বাংলার স্বাধীনতা আনলো যারা - আমাদের সেই সাত বীরশ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা

রাগিব এর ছবি
লিখেছেন রাগিব (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৩/১২/২০০৯ - ৩:৩৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto

যাঁরা পোস্টটি পড়ছেন, তাঁরা কি কষ্ট করে একটা কাজ করবেন? আপনার পরিচিত শিশু কিশোরদেরকে এই পোস্টের লিংক পাঠান, কিংবা পড়তে দেন। আগামী প্রজন্মের জানা দরকার, কাদের রক্তের বিনিময়ে আজ আমরা স্বাধীন। পাঠ্যপুস্তকে অনেকেই বিশেষ করে ইংরেজি মাধ্যমের বা মাদ্রাসা মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা এসব হয়তো পড়ে না -- বাংলা মাধ্যমেও এখন কতটুকু আছে কে জানে। তাই শিশু কিশোরদের জানান, পড়তে দিন আমাদের বীরশ্রেষ্ঠদের বীরত্বের গাঁথা।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ বাংলার ইতিহাসে এক স্বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায়। এই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী এবং তার স্থানীয় দোসর জামাত, আল-বদর, আল-শামস, ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন বাংলার আপামর জনসাধারণ। মুক্তিযুদ্ধে অপরিসীম বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য ৭ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বীরত্বের খেতাব - বীর শ্রেষ্ঠ উপাধি প্রদান করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধ হয়ে গেছে ৩৮ বছর আগে, ডিসেম্বরের সেই বিজয়েরও ৩৮ বছর হয়ে আসলো। ছেলেবেলায় "আমার বই" নামের পাঠ্যপুস্তকে পড়েছিলাম এই বীরশ্রেষ্ঠদের কথা। জানিনা, আজকের শিশুরা সেটা পড়তে পারছে কি না।

বাংলা উইকিপিডিয়াতে তাই আমরা ধরে রাখার চেষ্টা করছি বীরশ্রেষ্ঠদের জীবনীর কথা। তথ্য সূত্র অপ্রতুল, আর উইকিতে অল্প একটু করে সময় দেয়ার মতো কর্মীরও অনেক অভাব, তার পরেও কিছুটা তথ্য যোগাড় করা হয়েছে উইকিতে।

বীর বাঙালির বিজয়ের স্মারক এই ডিসেম্বর মাসে বাংলা উইকিপিডিয়া হতে মুক্তিযোদ্ধা ও বীর শ্রেষ্ঠদের জীবনী তুলে ধরার প্রয়াস নিচ্ছি। জীবনী নিবন্ধ সমূহ বাংলা উইকিপিডিয়ার কর্মীরা বিভিন্ন তথ্যসূত্র ঘেঁটে সংকলন করেছেন।

কোনো ভুল ত্রুটি থাকলে দেখিয়ে দেবেন, কিংবা আরো ভালো হয় যদি উইকির সংশ্লিষ্ট পাতায় গিয়ে একটু শুধরে দেন। বীরশ্রেষ্ঠদের প্রতি এতটুকু তো অন্তত আমরা করতে পারি, তাই না?

বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান

auto

বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান (২৯শে অক্টোবর, ১৯৪১—২০শে আগস্ট, ) একজন বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধা। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত হন। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা আর বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ যে সাতজন বীরকে সর্বোচ্চ সম্মান বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করা হয় ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান তাদের মধ্যে অন্যতম।

১ জীবনী

মতিউর ১৯৪১ সালের ২৯শে অক্টোবর পুরান ঢাকার ১০৯ আগা সাদেক রোডের পৈত্রিক বাড়ি "মোবারক লজ"-এ জন্মগ্রহণ করেন। ৯ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে মতিউর ৬ষ্ঠ। তাঁর বাবা মৌলভী আবদুস সামাদ, মা সৈয়দা মোবারকুন্নেসা খাতুন।

ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ষষ্ঠ শ্রেনী পাস করার পর সারগোদায় পাকিস্তান বিমান বাহিনী পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন। ডিস্টিংকসহ মেট্রিক পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯৬১ সালে বিমান বাহিনীতে যোগ দেন।

auto
পাকিস্তান বিমানবাহিনীর অন্য পাইলটদের সাথে মতিউর (সামনের সারিতে ডান থেকে ২য়)। সর্ববামে আরেক বাঙালি বৈমানিক ওয়ালিদ করিম

১৯৬৩ সালের জুন মাসে রিসালপুর পি,এ,এফ কলেজ থেকে কমিশন লাভ করেন এবং জেনারেল ডিউটি পাইলট হিসাবে নিযুক্ত হন। এরপর করাচির মৌরীপুরে জেট কনভার্সন কোর্স সমাপ্তি করে পেশোয়ারে গিয়ে জেটপাইলট হন। ১৯৬৫তে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় ফ্লাইং অফিসার অবস্থায় কর্মরত ছিলেন। এরপর মিগ কনভার্সন কোর্সের জন্য পুনরায় সারগোদায় যান। সেখানে ১৯৬৭ সালের ২১ জুলাই তারিখে একটি মিগ-১৯ বিমান চালানোর সময় আকাশে সেটা হঠাৎ বিকল হয়ে গেলে দক্ষতার সাথে প্যারাসুট যোগে মাটিতে অবতরণ করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ইরানের রানী ফারাহ দিবার সম্মানে পেশোয়ারে অনুষ্ঠিত বিমান মহড়ায় তিনি ছিলেন একমাত্র বাঙালি পাইলট। রিসালপুরে দু'বছর ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টর হিসাবে কাজ করার পর ১৯৭০ এ বদলি হয়ে আসেন জেট ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টর হয়ে।১৯৭১ এর ফেব্রুয়ারী মাসে ঢাকায় ছুটিতে আসেন।

২ যেভাবে শহীদ হলেন

২৫ মার্চের ঘটনায় তিনি অত্যন্ত মর্মাহত হন। পরে তিনি দৌলতকান্দিতে জনসভা করেন এবং বিরাট মিছিল নিয়ে ভৈরব বাজারে যান। পাক-সৈন্যরা ভৈরব আক্রমণ করলে বেঙ্গল রেজিমেন্টে ই,পি,আর-এর সঙ্গে থেকে প্রতিরোধ বুহ্য তৈরি করেন। এর পরই কর্মস্থলে ফিরে গিয়ে জঙ্গি বিমান দখল এবং সেটা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। ২০ই আগস্ট সকালে করাচির মৌরিপুর বিমান ঘাঁটিতে তারই এক ছাত্র রশীদ মিনহাজের কাছ থেকে একটি জঙ্গি বিমান ছিনতাই করেন। কিন্তু রাশেদ এ ঘটনা কন্ট্রোল টাওয়ারে জানিয়ে দিলে, অপর চারটি জঙ্গি বিমান মতিউরের বিমানকে ধাওয়া করে। এ সময় রশিদের সাথে মতিউরের ধ্বস্তাধস্তি চলতে থাকে এবং এক পর্যায়ে রশিদ ইজেক্ট সুইচ চাপলে মতিউর বিমান থেকে ছিটকে পরেন এবং বিমান উড্ডয়নের উচ্চতা কম থাকায় রাশেদ সহ বিমানটি ভারতীয় সীমান্ত থেকে মাত্র ৩৫ মাইল দূরে থাট্টা এলাকায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। মতিউরের সাথে প্যারাসুট না থাকাতে তিনি নিহত হন। তাঁর মৃতদেহ ঘটনাস্থল হতে প্রায় আধ মাইল দূরে পাওয়া যায়। রশিদ মিনহাজকে পাকিস্তান সরকার সম্মানসূচক খেতাব দান করে এবং মতিউরকে করাচির মাসর"র বেসের চতুর্থ শ্রেনীর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের স্ত্রী মিলি রহমান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন, ফ্লাইট ল্যাফটেনেন্ট মতিউর রহমান শহীদ হবার সময় পশ্চিম পাকিস্তানে ছিলেন। পাকিস্তানিরা তাঁকে এক অন্ধকার কক্ষে তাঁর শিশু বাচ্চা ও কাজের পরিচারিকাসহ দীর্ঘদিন বন্দী করে রাখে ও অত্যাচার করে। মুক্তি পাবার পর তিনি বাংলাদেশে ফিরে এসে মুক্তিযুদ্ধের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন।

