প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও অভিভাবক সমীপে

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি
লিখেছেন মাসকাওয়াথ আহসান (তারিখ: বুধ, ২৮/০৭/২০১০ - ৫:১৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সম্প্রতি টিউশন ফির ওপর ভ্যাট আরোপের প্রতিবাদে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা সড়ক অবরোধ করে মহাখালী-বনানী অচল করে দেয়।বাংলাদেশের পুলিশরা আর কবে শিখবেন যে অন্তত বাচ্চাদের সঙ্গে নিষ্ঠুরতা দেখালে তা আইন বা কোন অজুহাত দিয়ে জাস্টিফাই করা যায়না। রোমান পোলানস্কি বা মাইকেল জ্যাকসনের মত তারকারা শিশু নিপীড়নের দায় এড়াতে পারেনি। তাই পুলিশের ঘাড়ে এই দায় পড়বেই।

 

এই দায় আরো নিতে হবে বেসরকারী ইউনিভার্সিটি কতৃপক্ষ,শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদেরো, কারণ আপনাদের বাচ্চাদের সড়ক অবরোধের কারণে জনভোগান্তির দায় আপনাকেই নিতে হবে।

 

এতদিন মিডিয়ায় এবং সাক্ষাতে ধারণা দিয়েছেন, প্রাইভেট ইউনিতে নো ননসেন্স। নর্থসাউথের শিক্ষিকা বান্ধবী এবং আইইউবির শিক্ষক বন্ধু গত জুনমাসে বড়গলা করে বললেন আমাদের ছেলে মেয়েরা খুব ভালো করছে,কারণ ওরা ছাত্র রাজনীতির নামে কোন বাজে কাজের সঙ্গে জড়িত নয়,শুধু পড়ে, সেমিনার করে,আর এতো ভাল লেখাপড়া যে চট করে চাকরী পেয়ে যায়। আমার কয়েকজন ভাগ্নে ভাগ্নী এই যাদু আমাকে দেখিয়েছে। ফলে মানতেই হবে আমার বন্ধু বান্ধবীর হাতে যাদু আছে।তবে তাদের বয়ানকে বা চাকরীকেন্দ্রিক যাদুসাফল্যকে প্রায় ভুল প্রমাণ করলো তারা সড়ক অবরোধ করে। দুইহাজার দশ সালের তিনটি কর্মঘন্টা ঢাকার প্রায় অর্ধেক নাগরিকের জীবন থেকে কেড়ে নিলো ঐ শিশুরা তাদের শিক্ষক-অভিভাবকের অসচেতনতা বশত।

 

অবশ্য তারা এটাকে ভবিষ্যতে ফরাসী বিপ্লবের শুভ সূচনা বললে তাদের যে আর্থিক ও সামাজিক অবস্থান তাতে ইতিহাসে কয়েকদিনের জন্য জায়গা পেয়ে যেতে পারে।শহুরে মোবাইল কোম্পানী এই ফুটেজ ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট করে,ডেট লাইন ঢাকা, ডিজুস স্টুডেন্টস মুভমেন্ট দ্যাট লেড টু সিভিল লিবার্টী বলে বিজ্ঞাপন ছেড়ে দিলে, মোবাইল কানেক্টস ইঊ টু দ্য রোড ফর চেঞ্জ। কথা বলুন বিপ্লবী ফ্রি টকটাইমে।ব্যাস চে হ্যাড আ সিগার, ইও হ্যাভ আ সেল ফোন লেখা চের ছবিসহ টিশার্ট আর আ সিম ফর রেবেলস বিক্রি শুরু  হয়ে গ্যালো। বনানীতে শহুরে ফোনের স্পন্সরশীপে ডিজুস মুভমেন্টের ভাস্কর্য এডুকেশন ইয়েস, ট্যাক্স নো পর্দা তুলে ইইউ রাষ্ট্রদূত ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজীতে বলবেন, দিস ইজ দ্য বিগিনিং পয়েন্ট অফ সিভিল রাইটস মুভমেন্ট বেওন্ড পার্টিজান বাংলাদেশ।

 

ধরুন যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেফতার ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার তাগিদে পুলিশকে একই বেতনে ২৪/৭ অনেকটা একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। অন্তত মহাপরিদর্শককে তো বটেই। এই সময় কথিত সবচেয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে বেড়ে ওঠা বাচ্চাগুলো রাস্তায় নেমে আসে, মহপরিদর্শককে ঐ তিন ঘন্টা ব্যস্ত থাকতে হয়েছে ফোন,টেনশন ইত্যাদিসহ।সেটা একটি স্পর্শকাতর ইস্যুর প্রতি কথিত সচ্ছল নাগরিকদের নির্লিপ্ততা ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতার বা ঔদাসীন্যের ছাপ রেখেছে। আমার পকেট থেকে কিছু বাড়তি পয়সা যাবে সুতরাং রাস্তায় বসে পড়ো।

 

কথিত সচ্ছল শ্রেণীর শিশুদের বাবামায়ের ওপর সরকার কর আরোপ করেছে কেন সরকার বলতে পারবে,সেটা ন্যায় কী অন্যায় বোঝার না বোঝার আমি কে।অবশ্যই বিষয়টির যৌক্তিক সমাধান দ্রুত করতে হবে। কিন্তু নিয়মতান্ত্রিকভাবে বেড়ে ওঠা বাচ্চারা কেন বাবা-মার অর্থনৈতিক ক্ষতির প্রতিবাদে নাগরিক জীবন ও কর্মঘন্টা আটকে দেবে। ঐ তিনঘন্টায় দেশের যে মাইক্রো-অর্থনৈতিক ক্ষতি হলো তা ঐ বর্ধিত টিউশন ফির ম্যাক্রো-অর্থনৈতিক ক্ষতির চেয়ে বেশী। নর্থ-সাউথের অর্থনীতির শিক্ষকেরা গাণিতিকভাবে উপলব্ধি করতে পারেন।

 

 এই বাচ্চারা ইভেন্টম্যানেজমেন্টে খুব ভালো। তাদের পক্ষে নর্থ সাউথে একটা রাউন্ডটেবিল ডাকলে সেখানে ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্ট কমিশনের  প্রধান বা তার প্রতিনিধি, বা যে কতৃপক্ষের জন্য তারা বনানী-মহাখালী সড়কে গেল, তাদের কেউ না কেউ সি আই পি কানেকশন ছাড়াই একটা বাচ্চার ফোন বলেই সেখানে আসবেন। ওই বয়েসে আমরা ফোন করে টিএসসিতে ওই রকম কতৃপক্ষকে সহজেই আনতে পেরেছি, তাই নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, নর্থ সাউথ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে শিক্ষা বিষয়ক  ইভেন্ট করেছে অসংখ্য। শিক্ষক বা কতৃপক্ষ তাদের নিয়মতান্ত্রিক রাস্তায় প্রতিবাদ জানানোর আধুনিক উপায়গুলো শিখিয়েছেন তা আমি জানি। তাহলে আমাদের সবার অপছন্দনীয় কাজটা কেন তারা করলো।

 

নর্থ-সাউথ, আইউবিসহ বেসরকারী ইউনি কতৃপক্ষকে এই প্রশ্নটা করছি, অভিভাবকেরা এই ব্লগ পড়লে একটু কথা বলুন। আপনাদের বাচ্চারা আমার অফিস যাওয়ার পথে গোঁ ধরে বসে থাকায় পুলিশ আইন শৃংখলা রক্ষার বৃটিশ-পাকিস্তানের শিক্ষায় প্রেসনোটের ভাষায় মৃদু লাঠি চার্জ করতে গিয়ে শিশু অধিকার লঙ্ঘন করেছে, মহাপরিদর্শক আশা করছি একটি শোকজ লেটার দেবেন ঐ এলাকার ইনচার্জকে।এই প্রসঙ্গে বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইনা। আমার বাচ্চার বন্ধু ঢিল মেরে আমার গাড়ীর কাঁচ ভাংগলে আমি বাচ্চাটাকে একটা ধমকও দেবনা কিন্তু বাচ্চার বাবা মা কে ফোন করে এটুকু বলতে পারি, আমার গাড়ীর কাঁচ না হয় আমিই লাগিয়ে নিলাম কিন্তু যে সামাজিক অসাম্যের শিকার গরীব মানুষেরা তিনঘন্টার অর্থনৈতিক ক্ষতির বলি হলেন আপনার বাচ্চাদের উত্তেজনার কারণে, তাদের ভোগান্তি হলো সেই উপায়হীনদের জন্য আপা-দুলাভাই আপনাদের লিখতে হল। আপনারা এবারো আমাকে উদাহরণ দিলেন দেশে পড়ালে বাচ্চাকে নর্থসাউথে পড়াতে।তখন ভাগ্নে ভাগ্নীদের প্রথম বেতনের ডিনারে বসে জীবনে এই প্রথম আপনাদের সঙ্গে একটা তিক্ত সন্ধ্যা কাটালাম। আমার ছেলেকে ওচাইলে ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়াবো কারণ সত্যিই বছর দশকে সেরকম পরিবেশ তৈরী হতে হবে,তা নাহলে আমরা জাতিগত বৃহন্নলার অক্ষমতার কষ্টে হারিকিরি করবো, বা করা উচিত।

 

আপনারা সরাসরি আমাকে বাস্তব বোধ বিবর্জিত বললেন। ঐদিন আমার একমাত্র যুক্তি ছিলো আমার ভাগ্নে ভাগ্নীদের দেশ এবং মানবিক স্পর্শকাতরতার অভাব।আপনাদের সঙ্গে বাংলা বা ইংরেজিতে কম্যুনিকেট করতে ব্যর্থ হয়ে ডিনার টেবিলের নান্দনিক পরিবেশ হারিয়ে ফেললাম।আমার ছেলের ব্যাপারে ও,আমি আর ওর মা সিদ্ধান্ত নেবো, ইঙ্গ-মার্কিন সুপারপাওয়ারের মতো আমাদের ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন না বলে নীটশের বা সাওতালের অহংকার দেখিয়ে বেরিয়ে এলাম।

 

আপা একটা প্রশ্ন করেছিলেন, ছেলেকে ঢাকা ইউনিতে পড়ালে মিছিল করবে গাড়ী ভাংচুর করবে রাস্তায় নামবে। কারণ এক ঢাকা ইউনি মানে আপার চোখে কুরুক্ষেত্র, দুই আমার ছেলে আমার চোখে রেস্টলেস, উনার চোখে হাইপার একটিভ।ফলে উনার মতে গোলাম ফারুক অভি ওর রোলমডেল হবে,আপার আমাকে চোখেই পড়লো না, আমার  ঢাবি বন্ধুদের সঙ্গে, বা এসময়ের তরুণ বিতার্কিকদের সঙ্গে আমার বাসার অনুষ্ঠানে দেখা হওয়ার পরেও আপা দুলাভাই অনড়।

 

আজ কি বলবেন, ছেলেকে কোথায় পড়াবো।যাই হোক আর সরকারী বেসরকারী ইউনির ক্লিশে তর্কে সময় নষ্ট না করে প্রত্যেকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং অভিভাকেরা আশা করছি বাচ্চাদের বোঝাবেন। এটা একবিংশ, জঙ্গলের আইন এখন আছে কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তো জঙ্গল নয়,প্রতিবাদের মিডিয়া অনলাইন বা অফলাইন বৈঠক বা প্রতিবাদ সভা, রাস্তা নয় অন্তত ছাত্রদের জন্য সংলাপ-সমঝোতার পথ সবসময়ি খোলা থাকে।ইউনিভার্সিটি  ছাত্রের যে ক্ষমতা থাকতে পারে তা মন্ত্রী হয়েও অর্জন করা যায়না, সেটা ভাংচুর বা অবরোধের ক্ষমতা নয়। অন্যকিছু সেটা ছাত্ররা নিজেরা খুঁজে না পেলে খুঁজে দেবার  কথা কিন্তু বেসরকারী ইউনিভার্সিটির কতৃপক্ষ, শিক্ষক এবং রাস্তা অবরোধী ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকের।সে দায় তারা এড়াতে পারেন কী?

