আ স্ট্রেনজার ইন মাই ওন কান্ট্রি ইস্ট পাকিস্তান, ১৯৬৯-১৯৭১ মেজর জেনারেল (অবঃ) খাদিম হুসেইন রাজা -- পর্ব ৫

মূর্তালা রামাত এর ছবি
লিখেছেন মূর্তালা রামাত (তারিখ: রবি, ১৪/১০/২০১২ - ৮:৩৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পর্ব ৫

দাঙ্গার প্রথম দিনেই নিউমার্কেট এলাকায় দুজন নন কমিশনড অফিসারকে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়। আমার আর্টিলারি ইউনিটের সদস্য এই অফিসারেরা পিলখানায় ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিল। সাধারণ পোশাকে থাকলেও পশ্চিম পাকিস্তানী হিসেবে তাদের চিনতে আততায়ীদের কোন অসুবিধা হয়নি। আমারা অচিরেই খুনীদের খুঁজে বের করলাম। তারা ছিল আওয়ামী লীগের গুন্ডা। আইনের হাত থেকে বাঁচার জন্য এরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস জগন্নাথ হলে লুকিয়ে ছিল। ঢাকা বিশ্ববিধ্যালয়ের ছাত্রাবাসগুলো তখন আদতেই সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য ছিল। তখনকার মত খুনীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও পরবর্তীতে অপারেশন সার্চ লাইটের সময় আমরা খুনীদের একজনকে ধরতে সমর্থ হই।

এই পর্যায়ে পাঠকদেরকে ঢাকায় অবস্থানকারী সেনাবাহিনীর কমান্ড ও কন্ট্রোল এর বিন্যাস জানানোটা জরুরী মনে করছি। মেজর জেনারেল মুজাফফরউদ্দীন যেহেতু ১৪ নম্বর ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ছিলেন সেহেতু তার হাতেই ঢাকা অঞ্চলের সব ক্ষমতা এবং কতৃত্বের ভার ন্যস্ত ছিল। পদাধিকার বলে তিনি আবার একইসাথে পুরো পূর্ব পাকিস্তানের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ছিলেন। মার্শাল ল জারির পর তিনি জোন বি এর সামরিক আইন প্রশাসক নিযুক্ত হন। একইসাথে তাকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরও বানানো হয়। তার বিদায়ের পর এই পুরো কাঠামোটিকে ঢেলে সাজান হয়। পাকিস্তান নৌবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ অ্যাডমিরাল সৈয়দ মোহাম্মদ আহসান গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পান। সামরিক পর্যায়েও পরিবর্তন আসে। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টার, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল এবং অর্ডিন্যান্স ডিপোর মত নিশ্চল প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইস্ট পাকিস্তান লজিস্টিক এরিয়ার সাথে সংযুক্ত করে ব্রিগেডিয়ার ( পরবর্তীতে মেজর জেনারেল) মোহাম্মদ হুসেইন আনসারির কমান্ডে নেওয়া হয়। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরিয়ে নেবার পর ১৪ নম্বর ডিভিশন এর বাকি অংশটুকু আমার অধীনে দেয়া হয়। আমার কাজ ছিল যে কোন উপায়ে পূর্ব পাকিস্তানকে রক্ষা করা। অন্যদিকে উচ্চতর পদমর্যাদার জেনারেল হেডকোয়ার্টাসহ ইস্টার্ন কমান্ড গঠন করা হয়। লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াকুব খান এর দায়িত্ব পান। ইস্টার্ন কমান্ড নামটা শুনতে যতোই ভারি হোক না কেন প্রকৃতপক্ষে একটি মাত্র পদাতিক ডিভিশন ও একটি লজিস্টিকাল এরিয়া এর অধীনে রাখা হয়। স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি কোর হেডকোয়ার্টারস হিসেবে সামরিক সম্পদের দিক থেকে কমান্ডটি অবশ্যই পিছিয়ে ছিল। আর্মার, আর্টিলারি, সিগন্যালস, এবং অন্যান্য নিয়মিত সহায়ক যোদ্ধাবাহিনীর পাশাপাশি অন্তত আরো দুইটি ডিভিশন এই কমান্ডের অধীনে থাকা উচিত ছিল বলে আমি মনে করি।