auto
মতিউর রহমানের সমাধি। ছবি - ব্লগার রণদীপম বসু।

২০০৬ সালের ২৩ জুন মতিউর রহমানের দেহাবশেষ পাকিস্তান হতে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়। তাঁকে পূর্ণ মর্যাদায় ২৫শে জুন শহীদ বুদ্ধিজীবী গোরস্থানে পুনরায় দাফন করা হয়।

বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোহাম্মদ হামিদুর রহমান

মোহাম্মদ হামিদুর রহমান (ফেব্রুয়ারি ২, ১৯৫৩- অক্টোবর ২৮, ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। মাত্র ১৮ বছর বয়সে শহীদ হওয়া হামিদুর রহমান সাত জন বীর শ্রেষ্ঠ পদকপ্রাপ্ত শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ।

১ সংক্ষিপ্ত জীবনী

মোহাম্মদ হামিদুর রহমান ১৯৫৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি যশোরের মহেশপুর উপজেলার খোরদা খালিশপুর গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। (১) তাঁর পিতা আব্বাস আলী মন্ডল, মাতা মোসাম্মাৎ কায়সুন্নেসা। খালিশপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পরবর্তীকালে স্থানীয় নাইট স্কুলে সামান্য লেখাপড়া করেন। ১৯৭১ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগদান করেন। যোগদানের পরই চট্টগ্রামের সেনানিবাসে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারে প্রশিক্ষণের জন্য যান। ২৫শে মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমনের মুখে চাকরীস্থল থেকে নিজ গ্রামে চলে আসেন। বাড়ীতে একদিন থেকে পরদিনই মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার জন্য চলে যান সিলেট জেলার শ্রীমঙ্গল থানার ধলই চা বাগানের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত ধলই বর্ডার আউটপোস্টে।

২ যেভাবে শহীদ হলেন

১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসের শেষভাগে হামিদুর রহমান ১ম ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের সি কোম্পানির হয়ে ধলই সীমান্তের ফাঁড়ি দখল করার অভিযানে অংশ নেন। ভোর চারটায় মুক্তিবাহিনী লক্ষ্যস্থলের কাছে পৌছে অবস্থান নেয়। সামনে দু প্লাটুন ও পেছনে এক প্লাটুন সৈন্য অবস্থান নিয়ে অগ্রসর হতে থাকে শত্রু অভিমুখে। শত্রু অবস্থানের কাছাকাছি এলে একটি মাইন বিস্ফোরিত হয়। মুক্তিবাহিনী সীমান্ত ফাঁড়ির খুব কাছে পৌছে গেলেও ফাঁড়ির দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্ত হতে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর মেশিনগানের গুলিবর্ষণের জন্য আর অগ্রসর হতে পারছিলো না। অক্টোবরের ২৮ তারিখে ১ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও পাকিস্তান বাহিনীর ৩০এ ফ্রন্টিয়ার রেজিমেন্টের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বাধে। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে অংশ নেয়। মুক্তিবাহিনী পাকিস্তান বাহিনীর মেশিনগান পোস্টে গ্রেনেড হামলার সিদ্ধান্ত নেয়। গ্রেনেড ছোড়ার দায়িত্ব দেয়া হয় হামিদুর রহমানকে। তিনি পাহাড়ি খালের মধ্য দিয়ে বুকে হেঁটে গ্রেনেড নিয়ে আক্রমণ শুরু করেন। দুটি গ্রেনেড সফল ভাবে মেশিনগান পোস্টে আঘাত হানে, কিন্তু তার পরপরই হামিদুর রহমান গুলিবিদ্ধ হন। (২) সে অবস্থাতেই তিনি মেশিনগান পোস্টে গিয়ে সেখানকার দুই জন পাকিস্তানী সৈন্যের সাথে হাতাহাতি যুদ্ধ শুরু করেন। এভাবে আক্রণের মাধ্যমে হামিদুর রহমান এক সময় মেশিনগান পোস্টকে অকার্যকর করে দিতে সক্ষম হন। এই সুযোগে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মুক্তিযোদ্ধারা বিপুল উদ্যমে এগিয়ে যান, এবং শত্রু পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করে সীমানা ফাঁড়িটি দখল করতে সমর্থ হন। কিন্তু হামিদুর রহমান বিজয়ের স্বাদ আস্বাদন করতে পারেননি, ফাঁড়ি দখলের পরে মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ হামিদুর রহমানের লাশ উদ্ধার করে। (২)

হামিদুর রহমানের মৃতদেহ সীমান্তের অল্প দূরে ভারতীয় ভূখন্ডে ত্রিপুরা রাজ্যের হাতিমেরছড়া গ্রামের স্থানীয় এক পরিবারের পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। (৩) নীচু স্থানে অবস্থিত কবরটি এক সময় পানির তলায় তলিয়ে যায়।
২০০৭ সালের ২৭শে অক্টোবর বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার হামিদুর রহমানের দেহ বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়। (৪)। সেই অনুযায়ী ২০০৭ সালের ১০ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ রাইফেলসের একটি দল ত্রিপুরা সীমান্তে হামিদুর রহমানের দেহাবশেষ গ্রহন করে, এবং যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে কুমিল্লার বিবিরহাট সীমান্ত দিয়ে শহীদের দেহাবশেষ বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। ১১ই ডিসেম্বর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানকে ঢাকার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। (৫)।

৩ তথ্যসূত্র

১. "Birshreshtha Hamidur Rahman Laid To Rest", The Daily Star, ১২ই ডিসেম্বর, ২০০৭।

২. "বীর হামিদুরের ঘরে ফেরা", ছুটির দিনে, প্রথম আলো, ১৫ই ডিসেম্বর ২০০৭ ।

৩."Bangladesh takes home teenage war hero", রয়টার্স, Dec 10 2007।

৪. "বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুরের দেহাবশেষ দেশে এনে সমাহিত করা হবে", প্রথম আলো, ২৮শে অক্টোবর, ২০০৭।

৫. "Home they brought warrior dead: Bir Shreshtha Hamidur to be buried at Martyred Intellectuals' Graveyard today", The New Nation, ১১ই ডিসেম্বর, ২০০৭।