 

কৃতজ্ঞতা, আলোকচিত্রী খোরশেদ আলম রিংকু ও কালেরকন্ঠ

 


মন্তব্য

মুস্তাফিজ এর ছবি

দেশে যেহেতু ভ্যাট স্বীকৃত একটি পন্থা তাই ভ্যাটের আওতা বাড়তেই পারে। আস্তে আস্তে আরও বাড়বে তাতে প্রতিবাদ এমন হওয়া উচিত না। তবে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর টিউশন ফী কিভাবে সহনীয় রাখা যায় সেদিকে নজর দেয়া উচিত।

...........................
Every Picture Tells a Story

হাসিব এর ছবি

মুস্তাফিজ ভাই,
আপনার মন্তব্যের কয়েকটা অংশ আছে । ভেঙ্গে ভেঙ্গে জবাব দেই,

  • দেশে যেহেতু ভ্যাট স্বীকৃত একটি পন্থা তাই ভ্যাটের আওতা বাড়তেই পারে।
    দেশে ভ্যাট স্বীকৃত হলেও সেগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, চিকিতসা ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রয়োগযোগ্য কিনা সেই প্রশ্নটা আমি তুলতে চাই।

  • তাতে প্রতিবাদ এমন হওয়া উচিত না।
    যেখানে অহিংস/শান্তিপুর্ন কোন প্রতিবাদ কাজে লাগে না সেখানে আর তো কিছু করারও নেই। প্রেসক্লাবের সামনে প্লাকার্ড গলায় ঝুলিয়ে মানববন্ধন করে এই দেশের কোন নীতিগত পরিবর্তন হয়েছে এমন ঘটনা আমি স্মরণ করতে পারিনা। গুরুত্বপূর্ন কিছু রাস্তা বন্ধ হয়েছে বলেই সরকার বাহাদুরের এই বিষয়ে নজর পড়েছে। এটা না হলে কিছুই তাদের কানে তোলা যেত না।

  • প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর টিউশন ফী কিভাবে সহনীয় রাখা যায় সেদিকে নজর দেয়া উচিত।
    এখানে মূল গলদটা হলো একটা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চলতে পারে কিনা সেই বিবাদের ফয়সালা করা। সম্প্রতি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনেও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের ফি যথেচ্ছ বাড়ানোর ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এধরনে সরকারি নীতি থাকলে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সুযোগ পেলেই বেতন বাড়াবে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন ছাত্রদের উচিত সরকারের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এরকম বাণিজ্যিক দৃষ্টিতে দেখার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা। শুধু ভ্যাটের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে মূল বিষয়টা আড়ালে রয়ে যাবে।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

লাইকাইলাম।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

দুর্দান্ত এর ছবি

এখন ছাত্রদের উচিত সরকারের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এরকম বাণিজ্যিক দৃষ্টিতে দেখার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা। শুধু ভ্যাটের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে মূল বিষয়টা আড়ালে রয়ে যাবে।

চলুক

মুস্তাফিজ এর ছবি

আলোচ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো বানিজ্যিক ভিত্তিতে পরিচালিত হয়, সেখানে ভ্যাট আসতেই পারে। জানেন কীনা জানিনা, প্রাইভেট স্কুল গুলো অনেক আগে থেকেই ভ্যাটের আওতায় আছে। আর ভ্যাট দেওয়ার কথা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের, ছাত্রদের না। ওদের উচিত ছিলো বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়া যে ভ্যাটের নামে টিউশন ফি বাড়ানো যাবেনা, সেটাই বরঞ্চ যুক্তিযুক্ত হতো, তাতে সমর্থনও মিলতো।
নিয়মতান্ত্রিক প্রতিবাদ করার আগেই যদি বলে দেন অহিংস প্রতিবাদের কোন মূল্য নেই তাহলে অন্যকথা। রাস্তায় গাড়ি আটকে চাবি ছিনিয়ে নেয়াটা কোনভাবেই টিউশন ফি’র উপর ভ্যাট আরোপের প্রতিবাদ হতে পারেনা।
পাবলিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো এমনিতেই সরকারী টাকায় (ভর্তুকি) চলে, সরকার যেখানে টাকা দেয় সেখান থেকে আবার ভ্যাটের নামে টাকা তুলে নেবার যুক্তিটাও হাস্যকর।

...........................
Every Picture Tells a Story

হাসিব এর ছবি

আর ভ্যাট দেওয়ার কথা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের, ছাত্রদের না।

মূল্য সংযোজন করের ধারনাটা এরকম যে এখানে ক্রেতা টাকাটা দেয়। বিক্রেতা নয়। অতএব, এটা ছাত্রদের ওপরেই বর্তাচ্ছে।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

রাস্তা আটকানোর চেয়ে আপনার রাউন্ডটেবিলে আলোচনার কথা ভালো লাগলো। কিন্তু ছাত্রদের রাস্তায় বসে পড়ার সাথে স্বচ্ছল বাবামায়ের কানেকশন আমার কাছে সরলীকরণ মনে হল। কিংবা অযৌক্তিকও বলা যায়। বাবা মায়ের টাকা আছে বলেই "দে না বাবা আরেকটু বেশী বেতন/ভ্যাট দে" কোন যুক্তি হতে পারে না।

ভ্যাটের নেট বাড়লেও শিক্ষা-বেতনের উপর ভ্যাটের কথা চিন্তাই করা যায়না। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে বলেই তাদের বেতনের উপর ভ্যাট বসাতে হবে? সরকার কি পারবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২০টাকা(/বছর) বেতনের উপর ভ্যাট বসাতে?

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

আমি ভাবলাম যে বাচ্চারা এতো ভালো সেমিনার অর্গানাইজ করে, এই জরুরী ইস্যুতে প্রেসক্লাবে বা ইউনিভার্সিটিতে বৈঠক করে অতীতে গেস্ট আমন্ত্রণের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পর্বতকে নিজেদের কাছে আনতে পারতো, কতৃপক্ষ খুঁজতে রাস্তায় কেন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

সিমি এর ছবি

কারণ বাচ্চাদের ওইদিনের যুক্তি ছিল, সেমিনার করে কোন লাভ হবে না। এই দেশে ভাংচুর না করলে কারো কিছু নজরে আসেনা। এমন না যে কেউ প্রতিবাদ করে বলে নাই রাস্তা আটকানো ঠিক হচ্ছেনা। আরেকটা ব্যাপার ছিলো সবাইকে এক করার। আর রাগের সব চেয়ে বড় কারণ ছিল সব ইউনিভার্সিটি এর ভিসিরা কিভাবে ভ্যাট বাড়ানো মেনে নিলো।

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

এবার আমরা শিখলাম একমাত্র দেশের পতাকা আর মানচিত্র বিপন্ন না হলে পথে নেমে জনমানুষকে বিপন্ন করা সভ্যতা নয়।সমস্যা সমাধানের আধুনিক বিকল্প আছে। আর প্রতিষ্ঠান বা সরকার বা বিরোধীদলের কোন আচরণ আপত্তিকর হলে ব্লগ বা ফেসবুক মিছিলই যথেষ্ট তাদের অন্ধ দম্ভের ভিত নড়িয়ে দেবার জন্য।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

বুঝতে পারলাম রাজধানীর অনেক মানুষের মতো আপনি ও ব্যাপক বিরক্ত হয়েছেন, বিরক্ত হয়েছি আমিও যখন ২ ঘন্টা বাস এর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল।

রাউন্ড টেবিলের বৈঠকের উপায় টাও বেশ ভালো লাগলো। পাশা পাশি কিছু প্রশ্ন ও জাগলো মনে, কিছু চিন্তা না করে বলে ফেললাম।

১। মুল্য সংযোজন কর কিসের উপর বসানো যায়? পণ্য-এর উপর, তাই না? সরকার কি তাহলে শিক্ষা কে পণ্য বলতে চাইছে? নাকি বলতে চাইছে প্রারভেট ভার্সিটি গুলো শিক্ষা কে পণ্য বানিয়েছে তাই এর উপর ভ্যাট? যদি তাই হয় এর দায় সরকার উপর বর্তায় না?? দেশের সব ছাত্রের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে স্থান সংকুলান হয় না কেন? এটা সরকার এর দায় নয়?

২। সরকারী ইউনি এবং প্রাইভেট ইউনি -র ছাত্র সংখ্যা প্রায় সমান, ১০০০০০ এর মতো করে। ভ্যাট যদি বসাতেই হয় সবার উপরেই হোক শুধু প্রাইভেট ইউনি - এর উপর কেনো? এরা তো মাইনোরিটি না।

৩। এমনিতেই প্রাইভেট ইউনি গুলো টিউশন ফি বাড়াচ্ছে, তার উপর সরকার ভ্যাট আরোপ করে তাদের উৎসাহ যোগাচ্ছে?

৪। শুধু টাকা আছে বলেই প্রাইভেট এ ভর্তি করাচ্ছে , তার চেয়ে সরকারী কোথাও স্থান না হওয়ায়, পড়াতে হবে তাই কষ্ট করে হলেও প্রাইভেট এ পড়াচ্ছে এমন অভিভাবক এর সংখ্যা এখন নিতান্তই কম নয়। এমনি তেই তারা হিমশিম খাচ্ছেন, অতিরিক্ত টাকার যোগান হবে কোথা থেকে?

৫। আজ ভ্যাট ৪.৫% আছে, কাল ৯% হবে, পরশু হয়তো ২০%। তারপর একদিন গাড়ির মতো ৩০০%। তখন এই ১ লাখ ছেলে মেয়ের কি হবে? দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?

৬। আপনার আমার বাসায় ফিরতে বা অফিসে যেতে ৩ ঘন্টা লেট হলো, কিন্তু ভ্যাট বাড়তে থাকলে কতো ছাত্রের জীবন থেমে যাবে, তার জন্য তারা যদি রাস্তায় নেমে আসে তাহলে খুব বেশি ক্ষতি?

৭। দেশের মাইক্রো ক্রেডিট এর ক্ষতি নিশ্চই হয়েছে, তাতে যদি ম্যাক্রো ক্রেডিট হয় পরে, তাহলে কোনটা ভালো হয়?

৮। সরকারী ইউনি তে ৫ টাকা বেতন বাড়লে গাড়ী ভাংচুড় হয় দিন-ভর আর এখানে প্রতি সেমিষ্টারে যে পরিমান টাকা বাড়ছে তাতে সেদিনের ঘটনা সামান্য নয়?

৯। রাউন্ড টেবিলের আয়োজন করলেই UGC এর প্রতিনিধি কেনো ছুটে চলে আসবেন তা আমার কাছে স্পষ্ট নয় । ফোন করেই তাদের আনাতে পারার ঘটনা আমরা এখন কল্পনা করতেও পারি না। দেশের যা নিয়ম, অরাজকতা না করলে কারো টনক নড়ে না। তাতে এই ছেলে মেয়েরা অনেক খারাপ কি করেছে?

১০। প্রতিবাদ করলেই তা রাজনীতি হয়ে গেলো?

১১। সব কিছুতে যুদ্ধ অপরাধীদের কেনো টেনে আনা হয়? এইটা আমার কাছে মোটেও পরিষ্কার নয়।

১২। বাচ্চারা যদি ভবিষ্যৎ হয়, তাহলে এই বাচ্চারা নিজেদের ভবিষ্যত-এর কথা ভেবে যদি উত্তেজিত হয় আমাদের তাতে কি করা উচিত?

১৩। প্রাইভেট ইউনি বা সরকারী ইউনি কোনোটাই কি ভুলত্রুটির উর্ধ্বে? সবাই ছাত্র। তারা যদি ভুল করে তবে তাদের সঠিক রাস্তা দেখানোর সময়ে আমরা কি ছাত্রত্বের পেছনে সরকারী বা বেসরকারী লাগাতে পারি?

আমি জানি না হয়তো বলা উচিৎ নয় এমন কিছু বলে ফেলেছি। বলে থাকলে এই সরকারী কিংবা বেসরকারী ভার্সিটির ছাত্র হিসেবে শুধরে দেবেন।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আপনার মন্তব্যে অনেকগুলো ভালো পয়েন্ট আছে; কিন্তু

ভ্যাট যদি বসাতেই হয় সবার উপরেই হোক শুধু প্রাইভেট ইউনি - এর উপর কেনো? এরা তো মাইনোরিটি না।

এটা ভুল অ্যাপ্রোচ। অন্যায় সবার জন্যই অন্যায়, পাবলিকে ভ্যাট বসালেই প্রাইভেটে বসানো হালাল হয় না।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

হাসিব এর ছবি

দুইটা ছোট মন্তব্য করি।

  • আমার মনে হয় আপনি লেখার টোনটা ধরতে পারেন নাই। সারকাজম, স্যাটায়ার এগুলো বহুল প্রচলিত লেখার জগতে। লেখাটা আবার পড়েন।
  • প্রতিবাদ করলে একটা অবস্থান প্রকাশ করা হয়। এই অবস্থানটা যখন কোন চলমান বা হয়ে যাওয়া রাজনৈতিক বিষয়ের ওপর হয় তখন সেই অবস্থানটা হলো রাজনৈতিক অবস্থান। সরকারের ভ্যাট আরোপটা একটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। অতএব এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নেয়াটা রাজনৈতিক অবস্থান।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

সরকারের ভ্যাট আরোপটা একটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।
রাজ-অর্থনৈতিক কিংবা শুধুই অর্থনৈতিক নয় কেনো হাসিব্বাই?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

১। সরকার কেন ভ্যাট বসিয়েছেন, অর্থমন্ত্রী তার ব্যাখ্যা দেবেন আশা করছি।

২।সরকারী শিক্ষা-চিকিতসা প্রতিষ্ঠান জনসেবায় নিয়োজিত, ভ্যাট আসবে কেন সেখানে।সেখানে কিছু ক্রয়-বিক্রী হয়না।

৩।ইউনির ব্যবসায়ী মালিক পক্ষকে জিজ্ঞেস করেন।

৪।সরকারী ইউনিতে কোন জায়গায় ঢুকতে না পারলে জাতীয় বা উন্মুক্ত ইউনি আছে, আরো ভালো চাইলে হার্ভার্ড বা নর্থসাউথ, তখন পয়সা খরচ হওয়াটা সনাতন বাস্তবতা।

৫।পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ নিয়ে রেমিট্যান্স মৃগয়ায় বেরোবে।

৬।আপনি জীবনের কথা বলছেন আমি মহাখালী থেকে কালিয়াকৈরগামী বাসে আটকে পড়া পিতাটির কথা ভাবছি, যে উপার্জনের টাকায় চাল কিনে ফিরলে তার জীবন্মৃত বাচ্চাগুলো একটু জুঁইফুলের মতো সাদা ভাত খায়, ঐদিন ঐ দলিত শিশুরা পাঁচঘন্টা ভাতের অপেক্ষা করেছে।

৭।আমি বলেছি ইচ্ছা করেই উল্টোটা, টিউশন ফির ভ্যাট মাইক্রো ইকোনমি, কর্ম ঘন্টার উতপাদন থেমে থাকাজনিত ক্ষতি ম্যাক্রো ইকোনোমি।

৮।খারাপ উদাহরণ দৃষ্টান্ত বা অজুহাত হয়না।

৯।আমি নিয়মতান্ত্রিকভাবে বেড়ে ওঠা বাচ্চাদের কাছ থেকে আধুনিক কিছু আশা করেছিলাম। ফোন করে নর্থ সাউথে তারা কাকে আনতে পারেনি অতীতে, ওদের ইউনি ইভেন্ট এলবামে কার ছবি নেই হাসিমুখ।।

১০।রাজনীতি সব কিছুই, জীবন-জীবন্মৃত সবি রাজনীতির বিষয়, জনমানুষকে ডিস্টার্ব না করলে রাজনীতি বা ছাত্র প্রতিবাদে কারো আপত্তি নেই।

