সাদা-কালো

মামুন হক এর ছবি
লিখেছেন মামুন হক (তারিখ: বুধ, ১৮/১১/২০০৯ - ১১:০৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নতুন বাসায় উঠেছি মাস কয়েক হলো। পড়শীদের সাথে এখনও তেমনভাবে আলাপ-পরিচয় হয়ে ওঠেনি। তবে প্রায়ই পাশের অ্যাপার্টমেন্টের জানালায় ছোট একটা বাচ্চাকে দেখি। বছর চার-পাঁচ হবে হয়তো বয়স। মিস্টি একটা ছেলে। আমাকে দেখলেই বলে উঠতো শুশু নি হাও (ছোট চাচ্চু হ্যালো )। আমিও নি হাও , কেমন আছো, কী খেয়েছ ইত্যাদি দুয়েকটা কথা বলে বিদায় নিতাম। সপ্তাহদুয়েক আগে ছেলেটাকে আবার দেখলাম, তড়িঘড়িতে ওর নি হাওয়ের জবাব দেয়া হয়নি, কিন্তু মনে হলো এবার আমাকে আর ছোট চাচ্চু বলে ডাকেনি। ম্যান্ডারিনে বয়স অনুযায়ী বড়ো-ছোট ভাই-বোন, চাচা-মামা সবার জন্য আলাদা আলাদা সম্বোধন আছে। ভাবলাম বুড়িয়ে যাচ্ছি তাই হয়তো আর শুশু (ছোট চাচ্চু) না বলে ওলিসাং ( কাকা বাবু) বলে ডেকেছে। পরে আরেকদিন খেয়াল করে শুনি বাচ্চাটা আমাকে আর চাচ্চু বলে ডাকছেইনা, আমাকে বলছে হেই লাউশি নি হাও , মানে কালো শিক্ষক কেমন আছেন।

তাইওয়ানের বেশিরভাগ বিদেশীই শিক্ষকতা করেন। সে কারণে অনেকে বিদেশী দেখলেই ভেবে নেয় যে ইনিও শিক্ষক। কিন্তু আমাকে কালো শিক্ষক ডাকার মর্তবাটা বুঝতে একটু কষ্ট হলো। পরদিন সকালে যখন দেখলাম আমার স্ত্রীকে বেরুতে দেখে বাচ্চাটি তার মা কে বলছে , মা দেখো দেখো সাদা শিক্ষক , তখন কিছুটা বুঝতে পারলাম। সেদিনই বাচ্চাটির মায়ের সাথে দেখা হলো লিফটে উঠতে গিয়ে, কৌতুহল চেপে রাখতে না পেরে জানতে চাইলাম তার বাবুটা আমাদের কালো আর সাদা শিক্ষক বলে ডাকছে কী কারণে। মহিলা মুচকি হেসে জানালেন আমাদের নাম জানা না থাকায় তিনি নিজেই বাচ্চাকে শিখিয়েছেন ঐটা হইল কালা মাস্টার আর ঐটা ধলা, আমাদের গায়ের রঙ অনুযায়ী। আর সবার মতো তিনিও ধরে নিয়েছেন যে আমিও শিক্ষক। আমি সাদা-কালোর আলোচনায় না গিয়ে মহিলাকে আমাদের নাম বললাম (আর সবার মতো আমাদেরও চাইনিজ নাম আছে), এবং বাচ্চাটাকে ডাকিয়ে তাকেও শিখিয়ে দিলাম। এভাবে গাত্রবর্ণের উপর ভিত্তি করে সম্বোধন শিখানোর মাধ্যমে কচি মনে কী ধরণের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব যে পড়তে যাচ্ছে সেটা ভেবে আমি বেশ অস্বস্তি বোধ করলেও ভদ্রমহিলাকে মোটেও সেটা নিয়ে চিন্তিত মনে হলোনা। এখানে এটাই দস্তুর। যদিও মনে পাপ নিয়ে কেউ কাউকে সাদা বা কালো বলে ডাকে বলে মনে হয়নি কখনোই, তবুও ব্যাপারটা যথেষ্ট আপত্তিকর।

মনে পড়ে যে হেয়ার ড্রেসারের কাছে আমরা নিয়মিত যেতাম, একদিন খেয়াল করে শুনি তারা নিজেদের মধ্যে আমাদের নিয়ে কথা বলছে। আমাদের তারা ডাকে সাদা-কালো দম্পতি বলে । এমনিতে আমাদের খুবই পছন্দ করে, কালো বলে আমার যত্ন-আত্তিতেও কোনদিন খামতি করেছে বলে মনে পড়েনা। তবুও এভাবে সম্বোধিত হতে মোটেও ভালো লাগেনা। তাদের সে কথা বলতেই জবাব এলো এ তো নিছক রসিকতা করে বলা, তারা আরও হাসি-তামাশা করে আমাদের ছানা-পোনা হলে তাদের গায়ের রঙ কী হবে সেসব নিয়ে। আসলেই রঙচঙে এই দুনিয়া।

আমরা আগে নিয়মিত ব্যাডমিন্টন খেলতাম। সেখানে বয়স্কা একজন পরিছন্নতা-কর্মী ছিলেন। ভালো মানুষ, ঘুরে ঘুরে সব ঝকঝকে তকতকে করে রাখতেন। সেই ভদ্রমহিলা অনেকদিন আমাদের আশপাশ দিয়ে ঘুরে গেছেন, কী যেন বলতে গিয়েও বলেন নি। তারপর একদিন আর চেপে রাখতে না পেরে আমাদের এক স্থানীয় বন্ধুকে বলেই বসলেন, " আচ্ছা এত সুন্দর লাল চুলের সাদা মেয়েটা কী বুঝে ঐ কালো লোকটাকে বিয়ে করলো?"
এই প্রশ্নের জবাব কীভাবে দেই?

গত সপ্তাহান্তে পাশে শহরে একটা ফুটবল টুর্নামেন্ট ছিল। সারা তাইওয়ানের প্রবাসীদের ১৬টি দল নিয়ে দুইদিনের জমজমাট আসর। আমি নিজে আর খেলিনা, ম্যানেজার হিসেবে দল নিয়ে গেলাম। সেমিফাইনালে আমাদের সামনে পড়লো প্রবাসী ঘানাইয়ানদের দল ব্ল্যাক স্টারস। ঘানার দলটা খুব ভালো, কিন্তু খেলে কঠিন শারীরিক ফুটবল। কাউকে ইচ্ছাকৃত আঘাত করার উদ্দেশ্যে না, এটাই ওদের খেলার ধরন। প্রথম বিশ মিনিটেই ওদের নির্মম ট্যাকলে আমার দুইজন খেলোয়াড় মাঠ ছাড়তে বাধ্য হলো। এর মধ্যে রেফারী ওদের পক্ষে একটা চরম বিতর্কিত পেনাল্টি দিল, অথচ ফাউল হয়েছিল বক্সের বাইরে। সব মিলিয়ে মেজাজ পুরাই সপ্তমে। দ্বিতীয়ার্ধে ফর্মেশন পালটে অল আউট অ্যাটাকে গিয়ে ওদের পুরা চেপে ধরলাম। গোল শোধ হতে হতেও হয়না। টেনশনে বেঞ্চ ছেড়ে সাইড লাইনের পাশে দাড়িয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করি আর সিগারেট ফুঁকি।

