প্রথমবার যখন এক বন্ধুকে ভালোবেসে ফেলেছি, আমার বিশ্বাস হতে চায়নি! বন্ধুকে বললাম, তোকে ভালোবেসে ফেলেছি। বলে আমরা দুজনেই খুব হাসলাম। এখনো সেই ঘটনা আমার বিশ্বাস হতে চায়না। মনে হয় ঘোরের মধ্যে আছি। ভালোবাসার মতো দারুণ একটি বিষয়ও হয়তো কোনো কৃতিত্বের বিষয় হতে পারতো। কিন্তু সে-ও হয়নি। যাঁদেরকে ভালোবাসা উচিত, তাঁদেরকে ঠিকঠিক ভালোবেসে ওঠা হয়না। আম্মার খেয়াল রাখার দরকার ছিল। আমি আম্মার খেয়াল রাখিনা। আম্মা আমার খেয়াল রাখেন ৯ হাজার কিলোমিটার দূর থেকে। ওনার কখনো ভুল হয়না। আমার কেবলই ভুল হয়ে যায়। আমার সহোদরাদের খোঁজও আমি কিছু রাখিনা। ওরা আমার খোঁজ রাখে। ভালোবাসায় আমি নিতান্ত ব্যর্থ একজন মানুষ। ভাবলেই আমি দারুণ ক্ষীণ, নিতান্ত ক্ষুদ্র বোধ করি নিজেকে।
সবার আগে যেটি প্রয়োজন সেটি হচ্ছে মানুষকে সতর্ক করা। আমি যেহেতু দেশে থাকিনা, তাই আমার স্পষ্ট জানা নেই আমাদের দেশের মানুষ এই ভাইরাসটির সংক্রমণ বিষয়ে কতটা সচেতন। পর্যাপ্ত সচেতন নয় বলেই জেনেছি। সেরকম হলে, সচেতন করা প্রয়োজন। দূর্ভাগ্যবশত এই লেখাটি গ্রামের সেইসব মানুষের কাছে পৌঁছবে না যাঁরা সরাসরি নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমনের ঝুঁকিতে রয়েছেন। কিন্তু আমি জানি, আপনারা যাঁরাই এই লেখাটি পড়ছেন সবাই কোন না কোনভাবে গ্রামের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন। আমি নিজে যা করেছি, সেটি আপনাদেরকেও অনুরোধ করি। গ্রামে স্বজনরা যাঁরা রয়েছেন তাঁদেরকে আজকেই একটি ফোন করে সতর্ক করুন। তাদেরকে বুঝিয়ে বলুন নিপাহ ভাইরাস কী এবং এটা কীভাবে ছড়ায়। তাঁদেরকে জানিয়ে দিন কীভাবে সতর্ক থাকতে হবে। স্বজনদের প্রতি এটুকু দায়বদ্ধতা বোধহয় আমাদের থাকা উচিত।
কেবল সহজ বাংলায় বলে রাখি, আপনারা যারা আজকে জামায়াত শিবিরের রক্ষিতার ভূমিকায় নেমেছেন, এদের নৃশংসতা যারা দেখেও দেখছেন না, যারা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকের জায়গাতে বসেও নির্বুদ্ধিতার অসহ্য নাটক দেখাচ্ছেন, জামায়াত শিবিরের সঙ্গে তাদেরকেও আমরা ছেড়ে দেবনা।
এক মুহূর্ত সময় নাই! আজকে যতক্ষণ বাধ্য হয়ে বাইরে ছিলাম ততক্ষণ হঠাৎ হঠাৎ শব্দগুলো মাথায় আসছিল। যে কয়টা মনে আছে, দিয়ে দিলাম। পরে আরো মনে পড়লে যোগ করব। বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।
১.
মরছি হেসে বলতে যে
লাকি আক্তার হাঁকলে শ্লোগান
যায় শিবিরের প্যান্ট ভিজে
একটি বিষয় মনে রাখা জরুরি, কাদের মোল্লার বিচারের রায়ে সরকার অথবা সরকারী দলের কিছু করার নেই। কখনো ছিলও না। বাংলাদেশের আইন-আদালতের উপর সরকারের কোন প্রভাব নেই। কেবল সরকার বলে নয়, এই রায়ে কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী, দল অথবা সংগঠনের কারোরই কোন প্রভাব নেই। সুতরাং আমরা যারা বিচারের রায়ে খুশি নই, তারা যেন মনে রাখি, সরকার এই বিচারের রায় বদলাতে পারে না। তারা এই বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচারের তাদের সদিচ্ছা দেখিয়েছে মাত্র। কিন্তু বিচারের রায় কী হবে, কে অপরাধী অথবা কে অপরাধী নয় সেই বিষয়ে সরকার (অথবা অন্য কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী) কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। এই সিদ্ধান্ত কেবলমাত্র স্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের।
স্বাধীনতার বিরোধিতা করার পরেও উগ্র মৌলবাদী ধর্মভিত্তিক সংগঠন জামায়াতে ইসলামী এই দেশে রাজনীতি করে। এই রাষ্ট্র ধর্মনিরপেক্ষ হওয়ার পরেও কেবল সাধারণের ধর্মীয় অনুভূতি, ধর্মের প্রসঙ্গে মানুষের দূর্বলতাকে পূঁজি করে রাজনীতির মাঠে টিকে থাকে এই দল। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পরিকল্পণা করে অগনিত বুদ্ধিজীবি হত্যাকারী সংগঠন ছাত্র শিবির (তৎকালীন 'ইসলামী ছাত্র সংঘ') এই দলেরই অংগসংগঠন। কিন্তু ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যার ইতিহাস নিয়েও ধর্মভিত্তিক উগ্র মৌলবাদী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের ছাত্রসংগঠন শিবির কীভাবে একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে রাজনীতি করছে সেই প্রসঙ্গে এই লেখাটি নয়।
ধরে নেই, কোন অজানা কারণে জামায়াতে ইসলামী এবং ছাত্রশিবিরের রাজনীতি এই দেশে সিদ্ধ। সেই হিসেবে,গণতান্ত্রিক দাবী আদায়ের লক্ষ্যে তাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ, মিছিল, প্রতিবাদও সিদ্ধ এবং গ্রহনযোগ্য। কোন রাজনৈতিক দলের অংশ না হয়ে সাধারণের জন্যেও এসব গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু সেই গণতান্ত্রিক অধিকারের সীমা কতটুকু?
