স্বপ্নযাত্রা

ধুসর গোধূলি এর ছবি
লিখেছেন ধুসর গোধূলি (তারিখ: শুক্র, ২৭/০৬/২০০৮ - ৮:১২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:



: হিথ্রো বাউন্ড!
: ইয়েস এন্ড মে আই রিকোয়েস্ট ফর এ উইন্ডোসীট প্লীজ!
: স্যরি স্যার, অল আর গন। হাউ এবাউট এ নাইস আইল ওয়ান ইনস্টেড!
: ইটস নট মাই চয়েস, বাট ইয়েস প্লীজ।
: এক্সট্রিমলী স্যরি, বাট ইউ আর...
: ইয়েস আই নো। আইল সীট ইজ ফাইন, থ্যাংক্স।

বোর্ডিং কার্ড হাতে নিয়ে পৌঁছুতে দেরী হয়ে যাওয়ায় চড়ে থাকা মেজাজটা আরেকটু চড়ে যায় প্লাস্টিক হাসি ঝুলানো গোলগাল মুখের তরুণীর কাঠখোট্টা আসন বিন্যাসের ধরণ ধরণ দেখে। জানালার ধারে বসে কয়েক পাত্তর ১৯৯২ সালের দ্রাক্ষারস গলায় চালান করে আয়েশ করে এলিয়ে থাকাটা বোধহয় হচ্ছেনা এবার! অনবরত পাশ দিয়ে কারও না কারও চলাফেরার কারণে সৃষ্ট বিরক্তি এড়াতে আইল সীটটা অপছন্দের খাতায় রয়ে গেছে সবসময়। কেউ হয়তো আকাশে ওঠার আধাঘন্টার মধ্যেই টয়লেটে যাবার বায়না ধরে বসে কিংবা পাশ দিয়ে একটু পরপর ঘটঘট করে একেকজন হোস্টেস বিপুল বিক্রমে হেঁটে যায়, কখনো তাদের সঙ্গে ঘরঘর শব্দ তুলে যায় মালগাড়ি। আর ফেরিওয়ালার মতো বিরক্তিকর একই শব্দের ঘ্যানঘ্যানি তো আছেই!

কাস্টমস, নিরাপত্তা সব পেরিয়ে বিরক্তিকর সোয়া ঘন্টার এক কপাল কুঁচকানো যাত্রা শেষে আবার কানেক্টিংএর ঝামেলা। সাড়ে তিন ঘন্টা অপেক্ষা করাটাও বিরক্তিকর। বিশাল হিথ্রোর এমাথা-ওমাথা করা যায় বটে! হাতে বহনযোগ্য তেমন কিছু না থাকায় হেঁটে বেড়ানোটাই প্রাধান্য পেলো কোথাও সটান-নির্জীব বসে থাকার চেয়ে। আগে কখনো হিথ্রো দেখা হয়নি। গল্পই শোনা হয়েছে কেবল। বেশ লম্বা একটা জায়গা ধরে হাঁটতে গিয়ে মনে হলো এখানেই হয়তো চৌদ্দ বছর আগে ভাগ্নে জেদ ধরে দৌড় লাগিয়েছিলো এলোপাথারি। বাবা তার পিছুপিছু। দৌড় শেষ করে ক্লান্ত পুঁচকে ভাগ্নে আর পায়ে হেঁটে আসার শক্তি পায় নি। তাকে আসতে হয়েছে বাবার হাতে ঠেলা লাগেজ ট্রলীতে! দৃশ্যটা কল্পনায় আসতেই কপালের কুঁচকানো ভাবটা নিমিষে দূর হয়ে যায়। ঠোঁটের কোণায় বাঁকা হাসির একটা রেখাও বোধহয় ফুটে ওঠে। নানা রকম ডিউটিফ্রী দোকানগুলোতে হাঁটতে হাঁটতে সামান্য ক্লান্তি অনুভূত হয়। সামনের ক্যাফেটেরিয়ায় বসে একটা ধোঁয়া ওঠা কফির মগে চুমুক দেওয়া যাক তাহলে এবার।

