কাদের মোল্লার রায়ের দায় থেকে যেই কারণে আওয়ামী লীগ মুক্ত নয়

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি
লিখেছেন ইশতিয়াক রউফ (তারিখ: বুধ, ০৬/০২/২০১৩ - ৩:৪৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কাদের মোল্লার রায়ে বিচারের নামে প্রহসন করায় আওয়ামী লীগের সমালোচনা করায় অনেকে নাখোশ। মূল সুর একটাই -- আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করছেন কেন, এটা তো আদালতের এখতিয়ার?

বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশে সরকারের আশ্রয়, প্রশ্রয়, নির্দেশ, বা ইঙ্গিত ছাড়া গাছের পাতাও নড়ে না। আমাদের বিচারব্যাবস্থা ১৯৭৫-এর সব হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে ইনডেমনিটিকে জারি রেখেছে, প্রতিরক্ষা বাহিনী থেকে মুক্তিযোদ্ধা নিধন চেয়ে চেয়ে দেখেছে, রাতের অন্ধকারে ক্ষমতা দখল করা জিয়া-এরশাদকে বৈধতা দিয়েছে, গোলাম আজমকে নাগরিকত্ব দিয়েছে, ওয়ান-ইলেভেনের ছদ্মাবরণে আর্মি-সুশীল-বিদেশিদের ক্ষমতা দখলকে প্রশ্রয় দিয়েছে। এর কোনোটাই আইনের খাতা অনুসরণ করে হয়নি, হয়েছে ক্ষমতার আস্ফালন দেখে ভয় পেয়ে। জনরোষ ছাড়া আর কোনো কিছুই এই নতজানু আদালতকে মেরুদণ্ড সোজা করতে বাধ্য করতে পারবে না। আজ এই রায়ের পর আদালতের ঘাড়ে সব দায়ে ফেলার কোনো উপায় নাই সরকারের।

সরকার তথা আওয়ামী লীগ কেন এত কড়া প্রতিবাদের মুখে পড়েছে সেই দিকে তাকাই...

১/ গত কিছুদিনে সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন পুলিশ বিপুল বিক্রমে পেপার-স্প্রে নিয়ে চড়াও হয়েছে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের উপরে, কিন্তু জামায়াত-শিবিরের আক্রমণে নেংটি হাতে নিয়ে পালিয়েছে।

২/ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জামায়াতের তাণ্ডবকে প্রশ্রয় দেওয়ার কোনো সুব্যাখ্যা দিতে পারেননি, রায়ের সময়ে সুবিধাজনক ভাবেই বিদেশে আছেন।

৩/ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরেক কাঠি সরেস, তিনি নব্য-জামায়াতীদের সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে বললেন যে "নতুন প্রজন্মের" জামায়াতীরা নাকি "প্রশংসনীয়", শুধু তাদের পূর্ব-প্রজন্ম খারাপ।

৪/ এই রায়ে স্পষ্ট বলে দেওয়া আছে যে নিরপরাধ ঘোষনা দেওয়া ১টি অভিযোগ নিয়ে আপিল করা যাবে, কিন্তু "দণ্ড" নিয়ে কোনো আপিল নেই। ৩৪৪ জন হত্যার অভিযোগ *প্রমাণিত* হওয়ার পরও কাদের মোল্লাকে এমন ফুলপ্রুফ নিরাপত্তা দেওয়ার পরও সরকারের নিয়োজিত প্রসিকিউটর এই প্রহসনের রায়ের পর বললেন রায়ে তারা সন্তুষ্ট।

৫/ বাচ্চু রাজাকার, সাঈদী, এবং কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগ অন্য যে-কারও চেয়ে স্পষ্ট। খুনের অপরাধে মজুর-ড্রাইভার-কাজেরবুয়াদের মৃত্যুদণ্ড হওয়ার সাথে এদের বিরুদ্ধে মামলার তফাৎ কম। খুনের অভিযোগ *প্রমাণিত* হওয়া কাউকে যদি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়, তাহলে সাংগঠনিক নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে গোলাম আজম বা নিজামীর মৃত্যুদণ্ডের সম্ভাবনাও কমে/বন্ধ হয়ে যায় এখানেই।

৬/ কিছুদিন আগে বিএনপি তাদের জনসমাবেশে অভিযোগ করে যে আওয়ামী লীগ তাদের জোট থেকে জামায়াতকে ভাগাতে চাইছে। সেই অভিযোগের কোনো সুব্যাখ্যা আওয়ামী লীগ দিতে পারেনি, বিএনপিও সেই ঘটনার পর থেকে মোটামুটি নির্লজ্জ ভাবে জামায়াতকে সমর্থন দেওয়া শুরু করেছেন নিজেদের জোট রক্ষার খাতিরে।

৭/ স্কাইপের কথোপকথন হ্যাক হওয়ার পর তার সুষ্ঠু তদন্ত নিয়ে সরকার দৃষ্টিকটূ রকম গরিমসি করেছে। এত বড় অপরাধ করার পর সরকার তথা আওয়ামী লীগের কথা ছিলো সর্বশক্তি নিয়োগ করে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার, পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করার। তার পরিবর্তে আওয়ামী লীগ-ঘনিষ্ঠ প্রতিটি মানুষ এবং সংগঠন গায়ের জোরে পুরো দায় চাপাতে চেষ্টা করে গেছেন বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম এবং ডঃ আহমেদ জিয়াউদ্দীনের উপর। জামায়াতের হুমকি-ধামকির মুখে তাঁদের সুরক্ষা দেওয়া তো দূরের কথা, উলটো সব দোষ তাঁদের ঘাড়ে চাপাতে চেষ্টা করে গেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সাহায্য করতে গিয়ে তাঁরা পেলেন মৃত্যুহুমকি এবং সরকারের উপেক্ষা, কাদের মোল্লা পেলো এক বছর পর সন্ত্রাসী বিকাশের মতোই একটি রাষ্ট্রীয় ক্ষমার উহ্য নিশ্চয়তা। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে স্কাইপের সেই কথোপকথনগুলো আবার শুনা, এবং সেখানে উল্লেখকৃত শঙ্কাগুলো পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে। ট্রাইব্যুনাল-২ সম্পর্কে যেই শঙ্কা প্রকাশিত হয়েছিলো, সেগুলোই তো বাস্তবায়ন হলো।

৮/ আওয়ামী লীগ-ঘনিষ্ঠরা কিছুদিন ধরে কেন এই কথা 'পুশ' করার চেষ্টা করছেন যে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে যেই শাস্তিই দেওয়া হোক না কেন, এরা চিহ্নিত হবে যুদ্ধাপরাধী হিসাবেই? চিহ্ন ধুয়ে কে পানি খাবো? সর্বোচ্চ শাস্তি কেন দেওয়া হবে না? বাংলাদেশ তো মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করেনি যে যাবজ্জীবন নিয়ে খুশি থাকবো। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শাস্তি যদি হয়ে থাকে কপালে ভাই-ফোঁটা দেওয়া, তাহলে সেই শাস্তিই দেওয়া হোক। এই রকম সেকেন্ড-ক্লাস শাস্তি চাওয়ার অর্থ কী, এটা পেয়ে সন্তুষ্ট হওয়ারই কী?

