আমি যখন পণ্ডিতমশাই…

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ২১/০৯/২০১১ - ২:৪৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নিজের ছাত্রজীবন এখনো শেষ না হলেও যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আমাকেও ছাত্র আর গুরুর দ্বৈতভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠার আগে বাড়ি থেকেই টাকা নিতাম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ওঠার পরপরই নিজেকে বড় বড় মনে হতে লাগলো। ফলে বাবার কাছে টাকা চাইতে গিয়ে মনের বাধাটা এলো দু’ভাবে। একদিকে স্বাবলম্বী হওয়ার তথা নিজের পায়ে(কেউ কি অন্যের পায়ে হাঁটে নাকি!) দাঁড়ানোর উত্তুঙ্গ বাসনা আর অন্যদিকে মধ্যবিত্ত বাবার কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব করার তাড়না। এই দু’য়ের চাপে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডিটাকে মূলধন করে আরো অনেক ভার্সিটিপড়ুয়া পুলাপাইনের মতো আমিও আমার কর্মজীবন শুরু করলাম একজন গৃহশিক্ষক হিসেবে।

একসময় অনেক টাকা-পয়সা থাকা সত্ত্বেও অনেক অভিভাবককেই সন্তানের শিক্ষার ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহী হতেন না। বলতেন, “আরে এতো পড়াশুনা করে কি হবে? আমার এতো জায়গা-জমি, সহায়-সম্পত্তি কে খাইবো?” মায়ের মুখে শুনেছিলাম তাঁর ঠাকুর্দার অনেক সহায়-সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও তিনি (আমার)দাদুকে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দিতে রাজি হননি। শেষে দাদু বাড়ি থেকে পালিয়ে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছিলেন। আর সেই পরীক্ষার ফি যোগাড় করতে তাঁকে নিজেদের বাগানের নারিকেল-সুপারিই চুরি করতে হয়েছিলো। তবে আমার ভাগ্য ভালো যে, অমন একটা শিক্ষানুরাগী দাদু পেয়েছি, সেইসাথে বাপকা-বেটি হিসেবে আমার মা ও শিক্ষানুরাগী ছিলেন। আর বাবার অবস্থাও অত ভালো না হওয়ায় অন্ততঃ সহায়-সম্পত্তির দোহাই শুনতে হয়নি।

যাই হোক, বর্তমান যুগের অভিভাবকেরা কিন্তু খুবই শিক্ষা সচেতন! তাঁরা সম্ভব হলে সন্তান পৃথিবীর মাটিতে পদার্পণ করার আগে থেকেই তার শিক্ষার যাবতীয় বন্দোবস্ত করে রাখতে খুবই সচেতন। আর সন্তানের শিক্ষা বিষয়ে তাদের সেই একাগ্রতা ও নিষ্ঠার ফলে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে বিদ্যুতের বেগে! আর অত্যন্ত আনন্দের বিষয় এই যে তাদের সেই একাগ্রতা আমাদের (মানে পার্টটাইম পণ্ডিতমশাই সম্প্রদায়ের) জন্যও খুবই লাভজনক!

আমার মনে আছে, আমি আমার জীবনে প্রথম প্রাইভেট টিউটরের শরণাপন্ন হয়েছিলাম ক্লাস নাইনের শেষদিকে এসে। তাও আবার নিতান্ত বাধ্য হয়ে। বেয়াড়া ম্যাথটাকে যে কিছুতেই বাগে আনতে পারছিলাম না। তারপর ক্লাসটেনে উঠেও কিছুদিন পড়েছিলাম। সেই শেষ। এরপর নটরডেম কলেজে এসে এমন কিছু শিক্ষক পেয়েছি যে আমাকে প্রাইভেট পড়ার কথা আর ভাবতে হয়নি(ট্রুথলি স্পীকিং)।

কিছুদিন আগে বাসে করে ফার্মগেট যাচ্ছিলাম ঐ টিউশনির উদ্দেশ্যেই। তো, বাসে আমার পাশেই কয়েকটা এস,এস,সি ক্যান্ডিডেট ছেলে বসেছিলো। পথে একটা স্টপেজ থেকে ওদেরই একটা ক্লাসমেট উঠলো।

..........................................................................................
১মবন্ধুঃ আরে দোস্ত, এইহানে? কি মনে কইরা?
২য়বন্ধুঃ আর কইস না, দোস্ত। মোস্তফা স্যারের কাছে আইছিলাম মডেল টেস্ট দিতে।
১মবন্ধুঃ ধর্মের মডেল টেস্ট!(মোস্তফা স্যার মনে হয় ধর্মশিক্ষক)
২য়বন্ধুঃ হ দোস্ত। আম্মায় পাঠায় দিলো।
.........................................................................................

