শিশুসাহিত্যের নায়ক মুহম্মদ জাফর ইকবাল

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি
লিখেছেন লুৎফর রহমান রিটন (তারিখ: রবি, ২৫/১২/২০১১ - ১২:০৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কী বিপদেই না ফেলেছিলেন আমাকে মুহম্মদ জাফর ইকবাল!
আশির দশকের সূচনার দিকে সাপ্তাহিক কিশোর বাংলায় মুহম্মদ জাফর ইকবালের উপন্যাস দীপু নাম্বার টু প্রকাশিত হলো। হৃদয় ছোঁয়া সেই উপন্যাসটি জয় করে নিলো শিশু-কিশোরদের মন। আমি তখন ওয়ারীতে থাকি। আমার কাছে এই উপন্যাসের বিস্তর প্রশংসা শুনে উপন্যাসটি পড়ার প্রবল আকাঙ্খা নিয়ে আমাদের হেয়ার স্ট্রিটের বাড়িতে এসে হাজির হলো আমার বন্ধু সদ্য কৈশোর পেরুনো ছড়াকার তুহীন রহমান। নিচ তলায় এক রুমের একটি কক্ষে আমি থাকি। কিছু খানাখাদ্যসমেত তুহীনকে ঘরবন্দী করে আমি উপর তলায় চলে গেলাম। ঘরটায় তালা ঝুলিয়ে ওকে সময় দিলাম দুই ঘন্টা। দুই ঘন্টা পর তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে দেখি আমার খুদে লেখার টেবিলটায় মাথা রেখে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে তুহীন! আমাকে দেখতে পেয়ে ওর কান্নার গতি এবং শব্দ মুহূর্তেই বিপদ সীমা অতিক্রম করলো। সর্বনাশ! বাইরে থেকে লোকজন ভাববে আমি ওকে ধোলাই করছি! নানান কায়দায় বুঝিয়ে শুনিয়ে ওর কান্নাকে সামাল দিলাম। চোখ মুছতে মুছতে অদ্ভুত এক বায়না ধরলো তুহীন। বায়নাটা অভাবিত, বাংলা চলচ্চিত্র প্রভাবিত। তুহীন যা বললো তার সারাংশটি এই রকম—উপন্যাসটি পড়ে ওর বুক ভেঙে গেছে! এখন,কষ্টের সমুদ্রে হাবুডুবু খাওয়া তুহীনকে ভয়াবহ এই বেদনার ভার থেকে মুক্ত হতে হবে বাংলা সেবন করে! মুহম্মদ জাফর ইকবালের উপন্যাসের পঞ্চমুখ প্রশংসা করে এ কী মুশকিলে পড়লাম!
জীবনে প্রথম বাংলা শিশুসাহিত্যের সেবা করতে গিয়ে বাংলা সেবনের দায় কাঁধে নিতে হলো!
তুহীনের বাসনাটিকে বাস্তবতায় রূপ দিতে গিয়ে ভীষণ একটা ঝুঁকি নিলাম। জানাজানি হলে কেলেঙ্কারি হবে, তবুও। বনগ্রামের ছেলে তুহীন ঠাটারি বাজারের গোপন আস্তানা থেকে মাঝারি একটা বোতল নিয়ে এলো। সঙ্গে একমুঠো কাঁচা লঙ্কা। তুহীনের দুঃখমোচন এবং ওর বাংলা সেবনকে নিরুপদ্রব ও নিষ্কন্টক রাখতে বাইরে থেকে তালা মারাটা বিপজ্জনক ভেবে আমি ভেতরেই অবস্থান নিলাম। কাঁচা লঙ্কার ঝাল আর নির্ভেজাল বাংলার মিথষ্ক্রিয়ায় নাকের পানি চোখের পানিতে সয়লাব হতে হতে তুহীন স্বগতোক্তি করলো বারংবার—শালায় এইটা কি লিখলো!!!!
‘শালা’ গালিটার এতো মমতাপূর্ণ এতো ভালোবাসাপূর্ণ প্রয়োগ সেই প্রথম আমি প্রত্যক্ষ করেছিলাম!
আমাদের শিশুসাহিত্যের নায়ক
কপোট্রনিক সুখদুঃখ,হাতকাটা রবীন, দীপু নাম্বার টু, মহাকাশে মহাত্রাস, দুষ্টু ছেলের দল, ট্রাইটন একটি গ্রহের নাম, বিজ্ঞানী সফদর আলীর মহা মহা আবিস্কার, আমড়া ও ক্র্যাব নেবুলা, জলমানব এবং আমার বন্ধু রাশেদ-এর মতো গল্প উপন্যাস লিখে আমাদের শিশুসাহিত্যের পাঠকদের বিপুল আদর কেড়েছেন তিনি। পাঠকপ্রিয়তার বিবেচনায় এই মুহুর্তে বাংলাদেশের শিসুসাহিত্যের সবচে গুরুত্বপূর্ণ লেখকের নাম মুহম্মদ জাফর ইকবাল। স্বাধীনতা পরবর্তী আমাদের শিশুসাহিত্যের সমসাময়িক সমস্ত লেখককে পেছনে ফেলে একজন মুহম্মদ জাফর ইকবাল পৌঁছে গেছেন খ্যাতির সর্বোচ্চ শিখড়ে। জাদুর কলম হাতে এসেছেন তিনি। তাঁর জাদুস্পর্শে বর্ণাঢ্য পুষ্প-পত্রপল্লবে অনিন্দ্যসুন্দর হয়ে উঠেছে আমাদের শিশুসাহিত্যের ভুবনটি।
দৈনিক গণকণ্ঠে ‘ ইকবাল’ নামের একজন কার্টুনিস্ট ছিলো