... এই ঘটনাগুলোর আলোকে আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করার কী কারণ আছে? তারা তো ভালো মতোই জানে যে "ক্ষমতায় এলে বিচার করবো" প্রতিশ্রতি দিয়ে পদ্মা সেতু, ডেসটিনি, কিংবা হলমার্কের মাছ ঢাকা যাবে না। বিচার করে ফেললেও যে জনসমর্থন মিলবে সেই নিশ্চয়তাও নেই। কেন আমার এই বিশ্বাস অবান্তর হবে যে আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধকে শেষ বার বিক্রি করে দিলো জামায়াতের সাথে নির্বাচনী আঁতাতের নিশ্চয়তা পেতে? জামায়াত এখনও প্রকাশ্যে বিচারের বিরোধিতা করবে, শুধু নির্বাচনের আগে তাদের তীব্র ক্ষোভের প্রকাশ হিসাবে "পৃথকভাবে সারা দেশে প্রার্থিতা ঘোষণা" করবে। সেইটা নিশ্চিত করার জন্য 'বায়না' হলো এই রায়, পুরো মূল্য পরিশোধ হবে নির্বাচনের পর।

বিএনপির সাথে জামায়াতের ১০ ভাগ ভোট যোগ হওয়া ঠেকাতে গিয়ে আওয়ামী লীগ কোটি খানেক ভোট হারালো এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপর ছ্যাড়ছ্যাড় করে মুতে দিলো -- এইটাই দিনের শেষে শেষ কথা।

তিন দফায় ৪+৬+৪=১৪ বছরে আওয়ামী লীগ একটা রাজাকারের শাস্তি দিতে পারে নাই সেইটাই একমাত্র প্রাসঙ্গিক তথ্য।

আর যে যা-ই বলুক না কেন, আমি দোষ দেবো সরকারকেই। ব্যর্থতার জন্য, বিশ্বাসঘাতকতার জন্য, গাফিলতির জন্য, নির্বুদ্ধিতার জন্য, অকর্মণ্যতার জন্য, অসতর্কতার জন্য।

বিঃদ্রঃ এই লেখায় প্রকাশিত সকল মন্তব্য আমার নিজের, এবং এই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার জন্য অন্য কেউ দায়ী নয়।


মন্তব্য

মাহমুদ.জেনেভা এর ছবি

ব্যাপক মন মেজাজ খারাপ করে সারা দিন কাটাইলাম।।
আমি আশা ছাড়ি নাই। এখনো আপিলের সুযোগ আছে

স্বপ্নহারা এর ছবি

আপিলের ব্যাপারে খবর এখানে

মূল ব্যাপারটা হচ্ছে মনে হয়, শুধু খালাসের ক্ষেত্রেই আপিল হবে। প্রমাণিত অভিযোগের শাস্তি বাড়ানোর আবেদন মনে হয় করা যাবে না। দেখা যাক!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আপিলের দরজা খোলা আছে, তবে সেটায় চেইন আটকানো। সব কিছু আপিল করা যাবে না। "যথার্থ আপিল" মানে আরও বহুদিন ঝুলিয়ে রাখার পাঁয়তারা।

শিশিরকণা এর ছবি

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরেক কাঠি সরেস, তিনি নব্য-জামায়াতীদের সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে বললেন যে "নতুন প্রজন্মের" জামায়াতীরা নাকি "প্রশংসনীয়", শুধু তাদের পূর্ব-প্রজন্ম খারাপ

এই প্রসঙ্গে একজনের স্ট্যাটাস দেখলাম, আকাম কুকাম যা করার এই এখনকার বুইড়া রাজাকাররা তরুন থাকা অবস্থাতেই করেছে, এখনো ভাংচুর, রগ কাটা যা করার সেটা তরুন শিবির কর্মীরাই করছে। এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে বেসিক আদর্শের খুব একটা পরিবর্তন হয় নাই। এদের সমূলে বাংলার মাটি থেকে বিতাড়িত করা হোক।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

এই বক্তব্য পড়ে আমার মন চাইছিলো টুকু সাহেবকে জড়িয়ে ধরে একটা চুমা দেই। (যা দিনকাল পড়সে, এর বেশি কিছু বললে অনুচিত মন্তব্যের দায়ে ফাঁসি দিয়ে দিবে।)

শিশিরকণা এর ছবি

দেও দেও ভালো মত চুমা দিয়ে কইলজাটা বের করে নিয়ে আসো, যদি থাকে আর কি?!! রেগে টং

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

টিউলিপ এর ছবি

আমি রাজনীতি সচেতন না কথাটা বলব না, তবে বাংলাদেশের রাজনীতির ভিতরের প্যাঁচ আমি কমই বুঝি। আমি শুধু একটা কথাই জিজ্ঞাসা করতে পারি, সাড়ে তিনশো লোকের হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত প্রমাণিত হওয়ার পরেও যদি কেউ সর্বোচ্চ শাস্তি না পায়, তবে কী করলে পাবে?

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

চার্লি চ্যাপলিনের একটা উক্তি আছে -- "‌One murder makes a villain. Millions a hero."

স্বপ্নহারা এর ছবি

তিন দফায় ৪+৬+৪=১৪ বছরে আওয়ামী লীগ একটা রাজাকারের শাস্তি দিতে পারে নাই সেইটাই একমাত্র প্রাসঙ্গিক তথ্য।

আবেগতাড়িত কথা হলেও আমার কথাগুলোই বলে দিলি! আজ সারাদিন কাজ করতে পারছি না, সারারাত ঘুমাইনি। এত মন খারাপ! কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছি না!

নানারকম থিওরি শুনছি- একটা এইরকম, ট্রাইবুনাল যে সরকারের প্রভাবমুক্ত সেটা দেখানোর জন্য এই রায়।

অথচ কাদের মোল্লাকে নিয়ে জামাতের বাইরে তেমন কেউ ভাবিত ছিল না- সবাই ধরেই নিয়েছিলাম গণহত্যার ক্ষেত্রে আন্ধার ভাই কানাও ফাঁসি দিবে। তার সাঈদীর মত ধর্মের লেবাসও নাই। গণহত্যার দায়ের পর এই রায় অবিচার।

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

আমিও নিশ্চিত ছিলাম ভাইয়া ফাঁসির ব্যাপারে। তাই রায় শুনেও প্রথমে বিশ্বাস করিনি। এখনও ঠিক বিশ্বাস হচ্ছেনা, কাদের মোল্লার মত চিহ্নিত রাজাকার, খুনি, ধর্ষকের শাস্তি যদি এই হয় তাহলে বাকি শয়তানগুলা তো আনন্দে ডুগডুগি বাজাবে। প্রচণ্ড রাগ, ক্ষোভ, হতাশা আর মন খারাপে ছেয়ে আছে ভিতরটা।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

যদি প্রসিকিউশন ঠিক মতো প্রমাণ করতে না পারতো এবং সেই কারণে এই রায় হতো, সেটা মেনে নিতাম নিঃসংকোচে। কিন্তু একদিকে বলছে ৩৪৪ হত্যা প্রমাণিত, আরেক দিকে সর্বোচ্চ শাস্তি দিচ্ছে না। তেলেসমাতি ব্যাপার-স্যাপার রে ভাই।

হিমু এর ছবি

একটা টেকনিক্যাল ব্যাপার আছে। বুঝিয়ে বলি।

"আন্তর্জাতিক অপরাধ" বলতে বোঝানো হয় চার ধরনের অপরাধ: শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ। বাচ্চুর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোর একটি ছিলো গণহত্যা। ট্রাইব্যুনাল-২ গণহত্যার অভিযোগে তাকে অপরাধী বিবেচনা করে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। কিন্তু কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলি "মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ" এর একাধিক অভিযোগ এনেছেন। এই অপরাধে ট্রাইব্যুনাল-২ কসাই কাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। কেন তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউটর গণহত্যার অভিযোগ আনেননি, সেটা বিশ্লেষণের দাবি রাখে।

স্বপ্নহারা এর ছবি

ঠিক বুঝলাম না। সে গণহত্যা করেছে সেইটা প্রমাণিত- এতগুলো লোক মেরেছে-ধর্ষণ করেছে-জবাই করেছে, তাও প্রমাণিত। তাহলে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হলেও সেগুলো ধর্তব্য না? অ্যাঁ

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

মানবতার নামে খুন-ধর্ষণ করলে মৃত্যুদণ্ড নাই, এই হলো কথা।

হিমু এর ছবি

বিজ্ঞ বিচারকের রায় থেকে মনে হচ্ছে, ট্রাইব্যুনাল-২ এর কাছে মৃত্যু দণ্ডনীয় পর্যায়ে ধর্তব্য না। আপিল বিভাগে যদি ব্যাপারটা গড়ায়, তাহলে আরো বিশদ বিশ্লেষণ হয়তো আমরা পাবো।

টিউলিপ এর ছবি

হুম, একজন মানুষ মারলে ফাঁসি হত, সাড়ে তিনশ মানুষ মারায় আর ফাঁসি দেওয়া গেল না, এই তো?

