মরুযাত্রা ৫ম পর্ব : কায়রো প্রবেশ

মন মাঝি এর ছবি
লিখেছেন মন মাঝি [অতিথি] (তারিখ: সোম, ১২/০৯/২০১১ - ১০:৫০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গিজা পিরামিড। কায়রো।

১.

আল-কাহিরা ওরফে কায়রোতে যখন ইত্তিহাদ এয়ারলাইন্সের প্লেনটা ল্যান্ড করে, তখন আমার ধারনা ছিল এদেশে সর্বোচ্চ হপ্তাখানেকের জন্য এসেছি। কয়েকদিন শহরটায় একটু ঘোরাঘুরি করে ফিরে যাব। কে জানত তখন এই এক হপ্তা তিন মাসে গিয়ে দাঁড়াবে – আর ঐ ‘একটু ঘোরাঘুরি’ হয়ে দাঁড়াবে কয়েক হাজার মাইল ? শেষমেশ প্রায় পালিয়ে আসতে হবে ?

কায়রোর জীবনযাত্রা যেন বৈপরীত্য আর বৈচিত্র্যের এক অদ্ভূত সমন্বয়। রাস্তায় নামলে মনে হয় সবাই যেন মাইকেল শুমাখার হওয়ার জন্যে হন্যে হয়ে গেছে। জীবনের একমাত্র ফর্মুলাঃ ফর্মুলা-ওয়ান! বাঁচি-মরি জিততেই হবে! গাড়িও আবার যে কত পদের তার কোন ইয়ত্তা নেই। একদিকে চলছে লক্কর-ঝক্কর, অন্যদিকে আবার চক্কর-বক্কর। পুরো পরিবার ঠাসা পুরান ম্যাচের বাক্স, ব্যাক-সীটে নিঃসঙ্গ ললনাশোভিত বিশাল আধুনিক লিমো, এসইউভি, ঘ্যাঙর-ঘ্যাঙ ক্যাব, মাঝখান দিয়ে আবার বয়ে চলা নীলনদ – সবাই ছুটছে উম্মাদগতিতে কোন এক আজব লক্ষ্যে। একসাথে। এরই মধ্য দিয়ে আমার ড্রাইভার আহমাদ (এখানে সবাই আহমাদ!) আমাকে এয়ারপোর্ট থেকে পিক করে নিয়ে হার্ট-সার্জনের মত ছুটে চলেছে। তার স্ক্যালপেল হচ্ছে তার স্টিয়ারিং হুইল। ভাগ্যি দক্ষ সার্জনই ছিল সে। এ যেন এক অটোমোবাইল অপেরা – মহাকাব্যিক, বজ্রকম্পিত, অথচ সেইসাথে কেমন জানি একটু বিচ্ছিন্ন-নিরাসক্ত। এই অদ্ভূত, প্রায় অদৃশ্য-অস্পর্শ্য নির্লিপ্ততা কায়রোর শত ব্যস্তসমস্ততা আর প্রাণস্পন্দনের মধ্যেও সবসময় কোথায় যেন সুক্ষ ভাবে হলেও টের পেয়েছি। কেমন যেন এক ইস্পাত-শীতল টক টক নির্লিপ্ততা, অনুভবসীমার একদম প্রান্তে অবস্থিত। এটা অবশ্য মুবারকশাহী যুগের কথা।

নীলনদ ও কায়রো

আমার হোস্টের বাড়ির পথে যেতে যেতে লক্ষ্য করি কর্মচঞ্চল কায়রো। তার ব্যতিব্যস্ত দোকানপাট, শপিং মল, দুর্দমনীয় হিমবাহের মত ধেয়ে আসা ট্রাফিক, গাড়ির হর্নের চিৎকার, আর সহস্র নবীন-প্রাচীণ মিনার থেকে ভেসে আসা আযানের ধ্বণি প্রতিমুহূর্তে ঘোষনা করে যাচ্ছে এক ব্যাতিব্যস্ত বর্তমান আর এক অতিলৌকিক ঐতিহ্য। ধূসর বহুতল ভবন, সাবওয়ে, ফ্লাইওভার, ওভারপাস, আন্ডারপাস, প্রশস্ত ফুটপাথ – সবকিছু ব্যস্তসমস্ত গাড়িঘোড়া আর মানুষে মানুষে সয়লাব। রাস্তার মোড়ে মোড়ে কফি এ্যান্ড শীষা– শপ। এই শেষেরটা পরে আরো অনেক দেখব। সবকিছুর মধ্যেই কেমন যেন একটা বিশৃঙ্খল সুশৃঙ্খলতা, ছন্দোবদ্ধ ক্যাওস আর ক্যাকোফনি।... কিম্বা ক্যাওস আর ক্যাকোফনির ছন্দ। কোনটা জানি না।

