অ্যাকশানপূর্ণ পাঁচটি সেকেন্ড

নাশতারান এর ছবি
লিখেছেন নাশতারান (তারিখ: রবি, ০৮/০৮/২০১০ - ১:৪৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

চৈতীর এনগেজমেন্ট হয়ে গেলো শুক্রবার রাতে। সেখান থেকে ফিরছিলাম অনন্যার গাড়িতে। ড্রাইভিং সিটে আন্টি, তাঁর পাশে অনন্যা। আমি পেছনে বাঁ দিকে বসা। জ্যাম ঠেলে ধুঁকে ধুঁকে গাড়ি এগুচ্ছে। গাড়িতে উঠে ঘুমানো আমার পুরোনো অভ্যাস। কিন্তু চোখে লেন্স নিয়ে ঘুমুতেও পারছি না। মোবাইল বের করলাম। ফেসবুকে ঢুকে দেখি অনেকগুলো নোটিফিকেশন। অনেকে অনেককিছুতে কমেন্ট করেছেন। আমি গভীর মনোযোগে ফেসবুকিং করতে থাকি। এমন সময়ে ঘটে ঘটনাটা। পুরো ঘটনাটা ঘটতে সময় লাগল বড়জোর পাঁচ সেকেন্ড।

সেকেন্ড-১:
হঠাৎ একটা চিল-চিৎকার! জানালার কাচ নামানো ছিলো। ট্র্যাফিকের যান্ত্রিক আর্তনাদকে ছাপিয়ে পিলে চমকে দিলো সেই চিৎকার। কী হলো? কী হলো? অনন্যা, আন্টি দুজনই হকচকিয়ে গেছে। আমিও। কার চিৎকার?

সেকেন্ড-২:
বিহ্বলতার প্রথম ধাক্কা সামলে নিয়ে বুঝতে পারি চিৎকারটা আমিই দিয়েছি।
কেন?
এবার নজর যায় আমার বাঁ হাতের দিকে। জানালার বাইরে নীল(অথবা কালো) শার্ট পরা এক শুকনাপটকা ছেলে দাঁড়িয়ে। সে আমার হাত ধরে টানাহ্যাঁচড়া করছে। না, আসলে আমার হাতে ধরা মোবাইলটা নিতে চাইছে সে।

সেকেন্ড-৩:
কেন?
কারণ সে ছিনতাইকারী।

সেকেন্ড-৪:
সঙ্গে সঙ্গে আমি হাতের মুঠি শক্ত করে ফেলি।
কেন?
কারণ আমি আমার মোবাইল দেবো না।
কেন?
কারণ আমি এখনো সব নোটিফিকেশন চেক করি নাই। [বিশ্বাস করুন, এটাই মাথায় এসেছে সবার আগে।]

সেকেন্ড-৫:
ছেলেটা টানা-হ্যাঁচড়া জারি রাখে। আমি মুঠো আরো শক্ত করতে থাকি।
একসময় ছেলেটা আমার হাত ছেড়ে দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেলো।

অ্যাকশান এটুকুই।

এরপর আমার রিঅ্যাকশান কী হলো?

রিঅ্যাকশান-১:
আমি চেক করলাম আমার ক্যামেরাটা ঠিকঠাক আছে কিনা। এটা আপাতদৃষ্টিতে একটা নির্বোধ চিন্তা। কারণ ক্যামেরা গাড়ির ভেতরের দিকে ডানপাশে রাখা। আমাকে ডিঙিয়ে ওখানে কারো হাত পৌঁছানো সম্ভব না। আমি ততক্ষণে সম্বিৎ ফিরে পেয়েছি। ফেসবুক নোটিফিকেশনের চেয়ে মোবাইলের অর্থনৈতিক মূল্য নিয়ে মাথার মধ্যে হিসেবনিকেশ শুরু হয়েছে। তাই হয়ত অবচেতন মন অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র গুনেগেঁথে দেখতে বলছে আমাকে।

রিঅ্যাকশান-২:
খেয়াল হলো আমার বাঁ হাতের তর্জনীতে কিছু একটা হয়েছে। তাকিয়ে দেখি ছোট্ট এক খাবলা মাংস নাই। ধস্তাধস্তির সময় ওই ছেলের হাতের খামচি লেগে কেটে গেছে। তাকানোর পর বুঝলাম সেই “কিছু একটা” আসলে “ব্যথা”।

রিঅ্যাকশান-৩:
পুরো ঘটনা কয়েক সেকেন্ডের। কিন্তু তাজ্জব ব্যাপার হলো ঘটনার ঠিক আগ মুহূর্তের কথা কিছুই মনে নাই। পুরাই ব্ল্যাঙ্ক! এ ব্যাপারটা আমি আমার মায়ের মুখে শুনেছিলাম, বছরকয়েক আগে যেবার আম্মু ভয়াবহ অ্যাকসিডেন্ট করল তখনকার কথা। গাড়ি চালাচ্ছিলো আম্মু নিজেই। পেছন থেকে এক বাস এসে হুমড়ি খেয়ে পড়ল গাড়ির উপর। গাড়ি ভচকে গেলো। আম্মুর মাথায় সেলাই পড়ল। তাকে যতই জিজ্ঞেস করা হলো কীভাবে কী হলো, সে বলতে পারে না। তার নাকি কিছুই মনে নাই। আমারো ঠিক তাই। চিৎকার দেওয়ার আগে কী হয়েছিলো, আমি ঠিক কী করছিলাম বা কী ভাবছিলাম কিছুই মনে নেই। স্মৃতির ওই অংশটুকু একদমই খালি।

