সুশীলের ত্যানাসমগ্র : আনু-আল হক

আনু-আল হক এর ছবি
লিখেছেন আনু-আল হক [অতিথি] (তারিখ: বুধ, ২৫/১২/২০১৩ - ৩:৩৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সুশীলের ত্যানাসমগ্র

আনু-আল হক
------------

১. “যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই” বললেই বিষয়টা ‘রাজনৈতিক’, আর থামায়া দেয়াটা খুব অ-রাজনৈতিক!

দাবী তো একটাই— যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই। যত অনুষ্ঠান আমরা নিজেরা করেছি, কিংবা কথা বলবার সুযোগ পেয়েছি, প্রসঙ্গ একটাই— যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই। “যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই” নিছক শব্দবন্ধ নয়, আমাদের প্রধানতম দাবী। এটিকে আমরা বুয়াসংকট-তেল-গেস-যানজট-বেকারত্বের সমস্যার সঙ্গে এক করিনি। এসব নিয়ে্ও যাঁরা সোচ্চার ছিলেন, তাঁদের দাবীর প্রতি আমাদের সমর্থন ছিলো/আছে; কিন্তু শুধু এসব নিয়েই যাঁরা সোচ্চার ছিলেন, তাঁদের প্রতি আমাদের গদাম আছে। আমাদের প্রধান দাবী যেহেতু এটিই, অতএব, এটি ঘুরেফিরে বারবার প্রসঙ্গক্রমেই আসবে। যদি না আসে তবে প্রসঙ্গের অবতারনা করবো, যাতে ‘প্রসঙ্গ’ ক্রমেই আসতে বাধ্য হন।

“যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই” বলামাত্রই একশ্রেণী*র (‘একশ্রেণী’র শিয়রে দেখুন ছাঁদতারার ছাঁদ আছে যে। মনে হচ্ছে বুঝি-বা পাদটীকা দিয়ে ব্যাখ্যাত হবে এই ‘একশ্রেণী’ বলতে কোন শ্রেণী বোঝানো হচ্ছে। নৈব নৈব চ। যাঁরা পাদটীকার জন্য অপেক্ষা করেছেন বা এখনো করছেন, তাঁদের জন্য করুণাভিন্ন অন্য কোনোই খুচরো পয়সা নেই যে) সদস্য ম্যাৎকার করতে থাকেন। বিষয়টা অত্যন্ত খুব ‘রাজনৈতিক’— এই ব’লে তিনারা এই প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে অন্য যেকোনো প্রসঙ্গ নিয়ে আলাপ করার বাসনা প্রকাশ করেন। উপস্থিত সুধীগণও (আপনি কি সুধী শব্দটির জায়গায় সুশীল পড়েছেন? বাহ, আপনি তো লাইনের লোক!) একমত হন। কিন্তু আপনি পাল্টা প্রশ্ন যদি করেন, এই যে আমারে থামায়া দিয়া এই প্রসঙ্গ চাপা দেয়া হইতেসে, এইটা কি অ-রাজনৈতিক? তখন ‘একশ্রেণীর’ তিনি আপনাকে বলবেন নাস্তিক, আর সুশীল আপনাকে বলবেন, সংলাপে বসেন।

আপনি হয়তো তাঁদেরকে ধরিয়ে দিতে চাইবেন: জনাব, নাস্তিকের সঙ্গে আস্তিকের সংলাপে উনার ধর্মহানি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই তো? তখন তিনিই আপনাকে শুধরে দেবেন: ওরে, সংলাপে বসানোর জন্যিই তো তোক নাস্তিক বানানু। দুইজনাই আস্তিক হ’লি পারে সংলাপের আলাপ হবি কিবা করি? সংলাপের জন্যি নাস্তিক-আস্তিক বসা জায়েজ আছে।

পর্যাপ্ত জ্ঞানলাভপূর্বক মহামান্য সুশীলকে ধন্যবাদান্তে আপনি হয়তো তাঁকে জিজ্ঞেস করবেন: জনাব, স্বৈরাচার নির্বাচনে যোগ দিতে চাইলে আপনি ছিঃছিঃ করলেন, আর বাংলার শ্রেষ্টতম সন্তানদের খুন করে, রাজাকারদের পুনর্বাসন করে ক্ষমতায় আসা বাংলার রেম্বোর দলকে নির্বাচনে আনার জন্য সংলাপের চাপ দিচ্ছেন? ব্যস, তখনই কমার্শিয়াল ব্রেক। আর ব্রেক চেপে ধরেই সুশীলের ম্যাৎকার: ওস্তাদ, ডাইনে চাপায়া খেলেন, বামে রাজনীতি; মেশে যাইতে আছে কইলাম।

