বাঙালির রসনায় কলম্বাস

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ২৫/০৩/২০১৩ - ১:৩৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বন্ধুর কাছ থেকে ধার করা একটি ছোট্ট চুটকি দিয়ে শুরু করা যাক। ক্রিস্টোফার কলম্বাস বাঙালি হলে কোনদিন আমেরিকা মহাদেশ যাত্রার সমুদ্রপথ আবিষ্কার করতে পারতেন না। সদর দরজা দিয়ে বেরুতে না বেরুতেই তো গিন্নির হাজারো প্রশ্নের জবাব দিতে হতো; কোথায় যাচ্ছ? কেন যাচ্ছ? দুনিয়াতে এত মানুষ থাকতে তোমাকেই কেন যেতে হবে? রাতে এসে খাবে তো?

ইতালিয় নাবিক কলম্বাস ১৪৯২ খৃস্টাব্দের ১২ই অক্টোবর প্রভাতে তার তিন জাহাজের বহর নিয়ে নোঙ্গর ফেলে আটলান্টিকের অপর পাড়ের এক অজানা সৈকতে। এরই সাথে শুরু হয় পৃথিবীতে মানবজাতির ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়। নতুন মহাদেশের সাথে পুরোনো মহাদেশের (ইউরেশিয়া) সমুদ্রপথে গড়ে উঠা বাণিজ্যে বদলে যায় সারা পৃথিবীর মানুষের জীবনযাত্রা, কৃষিকাজ, পশুপালন আর খাদ্যাভ্যাস। স্থলপথে ভারতীয় উপমহাদেশের সাথে ইউরোপের পন্য আদান প্রদানের ইতিহাস সুপ্রাচীন। কলম্বাসের আমেরিকা অভিযানের ৬ বছর পূর্তির আগেই ১৪৯৮ সালের ২০শে মে ভারতের কালিকট বন্দরে এসে ভিড়ে প্রথম ইউরোপীয় জাহাজ। পূর্তগিজ নাবিক ভাস্কো দা গামা সাথে নিয়ে আসে লাল আর সবুজ রঙের এক নতুন আইটেম। লিসবনের বাজারে বছর ছয়েক আগে এই জিনিসের আবির্ভাব হয়েছে কলম্বাসের কল্যাণে। যিশুর জন্মের ৭,৫০০ বছর আগেও আমেরিকা মহাদেশের অধিবাসিদের রোজকার মেন্যুতে ছিল এই আইটেম আর কলম্বাস ইউরোপে স্যাম্পল হিসেবে নিয়ে আসে যিশুর জন্মের ১৪৯৩ বছর পরে। পোস্টের শুরুতেই বাঙালির অহংকার পান্তা-ইলিশের যে ছবি দেখতে পাচ্ছেন সেই থালার কাঁচামরিচগুলি পাশের ভদ্রলোক (ক্রিস্টোফার কলম্বাস) আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে নিয়ে এসেছেন আমাদের রসনা বিলাসে।

প্রাক কলম্বাস আমলে ভারতীয় উপমহাদেশে মিলত শুধু গোলমরিচ। পর্তুগিজ বণিকরা ভারতে নিয়ে আসে কাঁচামরিচ আর আজকে ভারত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মরিচ ফলনকারি দেশ। বাঙালির খাদ্যাভ্যাসে শুকনো আর কাঁচামরিচের উপস্থিতি যে কতটা জোরালো তা যেকোনো বাংলাদেশি টিভি চ্যানেলের রন্ধন বিষয়ক অনুষ্ঠান দেখলেই হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যাবে। বিদেশের মাটিতেও দেখেছি বাংলা দোকানের মরিচ ফুরিয়ে গেলে প্রবাসি বাঙালির হাহাকার!