শুধু ধর্ম না, বর্তমানে কোন সাবজেক্ট বাকি আছে যা প্রাইভেট পড়া কিংবা পড়ানো হয় না? আমাদের এই প্রাইভেটমুখী শিক্ষার শুরুটা অবশ্য গোড়া থেকেই। ভর্তিযুদ্ধে নামার জন্য সেই বাল্যকাল থেকে শুরু হয়ে চলে শিক্ষাজীবনের শেষ অব্দি।(হ্যাঁ, সত্যিই তাই! আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদেরও প্রাইভেট পড়তে দেখেছি। দেশসেরা শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বুয়েট এর ছেলেরা পর্যন্ত দল বেঁধে C++, মেকানিক্স, সার্কিট ইত্যাদি প্রাইভেট পড়ে! অন্যদের কথা নাই বা বললাম।) পাড়া-মহল্লার মোড়ে মোড়ে এখন দেখা যায় “ভি,এন,সি, আইডিয়াল, সেন্ট যোসেফে ভর্তির একশতভাগ নিশ্চয়তা”, “অত্যন্ত যত্নসহকারে ১০০ভাগ সাফল্যের নিশ্চয়তায় পড়ানো হয়” টাইপ বিজ্ঞাপন। আর সেই চটকদার বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে আমাদের শিক্ষাসচেতন(!) মা-বাবারাও তাদের সন্তানদের ঠেলে দেন মহাযুদ্ধের ময়দানে। এরা কীভাবে বড় হয়ে বলবে, “যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই!”??

আমি আমার শিক্ষাজীবন শুরু করেছিলাম ছয়বছর বয়সে। মাথার উপর দিয়ে হাত নিয়ে কান ছুঁতে বলা হত। প্রথমবছর এই কান ছোঁয়ার পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ায় ‘ছোটো ওয়ান’ এ ভর্তি করা হয়েছিলো। পরের বছর সুযোগ ঘটেছিলো বড় ওয়ান তথা ক্লাস ওয়ানে ওঠার। এখনকার শিশুদেরকে নাকি ক্লাস ওয়ানে উঠার আগেই আরো অনেক গুলো ক্লাস(টডলার, প্লে, নার্সারি, কেজি) পেরিয়ে আসতে হয়। তারপর ভালো স্কুলে ভর্তির জন্য একাধিকবার একই ক্লাসে পড়ে থাকার ব্যাপার তো আছেই। এজন্যই মনে হয়, আমার কাছে পাঁচ ব্যাচ জুনিয়র স্টুডেন্টটাকেও এতো বড় বড় লাগে।

এমনি আরো অনেক কথাই বলার ছিলো। হয়তো বলবোও। তবে অন্য কোনোদিন। আজ এখানেই থামছি। তবে শেষ করার আগে আমার পণ্ডিতি জীবনের একটি মজার ঘটনা পাঠকদের সাথে শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারছি না।