২. খেলার সঙ্গে রাজনীতি মেশাবেন না

আপনার যেহেতু ব্রেকে সমস্যা, তাই খেলার সঙ্গে রাজনীতি প্রায়ই মিশ খায়া যায়। আর আপনার ব্রেকের অবস্থাও তো সিরাম; ফেইল করে জায়গা বুইঝা। স্বৈরাচার কত গবেষণা করে বলসিলেন যে, ৬৮ হাজার গ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। আপনি তাঁর প্রেমে গ্রামচর্চা শুরু করলেন। গ্রামের যেই কোনো বিষয় নিয়ে গবেষণা করলেই লোকে বাহবা দেয়; কিন্তুক গ্রামের ওই এক বিস্ময়কর ব্যাংক নিয়ে কথা বললেই বিপদ। এ এমনই এক বাতেনী ব্যাংক যে এর গূঢ়রহস্য জানতে চাইলেই খেলার সাথে রাজনীতি মিশ খায়া যায়।

আমি তো খেলারও দোষ দেখি না, রাজনীতিরও না; মিলমিশ তো করায়া দেন আপনে নিজেই। রেম্বোকে বাংলার আপা-মর জনসাধারণ বলে স্বাধীনতার ঘোষক, আর আপনে বলেন দপ্তরী; সবাই বলে বীরুস্তম, আর আপনি বলেন বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতার খুনী; পুনারো কুটি লুক বলে শহীজ্জিয়া, আর আপনে বলেন রাজাকার আমদানীকারক (যার কুথাও কুনু শাখা নেই)।

বাংলার ‘পোভার্টি’ মিউজিয়মে ঠাঁই নিলে, এবং ‘শান্তি’র মুহুর্মুহু দমকা হাওয়া বয়ে গেলে, সবাই যখন দোয়া ইউনুস পড়েন, আপনি তখন শক্তিদই প্রস্তুতকারকের বাতেনী বাণিজ্যের সন্ধান পেয়ে বড় খতমের দোয়া পড়েন; উপর্যূপরী পুরস্কারে তিনি যখন জর্জরিত, আপনি তখন তাঁর নন-পলিটিক্যাল রাজনৈতিক দল খোলার খায়েশের কথা স্মরণ করিয়ে দেন; সবাই যখন পুল্কিত হন এই ভেবে যে তাঁর গরু-খোঁজা সফেদবাড়িতে উপস্থাপিত হয়েছে, তখন আপনি সন্দেহ প্রকাশ করেন এই বলে যে, আম্রিকা-বিরোধী কোনো তরিকা তো উক্ত গৃহে উপস্থাপিত হইবার কথা নহে; সবাই যখন গ্রামের একমাত্র ব্যাংকটিকে তাঁর ব্রেইন-চাইল্ড বিধায় তাঁকে ব্যাংকটি থেকে আলগা না-করার জন্য সোচ্চার, তখন আপনি বলেন, “পোলায় কি এতোদিনেও বড় হয় নাই? ওরে আর কতদিন হাত ধইরা হাঁটান লাগবো? এবার ওরে নিজ পাঁয়ে খাড়াইবার দেন”, কিংবা “ব্যাংকের ব্রেইন-ফাদার তো অমর নহেন; তিনি পরলোকগমন করলে কি তবে ব্রেইন-চাইল্ডেরও সহমরণ হইবে?” খেলা কি এমনি এমনি রাজনীতির সঙ্গে মিশে? লাইনে আসেন।

৩. চাইনীজ মালের গেরান্টি নাই।

এই ‘মাল’ অতিঅবশ্য লিঙ্গনিরপেক্ষ; গলির মোড়ের ডাকের সঙ্গে কিংবা বিশেষ কোনো মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রকের সঙ্গে এর কোনো মিল নাই। বাংলাদেশে চাইনীজ মাল বিক্রির সময় প্যাকেট খোলার আগে বিক্রেতাই আগেভাগে সাবধান করে দেন: সাবধানে প্যাকেট খুলবেন; ইহা চাইনীজ মাল। প্যাকেট থেকে বাইর হওয়ার পর যদি কাজ না করে তাইলে বুঝতে হবে আপনি ঠিকমতো খুলতে পারেন নাই। মাল ঠিকই আছে। বোঝেন, বাংলাদেশের মতো আঠারো কোটি মানুষের দেশে বিক্রেতা “আপনি ঠিকমতো খুলতে পারেন নাই” বলার মতো প্রহসন করতে পারে! এও সম্ভব চাইনীজ মাল বলেই।