খেলা শেষের মিনিটে দশেক আগে আমাদের লেফট উইঙ্গারকে বিশ্রী ফাউল করে ফেলে দিল। শুধু তাই না, পড়ে যাবার পরেও বেচারার নিস্তার নাই, মারাত্মক ভাবে ওর পা মাড়িয়ে দিল প্রতিপক্ষের বিশালদেহী এক ডিফেন্ডার। আমি আর মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলাম না। সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে অকথ্য ভাষায় ব্যাটাকে গালাগালি করতে লাগলাম, আসলেই অকথ্য ভাষায়। সব মনে নাই, তবে প্রচুর এফ ওয়ার্ড জাতীয় শব্দ ছিল তাতে, আর বলেছিলাম বাপের ব্যাটা হলে খেলা শেষে যেন আমার সাথে দেখা করে যায়। আমার গালাগালির তোড়ে ঘানাদার চোয়াল ঝুলে পড়লো। রেফারী এসে আমাকে হলুদ কার্ড দেখালো,ঐ ব্যাটাকেও। কিন্তু আমার হিসাবে ওটা লাল কার্ডের অপরাধ ছিল। রেফারী বললো ফাউলের জন্য শাস্তি দিয়েছে, পা মাড়ানোটা অনিচ্ছাকৃত। হলুদ কার্ড বা আমার গালির বন্যা কোনটার কারণে জানিনা, ঐ বেচারা এর পরে কেমন যেন ঝিমাতে ঝিমাতে মাঠ ছেড়ে বেঞ্চে গিয়ে বসলো। খেলার মধ্যেই ওদের ক্যাপ্টেন এসে আমাকে বলে--তোমার এভাবে গালি দেয়া উচিৎ হয়নি, ছেলেটি খুবই সেন্সেটিভ।

যাই হোক ঐ বিতর্কিত গোলেই আমরা হারলাম। সবার মন খারাপ। দল নিয়ে নিজেদের বসার জায়গায় যাচ্ছি। হঠাৎ কাঁধে টোকা। ঘুরে দেখি সেই বাক-বিতন্ডা, বিশ্রী ফাউল- পা মাড়ানোর নায়ক। ভেবেছিলাম যুদ্দংদেহী, রাগে নাকের পাটা ফোলা চেহারা দেখব। তার বদলে চোখে পড়লো বিষন্ন , অবসন্ন একটা মুখ। আমার মেজাজ ততক্ষনে কিছুটা ঠান্ডা হয়েছে। সে কিছু বলার আগেই সরি বলে নিলাম। তাতে বেচারার চেহারা আরও কাঁদো কাঁদো হয়ে গেলো। ধীরে ধীরে আমাকে বলে--" দ্যাখো আমি দেশে থাকতে ছোটবেলায় এক সাদা লোকের বাসায় কাজ করতাম। সে উঠতে বসতে আমাকে ফাক ইউ, কুত্তার বাচ্চা, বেজন্মা বলে গালি দিত। আমি তাতে অভ্যস্ত হয়ে গেছিলাম, সাদা লোকেরা আমাদের সব সময়েই গালি দেয়। তাই বলে তুমি??? নিজে কালারড লোক হয়ে ঐ কথাগুলো তুমি আমাকে কীভাবে বললে? আমি এখানে ফুটবল খেলতে এসেছি, কড়া ট্যাকল খেলারই অংশ, সে কারণে আমাকে সাদা লোকদের মতো গালি দেয়া কী তোমার ঠিক হয়েছে?"

আমি আকাশ থেকে পড়লাম। সাদা-কালোর সমীকরণ আমার মাথায়ই ছিলনা। তবুও বেচারার কথা শুনে আমার লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছা হলো। অনেকভাবে ক্ষমা-টমা চেয়ে বেচারার মন গলালাম, কিন্তু এটা বোঝাতে পারলাম না যে এখানে সাদা-কালোর কোন ব্যাপার নেই। ওর ধারণা প্রতিটা সাদা মানুষই কালো মানুষদের ঘৃণা করে। হয়তো ছোটবেলায় ওকে এটাই শেখানো হয়েছে। পুরস্কার বিতরনীর শেষে ওদের পুরো দলের সাথেই দেখা করে হাত ঝাঁকাঝাঁকি, ওয়েল ডান বয়েজ জাতীয় কথাবার্তা বলে আসলাম। ট্রফি হাতে সেই ছেলেটা ঝকঝকে সাদা দাঁতের যেই চমৎকার হাসিটা উপহার দিল তা সহজে ভুলবোনা।