রিঅ্যাকশান-৪:
এরপর ভাবতে বসলাম ছিনতাইকারীর মনস্তত্ত্ব নিয়ে। গাড়ি সিগন্যালে আটকে ছিলো। তখনই নিশ্চয়ই তার চোখ পড়েছে আমার দিকে। আমি জানালার দিকে মুখ করে মোবাইল হাতে ধরে ছিলাম। গাড়ি ছাড়ার সাথে সাথে ছুটে এসে খাবলা মেরেছে সে। যাতে গাড়ি চলে যায় আর মোবাইলটা তার হাতে রয়ে যায়।

রিঅ্যাকশান-৫:
এবার ভাবনা শুরু হলো নিজেকে নিয়ে। আঙুলের যে পরিমাণ মাংস উধাও হয়েছে তাতে বোঝা যায় ছিনতাইকারীর নখ বেশ লম্বা লম্বা। এত লম্বা নখ পুরুষেরা সচরাসর রাখে না। আমি বাস কন্ডাকটরদের কেনি আঙুলের নখ বড় করে মেহদি লাগাতে দেখেছি(এ কাজটা তারা কেন করেন জানি না।) তবে আন্দাজ করছি এই ছেলে মাদকাসক্ত। সভ্যভব্য হয়ে ঘোরার তাগিদ সে অনুভব করে না। তার নখ দিয়ে কী কী জীবাণু আমার শরীরে ঢুকল তা নিয়ে একটু চিন্তা হলো। আবার মোবাইল নিতে দেই নাই দেখে একটু খুশি খুশিও লাগতে লাগল।


wounded index finger

এ ঘটনা থেকে আমি কী শিখলাম:
১) আমার তিলোত্তমা ঢাকা মোটেও নিরাপদ নয়।
২) আমি যে বাসে উঠেই কানে হেডফোন গুঁজে দিয়ে গান শুনতে শুনতে ভসভস করে ঘুমুতে থাকি সেটা আর করা চলবে না।

ফলাফল:
গতকাল আমি আর বাসে ঘুমাই নাই। দেঁতো হাসি

bus ride


মন্তব্য

হাসিব এর ছবি

এইটা পুরানা কৌশল। আগিলা দিনগুলাতে আমিও ওদের মতোই দেখতে আছিলাম। মনে হয় শ্রেনীচেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়া আমারে এইরকম তকলিফে ফালায় নাই।

কারণ

আমার মোবাইলই আছিলো না। বিদেশে আসার পর আমার প্রথম মোবাইল হয়।

তবুও

কয়েকবার ভুলেভালে আমারে ধরছিলো হাইজ্যাকাররা।

ঘটনা - ১

ঘটনা ফকিরাপুল মোড়ের। আমি কাকরাইলের ওদিক থেকে রিক্সায় খিলগাও যাব। ফকিরাপুল মোড়ে দাড়িয়ে থেকে তখনকার দিনে অনেক লোক টেম্পু, রিক্সা ধরার আশায় দাড়ায় থাকতো। তো রিকশা যেই মোড় ঘুরে রাজারবাগের রাস্তায় পড়লো অমনি একজন রিক্সা থামায় রিক্সাওয়ালারে বেদম মার। রিক্সাওয়ালা নাকি তার পায়ের ওপর দিয়ে চালায় গেছে। সাথে সাথে কোত্থেকে জনা পাচেক সাক্ষী হাজির। আমি মিনমিনে গলায় এই যে ভাই বলে কিছু বলার চেষ্টা করতেই তারা তেড়ে আসলো আমার দিকে। তেড়ে আসলেও শেষ পর্যন্ত আমার কিছু হয় নাই সেইবেলা। ঘটনা শেষে রিক্সাওয়ালা বলে ঐটা নাকি ছিনতাই এটেমপ্ট আছিলো। প্যাসেঞ্জারকে কোনভাবে ঘটনায় জড়িয়ে ফেলে মারধর করে টাকাপয়সা ছিনিয়ে নেয় ওরা এইভাবে।

বাইচা যাবার কারণ

ঐ গ্রুপটা যারা ফকিরাপুল এলাকায় ছিনতাই করতো তাদের সাথে আমি ৮৭-৮৮ সালের দিকে ক্রিকেট খেলতাম। ওদেরই একজন আমারে কোনভাবে চিনতে পারে।

আরেকটা ঘটনা,

একটা ব্যক্তিগত বিশ্ববিদ্যালয়ে খ্যাপ মারতাম তখন। বনানিতে নর্থ সাউথ যেখানে ছিলো সেইটার পাশের রাস্তায় ধরলো ওরা রাতের বেলা। খুবই ভদ্রভাষায় মানিব্যাগ চাইলো। দিলাম। পরে চলে যাবার সময় কি মনে করে জিজ্ঞেস করলো কি করি। বললাম। বলে মানিব্যাগ ফেরত পাইলাম।

কেনু, কিভাবে?