চাইনীজ মাল নিয়ে আমার বাবা, মানে নিউ কামাল অ্যান্ড ব্রাদার্স-এর কামাল সাহেব, একটা মর্মান্তিক গল্প বলেছিলেন। তার আগে আরেকটা সত্য ঘটনা জানাই। তখন ফ্লপি ডিস্কের যুগ (বাচ্চারা, উইকিপিডিয়া দেখ) দোকান থেকে একটা ফ্লপি কিনলাম, বাসায় এসে দেখি কাজ করছে না। দোকানে ফেরত দিতে গেলাম। উনি ফ্লপিটা খানিক উল্টেপাল্টে গম্ভীরভাবে বললেন, ঘটনার বিস্তারিত বলেন। আমি বললাম, বিস্তার তেমন কিছু নাই। এইখান থেকে কেনার পর রিকশায় বাসায় গেলাম। গিয়েই… আমারে আর অগ্রসর হতে না-দিয়ে উনি ততোধিক গম্ভীর হয়ে বললেন, তাইলে তো ঠিকই আছে। রিকশার ঝাঁকুনীতে নষ্ট হইয়া গেসে। রিকশা, রিকশার ঝাঁকুনী, আমার নির্বুদ্ধিতা, ফ্লপির বেরসিকতা, লোকটার অমানবিকতা— ইত্যাদি অনেক কিছুর উপরই মেজাজ খারাপ হবার সম্ভাবনা ছিলো বলে শেষ পর্যন্ত আরেকটা ফ্লপি কিনে হেঁটেই বাড়ি গেলাম। পরে উনি বলেছিলেন, বগল উপচে ফ্লপির গায়ে ঘাম লেগেছে বলেই… (ফ্লপির গায়ে ঘাম লেগেছে, আমি অধম করবো কী!)

মর্মান্তিক সেই চাইনীজ গল্পের কথা বলি। চাইনীজ বন্ধুর কান্না দেখে তার জাপানী বন্ধু কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করলে সে বললো: ভীষণ কান্না পাচ্ছে। আমার বাবা হঠাৎ করেই মারা গেছেন। জাপানী বন্ধু সান্ত্বনা দিতে শুরু করলো: সবার বাবাই তো একসময় মারা যান। শক্ত হও বন্ধু। চাইনীজ বন্ধুটি তখন আরো কেঁদে উঠে বললো: সে তো জানি, কিন্তু বাবার বয়স মাত্র তেতাল্লিশ। এতো অল্প বয়সে… তখন জাপানীজ বন্ধুটি তাকে জড়িয়ে ধরে বললো: চাইনীজ মাল তো দোস্ত, গেরান্টি নাই।

বাংলাদেশের চিংকু-বামদের রাজনীতি দেইখা যদি “আলোচ্য গল্পটি থেকে আমরা কী শিখলাম”-এর কথা মনে পড়ে যায়, তাইলে কিন্তু কইলাম খেলার সঙ্গে রাজনীতি…হুম।

৪. প্রথম নয়, আমাদের এখন দরকার শেষ আলো

“বদলে যাও, বদলে দাও”— এই মহা দৈববাণীর অনেক আগে থেকেই তিনারা জনপ্রিয়। বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসকে কর্পোরেট মর্যাদায় নিয়ে গেছেন তাঁরাই প্রথম। এমনই জিল্লতি যে, ‘যা কিছু ভালো তার সঙ্গেই…” আমরা তো হুমড়ি খেয়ে পড়লাম। দেশের বুয়াসংকট থেকে শুরু করে শিল্প-সাহিত্য, সর্বত্র তাঁদের দৃপ্ত পদচারণা। কিন্তু আমরা ভুলেও একবার ভাবিনি, পোলায় পরীক্ষায় ফার্স্ট হবার খুশীতে বাকবাকুম হওয়ার সময় এটারও খোঁজ নেয়া উচিত “বেহেশতের পাসপোর্ট” করার জন্য ফরম জমা দিসে কি না। আমরা তখন আলোর ঝলকানীতে এতোটাই বিহ্বল যে, “আপনার পোলায় তো হিরুইন বিছরায়” শুইনা ফাল ফাইরা বলেছিলাম, “পোলায় আমার হিরুর লাহান; হিরুইন না বিছরাইয়া মাতারী বিছরাইবো নি?” এখন বুঝি, এই হিরুইন সেই হিরুইন না, যেমন এই কাদের মোল্লা সেই কাদের মোল্লা না, এই সাঈদী সেই দেইল্লা রাজাকার না।

