“অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে/ তব ঘৃণা তারে যেন তৃণ সম দহে"

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৯/০৪/২০১০ - ৯:০২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নির্দ্বিধায় বলতে পারি, মৌলবাদ কথাটি্ পাঠক অনেকবার শুনেছেন, কিন্তু সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত তথাকথিত “শিক্ষিত” মৌলবাদী কাউকে কী কখনো কাছ থেকে দেখেছেন? দেখেছেন কী, ধর্মের নামে তাদের চালিয়ে যাওয়া আস্ফালন?
খুব সম্প্রতি এমনি কিছু মৌলবাদীদের কাছ থেকে দেখার সুযোগ (কুযোগ ??) হলো।
পূর্বেই পটভূমিকাটি একটু বলে নিই, তাহলে ঘটনাটি বুঝতে হ্য়তো সুবিধা হবে! আমার হ্যাজবেন্ড সম্প্রতি পিএইচডি শেষ করে কানাডার একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে "রিসার্চ এসোশিয়েট" হিসেবে যোগদান করেছেন, তাই পুরনো শহরের সব বন্ধু শুভাকাংখীদের বিদায় জানিয়ে একটি নতুন শহরে থাকতে শুরু করেছি। নিজেও পিএইচডি করছি, পরিবারের সাথে থাকার জন্য ক্রেডিট ট্রান্সফার করে নতুন শহরে সেই একই বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য একজন প্রফেসরের সাথে রিসার্চ শুরু করেছি! দেখতে দেখতে প্রায় বছর ঘুরতে চলছে। ফেলে আসা শহরটির সাংস্কৃতিক প্রাণচাঞ্চল্যতাকে তীব্রভাবে প্রতিনিয়ত মিস করি।ফেইসবুকে ফেলে আসা শহরের বন্ধুদের পহেলা বৈশাখ উদযাপন, রবীন্দ্র নজরুল জয়ন্তীর ছবি দেখে দীর্ঘনিশ্বাস ফেলি, ছোট্ট মেয়েটি শুধায়, “মা, এখানে কেন, কিছু হয়না?” মেয়েটি আমার নাচতো, গাইতো তার ছোট্ট বন্ধুদের সাথে, কি অসীম আগ্রহ ছিল তার, শাড়ি পরে সেও সাবার সামনে নাচবে “আজি ধানের ক্ষেতে রৌদ্র ছায়ায় লুকোচুরির খেলা”!
কচিমনা এই সব শিশুদের প্রতি দ্বায়িত্ববোধ থেকেই সিন্ধান্ত নিলাম, নতুন এই শহরেও বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক কর্মচারণা শুরু করতে হবে!বিদেশের মাটিতে বেড়ে উঠা যে কোমলমতি শিশু কিশোরেরা বাংলামায়ের বুলিটিকেই ভুলতে বসেছে তাদের রবীন্দ্রনাথ কিংবা নজরুলের অমর সৃষ্টিগুলোর সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো; এ স্বপ্ন দেখতে গিয়ে বার বার আনন্দে উদ্বেলিত হয়েছি,! আমার অসম্ভব ব্যস্ত জীবনের যে সামান্য একটু অবসর, সেটিকেই ওদের সাথে ভাগাভাগি করে নেবার সিন্দ্বান্ত নিতে তাই এতটুকু দ্বিধা হয়নি। আমার সামান্য প্রচেষ্টায়, যদি ওরা শুদ্ধ বাংলায় গাইতে পারে, “আমার সোনার বাংলা” সেই আনন্দটির সাথে কিসের তুলনা চলে বলুন?

নতুন শহরে হাতে গোনা কয়েকটি মাত্র বাংলাদেশী চাকুরজীবী পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া গ্রেজুয়েট/ আন্ডারগ্রেজুয়েট স্টুডেণ্ট ফ্যামিলি/স্টুডেণ্টের বাস। সবার ই-মেইল এড্রেস যোগাড় করে, প্রস্তাবনা রাখলাম, “আসুননা, সবাই মিলে বাংলা নববর্ষ ১৪১৭ উদ্যযাপন করি, ছোট্ট একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে, বিদেশের মাটিতে বসে কিছুক্ষণের জন্য হলেও স্মরণ করব আমাদের বাংলামাকে”। সাড়া পেলাম, ভালোই, মনটা আনন্দে নেচে উঠলো, কিন্তু তখন ঘূর্ণাক্ষণেও ভাবিনি যে, সবার মাঝে ভদ্রলোকের মুখোশ পড়া মৌলবাদী ক’টি মানুষ চরম নাখোশ হয়েছে! তাদের আস্ফালন, “কীসের রবীন্দ্রনাথের কবিতা পাঠ, ওই ব্যাটাতো হিন্দু! কিসের নাচ, এতো বেলেল্লাপনা”! পরবর্তীতে অবশ্য বুঝতে এতটুকু সমস্যা হয়নি যে, তাদের এই আস্ফালন ছিল, ধর্মকে সামনে রেখে ক্যমুনিটিতে নিজ আধিপত্য বজায় রাখার হীন কৌশল মাত্র!

ওরা শুরু করলো এভাবে, “পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানের শুরু হবে, কোরাণ তিলোয়াত দিয়ে, তার পরপরই আরবী ভাষায় একটি নাশিদ পরিবেশনা, থাকতে হবে! সূরা তিলোয়াতের ব্যাপারটি নির্দ্ধিধায় মেনে নিলাম, কারণ, আমরাতো ধর্মপ্রাণ জাতিও বটে, পরম করুণাময়ের সাথে তো কারো কোন বিরোধ থাকার কথা নয়।আমার প্রিয় নবীর জন্য নাশিদ পরিবেশনা হবে, হোক না! কিন্তু মনটা বেঁকে বসলো, আরবী ভাষার ব্যাপারে।আমাদের বাংলা ভাষাতেই তো কবি নজরুলের লেখা কি অসম্ভব সুন্দর-সুন্দর হামদ, নাত আছে, যেহেতু বৈশাখী অনুষ্ঠান, তাই নাশিদ করলে সেটা বাংলাতেই করতে হবে, এ ছিলো আমার প্রস্তাবনা! শুরু হলো আমার বিরুদ্বে অপপ্রচারণা, “আমি নাকি ইসলাম বিদ্বেষী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে যা তা করে বেড়াচ্ছি”।রিহার্সেল করতে গিয়ে দেখি, মৌলবাদীদের একজনের ছেলে বার বার সূরা পাঠে ভুল করছে, তবুও তাকেই সূরা পাঠ করতে দিতে হবে, কেননা, সে এই শহরের প্রভাবশী পুরানো এক অধিবাসীর ছেলে! ভুল হলে হোক, ছেলের সূরা পাঠের মধ্য দিয়ে তো সেই মৌলবাদীর আধিপত্য বিস্তার হচ্ছে! দ্বিতীয় আঘাত এলো আমার উপর, কেনো আমি হিন্দু পরিবারদের (সব্য সাকুল্যে ৪/৫ টি হিন্দু পরিবার আছে মাত্র) ক্যমুনিটির প্রোগামে নিমন্ত্রণ করলাম! একজন সিনিয়র ভাই আছেন, যার ওয়াইফ ইটালীয়ান, তাকেও ক্যমুনিটির প্রোগামে অচ্ছুত রাখতে হবে! আগেই বলেছি, এ শহরে আমি নতুন! হিন্দু পরিবারগুলোকে যে পারিবারিক আনুষ্ঠানাদি তে অনাহুত রাখা হয়, তা তখনো বুঝে উঠতে পারিনি। তাদের এই আচরণ নাহয় এ যুক্তিতে তাও মানা যায় যে ব্যাক্তিগত আনুষ্ঠানে কে আমন্ত্রিত্র হবে্ন, কে হবেন না, সে ব্যাপারে ব্যাক্তির ইচ্ছা অনিচ্ছাটাই আসল! কিন্তু ক্যমুনিটির প্রোগামে তাদের কোন যুক্তিতে অচ্ছুত রাখতে হবে, সেটি খুঁজে পেলাম না!
অন্যায়ের প্রতিবাদ করার মত সহযোদ্ধা কাউকে পেলাম না! সবার ভাবখানা এই যে, আমরা তো ভালোই ছিলাম, একে অপরের বাসায় দাওয়াত খাচ্ছি, এর পেছনে ওকে পচাচ্ছি, খামাখা কী দরকার ছিল এইসব বাংলা অনুষ্ঠানের! তুমি যখন শুরু করেছিলে, তখন তোমার হ্যাপা তুমিই সামলাও! আমারই পাঠানো বৈশাখী আনন্দোৎসব অনুষ্ঠানের গ্রুপ ই-মেইলে আসতে শুরু করলো সেই সব তথাকথিত “শিক্ষিত” মৌলবাদীদের রিপ্লাই! তাদের হুংকার, “হিন্দুদের বর্জন করতে হবে”! দু’একেক্ টি ক্ষীণ ইনডাইরেক্ট প্রতিবাদের রিপ্লাইও এসেছে বটে, তাও সেই এক সুর, এটি আমাদের ঝামেলা নয়…তুমি জুড়ে ছিলে তুমিই ওদের সাথে কথা বলে আপোষ রফা করে নাও!
কানাডার মত উন্নত দেশের একটি শহরে (পাঠকের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি, বাংলাদেশে তারাই ছিলেন ডাক্তার, ইঞ্জিনীয়ার, কৃষিবিদ) এতোটা গোঁড়া মৌলবাদী থাকতে পারে, তা আমার কল্পনাতেও ছিল না!সারা জীবন সৎ এবং সুন্দ্র থাকার সাধনা করেছি, সুস্থ সংস্কৃতির নিরলশ কর্মী হিসাবে নিয়োজিত থেকেছি, তাই আপোষ করতে পারিনি! বাংলাদেশী ক্যমুনিটির মাঝে “ধর্ম” যে কখনো বিভাজন রেখা হতে পারে না, সেই সত্যটি কেই বার বার উচ্চারন করে যাচ্ছি, কথাটি সেই মৌলবাদীদের কানে ঢুকুক আর নাই বা ঢুকুক! ফলাফল, পন্ড হলো “বৈশাখী আনন্দোৎসব অনুষ্ঠান”, আমি হলাম একঘরে, (আমার সাথে নরম পন্থীরাও মিশতে ভয় পায়, পাছে তাদের গায়ে সেই প্রভাবশালী মৌলবাদীরা আবার কোন নতুন তকমা এঁটে দেয়, কী দরকার ঝামেলায় গিয়ে, মুখবন্ধ করেই তো ভালো থাকা যাচ্ছে)!
আমার কোন দুঃখবোধ নেই, কারণ আমি অন্যয, অন্যয় আব্দারের কাছে মাথা নত করিনি! সচলায়তনের সচেতন পাঠকদের সাথে শেয়ার করলাম না করে পারলাম না, কারণ হয়তো আপনার পাশের মানুষটিও হতে পারে সেই শ্রেণীভুক্তদের একজন, যে “ইসলাম” গেল গেল বলে জান কোরবান করে ফেলছে, অথচ কানাডিয়ান ব্যাংক ইন্ট্রারেস্টের তাবদ সুবিধা নিয়ে বাড়ী, গাড়ী হাকাচ্ছে, হালাল হারামের সজ্ঞা দিতে দিতে মুখে ফেনা তুলে পরক্ষণেই বউ বাচ্ছা নিয়ে দিব্ব্যি ম্যাকডোনালসে চীকেন, বীফ দেরারসে গিলছে! প্লীজ সজাগ থাকুন, প্রতিবাদ করুন এসব ভন্ডামীর বিরুদ্ধে! ভুলে যাবেন না প্লীজ রবীন্দ্রনাথের সেই বাণী, “অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে/ তব ঘৃণা তারে যেন তৃণ সম দহে”।


