ভিটামিন এ ক্যাপসুল কান্ড- সত্যালাপ না অপপ্রচার?

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ১৬/০৩/২০১৩ - ১০:২৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পত্রিকার পাতায়, ফেসবুকের দেয়ালে কিংবা মানুষের মনে এখন ভিটামিন এ ব্যাপারটি নিয়ে দারুন কৌতুহল। এই সংঘাতময় রাজনীতির দিনে সবথেকে বেশী খারাপ লাগে যখন দেখি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কোন ব্যাপারে মানুষ দুইভাগে ভাগ হয়ে যায়। কারো কাছে মনে হচ্ছে সরকার যা করছে তা চরমভাবে অগ্রহণযোগ্য কোন কাজ আবার একদল মনে করছে যা হচ্ছে সবই জামাতী-ছাগু কিংবা বিএনপি-র অপপ্রচার। ভিটামিন এ এর ক্ষেত্রেও তাই হল। ফেসবুকে দুইদল ভাগ হয়ে যেয়ে সমানে কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি চলছে। ঘটনার সত্যাসত্য উদ্ঘাটন এই লেখার উদ্দেশ্য নয়। এই লেখার উদ্দেশ্য হল এই বিষয়ে সাম্প্রতিক কিছু তথ্য উল্লেখ করে বিচারের ভার পাঠকের উপর ছেড়ে দেয়া। আর লিখতে বসার তাগিদটা ভিতর থেকে এসেছে ডাক্তার সমাজের একজন হিসাবে।

প্রথমেই পাঠক আজকের প্রথম আলোর খবরের দিকে একটু চোখ বুলাই। খবরের শিরোনাম ‘অনুমোদনহীন ক্যাপসুলও পাঠানো হয়েছিল’। এর অর্থ কে কিভাবে নেবেন জানি না। আমার কাছে সাদা চোখে প্রথমেই যে কথাটা মাথায় এসেছে তা হল ভেজাল আছে। খবরের লিংক নিচে দিয়ে দিচ্ছি বলে বিস্তারিত আর লিখলাম না। তবে খুলনার সিভিল সার্জন এবং ক্যাম্পেইনের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কথা থেকে পরিষ্কার যে কেন্দ্রীয় ওষুধাগার থেকেই ক্যাপসুলগুলো তাদের সরবরাহ করা হয়েছিল। গ্লোব ফার্মার কথা অনুযায়ী এই ক্যাপসুলগুলো ২০১১ সালে কেনা। এ প্রসঙ্গে একজন শিক্ষিত? ব্যক্তির বলা কিছু অমীয় বাণী সরাসরি তুলে দিচ্ছি।

‘কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক (ভান্ডার ও সরবরাহ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ২০১১ সালের মে মাসে গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালসের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (এক লাখ ইউনিটের) কেনা হয়েছিল। ওই ক্যাপসুল জাতীয় কর্মসূচিতে ব্যবহার করা যাবে না, এ রকম কোনো নিয়ম নেই। তিনি আরও বলেন, ‘পুরান মজুত তো ব্যবহার করতে হবে। নাকি আমরা তা ফেলে দেব?’ ক্যাপসুলের মানও যথার্থ বলে দাবি করেন তিনি।

খুব ভালো কথা পুরোনো মজুদ ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হল দুইবছর আগের এই ক্যাপসুলগুলোর গুনগত মান ঠিক আছে কিনা তা কি পরীক্ষা করে দেখা হয়েছিল?? যদি না হয় তাহলে কি শিশুরা অসুস্থ হতে পারেনা।

গত কিছুদিন ধরে ফেসবুকে লক্ষ্য করছি কিছু পেইজ থেকে বলা হচ্ছে ভিটামিন এ এর জন্য শিশুরা অসুস্থ হচ্ছে না, তারা অসুস্থ হচ্ছে ভিটামিন এ- এর সাথে কৃমিনাশক এলবেনডাজল নামক ওষুধ খাওয়ানোর জন্য যা খুবই স্বাভাবিক। একজন ফার্মাকোলজির ছাত্র হিসাবে বিষয়টাকে ১০০ ভাগ সত্য বলে মেনে নিচ্ছি। তবে এই সমস্যা এলবেনডাজলের সাথে ভিটামিন এ ক্যাপসুলের কোন রিএকশনের কারণে হয় না। এটা হতে পারে শুধুমাত্র এলবেনডাজলের জন্য যা খুব সংখ্যক ক্ষেত্রেই দেখা যায়। যারা এলবেনডাজল খাচ্ছে না তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যার কারণ তাহলে কি? প্রশ্ন থেকেই যায়। আমার খটকা লাগলো একটা জায়গায়। আর তা হল তারা এই ব্যাপারে কিছু প্রতিষ্ঠিত সত্যকে এড়িয়ে যেতে চাচ্ছেন। ভিটামিন এ-এর কারণেও যে এমন একটা সমস্যা তৈরী হতে পারে সেটা কিন্তু তারা অস্বীকার করতে পারেন না।

ভিটামিন এ-এর গুনগত মানে সমস্যা থাকলে Pseudomotor cerebri নামে একটা সমস্যা দেখা দিতে পারে যার কারণে, বর্তমানে শিশুদের যে উপসর্গগুলো দেখা যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে সেই সমস্যা যেমন- বমি, অবসাদ, বমি বমি ভাব ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। কথাটা আমার নয়। নিচের দেয়া লিংকে গেলেই এর সত্যতা পাবেন। সবথেকে ভয়ের ব্যাপার হল যদি আসলেই সমস্যাটা Pseudomotor cerebri হয়ে থাকে তাহলে শিশু অন্ধ পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। প্রশ্ন হল কোন শিশু যদি এই কারণে অন্ধ হয়ে যায় তাহলে তার দায়িত্ব কি এই ফেসবুকে ঝড় তোলা বিবদমান দুই পক্ষের কেউ নেবেন? আশার কথা এই Pseudomotor cerebri চিরস্থায়ী কোন সমস্যা না। এটা নিরাময়যোগ্য।
সমস্যার আরো একটু ভিতরে যাবার চেষ্টা করে বিভিন্ন জায়গা থেকে কিছু তথ্য পেলাম। প্রথমেই বলে নেই দেশের বাইরে থাকি বলে নিজের চোখে এই সমস্যায় আক্রান্ত কোন শিশুকে আমি দেখিনি। তবে বিভিন্ন পত্রিকা থেকে জানলাম দেশের অনেকগুলো জায়গায় শিশুরা অসুস্থ্য হয়েছে। সবশেষে আমার এক ছাত্র যে এখন ICDDR,B এর রিসার্চ ফেলো সে জানালো নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ এবং শেরপুরে সে নিজে শিশুদেরকে আক্রান্ত হতে দেখেছে। তার সেই পোস্টে আরেকজন ছাত্রী জানালো তার কাজিন এই ধরণের সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছে। দুজনের কেউই জামাত-শিবির বা বিএনপির রাজনীতি করে না।