আলুভর্তা জীবনে খায়নি এমন বাঙালি মিলবে না। আগুনে পোড়ানো শুকনো মরিচ, সরিষার তেল আর সিদ্ধ আলুর এই মিশ্রণ ভাতে মাখিয়ে উদরপূর্তি করে ক্ষেতে যায় গ্রামবাংলার দরিদ্র কৃষক। পাঁচশো বছর আগের চিত্র কিন্তু একেবারেই আলাদা। মরিচ তো সবে এসেছে ভারতে কিন্তু যার নামে এই ভর্তা সেই আলুর নামই তখনও শুনেনি বঙ্গবাসী। খ্রিস্টপূর্ব ৫,০০০ বছর আগেই আজকের পেরু আর বলিভিয়ার ইনকা সভ্যতার মানুষ আটা বানাতো আলু দিয়ে। কলম্বাসের আবিষ্কৃত সমুদ্রপথে সেই আলু ইউরোপের বাজারে আসে ষোড়শ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে। বাঙালিও আলুকে সাদরে বরণ করে নেয় তার রোজকার মেন্যুতে। আলুর ভর্তা আর আলুর দম বানিয়েই ক্ষান্ত হয়নি বাঙালি; মাছ, মাংস আর সবজির তরকারিতেও আলুকে জায়গা করে দিয়েছে মনের মাধুরি মিশিয়ে! স্কুলের টিফিনের সেই আলুর চপ আর পাড়ার মুনমুন হোটেলের গরম গরম আলুপুরির স্বাদ জিভে এখনও লেগে আছে আমার। ছুটিতে গ্রামে বেড়াতে গিয়ে মাটির চুলায় মিষ্টি আলু পুড়িয়ে খেয়েছি আমার শৈশবে।

ভিনদেশী সবজি টমেটোকেও আপন করে নিতে দেরী করিনি আমরা। মেক্সিকোর অ্যাজটেক সভ্যতায় খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ সনেই টমেটোর চাষাবাদ হতো। কলম্বাস আমেরিকা মহাদেশ থেকে স্পেনের রাজপরিবারের জন্য উপহার হিসেবে নিয়ে আসে এই লাল টুকটুকে ফল। কলম্বাসের মৃত্যুর অনেক বছর পর স্প্যানিশরা এশিয়াতে তাদের উপনিবেশ ফিলিপাইনে টমেটোর চাষ শুরু করে। ধীরে ধীরে বঙ্গদেশেও জনপ্রিয়তা পায় টমেটো। ভাজা ইলিশ মাছের সাথে মিশিয়ে রান্না করা টমেটোর তরকারিতে কাঁচামরিচের উপস্থিতি যেন লাল সবুজের এক অপূর্ব সমারোহ। সালাদে চাক চাক করে কাটা টমেটো আর আলুর চপের পাশে থাকা কেচাপ আধুনিক বাঙালির রসনা শিল্পকে করেছে আরও সুস্বাদু।
গ্রামবাংলার এক অতি সাধারণ দৃশ্য লাউ-পুঁইয়ের মাচা আর তার পাশে তরতরিয়ে বেড়ে ওঠা মিষ্টি কুমড়োর হুলুদ ফুলে ঢাকা ডগা। ইলিশ বা চিংড়ি মাছের সাথে মিষ্টি কুমড়োর টুকরো দিয়ে রান্না করা তরকারি খেতে দারুন। উত্তর আমেরিকার আদিনিবাস থেকে আসা কুমড়ো তার বহুরূপী আকার আর বর্ণে সাচ্ছন্দে জন্মায় বাংলাদেশের আনাচে-কোনাচে। মিষ্টি কুমড়োর সহগোত্রিয় সবজি স্কোয়াশ শুনেছি আজকাল ঢাকার বাজারেও সহজলভ্য।

পড়ন্ত বিকেলের রোদে দুই টাকার চীনাবাদাম চিবিয়ে কত আড্ডাই না দিয়েছে প্রাণখোলা বাঙালি তরুন। চন্দ্রিমা উদ্যানের সবুজ ঘাসে বসে প্রেমিকযুগল দেখেছে কত স্বপ্ন হাতে রেখে সেই চীনাবাদামের প্যাকেট! হতে পারে চীন বর্তমানে বিশ্বের সর্ববৃহৎ বাদাম ফলনকারি দেশ কিন্তু ইতিহাসের পাতা তো বলে এখানেও রয়েছে কলম্বাসের অবদান! প্যারাগুয়ের আদিনিবাস ছেড়ে আটলান্টিকের অপর পাড়ে আসতে বাদাম চারাকে তো অপেক্ষা করতে হয়েছে কলম্বাসের জাহাজের জন্য।

আনারস তো দুইশ বছর আগেও বঙ্গদেশে কেউ চেখে দেখেনি। স্প্যানিশরা উনবিংশ শতাব্দীর শেষদিকে ফিলিপাইনে নিয়ে আসে আনারস। বর্তমানে ফিলিপাইন আনারস ফলনে বিশ্বের প্রথম স্থানে যদিও এই রসালো ফলের আদিনিবাস ব্রাজিল। কলম্বাসের আবিষ্কৃত জলপথেই পর্তুগিজ নাবিকেরা তাদের উপনিবেশ ব্রাজিল থেকে আনারস নিয়ে ইউরোপে। আমাদের বাংলদেশের মধুপুর অঞ্চলে আনারস চাষ হয় প্রচুর, জানিনা সুদূর ব্রাজিলের সাথে আমাদের মধুপুরের মাটি আর প্রকৃতির মিল কতটুকু!