মন্তব্য

নীল-মডু এর ছবি

আপনার নাম এবং ইমেইল প্রকাশটি পূর্নবিবেচনা করার অনুরোধ করি। আপনি নাম প্রকাশ করতে না চাইলে মন্তব্য আকারে অথবা contact এট sachalayatan বরাবর ইমেইল করে জানাতে পারেন।

সাফি এর ছবি

আমার ও মনে হয় আপনার জন্য নিজের নাম প্রকাশ করা নিষ্প্রয়োজন এক্ষেত্রে

বেগুনী-মডু এর ছবি

প্রাপ্ত ইমেইলে অনুরোধের প্রেক্ষিতে নাম এবং ইমেইল এড্রেস সরানো হল। ধন্যবাদ।

অগ্নিবীনা এর ছবি

বেগুনী মডুকে অসংখ্য ধন্যবাদ তার rapid action এর জন্য!

ড ওমর ফারুক এর ছবি

বানান বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। লেখায় যে বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে, সেটি নিতান্ত একজন ব্যক্তির নিজস্ব অবলোকন ও পর্যবেক্ষণ বৈ কিছু নয়। কম্যুনিটি সংগঠন করতে গেলে সকলকেই নিয়ে যারা কাজ করতে পারে, তারা মূলত সফল কমুনিটি কর্মী হয়। একজন জানোশোনা মানুষের লেখায় এত বাংলা বানান ভুল থাকলে তিনি অন্য মানুষের সাথে মতানৈক্য নিয়ে লম্ব কলাম লিখতে চাইলে কেমন জানি ঠেকে।

অতিথি এর ছবি

লেখায় যে বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে, সেটি নিতান্ত একজন ব্যক্তির নিজস্ব অবলোকন ও পর্যবেক্ষণ বৈ কিছু নয়।

কোনো কিছু একজন ব্যক্তির নিজস্ব অবলোকন ও পর্যবেক্ষণ হলে কি সেটা মিথ্যা হয়ে যায় নাকি? "নিতান্ত" এবং "বৈ কিছু নয়" শব্দগুলি সহযোগে ও সুক্ষ্ণ কুশলী প্রয়োগে আপনার এই ব্যক্তিগত নিজস্ব অবলোকন ও পর্যবেক্ষণটাই বরং আমার কাছে অনেক বেশি ইন্টারেস্টিং লেগেছে!! আপনি কি বাই এনি চান্স, লেখিকার কথিত ঐ "প্রভাবশালী" ব্যক্তিবর্গের মধ্যে কেউ ছিলেন?? হাসি

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আপনি অবশ্যই ঠিক কাজটি করেছেন। আমি থাকলে প্রকাশ্যে আপনার সাপোর্ট নিতাম। ধর্মান্ধ কুপমন্ডুকদের জন্য ঘৃণা থাকল।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অগ্নিবীনা এর ছবি

ধন্যবাদ মুর্শেদ, নিজেদের সত্যি এক সময় খুব একা মনে হচ্ছিল! ঘটনাটি নিতান্তই কাটছাঁট করে লিখেছি, এরা যে আরো কত পলিটিক্স করেছে.. এখনো করছে! আপনাদের এই সাপোর্ট টুকু আমাকে শির উঁচু করে থাকতে সাহস যোগাবে!

অতিথি লেখক এর ছবি

একটা ভাল উদ্যোগ বিফলে গেল, এটা দুঃখজনক। তবে অনেকের মুখোশ খুলে গেল, এটাই প্রাপ্তি। আপনার অবস্থানকে নির্দ্বিধায় সমর্থন জানাই।

কৌস্তুভ

অগ্নিবীণা এর ছবি

সত্যি এদের চিনতে পারাটা খুব দরকার ছিল! সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ!

শরতশিশির এর ছবি

স্বাগতম সচলায়তনে। আর এরকম ঘটনা প্রবাসে অহরহ ঘটে, কাজেই দমে যাবে না। একবার হতে দিলো না তো কী হয়েছে, বারবার তো আটকাতে পারবে না! ছোটখাট নেটওয়ার্কিং করতে থাকো, আর মানুষকে বুঝাও কী তোমার উদ্দেশ্য, যতই আটকাক, সামনের বছর ঠিকই অনুষ্ঠান হবে, দেখো!

'শিক্ষিত' হতে আসলে খালি সর্বোচ্চ ডিগ্রী থাকলেই কিন্তু হয়না, মন বড় আর উদারও হতে হয়। 'মানুষ' হয়ে জন্মানো সহজ কিন্তু সত্যিকারের মানুষ হয়ে ওঠা সহজ কাজ নয়। কাজেই, নিরাশ হয়ো না, কোথাও না কোথাও কাউকে না কাউকে শুরু করতে হয়, আর জানোই তো শুরুতে বাধা আসা কোনও ভাল উদ্যোগের, শুরু করার মতোই স্বাভাবিক ব্যাপার। বুঝতে পেরেছো যে যারা আটকাচ্ছে তারা আসলে নিজেদের হাত থেকে ক্ষমতার রশি গলে চলে যাবার ভয়ে দিশেহারা হয়েই করছে, কাজেই তুমি না থেমে বরং নতুন উদ্যমে অন্যদের সাথে নিয়ে তৈরী হতে শুরু করো।

শুভকামনা রইলো। হাসি

অফটপিকঃ জ়িহান, দীপা তোমার বন্ধু, না? আমি তোমার প্রোফাইল আগে দেখেছি ফেইসবুকে। হলিক্রসের মেয়েরা সবসময় নেতৃত্ব দেয়। কাজেই একদম পিছু হঠবেনা। সত্যের, সুন্দরের জয় হবেই। আমরা কয়েকজন আছি এখানে, আমাদের তরফ থেকে আবারও সুস্বাগতম! হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

অগ্নিবীণা এর ছবি

শরত শিশির, সাদর অভ্যর্থনার জন্য সত্যি আনন্দিত!
জানো কি, আমি দমে যাইনি, সবাই যখন আমাকে (আমার হ্যাজবেন্ডকেও) চাপ দিচ্ছিলো অন্যায়কারীদের সাথে আপোষ করতে, ওদের তখন একটা কথাই বলেছি, যা কিছু অন্যায় তাকে আমি অন্যায় বলে প্রতিবাদ জানাবোই! তাতে কার আঁতে ঘাঁ লাগলো, সে নিয়ে আমি চিন্তিত নই! আমায় অনেকে বলেছে, "বোকা"; কারণ আমি নাকি প্লাস মাইনাস করে পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিয়ে পারি না! কি মাইনাস করবো হিন্দুদের? এইতো মাত্র ৪ মাস হলো নতুন একটি দম্পতি (দুজনই সদ্য বুয়েট থেকে বের হওয়া) আমার ইউনিভার্সিটিতেই মাস্টার্স করতে এসেছে! বৈশাখী প্রোগাম নিয়ে তাদের সে কী উচ্ছ্বাস! এখন তুমিই বলো, ওদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র প্রোগাম করার জন্যই কী আমি আপোষ রফা করে প্রোগাম চালিয়ে যাব!
আবারো ধন্যবাদ সমর্থনের জন্য!
পুনশ্চঃ একটু ভুল হয়েছে, আমি চিটাগাং কলেজের ছিলাম! কিন্তু হলিক্রসের অনেক বন্ধু আমার!

অতিথি [অতিথি] এর ছবি

আমেরিকায় আমি যে শহরে থাকি, তার থেকে ১০-১২ ঘন্টা দূরের এক শহর থেকে একবার দুজন বাংলাদেশী এলেন, আমাদের শহরে। তাদের মধ্যে একজন আমাদের পূর্ব পরিচিত, তাই আমরা আবদার করলাম যেন বাইরে না খেয়ে আমাদের সাথেই খাওয়া দাওয়া সারেন। পূর্বপরিচিত জনকে আগেই জিজ্ঞেস করে নিয়েছিলাম হালাল/হারাম বিষয়ে তাদের কি অবস্থান, তখনই জানলাম পথে তারা ম্যাকডোনাল্ডসের বার্গার খাচ্ছেন আর এ বিষয়ে তারা 'হালাল খেতেই হবে' অবস্থানে নেই। যাই হোক, ওয়ালমার্টের থেকে কেনা মুরগী, গরু সহকারে বেশ যত্ন করেই আমার স্ত্রী তাঁদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেন। ওনারাও আমাদের শহরে কাজ সেরে দুদিন পরেই নিজেদের শহরে চলে যান।

এই ঘটনার এক দেড় সপ্তাহ পরে, ঐ একই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারি, আমরা নিজেরাতো হালাল খাই না, উল্টো অন্যদেরকেও হারাম খাইয়ে দেই। আমাদের পূর্ব পরিচিত ভদ্রলোকের যে বন্ধু তাঁর সঙ্গে এসেছিলেন, তিনি যাত্রাপথে ম্যাকডোনাল্ডসে উদরপূর্তি করলেও বাসায় এনে কেন তাকে হারাম মুরগি বা গরু খাওয়ানো হল, এই বিষয়ে সারা বিশ্ববিদ্যালয় চাউড় করে দিয়েছেন।

আর কি বলব?

