মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ৩। দ্রৌপদী। পর্ব ১

মাহবুব লীলেন এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব লীলেন (তারিখ: শনি, ০৯/০২/২০১৩ - ১:২০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

তোমার অর্জুন একটা বেশ্যা মাগির পুত। নিজের মায়ে তার শুইছে বারো মাইনসের লগে তাই আমারেও সে বিলাইয়া দিছে পাঁচ ভাইয়ের বিছানায়। কর্ণ কি মিথ্যা কয় আমি একটা বেশ্যা? একটা বেশ্যারে জুয়ার দানে তুইলা দিতে যুধিষ্ঠিরের যেমন যায় আসে না তেমনি একটা বেশ্যারে কেউ বিবস্ত্র করলে অর্জুনেরও আসে যায় না কিছু...

কাম্যকবনে কৃষ্ণা হামলাইয়া পড়ে কৃষ্ণের উপর। কৃষ্ণ কিছু কইতে গিয়া গুছাইতে না পাইরা তোতলায়। হাত তুইলা দ্রৌপদী তারে থামাইয়া দিয়া নিজে স্থির খাড়াইয়া থাকে। কৃষ্ণের মনে হয় যা বলার তা বইলা দিয়া কৃষ্ণার বলা শেষ তাই থামানো কথা সে আর বাড়ায় না। কিন্তু দ্রৌপদী আবার মুখ খোলে। এক্কেবারে ধীর। অতি ধীর লয়ে কৃষ্ণের চোখে চোখ রাইখা কৃষ্ণা জিগায়- দোস্ত। কওতো দেখি তোমরা সকলেই ক্যান কর্ণরে মারতে চাও? কর্ণ কী এমন করছে যা তোমরা কেউ করো নাই? তোমরা তারে অর্জুনের লগে লড়াই করতে দেও নাই; নমশূদ্র গালাগাল দিয়া সরাইয়া দিছ। সকলের লাইগা সমান সুযোগের স্বয়ংবরা থাইকা আমিও তারে নমশূদ্র বলে বিনা দোষে তাড়ান দিছি। সেই অপমানে সে যদি আমারে একবার বেশ্যা কইয়া ডাকে; তয় কি তা খুব বেশি অপরাধ? ...কৃষ্ণ... তুমি কওতো সখা; তোমার সখী কৃষ্ণা পাঞ্চালী একটা বেশ্যা না?

একটা দম নিয়া পাঞ্চালী ফাইটা পড়ে আবার- হা কৃষ্ণ। আমি জানি আমারে সান্ত্বনা দিতে এইখানে আসো নাই তুমি। তুমি আসছ আমারে বুঝাইয়া আবার পাণ্ডবগো বনবাসের বিছানায় পাঠানোর ধান্দায়। পাঁচ পাণ্ডবের নয়টা বৌ থাকতে একলা আমারেই বনবাসে পাঠাইছে তোমার পিসি যাতে পাঁচ পোলার একলা যৌনসঙ্গী হিসাবে তাগোরে হাতের এক মুঠায় ধইরা রাখি আমি। ...তুমি যাও কৃষ্ণ। ভীষ্ম তোমার অর্জুনের ঠাকুরর্দা; দ্রোণ তার গুরু। তাগোর দিকে হাত তুলতে ভীমেরও গদা কাঁপতে পারে। কিন্তু পাঞ্চাল রাজারে তুমি চেনো। তুমি ভালো করে জানো তার দুই পোলা ধৃষ্টদ্যুম্ন আর শিখণ্ডীরে... দ্রোণ আর ভীষ্মর লাইগা তাদের অস্ত্র শান দেওয়া কেউ ঠেকাইতে পারব না জাইনা রাখো তুমি। ...আর ধৃতরাষ্ট্রের পোলাগো লাইগা একলা ভীমই যথেষ্ট আমার.... ভীম যদি বাইচা থাকে; যদি বাইচা থাকে আমার দুই ভাই; যদি বুড়া বাপের শরীরে প্রাণ থাকে; তয় দ্রৌপদী তার হিসাব কড়ায় গন্ডায় বুইঝা নিব। তুমি যাও। তোমারেও এখন আর বিশ্বাস করি না আমি...

অপমান থাইকা বড়ো কোনো অস্ত্র নাই যা মানুষ ভোলে না ফেরত দিবার কথা। ঘৃণার থাইকা বড়ো কোনো যুক্তি নাই যাতে মানুষ যে কাউরে ছোবল দিতে পারে। ধীর কৃষ্ণ ধীর। জয়-পরাজয় ক্ষত্রিয়দের নিত্য অভ্যাস। পাণ্ডবরা ভুইলা যাইতে পারে পরাজয়ের কথা; কিন্তু পাঞ্চালীর অপমানই তাগোরে আবার ফিরাইয়া আনব হস্তিনাপুরের পথে...

