একটি ফাঁকিবাজি পোস্ট

আনিস মাহমুদ এর ছবি
লিখেছেন আনিস মাহমুদ (তারিখ: বুধ, ১৮/০৩/২০০৯ - ৫:০৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কয়েকদিন আগে গিয়েছিলাম বোনের বাসায়। রাজ্যের কত জিনিস যে তার কাছে আছে, সেটা বলা মুশকিল। তার কাছে পাওয়া গেল ১৯৮৬ সালের ২৬শে জুলাই দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি সঙ্গীত সমালোচনা। সেই সময়ে বাংলাদেশ থেকে একটি সাংস্কৃতিক দল ভারতের পশ্চিবঙ্গে গিয়েছিল। তিনদিনব্যাপী তাদের অনুষ্ঠানমালা নিয়ে একটি সরস আলোচনা, যা পাঠককে নিয়ে যাবে সেই সময়ে। আমাদের আজকের খ্যাতিমানরা তখন কেমন ছিলেন, সেটা জানতে পারব আমরা। অবিকৃত অবস্থায় দেবাশিস দাশগুপ্তের লেখাটি তুলে দিলাম। যদিও পুরো লেখাটির প্রকাশভঙ্গির মধ্যে 'দেশ' পত্রিকার স্বভাবসুলভ উন্নাসিকতা আছে, তবুও অনেকগুলো বিষয় বেশ ভাল লাগবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটা, সেটা হল গান-বোঝা লোকে এই সমালোচনা লিখেছে।

আবার দেখা যদি হ'ল সখা

ব্যাকরণ নয়, অনুভব দিয়েই শিল্পের অবয়ব বদলে যায়। ওপার বাংলার কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস আমাদের বারবার চমকে দিয়েছে; প্রবন্ধের বিশ্লেষণ আমাদের নতুন করে ভাবায়। সামান্য কয়েক বছরের চর্চায়, বাংলাদেশের কয়েকটি নাট্য-প্রযোজনা দেখে এ পারের নাট্য-প্রযোজনায় ভাইটালিটির অভাব অনুভূত হয়। মাত্র কয়েক মাইল দূরেই একই ভাষা শুধু পোশাক বদলায় না, শরীরও বদলায়।

বাংলাদেশে অন্য ক্ষেত্রে যত পরিবর্তন ঘটেছে, সঙ্গীতের ক্ষেত্রে ততটা নয়। দু-একজন শিল্পী আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেলেও দূরদর্শনে যেসব অনুষ্ঠান দেখা যায়, সেখানে যন্ত্রের আধুনিকত্ব অবহেলিত নয়, অবহেলিত কথা ও সুরের আধুনিকত্ব। অন্যদিকে রবীন্দ্রসঙ্গীত ও নজরুলগীতিকে তাঁরা নিজেদের অস্তিত্বে গ্রহণ করেছেন - তবু 'এখনো রহিল বাধা'। পশ্চিমবঙ্গ সরকার আয়োজিত রবীন্দ্রসদনের আসরে নানারকম প্রোটোকল বিপত্তিতে বাংলাদেশের অনুষ্ঠান নির্ধারিত দিনে আরম্ভ করা গেল না।

অনুষ্ঠানের ছবিঅনুষ্ঠানের ছবি
দলের মধ্যে প্রায় সকলেই নবীন শিল্পী, দু-তিনজন ছাড়া। এটিও ব্যতিক্রমী প্রথা। আমাদের এখানে বিদেশে অনেকেই প্রতিনিধিত্ব করতে যান; নবীন শিল্পী সেখানে ব্রাত্য। প্রবীণ অভিজ্ঞতা অনেক কিছুই ভরিয়ে তোলে (যেমন এখানে তিনদিনের আসরে হ'ল), কিন্তু ভিনটেজ র্যালি কোনমতেই সমর্থনযোগ্য নয়। এখানে যাঁদের অধ্যাপনা গবেষণা নিয়ে থাকা উচিত ছিল, তাঁরা হৃত কণ্ঠে বিদেশে যান গান শোনাতে, কিন্তু বাংলাদেশের আবদুল আহাদের মত স্বীকার করেন না, 'আমি এখন গান করি না, তবু গাইবার চেষ্টা করছি, আপনারা ক্ষমার চোখে দেখবেন'।

দ্বিতীয় দিন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। তিনি বাংলাদেশের শিল্পীদের স্বাগত জানিয়ে বারবার আসার কামনা জানালেন, সঙ্গে সঙ্গে এখান থেকেও শিল্পীদের বাংলাদেশ যাওয়ার বাসনা জানালেন। এখান থেকে যদি প্রতিনিধিদল যায়, তখন দেখা যাবে সেই নির্বাচন কতটা দলমতনির্বিশেষে হয়, এবং কজন নবীন শিল্পী সেই দলে স্থান পান। ফুটবল বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় কে জয়ী হবেন, তাই নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা-প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার যদি সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিদল পাঠান, তবে কে কে যাবে, ওয়াকিবহাল মহল শতকরা আটানব্বই ভাগ মিলিয়ে দেবেন। সরকারের জ্ঞাতার্থে একটি সংবাদ জানাই, বাংলাদেশে এখন রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন বিভিন্ন জেলায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়, সেখান থেকে নতুন শিল্পীও আবিষ্কৃত হন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবার প্রতিটি জেলায় মহকুমা শহরে রবীন্দ্রজন্মোত্সব পালন করবেন। নিশ্চিত জানি, সেখানে কলকাতার শিল্পীরাই প্রাধান্য পাবেন। প্রায় দেড়মাসব্যাপী রবীন্দ্রজন্মোত্সবে মাত্র বহরমপুরের একটি দল এসেছিল নাটক করতে, আর গানের শিল্পীদের মধ্যে প্রায় সবাই লোকাল ট্রেনের আওতার মধ্যে।