১| শিমুল এবং রাতুল দু’জনেই আমার কাছে সেই ইন্টারমিডিয়েটের শুরু থেকে একসাথে পড়ে। দু’জনেই ছাত্র হিসেবে যথেষ্ট ভালো। সামনে এইচ,এস,সি পরীক্ষা দিবে। আমি ওদেরকে মূলতঃ পদার্থ, রসায়ন আর গণিত- এই তিনটা সাবজেক্ট পড়াই। তো, একদিন ওদের গার্জিয়ানরা অনুরোধ করলো আমি যাতে টেস্টের আগে ছয় সাবজেক্টের জন্যই অন্ততঃ একটা করে মডেল টেস্ট নেই। তো, আমি ওদের মডেল টেস্টের রুটিন এমনভাবে করলাম যে একজনের ১মপত্র পরীক্ষার সময় আরেকজন ২য়পত্র পরীক্ষা দিবে। প্রথমদিন শিমুল বাংলা-১মপত্র আর রাতুল বাংলা-২য়পত্র পরীক্ষা দিলো। পরদিন শিমুল বাংলা-২য়পত্র পরীক্ষা আর রাতুল বাংলা-১মপত্র পরীক্ষা দিচ্ছে। ওরা পরীক্ষা দিচ্ছে আর আমি একটু বেলকনিতে এসে দাঁড়ালাম। এমন সময় হটাৎ কানে এলো শিমুল রাতুলকে জিজ্ঞাসা করছে, “আচ্ছা রাতুল, বলতো সন্ত্রাসীরা মানুষ মারে কি দিয়ে?” রাতুলের জবাব, “লাঙ্গল দিয়ে!” পরদিন শিমুলের খাতা দেখতে গিয়ে আমি তো হতবাক। প্রশ্নে বলা হয়েছিলো, “তোমার এলাকার আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতির কথা জানিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য একটি প্রতিবেদন লিখ।” সেখানে একজায়গায় শিমুল যা লিখেছে তা হলো এরকম, “………সন্ত্রাসীরা লাঙ্গল দিয়ে হাজার হাজার মানুষকে মেরে ফেলছে। তাঁদের লাঙ্গলের কাছে এলাকাবাসীরা আজ জিম্মি………”

(পুরো ঘটনা অসুন্ধান করতে গিয়ে জানা গেলো যে রাতুল ঐ সময় ‘মহেশ’ নিয়ে লিখছিলো। আর লাঙ্গল দিয়ে মানুষ মারার ব্যাপারটাও খুব সম্ভবতঃ সেখান থেকেই উদ্ভূত।)

ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

--বাংলামায়ের ছেলে


মন্তব্য

নিটোল. এর ছবি

ভার্সিটিতে উঠেই মাস্টারি করাটা বোধ হয় সব পাবলিক ভার্সিটির ছেলেমেয়েদের জন্য স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে ( প্রাইভেট ভার্সিটির পোলাপানও টিউশনি করায়, তবে তুলনামূলকভাবে কম)। একেবারে আঁতেল টাইপ স্টুডেন্ট ছাড়া সবাই একটা ভালো মাইনের টিউশনি পেলে বর্তে যায়, এমনকি তার আর্থিক কোনো সমস্যা না থাকলেও। আমি নিজেও মাস্টারি করি। ভালোই লাগে।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

হুমম ভালোই তো লাগেই। বিশেষ করে যখন মাস শেষে নগদ টাকা হাতে আসে। হাসি

তবে খারাপ লাগে স্টুডেন্টগুলোর জন্য, যখন দেখি যে মা-বাবারা ওদের হিত-চিন্তা করতে গিয়ে একাডেমিক পড়াশুনার সাথে কোচিং, প্রাইভেটসহ আরো নানা রুটিন ওয়ার্ক দিয়ে ওদের জীবনটাকে অসহ্য করে ফেলে।

কর্ণজয় এর ছবি

লাঙ্গল দিয়ে বাংলাদেশে মানুষ মারা চলে ৮২ সাল থেকে ৯০ পর্যন্ত....

পাঠক এর ছবি

আর তারপর থেকে???

তানিম এহসান এর ছবি

মন্তব্যের ঘরে চলতে যেয়ে সেইরকম পছন্দ হয়েে গেছে মন্তব্যটা, একটা চমকের মত লাগলো! সেই লাঙলের মালিক-মালকিনরা তখন লাঙল বিক্রি করে এত ধনী হয়েছিলো যে এখনও তাদের চেকনাই দেখলে চেনা যায়, তারা “তোমাদের পাশে এসে বিপদের সাথী হতে আজকের চেষ্টা আমার” নামক গান গাইতো আর মাঝে মাঝে অন্যের কবিতা নিজের নামে চালাতো। শিল্পী কামরুল হাসানের আত্মা প্রশান্তিতে থাকুক, তিনি এঁকেছিলেন - দেশ আজ বিশ্ব-বেহায়ার খপ্পরে।