মডুদের প্রতি ঃ আমি একজন নিবন্ধিত সচল কিন্তু নিজের পরিচয়ে এ ঘটনার বর্ণনা লিখলে অন্যদের পরিচয় ফাঁস হয়ে যেতে পারে, তাই অতিথি লেখকের সাহায্য নিলাম।

অগ্নিবীণা এর ছবি

এবার বুঝুন মানুষ কতো তালের হয়! ভাবতে খুব অবাক লাগে, এদের কথা আর কাজে এত ব্যাপক পার্থক্য কেন?

ফাহিম এর ছবি

পুরোপুরি সুবিধাবাদী ও হিপোক্রিটিক আচরণ। নেক্সট টাইম গদাম দেবেন!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

অগ্নিবীণা এর ছবি

"গদাম" like this word হাসি

দ্রোহী এর ছবি

ভাগ্যের ফেরে কোন "পবিত্র শহরে" গিয়ে উঠেছেন নিশ্চয়ই!

অগ্নিবীণা এর ছবি

সে আর বলতে হাসি

মূলত পাঠক এর ছবি

এই সব জানোয়ারকে দূর করে দিন জীবন থেকে। সবল দুর্বল দু গোত্রের জানোয়ারদেরকেই, সম্ভব হলে বাছা বাছা খিস্তি শুনিয়ে। বিদেশে আছেন, নিজের সংস্কৃতির প্রতি টানটা বুঝতে পারি। কিন্তু অমানুষের সংস্কৃতি থাকে না, তার চেয়ে নির্দ্বিধায় মিশুন ভিনদেশিদের সাথে, শুরুতে বাধো বাধো ঠেকতে পারে, কিন্তু কথা দিচ্ছি বছর ঘুরতে না ঘুরতে দেখবেন অনেক চমৎকার বন্ধু পেয়ে গেছেন। আর আপনার সন্তান আরো তাড়াতাড়ি বন্ধু জুটিয়ে ফেলবে, তাকে নিয়ে ভাববেন না। বন্ধুত্ব কি দেশ জাত ধর্ম মেনে হয়? সমমনস্ক মানুষ পেলেই দোস্তি করে ফেলুন।

অগ্নিবীণা এর ছবি

বিশ্বাস করুন, ঠিক আপনার মতই ভেবেছি আমি আর আমার হ্যাজবেন্ড! এছাড়া কি আর করা যাবে বলুন! তবে আমার মেয়েটার জন্য একটু কষ্ট হয় বৈকী! বিদেশের মাটিতে জন্মানোর স্বত্ত্বেও কি ভাবে যেন ওর ভেতর বাংলাদেশ, বাংলা সংস্কৃতির প্রতি অকৃত্রিম একটি টান আছে! ও খুব শুদ্ধ বাংলায় কথা বলতে পারে, মাত্র পৌ্নে তিন বছর বয়সে ও স্টুডেন্টদের একটি প্রোগ্রামে "আজি ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায়" গানটি গেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়ে ছিল! অবসর পেলে কখনো শুনে নিতে পারেন!
http://www.youtube.com/watch?v=dh2y-U7CFyM

ধন্যবাদ!

শরতশিশির এর ছবি

আপনার মেয়ের ভিডিওটা দেখলাম। এত্তো কিউট, মাশাল্লাহ! এইজন্যেই আমি 'মেয়ে' চাই! হাসি

আপনি একদম থামবেন না, নিজের মতো করে শুরু করুন। দেখবেন, আস্তে আস্তে অন্যরাও এসে যোগ দিচ্ছে। সাহস জিনিসটা অনেকের মধ্যেই খুবই কম, বাইরে আসলে তো আরও নানারকম সংকোচে ভুগে অনেকে। তাই, একজন শুরু করলে অন্যরাও আসবে, দেখবেন!

নতুন নিকটি দিয়ে রেজিস্টার করে নিন, তারপর কিছুদিন পরেই 'অতিথি' স্ট্যাটাস চলে আসবে। তারপর দেখতে দেখতে একদিন পূর্ণমাত্রায় 'সচল'-ও হয়ে যাবেন। অনেক, অনেক শুভেচ্ছা রইলো।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

অকালকুষ্মান্ড এর ছবি

আমার নিজের অভিজ্ঞতা একটু বলি। কানাডাতে পড়তে আসি এক ছোট্ট শহরে। আমরা প্রায় ১২-১৫ জন ছাত্র/ছাত্রী, প্রায় সকলে বুয়েটের।আমরা একটা পহেলা বৈশাখ বা একুশে ফেব্রুয়ারির আনুষ্ঠান করতে পারিনি শুধু পড়াশুনা আর সাবমিশানের ওজুহাতে। দেখি শুধু ধর্ম আলাদা বলে মানুষ আলাদা হয় কিভাবে? যে অভিজ্ঞতা দেশে হয়নি, তা বাইরে পড়তে এসে হোলো।

অগ্নিবীণা এর ছবি

অকালকুষ্মান্ড, আপনি নিজে যখন একজন স্টুডেন্ট, তখন নতুন করে আর ব্যস্ততার বিবরণ পেশ করার প্রয়োজন দেখছি না! শত ব্যস্ততার মাঝেও বিশেষদিন গুলোকে এড়িয়ে যাওয়া দূর্ভাগ্যজনক! ব্যস্ততার মাঝ থেকেই সময় বের করে নিতে হয়, কি বলেন?

শামীম এর ছবি

দেশে হয়তো নিয়মিত নামাজি ছিল না ... কিন্তু বিদেশে পাক্কা নামাজি। দেশে সাধারণ কাপড় চোপড় পড়তো। বিদেশে ওদের মত পড়তে পারে না .. তাই নিজের মত না পড়ে মাথায় স্কার্ফ ইত্যাদি পড়ে। ধর্ম পালন ব্যাপারটা দোষের কিছু না ... বরং থিওরিটিকালি মানুষকে পরিশুদ্ধ করার জন্য দরকারী বিষয়; কিন্তু এসব ক্ষেত্রে হিপোক্রেসি দেখতে খারাপ লাগে।

এর পেছনের কারণ শুধু প্রভাব প্রতিপত্তি বিস্তার নয়, এর পাশাপাশি আছে আত্মবিশ্বাসের অভাব ... আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভোগে অনেক প্রবাসী তখন মুসলিম আইডেন্টিটিটা বেশি করে আঁকড়ে ধরতে চায়, প্রকাশ করতে চায় ... ... কিন্তু কথায় আছে না - লেবু বেশি কচলাইলে তিতা হয়।

আপনার লেখা পড়ে ভালো লাগলো।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অগ্নিবীণা এর ছবি

ধন্যবাদ শামীম! আপনার সাথে একদম একমত! যে ব্যাপারটার কথা লিখলাম, সেটিকেও আসলে এত কচলানো হয়েছে, মূল লেখাটিতে যার অনেক কিছুই আসেনি! বৈশাখের প্রোগাম একবারে সূরা কালাম পরেই শুরু করতে হবে, সে ব্যাপারেও আমার ব্যাক্তিগত দ্বিমত ছিল! কিন্তু সংখ্যা গরিষ্ঠের মতামত প্রতিফলনের ব্যাপারে আমি উদার বলেই নিজের মতামতকে উপেক্ষা করেছি।

আমার হ্যাজবেন্ড রসিক মানুষ! তিনি একটি ছোট্ট জোকস বলেছিলেন, এই ব্যাপারে! শেয়ার না করে পারছিনা!

" এক গ্রামে ছিল এক গরীব লোক, খেতেই পায় না তার আবার আলাম কালাম! একদিন তার খুব মাংশ ভাত খাবার ইচ্ছে জাগলো! বাড়ীর শেষ সম্বল কাঁসার ক'টি থালা বাসন মাথায় তুলে বাজারের পথে হনহন করে হেঁটে চলল সে! পথে দেখা হয়ে গেল, মসজিদের ঈমাম সাহেবের সাথে! তিনি শুধালেন, কই যাও মিয়া? লোকটি বলল, বাজারে যাইতাছি হুজুর, এইডি বেইচ্যা গোশত কিন্যা আইন্যা, গোশত ভাত খামু! হুজুর বললেন, আহা, ইনশাল্লাহ বলেই না হয় কথাটা শেষ করো। সেই লোকটা আগ পিছ চিন্তা না করেই ঠাস ঠাস করে বলে বসল, আমার জিনিষ আমি বেইচ্যা, সেই টাকায় গোশত কিনুম, এই খানে আবার আল্লাহ বিল্লাহর কি আছে? দুর্ভাগ্যবশত সেই লোকটির বাসন বেচা টাকা, মাংশ কেনার আগেই পকেট মার হয়ে যায়! দুঃখ ভরাক্রান্ত চিত্তে সে বাড়ী ফিরছিল। আবারো তার দেখা হয়ে গেল, ঈমাম সাহেবের সাথে! ঈমাম সাহেব শুধালেন, কিহে তোমার গোশতের পোটলা কই? লোকটির জবাব, আলহামদুল্লিলাহ আমার সব টাকা চুরি হয়ে গেছে হুজুর!"

অর্থাৎ যেখানে প্রযোজন, সেখানেই ধর্মকে implement করা উচিত! একে কচলে তিতা বানানোর কোন যৌক্তিকতা দেখি না!

সূরার অনুপস্থিতির কারণে আর যাই হোক, আমার মুসলমানিত্ব কমে যাবে, এ আমি বিশ্বাস করিনা! আমার ঈমান এতটা ঠুনকো নয়! প্রকৃ্ত পক্ষে পবিত্র কোরাণ শরিফের মর্যাদা যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, সে খেয়ালও তাদের নেই! ভুল ভাল হলেও সূরা পড়তেই হবে! আজব সব মানুষজন!
ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য...