১১।কারণ আপনার মুক্তিযোদ্ধা মামা যুদ্ধাপরাধীদের দেখিয়ে দেয়া পথে পাকিস্তানী সেনার হাতে মারা যায়নি,আপনার মুক্তিযুদ্ধে বিধবা খালা লড়াই করে চারটে বাচ্চা মানুষ করেনি, কী যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে কভু যুদ্ধাপরাধী বিষে দংশেনি যারে।

১২।বাচ্চাদের ভবিষ্যত নিয়ে ভাবাটাই নর্থসাউথ বা আই ইউবির মোটো। আর সচেতন অভিভাবক আছেন যারা তারা শিক্ষাবীমা পলিসির চেয়েও সক্রিয়। বাচ্চারা ভাববে পড়ালেখা নিয়ে। ঢাবিতে আমরা লাটাই ছেঁড়া ঘুড়ির মতো বড়ো হয়েছি। সৌভাগ্যের বরপুত্রদের নিয়ে ভাববেন তাদের স্টুডেন্ট কাউন্সিলর রা। আমরা ট্র্যাফিকের দলিত,কালিয়াকৈরের ভাতের জন্য অপেক্ষমান বুনো শিশু ছিলাম। আমাদের ভাংচুর দেখে রাজপুত্ররা তা শিখবে কেন। আমরাইতো এফলুয়েন্ট বন্ধুদের দেখে অনেক কিছু শিখলাম।

১৩।আগে হলে বলতাম ইয়েস,বাবা হওয়ার পর বলি না। বাচ্চা বাচ্চাই, ছাত্র ছাত্রই। আমার বা আব্দুল আউয়াল মিন্টু বা সালমান এফ রহমান, বা কালিয়াকৈরের দলিত বাপের বুভুক্ষু বাচ্চা কারো ওপরেই পুলিশ লাঠি চালালে বুকটা ছ্যাঁত করে ওঠে। শিশুদের ওপর এই অন্যায়ের জন্য কতৃপক্ষ-শিক্ষক-অভিভাবকদের ভুল এবং এরফলে পুলিশের ভুলের জন্য আমরা ঐ বয়েসী মানুষেরা গ্লানি বোধ করছি।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

দুর্দান্ত এর ছবি

একটি মাঝারি সারির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কাছ থেকে দেখায় বলতে পারি যে এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানার লভ্যাংশ দুই থেকে তিন শতভাগ, মানে বছরের শুরুতে এক টাকা খরচ করে বছরের শেষে দুই থেকে তিন টাকা আয় করা যায়। তবে যেহেতু এই প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাক্তিমালিকানাধীন, তাই এগুলোর আসল আয় ব্যায়ের হিসাব কেউ নেয়না। খরচ বেশী দেখানোর অনেক পথ খোলা আছে। আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলছি, সেখানে শিক্ষকের বেতন বাড়িয়ে দেখানো হত, বাড়ীভাড়া বাড়িয়ে দেখানো হত, মালিকপক্ষকে বিশেষজ্ঞ হিসাবে অতি উচ্চ বেতন দেয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটারিয়া ও কম্পিউটার সেন্টারকে আলাদা কম্পানি দেখিয়ে তাদেরকে বড় ঋন দেয়া হত। পরিচালকদের বেতনের পাশাপাশি একাধিক বাড়ীভাড়া, গাড়ী, বিদেশভ্রমন, চিকিতসা এমন কি একজনের বিয়ের অনুষ্ঠানের যাবতীয় খরচও বহন করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এগুলো খুব সহজেই করা যায়, শুল্ক কর্তৃপক্ষই দু পাচ লাখ টাকায় বিনিময়ে রাস্তা দেখিয়ে দেয়।

সরকার চাইলেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক প্রতিষ্ঠান/ব্যাক্তি/শিক্ষকদের ওপর একটি সীমার আয়ের ওপর অতিরিক্ত আয়কর ধরে দিতে পারে, এবং যেহেতু এই দলের লোকসংখ্যা শ'দুয়েকের বেশী না, তাই তাদের ওপর খবরদারি ও কর আদায় অনেকটাই সরল হতে পারে। এতে কারে তাদের কর আদায় খরচ অনেক কমে যেত, এবং সরকারের বক্তব্যটি পাবলিকের বুঝতে সুবিধা হত।

বর্তমান ঘটনাপ্রবাহে পরিস্কার হচ্ছে না সরকার আসলে কি চায়। তারা কি অবুঝের মত যেকোন খাত থেকে টাকা তুলতে চাচ্ছে, নাকি বেসরকারি উচ্চ শিক্ষয় ছাত্রসমাগম সীমিত করতে চাচ্ছে সেটা আমি বুঝতে পারছি না।

বেসরকারি শিক্ষাতে মূসক আদায় করার পেছনে যা ভাবনাই থাকুক, কার্যত বেসরকারি শিক্ষা এখন কর আরোপের আগের সময়ের চাইতে কিছুটা দুর্লভ, এমনকি কিছুটা বিলাসী ভোগ্যপণ্যও হয়ে দাঁড়াল। মুহিতকে শাবাস। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীর একাংশের জন্য এটা যথোপযুক্ত।

তবে মেধাবী-অসচ্ছল ছাত্র ছাত্রীদের কথা আরো ভাবা দরকার ছিল। আদায়কৃত মূসকের একটি বড় অংশযদি সহযশর্তে শিক্ষাঋন বা উচ্চশিক্ষাসংক্রান্ত সঞ্চয় বা অনুদানে ব্যায় করতে দেখি, তাহলে মনে করব মুহিত-নাহিদের একটি জনহিতকর সমন্বয় হয়েছে। দেশে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পরে একজন ছাত্রের সামনে খুব বেশী পথ খোলা নেই। আমার ভাই মোটর মেকানিক হয়ে কালিঝুলি মাখছে, বা আমার বোন নার্স হয়ে হাসপাতালের কোথাকার কোন নোংরা রুগির পুঁজ মুচছে - এগুলো শুধু দুঃস্বপ্নেই ঘটে। আমাদের শিক্ষাব্যাবস্থায় এইসব ছোটলোকির জায়গা আলাদা করে রাখা আছে; সেখানে যাবে শুধু নিরুপায়েরা। বাতসরিক ৬-৭% প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারলে সেদিন বেশী দুরে নেই, যেদিন আমরা নিজেরাই কারিগরি প্রশিক্ষিত জনশক্তির চরম অভাব বোধ করব।

ফাহিম এর ছবি

'দুর্দান্ত'ভাবে পছন্দাইলাম!!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

শামীম এর ছবি

শিক্ষামন্ত্রী কিংবা গ্র্যান্ট কমিশন মুশক ধার্য করেছে বলে আমার মনে হয় না। মুশক ধার্য্যের আগে এঁদের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হয়েছে বলেও কোনো খবর আমার জানা নাই।

যতদুর জানি, কর ধার্য করে অর্থ মন্ত্রণালয়। কাজেই আলোচনার জন্য ইভেন্ট ম্যানেজ করে শুধুমাত্র গ্রান্ট কমিশন বা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের লোকজনকে ডেকে আনলে কতটুকু কার্যকর আলোচনা হত সেই বিষয়ে ঘোরতর সন্দেহ প্রকাশ করছি।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

করবিভাগে ব্যাচমেট কেউ থাকলে ব্যাপারটা জেনে জানাতে পারেন যে কেউ, অর্থমন্ত্রী খুবই ইনফরমাল মানুষ, নর্থ সাউথের কোন শিক্ষক ফোন করে উনার কাছ থেকেও জানতে পারেন। তারপর অর্থমন্ত্রী যা করবেন, জনমানুষ দেখবে।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

তাসনীম এর ছবি

এইমাত্র টিভিতে ব্রেকিং নিউজ স্ক্রল দেখলাম যে টিউশন বিলের উপর ভ্যাট বসানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে সরকার। বলা যায় এই আন্দোলন সফল হয়েছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের অভিনন্দন।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

অবশ্য তারা এটাকে ভবিষ্যতে ফরাসী বিপ্লবের শুভ সূচনা বললে তাদের যে আর্থিক ও সামাজিক অবস্থান তাতে ইতিহাসে কয়েকদিনের জন্য জায়গা পেয়ে যেতে পারে।শহুরে মোবাইল কোম্পানী এই ফুটেজ ব্ল্যাক এন্ড হোয়াইট করে,ডেট লাইন ঢাকা, ডিজুস স্টুডেন্টস মুভমেন্ট দ্যাট লেড টু সিভিল লিবার্টী বলে বিজ্ঞাপন ছেড়ে দিলে, মোবাইল কানেক্টস ইঊ টু দ্য রোড ফর চেঞ্জ। কথা বলুন বিপ্লবী ফ্রি টকটাইমে।ব্যাস চে হ্যাড আ সিগার, ইও হ্যাভ আ সেল ফোন লেখা চের ছবিসহ টিশার্ট আর আ সিম ফর রেবেলস বিক্রি শুরু হয়ে গ্যালো। বনানীতে শহুরে ফোনের স্পন্সরশীপে ডিজুস মুভমেন্টের ভাস্কর্য এডুকেশন ইয়েস, ট্যাক্স নো পর্দা তুলে ইইউ রাষ্ট্রদূত ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজীতে বলবেন, দিস ইজ দ্য বিগিনিং পয়েন্ট অফ সিভিল রাইটস মুভমেন্ট বেওন্ড পার্টিজান বাংলাদেশ।

অভিনন্দন সরকার এবং অভিভাবকদের। তবে অঙ্কে ছেলেটি কী ভুল করিয়াছিল, তা মনে না রেখে অবরোধ,ভাংচুরে কাজ হয়েছে এই উপসং হার টেনে লেটস ডু পার্টি টু নাইট করলে আমরা লর্ড অব দ্য ফ্লাইএজ হয়ে যাবো, ঢাকা সভ্যতা অন্ধকারের পথে হাঁটবে। আশা করছি এরকম হবেনা, এখনকার বাচ্চারা অনেক বোঝে, সত্য খোঁজে হ্যারিপটারের মত। গুড লাক।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

নৈষাদ এর ছবি

আপনার অন্যান্য বিভিন্ন লেখাগুলোর মত সারকাজম মেশানো এই বিশ্লেষণটাও চমৎকার লাগল।

১। ব্যাক্তিগতভাবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বেতনের উপর মূল্য সংযোজন কর বসানোর বিপক্ষে। তবে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদের যে ভাষা দেখলাম, তারও বিপক্ষে আমি। আমি মনে করি ছাত্রদের অনেকটা এপথে ঠেলে দেয়া হয়েছে।… সরকার যখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বেতনের উপর কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করেছিল, তখন কিন্তু সফল হয়নি। এজন্য আন্দোলনের দরকার হয়নি, কিন্তু সরকার বাহাদুরকে শক্তিশালী মালিক পক্ষের কাছে আনকন্ডিশনাল হার মানতে হয়েছে। মূল্য সংযোজন করের ব্যাপারে মালিকপক্ষ হয়ত অনেকটা ‘হ্যান্ডস-অফ’ পন্থা নিয়েছে – ‘গাড়ি-ভাঙ্গচুর’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ছাত্ররা যদি পরিবর্তন করতে পারে, করুক, নয়ত টাকা তাদেরই দিতে হবে।

আবার প্রশ্ন উঠতে পারে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বেতনের উপর মূল্য সংযোজন কর যদি জাস্টিফায়েড না হয় তবে প্রাথমিক স্তরের বেসরকারি স্কুলে যে মূল্য সংযোজন কর আরোপ করা হয় তা কতটুকু জাস্টিফায়েড। নাকি সরকার ‘গাড়ি-ভাঙ্গচুর’ জাতীয় প্রতিবাদের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়?

২। আইটিসি দ্রব্যের উপর সরকার যখন ট্যারিফ উঠিয়ে দিয়েছিল, ভাঙ্গচুর দরকার হয়নি, সঠিক জাস্টিফিকেশন দেয়া হয়েছিল, এবং সবচেয়ে বড় কথা, ব্যবসায়ী মহল ছিল ‘গোল-টেবিলে’।

৩। কেউ কেউ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু বড় আন্দোলনের সাফল্যের কথা বলে এধরণের ‘আন্দোলনকে’ জাস্টিফাই করার চেষ্টা করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হলে পুলিশি নির্যাতন, ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলন, কিংবা তত্ত্ববধায়ক সরকারের আমলের সেইসব প্রতিবাদের সাথে এগুলিকে এক করে দেখার কোনই সুযোগ নেই।

৪। সরকারের ‘মূল্য সংযোজন কর আরোপের’ ব্যাপারে কোন ফিলসফি আছে কিনা জানতে ইচ্ছে হয়। একবার দেখলাম চিকিৎসার ব্যয়ের উপর ভ্যাট বসালো, তারপর বাদ দেয়া হল, কাল দেখলাম আবার বসানো হয়েছে।

৫। লেখার মূল বক্তব্যের বাইয়ে কোন বিতর্কে যেতে চাচ্ছি না। কিন্তু গত কয়দিনের ভ্যাট আন্দোলন, ছাত্র রাজনীতি, এবং ‘সাফল্য’ সম্পর্কিত চমৎকার লেখাগুলো এবং মন্তব্যগুলোর প্রেক্ষিতে ‘করপোরেটের চশমা’ পরা এই আমার এই লেখার সাথে সংশ্লিষ্ট কয়টা দুটা বলতে ইচ্ছে হচ্ছে। বিশেষ করে গত বেশ কয়েক বছর ধরে যেহেতু সরকারি/বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এন্ড প্রডাক্ট’ নিয়ে কাজ করছি।

ক) ‘সাফল্য’ যদিও খুবই সাব্জেক্টিভ ব্যাপার, তবুও করপোরেটের সেই তথাকথিত সাফল্যের জন্যও দরকার ‘ডাউন-টু-আর্থ’ ছেলে মেয়ের। দেশ, বিশ্ব এবং রাজনৈতিক (বড় অর্থে) সচেতনাতার কোন বিকল্প নেই। আপনি শুরু করতে পারেন, কিন্তু করপোরেটেও সফল হতে হলে আপনাকে হতে হবে ‘ডাউন-টু-আর্থ’,। বিশ্ববিদ্যালয় স্টেজেই এই সচেতনতাটা (রাজনৈতিক কিংবা আদার-ওয়াইজ) তৈরী হয়। আমার নিজস্ব কিছু মতামত আছে, কিন্তু এই মুহূর্তে সেই বিশ্লেষণে যাব না।