বদলাইসে দেখা যায় অনেক কিছুই; কসাই কাদের হইসে কাদের মোল্লা, দেইল্লা হইসে আল্লামা। তো আলুর কথামতোই এইসব বদলাইছে, নাকি এইসব বদল দেইখাই তিনারা ওয়াসা পর্বতের গুহা থিকা এই দৈববাণী দিসেন, সেইটা নিয়ে জাতিসংঘের বা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ফান্ড নিয়া গবেষণা হইতে পারে। সবাই যখন এই “বদলে যাও, বদলে দাও” বাণীতে ঘুরপাক খাচ্ছিলেন, তখন বিডিনিউজ বলেছিলো: “সবকিছু বদলে দিতে নেই” তাদের সেই তালিকায় ‘সত্য’ এবং ‘সংবাদ’ ছিলো, যার বদল তারা চায়নি। কিন্তু আলু এ-দুটোরই বদল চেয়েছে, এবং সত্য ও সংবাদ বদলের দিকপাল বাংলার অ্যাসাঞ্জের মুক্তির জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলো। তারা তাদের কথা রেখেছে।

বৃদ্ধিমাত্রই শুভলক্ষণ নয়; ক্যান্সার তার করুণতম উদাহরণ। বাড়াবাড়ি উল্লম্ফন দেখে শুধু মনে পড়ে: “এতো বড়ো জোব্বা যে বানাইসেন, মোতার জায়গা রাখসেন তো?”

৫. “…মেইক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট ফর দ্য পলিটিশিয়ান।”

আলোচ্য অংশটুকু বাংলার রেম্বো শহীজ্জিয়ার মুখনিঃসৃত বাণী থেকে উৎকলিত হইয়াছে। এইখানে তিনি বুঝাইতে চাহিয়াছেন যে, তিনি রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি করা কঠিন করিবেন। কিন্তু ইহা তো কেবল বঙ্গানুবাদ; ইহার ভাবানুবাদ অধিকতর গভীর। ইহাতে তিনি বুঝাইয়াছেন যে, রাজনীতি সহজ করা হইবে অ-রাজনীতিবিদদিগের জন্য। এবং নিজের বাসনাকে বাস্তবরূপ দিবার নিরিখে তিনি ছিলেন বদ্ধপরিকর। তাঁর হাত ধরেই বাংলার রাজনীতিতে শুভ মহরৎ এবং/অথবা পুনর্বাসন ঘটে বেবসায়ী, যুদ্ধাপরাধী, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী, খুনী, ধর্ষক, অবঃ(সর)প্রাপ্ত দেশদ্রোহী ইত্যাদি ব্যক্তিবর্গের।

তো, এখানে খেলার সঙ্গে রাজনীতি মিশলো কৈ? মিশবে বস, একটু ডাইনে চাপলেই…

বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশীদের মধ্যে ‘নন-পলিটিক্যাল’ থাকার একটা বাসনা চিরজাগরুক। নতুনদের মধ্যে এই ধারণা সুপরিকল্পিতভাবে গেঁথে দেয়া হয়েছে। প্রথমতঃ এককালের অসম্ভব ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, সৎ, দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদদের কারণে অসৎ-খুনী-জো্চ্চোর-দেশদ্রোহীরা রাজনীতির মাঠে একরকম অবাঞ্ছিত ছিলো। রেম্বোর আমলে এরাই যখন রাজনীতির মূল ধারায় আসলেন, তখন তারা তাদের অবস্থান পাকাপাকি করার বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন। তার মধ্যে একটি ছিলো পরস্পর পরস্পরের প্রকৃতরূপ প্রকাশ করা, অর্থাৎ রাজনীতি কেবলমাত্র খুনী-সন্ত্রাসীদের জায়গা বলে প্রচার করা। ফলে, সৎ দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ বা সাধারণ জনগণ ধীরে ধীরে রাজনীতির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেললেন। আখেরে সন্ত্রাসীদেরই লাভ হলো।

দ্বিতীয়তঃ যেহেতু রাজনীতিকে ততদিনে কুৎসিত করা হয়েছে, এবং একে প্রায় পরিশোধন-অযোগ্য বলে পরিচিত করানো গেছে, অতএব এবার দ্বিতীয় পর্যায়। রাজনীতি খারাপ, অতএব অ-রাজনীতি ভালো। সেই থেকে ফ্যাশনের দুনিয়ায় নতুন ব্র্যান্ড যুক্ত হলো— নন-পলিটিক্যাল। এবং এটা এতোটাই মহামারির আকার ধারণ করলো যে, বঙ্গবন্ধু পরিষদ কিংবা জিয়া পরিষদকেও নন-পলিটিক্যাল বলে প্রচার করা হয়। জিয়া পরিষদকে তো পলিটিক্যাল বলবে না ওদের স্বার্থে, কিন্তু এতে লছ হলো কার? মউদুধেরই কি খালি ১০০ টেকা লছ হয়?