ওরা আসলে আমার ছাত্র আছিলো। কয়েকদিন পরে পরীক্ষার দারোয়ানগিরি করতে গিয়ে দেখি ওদের একজন বসে পরীক্ষা দিচ্ছে!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনের ১ নম্বর ঘটনাটা হুবহু আমার ক্ষেত্রে ঘটছিলো উত্তরায়। আমি অবশ্য রক্ষা পাই নাই। দশ হাজার টাকা আর দুইটা মোবাইল সেট গচ্চা দিতে হইছিলো।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নাশতারান এর ছবি

যখন মোবাইল ছিলো না তখন হাতঘড়ি, গলার চেইন আর পার্স হাইজ্যাক হয়েছে। ঘটনা-১ এর মতো একটা ঘটনা ঘটেছিলো ভূতের গলিতে। আর আমার জীবনের প্রথম হাইজ্যাক প্রচেষ্টা ঘটেছিলো মানিক মিয়া এভিনিউতে রাজধানী স্কুলের সামনে। খাঁ খাঁ দুপুরে আমি আর আম্মু রিকশায় করে দাদাকে দেখতে যাচ্ছি। আমার দাদা তখন শয্যাশায়ী। আম্মু কাছে কী যেন খেতে চেয়েছেন। আম্মু সেটা রেঁধে নিয়ে যাচ্ছে। রাজধানী স্কুলের সামনে এক ছেলে আমাদের রিকশা থামালো। আম্মুকে উদ্দেশ্য করে বলল, "দাঁড়ান, কবির ভাই আপনার সাথে কথা বলতে চায়।" কবির নামে আমাদের পরিচিত কেউ নেই। পেছন ফিরে দেখলাম একদল ছেলে হেঁটে আসছে। আম্মু বুঝে গেল কাহিনি কী। ছেলেটাকে বলল যে আমরা রোগী দেখতে যাচ্ছি। আমাদের যেন ছেড়ে দেয়। কী মনে করে যেন আমাদের ছেড়ে দিলো। সে যাত্রা ছাড়া পেলেও প্রতিবার পার পাই নি। যদ্দূর মনে পড়ে কলাবাগানের গলিতে আম্মু আর আমার কাজিনের ঘড়ি(আমার পোলাপাইন্যা ঘড়ি নেয় নাই), মোহাম্মদপুরে আম্মুর পার্স আর ফার্মগেটের সিগন্যালে আম্মুর গলার চেইন ছিনতাই হয়েছিলো।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আমার কী হবে গো লুল্ছিব্বাই? আমি তো ফকিরাপুলে কখনো ক্রিকেট খেলি নাই।
আর যেই শালাগো লগে ক্রিকেট খেলতাম, তারা একটাও গৌরবময় ছিনতাইকারী হইতে পারে নাই।

অরা ছিন্তাইকারী হৈলে আজকে বুক ফুলায়া কৈতে পারতাম। এখন তো ঢাকার রাস্তায় নামলেই আমি ঠেক খামু, মাগার মানিব্যাগ ফেরত পামু না। মন খারাপ
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

তিথীডোর এর ছবি

ছিনতাইকারিদের হাতে বার দুয়েক ধরা খেয়ে এখন কায়দাকানুন খাটাই|
আমাদের টার্ম পরীক্ষাগুলো শুরু হয় সন্ধ্যায়, ফিরতে ফিরতে রাতের সাড়ে নটা... ব্যাগে রাখি গুনেগেঁথে শ-দুই টাকা (সিএনজি ভাড়া) আর প্রাগৈতিহাসিক সেলফোনটা (যেটার কিপ্যাডের যাচ্ছেতাই দশা) দেঁতো হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

নাশতারান এর ছবি

ছিনতাইকারী কী করে জানবে তোমার কাছে বেশি টাকা নাই বা তোমার মোবাইল জরাজীর্ণ? টাকাপয়সা না থাকলেও কিন্তু অনেক সময় ছিনতাইকারীরা রেগে গিয়ে কোপটোপ দিয়ে বসে।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

তিথীডোর এর ছবি

বেশিরভাগ সময় তো পড়তে হয় 'ঝাপটা পার্টি'র কবলে (যারা চলন্ত গাড়ি/ রিক্সা থেকে ঝাপটা দিয়ে ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়)
সেরকমটা হলে যাতে অল্পের ওপর দিয়ে যায়..

শক্তধাঁচের এক দলের হাতে পড়েছিলাম বছর দুই আগে, চট্টগ্রামের খুলশিতে| হাতে ছুরি ঠেকানোর পর গাঁইগুঁই করার সাহস হয়নি আর.. পার্স আর নুতন সেলফোন, দুটোই গিয়েছিলো! ওঁয়া ওঁয়া

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

দেঁতো হাসি. কার্টুনগুলা ভালা পাই।
মজা তো! মাঝে মাঝে এমন হইলে ভালো হইতো।
বাসে ঘুমান, হেডফুন দিয়া গান শুনেন কোন সমস্যা নাই। খালি জানালার পাশে না থাকলেই হয়। আর বাইরে হাত দিয়েন না।(চান্সে চান্সে উপদেশ দিয়া দিলাম)
হাসিব ভাইয়ের ঘটনা আমার সাথে একবার ঘটবার চেষ্টা(!) হইছিল। বেটারা তিনজন আছিল। আমিও চান্সে রামধোলাই দিছিলাম।
মাদক প্রধান কারণ। মাদকের জন্যি এত কিছু করে গোবেটগুলান।