নিয়োগপত্র অনুসারে আমি ছিলাম সহকারি সামরিক আইন প্রশাসক। মেজর জেনারেল রাও ফারমান আলী খানকে দেয়া হয় গভর্নরের উপদেষ্টার পদ। তিনি বেসামরিক সরকার ও সমারিক আইন প্রশাসক- এই দুইয়ের ভেতর লিঁয়াজো অফিসার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। সেই সময়কার শাসনকাঠামোতে চোখে পড়ার মত একটা বৈপরীত্য ছিল। সেটি হল পদাধিকারবলে গভর্নর ছিলেন বেসামরিক প্রশাসনের প্রধান অথচ সমারিক আইন প্রশাসক নিজেকে সর্বময়কর্তৃত্বের অধিকারী মনে করতেন। এ কারণে সমস্যার সৃষ্টি হত। যদিও ওই দুই পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি দুজন ছিলেন নিখাদ ভদ্রলোক, ব্যক্তিগতভাবে তারা পরস্পরের বন্ধুও ছিলেন। তবুও তাদের ভেতর ক্ষমতা নিয়ে ঠান্ডা লড়াইটা প্রকাশ্যই ছিল। তবে কোন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য দেখা দিলে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও কৌশল কাজে লাগিয়ে তারা তা সমাধান করতেন। মেজর জেনারেল রাও ফারমান আলী সফল কূটনীতির কথা এ ক্ষেত্রে না বললেই নয়। মূলত সেই দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতার মাধ্যমে উচ্চ পর্যায়ে কোন অঘটন ঘটতে দিত না। তাই তাদের উভয়ের কাছেই ফারমানের গুরুত্ব ছিল অসীম। একটি ঘটনা দ্বারা ফারমানের গুরুত্ব বোঝানো যেতে পারে। একবার প্রেসিডেন্ট স্বয়ং মেজর জেনারেল রাও ফারমান আলীকে তার পদ থেকে জরুরীভিত্তিতে সরিয়ে অন্যস্থানে পোস্টিং দিলেন। গভর্নর এবং প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক দুজনেই এ বিষয়টিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন। তারা প্রেসিডেন্টকে তার সিদ্ধান্ত বদলাতে প্রভাবিত করতে স্বক্ষম হন। ফলে প্রেসিডেন্ট ফরমানের বদলীর আদেশ স্থগিত করে তাকে আগের অবস্থানে ফেরত পাঠাতে বাধ্য হন।

