আপেল ফুলের গন্ধ

নাশতারান এর ছবি
লিখেছেন নাশতারান (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৬/০৫/২০১০ - ৫:০৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার একটা আপেলগাছ ছিলো। তার ডানে-বামে আরো দুটো গাছ ছিলো। বাগানজুড়ে ছিলো আরো শখানেক। কিন্তু ঐ গাছটা শুধু আমারই ছিলো। আমাদের ছোট্ট উঠোনের পাড় ঘেঁষে একটু ঝুঁকে দাঁড়িয়ে থাকত। বরফচাপা শীতের শেষে তার ডালে দোলনা ঝুলিয়ে দিত আব্বু। মেহদি একবার গাছে উঠে চুপিসারে দড়ি কেটে দিয়েছিলো। আর আমি ধপাস করে মাটিতে।
মেহদিটা ভীষণ দুষ্ট ছিলো। একবার আপেল ছুঁড়ে মেরেছিলো আমার দিকে। সেটা সোজা এসে লেগেছিলো আমার নাকে। আমি তখন অনেক অনেক ছোটো। তবুও মনে আছে। নাক দিয়ে কেমন গলগলিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ল। আম্মু আমার নাক চেপে ধরল আর দলা পাকানো রক্ত বেরিয়ে এলো আমার গলা দিয়ে। আমার দেখা জীবনের প্রথম প্রকাশ্য রক্তক্ষরণ।

উঠোনের সামনের দিকে এক ধরনের গাঢ় গোলাপি জংলি ফুল ফুটত বছর জুড়ে। সেগুলোর গন্ধ ছিলো খুব বিশ্রী। ওদেরকে ভালোবাসতাম না একদম। আপেল গাছের ফিনফিনে গোলাপি-সাদা ফুলগুলোকে ভালো লাগত খুব। বাগানের গোলাপগুলোর চেয়েও বেশি।
ঈদ-এ-নওরোজের[১] পর থেকেই শুরু হতো ওদের জন্য দিন গোনা।
ফুলের রেণুতে আম্মুর অ্যালার্জি ছিলো। বসন্তের শেষদিকে ফুলগুলো বাতাসে রেণু ছড়াত আর পরাগরেণুর মতো ছোটো ছোটো ফুসকুড়িতে ছেয়ে যেত আম্মুর দুহাত। তাই ফুলের মৌসুম আম্মুর ছিলো ভীষণ অপ্রিয়। অথচ সেই দিনগুলোতেই গাছটাকে সবচেয়ে ভালো লাগত আমার।

iran

গাছটার গা থেকে একরকমের আঠালো হলদে কষ[২] বেরুতো। সেগুলো জমে শক্ত হয়ে ঝুলে থাকত তার গায়ে। আমি, মেহদি, সাহার, যাহরা, সুমাইয়া, সালমান ওগুলো খুঁচিয়ে তুলে খেতাম। খেতে মিষ্টি। আম্মু দেখলেই হাঁ হাঁ করে তেড়ে আসবে। সেই ভয়ে আমরা লুকিয়ে চুরিয়ে খেতাম। কিংবা লুকিয়ে চুরিয়ে খেতাম বলেই হয়তো বেশি স্বাদু মনে হতো ওগুলো।

বাগানের পেছনের দিকে হাসপাতালের নতুন দালান উঠছিলো। ইট-সুরকি স্তূপ করা ছিলো সেখানে। ওখান থেকে ইট এনে গাছের সামনের ফাঁকা জায়গাটায় আমরা বাস বানাতাম। মিথ্যে মিথ্যি। তাতে চড়ে রোজ সকালে স্কুলে যেতাম। আর যখন ঘর-সংসার খেলতাম, আমি আর সাহার গিন্নী হতাম। মেহদি হতো কর্তা। আমাদের দলের বাকি ছেলেগুলো অনেক ছোটো। তাই ওরা কর্তা হতে পারত না। আমি আর সাহার বসার ঘরে তোশক ঘিরে ঘর বানাতাম। মেহদিকে বাজারের ফর্দ ধরিয়ে দিতাম। ও বাগান ঘুরে বাজার করে আনত।

একদিন উঠোনে বসে লুবিয়া[৩] ছিলতে ছিলতে গল্প করছিলো আব্বু-আম্মু। সেখান থেকে একটা লুবিয়াবিচি নিয়ে পুঁতে দিয়েছিলাম আমার আপেলগাছের ছায়ায়। জীবনের প্রথম চাষ!

আমাদের বাগানটা ছিলো বিশাল। তাই তাজিয়ার[৪] সময় দলগুলো খুঁটি গাড়ত সেখানে। এমনই এক তাজিয়ার সময় আমার লুবিয়া-চারাটা সবেমাত্র গোঁজ করা ঘাড় তুলে একটুখানি দাঁড়াতে শিখেছে। তাজিয়ার মুশকো জওয়ানদের ছুটোছুটিতে পাছে আমার কচি গাছটা আহত হয় সে ভয়ে তাকে ঘিরে চারটা ইটের একটা দেয়াল গড়ে দিলাম। আর ছাদটা ঢেকে দিলাম আরো দুটো ইট দিয়ে। পরদিন ইট সরিয়ে ওর খোঁজ নিতে গিয়ে দেখি আমার চারাটা কেমন হলদে হয়ে মাথা নিচু করে কাঁদছে। সেদিনই বুঝি জেনেছিলাম, গণ্ডিবদ্ধ ভালোবাসা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা যায় না কাউকে। হোক সে নিজের ফসল।

বিকেলের আড্ডাগুলোতে আমার কালো-হলুদ বিএমেক্স সাইকেলটায় বসিয়ে আমাকে পেছন থেকে ঠেলত আব্বু। আর সবার সাথে গল্প করত। একদিন বেখেয়ালে সাইকেল ছেড়ে দিলো আব্বু আর অবাক হয়ে দেখলাম আমি একাই বেশ চালিয়ে নিচ্ছি ওটাকে। আপেল গাছটা সাক্ষী।

ভূমিকম্প[৫] হলো জুনের শেষভাগে। ভূমিকম্পের পর মাসখানেক থেকে থেকে মাটি কেঁপে উঠতে থাকে। সে সময়টা খোলা জায়গায় থাকতে হয়। আমরা রাতে আপেলবাগানে ঘুমুতাম। আপেলগাছের সারি আর গোলাপঝাড়ের মধ্যিখানে হাসপাতালের দুটো লোহার খাট পেতে। একটা বিশাল মশারি বানিয়েছিলো আব্বু। চারদিক সাদা কাপড়ে ঘেরা। যতটা সম্ভব ঘর ঘর ভাব আনার জন্য। যাতে আমি খোলা বাগানে রাতের অন্ধকারে ভয় না পাই। মশারির ছাদটা ছিলো সূক্ষ্ম নেটের। জানালার বদলে খোলা ছাদ। শুয়ে শুয়ে নেট ফুঁড়ে রাতের আকাশ দেখা যেত। আমার প্রথম দাঁত পড়েছিলো এক সকালে ওই বিছানাতেই।

পরের মাসে আমার জন্মদিন। আমাদের গ্রামে বিশেষ ক্ষয়ক্ষতি হয় নি। শহরের অবস্থা বরং খারাপ। বুয়িনজাহরাহ[৬] গিয়ে দেখেছিলাম ইয়া মোটা মোটা লোহার থামগুলো কীভাবে মুচড়ে গেছে।
শহর থেকে কেক আনা হলো না সেবার। ঝুড়িভর্তি আপেল দিয়ে আটপৌরে একটা জন্মদিন হলো আমাদের উঠোনে। আমার আপেল গাছের ছায়ায় বসে।

ছায়াটা শুনেছি এখনো আছে। ফুল ফোটার দিন এখন। আমার গাছটা গোলাপি-সাদা ফুল ফুটিয়ে রেণু ছড়াচ্ছে বাতাসে। চোখ বুঁজে নিঃশ্বাস নিলেই যেন গন্ধ পাই। সহস্র মাইল দূরে, ইব্রাহামাবাদ[৭] থেকে বয়ে আসা বাতাসে আমার আপেল ফুলের গন্ধ …

apple blossom in orchard
[৮]

[১] ঈদ-এ-নওরোজ: ইরানি নববর্ষ।
[২] ওই আঠালো বস্তুগুলো আসলে বৃক্ষনিঃসৃত রেযিন। বার্নিশ, সিমেন্ট তৈরি, বাদ্যযন্ত্রের তারে মাঞ্জা দেওয়াসহ আরো কিছু কাজে এর প্রয়োগ দেখলাম। এ জিনিস যে খাওয়া যায় তা বললো না কোথাও। কী খেয়ে শরীরের কোন যন্ত্র বিকল করে বসে আছি কে জানে!
[৩] লুবিয়া: বরবটি জাতীয়। এটা দিয়ে তৈরি লুবিয়া-পোলাও ইরানের বিখ্যাত ডিশ।
[৪] তাজিয়া: মহররমের দশম দিনে(আশুরা) ইমাম হোসেনের প্রয়াণ স্মরণে মঞ্চস্থ নাটক (প্যাশন প্লে)।
[৫] নব্বইয়ের একুশে জুনে ঘটে যাওয়া প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৪। সে আরেক ইতিহাস।
[৬] বুয়িনজাহরাহ: ইরানের এক উপশহর।
[৭] ইব্রাহামাবাদ: ইরানের একটা গ্রাম। আমার জীবনের প্রথম ছ'বছর কেটেছে ওখানে।
[৮] অ্যাপল ব্লসমের ছবিটা আন্তর্জাল থেকে সংগৃহীত।

................................................................................................................................