পলাশ রঞ্জন সান্যাল

নাশতারান এর ছবি

জানালার পাশে না বসলেই হবে? বাসের ভেতরেই যদি ঘুমন্ত বেকুবের হাতে একটা জীবন্ত মোবাইল দেখে মেরে দেয় তাইলে তো আমি টেরও পাবো না।

রামধোলাইটা মাদকব্যাবসায়ী আর পুকুরচোরদের দিতে পারলে কাজে দেবে।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

লেনিন [অতিথি] এর ছবি

সামু'তে একটা পোস্ট আছে যা গুগুলে এক অক্ষরের শব্দটা লিখে 'I am feeling lucky' হিট করলেই আসে। খাইছে (পোস্টটা যতোনা মজার তার চাইতে মজার হচ্ছে কমেন্টগুলো।)
তো ঐ পোস্টের নায়ক অর্থাৎ গু-বাবা কিন্তু খোলা জানালা পেলে আক্রমণ করে অনেক সময়। তখন ডক ...ডেকেও কুল পাওযা় যায়না। আমার দু'টাকা গচ্চা দিতে হযে়ছিলো। মন খারাপ

নাশতারান এর ছবি

গু-বাবার দর্শন আমিও লাভ করেছিলাম। বেশ কয়েক বছর আগে। আমি আর আম্মু সিএনজিতে বসা। তখন সিএনজিতে এখনকার মতো লোহার বেড়া ছিলো না। শ্যামলী সিনেমা হলের সিগন্যালে(হলটা এখন নেই) গু হাতে বাবা হাজির। আমি তো দে চিৎকার! পাশেই ট্র্যাফিক পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দাঁত কেলাচ্ছিলো। আম্মু তাকে ঝাড়তে লাগল কাজের কাজ কিছুই না করে, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখে বলে। ততক্ষণে সিগন্যাল ছেড়ে দিয়েছে। আমরা গু-বাবার হাত থেকে নিস্তার পেলাম, ওই পুলিশও রেহাই পেলো গালাগালির হাত থেকে।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

পল্লব এর ছবি

আমারে কেন জানি কোনদিনই কোন ছিনতাইকারী, গুন্ডা, মস্তান, পকেটমার কিছুই ধরে নাই। রাতের বেলা প্রায় লাখ টাকা দামের ল্যাপটপ নিয়াও ঘুরসি, পকেটে দামি মোবাইল, তাও না। শুনসি যে একটু বোকাসোকা চেহারার লোকজনরে নাকি বেশি ধরে। সেই হিসাবে আমারে ধরাটা তাদের খুবই উচিত। কিন্তু কিসের কী?

বাসে ঘুমাইতে ঘুমাইতে কতই গেলাম। বাসে উঠলেই ঘুমাই। মোবাইল হাতে নিয়া ঘুমাই, ব্যাগ পাশে রাইখা হাত দিয়া ঘুমাই। সামনের সিটে লোকের হাত থেকে জানলা দিয়ে মোবাইল নিয়ে যায়, আমি পিছেই বইসা এসএমএস করতেসি। কেউ কিসু খাইতেও দিলনা।

দেঁতো হাসি তাই ভাবলাম, এইখানে একটু মানুষজনের পিত্তি জ্বালাই।

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

নাশতারান এর ছবি

আগের বাসায় থাকতে আমরা (বাসার অন্যান্যরা সহ) কমপক্ষে পাঁচবার ছিনতাইকারীর খপ্পরে পড়েছি। নতুন বাসায় উঠে গাড়ি কেনা হলো। আমরা গাড়ির কাচ তুলে দিয়ে আরামসে যাতায়াত শুরু করলাম। কাচের ওপারের পথ যে এখনো অরক্ষিত সেটা ভুলে গিয়েছিলাম।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

পল্লব এর ছবি

কারণ আমি আমার মোবাইল দেবো না।
কেন?
কারণ আমি এখনো সব নোটিফিকেশন চেক করি নাই।

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

লেনিন [অতিথি] এর ছবি

হ্যা ফেসবুক ফিভারের কাছে ছ্যাচ্চোরটা হেরে গেলো।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

মাস দুয়েক আগেই এক সচলাড্ডা সেরে মুস্তাফিজ ভাইয়ের বাড়ি থেকে ফিরছি সপরিবারে। ভাবলাম রিক্সায় হাওয়া খেতে খেতে যাই। নিধি নূপুরের কোলে, নূপুরের ব্যাগ আমার হাতে। হঠাৎ ভুস করে পাশ দিয়ে যাওনের টাইমে গাড়ি থেকে একটা হাত টান দিয়ে নিয়ে গেলো নূপুরের ব্যাগ। মন খারাপ
আমি কিছু ভাবারই টাইম পাই নাই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

