটিভ অর্থাৎ আদৎ বা খাঁটি বোঝানো হয়ে থাকে--যেমন অজ-পাড়াগাঁ অর্থাৎ খাঁটি গণ্ডগ্রাম। বঙ্গীয় শব্দকোষে অজ শব্দটির ২৫টি মানে দেওয়া আছে। এই অর্থগুলোর কারণেই ভাবকে নানা কায়দায় বিস্তার করা সম্ভব। হচ্ছেও তাই। কিন্তু ভাষাকে যদি তার মান ভাষা থেকে খসিয়ে ফেলে দেওয়া যায় তাহলে ভাষার এই সামর্থ্যকে হটিয়ে দেওয়া অসম্ভব। ভাষাটি তখন হয়ে উঠবে অকার্যকর। সেটা ভাষা তাঁর নিজস্ব নিয়মেই মেনে নেয় না।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

কৌস্তুভ এর ছবি

অফটপিক: আপনার প্রায় সব লেখাই পড়ি, এইধরনের লেখাগুলোতে আমার তেমন কিছু বলার থাকে না বলে মন্তব্য করা হয় না। কিন্তু লক্ষ্য করে যাচ্ছি, আপনি 'কারেন্ট ইস্যুজ' নিয়ে বেশ বেশ সব লেখা দিচ্ছেন, প্রচুর আলোচনার জন্ম দিচ্ছে যেগুলো। প্রশংসনীয় কাজ, আপনি নিশ্চয়ই শিগগিরই সচল হবেন।

জাহামজেদ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- (গুড়) দুইটাই দিলাম

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

নামহীন [অতিথি] এর ছবি

আমি আরেকটা অন্যরকম ধারা তৈরি করতে চাই ভবিষ্যতে । সেটা হলো চিটাগাং,বরিশাল,নোয়াখালী,সিলেটের মানুষের শুদ্ধ ভাষাটা । মানে চিটাগাং এর অভিনেতা চেষ্টা করবে শুদ্ধভাষায় কথা বলতে, একই রকম অন্য জেলারও । একসেন্টটা ঠিক রেখে যারা অঞ্চলের । দোয়া রাখবেন চোখ টিপি

জাহামজেদ এর ছবি

এই ভাষাটা কিন্তু অনেক মজার হবে। আপনার জন্য দোয়া থাকলো।

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

অতিথি লেখক এর ছবি

গণমাধ্যমে ভাষার ব্যবহার বিষয়টা যে সবার মাথার মধ্যে ছিল কমেনট এর বহর দেখলেই বুঝতে অসুবিধা হয় না পোষ্টে, নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিত্বকারি হিসেবে পুরা ব্যাপারটা সম্পর্কে যা মনে হয় খাইছি যাইছি টাইপের বাংলা কিংবা বিভিন্ন লোকাল ডাইলেকটের বাংলা ফারুকির নাটকের আগেও ব্যাপক ভাবে ব্যবহার হতো বন্ধুদের বা পরিচিতজনদের কথা বার্তায় আমিও নিজেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত করি, কাজেই এর জনক ফারুকি এটা বললে সত্যের অপলাপ হবে। আরেকটা ব্যাপার ফারুকির নাটকের সব চরিত্রই কিন্তু খাইছি যাইছি ব্যবহার করে না কচি খন্দকারকে , ৪২০ নাটকে তিসাকে কিন্তু সহ অনেকে কিন্তু চরিত্রের প্রয়োজনে প্রমিত বাংলায় কথা বলতে দেখি পত্রিকায় ফারুকির দেওয়া একটা সাক্ষাৎকারে তিনি নিজেই বলেছেন নাটকের অবস্থার কালের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে তিনি ভাষার ধরন ব্যবহারের পক্ষপাতি অর্থাৎ বাস্তব জীবনে যেমন আমরা অফিসিয়াল আলোচনায় , বন্ধুদের সাথে আড্ডায়, প্রেমিকার সাথে কথায় একই টোনে কথা বলি না মিডিয়াতেও তিনি সেটার প্রতিফলন দেখতে চান, অর্থাৎ প্রমিত বাংলায় অপরিহার্যতা ফারুকি নিজেরই স্বীকার করে নিয়েছেন, কাজেই ফারুকির নাট্য দেখে কোন আবুল যদি সব জায়গায় হিমু ভাই যেটা বলছেন রাইসু মার্কা বাংলা বলে পাট মারতে যায় তাইনে ধইরা নিতে হয় হের মাথায় সমস্যা আছে।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

দু শতাধিক মন্তব্য!
জাহামজেদ, তাড়াতাড়ি দ্বিতীয় পর্ব নামান।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।