অতিথি লেখক এর ছবি

এই যদি হয় বিদেশে বাঙালির অবস্থা, তাহলে সঞ্জীবের (বঙ্কিম চাটুজ্জের বড় ভাই)-এর সেই কথাটার আর সত্যতা কী যে, "বিদেশে বাঙালি সজ্জন?"

মনে হয় বাঙালিদের থেকে দূরে থাকাই সমাধান।

স্বর্গও কি এসব জ্ঞানপাপীদের হাত থেকে নিরাপদ?


এর পেছনের কারণ শুধু প্রভাব প্রতিপত্তি বিস্তার নয়, এর পাশাপাশি আছে আত্মবিশ্বাসের অভাব ... আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভোগে অনেক প্রবাসী তখন মুসলিম আইডেন্টিটিটা বেশি করে আঁকড়ে ধরতে চায়, প্রকাশ করতে চায়

শামীমের এ-মন্তব্যে সহমত, কিন্তু, আঁধার কাটাবেটা কে?

---মহাস্থবির---

অগ্নিবীণা এর ছবি

সত্যি কথা কি, বিদেশে বাঙালির অবস্থা আরো লেজে গোবরে (অবশ্যই সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলছিনা)! বাপ মা "এর" জাত গেল, "ওর" ধর্ম গেল বলে টিপ্পনী কাটছেন, আর নিজের ঘরের সন্তানটি যে দুনিয়ার কুকর্ম করে বেড়াচ্ছে, সে বাপ্যারটি চাপা দিতে অতি সর্তক! ভেল্কী বটে!

অতিথি লেখক এর ছবি

মুর্শেদ ভাই এর কথার অনুরণন করি...

আপনি অবশ্যই ঠিক কাজটি করেছেন। আমি থাকলে প্রকাশ্যে আপনার সাপোর্ট নিতাম। ধর্মান্ধ কুপমন্ডুকদের জন্য ঘৃণা থাকল।

শরতশিশিরকে কোট করি,

'শিক্ষিত' হতে আসলে খালি সর্বোচ্চ ডিগ্রী থাকলেই কিন্তু হয়না, মন বড় আর উদারও হতে হয়। 'মানুষ' হয়ে জন্মানো সহজ কিন্তু সত্যিকারের মানুষ হয়ে ওঠা সহজ কাজ নয়।

ধর্মের লেবাসে ওইসব বকধার্কিক আর ভন্ডদের প্রতি ঘৃনা।

---
অচল পয়সা

অগ্নিবীণা এর ছবি

পাশে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ!

হাসিব এর ছবি

একটা নোট - আপনি যে মৌলবাদিদের কথা বললেন ওরা ধর্মীয় মৌলবাদ । মৌলবাদ ধর্ম ছাড়া যেকোন ইস্যুতেই হতে পারে । শুধু ধর্মীয় গোড়ারাই মৌলবাদি এই ধারণাটা বিপদজনক ।

অগ্নিবীণা এর ছবি

খুব গুরুত্ব পূর্ণ একটি নোট! ধন্যবাদ সুত্র ধরিয়ে দেবার জন্য!

নাশতারান এর ছবি

আপনার মানসিক যন্ত্রণা বুঝতে পারছি। আশাহত হবেন না। মৌলবাদীরা মূলত সুবিধাবাদী। ধর্মের দোহাই দিয়ে নিজেদের সুবিধাজনক অবস্থান নিশ্চিত করতেই এরা ব্যস্ত। বাইরে গিয়ে অনেকে আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভোগেন। সামাজিক বন্ধন খুঁজতে পাঁড় ধার্মিক হয়ে যান হঠাৎ করে। আপনি এই সংকীর্ণ মানসিকার গন্ডিতে আবদ্ধ হতে চাচ্ছেন না বলেই এদের চক্ষুশূল হচ্ছেন।

ভালো থাকুন। সাহসী থাকুন।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

মামুন হক এর ছবি

লেখাটা পড়ে খুব খারাপ লাগলো, বেশ অবাকও হলাম। সব ধর্মের মানুষ মিলেইতো আমাদের সংস্কৃতি। ইসলামের নামে যারা অন্য ধর্মের অনুসারীদের হেয় করে তাদের হাত পা বেঁধে আফগানিস্তানে পাচার করে দেয়া দরকার।

আপনি হাল ছাড়বেন না দয়া করে।

অগ্নিবীণা এর ছবি

"সব ধর্মের মানুষ মিলেইতো আমাদের সংস্কৃতি"।
আমারও খটকা লাগে, এই সহজ কথাটি না বোঝার কি আছে? ধন্যবাদ পাশে থাকার জন্য!

গৌতম এর ছবি

আপনার সাহস, একাগ্রতা, চিন্তার পরিশীলতা ও মুক্তবুদ্ধিকে স্যালুট জানাই।

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

অগ্নিবীণা এর ছবি

ধন্যবাদ গৌতম!

ধ্রুব সাহা [অতিথি] এর ছবি

আপনার লেখাটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আমি নিজেও হিন্দু এবং এই বিষয় গুলো কে প্রতিনিয়ত-ই অনেক কাছে থেকে উপলব্ধি করছি। আগে নিজেকে বুঝাতাম এই বলে যে এই বিষয় গুলো যারা কম শিক্ষিত তদের মাঝে বেশি। তবে এখন বুঝতে পারি যে আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষের মাঝেই এটা গেথে গেছে। যারা তথাকথিত ভালো, তাদেরকেও আমি ভালো বলতে চাই না। কারণ তারা প্রতিবাদ করে না। আমার অনেক বন্ধু কে আমি দেখেছি তাদের সামনে আমাকে কিছু বললে তারা চুপ করে থাকে। আপনার মতো অল্পকয়েকজন ই আছেন যারা সবার সামনে প্রতিবাদ করতে সাহস পান। আপনাকে অজস্র ধ্ন্যবাদ।

অগ্নিবীণা এর ছবি

ধ্রুব, আপনার কথাটি অতি সত্য! কিন্তু এটি কেবল ধর্মের ব্যাপারে নয়, অন্যান্য ব্যাপারেও সত্য! মানুষজন দিনে দিনে যেন কেমন হয়ে গেছে! চোখের সামনে অন্যায় হচ্ছে দেখেও, না দেখার ভান করে! অন্যায়ের প্রতিবাদ হয় না বলেই অন্যায়গুলো আরো মাথা চাড়া দিয়ে উঠে! আপনার প্রতি অনুরোধ রইল, কখনও দুঃখবোধ মনের মাঝে চাপা দিয়ে রাখবেন না! আপনার মতামতটি আপনি জোর গলায় উচ্চারণ করবেন প্লীজ!

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আমরা দেশেও দলাদলি করি, বিদেশেও। দলাদলি না করে আমাদের ভালো লাগে না। তাছাড়া আউটডোরের চেয়ে ইনডোরে আমাদের পারফর্ম্যান্স ভালো। রান্নাবান্না করে খাওয়া দাওয়ায় আমাদের যতোটা উৎসাহ বাইরে গিয়ে ভ্রমণে বা খেলাধুলায় বা একটা অনুষ্ঠন আয়োজনে ততোটাই অনাগ্রহ।

ধর্মের বাড়াবাড়িটা কেন আসে শামীম ভাই বলেছেন। তাছাড়া ধর্ম ব্যবসায়ী রাজনীতি করাদের একটা বড় অংশ বিদেশে প্রতিষ্ঠিত, এদের মধ্যকার নেটওয়ার্কও সুসংগঠিত। বিভিন্ন ইমেইল গ্রুপে বা ফোরামে এদের দলবদ্ধতা চোখে পড়ার মতো। ধর্মকে এরা এমনভাবে ব্যবহার করে যে, আপনি ধর্মের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে বললেই আপনাকে ধর্মের অবমাননার ট্যাগে ফেলে দিয়ে আক্রমণ শুরু হবে।

আমাদের একটা বিরাট অংশ বাই ডিফল্ট ছ্যাচড়াটাইপের সুবিধাবাদী এবং প্রবাসীদের মধ্যে এই হারটা অনেক বেশি। আমরা মাথা খাটাই কম। সুতরাং নিজের গায়ের ওপর এসে না পড়া যেকোনো বিষয়কেই সমস্যা মনে করে এড়াতে চাই। কেউ একজন একটা ভালো কিছু করলে তার ফল ভাগের সময় সামনে এসে দাঁড়াই; কিন্তু উদ্যোগ নেয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকি ঝুঁকির সন্দেহে। নোতুন কাউকে গ্রহণের ক্ষেত্রেও একই ঝুঁকির সম্ভাবনা কাজ করে। ধৈর্য রাখা টাফ; কিন্তু একটু ধীরে ধীরে নিজেকে স্ট্যাবলিশ করুন। তারপর দেখবেন এরকম অনেক শুভ উদ্যোগই অনেক সহজ হয়ে গেছে।

হালাল হারাম নিয়ে একটা পোস্ট দিলাম।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অগ্নিবীণা এর ছবি

অছ্যুৎ বলাই, পুরোপুরি সহমত! একটা ব্যাপার বাঙ্গালীর মাঝে খুব প্রকট! সেটা হলো মিলে মিশে, না থাকতে পারাটা! ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ থাকতেই পারে, কিন্তু এর উর্দ্ধে উঠে এসে, সবাই মিলে ভাল একটা কিছু করতে পারাটি শুধু মাত্র বাঙ্গালীর মাঝেই নাই!
পাশে থাকার জন্য অজস্র ধন্যবাদ!

পল্লব এর ছবি

আপনার প্রতি আমার পরামর্শ, আপনি ঐ "হিন্দু"দের নিয়েই পয়লা বৈশাখ করেন। "হিন্দু"টা ইনভার্টেড কমায় রাখলাম কারণ আমার কাছে এইটা একটা ট্যাগ ছাড়া আর কিছু মনে হচ্ছে না। একটা পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান সব ধর্মের সব বাঙালির জন্য একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, এইটা কুরআন তিলাওয়াত, নাশিদ এইসব দিয়ে কিভাবে শুরু করা যায় বুঝে পাচ্ছি না। আজব!