বীরশ্রেষ্ঠ ইঞ্জিন আর্টিফিসার মোহাম্মদ রুহুল আমিন

auto

মোহাম্মদ রুহুল আমিন (১৯৩৫ - ডিসেম্বর ১০, ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

১ সংক্ষিপ্ত জীবনী

মোহাম্মদ রুহুল আমিন ১৯৩৫ সালে নোয়াখালী জেলার বাঘচাপড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আজহার পাটোয়ারী, মাতা জোলখা খাতুন। রুহুল আমিন বাঘচাপড়া প্রাইমারী স্কুলে পড়াশোনা শেষ করে আমিষাপাড়া হাই স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৫৩-তে জুনিয়র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে পাকিস্তান নৌ-বাহিনীতে যোগদান করেন। আরব সাগরে অবস্থিত মানোরা দ্বীপে পি.এন.এস বাহাদুর-এ প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নেন। প্রাথমিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর পি.এন.এস. কারসাজে যোগদান করেন। ১৯৫৮-তে পেশাগত প্রশিক্ষণ শেষ করেন। ১৯৬৫ -তে মেকানিসিয়ান কোর্সের জন্য নির্বাচিত হন। পি.এন.এস. কারসাজে কোর্স সমাপ্ত করার পর আর্টিফিসার পদে নিযুক্ত হন। ১৯৬৮ -তে চট্টগ্রাম পি.এন.এস. বখতিয়ার নৌ-ঘাটিঁতে বদলি হয়ে যান। ১৯৭১-এর এপ্রিলে ঘাটিঁ থেকে পালিয়ে যান। ভারতের ত্রিপুরা সীমান্ত অতিক্রম করে ২ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২ নম্বর সেক্টরের অধীনে থেকে বিভিন্ন স্থলযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। বাংলাদেশ নৌ বাহিনী গঠিত হলে কলকাতায় চলে আসেন। ভারত সরকার বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী কে দুটি গানবোট উপহার দেয়। গানবোটের নামকরণ করা হয় 'পদ্মা' ও 'পলাশ'। রুহুল আমিন পলাশের প্রধান ইঞ্জিনরুমে আর্টিফিসার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

২ যেভাবে শহীদ হলেন

৬ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী যশোর সেনানিবাস দখলের পর 'পদ্মা', 'পলাশ' এবং ভারতীয় মিত্রবাহিনীর একটি গানবোট 'পানভেল' খুলনার মংলা বন্দরে পাকিস্তানি নৌ-ঘাটিঁ পি.এন.এস. তিতুমীর দখলের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ-এ প্রবেশ করে। ১০ ডিসেম্বর দুপুর ১২ টার দিকে গানবোটগুলো খুলনা শিপইয়ার্ডের কাছে এলে অনেক উচুঁতে তিনটি জঙ্গি বিমানকে উড়তে দেখা যায়। শত্রুর বিমান অনুধাবন করে পদ্মা ও পলাশ থেকে গুলি করার অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু অভিযানের সর্বাধিনায়ক ক্যাপ্টেন মনেন্দ্রনাথ ভারতীয় বিমান মনে করে গুলিবর্ষণ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন। এর কিছুক্ষণ পরে বিমানগুলো অপ্রত্যাশিত ভাবে নিচে নেমে আসে এবং আচমকা গুলিবর্ষণ শুরু করে। গোলা সরাসরি 'পদ্মা' এর ইঞ্জিন রুমে আঘাত করে ইঞ্জিন বিধ্বস্ত করে। হতাহত হয় অনেক নাবিক। 'পদ্মা'-র পরিণতিতে পলাশের অধিনায়ক লে. কমান্ডার রায় চৌধুরী নাবিকদের জাহাজ ত্যাগের নির্দেশ দেন। রুহুল আমিন এই আদেশে ক্ষিপ্ত হন। তিনি উপস্থিত সবাইকে যুদ্ধ বন্ধ না করার আহ্বান করেন। কামানের ক্রুদের বিমানের দিকে গুলি ছুড়ঁতে বলে ইঞ্জিন রুমে ফিরে আসেন। কিন্তু অধিনায়কের আদেশ অমান্য করে বিমানগুলোকে চ্যালেঞ্জ করা হয়নি। বিমানগুলো উপূর্যপুরি বোমাবর্ষণ করে পলাশের ইঞ্জিনরুম ধ্বংস করে দেয়। শহীদ হন রুহুল আমিন। রূপসা নদীর পারে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের সমাধির এই ছবিটি বাংলা উইকিপিডিয়াকে দান করেছেন ব্লগার ঝড়ো হাওয়া।

বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ

মুন্সি আব্দুর রউফ (১৯৪৩ - এপ্রিল ৮, ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

১ সংক্ষিপ্ত জীবনী

মুন্সি আব্দুর রউফ ১৯৪৩ সালের মে মাসে ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার (পূর্বে বোয়ালমারী উপজেলার অন্তরগত) সালামতপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মুন্সি মেহেদী হোসেন এবং মাতার নাম মকিদুন্নেসা। কিশোর বয়সে রউফ-এর পিতা মারা যান। ফলে তিনি উচচশিক্ষা লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। তিনি অষ্টম শ্রেনী পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। ১৯৬৩-র ৮ মে ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস-এ ভর্তি হন। তাঁর রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ১৩১৮৭। ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুতে চট্টগ্রামে ১১ নম্বর উইং এ কর্মরত ছিলেন। সে সময় তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সঙ্গে স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগদান করেন।

২ যেভাবে শহীদ হলেন

মুন্সি আবদুর রউফ ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি কোম্পনীর সাথে বুড়িঘাটে অবস্থান নেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি-মহালছড়ি জলপথ প্রতিরোধ করার জন্য ৮ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কমান্ডো ব্যাটেলিয়নের দুই কোম্পানী সৈন্য, সাতটি স্পীড বোট এবং দুটি লঞ্চে করে বুড়িঘাট দখলের জন্য অগ্রসর হয়। তারা প্রতিরক্ষি বূহ্যের সামনে এসে ৩" মর্টার এবং অন্যান্য ভারী অস্ত্র দিয়ে হঠাৎ অবিরাম গোলা বর্ষন শুরু করে। গোলাবৃষ্টির তীব্রতায় প্রতিরক্ষার সৈন্যরা পেছনে সরে বাধ্য হয়। কিন্তু ল্যান্সনায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ পেছনে হটতে অস্বীকৃতি জানান। নিজ পরিখা থেকে মেশিনগানের গুলিবর্ষণ শুরু করেন। মেশিনগানের এই পাল্টা আক্রমনের ফলে শত্রুদের স্পীড বোট গুলো ডুবে যায়। হতাহত হয় এর আরোহীরা। পেছনের দুটো লঞ্চ দ্রুত পেছনে গিয়ে নিরাপদ দুরত্বে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে শুরু করে দুরপাল্লার ভারী গোলাবর্ষণ। মর্টারের ভারী গোলা এসে পরে আব্দুর রউফের উপর। লুটিয়ে পড়েন তিনি, নীরব হয়ে যায় তাঁর মেশিনগান। ততক্ষণে নিরাপদ দূরুত্বে সরে যেতে সক্ষম হন তাঁর সহযোদ্ধারা।

শহীদ ল্যান্স নায়েক বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের সমাধি পার্বত্য জেলা রাঙামাটির নানিয়ার চড়ে। তাঁর অপরিসীম বীরত্ব,সাহসীকতা ও দেশপ্রেমের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে সর্ব্বোচ সম্মান বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করে।

বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর

মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর (১৯৪৮- ডিসেম্বর ১৪, ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

১ সংক্ষিপ্ত জীবনী

মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর ১৯৪৮ সালে বাবুগঞ্জ থানার রহিমগঞ্জ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আবদুল মোতালেব হাওলাদার। জাহাঙ্গীর ১৯৬৪ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন এবং ১৯৬৬ তে আই.এস.সি পাশ করার পর বিমান বাহিনীতে যোগদানের চেষ্টা করেন, কিন্তু চোখের অসুবিধা থাকায় ব্যর্থ হন। ১৯৬৭ সালে তিনি পাকিস্তান সামরিক একাডেমীতে ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৮-র ২ জুন তিনি ইঞ্জিনিয়ার্স কোরে কমিশন লাভ করেন। ১৯৭১-এ স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার সময় তিনি পাকিস্তানে ১৭৩ নম্বর ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটেলিয়ানে কর্তব্যরত ছিলেন। মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য তিনি ছুটে এসেছিলেন পাকিস্তানের দুর্গম এলাকা অতিক্রম করে, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে। ৩ জুলাই পাকিস্তানে আটকে পড়া আরো তিনজন অফিসারসহ তিনি পালিয়ে যান ও পরে পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার মেহেদীপুরে মুক্তিবাহিনীর ৭নং সেক্টরে সাব সেক্টর কমান্ডার হিসাবে যোগ দেন। বিভিন্ন রণাঙ্গনে অসাধারণ কৃতিত্ব দেখানোর কারণে তাঁকে রাজশাহীর চাঁপাইনবাবগঞ্জ দখলের দ্বায়িত্ব দেয়া হয়। স্বাধীনতার ঊষালগ্নে বিজয় সুনিশ্চিত করেই তিনি শহীদ হয়েছিলেন। ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরকে চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক সোনা মসজিদ আঙিনায় সমাহিত করা হয়।

২ যেভাবে শহীদ হলেন

১০ ডিসেম্বর ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর, লেফটেন্যান্ট কাইয়ুম, লেফটেন্যান্ট আউয়াল ও ৫০ জনের মতো মুক্তিযোদ্ধা চাঁপাইনবাবগঞ্জের পশ্চিমে বারঘরিয়া এলাকায় অবস্থান গ্রহন করেন। ১৪ ডিসেম্বর ভোরে মাত্র ২০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে বারঘরিয়া এলাকা থেকে ৩/৪ টি দেশী নৌকায় করে রেহাইচর এলাকা থেকে মহানন্দা নদী অতিক্রম করেন। নদী অতিক্রম করার পর উত্তর দিক থেকে একটি একটি করে প্রত্যেকটি শত্রু অবস্থানের দখল নিয়ে দক্ষিণে এগোতে থাকেন।
তিনি এমনভাবে আক্রমণ পরিকল্পনা করেছিলেন যেন উত্তর দিক থেকে শত্রু নিপাত করার সময় দক্ষিণ দিক থেকে শত্রু কোনকিছু আঁচ করতে না পারে। এভাবে এগুতে থাকার সময় জয় যখন প্রায় সুনিশ্চিত তখন ঘটে বিপর্যয়। হঠাৎ বাঁধের উপর থেকে ইস্ট পাকিস্তান সিভিল আর্মড ফোর্সের ৮/১০ জন সৈনিক দৌড়ে চর এলাকায় এসে যোগ দেয়। এরপরই শুরু হয় পাকিস্তান বাহিনীর অবিরাম ধারায় গুলিবর্ষন। ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর জীবনের পরোয়া না করে সামনে এগিয়ে যান। ঠিক সেই সময়ে শত্রুর একটি গুলি এসে বিদ্ধ হয় জাহাঙ্গীরের কপালে। শহীদ হন তিনি।

বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ

নূর মোহাম্মদ শেখ(ফেব্রুয়ারি ২৬, ১৯৩৬- সেপ্টেম্বর ৫, ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

১ সংক্ষিপ্ত জীবনী

১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল জেলার মহিষখোলা গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারে নূর মোহাম্মদ শেখ জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতা মোহাম্মদ আমানত শেখ, মাতা জেন্নাতুন্নেসা। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লেখাপড়া শেষ করে উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানকার লেখাপড়া শেষ না করে ১৯৫৯-এর ১৪ মার্চ পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলস-এ যোগদান করেন। ১৯৭০ সালে নূর মোহাম্মদকে দিনাজপুর থেকে যশোরে বদলি করা হয়। বদলি স্থানে যোগ দানের আগেই স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগদান করেন।

২ যেভাবে শহীদ হলেন

১৯৭১- এর ৫ সেপ্টেম্বর সুতিপুরে নিজস্ব প্রতিরক্ষার সামনে গোয়ালহাটি গ্রামে নূর মোহাম্মদকে অধিনায়ক করে পাঁচ জনের সমন্বয়ে গঠিত একটি স্ট্যান্ডিং পেট্রোল পাঠানো হয়। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে হঠাৎ পাকিস্থানি সেনাবাহিনী পেট্রোলটি তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে গুলিবর্ষন করতে থাকে। পেছনে মুক্তিযোদ্ধাদের নিজস্ব প্রতিরক্ষা থেকে পাল্টা গুলিবর্ষন করা হয়। তবু পেট্রোলটি উদ্ধার করা সম্ভব হয় না। এক সময়ে সিপাহী নান্নু মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে নূর মোহাম্মদ নান্নু মিয়াকে কাঁধে তুলে নেন এবং হাতের এল.এম.জি দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করলে শত্রুপক্ষ পশ্চাৎপসরণ করতে বাধ্য হয়। হঠাৎ করেই শত্রুর মর্টারের একটি গোলা এসে লাগে তাঁর ডান কাঁধে।
ধরাশয়ী হওয়া মাত্র আহত নান্নু মিয়াকে বাঁচানোর জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেন। হাতের এল.এম.জি সিপাহী মোস্তফাকে দিয়ে নান্নু মিয়াকে নিয়ে যেতে বললেন এবং মোস্তফার রাইফেল চেয়ে নিলেন যতক্ষণ না তাঁরা নিরাপদ দূরুত্বে সরে যেতে সক্ষম হন ততক্ষণে ঐ রাইফেল দিয়ে শত্রুসৈন্য ঠেকিয়ে রাখবেন এবং শত্রুর মনোযোগ তাঁর দিকেই কেন্দ্রীভুত করে রাখবেন। অন্য সঙ্গীরা তাদের সাথে অনুরোধ করলেন যাওয়ার জন্যে। কিন্তু তাঁকে বহন করে নিয়ে যেতে গেলে সবাই মারা পড়বে এই আশঙ্কায় তিনি রণক্ষেত্র ত্যাগ করতে রাজি হলেন না। বাকিদের অধিনায়োকোচিত আদেশ দিলেন তাঁকে রেখে চলে যেতে। তাঁকে রেখে সন্তর্পণে সরে যেতে পারলেন বাকিরা। এদিকে সমানে গুলি ছুড়তে লাগলেন রক্তাক্ত নূর মোহাম্মদ। একদিকে পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী, সঙ্গে অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রশস্ত্র, অন্যদিকে মাত্র অর্ধমৃত সৈনিক (ই.পি.আর.) সম্বল একটি রাইফেল ও সীমিত গুলি। এই অসম অবিশ্বাস্য যুদ্ধে তিনি শত্রুপক্ষের এমন ক্ষতিসাধন করেন যে তারা এই মৃত্যুপথযাত্রী যোদ্ধাকে বেয়নেট দিয়ে বিকৃত করে চোখ দুটো উপড়ে ফেলে। পরে প্রতিরক্ষার সৈনিকরা এসে পাশের একটি ঝাড় থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে।

বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোস্তফা কামাল

auto auto

মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল (ডিসেম্বর ১৬, ১৯৪৭- এপ্রিল ১৭, ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

১ সংক্ষিপ্ত জীবনী

auto
মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল ১৯৪৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভোলা জেলার দৌলতখান থানার পশ্চিম হাজীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা হাবিবুর রহমান সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার ছিলেন। শৈশব থেকেই দুঃসাহসী হিসেবে খ্যাত ছিলেন। পড়াশোনা বেশিদূর করতে পারেননি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পর উচচ বিদ্যালয়ে দু-এক বছর অধ্যয়ন করেন। ১৯৬৭-র ১৬ ডিসেম্বর বাড়ী থেকে পালিয়ে গিয়ে সেনাবাহিনীতে চাকরি গ্রহন করেন। তিনি ছিলেন চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক। ১৯৭১-এর প্রথম দিকে চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে কুমিল্লা সেনানিবাস থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার সাথে সাথে চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে ঘিরে তিনটি প্রতিরক্ষা ঘাঁটি গড়ে তোলে এন্ডারসন খালের পাঁড়ে। আখাউড়ায় অবস্থিত চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট দক্ষিন দিক থেকে নিরাপত্তার জন্য দরুইন গ্রামের দুই নম্বর প্লাটুনকে নির্দেশ দেয়। সিপাহী মোস্তফা কামাল ছিলেন দুই নম্বর প্লাটুনে। কর্মতৎপরতার জন্য যুদ্ধের সময় মৌখিকভাবে তাঁকে ল্যান্স নায়েকের দ্বায়িত্ব দেয়া হয়।

২ যেভাবে শহীদ হলেন

১৬ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য কুমিল্লা-আখাউড়া রেললাইন ধরে উত্তর দিকে এগুতে থাকে। ১৭ই এপ্রিল পরদিন ভোরবেলা পাকিস্তান সেনাবাহিনী দরুইন গ্রামে মুক্তিবাহিনীর অবস্থানের উপর মর্টার ও আর্টিলারীর গোলাবর্ষণ শুরু করলে মেজর শাফায়াত জামিল ১১ নম্বর প্লাটুনকে দরুইন গ্রামে আগের প্লাটুনের সাথে যোগ দেয়ার নির্দেশ দেন। ১১ নম্বর প্লাটুন নিয়ে হাবিলদার মুনির দরুইনে পৌছেন। সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল তার নিকট থেকে গুলি নিয়ে নিজ পরিখায় অবস্থান গ্রহন করেন। বেলা ১১ টার দিকে শুরু হয় শত্রুর গোলাবর্ষণ। সেই সময়ে শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। সাড়ে ১১টার দিকে মোগরা বাজার ও গঙ্গা সাগরের শত্রু অবস্থান থেকে গুলি বর্ষিত হয়।

১২ টার দিকে আসে পশ্চিম দিক থেকে সরাসরি আক্রমণ। প্রতিরক্ষার সৈন্যরা আক্রমণের তীব্রতায় বিহ্বল হয়ে পড়ে। কয়েক জন শহীদ হন। মোস্তফা কামাল মরিয়া হয়ে পাল্টা গুলি চালাতে থাকেন। তাঁর পূর্ব দিকের সৈন্যরা পেছনে সরে নতুন অবস্থানে সরে যেতে থাকে এবং মোস্তফাকে যাবার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু তাদের সবাইকে নিরাপদে সরে যাওয়ার সুযোগের জন্য মোস্তফা পূর্ণোদ্যমে এল.এম.জি থেকে গুলি চালাতে থাকেন। তাঁর ৭০ গজের মধ্যে শত্রুপক্ষ চলে এলেও তিনি থামেননি। এতে করে শত্রু রা তাঁর সঙ্গীদের পিছু ধাওয়া করতে সাহস পায়নি। এক সময় গুলি শেষ হয়ে গেলে, শত্রুর আঘাতে তিনিও লুটিয়ে পড়েন।

প্রথম দুইটি ছবিতে দেখছেন, বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের সমাধি। ছবি দুইটি ব্লগার ঝড়ো হাওয়া উইকিপিডিয়াকে দান করেছেন, এজন্য তাঁকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

সব শেষের ছবিতে দেখছেন বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের মা। নভেম্বর ২০০৯ সালে তোলা ছবিটি বাংলা উইকিপিডিয়াকে দান করেছেন ব্লগার যুবরাজ। তাঁকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

কপিরাইট নোটিশ

এই পোস্টের তথ্যাবলী ও লেখা বাংলা উইকিপিডিয়া হতে জিএনইউ ফ্রি ডকুমেন্টেশন লাইসেন্সের অধীনে নেয়া হয়েছে। এই লেখা বিনা বাঁধায় সর্বত্র ব্যবহার করা যাবে, যদি লেখার মূল উৎসের (বাংলা উইকিপিডিয়া) কথা সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়। বিস্তারিত জানতে দেখুন, GNU Free Documentation License


মন্তব্য

স্নিগ্ধা এর ছবি

রাগিব, চমৎকার এই উদ্যোগের জন্য সাধুবাদ জানাচ্ছি!

আপনারা যারা বাংলা উইকি'তে সময় এবং শ্রমদান করেন তাদের প্রত্যেকের তুলনায় নিজেকে ছোট মনে হয়, কিন্তু তারপরও সময় বের করতে পারি না ...

রাগিব এর ছবি

ধন্যবাদ।

একটা ছোট্ট কাজ কিন্তু করতে পারেন। লিংকে ক্লিক করে উইকির পাতায় যান, তার পর এক নজর চোখ বুলিয়ে বানান ভুল থাকলে সেটা ঠিক করে দিন। বানান ভুল পেলেই "সম্পাদনা করুন" লিংকে ক্লিক করে সেই ভুল বানানটা ঠিক করে দিন। আর কিছু না হলেও বানান শুদ্ধ করাটা অনেক কাজ দেবে।

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

সংসপ্তক এর ছবি

বিনম্র শ্রদ্ধা সকল শহীদের প্রতি। একটা কথা জানতে চাই, যদি করো জানা থাকে তো দয়া করে বলবেন, বীর শ্রেষ্ঠ পদবি কি সামরিক বাহিনীর জন্য নির্দিষ্ট ছিল? নইলে একজনও সিভিলিয়ান যোদ্ধা নেই কেন?
.........
আমাদের দূর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা

.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

ধন্যবাদ।

তারপর-

উদ্ধৃতি:

"বানান ভুল পেলেই "সম্পাদনা করুন" লিংকে ক্লিক করে সেই ভুল বানানটা ঠিক করে দিন। "

-এটা কিন্তু অনেক বড় কাজ! বানান ভুলের কারণেও পাঠকের আগ্রহ কমে যেতে পারে।

আমার নিজেরই বানান ভুল হয় বলে তেমন সম্পাদনারও সাহস পাই না।

.
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

রাগিব এর ছবি

আসলে আমাদের সবারই নিজেদের সাধ্যমত কাজ করা উচিৎ। উদাহরণ দেই -- একজন ব্লগার (ঝড়ো হাওয়া) বীরশ্রেষ্ঠদের সমাধিতে গিয়ে সেখানকার ছবি তুলে দিয়েছিলেন। রণদা মতিউর রহমানের সমাধির ছবি তুলে দিয়েছেন। যুবরাজ উইকিকে দিয়েছিন মোস্তফা কামালের মায়ের ছবি। এই কাজগুলোও কিন্তু কম নয়।

বীরশ্রেষ্ঠ অন্যদের ছবি উইকিতে রাখা যায়নি। কোনো ছবি অনলাইনে পেলেও সেগুলোর কপিরাইটের তথ্য পরিস্কার নয়। হিমু ভরসা দিয়েছিলেন স্কেচ করে দেয়ার, সেটার আশায় আছি ...