র‍্যামসেস স্কোয়্যার। কায়রো

কোন এক লেখক লিখেছিলেন, “তাঞ্জিয়ারের (কিম্বা ঢাকার!) গুঁতোগুঁতি, আবু ধাবির নীরব উন্নাসিকতা, ইস্ফাহানের মসৃন চৌকষতা আর পেশোয়ারের আপসহীন ধর্মপরায়নতা - এখানে মোটের ওপর অনুপস্থিত। কিন্তু আমি ঐ সব ক’টা শহরেরই রেশ যেন দেখতে পাই এই শহরে পা দেয়ার প্রথম কয়েক মিনিটেই।” এটা এক পশ্চিমা ভ্রমণকারীর চোখ দিয়ে দেখা চিত্র। তবে খুব একটা ভুল নয় বোধহয়। কিন্তু কায়রোতে মধ্যপ্রাচ্যের অন্য শহরগুলির চেয়ে এনার্জি অনেক বেশি আর নিয়ন্ত্রন অনেক কম। একটা আপাতঃ হ্যাপি-গো-লাকি ভাইব এর অবিচ্ছেদ্য অংশ, সব বিশৃঙ্খলা ছাঁপিয়ে এর একটা অতি নিজস্ব বিট ও ছন্দ সময়সাপেক্ষে অনুভবযোগ্য।

পুরান কায়রো

এক সময় এই সব কিছু পেরিয়ে কায়রোর গীজা ডিস্ট্রিক্টে সাজানো গোছানো একটা অংশে নীল নদের পারে আমার হোস্টের বাড়িতে পৌঁছে গেলাম। এটাকে কেন্দ্রে রেখে পরবর্তী প্রায় তিনটি মাস মিশরের অনেক জায়গায় যাব। তার কয়েকটার বিবরন আগের পর্বগুলিতে দিয়েছি ( মরুযাত্রাঃ , , ২খ, )।

ওবেলিস্ক

আমি যখন মিশর যাই তখন মার্চের প্রথম সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। আমাদের হিসেবে প্রচুর শীত তখনো, যদিও ওদের হিসেবে শীতের বিদায়বেলা এটা। তবে এটা মনে হয় কোন একটা জাতীয় উৎসব-টুৎসবের মৌসুম ছিল – কারন চারিদিকে উৎসবের আমেজ তখন। শহরের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া নীলনদের বুকে অজস্র বাহারি নৌকা, বজরা, বোট, ফেলুকা (পাল-তোলা নৌকা), নৌ-রেস্টুরেন্ট - সব অপূর্ব সাজে আর ডিজাইনে শোভিত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোনটা ড্রাগনের আদলে ডিজাইন করা, কোনটা ময়ুরপঙ্খীর মত, কোনটার মুখ স্ফিংক্সের মত, আবার কোনটার চতুর্দিকে হয়তো ফারাওদের চমকপ্রদ মুখোশের প্রতিকৃতি লাগানো। এমন নানা রকম থীমে সজ্জিত তারা। তবে এসব সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন আর মোহময় হয়ে উঠে সন্ধ্যার পর। তখন সব ক’টি জলযানে জ্বলে উঠে হরেক রকমের বহুবর্নিল চলমান আলোকসজ্জা – এগুলিও আবার ফারাওনিক ইতিহাস থেকে নানা রকম থীম ধার করে ডিজাইন করা। সে এক দেখার বিষয়।

আর সব ছাপিয়ে যায় মানুষগুলি। ছোটবড় বোটে বোটে দল বেঁধে ভেসে পড়ে কায়েরিয়ানরা। বন্ধুবান্ধব কিম্বা পুরো পরিবার বা আরো বিশাল দল। রঙবেরঙের পোশাক পরে চলন্ত বোটের উপর নাচতে নাচতে আর গাইতে গাইতে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠে। নদীর পারে বা ব্রিজের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে, দামাল বাতাসে ভিজতে ভিজতে আমি সেদিকে তাকিয়ে থাকি অপলক চোখে। কানে ভেসে আসে আঁধার মাঝনদী থেকে রঙীন আলোয় ঝিকিমিকি কোন বোটের স্পিকার থেকে বেরুনো গান-বাজনা আর আনন্দ-ফুর্তির শব্দ। এটা কমবেশি সবসময়ই থাকে, তবে এই মৌসুম একদম নদীভরা ফুর্তির মৌসুম। বোটে বোটে ছেয়ে যায় নীল।

হযরত উমর (রাঃ) প্রতিষ্ঠিত মসজিদ। কায়রো।

২.

