ভারতীয় পুরাণ ঘাঁইটা ইতিহাস খুঁজতে যাওয়ার সব থিকা বড়ো ঝামেলাটা হইল এইসব পুরাণের রচয়িতা ঋষি কিংবা কবিদের অন্য কোন বিষয়ে কোন জ্ঞান আছিল আর কোন বিষয়ে আছিল না সেইটা নিশ্চিত না হইলেও একটা বিষয় পরিষ্কার যে তাগো মধ্যে বিন্দুমাত্র সময়-সংখ্যা কিংবা ইতিহাস জ্ঞানের কোনো অস্তিত্ব আছিল না; অথবা অদরকারি মনে কইরা তারা এই তিনটা জিনিসের লগে বাচ্চাপোলাপানের মতো খেলানেলা কইরা গেছেন। সময় মাপতে গিয়া তারা ষাইট বচ্ছর আর
জনপ্রিয় ধারণায় রাম-রামায়ণ-বাল্মিকীরে কৃষ্ণ-মহাভারত-দ্বৈপায়ন থাইকা প্রাচীন ভাবা হইলেও ঘটনা কিন্তু ঠিক উল্টা। এর পক্ষে পয়লা জোরালো যুক্তিটা হইল দক্ষিণ দিকে আর্যগো ভারত-বিস্তারের কালক্রমের লগে দখলি-মানচিত্রের হিসাব। মহাভারতের ঘটনাস্থল থাইকা রামায়ণ ঘটনাস্থল আরো বহুত পূর্ব দিকে। আর্যগো দক্ষিণ দিকে পা বাড়াইবার ঐতিহাসিক সময়কাল মাথায় রাইখা রমিলা থাপারও মন্তব্য করেন যে রামায়ণ তৈরি হইছে ৮০০খিপূর অন্তত পঞ্চা
আইচ্ছা কর্ণ কি আদৌ কুন্তীর পোলা?
সন্দেহ হয় আমার। কওয়া হইছে যে কুন্তী তারে ভাসাইয়া দিবার পর সন্তানহীন সূত অধিরথ তারে কুড়াইয়া আইনা পোষে। কিন্তু অধিরথের তো আরো পোলাপান আছে। কুরুযুদ্ধেই তারা যুদ্ধ করে। বলা হয় তারে স্তন্যদান করে সন্তানহীন রাধা। কিন্তু সন্তানহীন বন্ধ্যা নারী কেমনে স্তন্য পান করায়?
ভূগোল নিয়া বহুত ঝামেলা পাকাইছে মহাভারত। মগধ সময়কালের মানচিত্র আর রাজনীতি যে মহাভারতে ঢুইকা গেছে সেই প্যাঁচালও আগে পাইড়া আসছি। এর বাইরে মহাভারতের মূল জায়গাগুলারে বর্তমান কালে চিহ্নিত করা গেছে ঠিকঠাকমতোই। কুরুক্ষেত্র আর হস্তিনাপুর আছিল হরিয়ানায়। দ্বারকা হইল বর্তমানের গুজরাট। মৎস্যদেশ হইল রাজস্থানের জয়পুর; তক্ষক নাগের রাজধানী তক্ষশিলা হইল রাওয়ালপিন্ডি; গান্ধার হইল কান্দাহার। মানে মূল ঘটনাটা ওই অঞ্চলে
অবশেষে সব ছাইড়া দ্রৌপদী আর পঞ্চপাণ্ডব রওয়ানা দিছে বনবাসে। কুরুযুদ্ধের ছত্রিশ বছর পরে...
কুন্তীরা বনে যাবার বছর খানেক পর পাণ্ডবেরা বনে গিয়া দেইখা আসছিল তাদের। ধৃতরাষ্ট্র গান্ধারী কুন্তী ভীষণ দুর্বল আর বিদুর বদ্ধ উন্মাদ; ন্যাংটা হইয়া বনে বনে ঘোরে...
কাউরে কিছু না জানায়ে কুন্তী সিদ্ধান্ত নেয় ধৃতরাষ্ট্র আর গান্ধারীর লগে বনবাসে যাবার। ধৃতরাষ্ট্র আর গান্ধারীর বানপ্রস্থে যাওয়ার কথা সকলেই জানত। যুদ্ধের পনেরো বছর পরে ভীমের জ্বালায় ধৃতরাষ্ট্র বাধ্য হইছেন বানপ্রস্থ বাইছা নিতে...
অভিষেকের আসরে হায় হায় করে যুধিষ্ঠির- মানুষ হারতে হারতে জিতে আর আমি হতভাগা জিততে জিততে হারি। কী পাইলাম আমি যুদ্ধ কইরা?
যুদ্ধ শেষ হইয়া গেছে। বাকিসব খুচরা আবেগ আর হিসাব নিকাশও শেষ। ভাই আর পোলাদের দুঃখ সামলাইয়া উইঠা দ্রৌপদী এক দফা দাবি জানাইছিল পাণ্ডবগো কাছে- অশ্বত্থামারে হত্যা কইরা তার মাথার মুকুটের মণি আইনা দিতে হবে তারে। অন্যথায় সে আত্মঘাতী হইয়া পোলা আর ভাইদের সাথে যাবে...
সর্বশেষ সংবাদ অনুযায়ী গত সন্ধ্যায় পতিত হইছে দুর্যোধন। তার মানে যুদ্ধ শেষ। নকুল নিশ্চয়ই এই ভোরবেলা উপপ্লব্য নগরে আইসা উপস্থিত হইছে দ্রৌপদীরে সম্রাজ্ঞীর সংবর্ধনায় নিয়া যেতে...
নকুলরে উপপ্লব্য নগরে আসতে দেইখা এমনই ভাবে দ্রৌপদী। কিন্তু তার কোনো কথার উত্তর না দিয়া নিঃশব্দ নকুল যখন তারে নিয়া আইসা পাণ্ডব শিবিরে পৌছাইলে সে পয়লা ধাক্কাটা খায়। সামনে তার দুই ভাইয়ের লাশ...
দুর্যোধন পলাইছে। শল্য মরার পরপরই ভাগল দিছে দুর্যোধন...
কর্ণ মরার রাত্তিরে কৃপাচার্য আইসা দুর্যোধনরে কইছিলেন যুদ্ধ বাদ দিয়া দিতে। কিন্তু দুর্যোধনের কথা হইল- যুদ্ধ বাদ দিয়া আমার লাইগা যারা মরছে তাগো প্রতি অসম্মান দেখাইতে পারি না আমি। আমি শান্তিবাদী বুড়া হইয়া মরতে চাই না গুরু কৃপাচার্য। হয় আমি রাজা হইয়া মরব না হয় যুদ্ধ কইরা মরব সৈনিকের মতো...