খ) দেশের শেয়ার বাজারের মত কিছু সেক্টর (টেলিকম, ব্যাংকিং) শুরুর দিকের অনেক জবকে ‘ওভার-চার্জড’ করে ফেলেছে। আপাত এই অবস্থাকে ‘সাফল্য’ হিসাবে দেখার কোন সুযোগ নেই। এর অবধারিত ফলাফল পরবর্তী ফ্রাস্টেশন/এবং ভাল-ছেলেমেয়ের ক্যারিয়ারের ‘বারোটা’। কখনও এ নিয়ে লেখার ইচ্ছে রইল।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

৫ এর ক আর খ-এ এই মূহুর্তে খুব জরুরী আলোচনা। আমার ধারণা সার্বিক বিরোধ এবং এই বিরোধে তথাকথিত "আমরা-ওরা" অবস্থানের মূলে এই প্রশ্নগুলোই জড়িয়ে আছে। (পুনশ্চ - আপনি অনেকদিন লিখছেন না)
______________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

কর্পোরেট দম্ভের ভিত নড়েছে গোলকের অর্থনৈতিক মঙ্গায়। টপ ম্যানেজাররা বুঝেছেন কতটা অমানবিক এই জীবন। আপনার কর্পোরেট চশমা শিরোনামের বা আপনার পছন্দের শিরোনামে কর্পোরেট ট্র্যাজেডী বা বাস্তবতা নিয়ে একটা লেখা ভবিষ্যতের কর্পোরেট ম্যানেজারদের কাজে আসবে মনে হয়। ভালো থাকবেন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

শিক্ষার উপর যে কোনো রকম ভ্যাটবাজি বন্ধের পক্ষে। কারণ ভ্যাট পারত ছাত্রদেরই দিতে হবে। সরকার ছাত্রদের কাছ থেকে টাকা নিবে কেন, অপ্রয়োজনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

দুঃখিত, আগের মন্তব্যে বলতে চেয়েছিলাম "বিপক্ষে", হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

না, আবারো ভুল হলো, আগেরটাই ঠিক ছিল
"ভ্যাটের বিপক্ষে", "ভ্যাট বন্ধের পক্ষে"

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

মনযোগের খুব অভাব, ভিডিও গেমস বেশী খেলার ফল কীনা। ভালো থাকবেন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

১। এই অপকর্ম করার পুর্ব পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রি তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন কি? এখনো যদি না দিয়ে থাকেন তবে তার ব্যাখ্যা শোনার জন্য কি করা উচিৎ??

২। কোনটাকে জনসেবা বলবো?? যেখানে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও টাকা ছাড়া পড়ানো / পড়া যায়? যেখানে টাকা কম করে দিলেই কাজ ঠিকই চলে সেইখানে অঢেল টাকা ঢালা জনসেবা?? এই সব করেই তো সরকার কে এই অদ্ভুত ধরণের সিদ্ধান্তে আস্তে হয়।

৩। ভ্যাট বাড়লে সেটা ইউনির মালিকেরা দেবে না, দিতে হবে ছাত্রদের বাবা মাকে।তারা এই নিয়ে মাথা ঘামাবে কেনো? সরকার এই খানে ভ্যাট না ধরে অজান্তেই একটু জনসেবা করছিলো। সেটা কেনো উঠে গেলো?? নাকি যারা এখানে পড়ে তারা “জন” নয় অতএব তাদের সেবারও দরকার নাই?

৪। জাতীয় বা উন্মুক্ত ইউনি তে কতদুর ভালো পড়াশোনা হয় সে আপনি আমি ভালো করেই জানি তাই না? কেউ যদি ভালোটাই চায় তাহলে সেটা তার অপরাধ হয়ে গেল? টাকা খরচ করে বাইরে না গিয়ে দেশে পড়াশোনা করে তাহলে কার ক্ষতি??

৫। পেশা ভিত্তিক পড়াশোনা যাদের কাছে better way মনে হয়ে থাকে তারা করাবে। যাদের কাছে প্রচলিত পড়াশোনা টাই better মনে হয় তারা কি করবে??

৮। স্বাভাবিক ঘটনা দৃষ্টান্ত নয়। দৃষ্টান্ত নিয়ে বসে থাকা আর চোখ বন্ধ করে রাখা এক কথা নয় কি?? সরকারী ইউনি তে ৫ টাকা বাড়ানোর পর যদি ভাংচুড় না হয় তাহলে সেটাই দৃষ্টান্ত হবে। নিয়মিতই যদি খারাপ কিছু ঘটে তাহলে এই মাছ কোন শাক দিয়ে ঢাকা যায় বলতে পারেন??

৯।“ফোন করে নর্থ সাউথে ‘তারা’ কাকে আনতে পারেনি অতীতে”
এই ‘তাদের’ কারা ডেকে এনেছে?? বাচ্চা ছাত্ররা নাকি প্রশাসন অথবা শিক্ষকরা?? শেষ দলের তো এই নিয়ে কোন মাথা ব্যথা নেই।

১০। সমাজে থাকতে হলে আপনাকে আমাকে সবকিছুর-ই ছোয়া পেতে হবে। অন্যের ঘরে আগুন লাগলে যদি নিভাতে না যাই তাহলে সে আগুন আমার ঘরে যে লাগবে তাতো পরম সত্য। আর আধুনিকতা বোঝার জন্য আধুনিক মানুষিকতা দরকার, আধুনিক সরকার এর প্রয়োজন।

রাজনীতি যদি সবকিছুই হয় তাহলে সবাই রাজনীতি করতে পারে। এখানে সরকারী বেসরকারী আলাদা কেনো হবে? কেউ যদি মিথ্যে বড়াই করেই থাকে তাতে আমরা সচেতন মানুষেরা এতো নড়েচড়ে বসবো কেনো?

(৬+১১)। “কী যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে কভু ……… বিষে দংশেনি যারে”
অসম্ভব সুন্দর লাইন-আমার মনেও উকি দেয়।সত্যি-ই তো যার ব্যথা তার চেয়ে কেউ ভালো করে বুঝতে পারে না।

অনেক সন্তান তার বাবার জন্যে যেমন বসে ছিল, অনেক রোগী হয়ত রাস্তায় আটকে গিয়েছিল। তার পাশাপাশি অনেকের মনে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুর্ভাবনা কাজ করছিলো। আপনা টা ছেড়ে কে পরের টা চিন্তা করে?

আর দোষ তো এদের কারো-ই না, যাদের দোষ তাদের জবাবদিহিতার ব্যবস্থা আমাকে আপনাকে-ই করতে হবে কারণ আমরা শান্তিতে থাকতে চাই।

পেটে যখন ভাত থাকে না তখন কি আমার মনে আসার কথা যে যুদ্ধাপরাধী রা আমার মামা কে মেরেছে, আমার খালাকে বিধবা করেছে? সন্তান এর লেখাপড়া যখন বাধার স্বীকার হয়, যখন তার সন্তানের ভবিষ্যৎ অন্ধকার বলে মনে হয় তখন কোন বাবার মনে পড়ে যে তার ভাই, বোন দুনিয়াতে নেই?

১২। অভিভাবকরা সক্রিয় থাকতেই পারেন সেটা কি তাদের দোষ? অতিরিক্ত বড়াই করা হয়তো দোষ, কিন্তু সে তো অনেকেই করে। তা নিয়ে আমরা কেনো উঠে পড়ে লাগবো?

পিতা-মাতার কষ্টে ছেলে মেয়ে বিচলিত না হলে হয়? তারা তখন লাটাই ছাড়া হলেও ঘুড়ি হতে পারে? আর যেখানে ব্যাপারটা তাদের নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সেখানে কেনো তারা চুপ থাকবে?

আমার ঢাবি আমাকে ভাংচুড় শেখায়নি তো! শেখাচ্ছেও না। ভাংচুড় যা হয় তা রাজনৈতিক দলের কাজ।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- প্রতিবাদ ঠিকাছে, কিন্তু রাস্তায় নেমে গাড়ি ভাঙচুর, এটা কেমন প্রতিবাদ! বিশেষ করে বর্তমান আধুনিক সময়ের মানুষের। তারা তো আধুনিক বিশ্বকে অনেক কাছ থেকে দেখা মানুষ, তাদের চলন-বলন-আচরণ— সব কিছুতেই আধুনিক বিশ্বের ছাপ। তারা কেনো রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর করবে, নো ম্যাটার হোয়াট...!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

তাসনীম এর ছবি

দেশে থাকতে প্রায়ই দেখতাম পেপারে চিঠি...রাস্তা ঠিক করার জন্য প্রধানমন্ত্রী সমীপে আকূল আবেদন। রাস্তা ঠিক করাটা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নয়।

৯০ এর দশকে বঙ্গবাজার মার্কেটে একবার আগুন লেগেছিল। ওটার উল্টোদিকেই ফায়ার ব্রিগেডের অফিস, ওরা আসেনি আগুন নেভাতে। অনুরোধ করলে বলা হয়েছিল গাড়ি বের করার পারমিশন নেই।

এগুলো হচ্ছে আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্রের দক্ষতার উদাহরণ। এই দেশে গাড়ি ভাঙ্গাটা সবচেয়ে ফলদায়ক কাজ। এতে যে কাজ হয় সেটা আজকে আবারো প্রমাণ হয়ে গেল।

গতকাল সন্ধ্যায় টিভিতে পুলিশী বর্বরতা দেখলাম, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত এক ছাত্রকে পুলিশ (ড্রেস পরা ও সাদা পোশাকের) চড়, থাপ্পড় আর লাথি মারছে। ছাত্রটা এক পর্যায়ে মনে হয় বমি করে দিল রাস্তার উপরে। দৃশ্যটা মাথার থেকে সরছেনা।

আমি যখন ঢাকা কলেজে পড়ি তখন আমাদের বেতন মাসে নয় টাকা থেকে বেড়ে আঠারো টাকা করা হয়। ১০০% বেতন বৃদ্ধি, শুরু হয়ে গেল সর্বদলীয় আন্দোলন, মাসে নয় টাকা কিছুই না তখন। এদিকে ফি না দিলে অনেক ঝামেলা হবে, আবার ভর্তি হতে হবে বা এই জাতীয় জটিলতা হবে। আমি তখন সামান্য হলেও জড়িত ছিলাম রাজনীতির সাথে। আমাদেরকে এক ছাত্রনেতা (নাম বলছি না) বর্ধিত ফি দিতে বারন করলেন। প্রচন্ড মারামারি হোল। পরে বেশি বেতন দিতে হোল, এমন কিছু বেশি নয়। প্রচন্ড ভিড় ঠেলে প্রায় সারাদিন লেগেছিল এটা করতে।

ঢাকা কলেজের যারা বেতন নিতেন বা এডমিনের কাজ করতেন আমরা তাঁদের মামু বলতাম। এরকম এক মামুর সাথে ভালো খাতির ছিল। উনি পরে বললেন যে ছাত্রনেতারা নাকি বর্ধিত বেতন আগেই দিয়ে দিয়েছেন, অন্য আরেক মামুর মাধ্যমে। এইটা হোল আমাদের নেতাদের চরিত্র।

এত কিছু লেখার মানে হচ্ছে, আমরা এমন একটা দেশে বাস করছি যেখানে ন্যায্য কিছুই আপনা আপনি হয় না, হত্যার বিচারের জন্য অপেক্ষা করতে হয় বছরের পর বছর ধরে। বিদ্রোহ না হওয়া পর্যন্ত আমরা জানতে পারি না সীমান্তের পাহারাদারদের ক্ষোভ, ধর্ষণকারীরা ছাত্র আন্দোলনা না হওয়া পর্যন্ত সেঞ্চুরির উল্লাস করে...গাড়ি ভাঙ্গার পেছনের যুক্তি আমি দেখতে পাই...আগে অনাচারগুলো সঠিক নিয়মে বন্ধ হোক, গাড়ি ভাঙ্গাও বন্ধ হয়ে যাবে আপনা আপনি।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

আমাদের পুরো রাষ্ট্র বা দলীয় ব্যবস্থা একেবারেই এককেন্দ্রিক তাই জনগণ ঐরকম ব্যানার লেখে, আর আমি আর কাকে লিখবো বেচারা অভিভাবক আর শিক্ষকদের। ভালো থাকবেন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

হিমেল নাগ রানা এর ছবি

আমার মনে হয় একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার আপনাদের নজর এড়িয়ে যাচ্ছে! যারা আন্দোলন করলো তাদের কোনো নেতা বা নেতৃস্থানীয় কাউকে কি মিডিয়াতে দেখা গেছে ... আমি যতটুকু দেখেছি তাতে আমার মনে হয়েছে এটা পুরো হুজুগের উপর ঘটেছে অথবা master of puppet is out of the scene. আমার সন্দেহবাতিক নেই এবং আমি সংশয়বাদী নই। কিন্তু অতীতের experience আমাকে এর ভালো কিছু শেখাতে পারেনি। ঢাকা ভার্সিটিতে এর থেকে সামান্য ঘটনাতেও ভিডিও ফুটেজ এর ব্যবহার ঘটেছে সেটা আমি ভুলিনি।

প্রাইভেট ভার্সিটির ছাত্রদের তাদের প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে আমরা আগেও দেখেছি -- সরকারের সিদ্ধান্তটা যেমন ছিল তাতে করে এবারও সেরকম কিছু হবার আশা করেছিলাম -- কিন্তু এবারের ঘটনাটা আমার অন্যরকম লেগেছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি ভার্সিটির উপর ভ্যাট এর সমর্থন করি কিন্তু ছাত্রদের উপর না! কখনোই না!

বাংলাদেশের পুলিশ তাদের নাৎসী অন্তঃকরণ ছাড়তে পারেনি। কবে পারবে সেটাও জানি না!

সবাই ভালো থাকবেন!

