বিনির্মাণের ভাষা, বাংলা ব্যাকরণের ভিন্নপাঠ

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ০৭/০২/২০১১ - ১:৪৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ডিসক্লেইমার : লেখাটাতে কাউন্টার ন্যারেটিভ কিছু গুঁজে দেওয়া হয়নি। ভাষা বা ব্যাকরণের সংজ্ঞা রি-কন্সট্রাকশনের প্রচেষ্টাও এতে যৌক্তিকভাবেই অনুপস্থিত। তাই, খুব খেয়াল কৈরা! খাইছে

কোনো সন্দেহ নেই, যে ‘ব্যাকরণ পাঠ’ শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। অথচ আমাদের পাঠ্যপুস্তকে ব্যাকরণনাম্নীয় যে বটিকাটি সেবন করানো হয় আদতে তা নাকি ব্যাকরণই নয়। অ্যাঁ অন্তত ভাষাতাত্ত্বিকরা একে ব্যাকরণ বলে স্বীকার করতে নারাজ। দুর্ভাগ্যবশত আমাদের পাঠ্যবইয়ে ব্যাকরণের যেসব নিয়ম শিক্ষা দেওয়া হয় তা বর্ণনামূলক (descriptive) হওয়ার বদলে, বিধানবাদী (prescriptive)। কৃত্রিম বা পরিকল্পিত ভাষা নির্মাণে অথবা বিদেশি ভাষা শিক্ষায় বিধানবাদী ব্যাকরণের প্রয়োজনীয়তা থাকতে পারে। কিন্তু প্রাকৃতজনের মুখের ভাষা বাংলা কৃত্রিম নয়, বরং একটি প্রাকৃতিক ভাষা। তাই অন্যান্য প্রাকৃতিক ভাষার মতোই বাংলাতেও ব্যাকরণের কাজ ভাষার নিয়ম বর্ণনা করা মাত্র। লেখক, পাঠক বা বক্তাকে নির্দেশনা দেওয়াটা তার কাজ নয়। মনে রাখতে হবে ব্যাকরণ ভাষা তৈরি করে না (কৃত্রিম ভাষার কথা ভিন্ন), বরং ভাষাকে অনুসরণ করেই ব্যাকরণ তৈরি হয়।


ভাষাবিজ্ঞানের পরিভাষায় ব্যাকরণ (ইংরেজি ভাষায় : Grammar) বলতে সাধারণত ভাষার কাঠামোর, বিশেষ করে শব্দ ও বাক্যের কাঠামোর, গবেষণাকে বোঝায়। এ অর্থে ব্যাকরণ হল কোন ভাষার রূপমূলতত্ত্ব ও বাক্যতত্ত্বের আলোচনা। কখনও কখনও আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানে ব্যাকরণ পরিভাষাটি দিয়ে কোন ভাষার কাঠামোর সমস্ত নিয়মকানুনের বর্ণনাকে বোঝানো হয়, এবং এই ব্যাপকতর সংজ্ঞার ভেতরে ঐ ভাষার ধ্বনিতত্ত্ব ও প্রয়োগতত্ত্বের আলোচনাও চলে আসে।

উপরে দেওয়া ব্যাকরণের সংজ্ঞাগুলি মূলত উচ্চতর ভাষাবিজ্ঞানী মহলে প্রচলিত এবং এ ধরনের ব্যাকরণকে বর্ণনামূলক ব্যাকরণও বলা হয়। অন্যদিকে স্কুল কলেজে পাঠ্য ব্যাকরণগুলিতে ভাষার সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ বৈজ্ঞানিক বর্ণনা থাকে না, বরং এগুলিতে সাধারণত মান ভাষার কাঠামোর কিছু বিবরণের পাশাপাশি আদর্শ বা মান ভাষাতে লেখার বিভিন্ন উপদেশমূলক নিয়ম বিধিবদ্ধ করে দেওয়া থাকে। এগুলিকে বলা হয় বিধানবাদী ব্যাকরণ।

সূত্র : উইকিপিডিয়া

আচ্ছা, আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি এই বিধানবাদী ব্যাকরণ আমাদের জীবনে কতটুকু প্রাসঙ্গিক? কতটুকু প্রয়োজনীয়?