পঁচাত্তর-পরবর্তী প্রজন্মকে নন-পলিটিক্যাল সোমরস খাইয়ে এখন বিজয় টেবলেটের নিয়মিত গ্রাহক করা হয়েছে। কিন্তু, গুলাবী বা গুলাবীর নায়েবরা যেমন আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে অবরোধের ডাক দিয়ে সাধারণ মানুষকে আগুনে পোড়ায়, তেঁতুলবাবা যেমন ভাংচুরের ডাক দিয়া নিজেই পালায়, তেমনি ওই কুৎসিত রাজনীতিবিদরা রাজনীতিকে নোংরা বলে প্রচার করে সবাইকে পালাতে বলে নিজেরা ঠিকই রাজনীতিকে ধর্ষণ করেই গেছে। ওদের রাজনীতি নোংরা এতে সন্দেহ নেই, কিন্তু খোদ রাজনীতিকেই নোংরা বলে প্রচার করার রাজনীতি ওরা করেছে। “রাজনীতিতে আসবা না”— এটাই যে একটা রাজনৈতিক খেলা সেটা বুঝতেই আমাদের পশ্চাদ্দেশ ভিজে গেছে।

যেজন নিশ্চিত জানে যে দৌড়ে পরাজিত হবে, সে তো আপনাকে না-দৌড়ানোর পরামর্শই দেবে। এতে তারই লাভ; অন্তত অবশ্যম্ভাবী পরাজয় তো তার হয় নাই। যে মেট্রিক ফেল, সে তো চাইবেই প্রশ্ন আসুক নন-মেট্রিক লেভেলের; তাতে আপনি পড়াশোনা থামাবেন কেন? যে জানে ইতিহাসের প্রকৃত পাঠ তার চেহারার সকল পলেস্তরা খসিয়ে দেবে, সে-ই তো বলবে ইতিহাস পড়ে লাভ নেই, ইতিহাস থেকে ইতিহাস কিছু শেখে না। লক্ষ্য করেছেন কি, সে কিন্তু ইতিহাসের পাঠ নিয়েই আপনাকে ইতিহাস থেকে দূরে রাখছে? আপনার মাকে ধর্ষণের পর বলা হলো, এখন আর ‘গণ্ডগোল’ করে কী হবে?

৬. গুলাবীর মেকাপ

ভেষজবিদ্যার গুণাগুণ নিয়া অ্যাকাডেমিক প্রবন্ধের শুরুতেই থাকে বৃক্ষের চিরন্তন সৌন্দর্য, প্রকৃতিতে বৃক্ষের ভূমিকা, অপরাপর বৃক্ষের ঐতিহাসিক গুণাবলী ইত্যাদি। এইসব বলা হয় খুব জোর দিয়ে, এরপর মিনমিন করে বলা হয়, গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, এই বৃক্ষের ছাল সেবনের মাধ্যমে উক্ত রোগের নিরাময় সম্ভব হইলেও হইতে পারে— এই আশংকা প্রকাশ করলে অত্যুক্তি করা হবে না বলে ধারনা করা অসঙ্গত হবে না। এতদ্বিষয়ে অধিকতর গবেষণা বাঞ্ছনীয়…
যদি আরো বিশ্বাসযোগ্য করতে চান, তাহলে কোন মহাপুরুষ কোন পুস্তিকায় কী খেয়েছেন বলে লিপিবদ্ধ আছে সেটা বলেন, অথবা হাড়হাভাডের মতো আচরণ করতে শুরু করেন। কিন্তু যা-ই বলেন দাদা, ওই মেকাপটা লাগে আর কি! ওই যে, হার্ভাড-এমাইটির ওমুক লোক তেঁতুলপ্রেমী, অতএব তেঁতুলবাবা হামাইটিরও গুরু!