স্বাধীনতার পর পর গণকণ্ঠ নামে একটি দৈনিক পত্রিকা বিপুল পাঠকনন্দিত হয়েছিলো। ওয়ারী র‍্যাংকিন স্ট্রিট থেকে বেরুতো পত্রিকাটি। কিশোর আমি প্রতিদিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই হাঁটতে হাঁটতে চলে যেতাম গণকণ্ঠ অফিসে। গণকণ্ঠ অফিসের দেয়ালে ভোর বেলায় লেই দিয়ে সেইদিনের সদ্য প্রকাশিত পত্রিকার পাতাগুলো সাঁটিয়ে রাখা হতো। মর্নিং ওয়াকে বেরুনো একদল মানুষ মিনি মাগনায় পত্রিকাটি পড়ার জন্যে ভিড় জমাতো। ভিড় ঠেলে আমিও প্রতিদিন পত্রিকাটি পড়তে যেতাম। আমার তখন কার্টুন জমানোর হবি ছিলো। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত কার্টুন কেটে কেটে সেগুলো একটা খাতায় আঠা দিয়ে সাঁটিয়ে রাখতাম আমি। গণকণ্ঠে ‘ইকবাল’ নামের একজন কার্টুন আঁকতেন নিয়মিত। ১৯৭৩ সালের পহেলা জানুয়ারি ঢাকার তোপখানা রোডের আমেরিকান কালচারাল সেন্টার ইউসিস-এর সামনে ছাত্র ইউনিয়নের মিছিলে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারালো মতিউলসহ (দ্বিতীয়জনের নামটা মনে পড়ছে না, সম্ভবত কাদের।)দুই তরুণ। আমার মনে আছে, পরদিন গণকণ্ঠের প্রথম পাতায় ছাপা হওয়া ইকবালের আঁকা একটা কার্টুনের কথা। সেই কার্টুনে একটা ডালের ওপর দুটি শকুন বসা। একটি আরেকটিকে বলছে—‘বছরের শুরুতেই নরমাংসের গন্ধ পাওয়া গেলো। বছরটা ভালোভাবেই যাবে বলে মনে হচ্ছে...।’
কার্টুনিস্ট সেই ‘ইকবাল’ই আজকের নন্দিত লেখক এবং পাঠকপ্রিয় কলামিস্ট মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
বিটিভির ছোটদের ধারাবাহিক নাটকে দীপু নাম্বার টু
এককালে বাংলাদেশ টেলিভিশন ছিলো আমার সকল ধ্যান-জ্ঞান-এর কেন্দ্র বিন্দু। রাতদিন আমি পড়ে থাকতাম বিটিভি ভবনে। প্রচুর অনুষ্ঠান করতাম। উপস্থাপনা করা,স্ক্রিপ্ট লেখা এবং নির্দেশনা দেয়া ছিলো আমার অলিখিত পেশা। বিটিভির কর্মী বা চাকুরে ছিলাম না আমি, কিন্তু প্রতিদিন নিয়মিত আরো আট দশজন স্টাফের মতোই আমি ওখানে যেতাম। বিভিন্ন ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে আমার লেখা খুদে খুদে নাট্যাংশ বা স্কিড দেখে প্রযোজক কাজী কাইয়ূম একদিন বললেন ছোটদের জন্যে একটা ধারাবাহিক নাটক লিখতে। লিখলাম ঝন্টুপন্টু। ঝন্টুপন্টু নামের সেই ধারাবাহিক নাটকটি ছোটদের বিপুল ভালোবাসা পেলো। কিছুদিন বিরতি দিয়ে বিটিভি আবারো আরেকটি ছোটদের ধারাবাহিক নাটক রচনা ও পরিচালনার জন্যে বললে আমি শুরু করলাম ‘হইচই’। নিজের গল্প বা কাহিনি নিয়ে সিরিজ লেখার সুযোগ না নিয়ে আমি চাইলাম আমাদের শিশুসাহিত্যের চমৎকার সব গল্প আর উপন্যাসের নাট্যরূপ দিতে। কাইয়ূম ভাইয়ের মাধ্যমে বিটিভিকে এর প্রয়োজনীয়তাটুকুও বোঝাতে সক্ষম হলাম। মোহাম্মদ নাসির আলীর লেবু মামার সপ্তকাণ্ড, রাহাত খানের দিলুর গল্প, রাবেয়া খাতুনের লাল সবুজ পাথরের মানুষ, আলী ইমামের বনকুসুমপুর রহস্য, ফরিদুর রেজা সাগরের পিংকুইগ্রামসহ বেশ কিছু গল্প-উপন্যাসের নাট্যরূপ প্রচারিত হয়েছিলো ছোটদের ধারাবাহিক সিরিজ নাটক ‘হইচই’এ। এই হইচই সিরিজে চার পর্বে প্রচারিত হয়েছিলো মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘দীপু নাম্বার টু’। নাটকে দীপু চরিত্রে অঞ্জন, দীপুর বাবা আর মায়ের ভূমিকায় খায়রুল আলম সবুজ এবং শিরীন বকুল অভিনয় করেছিলেন। বিটিভির খুদে দর্শকদের বিপুল ভালোবাসা পেয়েছিলো সিরিজটা। বিশেষ করে ‘দীপু নাম্বার টু’র জনপ্রিয়তা ছিলো প্রত্যাশার সীমানা ছাড়ানো। এই সিরিজ নাটকের শুরুতে আমি নিজেই পর্দায় হাজির হতাম। কাহিনির লেখক সম্পর্কে তথ্য দিতাম। সেই লেখকের উল্লেখযোগ্য রচনাসমূহের পরিচিতি তুলে ধরতাম। লেখক কোথায় আছেন কি করছেন কি লিখছেন ইত্যাদি তথ্য দিতাম। এইসব কথাবার্তার ফাঁকে ফাঁকে লেখকের বেশ কিছু স্টিল ছবি প্রদর্শিত হতো পর্দায়। মুহম্মদ জাফর ইকবাল সম্পর্কে সাম্প্রতিক তথ্য এবং প্রয়োজনীয় স্টিল ছবি সংগ্রহ করতে এক বিকেলে আমি ইকবালের অগ্রজ আরেক প্রখ্যাত লেখক হুমায়ূন আহমেদের বাড়িতে গেলাম। হুমায়ূন আহমেদ তখন বিশ্ববিদ্যালয় শহিদুল্লাহ হলের প্রভোস্ট। হুমায়ূন ভাই পরম যত্নে অনেক আগ্রহ ভরে আমাকে তাদের পারিবারিক এলবাম থেকে অনেকগুলো ছবি দিলেন। মুহম্মদ জাফর ইকবাল তখন পিএইচডি করছেন আমেরিকায়। লেখকের পক্ষে অনুমতিটাও হুমায়ূন ভাইই দিলেন।
আমার একটা গোপন ইচ্ছে ছিলো ভবিষ্যতে দীপু নাম্বার টু-কে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের। কিন্তু আমার আগেই আমারচে মেধাবী আমারচে একটিভ আমারচে যোগ্য মোরশেদুল ইসলাম ঘটনাটি ঘটিয়ে ফেলেছেন! মোরশেদুল-এর পরিচালনায় চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেলে আমি আমার সম্পাদিত ছোটদের কাগজ পত্রিকার কভার স্টোরি করেছিলাম আমার স্বপ্নের ছবি দীপু নাম্বার টু-কে নিয়ে।
নতুন প্রজন্মের হিরো
শিশুসাহিত্যে এ বছর সিটি আনন্দআলো সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছিলেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল। মার্চের প্রথম সপ্তাহে, ০৫ মার্চ দুপুরে চ্যানেল আই স্টুডিও থেকে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছিলো পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানটি। আমি ছিলাম অনুষ্ঠানের উপস্থাপক। অনুষ্ঠান শেষে দুপুরে ইকবাল সস্ত্রীক আমাদের সঙ্গে লাঞ্চ করলেন। ক’দিন পরেই আমার ফিরতি ফ্লাইট কানাডার উদ্দেশ্যে। আমার কন্যা নদী বলে দিয়েছিলো তার প্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবালের অটোগ্রাফসহ কয়েকটা বই যেনো নিয়ে যাই কানাডায়। বইমেলায় নানান ব্যস্ততায় কাজটা করা হয়নি। খেতে খেতেই ঘটনাটা বললাম। আমীরুল সমাধান দিলো, এক্ষুণি চ্যানেল আইয়ের একজন সহযোগিকে পাঠিয়ে বেইলি রোডের সাগর পাবলিশার্স থেকে ইকবাল ভাইয়ের কয়েকটা বই আনিয়ে নিলেই তো হয়। ইকবাল ভাই আরেকটি অনুষ্ঠান রেকর্ডিং এর প্রয়োজনে বিকেল পর্যন্ত চ্যানেল আইতেই তো আছেন। আমাকে উদ্যোগী হতে দেখে ইকবাল ভাই নিরস্ত করলেন—অতো ঝামেলার কি দরকার। আমার বাসায় অনেক বই আছে। রাতে বাসায় চলে আসুন। চা-ও হবে নদীর জন্যে অটোগ্রাফটাও হবে।
রাতে আমি আর আহমাদ মাযহার গেলাম উত্তরায় তাঁর বাসায়। ইকবাল ভাই একের পর এক বইতে নদীর জন্যে অটোগ্রাফ দিচ্ছেন। আমি মুঠোফোনে কানাডায় কল দিলাম। আমার স্ত্রী শার্লি জানালো নদী এখন ইউনিভার্সিটিতে। ইকবাল ভাইয়ের সঙ্গে আজকের ঘটনার বিবরণ শুনে ফোনের অন্যপ্রান্তে আমার স্ত্রীও উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠলো—আরে! শুধু নদীকে অটোগ্রাফ দিলেই হবে? আমার জন্যেও নিয়ে আয় কয়েকটা। আমিও তো ইকবাল ভাইয়ের ভক্ত পাঠক! তুই ফোনটা ইকবাল ভাইকে দে, আমিই বলি। শার্লির সঙ্গে কথা বলে ইকবাল ভাই হাসি হাসি মুখ করে আমার স্ত্রী শার্লির নামেও সই করে বই উপহার দিলেন। ইকবাল ভাই বোধহয় ভাবছিলেন এরপর আমিও তাঁর অটোগ্রাফ চেয়ে বসবো। আঁড় চোখে বার কয়েক আমার দিকে তাকালেনও! নেহাত ইকবাল ভাইয়ের ক্লান্তির কথা ভেবে আমি সেইবেলা বিরত থাকলাম। আহারে! অটোগ্রাফ দিতে দিতে ক্লান্ত বেচারা!