ইংলিশরা কথা বলে পেটের ভেতর অর্ধেক রেখে, আইরিশরা আরও মারাত্বক! ভালো করে কান পেতে না শুনলে প্রাত্যহিক ইংরেজী ব্যবহার না করা যে কারও পক্ষেই ভাবোদ্ধার করা দুরূহ। ক্যাফেটেরিয়ার আইরিশ মেয়েটা দেখতে অপার্থিব হলেও কথা বলে গড মাস্ট বি ক্রেজী'র কালাহারীর সেই কালো মানুষটার মতো। যে কথা বললে মনে হয় পাখি কিচিরমিচির করছে, তার নিজস্ব ভাষায়! অপার্থিব সুন্দরী, পাখির কলতান- উপমাটা তাহলে নেহায়েতই মন্দ হয়নি। বরং একটা স্নিগ্ধতা ছড়ানো ব্যাপার আছে পুরো উপমায়। কফির স্বাদও খারাপ না। দশে সাড়ে ছয় দেয়া যায়। ফার্স্ট ডিভিশন মার্ক। এখনকার জিপিএ সিস্টেমে কতো হয় কে জানে!

কফিতে তৃতীয় দফা চুমুক দিতে গিয়ে চড়কীর মতো ঘুরতে থাকা চোখে যে জিনিষটা আটকে যায় সেটা সুরুৎ করে নিয়ে যায় বহু বছর আগের এক ঘটনায়। সুমনা, ডেনিম জিন্স আর কালো ফতুয়াতে । তখন সতেরোতে থাকা সুমনার সঙ্গে টক-ঝাল-মিস্টি এক সম্পর্ক। সময়ের স্রোতে সম্পর্কের আচার থেকে টক আর ঝাল জিনিষগুলো ঝরে যায়। তবে মিষ্ট ভাবটা বেশিদিন টিকেনি। সেখানে সামান্য পরিমান তেঁতো যোগ হয়ে যায় কী করে যেনো। হয়তো দূরত্ব, হয়তো অন্য কিছুর কারণে! মিষ্ট-তেঁতো সম্পর্কটা ধ্বসে পড়েছিলো আধাযুগ পরে। পুরো নিশ্চিহ্ন হয়ে হয়তো যায় নি, হয়তো ধ্বংসাবশেষ কিছুটা রয়ে গিয়েছিলো, দাঁড়িয়ে ছিলো ধুঁকে ধুঁকে। সম্পর্কের ধ্বংসাবশেষে যেনো কখনো মোলায়েম হাতের ছোঁয়া গভীর ক্ষত তৈরী করতে না পারে, সেজন্য স্মৃতিকোটরের সেই দরজাগুলো চিরতরে সিলগালা করে দেয়া হয়েছিলো। আর খোলা হয়নি, এতোগুলো বছরেও, দেখা হয়নি কতোটা সৃতির ধূলা পড়লো সেই ভগ্নাংশের ওপর! কতোশত ইচ্ছা ছিলো, স্বপ্ন ছিলো, আকাংখা ছিলো। আটলান্টিকের বিশাল জলরাশি তার সবকিছুই নিয়ে নিয়েছে নিজের বুকে। একটু ক্ষণের দেখা হওয়ার আকুতি ছিলো। নাটকীয়ভাবে দেখা হওয়া বিমান যাত্রায় একসঙ্গে বাকী পথ পাড়ি দেবার কথা ছিলো, ফেরার কথা ছিলো একই সঙ্গে। হাত ধরে খানিকটা সময় চুপচাপ বসে থাকা হয়নি সমস্ত কোলাহল উপেক্ষা করে। কাঁধে মাথা রেখে চুপটি করে ঝিম মেরে থাকার কথা ছিলো কতোবার। কিছুই হয়নি। সময় চলে গেছে সুমনাকে সঙ্গে করে। পথের সেই বাঁকে, ফিরে এসে যেখানে সুমনাকে পাবার কথা ছিলো, মাঝে মাঝেই দূর থেকে চোখ বুলানো হয়। বাঁকটা এখনো রয়ে গেছে সেরকম। সময়ের মরচে ধরেনি আদৌ। কখনো সখনো মৃদু বাতাসে কয়েকটা শুকনো পাতা উড়ে যায় পথের সে বাঁক ধরে। শুধু সময়টাকে বাহন করে সেই বাঁকে আর উড়ে ফেরা হয়না কারোই, কখনোই!