ফারমানের বদলীর সাথে জড়িত আরেকটি ছোট্ট কিন্তু আকর্ষণীয় ঘটনা এখানে বলার লোভ সামলাতে পারছি না। ঢাকা শহরে তখন কালাচাঁদ নামে এক স্বর্ণকার ছিল। গয়না তৈরির চেয়ে হাত গুনে নিখুঁতভাবে ভবিষ্যতবাণী কারার জন্যই তার পরিচিতি বেশি ছিল। বেশির ভাগ সেনা পরিবারেই লোকটির অবাধ যাতায়াত ছিল। আমার বাড়িতেও সে আসত। কালাচাঁদের দাবী অনুযায়ী ঢাকায় আসা প্রাক্তন সব জিওসির হাতই সে দেখেছে। আমার হাত দেখতেও সে আগ্রহী ছিল। একদিন আমার বাসায় ব্রিগেডিয়ার ফারমান (তখনও মেজর জেনারেল হিসেবে ফারমানের পদোন্নতি হয়নি)এবং আমাকে সে পাকড়াও করল। হাত দেখার সময় এক প্রশ্নের জবাবে কালাচাঁদ আমাকে জানাল যে ১৯৭১ সালের মধ্যেই আমি সসম্মানে পাকিস্তানে ফিরে যাব। এই ব্যাপারটা আন্দাজ করা আমার জন্য খুব বেশি কঠিন ছিল না। কারণ ৭১ এর জুন মাসেই আমার দায়িত্বকাল পূরণ হবার কথা ছিল। যাই হোক, ফারমানের ক্ষেত্রে সে ভবিষ্যতবাণী করল যে মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া স্বত্ত্বেও ফারমানকে আরো দীর্ঘদিন এ এলাকায় থাকতে হবে। কাঁলাচাদের সাথে এটাই আমাদের শেষ দেখা নয়। পরবর্তী স্বাক্ষাৎটি কালাচাঁদের ভবিষ্যতবাণী করার ক্ষমতাকে আরো স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে দিল। সেবার ফারমান পূর্ব পাকিস্তান থেকে বদলীর আদেশ পেল। প্রেসিডেন্ট স্বয়ং এই আদেশ দিয়েছেন। আদেশ পাবার পর বিমানবন্দর থেকে আমাকে সঙ্গ দিতে ফারমান আমার বাড়ি পর্যন্ত এল। কাকতালীয়ভাবে বাড়িতে সেদিন কালাচাঁদ ছিল। ফারমান কলাচাঁদকে পরীক্ষা করতে চাইল। কালাচাঁদ আমার হাতই প্রথমে দেখল। এবারের গণনায় নতুন করে তেমন কিছু জানতে না পারলেও একটা ব্যাপারে সে কিছুটা পরিবর্তন আনল। তার মতে ১৯৭১ এ নয় আমি ১৯৭২ সালের এপ্রিলে সসম্মানে পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে যাব। অবশ্য ব্রিগেডিয়ার ফারমানের ক্ষেত্রে সে আগের মতোই পূর্ব পাকিস্তানে ফারমানের দীর্ঘ সময় অবস্থানের ভবিষ্যতবাণী করল। ফারমান কালাচাঁদকে ধমক দিয়ে প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে পাওয়া বদলীর নির্দেশের কথা জানিয়ে বললো যে আর মাত্র কয়েক সপ্তাহের ভেতরেই সে পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে যাচ্ছে। ফারমানের কথায় কালাচাঁদ অবাক হয়ে আবারও তার হাতের রেখা পরীক্ষা করল। এবার আরো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সতর্কতার সাথে। কিন্তু ফলাফলে কোন পরিবর্তন হল না। মাথা নেড়ে অসম্মতি জানিয়ে নিজের ভবিষ্যতবাণীতে অটল রইল সে। শুধু তাই না, সে আরো ভভিষ্যতবাণী করল যে খুব শীঘ্রই জেনারেল পদে ফারমানের পদোন্নতি হতে যাচ্ছে। আশ্চর্যজনকভাবে এই ভবিষ্যতবাণী অক্ষরে অক্ষরে ফলে গিয়েছিল। যদিও আমি কখনোই জ্যোতিষশাস্ত্রের সমর্থক ছিলাম না কিন্তু এই ঘটনায় আমার মন কেমন যেন একটা দ্বন্দ্বের ভেতর পড়ে গেল।

যাই হোক এবার আমাদের গল্পে আবার ফেরা যাক। সেকেন্ড ইন কমান্ড ও সহকারী সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে মাঝে মাঝেই জেনারেল ইয়াকুবের অনুপস্থিতিতে আমাকে নামামাত্র হলেও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব নিতে হত। জেনারেল ইয়াকুবের এ ধরনের অনুপস্থিতির ঘটনা খুব কমই ঘটেছে। আর ঘটলেও তা ছিল অল্প ক’দিনের জন্যই। প্রায় একই সময়ে গভর্নরও অনুপস্থিত থাকতেন। কারণ প্রধান সমারিক আইন প্রশাসক যে সভা ডাকতেন তাতে জেনারেল ইয়াকুব ও গভর্নর দুজনেরই উপস্থিতি বাধ্যতামূলক ছিল। এরকম সময়ে আমি প্রাত্যহিক রুটিন দায়দায়িত্ব আর জরুরী সিদ্ধান্ত নেবার মত কাজগুলোতেই কেবল হাত দিতে চাইতাম । কিন্তু বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গ হবার ফলে সৃষ্ট ঝামেলাও সেসময় আমার সামাল দিতে হত। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, একবার মাওলানা ভাসানী ঢাকায় এক পদযাত্রার আহ্বান করলেন। তিনি “ঘেরাও” আর “জ্বালাও” বলে হুমকি দিলেও পদযাত্রা বেশ শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছিল।