অতএব যারা সেই সময়টায় অত কিছু বোঝার বয়সে ছিলেননা, তাদেরকে বলছি - এই জাতীয় লোকদের একটা পার্টি ছিলো, নাম জাতীয় পার্টি, এখনো আছে, তাদের বেশীরভাগ অন্য দল থেকে ডিগবাজী দিয়ে এখানে এসেছিলো, অনেকে আবার ডিগবাজী দিয়ে নিজের জায়গায় ফিরে গেছে। মূল মালিকের নামটাও নিশ্চয়ই আপনারা জেনে গেছেন এইভাবে - হোমো এরশাদ।

সেসময় যারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের মধ্যে যাদের নাম এই মুহূর্তে মনে পড়ছে (রাউফুন বসুনিয়া, দিপালী, সেলিম, দেলোয়ার, নুর হোসেন, ডাঃ মিলন) এবং পড়ছেনা আসুন তাদের সবার জন্য আলো জ্বালাই শ্রদ্ধা

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

শ্রদ্ধা

কর্ণজয় এর ছবি

.

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

আপনার আগের কমেন্টে একটা প্রতি কমেন্ট করেছিলাম।
মনে হয় উপর মহলের পছন্দ হয় নাই; যদিও আমি নিতান্ত সরলমনেই কমেন্টটা করেছিলাম।

অতিথি লেখকঃ অতীত এর ছবি

চলুক চলুক ভালো লাগলো। চমৎকার আপনার লেখার স্টাইল। একেবারে জড়তাহীন, সাবলীল। মনে হলো যেনো আড্ডার মধ্যে আছি। তবে শেষে ধন্যবাদ দেয়াটার মনে হয় প্রয়োজন ছিলো না। হুট করে গল্পের বাইরে চলে এসেছি এসেছি লাগে। একান্ত পাঠককে কিছু বলতে চাইলে গ্যাপ দিয়ে ডিসক্লেইমার হিসেবে দিতে পারেন। চলুক সমানে এইসব মজার অভিজ্ঞতা।

অতীত

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

পড়ার জন্য, মন্তব্যের জন্য এবং পরামর্শের জন্য---অশেষ ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।

পরেরবার থেকে খিয়াল করমু নে। এইবার তো আর কিছু করার নাই।

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

ভাইরে, মফস্বল শহরে থাকার কারনে আমি এমন সচেতন বাবা-মা পাইনি মন খারাপ । তাই প্রাইভেট টিউশনি (আমরা ক্লাসমেটরা বলতাম মাটিকাটা ) করতে পার নাই ছাত্র বয়সে; সব খরচই নিতে হত বাবা-মায়ের কাছ থেকে। মন খারাপ

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

মিস করছেন ভাই, মিস করছেন।

বিশাল বড় মিস কইরা ফালাইছেন।

মিলু এর ছবি

ভালো লাগল। লেখা চলুক। শুভকামনা রইল। আর ইয়ে, কথাটা আসলে "ট্রুলি স্পীকিং", "ট্রুথলি" নয়।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

স্যরি ভাই, ভুল হয়া গেছে। বহুত তাড়াহুড়া কইরা লিখছি। প্রুফ রিডিং করার সুযোগ হয় নাই।
নেক্সট টাইম, মনে থাকবে ইনশাল্লাহ......

অরিত্র অরিত্র এর ছবি

মাসের শেষে যখন টাকা পেতাম কী যে ভাল লাগত!

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

আবার জিগস!!! টাকা হাতে থাকলে দুনিয়াটা রঙ্গীন লাগে, আর না থাকলে ফ্যাকাশে...

হেমন্তের ঘ্রাণ এর ছবি

ভাইরে, মফস্বল শহরে থাকার কারনে আমি এমন সচেতন বাবা-মা পাইনি মন খারাপ । তাই প্রাইভেট টিউশনি (আমরা ক্লাসমেটরা বলতাম মাটিকাটা ) করতে পার নাই ছাত্র বয়সে; সব খরচই নিতে হত বাবা-মায়ের কাছ থেকে

চলুক চলুক
দারুন লিখেন আপনি, চালিয়ে যান ।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

হুমম! এই মফস্বলের মা-বাবাগুলো যে এখনো কেন পড়াশুনার মর্মটা এমন করে বুঝলো না??...খুবই দুঃখজনক......চোখ টিপি
আশা করছি তারাও অচিরেই বুঝতে পারবেন...