অতি দ্রুত হিসাব মিলাইয়া নিয়া কৃষ্ণ চুপ থাকে। কৃষ্ণ যায়ও না- খাড়ায়ও না; খালি ডানে বামে পায়চারি করে। পাণ্ডবরা বনবাসে আসার তিনদিন পরেই দেখতে আসছিল বিদুর। কিন্তু ফিরা গিয়া যে সংবাদ দিছে তা শুইনা কুন্তী নিজেই রওয়ানা দিছিল বনবাসে আসার। ভীম ধৃতরাষ্ট্রের সভাতেই যুধিষ্ঠিররে হাত পুড়াইতে গেছিল; অর্জুন তারে কোনোমতে আটকাইছে। ভীম বনবাসের শর্তও মানে নাই। এর মধ্যেই সে কয়েকবার হাতে গদা নিছে হস্তিনাপুর ফিরা যাবার জন্য। ভীমেরে সামলাইতে পারে এমন কেউ এখন এইখানে নাই। অন্য সময় হইলে কুন্তীর পরে ভীমেরে একমাত্র সামলাইতে পারত দ্রৌপদী। কিন্তু দ্রৌপদী এখন অপমানে রাগে অর্ধ উন্মাদ হইয়া আছে। হইবারই কথা। পাঞ্চাল রাজের মাইয়া সে; সম্রাটের মহিষী। পাঁচ পাঁচটা তরুণ পোলাও আছে তার। কিন্তু মূর্খ যুধিষ্ঠির কিনা সেই দ্রৌপদীরে পাশা খেলায় বাজি ধইরা বসল। হালা ফকিন্নির পুত; কপাল জোরে কুন্তীপিসির লাইগা দ্রৌপদীর মতো মেয়েরে নিজের বৌ হিসাবে পাইছে; সেই কিনা দ্রৌপদীরে নিজের সম্পত্তি ভাইবা তুইলা দিলো জুয়ায়?....

কৃষ্ণের অস্থির লাগে। দ্রৌপদীরে সামলাইতে না পারলে সব ভাইসা যাবে...। আসার সময় কৃষ্ণ সাথে কইরা দ্রৌপদীর দুই ভাই আর পাঁচ পোলারেও নিয়া আসছে এখানে। কিন্তু দ্রৌপদী কারো লগেই কথা কইতে চায় না। স্বামীগো লগে তো তার কথা পুরাটাই বন্ধ। সে তাদের লগে বনবাসে আসছে ঠিকই কিন্তু সে থাকতাছে পুরোহিত ধৌম্যের আশ্রমে...