আমার ব্রিগেড কমান্ডারেরা এবং ডিভিশনের অন্যান্য সব অফিসারেরা সমস্ত অঞ্চল জুড়ে সামরিক আইন বলবৎ করতে ভীষণ ব্যস্ত ছিলেন। তারা সবাই ছিলেন তাদের কমান্ডের প্রাথমিক কর্মকাণ্ড এবং কমান্ড পরিচালনার ব্যাপারে অঙ্গীকারাবদ্ধ। উত্তরসূরীদের কাছ থেকে পাওয়া প্রাতিষ্ঠানিক কিছু দোষ ত্রুটি ছাড়া এই এলাকায় মোটামুটি একটা দুশ্চিন্তাহীন চৌকস দল ছিল আমাদের। সব স্তরের সেনাসদস্যদের জন্যই বেশ কিছু বাস্তবমুখী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আমরা করেছিলাম। এলাকার সব কটি সেক্টরেই প্রতিরক্ষা কৌশল পরীক্ষা ও পর্যালোচনা করা হতো। পুরো ডিভিশনের মেজরসহ আরো উচ্চপদস্থ অফিসারেরা প্রতিটি সেক্টরে অনুষ্ঠিত যুদ্ধ প্রস্তুতির মহড়ায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করতো। যুদ্ধ পরিচালনার এসব এলাকায় শত্রুপক্ষের অবস্থান ও শক্তি সম্পর্কে ধারনা পাবার জন্য আমারা পূঙ্খানূপূঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করতাম। এছাড়াও অস্ত্রশস্ত্র পরীক্ষার পাশাপাশি সেনাদের শারীরিক সক্ষমতার উপরেও আমরা পরীক্ষা চালাতাম। এই সমস্ত প্রস্তুতি পরে ভীষণ কাজে দিয়েছিল। বিশেষ করে পরবর্তীতে বিভন্ন ঘটনাক্রম যখন আমাদেরকে ধীরে ধীরে যুদ্ধের দিকেই ঠেলে নিয়ে গেল, তখন আমাদের ঐসব প্রস্তুতির ফলে পুরো ডিভিশনকে পুরোপুরিই প্রস্তুত অবস্থায় পাওয়া যায়। (চলবে)

পর্ব ৪
http://www.sachalayatan.com/murtala31/45970

১৫/১০/২০১২
সিডনি, অস্ট্রেলিয়া।


মন্তব্য

পুতুল এর ছবি

অনুবাদ খুব ভাল হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সব পর্ব পড়েছি।

অট; মানে এই সব প্রতিক্রিয়াশীল কথাবর্তা অনুবাদ করার সময় কষ্ট হয় না? আমি হলে পারতাম কী না সন্দেহ। কিন্তু এদের কৃতকর্ম জনগনকে জানাতে হলে অনুবাদ করা ছাড়া উপায়ও নাই। অপ্রিয় কাজটি করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

মূর্তালা রামাত এর ছবি

ধন্যবাদ।
অনুবাদ করতে গিয়ে মেজাজ এত খারাপ হয় যে মনে হয় খাদিম মিয়ারে হাতের কাছে এনে আচ্ছমত বানাই। আমার স্ত্রী এই অনুবাদ কাজে আমাকে সাহায্য করত। সেও বিরক্ত হয়ে আর সাহায্য করতে রাজি না। এবার বোঝেন। তারপরও এখন পর্যন্ত অনুবাদ করছি কারণ আমার কাছে মনে হয়েছে ইতিহাসের বেশ কিছু ঘটনা এখানে বেশ ভালভাবে এসেছে। যেমন বঙ্গবন্ধুর উত্থান। যদিও খাদিম সাহেব তার প্রচণ্ড সমালোচনা করেছেন কিন্তু বঙ্গবন্ধুই যে বাঙ্গালীর অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন তা তিনি এড়াতে পারেন নাই-বরং মিথ্যা বলতে গিয়ে তাঁকে প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন।

মূর্তালা রামাত

পুতুল এর ছবি

তারপরও এখন পর্যন্ত অনুবাদ করছি কারণ আমার কাছে মনে হয়েছে ইতিহাসের বেশ কিছু ঘটনা এখানে বেশ ভালভাবে এসেছে।

এই ব্যাপারটা ভীষণ জরুরী। না হলে অন্তত আমার মত নাদানের পক্ষে জানা সম্ভব হতনা; কী ভাবে একজন পাকি আমাদের স্বাধীনতা নিয়ে ভাবে।

অনেক জায়গা কিন্তু এসেছে যে; তখন পাকি সৈন্যরা এমনকী সিভিল পোষাকেও স্বচ্ছন্দে বা নিরাপদে ঘুরে বেরাতে সাহস পেত না। আমাদের স্বাধীনতার লড়াইটা আমারা তখনই শুরু করেছিলাম।