কিন্তু অটোগ্রাফ দিতে গিয়ে ইকবাল কখনোই ক্লান্ত হন না। প্রতিবছর একুশের বইমেলায় বাংলা একাডেমীর নজরুল মঞ্চের পেছনের সিঁড়িতে বা গোলচক্কড়ে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা অটোগ্রাফ দেন তিনি। কিশোর তরুণরা সুদীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে তাঁর অটোগ্রাফ নেয়। ইকবাল ভাইয়ের সাধ্য নেই একটু হেঁটে বইমেলাটা দেখার। হাঁটতে গেলেই তাঁর পেছনে মৌচাকের মতো ভিড় জমাট বেঁধে থাকে। অথচ এককালে ঘটনা বা পরিস্থিতি এরকম ছিলো না। আমার মনে আছে, পনেরো কুড়ি বছর আগে এই বাংলা একডেমীর বইমেলাতেই মুহম্মদ জাফর ইকবাল হাঁটছিলেন একা একা। এই স্টল সেই স্টল ঘুরে ঘুরে বই দেখছেন। তখনো এদেশের পাঠকরা তাঁর চেহারা চেনে না। তখন, প্রতীক প্রকাশিত তাঁর ‘সায়েন্সফিকশনসমগ্র’ ছাড়া অন্য কোনো বইয়ের ফ্ল্যাপে বোধ হয় তাঁর কোনো ছবিও ছাপা নেই(আমি কি ঠিক বললাম?)। একলা একা হাঁটছেন এরকম একজন গুণী লেখক, তাঁকে সংগ দেয়া দরকার ভেবে আমি এগিয়ে গিয়েছিলাম। কুশল বিনিময়ের পর এটা সেটা নানা কথার এক পর্যায়ে বললাম, এতো পাঠকপ্রিয় লেখক আপনি অথচ কী আশ্চর্য পাঠক আপনাকে চিনতে পারছে না! তিনি বললেন, এই যে একলা একা নিজের ইচ্ছে মতোন হাঁটছি আমি বইমেলায়, কেউ আমাকে চিনতে পারছে না, এটা আমি এঞ্জয় করছি। বললেন, হুমায়ূন আহমেদের সেই কপাল নাই। একটা স্টলে এসে বসেন। ব্যাস। নট নড়ন চড়ন অবস্থা। অই যে দেখেন বড়ভাইজানের কি হাল!
সেই বিকেলে অদূরে দাঁড়িয়ে থাকা নিয়তি আমাদের কথোপকথন শুনে মুখ টিপে খুব একপ্রস্থ হেসেছিলো বোধ করি। কারণ এখন বইমেলায় মুহম্মদ জাফর ইকবালেরও নট নড়ন চড়ন অবস্থা। শুধুমাত্র বইয়ের পাঠক নয়, মিডিয়ার কল্যাণে সারাদেশের মানুষই তাঁর চেহারা চেনে এখন। এখন তিনি স্টার-এর উপর স্টার। সুপারস্টার।
অভিনন্দন মুহম্মদ জাফর ইকবাল!
হাস্যোজ্জ্বল নিপাট ভদ্রলোক, নিরহংকার, সরল, সাদাসিধে(সাদাসিধে নামে একটা কলামের বই আছে তাঁর, ধ্রুব-র করা প্রচ্ছদ, ফ্রিহ্যান্ড লেটারিঙটা আমার ছিলো!), দেশপ্রেমিক, কমিটেড এবং বিরল রকমের ভালোমানুষ মুহম্মদ জাফর ইকবাল। সৎ-নির্লোভ-দায়িত্বশীল-বিজ্ঞানমনস্ক-দেশপ্রেমিক একটি প্রজন্মের স্বপ্ন দেখেন তিনি। এদেশের তরুণ প্রজন্ম তাঁকে ভালোবাসে। শ্রদ্ধা করে। বিশ্বাস করে। তরুণদের বিশ্বাসের মূল্যও তিনি দেন। আর তাইতো কোনো প্রলোভন কিংবা চোখ রাঙানিতে একটুও বিচলিত হন না মুহম্মদ জাফর ইকবাল। একাত্তরের পরাজিত শক্তি ঘাতক দালাল রাজাকার আলবদরদের বিরুদ্ধে তাঁর ভূমিকা সুস্পষ্ট এবং কার্যকর। তাঁর শক্তিশালী কলমটিকে (বলেছিলেন, এখনো হাতেই লেখেন কাগজে-কলমে, কম্পিউটারে লেখেন না!) আমার অভিবাদন। ঘাতক-যুদ্ধাপরাধী নরপশুদের অমানবিক হিংস্রতা আর নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ-প্রতিরোধ আর ঘৃণার অগ্নিমন্ত্র রচিত হয় এই কলমেই। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাঁথা, আমাদের স্বাধীনতার আনন্দবেদনা, আমাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনার অপরূপ প্রতিচ্ছবি মূর্ত হয়ে ওঠে এই কলমেই। অভিনন্দন সাহসী কলমযোদ্ধা মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
ছোটদের আদর আর বড়দের সমীহ পাওয়া খুব সহজ ব্যাপার নয়। কিন্তু একজীবনে মুহম্মদ জাফর ইকবাল এই দুটোই অর্জন করেছেন ঈর্ষণীয় দক্ষতায়!