তাহলে সমস্যাটা কোথায়। সমস্যার উৎস খুঁজতে গিয়ে আরো কিছু তথ্য পেলাম। সেগুলো হলঃ

১. এবার ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর এই ক্যাম্পেইনে ব্যবহার করা হচ্ছে কানাডিয়ান কোম্পানি ব্যানার ফার্মা থেকে তিনবছর আগে কেনা ক্যাপসুল যার মেয়াদ শেষ হবে এবছরের এপ্রিল মাসে।
প্রশ্ন থেকেই যায় যে এই ক্যাপসুলগুলো মান সম্মত কিনা? এই ক্যাপসুলগুলোকে যথাযথ নিয়মে সংরক্ষন করা হয়েছিল কিনা? অথবা বিভিন্ন জেলায় ওষুধ পাঠানোর আগে যথাযথ নিয়মে মান পরীক্ষা করা হয়েছিল কিনা? যদি না হয়ে থাকে, তাহলে কি ভিটামিন এ-এর জন্য সমস্যা হতে পারেনা। উত্তর অবশ্যই পারে।

২. এবার প্রতিবেশী দেশ ভারতের অলিভ কোম্পানি থেকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল আমদানী করা হচ্ছে। এই কথাটা অনেকের জন্য ভ্রু কুঁচকানোর মত ব্যাপার হতে পারে তবে আমার কাছে নয়। কোম্পানি যদি ভালো হয় এবং তারা যদি কম দামে মান সম্মত পণ্য সরবরাহ করতে পারে তাহলে কোম্পানি ভারত না সোমালিয়ার সেটা কোন বিষয় নয়। তবে কথা হল এই কোম্পানির বিরুদ্ধে WHO আপত্তি জানিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়কে চিঠি দিয়েছে বলে পত্রিকায় প্রকাশ। এজন্য সরকার এবার পরপর ২ বার এই ক্যাম্পেইনের তারিখ পরিবর্তন করেছে। তারিখ পরিবর্তনের কারণ সরকার পরীক্ষার মাধ্যমে দেখাতে চেয়েছে যে অলিভ কোম্পানির সরবরাহ করা ক্যাপসুল নিরাপদ। অতঃপর WHO এবং বিশ্বব্যাংকের সাথে সরকারের কি ধরনের কথা হয়েছে তা আমরা জানি না। তবে ১২ই মার্চ থেকে সেই ক্যাপসুল দেশের শিশুদেরকে খাওয়ানো হচ্ছে। পত্রিকার খবর অনুযায়ী এই অলিভ হেলথ কেয়ার নামক প্রতিষ্ঠানটি WHO তালিকাভুক্ত কোন ভিটামিন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নয়। এর অভিজ্ঞতাও নেই এ ব্যাপারে। বড় কথা এটি ভারতেই নাকি কোন ওষুধ সরবরাহ করে না। তা না হোক, ওষুধ মানসম্মত হলেই হল। কিন্তু সে ব্যাপারেও সরকারের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু শোনা যাচ্ছে না।

দেশের শিশুরা দেশের ভবিষ্যত বলে আমাদের সম্মানিত নীতিনির্ধারকরা অনেক বড় বড় কথা বলে থাকেন। তাদের উচিত ছিল এই ব্যাপারটি সামনে আসার সাথে সাথে এই ক্যাম্পেইন বন্ধ করে তদন্ত করা। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া। না পাওয়া গেলে গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। সরকার কোন কিছুই করেনি।

ফেসবুকে কিছু পেইজ, কিছু মানুষ শুরু থেকেই বলে আসছেন এটা অপপ্রচার। সমস্যা হল তারা বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি না করেই এটাকে সরলীকরণ করে ফেলেছেন এবং রাজনৈতিক প্রপাগান্ডা বলে মত প্রকাশ করেছেন। কিন্তু এখন যখন বিভিন্ন জায়গা থেকে সত্যি সত্যি অসুস্থ্য হবার খবর আসছে তখন তারা চুপ করে আছেন। সবকিছুর মধ্যে রাজনীতি বা সব বিষয়ে দুইদলে বিভক্ত হয়ে যাবার এই মানসিকতা পরিবর্তিত না হলে আমাদের সামনের ভবিষ্যত খুব একটা উজ্জ্বল দেখা যাচ্ছে না।

পরিশেষে এটুকু জানাতে চাচ্ছি যে, ভিটামিন এ ক্যাপসুল খেয়ে অসুস্থ্য হয়ে পরা কোন শিশুর খোঁজ যদি কেউ জেনে থাকেন তাহলে সেই শিশুর পরিবারকে আশ্বস্ত করুন যে, এর ফলে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হবার সম্ভাবনা খুব কম।

তথ্যসুত্রঃ
১. প্রথম আলোর লিংকঃ
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-03-16/news/336870

২. http://manobkantha.com/2013/03/09/111134.html

৩. Pseudomotor cerebri: http://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmedhealth/PMH0001391/
http://en.wikipedia.org/wiki/Idiopathic_intracranial_hypertension

৪. এলবেনডাজল সম্পর্কেঃ http://www.drugs.com/mtm/albendazole.html

আলোকিত-মন


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুন পোস্ট। মনের কথা বলেছেন।
আমার অফিসের এক ছেলে তার বাচ্চাকে ওষুধ খাওয়ানোর পরে কোন উপসর্গ দেখেনি। কিন্তু তবুও প্রচন্ড ভয় পেয়েছে। আসলে বাইরের লোক হলে পক্ষে বিপক্ষে অনেক কথাই বলা সহজ। কিন্তু যখন সরাসরি নিজের সন্তান, তখন বাবা মায়েরা যে আতঙ্কিত হবেই হবে এমনকি কোন খারাপ প্রভাব না হলেও। কেউই নিজের সন্তানকে গিনিপিগ বানাতে চাইবেনা। শুধুই জামাতীদের প্রোপাগান্ডা বলে উড়িয়ে দেয়া ভয়াবহ ভুল হবে সরকারের জন্যে। বাংলাদেশের মন্ত্রী মিনিস্টার আর সচিবেরা ঘুষ খেয়ে নিঃস্বদের বন্যার টিন কিংবা স্বর্বস্ব হারানো বিধবাদের ভাতা খেয়ে ফেলতে পারলে ঘুষ খেয়ে নিম্নমানের ওষুধ বিনামুল্যে বিতরন করতে পারে, এটা সবার জন্যেই বিশ্বাসযোগ্য।
সৌম্য

অতিথি লেখক এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

ক্রেসিডা এর ছবি

লেখাটার জন্যে ধন্যবাদ। একজন সন্তানের পিতা হিসেবে যখন এই ব্যাপারটা সামনে আসে, স্বভাবতই আমি আমার সন্তানকে টিকা দেবার আগে পরিচিত ডাক্তার এর সাথে আলাপ করে নেই। যেটা দেখা গেল, তারা অন্য ভিটামিন এ এর কথা বল্লো কিনে খাওয়াতে; যেটা থেকে বুঝা গেল তারাও ব্যাপারটা নিয়ে ক্লিয়ার না, যে এটা গুজব না সত্য। সুতরাং, আমাদের অনেকের সেদিন এই কর্মসূচীর বাইরে থাকাটাই স্বাভাবিক ছিল। জানিনা গুজবটি ঠিক কবে থেকে ছড়ালো, কিন্তু আমাদের অনেকেরই চোখে পড়লো ১১ই মার্চ রাতে, মানে টিকাদান কর্মসূচীর ঠিক আগেরদিন রাতে। সো, ব্যাপারটা যাচাই করারো সময় খুব কম ছিল। সব পিতা-মাতাই কোন কনফিউশন থেকে সন্তানকে কিছু দেয় না।