কেবল সাফল্যেরই কোন রঙ নেই।


মন্তব্য

নিরা  এর ছবি

আমার লিখাটি আমার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো মনে করিয়ে দিল। আমি কানাডায় আসবার সাত বছরের মাঝে ৪ বার বর্ণবাদীত্বের স্বীকার হয়েছি। কখনো তা স্কুলে, কখনোবা কর্মক্ষেত্রে। আপনিতো তবুও ভাগ্যবান ওরা আপনাকে পছন্দ করত বা করে। আমার ক্ষেত্রে সামনে হাসি দিয়ে পিছনে গিয়ে ছুরি মারত।
লিখাটি ভাল লেগেছে।

মামুন হক এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার ঘটনাগুলো নিয়েও লিখুন। আমার এই ঘটনাগুলো তেমন সিরিয়াস কিছু না, অতীতে এমনকি শারীরিক ভাবেও আক্রান্ত হয়েছি। তবে তাইওয়ানে না, এখানে হিংস্র বর্ণবাদ নেই। অজ্ঞতার অন্ধকার আছে । তবুও আমার মনে হয় অবস্থা ভালোর দিকেই যাচ্ছে কিছুটা।

নৈষাদ এর ছবি

লেখাটা ভাল লাগল। এটা জেনেও ভাল লাগল যে তাইওয়ানে বিদেশীদের একটা সম্মানজনক পেশার লোকজনের সাথে তুলনা করা হয়।

সাফল্যের আসলেই কোন রঙ নেই। - স্বীকার করি, কিন্তু খেলার মাঠে আছ। বৃটেনে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত এক এক আফ্রো-আমেরিকান ভদ্রলোক বাংলাদেশে আমাকে বলেছিল, 'শুধু মাত্র সাদা হওয়ার জন্য আমার যোগ্যতা প্রথমে সাদাদের কাছে প্রমান করতে হয়, তারপর তোমাদের কাছে। অথচ একজন সাদার শিক্ষা এবং অভিজ্ঞতা কম হওয়া সত্ত্বেয় তার যোগ্যতার ব্যাপারে তোমাদের কোন প্রশ্ন নেই'। পরবর্তী তিন মাস হাড়ে হাড়ে কথাটার সত্যতা বুঝেছি...।

মামুন হক এর ছবি

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। তাইওয়ান আর সব বিদেশীদের প্রতি দারুন শ্রদ্ধাশীল, তবে ইন্দোনেশিয়ান, ফিলিপিনো, থাই শ্রমিকদের প্রতি বেশ কঠিন আচরন করে থাকে। বাংলাদেশের লোকজন এখানে কামলা দিতে না আসার কারণে আমার প্রতি ঐ জাতীয় ব্যবহার কেউ করেনা।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

মামুন ভাই অনেকদিন পরে লেখা দিলেন, তবে না দেওয়ার কমতি পুষিয়ে দিলেন একেবারে। যেমন সাবলীল আর তেমনি লেখার মোরাল। সাদা কালো নিয়ে এই গিরিঙ্গি যে কবে শেষ হবে। বর্ণবাদের শেষ বলে আদৌ কি কিছু আছে?

আর আপনে মিয়া ঐ ক্লিনার মহিলাকে দিলেন না এক রাঊন্ড রাম ধোলাই! আমাকে কেউ এমন কথা বললে আমি এমন ঝাড়ি দিতাম যে জীবনে সাদা কালো রঙ ভুলে যেত!!

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

মামুন হক এর ছবি

আজকাল ঝাড়ি দিয়া আগের মতো আরাম পাইনা। ঐ মহিলা তো না বুঝে একটা প্রশ্ন করছে, আমি রাগলে কোন লাভ হতোনা। তোমার লেখা কই?