আবদুল আহাদ
উদ্বোধন সঙ্গীত গাইলেন বন্দনা সিংহা 'বাংলার মাটি বাংলার জল'। সময়োপযোগী নির্বাচন সন্দেহ নেই, কিন্তু কম্পমান গায়নভঙ্গি আবেগজনিত নয়, এটা নির্দ্বিধায় বলা যায়। বাংলাদেশের শিল্পীদের মধ্যে প্রবীণতম আবদুল আহাদ। তিনি শান্তিনিকেতনে ছিলেন, রবীন্দ্রনাথের জীবনের শেষদিকে সংস্পর্শে আসেন। কলকাতায় যাঁরা পুরনো দিনের লোক, তাঁদের আবদুল আহাদের কথা মনে আছে। বেতারে তাঁর অনুষ্ঠান ছাড়াও কয়েকটি চলচ্চিত্রে তাঁর নাম জড়িত ছিল (দুঃখে যাদের জীবন গড়া?)। আবদুল আহাদ এখন শিক্ষক এবং সঙ্গীতপরিচালক। দীর্ঘদিন বাদে তাঁর নাম ঘোষিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি পুরনো রেশ ফিরে আসে। কণ্ঠ আয়ত্তাধীন নয়, কিন্তু 'বাণী মোর নাহি', 'মম দুঃখের সাধন', এবং শেষদিনে 'এখনো গেল না আঁধার' গানের পরিবেশন-স্বাচ্ছন্দ্য রূপ-গভীরে নিয়ে যায়। 'শুভ লগন গেল চলে, প্রেমের অভিষেক কেন হল না তব নয়নজলে' যেন ছবি হয়ে দেখা দেয়। বোঝা গেল গান গাইতে গলা ছাড়াও আরও কিছু দরকার হয়। 'আমার নয়ন তব নয়নে' কিন্তু তত রসোত্তীর্ণ নয়।

কলিম শরাফী
কলিম সরাফি (কলিম শরাফী) তিনদিনই গান গাইলেন - এবং এই দলের তিনিই প্রধান আকর্ষণ ছিলেন। দেখা গেল, তিন দশক বাদেও এপার বাংলার শ্রোতার কাছে অপরিচিত নন। 'আমি চঞ্চল হে', 'অনেক কথা বলেছিলাম' বা 'আমি তোমায় যত' - সব গানেই তিনি স্বতন্ত্র। এই স্বাতন্ত্র্য তাঁর প্রথম থেকেই। দক্ষিণীর সঙ্গে যুক্ত হয়েও তিনি কখনই দক্ষিণী ঘরানার নন। বিপরীত মেরুতে তিনি গণনাট্য সংঘের শিল্পী ছিলেন বলেই আলাদা একটা ওজস্বিতা ছিল। দক্ষিণী আয়োজিত রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলনে তার বার বার প্রমাণ পাওয়া গেছে। কলিম শরাফীর গানের মধ্যে সবচেয়ে ভাল লাগে 'বুক বেঁধে তুই দাঁড়া দেখি'। স্বদেশ পর্যায়ের গানের যে আলাদা গায়নভঙ্গি আছে, এপার বাংলায় সেটা অনাবিষ্কৃত। পনেরোই আগস্ট বা ছাব্বিশে জানুয়ারি ছাড়া স্বদেশ পর্যায়ের গান কেউ করেন না। কিছুদিন বাদে স্বদেশ পর্যায়ের গানও হয়ত আনুষ্ঠানিক পর্যায়ভুক্ত হয়ে যাবে। স্বাধীনতা সংগ্রাম এখনও সকলের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা বলেই বাংলাদেশে স্বদেশ পর্যায়ের গানের অন্য মর্যাদা - সঠিক রূপটি পাওয়া যায়; সহজ অথচ উজ্জীবনমন্ত্র।

আবদুল আহাদ ও কলিম শরাফীর গান শুনে মনে হয় ওপার বাংলায় দেবব্রত বিশ্বাসের অনুপ্রেরণা প্রবলভাবে কাজ করেছে। দুজনের কণ্ঠই মন্দ্রগম্ভীর, কিন্তু তাঁদের এমন অভিব্যক্তি অবশ্যই এপার বাংলার কিছু শিল্পীর দেবব্রত বিশ্বাসের হাস্যকর অনুসরণ নয় - সম্পূর্ণ প্রাণের অনুভব। কলিম শরাফী তিনদিন যে গানগুলি নির্বাচন করেছেন তার সবকটিই দেবব্রত বিশ্বাসের প্রিয় গান। অন্তরঙ্গ সাহচর্য অনেক সময় নতুনভাবে দীক্ষিত করে। তবে দৃঢ়তার সঙ্গে বলা যায়, তুলনামূলক আলোচনায় কখনও বিব্রত করে না, কলিম শরাফী একটি নতুন ধারা প্রবর্তন করেছেন।