এই ঘটনা শুনলাম, আর একই ঘটনা ঘটেছে আমার মামাত বোনের সাথে মাসখানেক আগে ধানমন্ডি লেকের কাছে রাত ন'টার দিকে রিকশায় ফেরবার সময়। ব্যাগের সাথে গিয়েছে তার পছন্দের নতুন কেনা ক্যামেরাটা, আর ঘটনার আকস্মিকতায় রিকশা থেকে পড়ে গিয়ে পেয়েছে ভয়ানক ব্যথা। ভাগ্যিস আমার ভাগ্নিটা ছিল ভাইয়ার কোলে! মন খারাপ

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

মুস্তাফিজ এর ছবি

ঐ ঘটনার জন্য এখনও খারাপ লাগে আমার। আসলে সেদিন আপনাদের নামিয়ে দিয়ে আসতে চেয়েছিলাম। গাড়ি অন্যদের নিয়ে চলে যাওয়াতে সম্ভব হয়নি। পরে মনে হয়েছিলো আপনাদের আরো কিছুক্ষণ বসিয়ে রাখতে পারতাম, তাতে সময়ের তেমন একটা হেরফের হতোনা।

...........................
Every Picture Tells a Story

কৌস্তুভ এর ছবি

বেশ অ্যানালিসিস, আসল ভাল ব্যাপার আপনার মোবাইল-ইত্যাদির কিছু হয় নাই।

ব্ল্যাঙ্কের ব্যাপারটা আমারও হয়, আশা করছি এটা পড়ে সিরাত ভাই জটিল মনস্তত্ত্ব বিষয়ক একটা পুস্ট দিবেন... হাসি

শুধু একটা প্রশ্ন করতে মন চায় - ওই ছিনতাইকারীর কোনো শালী আছে?

নাশতারান এর ছবি

ছিনতাইকারীর শালী দিয়ে কী করবেন? ছিনতাই করবেন? চিন্তিত

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

নিশ্চয়ই শক পেয়েছন? কয়দিন বিশ্রাম নেন। সাবধানে থাকেন। এর চে খারাপ কিছু হতে পারতো ভেবে নিজেকে শান্ত্বনা দিতে পারেন। এতে মনে সাহস ফিরে পাবেন।

নাশতারান এর ছবি

আমি সাহস হারিয়েছি এমনটা কেন মনে হলো, পিপিদা? আমি তো নিজের যুদ্ধংদেহী পারফর্মেন্সে বেশ পুলকিত। মাংস দিয়েছি, মোবাইল দেই নাই শয়তানী হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

তাহলে তো ভুল হল আমার। আমি ভেবেছিলাম আপনি এর পরে গাড়িতে জানালা খুলে রাখতে ভয় পাবেন। এধরনের ঘটনার পরে সাধারণত এক ধরনের ভয় ও আতঙ্ক কাজ করে। আপনি নিশ্চয়ই অসাধারণ হাসি

নাশতারান এর ছবি

আমি এখন থেকে সাবধান থাকব।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আপনার আগের মন্তব্য ৩জনে পছন্দ করেছে; আমিও একটা বাড়িয়ে দিলাম।

অতিথি লেখক এর ছবি

ঘটনাটা মারাত্মক তবে বর্ণনাটা রসাত্মক!
পথে প্রান্তরে সাবধান থাকুন।
টিটেনাস টক্সয়েড (Inj, Tetavax) দেয়া না থাকলে দিয়ে নিতে পারেন!

জহিরুল ইসলাম নাদিম

নাশতারান এর ছবি

টিটেনাসের টিকা ছোটবেলায় দেওয়া হয়েছিলো। বড়বেলায় আর দেওয়া হয় নি। তবে আঙুলের অবস্থা এখন ভালো। ব্যথা নেই বললেই চলে।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

"বিনি যুদ্ধে নাহি দেব সুচাগ্র মোদিনী"- তাই বলেই কি আপনি -"সঙ্গে সঙ্গে আমি হাতের মুঠি শক্ত করে ফেলি"।
এভাবে হাতের মুঠি শক্ত করে ফেললে অনেক ছিনতাই ঠেকানো সম্ভব !
Congrats!
ওলি

নাশতারান এর ছবি

ওই কয় সেকেন্ডে কি আর অত ভেবেছি নাকি? ভাগ্যিস ছিনতাইকারীর হাতে অস্ত্রশস্ত্র কিছু ছিলো না। হাতের রগ কেটে দিলে মুঠির জোরে কিছুই হতো না।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

স্পর্শ এর ছবি

রোমান্টিক ব্যাপার-স্যাপারও হতে পারে। চোখ টিপি হয়তো ছেলেটা হাত ধরেই টানাটানি করছিলো চিন্তিত


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

মুস্তাফিজ এর ছবি

চিন্তা করতে হবে।

...........................
Every Picture Tells a Story

নাশতারান এর ছবি

হাত ধরতে গিয়ে খামচে মাংস তুলে নিলো? রোমান্স এতটা মাংসাশী হওয়া কি ভালো?