আমি মিশরে কোন সংক্ষিপ্ত, সুপরিকল্পিত ভ্রমণে যাইনি – অন্তত শেষমেশ ব্যাপারটা সেরকম থাকেনি। একেকসময় একেক জায়গায় গিয়েছি, আবার বিস্তর সময় স্রেফ নীলের হাওয়া খেয়ে বেড়িয়েছি। বা একটা ফেলুকা ভাড়া করে নীলের জলে ভাসতে ভাসতে ঘুমিয়ে কাটিয়েছি। তাই এই পর্বে কায়রোর কিছু দ্রষ্টব্যের বিবরণ থাকবে খানিকটা টুরিস্ট গাইডের মত করে।

তবে সবার আগে, এই পর্বে প্রাচীণ মিশরের ইতিহাস নিয়ে মনে হয় একটু আলোচনা করা যায়। প্রবন্ধমূলক কিছু লেখা আমার উদ্দেশ্য নয়, কিন্তু ভ্রমণের একটা গন্তব্য হিসেবে মিশরের মূল আকর্ষনটাই কিন্তু এর ইতিহাস। এটা মানবসভ্যতার ইতিহসের অংশও বটে। ইতিহাসে কারো ভাল রকম উৎসাহ না থাকলে তার মিশর ভ্রমন মাঠে মারা যেতে বাধ্য। তবে এর একটা উল্টোপিঠও আছে। এখানে এতই অবিশ্বাস্য রকম বেশি, দীর্ঘ এবং পরতে পরতে ঘনীভূত-স্তরীভূত ইতিহাস যে, কোন সাধারন টুরিস্ট যদি সবকিছু বা অনেককিছু একবারে কাভার করতে চান, তাহলে খুব দ্রুতই ওভারডোজ হয়ে তার মারা পড়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। আমার দশাও প্রায় ঐরকমই হয়েছিল। দেশটার এমাথা থেকে ওমাথা ঘুরে বেড়িয়ে, অর্ধডজন উপর পিরামিডে গিয়ে (আবিষ্কৃত পিরামিড আছে ১৪০-টার মত, অনাবিষ্কৃত আনুমানিক আরো শতাধিক বা আরো বেশি—তবে বেশির ভাগ মানুষই দুই-তিনটার বেশি দেখে না), আর অজস্র প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক স্থান/সাইট/নিদর্শন/মিউজিয়াম/মন্দির ইত্যাদি অনেকটা ভিডিও ফাস্ট-ফরোয়ার্ডের মত করে দেখতে দেখতে - এত ইতিহাসের ভারে শেষের দিকে আমি অতিভোজনের ফলে সৃষ্ট বমন-ভাবের মত অনুভূতিতে আক্রান্ত হই।

গিজা পিরামিডের পাশে উটের পিঠে

তারপরও আমি নাকি দেখার যা আছে তার ১%-ও দেখি নাই তিন মাসে। বেশ ভাল কথা ! কিন্তু এর পর যখন শুনলাম এই “দেখার যা আছে” সেটাই নাকি আবিষ্কৃত-অনাবিষ্কৃত/অখননকৃত মিলিয়ে মোট প্রত্নতাত্ত্বিক/ঐতিহাসিক সাইটগুলির ৩০%-এরও কম – ৭০%ই মাটির তলায় এখনো, তখন নির্বাক হয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। এর মানে দাঁড়ায় আমি আসলে ০.৩%-ও দেখি নাই। মাত্র কয়েকদিন আগে সাক্কারা মরুভূমির (প্ল্যাটো) নীচে ভূমিভেদী ইনফ্রা-রেড ও থার্মাল প্রযুক্তি সম্বলিত স্যাটেলাইট ইমেজিং-এর মাধ্যমে মরুভূমির তলায় একটা আস্ত প্রাচীণ শহর আবিষ্কৃত হওয়ার পর (এখন পর্যন্ত এরাই শুধু ৩ হাজার প্রাচীন জনপদ, ১০০০ টুম্ব ও ১৭টি পিরামিড আবিষ্কার করেছেন বিভিন্ন লোকেশনে এবং করেই চলেছেন) -- ঐ প্রকল্পের নাসা নিযুক্ত আর্কিওলজিস্ট যখন বিবিসি-কে বললেন যে - এখন পর্যন্ত ইজিপ্টের প্রত্নতাত্ত্বিক/ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের ১%-ও আবিষ্কৃত হয়নি আসলে (মাটির উপরাংশ ইতিমধ্যেই ইতিহাস-ঐতিহ্যে থিকথিক করা সত্বেও)- তখন আমি দশমিকের ডানদিকে কত শতাংশ দেখেছি সেই হিসেবের হাস্যকর খেলাটা একেবারেই বাদ দিয়ে দিলাম! এটা তাও মোটা দাগের বাদ দেয়া, একেকটি লোকেশনের ভেতরে প্রতিটি বিষয়ে যে লক্ষ-লক্ষ ডিটেইল আছে – সেসব তো কিছু ধরিই নাই। ওগুলির পেছনে দুনিয়ার সমস্ত ইজিপ্টোলজিস্ট মিলে কয়েকটা শতাব্দী মনে হয় দিব্যি কাটিয়ে দিতে পারবেন। আরো বহুদিন তাদের ভাত নিশ্চিত।