মধ্য আমেরিকার পেয়ারা তো সারা বাংলাদেশেই অবাধে জন্মে গ্রামেগঞ্জে গৃহস্তের আঙিনায় আর শহুরে বাঙালির ফ্ল্যাটের বারান্দায়। আমার প্রিয় এই ফলটির ধবধবে সাদা ফুল অসম্ভব সুন্দর। বাড়িতে “দেশী” পেয়ারা গাছ ছিল একটা (এখন জানি পেয়ারা তার পূর্বপুরুষের দেশ ছেড়ে সাত সমুদ্র আর তের নদী পেরিয়ে বঙ্গদেশে আসতে পেরেছে একজন ক্রিস্টোফার কলম্বাসের বদৌলতে)। পেয়ারা আধাপাকা কচকচে থাকতেই খেতে ভালো লাগতো। বেশি পেকে গেলেও সমস্যা ছিলনা, মা বানিয়ে ফেলত মজাদার হোমমেইড জ্যাম!

শহুরে বহুতল ফ্ল্যাটের ছাদেও শৌখিন বাঙালি ড্রামে মাটি ভরে চাষ করছে পেঁপে। গ্রামবাংলার বাড়ির আঙিনায় গাছে ঝুলে থাকা কাঁচা পাকা পেঁপে অতি সাধারণ এক দৃশ্য। ফল হিসেবে হলুদ পাকা পেঁপে আর সবজি হিসেবে সবুজ কাঁচা পেঁপের গুণাগুণ অনেক। আজকাল তো হারবাল চিকিৎসায় পেঁপে ব্যাবহৃত হচ্ছে খুব। পেঁপের আদি উৎপত্তিস্থল মেক্সিকো।

কলম্বাসের অভিযান পরবর্তী ইউরোপের সামগ্রিক খাদ্যাভ্যাস পাল্টে গিয়েছে আমেরিকা থেকে আগত ভুট্টার কল্যাণে! বাংলাদেশে ভুট্টার সীমিত ব্যাবহার দেখেছি আমি কয়েক দশক আগে, এখন জানিনা কি অবস্থা। মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হলে পপকর্ন কালচার কি শুরু হয়েছে? একুশের বইমেলা থেকে ফেরার পথে রিকশায় বসে পোড়ানো ভুট্টা অনেক খেয়েছি ঢাকার সেই মিষ্টি শীতের সন্ধেবেলায়। পাশের দেশ ভারত বিশ্বের ৬ নম্বর ভুট্টা ফলনকারি দেশ।

কোকো নামক এক উদ্ভিদ প্রচুর জন্মায় দক্ষিন আমেরিকার আমাজন উপত্যকায়। ফলের বীজ থেকে প্রস্তুতকৃত পানীয় ব্যাবহৃত হতো ভেষজ চিকিৎসায় আর ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে। কলম্বাস আমেরিকা থেকে স্যাম্পল হিসেবে নিয়ে আসলেও বাণিজ্যিক ভাবে প্রথম ইউরোপে আমদানি হয় ১৫২০ খ্রিস্টাব্দে। ইউরোপেই কোকো ফলের বীজ থেকে প্রথম তৈরি হয় সুমিষ্ট চকলেট। বাংলাদেশে চকলেটপ্রেমি মানুষের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়, দিনদিন বাড়ছে চকলেটের সহজলভ্যতা।

শহুরে বাঙালির “ধূমপান করা” আর গ্রাম্য কৃষকের “তামুক খাওয়া” যেটাই বলুন না কেন আমরা বাঙ্গালিরা ইতিহাসের পাতায় অনেক পিছিয়ে আছি! আটলান্টিকের ওই পাড়ের কৃষককুল তামুক খেয়ে আসছে যিশুর জন্মের হাজার বছর আগে থেকেই! কলম্বাসকে দুষিয়ে লাভ নেই, সপ্তদশ শতাব্দীতে পর্তুগিজ বণিকেরা আমাদের দেশে নিয়ে আসে তামাক। তামাক সেবনের “সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ” প্রকাশের আগেই বাঙালির নেশায় ঢুকে যায় তামাকের বিষাক্ত ধোঁয়া!