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

আমার মনে হয়না এর পিছে কোন ষড়যন্ত্র আছে। বরং একদিক দিয়ে আমি খুশী, প্রতিষ্ঠান এদের ডরপুক বানানোর চেষ্টা করেছে সুন্দর ভবিষ্যতের ম্যাজিক ফ্যানটাম দেখিয়ে, কিন্তু ওরা ঐ কাপুরুষ তৈরীর কারখানার অচলায়তন ভেঙ্গে চলে এসেছে জীবনের সচলায়তনে। শুধু বউ বা প্রেমিকার হাতে মার খাওয়ার জন্য যে কারিকুলাম, তা অগ্রাহ্য করে পুলিশের মার খাবার যে পৌরুষ এরা দেখিয়েছে, দেশ বিপদে পড়লে এরা এখন কাজে আসবে। আমরা ভাবতাম ওরা একেবারেই ছায়ানট হয়ে যাচ্ছে কীনা, দেখলাম না এরা সুর্যসেনের শক্তিটা রাখে। আর দেখানোর দরকার নাই। বুঝছি এরা ব্রেভহার্ট। ব্রাভো।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

দেশে প্রয়োজনের তুলনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা যে অপ্রতুল সেটা সবাই জানেন। সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা একেবারেই হাতে গোনা। এমন অবস্থায় প্রাইভেট স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটি গড়ে ওঠাটাই স্বাভাবিক, যৌক্তিক ও কাম্য। এইসব প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ এই ছুঁতা ওই ছুঁতায় হরহামেশা শিক্ষার্থীদের বাবা-মার গলা কাটেন। তাদের পাশাপাশি সরকারও বাবা-মাদের গলা কাটায় নামলে কী বলা উচিত?

প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ফীতে ভ্যাট বসানো হল, আন্দোলন হল, প্রত্যাহার করা হল বা হবে। আর বেসরকারী স্কুলে এই ভ্যাট বসে আছে গত তিন বছর ধরে। স্কুলের বাচ্চাদের বাবা-মায়েরা তো আর হোমড়া-চোমড়াদের ডেকে সেমিনার আয়োজন বা রাস্তা বন্ধ করে গাড়ি ভাঙতে পারেন না তাই তাঁদের কিল খেয়ে কিল হজম করতে হয়। সরকারের এক মন্ত্রণালয়ের কাছে শিক্ষা হচ্ছে "সুযোগ", আরেক মন্ত্রণালয়ের কাছে "পণ্য"। আবার ভোট চাইতে গেলে শিক্ষা "অধিকার" হয়ে যায়। সুযোগওয়ালারা প্রচার মাধ্যমে গলাবাজি করে যাবেন অধিকারের ভাব ধরে, আর এই ফাঁকে পণ্যওয়ালা আমজনতার পকেট কেটে যাবেন।

কর আদায়ে দক্ষতা বাড়ানোর বদলে নিত্যনতুন করের ক্ষেত্র আবিষ্কার (horizontal expansion) - বিশেষতঃ মৌলিক অধিকারে পড়ে এমনসব বিষয়ে বা করের সীমা বৃদ্ধি (vertical expansion) করলে করারোপের ক্ষেত্রে মানুষের মনোভাব ঋণাত্বকই হবে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

এতগুলো পয়সা গচ্ছা দিয়ে বাচ্চাকে ইংরেজী শেখানোর দরকার কী সেন্ট জোসেফ বা আইডিয়ালে পড়ে অনেকদূর গেছে ছেলেরা, ইংলিশ মিডিয়ামের কোন ছাত্র মহাকাশ অভিযানে বা চন্দ্র বিজ্ঞানে দেখলাম না, কিছু ইংরেজী শুধু বলতে পারা(যেহেতু দাপ্তরিক চিঠি ছাড়া আর কোন লেখা দেখিনি কোথাও) কয়েকজন আংলো বাঙ্গালী ছোট করে চুল কাটা মহিলা, মুম্বাই-করাচীর পারসী মহিলাদের মত করে কথা বলে যারা, তারা অসহায় অভিভাবকদের অসচেতনতা ও স্ট্যাটাস সিম্বল রক্ষার ইঁদুর দৌড়ের সুযোগ নিয়ে অনৈতিকভাবে সার্টিফিকেট বিক্রী করছেন। যারা পরে ভালো করছে তারা প্রতিষ্ঠানের কারণে নয়, এবাভ এভারেজ বলে। ৫০ সালের বিক্রমপুরের ছেলেরা গ্রামের স্কুলে পড়ে তারপর অক্সফোর্ডে যাদু দেখিয়েছে। তাই ইংরেজী শেখানোর নামে মধ্যবিত্তকে লুন্ঠন করা এই বেনিয়া মহিলাদের নানা রকম দোকান খোলার কৌটিল্যকথা নিয়ে কথা বলা দরকার।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ব্যাপারটি কিন্তু শুধু ইংরেজী শেখানোতে সীমাবদ্ধ নয়। কেন নয় একটু খতিয়ে দেখি।

১. খোদ ঢাকা শহরেই মোট শিশুর তুলনায় মাধ্যম নির্বিশেষে স্কুলের সংখ্যা কম। সেন্ট জোসেফ বা আইডিয়ালের সীট সংখ্যা অসীম নয়। সেখানে যারা সুযোগ পাবেনা তারা কোথায় যাবে?

২. আমি নিজে যে স্কুলে পড়েছি সেখানে আমাদের সময় প্রতি ক্লাসে (সেকশনে) ছাত্রের সংখ্যা ছিল ৪৫। আর এখন সংখ্যাটা ২০০। শিক্ষক কিন্তু ঐ একজনই। আমরা কি আশা করতে পারি ৪৫ জন শিক্ষার্থী তাঁর কাছ থেকে যে মনোযোগ ও পরিচর্যা পেত এখন ২০০ জন সেই একই মাপের মনোযোগ ও পরিচর্যা পাবে? তাহলে, শুধুমাত্র ছাত্র সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় একই স্কুলের আউটপুটের মান কিন্তু নেমে গেল।

৩. আমরা স্কুলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ক্লাসরুম পাইনি, এমনকি বৈদ্যুতিক পাখাও। তবু আমাদের খেলার মাঠ ছিল, বড় লাইব্রেরী ছিল, সহপাঠক্রমিক কার্যক্রম চালানোর জন্য অডিটোরিয়াম ছিল। আর এখনকার স্কুলগুলো ভাড়া বাসায় মুরগীর খুপড়ির মত। তাই যেসব স্কুলে এই সুবিধাগুলো নূন্যতম মাত্রায় আছে সেখানে অভিভাবকেরা ভীড় জমাবেন সেটাই স্বাভাবিক - তা যে মাধ্যমেরই হোক। শিক্ষা বেনিয়ারা সেখানে ইংরেজী মাধ্যমের তকমা লাগালে অসহায় অভিভাবকের কী করার আছে?

৪. বাংলা মাধ্যমের কথাই ধরুন, সেখানে এখনএসএসসি, এইচএসসিতে সেন্ট জোসেফ-ভিকারুন্নিসা-হলিক্রস-নটরডেমদেরই কিন্তু জয়জয়কার। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমগুলোতেও তাদের ভীড়ই বেশি। অন্ততঃ দেশের দুটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া আমার অভিজ্ঞতা তাই বলে। বিক্রমপুরের গ্রামের ম্যাজিক বয় এখনো আছে - তবে ব্যতিক্রম হিসাবে, সাধারণ ঘটনা হিসাবে নয়। মাধ্যম নির্বিশেষে শিক্ষাকে এভাবে বাণিজ্যের লোহার খাঁচায় ঢোকানো হয়েছে।

৫. স্কুল গেটে আড্ডা দেয়া মা-মাসীদের প্রসঙ্গে কিছু বলছিনা। এই পোস্টের বা আমার উত্থাপিত বিষয়ের সাথে তা খুব প্রাসঙ্গিক নয়।

৬. আমি যেখানে থাকি তাতে আমার সন্তানকে সেন্ট জোসেফ বা আইডিয়ালে পড়াতে গেলে প্রতিদিন প্রায় পাঁচশ টাকা করে সিএনজি ভাড়া দিতে হবে। বাসে যাওয়া যাবেনা কারণ তাতে দুই বার বাস বদলাতে হবে এবং অনেকটা পথ হাঁটতে হবে। ইদানিংকালে আপনার ঢাকার লোকাল বাসে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থাকলে আপনি বুঝতে পারবেন বাচ্চা নিয়ে বাসে ওঠা ও ভ্রমণ করা কতটুকু অসম্ভব। রিক্‌শাতেও যাওয়া যাবেনা কারণ, অনেক পথেই রিক্‌শা চলাচল বন্ধ। তাহলে আমি কি মাসে সাড়ে বারো হাজার টাকা খরচ করে (যদি সিএনজিচালক মহারাজ ঐ ভাড়ায় আমাদের নিতে রাজি হন), প্রতিদিন যাতায়তে তিন/চার ঘন্টা ব্যয় করে আমার সন্তানকে সেন্ট জোসেফ/আইডিয়ালে পড়াব নাকি দশ টাকা রিক্‌শা ভাড়া ব্যয় হয় এমন দূরত্বে তিন হাজার টাকা বেতন দিয়ে কাছের মোটামুটি মানের ইংরেজী মাধ্যমের স্কুলটাতে পড়াবো?

৭. এভাবে ইংরেজী মাধ্যমে পড়ুয়ারা সব রাঙামুলো হবে তা নয়। আমরা চাই বা না চাই অবস্থাগত কারণেই এদের সংখ্যা দিন দিন বাড়বে। এবং উচ্চ শিক্ষায়তনে এককালে যারা মাইক্রোস্কোপিক গ্রুপ ছিল একসময় তারা অনুপেক্ষণীয় আকারের গ্রুপ হবে। আজ থেকে পনের-বিশ বছর পরে ইংরেজী-বাংলা মাধ্যমের আউটপুটদের এককালীন সংখ্যাতাত্ত্বিক এই পার্থক্যটা দূর হয়ে যাবে।

৮. খোদ সরকার এখন সরকারী-বেসরকারী স্কুলগুলোতে (সব স্কুল নয়) ইংলিশ ভার্সান বলে বোর্ডের শিক্ষা চালু করেছে। ক্যাডেট কলেজগুলোতেও ইংরেজী মাধ্যমেই শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। এর কারণটা কী?

৯. অপ্রতুল সংখ্যক সরকারী শিক্ষায়তণের বা বাংলা মাধ্যমের শিক্ষায়তণের কারণে যে শিশুটি ইংরেজী মাধ্যমে পড়তে বাধ্য হল তার অভিভাবকের উপর ভ্যাটের বোঝা চাপিয়ে দেয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত হল? শিক্ষা তো মানুষের মৌলিক অধিকার, সেখানে "মূল্য সংযোজন কর" কী যুক্তিতে বসে? এটা কী "ভাত দেবার ভাতার না, কিল মারার গোঁসাই" হয়ে গেল না? অবশ্য যে রাষ্ট্র তার শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ দুধ উৎপাদন করতে না পারার পরও আমদানী করা গুঁড়া দুধের উপর উচ্চ হারের শুল্ক* বসায় সে রাষ্ট্র শিক্ষার উপর "মূল্য সংযোজন কর" বসাবে সেটাই স্বাভাবিক। খুব খেয়াল করে, "মূল্য সংযোজন কর" কিন্তু।

* আমার জানা মতে গুঁড়া দুধের আমদানী শুল্ক এই রকম - ২৫% কাস্টমস্‌ ডিউটি + ৫% রেগুলেটরি ডিউটি + ২০% সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি + ১৫% ভ্যাট + ১% পিএসআই চার্জ + ৫% অ্যাডভান্স ইনকাম ট্যাক্স + ৩% অ্যাডভান্স ট্রেড ভ্যাট = মোট প্রায় ৯০% (হিসাবটা সরল যোগ নয়, এগুলোর অনেকে একটা আরেকটার ঘাড়ে চড়ে)। আমার জানায় ভুল থাকলে শুধরে দেবেন। সংশ্লিষ্ট এইচএস কোড ০৪০২.১০.১০, ০৪০২.২১.১০, ০৪০২.২৯.১০।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

সহমত। সত্যি মনে হয় একটা সমস্যা নিয়ে ভাবতে শুরু করলে তারপর সমস্যার ল্যাবিরিন্থে ঘুরপাক খাওয়া। আপনার বিশ্লেষণ খুব যৌক্তিক। তবে বাচ্চাকে বাসার কাছে কোন স্কুলে দিয়ে, জ্যামে যে সময় নষ্ট হত ঐ সময়টা বাসায় পড়ালে হয়, স্কুলের পিছে খরচ না করে প্রাইভেট টিউটর রাখলে(রবিঠাকুরের মত একাধিক টিঊটরের যন্ত্রণা না দিয়ে অবশ্য) আরেকটা মেধাবী ছেলেরও উপকার হয়। আর বাপ-মা দুজনেই শিক্ষিত প্রজন্ম এসে গেছে যখন তখন আর পয়সাটা পারসী ম্যাডামদের দোকানে দিয়ে লাভ কী। খুব দুর্বল বিকল্প, তবে লাগসই হতে পারে।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