কায়রো মিউজিয়ামের দ্বাররক্ষী স্ফিংক্সের সাথে

মোদ্দা কথা হল, ইজিপ্টোলজিস্ট বা মানবসভ্যতাবিশারদ হতে চান না - এমন সাধারন পর্যটকের জন্য মিশর ভ্রমণের ক্ষেত্রে ইতিহাসে একটা জোরালো আগ্রহ থাকা অপরিহার্য। কিন্তু সেই আগ্রহটা স্বাস্থ্যকর হওয়া এবং নিজের আগ্রহের সীমা বা স্যাচুরেশন-পয়েন্ট সম্পর্কে একটা প্রাক-উপলব্ধি থাকাও বাঞ্ছনীয়। নইলে উপভোগ্য একটা বিষয় দ্রুতই বিবমিষাকর হয়ে যেতে পারে। শেষের দিকে আমার অন্তত তেমনটাই হয়েছিল।

দারুন একটি ভিডিও কোলাজ

---------------------------------------------------------------------------------------------------------

First 4 photo and video source: Internet. 4th photo courtesy: Amr Soliman



মন্তব্য

উচ্ছলা এর ছবি

এত যত্ন করে, এত সুন্দর করে আমাদেরকে কায়রো ঘুরিয়ে আনার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

মন মাঝি এর ছবি

পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।

****************************************

তাপস শর্মা এর ছবি

গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু
ব্যাপক।

মন মাঝি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

****************************************

পাগল মন এর ছবি

প্রথম পর্ব হিসেবে আগ্রহজাগানিয়া নিঃসন্দেহে।

পরেরে পর্বের অপেক্ষায় রইলাম পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম নিয়ে।

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

মন মাঝি এর ছবি

আরো ২-৩ ঠোঙা পপকর্ন নিয়ে আসুন। হাসি

পড়ার জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

****************************************

তারেক অণু এর ছবি

চলুক পরের পর্ব চাই তাড়াতাড়ি, নাইলে কিন্তু উটে চেপেই রওনা দিব---

মন মাঝি এর ছবি

হা হা - আপনার মত বিশ্বপর্যটকের কাছে এসব পিচ্চি ভ্রমনকাহিনি তো কোন ব্যাপার হওয়ার কথা না। হাসি
আর আপনি যেমন ঘুরাঘুরি করেন, তাতে তো মনে হয় আপনার কাছে পঙ্খীরাজ আছে, উট-ফুট আমার মত গরীব-গুর্বোর জন্যই থাকুক।

****************************************

অরফিয়াস এর ছবি

জীবনে মিশর ঘুরে দেখার ইচ্ছাটা প্রবল... আপনি তার কিছুটা হলেও পূরণ করলেন... তালগাছটা আপনাকে দিলাম

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মন মাঝি এর ছবি

আর আমার ইন্ডিয়া দেখার খুব ইচ্ছা। আপনিও সেটা একটু পূরন করুন না। এলাহাবাদ নিয়েই লিখুন না কিছু। বাংলা সাহিত্যে এর প্রচুর উল্লেখ পাওয়া যায়। আমার জানার খুব ইচ্ছে জায়গাটা কেমন।

লেখাটা পড়ার জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

****************************************

অরফিয়াস এর ছবি

আপনার ইচ্ছেটা একটু হলেও পূরণ করার চেষ্টা করলাম, এলাহাবাদ থেকে খাজুরাহ যাত্রার একটা পর্ব লিখলাম, দেখবেন কেমন লাগে... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