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

হিমু এর ছবি

সেরকমই মনে হচ্ছে।

মন মাঝি এর ছবি

তাহলে তো যে কোন নর্মাল হবু খুনি যার মাত্র একজনকে মারার প্ল্যান, সে ফাঁসির দড়ি থেকে বাঁচার জন্য প্রিকশনারি মেজার হিসেবে এখন থেকে তার টার্গেট ১ জনের পাশাপাশি আরও সাড়ে তিনশ লোক মারা শুরু করবে! ধরা পড়ে আদালতে গেলে মোল্লার দৌড় চোদ্দ বছরের প্রিসিডেন্স টানবে। আমাদের বাৎসরিক হোমিসাইড রেট ৩৫০ গুন বেড়ে যাবে, কিন্তু একজনকেও ফাঁসি দেয়া যাবে না তখন। চমৎকার!

****************************************

হিমু এর ছবি

বৃদ্ধ বয়সে রিটায়ারমেন্ট প্ল্যান হিসাবে শ'চারেক মানুষ হত্যা একটা ভালো অপশন, এটাই এই রায় থেকে শিখতে পাল্লুম।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

শীতের দেশে বছরের শেষ দিকে খুচরা অপরাধ বেড়ে যায়। কারণ সহজ -- তীব্র শীতে বাইরে থাকার চাইতে জেলের ওম, আরাম, খাবার ভালো। সেই রকম একটা পেনশন প্ল্যান দেখতে পাচ্ছি যেন।

রু এর ছবি

লুডু খেলার মতো মনে হচ্ছে, তিন ছক্কায় পঁচা।

সাম্য এর ছবি

সাকা, নিজামী, সাঈদী - এদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো এখন চেক করে দেখতে হবে যে ওগুলো গণহত্যা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে কি না।

--------------------------------
বানান ভুল থাকলে ধরিয়ে দিন!

সাম্য এর ছবি

যাক, সবগুলোর বিরুদ্ধেই গণহত্যার অভিযোগ আছে (অন্যান্য অভিযোগের পাশাপাশি)ঃ
১) গো আ,
২) সাঈদী,
৩) সাকাচৌ,
৪) মুজাহিদ,
৫) কামারুজ্জামান,
৬) নিজামী,
৭) আলীম

আশা করি এদের ক্ষেত্রে আপিল পর্যন্ত যাওয়া লাগবে না, গণহত্যা প্রমাণ করে সরাসরি ফাঁসির আদেশ হবে।

--------------------------------
বানান ভুল থাকলে ধরিয়ে দিন!

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আরেকটা প্রশ্ন আছে -- সবাইকে কি নেতৃত্বমূলক অবস্থানে দেখানো হয়েছে, নাকি কাদের মোল্লার মতো "সহযোগী" দেখিয়ে বছর খানেক পর মুক্তির দুয়ার খুলে রাখা হয়েছে?

দিগন্ত এর ছবি

রায় পড়লাম। প্রথম কথা হল যে ছয়'টা অভিযোগ আনা হয়েছিল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে তার মধ্যে অভিযোগ-৪ ট্রাইব্যুনালের চোখে অপ্রমাণিত। সেই কারণেই মূলত কাদের মোল্লার ফাঁসি হয় নি। ওই চার নম্বর আপিলে প্রমাণ করতে পারলে সাজা পরিবর্তন হতে পারে। আমি রায়ে কোথাও পাচ্ছি না কেন অভিযোগ-৪ থেকে নট গিলটি বলা হচ্ছে। বরং প্যারা ২৭৬-৩০৫ (বিশেষত ৩০৫) কনফার্ম করছে যে অভিযুক্ত গিলটি।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

কৌস্তুভ এর ছবি

বাকি পাঁচটা প্রমাণিত অভিযোগ কি কোনোটাই মৃত্যদণ্ডের যোগ্য অপরাধ নয়?

দিগন্ত এর ছবি

বিচারকেরা ব্যাখ্যা লেখেননি কিন্তু দুটো অভিযোগ যেগুলো আমি পুরো পড়লাম তাতে কাদের মোল্লাকে সহযোগী হিসাবে দেখানো আছে। বিচ্ছিন্ন খুনের সহযোগীকে না হোক একেবারে গণহত্যার (অভিযোগ-৫) সহযোগীরা কেন মৃত্যুদণ্ড পাবে না সেটা বোধগম্য না। বিচারকেরা রায় নিয়ে বিশেষ একটা ব্যাখ্যা লেখেননি। প্রমাণ আলোচনার পরে সরাসরি রায়ে চলে গেছেন।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সজল এর ছবি

চার্জশীট খুঁজে পাচ্ছি না। কিন্তু রায়েতো ৫ আর ৬ এর অভিযোগে সহযোগী না বরং অংশগ্রহণকারী বলেই দেখানো হয়েছে।

Charge No.5: GUILTY of the offence of murders as ‘crimes against
humanity’ as specified in section 3(2)(a) of the Act of 1973 and he be
convicted and sentenced under section 20(2) of the said Act.
Charge No.6: GUILTY of the offences of murder and rape as ‘crimes
against humanity’as specified in section 3(2)(a) of the Act 1973 he be
convicted and sentenced under section 20(2) of the said Act.

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

রব এর ছবি

এখানে দেখুন।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আমার মনে হয় সরকারের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার ইচ্ছে আছে। আসলে আওয়ামী লীগ ছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আর কোন সরকার করবে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ তাদের এই ইচ্ছের মধ্যে নির্বাচনে জেতার স্বার্থটাকে মিশিয়ে সব জট পাকিয়ে ফেলেছে। এর আগে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার নিয়েও অনেকটা একই ঘটনা ঘটেছে। যে বিচার এক টার্মেই শেষ করা যেত সেটা নির্বাচন জেতার ট্রাম কার্ড হিসেবে রেখে দিয়েছিল সরকার। এছাড়া বর্তমান প্রেক্ষাপটে সরকারের গাফিলতি মাত্রাতিরিক্ত। পয়েন্ট ধরে ধরে বলি:

১) প্রথমেই স্কাইপের ঘটনাটা দিয়ে শুরু করি। ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগে বৃটেনে নিউজ অব দ্যা ওয়ার্ল্ডের মত পত্রিকা বন্ধই হয়ে গেলো। তারা কিন্তু একটা গঠনমূলক তদন্ত করছিল। কিন্তু সেই দাবী ধোপে টেকে নি। যত যাই করুক, কারো প্রাইভেসি ভঙ্গ করার অধিকার অন্য কারো নেই। আর এটা তো একটা ট্রাইবুনালের বিচারকের প্রাইভেসি। সরকারের পক্ষ থেকে যে নীরবতা দেখানো হলো তা আমাকে বিস্মিত করেছে। সরকার যদি এ্যাকশনে যেত, কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে থাকতো জামাত।

২) পুলিশ কতটা ভয়াবহ হতে পারে সেটা আমরা অতীতে দেখেছি। অথচ এবার পুলিশ হত্যার পরও পুলিশের নির্বিকার ব্যবহারে খুবই অবাক হলাম। যদি ধরেও নেই, বর্তমান পুলিশ বাহিনীর সাহস নেই, তবুও সরকার যেন তাদের চাপ দিচ্ছে না? জামাত লাগাম ছাড়া হয়ে যাচ্ছে এবং সরকার নির্বিকার বসে আছে। এটা গাফিলতির আরেকটা বড় উদাহরণ।