আর দেখতেই পাচ্ছেন, জীবনীগুলোতে অনেক তথ্য যোগ করা বাকি, সেগুলো যোগ করে দেয়াটা খুব জরুরি দরকার।

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

রেজওয়ান এর ছবি

বীর শ্রেষ্ঠদের ছবি নিয়ে একটি বিতর্ক উঠেছিল - বিভিন্ন ওয়েবসাইটে সন্নিবেশিত কয়েকটি ছবি সঠিক নয় নাকি।

বাংলাদেশ গণহত্যা আর্কাইভে কীর্তিমান নামক একটি সাইট থেকে বীর শ্রেষ্ঠদের ছবি তুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু কীর্তিমান ওয়েবসাইটটি এখন অফলাইন।

সঠিক তথ্য নিশ্চিত করার জন্যে এরকম উদ্যোগ জরুরী। আমরা আশা করব সঠিক ছবিগুলো উইকিতে সংযুক্ত করা হবে যেটাকে রেফারেন্স হিসেবে ধরা যাবে।

পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

ঠিক আছে। উইকির ব্যাপারটা আরো খানিক বুঝে নেই। তখন প্রয়োজনে উইকির ডিকশনারি দেখেই শুরু করতে পারি। ধন্যবাদ।

____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

সময়োপযোগী পোস্ট। চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

শ্রদ্ধা সকল শহীদের প্রতি।

ধন্যবাদ রাগিব ভাই এরকম একটা পোষ্ট দেবার জন্য।

স্বপ্নদ্রোহ

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

উইকিতে গিয়ে সম্পাদনা করাটা একটু ঝামেলার মনে হয়। তাই আজ পর্যন্ত একটা লেখার ভ্রম সংশোধন করা ছাড়া কিছু করা হয়নি। এর জন্য একটু অপরাধবোধ আছে তবু অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় এই লেখাটাতে হাত দিতে পারছিনা। আপাততঃ এই লেখাটা আপনিই আবার সম্পাদনা করুন। বানান ভুল বা একই শব্দ একেক জায়গায় একেক বানানে লেখা এমন কিছু ভুল রয়ে গেছে। typo-ও আছে, একটু দেখে নেবেন।

যতদূর জানি, বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন "পলাশ" থেকে আহত অবস্থায় সাঁতরে রূপসার পাড়ে উঠতে পারেন ঠিকই। কিন্তু পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা রাজাকাররা তাঁকে বেয়নেট চার্জ করে হত্যা করে। এই তথ্যটা একটু যাচাই করবেন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রাগিব এর ছবি

পাণ্ডবদা, আমার জবাবটাকে ব্যক্তিগত ভাবে নেবেন না। "উইকিতে লেখা ঝামেলা" -- এই কথাটায় আমার একটু আপত্তি আছে, ব্লগে সম্পাদনা করতে যতটুকু চেষ্টা করা লাগে, উইকিতে তার চেয়েও অনেক কম কষ্টে লেখা চলে। উইকির মার্কাপ নিয়ে নাড়াচাড়া করার দরকার নেই, বাকিটুকু কিন্তু এই ব্লগের এডিট বক্সে বসে লেখার চাইতেও অনেক বেশি ঝামেলাবিহীন।

ঘটনা হলো, ইন্টারনেটে যতদিন আমরা এই কাজগুলোকে কষ্ট বলে মনে করবো, ততোদিন এই মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপারে আলোচনা, কথাবার্তা কেবল ডিসেম্বর আর মার্চ মাসেই সীমাবদ্ধ হয়ে থাকবে। পরের প্রজন্ম, বিশেষত ইংরেজি মাধ্যমে যারা পড়ছে, তারা এদের কথা আদৌ জানবে কি না সন্দেহ। সেই সুযোগটা নেবে যুদ্ধাপরাধী ছাগুপাল, ইতিমধ্যেই বাংলা বিভিন্ন সাইট বানাতে তাদের চীফকে সক্রিয় হতে দেখছি। কয়দিন পরে যখন ছাগুভার্শনের ইতিহাসে ইন্টারনেট ভরে যাবে, তখন কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক ইতিহাস, তা নতুন প্রজন্মকে বোঝানো কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

বাংলা উইকিপিডিয়াতে সক্রিয়ভাবে কাজ করে বাংলাদেশের ৫/৬ জন, আর ভারতের ৩ জন। ১৬+১০ = ২৬ কোটি বাঙালির জন্য তথ্যভাণ্ডার গড়াতে সবার অনীহাটা পীড়াদায়ক। মাত্র ৭০ লাখ ভাষাভাষীর স্লোভাক ভাষায় যেখানে ১ লাখ ১০ হাজার ভুক্তি গড়ে উঠেছে, বাংলাতে ২০ হাজার ভুক্তি বানাতে আমাদের ৪/৫ বছর লেগে যাচ্ছে। অথচ ইদানিং বাংলা ব্লগে যেকোনো সময়ে ২০০ / ৩০০ লোক এক সাথে অনলাইনে থাকে, বাংলাতে টাইপ করার লোকেরও অভাব নেই। ১০ জনও যদি দিনে ১০টা মিনিট সময় দিতো, ১০০ মিনিটের কাজে এতো দিনে আমাদের ভাষায় মুক্তিযুদ্ধের তথ্য, বাংলাদেশের ইতিহাস/সংস্কৃতির তথ্য সব ভাষাকে টেক্কা দিতে পারতো।

সমস্যাটা তাই এই-ই -- সবাই ধরে রাখে কাজটা অন্য কেউ করে দেবে, মাঝখান দিয়ে তাই কাজটাই থেমে থাকে। সবাইকে উইকিতে লিখতে হবে এমন কথা নেই, কিন্তু অন্যে করবে এই ভেবে যদি সবাই-ই থেমে থাকে, তাহলে কোনোকিছুই কখনো হবে না ...