সরকার থেকে বলা হয় এই ভিটামিন সম্পূর্ন নিরাপদ। যাক কে সত্য বলতেছে আর কে মিথ্যে কে জানে; কিন্তু কর্তপক্ষ "নিরাপদ" বলে যে পদক্ষেপ নিল - সেটা নিচের ছবিতে দেখা যাক- ১২ই মার্চ, ২০১৩ এর (এবং যতদূর মনে পড়ে এটা সেরকম প্রচার করা হয়নি, এবং যতটুকু জনসম্মুখে আসে বিকেলের পরে)। কর্মসূচী ছিল ১২ই মার্চ; ২০১৩। সো, তখন আর এইসব সফাই দিয়ে কি লাভ? এইসব কনফিউশন আরো আগে দূর করা উচিৎ ছিল। গুজব হলে, আরো আগে থেকে কর্তপক্ষের উচিৎ ছিল প্রচারনা চালানো।

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

ক্রেসিডা এর ছবি

ছবিটা দেখাচ্ছে না কেন? আবার সঠিকভাবে দেবার ট্রাই করি

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

অতিথি লেখক এর ছবি

ছবিটা কিন্তু এখনো দেখাচ্ছে না।

আসলে আমরা সবকিছু একটু দেরীতেই বুঝি।

আলোকিত-মন

ক্রেসিডা এর ছবি

ছবিটা দেখায় না কেন, বুঝলাম না! এখানে লিঙ্ক দিয়ে দিলাম :

http://www.flickr.com/photos/80422267@N08/8561895637/

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

অতিথি লেখক এর ছবি

এবার দেখতে পেয়েছি ভাইয়া। অনেক ধন্যবাদ কষ্ট করে ফ্লিকার করার জন্য। চলুক

Ripon Majumder এর ছবি

অন্য আর একটি লিখায় দেখেছিলাম, ক্যানাডিয়ান কোম্পানির পুরো নাম ব্যানার ফার্মাক্যাপস, আপনি লিখেছেন ব্যানার ফার্মা, কোনটি সঠিক?

অতিথি লেখক এর ছবি

কোম্পানির পুরো নাম ব্যানার ফার্মাক্যাপস। আমি সংক্ষেপে ব্যানার ফার্মা লিখেছি। ওদের ওয়েব সাইটের লিংক দিয়ে দিচ্ছি।

http://banpharm.com

ধন্যবাদ।

আলোকিত-মন

হিমু এর ছবি

একটি প্রশ্ন, ফার্মাকোলজির ছাত্র হিসেবে আপনিই ভালো উত্তর দিতে পারবেন। ওষুধগুলো মান নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে পড়লাম, ওষুধের ব্যাচের ১০ শতাংশ দৈবচয়নের ভিত্তিতে পরীক্ষা করা হয়েছিলো। এটি কি মান নিয়ন্ত্রণের স্বীকৃত পদ্ধতি?

অতিথি লেখক এর ছবি

১০ শতাংশ দৈবচয়নের ভিত্তিতে পরীক্ষা করার যে পদ্ধতি তা মান নিয়ন্ত্রনের স্বীকৃত পদ্ধতি। তবে সেটা ব্যাচের প্রতিটি কন্টেইনার থেকে করতে হবে। পুরো লটের ১০ শতাংশ থেকে করলে হবেনা। এটাকে WHO r Plan for sampling বলে।

ফার্মাকোলজির ছাত্ররা ফার্মেসির ছাত্রদের মত প্রোডাক্ট এর কোয়ালিটি কন্ট্রোল এর ব্যাপারটা নিয়ে পড়াশোনা করে না। আমরা ডাক্তাররা মানবদেহে ওষুধের প্রভাব, তার কার্যকারীতা, কীভাবে কাজ করে ইত্যাদি নিয়েই বেশী মাথা ঘামাই। আপনার জন্য নিচে একটা লিংক দিয়ে দিলাম। ওখানে বিস্তারিত আছে sampling সম্পর্কে। ধন্যবাদ।

আলোকিত-মন

অতিথি লেখক এর ছবি

লিংক দিতে ভুলে গিয়েছিলাম আগের কমেন্টে। মন খারাপ

http://apps.who.int/medicinedocs/en/d/Jh1813e/7.3.8.2.html

আলোকিত-মন

শামীম এর ছবি

FYI: আমার মেয়ের বয়স ৩ বছর ৫ মাস, সম্বন্ধির মেয়ে ১ বছর ৩ মাস। উভয়কেই ক্যাম্পেইনের দিন গিয়ে টিকা খাইয়ে নিয়ে এসেছি। এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কোন সমস্যায় পড়েনি -- অর্থাৎ ধরে নেয়া যায় খারাপ ক্যাপসুলের ভাগে পড়েনি।

তবে অসুস্থ হয়েছে এমন মেয়ের মামাকেও অনলাইনে চিনি।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার অনেক ডাক্তার বন্ধুই বলছেন যে তারা অসুস্থ্য শিশু দেখেছেন আবার অনেকেই বলছেন দেখেননি। বিষয়টি অনেকাংশেই গোলমেলে।

অতিথি লেখক এর ছবি

পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
আমাদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো এবং বিভ্রান্তি পড়া কখন যে দুর হবে!

তুহিন সরকার।

অতিথি লেখক এর ছবি

সুন্দর পোস্ট দিয়েছেন। ব্যাপারটাকে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে দেখার এই প্রয়াস নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদার। ধন্যবাদ। ব্যাপারটা নিয়ে তবু ধোঁয়াশা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে আর তা সরানোর কোনো উদ্যোগ কিন্তু আপাত দৃশ্যমান নয়। সরকার আর বিরোধী দলের ক্যাঁচালে যদি আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের গায়ে হালকা আঁচও পরে তবে দুই দলের কাউকে ইতিহাস ক্ষমা করবে না।

সামি

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। আসলে সরকার এই ব্যাপারটাতে আরেকটু যত্নবান হতেই পারতো। আর এখন তথ্যপ্রযুক্তির যুগে অপপ্রচার চালানো খুব সহজ হয়ে গেছে।

আলোকিত-মন

মেহদী হাসান খান এর ছবি

"ভিটামিন এ-এর গুনগত মানে সমস্যা থাকলে Pseudomotor cerebri নামে একটা সমস্যা দেখা দিতে পারে"

এটার স্বপক্ষে কোন লিংক দিতে পারেন, যেখানে সরাসরি ভিটামিন-এ এর "গুনগত মানের" সাথে Pseudotumor cerebri হওয়ার যোগসূত্র বলা আছে? এবং গুনগতমানে ঠিক কি সমস্যা থাকলে এটা হতে পারে? সেরকম কিছু এই ক্যাম্পেইনেও কি ধরা পড়েছে?