কৌস্তুভ এর ছবি

ছবিগুলো সব আপনার তোলা? দারুণ সুন্দর। লেখাও বেশ।

মন মাঝি এর ছবি

না, প্রথম ৪ টা ছবি আর ভিডিওটা আমার না। ইন্টারনেট থেকে নেয়া। বাকিগুলি, অর্থাৎ পঁচাগুলি আমার তোলা হাসি লেখার নীচে ফুটনোটে সেটা উল্লেখ করা আছে, আপনার দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে মনে হয়। আসলে আমারই ভুল, ফুটনোট আমি সাধারনত মূল লেখার চেয়ে ছোট ফন্টে দেই - কিন্তু সেটা করতে গিয়ে এই নোটটা বেশি ছোট হয়ে গেছে। ঠিক করে দিচ্ছি। নীচে উজানগাঁ-র মন্তব্যে আমার উত্তরটি দেখুন।

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

****************************************

আয়নামতি এর ছবি

মন দিয়ে পড়ছিলাম, কেমন হুট করেই শেষ হয়ে গেলো ওঁয়া ওঁয়া বর্ণনা আর ছবিতে উত্তম জাঝা!

মন মাঝি এর ছবি

হুট করে শেষ করে দিতে হলো কারন বেশি লম্বা হয়ে যাচ্ছিল। পরের পর্বে আবারো হুট হওয়ার সম্ভাবনা আছে! দেঁতো হাসি

****************************************

দ্রোহী এর ছবি

বাকেট লিস্টে গিজার পিরামিড বেশ উপরের দিকে আছে। জানি না কবে দেখতে পারবো। মন খারাপ

মন মাঝি এর ছবি

দেখবেন ! দেখবেন ! আগে আমার এখানে দেখে নিন। আমার স্টকে এখনো অনেক ছবি বাকি আছে। হাসি

****************************************

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

চমৎকার লেখা আর ছবি!!! কায়রো ঘুরে এলাম যেন....... চলুক


_____________________
Give Her Freedom!

মন মাঝি এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

****************************************

ইস্কান্দর বরকন্দাজ এর ছবি

চলুক

মন মাঝি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

****************************************

উজানগাঁ এর ছবি

যেকোনো ভ্রমণকাহিনিই আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো পড়ি। পরের পর্ব তাড়াতাড়ি ছাড়েন। হাসি

পুরো সিরিজের ছবিগুলোর ব্যাপারে আমার একটা প্রশ্ন ছিল। সবগুলো ছবিই কি আপনার তোলা ?

মন মাঝি এর ছবি

না ভাই। বেশির ভাগ ছবিই আমার তোলা না। সেরকম হলে কি ভালই না হত! তবে প্রতিটি পর্বেই মনে হয় এই মর্মে স্বীকৃতি দেয়া আছে। এই পর্বেও আছে মূল লেখার ফুটনোটে, আপনার দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে মনে হয়। এই পর্বে প্রথম ৪ টা ছবি ও নীচের ভিডিওর সোর্স ইন্টারনেট। বাকিগুলি আমার তোলা।

আসলে আমারই ভুল - ফুটনোট আমি সাধারনত মূল লেখার চেয়ে ছোট ফন্টে দেই - কিন্তু সেটা করতে গিয়ে এই নোটটা বেশি ছোট হয়ে গেছে। এখন ঠিক করে দিয়েছি অবশ্য - আশা করি এবার এটা যথেষ্ট দৃষ্টিগোচর হবে।

আমার দু'টি সমস্যা ছবি নিয়ে --

১। আমার তোলা বেশির ভাগ ছবিরই কোয়ালিটি এত খারাপ যে তা কিছুতেই ব্লগে দেয়ার মত না। ফলে ইন্টারনেটের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।