হামিদা হক
অন্য শিল্পীদের মধ্যে ক'জন বুলবুল একাডেমীতে আর ক'জনই বা কলিম শরাফীর সঙ্গীত ভবনে শিক্ষি্ষত জানা নেই। তবে মেয়েরা প্রত্যেকেই হাঁ করে গান করেন স্পষ্ট উচ্চারণে, এবং কোনোরকম আড়ষ্টতা বা প্রতিষ্ঠানের মেঘে আবৃত নন, যেটা এপার বাংলায় ক্লান্তি আনে। প্রথমেই মনে আসে মনসুরা বেগমের কথা। তাঁর প্রথম দিনে 'আমার যাবার বেলায় পিছু ডাকে' বা শেষ দিনে 'ফিরে ফিরে ডাক দেখি রে' সত্যিই পরান খুলে ডাক। অনায়াস স্বাচ্ছন্দ্যে তিনি গেয়ে যান -- ফলে একটি নতুন অভিজ্ঞতার স্বাদ পাওয়া যায়। সালমা আমেদও (সালমা আহমেদ) বেশ খোলামেলা। তবে স্কেল নির্বাচনে তিনি আত্মবিশ্বাসী নন। যেমন 'দাঁড়াও আমার আঁখির আগে' মন্দ্র সপ্তকে তিনি স্বচ্ছন্দ নন, অথচ কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল তাঁর গলা চড়ায় যায়। দ্বৈতকণ্ঠে 'এলেম নূতন দেশে' ফিরদৌসী আমেদ লীনার (ফেরদৌসী আহমেদ লীনা) সুন্দর কণ্ঠও মনে রাখার মত। মহিলাদের মধ্যে সম্ভবত ছিলেন বেগম হামিদা হক, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অক্ষম অনুকরণ। বিশেষত মুক্ত ছন্দের গান 'তবু মনে রেখো', 'আমার সকল নিয়ে বসে আছি', 'যা হবার তা হবে' সবচেয়ে বিপজ্জনক। তাঁর 'তবু মনে রেখো' গানের অনুরোধ মানতে পারলাম না বলে দুঃখিত‍। কথা দিলাম, বাংলাদেশে চলে গেলেই ভুলে যাব। নতুন ছেলেদের মধ্যে সবচেয়ে শ্রবণ কাড়েন সিরাজুল সালোতিন (সিরাজুস সালেকীন)। প্রথম দিনের গানের ভিতর দিয়ে ততটা আকৃষ্ট করতে না পারলেও শেষ দিনের 'অনেক কথা যাও যে বলে' গানে তিনি স্বমহিম। যদিও 'স্বমহিম' শব্দটি হয়ত যথাযথ প্রয়োগ নয়, কারণ সেই গানে এপার বাংলার একজন শিল্পীর প্রভাব আছে। সাজেদ আকবর এখনও শিক্ষার্থী স্তরের। সবচেয়ে বিরক্তির মহঃ সাদির (সাদী মোঃ তকিউল্লাহ) গান। 'যদি এ আমার হৃদয়দুয়ার' গানে তিনি প্রায় বিধ্বস্ত। তারপর তাঁর গাওয়ার গুণে 'তোমায় গান শোনাব' গানটি চটুল বাইজীর গানের মত হয়ে যায় (রাগ পিলু এই ব্যাপারে সহায়ক হয়)। 'বুকে চমক দিয়ে' লাইনে 'চমক' উচ্চারণে কত যে লচক আছে সেটা তিনি বুঝিয়ে দেন।

'চিত্রাঙ্গদা' সম্পূর্ণ অ্যামেচারিস প্রযোজনা, যদিও একক আসরের তুলনায় চিত্রাঙ্গদার ভূমিকায় বেগম হামিদা হক ও অর্জুনের ভূমিকায় সাদী মোঃ তকিউল্লাহ সার্থকতর। এই চিত্রাঙ্গদায় সখীরা শিকার করতে যায় খোঁপায় বেলফুলের মালা দিয়ে, সখীরা পোশাকে নাগাল্যান্ড থেকে কালীঘাটে চলে আসেন। সুরূপা চিত্রাঙ্গদা হাসলে টুথপেস্টের বিজ্ঞাপন, যন্ত্রণায় অম্বলের ব্যথা। কুরূপা থেকে সুরূপার বদল হয় একটি মশারির মধ্য দিয়ে। এখানকার মত ওখানেও হাম্বীর রাগে 'মোহিনী মায়া এল' শুধু গেয়ে যাওয়া হয়, কখনও গোপন পদসঞ্চারে হৃদয় শিকার বোঝানো হয় না কিংবা অসাধারণ শব্দপ্রয়োগ 'স্বর্ণকিরণবিজড়িত অন্ধকার' আবিষ্কৃত হয় না। 'দে তোরা আমায়' গানে 'হেমন্তের অভিশম্পাতে রিক্ত অকিঞ্চন কাননভূমি/বসন্তে হোক দৈন্যবিমোচন নব লাবণ্যধনে' শুধু গান হয়ে থাকে, না-বলা বাণীটি বলা হয় না। বাংলাদেশের চিত্রাঙ্গদায় মদন মাথায় ফুলশয্যার কনের মুকুট পরে ঢোকেন এবং 'তাই আমি দিনু বর' বলার সময় মনে হয় রেফারি হলুদ কার্ড দেখাচ্ছেন। সখীসমেত চিত্রাঙ্গদা উন্মাদনা বোঝাতে চৌদুনে এক্কাদোক্কা বা কানামাছি খেলেন।