আপনার দেয়া লিংক থেকে আমি যতটুকু বুঝলাম, U.S. National Library of Medicine এ সরাসরি ভিটামিন-এ কেই (কোন গুনগত মানসম্পর্কিত কথা এখানে নেই) "রিস্ক ফ্যাক্টর" বলা হয়েছে, কারণ না। পাতে লবণ খাওয়াও হাইপারটেনশনের রিস্ক ফ্যাক্টর, তাই বলে কাউকে পাতে লবণ নিতে দেখলেই তার হাইপারটেনশন হবে এমনটা বলা যায় না। আপনার দাবীটা আরো সিরিয়াস, অনেকটা এরকম- খাবার লবণের গুনগতমানে সমস্যা থাকলে হাইপারটেনশন হতে পারে, সেখান থেকে হার্ট ফেইল করে অনেকে মারাও যেতে পারেন। সেজন্য সরাসরি রেফারেন্স চাচ্ছি।

উইকিপিডিয়ার লিংকে বলা আছে হাই ডোজে ভিটামিন-এ ডেরিভেটিভের কথা। এটা বেশি যুক্তিযুক্ত মনে হল। সেক্ষেত্রে এই ক্যাম্পেইনে দেয়া ভিটামিনগুলোতে মাত্রাতিরিক্ত ভিটামিন-এ ছিল এমন কোন তথ্য কি পাওয়া গেছে? আমি জানি না, তাই জানতে চাচ্ছি।

এসব ঔষধের ব্যবসাতে যেহেতু মিলিয়ন ডলারের লেনদেন থাকে, সেই পরিমাণ দুর্নীতির সম্ভাবনাও থাকে। আমি নিশ্চিতভাবে না জেনে কোনভাবেই এই ক্যাম্পেইনের কোন পক্ষকে সমর্থন দিতে রাজি না। তবে সাময়িক অসুস্থতা ছাড়াও সুনির্দিষ্টভাবে ভিটামিন-এ এর গুনগতমানে সমস্যা থাকার কারণে Pseudotumor cerebri থেকে অন্ধত্বও হতে পারে, এটা সিরিয়াস দাবী এবং এখানে সরাসরি রেফারেন্স জরুরী। আপনি লেখায় যা দিয়েছেন সেটা আপনার দাবী সমর্থন করে না।

অতিথি লেখক এর ছবি

মেহেদি ভাই,

প্রথমেই ধন্যবাদ বিষয়টি নজরে আনার জন্য। আসলে লেখার মধ্যে ভিটামিন এ -এর গুনগত মান এবং এর সাথে উল্লেখিত Pseudomotor cerebri-র সম্পর্ক আরো ভালো ভাবে উল্লেখ করা দরকার ছিল। এখন আবার গোড়া থেকে শুরু করি।

গুনগত মান বলতে কি বুঝায়? কোন ড্রাগে গুনগত মান বলতে আমরা সাধারণভাবে বুঝে থাকি যে ঐ ড্রাগের উপাদান সমূহ সঠিক মানে বা সঠিক অনুপাতে না থাকা। আপনার লবনের কথাতেই আসি। আয়োডিন যুক্ত লবনের গুনগত মান যদি ঠিক না থাকে অর্থাৎ লবনে যদি সঠিক মাত্রায় আয়োডিন না থাকে বা মাত্রাতিরিক্ত আয়োডিন থাকে তাহলে কিন্তু সমস্যা হতেই পারে। যে লিংকটা দিয়েছিলাম সেখানে কিন্তু প্রথমেই বলা আছে যে Pseudomotor cerebri- কারণ জানা যায়নি। তবে এখানে আরও লিংক দিচ্ছি যেটা ভিটামিন এ-এর সাথে Pseudomotor cerebri-র সরাসরি সম্পর্ক নির্দেশ করছে।

এখন যে ভিটামিন এ ক্যাপসুল বাচ্চাদের দেয়া হয়েছে তাতে যে সঠিক পরিমাণে বা মাত্রায় ভিটামিন এ আছে তা কি আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি??? ভিটামিন এ -এর যে ডেরিভেটিভস এর কথা আপনি বলছেন, যাকে বলে All-trans retinoic acid (ATRA) তা ভিটামিন এ গ্রহণ করার পর মানবদেহে মেটাবলিজমের মাধ্যমে তৈরী হয়। নিচের লিংকে গেলে দেখবেন যে এই All-trans retinoic acid (ATRA) এর সাথে Pseudotumor cerebri-র সরাসরি সম্পর্ক দেখানো হয়েছে। এখন উচ্চমাত্রার ভিটামিন-এ যুক্ত ক্যাপসুল থেকে বা গুনগত মান পূরণে ব্যর্থ ভিটামিন-এ থেকে এই সমস্যা হতে পারে বলে স্টাডি তে বলা হচ্ছে।

লেখাতে আমি কোন সিদ্ধান্তে আসিনি। আমি শুধু বলতে চেয়েছি যে, সরকার এই গুজব ওঠার সাথে সাথেই ক্যাম্পেইনটা স্থগিত করে দিতে পারতো এবং মান পরীক্ষা করে দেখে নিশ্চিত হতে পারতো যে সব কিছু ঠিক আছে কিনা। কারণ এর আগেও এই ভিটামিন-এ ক্যাপসুলের মান নিয়ে কথা উঠেছে বলেই ক্যাম্পেইনের তারিখ দুবার পিছিয়েছে। তিন বছর আগের কেনা ভিটামিন এ ক্যাপসুল বা গ্লোব থেকে দুই বছর আগে কেনা ক্যাপসুল ঠিক আছে কিনা সেটা আরো যত্ন সহকারে পরীক্ষা করা দরকার ছিল। যদি ব্যক্তিগতভাবে বলতে হয় তাহলে কেউ মনে হয় না তার সন্তানকে দুই বা তিন বছর আগের ক্যাপসুল খাওয়াতে রাজি হবে। সেটা Pseudotumor cerebri- করুক আর নাই করুক।

যদি এটা স্রেফ গুজব হয় তবে সেই গুজব প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার কথাও লেখাতে বলেছি।

লিংক সমূহঃ
Pseudotumor cerebri-র সাথে ভিটামিন-এ এর সরাসরি সম্পর্কঃ
১। http://www.annemergmed.com/article/S0196-0644(96)70247-0/abstract
২। http://jama.jamanetwork.com/article.aspx?articleid=329246
৩। http://www.hindawi.com/crim/oncmed/2012/313057/
তিন নাম্বার লিংকের মধ্যে All-trans retinoic acid (ATRA) এর সাথে সম্পর্ক দেখানো হয়েছে।
৪। http://www.neurology.org/content/34/11/1509.short
৫। http://www.vitamina.org/vitaOverdosage.php
এই ৫ নাম্বার লিংকে উচ্চমাত্রার সিংগেল ডোজ ভিটামিন-এ গ্রহণ করলে Pseudotumor cerebri হয় বলে মত প্রকাশ করা হয়েছে।

ধন্যবাদ বিষয়টি নজরে আনার জন্য। পরবর্তীতে এধরনের লেখা আরো একটু বিস্তারির লেখার চেষ্টা করবো।

আলোকিত-মন

মেহদী হাসান খান এর ছবি

ফ্যাট সল্যুবল প্রত্যেকটা ভিটামিনের (A, D, K, E) মাত্রাতিরিক্ত প্রয়োগে টক্সিসিটি হয়, কারণ এদের শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়ার হার কম, এটা কোন নতুন তথ্য না। আমি একটা প্রশ্ন করেছিলাম আমার কমেন্টে:

"সেক্ষেত্রে এই ক্যাম্পেইনে দেয়া ভিটামিনগুলোতে মাত্রাতিরিক্ত ভিটামিন-এ ছিল এমন কোন তথ্য কি পাওয়া গেছে? আমি জানি না, তাই জানতে চাচ্ছি।"

যার উত্তরে আপনি লিখলেন- "এখন যে ভিটামিন এ ক্যাপসুল বাচ্চাদের দেয়া হয়েছে তাতে যে সঠিক পরিমাণে বা মাত্রায় ভিটামিন এ আছে তা কি আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি???"