বোধ করি সকলেই জানেন, যে কোনো প্রাকৃতিক ভাষাতে প্রত্যেক বক্তার মাথায় (বা অবচেতন মনে) ওই ভাষাটি ব্যবহার করার নিয়মগুলো প্রাকৃতিকভাবেই তৈরি হয়। প্রকৃত প্রস্তাবে এটিই ব্যাকরণ, অন্তত মাতৃভাষার ক্ষেত্রে তো বটেই। অন্যদের কথা শুনতে শুনতে শৈশবেই আমাদের মাথায় ওইসব নিয়ম-কানুন স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হয়। কোনো লিখিত বা মৌখিক নির্দেশনার, অর্থাৎ তথাকথিত বিধানবাদী ব্যাকরণের সাহায্য ছাড়াই আমরা এসব নিয়ম জেনে যাই। (প্রমাণ চাই? আমাদের দাদা বা পরদাদারা বা তাঁদের পূর্বপুরুষরা তো অতখানি শিক্ষিৎ ছিলেন না, কিন্তু তাই বলে তাঁদের ভাষাকে এক কথায় অশুদ্ধ বলে নাকচ করে দেওয়াটা কি ঠিক হবে? খাইছে ) এবং পুরো প্রক্রিয়াটি আমাদের অজান্তে বা অগোচরেই ঘটে। তবে হ্যাঁ, পরিণত বয়সে ভাষা শিখতে গেলে ব্যাকরণের প্রয়োজন পড়বে বৈকি (এখানে ব্যাকরণের জায়গায় "অসংখ্য লিখিত বা মৌখিক নির্দেশের সমষ্টি" পড়তে হবে)। তাই যে কোনো ভাষার (মান ভাষা/আঞ্চলিক ভাষা/উপভাষা ইত্যাকার ছানাপোনাসহ) নিয়মসমূহের লিপিবদ্ধ রূপ অবশ্যই দরকার আছে। তবে কিনা আমাদের মাতৃভাষা বাংলার ক্ষেত্রে ব্যাকরণটা হতে হবে বর্ণনামূলক, আর দ্বিতীয় ভাষা যেমন ইংরেজির ক্ষেত্রে- বিধানবাদী। বস্তুত শুদ্ধভাবে ভাষা শিক্ষার এটাই বোধ করি নিরাপদ ও সংক্ষিপ্ততর পদ্ধতি। কিন্তু বর্তমানে আমরা এর উলটোটাই করছি।

হ্যাঁ, এ কথা ঠিক, যে লাতিন গ্রামারের প্রভাবে একসময় ইংল্যান্ড, আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যাকরণে কতগুলি সূত্র ও নিয়ম ধরে-বেঁধে দেওয়া হওয়া হতো। কিন্তু সেই ঔপনিবেশবাদী ভূত স্বাধীনতার এত বছর পরেও আমাদের ঘাড়ে সওয়ার আছে বলেই কি আমরা বিধানবাদী ব্যাকরণকে খুব বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি, যেখানে বর্ণনামূলক ব্যাকরণেরই প্রায়োধিকার পাওয়ার কথা ছিল? অবশ্য কেউ কেউ এ পরিস্থিতির জন্য সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিতদের দায়ী করতে পারেন। কিন্তু আপামর বাঙালি পণ্ডিতরাই বা কী করেছেন? এখন পর্যন্ত প্রকৃত বাংলা ব্যাকরণ কি আদৌ রচিত হয়েছে? আর এর জন্য দায়ী কি কেবলই সংস্কৃত-নির্ভরতা, নাকি অন্য কিছু? ভেবে দেখার সময় এসেছে।

ব্যাকরণ কী?