সেই সময়ে আপনি বা আমি স্বাধীনতার কথা বললেও হয়তো বাঙ্গালীরা বিস্বাশ করত বা মেনে নিতো। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তখন সেখানে শেখ মুজিব ছিলেন, আপনি বা আমি নই।

অনেক প্রগতীবাদী মানুষও দেখি এই বাস্তবতা মেনে নিতে কষ্টপায়।

বামপন্থীদের কাছে মুজিব বুর্জুয়া হতেই পারেন, কিন্তু স্বাধীনতার প্রশ্নে তিনি অবিসম্বাদিত, এটা না মানলে স্বাধীনতাকে মানা কঠিন হয়তো অসস্ভবও।

কিছু বামদল তখন মুক্তিযোদ্ধাদের বিরোদ্ধেও অস্ত্র ধরেছিল। তাদের সবাইকে স্বাধীনতার বিপক্ষে মনে করি না, কিন্তু একটা ঐতিহাসিক পরিবর্তেনর হাওয়া বদলের ক্ষণটা বুঝতে না পারার দায়টা তাদের ঘাড়ে চাপাই। কী অদূরদর্শীদের হাতে আমাদের বাম রাজনিতী ছিল! হয়তো এখনো আছে।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

তানিম এহসান এর ছবি

এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ পাকি দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই লিখা। বই প্রকাশের পর যে হৈ চৈ শুরু হয়েছিলো তার কারণ কি এখনো বুঝতে পারলামনা, হয়তো পরবর্তী পর্বগুলোতে আসবে, তবে এই হৈ চৈ এর নেপথ্যে রিকনসিলিয়েশন এর তাৎপর্য না থেকেই পারেনা।

উপরে পুতুল ভাইয়ের অট বক্তব্যের সাথে সম্পূর্ণ সহমত। আপনাকে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

মূর্তালা রামাত এর ছবি

এই বইয়ে অপারেশন সার্চ লাইটের যে বিবরণ আছে সেটার কারণেই এত হই চই।বিশেষ করে সার্চ লাইটের অপারেশনাল ডিটেইলস যেটা খাদিম হোসেন নিজেই বানিয়েছিলেন।

মূর্তালা রামাত

ফাইয়াজ জামাল এর ছবি

আমিও হৈ চৈ শুনেই পরেছিলাম বইখানা. আমার কাছে ব্যতিক্রমধর্মী কিছু মনে হয়নি. পাক জেনারেলদের অন্য যে কোনো বই এর মতই নিজেকে একাধারে ফেরেশতা আর সর্বদ্রষ্টা হিসেবে উপস্থাপন করা, আর নিজের চেয়ে সিনিয়রদের চারিত্রিক দোষ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যর্থতা, শেখ মুজিবের প্রতি বিষেদাগার, ভুট্টো সহ রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি স্নেহার্দ অনুযোগ, বাঙালি জাতির বেইমানি, নৃশংসতা আর ভারতীয় দের ষড়যন্ত্রে কিভাবে পাকিস্তান ভেঙ্গে গেল, সেই 'ট্রাজেডি' নিয়ে হা হুতাশ: এই হলো সারমর্ম. নিয়াজি কে গালি দিলেই তো আর বাঙালিদের সমর্থন করা হয় না, প্রথম আলো কে তা আর কে বোঝাবে !

কড়িকাঠুরে এর ছবি

চলুক - পড়ছি...

রাজা তো রাজার দলেই

অতিথি লেখক এর ছবি

সব পক্ষের লেখা আমাদের পড়া উচিত। আপনার অনুবাদ পড়ে ভাল লাগছে। আরেকটু ঘনঘন লিখলে আরো ভাল হত কিন্তু জানি আপনি আপনার বেস্ট করছেন।

ডিমপোচ

মূর্তালা রামাত এর ছবি

ধন্যবাদ। যতদূর পারি চেষ্টা করব।

মূর্তালা রামাত

মণিকা রশিদ এর ছবি

প্রথম পর্ব থেকে আগে পড়ে আসি। হাসি

----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand

মাহবুব লীলেন এর ছবি

পড়ছি। চলুক...

০২

শেষ পর্যন্ত পাকিদের কালাচাদের হস্তরেখা বিশ্লেষণই ভরসা....

মণিকা রশিদ এর ছবি

সবগুলো পড়লাম। চলুক

----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।