এখানে মাত্রার বেশি ভিটামিন-এ ছিল কিনা সে ব্যাপারে বিন্দুমাত্র নিশ্চিত না হয়ে একলাফে Pseudotumor cerebri এর মত কনক্লুশনে কিভাবে গেলেন? শুধুমাত্র বমি অথবা বমিভাবের উপর নির্ভর করে? ইন্ট্রাক্রেনিয়াল প্রেশার বাড়লে সেটার উপসর্গ হিসেবে বমিভাবের কিছু আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে, আপনার না জানা থাকার কথা না সেটা। এখানে সাথে মাথাব্যথা থাকবে, শোয়া বা মাথা নিচু করা অবস্থায় সেই ব্যথা বাড়বে প্রবলভাবে, বমিভাব প্রকট হতে পারে সকালে। কোন পত্রিকার রিপোর্টে কি আপনি এভাবে উপসর্গগুলো পেয়েছেন যা সাজেস্ট করে এটা ইন্ট্রাক্রেনিয়াল প্রেশার বাড়ার কারণে হয়েছে?

আপনার Pseudotumor cerebri এর আশংকা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেয়া আমার উদ্দেশ্য না। কোন সূত্র ধরে এটা আশংকা করছেন সেটাই জানতে চাচ্ছিলাম, দেখলাম সেটার কোন ভিত্তি নাই। হতে পারে আপনার আশংকা সত্যি, এই কারণেই বাচ্চারা অসুস্থ হচ্ছে (যদিও এমনটা না হোক মনেপ্রাণে তাই চাইবো), কিন্তু যতক্ষণ না আপনি নিজে পরীক্ষা করছেন, লক্ষণ ঠিকভাবে বলতে পারছেন অথবা শক্ত রেফারেন্স দিতে পারছেন, এটা আমার কাছে আরেকটা উড়ো খবর ছাড়া কিছু না।

গুজব সৃষ্টিকারীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বলছেন, আর এদিকে নতুন একটা গুজব তৈরি করলেন নিজেই। আপনি ডাক্তার, তাই আপনার লেখার সূত্র দিয়ে ফেইসবুকে একজন সচলই লিখেছেন দুই কোটি শিশুর একটা অংশ এখান থেকে অন্ধ হয়ে যেতে পারে। জ্বী ভাই, কথা এভাবেই বাড়ে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ ভাইয়া,
আমার লেখাটা আপনি ঠিক ভাবে পড়েছিলেন কিনা তা নিয়েই এখন সন্দেহ হচ্ছে। আমার লেখার কোথাও কি আমি বলেছি যে, যে সমস্ত বাচ্চাদের এই সমস্যা হচ্ছে তারা Pseudotumor cerebri তে আক্রান্ত। বরং আমার লেখার মধ্যেই ছিল যে, এই সমস্যাটা যদি Pseudotumor cerebri হয় তাহলে কি হতে পারে। আমি ভিটামিন এ ক্যাপসুলের ওভার ডোজের সাথে Pseudotumor cerebri নামক একটা অসুখ হবার আশংকার কথা বলেছিলাম যা আমিও মনে প্রাণে চাই না। আমি আবারো বলছি লেখার কোথাও নেই যে এইসব বাচ্চাদের Pseudotumor cerebri হয়েছে।

২। ক্যাম্পেইনে ব্যবহৃত ভিটামিন ক্যাপসুলগুলো পরীক্ষা করে দেখার দায়িত্ব নিশ্চয় আমার বা আপনার নয়। তারা পরীক্ষা করে যদি এই গুজবটিকে থামিয়ে দিত তাহলে মনে হয় আপনার থেকে আমিই বেশি খুশি হতাম। দেশের মানুষ আশ্বস্ত হতে পারতো। লেখাটা সেই দিকটিকেই উল্লেখ করেছে।
৩। Pseudotumor cerebri এর ব্যাপারে আমি লেখার কোথায় কক্লুশনে গেলাম তা আমার বোধগম্য হলো না। ভিটামিন এ-এর টক্সিসিটির সাথে Pseudotumor cerebri-র ব্যাপারে গিয়েছি সেটা বললেও না হয় বুঝতাম যে লেখা পড়েছেন। সে ব্যাপারে আপনাকে ৫ টি রেফারেন্স দেয়া হয়েছে। কোন কিছু নিয়ে একটা আশংকা প্রকাশ করার অর্থ এটি নয় যে সেই ব্যাপারটি ঘটছে তা বলে ফেলা।
৪। আপনার রেফারেন্স দেখলাম। এই রেফারেন্সের সাথে Pseudotumor cerebri-র কোন সম্পর্ক খুঁজে পেলাম না। এটা বমি এবং বমি ভাব কিভাবে দূর করবেন তা নিয়ে লেখা। এর সাথে ভিটামিন এ বা Pseudotumor cerebri কিভাবে এল জানি না।
৫। যৌক্তিক সমালোচনা সবসময় ভালো লাগে। তবে কোন কিছু নিয়ে নিজের দেশের মানুষের জন্য আশংকা প্রকাশ করার অর্থ এই নই যে গুজব তৈরী করা। ভিটামিন এ-এর টক্সিসিটিতে Pseudotumor cerebri হতে পারে এটা নিয়ে যদি আপনার সন্দেহ থাকে তাহলে লিংকগুলো পড়ে দেখবেন।

আরো একবার বলছি আমার লেখার এই লাইনটা বোঝার চেষ্টা করুন যেখানে বলেছি যে, "যদি সমস্যাটা Pseudotumor cerebri হয়ে থাকে তবে"- এই কথাটা না বুঝলে তো আর কিছুই বলার থাকলো না।

এখন যদি বাংলাদেশের কোন শিশু Pseudotumor cerebri তে আক্রান্ত হয়ে অন্ধ হয়ে যাবার খবর আসে তাহলে মনে হয় আপনি একটা শক্ত রেফারেন্স পেয়ে যাবেন যে আসলেই ভিটামিন-এ ক্যাপসুলে মাত্রাতিরিক্ত ভিটামিন এ ছিল।
এমন শক্ত রেফারেন্স দেবার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা আমার নেই।

ধন্যবাদ।

আলোকিত-মন

মেহদী হাসান খান এর ছবি

ভিটামিন ক্যাপসুলগুলো পরীক্ষা করে দেখার দায়িত্ব আমার বা আপনার নয়। ঠিক বলেছেন। এবং পরীক্ষা করা যাদের দায়িত্ব, তাদের মতামত প্রকাশিত হওয়ার আগেই ডোজ যদি বেশি থাকে, সেখান থেকে যদি টক্সিসিটি তৈরি হয়ে Pseudotumor cerebri হয়, সেটা ক্রনিক হয়ে যদি অন্ধত্ব হয়... এতগুলো যদির উপর ভিত্তি করে আশংকা প্রচার করলে সেটাও কোন দায়িত্বজ্ঞানের পরিচয় দেয় না, বিশেষ করে এমন সময়ে, যখন আপনার ঘাড়ে পা দিয়ে মানুষ আরো গুজব বানিয়ে ফেলতে পারে। এ ধরণের লেখায় মেডিকেল সায়েন্সের রেফারেন্স দিয়ে সেটাকে পোক্ত করার আগে (যেমন, কথাটা আমার নয়। নিচের দেয়া লিংকে গেলেই এর সত্যতা পাবেন।) সেটা যে পর্যায়ক্রমিক ধারণার ভিত্তিতে চিন্তা করা, এটা ডিসক্লেইমারে লিখে দেয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