গ্রামবাসীদের মেয়েরা অস্ত্র দেওয়ার পরে (উদয়শঙ্করের অস্ত্রপূজা) সবাই কেমন যেন ঘাবড়ে যান -- প্রত্যেকের চোখেমুখে সাধুর ঔদাসীন্য -- অর্জুন লাইন্সম্যানের মত পায়চারি করেন। অর্জুনকে দেখে মনে হয় নগ্ন উর্ধাঙ্গে কাস্টম অফিসার।

শেষদিনের অনুষ্ঠানে গান শোনালেন ওপার বাংলার সঙ্গে এপার বাংলার হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় যখন পুরনো বন্ধুত্বের কথা বলে 'পুরোনো সেই দিনের কথা' গান করেন, তখন আবারও মনে হয়, যেকোনো মুহূর্তে রবীন্দ্রনাথ নিজেরই গানের সীমাকে পেরিয়ে যান -- হৃদয় যখন গানের মধ্য দিয়ে আলিঙ্গন করতে চায়, তখন বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স নিষ্ক্রিয়।

সৌজন্য: দেশ (২৬ জুলাই ১৯৮৬)


মন্তব্য

অম্লান অভি এর ছবি

আনিস মাহমুদ- সত্যি কি এটা ফাঁকি বাজি পোষ্ট!
হয়তো হতো বা হতেও পারত কিন্তু এক বড় সময় পার করা অতীতের সংগ্রহ শুধু স্মৃতিই নাড়ে না, জানায় আমাদের সেই অতীতকেও। বালখিল্য হাসি হাসতে হাসতে হলেও কখনও কখনও আমাদের সক্রিয়তা স্বীকার্য তারই প্রকাশ ছিল ঐ লেখায়। ব্যস্ত জীবনে সৎ, সততা আর সহমর্মিতা নিয়ে যোগ্যকে তার স্থান দিতে বড়ই কার্পণ্য করি। তাই যে সংগ্রহশালায় বন্দি ছিল এই পাতা তাকেও ধন্যবাদ আর ধন্যবাদ আপনাকে যে উজাড় করল আমাদের জন্য।
লেখা পড়ার মাঝে মাঝে উল্টালাম গীতবিতান আর মনের খাতার পাতা। কানে নিলাম কাদেরী কিবরিয়া'র গাওয়া রবীন্দ্র সঙ্গীত যা এখনও আবহ এই লেখায় (দক্ষিণ হাওয়া জাগো জাগো, জাগাও আমার সুপ্ত এ প্রাণ।)
অতীত জাগানিয়া, স্মৃতি নাড়ানিয়া আর স্বকীয়তার প্রকাশ যা আমাদেরকে আরোতে উন্নত করে; তাই আপনার ফাঁকি বাজি পোষ্ট এই ক্লান্ত বিকেলে পূর্ণ করল। এক ভিন্ন মাত্রায় অন্তর্জালিক এই সময়ে। মাঝে মাঝে এমন ভাবালু আর প্রিয়ের সুর দিলে ঘর পোড়া এই নির্জনতায় পূর্ণতার প্রাপ্তি ঘটবে। ধন্যবাদ। (শেষ আবহ ...এসো এসো আমার ঘরে এসো.......)।

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

আনিস মাহমুদ এর ছবি

ভেবেছিলাম নিষ্কমেন্ট যাবে এই পোস্টটা। কিন্তু অন্য অনেক বিষয়ের মত এই বিষয়েও দেখা গেল ধারণাটা আমার ঠিক নয়। ভাল লাগল আপনার মন্তব্যে; উৎসাহ পেলাম। ধন্যবাদ।

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

অতিথি লেখক এর ছবি

হুমম...সঙ্গীত সমালোচনাটি আমার জন্মেরও আগের, যদিও কথাগুলো এখনও সত্যি । ঢাবির সঙ্গীত বিভাগে পড়লেও বলতে হচ্ছে যে আমাদের থেকে ওপার বাংলার বারো বছরের বাচ্চা গান সম্পর্কে অনেক বেশি জানে...দোষ দিলে আমাদেরই দিতে হবে ..আমাদের বাবা-মা তাদের সন্তান কত তাড়াতাড়ি একটা গান গেয়ে দিতে পারে সেটাই দেখেন, আসলে কিছু জানলো বা শিখল কিনা তা দেখেন না...