সাইফ তাহসিন এর ছবি

গত এক সপ্তাহ যাবৎ ঘুমানোর সময় পাচ্ছি না, বাসায় ও ফিরতে পারছি না দৈনিক, তবে, আজকে ফ্রি হয়েছি, "সুখে থাকতে " এর পরবর্তী পর্ব শুরু করে দিয়েছি, আজকে রাতে পেয়ে যাবেন আশাকরি।

রাগলে লাভ অবশ্যই হত, ঝাড়ি খেয়ে মহিলা ঠিকই বুঝত, ভবিষ্যতেও না বুঝে এমন অপমানজনক কথা বলার আগে ১০ বার চিন্তা করত।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

তুলিরেখা এর ছবি

অমা, সাইফ, আপনে আমোগো আপন সোনার দ্যাশে শোনেন নাই "দেখছি কত দেখবো আর/ চিকার গলায় চন্দ্রহার"?
শোনেন নাই "আরে, কাকের মুখে দেহি কমলা!"
শোনেন নাই, "ছেলে আমার সোনার চাঁদ, ঐ কালিনাগিনী কেমনে ভুলাইয়া নিয়া গেল গা গো, কপাল আমার।"
এমন সব বাঁধিয়ে রাখার মতন বাক্যমালা?

বর্ণবাদ আমাদের নিজেদের মানুষের মধ্যে এত দেখেছি, যে বাইরের লোকেদের গুলো আর গায়ে লাগে না, গন্ডারের অবস্থা হয়ে গেছে আরকি!

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

বন্যরানা [অতিথি] এর ছবি

নি হাও মামুন ভাই।
অনেক দিন পর আপনার লেখা পড়লাম।

মামুন হক এর ছবি

নি হাও হাসি অনেকদিন পর কই, আমিতো প্রায়ই লিখি। আপনাকে ধন্যবাদ।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

পৃথিবীটা এখন রঙিন... সাদাকালো যুগ কবে পার হয়া আসছে, কিন্তু তা শুধুই ছবিতে... সিনেমায়
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মামুন হক এর ছবি

হ, বাস্তব জীবন হয় সাদা-কালো আর নয়তো পুরাই ধুসর।

দুর্দান্ত এর ছবি

হুম। গায়ের রংটাই বড় যোগ্যতা। আরসব অলঙ্করন মাত্র।
---
আর সবার মতো আমাদেরও চাইনিজ নাম আছে।

কি সেই নাম, ঝান্তে মঞ্ছায়।

মামুন হক এর ছবি

কমুনে একদিন। মজার সব নাম।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

লেখার ভেতরের মেসেজটা গভীরতা অনেক বেশি!
.............................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

মামুন হক এর ছবি

মন দিয়ে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ পান্থ!

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

কেবল সাফল্যেরই কোন রঙ নেই।

দুর্দান্ত!!

---------------------
আমার ফ্লিকার

মামুন হক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

দ্রোহী এর ছবি

আমি দেখতে খুব সোন্দর! এইজন্যে আমারে কেউ গাইল দেয় না।

মামুন হক এর ছবি

কইসে কেডা? আমিতো সকাল বিকাল আপ্নেরে গালি দেই দেঁতো হাসি

ওডিন এর ছবি

এই চৈনিক নামকরনের বিষয়ে একখান গবেষনাধর্মী প্রবন্ধ চাই। আমার এক বন্ধু তিন দিনের জন্য হংকং গিয়েই কি এক নাম নিয়ে ফেরত আসছিলো- হাজার চাপাচাপিতেও নামখানা ফাঁস করে নাই। আজব!

---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

মামুন হক এর ছবি

গুবেছনার এলেম নাই, যদ্দুর জানি তা হৈল সব ধরণের নামকেই চৈনিক ভাষায় রূপান্তরিত করা হয় এবং এর কোন সেট ক্রাইটেরিয়া বলে তেমন কিছু নাই। থাকলেও সেটা আমাদের মাথায় ঢুকবে বলে মনে হয়না। যেমন আম্রিকাকে বলে মেইকুয়ো, ইংল্যান্ড হয়ে যায় ইংগুয়ো, জার্মানী দাকুয়ো...কিছুটা মিল পাওয়া যায়, কিন্তু যখন বাংলাদেশ হয়ে যায় মুংচিয়ালা বা জাপান হয় রিবেন তখন এর আগা মাথা বোঝা আসলেই মুশকিল।

ওহ একটা কথা না বললেই নয়, পাকিস্তানের চাইনিজ নাম পাজিস্থান দেঁতো হাসি

ব্যক্তির নামও বদলে যায় এই গ্যাড়াকলে, সে বিষয়ে বলবোনে আরেকদিন হাসি

দ্রোহী এর ছবি

ফাকিস্তানের নামটা বেজায় পছন্দ হইছে। ☺

ওডিন এর ছবি

আমারো!