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

রানা মেহের এর ছবি

আপু
তুমি শক পাওনি সাহস হারাওনি।
বাবা আছেন সুতরাং হাতের ব্যাপারে চিন্তা নেই।সব ঠিক আছে।
তবু তুমি ভালো আছোতো?
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

নাশতারান এর ছবি

সব ঠিক আছে, আপু। কয়েক মিনিটেই শক কাবার। আঙুলেও তেমন কোনো ব্যথা নেই এখন।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

দ্রোহী এর ছবি
নাশতারান এর ছবি

Smiley

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

মনে হচ্ছে আপনার ছিনতাইকারী (এদেরকে আমার ছিনতাইকারী বলতে বাধে আমার মতে এরা হচ্ছে খাবলাকারী) একটু আনাড়ী কিছিমের ছিল, সিস্টেম হচ্ছে সাই-সাই-ধাই মানে সাই করে হাত ঢুকিয়ে মোবাইল ধরে, সাই করে হাত টেনে বের করে, ধাই করে দৌড়। একই ঘটনা আমার ক্ষেত্রে ঘটেছিল শ্যামলি হলের সামনে সিগন্যালে, জীবনে প্রথমবার গাড়ীর কাঁচ অর্ধেক নামিয়ে, জানালার পাশে বসে ম্যাসেজ টাইপ করছিলাম; হঠাৎ সাই-সাই-ধাই। গাড়ী থেকে নামতে তিন-চার সেকেন্ড মত দেরী হয়েছিল কারন গাড়ী কিভাবে খুলতে হয় ভুলে গিয়েছিলাম। নেমে আমিও ছিনতাইকারী মানে খাবলাকারীর পিছন পিছন দৌড়, শ্যামলি হলের পিছন পর্যন্ত দৌড়ে এসে দেখি আমার পিছনে আমার ড্রাইভারও দৌড়াচ্ছে, ছাগলা গাড়ী ফালায়া থুয়া আমার লগে জগিং করতে আইছে। ওরে ধমক দিয়া গাড়ীতে পাঠালাম। তারপর আধ-ঘন্টা পরে খাবলাকারীকে না পেয়ে ফিরে আসলাম, এসে দেখি গাড়ী নাই। অনেক খুঁজা-খুঁজি করে, শেষ-মেশ হাঁটতে হাঁটতে শ্যামলি থেকে কল্যাণপুর পর্যন্ত আসছি আর ভাবছি একটা পুরান মোবাইল আর একটা পুরান গাড়ী গেলো, ঠিক-ঠাকমত কত লস হল। পরে অবশ্য গাড়ী পেয়েছিলাম, কিন্তু মোবাইলের জন্য বেশ কিছু দিন মন খারাপ ছিল, অনেকদিন এক সাথে শুয়েছিলাম কি জানি এখন কার ঘর করতে হচ্ছে বেচারার।

অনন্ত আত্মা

নাশতারান এর ছবি

আমার ঘটনাটা কিন্তু শ্যামলী হলের সিগন্যালেই ঘটেছে। ওই একই জায়গায় বছর কয়েক আগে গু-বাবার সাক্ষাৎ পেয়েছিলাম। এই সিগন্যালটা তো বেশ বিপদসংকুল দেখছি!

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

এ ঘটনা থেকে আমি কী শিখলাম:
১) আমার তিলোত্তমা ঢাকা মোটেও নিরাপদ নয়।
২) আমি যে বাসে উঠেই কানে হেডফোন গুঁজে দিয়ে গান শুনতে শুনতে ভসভস করে ঘুমুতে থাকি সেটা আর করা চলবে না।

হায়রে! এতদিনে শিখল ঢাকা নাকি আর নিরাপদ না! (বাই দি ওয়ে, 'তিলোত্তমা'?!)

আর, ক্যাম্নে কী! মন খারাপ
এখনো শিখল না,
১. সর্বত্রই ঘুমাইতে থাকা স্বাস্থের জন্যে আসলেই হানিকর!
২. মোবাইল টিপতে থাকা আঙুলমস্তিষ্কের জন্যে ক্ষতিকর
৩. ফেসবুক একটা বিভ্রান্তিকর জিনিস!

সাধে কি আর 'প্রজন্ম সেলফোন' বলি! মন খারাপ

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

নাশতারান এর ছবি

জ্বে দেঁতো হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আমার পকেটমার হইছে দুইবার। কিন্তু ছিনতাই হয়নাই। বন্ধুদের কয়েকজনের হয়েছে কয়েকবার। যে অনুভুতি হয় সেটা হল ভালনারেবল হবার অনুভুতি। মনে হয়, আই অ্যাম নট সেইফ। মন খারাপ

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

নাশতারান এর ছবি

ঠিক। নিরাপত্তার অভাবের কথা ভেবেই খারাপ লেগেছে।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

মর্ম [অতিথি] এর ছবি

পুরানো স্মৃতি ফের মাথাচাড়া দিলো, নোটিফিকেশন না দেখে আসলেই মোবাইল দিয়ে দেবার ইচ্ছা থাকার কথা না!!

নাশতারান এর ছবি

এই সেটটা নতুন। এর সাথে অমন আবেগী সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি এখনো। তবু নিজের জিনিস অন্যে ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এই অনুভূতিটাই যন্ত্রনাদায়ক।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

মুস্তাফিজ এর ছবি

আহারে বেচারা ছিনতাইকারী, একটা বুনোহাঁসের সাথে পারলোনা!!!

...........................
Every Picture Tells a Story

নাশতারান এর ছবি

আহারে বেচারা!