কী সুন্দর চেহারা ছিলো পাশের বাড়ির মানিক চাচার, কী সুন্দর করে কথা বলতেন পাশের গ্রামের হারুন প্রফেসর। অথচ বাবা শুধুই ঘেন্নায় মুখ কুঁচকে রাখতেন। আমাদের ধারণা ছিলো বাবার চেহারা থারাপ হওয়ার কারণে, কিংবা গুছিয়ে কথা বলতে না-পারার কারণে ঈর্ষা থেকেই তাদেরকে অপছন্দ করেন। বাবাকে কখনো জিজ্ঞেস করিনি, করতে হয়নি। আশেপাশের সুদর্শন-আধুনিক-উচ্চশিক্ষিত-মেধাবী মানুষদের দেখে অবাক হয়ে ভাবি, এরা প্রত্যেকেই নিজনিজ কর্মক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত হবেন, অনেকের কাছেই আইডল মনে হবে এঁদেরকে। আর আমার সন্তানরাও হয়তো আমার কুঁচকানো মুখ দেখে আমাকে ঈর্ষাকাতর ভেবে বিমর্ষ হবে।

অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে সুস্বাদু হয়— এটা স্পেন্সার-ডারউইনিয়ান “সারভাইভ্যাল অব দ্য ফিটেস্ট” মূলনীতি মেনে চলে। এমনিতে অস্বাস্থ্যকর, তার উপর বিস্বাদ হলে কার ঠেকা পড়ছে ওইটা খাওয়ার! এই মূলনীতির আবার এভোল্যুশন হইছে সিরাম। আগে আম্রিকা নিজেই নিজের লোক দিয়া তৃতীয়বিশ্বের দেশ শাঁসাইতো। কিন্তু পরে বুঝতে পারসে যে লোকজন বুইঝা ফালাইতাসে। শাদা চামড়া দেখলেই লোকাল লোকজন সন্দেহ করে। তখন তারা কোমল-বাদামীত্বকযুক্ত লোকাল এজেন্ট বানাইতে শুরু করলো। নুবেল ইত্যাদি পুরস্কারে জর্জরিত করে তাদের এজেন্টকে প্রায় ভালো মহামানবতূল্য করা হয় প্রথমে। লোকাল লোকজনতো এই বাদামীত্বকঅলাকে নিজেদের জন্য প্রেরিতপুরুষ/রমণী মনে করেন। তাঁর প্রতিটি কথায় বুইঝা-না-বুইঝাই হ্যাঁ বলতে থাকেন— “আরে এ তো আমাদের লোক, আমাদের স্বার্থবিরোধী কিছু তিনি করতেই পারেন না”! আর সকালে উঠে দেখেন পশ্চাদ্দেশ ভেজা; পেছনের কথা আর ভোলাই যায় না। হায়রে “পিছন পাগল”!
তো, এই মূলনীতি ইদানীং আমাদের আশেপাশের বুদ্ধিবেশ্যারা বেশ ফলাইতেসেন। আমরা তো আর এসব তেমন বুঝি কোথায়! তবে সবাই একই কায়দা অনুসরণ করেন বইলা আমরাও বুঝে ফেলি, ‘কায়দাটা কী?’ আল-কায়দা এরকম: গোড়াতে (প্রক্রিয়ার, অন্য কিছুর না) নামটা অমুসলিম করার উদ্যোগ নিবেন (অবিশ্বাসীদের জন্য নিদর্শন: নামের আগে মাইকেল বা শ্রী, কিংবা নামের শেষে গোমেজ, ইত্যাদি); অব্যবহিত পরেই ভূমিকায় বলে নিবেন যে, আপনার বাবা-দাদা-পরদাদা (আপনার বয়স কাবার করলে আপনাকেও এই তালিকায় নিয়ে নিয়েন) ইত্যাদি সবাই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন (খিয়াল কৈরা), আপনারা কয়েকপুরুষ ধরেই আম্লিগ করেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় চেতিয়ে থাকেন সবসুমায়, বঙ্গবন্ধু আপনাদের বাসায় আইসা একবেলা ডালরুটিও খাইসিলেন ইত্যাদি, মানে এক কথায় বঙ্গবন্ধুর চাইতেও বড় আওয়ামীলীগার আর কি! এরপর ছোট্ট করে “কিন্তু, তবে, বাট [বাংলা হরফে ইংরাজি ভালো খাইতেসে; এই শব্দটার অবশ্য আরেকটা সুবিধাও আছে; শব্দের শেষে কয়টা টি আছে সেটা নিয়ে একটা রহস্য রহস্য ভাব থাকে], ইয়ে মানে, অথচ” এই শব্দতালিকার যেকোনো একটি বা একাধিক ব্যবহার করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে সোনাবলগ বা বাঁশের কেল্লা কোট করে মেরে যাবেন। লোকজন বলবে, দেখসো, স্বয়ং আম্লিগের লোকজনই এইরকম বলতেসে, আমরা আর কী!