অভিধানের ভাষায় বলতে গেলে- কোনো ভাষার শব্দ ও পদবিন্যাসের স্বরূপ, কাঠামো, রীতি ও বিশ্লেষণ সম্পর্কিত বিদ্যা বা গ্রন্থই ব্যাকরণ। সেই সাথে, শব্দের ব্যুৎপত্তিবিষয়ক শাস্রও ব্যাকরণেরই অংশ। [১]

ভাষাতত্ত্বে, ব্যাকরণ বলতে সেই সব নিয়মের সমষ্টিকে বোঝায়, যা কোনো প্রাকৃতিক ভাষাতে ব্যবহৃত বাক্য, পদ এবং শব্দের গঠনপ্রণালীকে নিয়ন্ত্রণ করে। এসব নিয়মের পাঠ, এবং রূপতত্ত্ব (ভাষার রূপমূলসমূহ কীভাবে সংযুক্ত হয়ে শব্দ গঠন করে, সে-সংক্রান্ত বিদ্যা), প্রত্যয়/বিভক্তি, এবং ধ্বনিবিজ্ঞানও ব্যাকরণের আওতাধীন বিষয় বলে বিবেচিত। উচ্চারণধ্বনি (phonetics), শব্দার্থবিজ্ঞান (semantics), এবং প্রয়োগসিদ্ধতাও (pragmatics) ব্যাকরণগত বিষয়। তবে ভাষাতাত্ত্বিকরা সাধারণত শুদ্ধ উচ্চারণের নিয়মকে ব্যাকরণের আওতা বহির্ভূত বিষয় বলে মনে করেন, যদিও ব্যাকরণের বইয়ে বানান এবং যতিচিহ্নের ব্যাপারেও নির্দেশনা দেওয়া হয়ে থাকে। [২]

ব্যাকরণ তৈরি হয় পৌনপুনিক ব্যবহারের মাধ্যমে, যা অঞ্চলভেদে কিছুটা ভিন্ন হয়ে পড়ে। যদিও লক্ষ করা যায়, যে লেখালেখির ক্ষেত্রে অনেকটা আনুষ্ঠানিক নিয়ম অনুসরণ করা হয়। এসব নিয়মের উৎপত্তি হয় লিখিত ভাষার পুনরাবৃত্ত প্যাটার্ন লক্ষ করে। নিয়মগুলো বিকশিত এবং প্রতিষ্ঠিত হতে শুরু করলে নির্দেশনামূলক ব্যাকরণ-শুদ্ধি (prescriptive grammatical correctness)-র প্রশ্ন মাথাচাড়া দিতে পারে। বলাই বাহুল্য, এই প্রক্রিয়ায় প্রায়শ প্রতিষ্ঠিত বা গৃহীত রূপের সাথে সমসাময়িক ব্যবহারের পার্থক্য বা দ্বন্দ্ব তৈরি হতে দেখা যায়। [৩]

বাংলা ভাষা কেমন ভাষা?

প্রাচীন হিব্রু, আরবি এগুলো হলো সংশ্লেষণমূলক বা পদক্রমিক ভাষা। সংস্কৃতসহ অন্যান্য প্রাচীন ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগুলোও তা-ই। এই যেমন ল্যাটিন ভাষার কথাই ধরা যাক। ল্যাটিন ভাষায় শব্দের অনুক্রম অনেকটাই স্বাধীন-স্বেচ্ছাচারী। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, femina togam texuit এই অনুক্রমটিই প্রত্যাশিত যদিও texuit togam femina অথবা togam texuit femina এভাবেও বলা হতে পারে। অর্থাৎ শব্দের অবস্থান নয়, বরং শব্দের সাথে যুক্ত প্রত্যয়/বিভক্তিই (এক্ষেত্রে -a, -am এবং -uit) বাক্যগঠনের কাজটি সম্পন্ন করেছে।

আধুনিক ইংরেজি, ফরাসি এগুলো হলো বিশ্লেষণমূলক ভাষা। বাংলা ভাষাও অনেকটা তা-ই, তবে বাংলা যে সম্পূর্ণভাবে বিশ্লেষণমূলক ভাষা তা মনে হয় না, বরং এতে পদক্রমিকতার প্রভাবও বেশ অনুভব করা যায়। যেমন- ‘আমি ভাত খাই’ বাক্যটিকে ‘আমি খাই ভাত’, ‘ভাত আমি খাই’, ‘ভাত খাই আমি’, ‘খাই ভাত আমি’, ‘খাই আমি ভাত’ এভাবে লিখলে অর্থের বিপর্যয় ঘটে না অথবা বাক্যগঠনেও তেমন ত্রুটি হয় না, কিন্তু ইংরেজিতে- I eat rice. একই অর্থ বজায় রেখে বাক্যটি eat I rice কিংবা eat rice I, rice eat I, rice I eat এভাবে লেখা অনুমোদিত নয়, এতে অর্থের ভিন্নতা ঘটে (বা দুর্বোধ্যতা তৈরি হয়)। বাংলায় বাক্যগঠনে কিন্তু এ ধরনের বিভ্রান্তি বা ব্যাকরণ বিচ্যুতি কম ক্ষেত্রেই হয়। এ থেকে ধারণা করা হয়, যে বাংলা ভাষায় আধুনিক বিশ্লেষণমূলকত্ব বা প্রাচীন পদক্রমিকতার প্রভাব পরস্পর মিলে মিশে আছে। [৪] তাই বাংলা যে একই অঙ্গে ঐতিহ্য আর আধুনিকতা উভয়েরই চিহ্ন বহন করে চলেছে বোধ করি তাতেও সন্দেহের বিশেষ কারণ নেই।