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

দারুণ হে !
(ঘটনা না, ঘটনার বর্ণনা)

___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

নাশতারান এর ছবি

হে হে হে

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ওডিন এর ছবি

যাই হোক- এরপর থেকে খুব সাবধান।

মানুষের খামচি ভালো জিনিস না (সিরিয়াসলি বলতেছি) তারপরে যদি অনেকখানি মাংস তুলে নিয়ে থাকে । টিটেনাস ইমিউনোগ্লোবিন (টিআইজি) ইঞ্জেকশন একটা নিয়ে নেয়া উচিত মনে হয়। কি আছে দুনিয়ায়।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

নাশতারান এর ছবি

"মানুষের" খামচির বিশেষত্ব কী?
একটা আঙুলে মাংসই থাকে কতখানি যে অনেকখানি তুলে নেবে? ক্ষতের দৈর্ঘ্য আধা সেমির একটু বেশি, প্রস্থ আধা সেমির একটু কম।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ওডিন এর ছবি

আঙ্গুল আর বেশ ছোট ক্ষত, তাইলে মনে হয় ভয়ের কিছু নাই! আমি তো ভাবছিলাম অনেকখানি খাবলে নিয়েছে মনে হয়! মন খারাপ

আর "মানুষের" খামচি,আঁচড়, কামড় এইগুলা দিয়ে হওয়া ইনজুরির বিশেষত্ব হইলো মানুষের নখে বা দাঁতে যেইসব ব্যাক্টিরিয়া থাকে সেইগুলা দিয়ে যদি কোন ইনফেকশান হয় সেইটাতে আক্রান্ত 'মানুষের' ইমিউন সিস্টেম খুব একটা কাজ করতে পারেনা, কারণ ব্যাক্টিরিয়াগুলা আমাদের 'মানুষের' ইমিউন সিস্টেমের বিরুদ্ধে অলরেডি অনেকখনি প্রতিরোধ নিয়ে এসেছে (সেই আক্রমনকারী মানুষটার কাছ থেকে), আর অনেক অ্যান্টিবায়োটিকও দেখা যায় রেজিস্ট্যান্ট (সেইটাও ওই লোকটার কারণে)!

এইজন্যে জেনে রাখা ভালো- মানুষের আঁচড় (বড়সড় আচড়- সেইখানে ব্লিডিং হইছে) আর কামড়টামড় কিন্তু হাল্কা করে দেখার বিষয় না।

যাই হোক- বেশি জ্ঞানদান করে আশা করি ভয় দেখায় দেই নাই। এইটুকু আঁচড়ে কিচ্ছু হবে না। আর আঙ্কেল তো আছেনই!

______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

নাশতারান এর ছবি

ক্ষত ছোট বলেই কি আপনি তাকে আঁচড় বলে অপমান করবেন? তার গভীরতার কি কোনোই মূল্য নেই? Smiley

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ফেসবুকের উপকারিতা!!

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আহারে!

আমার ঘটনা ভিন্ন।

রাতে এক ছাত্রকে পড়িয়ে বাসায় ফিরছিলাম। রিকশা একটাও পাচ্ছি না। মোবাইল ভুলে বাসায় ফেলে এসেছি। আমার সামনে একটা লোক চাদর জড়িয়ে যাচ্ছে। লোকটাকে ডেকে বললাম, ভাই, কয়টা বাজে? লোকটা ভৌ দৌড়। ঘটনা কী বুঝতে একটু সময় লেগেছিল।

-----------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

নাশতারান এর ছবি

আপনি তো ডেঞ্চারাস লুক দেখা যায় চোখ টিপি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

রাহিন হায়দার এর ছবি

আমার ছিন্তাইকারী ধরসে প্রায় দুইবার।

প্রথম বার, রাত দশটার দিকে মালিবাগ রেল্গেটের কাছে দাঁড়িয়ে আছি রাস্তা পার হব বলে। ফুরসত পাচ্ছিলাম না। একটা মেসেজ আসায় সেলফোনটা হাতে ছিল। মেসেজটা পড়ে শেষ করতে না করতেই এক লোক এসে জিগায়, "ভাই আপনি কি পেট্রোল পাম্পের ওদিকে থাকেন"? এটা কমন একটা ব্যাপার, আগেও শুনেছি বন্ধুরা এভাবে এদের খপ্পরে পড়েছে। ব্যাপারটা ঠিক ধরতে পারিনি কারণ আমি তখনও মেসেজটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি, খুব একটা পাত্তা নিয়ে দিয়ে বললাম, না ভাই। সে কয়, ও, আমি ভাবলাম আপনি ওদিকে থাকেন। আমি উত্তর দিলাম না। তারপর আমার পিছন দিয়ে আরেকজন লোক এসে দাঁড়াল, নিচু গলায় বলল, আপনি উনার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেন, আর বেশি নড়াচড়া কইরেন না। এটা শুনেই যা বোঝার বুঝে গেলাম। এরপর যেটা করলাম কেন করলাম জানি না, লোক দু'টার মাঝখান দিয়ে একটা বড় লাফ দিয়ে তারপর আরো কয়েকটা লাফে রাস্তার আইল্যান্ডে চলে এলাম। যেখান দিয়ে এলাম, হাফ সেকেন্ড পর একটা বাস চলে গেল সেখান দিয়ে। ঘটনা শেষ।