বহুক্ষণ চুপ থাইকা আবার মুখ খোলে দ্রৌপদী- কৃষ্ণ তুমি আমারে কইতা সখী। আমার আছিল পাঁচ পাঁচটা স্বামী। কিন্তু আইজ আমি বুঝতাছি আমার স্বামী নাই; ভাই নাই; পিতা নাই; পুত্র নাই; তুমিও নাই কৃষ্ণ। আমার যদি কেউ থাকত তবে দুঃশাসন আমার চুলের মুঠা ধইরা রাজসভায় টানতে পারে না। আমার যদি কেউ থাকত তবে কর্ণ আমারে বেশ্যা কইয়া গালি দিতে পারে না। ...আমার যদি কেউ থাকতো তবে রাজসভায় কেউ আমার পোশাক খুলতে পারে না। আমার কেউ থাকলে আমারে নগ্ন হইতে দেখে যুধিষ্ঠির মুখ ঘুরাইতে পারে না কৃষ্ণ। আমার কেউ থাকলে ভীমরে আটকাইতে পারে না অর্জুন। ...কেউ নাই আমার। কেউ নাই... আমার জন্য ধর্মও নাই সখা। রাজদরবারে উলঙ্গ হইয়া আমি ভীষ্মের কাছে আশ্রয় চাই- পিতামহ আমারে বাঁচান... গঙ্গাবেশ্যার পোলা ভীষ্ম তখন ধর্ম ভুইলা যায়... আমি চিল্লাইয়া কান্দি- পিতামহ ধর্মের দোহাই অন্তত আমারে বিবস্ত্র হওনের থাইকা বাঁচান... বেজন্মা ভীষ্ম আমারে কয়- ধর্মের ব্যাখ্যা বড়োই কঠিন... ধর্ম এতই কঠিন কৃষ্ণ... বিবস্ত্রা নারীর পোশাক ফিরাইয়া দেওয়া যাইব কি যাইব না; সেই ধর্মব্যাখ্যা আবিষ্কার করতে পারে না কুরুসভার কেউ... দ্রোণ আমারে দেইখা হাসে; পাঞ্চাল রাজের মাইয়ারে হাটে ন্যাংটা হইতে দেখলে ফকিন্নির পুত দ্রোণের হাসবারই কথা। কিন্তু সৎমায়ের শরীর চাইটা খাওয়া নির্বংশ ভীষ্মও তখন ফ্যালফ্যাল কইরা চোখ দিয়া চাটে নাতিবৌর নগ্ন শরীর... আমি একটা বেশ্যারে কৃষ্ণ... আমার নগ্ন শরীর দেখে দেবর শ্বশুর দাদাশ্বশুর আর নিজের পাঁচ পাঁচটা পোলা... ঘেন্না... কৃষ্ণ ঘেন্না... আমারে আবারও বেশ্যা প্রমাণ করার লাইগা কি সাথে কইরা আমার পাঁচটা পোলারে এইখানে নিয়া আসছ তুমি? দোহাই। তোমারে আমি নিজের বন্ধু বইলা জানি। আমার সেই নগ্ন নরকের সময় আমি কারো নাম ধইরা ডাকি নাই। শুধু তোরেই আমি ডাকছিরে কৃষ্ণ। আমার মনে হইছে তুই থাকলে আমি তোর পায়ে ধইরা বলতাম- কৃষ্ণ; দোস্ত আমার; আমারে দয়া কর তুই। তোর হাতের চক্রখান দিয়া আমারে মরণ দে ভাই...

থেমে থেমে ফুসে উঠে পাঞ্চালী। ফুসতে থাকা এই দ্রৌপদীই পাণ্ডবদের ভবিষ্যৎ। কৃষ্ণ তারে ফুসতে দেয়। কথা বলুক পাঞ্চালী। কথা বলা দরকার তার। পাঞ্চালী বলতেই থাকে- আমারে তুই একটা মরণ দে কৃষ্ণ। হতভাগি অনাথ; যার কেউ নাই অন্তত তুই তারে দয়া কর। যাবার আগে তোর চক্র দিয়া আমার মাথাটা নিয়া যা বন্ধু। ... যে শরীর নিজের পোলাগো সামনে উন্মুক্ত হয় সেই শরীর আর টানতে পারি না আমি। ... আমারে দয়া কর তুই... আমি রাজ্য চাই না; প্রতিশোধ চাই না। ঘেন্নার এই জীবন থাইকা আমি শুধু মুক্তি চাই... আমারে তুই হত্যা কর...

দ্রৌপদীর দরকার কান্না করার অবাধ সুযোগ। হস্তিনাপুর ছাড়ার পর কারো লগে একটাও কথা কয়নি সে। তবে দ্রৌপদী যে এই কয়দিন কারো লগে কথা কয় নাই এতে কৃষ্ণের শান্তি লাগে। কথা বললে সে সকলের আগে ভীমের লগেই বলত। কিন্তু যে কথাগুলান সে কৃষ্ণরে বলছে সেই কথাগুলান যদি ভীমেরে কইত তবে চার ভাইরে খুন করে হয়ত অতক্ষণে ভীম গিয়া খাড়াইত হস্তিনাপুর...

চিল্লাইতে চিল্লাইতে গলা ভাইঙ্গা দ্রৌপদী টায়ার্ড হইয়া পড়ে। জীবনে কিছুই যারে এক চুল নড়াইতে পারে না সেই কৃষ্ণেরও দম বন্ধ হইয়া আসে... এই সেই পাঞ্চালী... যার স্বয়ংবরায় নিজেও একজন প্রার্থী আছিল কৃষ্ণ। ...সেই পাঞ্চালী... যার শিক্ষা সৌন্দর্য বংশ গৌরব আর আত্মসম্মান দেইখা জরাসন্ধের মতো রাজাও তারে করতে চাইছিল মহারানি। ...সেই পাঞ্চালী... নিজের উপর ঘৃণায় ধিক্কারে আইজ কাতর হইয়া কৃষ্ণের কাছে মৃত্যু প্রার্থনা করে- জীবনে বহুত মানুষ মারছ তুমি বন্ধু যুদ্ধ হিংসা কিংবা রাগের কারণে; আইজ তুমি দয়া কইরা অন্তত একজন মানুষ মারো... আমি তোমারে মিনতি করি কৃষ্ণ; আমারে হত্যা করো তুমি...