তথ্যসূত্র :
[১] বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান
[২] এবং [৩] wikipedia
[৪] বাংলা বানান-- এক হউক, এক হউক, এক ...

পূর্ববর্তী পর্ব :
১. ই-কার বনাম ঈ-কার
২. ও কি এল, ও কি এল না

৩. হ্রস্ব স্বর না দীর্ঘ স্বর
৪. 'অনুস্বার' বনাম 'ঙ', সাথে 'এ' বনাম 'অ্যা'
৫. দন্ত্য-ন বনাম মূর্ধন্য-ণ

৬. বাংলার তিন 'শ'—দন্ত্য-স, মূর্ধন্য-ষ আর তালব্য-শ
৭. বাংলা হরফ বনাম রোমান হরফ—জ বনাম J, Z, G
৮. পাঠ্যবইয়ে বাংলা একাডেমীর বানানরীতি মেনে চলতে হবে
৯. ব-য় শূন্য 'র' বনাম ড-য় শূন্য 'ড়'
১০. কখন কি লিখব, কখন কী লিখব
১১. সংস্কৃত বানানরীতি বনাম বাংলা বানানরীতি
১২. বাংলা ভাষার ব্যাকরণ কবে তৈরি হবে?
১৩. বাংলা ভাষায় বাঙালিয়ানা কতটুকু?
১৪. বাংলা ভাষা এল কোথায় থেকে

কুটুমবাড়ি


মন্তব্য

ফাহিম হাসান এর ছবি

আপনি অনেক কষ্ট করে বানান ও ভাষা বিষয়ক লেখা দেন। এজন্য অনেক ধন্যবাদ।

লেখা পড়ে কিছু বিষয়ে খটকা লাগলো -

আমাদের পাঠ্যপুস্তকে ব্যাকরণনাম্নীয় যে বটিকাটি সেবন করানো হয় আদতে তা নাকি ব্যাকরণই নয়। অন্তত ভাষাতাত্ত্বিকরা একে ব্যাকরণ বলে স্বীকার করতে নারাজ।

এই ভাষাতাত্ত্বিকদের নাম জানতে আগ্রহী।

কিন্তু প্রাকৃতজনের মুখের ভাষা বাংলা কৃত্রিম নয়, বরং একটি প্রাকৃতিক ভাষা।

প্রাকৃতিক ভাষা - শব্দবন্ধটার মানে ঠিক বুঝলাম না। সংজ্ঞা কী?

যে কোনো প্রাকৃতিক ভাষাতে প্রত্যেক বক্তার মাথায় (বা অবচেতন মনে) ওই ভাষাটি ব্যবহার করার নিয়মগুলো প্রাকৃতিকভাবেই তৈরি হয়। প্রকৃত প্রস্তাবে এটিই ব্যাকরণ, অন্তত মাতৃভাষার ক্ষেত্রে তো বটেই।

কথাটা মনে হয় ঠিক না।

১। "ওই ভাষাটি ব্যবহার করার নিয়মগুলো প্রাকৃতিকভাবেই তৈরি হয়।" এখানে প্রাকৃতিকভাবে বলতে কী বোঝাচ্ছেন? শুনে শুনে? তাহলে ব্যাকরণের নৈর্ব্যক্তিকতা থাকছে না।