আর হ্যাঁ, যদির উপর ভিত্তি করে আরেক জায়গায় পৌঁছে যাওয়ার আগেই বলি, আপনার লেখা প্রথমবারেই আমি পুরোটা পড়েছি। উপস্থাপনাগত ত্রুটির কারণে মূল লেখা থেকে ভুল ব্যাখ্যা দেয়ার যে স্কোপ ছিল, আপনার মন্তব্যগুলো এখন সেটাকে ক্ল্যারিফাই করবে বলে মনে করি।

ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ ভাইয়া,

আমাদের জন্য সবথেকে কষ্টের কথা হল যে, এই বিষয়টি যাদের পরীক্ষা করে মতামত দেবার কথা (অবশ্যই সৎ মতামত) তাদের মধ্যেই কিন্তু সমস্যা দেখা যাচ্ছে। এটা যদি বাংলাদেশে না হয়ে কোন উন্নত দেশে হত তাহলে কি হত একবার চিন্তা করে দেখেন তো। আমরা ডাক্তাররা মানুষকে বলি ধূমপান করবেন না। তখন কি মানুষটা বলে আগে প্রমাণ করে দেখান যে সিগারেট খেলে সমস্যা হয়? তবুও আমরা একটা আশংকা থেকে কথাটা বলি যার একটা বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। আমি শুধুমাত্র সেই দিকটিই নয় সাথে আরো একটি দিক তুলে ধরার জন্য এই লেখাটা দিয়েছে সেটা হল কোন একটা জাতীয় ইস্যুতে আমাদের চোখ বন্ধ করে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যাবার যে মানসিকতা সেটা তুলে ধরার জন্য। আমরা যদি নিজেরা এর প্রতিবাদ না করি তাহলে তো আমরা নিজেদের কাছে দায়বদ্ধ থেকে যাবো।
আরো একটা কথা বলে এই আলোচনা শেষ করবো যে, উপস্থাপনাগত ত্রুটি হওয়াটা খুব স্বাভাবিক কারণ আমি নিয়মিত লেখালেখির সাথে জড়িত নয়। তবে গুজব ছড়ানোর বিন্দুমাত্র ইচ্ছা থেকে এই লেখার জন্ম হয়নি সেটা বুকে হাত রেখেই বলতে পারি। যদি তাই হত তাহলে লেখাটা সচলে দিতাম না। কারণ আর যাইহোক সচলে গুজবকে পাত্তা দেবার মত মানুষ নাই। শুধুমাত্র এতবড় এই ব্যাপারটা নিয়ে কিছু তথ্য উল্লেখ করে অবস্থা প্রকাশ করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ কারণ ভবিষ্যতে আরো সতর্ক হয়ে লেখার জন্য এটা একটা ভালো দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে আমার কাছে।

ভালো থাকবেন। শুভকামনা।

আলোকিত-মন

ছাইপাশ  এর ছবি

আপনার দেয়া রেফারেন্স গুলো দেখলাম এবং যা বুঝলাম ভিটামিন এ এর ওভার ডোজের সাথে সিউডোমোটর সেরিব্রি সম্পর্ক যুক্ত। আপনার পাঠানো লিংক গুলোর মধ্যে জর্জ মরিসের পেপার আনুযায়ী ডোজ ছিল ২০০,০০০ এবং ৯০,০০০ ইউনিট প্রতিদিন। যেখানে বাংলাদেশের ভিটামিন এ ক্যাম্পেইন এ ডোজ হচ্ছে ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সের শিশুদের জন্যে বছরে মাত্র দুই বার ২০০,০০০ ইউনিট খাওয়ানো হয়, ৩৬ সপ্তাহ বয়েসের বাচ্চাদের খাওয়ানো হয় ১০০,০০০ ইউনিট একবার শুধু হামের টিকা নেয়ার সময়।

তাই সাধারণ ভাবে চিন্তা করলে বাংলাদেশে ভিটামিন এ ক্যাম্পেইনের কারণে সিউডোমোটর সেরিব্রি হবার সম্ভাবনা নাই বললেই চলে। তাই এই প্রসঙ্গটা লেখায় কেন এলো আমি বুঝতে পারছি না।

তবে, আমিও আপনার সাথে একমত যে, ভিটামিনের এ এর গুজবটা কেন সুধুই গুজব সেটার আরো স্পষ্ট ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে।

ছাইপাশ  এর ছবি

সিউডোটিউমার লিখতে গিয়ে সিউডোমোটর লিখে ফেলেছি। দুঃখিত।

নিঘাত তিথি এর ছবি

"সব থেকে ভয়ের ব‌্যাপার হলো যদি আসলেই সমস্যাটা Pseudomotor cerebri হয়ে থাকে তাহলে শিশু অন্ধ পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে "
এবং
"আশার কথা এই Pseudomotor cerebricerebri কোন চিরস্থায়ী সমস্যা না। এটা নিরাময়যোগ্য। "

এই দুইটা কথা কেমন পরষ্পরবিরোধী মনে হচ্ছে। ডাক্তার নই, সাধারণ মানুষ, তাই হয়তো বুঝতে পারছি না। কিন্তু বুঝতে চাই!

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

অতিথি লেখক এর ছবি

চেষ্টা করছি বুঝাতে। ধরেন যদি Pseudomotor cerebri একটা নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে বেশি সময় ধরে থাকে তাহলে অপটিক নার্ভ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে বাচ্চা অন্ধ হয়ে যেতে পারে। তবে যদি অসুখের মাত্রা অতটা বেশী না হয় তাহলে সমস্যাটা হবে না।

আমি বলেছিলাম অন্ধ পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে যেটা অসুখের মাত্রাকে নির্দেশ করছে। আমি বলিনি অন্ধ হয়ে যাবেই। অন্ধত্ব এই সমস্যার একটা চরম পর্যায়।

আমি শেষ লাইনে যেটা লিখেছিলাম সেটা আসলে যেসব বাচ্চাদের বমি বমি ভাব, বমি অথবা অবসাদগ্রস্থতা হয়েছিল তাদের পিতামাতারা যেন আতংকগ্রস্থ না হয়ে যান সেটা বুঝানোর চেষ্ট থেকেই লেখা। হয়তো ঠিক ভাবে উপস্থাপন করতে পারিনি বিষয়টি। এজন্য দুঃখিত।

আলোকিত-মন

তানিম এহসান এর ছবি

আপনার কথামত যদি Pseudomotor cerebri - এই সমস্যা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই থাকে তাহলে বিকল্প উপায় আছে কি? একটু স্পষ্ট করবেন দয়া করে।