বানান ও ব্যাকরণঘটিত ভুল ধরিয়ে দেওয়ার আমন্ত্রণ রইল।


মন্তব্য

স্পর্শ এর ছবি

সুন্দর।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

নাশতারান এর ছবি

Smiley

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আমার ছিলো পেয়ারা গাছ....



অজ্ঞাতবাস

নাশতারান এর ছবি

আমারো পেয়ারা গাছ ছিলো। নানুবাড়িতে, পুকুর পাড়ে। এখন নাই। কেটে ফেলেছে। আপেল গাছটা এখনো আছে। কিন্তু আমি আর সেখানে নাই।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ভালো লাগছে।

আমার দেখা জীবনের প্রথম প্রকাশ্য রক্তক্ষরণ

এবার অপ্রকাশ্য রক্তক্ষরণ নিয়া লেখা দাও

...........................
Every Picture Tells a Story

নাশতারান এর ছবি

অপ্রকাশ্য রক্তক্ষরণের খবর জানবাম ক্যাম্নে? Smiley

প্রকাশ্য রক্তক্ষরণ বলতে আমি আসলে এক্সটার্নাল ব্লিডিং বুঝিয়েছি। ভিতরে কখন, কোথায় রক্তক্ষরণ হচ্ছে কে জানে?

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌সুমন চৌধুরীর মতো আমারো পেয়ারা গাছের কথা মনে পড়লো। আমাদের আগেকার বাসায় অনেক পেয়ারা গাছের একটা বাগান ছিল।

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

নাশতারান এর ছবি

ঢাকা যেভাবে বৃক্ষশূন্য হচ্ছে দিনে দিনে, এখনকার বাচ্চাদের স্মৃতিতে কোনো গাছের ঠাঁই হবে কি না সন্দেহ।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

নৈষাদ এর ছবি

ভাল লেগেছে।

আপেল গাছটা এখনো আছে। কিন্তু আমি আর সেখানে নাই। - ধারণা করি 'বড় হয়ে' আবার বেড়াতে গিয়েছিলেন শৈশবের সেই জায়গায়।

রক্তক্ষরণ বিষয়ক মুস্তাফিজ ভাইয়ের দাবীর সাথে সহমত।

নাশতারান এর ছবি

আমার যাওয়া হয়নি এখনো। বার্তা পেয়েছি। কিছুই নাকি বদলায় নি। আমি গেলে নাকি ঠিক আগের মতোই পাবো।

ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি কিছু লাগালে না তো তাতে ফুল ফুটত, না ফল হত! হত গিয়ে আমার ছোট ভাইয়ের হাতে, করল্লা থেকে শুরু করে পেয়ারা... একবার একটা মাত্র ভূট্টা চারা লাগিয়েছিল, বেশ তাতেও ভূট্টা ধরে গেল... মন থেকে যত্ন নিয়ে ভালবাসতে জানতে হয় আসলে...
ভাইটাকে অনেক মিস করছি ... দু'দিনের ছুটিতে এসছিল, আমি সময় দিতে পারলাম না...

সেদিনই বুঝি জেনেছিলাম, গন্ডিবদ্ধ ভালোবাসা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা যায় না কাউকে। হোক সে নিজের ফসল।
মনটা খারাপ ক'দিন ধরে নানান কারণে... ধন্যবাদ কথাটা মনে করিয়ে দেবার জন্যে...
হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার
___________________
নীলগিরি ডাকছে আমায়
ভাসতে হবে মেঘের ভেলায় ...

নাশতারান এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকেও।

ঢাকায় আমার চাষাবাদ টবের মধ্যে শিম, ধনে পাতা, করলা বিচি পুঁতে দেওয়ার মাঝেই সীমাবদ্ধ। আমার নানাভাই ছিলেন যাকে ইংরেজিতে বলে গ্রীন থাম্ব। দারুণ গাছ হতো তাঁর হাতে, তেমনি ছিলো তাঁর গাছের নেশা। আমার নানাবাড়ি ভর্তি নানান জাতের গাছপালা। আমি যেবার ইরান থেকে প্রথম দেশে এলাম, নানাভাই আমাকে দিয়ে একটা আমের চারা লাগিয়েছিলেন। বলেছিলেন, "এটা তোমার গাছ"। এবার নানুবাড়ি গিয়ে আমার গাছটার খোঁজখবর নিতে হবে। অনেক পুরোনো কথা মনে করিয়ে দিলেন। সেজন্য আবারো ধন্যবাদ। হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

কি বলেন! আপনি আরো বেশি স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন। আপনাকে ধন্যবাদ। দেখুন নিচে লিখে দিয়েছি কিছু স্মৃতি, মস্ত বড় করে হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার
___________________
নীলগিরি ডাকছে আমায়
ভাসতে হবে মেঘের ভেলায় ...

নিঃসঙ্গ গ্রহচারী [অতিথি] এর ছবি

বাহ! চলুক

ছোটো -> ছোট ?

নাশতারান এর ছবি

বাংলা একাডেমী 'ছোটো' লিখছে। আমিও তা-ই লিখছি। তবে 'ছোট'-কে নাকচ করার পক্ষে যথেষ্ট জোরালো যুক্তি পাই নি এখনো। তাই ছোট/ছোটো বিতর্কে যেতে চাই না। মোক্ষম যুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত দুটোই সই।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

গৌতম এর ছবি

আচ্ছা, আপনি বাংলা একাডেমীর কোন অভিধানটা ব্যবহার করেন?

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

নাশতারান এর ছবি

বাংলা একাডেমী বানান-অভিধান, পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত তৃতীয় সংস্করণ, ২০০৮।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ওহে ইরানী বালিকা... এত সুন্দর করে লেখেন কীভাবে? দারুণ লাগলো পড়তে।

বদ্দার মতো আমারও পেয়ারা গাছ ছিলো। এই সেদিনই নূপুরকে সেটার গল্প বলছিলাম। আমি আর আমার বোন দুজনে মিলে একদিন রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম। রাস্তার পাশে একটা একেবারে ছোট চারা গাছ দেখে আমি বললাম এটা পেয়ারা গাছ, কেউ বিশ্বাস করলো না। আমি সেটা তুলে এনে বাড়ির উঠানে লাগালাম। ছোটবেলার প্রেম। প্রতিদিন পানি দেই। 'তুই ফুটবি কবে বল' এর মতো আকুতি নিয়ে তাকিয়ে থাকি...
একসময় গাছটা বড় হয়, সবাই আমার বৃক্ষচেনার শক্তিকে বাহ্বা দেয়। গাছটায় পেয়ারা হয়। ছোট ছোট পেয়ারা। বাইরেটা সবুজ থাকে, ভেতরটা লাল। একেবারে দেশী পেয়ারা। সেই পেয়ারা গাছে আমি চড়ে বসে থাকি। ক্লাস সিক্স সেভেন পর্যন্ত এটা ছিলো আমার খুব প্রিয়। তারপর দালান করার অজুহাতে সে গাছটা কেটে ফেলা হয়, আমার সে কী দুঃখ...

এসএসসির পরে হঠাৎ আমাদের দুবন্ধুর বাই চাপলো বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচী করবো। কিন্তু টাকা কই পাবো? বেইলী রোডে বন মন্ত্রণালয়ের একটা নার্সারী আছে, সেখানে দুই টাকা দরে ফলের গাছ পাওয়া যেত। আমরা দুই বন্ধু টাকা জমিয়ে অনেকগুলো গাছ কিনে ভ্যানে করে এলাকায় নিয়ে এলাম।
কিন্তু এগুলো লাগাবো কোথায়? আমরা সেই ভ্যান নিয়ে সব বাড়িতে বাড়িতে গেলাম। যেহেতু পাড়া মহল্লা, সবাই সবাইকে চেনে, আব্দারের জায়গা আছে। আমরা সোজা বাড়িতে ঢুকে বলি খালাম্মা আপনের উঠানে একটা গাছ লাগাবো, ফলের গাছ। কেউ না করতো না। তখনো এলাকার বাড়িগুলোতে উঠান ছিলো, গাছ লাগানোর জায়গা ছিলো। আমরা প্রায় সব বাড়িতে বাড়িতে গাছ লাগালাম।
মজাটা হলো কয়েক বছর পরে। এলাকায় হাঁটতেই আরাম লাগে, সব বাড়ি থেকে উঁকি দেয় আমার নিজ হাতে লাগানো গাছ। সবাই খায় সেসব গাছের ফল... এ এক দারুণ অনুভূতি।
এখন বেশিরভাগ গাছই নাই, তবু বছরখানেক আগে মসজিদের পাশের কদম ফুল গাছটা দেখে ফিরে গেছিলাম সেই দিনে। গাছটা আমার লাগানো।

আমার নিজের বাড়ির সামনে একটা কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগিয়েছিলাম। খুব স্বপ্ন ছিলো বাড়ির সামনের জায়গাটা লাল হয়ে থাকবে কৃষ্ণচূড়ায়... কিন্তু তা দেখার আগেই আমি হিজরত করে উত্তরায় চলে গেলাম। গাছটাও কাটা পড়লো... মন খারাপ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নাশতারান এর ছবি

এখন অমন বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি নেওয়া খুব জরুরি। গাছপালা যেভাবে কমে যাচ্ছে! মানুষ গাছগাছালি ছাড়া বাঁচে কীভাবে?