মুশতাক সা’ব, গুলাবীর মেকাপ তো চিরস্থায়ী না। এইটা ২০১৩; আমরার কাছে মেকাপ-রিমুভার আছে!


মন্তব্য

ঈয়াসীন এর ছবি

চলুক

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

হিমু এর ছবি

চমৎকার!

আনু-আল হক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ বস ।

দীনহিন এর ছবি

চলুক

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

দীনহিন এর ছবি

চলুক

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সত্যপীর এর ছবি

খি খি খি। জোস হইছে।

..................................................................
#Banshibir.

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সুজন চৌধুরী এর ছবি
আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

নির্ঝর অলয় এর ছবি

এমন অস্বচ্ছ, পক্ষপাতদুষ্ট, স্বৈরাচারী, মানবাধিকারবিরোধী, আন্তর্জাতিক মানের চে' নিম্নমানের লেখা যে, ৫ এ ৫ না দিয়ে পারা গেল না!

৫. “…মেইক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট ফর দ্য পলিটিশিয়ান।”

আলোচ্য অংশটুকু বাংলার রেম্বো শহীজ্জিয়ার মুখনিঃসৃত বাণী থেকে উৎকলিত হইয়াছে। এইখানে তিনি বুঝাইতে চাহিয়াছেন যে, তিনি রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতি করা কঠিন করিবেন। কিন্তু ইহা তো কেবল বঙ্গানুবাদ; ইহার ভাবানুবাদ অধিকতর গভীর। ইহাতে তিনি বুঝাইয়াছেন যে, রাজনীতি সহজ করা হইবে অ-রাজনীতিবিদদিগের জন্য। এবং নিজের বাসনাকে বাস্তবরূপ দিবার নিরিখে তিনি ছিলেন বদ্ধপরিকর। তাঁর হাত ধরেই বাংলার রাজনীতিতে শুভ মহরৎ এবং/অথবা পুনর্বাসন ঘটে বেবসায়ী, যুদ্ধাপরাধী, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী, খুনী, ধর্ষক, অবঃ(সর)প্রাপ্ত দেশদ্রোহী ইত্যাদি ব্যক্তিবর্গের।

জিয়া এবং এরশাদ দুজনই স্বৈরশাসক ছিলেন এবং বি,এন,পি এবং জাপার জন্মেতিহাস একই রকম। তারপরও বিশ্ববেহায়াকে বলা হয় স্বৈরাচার আর তেনাকে "বহুদলীয় গণতন্ত্রের" জনক! সত্যিই কি বিচিত্র এই দেশ!

ছোটবেলা থেকেই আরেকটি অপতৎপরতা দেখেছি, জিয়াকে বঙ্গবন্ধুর সমান মর্যাদা দেয়া। অনেক তথাকথিত "নিরপেক্ষ" পাগলকে বলতে শুনেছি এরা দুজনই মহান। কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি না করে যার যা পাওনা তাকে সেটা দেওয়া উচিত ইত্যাদি। "জ্যোছনা ও জননীর" গল্প গ্রন্থে বাংলাদেশের জনপ্রিয়তম ও সর্ব প্রকার সমালোচনার ঊর্ধ্বের লেখকপ্রবর হুমায়ুন আহমেদও জিয়ার ডায়েরির উদ্ধৃতি দিয়ে জিয়াকে স্বাধীনতার "স্বনির্ভর"ঘোষক হিসেবে প্রচার করেছেন এবং "সঠিক" ইতিহাস প্রচারের পবিত্র খায়েশ ব্যক্ত করেছেন। তার আগেই বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের বক্তৃতার শেষে গৈবি আওয়াজ হিসেবে তিনি পেলেন- "জিয়ে পাকিস্তান"- যেটা কোন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ শুনতে পায়নি!