( জয়িতা )

আনিস মাহমুদ এর ছবি

আমাদের এই মুসলমান-অধ্যূষিত এলাকায় উৎসব বলতে দুই ঈদ (পহেলা বৈশাখ এক উজ্জ্বল ব্যতিক্রম)। নতুন কাপড় পরে ঘুরে বেড়ানো আর মাংস খাওয়া -- এই হল 'উৎসব' শব্দটির অর্থ। দৈনন্দিন জীবনাচরণ বা ধর্মীয় আচারাদি -- কোথাও নেই সঙ্গীতের মত অসাধারণ এক কলার চর্চা। ঠিক সেই কারণেই রক্তে লাগে না সুরের দোলা আর সঙ্গীত-প্রডিজিও জন্মায় আমাদের এখানে অনেক কম। আমাদের এখানে গান গাইতে পারা মানে সুর করে কবিতা পড়তে পারা। তাতেই জোটে বিস্তর প্রশংসা, এমনকি টাকাকড়িও।

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

রণদীপম বসু এর ছবি

ঠিকই বলেছেন আনিস ভাই, লেখাটায় আকর্ষণ যেমন আছে, তেমনি কিছু কিছু উন্নাসিকতা চাইলেও এড়িয়ে যাওয়া যায় না। ধাক্কা খেতে হয়। আচ্ছা, কোলকেতেরা কি বাংলা 'হ' উচ্চারণ জানে না ? শুধু এই আলোচনাটাতেই নয়, আমার কাছে কিছু গদ্যগ্রন্থ রয়েছে যেগুলোতে বাংলাদেশের প্রখ্যাত সব কবি-সাহিত্যিকদের নামের যে বাহার তাঁরা বানিয়েছে, সামনে পেলে হাতের বইটা হয়তো সেসব লিখিয়েদের কপালেই ছুঁড়ে মারতাম !

যাক্, তবু এরকম পোস্ট আপনার কাছ থেকে নিয়মিত আশা করি। ধন্যবাদ।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

আনিস মাহমুদ এর ছবি

বিষয়টা নিয়ে সুযোগ পেলেই আমি সবাক হই। ওদের ভাবনাটা দেখুন, একদিকে বলবে ওপার বাংলা (আমি ব্যক্তিগতভাবে এই ধারণার ঘোর বিরোধী) যেন আমরা ওদের মায়ের পেটের ভাই, আবার অন্যদিকে দাদাগিরি ফলাবে। নামের বানানবিকৃতি সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃত এবং বলতে দ্বিধা নেই, 'দেশ' এই বিকৃতিকে প্রশ্রয় দিয়েছে। অসহ্য!

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

হাসিব এর ছবি

কলকাতার লোকেরা "হ" উচ্চারন না করতে পারলে আমি তো সমস্যায় পড়ে যাবো !

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

...যা পাঠককে নিয়ে যাবে সেই সময়ে। আমাদের আজকের খ্যাতিমানরা তখন কেমন ছিলেন, সেটা জানতে পারব আমরা।
সত্যিই তাই, জানতে পারলাম অনেক কিছুই। ভালো লাগলো। লেখাটা শেয়ার করার জন্য আনিস দাদাকে অনেক ধন্যবাদ। মাঝে মাঝে এরকম ভিন্ন স্বাদের, ভিন্ন আঙ্গিকের লেখার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলে কিন্তু মন্দ হয় না।

আনিস মাহমুদ এর ছবি

দেখা যাক, বুবুর ভাণ্ডার ঢুঁড়ে আরো কিছু পাওয়া যায় কি না...

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

উদ্বোধন সঙ্গীত গাইলেন বন্দনা সিংহা 'বাংলার মাটি বাংলার জল'। সময়োপযোগী নির্বাচন সন্দেহ নেই, কিন্তু কম্পমান গায়নভঙ্গি আবেগজনিত নয়, এটা নির্দ্বিধায় বলা যায়।

হো হো হো

তবে মেয়েরা প্রত্যেকেই হাঁ করে গান করেন স্পষ্ট উচ্চারণে, এবং কোনোরকম আড়ষ্টতা বা প্রতিষ্ঠানের মেঘে আবৃত নন, যেটা এপার বাংলায় ক্লান্তি আনে।

শুধু এই গায়নভঙ্গির কারণে অজস্র রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়িকা আমার দু'চোখের (থুক্কু, দু'কানের) বিষ।

তাঁর 'তবু মনে রেখো' গানের অনুরোধ মানতে পারলাম না বলে দুঃখিত‍। কথা দিলাম, বাংলাদেশে চলে গেলেই ভুলে যাব।

হাসি

সবচেয়ে বিরক্তির মহঃ সাদির (সাদী মোঃ তকিউল্লাহ) গান। 'যদি এ আমার হৃদয়দুয়ার' গানে তিনি প্রায় বিধ্বস্ত। তারপর তাঁর গাওয়ার গুণে 'তোমায় গান শোনাব' গানটি চটুল বাইজীর গানের মত হয়ে যায় (রাগ পিলু এই ব্যাপারে সহায়ক হয়)।

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

বাংলাদেশের চিত্রাঙ্গদায় মদন মাথায় ফুলশয্যার কনের মুকুট পরে ঢোকেন এবং 'তাই আমি দিনু বর' বলার সময় মনে হয় রেফারি হলুদ কার্ড দেখাচ্ছেন।