বাড়ির চারপাশ জুড়ে বিশাল বিশাল কৃষ্ণচূড়া গাছের স্বপ্ন আমারো ছিলো। স্বপ্নছাঁটাইয়ের বহরে সেগুলো স্বেচ্ছায় ইস্তফা দিয়েছে। তবে একটা মজার ব্যাপার দেখেছেন? আমাদের প্রায় সবারই কিন্তু পেয়ারা গাছ নিয়ে একটা করে স্মৃতি আছে। আমার নানুবাড়িতে পুকুরপাড়ে বড় একটা পেয়ারা গাছ ছিলো। নানুবাড়ি বেড়াতে গেলে আমাদের (কচিকাঁচাদের) আড্ডাবাজির জায়গা ছিলো ওটা। কবছর আগে যখন ওটা কেটে ফেলা হলো খুব মন খারাপ করেছিলাম।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

আনিস মাহমুদ এর ছবি

জঙ্গল কেটে সাফ করে সেখানে ইমারত বানানো হয়। ইট-সিমেন্ট-কাচ দিয়ে বানানো সেই ঘরে থাকে ছোট্টো একটা পট-প্ল্যান্ট। এটাই বৃক্ষপ্রেম।

.......................................................................................
Simply joking around...

.......................................................................................
Simply joking around...

বোহেমিয়ান এর ছবি

লেখা খুব ভালো লাগল । ( ফুটনোট পাশে দিলে খারাপ হত না বোধহয়, এতে সাথে সাথেই জানতে পারতাম জিনিস/বিষয়টা কী । ব্রাকেটে ছোট ফণ্টে ... )

বদ্দা আর নজু ভাই এর মত আমারো পেয়ারা গাছ ছিল । ঠিক আমার বলতে আমি লাগাই নাই, বড় ও করি নাই, কিন্তু আমি ই সারাক্ষণ পাশে থাকতাম , মানে ঝুলে থাকতাম আর কী!
জটিল পেয়ারা ধরত ।
_________________________________________

_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!

নাশতারান এর ছবি

লেখা ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। লেখার ছন্দপতন হওয়ার ভয়ে ফুটনোট পাশে দিই নি। আপনি অস্বস্তি বোধ করে থাকলে আমি দুঃখিত।

আমার আপেল গাছটাও আমি নিজে লাগাই নি। তাকে ঘিরে আমার বিভিন্ন কার্যকলাপের সূত্রেই একটা সম্পর্ক জুড়ে গেছে যেটা বাকি গাছগুলোর সাথে হয় নি।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

রানা মেহের এর ছবি

ওহে ইরানি বুনো
লেখা খুব ভালো লেগেছে। কেমন যেন পুরনো অনুবাদ অনুবাদ মতো।

আমার ছিল একটা বকুল ফুলের গাছ।
কী অদ্ভুদ একটা গাছ।
ফুল না থাকলেও ফুলের গন্ধ থাকতো।
বাসা বদলানোর পর আমি কান্নাকাটি করে আরেকটা বকুল গাছ লাগিয়েছিলাম।
ফুলই ফুটলোনা।
আমার নিজের গাছটার অভিমান বোধহয়
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

নাশতারান এর ছবি

পুরোনো অনুবাদের মতো হওয়া কি ভালো? Smiley
যা-ই হোক। লেখা যে ভালো লেগেছে ওতেই খুশি আমি। Smiley

বকুল গাছের গন্ধ কেমন জানি না। বকুল ফুলের গন্ধ সইতে পারি না এক্কেবারেই। মাথা ধরে, গা গুলিয়ে আসে। বকুল গাছের নিচে দিয়ে যাওয়ার সময় দমবন্ধ করে থাকি।

আমি কিন্তু ইরানি নই। আমার জন্ম বাংলাদেশে। জন্মের পরপরই চলে গিয়েছিলাম। চারাগাছকে নতুন মাটিতে পুঁতে দিলে যেমন সে শেকড় ছড়ায় আমারো ঠিক তা-ই হয়েছিলো। বাগানটার কথা খুব মনে পড়ে।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

কাকুল কায়েশ এর ছবি

খুব ভাল লাগল স্মৃতিচারণ - আপনার লেখার যাদুতে আরো মূর্ত হয়ে ফুটে উঠেছে ছেলেবেলা! নিঃসন্দেহে পাঁচ তারা (ভার্চুয়াল) হাসি

অফটপিকঃ ইরানীরা কিভাবে কোরবানীর ঈদ উদযাপন করে এটা একটু জানতে চাই! আপনি কি দেখেছেন আপনার ছেলেবেলাতে? যারা শুধুমাত্র হজ়্বে যায়, তারাই কি খালি কোরবানী দেয়? অন্যেরা কি দেয় না? অথবা দেয়াটাকে বাহুল্য মনে করে?

==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

নাশতারান এর ছবি

আপনার পাঁচটি তারা আনন্দের সহিত গৃহীত হইলো। Smiley

ইরানের সবচেয়ে বড় উৎসব ওই ঈদ-এ-নওরোজ অর্থাৎ বর্ষবরণ। রোজা বা কোরবানি কোনো ঈদেই তেমন কোনো উচ্ছ্বাসের স্মৃতি নেই।
ওখানে কোরবানি হাজিদের জন্য একধরনের দায়সারা আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। উৎসব হিসেবে ঈদ উদযাপন করা হয় না। তবে বাঙালিরা একসাথে কোরবানি দিতেন। পুরোনো অ্যালবামে ছবি দেখেছি।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

তিথীডোর এর ছবি

আমাদের পুরোনো বাড়িটার চারপাশ জুড়ে ছিলো নানা জাতের গাছ..
একদিন মস্ত কাজী পেয়ারা গাছটায় চড়তে গিয়ে আচ্ছামতন বোলতার কামড় খেয়েছিলাম!!! ওঁয়া ওঁয়া

লেখায় চলুক

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

নাশতারান এর ছবি

আরে! সব্বার দেখি পেয়ারা গাছ আছে!

বুড়া আঙুলের জন্য থেঙ্কু।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

তাসনীম এর ছবি

হুম, আমারও পেয়ারা গাছ ছিল...মনে হয় জাতীয় ফল পেয়ারা হওয়া উচিত ছিল। আনন্দী ছাড়া সবাই দেখছি পেয়ারাপন্থী।

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

হে পারস্যের শাহজাদী, লেখা অতীব চমৎকার হইয়াছে হাসি

সবার কত রোমান্টিক গাছ ছিল!!! আমার ছিল একখান কাঁঠাল গাছ মন খারাপ

নাশতারান এর ছবি

সবার কত রোমান্টিক গাছ ছিল!!! আমার ছিল একখান কাঁঠাল গাছ
হো হো হো

ভুখে আইসো, ভইন! Smiley

তোমার এই জাতীয়তাবাদী বৃক্ষচেতনায় আমি মুগ্ধ!