হ্যালুসিনেশন! এই সময়ে, এখানে সুমনার থাকার কথা না। আর যাকে গত বহু বছরে একবারও দেখা হয়নি, তাকে এক পলকে দেখে একবারেই চিনে ফেলাটা কিছুটা অসম্ভবই। অতএব সমীকরণ মেলানো হলো, "সুমনা এই মুহূর্তে এখানে নেই!"

কফি ঠান্ডা হয়ে জমে গেছে সেই কখন। ঠান্ডা কফি খেতেও অবশ্য আলাদা একটা থ্রীল আছে। আইরিশ তরুণীর কলতান আরেকবার শোনার আগে বরং এই থ্রীলটাই গলাধঃকরণ হোক আগে।

অল প্যাসেঞ্জার অফ বিএ-জিরো ওয়ান ফোর ফাইভ, টু ডাক্কা আর রিকোয়েস্টেড টু প্রোসীড... ৪ নাম্বার টার্মিনালের সবগুলো স্পীকার কাঁপানো ঘোষণায় আরেকদফা কপাল কুঁচকানো আগাপাশতলা চেকিং শেষে মাথা ধরানো হাউকাউমুখর কক্ষে প্রায় দশ ঘন্টা ব্যাপী ভ্রমনের মানসিক প্রস্তুতি প্রায় নাগাল ছেড়ে বেরিয়ে যায়, এমন অবস্থা। ত্রাহি ত্রাহি অবস্থায় ঠাঁই হলো একদম কোণার দিকের একটা আসনে। ৭৭৭ বোয়িংএ উঠার নাটক মঞ্চায়নের পর্দা উঠতে এখনো বুঝি অনেক দেরী। কানে উপলকে তার "আমি চাই তোমাতে হারাতে" সহ গুঁজে দিয়ে জানালার বাইরে বিশাল এয়ারক্রাফট পরিদর্শনটাই এই মুহূর্তে বুদ্ধিমানের কাজ! আপেক্ষমান সেই কক্ষে মানুষ আসছে-বসছে-দাঁড়াচ্ছে, বসা কেউ দাঁড়াচ্ছে, দাঁড়ানো কেউ হাঁটছে, সামনে দিয়ে কেউ হেঁটে যাচ্ছে, হাঁটুক না যার যতো খুশী! কপালটা একটু একটু করে আরও বেশি কুঁচকে যাচ্ছে। কক্ষের আড়াআড়ি একটা আসন থেকে কেউ উঠে সামনে দিয়ে পায়চারীর মতো করে হেঁটে গেলো বারকয়েক। তারপর হঠাৎ থেমে, খানিক ইতস্ততঃ হয়ে জিজ্ঞেস করে, "আপনি, মানে তুমি সম্রাট...!"
সেই পরিচিত কণ্ঠ, কণ্ঠে সেই পরিচিত ঝংকার। দৃষ্টিসীমার ঘুচানো ব্যবধানে সৃষ্ট অস্পষ্টত্ব কাটিয়ে ওঠার পর বুঝা যায়, হ্যালুসিনেশন নয়, এ যে সুমনাই। কতগুলো বছর পর! কপালের ভাজগুলো মুছে যেতে থাকে একএক করে। প্রসন্নতা ফুটে উঠতে থাকে অবয়বে। এতোদিনের বদ্ধকুঠরীর দরজাগুলো একে একে সব সশব্দে খুলে যেতে থাকে যেনো আজ, এই জুনের পড়ন্ত বিকেলে।

: কেমন আছো সু! অনেক শুভেচ্ছা আজকের দিনে তোমাকে।
: মনে রেখেছো তাহলে...।

আরোহন শুরু হয়ে গেছে ততোক্ষণে। এক স্বপ্ন যাত্রার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সম্রাট ভাবে এই স্বপ্নটা সত্যি হলে কী এমন ক্ষতি হয় জগতের!