ছবি: 
12/08/2007 - 10:52pm

মন্তব্য

তারেক অণু এর ছবি

নির্ভেজাল শ্রদ্ধা শ্রদ্ধা

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

তারেক তুমি মোমবাতি জ্বালিয়ে আমাকে চমকে দিচ্ছো কেনো?
মুহম্মদ জাফর ইকবালের এখনো মোমবাতিপ্রাপ্তি ঘটেনি তো!

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

তারেক অণু এর ছবি

আরে ছিঃ ছিঃ, বালাইষাট! জীবিত অবস্থায় কজন মানুষ এমন শ্রদ্ধা পায়! প্রিয় লেখককে শ্রদ্ধা জানালাম আপনার চমৎকার স্মৃতিচারণের মাধ্যমে।
এমন আরো স্মৃতিচারণ করুন না রিটন ভাই, আমরা কিছু জানতে পারি। আর আমাকে অণু বললেই হবে। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

দ্যা রিডার এর ছবি

চলুক বিনম্র শ্রদ্ধা

অরফিয়াস এর ছবি

রিটন দা, আপনাকে নিয়ে একটা স্মৃতি আমার মনে আছে, আপনি একবার মনে হয় পুরনো ঢাকার সেইন্ট গ্রেগরী হাই স্কুলে এসেছিলেন, ছোটদের কাগজ পত্রিকাটির ব্যাপারে বলতে আর আমরা তখন ক্লাস ২ তে, আমাদের সবাইকে সেদিন একটি করে কপি উপহার দেওয়া হয়েছিল, সেদিন থেকে শুরু, ছোটদের কাগজ আমার সর্বপ্রথম পড়া শিশুদের কোনো পত্রিকা, মনে পড়ে ওই পত্রিকাতেই প্রথম পড়েছিলাম গোলাম দস্তগীর টিটুর বীরত্ব সম্পর্কে, তারপর অনেকগুলো সংখ্যাই পড়েছি| বাংলাদেশে শিশুসাহিত্য বিকাশে আপনার কাজ অসাধারণ|

জাফর স্যার আমার সব থেকে প্রিয় একজন সাহিত্যিক, বলতে গেলে শুধু সাহিত্যিক নন, সব থেকে প্রিয় একজন মানুষ, তার ব্যাক্তিত্ব আমাকে সবসময় অনুপ্রেরণা জোগায়, সরাসরি কখনো স্যারের সাথে কথা হয়নি, কিন্তু বন্ধুরা যারা স্যারের ছাত্র তাদের কাছে শুনি, তবে যেখানেই থাকিনা কেন স্যারের জন্য ভালোবাসা আর সমর্থন থাকবে আর কিছু না পারি|

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আহারে ছোটদের কাগজ! আমার স্বপ্ন আর বেদনার স্মৃতি!
সেদিনের ক্লাশ-টুর ছোট্ট বন্ধুটি এখন কতো বড় হলো?
কি করছো এখন? ভালো থেকো।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

অরফিয়াস এর ছবি

দাদা, এখন তো প্রকৌশলী হয়ে গেছি প্রায়, আর মাস চারেক আছে ফাইনাল এর, বড় হয়ে যাচ্ছি, তবুও ছোটবেলাই ভালো ছিলো অনেক, আপনিও ভালো থাকুন ... হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

জি.এম.তানিম এর ছবি

স্যালুট!

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

চরম উদাস এর ছবি

ভালো লাগলো রিটন ভাই চলুক
আমাদের কৈশোরের শুরু হয়েছে সুকুমার আর সত্যজিত রায় কে দিয়ে আর শেষ হ‌‌য়েছে জাফর ইকবাল কে দিয়ে। তাকে ছাড়া আমার ছেলেবেলা অপূর্ণ। যতসব শকুন আর হায়নার দলকে কাচকলা দেখিয়ে তিনি আমাদের মাঝে থাকুন আরো অনেক অনেক দিন।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

সচল জাহিদ এর ছবি

মুহম্মদ জাফর ইকবাল কে নিয়ে এরকম চমৎকার স্মৃতিচারনমূলক একটি লেখার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ রিটন ভাই।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-জাহিদ।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

রু (অতিথি) এর ছবি

মুহম্মদ জাফর ইকবালের জন্য শ্রদ্ধা। খুব ভালো লাগলো স্মৃতিচারণ পড়তে।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

ধন্যবাদ।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

তাপস শর্মা এর ছবি

জাস্ট অসাধারণ। কি সুন্দর বর্ণনা হাসি

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-তাপস।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

সম্ভবত ৯৪ সালে। একুশে বইমেলায় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের স্টলে তখন আমি দোকানদারি করি।
প্রায়ই সন্ধ্যায় সায়্যীদ স্যার স্টলে বসেন, একদিন সন্ধ্যায় ভীড় তেমন নেই মেলায়। দেখা গেলো একজন একটা বই কিনে সায়্যীদ স্যারের অটোগ্রাফ চাইছেন। স্যার নাম জিজ্ঞেস করতে বললেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল!
তখনো তাঁর চেহারা পরিচিত না তেমন, কিন্তু নাম তো পরিচিত...
সেই প্রথম জাফর স্যারকে চেনা।
তখন যেরকম সাদাসিধে উজ্জ্বল একজন মানুষ দেখেছিলাম তাঁর ভেতরে, মাস দুয়েক আগে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় দপ্তরেও দেখলাম সেই লোকটিকেই...
সবকিছু অথবা সবাই বদলে যায় না

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

কি মিয়া দোকানদার খবর কি তোমার?