ইতি
পারস্যের শাহজাদী
Smiley

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

কী আর করা যাবে ভইন!! আমি তো আর শাহজাদী না, বাংলাদেশের নিতান্ত
আমজনতা, তাই আমজনতার প্রিয় ফলের গাছই লাগিয়েছিলাম খাইছে

তবে নিজের ইচ্ছাই লাগাইনাই, পরিবারের মানুষজনের চক্রান্তে লাগিয়েছিলাম। যখনই একটু কবি কবি ভাব ধরতে যেতাম, সবাই মিলে "প্রমা না একটা কাঁঠাল গাছ লাগিয়েছিল..." বলে আমার সমস্ত কাব্যে জল ঢেলে দিত মন খারাপ

আরো অনেক গাছ আছে, সব বাদ দিয়ে কেন যন্ত্রনা দেয়া গাছটাকেই মনে পড়িল!!! স্মৃতি তুমি বেদানা...মন খারাপ

নাশতারান এর ছবি

আমজনতার কাঁঠালীয় বেদানা দেঁতো হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

ভইনরে ভুখে টানার ইশটাইল দেইখা পুরাই টাশকি ! দেঁতো হাসি

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

নাশতারান এর ছবি

দেঁতো হাসি
আরো ইশটাইল আছে: Smiley

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অচেনা [অতিথি] এর ছবি

বাসায় অনেক পেয়ারা গাছ ছিল বলেই হয়ত পেয়ারা গাছগুলোকে কখনও নিজের বলে মনে হয় নি। আমার ছিল ডালিম গাছ। প্রথম যেবার ডালিম ধরলো (১ টা), সে কি আনন্দ। গাছের উপর খবরদারি তিন গুণ বেড়ে গেল। সেই ডালিম চুরি হওয়ার পর থেকে গাছটা আমার আর মনযোগ পায়নি। অভিমান টা গাছের সাথেই করেছিলাম। মন খারাপ

নাশতারান এর ছবি

অবশেষে একজন ডালিমকুমারও পাওয়া গেলো। দেঁতো হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

হেথায় দেখি অনেকেরই বাড়িতে পেয়ারা গাছ ছিল। আমারো। সেটার ডালে বসে থাকা বা ঝুলে থাকা আমারো প্রিয় বিনোদন ছিল, যতদিন পর্যন্ত গাছটা আমার ভার নিতে পারত।

লেখা খুব সোন্দর হইসে।

কৌস্তুভ

নাশতারান এর ছবি

হ। অনেকেরই পেয়ারা গাছের স্মৃতি আছে দেখছি।

লেখা সোন্দর হইসে জেনে পুলকিত হইলাম।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

তাসনীম এর ছবি

খুব ভালো লেগেছে লেখা...টেক্সাস টেকে পড়ার সময় আমার একটা প্রিয় আপেল গাছ ছিল। ডিপার্টমেন্টে যাওয়ার সময় পথে পড়ত, ছোট ছোট টক আপেল ধরত ওই গাছে। লাবোক ছেড়ে এসেছি ১২ বছর আগে, তাও মাঝে মাঝে মনে পড়ে ওই গাছটার কথা। স্মৃতি বড় অদ্ভুত জিনিস, কত বড় ব্যাপার ভুলে যাই অথচ ছোটখাটো ব্যাপারগুলো হার্ড ডিস্ক বোঝাই করে রাখে।

ইরানের ভূমিকম্পের উপর লিখতে পার সময় পেলে।

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

নাশতারান এর ছবি

ভূমিকম্পের স্মৃতি নিয়ে লেখার ইচ্ছে আছে। কিন্তু স্মৃতির ব্যাপারে আমি খুব স্পর্শকাতর। অনেকবার লিখতে গিয়েও মনে হয়েছে, না হচ্ছে না। কখনো যদি ঠিকমতো লিখতে পারি তাহলে পড়তে দেবো।

আমাদের আপেলগুলো ছিলো সবুজ, কচকচে, মিষ্টি। আমরা কাঁচা আপেলে নুন-মরিচ লাগিয়ে খেতাম। বাগান ছেয়ে যেতো আপেলে। খেয়ে শেষ করা যেতো না। পাড়াপড়শিরা নিজেদের ভেড়া-ছাগলগুলোকে খাওয়ানোর জন্যও আপেল কুড়িয়ে নিয়ে যেতো। স্মৃতি আসলেই বড় অদ্ভুত জিনিস!

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

মর্ম এর ছবি

প্রথম দিকে গাছ লাগানোর ঝামেলায় যাইনি, আম্মু আব্বু এ গাছ ও গাছ নিয়ে আসতো, আর আমি দখল নিয়ে 'আমার' করে নিতাম! দেঁতো হাসি

লেখাটার ধরণ এ যাবত পড়া আপনার অন্যান্য লেখার সাথে মেলেনা, একটু অচেনা পরিবেশ, পুরোন দিন, অন্যরকম ভালো লাগলো। হাসি
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

নাশতারান এর ছবি

আপেল গাছটাও আমি দখল করেই নিয়েছিলাম। যে গাছে আমার দোলনা, যে গাছে ফুল ফুটলে সবার আগে আমি গন্ধ পাই, সে গাছ তো আমারই।

লেখার ধরন যে একটু অন্যরকম সেটা আমারও মনে হয়েছে। হয়তো শৈশবে ফিরে গিয়েছিলাম বলেই।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

বইখাতা এর ছবি

স্মৃতিচারণ ভালো লাগলো বুনোহাঁস । প্রথম ছবিটা খুবই চমৎকার। কোলে বসা মিষ্টি বাচ্চাটা কি আপনি? লেখায় অনুবাদ অনুবাদ গন্ধ পেলাম। কেমন নৈর্বক্তিক, নির্লিপ্ত ধাঁচের অনুবাদের মত লাগলো। হাসি আর ইরানে থাকা আপনার দিনগুলি নিয়ে আরো স্মৃতিচারণ আসুক।

নাশতারান এর ছবি

আম্মুর কোলে আমি, আমার কোলে নীল পুতুল।
অনুবাদ অনুবাদ গন্ধের কথা রানাপুও বললেন। এ ব্যাপারটা ঠিক ঠাওরাতে পারি নি। এক বসায় লেখা। কেন এমন হলো বুঝতে পারছি না।
শৈশবের স্মৃতি নিয়ে আরো লিখতে পারলে আমারো ভালো লাগবে। হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অগ্নিবীণা এর ছবি

বুনোহাঁস আপনার লেখার স্টাইলটি বেশ সুন্দর! স্মৃতিচারণটি অনেক ভালো লাগলো!

নাশতারান এর ছবি

ধন্যবাদ, অগ্নিবীণা!
আপনার নিকটি আমার খুব পছন্দ হয়েছে।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অগ্নিবীণা এর ছবি

হাসি থেঙ্কু থেঙ্কু!

নাশতারান এর ছবি

আমি দুইটা বানানে ভুল পাইসি। কিন্তু কমু না। Smiley

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ধুসর গোধূলি এর ছবি
নাশতারান এর ছবি

হে হে ... আরো পাইসি দেঁতো হাসি

সুড়কি > সুরকি
মেহদিকে বাজারের ফর্দ আর লিস্টি ধরিয়ে দিতাম > মেহদিকে বাজারের ফর্দ ধরিয়ে দিতাম (ফর্দ আর লিস্টি একই জিনিস)

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আমার নিজে বৃক্ষ রোপনের স্মৃতি নেই। তবে এসিট্যান্ট বৃক্ষ রোপক হিসেবে অনেক স্মৃতি আছে। ভাইয়ের সাথে। এরকম একটা আম গাছে নাকি গত কয়েক বছর ধরে ভালো আমও হচ্ছে!

মায়ের সাথে কিছু আছে। আমার মায়ের লাউ, শিম প্রভৃতি গাছের বেজায় শখ ছিলো। [এখনও আছে কি না বলতে পারছি না] তো এইসব গাছের বীজ বপনের সময় আমার ডাক পড়তো। আমার হাতে বীজ দিয়ে মা বলতো মাটিতে পুঁতে দিতে। আমি মহা আনন্দ নিয়ে সেটা করতাম। ভালো লাগতো বোধ'য়।

আপেল গাছ বলতে আমার যে স্মৃতি কাজ করে তা হলো এই দেশে। প্রথম আপেল গাছ দেখে চেয়ারম্যানের বাড়ির বড়ই গাছ মনে করে ঢিল দিয়ে আপেম পেড়ে খাওয়ার ইচ্ছা জেগে বসেছিলো। কাছে ধারে কোথাও ঢিল মারার কিছু না পেয়ে পায়ের জুতো খুলে ঢিল মেরে আপেল পেড়ে খেয়েছিলাম। এমনিতে আপেল আমার পছন্দের ফল না। কলা খেতে পছন্দ করতাম খুব। কাঁঠাল খেতে পারি না। গলায় আটকে যেতো ছোট বেলায়, সেই ভয় থেকে এখনও মুক্ত হস্তে খেতে পারি না। আম খাই খুব। ছোটবেলায় পনেরো ষোলটা গাছে আম হতো। একেকটা একেক পদের, আকৃতির, স্বাদের। কাঁচা থেকে খাওয়া শুরু করতাম, একেবারে মৌসুমের শেষ পর্যন্ত। নানি বাড়িতে মায়ের লাগানো একটা লিচু গাছও ছিলো। স্বভাবতই সেই গাছের লিচুর প্রতি আমার অধিকারও ছিলো বেশি। হাসি

নানীর রক্তচক্ষু এড়িয়ে পাহাড়া দেয়া লিচুও সাবাড় করে দিতাম। কেউ টেরও পেতো না। বেজায় ডানপিটে ছিলাম যে তখন! হাসি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

নাশতারান এর ছবি

আমার মায়ের এখনো শখ আছে গাছপালার। তার বৃক্ষসমাজের প্রতাপে বারান্দায় পা ফেলা দায়।