সাম্প্রদায়িকতার সাথে আপোষ করবেন না। এতক্ষণ করেননি, সেজন্যে অশেষ ধন্যবাদ। আপনার এলাকার এই "মুসলমানরা" যদি এইরকম হয়, কোন দরকার নেই তাদের সাথে সম্পর্ক রাখার।

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

ফাহিম এর ছবি

ইসলাম ধর্মে কোন জায়গায় বলা আছে যে, বিধর্মীদের সাথে উঠাবসা নিষেধ, জানতে পারলে ভালো হতো। আজব!

এইসব লোকজনের আচরণ যতটুকু ধর্ম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, তারচেয়ে অনেক বেশী নিজস্ব নীচতা দ্বারা। নিজের বিশ্রি মন মানসিকতা ঢাকতে এরা ধর্মের লেবাস ব্যবহার করে। এবং সাথে সাথে ধর্মকেও টেনে নামায়।

বলাইদার মন্তব্যের সাথে পুরোপুরি একমত। তিন জন বাঙ্গালী থাকলে পারমুটেশন কম্বিনেশন করে তিনটা দল করে আর নিজেদের মধ্যে মারামারি করে। কামড়াকামড়ি না করলে যেন পেটের ভাত হজম হয় না। যত্তসব...

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

কাকুল কায়েশ এর ছবি

তিন জন বাঙ্গালী থাকলে পারমুটেশন কম্বিনেশন করে তিনটা দল করে আর নিজেদের মধ্যে মারামারি করে। কামড়াকামড়ি না করলে যেন পেটের ভাত হজম হয় না। যত্তসব...

সহমত!
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

পল্লব এর ছবি

ধর্মে যেটা বলা আছে, তার খুব সুন্দর একটা ব্যাখ্যা শুনেছিলাম ইউসুফ এস্টেসের কাছ থেকে। যেটা বলা আছে, সেটার মানে হল অনেকটা এরকম, "বিধর্মীদের সাথে ally হয়ো না।" এবং ঐ আয়াত নাযিল হয়েছে যুদ্ধের সময়। ব্যাখ্যাটা এমন যে বলা হচ্ছে, যুদ্ধে তোমার ইহুদী-খ্রিস্টানদের থেকে তোমার মুসলমান ভাইকে বেশি বিশ্বাস কর। Ally আর Friend দুইটার মধ্যে বিস্তর ফারাক। বন্ধুত্ব পাতানো নিয়ে কোন বিধিনিষেধের কথা এসব জায়গায় কিছুই বলা নাই। যারা দাগ টানতে পছন্দ করে বা কম বোঝে, তারাই পরে এই কথাগুলোর মানে এমন করে নিয়েছে যে ইহুদী-খ্রিস্টানদের সাথে বন্ধুত্ব করা যাবে না।

একটা সময় ধর্ম ছিল সমাজে মানুষের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে সমাজটাকে ভাল করার জন্য, কিছু নীতিবোধ ঢোকানোর জন্য। এখন মানুষে মানুষে বিভাজন করা ছাড়া ধর্মের আর কোন কাজ পাইনা। যে ভাল, সে ধর্ম না মেনেও ভাল হয়, যে খারাপ, সে ধর্ম মেনেও খারাপ হয়।

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

নাশতারান এর ছবি

চলুক

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অগ্নিবীণা এর ছবি

প্রিয় পল্লব,
একজন মুসলিম হিসাবে আমার অনেক দ্বায়িত্ব! সেটি কেবল নামাজ কিংবা রোযা, যাকাত আদায় করাতেই সীমাবদ্ধ নয়! একজন মুসলিম হিসাবে আমাকে এটি নিশ্চিত করতে হবে, যেন আমার কথা ও কাজে অন্য কোন মানুষ (মুসলিম কিংবা অমুসলিম) আঘাত না পায়! কারণ স্বয়ং আল্লাহ তালা বলেছেন, কাউকে personally আঘাত করা হলে আক্রান্ত ব্যক্তি যতক্ষণ ক্ষমা না করবেন, ততক্ষণ আল্লাহ তালাও সেই পাপ স্খলন করবেন না! পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ!

পল্লব এর ছবি

আপনি আঘাত দিতে চাচ্ছেন না বুঝলাম। কিন্তু আপনাকে ন্যায্যও হতে হবে, তাই না? আপনি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ডাকলে সেই "মুসলমানরা" আহত হবেন, এইটা তো সাম্প্রদায়িকতা। আপনি যদি তাদের কথামত কয়েকজন ভিন্ন ধর্মের বাঙালিকে বাদ দিয়ে বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করেন (যেটা আপনি করেন নি), তাহলে সেই বাদ দেওয়া বাঙালিকেও তো আঘাত করা হল।

আপনি ধর্ম না বেছে বাঙালিদের নিয়ে পয়লা বৈশাখ করুন, সেখানে গোড়ারা তাদের ঠুনকো ধর্ম নিয়ে না আসলে আসবেন না। তবে যদি আপনি শুরু করেন, আপনাকে দেখে তারা হয়তো শিখবে। তাই বললাম।

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

অগ্নিবীণা এর ছবি

"তিন জন বাঙ্গালী থাকলে পারমুটেশন কম্বিনেশন করে তিনটা দল করে আর নিজেদের মধ্যে মারামারি করে। কামড়াকামড়ি না করলে যেন পেটের ভাত হজম হয় না। যত্তসব..."

এত্তো রূঢ বাস্তব একটি কথা! বাঙ্গালীর কিন্তু বুদ্ধিবৃত্তির অভাব কখনোই ছিলো না, কেবল কামড়াকামড়িটাই এদের নিঃশ্বেষ করে দিচ্ছে!
সমথর্নের জন্য অজস্র ধন্যবাদ!

ফাহিম এর ছবি

আরও একটু যোগ করি,

ইসলাম ধর্মে যে ভালো জিনিষগুলো বলা আছে, সেগুলো কিন্তু এরা মানছেন না। বলা আছে, ভালো মানুষ হও, আরেকজনের উপকার করো, মিথ্যা কথা বলো না, অসৎ উপার্জন করো না, নিজের আয়ের থেকে যাকাত দাও, সাম্য প্রতিষ্ঠা করো।

এইগুলো কেউই করছে না, মেতে আছে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে। হিন্দু মুসলিম নিয়ে। ইসলাম ধর্মে বলা আছে, নিজে খাবার আগে আশে পাশের চল্লিশ বাড়ির প্রতিবেশীদের কেউ না খেয়ে আছে কিনা খোঁজ নিতে, আমাদের কেউ সেটা করছে? না, সবাই অনেক বেশী ব্যস্ত দাড়ির দৈর্ঘ্য নিয়ে আলোচনায়, খোঁজ নেবার সময় কোথায়!

একদল মূর্খ ভণ্ড ধর্মটার বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে...

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- এই ধরণের সবকিছুতেই ধর্মগেলো টাইপের পাবলিকের প্রতি আমি একটা কথাই বলি বেশ জোরেশোরে, "এতোই যখন চিন্তা, তাইলে এই ইহূদী নাছারার দেশকেই কেনো বেছে নিলেন থাকা-খাওয়া, পড়াশুনা আর চাকরি-বাকরীর জন্য"? আর্থিক যে সাহায্য তথাকথিত ধর্মান্ধরা পান, সেটা কি জমজম কূয়া থেকে উঠে আসে? নাকি কোনো খেরেস্তান, ইহূদী বা বিধর্মীর গাঁটের পয়সা থেকেই আসে? তাদের পয়সায় খেয়ে পড়ে তাদের বিরুদ্ধেই ধর্ম বাঁচানোর ডাক দেয়া কী ধরণের ভণ্ডামী!

আপনার ঐ দিকের মৌলবাদীগুলোর কপাল ভালো এতো বড় আস্পর্ধা দেখিয়েও এখনও বহাল তবিয়তে টিকে আছে। এদিকে হলে কানসা পাতালি থাবড়া খেতে খেতে বুঝতো ধর্ম কী আর ধর্মের ভেতরের অন্ধকার কী!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

আদনান [অতিথি] এর ছবি

"আপনার ঐ দিকের মৌলবাদীগুলোর কপাল ভালো এতো বড় আস্পর্ধা দেখিয়েও এখনও বহাল তবিয়তে টিকে আছে। এদিকে হলে কানসা পাতালি থাবড়া খেতে খেতে বুঝতো ধর্ম কী আর ধর্মের ভেতরের অন্ধকার কী!" - একদম ঠিক কথা। এদেরকে থাপড়ানো উচিত। ধর্ম শুধু নিজের জন্য না, আমাদের অনেকগুলো দায়িত্বের মধ্যে একটা হল সবার সাথে ভালভাবে চলা।

অগ্নিবীণা এর ছবি

ধুসর গোধূলি আপনার সাথে একাট্টা ভাবে সহমত! খেরেস্তান, ইহূদী বা অন্যধর্মী যখন তাদের "বস" তখন কী এক বেজায় ভক্তি মিশ্রিত মাখামাখির সর্ম্পক তাদের! after all রুটি রুজি বলে কথা!
"ধর্ম কী আর ধর্মের ভেতরের অন্ধকার কী!" কথাটা খুব পছন্দ হয়েছে!
পাশে থাকার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ!