২। আমার তোলা ছবিগুলির ৯৯%-এর মধ্যেই আমার বা অন্য কারো না কারো থ্যাবড়া বদনখানি বিকট ক্লোজ-আপে অত্যন্ত বিসদৃশ ভাবে দৃশ্যমান। এর মধ্য থেকে অন্যরকম ছবি খুঁজে বের করতে গেলে আমার সেসব ছবি এক পর্বেই শেষ হয়ে যাবে। মুশকিল হল আমি কমিউনিটি ব্লগের একটা পোস্টকে আমার ব্যক্তিগত/ফ্যামিলি এলবাম বা আত্নপ্রচারের হাতিয়ারে পরিণত করতে চাই না। আপনিও সেটা পছন্দ করবেন না - অনেকেই করেন না। তাছাড়া অনেক ছবিই আছে যেগুলি বিনানুমতিতে পাবলিক ফোরামে প্রকাশযোগ্য নয়। এই ছবিগুলি যখন তুলেছি তখন কিন্তু সেই উদ্দেশ্যেই এগুলি তুলেছিলাম - দেশে ফিরে এসে বন্ধুবান্ধবদের দেখানোর জন্য। তাদের দেখানো যে আমি হেনতেন জায়গায় গিয়েছি। তার বেশি কিছু না।

তখন সচলায়তন তো দূরে থাকুক, "ব্লগ" বলে যে দুনিয়াতে কোন কিছুর অস্তিত্ত্ব আছে সেটাই জানতাম না। আর আমি সেখানে লিখব সেটা কল্পনাতেও ছিল না। থাকলে আরো কিছু উপযুক্ত ইমপার্সোনাল ছবি হয়তো তুলে রাখতাম।

তো এই অবস্থার একটাই সমাধান দেখছি - স্বীকৃতিপ্রদানপূর্বক ইন্টারনেট থেকে কিছু ছবি ধার করা। সেইসাথে নিজের তোলা কিছু ছবিও জুড়ে দেয়া - প্রয়োজনে ছবিগুলিকে নষ্ট না করে ফটোশপে একটু ডক্টর করে নিয়ে (তবে এটা আমি একেবারেই ভালো পারিনা - অনেক সময় লাগে আর কষ্ট হয়)। এই দুইয়ের মিক্স দিয়েই চালাতে হবে।

যাইহোক, লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

****************************************

কল্যাণF এর ছবি

চলুক

ধুসর গোধূলি এর ছবি

কায়রোতে খাওয়ার সেই দোকানটা দেখেন নাই? সৈয়দ সাহেব যেটার কথা বলেছিলেন! যেখানে একটা প্লেটে করে শশা আসে। তার পেটের মধ্যে কাঁটাচামচ দিয়ে হালকা চাপ দিতেই ভেতরে থেকে বেরিয়ে আসে পোলাও। পাশের টেবিলে এই শশা দেখে লাজলজ্জার মাথা খেয়ে দোকানের মালিককে বলতে হয়, 'যা আছে কুল কপালে, আমি ঐ শশাই খাবো!'

আমি কোনোদিন কায়রো গেলে (যামু তো বটেই!) ঐ দোকানটা খুঁজে বের করবো। তারপর কুলকপাল ফেলে রেখে চেয়ারে ঠ্যাঙ তুলে শশা খাবো। তারপর লুঙ্গি মালকোচা মেরে নীল নদে নেমে গান ধরবো, 'ওরে নীল দরিয়া, আমায় দে রে দে ছাড়িয়া...'

আশালতা এর ছবি

জব্বর বলেছেন। আহা.. যদি তাই হত !

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

মন মাঝি এর ছবি

নারে ভাই, কায়রোতে সৈয়দ সাহেবের দোকানটা পাই নাই - তবে আরেক সৈয়দ সাহেবের নামাঙ্কিত পোর্ট সৈয়দে গিয়ে খাওয়ার দোকানের হদিশ না পেয়ে পেটের ছুঁচোর কেত্তনের ঠেলায় আমিও ঐ 'ওরে নীল দরিয়া, আমায় দে রে দে ছাড়িয়া...' গান ধরেছিলাম।

****************************************

আশালতা এর ছবি

কায়রো কাহন ! কেয়াবাত ! চলুক

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

আহ, কায়রো, নীলনদ, প্রমোদতরী, আরবী সুর!!

পোষ্টটি যে তিয়াস বাড়িয়ে দিলো শতগুণে।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আপনার এই লেখাটা্র কায়রোর বর্ণনা পড়ে খুব ভালো লেগেছে... একটা ব্যস্ত শহর, যেখানে প্রাচ্য আর আধুনিকতা একসাথে জোর কদমে চলেছে একই সাথে স্থির আর অস্থিররূপে, এই চিত্রটা দারুণভাবে ফুটে উঠেছে মনে হয়েছে... আমি প্রথম কয়েকটা প্যারায় অনেকক্ষণ আটকে ছিলাম... সহজে এমনটা হয় না ইদানীং কোন কিছু পড়বার সময়ে। হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

মন মাঝি এর ছবি

চমৎকার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ! আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

****************************************

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।