বাংলাদেশে কিংবা পৃথিবীতে আজ অবধি কোন ঘটনা কি ঘটেছে যাতে করে এই সমীকরণে পৌঁছে যাওয়া যায় যে Pseudomotor cerebri ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর সাথেই শুধুমাত্র সম্পর্কিত? আপনার পোস্ট পড়ে বুঝে না থাকলে দু:খিত।

হাসিব এর ছবি

এইখানে মূল সমস্যা মনে হয় এরকম একটা ক্যাম্পেইন চালানোর আগে যথাসাধ্য পরীক্ষা করা হয়েছে কিনা সেটা। সরকারের কিছু বিষয় এখানে লুকোছাপা করে করা হয়েছে এটাতে কোন সন্দেহ নেই। এই কারণে ছাগুপার্টি গুজব ছড়ানোর সুযোগ পেয়েছে। এইসব গুজবের দীর্ঘমেয়াদি প্রতিক্রিয়া হতে পারে। সরকারের উচিত আরো সতর্কতার সাথে এইসব জিনিস হ্যান্ডেল করা।

তানিম এহসান এর ছবি

যদি ভুল না হয়ে থাকে, ভিটামিন এ ক্যাম্পেইন নিয়ে এই গুজব প্রথম তৈরি হয় তিন বছর আগে প্রথম, সেবারই প্রথম আলাদাভাবে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো শুরু হয় ভিটামিন এ ক্যাপসুলের সাথে। সেইবার সাইদী’র গজব এর সাথে এর কোন সম্পর্ক ছিল-না, এইবার গুজব ছড়ানো হয় সাইদী’র গজবের সাথে সমান্তরাল নিয়ত রেখে। ‘আইজকে সারা দেশে হাজার হাজার ফোলাপান মরি গেছে সরকারী ওষুধ খাওয়ার পর; সাইদী সাবরে ফাঁসি দিছে, এইগুলা আল্লাহ’র গজব নাইমতে আছে দেশের উপর, আন্নেরা কিছু করেন!’ -- ফ্লেক্সিলোডের দোকানে গেছি, হুট করে এক ছেলে এসে প্রায় কাঁদো কাঁদো স্বরে এই কথা ঘোষণা দিয়ে ছুটে বেরিয়ে চলে গেল, দোকানদার প্রথমে হতবাক হলেও পরে দেখি ‘গজব নাইমতেছে’ ধরনের কথা বলছে, জানালাম পুরাটাই গুজব, আরও দুইজন কাস্টমার ছিলেন। এইরকম একটা গুজব একজন মা, বাবা কিংবা পরিবারের জন্য কতটা ভয়ংকর হতে পারে? শীত পেরিয়ে গরম চলে এসেছে, সর্দি-কাশী লেগেই আছে শিশুদের, এই সাধারণ সর্দি-কাশী’তে এই গুজব ভয়ংকর প্রভাব ফেলতে পারে।

পোস্টটিতে কিছু তথ্য আছে রেফারেন্স সহ, মন্তব্যের ঘরে এসে আরও কিছু বিষয় স্পষ্ট হয়েছে। আমি এখানে আরেকটি বিষয় যোগ করতে চাই, ভিটামিন এ ক্যাম্পেইন এর সাথে সরকার একা কাজ করেনা কিংবা সিদ্ধান্ত নেয়না, এই ক্যাম্পেইন এর শুরু থেকে ইউনিসেফ বাংলাদেশ একদম সরাসরি যুক্ত। ডব্লিউএইচও কারিগরি এবং গুণগত মানের বিষয়টি দেখার কাজে সরকার’কে সহায়তা করে। আমি স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করিনি কিন্তু যতদিন ইউনিসেফ এ কাজ করেছি তাতে বন্ধের দিন হলেও ভিটামিন এ ক্যাম্পেইন এর ফিল্ড ভিজিট করতে হতো সরকারী লোকজনের সাথে, আমি কিছুটা হলেও বিষয়গুলো জানি। পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত হয় একটি ন্যাশনাল স্টিয়ারিং কমিটির মাধ্যমে, জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কমিটি আছে -- কমিটির মাধ্যমে ক্যাম্পেইন শুরুর যথেষ্ট আগে থেকেই একটা সাজ সাজ রব পড়ে যায় প্রতিটি এলাকায়। একা সরকার স্বেচ্ছাচারিতা করতে চাইলেও সেটা কতটা সম্ভবপর তাই নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। বাংলাদেশের ভিটামিন এ ক্যাম্পেইন এর সাফল্য বিশ্বজুড়ে সফলতম মডেল হিসেব স্বীকৃত, এমনকি যে ওয়্যারহাউজে ক্যাপসুল কিংবা ট্যাবলেট রাখা হয় তার ব্যবস্থাপনা’র মানও সেই স্বীকৃতি’র বাইরে নয়। ভারতের কোম্পানি থেকে ক্যাপসুল কেনা হলে ডব্লিউএইচও রিজিওনাল অফিস (দিল্লীতে) যদি এই ক্রয় প্রক্রিয়ায় কোনভাবে জড়িত না থাকে তাহলে আমি অবাক হবো।

শুধু একটি বিষয় কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়, যেটা পরে বেরিয়ে এসেছে এবং আপনার লেখাতেও রেফারেন্স হিসেবে এসেছে, সেটা হচ্ছে গ্লোব ফার্মাসিউটিকলস এর ঔষধ খুলনা এলাকাতে পাঠানো। এই বিষয়টি মানতেই পারছি না, কিসের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হল তাও বুঝতে পারছিনা। আমাদের ভাগ্য ভাল এতে একটা বিভাগ জুড়ে মাতম হয়নি, হতে পারতো।

অতিথি লেখক এর ছবি

আসালামুআলাইকুম আম ভাইয়া,

আপনার এই জনসচেনতামূলক পোস্টখানা খুবই সময়োপযোগী হইয়াছে। কিন্তু এক যায়গায় গিয়ে প্যাচ বা ল্যাজ যাই বলুননা কেন তা বের হয়ে গেছে। এবার আসি কোথায় সেটা:

আপনার কথার ওজন বুঝানোর জন্য আপনে বল্লেন "আমি ডাক্তার" তার উপরে আপনে যে "সেরম ডাক্তার" তার জন্য আবার বল্লেন ফার্মাকোলোজির ছাত্র!! এই পর্যন্ত ঠিকই ছিল কিন্তু যখন আপনের ছাত্রকে নিয়ে আসলেন যে কিনা আবার আইসিডিডিআরবির ফেলো মানে ঘটনা চলে গেল পুরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হে হে!! তাও আবার রেফারেন্স দিলেন মিয়া ময়মনসিংহের। একটু এদিক ওদিক দেবেন না? ঢাকায় আইসিডিডিআরবির এত্ত বড় হাসপাতাল তার কথাওতো বলতে পারতেন, তা না বইল্যা এক রুমের কমুনিটি ক্লিনিকের খবর দেলে চলবে??