কৃষ্ণ তার চক্রখান নাড়াচাড়া করে- সখী। যদি আসমানও ভাইঙ্গা পড়ে; যদি হিমালয়ও সাগরে ডোবে; তবু যারা তোমার অপমানের লাইগা দায়ী; হিসাব তাদেরকে ফিরত পাইতেই হবে। কসম। এই কসম তোমার সখা কৃষ্ণের...
২০১২. ১১.১৯ সোমবার

মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ২। কুন্তী [পর্ব ৩]
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ২। কুন্তী [পর্ব ২]
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ২। কুন্তী [পর্ব ১]
মহাভারতে তিন রাজনৈতিক নারী। ১। সত্যবতী


মন্তব্য

দিগন্ত এর ছবি

চলুক, দারুণ হচ্ছে হাসি


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ধন্যবাদ। বেশ কিছুদিন বন্ধের পর আবার শুরু করলাম

খেকশিয়াল এর ছবি

সেরাম ভাবে শুরু হইছে! চলুক দা'ঠাউর দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আশা করি চলবে

বেচারাথেরিয়াম এর ছবি

দেরী কইরা ফালাইলেন এই ট্রিপের জিনিষ দিতে, আগের কাহিনী সব ভুইলা গ্যাছলাম। চলুক চলুক
এই রঙ্গরস নিয়া একটা হলিউডি সিরিয়াল হইলে ব্যাফুক হইত। চোখ টিপি

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সমস্যা নাই; লিংকে গুতা দিলে আগের কাহিনী্ও মনে পড়ব

০২

হলিউডি সিরিয়াল করার মুরদ আমার নাই। ওইটা অন্য কেউ ভাবুক

বেচারাথেরিয়াম এর ছবি

এইটা শুরু করার আগে [পড়ে নিছি

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

লীলেন্দা, আমার দু’জন বন্ধু আপনার এই লেখার জন্য হা পিত্যেশ করে থাকে । আর আপনি তাদেরকে এতদিন অপেক্ষা করালেন ?

মন খারাপ

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ঝামেলাটা দ্রৌপদীকে নিয়ে। লিখতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম দ্রৌপদী রাজনীতিবিদ নয়; সবচে বেশি রাজনীতি জানা এক রাজনৈতিক পুতুল... ক্ষতির হিসাবে মহাভারতে সবচে বেশি অপমানিত আর ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ...

কুরুপাণ্ডবকে জড়ো করে দ্রোণ তার বাপের অর্ধেক রাজ্য দখল করেছে
কুরুপাণ্ডবের পাশাখেলায় তার স্বামীদের রাজ্য্ও শেষ পর্যন্ত গেছে দ্রোণের খাতায়
রাজকন্যা আর সম্রাজ্ঞী হয়ে বনবাসের কষ্ট আর অপমান্ও বহন করতে হয়েছে তাকে
যুদ্ধে তার বাপ ভাই গেছে
সব শেষে গেছে তার পাঁচটা সন্তান... কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভীম্ও তার সন্তান হত্যার প্রতিশোধ নিলো না

০২

দ্রৌপদী এমনই এক চরিত্র; যে সারাজীনব রাজনীতির মধ্যেই ছিল কিন্তু কোনোদিন্ও রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি; বরং মেনে নিতে হয়েছে রাজনীতির সব ধরনের ক্ষতি...