৩) ট্রাইবুনাল নিয়ে জামাত উল্টাপাল্টা কথা বলেই যাচ্ছে। এই ট্রাইবুনাল অবৈধ, এই ট্রাইবুনাল মানে না ইত্যাদি। কত কারণে এদেশে আদালত অবমাননা হয়ে যেতে দেখেছি অথচ এবার আদালতও চুপ, সরকারও চুপ।

৪) আওয়ামী লীগ হঠাৎ করে জামাতের প্রতি নমনীয় হয়ে উঠেছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রির বক্তব্য ছাড়াও তাদের হাব-ভাব কেমন যেন কেয়ারলেস। এক বছর আগেও কিন্তু এই জামাত মাঠে নামতে পারতো না। পুলিশ লাগবে না, ছাত্রলীগ দিয়েই পিটিয়ে ফ্ল্যাট করে ফেলতো। কিন্তু হঠাৎ জামাতকে ফ্লোর দিয়ে দেয়া হয়েছে যা হয় সরকারের চাল না হলে গাফিলতি।

আজ অনেককেই ফেইসবুকে সরকারের উপর হতাশা ব্যক্ত করে স্ট্যাটাস দিতে দেখেছি যাদের সব সময় আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে দেখে এসেছি। সরকার যত নির্বিকার বসে থাকবে তত তাদের জনপ্রিয়তা হারাবে। কিন্তু তার থেকেও ভয়াবহ হচ্ছে সরকার একই সাথে তরুন প্রজন্মের কাছে তাদের গ্রহনযোগ্যতাও হারাচ্ছে। জনপ্রিয়তা চলে গেলে আবার ফিরে আসে কিন্তু গ্রহনযোগ্যতা চলে গেলে তা ফিরে পাওয়া কঠিন। আফসোস সরকার এটা বুঝতে পারছে না অথবা বুঝতে চাচ্ছে না। তবে খুব খুশি হবো যদি সরকার বাস্তবতাকে উপলব্ধি করে তাদের ভুলগুলো শুধরে নেয়।

কৌস্তুভ এর ছবি

মন খারাপ

অতিথি লেখক এর ছবি

পিয়াল ভাই বই-দেশিক সাক্ষাতকারের এক জায়গায় বলেছিলেন, 'ধরেন, গোলাম আজমের সাত বছরের জেল হইল *** '

তখন মনে হয়েছিল অসম্ভব। কিন্তু এখন আর অসম্ভব বলে মনে হচ্ছেনা।

রব

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আগামীতে কী হয় সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম। রায় নিয়ে কেউ বিশ্লেষণ ধর্মী কিছু লিখবেন?

তানিম এহসান এর ছবি

চিহ্ন ধুয়ে কে পানি খাবো? সর্বোচ্চ শাস্তি কেন দেওয়া হবে না? বাংলাদেশ তো মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করেনি যে যাবজ্জীবন নিয়ে খুশি থাকবো। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শাস্তি যদি হয়ে থাকে কপালে ভাই-ফোঁটা দেওয়া, তাহলে সেই শাস্তিই দেওয়া হোক। এই রকম সেকেন্ড-ক্লাস শাস্তি চাওয়ার অর্থ কী, এটা পেয়ে সন্তুষ্ট হওয়ারই কী?

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

আওয়ামী লীগ সরকারের হাত আছে কি নাই সেটা এক কথা, আর থাকা উচিত কি উচিত না সেটা আলাদা। এটাই যৌক্তিক হয় যে, বিচারের প্রক্রিয়ায় রায় নির্ভর করবে মামলার উপস্থাপন, তথ্য প্রমাণের উপস্থাপন, তার খণ্ডন, আর বিচারকের যাজমেন্টের উপরে। জনমতের উপরেও না, সরকারের উপরেও না। যাবজ্জীবন কি কেবল এক উপায়েই হতে পারে? কী কী উপায়ে হতে পারে? এক হতে পারে আওয়ামী লীগ সরকার জামাতে ইসলামী(ভিত্তিক) রাজনীতি চিরকাল বহাল রাখার জন্যে এই কাজ করলো, বা আরও যতো যতো ক্রিয়েটিভ কারণে সরকার এটা করে থাকতে পারে। আরেকটা উপায় কিন্তু আছে, যেটা আমরা ততোটা ভেবে দেখছি না। এমন হতে পারে না যে বিচারের রায়ে সরকারের হস্তক্ষেপ হয় নি, কিন্তু মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটরের উপস্থাপন দুর্বল থাকায় অভিযোগ যথেষ্ট শক্তিশালীভাবে প্রমাণিত হয় নি। মামলা উপস্থাপনের দুর্বলতা রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটরের দোষ। তাতে রায় দুর্বল হলে সেটার দায় প্রসিকিউটরের উপর বর্তায়, বিচারকের উপরেও না, ট্রাইবুনালের উপরেও না, সরকারের উপরেও না। দুর্বল উপস্থাপনায় দুর্বল রায় তো ফেয়ারই। ফলে জনরোষটা রায়ের বিরুদ্ধে হলে সেটা ভুল খাতে ব্যয় হবে। আমাদের খায়েশ অনুযায়ী বিচার হচ্ছে এটা অতি উত্তম ব্যাপার। কিন্তু রায়টাও আমাদের খায়েশ অনুযায়ী হোক, সেটা কি চাওয়া যেতে পারে? আমাদের খায়েশ অনুযায়ী রায় আনানোর জন্য এখন সরকার যদি হস্তক্ষেপ করে, তাও কি ভালো হবে? আমাদের প্রাথমিক প্রিমাইসই তো এটা ছিলো যে - "বিচারের প্রক্রিয়ায় রায় নির্ভর করবে জনমতের উপরেও না, সরকারের উপরেও না।"

এই রায় আসার পেছনে ফলে কেবল সরকার একমাত্র সম্ভাব্য কারণ নয়। এটা রাষ্ট্র পক্ষের দুর্বল উপস্থাপনার কারণে হতে পারে, বিচারকের ভুল যাজমেন্টের কারণে হতে পারে, পরিশেষে সরকারের কারণেও হলে হতে পারে। দশটা সম্ভাব্য কারণের একটা হিসেবে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

রায় খায়েশ মতো হওয়ার কেউ বলছে না কিন্তু। বলা হচ্ছে রায় এরকম অদ্ভুত হওয়ার কথা। ৫টি অভিযোগ প্রমাণিত, ৩৪৪ জন হত্যা প্রমাণিত, তবুও কেন বিচারক এমন বিদঘুটে রায় দেবেন? প্রসিকিউশন এবং বিচারসংশ্লিষ্ট অন্য সব ক্ষেত্রেই সরকার ব্যাপক গাফিলতি করে এসেছে এই চার বছর।

নেগলিজেন্ট হমিসাইডের জন্যও মানুষ সর্বোচ্চ শাস্তি পেয়ে থাকে। আওয়ামী লীগের হাতে যুদ্ধাপরাধিদের বিচার পরিকল্পিত ভাবে হত হলো, নাকি দুর্ঘটনাবশত হত হলো সেইটা তো আর বিবেচ্য থাকার অবকাশ নাই। দিনের শেষে দায় তাদেরই উপর। কেন এমন প্রসিকিউটর নিয়োজিত হলো? বিচারকরা কীসের বশবর্তী হয়ে এমন রায় দিলেন? তুচ্ছতম মামলায়ও যেখানে যাচাই-বাছাই করে বিচারক নিয়োগ হয় সেখানে এত বড় মামলায় কীসের ভিত্তিতে এমন বিচারক নিযুক্ত হলেন যারা কমনসেন্স-ডিফাইং রায় দেবেন? এই প্রশ্নগুলো তো অযৌক্তিক বা অবান্তর না।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

আমি একদম জেনারেল মন্তব্য করেছি। লেখায় গুরুত্বপূর্ণ কিছু পয়েন্ট অবশ্যই এসেছে।

অপরাধের ব্যাপারে বিয়োন্ড রিজনেবল ডাউট নিশ্চিতিপ্রাপ্তি ছাড়া সর্বোচ্চ শাস্তি, বিশেষ করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া কঠিন। অভিযোগটা নেগলিজেন্ট হমিসাইডের মতো লঘু হলেও সমস্যা নেই, প্রমাণ শক্ত হতে হবে। তেমন প্রমাণ উপস্থাপন হয়ে থাকলে অভিযোগের তীরটা বিচারকের জাজমেন্ট অথবা সরকারের দিকেই যাবে।

প্রসিকিউশন এবং বিচারসংশ্লিষ্ট অন্য সব ক্ষেত্রেই সরকার ব্যাপক গাফিলতি করে এসেছে এই চার বছর। কেন এমন প্রসিকিউটর নিয়োজিত হলো?