তারা কই? তারা? ভাইসব কেউ আমার হয়া এই কমেন্টে একখান তারা দিয়া দেন- ধার হিসাবেই নাহয়!
---------------------------------------------
ফুল ফোটে? তাই বল! আমি ভাবি পটকা। চিন্তিত

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

অনেকদিন পরে লিখলি.. সুন্দর লেখা। ছেলেটার জন্য খুব খারাপ লাগলো। কাউকে কষ্ট দেয়ার চেয়ে কষ্টকর আর কিছু নাইরে।

মামুন হক এর ছবি

আসলেই দোস্ত, নিজের কাছেই অনেক খারাপ লাগছে। মাথা গরম হয়ে গেলে আর কিছু মাথায় থাকেনা।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ভাল লিখছেন।

মামুন হক এর ছবি

ধন্যবাদ শুভদা হাসি

ধুসর গোধূলি এর ছবি
মামুন হক এর ছবি

নি হাও!

অনিকেত এর ছবি

আমি আগেও একবার বলেছিলাম
তোমার এইটাইপের লেখাগুলো আমার সবচাইতে পছন্দ।
আমাদের চারপাশের জীবন আর তাতে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা---তোমার লেখায় বড় স্বচ্ছতায় উঠে আসে-----

আলোয় ভাসা হাওয়ায় ঠাসা সবুজ মাঠ---তোমার জন্য!

মামুন হক এর ছবি

এই ব্যাপারটা আমার কাছে একটা রহস্য অনি ভাই, নিজের জীবনের ঘটনাগুলো আমি এক বসাতে লিখি এবং তেমন কোন ভাবনা চিন্তা ছাড়াই। সেগুলাই তোমার কাছে পাশ মার্ক পেয়ে যায় হাসি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

হাসি মন খারাপ !

____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

মামুন হক এর ছবি

হাসি :)

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ঝরঝরে একটা বর্ণনা, কেবল উপস্থাপনার জোরে ভিন্ন মাত্রা পেয়ে গেলো এইটা।

______________________________________________________

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

মামুন হক এর ছবি

ধইন্যা ভাইজান হাসি

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

আম্রিকা প্রবাসী এক দোস্ত কইলো ক্যাম্পাসের এক ধলা **রের বাচ্চা নাকি ক্যামরার হোয়াইট ব্যাল্যান্স করার লাইগা গ্রে কার্ড হিসাবে আমার দোস্তের শরীলের চামরা ইউজ করছিলো। হায়রে রং-তামাশা !!!

তয় ভাই সত্যি কথা, আমার মধ্যে ভয়ংকরভাবে বর্ণবাদ আছে। আমি ঐ বিদেশী ধবলা বলদ গুলারে সহ্য করতারিনা।

------------------------------------------------------
সকলই চলিয়া যায়,
সকলের যেতে হয় বলে।