এই মহামারি থেকে কে বাঁচাবে আমাদের শিশুদের?
আজিম।

ঠোটকাঁটা  এর ছবি

আমার মনে হয় প্রাইভেট ইঊনিভার্সিটিতে ৪% কেন, ৫০% শুল্ক দেওয়া উচিত। এখানে যারা পড়ে তার সবাই ধণী পরিবারের সন্তান এবং তারা যদি প্রাইভেটে না পড়ত তাহলে হয়তোবা বিদেশে পড়ত। সুতরাং তাদের ভ্যাটের যে টাকা বাঁচবে এই ভ্যাট কমানোয় তা তারা হয়তো কোন ডিজুস ফেস্টিভাল বা বিশাল বিয়ার পার্টি করে শেষ করবে। আর বাংলাদেশে যারা গরীব ও মেধাবী পরিবারের ছেলেমেয়ে তারা কোন না কোন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, এখন দেশে ২৩ টা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আর মেডিকেল কলেজেগুলো তো আছেই। কেঊ কেঊ লাখ লাখ টাকা খরচ করে প্রাইভেটে পড়তে যায়না। আর প্রাইভেটে তো শিক্ষার নামে অধিকাংশই সার্টিফিকেট বাণিজ়্য করে, তো আগে ধনীর দুলালেরা যে সার্টিফেকেট দুই টাকা দিয়ে কিনত তা চার টাকা দিয়ে কিনতা সমস্যা কি? নাহলে তো ওটা বিদেশ থেকেই কিনে নিয়ে আসত। আর সবাইকে গাধার পালের মত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ দিতে হবে, লাখ লাখ ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিবিএর সিট হবে ভার্সিটিতে আর সরকার তাদের পুষবে এমন কোন দেশেই নেই পৃথিবীর, সরকার শুধুমাত্র যারা মেধাবী তাদেরই সুযোগ করে দেবে। আর যারা এই পদ্ধতিতে ইঞ্জনিয়ারিং অথবা বিবিএতে সরকারিতে চান্স পায়না অথচ পড়ার খুব শখ তারাই যায় বেসরকারীতে , বলাবাহুল্য এদের মধ্যে ধনীর দুলালই বেশি যারা ডিজ়ে পার্টি আর বিয়ার ক্লাবে পড়ে থাকতে বেশি অভ্যস্ত। তোমরা নিজের টাকা দিয়ে দিয়ে ডিগ্রি কিনবা এখানে আবার সরকারের কাছ সাহায্য চাও??? যে টাকা দিয়ে তোমরা নিজেদের পাবলিসিটে কর সব পত্রিকা আর অন্যান্য মাধ্যমে সেই টাকাই ব্যবহার করলেই তো হয়।পত্রিকা খুললে দেখা যায় খালি দেখা যায় প্রাইভেট আর প্রাইভেটের নিঊজ়, আজ অমুক প্রাইভেটে বিশাল লুডূ উৎসব আর কাল অমুক প্রাইভেটে বিশাল কুৎকুতের আসর। মনে হয় যেন প্রাইভেট গুলোই যেন বাংলাদেশের অক্ষফোর্ড আর হার্ভার্ড আর আমরা সরকারি থেকে ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সের নিঊজ নিয়ে গেলেও এরা ছাপেনা, টাকা চায়, ইনভাইটেশন কার্ড দিলেও আসেনা ।

হাসিব এর ছবি

ভাইজান মনে হয় রিভার্স। মডারেটরদের অনুরোধ করছি এজাতীয় মন্তব্য না ছাড়ার জন্য।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

রিভার্স এখন খুব পপুলার স্ট্র্যাটেজি, তবে রিভার্স খেলার সময় খেলোয়াড় যদি নিজেকে কনভিন্স করতে না পারে, তাইলে হাতে-নাতে কট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। অভিনয় মানে সেই চরিত্রের সাথে মিশে যাওয়া। চোখ টিপি

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

এটা তো মনে হচ্ছে মনের ঝাল ঝাড়া মন্তব্য হয়ে গেল। ভেতরে ক্রোধ তৈরি হলে মন্তব্য না করে বাইরে ঘুরতে যাওয়া উচিত। অপ্রাসঙ্গিক আলোচনাতে সময় নষ্ট হয়। বিভাজন আর জাত ক্রোধ চেপে রেখে বরং নিজেকে তৈরী করা ভালো, তাতে আর অন্যের পার্টি দেখে চোখ টাটাবে না বরং নিজের জীবনটাই সবচেয়ে বড় উতসব হয়ে উঠবে। তবে চারপাশে অনাহারী মানুষ রেখে হজ্জে যাওয়া বা পার্টি করা খুব মানবিক নয়, কেউ করলে সেটা তার ব্যক্তিগত রুচির ব্যাপার, অযথা কেয়ার অফ কলতলা ঝগড়া টেনে আনলে বৃথা ক্যালরি ক্ষয় হয়, ভালো থাকবেন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

নীল রোদ্দুর এর ছবি

এইটা হল, অহিংস বিপ্লবের অনিয়ন্ত্রিত অবস্থা। গান্ধীজি অহিংস বিপ্লবের থিওরী দিয়েছিলেন, তার জীবদ্দশাতেই থিওরীর সামনে থেকে "অ" শব্দটা তুলে দিয়েছিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি। ফলাফলে দুবার স্বাধীন হলাম, স্বাধীনতা পেলাম না। তাই আজো, অহিংস আন্দোলনের ঐতিহ্য অনুকরণ করে, কথায় কথায় হরতাল ডাকে আমাদের রাজনৈতিক যুধিষ্ঠিররা, আর হরতালে পুলিশ আর রাজনৈতিক দল, লাঠিখেলা করে মিলিত ভাবে, চোখ দিয়ে আবেগ ঝরাতে কাঁদুনে গ্যাস আর মাঝে মাঝেই উপহার স্বরূপ গুলি বিনিময় করে। এই হল বর্তমান প্রথা।

মাঝখান থেকে এখন আর বটের ছায়া মেধাবী শিক্ষার্থীর শানিত কথার ঝলসানি লাগা সতেজ ভাষন ঝরে না, সরাসরি হাতে লাঠি, হকিস্টিক আর গাড়ি ভাংচুর! সাথে তারাও কিছু নিয়ে যায়। পুলিশের কাছ থেকে বেধড়ক মার। এটা এখন সংস্কৃতি, চক্র ভেঙ্গে বেরুনো কঠিন।

মাসকাওয়াথ ভাইয়া, আপনার ব্লগে কমেন্ট করতে আসলে ভয় লাগে, আমি ছোট্ট মানুষ! কিন্তু আপনার হাতে তো সাংবাদিকের কলম আছে, আছে সাংবাদিক বিতার্তিক বন্ধুরা। দিন না বদলে এই নোংরা সংস্কৃতিটা। গান্ধীজিকে আমি শ্রদ্ধা না করে পারিনা। অহিংসা দিয়ে ব্রিটিশ তাড়ানোর মত বেপরোয়া সাহস উনার ছিলো। কিন্তু আমরা তো পারিনি, অহিংস হতে। সবাই তো উনার মত সাধক না। আমরা নিয়ে নিয়েছি ক্রিয়া পরিবর্তে প্রতিক্রিয়াটুকু। মন খারাপ

আর আমাদের বিতার্কিক বন্ধুরা! বিতর্ক ছিল আমাদের কাছে নান্দনিক সৌন্দর্যের মত। কত জলন্ত ইস্যু নিয়ে বিতর্ক করেছি জীবনে, শান দিয়েছি যুক্তিতে, দর্শক তো ছিলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাদেরই বিতার্কিক বন্ধুরা, অন্যরা সাধুবাদ জানালেও, কজন আসে, যুক্তির আসরের যুক্তিগুলো মাথায় নিয়ে সমাজকে বদলে দিতে? বিতর্ক একটা আন্দোলনের চেয়েও অনেক বেশী প্রতিযোগিতা হয়ে গেছে, যেখানে নিজের শ্রেষ্ঠত্বই সবচেয়ে বড় কথা। তুষার ভাই, বুলবুল ভাই উনাদের মত বিখ্যাত বিতার্কিকদের কখনই দেখিনা, কোন স্নিগ্ধ আন্দোলনের সামনের সারিতে, যে আন্দোলন সমাজ বদলাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ!

কিরণ ভাই টেলিভিশন কেন্দ্রিক বিতর্ক ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন, যে বিতর্কগুলো ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে আধাঘন্টার নাটক মনে হয়। সেইসব নাটকে অংশ নিয়েছিলাম বলেই আজ এই অনুভূতি। আমি এবং আমার সব বিতার্কিক বন্ধুরাই আজ কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ ডাক্তার, কেউ ইকোনমিক্সে পাশ করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কেউবা এমবিএ করে দিনে দিনে আরো ভালো ব্যবসা বোদ্ধা হওয়ার অপেক্ষায়। কি হয়েছে, বিতর্ক করে, খুব অল্প কিছু মানুষ ছাড়া চোখ মেলাতে পারিনি কারোরই।

তাই আপনাদেরই অনুরোধ, দিন না বদলে অথবা নিশ্চিহ্ন করে কিছু অপসংস্কৃতি! কিছু কলংক!
--------------------------------------------------------
শিশির ভেজা ঘাষ, ভোর বেলা যার ডগায় জমে থাকে একবিন্দু মুক্তো, হাসে মুক্তোটা, ঠিক শিশুর মত করে...

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

হিমু এর ছবি

গান্ধীর অহিংস নীতি একটা ভাঁওতাবাজি। গান্ধী নিজেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ইংরেজের সৈন্য হবার জন্যে যুবকদের আহ্বান জানিয়ে সারা ভারত চষে বেড়িয়েছিলেন। হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার সময় বলেছিলেন, ভারতবর্ষ স্বাধীন হবে, আর দশ লক্ষ লোক তার জন্যে মৃত্যুবরণ করবে না [সূত্রঃ বাঙালনামা, তপন রায়চৌধুরী]? ওনার অহিংসা ফেটে বের হতো যখন ভারতবাসী ইংরেজ প্যাঁদাতো। এক বৃটিশ এমপি একবার ভারত পরিদর্শন করে মন্তব্য করেছিলেন, বৃটিশ ভারতের সবচেয়ে বড় পোলিসম্যান হচ্ছেন গান্ধী।

সহিংস প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অহিংসা একটা ভ্রান্ত ধারণা।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

হিমুর সঙ্গে সহমত, সমাজ যেখানে পৌঁছেছে সেইখানে আর পুতু পুতু করে চলেনা। কেউ নির্ধারণ করবেনা, সম্ভবত একক মানুষ এক একজন শান্ত মানুষ দেখতে দেখতে দেখতে ঠাস করে চড় লাগাতে শুরু করবে, আর ব্যাপারটা এত যৌক্তিক হতে শুরু করেছে যে কেউ আর প্রশ্ন করবে না ভাই ক্যান চড় দিলেন, তবে গান্ধীদের ভুল থেকে শিখেছি আমরা, তাই উনাকে মাফ করে দেয়া যায়না।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

নৈরাশ্যের কোন কথা শুনতে চাইনা, বিতর্কের কলতলার ঝগড়া নিয়ে কথা না বলে, বরং ব্লগ বিতর্কে নিজের ভাবনার পক্ষে বিতর্ক করা দরকার। দেশের বাইরে থাকলে দেশপ্রেম বাড়ে, আর্মস্ট্রং চাঁদ থেকে পৃথিবীর সৌন্দর্য দেখে যেমন নতুন করে পৃথিবীর প্রেমে পড়েছিলেন। দেশটাকে আয়নায় দেখার সুযোগ পাই আমরা। এক্সরে রিপোর্ট টা দেখে এতো মেজাজ খারাপ হয় আমরা খিস্তি করি। ঢাকায় কিন্তু জ্যাম বাদ দিলে জীবনটা খুব রঙ্গিন। ফ্রড এন্ড ফ্রয়েড তো আছেই, কিন্তু আজকাল স্টেইট নিপাট ভালো ছেলের সংখ্যা বাড়ছে। কারণ পরিবর্তনের যাদুর কাঠিটা আর কোন পেশার লোকের হাতে নেই। ব্যক্তি মানুষি এই পরিবর্তনের সূচক, আপনি, হিমু, হাসিব, ধূগো,শিমূল...। দিস ইজ আ মিরাকেল, বিলিভ ইট অর নট।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

নীল রোদ্দুর এর ছবি

We are committed to change! But this term should not be only "WE". It should be, "We all are committed to change!"

তাহলেই বদলাবে সমাজ... আমি আরো আশাবাদী হতে চাই, সেই আশার আরো শক্তিশালী ভিত চাই।
--------------------------------------------------------
শিশির ভেজা ঘাষ, ভোর বেলা যার ডগায় জমে থাকে একবিন্দু মুক্তো, হাসে মুক্তোটা, ঠিক শিশুর মত করে...

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

নীল রোদ্দুর এর ছবি

হিমু ভাই,
গান্ধীজি আক্ষরিক অর্থেই হাফ নেকেড ফকির ছিলেন। উনি যা করেছেন তা ধর্মযুদ্ধ! ভারতবর্ষের রাজনিতীতে ধর্মের অনুপ্রবেশের মূল কারিগর উনিই। যার ফলাফল ত্রিখন্ড ভারত! উতপ্ত বাংলাদেশ। সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি আমরাই। কিন্তু এটাও সত্যি, উনি জটিল রাজনীতিবিদও ছিলেন। ভারতবাসীর ইংরেজ প্যাদানীতে যদি তার অহিংসা রক্ষাকবজ না হয়ে দাঁড়াতো, ভারতের স্বাধীনতা আসত না। অনেকটা ঘুষ দেয়ার মত কূটকৌশল ব্যবহার করে ইংরেজদের আলোচনার টেবিলে বসিয়েছেন। আমি উনাকে ঘৃনা করি ধর্মযুদ্ধের জন্য। আজ দেড়শ বছরেরও বেশী সময় পরেও আমরা জ্বলছি সেই আগুনে। কিন্তু আমি একথাও অস্বীকার করে পারিনা, অমন সাম্রাজ্যবাদীদের সামনে, অহিংসা নীতির মত কূটকৌশল ছাড়া কটা অস্ত্র ছিল আমাদের তূণে? ব্রিটিশরা চাইলে, হিন্দু মুসলিম দাঙ্গায় যত মানুষ মরেছে, তার চেয়ে দশগুন মানুষ বুলেটে নিঃশেষ করে দিতে পারতো। ওদের রাজনীতিতে যে মানবতাবোধ বলে কোন শব্দ নেই, তার প্রমানের তো অভাব নাই ভাইয়া।

আমি গান্ধীজিকে শ্রদ্ধা করি কেবল মাত্র ব্রিটিশ তাড়াতে পারার মত ক্যাটালিস্ট হিসেবে দূর্দান্ত ভূমিকা রাখার জন্য।.
--------------------------------------------------------
শিশির ভেজা ঘাষ, ভোর বেলা যার ডগায় জমে থাকে একবিন্দু মুক্তো, হাসে মুক্তোটা, ঠিক শিশুর মত করে...