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস ধর্মের মূল আবেদনই হচ্ছে মানুষে মানুষে সাম্য, মৈত্রী গড়ে তোলা । সে যে ধর্মই হোক । যে মুহুর্তে আমি এক স্রষ্টায় বিশ্বাস আনছি, সেই মুহুর্ত থেকে সকল সৃষ্টির প্রতি আমার দায়িত্ব চলে আসে, কারন সে আমার স্রষ্টার সৃষ্টি । সে মানুষ, গাছ পালা, পাখি সবকিছু …কাজেই যারা ধর্মের নামে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ তৈরী করে তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, সৃষ্টি কর্তা যদি চাইতেন তাহলে তিনি তো এই পৃথিবীতে শুধুমাত্র একটিই ধর্ম দিতে পারতেন, কেন দেন নি? আর তিনি চাইলে তো অন্য ধর্মানুসারীদেরকে এই পৃথিবীর আলো, বাতাস, মাটি থেকে বঞ্চিত করতে পারতেন । তিনি করেন নি । কাজেই যে সৃষ্টি কর্তাই তাঁর সৃষ্টির মধ্যে ভেদাভেদ করেননি, আমি তাঁর ক্ষুদ্র সৃষ্টি হয়ে ভেদাভেদ করার কে? কে পাপ করছে আর কে পূন্য করছে, তার হিসাব স্রষ্টাই নিক না, আমি আমার পাপ/পূন্যের হিসেব নিয়ে থাকতে চাই ।

নজরুলের “মানুষ” কবিতাটি মনে পড়ে গেল,… “আশিটি বছর ডাকিনি তোমায় প্রভূ/ তা’বলে ক্ষুধার অন্য বন্ধ করনিতো কভূ…”

সবশেষে লেখককে, জানি না আপনি কানাডার কোন শহরে আছেন । আমার এ পর্যন্ত টরেন্টো, মন্ট্রিল ও অটোয়ায় থাকার অভিজ্ঞতা হয়েছে । কোথায়ই নববর্ষ, একুশে ফেব্রুয়ারী, স্বাধীনতা দিবস, ও বিজয় দিবসের মত সার্বজনীন উৎসবগুলোতে সকল ধর্মের মানুষের অংশগ্রহনে কোন বাধা দেখিনি । তবে, দলাদলি দেখিছি (সেখানে ধর্ম কোন ইস্যু ছিল না) ।

.......................................
তোমারই ইচ্ছা কর হে পূর্ণ ....

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

অগ্নিবীণা এর ছবি

আপনার সাথে সহমত! আমিও কানাডার একাধিক শহরে ভ্রমণ করেছি, থেকেছি! সত্যি কথা কী, দলাদলি দেখিছি কিন্তু ধর্মকে এই ভাবে ডিরেক্ট ইস্যু করতে আমিও আগে দেখি নি! তাই বেশী রকম আহত হয়েছি হয়তো!

 জাফরী এর ছবি

অকালকুষ্মান্ড লিখেছেন:
আমার নিজের অভিজ্ঞতা একটু বলি। কানাডাতে পড়তে আসি এক ছোট্ট শহরে। আমরা প্রায় ১২-১৫ জন ছাত্র/ছাত্রী, প্রায় সকলে বুয়েটের।আমরা একটা পহেলা বৈশাখ বা একুশে ফেব্রুয়ারির আনুষ্ঠান করতে পারিনি শুধু পড়াশুনা আর সাবমিশানের ওজুহাতে। দেখি শুধু ধর্ম আলাদা বলে মানুষ আলাদা হয় কিভাবে? যে অভিজ্ঞতা দেশে হয়নি, তা বাইরে পড়তে এসে হোলো।

আমিও সমব্যথী !!!

টিউলিপ এর ছবি

আপনি ঠিক কাজটিই করেছেন। দমে যাবেন না, এইসব ধর্মান্ধদের পাত্তা দেওয়ার কিছু নেই। এরা ধর্মান্ধ হয়েই থাকুক, মানুষ হওয়ার যোগ্যতা এদের নেই।
___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

স্নিগ্ধা এর ছবি

আপনার হিন্দু অথবা অন্য ধর্মালম্বী কাউকে বাদ না দেয়ার সিদ্ধান্ত বা অবস্থানকে সাধুবাদ জানাই! খুব ভালো লাগলো, আসলেই হাসি

সূরা তিলোয়াতের ব্যাপারটি নির্দ্ধিধায় মেনে নিলাম, কারণ, আমরাতো ধর্মপ্রাণ জাতিও বটে, পরম করুণাময়ের সাথে তো কারো কোন বিরোধ থাকার কথা নয়।আমার প্রিয় নবীর জন্য নাশিদ পরিবেশনা হবে, হোক না! কিন্তু মনটা বেঁকে বসলো, আরবী ভাষার ব্যাপারে।আমাদের বাংলা ভাষাতেই তো কবি নজরুলের লেখা কি অসম্ভব সুন্দর-সুন্দর হামদ, নাত আছে, যেহেতু বৈশাখী অনুষ্ঠান, তাই নাশিদ করলে সেটা বাংলাতেই করতে হবে, এ ছিলো আমার প্রস্তাবনা!
দ্বিতীয় আঘাত এলো আমার উপর, কেনো আমি হিন্দু পরিবারদের (সব্য সাকুল্যে ৪/৫ টি হিন্দু পরিবার আছে মাত্র) ক্যমুনিটির প্রোগামে নিমন্ত্রণ করলাম!

কিন্তু ক্যমুনিটির প্রোগামে তাদের কোন যুক্তিতে অচ্ছুত রাখতে হবে, সেটি খুঁজে পেলাম না!

আচ্ছা, বাংলা নববর্ষ পালন তো একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, তাই না? যদি বা ধরেও নেই যে ধর্ম ব্যাপারটাও সংস্কৃতির সাথে ক্ষেত্রবিশেষে এসে টেসে পড়ে - ঐ কম্যুনিটি প্রোগ্রামে তাহলে হিন্দু অতিথি/অংশগ্রহনকারীদের সম্মানে গীতা পাঠ বা এরকম কিছুও রাখা উচিত ছিলো না?

বুঝতে পারছি যারা হিন্দুদের ইনক্লুড করাতেই এই ন্যাকামি করতে পারে, তাদের সামনে হয়তো আপনি ততদূর বলতেই পারেন নি। কিন্তু, আমি জানতে চাচ্ছিলাম এ ব্যাপারে আপনার ব্যক্তিগত মতামত কী? বা, ভবিষ্যতে কখনও এরকম কিছু করতে যদি সফল হন, তখন কোরাণ তেলাওয়াত করানো হলে অন্যান্য ধর্মের প্রধান গ্রন্থপাঠ/বা সেই ধর্মের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার ব্যাপারটা আপনি/আপনারা মনে করে করবেন কিনা, বা এর আগে কখনও করেছিলেন কিনা?

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

ছোটবেলায় আমার স্কুলে দেখেছি এসব অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন ও গীতা দুইটাই পাঠ করা হতো।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অগ্নিবীণা এর ছবি

স্নিগ্ধা, আপনার অনুমান একদম ঠিক, ওই পর্যন্ত যেতেও পারি নি! তার আগেই, কি যে ঝগড়া ফ্যাসাদ লাগিয়ে দিল!
আমার ব্যক্তিগত মতামত খুব সহজ এবং সিধা! যদি ধর্মীয় বাণী দিয়ে শুরু করতেই হয় তবে, সব ধর্ম থেকে কেনো নয়?
এবার আসি বাস্তবতায়! প্রোগামটি ছিল, বৈশাখী আনন্দোৎসব...পহেলা বৈশাখের ইতিহাস যদি পর্যালোচনা করেন তাহলে দেখবেন, হিন্দুরা এই দিনটিতে অনেক ভক্তি ভরে পূজা অর্চনা করত! (ডিটেলসে যাচ্ছি না! ) তাই যদি হয় তাহলে তো পহেলা বৈশাখ পালন করাটাই পাপ! সূরা পড়লেই কি সেই সব "অশুদ্ধি" কেটে যাবে!
প্রত্যেকটি অনুষ্টানেরই একটি নির্দিষ্ট আঙ্গিক আছে! মনে পড়ে, দেশে থাকতে পূজোর সময় বন্ধুদের সাথে প্রতিমা দেখতে যেতাম।কোন উর্বর মস্ত্বিক্য যদি পূজোর শুরুতে সূরা পাঠের আবদার করে সেটি যেমন হাস্যকর হবে, তেমনি কোন অতি পন্ডিত যদি ঈদে- মিলাদুন্নবীর আয়োজনের গীতা পাঠ করতে চায় সেটিও হবে ফাজলামী!
ধর্মীয় বাণী হলো পবিত্রতার প্রতীক, একে যেখানে সেখানে আমদানী না করাটিই শ্রেয়! অন্য ধর্মের কথা না হয় নাই বললাম, কিন্তু এটি তো চরম সত্য যে পবিত্র কোরণ শরীফ অত্যন্ত শুদ্ধ ভাবে তমিজের সাথে পাঠ করতে হয়! পাঠ করার সময় উপস্থিত যে সকল মুসলিম তা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ করবে না, তাদের উপর লানত বর্ষণ হয়! এতোগুলো criteria যদি fulfill করা না যায়, তবে তার আয়োজন না করাটাই কাম্য। কি বলেন?

স্নিগ্ধা এর ছবি

সেটাই! যদি ধর্মের বাণী দিয়ে শুরু করতেই হয়, সব ধর্মের বাণীই সেখানে আসা উচিত। তবে, আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে এরকম অনুষ্ঠানে কোন ধর্মকেই টেনে না আনা। ধর্মভিত্তিক অনেক অনুষ্ঠান তো আছেই, আবার এসবেও কেন!

ধর্মটা যাদের কাছে জরুরি না, বা যারা ধর্মে বিশ্বাস করে না - তাদের তো দমবন্ধ হয়ে মরার অবস্থা ......

অতিথি লেখক এর ছবি

ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কে সবসময়-ই নিন্দা জানাই।

লেখা ভালো লেগেছে। সচলায়তন এ নিয়মিত লিখবেন আশা করছি হাসি

- মুক্ত বিহঙ্গ

অগ্নিবীণা এর ছবি

মুক্ত বিহঙ্গ,
আপনাদের এই সাহস যোগানো আর পাশে থাকাটুকু আমার জন্য অনেক বড় কিছু! আপনাদের এই সমর্থনের জন্যই চুপসে যাই না, নতুন স্বপ্ন দেখতে ভয় পাই না!
ভালো থাকুন পাশে থাকুন!
ধন্যবাদ!