হো হো হো

অর্জুনকে দেখে মনে হয় নগ্ন উর্ধাঙ্গে কাস্টম অফিসার।

হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
যৌনদুর্বলতায় ভুগছি দীর্ঘকাল। দুর্বল হয়ে পড়ি রূপময়ী নারী দেখলেই...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

আনিস মাহমুদ এর ছবি

হাসি

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

অনিকেত এর ছবি

আনিস ভাই,

আপনার পোষ্টে এইটাই মনে হয় আমার প্রথম কমেন্ট। আপনার লেখা পড়ি। কিন্তু কমেন্ট করার ঠিক সাহস করে উঠতে পারি না। কিন্তু আজকের লেখাটি(যদিও ঠিক সে অর্থে আপনার নিজের লেখা নয়) আমাকে এতটাই উস্কে দিল যে, শেষমেষ সাহস করেই ফেললাম।

এই লেখাটি আমার নিজের খুব ছোটবেলায় পড়া। এবং বহুদিন ধরে স্মৃতির কানাগলিতে কানা হয়েছিল। আমার মনে আছে, প্রথম যেদিন এইটে পড়ি, সেদিন আমি যুগপৎ আনন্দিত ও ক্ষুব্ধ হয়েছিলাম। আনন্দিত হয়েছিলাম---হামিদা হক ও সাদী মুহাম্মদের সম্পর্কে মন্তব্য পড়ে। বিশেষ করে হামিদা হকের ব্যাপারে,'তবু মনে রেখো' এর প্রত্যুত্তরে--'কথা দিলাম, বাংলাদেশে চলে গেলেই ভুলে যাব', আমাকে অনেকবার হাসিয়েছে। আর সেই সময়টাতে আমার বাসায় সবাই একেবারে জোট বেঁধে সাদী মুহাম্মদের ভক্ত। কিন্তু আমার কেন জানি, তাঁর গান ঐ সময়ে ঠিক ভাল লাগত না। অবশ্য এখনকার চিত্র ভিন্ন। কিন্তু সে সময়ে 'দেশ'-এর এই 'সময়োপযোগী' লেখাটি আমার আয়ুধ সংগ্রহে নতুন মাত্রা দিয়েছিল। টিভিতে সাদীর গান দেখলেই, তার' বিধ্বস্ত' দশার বর্ণনা উচ্চকন্ঠে আবৃত্তি করে ব্যাপক আমোদ পেতাম।

আনন্দিত হবার আরো কারন ছিল আমাদের আব্দুল আহাদ আর কলিম শরাফী নিয়ে উষ্ণ মন্তব্যগুলো। ছোট মানুষের ছোট্ট বুকটা ভরে দেবার মত করে লেখা এই মন্তব্য গুলো বহুদিন মনে নির্ভরতার আলো জ্বেলে রেখেছিল----কারন 'দেশ' পত্রিকায় লিখেছে---!

আর ক্ষুব্ধ হবার কারণ রণ'দা বলেই দিয়েছেন। আমাদের নামের বানান নিয়ে তাঁদের এই নিয়মিত এক্সপেরিমেন্টেশান রীতিমত অপমানজনক। আমার তো কখনো মনে পড়ে না ওপার বাংলার কারো নাম বিকৃত ভাবে এদেশের কোন পত্রিকায় আসতে। যদি কখনোওবা এসে থাকে--পরক্ষনেই হয়ত এসেছে ক্ষমা প্রার্থনা। কিন্তু 'দেশ' এর মত (!) এরকম একটি পত্রিকায় একেবারে নিয়ম করে বানান গুলো ভুল করার প্রতিযোগিতা দেখে মনে হয়---হয় তারা আমাদের বানান নিয়ে উন্নাসিক, নয় তো আমাদের বানানগুলোর 'শুদ্ধ' বানান(!) বানানোর চেষ্টা করছে---হয়তবা দুটোই।

'দেশ' পত্রিকার প্রতি আমার সেই বালখিল্য 'নির্ভরতার' দিন শেষ হয়েছে অনেক আগেই। তারো আগে শেষ হয়েছে 'দেশ'-এর নিজের গুণগত উৎকর্ষতা।

মন্তব্য আর দীর্ঘ করে, প্রথম মন্তব্যেই আপনার ধমক খাবার সম্ভাবনা বাড়ানোর চেষ্টা
না করাটাই মনস্থ করলাম।

চমৎকার স্মৃতিজাগানিয়া এ লেখাটির জন্যে আবারো অশেষ ধন্যবাদ।

আনিস মাহমুদ এর ছবি

সুপ্রিয় অনিকেত

আমি প্রচণ্ড দুঃখিত সময়মত আপনার মন্তব্যের উত্তর দিতে না পারায়। উত্তর দিতে বসেছি এমন এক সময়ে, যখন পোস্টটা তামাদি হয়ে গেছে। জরুরি প্রয়োজনে হঠাৎ করে রাজশাহী যেতে হয়েছিল। ফেরার পর আবার শুরু হয়েছে দৌড়।

এই ফাঁকিবাজি পোস্টে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হয়নি। কাজটা করে দিয়েছেন আপনি। আপনার মন্তব্য যেন আমারই অনুভূতির প্রকাশ।

ধন্যবাদ। কিন্তু ঠিক কী কারণে আমাকে আপনার বকাবাজ লোক বলে মনে হল, বুঝতে পারছি না। ভাল থাকবেন।

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

রানা মেহের এর ছবি

খুব ভালো লাগলো লেখাটা পড়ে।

বাংলাদেশের নামের বানান নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের উন্নাসীকতার কোন পরিবর্তন এখনো দেখিনি। এখনো তারা আমাদের নাম তাদের ইচ্ছেমতোই লেখেন। এমন কি বলেনও।

খুবই বিরক্তিকর
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

আনিস মাহমুদ এর ছবি

আসলেই...