মন্তব্য

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

পড়লাম তাই একটা দাগ রেখে গেলাম হাসি
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

ধুসর গোধূলি এর ছবি
মুশফিকা মুমু এর ছবি

আহ! ভারি সুইট হাসি ভাল লাগল হাসি
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

দুর্ধর্ষ ধূগো'র নিজের জীবন থেকে ছিটেফোটা নিয়ে লিখিত না তো? তাহলে আসেন কোলাকুলি করি।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- দুর্ধর্ষ আমার নিজের (অদ্যবধি) জীবনে কোনোদিন লন্ডনে যামু দূরের কথা বৃটিশ এয়ারওয়েজের বিমানও চউক্ষে দেখি নাই।

আর ফোটাছিঁটা! মিয়া আমার জীবন কি কাঁচের বোতলে সাত টেকার গোলাপ জল যে দিলাম ঝাকি দিয়া দুই ফোটা ছিঁটাইয়া! মন খারাপ

কোলাকুলি করতে চাইলে আসেন। তয় কাউরে কইয়েন না কইলাম! চোখ টিপি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

সবজান্তা এর ছবি

শেষমেষ আত্মজীবনী লেখা ধরলেন ? তয় সুমনা কার শালী তা কিন্তু লেখার মধ্যে খোলসা করা হয় নাই চোখ টিপি


অলমিতি বিস্তারেণ

ধুসর গোধূলি এর ছবি
রেনেট এর ছবি

খেলুম না মন খারাপ
ধুগো ভাই যেখানে যায়, সেখানেই মেয়েরা গিজ গিজ করে। কখনো ট্রেনে, কখনো বাসে, কখনো ট্রামে, কখনো এয়ারপোর্টে।
আর আমি সারাদিনে একটা মেয়ে ও দেখি না।
ফাডা কপাল।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

ধুসর গোধূলি এর ছবি
সুমন চৌধুরী এর ছবি
ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

আপনি আমাদের চিরকালের 'আহা রে!' এই বারের আহারে হলো, বেচারা নিজেরে নিয়াও মশকরা করে, পুরানো ব্যথায় নিজেই লবন ছিটায়।
সে কি জানে, তোমার সকল গান তাহারে লক্ষ্য করে!

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

পথ হারিয়ে গেলে কিছু না চিনেই তারে পথে পথে খুঁজি...

০২

অতএব সমীকরণ মেলানো হলো, "সুমনা এই মুহূর্তে এখানে নেই!"

গল্পটা এখানে শেষ করে দেন স্যার

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- বিদগ্ধ চোখে অনেক কিছুই ধরা পড়ে যায়!
আপনি যেখানে উল্লেখ করলেন এই পর্যন্ত লিখে আমি পনেরো মিনিটের একটা ব্রেক নিয়েছিলাম। পরের ঘটনাগুলো কোনোভাবেই এক সূতায় গাঁথতে পারছিলাম না বলে। অথচ গল্পটা এখানে থামানোর কোনো ইচ্ছা ছিলো না। প্রথম যখন প্লটটা নিয়ে ভাবি, তখন আমার নিজেকে আমি গল্পটা শোনাই। সেখানে সম্রাট-সুমনার দেখা হয় খুব সম্ভবত ফেরার পথে। অযাচিত ভাবে। অপ্রত্যাশিতভাবে বেশ কিছু সময় হাতে পায় তারা। বহুবছর আগের ভালোলাগা হঠাৎ বেরিয়ে পড়ে সব বাঁধ ভেঙে। জোয়ারের তোড়ে হারিয়ে যায় তারা, দুজনেই। হাসিমুখে বিদায় নেয় একে অপরের কাছ থেকে। পরের ঘটনা মিলনাত্বক। কিন্তু লেখাটা যখন কাল লিখতে গেলাম শোনার বেশ কিছুদিন পর, আঙুলের কারসাজিতে ঘটনাটা অনেকটাই বদলে গেছে। তথাপি লেখিয়ে হিসেবে নিজের তুষ্টির একটা দরোজা খোলা রাখতে চেয়েছিলাম। সেজন্যই তাদের দেখা হওয়াটা জরুরী ছিলো। এটা গল্পের কারণে না হলেও লেখিয়ের সন্তুষ্টির জন্য। ঘুম আর তাড়াহুড়ার কারণে সেই কাজটা সমাধা হয়ে উঠতে পারেনি।