ফলপ্রীতি আমার ছিলো না কোনোকালেই। আপেল গাছের প্রতি ভালোবাসাও আপেলপ্রীতি থেকে নয়। ফল হিসেবে বরং কলা ছোটোবেলা থেকেই পছন্দ। কিন্তু কলাগাছে তো দোলনা বাঁধা যায় না। কলাগাছে চড়াও যায় না। আর তার ফুল দেখতে বিদঘুটে (যদিও খেতে ভালো )। তাই কলাগাছের সাথে সম্পর্ক পাতাতে একটু সমস্যা।

ফলপ্রীতি না থাকলেও আমচুরিপ্রীতি ছিলো (এবং আছে)। ঢাকায় আমাদের প্রথম যে বাসাটা ছিলো তার পাশের বাড়িতে অনেক গাছপালা ছিলো। ওদের বিশাল একটা আমগাছ রীতিমতো উপুড় হয়ে পড়তো আমার ঘরের জানালায়। বসন্তে আমের মুকুল এলেই মনটা আঁকুপাঁকু করতো কমে আম ধরবে আর আমি চুরি করে খাবো। চুরি করা আমের স্বাদই আলাদা! দেঁতো হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

কি মজা!
পেয়ারা গাছের নতুন নামকরণ করা উচিত মনে হয় - স্মৃতি গাছ! যে বাড়িতে বসে লিখছি এখন, এখানে তাও ১০টা পেয়ারা গাছ ছিল আমার ছোটবেলায়। আমার ভাইয়ের হিসেবে এখানে এখন আছে ১৮ রকম ফলের গাছ হাসি ('বলাই'-এর ভাব প্রবল তার মাঝে, এখন একটু কমেছে মনে হয়, আগে হোস্টেল যাবার আগেও একটা পেয়ারা বা কাঁঠাল পাতা ছিঁড়ে পকেটে পুরে নিয়ে যেত... গাছগুলির স্মৃতিচিহ্ন যেন)।

গাছ-পালা নিয়ে কত স্মৃতি... এখন কিন্তু কাঁঠাল গাছের কথাই মনে পড়ছে! ঢাকায় দাদা বাড়ি ছিল একতলা, সামনে ছিল ফুলের বাগান, আর একটা কাঁঠাল গাছ। যেকোন আগের বাড়ির মতই বিশাল জায়গা আর বাগান, পেছনেও বাগান ছিল। বাবারা পুরো দেশ জুড়ে বড় হয়েছেন, ওবাসা তাই ভাড়াই থাকত সাধারণত। আমার স্মৃতি যখন শুরু সে বাসায়, তখন কারা যেন থেকে গিয়েছেন, গাছের খুব শখ ছিল তাদের। সামনের সেই কাঁঠাল গাছের একটা ডাল থেকে বর্ষায় ঝুলে পড়ত মাটি পর্যন্ত লম্বা মানিপ্ল্যান্টের ঝালর। অমনটা এখনো আর দেখি নাই!

ওই কাঁঠাল গাছের আরেকটা স্মৃতি আছে, খুব চমৎকার, ক্লাস ফাইভে পড়ি মনে হয়, ছুটি কাটাতে গিয়েছি... বৃষ্টির দিন ছিল, কি ঋতু মনে নেই, বৃষ্টি শেষে মেঘের আড়ালে সূর্য্য হাসছে, চোখে পড়ল, একটা দোয়েল পাখি নাচছে! গাছের নিচ থেকে শুরু করল সে, তালে তালে লাফায়, লেজটা অদ্ভুত ভাবে ফোলায়, মেলে দেয়, উঁচু-নিচু করে, আবার বন্ধ করে... এভাবে ধীরে ধীরে উঠতে থাকে নিচ থেকে ডালপালায়! বড়ই মনমুগ্ধকর সে দৃশ্য হাসি আমি আর আমার ভাই প্রায় ঘন্টাখানেক সাগ্রহে দেখেছি। দোয়েলের নাচ পরে আরো দেখেছি, কিন্তু অমনটা নিজ খেয়ালে আপনভোলা, ডোন্টকেয়ার টাইপ আর দেখি নাই!
গাছের সাথে পাখিদের অনেক গভীর সম্পর্ক, এখন অনেক পাখি স্মৃতি ভীড় করে আসছে, দেখি লিখে ফেলতে হবে কিছু, নিজের জন্যেই। হাসি

গাছটা আর নেই অবশ্য... বাড়িটাই নেই, ঢাকার আর সবের মত এপার্টমেন্ট হয়ে গেছে, সব চেয়ে কষ্ট মনে হয় আমরা দু'ভাইবোনই পেয়েছি প্রথম যখন পুরো যায়গাটা জুড়ে বিশাল একটা গর্ত (পাইলিং-এর) জন্যে দেখি তখন। এ বাসার গাছগুলিও চলে যাচ্ছে একে একে। গাছ আর লাগানতো কই হচ্ছে না। বারান্দা ঘেঁষা মা'এর লাগান আরেকটা কাঁঠাল গাছে এবারো অনেক কাঁঠাল ধরেছে, স্কুলের বন্ধুরা ছোটবেলায় বলত আমাদের বাড়িতে একটা মিনি সুন্দরবন আছে... সত্যি একদম! দেঁতো হাসি পিকনিক যে কত হয়েছে বন্ধুরা, ভাইবোনরা মিলে, সবাই আজ কতদূরে পরবাসে, ওদের ছেলেমেয়েরা দোয়েলের নাচ দেখতে পাবে না কাঁঠাল তলায়... কী আফসোস! মন খারাপ

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার
___________________
নীলগিরি ডাকছে আমায়
ভাসতে হবে মেঘের ভেলায় ...

নাশতারান এর ছবি

আপনি দেখছি পেয়ারা, কাঁঠাল দুদলেই আছেন। কল্যাণাপার দল একটু হলেও ভারী হলো তাহলে। চোখ টিপি

আপনাদের মতো গাছগাছালি ভরা বাড়ি পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। ঢাকায় আমরা প্রথম যে বাসায় উঠলাম তার পাশে একটা একতলা বাসা ছিলো। ওদের উঠোনজুড়ে অনেক আম-কাঁঠালের গাছ ছিলো। একটা আমগাছ ছিলো ঠিক আমার পড়ার টেবিলের পাশের জানালা ঘেঁষে। বসন্তকালে ওই আম গাছে বসন্তবাউড়ি আসতো ঝাঁকে ঝাঁকে। বাসন্তী-কালো রঙের চোখ ধাঁধানো উজ্জ্বল পাখিগুলো। সে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। ওই বাসা ছেড়ে আসার সময় সবচেয়ে বড় দুঃখ ছিলো সেই পাখিগুলোর সাথে বিচ্ছেদের। বসন্তবাউড়ির ঝাঁক বাকি জীবনে আর দেখতে পাবো কি না ঠিক নেই। গাছই নেই, আর পাখি!

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

উফ্‌! পাখির অনেক স্মৃতি রে ভাই, আমপাতা আর পাখিরও... সবগুলি ভালও নয়, দুষ্টুমি করতে গিয়ে একবার দোলনা-আলা আম গাছের বুলবুলির বাসা ভেঙ্গে ডিম ফেলে দিয়েছিলাম... মোটেও লক্ষী মেয়ের মত কাজ নয়! পরে বহুদিন ঘুমাই নাই ভাল করে, আপনার বসন্তবাউড়ির স্মৃতি সেই দুঃস্বপ্ন মনে পড়িয়ে দিল! ওঁয়া ওঁয়া

এটা আসলেই ঠিক কথা, আমরা খুব চমৎকার সব বাড়িতে বড় হয়েছি, তাই এখনও এপার্টমেন্ট, বাগান ছাড়া বাড়ি, এসব দেখলে হাঁপিয়ে যাই, অভ্যস্থ হতে পারব না কোনদিনো বোধহয়... আর মাঝে মাঝে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কি হবে ভেবে আরো ভয় ধরে যায়!
আসলেই একটা গাছ-পাখি-কথা লিখে ফেলতে হবে মনে হচ্ছে... চিন্তিত

আচ্ছা, আপনার লেখায় হাসপাতালের কথা এসছে, আপনার বাবা-মা কি ডাক্তার ছিলেন?

অফটপিকঃ বাংলায় 'কি' আর 'কী', এ দু'য়ের ব্যবহার নিয়ে কনফিউশনে আছি, কেউ পয়েন্টার্স দিলে খুশি হব।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার
___________________
নীলগিরি ডাকছে আমায়
ভাসতে হবে মেঘের ভেলায় ...

নাশতারান এর ছবি

আব্বু ডাক্তার। আশির দশকে বাঙালি ডাক্তারদের পারস্যপ্রীতি ছিলো। সেই সুবাদে আমাদের পারস্যদর্শন ঘটেছিলো।

অফটপিক প্রসঙ্গে দুটো উদাহরণ দেই।

কি: আপনি কি চান? (Do you want?)
কী: আপনি কী চান? (What do you want?)