দ্বিতীয় ঘটনাটা বেশ বিভ্রান্তিকর। এরা ছিনতাইকারী হতেও পারে, নাও পারে। অথবা আমার মত দেখতে কাউকে পেটানোর জন্য খুঁজতেও পারে। তখন আমার কাঁধ পর্যন্ত বড় বড় চুল, খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি। বিকেলের দিকে রিকশা করে এক গলির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। হঠাৎ রিকশাওয়ালা থেমে গেল, আমি বললাম, কী ব্যাপার? সে কয়, আপনারে ডাকে। পিছন থেকে দু'জন মাস্তান ধরনের ছেলে এসে দু'পাশে দাঁড়ালো। বলে, আপনি অমুক ভাইয়ের বন্ধু না, অমুক জায়গায় থাকেন না? আমি সরল মনে বললাম, না ভাই, এ নামে কাউরে চিনি না, থাকি আরেক জায়গায়। একজন বলল, আপনাকে তো মনে হয় উনার সাথে দেখসি কয়েকবার। আমি বললাম, ভুল করছেন, এমন নামে কাউকে তো চিনি না, আচ্ছা ভাই, আমার একটু তাড়া আছে, যেতে পারি? তখন তারা আমাকে আপাদমস্তক দেখে-টেখে বলল, ভাই ভুল হয়ে গেছে সরি, কিছু মনে করবেন না, ডিস্টার্ব করলাম, রাগ করেন নি তো। কইলাম, না ভাই। তারপর চলে আসলাম। এই হল ঘটনা।
________________________________
মা তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো...

বোহেমিয়ান এর ছবি

ল্যাপটপ সাথে থাকলে রাতে থাকলে কাপাকাপি শুরু হয়!
ক্যাম্রা থাকলেও টেনশানে থাকি কখন যে কে ঠ্যাক দ্যায়!

ফেইসবুকের জন্য এ যাত্রা বেঁচে গেলেন!
_________________________________________

_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!

ফারুক হাসান এর ছবি

বর্ণনা ভালো লাগছে।

আমারে কখনো ছিনতাইকারি ধরে নাই। মনে হয় চেহারায় একটা ফকির ভাব আছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

জিকাতলা থেকে সায়েন্স ল্যাবের মাঝামাঝি; সন্ধ্যা বেলা। আমাকে উনারা থামালেন, "ভাই আপনাকে এতগুলো ডাক দিলাম, শুনতে পান না?" আমার যা বোঝার তা বোঝা হয়ে গেলো। একজন হোন্ডা থেকে নেমে এসে আমার ঘাড়ে হাত দিয়ে বন্ধুর মতো আচরন করতে লাগলেন, বললেন আমি ধানমন্ডির মুন্না বসের নামটা কি? তবে তিনি শার্টটা সামান্য উঁচু করে মাজায় গোঁজা ফাইভ ষ্টারটা দেখাতে ভূললেন না। আমি আসল ফাইভ ষ্টার চিনি, ওইটা তা'ই ছিলো। এরপর তিনি গলা থেকে চেইনটা কুট্‌ করে ছিঁড়ে নিলেন। তারপর বললেন বস ৫০০ টাকা দেন। আমি ওয়ালেট বের করলে তিনি পুরো ৩০০০ নিয়ে নিলেন। তারপর আমার সাথে মোসাহাফা করে অপেক্ষমান হোন্ডায় চেপে চলে গেলেন।

তখন র‌্যাব ছিলোনা। পুলিশরে অনেক চাপ দিইয়েছি, কিছু 'কামের লোক'ও হায়ার করে কয়েকদিন ধরে ধানমন্ডি এলাকা চষেও ফেলেছি কিন্তু জনাবের পাত্তা পাইনি। তবে চেহারাটা এখনও ভূলিনি, সম্ভবত ভূলবোও না। উনি বেঁচে গেছেন যে আমি ঢাকায় থাকিনা। থাকলে ................................. ভালোই একটা বাজেট করেছিলাম।

রাতঃস্মরণীয়

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার ঘটনা পুরাই বাংলা সিনেমা! ব্যতিক্রম শুধু নায়কের বেশ ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছিল। তখন দৈনিক আজকের কাগজে মৃদুল ভাইয়ের সাথে কাজ করতাম। ইন্টার পাশ করেই চাকরি। হালকা পাতলা জিমে গিয়ে ডাম্বেল-বার্বেল ভাজতাম। শরীরের রক্ত গরম ছিল বলেই চারজন ছিনতাইকারীর সাথে একা এক রাতে মারামারি করলাম। ওরা পালানোর পর খেয়াল হলো আমার মাথার তিনপাশ থেকে ফোয়ারার মতো রক্ত ছুটছে, বাম কান দু টুকরা হয়ে ঝুলছে, ডান কাঁধে ২-৩ ইঞ্চি ছুরি গাথা, পেটে হালকা চাকুর পোচ, ডান কনুইয়ের উপরদিকে বেশ ডিপ হয়ে কাটা! এরপরের ঘটনা অনেক কিন্তু পরে জানতে পেরেছিলাম ওই চার ছিনতাইকারীর হাত কেটে নিয়েছিল এক টপটেরর, তার ছোটভাইকে স্ট্যাব করার কারণে!

নাশতারান এর ছবি

বাপরে!

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।