জিয়ার রাজনৈতিক দুরাচার, বাংলাদেশকে বাংলাস্তান বানানোর চক্রান্ত নিয়ে অসাধারণ সব প্রবন্ধ লিখেছিলেন ওয়াহিদুর রহমান। রেম্বোর কুকীর্তিগুলো নিয়ে আরো লেখা দরকার, বিশেষ করে দালাল আইন বাতিল নিয়ে লেখা চাই।
মিজান, পিষে ফ্যালো

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

নির্ঝরদা,
নিরপেক্ষ ( খাইছে ) ভাবে বলতে গেলে, এরশাদের আমলটা অনেক দীর্ঘ অথচ কম (অব্যবহিত আগের সামরিক শাসনামলের তুলনায়) রক্তাক্ত। এরশাদ একবার কইছিল না, "এই দেখেন, আমার হাতে রক্ত নাই"... এই কথা নিয়ে আমরা যতই হাসাহাসি করি, ৭৫-৮০ এই ৫ বছরের দিকে তাকায় সে এই কথা মনে হয় বলতেই পারে... মাঝপথে গাড়ি চালায়া নিয়ে যাওয়া এরশাদরে সারাজীবন স্বৈরাচারের গালি শুনতে হয়, অথচ, সামরিক শাসনের শুরুটা কেম্নে বহুদলীয় গণতন্ত্রের মুহুর্ত হয়ে যায় এইটা আজও বুঝি না... জিয়ার তুলনাটা কোনভাবেই ৭১-১৫ এর নেতাদের কাতারে আসতে পারে না... তুলনা যদি হতেই হয়, ৮১-৯০ এই সময়ের শাসকবৃন্দ (বহুবচন হবে কি?) এর সঙ্গে হতে পারে... তবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (কিছুটা) হয়

দালাল আইন বাতিলকরন নিয়ে ত্যানা পেচানি কঠিন... এই গেজেটে স্বাক্ষর যদিও প্রেসিডেন্ট সায়েমের, তারিখটা ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৭৫... ততদিনে কিন্তু অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট

এপ্রিল ৭৩ এ ঘোষিত হয় "নাগরিকত্ব বাতিল বিজ্ঞপ্তি ১৯৭৩" (যেটা গোয়াযম সহ অনেককেই ইনক্লুড করে), এইটা বাতিল হয় ১১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৮ এর সামরিক ফরমানে, আর ইনডেমনিটির মত এই গেজেটেও সরাসরি প্রেসিডেন্ট + মেজর জেনারেল পদবীধারী জিয়ার স্বাক্ষর আছে... তারমানে, গোয়াজম ফাইনালী আদালতে আসছে ৯৩ বা ৯৪ সালে... কিন্তু তার আইনী ভিত্তি তখনকার... ... ...

সেইজন্যই বুঝি সাধারন ক্ষমার খণ্ডিত ভার্সন বারংবার শুনায়ে ছাগলরে কুকুর বানানো হয়...

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

স্যাম এর ছবি

চলুক

আনু-আল হক এর ছবি

চলুক

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

আনু-আল হক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ নির্ঝর অলয়।
বঙ্গবন্ধু আর জিয়াকে একইপাল্লায়, বিম্পি আম্লিগকে একই পাল্লায় টানার প্রসঙ্গ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোও নন-পলিটিক্যাল আন্দোলনের অংশ: “আরে আম্লিগ বিম্পি সব এক”,,, মানে এবার জামাতরে ক্ষমতায় আনেন। ওইটা তো সরাসরি কইতে পারে না। তবে একই আলাপ বিম্পিও দেয়, কারণ তাতে বিম্পি আম্লিগের তূলনীয় দল হিসেবে ভাবার আনন্দ পায়। এ-জাতীয় তুলনার কথা যখন আসলোই, তখন আরেকটা গল্প বলি। এক বন্ধুর মুখে শোনা: গ্রামের এক লোকের সামান্য বিদ্যার তেজারতীতে গ্রামসুদ্ধ সবাই বেশ অতীষ্ট। না-বুঝেই দুনিয়ার সকল বিষয়ে নিজের মতামত দিতে থাকে; লোকজনও বিরক্ত হতে থাকে। একসময় বুঝতে পারে যে, গ্রামে তার অবস্থান অত্যন্ত নাজুক। তখন কারোর সঙ্গে বিরোধপূর্ণ তর্ক বাধলেই সে নাকি বলতো: এইজন্যই আমারে আর কফি আনানরে কেউ দ্যাখতে পারে না খাইছে

চরম উদাস এর ছবি

হাততালি জটিল

আনু-আল হক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ গুরু। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

শব্দ পথিক এর ছবি

গুল্লি
হইসে।

----------------------------------------------------------------
''বিদ্রোহ দেখ নি তুমি? রক্তে কিছু পাও নি শেখার?
কত না শতাব্দী, যুগ থেকে তুমি আজো আছ দাস,
প্রত্যেক লেখায় শুনি কেবল তোমার দীর্ঘশ্বাস!''-সুকান্ত ভট্টাচার্য

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- কবি

স্যাম এর ছবি

উত্তম জাঝা!

আনু-আল হক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।