একটা গাছ-পাখি-কথা লিখে ফেলুন জলদি।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ধুসর গোধূলি এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

আমার নামটা পড়ে দেখুন - যাযাবর ব্যাকপ্যাকার
সাধে দেই নাই চোখ টিপি
আমার বাবার মত অত না হলেও, ঘোরাঘুরির অভিজ্ঞতা আমারো কিছু কম নেই... প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশিই করতে হয়েছে বরং... এখন মাথায় ভূত চেপেছে, বান্দরবন যেতেই হবে, নীলগিরি পাহাড়ের মাথায় মেঘ ছুঁয়ে বসে থাকতে হবে চুপচাপ... ভাল একটা গ্রুপ যোগাড় করতে জান কাবাব হচ্ছে, গ্রীষ্মাবকাশ শেষ হয়ে এল প্রায়! মন খারাপ

আমের দেশেই আছি, আপনি নির্দ্বিধায় চলে আসুন। টিকেট করেছেন তো?!

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার
___________________
নীলগিরি ডাকছে আমায়
ভাসতে হবে মেঘের ভেলায় ...

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- নীলগিরি হলদেগিরি জানি না, তবে বান্দরবান যাওয়ার খায়েশ আমার সেই বহুদিনের। সবচেয়ে কাছাকাছি গিয়েছিলাম রাঙামাটি, দুই হাজার দুই সালে। সাথে খালাতো ভাই আর এদেশীয় পরিবার সাথে দুইটা আন্ডাবাচ্চা নিয়ে। চট্টগ্রামে স্টেশন ছিলো আমাদের। ভ্রমনটা চমৎকার লেগেছিলো। বান্দরবান বাদ দিয়ে পরেরদিন কক্সবাজার নির্ধারণ করায় কক্সবাজার নামার ঘন্টা চারেক পর আমি ভ্রমন পিলান থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে গৃহে প্রত্যাবর্তন করেছি পত্রপাঠ।

যাযাবর শব্দটা তো আমার জন্যই তৈরী জানতাম। মাঝখান থেকে আমি দেখি ভাগ বসালেন! মন খারাপ

টিকেট হয়ে যাবে, আপাতত পেটের ব্যায়াম করছি। খাঁচির খাঁচি আম সাবাড় করতে হলে একটা প্রিপারেশন লাগবে না! দেঁতো হাসি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ বুনো।

আচ্ছা এ প্রশ্নটা আপনাদের দু'জনকেই করছি, আমি ফটো-ফিচার টাইপ লেখা লিখতে আগ্রহী সচল-এ। আজ অনেক্ষণ ধরে গুঁতোগুঁতি করছি, একটা ভ্রমণ ফিচার পোস্ট করতে, তাতে ছবি বেশি যাবে, লেখা কম। কিছুতেই একটার বেশি ছবি আপলোডের কোন ব্যাবস্থা পাচ্ছি না। কি করণীয়? (বুনো, এখানে কোন্‌ 'কি/কী' হবে? খাইছে )
নাকি অতিথিদের সে সুযোগ নেই?

মডুদের একজনাকে গুঁতোচ্ছি... কিন্তু তিনি বোধ করি ব্যস্ত আছেন, রিপ্লাই নেই। মন খারাপ

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার
___________________
নীলগিরি ডাকছে আমায়
ভাসতে হবে মেঘের ভেলায় ...

হিমু এর ছবি

ছবিগুলো ফ্লিকারে আপলোড করে এক এক করে এমবেড করে দিন। বিস্তারিত জানতে পেইজের নিচে জিজ্ঞাস্যতে দেখুন।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

অতিথি লেখক এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ! দেঁতো হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার
___________________
নীলগিরি ডাকছে আমায়
ভাসতে হবে মেঘের ভেলায় ...

অতিথি লেখক এর ছবি

পাইছি বলেই মনে হইতে আছিল, তো এখনো দেখি পোস্ট হয় নাই। চিন্তিত
২৪ ঘন্টা নাকি দেখতে হয়? ধৈর্য্য ধরে অন্যান্য পোস্ট পড়তেছি, ছুটির দুপুরের সদ্বব্যবহার হচ্ছে। চোখ টিপি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার
___________________
নীলগিরি ডাকছে আমায়
ভাসতে হবে মেঘের ভেলায় ...

মূলত পাঠক এর ছবি

ফাটাফাটি লেখা, আগে পড়া হয়নি কেম্নে কে জানে! আমার এতো বৃক্ষঘেরা শৈশব ছিলো না, কিন্তু সবুজের ছোঁয়া ছিলো। আপনার লেখা পড়ে লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে, কিন্তু এমন চমৎকার হবে না সে জানি, তাই ঝামেলায় যাচ্ছি না। হাসি

নাশতারান এর ছবি

পাঠুদা, এমন ভয়াবহ প্রশংসা করলে আমি লিখতেই ভুলে যাবো। Smiley
কথা না বাড়িয়ে জলদি লিখে ফেলুন আপনার শৈশবগাথা এবং আমাদের পড়তে দিন।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

নজমুল আলবাব এর ছবি

আমি গ্রামের মানুষ। গাছময় জীবন। কোনটা রেখে কোনটার কথা বলি? স্মৃতি হাতড়ে শুধু সবুজই পাই। সকালে উঠে শুধু সবুজই দেখি। জানি না ক'দিন দেখতে পাবো।

স্মৃতিচারণটা ভালো লাগলো।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

নাশতারান এর ছবি

ইট-পাথরের মধ্যে বেড়ে ওঠা শহুরে শিশুরা কোনোদিনও জানবে না কী হারাচ্ছে তারা। আমি গ্রামে না থাকলে প্রকৃতিকে ওভাবে ছুঁতে পারতাম না। দেশে থাকলে তো গ্রামে থাকা হতো না। আমাদের বাসার সীমানাপ্রাচীরের একপাশে ছিলো বিশাল গমক্ষেত, অন্যপাশে বিরাট কাঠবাদামের বন। গ্রাম জুড়ে সূর্যমুখীর ক্ষেত, আঙুর-বাগান, আলুবোখারা, পীচ(হোলু), চেরী(অলবলু), নাশপাতি(গোলাবি), ডুমুর আর তুঁতগাছ। তুঁত কিন্তু খেতে খুব ভালো। আমাদের দেশে খাওয়ার চল নেই যদিও।

আমার নানুবাড়ি গাছে ভরা। ঢাকা শহরে গাছগাছালির অভাবটা বোধ করি খুব।

অনেক কথা বলে ফেললাম।
স্মৃতিচারণ ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

ভীষণরকম মুগ্ধতা নিয়ে পড়লাম আপনার এই লেখাটা।
বেশি বেশি ভালো হয়েছে। হাসি

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

নাশতারান এর ছবি

বেশি বেশি ভালো হয়েছে? বেশি বেশি খুশি হচ্ছি তাহলে Smiley

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

লীন এর ছবি

আমার কোনো গাছ ছিলো না মন খারাপ
ঢাকা শহরে বড় হয়েছি, তাই আমার এমন কোনো স্মৃতিই নাই।
বেদনা...

(লেখা ভাল্লাগছে)

______________________________________
ভাষা উন্মুক্ত হবেই | লিনলিপি

______________________________________
লীন

নাশতারান এর ছবি

তোমার জন্য সমবেদনা ...

বৃক্ষহীন জগত কতখানি কর্কশ সেটা বুঝতে বুয়েটের পুরোনো আর নতুন ক্যাম্পাসের তুলনা করে দেখো। ওই ইট-সুরকি ভরা, শুকনা নতুন ক্যাম্পাস দেখলে আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। আমার সৌভাগ্য যে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সবখানেই অনেক গাছপালা পেয়েছি।

(ধন্যবাদSmiley)

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনার লেখালেখি অনেক ভালো হচ্ছে।

আর দেশে একজন ওয়াঙ্গারি মাথাইয়ের দর্কার।
------------------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

নাশতারান এর ছবি

প্রশংসা মাথা পেতে নিলাম Smiley

দেশে একজন ওয়াঙ্গারি মাথাই কোথায় সবুজ-বেষ্টনী গড়ে তুলবেন? গাছপালা কেটেছেঁটে, খালবিল ভরাট করে ইট-পাথরের জঞ্জাল বানানো হচ্ছে ঢাকা শহরকে। সবুজের জন্য জায়গা কোথায়?

সেদিন ধানমন্ডির ভেতর দিয়ে হাঁটার সময় দেখলাম এক বাড়ির সীমানা প্রাচীর জায়গায় জায়গায় অসমান করে তৈরি। বিশাল কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো অক্ষত রাখার জন্য। দেখে খুব ভালো লাগলো। ইদানীং তো দেখি বাড়ি বানানোর সময় বাতিলের তালিকায় গাছগুলোর নাম ওঠে সবার আগে।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনি ঢাকায় আছেন??
ইস্‌! আরো একজন সবুজ প্রেমী বন্ধু পেলে ঢাকার ট্রাফিক জ্যামের দিনগুলি অনেক আনন্দের হত বোধ হচ্ছে! মন খারাপ
ইয়ে, নীলগিরি যেতে চান? খাইছে

এই রে, কালবোশেখী শুরু হচ্ছে, গেলুম দেখতে। টা-টা!