আপনি যদি কিছু মনে না করেন লীলেন ভাই, আমি কি আপনাকে অনুরোধ করতে পারি কাহিনীটায় একটু যাদুর ছোঁয়া বুলিয়ে দেবার জন্য। শেষের অংশটুকু রাখতে চাইলে কীভাবে আগের অংশের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া যায়। এইটা একটা প্লীজ লীলেন ভাই।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এইটাকে বলে মাইনকা চিপা
এমন চিপায় ফেলবেন জানলে কথাটা বলতামই না
পড়ে চামে চামে কেটে পড়তাম

০২
গল্পটা আমি এখন আবার তিনবার পড়লাম
না স্যার
লেখকের পূর্ব নির্ধারিত উপসংহার ফলো করার অধিকার স্বীকার করেও বলছি
গল্পটা 'সুমনা নেই' এ শেষ হওয়াই এই গল্পের নিয়তি
(একেবারে আমার ব্যক্তিগত মতামত। কোনো গ্রামার কিংবা সংজ্ঞা এক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়)

গল্পটা সুমনার নেই উপলব্ধিতে যে হাইটে উঠেছে সেই হাইট কোনো ভাবেই 'সুমনা আছে' কিংবা 'সুমনাকে পেলাম' এ মেনটেন করা সম্ভব না
অন্তত আমার তা মনে হয়

আর যদি সুমনাকে শেষ পর্যন্ত আনতেই চান তাহলে হয়তো 'সুমনা নেই' অংশটি বাদ দিয়েই শেষের পরিণতির দিকে আসতে হবে

০৩
গল্পটা কিছুদিন ফেলে রেখে দেন
লেখার পর কিংবা ড্রাফট করার পর কিছুদিন ফেলে রেখে দিয়ে আবার পড়লে লেখার সময় লেখকের মগজে থাকা প্ল্যান এবং রোডম্যাপগুলো দূরে সরে যায়
তখন নিজেই একটা নিউট্রাল পাঠক কিংবা এডিটরের দৃষ্টিতে নিজের লেখাগুলো পড়া যায়

০৪
থাক
এক বছর পরে গল্পটাতে আবার চোখ বুলিয়ে যদি আপনার মনে হয় 'সুমনাকে পেলাম' এ গল্প শেষ করবেন
তবে তাই হবে
পৃথিবীর অন্য যে যাই বলুক না কেন

০৫

আমার সেই ক্ষমতা নেই স্যার আপনার এই গল্টাকে রিটাচ করার

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

আগের লেখাগুলোর চেয়ে একটু আলাদা ধাঁচের মনে হলো।
এর মধ্যে রাজাদের নীতিফীতির তো কিছু দেখলাম না।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- লেখাটার আসল কেরামতিই তো ঐখানে। রাজনীতি রাজনীতি ভাব, কিন্তু রাজনীতির অভাব! হাসি

অন্য ধাঁচের মানে কোন ধাঁচের! আগের গুলো কোন ধাঁচের ছিলো?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

আগের গুলো কোন ধাঁচের জানি ছিলো ...
আপনেরে নাচতে দেইখা তো সব ভুইলা গেছি।
তয় এই ইমো আপনেরে মানাইছে খুব।

........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

রায়হান এর ছবি

ফি আমানিল্লাহ্‌।

ভালো মতো কমেন্ট লেখার জন্য দুই বার পর্লাম। কিন্তু কি লিখবো? গুরু মাফ কইরা দ্যান। লেখা ভালো হইছে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ভালোমতো কমেন্টের সংজ্ঞা কী গুরু? চিন্তিত
মাফামাফি নাই, কল্কি সাজান। একলগে কুঞ্জবনে নিকুঞ্জ বিহারে যামু চোখ টিপি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

রায়হান আবীর এর ছবি

ইয়া বড় বড় কমেন্ট। হাসি

---------------------------------
জানিনা জানবোনা... কোন স্কেলে গাইছে কোকিল
গুনিনা আমি গুনিনা...কার গালে কটা আছে তিল