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

খবর ভালো, বইমেলায় আড্ডার অপেক্ষায়

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অকুতোভয় বিপ্লবী এর ছবি

তাঁর লেখা "দুষ্টু ছেলের দল" বইটাতে শিক্ষকের মাধ্যমে বলা একটা কথা মনে গেঁথে আছে, "বিখ্যাত লোক দিয়ে কী হয়? কিচ্ছু হয় না। কিন্তু ১০০ জন খাঁটি মানুষ দিয়ে দেশকে পাল্টে ফেলা যায়"।

আমি খাঁটি মানুষের ধারেকাছেও নই, কিন্তু তাঁর এই কথাটির মত আরও অনেক কথাই প্রতি মুহূর্তে অনেক দূরে যাওয়ার প্রেরণা দেয়।

মুহম্মদ জাফর ইকবাল, আপনি সেই খাঁটি মানুষ যিনি নিজে পালটান না, কিন্তু পাল্টে দিতে পারেন অনেক কিছু, অনেক কিছু।

আপনাকে সশ্রদ্ধ স্যাল্যুট।

রিটন ভাইকে সহস্র ধন্যবাদ এই লেখাটি লেখার জন্য, খুব খুব ভাল লেগেছে লেখাটা হাসি

------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

মনের কথাটা এইভাবে গুছিয়ে বলে দিয়েছেন বলে অকুতোভয় ভাইকে ধন্যবাদ।

... আর আমাদের প্রজন্মের কাছে ভীষণ প্রিয় এই মানুষটাকে লেখার জন্যে 'ছোটদের কাগজ' এর কল্যাণে একসময়ে অনেক নিয়মিত যার লেখা পড়তাম- সেই রিটন ভাইয়াকে অনেক ধন্যবাদ। হাসি

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

ধন্যবাদ অকুতোভয় আর সুহানকে।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

লেখাটি একটি মূল্যবান দলিলও বটে।
ধন্যবাদ আপনাকে ডঃ জাফর ইকবালকে নিয়ে এমন একটা লেখার জন্য।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আপনার লেখা পড়তেই ভালো লাগে! তারউপর লিখছেন জাফর ইকবাল স্যারকে নিয়ে! আপনাদের দুজনকেই শ্রদ্ধা হাসি

কতদিন আপনাকে দেখিনা রিটন ভাই মন খারাপ

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

তোমাকেও কতোদিন দেখি না বলো তো! বাংলাদেশে গেলে তোমার আপুটার সাথে দেখা হয়। আর আমি মনে মনে তোমাকে খুঁজি।
জার্মানিতে কেমন আছো তুমি? অনেক ভালো থেকো।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

ফাহাদ এর ছবি

অসাধারন ! এম্নিতেই ছোট বেলায় জাফর ইকবালের বই পরে নিজেকে একটু বেশি জ্ঞানী ভাবতাম, পরে দেখা যেতো সবাই জ্ঞানী হাসি

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

ধন্যবাদ।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

একজন কিশোর সাহিত্যিক হিসাবে জাফর ইকবাল স্যারকে - স্যালুট
একজন সাদাসিধে মানুষ হিসেবে জাফর ইকবাল স্যারকে - স্যালুট
কিন্তু অন্যায়ের বিপক্ষে নিজের জীবনের উপর হুমকি স্বত্ত্বেও উনি যা করেছেন সে জন্যে - স্যালুট স্যালুট স্যালুট স্যালুট স্যালুট স্যালুট .........
আপনাকে ধন্যবাদ, চমৎকার এই স্মৃতিচারণের জন্য।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

ধন্যবাদ।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

দ্রোহী এর ছবি

৮৯ অথবা ৯০ সালের কথা। আমি তখন সিক্সে অথবা সেভেনে পড়ি। একদিন পাশের বাসার বড় ভাইয়ের টেবিলে দেখি একটা বই, নাম "কপোট্রনিক সুখ দুঃখ"। বইয়ের মলাটে লেখকের নামের জায়গায় লেখা "মুহম্মদ জাফর ইকবাল"। সে বয়সে একটা জিনিস বুঝে গিয়েছিলাম যে বড়রা প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারলে ধরে পিটুনি দেয়। তাই কাউকে কোন প্রশ্ন না করে নিজেই নিজের সমস্যার সমাধান করলাম। লেখকের নাম "মুহম্মদ জাফর ইকবাল" দেখে বুঝতে পারলাম ইনিই সেই বাংলা ছবির বিখ্যাত নায়ক "জাফর ইকবাল"।

বইটা ধার করে এনে পড়লাম। এক অদ্ভুত মুগ্ধতায় সেদিন থেকে আমি তাঁর এক নাম্বারের ভক্ত হয়ে গেলাম। তারপর থেকে বিটিভিতে জাফর ইকবাল অভিনীত যতগুলো সিনেমা দেখিয়েছে আমি তার সবগুলোই দেখতাম। দেখতে বিরক্ত লাগলেও "কপোট্রনিক সুখ দুঃখের" মুগ্ধতা থেকে খানিকটা মুগ্ধতা ধার নিয়ে বিরক্তিটুকু পুষিয়ে নিতাম। দেঁতো হাসি

দুই দিন আগে তাঁর জন্মদিন গেল। প্রিয় লেখককে জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা।

চরম উদাস এর ছবি

হো হো হো

Pশুভ্র এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

তিথীডোর এর ছবি

হো হো হো

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

হো হো হো

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

দ্রোহী, তাহলে তো বিটিভিতে প্রচারিত মুহম্মদ জাফর ইকবালের(!) গাওয়া বিখ্যাত সেই গানটির কথাও বলতে হয়--সুখে থাকো ও আমার নন্দিনী হয়ে কারো ঘরনী......