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার
___________________
নীলগিরি ডাকছে আমায়
ভাসতে হবে মেঘের ভেলায় ...

নাশতারান এর ছবি

নীলগিরি যাবো।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি কিন্তু খুবই সিরিয়াসলি বলছি! <মুখে গাম্ভীর্য টেনে>

আচ্ছা, ভ্রমণ সংক্রান্ত ফটো-ফিচার করতে পারছি না। একটার বেশি ছবি আপলোড অতিথিদের জন্যে সম্ভব নয়? মাঝখানে আরেকটি মন্তব্যে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি আপনার এবং ধূগো-র।
জানালে উপকৃত হব।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার
___________________
নীলগিরি ডাকছে আমায়
ভাসতে হবে মেঘের ভেলায় ...

নাশতারান এর ছবি

ছবি সংযুক্ত করার ব্যাপারে উপরে হিমু ভাই বলেছেন।

আমি সত্যিই নীলগিরি যেতে ইচ্ছুক। কিন্তু আমার মনে হয় না আপনি আমাকে নেবেন।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

হা হা হা হা হা... হো হো হো
বেশ, বলেন কি করে যোগাযোগ করব? এখানে তো কোন উপায় দেখছি না! আমার মেইল অ্যাড্রেস অ্যাট জিমেইল চলবে? হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার
___________________
নীলগিরি ডাকছে আমায়
ভাসতে হবে মেঘের ভেলায় ...

নাশতারান এর ছবি

যোগ করলাম।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ।

নীলগিরি নিয়ে চিল্লা-ফাল্লা করতে করতে গাছ-পাখি-কথা গুলিয়ে গেল।
তবে কাজের কাজ যা হয়েছে, বিরিশিরি ভ্রমণের ছবিগুলি গোছান হল। আর ভ্রমণ পোস্টটাও আগানো হল। পোস্ট হয়ে যাবে মনে হয় আজ রাতে। হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার
___________________
নীলগিরি ডাকছে আমায়
ভাসতে হবে মেঘের ভেলায় ...

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

লেখাটা অনেক গোছালো, সুন্দর বর্ণনার ধরণ...
কিন্তু আমার না- কেনো জানি মার্ক টোয়েনের কৃষি বিষয়ক একটা রম্য গল্পের কথা মনে পর্তেসে; ঐ যে এক লোক কিছু না জেনেই একটা পত্রিকার সম্পাদক হয়ে পড়ে, ঐ গল্পটা ... দেঁতো হাসি

_________________________________________

সেরিওজা

নাশতারান এর ছবি

তোমার মন্তব্য সন্দেহজনক। টোয়েনের গল্পটা পড়ি নাই। তাই খুশি হবো কি না বুঝতে পারছি না। কিন্তু তোমার হাসিটা সুবিধার মনে হচ্ছে না।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

না না, আতঙ্কিত হওয়া লাগবে না। ঐ গল্পের সাথে আপনার কোনো মিলই নাই। ... তবু কেনো জানি মনে পড়লো...

_________________________________________

সেরিওজা

নাশতারান এর ছবি

পড়লাম। আমার তো জলিল দা অনন্ত-এর কথা মনে পড়লো।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

তিথীডোর এর ছবি

রহস্যপত্রিকায় পড়েছিলাম গল্পটা|
সে লিখেছিলো,
কোন একটা ছোট বাচ্চাকে গাছে চড়িয়ে হো হো হো তবেই 'শালগম' ছেঁড়া উচিত দেঁতো হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

স্নিগ্ধা এর ছবি

আরে! আমি তো শিব্রামের এক গল্প পড়সিলাম এরকম! না জেনেই কৃষি বিষয়ক পত্রিকার সম্পাদক হয়ে গেসিলো এক লোক কিছুদিনের জন্য। সেই এক মাসে পত্রিকার কাটতি যদিও দ্বিগুণ হয়ে গেসিলো, তবে ...... দেঁতো হাসি

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

সুন্দর! চলুক

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

নাশতারান এর ছবি

ধন্যবাদ! হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

স্নিগ্ধা এর ছবি

ছোটবেলায় আমার কোন গাছ ছিলো না, কিন্তু এখন আমার বাসা ভর্তি অনেক ছোট ছোট গাছ! লেখা ভালো লাগলো, অনেক হাসি

নাশতারান এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ, আপু!

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

শেখ নজরুল এর ছবি

কষ্ট পেলাম! আমার কোন গাছ নেই।

শেখ নজরুল

শেখ নজরুল

নাশতারান এর ছবি

ঢাকার সব কৃষ্ণচূড়া গাছ আপনাকে দিয়ে দিলাম। ওদের দেখেশুনে রাখবেন। কেউ যেন কেটে ছেঁটে যা খুশি তা-ই করতে না পারে।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

আনিস মাহমুদ এর ছবি

তোর বর্ণনায় পেলাম অমলসুন্দর শৈশব। আমারও ছিল অমন একটা সময়।

আমাদেরও অনেকটা বয়স পর্যন্ত কেটেছে গাছপালার মধ্যে। বগুড়া শহরেই আমাদের বাড়িতে ছিল (এখনো কিছুটা অবশিষ্ট আছে) অনেক ধরনের ফুল, ফল আর আনাজ-পাতির গাছ। আম-কাঁঠাল-লিচু-পেয়ারা-আতা-নারিকেল-সুপারি তো ছিলই, আমাদের বাগানে আরো ছিল দারুচিনি-তেজপাতা-আদা-হলুদ-এলাচের চাষ। এছাড়া ছিল সজনে-রাইখঞ্জনী-নিম-অর্জুন গাছ। ফুলগাছের মধ্যে ছিল শতমুখী নামের অসাধারণ সুবাসের এক জংলী গাছ। শীতের আগে আমরা পালংশাক, লালশাক, বেগুন, শিম, টমেটো আর মরিচের গাছ লাগাতাম। সাপের আনাগোনা ছিল বেশ আমাদের বাড়ির পেছনের সেই "বাগান" নামের জায়গাটিতে।

গাছপালার বিষয়ে আমার প্রেমটা ভিন্ন ধরনের। গাছ বলতে আমি বুঝি জঙ্গল। মাটি কুপিয়ে তাতে চারা লাগিয়ে আদর-যত্ন করে গড়ে তোলা আমার কখনো হয়ে ওঠেনি, যদিও পারিবারিক প্রকল্পগুলোতে হাত লাগাতেই হতো।

কত কথা মনে আসছে। লিখতে গেলে আলাদা একটা পোস্ট হয়ে যাবে। কিন্তু যেই পোস্ট লিখতে বসব, মনে হবে কী লিখি কী লিখি।

দারুণ লিখেছিস তুই, যদিও কিছু প্রুফরিডিং আছে। সময় পেলে পরে আলাদা কমেন্টে ধরিয়ে দেবো।

.......................................................................................
Simply joking around...

.......................................................................................
Simply joking around...

নাশতারান এর ছবি

আমিও জঙ্গলপ্রেমী। আমাদের বাগানের ঝোপঝাড়গুলোতে অভিযান চালিয়ে নিত্যনতুন গাছ আবিষ্কার করা ছিলো আমাদের একটা খেলা। একবার একটা গাছ পেলাম যেটা দেখতে গমের মতো। আমরা তো মহাখুশি! আমরা গমগাছ আবিষ্কার করেছি! পরে বড়রা বললো, না, ওটা নাকি একটা একটা ফালতু ঘাস। মন খারাপ

ডিমভাজিতে আম্মু সবসময় জাফারি (পার্সলে) দিত। ঘরে না থাকলে আমি বাগান থেকে খুঁজে এনে দিতাম। গন্ধ শুঁকে বুঝতাম এটা সত্যিকারের জাফারি নাকি ঘাসপাতা। দেঁতো হাসি

একটা ঝোপের কথা মনে আছে। ফলগুলো ছোটো ছোটো। সাবুদানার মতো আকার। কালচে বেগুনি রঙ। ওগুলো নাকি বিষাক্ত। তাই আমাদের(বাচ্চাদের) সাবধান করা হয়েছিলো ওগুলো যেনো আমরা মুখে না দিই।

ওইটুকু মাথায় করে কত স্মৃতি যে বয়ে নিয়ে এসেছি!