আপনার মন্তব্যে অনুপ্রাণিত বোধ করছি!
অশেষ কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই।
আশা রাখি আগামী দিনগুলোতেও পাশে পাবো। ভালো থাকা হোক।

জ.ই মানিক এর ছবি

সময়ের হাত ধরে ছুটে চলে জীবন; যখন সে যেমন।

বইয়ের বোঝার ভারে নুয়ে পড়া ক্লান্ত শিশুগুলোর মুখগুলো দেখে মায়াই লাগে বরং।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

কচিদেহ নুয়ে পড়ে
জ্ঞানবোঝা ভারে।
ছোট কাধেঁ এতো চাপ
সইতে না পারে।।

ওরা জানে না দুরন্ত শৈশবের মানে কি...

guesr_writer rajkonya এর ছবি

আমিও অনেক স্টুডেন্ট পড়িয়েছি। সেই ছোট্টবেলা থেকে। তখন পড়া পড়া খেলা খেলতাম। আমি নিজেই পড়ি ক্লাস ত্রিতে, আরেকজনকে অ আ ক খ পড়াতাম। আমার কাছে পড়তে নাকি আবার ওর ভাল লাগত। এই রকম, নিজের খেলার সংগীদের পড়াতাম। কাউকে টেন্স বুঝিয়ে দেওয়া, কাউকে আর্টিক্যাল। এইভাবে ঢাবিতে পড়ার সময় কিছুটা নিজের হাত খরচ চালিয়ে নেবার জন্য, কিছুটা শখে অনেক শিক্ষার্থী পড়িয়েছি। এই করতে করতে অবশেষে শিক্ষকতাকেই পেশা হিসেবে নিয়েছি।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

আশা করি গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে আপনি একজন ভালো শিক্ষক হয়ে আগামীর জন্য একটা সুন্দর প্রজন্ম তৈরি করতে সক্ষম হবেন।

উচ্ছলা এর ছবি

আমি বরারবই জানতাম যে আমি শিক্ষক-material নই। তারপরও দুইটা পিচ্চিকে টিউশান দিয়েছি সেই উন্নিশ্য পস্পান্ন সালে ...অভিজ্ঞতাটা খারাপ নাহ্ দেঁতো হাসি

এখন প্রায় হাজারখানেক পোলাপাইনের একটা দলে কাজ করি, তবে তা শিক্ষকতা না দেঁতো হাসি

আপনার লেখা মজা লেগেছে চলুক

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

ওরে বাবা! পস্পান্ন সাল!! আমার বাবারো তখন জন্ম হয় নি।

মজা লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।

ভালো থাকা হোক।

উচ্ছলা এর ছবি

আমি শিক্ষক-material না এটা জেনেও দুইটা পিচ্চিকে টিউশান দিয়েছি সেই উন্নিশ্য পস্পান্ন সালে...অভিজ্ঞতাটা খারাপ নাহ্ দেঁতো হাসি

আপনার পোস্ট পড়তে মজা লেগেছে চলুক

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

আগেরটা আসেনি ভেবেছিলেন নাকি?
আসলে মডারেশনজনিত কারণে সচলে অতিথিদের পোস্ট এবং কমেন্ট আসতে একটু সময় লাগে।

বন্দনা এর ছবি

লিখা মজারু হয়েছে। টিউশানীর টাকা উড়াইতে বড্ড মজা লাগে।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

শুনে ভালো লাগলো। চেষ্টা করবো ভবিষ্যতেও এরকম মজার মজার লেখা উপহার দিতে...

আবার জিগায়...
কে,এফ,সি, স্টার কাবাব, পেনাং টিকে আছে তো আমাদের বদৌলতেই...

riti nirobodhi এর ছবি

সাবলীল লিখা। চলুক

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

ধন্যবাদ।
অনুপ্রাণিত বোধ করছি।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

ধন্যবাদ।
অনুপ্রাণিত বোধ করছি।

আশফাক আহমেদ এর ছবি

লেখা মজারু লাগলো। আমি নিজেও হালকাপাতলা পড়াই। আপসা-ঝাপসা দু-চারটে অভিজ্ঞতাও আছে। আপনার সিরিজ চলুক। আমিও সুযোগ পেলে শেয়ার করবো