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

মামুন হক এর ছবি

বলদ আমার কাছে খারাপ লাগেনা, তয় গাধাগুলারে দেখতারিনা দেঁতো হাসি

রাহিন হায়দার এর ছবি

চলুক চলুক

...............................
অন্ধকারে অন্ধ নদী
ছুটে চলে নিরবধি

মামুন হক এর ছবি

হাসি

তানবীরা এর ছবি

কিছু বলার নাই মামুন ভাই। এগুলো নিয়েই হয়তো আমাদের এইসব দিনরাত্রি

**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

মামুন হক এর ছবি

হয়তো তাই আপা, তবে বদলানোর চেষ্টা করা দরকার। যে যদ্দুর পারি।

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলে, আমরা বাঙালিরা ভয়ংকর রকমের বর্ণবাদী ... কানাডায় দুই বছরে একবারও আমাকে কোন রকমের কোন বর্ণবাদের স্বীকার হতে হয় নাই [অথবা হতে পারে আমার গায়ের চামড়া মোটা, বুঝি নাই] ... কিন্তু বাংলাদেশে অসংখ্যবার অসংখ্য মানুষের বর্ণবাদী চেহারা দেখা হয়ে গেছে ... কপাল ভালো ছেলে হয়ে জন্মাইছিলাম, মেয়ে হইলে খবরই ছিল ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

মামুন হক এর ছবি

হ, বর্ণবাদ থিকা আমরা কেউ পুরাপুরি মুক্ত নাই।

তুলিরেখা এর ছবি

মামুন, লেখা চমৎকার! অনিকেতের সাথে সহমত, আপনার এই ধরনের লেখাগুলোর প্রসাদগুণ অসাধারণ।
বর্ণবাদ বিষয়ে আর কী বা বলি, নিজের দেশে এত ভয়ঙ্কর বর্ণবাদ দেখেছি যে তার তুলনায় বাইরেরগুলো যারে বলে গন্ডারের গায়ে কয়েকটা সরিষা ছুড়ে মারার মতন সামান্য।
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

মামুন হক এর ছবি

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ তুলিরেখা হাসি

সাফি এর ছবি

চমৎকার

মামুন হক এর ছবি

হাসি

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

ভিত্রের লালরে আসলেই কেউ পুঁছে না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

মামুন হক এর ছবি

পুঁছে, তবে তারা সংখ্যায় হয়তো কম।

প্রবাসিনী এর ছবি

লেখাটা খুব ভাল লাগলো পড়ে।

জীবনে মোটামুটি এক বারি স্থূল বর্ণ বৈষ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলাম আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকোনমিক্স ক্লাসে (বলে রাখি, আমি আমেরিকার এক গ্রামের খুব ছোট লিবেরাল আর্টস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম। Culturally, ethnically, racially একদমই diverse ছিল না।) যাই হোক, ওই introductory ক্লাসে আমি ছাড়া বাকি ৩০-৩৫ জন ছিল সবাই সাদা। ঐ ক্লাসের প্রফেসর যখনই গরীরদের কথা বলতো আমার দিয়ে উৎসুক চোখে তাকাত...so what do you think?

আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকোনমিক্স বিভাগ খুব নাক উচা আর পুরুষতান্ত্রিক ছিল। অন্য বিভাগে আমার অচিজ্ঞতা একদমই অন্য রকম।

________________________________________________

হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে

________________________________________________

হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে

মামুন হক এর ছবি

প্রবাসিনী এধরনের অভিজ্ঞতা কম বেশি অনেকেরই আছে, আমরা কেউ কেউ এগুলো নিয়ে মুখ খুলি আবার অনেকেই এটাকেই বাস্তবতা মনে করে চুপ থাকি।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

রাষ্ট্র যদিও বর্নবাদী নয়, মানুষের মননে বর্নবাদ আছে, থাকবে। মন খারাপ


কেবল সাফল্যেরই কোন রঙ নেই।

কে বলে নাই.... সাফল্যের রং হয় সোনালী নয় রূপালী। হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

মামুন হক এর ছবি

তবুও আশায় বাঁধি বুক হয়তো বদলে যাবে পৃথিবী আমরা হারিয়ে যাবার আগেই...

মুস্তাফিজ এর ছবি

মামুন হক লিখেছেন:
, পাকিস্তানের চাইনিজ নাম পাজিস্থান দেঁতো হাসি

হাসি


দারুণ ওসিলাং

].........................................
I think what I think because that's how I am. You think what you think because that's how you are.