১৪৯৪ খৃস্টাব্দের ৩রা আগস্ট কলম্বাস যখন সান্তা মারিয়া, পিনটা আর নিনা নামের তিন জাহাজ নিয়ে তার অভিযান শুরু করে তখন তার উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় উপমহাদেশে আসার জলপথ আবিষ্কার। অদৃষ্টের পরিহাসে পৌঁছে যান এক নতুন মহাদেশে, আমেরিকায়! জীবদ্দশায় কোনদিন জানতে পারেননি এই সত্য। যেমনটি জানতে পারেননি তার এই দুঃসাহসী সমুদ্র অভিযান এতটা বদলে দিবে ভারতবর্ষের এক ছোট্ট জনপদ বাংলাদেশের মানুষের রসনা বিলাস। জয়তু কলম্বাস!

[পাদটিকাঃ পোস্টে ব্যাবহৃত ছবি এবং কিছু তথ্যাদি উইকিপিডিয়া থেকে সংগৃহীত]

......জিপসি


মন্তব্য

মেঘা এর ছবি

বাহ্‌! সুন্দর তথ্যবহুল লেখা। মরিচের ব্যাপারটা আমাদের পীর সাহেবের কারণে জানাই ছিলো। বাকি সব সবজীর তথ্য জেনেও ভাল লাগলো তবে কথা হচ্ছে সব যদি সাত সমুদ্র পাড়ি দিয়ে এসেছে তো আমাদের দেশে হতো কোন ছাই?

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

মন মাঝি এর ছবি

কেন, ভাত? এজন্যেই ত আমরা "ভেতো বাঙালী" হিসেবে বিখ্যাত হাসি

****************************************

অতিথি লেখক এর ছবি

আলু ভর্তার বদলে বেগুন ভর্তা, মিষ্টি কুমড়োর বদলে সর্ষে বাটা দিয়ে চমৎকার রান্না হবে পদ্মার ইলিশ। সাথে থাকবে মসুর ডাল। ব্যাস আর কি চাই?
ঝালমরিচটাই শুধু অনেক মিস করবে ভেতো বাঙালি!

......জিপসি

সত্যপীর এর ছবি

চমৎকার টপিক. একবারে সব আইটেম না দিয়ে পর্ব করে দিলে পারতেন.

আরো আসুক চলুক

..................................................................
#Banshibir.

বন্দনা এর ছবি

লেখা মজারু হয়েছে জিপসি। আরো লেখা আসুক এই টপিকের উপর।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় সত্যপীরের এই পোস্টটার লিঙ্ক দিলাম। এবং সেখানে করা আমার কমেন্টের কিয়দংশ তুলে দিলামঃ

৪। পেঁপে (মেক্সিকো থেকে), কাস্টার্ড আপেল (আতা) (এর আমদানী নিয়ে সন্দেহ আছে), পেয়ারা (মেক্সিকো থেকে) ইউরোপে নিয়ে আসে স্পেনিশরা। কলম্বাস আনারস নিয়ে এসেছিলো এই বক্তব্যটা মানতে পারছিনা। আনারস উরুগুয়ে থেকে ইউরোপে গেছে - উত্তর/মধ্য আমেরিকা বা ক্যারিবিয় অঞ্চল থেকে না। উরুগুয়ের নেটিভ চারুয়া আর গুয়ারানি জাতির ভাষায় এই ফলটাকে বলা হতো 'আন্নানাস'। উরুগুয়েতে পর্তুগীজরা স্পেনিশদের আগে যায়নি। তবে ভারতে এটা পর্তুগীজদের আমদানী হতে পারে। অরিজিনাল নামটাও বেশি বিকৃত হয়নি - আন্নানাস > আনারস।

৫। মরিচ আমেরিকা থেকে স্পেনিশরা ফিলিপাইনে নিয়ে গিয়েছিল। ফিলিপাইন থেকে ভারতসহ এশিয়ার অন্যত্র নিয়ে যাবার কৃতিত্ব সম্ভবত চীনা অথবা আরব বণিকদের। বাণিজ্যিকভাবে পর্তুগীজরা ভারতে মাস লেভেলে মরিচ আমদানী ও জনপ্রিয় করে থাকতে পারে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হাসিব এর ছবি