নিদ্রালু [অতিথি] এর ছবি

আমিও একটা ব্যপার খেয়াল করছি আমার অনেক বন্ধু ইউ এস বা কানাডা গিয়ে রীতিমত হুজুরে পরিনত হইছে। নয়া হুজুরদের আবার স্পর্শকাতরতা একটু বেশি মনেহয়। সারাক্ষনই ইমান যাবার ভয়ে থাকে। শামীম ভাই খুবভাল ব্যাখ্যা করেছেন।

আমি বাবা আফ্রিকাতে আছি এইধরনের কোন ঝামেলা নাই।

meghladin@gmail.com

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

এরকম অহরহ দেখা যায়। ধর্মীয় মৌলবাদিরা কতোটা ভয়ংকর হতে পারে সেটা মূলত প্রবাসেই জেনেছি, দেখেছি। আমার এক পরিচিত লোক আছে, তিনি দেশে কিংবা এখানে এমন কোন রঙবাজি নেই যা করেন না; কিন্তু তার মেয়েদের মুখ-ডাকা-হিজাব পরা কিংবা একটু দেরী করে বাড়ি ফেরার জন্য গালমন্দ করা থেকে বিরত থাকেন না, গায়ে হাত তুলে ফেলে কিনা কে জানে।
এরকম নব্য বদমাশদের সরাসরি মুখপেটা করবেন, না হলে এরা দ্রুত বিস্তারিত হয়।

আপনার জন্য শুভকামনা।

==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
আলোকবাজি

অগ্নিবীণা এর ছবি

ধন্যবাদ আশরাফ মাহমুদ, আপনাদের পাশে থাকাটা আমার জন্য অনেক বড় কিছু!

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

কেন যেন লেখাটা পড়ে খুব বেশি প্রতিক্রিয়া হল না। এসব দেখে দেখে, শুনে শুনে অভ্যাস হয়ে গেছে দেখেই হয়তো।

মাঝে মাঝে ইচ্ছা হয় নাম পরিবর্তন করে ফেলতে।

অগ্নিবীণা এর ছবি

আনন্দী কল্যাণ, এভাবে হাল ছেড়ে দেবেন না, প্লীজ!

হিমু এর ছবি

আপনাদের ছোটো শহরে যদি দুয়েকদিন থাকার খরচ খুব বেশি না হয়, তাহলে যেটা করতে পারেন, আশপাশের শহরে আপনার মতো "মাইনরিটি" যারা আছে, তাদের ডাকতে পারেন আগামী উদযাপনীয় দিনগুলোতে। নিয়মটা হচ্ছে, অল্প কয়েকজন মিলে শুরু করতে হয়, খুব জোরালোভাবে। এরপর দেখবেন আপনাদের ছোটো শহরই আপনাদের ঘিরে একটা উৎসবের প্রাণকেন্দ্র হয়ে গেছে।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

অগ্নিবীণা এর ছবি

আপনার পরামর্শটি সত্যি ভেবে দেখার মত! সমস্যা অন্য জায়গায়...আমাদের শহরটি ছোট হলে কি হবে, এটি কানাডার অন্যতম expensive city because of it's tourist attraction. সে যাই হোক, আমি কখনো হার ছেড়ে দেইনি, দেবোও না, এ আশ্বাস আপনাকে দিতে পারি! I'll find the way out, for sure!
পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ!

হরফ এর ছবি

আপনার সৎসাহসকে স্যালুট জানাই। এমন-ই সাহসী থাকুন চিরকাল। ভাল থাকবেন।
____________________________
"ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে"

ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে

অগ্নিবীণা এর ছবি

পাশে থাকার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ!

সচল জাহিদ এর ছবি

এই মাত্র লেখাটি দেখলাম। নাহ, নাম ধাম পরিচয় দরকার নেই, লেখার বিষয়বস্তু আর বর্ননা দেখে একমুহুর্তও দেরী হয়নি চিনতে আপনাকে। এই প্রবাসে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যে কয়েকজনের সাথে কাজ করেছি তার মধ্যে আপনি একজন। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে বাঙালী সংস্কৃতির সাথে পরিচয় পোক্ত করার জন্য সদা নিয়োজিত মানুষদের একজন আপনি।

অভিজ্ঞতা বলে বিদেশে আসলে আমরা দুটি বিষয়ে অনেক বেশি মনোযোগী হয়ে যাই বিশেষত দুটি বিষয়েঃ এক, ধর্ম আর দুই, সংস্কৃতি।ব্যখ্যা করছিঃ

প্রবাসে দুই গোত্রের বাংলাদেশী আছেন, একঃ যারা এখানে সন্তানদের ইসলামী মানসিকতায় বড় করতে চান আর দুইঃ যারা সন্তানকে বাঙালি সংস্কৃতির ছোঁয়ায় বড় করতে চান। দুই দলেরই মূল উদ্দেশ্য একটাই আর সেটা হচ্ছে সন্তানদেরকে যতটুকু সম্ভব প্রবাসের সংস্কৃতি থেকে দূরে ঠেলে রাখা যায়।

প্রথম দলের (ধর্ম ভিত্তিক) মানুষেরা একটি মারাত্মক ভুল করে বসেন আর তা হলো সন্তানদের মধ্যে ধর্মের গোঁড়ামীগুলো বেশি করে ঢুকিয়ে দেন যা তাদের হিতে বিপরীত হয়। এই দলের মানুষদের সন্তানেরা দুই দিকে ঝুঁকে পড়ার আশঙ্কায় থাকে, একঃ মৌলবাদের দিকে আর দুইঃ পুরোপুরি বেকে বসে নিজ ধর্মকে ছুড়ে ফেলে। দুই ধরনের উদাহরনই আছে তবে দ্বিতীয় উদাহরণের সংখ্যা বেশি।

দ্বিতীয় দলের (সংস্কৃতি ভিত্তিক) মানুষদের সন্তানেরা তুলনামূলক ভাবে ভাল অবস্থানে থাকে। তবে বাবা মাকে প্রচুর সময় দিয়ে হয় এদের পেছনে। ছোটবেলায় একবার এই ধারা রপ্ত করে নিলে এদের মধ্যে বাঙালী সংস্কৃতির ভাল একটা ভিত্তি গড়ে উঠে। যেহেতু তারা বাবা মাকে অনেক বেশি উদার মানসিকতার মানুষ হিসেবে দেখতে পান সেহেতু তাদের মধ্যে বড় হয়ে নিজের সংস্কৃতিকে লালন করার মানসিকতা জন্ম নেয়।

আপনি দ্বিতীয় দলের মানুষদের একজন আদর্শ উদাহরণ, সুতরাং প্রথম দলের মানুষদের সাথে আপনার বিভেদ অনিবার্য কিন্তু তাতে হাল ছেড়ে দেয়া চলবেনা, আপনি আপনার অবস্থানে থাকুন। দরকার হলে নিজের বাসায় কয়েকজন মিলে আপনি বৈশাখ, একুশ, ফাল্গুন পালন করবেন। দেখবেন একদিন ঐ দলের মানুষেরাও আপনাকে অনুসরণ করছে। ধর্ম আর সংস্কৃতি একটি অপরটির প্রতিপক্ষ কখনই ছিলনা, যারা তা বানায় তাদেরকে দেখিয়ে দিন ধর্মের সাথে সংস্কৃতির কোন বৈরীতা নেই, যা দেখা যায় তা আমাদের বানানো।

ভাল থাকবেন আর নিয়মিত লেখবেন আশা রাখি।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অগ্নিবীণা এর ছবি

সচল জাহিদ, আপনি অনেক ধীমান...সত্যি বলতে কী, ঘটনাগুলো যখন একের পর এক ঘটে চলছিলো তখন আপনাদের অনেক মিস করেছি! আপনাদের মতো সচেতন আর ২/১ কে সাথে পেলে পরিস্থিতি হয়ত অন্য রকম হতে পারতো! আপনার ব্যাখার সাথে পুরোপুরি সহমত!
পাশে থাকার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ!

রণদীপম বসু এর ছবি

হা হা হা !
হাসলাম কেন জানেন ? একটা আপ্তবাক্য মনে হোলো-
' অভিজ্ঞতা মানেই জ্ঞান।'

' দোলনা হইতে কবর পর্যন্ত জ্ঞান আহরণ করো।'

এই জ্ঞানটা হলো-
' সাত কোটি সন্তানের হে মুগ্ধ জননী
রেখেছ বাঙালি করে মানুষ কর নি।'

কিন্তু সমস্যাটা হলো, আপনি যাদের কথা বলছেন, ওরা বাঙালিও হতে পারে নি !

ভালো থাকুন, সবসময়। সচলে স্বাগতম !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অগ্নিবীণা এর ছবি

"কিন্তু সমস্যাটা হলো, আপনি যাদের কথা বলছেন, ওরা বাঙালিও হতে পারে নি !"

রণদীপম, আপনার কথাটি সাথে আরেকটু যোগ করতে চাই, সেটি হলো, ওরা মানুষও হতে পারে নি! আপনার শুভ কামনা আমার চলার পথের শক্তি হয়ে থাকবে! ধন্যবাদ!

রাহিন হায়দার এর ছবি

উদ্যোগটা কিছু ধর্মান্ধের জন্য ভেস্তে গেল দেখে গা রি রি করছে। আপনার প্রতি শ্রদ্ধা।
ধর্মান্ধত্ব নিপাত যাক।

অপ্রসঙ্গেঃ আপনার মেয়ের গানটা খুব উপভোগ করলাম। হাসি
________________________________
মা তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো...

অগ্নিবীণা এর ছবি

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ!
অপ্রসঙ্গেঃ একজন "মা" এর অনেক ভালো লাগায় মনটা ভরে গেল!

তাসনীম এর ছবি

এই মার্কিন দেশের শিক্ষিত বাংলাদেশী সমাজে যেই গোঁড়ামি আর মৌলবাদ দেখেছি সেটা মনে হয় বাংলাদেশে কখনো দেখি নি। জন্মদিন উদযাপন করা যে বেদাতি কাজ সেটা প্রথম জানলাম প্রবাসে এসে। অনেকেই দেদারে আমদানী করে চলেছেন "মধ্যযুগ" এই সময়ে।

তবে প্রবাসী বাংলাদেশীদের আঞ্চলিক রাজনীতির বড় উপাদান হচ্ছে কার বাচ্চা স্টেজে উঠবে। প্রভাবশালী কারো ছানাপোনা যদি গান না জানে, তাহলে গান প্রমোট হবে না, উনাদের ছেলেরা যেটা পারে সেটাই স্টেজে সবাইকে দেখতে হবে।

তবে আমার শহরে গান-বাজনা পার্টিই শক্তিশালী। মৌলবাদী ছাগলগুলোও অনুষ্ঠানে এসে দেখে যায় "নাচ-গান" আর নানান "রং-তামাশা"। আপনি হাল ছাড়বেন না, দেখবেন একদিন আপনারাই দলে ভারি।

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অগ্নিবীণা এর ছবি

তাসনীম, আপনার পর্যবেক্ষণটি ১০০% সত্যি! আমাদের এইখানেও এমনি এক "জিনিষ" আছে, যিনি "জন্মদিন উদযাপন করা বেদাতি" ঘোষণা দিয়েও নিজ পুত্রের জন্মদিন পালন করেছেন। eye wash হিসেবে শুধু কেকটি ঘটা করে কাটা হয়নি! কথায় কাজের প্রতিনিয়ত এদের discrepancy!
পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ!