তোমার স্মৃতিগুলো লিখে ফেলো একদিন সময় করে। দেখবে একটার রেশ ধরে আরো কত স্মৃতি চলে আসে। আমি এখানে তা-ই দেখতে পাচ্ছি।

আর ভুলগুলো ধরিয়ে দিও সময় করে। ধূগোদা আর আমি মিলে চারটা ভুল পেয়েছি। দেখো একটু।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

আম্মুর অনেক বইয়ের মাঝে ছিলো ইভান বুনিনের ছোট গল্পের একখানা সংকলন, তোমার লেখাটা পড়ে কেন জানি না বইটার কথা মনে পরে গেলো! লেখার ধাঁচটায় মিল আছে অনেক!

এইরে... আমি যা মন্তব্য করতে চাইছি তা দিয়ে আলাদা একখানা পুস্ট করা যায়! তাইই করবো নাহয়! আমার অনেক গান ছিলো, অন্নেএএএএএএক! সবাই প্রিয়, সবাই আছে স্মৃতির কামড়া গুলোর আনাচে কানাচে! খুব লিখতে ইচ্ছে করছে...আজ রাতে ইচ্ছা হলে... হাসি

-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

নাশতারান এর ছবি

কতকিছু যে পড়া বাকি! ইভান বুনিনের ছোট গল্প সংকলন-ও পড়া হয় নাই। মন খারাপ

তোমার লেখাটা লিখে ফেলো। পড়ি।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

এইরে! গাছ হবে গানের জায়গায়! মন খারাপ টাইপো!

-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

আনিস মাহমুদ এর ছবি

ব্যাতোন হালাল করার চেষ্টা:

আপেল গাছ > আপেলগাছ
ফিনিফিনে > ফিনফিনে
সুড়কি > সুরকি
গন্ডিবদ্ধ > গণ্ডিবদ্ধ
সাক্ষ্মী > সাক্ষী
গোলাপ ঝাড়ের > গোলাপঝাড়
হয় নি > হয়নি

.......................................................................................
Simply joking around...

.......................................................................................
Simply joking around...

নাশতারান এর ছবি

ফিনিফিনে-টা টাইপো। সুরকি, গণ্ডি পোস্ট করার পর খুঁজে পেয়েছি। ধূগোদা গণ্ডি, সাক্ষী খুঁজে পেয়েছেন। হয়নি'র ব্যাপারে দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে আমার। 'হয় না' লিখতে হয় আর না আলাদা। নি হলে একসাথে হবে? বাকি থাকে আপেলগাছ আর গোলাপঝাড়। বিশেষণ হলে আলাদা (যেমন: বিশাল গাছ) আর সমাসবদ্ধ হলে একসাথে (যেমন: আপেলের গাছ=আপেলগাছ)। তাই না?

[বেতন চাহিয়া লজ্জা দিবেন না Smiley ]

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

আনিস মাহমুদ এর ছবি

"না" একটি স্বকীয় ও স্বতন্ত্র শব্দ বলে "হয় না" জায়েজ।

আর বিশেষণ ও সমাসবদ্ধতা নিয়ে বিষয়টা ঠিক বুঝেছিস।

[ব্যাতোন না দিলে ক্যাম্নে কী?]

.......................................................................................
Simply joking around...

.......................................................................................
Simply joking around...

নাশতারান এর ছবি

বাংলা একাডেমী দেখি বলছে 'নাই, নেই, না, নি এই নঞর্থক অব্যয় পদগুলি শব্দের শেষে যুক্ত না হয়ে পৃথক থাকবে। যেমন: বলে নাই, যাই নি, পাব না, তার মা নাই, আমার ভয় নেই।' ইয়ে, মানে...

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

দময়ন্তী এর ছবি

ভাল লাগল৷ মানালি গিয়ে হোটেলের বারান্দা থেকে হাত বাড়িয়ে আপেল পেড়ে আমাদের কি উত্তেজনা!

আমারও কত কত সব গাছ ছিল৷ শীতের দিনে রীতিমত কোদাল দিয়ে জমি কুপিয়ে ফুলকপি, ওলকপির ক্ষেত করতাম৷২৫ রকম ভ্যারাইটির গোলাপ করেছিলাম৷ একটা বেঁটেজাতের পেয়ারা গাছ বড় মাটির গামলায় করেছিলাম৷ ঘুম না আসা রাতে কিম্বা অপমানে পুড়ে যাওয়া কোনও দিনের শেষে, রাতেরবেলা ঐ পেয়ারাগাছটা আমাকে কত্ত গল্প বলত৷ মন খারাপ
মন খারাপ লাগছে ওর জন্য, ওদের জন্য৷
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

নাশতারান এর ছবি

বাগান করা হয়নি কখনো। বনেবাদাড়ে বাঁদরামো করে বেড়ানোর অভ্যেস ছিলো। আম্মু ঘরে বসিয়ে রেখে কাজ করতে গেলে রান্নাঘরের পাশের জানালার গ্রিল দিয়ে এঁকেবেঁকে বের হয়ে বাগানে চলে যেতাম। আমাদের বাগানটা নামেই বাগান। আসলে ঝোপঝাড়ে ভরা। মাঝেমধ্যে দলবেঁধে আগাছা পরিষ্কার করা হতো। সে-ও এক পিকনিকের মতো। সারাদিন বাগান সাফ করার নামে ঘুরে ফিরে আড্ডা, খাওয়া দাওয়া। গোলাপ ফুল ছিলো অনেক অনেক। সব গোলাপি। গোলাপ যে লালও হতে পারে সেটা দেশে এসে জেনেছিলাম।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ওডিন এর ছবি

আমারও একটা কাঁঠাল গাছ ছিলো। সেইটা আবার ছিলো অনেকটা তিরিশ ডিগ্রি কোণে বাঁকা হয়ে বেড়ে ওঠা, তাই মোটামুটিভাবে হাটতে শেখার পর পরই আমি সেটাতে চড়া শুরু করে দিয়েছিলাম, আর আমার প্রথম হাত ভাঙ্গা সেইটা থেকে পড়েই।

গাছটায় ফল হতো না, কিন্তু তাতে কি? সেইটা ছিলো আমার পাইরেট শিপ, সেটাতে একটা জলদস্যুর পতাকা টানিয়েছিলাম- একেবার ক্রস আর স্কালওয়ালা (কার্টেসি অফ মনোয়ার ভাই, দুর্দান্ত দর্জি এবং রাহেলা টেইলার্সের কিংবদন্তিসম স্বত্তাধিকারী)! আর একটা হারিকেনও ঝুলিয়েছিলাম- অন্ধকার ঝড়ের রাতে নেভিগেশনের জন্য! আমার একটা ছবিও আছে- মাথায় গামছা বেঁধে উলটো হয়ে ঝুলছি- কিন্তু ভ্রদ্রসমাজে নিজের ভাবগাম্ভীর্য রক্ষার খাতিরে সেই ছবি এখানে দেয়া যাবে না। খাইছে

______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

নাশতারান এর ছবি

আপনার কাঁঠালবাজির ছবি দেন। আমরা যথাসম্ভব ভাবগাম্ভীর্য রক্ষাপূর্বক দেখব। দেঁতো হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

লিখাটা পড়ে চমৎকার লাগল। সুন্দর হয়েছে।

আমারও লিখাটা পড়ে কিছুটা অনুবাদ-অনুবাদ লাগছিল, তাই নিজেকে প্রশ্ন করলাম কেন এই রকম লাগছে? মনে হল বাক্যগুলো বেশীরভাগই ছোট ছোট ছিল সে কারণে এমন লাগছে, আবার মনে হল পুরানো স্মৃতিগুলোকে আপনি ব্লগের উপযোগী ভাষায় অনুবাদ করেছেন তাই এমন লাগছে, অথবা ভিনদেশের কাহিনী শুনতে হয়ত আমার মত অনেকের কাছে অনুবাদ-অনুবাদ লাগে, কল্পনায়,..জানিনা..তবে অহেতুক এই চিন্তাটা করে আমি বেশ মজা পেলাম।

বানান বিষয়ক সচেতনতা দেখে কিছুটা ভয় পেলাম, কিছুটা মুগ্ধ হলাম। ভয় পেলাম এই কারণে যে আমি নিজেই এইখানে কত্তগুলা ভুল করছি তা নিয়ে আগে অন্য কোথাও ভাবি নি। মুগ্ধ হলাম এই কারনে যে বানান বিষয়ক এই রকম সচেতনা ভাল লেখকের গুণ। তাই শ্রদ্ধা রইল।


ছেড়া পাতা
ishumia@gmail.com

নাশতারান এর ছবি

আপনার আন্তরিক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
এটা কিন্তু মোটেই অনুবাদ না। এক সকালে খেয়ালবশত হুট করে লেখা। যা মনে এসেছে তা-ই। ফুটনোটগুলো পরে জুড়ে দিয়েছি মাত্র।

বানানের ব্যাপারে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা যে যতটুকু জানি সেটুকু সবার সাথে ভাগাভাগি করে নিলেই বানানের বিভ্রান্তিগুলো দূর হয়ে যাবে। [ আপনার নামের বানানে ছেড়া > ছেঁড়া হবে খাইছে ]

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।