-------------------------------------------------

ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

মজা পেয়েছেন জেনে ভালো লাগলো।

আপনার অভিজ্ঞতাগুলো শোনার অপেক্ষায় রইলাম।

ভালো থাকা হোক।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

লেখাটা তাড়াহুড়োয় শেষ করা মনে হলো।

ছাত্রজীবনে টিউশনি করা অনেক যোগ্যতা সৃষ্টি করে। নিজে পড়া আর অন্যকে পড়ানোর মধ্যে পার্থক্য হলো অন্যকে পড়াতে গেলে পড়াটা পরিষ্কারভাবে বুঝতে হয়। চিন্তা করার ক্ষমতা বাড়ে, কমিউনিকেশন স্কিলও বাড়ে। গ্রাহক পর্যায়ে, স্কুলে ভালোভাবে পড়ালে এবং সিলেবাস ও পড়ার বিষয় সেভাবে সিলেক্ট করলে প্রাইভেট টিউটরের প্রয়োজন খুব কম হয়।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

সহমত জানাই।

শাব্দিক এর ছবি

ভার্সিটি তে ক্লাসের সবাই আমরা পাথর ভাঙতে যেতাম (টিউশানিকে এই নামেই ডাকা হত)।
আমার এক বান্ধবী একবার তার ফাইভ পড়ুয়া ছাত্রের কাছ থেকে পেম পত্র পায়, তাকে উদ্দেশ্য করে লেখা।
পুরোন স্মৃতি মনে করিয়ে দেবার জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

পাথর ভাঙ্গা!!!

ক্লাস ফাইভের ছাত্রের কাছ থেকে প্রেমপত্র! বড়ই ইঁচড়েপাকা ছোড়ার পাল্লায় পড়েছিলো বোধ হয়।

আপনাকেও :ধন্যবাদ:

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি
তানিম এহসান এর ছবি

আমার মা/বাবার চাচাতো/খালাতো/মামাতো/ফুপাতো ভাই-বোনের কিংবা বন্ধু আর প্রতিবেশীদের শিশুদের পড়িয়েছি কিন্তু আমার বাবা-মা কোনদিন আমাকে টাকা নেয়ার সুযোগ দেননি, মাঝে মাঝে খারাপ লাগতো যখন টাকা থাকতোনা। তবে তারা আবার উৎসবের সময়, আমার জন্মদিনে দারুন দারুন সব গিফট দিতেন যার বেশীরভাগই হতো বই, দারুন দারুন সব বই।

আমার মা-বাবা সবসময় বলতেন “টাকার দরকার নেই, ওনারা বেতন দিতে চাইলেও নিবেনা, বলবা দোয়া করতে”! অথচ সৎ সরকারী বাবার একার আয়ে সংসার চলতো। মা-বাবার এইসব কথা মনে পড়ে গেলেই বুকটা ভরে উঠে!

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

আপনার মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই... শ্রদ্ধা

উপহার হিসেবে বইয়ের চেয়ে উৎকৃষ্ট আর কি হতে পারে?

মন্তব্যের জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অনিকেত  এর ছবি

এইচ এস সির স্টুডেন্ট 'মহেশ' নিয়ে লিখতে যাবে কেন ??? মহেশ তো এস এস সিতে । তাও বাংলা ১ম পত্রে । বেশ আজব লাগতেছে ব্যাপারটা ।

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

হুমম ঠিক ধরেছেন হাসি
কিন্তু রহস্য তো অন্যখানে। সেটা ধরতে পারছেন তো?...

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকা হোক।

সুমন তুরহান এর ছবি

এই সিরিজের সবগুলো পড়লাম। আপনার লেখার ভঙ্গীটি বেশ স্বাদু। নিয়মিত লেখার আবেদন রইলো।

-----------------------------------------------------------
স্নান স্নান চিৎকার শুনে থাকো যদি
নেমে এসো পূর্ণবেগে ভরাস্রোতে হে লৌকিক অলৌকিক নদী

বাংলামায়ের ছেলে এর ছবি

ধন্যবাদ। শুনে ভালো লাগলো।
অনুপ্রাণিত বোধ করছি।

আশা করি নিয়মিতই এরকম আরো অনেক অনেক লেখা উপহার দিতে পারবো। দোয়া রাখবেন।
চাইলে ঘুরে আসতে পারেন আমার আগের লেখা গুলো থেকেও। ৩৮নং কমেন্টে লিঙ্ক দেয়া আছে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।