অতিথি লেখক এর ছবি

আপু আমরাও এখানে প্রতিটি অনুষ্টানে আপনাকে ইনাকে খুব মিস করি।আপনার মনের অবস্থা বুঝতে পারছি,খুব খারাপ ও লাগছে।তার পরও অসীম সাহসে সামনে এগিয়ে যান।আমরা কাছে না থাকলেও আমাদের অনুপ্রেরনা ,ভালবাসা ,সুভকামনা সব সময়ে থাকবে আপনার সাথে।ব্যাপার টা দু;খজনক।কিন্তু একদিন বিশুদ্ধ মানুষেরা আপনার পাশে অবশ্যই দাড়াবে।

মিতু
রিফাত জাহান মিতু

অগ্নিবীণা এর ছবি

পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ মিতু! এবার নিশ্চয় আমার "facebook status" এর যে লিঙ্কটি চেয়েছিলে তা পেয়েছো! হাসি

নিবিড় রাজীবি [অতিথি] এর ছবি

ওইসব মৌলবাদিদের দীক্ষাগুরু কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে আমাদের বিদেশফেরতা 'শিক্ষিত'জনরা।তেমন একটা ঘটনা বলি, আমাদের বিভাগের এক শিক্ষক পড়াশুনার জন্য যাবেন কানাডা।প্রথামাফিক আমরা বিদায়-স্বংবর্ধনা আয়োজন করলাম। সে অনুষ্ঠানে আমরা স্যারকে নিয়ে বলার পর অন্য শিক্ষকেরা বলতে শুরু করলেন। অবাক হয়ে দেখলাম, অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে অনুষ্ঠানটা হালাল-হারাম বিষয়ক হয়ে উঠলো।নেতৃত্ব দিলেন বিদেশ থেকে ডিগ্রি নিয়ে আসা শিক্ষকেরা।তাদের ছবকগুলো ছিলো খাবার-দাবার, মুমিন-সঙ্গ, ঈমান ইত্যাদি নিয়ে!

অগ্নিবীণা এর ছবি

নিবিড় রাজীবি, বুঝতেই পারছেন, মৌলবাদীরা বিদেশের "ব্যাক্তি এবং বাক স্বাধীনতার" সুযোগটি কী নিবিড়ভাবেই না অপব্যবহার করেছে!

রাগিব এর ছবি

আপনি একা নন। একুশে ফেব্রুয়ারির দিনে ভাষা আন্দোলনকে স্মরণ করা বাদ দিয়ে "হালাকা" পালন করা হয়, এমন নজির দেখেছি। আবার সংখ্যালঘুদের এই আমেরিকাতে বসেও কেমন হেনস্তা করা হয়, তাও দেখেছি নিজের চোখেই (যেটা পুরাই অদ্ভুত ব্যাপার, কারণ হিন্দু মুসলিম দুই দলই আমেরিকাতে সমান সংখ্যা লঘু!)।

আবার এক সময় জনৈক ব্যক্তি বিশাল এক ফতোয়া বের করলেন, ভিটামিনের মধ্যে কোনটা হালাল, কোনটা হারাম, সেই ব্যাপারে বিশাল এক লেকচার দিলেন আমাকে। (উল্লেখ্য,‌ ফতোয়া অনুসারে সেন্ট্রাম ভিটামিন নাকি হারাম, আর অন্য কোনটা যেন হালাল, কারণ সেন্ট্রামের ক্যাপসুলের খোলস নাকি হারাম জিনিষ দিয়ে তৈরী!!!)। আলজেরীয় এক দোকানে তো একবার দোকানদার এক তালিকা ধরিয়ে দিলো, জেলো নাকি হারাম, তেমনি হারাম হলো বিশেষ ধরণের পাউরুটি!!

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | টুইটার

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

শিশিরকণা [অতিথি] এর ছবি

কোলগেট টুথপেস্ট ও হারামের তালিকায় আছে।

উদ্ধৃতিঃ " কম্যুনিটিতে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে ধর্মের অজুহাত দেয়া"...

চরম সত্য কথা। যারা নিজেরা কিছু করতে পারে না, তারা নানা কিছুর আশ্রয়ে নিজদেরকে শ্রেয় প্রমাণ করতে চায়। তারপরেও যদি তাদের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যায় তখন মিথ্যাচার, ছলনা যে ভাবে হোক ভালো কোন উদ্যোগকে ছোট করার চেষ্টা করে। বাঙ্গালী জাতির এ দলের লোকদের বলা যেতে পারে আমাদের মোজো কাকুর উত্তরসুরী। ভালো কিছু করে নিজের অবস্থান সুসংহত করার চে অন্যের ভালো উদ্যোগকে কালিমা মাখিয়ে নিজের ব্যাবসা ধরে রাখার চেষ্টা করে।

আমাদের শহরের ছোট্ট বাঙ্গালী কম্যুনিটিতেও গত ২-৩ দিন হলো ঠিক একইরকম কাঁদা ছোড়াছুড়ি শুরু হয়েছে। গত ক'দিনে কত রকম গাল মন্দ রঙ ঢং যে হজম করলাম।রাগ, দুঃখ, অভিমান সব অনুভূতি পার হয়ে এসে এখন এই ধরনের লোকজনের কাজকর্মে এখন কেবল কৌতুক বোধ করছি। এখন ভাবছি, এসব দু-মুখো বাঙ্গালী সাপের চে আমেরিকান্দের নিয়ে অনুষ্ঠান করব, ওদেরকে বাংলাদেশ চেনাবো, তাদের বরং আগ্রহ আছে, উৎসাহ আছে এসব ব্যপারে।

আপু, আপনি হতাশ হবেন না। উৎসাহী বাঙ্গালীদের সাথে নিয়ে ছোট পরিসরে হলেও বাঙ্গালী উৎসব উদযাপন করুন। সবাইকে নিমন্ত্রণ করুন। রবি দাদুর বানী মনে রাখুন, "যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে"... অন্যে কি বললো না বললো তার চে আপনার মনের তৃপ্তিটাই বেশি আনন্দের।
গৌতম বুদ্ধের একটা শিক্ষা আছে, " কেউ যদি তোমাকে এক অঞ্জলি বিষ্ঠা উপহার দিয়ে অপদস্থ করার চেষ্টা করে, কিন্তু তুমি যদি সে উপহার না নাও, তবে সেই বিষ্ঠা অপর ব্যক্তির হাতেই থেকে যাবে, তুমি আগ বাড়িয়ে হাতে না নিলে, হাতে না আসা পর্যন্ত তোমার হাত পরিষ্কারই থাকবে। "।

সুতরাং অইসব উলটা পালটা কথাকে পুরা পুরি উপএক্ষা করে নিজের কাজ করে যান। তাদের গু তারা নিজেরা ঘেটে মরুক।

অপ্রসঙ্গেঃ আপনার মেয়েটি ভীষণ মিষ্টি!।

পল্লব এর ছবি

হো হো হো আমি জানি কি হইসে! দেঁতো হাসি

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার অবশ্য এক মজার অভিজ্ঞতা আছে। আমার এক তাবলীগী পরিবারের সাথে বন্ধুত্ব। ভদ্রলোক এককালে বেজায় গান বাজনা করে বেরাতেন। এখন তাবলীগ জামাতের অনুসারী হওয়ায় সব নাকি 'হারাম'। মাঝে মাঝে হারমোনিয়ামে গান করে আবার নফল নামাজ পরে নেন...... হাসি
যাই হোক, তার স্ত্রী বেচারা এর মাঝেই সব করে। গত বৈশাখে সেই ভাবী আমার সাথে মেলা আর সাংস্কৃতিক অনুস্টান দেখে এল। এটা শুনেত স্বামী মহা রেগে গেলেন। হিন্দুয়ানী কাজকারবার করে সব রসাতলে যাচ্ছে নাকি। ভাবী আস্তে আস্তে মেলার বর্ণনা করলেন। বিভিন্ন শিল্পীদের গানের গল্প করলেন। পরদিন শুনি সেই ভদ্রলোক তার বউ বাচ্চা নিয়ে কোথায় মেলা হচ্ছে তার খোঁজে বেরিয়েছেন।

-লাবণ্য-
ফাহ_বেগম@ইয়াহু

সাবিহ ওমর এর ছবি

ইহাই প্রকৃত বাঙ্গালি মানস। ইহার জয় হউক। আমিন।

অগ্নিবীণা এর ছবি

"ইহাই প্রকৃত বাঙ্গালি মানস। ইহার জয় হউক। আমিন।"

আমিন.... খিক খিক!!

বোহেমিয়ান এর ছবি

ধর্মীয় কূপমণ্ডুকতার নিন্দা জানাই ।
সাহস হারাবেন না ।

এই কমেন্ট টা ভালো লেগেছে ।

একটা সময় ধর্ম ছিল সমাজে মানুষের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে সমাজটাকে ভাল করার জন্য, কিছু নীতিবোধ ঢোকানোর জন্য। এখন মানুষে মানুষে বিভাজন করা ছাড়া ধর্মের আর কোন কাজ পাইনা। যে ভাল, সে ধর্ম না মেনেও ভাল হয়, যে খারাপ, সে ধর্ম মেনেও খারাপ হয়।

_________________________________________

_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!

পল্লব এর ছবি

এইটা তো আমার মন্তব্য দেঁতো হাসি থেঙ্কু। কপিরাইট করায়ে রাখবো নাকি তাহলে?

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

অগ্নিবীণা এর ছবি

দেঁতো হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।