এবার আপনাকে ব্যাকটেরিয়াদের মহাশক্তির কথা বলি। মানুষের কোষ প্রয়োজন মত বদলে নেয়া যায় সে আমরা জানি মাত্র বছর ছয়েক আগে। আর মানুষের শরীরে বসে ব্যাকটেরিয়ারা এই কাজ করছে অন্তত চার হাজার বছর ধরে! এরা মানুষেরই কোষ নিজেদের মত করে বদলে নিতে পারে বলে এই সেদিন দেখালেন তোশিহিরো মাসাকি নামের একজন গবেষক। এরপর থেকে এই বিষয়টা মনে হলেই আমি হেসে ফেলছি! কীরকমভাবে মানুষেরা ব্যাকটেরিয়ার হাতের পুতুল!
- তুমি কি মনে কর মায়ানরা বিজ্ঞানে উন্নত হলে পৃথিবী ধ্বংসের ঠিক ঠিক তারিখ বের করতে পারত?
- হ্যাঁ মনে করি। আমি মৃদু হাসলাম। বোঝাতে চাইলাম, ইয়ার্কি মারছি না।
- কীভাবে? সেই হিসেব করতে হলে বিজ্ঞানে কীরকম উন্নত হতে হবে? আমরা কী অতোটা উন্নত? তানভীর ভাই অনেকটা হুড়মুড় করে প্রশ্নগুলো করলেন।
- আমার মনে হয় আমরা অতোটা উন্নত। তবে এই ধারনাটা আমার নিজের। আপনি তো জানেনই আমি স্রেফ একজন ছাত্র।
- ছাত্র তো সবাই। তোমার হিসেবটা কীরকম বলো দেখি? পৃথিবী ধ্বংস হবে কীভাবে? উল্কা এসে পড়বে? নাকি যেরকম হওয়ার কথা, সূর্য ঠাণ্ডা হয়ে গেলে তারপর? তানভীর ভাই আবার হুড়মুড় করে একগাদা প্রশ্ন করলেন।
বিভিন্নভাবে অনেকবার বললে মিথ্যাও সত্যের মত শোনায়। ব্যাপক প্রচারণার এই হচ্ছে লাভ। দুঃখজনক হলেও সত্যি, আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার বিরোধী গোষ্ঠীর প্রচারণায় অনেক সময়ে বিচারের পক্ষে কাজ করা সমমনা ব্যক্তি-গোষ্ঠী-সংগঠনের মাঝেও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। যেমন আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের সংগে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন 'অধিকার'-এর সেক্রেটারি আদিলুর রহমান খান শুভ্রের ঘনিষ্টতা নিয়ে একটি সাম্প্রতিক প্রচারণা কিছু মানুষের কৌতূহলের কারণ হয়েছে। আদিলুর রহমান খান বিএনপি আমলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন, এবং পরবর্তীতে এ পদ থেকে পদত্যাগ করেন। রাজনৈতিকভাবে বিএনপি বর্তমানে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে চলমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতা করছে। আপাত দৃষ্টিতে আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচারবিরোধী রাজনৈতিক সরকারের সময়ে নিযুক্ত আইন কর্মকর্তার সঙ্গে ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং বিভ্রান্তির একটি ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।
আইসিএসএফ এবং যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে ঘিরে অপপ্রচারের মাত্রা এই সময়ে অনেক বেশি বেড়েছে। যুদ্ধাপরাধের বিচারবিরোধীরা মরিয়া হয়ে ন্যায়-অন্যায় সকল পথে বিচার বানচালের জন্য চেষ্টা করছে। স্বাধীনতাবিরোধীদের অপপ্রচারে ভুলে অনেক সাধারণ মানুষও বিভ্রান্ত হচ্ছেন। অনেকের মাঝেই নতুন করে অনেক প্রশ্ন-কৌতূহল তৈরি হচ্ছে। আইসিএসএফ এবং যুদ্ধাপরাধের বিচারকে ঘিরে সাম্প্রতিক তৈরি হওয়া এমন সব প্রশ্নের জবাব দেয়া হচ্ছে এই ব্লগে। এখানে আপনার কৌতূহলের জবাব না থাকলে মন্তব্য অংশে তা জানাতে পারেন। মন্তব্যে পাঠকের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জবাব মূল লেখায় যুক্ত করে দেয়া হবে।