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

নামের বানান নিয়ে কলকাতার উন্নাসিকতায় ব্যাপক রক্ত গরম হয়।

আনিস মাহমুদ এর ছবি

এসো পান্থ, আমরাও শুরু করি ওদের মত করে।

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

s-s এর ছবি

বাংলাদেশের চিত্রাঙ্গদায় মদন মাথায় ফুলশয্যার কনের মুকুট পরে ঢোকেন এবং 'তাই আমি দিনু বর' বলার সময় মনে হয় রেফারি হলুদ কার্ড দেখাচ্ছেন। সখীসমেত চিত্রাঙ্গদা উন্মাদনা বোঝাতে চৌদুনে এক্কাদোক্কা বা কানামাছি খেলেন।
(হাহাপগে)

আদৌ কি পরিপাটি হয় কোনো ক্লেদ?ঋণ শুধু শরীরেরই, মন ঋণহীন??

আনিস মাহমুদ এর ছবি

হাসি

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

হিমু এর ছবি

দ্যাবাশিস দাশগোপ্তোর লেখাটি পড়লাম চোখ টিপি



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

আরিফ জেবতিক এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

দ্যাবাশীষ দাসগোপ্ত বললে আরও পোক্ত হইতো চোখ টিপি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
যৌনদুর্বলতায় ভুগছি দীর্ঘকাল। দুর্বল হয়ে পড়ি রূপময়ী নারী দেখলেই...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

আনিস মাহমুদ এর ছবি

উদ্ধৃতি:
দ্যাবাশিস দাশগোপ্তো

এক্কেবারে উচিত শিক্ষা!

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

অনিন্দিতা এর ছবি

স্মৃতি জাগানিয়া পোস্ট।
আমাদের নামের বানান নিয়ে ওপার বাংলার দীর্ঘদিনের উন্নাসিকতার কারন / ব্যাখ্যা কি ওখানকার কারো কাছ থেকে জানতে পারি?

আনিস মাহমুদ এর ছবি

কারণ/ব্যাখ্যা আমার জানা নেই। প্রশ্নটি আমারও। তবে ওখানকার কাউকে ধরে গলায় গামছা লাগিয়ে জিজ্ঞেস করলে উত্তর পাওয়া যেতে পারে।

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

সজারু এর ছবি

দারুণ একখান রম্য রচনা! দিলেন আনিস ভাই।
লেখার যেসব জায়গায় দাপায়া হাসলাম তার সবকটা সন্ন্যাসী'দা কোড কৈরা ফেলছে।
একটা ঘটনা মনে পড়লো,
তাকিউল্লাহ তখন বেজায় প্রখ্যাত, ছায়ানটের এক অনুস্ঠানে আমন্ত্রিত গায়েন!
সবার গান শেষ হবার পর তিনি গাইলেন পাঁচখান গান, তার প্রথমটি ছিল
" প্রচন্ড গর্জনে আসিলো একি দূর্দিন দারুণ ঘনঘটা..." তারপর ২৫টি মিনিট যে অবিরল অশনিপাত হইলো তাতে সকলেই বিধ্বস্ত হলাম। এরপর থেকে
তাকিউল্লাঃ কে দেখলেই মনে হতো অশনি সংকেত!
_________________________

সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র

_________________________

সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র

আনিস মাহমুদ এর ছবি

হো হো হো

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

মাহবুব লীলেন এর ছবি

দুর্দান্ত একটা আলোচনা পড়ালেন

আনিস মাহমুদ এর ছবি

হাসি

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

দ্যাবাশিস দাশগোপ্তোর লেখাটি পড়লাম
হো হো হো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আনিস মাহমুদ এর ছবি

হো হো হো

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

তানবীরা এর ছবি

উত্তম জাঝা!
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

আনিস মাহমুদ এর ছবি

ধন্যবাদ, তানবীরা।

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

হাসিব এর ছবি

প্রায় দুই বছর আগে অন্য পাড়ায় আনন্দবাজারীয়দের এই নামের বিকৃতি নিয়ে লিখেছিলাম ।
সময় থাকলে সেখানে একবার চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন ।

আনিস মাহমুদ এর ছবি

লিংকে গিয়ে কিছু তো পেলাম না...