জি.এম.তানিম এর ছবি

স্বপ্নটা সত্যি হলে কী এমন ক্ষতি হয় জগতের

আমিও তো তাই কই...চিন্তিত
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

ধুসর গোধূলি এর ছবি
হিমু এর ছবি

গল্পে নায়কের গায়ের রং উজ্জ্বল শ্যামলা হলে আর কোন কথা নাই ... ঐটা গোধূলিরই অটোবায়োপ্সি ধরে নিতে হবে। সম্রাটের গায়ের রং নিয়ে যেহেতু কিছু বলা হয় নাই তাই এটা একটা গল্প হোলেও হোতে পারে।

৫ দিলাম।


হাঁটুপানির জলদস্যু

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- হাহাহা
গোধূলি'র গায়ের রঙ না গুলাবি কইছিলি! আজকে আবার শ্যামলা বললি ক্যান, তাও আবার উজ্জ্বল!

অটোবায়োপ্সি খুঁজলে এখানে দেখ। এইটা হোলেও হোতে পারে

লেখাটা পড়ার জন্য কৃতজ্ঞতা আর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। তোর লাইগা একটা নিদারুন সঙ্গীত।
সুবহানাল্লাহ্

Romantic Instrumen...

___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

মুশফিকা মুমু এর ছবি

হুমমম চিন্তিত গানে দেখা যায় চাইনিজ চাইনিজ গন্ধ
আমার মনেহয় এই জুন মাসে কোনও চাইনিজ ললনার সাথে কিছু একটা হয়েছিল যা থেকে এই কাহিনীর উৎপত্তি, কি ঠিক ধরিনি ধু গো ভাই খাইছে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- হেহ হেহ হেহ- জুন মাস খালি? বছরের প্রতিটা মাস, প্রতিটা দিনেই আমার এইরকম হা-হুতাশ মার্কা কাহিনী লেখোনের মতো উপাত্ত পাওন যায়।

গানে চাইনিজ একটা গন্ধ আছে, এবং ফ্লেভারটাও সেরকমই। কিন্তু স্বাদটা হলো রোমান্টিক! চোখ টিপি
এটাই দেখার বিষয়, না কী কও!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অতিথি লেখক এর ছবি

দুইবার পড়লাম. কিন্তু লেখার ভেতর রাজনীতির কোন গন্ধ পেলাম না। তবে কি জনাব প্রেম নিয়ে রাজনীতিটা আপনিই শুরু করলেন। ক্যাটাগরীতে গল্প লেখা নাই বলে পড়ে ভাল লাগার বদলে খানিকটা খারাপ ই লাগল কথিত সম্রাটের জন্য।

রাফি

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ক্যাটাগরীতে গল্প দেই নাই কারণ সচলে যারা গল্প লিখেন তাঁদের মতো একটা লাইন লিখতে কম করে হলেও আমাকে আরও ছয়বার জন্মাতে হবে। হাসি

রাজনীতি দিয়েছি কারণ আমাদের দেশে এই ক্ষেত্রটায় এখনো স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ রয়ে গেছে। নামের প্রতি সুবিচার করি আরকি! চোখ টিপি

আর প্রেম নিয়ে রাজনীতি আমি শুরু করবো ক্যান? সেই আদমের আমল থেকেই তো ওটা হয়ে আসছে। আমি তো পদাঙ্ক অনুসরণকারী মাত্র।

মন্তব্যের জন্য আপনাকে শোকরানে মহাসাগর।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

তানবীরা এর ছবি

আমি মহামান্য লীলেন ভাইয়ের সাথে দ্বিমত পোষন করলাম, স্বপ্নেই যখন যাচ্ছে বেচারা, তখন প্রেমিকার হাত ধরেই যাক না।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- লীলেন ভাইয়ের সাজেশন ঠিকই আছে। কারণ শেষের অংশটুকু আগের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না। কেমন বেখাপ্পা লাগছে, দেখেন। সেজন্যই বোধকরি তিনি ওখানেই গল্পটি থামিয়ে দিতে চেয়েছেন।

তবে আমিও মনে করি স্বপ্নেই যখন যাবে ব্যাটা তাহলে আর হাত ধরে কেন, কোলে উঠেও তো যেতে পারে। চোখ টিপি
ফি আমানিল্লাহ্
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