আমি সাহেবসুবোদের বেশ কয়েকটা বইতে আমরা কবে থেকে কী খেতে শিখলাম সেগুলোর বিবরণ পড়েছি। এদের বর্ণনায় বাংলা অঞ্চলের (বা বাড়িয়ে নিয়ে ভারতবর্ষ) সাথে বাইরের বিশ্বের (মধ্য প্রাচ্য, অটোমান সাম্রাজ্য (মধ্য এশিয়াসহ) ও চায়নিজ সভ্যতা, পূর্ব এশিয়া (সূমাত্রা পর্যন্ত)) সাথে যোগাযোগের কারণে কী কী জিনিস আমরা খেতে শিখলাম সেই গল্পটা অনুপস্থিত থাকে। আমি যেই সময়টার কথা বলছি তখন আমাদের এলাকার সাথে তাদের একটা চলমান বাণিজ্যরুট ছিলো এবং সেটার মাধ্যমে নিশ্চয়ই অনেক কিছুর আমদানি হয়েছে এই এলাকায়। সেইসব জিনিসের সাথে ইওরোপিয়দের লিস্টটা না মেলালে আসলে পুরো চিত্রটা পাওয়া যাবে না। যা এই পোস্ট দেখছি সেটা ইওরোপিয়ান কলোনিয়াল হিস্টোরি। নেটিভদের গল্পটা বাদ রেখে।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার মন্তব্বের জন্য ধন্যবাদ। আমি কিন্তু শিরোনামের “বাঙালির রসনায় কলম্বাস” সাথে সামঞ্জস্য রেখেই পোস্ট শুরু এবং শেষ করেছি, বিশদভাবে অনুসন্ধান করে কোনও রচনা লিখিনি। আমার সম্বল ছিল নেটে পাওয়া এই ছবি, কিছুদিন আগে দেখা এক ডকুমেন্টারি আর উইকিপিডিয়া।

আপনার বক্তব্বের সাথে আমি পুরোপুরি একমত হয়ে বলছি নেটিভদের গল্পটাও ব্লগে কাউকে লিখতে দেখলে সাধুবাদ জানাব।

......জিপসি

অতিথি লেখক এর ছবি

পীর সাহেবের এই চমৎকার পোস্টটি আমার আগে চোখে পরেনি। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। ভিন্দালু এখনও বাংলাদেশের খৃস্টান ধর্মাবলম্বী পরিবারে রান্না হয়। চাক্ষুষ সাক্ষী হিসেবেই বলছি এর সাথে আলুর কোনও সম্পর্ক নেই। প্রধান উপাদান শুয়োরের চর্বিযুক্ত মাংস, তেঁতুল জল আর মসলার গুঁড়ো।

দক্ষিন আমেরিকাতে ব্রাজিল একমাত্র পর্তুগিজ কলোনি ছিল। স্প্যানিশ কলোনি উরুগুয়ে থেকে আনারস প্রথম ইউরোপে এসেছে বলে মনে হয়না। তাই আমার ধারণা মতে ব্রাজিল থেকেই আনারস পর্তুগীজরা আনে ইউরোপে।

......জিপসি

নীল আকাশ এর ছবি

চলুক

মরুদ্যান এর ছবি

চলুক

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

কৌস্তুভ এর ছবি

ভালো লাগল, কিন্তু ব্যাপারটা কি এরকম দিকে নিয়ে যাচ্ছেন না যে কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করেছিল বলেই আজকে নাসার চন্দ্রজয়ের কৃতিত্বও তাকে দিতে হবে?

অতিথি লেখক এর ছবি

সদ্য বাজার ফেরত বাঙালি গৃহকর্তার হাতে থাকা থলে উল্টিয়ে শুধু দেখেছি ভিতরে ইতালিয়ান অভিযাত্রি কলম্বাসের সাথে কোনও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যোগসূত্র পাওয়া যায় কিনা!

এর বেশী কিছু ভেবে দেখেনি, বাড়িয়েও কিছু লিখিনি।

......জিপসি

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখনি শুরুর চুটকিখানা সবচেয়ে বেশি মনে ধরেছে। বাংলাদেশের গার্হস্থ্য-বন্ধনের প্রেক্ষিতে ওটা ১০০% সত্যি। ঘরের বন্ধন আমাদের বাইরের সমৃদ্ধি থেকে বহুকাল বঞ্চিত রেখেছে।আর এই সুযোগে বাইরের মানুষেরা এসে আমাদের ঘর খালি করে দিয়ে গেছে। কলম্বাস এদের অন্যতম প্রদর্শক। যদিও রসনা-বিলাসে তার এই অন্তর্ভুক্তি ভিন্নরকম ...

লেখকের জন্য অভিনন্দন।

বিজন কথক

অতিথি লেখক এর ছবি

চুটকিকে কলম্বাসের বাঙালি গিন্নির একটি সংলাপ বাদ পরে গেছে, “ওগো, তুমি চলে গেলে আমি একা একা কিভাবে বাঁচব?” হো হো হো

......জিপসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।