এগুলো গুরুত্বপূর্ণ সমালোচনা। সরকারের মধ্যে তাড়াহুড়ার একটা ছাপ ছিলো। সেটা সেই জনমতের তরেই।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

রায়েই বলা হয়েছে যে ৫টি অভিযোগ স্পষ্টভাবে প্রমাণিত। রায়েরই তো আগা-মাথা মিল নেই কোনো!! আর তড়িঘড়ি নিয়ে চার বছরের মাথায় কোনো অজুহাত খাটে না। সেই দিন শেষ বহু আগেই।

সজল এর ছবি

রায় থেকেঃ

429. We are of agreed view that justice be met if for the crimes as listed
in charge nos. 5 and 6 the accused Abdul Quader Molla who has been
found guilty beyond reasonable doubt is condemned to a single sentence
of ‘imprisonment for life’ And ...

বিচারকদের মতে অভিযোগ "বিয়ন্ড রিজনেবল ডাউট" প্রমাণিত হয়েছে। আর সেটা না হলেতো যাবজ্জীবনও দেয়া যায় না, সব বিচারেই আসামী ইনোসেন্ট আনটিল প্রুভেন গিলটি এটা ডিফল্ট অ্যাজাম্পশন। এখন ব্যাপারটাতো এমন হতে পারে না যে তাদের মনে রিজনেবল ডাউট আছে, তারপরো রায়ে লিখেছে নেই, কিন্তু শাস্তি দেয়ার সময় সেই ডাউটের জন্য বেনিফিট দিয়েছে!

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ফাহিম হাসান এর ছবি
ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ এটা তুলে আনার জন্য। এরকম আরো তথ্য আসুক।

সংযোজন: আপনার কথা রিজনেবল লাগছে। ব্যাপারটা ধরায় দেয়ার জন্যে ধন্যবাদ। যাবজ্জীবন আর ফাঁসির মধ্যে পার্থক্যটা রিজনেবল ডাউটের ব্যাপারে হবার কথা না। পসিবলি "অ্যাবসলিউট সার্টেনটি" জড়িত থাকতে পারে। বা সাক্ষ্য প্রমাণের সবলতা দুর্বলতা? নাকি বিচারকের খেয়ালখুশি?

সজল এর ছবি

বিয়ন্ড রিজনেবল ডাউট প্রমাণ করতে পারলেই আইনী ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হওয়ার কথা। অ্যাবসলিউট সার্টেনটি গাণিতিক ব্যাপার ছাড়া প্রতিষ্ঠা করা কঠিন। প্রচলিত খুন বা রেপিং এর বিচারের ক্ষেত্রেই দেখুন, ওই ঘটনার কোন দৃশ্য ধারণ করেতো আদালতের সামনে দেখানো হয় না। বরং পরিপার্শ্বিক ঘটনা থেকে প্রায় নিশ্চিত করা হয় ঘটনাটা আসামীই ঘটিয়েছে। ১০০ ভাগ নিশ্চয়তার শর্তে আইনী প্রক্রিয়া মনে হয় অনেক আগেই স্থবির হয়ে যেত।
নিউইয়র্ক কোর্টের মতে,

The law recognizes that, in dealing with human
affairs, there are very few things in this world that we know with
absolute certainty. Therefore, the law does not require the People
to prove a defendant guilty beyond all possible doubt.15 On the
other hand, it is not sufficient to prove that the defendant is
probably guilty.16 In a criminal case, the proof of guilt must be
stronger than that.17 It must be beyond a reasonable doubt.

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

স্বঘোষিত খুনি যেমন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ক্ষেত্রে অ্যাবসলিউট সার্টেনটি প্রযোজ্য হলেও হতে পারে। এটা আসল বিষয় না হলে তাহলে থাকে সাক্ষ্য প্রমাণের সবলতা দুর্বলতা। এটা এখানে এখনও একটা ফ্যাক্টর মনে করছি। এটা যদি না হয়, তাহলে বাকি থাকে সম্ভবত কেবল বিচারকের খেয়ালখুশি, যেটার প্যারামিটার অজস্র। সে দিকে আর না যাই।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

রাজাকার কাদের মোল্লার মতো কসাই কেবল পনেরো বছরের কারাদণ্ড ভোগ করবে, এমন রায় শুনে এখন যে মন্ত্রীরা রায়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন, শুরু থেকেই ট্রাইব্যুনাল যখন লোকবল, জনবল, মনোবল, অর্থবল চেয়ে চেয়ে চিৎকার করছিলো তখন কী ইয়েটা ফেলছিলেন তাঁরা?

হাসিব এর ছবি

আওয়ামী লীগের ওয়েবসাইট হ্যাকড।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আওয়ামীলীগ সরকারের যত অপরাধের কথা বললেন সেসব প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য নাই। (বেশিরভাগ বিষয়েই একমত কিন্তু সেই আলোচনার জন্য এই লেখাটি সম্ভবত নয়!)

বিচারের রায়ে সন্তুষ্ট না হওয়ার অসংখ্য কারণ রয়েছে। বিচারে সন্তুষ্ট না হতে কোর সমস্যা নেই। যে বিষয়ে সমস্যা রয়েছে সেটি হচ্ছে, আওয়ামীলীগ সরকার চাইলেই এই বিচারের রায় অন্যরকম হতে পারত সেটি বলার চেষ্টা করা। সেই কথাটি আপনি স্পষ্ট করে বলতে চেয়েছেন বলে এই লেখা পড়ে মনে হয়নি। সেরকম হয়ে থাকলে আপনার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল স্বাধীন এবং সরকারের প্রভাবমুক্ত।

আপিল বিভাগে অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা হবে সেই আশা রাখছি।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

চলুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

বাজার থেকে পঁচা আলু আর বাসি ডিম এনে দিলে কি রাঁধুনির উপর সব দোষ দিয়ে ভাগা যাবে? কাদের মোল্লাকে "সহযোগী" হিসাবে দেখানোর দায় কার? আইন থেকে দণ্ড আপিল করার অধিকার রহিত করার দায় কার?

বিচারপ্রক্রিয়াকে সরকার "নিয়ন্ত্রণ" করুক এমনটা কেউ বলছে না, নিশ্চয়ই তেমনটি হচ্ছেও না। কিন্তু তাই বলে এইটা অস্বীকার করা সম্ভব না যে সরকারই সর্বোচ্চ প্রভাব রাখতে পারে। এই "প্রভাব" খাটে ট্রাইব্যুনালের সামনে কী কী প্যারামিটার দেওয়া হচ্ছে তার মাধ্যমে।

তানজিম এর ছবি

বিগত নির্বাচনে দুই তৃতীয়াংশের বেশি আসনে জিতিয়ে জনগণ কাদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল?
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন পাশ করেছে কারা?
লঘু শাস্তির পর আপিলের সুযোগ রহিত কেন?
ট্রাইব্যুনাল আইন মেনে চলে, সেই আইন সবদিক দিয়ে ত্রুটিমুক্ত কিনা সেই দায়িত্ব কার?