...........................
Every Picture Tells a Story

মামুন হক এর ছবি

গাগা (বড় ভাই), শব্দটা ওলিসাং হবে ওসিলাং না হাসি

মূলত পাঠক এর ছবি

এই রকম ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখলে পড়ে সুখ পাই, যদিও বিষয়টা গভীর অসুখের।

মামুন হক এর ছবি

ধন্যবাদ মূলোদা। অভয় দিলে আরও লিখবো।

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

অসাধারণ লেখা ভাই!!

দেশে বাসে উঠে সাদা চামড়া দেখলে পাশে বসতাম না। এড়িয়ে চলতাম। এটা কে কি বলবেন? আমি এটাকে 'বর্ণবাদ' বলি না, অনেকেই কিন্তু বলেন। আমি সঙ্কোচ বলি।

জার্মানীতে আসার পরে দেখতাম একই আচরন আমাদের সাথেও হচ্ছে - এটা সরলিকরণ করছি না। কারণ অধিকাংশ লোকজন এটা করে না। কেউ কেউ করে। সবসময় আসল কারণটা বুঝে ওঠা কঠিন, কেউ হয়ত সঙ্কোচে আবার কেউ হয়ত বর্ণবাদ থেকেই করে।

দেশে থাকতো খুব শুনতাম বিদেশে নাকি আমাদের চামড়ার হেভি ডিম্যান্ড। এসে দেখলাম, কথা খুবই ভুল! ডিম্যান্ড আছে, তবে সেটা কুচকুচে কালোদের (কারণটা নিশ্চয়ই জানেন!), আমাদের বাদামী বর্ণের তেমন কদর নেই হাসি

যে যেটাকে নিজের ঘাটতি মনে করে সেটা নিয়ে পজিটিভ কথাকেও সে নেগেটিভ হিসেবে নিয়ে নিতে পারে। এজন্যই হয়ত বলা হয়, "কানাকে কানা বলিও না, খোঁড়াকে খোঁড়া বলিও না"। ওর ক্ষেত্রেও সেরকমই হয়েছিল মনে হল হাসি

মামুন হক এর ছবি

যে যেটাকে নিজের ঘাটতি মনে করে সেটা নিয়ে পজিটিভ কথাকেও সে নেগেটিভ হিসেবে নিয়ে নিতে পারে। এজন্যই হয়ত বলা হয়, "কানাকে কানা বলিও না, খোঁড়াকে খোঁড়া বলিও না"।

--একমত আরেফীন ভাইজান।

ফারুক হাসান এর ছবি

মামুন ভাই, লেখাটা এত চমৎকার লাগলো!!!

ইন্টারেস্টিং লাগলো এই জন্য যে, এশিয়ান কেউ সাদা-কালো ভেদাভেদ করছে, এটা তো হবার কথা নয়।

মামুন হক এর ছবি

ব্যাপারটা খুবই জটিল আকার ধারণ করছে তাইওয়ানে। হংকং বা সিংগাপুরের মতো মাল্টিকালচার্ড সমাজ হলে হয়তো এমনটা হতোনা। এখানে আক্ষরিক অর্থেই সাদা সব কিছুর প্রতি পক্ষপাতিত্ব বেশি। দেখা সাক্ষাতে একদিন বিস্তারিত বলবোনে হাসি

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

শুশু নি হাও দেঁতো হাসি

আপনার এই ধরনের লেখা খুব ভাল্লাগে আমার। পড়তে আরাম লাগে। হাসি

মামুন হক এর ছবি

হে হে, শুশু ? এই ছিল তোর মনে? হাসি

সংসপ্তক এর ছবি

দুর্দান্ত।
.........
আমাদের দূর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা

.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা

অতিথি লেখক এর ছবি

বর্ণবাদ কম বেশি পৃথিবীর সব জায়গাতে। স্পেশালি কাজের ক্ষেত্রে দেখলে খুবই দঃখ লাগে, যদিও আমরা এ নিয়ে মোটেও মাথা ঘামাই না তবুও সইতে হয়। চমৎকার লাগলো লেখাটি !!

দিশা___
সচলায়তনের নতুন অতিথি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।