২। দেখেন অঞ্চলভেদেও কিন্তু বাংলা ভাষার তারতম্য আছে। আপনার প্রাকৃতিক নিয়মের যুক্তি এইখানে প্রযোজ্য নয়। ব্যাকরণ মূলত এই তারতম্যগুলো দূর করে সার্বজনীন নীতিমালা তৈরি করে।

‘আমি ভাত খাই’ বাক্যটিকে ‘আমি খাই ভাত’, ‘ভাত আমি খাই’, ‘ভাত খাই আমি’, ‘খাই ভাত আমি’, ‘খাই আমি ভাত’ এভাবে লিখলে অর্থের বিপর্যয় ঘটে না অথবা বাক্যগঠনেও তেমন ত্রুটি হয় না,
ইংরেজিতে- I eat rice. একই অর্থ বজায় রেখে বাক্যটি eat I rice কিংবা eat rice I, rice eat I, rice I eat এভাবে লেখা অনুমোদিত নয়, এতে অর্থের ভিন্নতা ঘটে (বা দুর্বোধ্যতা তৈরি হয়)।

আরেকটা যুতসই উদাহরণ দিলে ভালো হত। যেমন-

rice I eat এভাবে লেখা অনুমোদিত নয়, এতে অর্থের ভিন্নতা ঘটে

এইক্ষেত্রে সমস্যাটা syntax ছাড়াও সমাপিকা, অসমাপিকা ক্রিয়ার দ্বারা প্রভাবিত।

The rice I ate yesterday was delicious.

শুভেচ্ছা।

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা পড়ে কিছু বিষয়ে খটকা লাগলো -

আমাদের পাঠ্যপুস্তকে ব্যাকরণনাম্নীয় যে বটিকাটি সেবন করানো হয় আদতে তা নাকি ব্যাকরণই নয়। অন্তত ভাষাতাত্ত্বিকরা একে ব্যাকরণ বলে স্বীকার করতে নারাজ।

এই ভাষাতাত্ত্বিকদের নাম জানতে আগ্রহী।

আমিও সমান আগ্রহী কোনো ভাষাতাত্ত্বিক একে ব্যাকরণ বলে স্বীকার করতে রাজি কি না তা জানতে। হাসি

Grammar - Definition

According to the structuralist point of view, grammar is the study of the rules governing the use of a language. That set of rules is also called the grammar of the language, and each language has its own distinct grammar. Grammar is part of the general study of language called linguistics...

The formal study of grammar is an important part of education from a young age through advanced learning, though the rules taught in schools are not a "grammar" in the sense most linguists use the term, as they are often prescriptive rather than descriptive...--wordiq.com

গুগল সার্চ : the rules taught in schools are not a "grammar" in the sense most linguists use the term

প্রাকৃতিক ভাষা - শব্দবন্ধটার মানে ঠিক বুঝলাম না। সংজ্ঞা কী?

প্রাকৃতিক ভাষা অর্থাৎ স্বাভাবিক ভাষা, আংরেজিতে বোলে তো Natural language. স্বাভাবিক ভাষা বলতে মানুষের বলা, লেখা বা প্রতীকের মাধ্যমে প্রকাশিত ভাষাকে বোঝায়। গাণিতিক যুক্তিবিজ্ঞানে ব্যবহৃত ভাষা কিংবা কম্পিউটার ভাষা থেকে আলাদা করার জন্যই এই পরিভাষাটির অবতারণা করা হয়েছে। --.wikipedia

আরেকটা যুতসই উদাহরণ দিলে ভালো হত।

কিছু যুতসই উদাহরণ দিয়ে বাংলা এবং ইংরেজি ভাষার তুলনামূলক পার্থক্য দেখিয়ে একটা লেখা দেয়ার ইচ্ছা আছে। পড়বেন আশা করি।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানবেন। ভালো থাকবেন।

কুটুমবাড়ি

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার লেখাটা পড়ে স্কুল জীবনে সন্ধি-সমাস, কারক-বিভক্তি-প্রত্যয় ইত্যাদি নিয়ে যে কি কঠিন নাকানি-চুবানি খেতাম সে কথা স্মরণ করে এই বয়সেও কান্না পেয়ে গেল। হাসি