আপনেরা ভিটামিন এ গুজব ছড়ানোর পরে ময়মনসিংহের খবর হইল:

ধন্যবাদ, মোট ৫টা আলাদা আলাদা সূত্রের সঙ্গে চেক করা হয়েছে। ডিউটিরত ১ জন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা হয়েছে, আরেকজন অন্য বিভাগের চিকিৎসক আলাদা ভাবে খোঁজ নিয়েছেন-ময়মনসিংহ মেডিকেলে 'হাজার হাজার ভিটামিনসেবী অসুস্থ শিশু'র বিষয়টির কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা পাইনি। শিশুরা সাধারণভাবে অন্যদিন যে পরিমান ভর্তি হয়, আজকেও গড়ে সে পরিমানই ভর্তি হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।
ইনবক্সে আরো যারা নক করেছিলেন, তাঁদেরকেও কৃতজ্ঞতা। আমার ফ্রেন্ডলিস্টে যে এত এত ডাক্তার আছেন, জানা ছিল না। দেঁতো হাসি --আরিফ জেবতিক

ইন্টারনেট খুব খ্রাপ যায়গা। আচ্ছা আপনে কি এই ভদ্দরলোকরে চেনেন ? আপনের সাথে কি এর কোন পরিচয় আছে অথবা আপনিই কি ইনি? আপনে ঢাবি থেকে মেডিকেল মানে ডাক্তারি/ফার্মাকোলজি পাশ দিয়ে ব্র্যাক ইউনিতে বায়োলজি পড়াইতেন?

শোনেন ভাইয়া আপনের যে দাদা সে ছিল আপনের বাবার বাবা। মানুষজনরে Pseudomotor cerebri, অন্ধ হয়ে যাওয়া, পাবমেডের লিংক ধরাইয়া দিয়া ফেবুতে পানি পাইলে পাইতেও পারেন, কিন্তু এখানে সুবিধা করতে পারবেন না। আপনের জন্য প্রেসকিপসন্স হইলো সবার আগে "হাউ টু বিকাম এ রয়েল গোট" সেই পোস্টখানা পড়া।

নিচের প্যারাটা আর সবার জন্য:

প্রশ্ন: ভিটামিন এ বা কৃমির ওষুধ সারাদেশে কতজনকে খাওয়ানো হইছে?
উত্তর: প্রায় ২ কোটি আচ্ছা ধরলাম ১ কোটি তাও বাদ ধরেন গিয়া ৫০,০০০ বাচ্চাকে খা‌ওয়ানো হইছে।

প্রশ্ন: কতজন বাচ্চা এই ভিটামিন এ/কৃমির ওষুধ খেয়ে অসুস্থ হইছে?
উত্তর: ১০০?? ২০০?? ৫০০?? ১০০০?? ৫০০০?? ২৫০০০?? ৫০০০০??

প্রশ্ন: ওষুধের ফ্যাকটেরিতে একসাথে কয়টা ওষুধ বানানো হয় প্রতি ব্যাচে?
উত্তর: ১?? ১০০?? ১০০০??

প্রশ্ন কোন ব্যাচের ওষুধ যদি খারাপ হয় (কোয়ালিটি পাশ না করতে পারে) তাইলে সেই ব্যাচের কয়টা ওষুধ খারাপ হবে?
উত্তর: সব গুলা?? নাকি গুটি কয়েক??

প্রশ্ন: যদি স্পেসিফিক কোন খারাপ ব্যাচের ওষুধ শিশুদের খাওয়ানো হয় তাহলে কি সব বা বেশির বাগ শিশুই অসুস্থ হইত না?
উত্তর: হ্যা

প্রশ্ন: তাইলে এইবার ভিটামিন এ বা কৃমির ওষুধে বেশির ভাগ শিশুই কি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হইছে নাকি গুটি কয়েক শিশু হইছে (যদি ধরেও নেই সেইটা শুধুই ভিটামিন এ বা কৃমির ওষউধের জন্য হইছে)?
উত্তর: না

প্রশ্ন: তাইলে এই শিশুরা কেন অসুস্থ হয়ে হাসপাতেলে ভর্তি হইলো?
উত্তর: ১. ভিটামিন এ খেয়ে কোন অসুবিধা হবার সম্ভানা নাই। যদি ক্যাপসুল খারাপ হতো, তবে সবারই শরীর খারাপ হতো, কয়েক জনের না। ২. প্রতিদিনই কিছু বাচ্চা অসুস্থ হয়, নানা কারনে। যেহেতু সবাই আজকে ভিট এ খেয়েছে, তাই এদের মধ্যেও এমন বাচ্চারা ছিল, তাই বমি বা পায়খানা করলেই সেটা ভিটামিন এর জন্য হচ্ছে সেটা ঠিক না। ৩. ভিট এ এর স্বাদ অনেকটা কডলিভার অয়েল এর মতো, এর বিদঘুটে গন্ধও আছে, তাই অনেক বাচ্চারা কোন কারনে এটার স্বাদ টের... পেলে বমি করে ফেলে দেয়। ৪. কৃমির ঔষধ খালি পেটে খেলে অনেকের বমি হয়.. আবার কৃমিওয়ালা বাচ্চাদের মাঝে মাঝে পায়খানাও হয়.. এটা স্বাভাবিক.. দেশে কোটি শিশুকে ভিট এ খাওয়ানো হয় প্রতিবছর ..... সুতরাং এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নাই..৫. কালকে ভিট এ কেউ খাবে না, কালকেও কয়েক হাজার শিশু বমি , পায়খানা, জ্বর নিয়ে হাসপাতালে যাবে, রোজই যায়... তেমন আজকেও গেছে.. এর সাখে ভিটামিন এ এর সম্পর্ক খোঁজার কোন কারন নেই.....আব্দুর নুর তুষার

তাইলে আম ভাইয়া শেষ মেষ কি দাড়াইলো? "ল্যান্জা ইজ আ ভেরি ডিফিকাল্ট থিং টু হাইড"

মুন্না ভাই, এমবিবিএস

Wahid এর ছবি

আমরা এমন এক সময়ে বাস করছি যখন চাঁদে সাঈদীর মুখ দেখা যায়। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে একজন বিশেষ অজ্ঞ ব্যক্তির বালখিল্য সুলভ লেখাটি পরে যারপর নাই বিরক্ত হলাম। গুজবের পালে হাওয়া দেবার জন্য অশিক্ষিত কাঠমোল্লাদের পাশাপাশি অর্ধশিক্ষিত বিশেষ(অজ্ঞ)দেরও অভাব হয়না। মুন্না ভাই, এমবিবিএস এর মন্তব্য এই লেখাটির চরিত্র অনেকটাই উন্মোচিত করেছে। কেউ যদি একটু ঠান্ডা মাথায় পরিসংখানগত বিশ্লেষন করেন তাহলেই গুজবের ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়।
সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা নজরুল ইসলাম বলছিলেন সেদিন কেমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি।
“সন্ধ্যার পর থেকে খবর আসা শুরু হলো এখানে এতো, ওখানে অতো মরেছে। উৎকন্ঠিত জনগণ তাদের সুস্থ বাচ্চাদের ঘুম থেকে তুলে নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত হাসপাতালে আসতে শুরু করে। মোবাইলে একের পর এক ফোন আসে, চার-পাঁচটা আউটডোর খুলে দিয়ে কাউন্সেলিং শুরু করি। দু একটা বাচ্চার স্বাভাবিক কারণে বমির ভাব বা পাতলা পায়খানা সমস্যা ছিল। অধিকাংশ বাচ্চাই ছিল সুস্থ, শুনলাম মসজিদে মাইকে তেতুল গুলে পানি দিয়ে বাচ্চাদের খাওয়াতে বলেছে।সূত্র.shtml)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।