আইলসা এর ছবি

হতে পারে এইটা একটা স্ট্রাটেজিক মুভ, হইতে পারে কোন ডিল হইছে, কিংবা অন্য অনেক আগডুম বাগডুমই হইতে পারে তবে দুইটা জিনিষ হয় নাই এইটা আমি নিশ্চিত
১. এই রায় আওয়ামী লিগের নেতার জানতো না- এইটা অবিশ্বাস্য
২. কাদের মোল্লার "ভি" দেখানো হাতের চেয়ে দু:খজনক, কষ্টকর, বেদনাদায়ক ছবি আমি দেখি নাই।

যেই ট্রাইবুনালকে জামাত ছাড়া প্রতিটি শুভবুদ্ধির মানুষ সমর্থন দিছে, তাদের রায়ে বিজয় চিহ্ন দেখায় কসাই কাদের। সকল যুক্তি তর্কের পরে, সকল বিশ্লেষনের পরে ও, এই ছবিটা আমার বুকটা এফোড়-ওফোড় কইরা দিছে। আমি প্রতারিত এবং হতাশ। মুক্তিযুদ্ধাদের দল আওয়ামী লিগ যদি ডিল করে- আমরা কই যাবো? আমি ক্ষুব্দ, হতাশ তবে আমি শেষ মানতে রাজি না। আমি যাচ্ছি শাহবাগ।।

সাম্য এর ছবি

কেন আমার এই বিশ্বাস অবান্তর হবে যে আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধকে শেষ বার বিক্রি করে দিলো জামায়াতের সাথে নির্বাচনী আঁতাতের নিশ্চয়তা পেতে?

বিএনপির সাথে জামায়াতের ১০ ভাগ ভোট যোগ হওয়া ঠেকাতে গিয়ে আওয়ামী লীগ কোটি খানেক ভোট হারালো এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপর ছ্যাড়ছ্যাড় করে মুতে দিলো -- এইটাই দিনের শেষে শেষ কথা।

রায়েরই তো আগা-মাথা মিল নেই কোনো!!

এ ধরণের কিছু বলার আগে পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানাই আপনাকে। কারণ, এগুলো ট্রাইবুনালের স্বচ্ছতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, অসম্মানও। আওয়ামি লীগের ব্যর্থতা, গাফিলতি, নির্বুদ্ধিতা, অকর্মণ্যতা, অসতর্কতা থাকতে পারে মানি, তবে বিশ্বাসঘাতকতার প্রসঙ্গ তুললে আবার-ও সেই ট্রাইবুনালের স্বচ্ছতাকেই প্রশ্ন করা হয়।

আমি এখনো আপিলের ব্যাপারে ধৈর্য্য ও আশা ধরে রেখেছি।

--------------------------------
বানান ভুল থাকলে ধরিয়ে দিন!

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

"সম্মান" জিনিসটা খুবই আজব এক চিজ। এইটা নিজে না খোয়ালে কেউ কেড়ে নিতে পারে না। আমি কী বলি বা না বলি তাতে কিছু আসে-যায় না, ট্রাইব্যুনাল নিজের সম্মান নিজেই খেয়েছে। আরেকটা ব্যাপার হলো, আমি প্রশ্ন করছি ট্রাইব্যুনালের "যোগ্যতা"কে, "স্বচ্ছতা"কে না।

অনেকেই eggshell-এর উপর হাঁটছেন সমালোচনার সীমা কোথায় সেই ভয়ে। যেই বাস্তবতা ভুলে যাচ্ছেন তা হলো, চাপ ও গণদাবি বাদে কোনো কিছুই আদায় হয় না। আদালত ভুল রায় দিলে সেটার প্রতিবাদ হবেই। সরকার দায়িত্বহীন হলে সেটারও প্রতিবাদ হবেই। আমি আপনাদের মতো আন্তর্জাতিক-মুখী হয়ে দেখছি না। আমার কথা একটাই -- যুদ্ধাপরাধীদের বিচার/ফাঁসি চাই। চুদুর-বুদুরের টাইম শেষ।

"বিশ্বাসঘাতকতা"র ব্যাপারটাও আগে বলেছি। এই একটা ইস্যুর ঘাড়ে চেপে ক্ষমতায় এসে, চার বছর ধরে এই এক ইস্যুর আড়ালে শত ব্যর্থতা/দুর্নীতি লুকিয়ে শেষতক এই রকম একটা লেজে-গোবরে অবস্থা? এটার জন্য তো আমি-আপনি দায়ী নই। রইলো বাকি...

টিউলিপ এর ছবি

সরকার এসে রায় বদলে দিক এই দাবি কেউ করছে না। কিন্তু সাড়ে তিনশ লোকের গণহত্যা প্রমাণিত হওয়ার পরেও যদি আমরা এই শাস্তি কিভাবে পেল সেটা নিয়ে প্রশ্ন না তুলি, তাহলে কখন তুলবো? বাকিরাও বেকসুর খালাস পেয়ে যাওয়ার পরে?

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

সাম্য এর ছবি

আমি প্রশ্ন করছি ট্রাইব্যুনালের "যোগ্যতা"কে, "স্বচ্ছতা"কে না।

শুনে আশ্বস্ত হলাম, যদিও পোস্টে কিছুটা হলেও দ্বিতীয়টা প্রকাশ পেয়েছে (আর এজন্যই আগের মন্তব্যটা করেছি)। সমালোচনার সীমায় ভয় পাচ্ছি না, আন্তর্জাতিক-মুখী হয়েও দেখছি না, শুধু একটা বিষয়েই সতর্ক থাকি যে, দূর ভবিষ্যতের প্রজন্ম যখন বাংলাদেশের ইতিহাস পড়বে, তখন যেন এই ট্রাইবুনালের স্বচ্ছতা সম্পর্কে তাদের বিন্দুমাত্র সন্দেহ না থাকে।
বাস্তবতা ভুলছি না, চাপ ও গণদাবি অব্যাহত থাকুক যেন রাষ্ট্রপক্ষ আপিলের ব্যাপারে পিছু না হটতে পারে।

@ টিউলিপঃ
প্রশ্ন তোলায় তো কেউ আপত্তি করছে না! প্রশ্ন যেন অন্য অর্থে বিরোধীপক্ষের সুবিধা না করে দেয়, সে বিষয়টা খেয়াল রাখা উচিত।

--------------------------------
বানান ভুল থাকলে ধরিয়ে দিন!

রব এর ছবি

দূর ভবিষ্যতের প্রজন্ম যখন বাংলাদেশের ইতিহাস পড়বে, তখন যেন এই ট্রাইবুনালের স্বচ্ছতা সম্পর্কে তাদের বিন্দুমাত্র সন্দেহ না থাকে।

ট্রাইবুনালের যোগ্যতা, স্বচ্ছতা দুটোই রক্ষার মালিক আমরা কেউ না, ট্রাইব্যুনাল নিজে। আরও স্পষ্ট করে বললে এর তিন বিচারক। কেউ যুক্তিছাড়া ট্রাইবুনালের যোগ্যতা, স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও দূর ভবিষ্যতের প্রজন্ম সেগুলোকে বিশ্বাস করে নেবে, নিজেদের ভবিষ্যত প্রজন্ম সমন্ধে এত নিচু আগাম ধারণা না করি; কি বলেন?

অভিযোগ ১,২,৩, ৫,৬ প্রতিটিতেই তো হত্যার অভিযোগ ছিল, এবং রায়ে তো এগুলো প্রমাণিত বলা হচ্ছে। তারপরও বিশেষকরে ৫,৬ এ মৃত্যুদন্ড নয় কেন? সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন ভাবা শুরু করেছিলেন তারা? কয়েকদিন আগেই না বাচ্চুরে দিলেন মৃত্যুদন্ড? এই প্রশ্নের কী উত্তর থাকতে পারে তাদের কাছে? রায়টা পড়ে এদের যোগ্যতা না স্বচ্ছতা না দুটোরই অভাব ঠিক করতে পারছি না।

সাম্য এর ছবি

কেউ যুক্তিছাড়া ট্রাইবুনালের যোগ্যতা, স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও দূর ভবিষ্যতের প্রজন্ম সেগুলোকে বিশ্বাস করে নেবে, নিজেদের ভবিষ্যত প্রজন্ম সমন্ধে এত নিচু আগাম ধারণা না করি; কি বলেন?

ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিয়ে নিচু ধারণা করছি না। যেহেতু বাংলাদেশে ইতিহাস বিকৃতি করার নজির রয়েছে, ট্রাইবুনাল নিয়েও যে ভবিষ্যতে বিম্পি-জামাত জাতীয় কোন সরকার (এমন সরকার যেন কখনো না আসে সেই কামনাই করি) বিকৃতির চেষ্টা চালাবে না, তার নিশ্চয়তা কী? এখন স্বচ্ছতা নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুললে সে সময় এটা তাদের বিকৃতিতেই সাহায্য করবে।

--------------------------------
বানান ভুল থাকলে ধরিয়ে দিন!

নীড় সন্ধানী এর ছবি

এই রায়টা হয়েছে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্যারাসিটামল প্রয়োগের মতো। কেন কি হইছে জানি না। আণ্ডারগ্রাউন্ড ডিল আমরা বুঝি না। কিন্তু এই রায় আমরা মানি না। কসাই কাদেরের ভিকটিমেরা এখনো বেঁচে আছে। এই রায় তাদের জন্য বিশাল অপমান। যারা মরে গেছে তাদের জন্য মরনোত্তর অপমান।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

দ্রোহী এর ছবি

আজকের জনকণ্ঠে প্রধানমন্ত্রীর কথাগুলো খুব ভাল্লাগছে।

নতুন প্রজন্ম নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রফ্রন্ট ছাত্রশিবির গঠিত হয়েছে। তারা জানে না মুক্তিযুদ্ধকালে এ দেশে কি ধরনের ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনা ঘটেছিল। এ জন্য তিনি তাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানার আহ্বান জানান।

যুদ্ধাপরাধীরা ১৯৭১ সালে গণহত্যা চালিয়েছে এবং আমাদের মা-বোনদের দখলদার বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে। কিন্তু এখন কিছু মানুষ তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তিনি জানতে চান, এ ধরনের গণহত্যা বা জীবন্ত মানুষ পোড়ানোর ঘটনা আমাদের ধর্মের কোথায়ও সমর্থন করে কি

শেখ হাসিনা বলেন, যেসব যুবক এখন রাস্তায় যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে আন্দোলন করছে, তারা ১৯৭১ সালে জন্মগ্রহণ করেনি। তাদের অধিকাংশই জানে না, তারা যাদের সমর্থন করছে সেসব ব্যক্তি ১৯৭১ সালে কি জঘন্য অপরাধ করেছে। যদি তারা ১৯৭১ সালের এসব ঘটনা দেখত, আমি মনে করি তারা অবশ্যই লজ্জা পেত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে আন্দোলন কোন জনগণের সমর্থন পাবে না এবং জনসমর্থন ছাড়া কোন রাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে ওঠে না।

গতকালকের প্রথম আলোতে টুকুমন্ত্রী বলেছেন:

এ সময় প্রতিমন্ত্রী জামায়াতের প্রশংসা করে বলেন, জামায়াতের তরুণ কর্মীরা নিজামী, মুজাহিদের চেয়ে ভালো।

অতএব, সুমায় থাক্তে থাক্তে লাইনে আসুন সবাই

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

চলুক

---------------------
আমার ফ্লিকার

নীলম এর ছবি

এই রায় যেকোন সময়েই হতাশাজনক। তারপরেও কেন জানি মনে হচ্ছে গত কয়দিনে নেতা-নেত্রীদের মুখে বলিষ্ঠ কিছু কথা শুনলে, পুলিশের বডি ল্যাংগুয়েজে অন্যরকম কিছু দেখলে হয়তো আজকের মত নিজেকে এতোটা প্রতারিত মনে হতো না, এতো ক্ষোভ-হতাশা-ক্রোধ জমা হতো না মনে।

আলী হায়দার এর ছবি

রায়টি কিছুতেই মন থেকে মেনে নিতে পারছি না। কারন আমরাতো আমাদের মনের আদালতে কাদের মোল্লার ফাসি দিয়ে রেখেই ছিলাম। ব্লগারদের সাথে সাথে সারা জাতি এই রায়ে খুব্ধ। কিন্তু এত কিছুর পরে ও ব্লগারদের এবং জনগনের প্রতিক্রিয়া দেখে টানেলের মুখে আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। কারন এই রায়ের পর যে প্রতিবাদ হয়েছে তাঁর একটি ব্যাপক ভিত্তিক মূল্য আছে। আশা করি এই মূল্য থেকে সরকার এবং বিরোধী দল উভয়েই শিক্ষা নিবে। তাতে আমারাও জিতব তারাও জিতবে। আসুন দেখা যাক এই রায়ের প্রাপ্তিগুলো কি কি

- বাংলাদেশ জামাতে ইসলামী যুদ্ধপরাধী সংগঠন হিসেবে আইনীভাবে স্বীক্রিত হল।
- সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধপরাধীরা আর, পি, ও, অনুযায়ী নির্বাচনের অযোগ্য ঘোষিত হবে।
- বাংলাদেশ জামাতে ইসলামীর রাজনিতিক সংগঠন হিসেবে নিবন্ধন বাতিলের সুযোগ সৃষ্টি হল।

প্রাপ্তিযোগ নেহায়েত কম নয়, কি বলেন ?

ধুসর গোধূলি এর ছবি

প্রাপ্তিযোগের খাট্টা তো অনেকই খেলো বাংলাদেশ, আর কতো! এবার কিছু করে দেখানোর পালা। ইশতি মনেহয় সেটাই বলতে চেয়েছে, এইসব প্রাপ্তিযোগের চুদুরবুদুর অনেক হয়েছে, আর না।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

হ... চুদুরবুদুর বহুত দেখসি, আর না।

ফাহিম হাসান এর ছবি
তানজিম এর ছবি

একদিকে ছাগুদের অশ্লীল হুংকার আরেকদিকে দলীয় পাচাটা কুত্তাদের অন্ধভক্তি দেখে যখন শরীর গুলাতে থাকে তখন এমন একটা লেখাই আশা করছিলাম। ইশতিয়াককে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি যখন রায়ে অভিযোগ করার মত কিছু দেখেন না তখন এই বিতর্কিত রায়ের অনেকখানি দায়ভারই সরকারের ওপর বর্তায়। যারা বলছেন এই রায় শুধুই বিচারবিভাগীয় ব্যাপার, সরকারের কিছু করার ছিলো না তারা সরকারের অ্যাপোলোজিস্ট হিসেবে ভূমিকা রাখছেন।

ইশতিয়াক আপনাকে ধন্যবাদ একটি বলিষ্ঠ লেখার জন্য।

উচ্ছলা এর ছবি
|জণারন্যে নিঃসংগ পথিক| এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

বিচার করে ফেললেও যে জনসমর্থন মিলবে সেই নিশ্চয়তাও নেই।

এবং

বিএনপির সাথে জামায়াতের ১০ ভাগ ভোট যোগ হওয়া ঠেকাতে গিয়ে আওয়ামী লীগ কোটি খানেক ভোট হারালো

@ইশতিয়াক ভাই, এই দুটো বাক্য কিন্তু সাংঘর্ষিক। দুটো একসাথে সত্যি হতে পারে না। প্রথমটির ক্ষেত্রে নিশ্চয়তা নেই। রাজনীতিতে নিশ্চয়তা খুবই বিরল বস্তু। দ্বিতীয় বাক্যটি ১১০% সত্য।