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

হিমু এর ছবি

ভারতবর্ষে অহিংসা কোনো রক্ষাকবচ ছিলো নাকি? গান্ধী অহিংসা অহিংসা করে ইংরেজের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের গোড়া নষ্ট করেছেন শুধু। আদপে উনি অহিংসার নামে একটি জিনিসই রক্ষা করেছিলেন, ঘনশ্যামদাস বিড়লার অর্থনৈতিক ইন্টারেস্ট।

সশস্ত্র সংগ্রাম হলে কত প্রাণহানি হতো, সেটা দশগুণ একশোগুণ দিয়ে বলা সম্ভব নয়। ব্রিটিশরা তো কোনো বুলেট খরচ না করেই ৪১ সালে বাংলার তিন মিলিয়ন মানুষকে না খাইয়ে হত্যা করেছিলো।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

নীল রোদ্দুর এর ছবি

ভাইয়া,
ভারতের স্বাধীনতায় গান্ধীর ভূমিকা নিয়ে আর কথা বাড়াবো না। আপনিই বলে দিলেন, ইংরেজরা বুলেট না খরচ করেও তিন লাখ মানুষ মারতে পারে। তাহলে কোন মন্ত্রে তারা প্লেয়িং গ্রাউন্ড, ইন্ডিয়া ছেড়ে চলে গেল?

আমি আসলেই রহস্যটা ধরতে পারছি না বলেই শুধালাম। .
--------------------------------------------------------
শিশির ভেজা ঘাষ, ভোর বেলা যার ডগায় জমে থাকে একবিন্দু মুক্তো, হাসে মুক্তোটা, ঠিক শিশুর মত করে...

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

হিমু এর ছবি

অহিংসার মন্ত্রে ভারত ছেড়ে চলে গিয়েছিলো নাকি? তো এই মন্ত্র তো গান্ধী কয়েক দশক ধরে জপছিলেন, কেন মন্ত্র কাজে লাগতে লাগতে ১৯৪৭ সাল এসে পড়লো? ১৯২০ সালেই কেন অহিংসার মন্ত্রের বাড়ি খেয়ে চিৎপটাং হয়ে পড়েনি?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

নীল রোদ্দুর এর ছবি

এটা তো উত্তর নয় ভাইয়া, আরেকটা প্রশ্ন! হাসি.
--------------------------------------------------------
শিশির ভেজা ঘাষ, ভোর বেলা যার ডগায় জমে থাকে একবিন্দু মুক্তো, হাসে মুক্তোটা, ঠিক শিশুর মত করে...

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

হিমু এর ছবি

হ্যাঁ, অহিংসা মন্ত্রে ইংরেজ ভারত ছেড়ে চলে গেছে, এরকম একটা স্বীকার্যকে প্রশ্ন করছি।

ইংরেজ একটি কারণে বা এক ব্যক্তির দাপটে ভারত ছেড়ে চলে যায়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গোটা পৃথিবীতেই উপনিবেশগুলো দখলদারদের হাতছাড়া হয়। ভারত ছাড়ে ইংরেজ, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ছাড়ে ফরাসী আর ওলন্দাজ, চীন ছাড়ে জাপান। উপনিবেশ চালিয়ে নিতে গেলে যে শক্তির প্রয়োজন হয়, সেই শক্তি প্রয়োগের সামর্থ্য ফুরিয়েছিলো অনেক রাষ্ট্রশক্তির।

গান্ধীর সাথে ইংরেজের সমঝোতা হয়েছিলো, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জনবল ও সম্পদ দিয়ে সমর্থন যোগালে ইংরেজ নিরিবিলি ক্ষমতা হস্তান্তর করে চলে যাবে। গান্ধী বলেছিলেন, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভস্ম থেকে স্বাধীন ভারতকে তুলে আনতে চাই না। আর ভারতে যখন দাঙ্গার আগুন জ্বলছে, গান্ধী তখন কী বাজাচ্ছিলেন আমি জানি না, সম্ভবত কোনো অহিংস ভুভুজেলা।

দুই দুইটা বিশ্বযুদ্ধে ইংরেজের জন্যে কামানের খড় যোগান দিয়েছিলেন গান্ধী। আর আমরা তার অহিংসার বুলি জপতে জপতে হয়রান।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

নীল রোদ্দুর এর ছবি

হুম, চার্চিল জায়গামত থাকলে আসলেই খেলা জমত। হাসি
একক শক্তি কখনই ভারত স্বাধীন করেনি, করেছে তখনকার পুরো অবস্থাটা, ইংল্যান্ডের অর্থনৈতিক শক্তি কমে যাওয়া, ভারতের অমীমাংসাযোগ্য রাজনৈতিক অবস্থা, ব্রিটিশদের রাজনৈতিক মনোভাবের পরিবর্তন এবং সমগ্র ভারতজুড়ে স্বাধীনতার দাবী। নেহেরু, জিন্নাহ, গান্ধী, মাউন্টব্যাটেন, এমনকি এডুইনাও নিজ নিজ ভূমিকাটুকু পালন করেছে। কংগ্রেস, মুসলিম লীগের রাজনৈতিক সঙ্কট... সব, সব কিছু ভারতের স্বাধীনতার পিছনের কারন।

আর গান্ধী কি করছিলেন? ৭৭ বয়সের গান্ধী তখন অল্প কয়েকজন সংগীকে সাথে নিয়ে মুসলিম অধ্যুষিত গ্রাম গুলোতে পদযাত্রা করতে শুরু করেছিলেন, তাদের মন জয় করার উদ্দেশ্যে, যা ছিল রাজনৈতিক ভাবে চরম ব্যর্থ একটি পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপ বেশীদিন চলেনি, কংগ্রেসের দলীয় সিদ্ধান্তের কারণেই। তিনি থামতে বাধ্য হয়েছিলেন। তিনি তো জিন্নাহের হাতে সমস্ত ভারতের শাসনভার তুলে দেবার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন মাউন্টব্যাটেনকে। কংগ্রেসকে মানাতে পারেননি সে কথা। কংগ্রেস আর গান্ধীর মতাদর্শ হয়ে গিয়েছিল আলাদা।

তার আসলে ঐ বয়সে ভুভুজেলা বাজানোই ভালো ছিল, এইসব পাগলামী করার চেয়ে।

জহির রায়হানের একটা গল্প আছে না, সময়ের প্রয়োজনে। ব্যাপারটা আসলে তাই। ভারতবাসীর উপর গান্ধীর যে অসামান্য প্রভাব ছিল, তার যে কিছুটা হলেও (আসলে অনেকখানিই) ভারতের স্বাধীনতায় প্রভাব ছিল, তা না মেনে পারিনা।

কিন্তু যে সময়ের জন্য যা কার্যকর, তা আসলে পরবর্তী সময়ের জন্য অনুসরন করা ঠিক না। তাই এখন হরতাল করা, আমাদের জন্য আত্মঘাতী।

আমি গান্ধী, নেহেরু, জিন্নাহ, মাউন্টব্যাটেন, চার্চিল, কাউকেই ছোট করার অধিকার রাখি না, আমি তাদের সমসাময়িক ও নই, একি মতাদর্শেরও নই। তাদের প্রত্যেকের নিজস্ব মতাদর্শ ছিল, তার পিছনে তাদের নিজস্ব যুক্তি ছিল। যেমন আছে নীল রোদ্দুরের, মাসকাওয়াথ ভাইয়ের, হিমু ভাইয়ের। এক জনের সাথে আরেকজনেরটা না মিলতে পারে, কিন্তু কোনটাই ভিত্তিহীন নয়।
.
--------------------------------------------------------
শিশির ভেজা ঘাষ, ভোর বেলা যার ডগায় জমে থাকে একবিন্দু মুক্তো, হাসে মুক্তোটা, ঠিক শিশুর মত করে...

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

হিমু এর ছবি

হরতালের সাফাই গাইতে আমি মন্তব্যের ঝুল ধরে নিচে নামছি না। থিওরেটিক্যালি হরতালও একটা অহিংস ক্রিয়া, অসহযোগ। কিন্তু হিংসার বিপরীতে অহিংসার বুলি কপচানো যে একটা ধ্যাষ্টামো, সেটা পুনর্বার বিবৃত না করে পারছি না।

গান্ধী যত না ভারতবর্ষের মানুষের স্বার্থ রক্ষা করেছেন, তারচে বেশি রক্ষা করেছেন বিড়লাদের স্বার্থ। দুটি বিশ্বযুদ্ধেই বিড়লাদের মোট সম্পদ চতুর্গুণিত হয়েছিলো, ভারতবর্ষ অহিংস না থাকলে তা সম্ভব হতো না। ভারতবর্ষ বিভক্তও হয়েছে বিড়লা আর বিড়লাদের মুসলমান কাউন্টারপার্টদের স্বার্থরেখা ধরেই।

ছাগল বগলে নিয়ে বুড়া বয়সে গান্ধীজির হাঁটাহাঁটিকে স্টান্টবাজি ছাড়া আর কিছু মনে করি না। গাছের গোড়া কেটে আগায় পানি ঢালা নিরর্থক। যে অহিংসা দিন শেষে ভাইয়ের হাতে ভাইয়ের মৃত্যু ঘটায়, ভাইয়ের হাতে ভাইয়ের মৃত্যু দেখে যে অহিংসা নিশ্চুপ থাকে, সেই অহিংসার ভিত্তি যা-ই হোক, মূল্য শূন্য।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

অতিথি লেখক এর ছবি

সহমত। আমার চোখের সামনে অন্যায় হবে আর আমি অহিংস বলে আত্নতৃপ্তি নেবো, এইটা কোন কাজের কথা না।

হাম্মাদ আলি

স্পর্শ এর ছবি

আসলে নেতা তো সামরিক শাসকের মত চেপে বসা কিছু নয়। নেতার সৃষ্টি হয় সময়ের প্রয়োজনে। আর লোকে মানে বলেই। এবং একই সময়ে বিভিন্ন মতাদর্শের বিভিন্ন নেতাই থাকে। সাধারণ মানুষ যার মতকে সমর্থন দেয়। সেই নেতার সিদ্ধান্তগুলোই ফলপ্রসু হতে দেখি আমরা।

ধরেণ এই আপনার সাথে সহমত 'হিংসাবাদী' নেতা এবং সাধারণ জনগনও নিশ্চই ছিল তখনও। তারা তাদের মতাবলম্বনে 'সফল' হতে পারেনি বলেই গান্ধির অহিংসা মতবাদটাই বেশি আকটিভ হতে আমরা এখন দেখি।

আর অতীত-ভবিষ্যতের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নিলেও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হয় 'বর্তমানে' দাঁড়িয়ে। অতীত বা ভবিষ্যতে না। তাই ঐ সময়ের 'বর্তমান' ঐ সময় হিংসার চেয়ে অহিংসা কেই প্রায়োরিটি দিয়েছে। বলব আমি।

আর যেকোনো পরিস্থিতিতেই কিছু গোষ্টি ফায়দা লুটে নেয়। সেই ফায়দা লোটা দিয়ে সেই পরিস্থিতির পিছনে বৃহত্তর কারণসমূহ জাস্টিফাই করতে যাওয়া দুর্বল আপ্রোচ।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

হিমু এর ছবি

আর যেকোনো পরিস্থিতিতেই কিছু গোষ্টি ফায়দা লুটে নেয়। সেই ফায়দা লোটা দিয়ে সেই পরিস্থিতির পিছনে বৃহত্তর কারণসমূহ জাস্টিফাই করতে যাওয়া দুর্বল আপ্রোচ।

না। পরিস্থিতির পেছনে বৃহত্তর কারণ কোনটা, সেটা চিহ্নিত করতে না পারলে সব অ্যাপ্রোচই "দুর্বল" অ্যাপ্রোচ।

যে "অহিংসা"র নামে গান্ধী গলা শুকিয়েছেন, সেই অহিংসা ইংরেজের প্রতি অহিংসা। উনি বলেছেন, ওরা মারবে, আমরা মার খাবো। চরকা কাটবো। কদাচ লাঠি হাতে নেবো না। কিন্তু যখন ইংরেজের স্বার্থসিদ্ধির জন্যে সহিংস হতে হয়েছে [দুই দুইটি বিশ্বযুদ্ধে তিনি সক্রিয় ছিলেন ভারতীয় সৈন্য রিক্রুটের ব্যাপারে], তখন ওনার অহিংসা নীতি আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা শুরু হবার পর তিনি দাঙ্গা প্রশমনে কোনো ভূমিকাই নেননি। এই যে বিকট স্ববিরোধিতা, একে চিহ্নিত করা যদি দুর্বল অ্যাপ্রোচ হয়, তাহলে হোক। গান্ধীর নামের শরাব পিয়ে কেউ বেহুঁশ হয়ে পড়ে থাকার সবল অ্যাপ্রোচ নিয়ে থাকলেও আমার কোনো আপত্তি নাই।

"সহিংস" নেতা ছিলেন সুভাষ বসু, গান্ধী তাকে কংগ্রেস থেকে কনুই মেরে খেদিয়ে দিয়েছেন। এখন যদি আমরা বলি, জনগণ সুভাষ বসুকে মেনে নেয়নি, গান্ধীকে মেনে নিয়েছে, সেটা মোটা দাগে সত্য হবে, কিন্তু ভেতরে তাকালে তো আমি দেখবো, সহিংস পদ্ধতির বিরুদ্ধে গান্ধী রাজনীতি করেছেন। সেটা "ঘটনাক্রমে" ইংরেজের স্বার্থ আর বিড়লার স্বার্থ যে রক্ষা করেনি, তা ঘনশ্যামদাস বিড়লার কাছে লেখা গান্ধীর চিঠিগুলো পড়লে বোঝা যায়।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