--

(once again, nothing personal .... বাংলা উইকির অগ্রগতি স্লথ গতিতে আগানো নিয়ে আমার আক্ষেপটাই এখানে প্রকাশ করলাম)

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রিয় রাগিব,

না, আপনার মন্তব্য ব্যক্তিগতভাবে নিচ্ছিনা। তবে আমার মনে হয় কেন ঝামেলার কথা বলেছিলাম তার ব্যাখ্যা করা দরকার যাতে সমস্যাটি এখনো থেকে থাকলে সমাধান করতে পারেন।

অনেক আগে আমি ইংরেজী উইকির একটি ভূক্তি সংশোধন করার চেষ্টা করেছিলাম। দেখেছিলাম "edit" বাটন চাপলেই html ট্যাগগুলো চলে আসছে। তাতে জিনিষটা এমন আকার দাঁড়াচ্ছে যে তা পড়া, ভুলগুলো খুঁজে বের করা এবং সংশোধন করা কঠিন হয়ে পড়ে; বিশেষতঃ আমার মত যারা html জানে না। তখন দেখলাম একটা তারিখ সংশোধন করতে আমাকে তিনবার ঢুকতে-বের হতে হয়েছে জিনিষটা ঠিক আছে কিনা দেখতে। এরপর থেকে উইকির কোন ভুল সংশোধন করার ব্যাপারে আমার আগ্রহ কাজ করেনি।

তবে আপনার এই মন্তব্যর পর বাংলা উইকিতে ঢুকে "বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান"-এর পেজে ঢুকে দেখলাম বাংলা উইকিতে সম্পাদনার বিষয়টি ইংরেজী উইকির মত অত গোলমেলে নয়। তাই সহজেই সম্পাদনা করতে পারলাম। আপনি ওখানে ঢুকলে আমার করা সম্পাদনাগুলো দেখতে পাবেন।

আমার আগের মন্তব্যে দেখবেন কাজ না করার জন্য আমার যে অপরাধবোধ আছে সে কথা বলেছি। আমি লেখক নই, তাই ভূক্তি লেখা (যেটা সবাই আবার রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করবেন) আমাকে দিয়ে কতটুকু হবে তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তবে ভুল চোখে পড়লে এরপর থেকে সংশোধন করার চেষ্টা করব।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রাগিব এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। আপনার সম্পাদনাগুলো দেখলাম, অনেক বানান ভুল ঠিক করে দিয়েছেন। এটাই চাইছিলাম সবার কাছে।

ছবি সহ তথ্য যোগ করা দরকার। ভুক্তিগুলোর আকার এখনো ছোটো। স্কুলের বইতে যা পড়েছিলাম, আবেগময় ভাষায় লেখাতে তাতে তথ্য কম ছিলো। মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনীর জন্য তাই কেবল পত্রপত্রিকার লেখার উপরেই নির্ভর করতে হচ্ছে।

ইংরেজি উইকির চাইতে বাংলা উইকিতে এখনো মার্কাপ কম। আসলে ইংরেজি উইকিতে ৭ বছর ধরে কাজ চলছে, যেখানে বাংলা উইকিতে মাত্র ৩ বছর। এজন্যই হয়তো বাংলা উইকির ভেতরে জটিল কোডিং কম। যাক, এতে শাপে বর হচ্ছে ...

আবারও ধন্যবাদ।

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

একটি ভিন্ন প্রসঙ্গঃ। এক একজন বীরশ্রেষ্ঠ যেভাবে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছেন, যেভাবে যুদ্ধ করেছেন, যেভাবে শহীদ হয়েছেন তা যেকোন অ্যাকশন মুভিকে হার মানায়। গত ৩৮ বৎসরে একজন চলচিত্র নির্মাতার কি মনে হয়নি এঁদের নিয়ে সাতটা পূর্ণাঙ্গ চলচিত্র নির্মান করার? অমন একটা চলচিত্রতো হাজারটা গলা ফাটানো বক্তৃতার কাজ করতে পারতো। এই প্রজন্ম হাড়ে হাড়ে উপলদ্ধি করতো কেমন বীরদের রক্ত তাদের ধমনীতে বইছে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

মনের কথাটি বললেন।

--------------------------------
~পর্যবেক্ষণ-অসাধ্য তত্ত্ব অর্থহীন~

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

অন্যদের কথা বলতে পারবো না, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমার মাত্র তিনটা কাজ করার ইচ্ছা জীবনে। তারমধ্যে একটার কথা আগেও সচলে বলেছিলাম, এবং সেটার জন্য ১ বছর জান খয়রাত করেও স্পন্সর পাই নাই।
স্ক্রিপ্ট করা আছে। কিছুদূর শুটিংও করেছিলাম। তারপর টাকার অভাবে পিছাইছি।

আর দ্বিতীয় যে প্রকল্পটা... সেটার কথা আপনি বলে দিলেন। আগেরটাতেই এতো বেশি হতাশ হইছি যে এটার কথা কাউরে বলতেই সাহস পাই না আর।

তবে এখনো স্বপ্ন আছে... আমি জানি একদিন আমার অনেক টাকা হবে, সেদিন করবো...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আমার যদি কোনওদিন অনেক টাকা হয়, সেদিন আমিই আপনারে খুজে নেবো নজরুল ভাই।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

নৈষাদ এর ছবি

অসাধারন এইসব উদ্যোগ্যের পিছনে আপনারা যাঁরা আছেন, তাদের প্রতিও শ্রদ্ধা রইল।
চেষ্টা থাকবে, দেখা যাক...।

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

(না-প'ড়েই পাঁচতারা দিয়ে রাখলাম এই মহা-প্রয়াসকে। আর রেফারেন্স হিসাবে প্রিয় পোস্টেও জমা ক'রে রাখলাম, সময় ক'রে পরে একবার ডুব দেবো ভালো ক'রে। ধন্যবাদ।)

___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

লেখাটার জন্য অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে।

--------------------------------
~পর্যবেক্ষণ-অসাধ্য তত্ত্ব অর্থহীন~

মুস্তাফিজ এর ছবি

বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর আর মেজর নাজমুল আলমের সমাধি একই জায়গায়, ছবি দিলাম, যুক্ত করে দেবেন। উইকিতে যেয়ে নিজে যুক্ত করতে পারিনাই। আর উনাদের স্মৃতি সৌধের ছবিটা আমার কাছে ছিলো, খুঁজে পেলে পাঠিয়ে দেবো।

.........................................
I think what I think because that's how I am. You think what you think because that's how you are.

...........................
Every Picture Tells a Story

মুস্তাফিজ এর ছবি

সেটাও পেয়েছি, পাঠিয়ে দিলাম
.........................................
I think what I think because that's how I am. You think what you think because that's how you are.