তানবীরা এর ছবি

Ami abar Sahnaj Rahmotullah, "sopno seto sopno ee noi, jodi na kichu tar sottyi hoi ..........."

hihihihi

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

ঠিক! স্বপ্নেই যখন খামু তাইলে আর পান্তাভাত ক্যান? হক কথা!
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

স্বপ্নাহত এর ছবি

গুরু, পুরা ফাটানি হইসে।

---------------------------

থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- অনেক ধন্যবাদ গুরু।
মাঝে মাঝে তব্দা খাইয়া ভাবি ফাটানি কারে কয় তা আপনার ছন্দজটগুলোয় চোখ বুলালেই বুঝা যায়। আপনার কড়ে আঙুলের সমান গুণও যদি থাকতো এই অধমের! মন খারাপ
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍এই স্বপ্নটা সত্যি হলে কী এমন ক্ষতি হয় জগতের!

কিছু কিছু স্বপ্ন সত্যি হলে মন্দ হয় না। তবে কিছু স্বপ্ন অপূর্ণ থাকা ভালো।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আপনার এই মন্তব্য দশে সাড়ে নয় পাবার মতো।
আধা রেখে দিলাম কারণ, অপূর্ণের পাহার জমে গেছে যে! এর পরও যদি অপূর্ণ বেড়েই যায়, যেমনটা যাচ্ছে তাহলে সেটা কোথায় গিয়ে ঠেকবে বলেনতো।

মাঝে মাঝে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে যায় অপূর্ণ সেই সব স্বপ্নের কথা ভেবে। আবার এই ভেবে মনকে শক্ত করি, হয়তো পূর্ণ হয়ে গেলে সেই স্বপ্নগুলো সকল শ্রদ্ধা হারিয়ে ফেলতো। এখনতো তাও বলতে পারি, চোখ বুজে ভাবতে পারি, ভালো লাগাটা জাগাতে পারি- সবকিছু পূর্ণ হয়ে গেলেতো এই অসাধারণ অনুভূতিটা থেকে বঞ্চিত হতাম।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍ভালো লাগাটা জাগাতে পারি...

সেটাই মূল কথা।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

সুমন সুপান্থ এর ছবি

দশে সাড়ে ছয় দেয়া যায়
সই ।
তাই দিলাম ।

---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

ধুসর গোধূলি এর ছবি
সুমন সুপান্থ এর ছবি

কুপোকাত কেন ভায়া ! এতো জয়ধ্বনির শব্দপাত !

---------------------------------------------------------

আমার কোন ঘর নেই !
আছে শুধু ঘরের দিকে যাওয়া

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

কীর্তিনাশা এর ছবি

ধুগো ভাই গল্প ভালো হইছে। তয় এইরম একই টাইপের কাহিনী আর কত লেখবেন। এইবার দু একটা খাইষ্টা ছাড়েন না। পইড়া একটু রসনা জুড়াই।
[img=auto]Free Smileys & Emoticons at Clipart of.com[/img]
--------------------------------------
সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে !

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আমার জীবনে তো এর চাইতে আলাদা কোনো কাহিনী নাই। লেখতে গেলেও খালি এইত্তাই আইসা পড়ে, কী করুম কন! মন খারাপ

খাইস্টা জিনিষ লেখুম না। ভালো হৈয়া যাইতাছি মিয়া। দেখেন আল্লাহ্-খোদার নাম লই খালি।

আলহামদুলিল্লাহ
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

দ্রোহী এর ছবি

যাক ! অবশেষে সু এর কথা জানতে পারলাম।

ন্যান এই অসাধারণ গানটা শুনেন । মন ভাল হয়ে যাবে ।


কি মাঝি? ডরাইলা?

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- লুইস মামুর গানটা শুইনা তো মনটা ভালো হওয়ার কথাই আছিলো মাগার ফটুকগুলা দেইখা তো আরও খারাপ হৈয়া গেলো মেম্বর সাব! মন খারাপ
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

বিপ্লব রহমান এর ছবি

চলুক আমি আপনাকে ৫ দিলাম। দেঁতো হাসি


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।