গান্ধীজী প্রশমন বাতিকের শিকার ছিলেন, সম্ভবত ইংরেজের বেয়নেটের বাড়ি খেয়ে উনি ভেবেছিলেন এটা ভারতের মানুষ নিতে পারবে কিনা। গান্ধী না থাকলে দুটো লাভ হতে পারতো, এক। আপনার প্রত্যাশিত সশস্ত্র বিপ্লবে উইলিয়াম দূর্গের পতন ঘটতো। দুই। অস্ট্রেলিয়া হতো। আর থাকাতে এই অহিংস ঘোড়ার তিনটা ডিম ফুটে ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশ। তবে বিপ্লব কয়টা হয়েছে, রুশ-ফরাসী-ইরানী আর গোণায় ধরলে সাকাশভিলির গোলাপ বিপ্লব। ভারতের মানুষেরা যে রকম লোভী হয়ে উঠেছিলো, পরপর বৌদ্ধ-হিন্দু-মুসলিম-বৃটিশ দখলদারদের তোষণ করে করে, কলোনিয়াল বাই প্রডাক্ট চোরদের নিয়ে প্রোপিপল বিপ্লব করা সম্ভব কীনা। কেউ পারলে তাদের আগাম শুভেচ্ছা।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

প্রিয় নীল রোদ্দুর,
আপনি বিতর্ক করতেন তাই লেখা। আমি বেসরকারী ইউনিভার্সিটির কর্তৃপক্ষ,শিক্ষক,ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে চলতি একটা বিতর্কের সুত্রপাত করেছিলেন ব্লগের পাঠকদের সংলাপ শোনার আকাঙ্ক্ষায়। আমার চিন্তার এলোমেলো সিন্থেসিসগুলো নিয়ে এন্টিথিসিস তৈরী হলো চমতকার আড্ডায়। আমরা যখন থিসিস খুঁজছি তখন আপনি অতীত চর্চায় চলে গেলেন। গান্ধীজীর শবব্যবচ্ছেদ করলেন তাও ছাই থেকে। আলোচনা ডিরেইল্ড করার পঞ্চায়েতি কৌশল কোন বিতর্ক ওয়ার্কশপে শিখেছিলেন একটু বলবেন। আপনি এতো ভালো বিতার্কিক, অথচ অনুশীলন ভুলে আলোচনাকে গান্ধীজীর লাশকাটা ঘরে পৌঁছে দিলেন। আপনার বাসায় ভাগ্নীর ফ্রক তৈরির গজফিতা দিয়ে গান্ধীকে মাপতেই পারেন। ১৫ অগাস্ট সামনে রেখে গান্ধীজী কে নিয়ে একটা লেখা লিখুন, আমরা ওইদিন বরং উনাকে বলি দিই তাতে যদি আমাদের অন্ধ অক্ষম লোম ওঠা নেকড়ের জীবনটা রঙ্গিন হয়ে ওঠে খানিক, আপনার ঐ গান্ধীজী বার-বি-কিউতে আমি ছাগল বগলে নিয়ে আসবো। লিলিপুটদের গ্যালিভার স্লটারিং ইভনিং হিসেবে স্যাটারডে নাইট মন্দ হয়না।লেখাটা শনিবারে, সবিনয় অনুরোধ রইলো। তারপর অশোকের পাচালী বা ভক্তিগীতি থাকবে অফ পিক আওয়ারে। ওখানে গান্ধীর রিফিউলেরাল। সত্যাগ্রহের সত্যের খোঁজে।

ইতি

অন্যতম লিলিপুট

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

স্পর্শ এর ছবি

কিন্তু আমি দেখলাম তালি বাঁজছিলো বেশ কয়েকটা হাতেই। আরগুলো আপনি মিস করলেন? অবশ্য সবার দেখার চোখ ভিন্ন-ভিন্ন।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

স্পর্শ এর ছবি

আর আমিতো নীল রোদ্দুরের প্রথম মন্তব্যে অপ্রাসঙ্গিক কিছু দেখছি না।
আপনার পোস্টে বিতর্ক প্রসং আছে, সেটা এসেছে। আর আন্দোলন-ভাংচুর-রাস্তা-বন্ধকরা প্রসংগ থেকে অহিংসা-সহিংসা। আর সেই প্রসঙ্গে গান্ধী। মন্তব্য করার সময় আমরা অন্য অনেক লোকের নামই নিই। আপনি যেমন 'ম্যাকিয়াভেলি জ্বরে' ভুগেন। তেমনই।

কিন্তু সেই মন্তব্য থেকে শুধু গান্ধির শবটুকু খুঁড়ে বের করার দায়(যদি থেকে থাকে) তো আমি দেখতে পাচ্ছি সে মন্তব্যে হিমু ভাইয়ের রিপ্লাইয়ে।

আপনার এ ধরণের 'এলোমেলো চিন্তার' ধরণ নিয়ে নিয়ে 'থিসিস-এন্টিথিসিস' করার চেয়ে সুররিয়েলিস্টীক গল্প লেখা উত্তম। শুধু শুধু সহব্লগারের ভাগ্নির গজফিতা তাতে টানাটানির হাত থেকে রেহাই পায়।

খুবই বিরক্ত হয়েছি আপনার এই অবিবেচকের মত মন্তব্যে।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

আসলে নীল রোদ্দুরের প্রথম মন্তব্যটা পড়লে দেখবেন বিতর্কচর্চার একটা যোগসূত্র আছে, একজন বিতার্কিককে মাত্র পাঁচমিনিটে কথা শেষ করতে হয়, যুক্তিখন্ডনে রেফারেন্সে গেলেও দ্রুত মূল আলোচনায় ফিরে আসতে হয়। নীল-রোদ্দুর খুব ভালো বিতার্কিক ছিলেন, উনি জানেন, এখানে ব্লগ বিতর্কে এসে তার প্রসঙ্গান্তরে গিয়ে ফিরতে না পারায় আমি বিতর্কের নৈকট্যগত কারণে তার সঙ্গেই কথা বললাম।আমি আপনার সংবেদনশীলতায় আঘাত ও বিরক্তি উতপাদনের কারণ হয়ে থাকলে সরি। আর আপনার লেখালেখি সঙ্ক্রান্ত হিতোপদেশ শিরোধার্য। চিন্তা করেন, আপনি কোন পত্রিকার সম্পাদক হলে আপনি এই একই উপদেশ দিয়ে লেখাটা বাস্কেটে ফেলে দিতেন, ধমক দিয়ে বলতেন, কি সব ছাই পাশ লেখেন, তাতে আমি জড়সড় হয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতাম। এটা ব্লগ বলেই তার দরকার হলনা। মুচকি হেসে বললাম ঠিকাছে। ভালো থাকবেন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

স্পর্শ এর ছবি

মুচকি হাসতে পারলাম না। আমি বলতে চেয়েছি দেখার সময় আপনার এক চোখ বন্ধ করার ব্যাপারটা নিয়ে। লেখার মান নিয়ে কিছু বলার মত কোনো কেউকেটা আমি নই।

বিতর্ক আর মনোলগের একটা পার্থক্য আছে তাই না? তাহলে ফিরে আসার দায়ও কারো একার নয়। আর লেখার মন্তব্যের ঘরে প্রসঙ্গান্তর ঘটে থাকে। ব্লগের এটা একটা 'ফিচার'। আর এখানে প্রসংগান্তরের দায় আপনি একা নীলরোদ্দুরের উপর চাপিয়ে যে ভাষায় মন্তব্য করলেন। সেটা কটু। এবং যুক্তি প্রসেস করতে আপনার ব্যর্থতার চিহ্ন। সে কারণেই আমার ঐ সুররিয়েলিস্টিক হিতোপদেশ।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

মেনে নিচ্ছি। ব্লগের এই ফিচারটা খুব ভালো লাগে। গান্ধীর সত্যাগ্রহ এখন আরো বেশী প্রাসঙ্গিক। এখন সন্ত্রাসবাদের এন্টি ক্লাইমেক্সকে সশস্ত্র পথে কেউই আটকাতে পারবে কী, সহিংসা দিয়ে সহিংসার পতন সম্ভব কী, বরং এক্সট্রিম অহিংসা এক্সট্রিম সহিংসাকে রুখে দিতে পারে। আপনাকে ধন্যবাদ খুব যৌক্তিক সমালোচনার জন্য।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

নীল রোদ্দুর এর ছবি

প্রিয় মাসকাওয়াথ ভাইয়া,

দুঃখিত! আপনার ব্লগে গান্ধীকে নিয়ে কমেন্টের পর কমেন্ট করে যাওয়ার ইচ্ছা আমার ছিল না, ব্লগ সংক্রান্ত কমেন্ট ছিল কেবল প্রথমটা। তবে গান্ধীকে লাশকাটা ঘরে আমি একা নিয়ে যাই নি।

ওয়ার্কশপ সচলায়ন। ক্যালেন্ডারের পাতা উলটে পিছনে গেলেই দেখতে পাবেন। এইখানে তো তাও ভদ্র ভাষায় কমেন্ট করা হয়েছে, অনেক জায়গায় দেখবেন, তাও ধরে রাখা হয়নি। হাসি

আমি ডকট্রিন তৈরী করিনা, ঐসবে থাকিও না। আর আগেই বলেছি, আমি আপনাদের চেয়ে বেশ ভালোই ছোট, তাই গজফিতা দিয়েই এখনও মাপি। হাসি
তবে, এটা বুঝতে পারছি না, আপনাদের মত বড় বড় মানুষগুলো এতো উত্তেজিত হয়ে গেলেন কেন! সেটাতো বয়স বা পরিপক্কতার অভাবে আমার শোভা পেত।

ভালো থাকবেন।
-ইতি,
ছোট্ট নীল রোদ্দুর .
--------------------------------------------------------
শিশির ভেজা ঘাষ, ভোর বেলা যার ডগায় জমে থাকে একবিন্দু মুক্তো, হাসে মুক্তোটা, ঠিক শিশুর মত করে...

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

সরি আমার উত্তেজনা যদি অযৌক্তিক মনে হয়ে থাকে। পয়েন্ট অফ ইনফরমেশনে দাঁড়িয়ে চলতি টপিক থেকে টাইমমেশিনে চেপে ১৯২০ এ গিয়ে ৪৭ থেকে আর যখন চলতি বিলে ফিরতে পারলেন না, তখন মনে হল, অফিস শেষ পড়ি মড়ি করে ছুটে টিএসসিতে গিয়ে এতো ক্যালরী ক্ষয় করতাম শুধু এই আশায় যে একটা নতুন প্রজন্ম তৈরী হচ্ছে যারা কোন জরুরী আলোচনাকে সনাতন বাংলাদেশের সংসদের মত পন্ড করার লক্ষ্যে বিল বা প্রস্তাবকে কক্ষচ্যুত করবে না। সেইসব পরিশ্রমের কথা বাদ দিলেও আকাংখাটুকু মুখ থুবড়ে পড়লে তখন বয়সোচিত স্থিতধী-সৌম্য মূর্তি ধরে রাখা কঠিন। আল-মামুন, আমার দেখা সবচেয়ে সৌম্য বিতার্কিক, সেও পারতো কিনা সুষমা ধরে রাখতে ওকে জিজ্ঞেস করে দেখেন। আর আমি জহুরুল হক হলে শুয়ে সারা রাত গুলিগালাজের শাস্ত্রীয় সংগীত শেষ হলে,একসময় ছাত্ররা গুলিগালাজ না করে বিতর্ক করবে এই ইউটোপিয়া নিয়ে ঘুমাতে যেতাম। তাই এত বছর পরে ব্লগবিতর্কে হঠাত পঞ্চায়েতি ক্রসফায়ারে আলোচনা পন্ড হবার পর আমার অবস্থা সেই দ্য সান অলসো রাইজেস-এর যুদ্ধফেরত জেক বার্নস এর মতো যার মাথায় যুদ্ধের ট্রমা। যাকগে নো হার্ট ফিলিংস প্লিজ।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

দ্রোহী এর ছবি

মহাত্মা গান্ধী ভালো লোক ছিলেন নাকি খারাপ লোক ছিলেন তা নিয়ে যথেষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে বিষয়টির পক্ষে-বিপক্ষে তর্ক করা যেতে পারে।

কিন্তু তাঁর মুখে ব্যাপক দুর্গন্ধ হত। এটা তর্কাতীতভাবে সত্য ব্যাপার। হো হো হো গান্ধীজী তার নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। হো হো হো


কি মাঝি, ডরাইলা?

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

আপনি বেশ রসিক মনে হচ্ছে। তাহলে সুবিধাই হলো, উনাকে চুমু খায়নি যারা তারাই সম্ভবত পছন্দ করে উনাকে। গুড জোক। ধন্যবাদ।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাই, লেখাটা খুব বেশী একপেশে হয়ে গেলো,সব দোষ প্রাইভেটের ছেলেপেলেদের উপর দিয়ে দিলেন, মানছি জে ওরা যা করেছে ঠিক করেনি, সবকিছুরই নিয়মতান্তিক কিছু উপায় আছে,কিন্তু তাই বলে পাবলিকের ছাত্তদের এভাবে সাধু বানাবারওতো কোনো কারণ দেখিনা, তারা গত ২০ বছরে মিটিং মিছিল করে দেশকে কি খুব সামনে এগিয়ে নিয়ে গেছে?

সাজিদ.

অতিথি লেখক এর ছবি

ওনাকে এইগুলা বলে লাভ নাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

মুস্তাফিজ লিখেছেন:
দেশে যেহেতু ভ্যাট স্বীকৃত একটি পন্থা তাই ভ্যাটের আওতা বাড়তেই পারে। আস্তে আস্তে আরও বাড়বে তাতে প্রতিবাদ এমন হওয়া উচিত না। তবে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর টিউশন ফী কিভাবে সহনীয় রাখা যায় সেদিকে নজর দেয়া উচিত।

ভাই, শিক্ষা কি কোন "পণ্য" যে এর উপর "স্বীকৃত পন্থা"য় ভ্যাট বসানো যায়? নাকি প্রাইভেট ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়াটা কোন অপরাধ যে এর শাস্তিস্বরূপ তাদের শিক্ষালাভে অতিরিক্ত কর দিতে হবে?

-------------------------------------------------------------------
ধূসর স্বপ্ন, rupokc147 এট gmail ডট com

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।