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

দ্রোহী এর ছবি

আর বলবেন না, ক্লাস ফাইভে পড়ার সময় জীবনে প্রথমবারের মতো কড়া ছ্যাঁকা খেয়ে এই গান সম্বল করে ব্যাচেলর জীবন পার করে দিয়েছিলাম। দেঁতো হাসি

তারানা_শব্দ এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"

সাফি এর ছবি

স্মৃতিচারণ অসাধারণ লাগলো। প্রিয় লেখক জাফর ইকবাল স্যারকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। রিটন ভাইকে ধন্যবাদ এমন চমৎকার লেখার জন্য

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

(ঘনেপাতা)

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

উচ্ছলা এর ছবি

আপনার লেখা, ছড়া, স্মৃতিচারণ সুন্দর-সুপাঠ্য হবে, এ আর নতুন কি? হাসি

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-উচ্ছলা

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

শ্যামল এর ছবি

ধন্যবাদ রিটন ভাই অসাধারণ লেখার জন্য।
আমাদের শিশু সাহিত্যের ভান্ডারটি পূর্ণ করেছেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল, তার প্রতি স্যালুট।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

রানা মেহের এর ছবি

অনেক ভালো লাগলো রিটন ভাই।
আপনি সবাইকে সম্মান করে কথা বলেন। খুব ভালো লাগে

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

ধন্যবাদ রানা। এখন কোথায় তুমি ভাই? লন্ডনেই?

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

স্বপ্নলোভী এর ছবি

ধন্যবাদ রিটন ভাই, খুব ভাল লাগল লেখাটা হাসি
আপনি আর জাফর ইকবাল স্যার - দুজনকেই শ্রদ্ধা

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

অনিকেত এর ছবি

আমার ভীষন পছন্দের একজন মানুষকে নিয়ে আরো এক ভীষন পছন্দের লোক লিখেছেন---এই লেখাটা আমার কাছে অমূল্য হয়ে রইল। স্যালুট ঠুকে গেলাম আপনাদের দুইজনের জন্যেই!!

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-অনিকেত

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

শেহাব- এর ছবি

আমার ব্যক্তিগত পরিচিত মানুষদের মধ্যে সবচেয়ে সৎ, সাহসী, মেধাবী আর বুদ্ধিমান মানুষ। তার ছাত্র হওয়াটা একটা অসাধারণ অভিজ্ঞতা ছিল।

লিংকন এর ছবি

ধন্যবাদ রিটন ভাই, জাফর স্যার এর অবদান বলে শেষ করা যাবে না ...

আমার ছোটবেলায় বইমেলা থেকে কেনা প্রথম ছড়ার বইটা ছিল আপনার।
বইটার শেষের পাতার ছড়াটা আমার মূখস্থ ছিল। এখোনো কিছুটা মনে আছে ...

আব্দুল হাই, করে খাই খাই
এক্ষুনি খেয়ে বলে কিছু খাই নাই
লাউ খায়, শিম খায়,
মুরগির ডিম খায়
কাচা পাকা চুল খায়,
খেয়ে মাথা চুল্‌কায়,
মূলো খায়, ধুলো খায়,
মুড়ি সবগুলো খায়
... ...

ছোটদের জন্য আপনার অবদান কিন্তু কম নয় ...

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

তাই নাকি লিংকন! আমার বইও তাহলে কেনে কেউ কেউ!
আবদুল হাইকে মনে রাখার জন্যে ধন্যবাদ।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আব্দুল হাই করে খাই খাই আমারও মুখস্ত ছিলো একসময়
দারুণ পছন্দের

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মুস্তাফিজ এর ছবি

ছোটদের আদর আর বড়দের সমীহ পাওয়া খুব সহজ ব্যাপার নয়। কিন্তু একজীবনে মুহম্মদ জাফর ইকবাল এই দুটোই অর্জন করেছেন ঈর্ষণীয় দক্ষতায়!

কী অদ্ভুত সুন্দর সত্য কথা! ধন্যবাদ রিটন ভাই।

...........................
Every Picture Tells a Story

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-মুস্তাফিজ ভাই

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

তানজিম এর ছবি

এক গুণীজনকে নিয়ে আরেক গুণীজনের লিখা পড়াটাও কম সৌভাগ্যের নয়।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

দেঁতো হাসি

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

নিটোল এর ছবি

অসম্ভব সুন্দর স্মৃতিচারণ! খুব খুব খুব ভালো লাগল। হাসি

_________________
[খোমাখাতা]

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

ধন্যবাদ।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

সাকিন উল আলম ইভান এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- লেখার জন্য ।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

ধন্যবাদ।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

শামীমা রিমা এর ছবি

আমাদের অতি প্রিয় জাফর স্যারকে নিয়ে লেখা ,ভালো না লেগে উপায় আছে ।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

নাহ্‌ উপায় নেই। দেঁতো হাসি

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

ফারাবী এর ছবি

কোথায় যেন পড়েছিলাম গুনীর মুখে গুনীর কথা শোনা অমৃতসমান। আজ হাতেকলমে আরেকবার বুঝে নিলাম। জাফর স্যার আর আপনাকে- দুজনকেই আমার সশ্রব্ধ সালাম (সম্মানপ্রদর্শনার্থে)। সবসময় ভাল থাকুন এই কামনা করি।

------
ফারাবী

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-ফারাবী।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

বন্দনা এর ছবি

স্যারকে নিয়ে লিখা মিস করতে চাইনা, আর এই লিখটা তো খুবি সুপাঠ্য হয়েছে রিটনদা।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-বন্দনা।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

জালিস এর ছবি

বাহ । চলুক

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

দেঁতো হাসি

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

এক প্রিয় লেখককে নিয়ে আরেক প্রিয় লেখকের দারুণ লেখা। জমিয়ে রেখেছিলাম আরাম করে পড়বো বলে। হাসি

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

দেঁতো হাসি

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

তারাপ কোয়াস এর ছবি

স্মৃতিচারণ দারুণ লাগলো।


love the life you live. live the life you love.