...........................
Every Picture Tells a Story

রাগিব এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ, মুস্তাফিজ ভাই। ছবিগুলো পেয়েছি, আজই ওগুলো উইকিতে যোগ করে দেবো।

এরকম আর কোনো ছবি থাকলে অবশ্যই জানাবেন।

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

মামুন হক এর ছবি

সব শহীদের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা। রাগিব ভাইকে অনেক ধন্যবাদ।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

বীরদেরকে শ্রদ্ধা, শ্রদ্ধা এই প্রয়াসকেও...
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

প্রিয় পোস্টে রেফারেন্স হিসেবে রাখলাম। ... উইকিতে কেবল খেলাধূলার অংশটাতে দুটো নিবন্ধন করেছিলাম- তারপর যা হয়... দেখি আবার শুরু করবো অচিরেই।

_________________________________________

সেরিওজা

রণদীপম বসু এর ছবি

আচ্ছা, বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের সমাধি কি মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ? তাহলে আমার চোখে পড়েনি কেন ! আর বীর শ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সমাধির নামফলকের ছবিটা কি উইকিতে পাঠাইনি ! একসাথে কোনভাবেই দুই মেগাপিক্সেলে ধরতে পারিনি বলে আলাদাভাবে তুলেছিলাম।

auto

auto

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

রাগিব এর ছবি

এই ছবিগুলো দিয়েছেন কি না দেখতে হবে। যদি না থাকে, তবে আপনাকে মেইলে জানাবো।

হামিদুর রহমানের দেহাবশেষ ফিরিয়ে এনে কোথায় সমাহিত করা হয়েছে ঠিক নিশ্চিত নই।

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

রণদীপম বসু এর ছবি

এই সাদাটা হলো বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের সমাধি। দূরে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের সমাধির সংস্কার হচ্ছে। আসলে বীরশ্রেষ্ঠদের জন্য অনুমোদিত অভিন্ন ডিজাইনে তাঁর সমাধিটা এখনো নির্মিত হয় নি বলেই তখন তা চোখে পড়েনি।

auto

auto

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

অধ্যাপক রেজাউল করিম আর মেসার্স লতিফ এন্ড কোংদের নাম সবসময়েই শহীদের নামের থেকে বড় ফন্ট সাইজে শোভা পাবে! এই না হলে আমরা কৃতজ্ঞ!

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

রাগিব ভাই, অনেক ধন্যবাদ...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

শেখ নজরুল এর ছবি

ছালাম জানাই সেই বীর সন্তানদের। শ্রদ্ধা জানাই তাঁদের আত্মায়। ধন্যবাদ পোস্টটির জন্য।
শেখ নজরুল

শেখ নজরুল

রাগিব এর ছবি

যাঁরা পোস্টটি পড়ছেন, তাঁরা কি কষ্ট করে একটা কাজ করবেন? আপনার পরিচিত শিশু কিশোরদেরকে এই পোস্টের লিংক পাঠান, কিংবা পড়তে দেন। আগামী প্রজন্মের জানা দরকার, কাদের রক্তের বিনিময়ে আজ আমরা স্বাধীন। পাঠ্যপুস্তকে অনেকেই বিশেষ করে ইংরেজি মাধ্যমের বা মাদ্রাসা মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা এসব হয়তো পড়ে না, তাদের জন্য বিশেষ করে এই জীবনীগুলো পড়া দরকার।

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমার ফেসবুকে প্রচুর কচিকাচা আছে, আপাতত সেখানে ঝুলায়ে দিলাম।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রাগিব এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। আশা করি সেখান থেকে অনেকে দেখবে।

দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা হলো বাংলা উইকির এইসব কন্টেন্ট নিয়ে ইবুক/পিডিএফ বানিয়ে অনলাইনে ছেড়ে দেয়া। সেজন্যই জীবনীগুলো আরেকটু সমৃদ্ধ হওয়া দরকার।

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

স্বপ্নহারা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া এই পোস্টটার জন্য! প্রথম শ্রেণী থেকে আমরা প্রতি ক্লাসে একজন একজন করে বীরশ্রেষ্ঠদের কাহিনী পড়েছি! মনে পড়ে গেল...

-------------------------------------------------------------
স্বপ্ন দিয়ে জীবন গড়া, কেড়ে নিলে যাব মারা!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ইয়াহু, দারুণ মজা লাগতেছে... আমি এইমাত্র বাংলা উইকিতে একটা পাতা যোগ করে এলাম।
এতদিন কেন কঠিন ভেবে এটাকে দূরে সরায়ে রাখছিলাম বুঝতেছি না। এখন তো দেখি সহজই। আজকে স্রেফ 'হয় কি না' দেখতে দেখতে কাজটা করতে পেরে এখন দারুণ খুশি লাগছে।
এখন থেকে নিয়মিত উইকিতে একটা না একটা কিছু যোগ করবোই। প্রতিদিন অন্তত একটা।

যদিও অনেক টেকনিক্যাল ব্যাপার স্যাপার জানি না। কীভাবে সাবহেড দেয়... তথ্যসূত্র যোগ করতে কী কী লাগে...
যাহোক, আস্তে আস্তে শিখে যাবো...

ধন্যবাদ রাগিব ভাই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নীল ভ্রমর [অতিথি] এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ রাগিব ভাই।

ইমতিয়াজ এর ছবি

আমি বাংলা উইকি তে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান এর জ়ীবনী (http://bit.ly/4wPsBF)পড়ছিলাম...

সুচনা'র উদ্ধৃতি:
'যুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত করা হয়'

এই বাক্যের সঠিক রুপ দিতে গিয়ে দেখলাম 'সম্পাদনা'-র বোতাম নেই ...একটি সমপাদনার বোতাম যোগ করে দিলে আমিও এই কাজে যুক্ত হয়ে যাই হাসি

ধন্যবাদ রাগিব ভাই ...

রাগিব এর ছবি

প্রত্যেক পাতার উপরের সারিতে "সম্পাদনা করুন" লিংক আছে, ওখানে ক্লিক করে পুরো নিবন্ধ বা লিড সেকশন সম্পাদনা করা যায়। ক্লিক করুন, বাক্যটি ঠিক করে দিন।

অনেক ধন্যবাদ।

----------------
গণক মিস্তিরি
মায়ানগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | কুহুকুহু

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

যুবরাজ এর ছবি

রাগিব ভাই, অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি উদ্যোগ নেয়ার জন্য। আমি আপনার এই উদ্যোগে সামিল থাকতে চাই। আমার কাছে বেশ কিছু দূর্লভ ছবি আছে, আমার নিজের হাতে তোলা, যখন বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান কে ভারত হতে ৩৬ বছর পর দেশের মাটিতে ফিরিয়ে আনা হয়।কুমিল্লা জেলার বিবির বাজার সীমান্ত ফাঁড়ি দিয়ে তাঁকে ত্রিপুরা থেকে আনা হয়। আমি তখন কুমিল্লা তে কর্মরত। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাঁর মরদেহ আমি ও ক্যাপ্টেন মামুন রিসিভ করি। আমার মনে আছে, তারিখটা ছিল ১০ ডিসেম্বর ২০০৭ বিকেল ১৬৪৫ । আমি এই মহৎ কাজের সাথে জড়িত ছিলাম। আমার কাছে বীরশ্রেষ্ঠকে দেয়া বি এস এফ এর গার্ড অব অনার ছবি আছে। আর দেশের মাটিতে প্রথম সালাম আমি দিয়েছিলাম তৎকালিন ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি'র সাথে।এটা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ গল্প।ছবি গুলো আমি উইকি বাংলা কে দান করলাম।
---------------------------------------------------------------------------- হাতের কাছে ভরা কলস, তবু তৃষ্ণা মিটেনা

হাতের কাছে ভরা কলস, তবু তৃষ্ণা মিটেনা।
----------------------------------------------------------------------------

সিফাত এর ছবি

কিছু বানান ঠিক করে দিলাম... ভালো লাগছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

কেউ কি দয়াকরে আমাকে কয়েকটা শিশুদের জন্যে লেখা মুক্তিযুদ্ধের বইয়ের নাম দিতে পারবেন? আগামী স্বাধীনতা দিবসে মাদ্রাসার শিশুদের মাঝে বিতরন করতে পারতাম। ধন্যবাদ।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।