০৩

বাকিটা এবার দ্রুত শেষ হয়ে যাবে আশা করি

তুলিরেখা এর ছবি

একেবারে প্রথম থেকেই তো দ্রৌপদী কুরু-পাঞ্চাল এর প্যাঁচালো রাজনৈতিক দাবার চালের ঘুটি মাত্র।
১। ‌লক্ষ্যভেদের টোপ ফেইলা অর্জুনকে বাইর কইরা তার লগে বাপে দ্রৌপদীরে বিয়া যে দিতে চাইল সেও তো কুরুবংশের সর্বনাশের জন্য।
২। এদিকে কুন্তী চাললো আরেক চাল, একলগে পাঁচ পোলার ঘাড়েই চড়াইয়া দিল দ্রৌপদীরে। দড়ি টানাটানি খেলা। মাঝখানে এইসবের বলি হইলো এক তরুণী রাজকুমারী যার নিজের পছন্দ অপছন্দ ভালোলাগা মন্দলাগার কোনো দাম নাই সংসারে।
৩। স্বামীরাও তো দ্রৌপদীকে রক্ষা করে নাই, কুরুসভায় যারা অসভ্যতা করতাছিল তারা যে সব জ্ঞাতিভাই আর তেনাদের বন্ধুজন, হইত বাইরের নিষাদ কি হড় কি রক্ষ যক্ষ, তখন এই পাঁচভাই তার মুন্ডু কাটতে একটা সেকেন্ডও দেরি করতো? স্বার্থপর কেরিয়ারিস্ট সবকয়টা (এক ভীম ব্যতিক্রম, তার কিছু মানবিক সহানুভূতি ছিল ), কেবল নিজেদের ভবিষ্যতের কথা আখের গোছানোর কথা ভাইবা গেছে, শীতল ক্যালকুলেশান করে গেছে।
৪। তারপরে বিরাট রাজার দেশে, সেখানে অজ্ঞাতবাসের সময় তো দ্রৌপদী বাঁচলো কি মরলো কোনো খবর রাখতো না এক ভীম ছাড়া বাকী চারজন। সেখানেও তো ভীমই তাকে চরম অপমান থেকে বাঁচাইলা।

এইরকম কত জায়গা যে চোখে খোঁচা মারে মহাভারত পড়ার সময়-

লেখা চমৎকার । হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

নিদারুন কাহিনীর দারুন উপস্থাপনা, রুদ্ধশ্বাসে মুগ্ধ হয়ে পড়লাম।
চলুক

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ধন্যবাদ

তাপস শর্মা এর ছবি

পড়ছি না। নিজেরে অনেক সংযত কৈরা শপথ নিছি এই পর্বও আমি পড়ুম না। এর আগের পর্বও পড়ি নাই ( মিছা কতা আমি কৈতারি না )

রেগে টং

কারণ একটাই। আগে কথাকলি চাই, ততদিন মাহবুব লীলেন বর্জন করুম

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আইচ্ছা। কিন্তু কথা হইল এইটা শেষ না কইরা আর কিছুতে নজর দেওয়া যাইব না। কারণ কয়েকদিন গ্যাপ দিলে আবার নোট ঘাটাঘাটি করার লাইগা কয়েক সপ্তা লাগে...

০২

কথাকলি হইব

mamunkhalil এর ছবি

রুদ্ধশ্বাসে মুগ্ধ হয়ে পড়লাম।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ধন্যবাদ

এরিক এর ছবি

অনেক দিন পর দেখলাম লেখা । ভালো লেগেছে ।

বইমেলায় আপনাকে দেখেও ভালো লেগেছে দেঁতো হাসি

জুনায়েদ হোসেন এর ছবি

সুযোগ যখন পাইছি তাইলে আগে ২য় কিস্তিটাও
পইড়া লই। তারপর চিন্তা করুম মিস্টি না সিগারেট
কোনটা খাওয়ামু..!

চরম উদাস এর ছবি

আইজকা বুঝলাম আমি আসলে একটা কাঠ বলদ। এরকম একটা সিরিজ এত দেরিতে পড়া শুরু করলাম। দারুণ লাগলো হাততালি

bashabi এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। মহাভারত এর অনেক অলৌকিক ঘটনাবলির বিশ্বাস যোগ্য ব্যক্ষা পাচ্ছি আপনার লেখা গুলোর মাঝে।

কর্ণ যে আসলে দুর্বাসা মুনির পুত্র সেটা বুজতে পেরেছিলাম। গান্ধারীর শত পুত্র নিয়ে ধন্দ ছিল. আপনার দেয়া ব্যাক্ষা বিশ্বাস যোগ্য মনে হলো. আমার অবস্স্য ধারণা ছিল এরা সবাই গান্ধারীর পুত্র না হলেও ধৃতরাষ্ট্রের পুরো হতে পারে। (রাজা দের তো হারেম এ দাসী বাদীর অভাব ছিল না.)

কিন্তু দ্রৌপদির বস্ত্রহরণ এর সময় অলৌকিক ঘটনাটার কথা প্রচলিত সেটার explanation কি? দু:শাসন কেন দ্রৌপদির শাড়ি টেনে শেষ করতে পারল না. যদি দ্রৌপদির বস্ত্রহরণ করতে দু:শাসন সফল হয় তাহলে এরকম একটা গল্প কিভাবে প্রচলিত হলো কৃষ্ণর দয়ায় দ্রৌপদির শাড়ি শুধু লম্বা এ হচ্ছিল আর দু:শাসন শেষ পর্যন্ত tired হয়ে হল ছেড়ে দিয়েছিল। আপনার অনুমান জানালে ভালো লাগবে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।