কোনো মাইয়া কাউরে বিবাহের প্রস্তাব দিলে তার নাক কান কাইটা দিবার উদাহরণ কি শাস্ত্র বেদ বা সংহিতায় আছে?
এক লগে দশখান শাস্ত্রে পণ্ডিত বইলা দশমাথা নামে মর্যাদাবান রাবণের অংক মিলে না সংখ্যাশাস্ত্রের বিদ্যায়; যোগশাস্ত্রের ধ্যানে আসে না শান্তি; ন্যায়শাস্ত্রে নাই এমন আকামের উপযুক্ত শাস্তি; মীমাংসা শাস্ত্রে মিলে না এর যুক্তি…
মন শান্ত করো হে দেবদেবতাগণ…
বিরাধের বগলচিপায় মরতে মরতে সীতার বুদ্ধিতে বাঁইচা গিয়া রাম বুঝে বনে বাহাদুরি সোজা কাম না। একলা এক বনুয়া দুই ভাইর সামনে থাইকা খালি সীতারেই থাবা দিয়া উঠায় নাই; দশরথের দুই বীরপুতেরেও লটকায়া হাঁটা দিছিল দূরে নিয়া কোপাইতে…
বিপদে সীতার মাথা খোলে আর রামের হয় বন্ধ। কথাটা স্বীকার করলেও স্বীকার না যাইয়া রাম কয়- বনটা কঠিন। আমাগো মনে লয় ঋষি শরভঙ্গের আশ্রমেও যাওয়া ভালো…
বনের রাজা হইবার আশায় রাম দেখতে আছে বন; এর মাঝে তার সামনে থাইকা খপ কইরা তার বৌরে উঠায়া নিয়া বনের চকিদার কয়- দুই বেটায় বনবিলাস করতে আছে এক নারী নিয়া। যা বেটা ফুট। এই মাইয়ারে বিয়া করব আমি…
ভারতীয় পুরাণ ঘাঁইটা ইতিহাস খুঁজতে যাওয়ার সব থিকা বড়ো ঝামেলাটা হইল এইসব পুরাণের রচয়িতা ঋষি কিংবা কবিদের অন্য কোন বিষয়ে কোন জ্ঞান আছিল আর কোন বিষয়ে আছিল না সেইটা নিশ্চিত না হইলেও একটা বিষয় পরিষ্কার যে তাগো মধ্যে বিন্দুমাত্র সময়-সংখ্যা কিংবা ইতিহাস জ্ঞানের কোনো অস্তিত্ব আছিল না; অথবা অদরকারি মনে কইরা তারা এই তিনটা জিনিসের লগে বাচ্চাপোলাপানের মতো খেলানেলা কইরা গেছেন। সময় মাপতে গিয়া তারা ষাইট বচ্ছর আর
জনপ্রিয় ধারণায় রাম-রামায়ণ-বাল্মিকীরে কৃষ্ণ-মহাভারত-দ্বৈপায়ন থাইকা প্রাচীন ভাবা হইলেও ঘটনা কিন্তু ঠিক উল্টা। এর পক্ষে পয়লা জোরালো যুক্তিটা হইল দক্ষিণ দিকে আর্যগো ভারত-বিস্তারের কালক্রমের লগে দখলি-মানচিত্রের হিসাব। মহাভারতের ঘটনাস্থল থাইকা রামায়ণ ঘটনাস্থল আরো বহুত পূর্ব দিকে। আর্যগো দক্ষিণ দিকে পা বাড়াইবার ঐতিহাসিক সময়কাল মাথায় রাইখা রমিলা থাপারও মন্তব্য করেন যে রামায়ণ তৈরি হইছে ৮০০খিপূর অন্তত পঞ্চা
দশরথ অস্থির। ভরত অযোধ্যার বাইরে থাকতেই রামের অভিষেক করে ফেলতে হবে। রামরে ডাইকা সেই সংবাদও তিনি জানাইয়া দিছেন। সচিবগো আয়োজন বুঝাইয়া দিয়া এইটাও কইয়া দিছেন যেন কোনোভাবেই ভরতের নানাবাড়ি আর পোলাপানগো শ্বশুরবাড়ি এই সংবাদ না যায়...
রামবিহীন অযোধ্যায় থাকনে বুকের পাটা নাই লক্ষ্মণের; পিটাইয়া তক্তা বানাইয়া ফালাইব ভরত। তাই সেও বিশ্বামিত্রের লগে রামের পিছু লয়। আর অবধারিতভাবেই রাজপুত্রগো পিছে যায় তাগো দেহরক্ষক আর রাজকীয় সেনার সশস্ত্র একটা দল...
যথেষ্ট পরিমাণ পোলা-শালা-ভাই-ভাতিজা-শ্বশুর-সম্বন্ধি না থাকলে রাজাগো পক্ষে বড়ো রাজা হওয়া তো দূরের কথা নিজের রাজ্যে নেংটি সামলাইয়া টিকা থাকাই কঠিন। রাজা দশরথ এক বাপের এক পোলা। মা ইন্দুমতি যেমন না দিছেন আর কোনো সন্তানের জন্ম তেমনি বাপ অজ না করছেন আর কোনো বিবাহ। রাজত্বের লাইগা দরকারি আত্মীয়-স্বজনের অভাব পুরনের লাইগা তাই অজ-ইন্দুমতীর পোলা দশরথ সাড়ে তিনশোখান বিবাহ কইরা বহুত শালা-সম্বন্ধি-শ্বশুর সংগ্রহ কর
আমাদের এতদঞ্চলের অর্থাৎ ভারত উপমহাদেশের সংস্কৃতিতে অতিরঞ্জন একটি প্রচলিত প্রথা বটে। এই যেমন কাউকে আশীর্বাদ করতে বলা, 'হাজার বছর পরমায়ু হোক' বা 'শত পুত্রের জননী হও' ইত্যাদি। যদিও জানি বাস্তবে তা সম্ভব নয়। তবুও তো বলা হয়, না কি?