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

মূলত পাঠক এর ছবি

অনিন্দিতার উত্তরে আমার মত জানাই: আনন্দবাজার শুধু বাংলাদেশি নামই নয়, সমস্ত বানানেই নিজস্ব নিয়ম চালু করেছে। কেন তা তাঁরাই জানেন। সুনীল গাঙ্গুলির "পূর্ব পশ্চিম" পড়ার সময় বাংলাদেশি লেখক-বুদ্ধিজীবিদের নাম বিশেষ জানতাম না, তাই টের পাই নি, কিন্তু আমার এক বাংলাদেশি জেঠিমা আছেন, তিনি বলেছিলেন ঐ বই কী পরিমাণ ভুলে ভরা। আগে একে উন্নাসিকতাই ভাবতাম, কিন্তু ইদানিং সন্দেহ হয় এটা স্রেফ ফাঁকিবাজি। সদ্য প্রকাশিত দেশ সংখ্যায় সুনীলবাবু আমেরিকান ইন্ডিয়ানদের "লাল ভারতীয়" লিখেছেন। লিখতে গেলে যে সামান্য সতর্ক হতে হয় সেটা বোধ হয় ভুলে যান অনেকেই।

শুধু একটা অনুরোধ: এটাকে দয়া করে পশ্চিমবঙ্গ বা কলকাতার উন্নাসিকতা বলে "জেনেরালাইস" করবেন না। আনন্দবাজার ছাড়াও ওখানে অনেকে আছেন যাঁরা এই অদ্ভুত ব্যাধির থেকে মুক্ত। বিশ্বায়নের দুনিয়ায় আমরা যখন এমনকি পূর্ব ইউরোপীয় পদবীর সঠিক উচ্চারণ শিখে নিতে পারি, তখন ঘরের পাশের নাম উচ্চারণেও সমান সংবেদনশীল হব এ বলাই বাহুল্য। সচলায়তনে বাংলাভাষার টানে আমরা যারা আসি, "কলকাতার উন্নাসিকতায় ব্যাপক রক্ত গরম হয়" শুনলে আমাদের নির্মল আনন্দ হয় তা ঠিক বলতে পারি না। বাংলাভাষার এই চমৎকার ফোরামে সামান্য ভেদাভেদের ঊর্দ্ধে ওঠা খুব কঠিন কাজ কি?

আনিস মাহমুদ এর ছবি

সহমত। নামের বানান-বিষয়ে আনন্দবাজারীয় এই উন্নাসিকতা বা উদাসীনতার জন্য কোলকাতাবাসীদের অভিযুক্ত করাটা ঠিক না। কোলকাতায় আমার পরিচিত প্রচুর মানুষ আছেন, যাঁরা অন্যের নামের বানানের ব্যাপারে সতর্ক ও সংবেদনশীল। এ-বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্যে কোনো সাধারণীকৃত সুর শোনা গেলে আমি দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

বাংলাদেশের মানুষের নামের বানান নিয়ে কোলকাতার যতোটা না অজ্ঞতা তার চেয়ে বেশি উদাসীনতা। পত্রিকাগুলোয় হরহামেশা ক্রিকেটারদের নামের বানান ভুল করে যায়, সাহিত্যিকদের কথা না-ই বা বললাম।

আজ চোখ পড়লো বাংলা ব্লগ পর্যবেক্ষক অপর্ণা রায়ের একটি লেখায়, যেখানে শেখ হাসিনা'কে লিখেছেন সেখ হাসিনা। যদিও দু'লাইন পরেই আবার 'শেখ' লিখেছেন।

লেখার রেফারেন্স দিতে গিয়ে দু'জন সচলের নামও ভুল করেছেন অপর্ণা।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী'কে লিখেছেন শোহেইল মোতাহির চৌধুরী ।
হাসান মোরশেদ'কে লিখেছেন হাসান মোর্শেদ

এ তো নিছক অবহেলা, অথবা অবজ্ঞা - উদাসীনতা।

আনিস মাহমুদ এর ছবি

নতুন করে আর কী বলব? যাঁরা এটা করেন (যেমন এই মুহূর্তে হাতের কাছে পাচ্ছি অপর্ণা রায়কে), তাঁদের কেমন লাগবে নিজেদের নামের বানানের বিকৃতি? অপর্ণা রায়কে যদি অপর্না রায় লেখা হয়, সেটা কি তিনি মানতে পারবেন? কেন যে তাঁরা এই বিষয়টি ভাবেন না, সেটা আমি ভেবে পাই না।

.......................................................................................
আমি অপার হয়ে বসে আছি...

.......................................................................................
Simply joking around...

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

শুধু আনন্দ বাজার গোষ্ঠীরই নয় দূরদর্শনের অনেক প্রোগ্রামেও এই ভুল (উদাসীনতা/অবজ্ঞা?)চোখে পড়েছে। আহমেদকে আমেদ লেখা হয়।
আমার মনে হয় এই ভুলকে ও (উদাসীনতা/অবজ্ঞা?) সরলীকরণের কোন সুযোগ নেই। এর পেছনে নিশ্চয়ই কোন গূঢ় কারণ রয়েছে।সেটাই জানতে চাচ্ছিলাম।
কেউ আহত বোধ করলে আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।

নাশতারান এর ছবি

আমার নামটা এমনিতেই যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ন। খুব কম মানুষই পেরেছেন কাটাছেঁড়া ছাড়া নির্ভুলভাবে লিখতে। কলকাতার বানানবিদদের হাতে পড়লে যে কী দশা হবে ভাবতেই ভয় লাগছে Smiley

▀ ▄

b

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আনিস ভাই আর লেখেন না কেনো যেনো... মন খারাপ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।