আমার মনে হয় স্কুল-কলেজে সন্ধি-সমাস, কারক-বিভক্তি-প্রত্যয় কন্টকিত ব্যাকরন শেখানোর বদলে মাতৃভাষার ক্ষেত্রে ফ্রি-হ্যান্ড লেখা, ক্রিয়েটিভ রাইটিং, পারসুয়েসিভ রাইটিং, অরেটরি, পাব্লিক স্পিকিং, প্র্যাগম্যাটিক কম্পিটেন্স - এইসবের ওপর বেশী জোর দেয়া উচিত। একবিংশ শতাব্দীর আধুনিক বিশ্বে বাস্তব জীবনে এগুলির প্রয়জনীয়তা এখন অনেক বেশী। ব্যাকরনটা স্নাতক পর্যায়ে যারা সাহিত্য বা ভাষাতত্ত্ব পড়বেন, তাদের জন্য রেখে দেয়া উচিত। এই প্রসঙ্গে উন্নত বিশ্বে বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ ও পারসুয়েসিভ রাইটিং কোর্স ও পাব্লিক স্পিকিংয়ের কোর্স ও বইপত্র এবং শিক্ষাপদ্ধতি অনুসরনে আধুনিক মেথডলজি অনুসরন ও সিলেবাস প্রনয়ন করা যেতে পারে হয়তো।

মনমাঝি

অতিথি লেখক এর ছবি

ব্যাকরনটা স্নাতক পর্যায়ে যারা সাহিত্য বা ভাষাতত্ত্ব পড়বেন, তাদের জন্য রেখে দেয়া উচিত।

একমত নই। আমার বরং এটাই মনে হয় যে, দেশে শিশুপাঠ্য, সৃজনশীল ব্যাকরণের অভাব আছে। যে-কারণে শিক্ষার্থীদের কাছে নিজ মাতৃভাষাকেই একটি জটিল, দুর্বোধ্য ভাষা মনে হয়। অথচ প্রতিটি শিক্ষার্থীরই নিজ মাতৃভাষাকে চেনার, বোঝার অধিকার রয়েছে। কিন্তু তারা নিজ মাতৃভাষা সম্বন্ধে যে আতঙ্ক নিয়ে বড় হচ্ছে তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। অনেকে তো এমনও বলেন যে, ইংরেজি ভাষা বাংলার তুলনায় অনেক সহজ! অ্যাঁ

যে ভাষা প্রাণের ভাষা, তার ব্যাকরণ সে-ভাষাভাষীদের কাছে দুর্বোধ্য করে রাখা হবে ঠিক কোন যুক্তিতে ভেবে পাই না।

আপনার বাকি বক্তব্যের সাথে সহমত। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানবেন।

কুটুমবাড়ি

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

"ব্যাকরণ"
মনমাঝি ভাইয়ের মত আমারো একই অবস্থা । আপনার লেখা পড়ে বাংলা ২য় পত্রে নাকানি-চুবানির কথা মনে পড়ে গেলো ।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমাদের সব গো-বেচারাদের অবস্থা এক! সারা জীবন ব্যা-করণই শিখে গেলাম ওঁয়া ওঁয়া

কুটুমবাড়ি

কৌস্তুভ এর ছবি

তাড়ার উপরে পড়লাম। লেখকের মূল বক্তব্যটা ধরতে গেলে আবারো পড়তে হবে মনে হচ্ছে। তবে বানানকর্মীকে যথারীতি চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখকের মূল বক্তব্যটা ধরতে গেলে আবারো পড়তে হবে মনে হচ্ছে।

এই কিছুকাল আগেও ভাষা-চর্চার ক্ষেত্রে বিধানবাদী ব্যাকরণকে শেষ কথা বলে মনে করা হতো। কিন্তু আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানীরা ভাষার ব্যাকরণিক বিশ্লেষণ করার সময় বর্ণনাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে মেনে নিয়েই অগ্রসর হন। বাংলার ক্ষেত্রেও তা-ই হওয়া উচিত। এটাই ছিল আমার মূল বক্তব্য। কিন্তু কচিলেখক বলেই বোধ হয় আমার বক্তব্যটা গুছিয়ে বলতে পারিনি। মন খারাপ

যাগগে, ব্যস্ততার মধ্যেও সময় করে পড়েছেন এজন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

কুটুমবাড়ি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।