আওয়ামী লীগের ভোটব্যাঙ্ক বিশ্লেষণ করে একটা জিনিস পাই, সেটা হচ্ছে ২০০৮ এর জাতীয় নির্বাচনে প্রথম ভোটারদের প্রায় ১০০% ভোট পাবার রেকর্ড। এর পেছনে ছিল সুশীল সমাজের বলিষ্ঠ ভূমিকা, এবং ডঃ মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের রাখঢাকবিহীন একটি অনবদ্য ্রাজাকারবিরোধী প্রবন্ধ। ৭৫ পরবর্তীতে যারা জিয়া ও এরশাদের উচ্ছিষ্টকে প্রসাদ-জ্ঞানে ভোগ করেছেন তারা আর কোনভাবেই আওয়ামী লীগের ভোটার নন। তাছাড়া ৫৪ সাল থেকেই আওয়ামী লীগে বেইমান খোন্দকার মোশতাকের একটি ছোট ডানপন্থী প্রতিক্রিয়াশীল বাহিনী ছিল। আওয়ামী লীগ যে ভুলটা করে, সেটা হল বারবার প্রতিক্রিয়াশীলদের ভোট টানার জন্য প্রগতিশীলদের ক্ষুব্ধ ও বঞ্চিত করে এবং বারবারই প্রটেস্ট ভোটে হেরে যায়। আমি নিশ্চিত শুধুমাত্র মানবতাবিরোধী পশুদের(ক্ষমা করো পশুকূল!) ফাঁসি নিশ্চিত করলেই আওয়ামী লীগ আবারো নির্বাচিত হবে। আর এটা না করতে পারলে দলটির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে যাবে। কারণ বি,এন,পি -জামাতের দলীয়করণ একেবারে নিশ্ছিদ্র ওখানে ঘুষও নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ- অন্য পার্টি বা নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের কোন সুযোগই তারা দেয় না। এবারে গেলে দেশকে অনেক দিক দিয়েই সাফ করে ছাড়বে তারা! সংখ্যালঘু শব্দটি তখন মনে হয় না আর কাউকে জ্বালাতন করবে!

নির্ঝর অলয়

(সিসিফাস) এর ছবি

৪ ৬ ৪ = ১৪ বছরে একজন রাজাকারের বিচার করতে পারে নাই, এই তথ্যের সাথে সহমত নই; আমার মতে, এটা ভুল তথ্য।

দালাল আইনে সর্বশেষ বিচারের রায় হয় দুই জনের-- যাবজ্জীবন কারাদন্ড। দৈনিক সংবাদ ২০-৪-১৯৭৫ এর রেফারেন্স টেনে উল্ল্যেখ আছে এ এস এম সামছুল আরেফিনের বইয়ে। ১৪ জনের মৃত্যুদন্ডের আদেশ আসে মধ্য ৭৪ এ। এরকম আরও উদাহরণ আছে- ৭২ এ রাজাকার চান্দ মিয়ার মৃত্যুদন্ড। দালাল আইন রহিত করা হয় ১৯৭৫ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর এবং এরপর আর কোন বিচার হয় নি এবং বিচারাধীন আটক সবাইকে সেসময় ছেড়ে দেওয়া হয়।

বিশ্বরাজনীতির চাপ ও উপমহাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা স্বাভাবিককরণের দায় হিসেবে বাংলাদেশকে যুদ্ধোত্তর বাস্তবতায় অনেক কিছু মেনে নিতে হয়েছে বা করতে হয়েছে; কখনও জাতিসঙ্ঘের সদস্য পদ প্রাপ্তির চাপে, পাকিস্থানের স্বীকৃতির চাপে বা পাকিস্থানে বন্দি সেনা সদস্য ও সাধারণ বাঙালিদের ফিরিয়ে নেবার চাপ। সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হলেও সেটা করা হয়েছিল তিন ধরণের অপরাধের অপরাধীদের সুস্পষ্টভাবে আলাদা করে- "murder, rape, arson" এবং এদেরকেই দালাল আইনে বিচার করা হচ্ছিল সে সময়। পরিস্থিতি বদলানো শুরু করে ১৯৭৫ এর ১৫ই আগস্টের পর থেকেই।

সাম্য এর ছবি

আশা করি পোস্টলেখক এই তথ্য যাচাই করে মূল পোস্টে সংশোধন করবেন।

--------------------------------
বানান ভুল থাকলে ধরিয়ে দিন!

(সিসিফাস) এর ছবি

আপনার পোস্টের বক্তব্যে উঠে এসেছে যে, আওয়ামীলীগ ট্রাইবুনালকে প্রভাবিত করে বিচার বদলে দিতে সক্ষম! খেয়াল করে দেখবেন, এ ধরণের প্রচারণাকেই হালে পানি পাওয়াতে জামাতি-ছাগুরা কত-শত সাদা-চামড়া ভাড়া করেছে তার ইয়ত্তা নেই। বিচারপতি নিজামুল হকের স্কাইপ সংলাপে উঠে এসেছিল সরকারের চাপের কথা, তবে সেসময় নিজামুল হকের কথা শুনে মনে হয়েছে যে উনি সেই চাপের কাছে নতি স্বীকার করেন নি। বরংচ, সূচারুভাবে বিচার শেষ করাতেই উনার মনোযোগ বেশী ছিল। এখান থেকে ট্রাইবুনালের বাস্তবতা সম্মন্ধে আমরা কিছুটা ধারণা নিতে পারি।

আপনার আবেগটা বুঝতে পারছি, আমি নিজেও বিচারের রায় নিয়ে হতাশ; তবে ট্রাইবুনাল আওয়ামী প্রভাবযুক্ত এই ধরণের বায়বীয় অভিযোগ আসলে জামাতের হাতকেই শক্তিশালী করবে আগামীতে। আজকেই আল-জাজিরার একটা রিপোর্টিং দেখলাম-- বলা হচ্ছে যে

"Dhaka Based International Crimes Tribunal... Known as Awami Tribunal"

। আশা করছি বুঝতে পারছেন যে জামাতীদের চাওয়াটা কি।

আওয়ামী লীগ যদি আপোষে যায়, তবে গদাম খাবেই। আমার যতটুকু মনে হচ্ছে যে, ধোঁয়া উড়ছে এমন অভিযোগ করার মতন সময় আসে নি। চায়না-বামরাও এই ধরণের অভিযোগ করে আসছে আগে থেকেই। চায়না-বামদের আওয়ামীবিরোধীতাটা আসলে ঐতিহ্যগত; কাদের মোল্লার রায়ের পর অনেক চায়না-বাম "কমরেডের" ফাঁসির দাবীর আন্দোলন বা প্রসিকিউশনকে আরও দক্ষ করে তোলার দাবীর চেয়ে শুধু আওয়ামী-পিন্ডি চটকানোতে অতি উতসাহীভাব "আওয়ামীলীগ-জামাত আঁতাত" তত্ত্বকে আমার কাছে অগ্রহণযোগ্য করে তুলছে; আমার মনে হয় ইটস টু আরলি টু সে দ্যাট দেয়ার ইজ স্মোক

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

স্মোকি আইস উড ওনলি সি স্মোক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

অনেকেই (যথাযথ ভাবেই) বলছেন যে আমার কথাগুলো জামায়াতের হাতে ছুতা তুলে দেওয়ার মতো শোনাচ্ছে। আপনাদের শংকার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি যে এমন কিছু নিয়ে আমি ভয় পাই না। পৃথিবীর কোনো শক্তি নাই দেশজুড়ে জাগ্রত জনতার দুকূল ছাপানো দাবিকে নিয়ে কিছু বলে। বিদেশি শক্তির পিরিতির নমুনা আমাদের জানা আছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধেই এরা সজ্ঞানে দূরে ছিলো, আজকে এদের খুশি করতে আমার কণ্ঠ ম্রিয়মান করতে যাবো কেন?

আমি চাই বিচারিক প্রক্রিয়াতেই শাস্তি হোক, কিন্তু এদের সামারি ট্রায়াল করে ঝুলিয়ে দিলেও কোনো ক্ষতি হতো না। "অগণতান্ত্রিক আচরণ" তো মিশর, বার্মা, বা ইরাকে সমস্যা হয়নি। আমরা যদি দুবলার মতো আচরণ করি, ওরাও আমাদের উপর বোঝা চাপাতে থাকবে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।