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

দেঁতো হাসি

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

আমার শৈশবের প্রথম ছড়া ছিল "এক নেংটি ইঁদুর ছানা, চুটুর পুটুর ল্যাজ নাড়িয়ে খাচ্ছে মটদানা, এক নেংটি ইঁদুর ছানা, সাদা কলো রঙের পুষি, ওকে দেখেই ভীণন খুশি . . ."
সচলে আমি নতুন এসেছি, আপনার লেখা দেখেই থমকে গেলাম। এই কি সেই ছড়াকার? ইকবাল স্যারকে অনেক পছন্দ করি। মনে হল আমার সেই ভালোলাগাকেই আপনি লিখে দিয়েছেন।
ধন্যবাদ। সবকিছুর জন্য।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আহারে নেংটি ইঁদুর ছানা...

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আব্দুল হাই, করে খাই খাই
এক্ষুনি খেয়ে বলে কিছু খাই নাই।

খেতে বসে বহুবছর থেকে এইটা বহুবার উচ্চারিত হলেও দুঃখের বিষয় এটা রিটন ভাইয়ের ছড়া মনে ছিল না হো হো হো

এই পোষ্ট নস্টালজিক করে দিল। প্রথমত আমার কৈশোরের সবচেয়ে প্রিয় পত্রিকা কিশোর বাংলার জন্য। স্কুল থেকে ফিরে নির্ধারিত দিনে (মঙ্গলবার ছিল বোধহয়) বসে থাকতাম কিশোর বাংলার জন্য। তখন চট্টগ্রামে ঢাকার পত্রিকা আসতে আসতে বিকেল হয়ে যেতো। সেই বিকেলগুলো এত চমকপ্রদ ছিল, ভুলতে পারি না। মুহম্মদ জাফর ইকবালের নামের সাথেও প্রথম পরিচয় ঘটে তখনকার সময়, কপোট্রনিক সুখ দুঃখ বইটার মাধ্যমে। কল্পবিজ্ঞানের বই খুঁজতাম দোকানে গেলেই। কারেন্ট বুক সেন্টারে গিয়ে কিশোর বইয়ের র‍্যাকে প্রথম দেখি বইটা। মুগ্ধতার সেই সূচনা। তারপর হাত কাটা রবিন, দীপু নাম্বার টু....পড়তে পড়তে বড় হয়ে যাই। আমার পরের ভাইবোনেরা জাফর ইকবাল পড়তে থাকে, আমি ওদের কাছ থেকে নিয়ে পড়ি। বুকশেলফের একটা অংশ দখল করে রাখে মুহম্মদ জাফর ইকবাল। অনেক পরে এসে ততদিনে কলেজ ছাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে.... জানতে পারি এই জাফর ইকবাল হুমায়ুন আহমেদের ভাই।

রিটন ভাইকে অশেষ ধন্যবাদ স্মৃতিচারণের জন্য।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

আমি শিপলু এর ছবি

চমৎকার.....অপার শ্রদ্ধা আর ভালবাসা বাংলার দুই নক্ষত্রের জন্য।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-শিপলু

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

মূর্খ পাঠক  এর ছবি

রিটনদা, লেখা নিয়ে নতুন করে বলছি না। কিন্তু ’ছোটদের কাগজ’ নিয়ে একটু বলি। আমার পড়া একমাত্র শিশুদের পত্রিকা আপনার ‘ছোটদের কাগজ’।
মনে আছে একবার শিরোনাম ছিল-“মেয়ে তুমি বড় হচ্ছো” আর নদীর একটা ছবি ছিল কভারে। সেসময় আমরা্ও বড় হচ্ছিলাম। নস্টালজিয়া...
হঠাৎ করেই কাগজটা হকারের কাছে আর পেলাম না। অনেক ধন্যবাদ দাদা,আমাদের সাদামাটা জীবনে কিছু অসাধারণ স্মৃতি যোগ করার জন্য।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

হ্যাঁ, প্রচ্ছদে নদীর ছবি ছিলো! আহারে ছোটদের কাগজ...
এই পত্রিকাটা ছিলো আমার সন্তানের মতো।
আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-তোমাকে।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

তিথীডোর এর ছবি

অসম্ভব সুন্দর এই স্মৃতিচারণের জন্য রিটন চাচ্চুকে খাইছে অসংখ্য ধন্যবাদ!

ছোটবেলায় একটা সময় প্রতি মাসে অতি আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতাম 'ছোটদের কাগজ' নামের তেল চুকচুকে একটা চমৎকার পত্রিকার জন্য।
জাফর ইকবালের লেখার জন্য তেমনি আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করে পিচ্চি কাজিনগুলো, হুড়োহুড়ি করে স্যারের নুতন কিংবা পুরোনো বইগুলো ওদের সঙ্গে বারবার পড়া হয় আমারো।
দুজন প্রিয় মানুষকেই জানাই নিখাদ শ্রদ্ধা। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-তিথী চাচ্চু

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

ভাইয়া, এক প্রিয় মানুষ আরেক প্রিয় মানুষকে নিয়ে লিখেছে, লাফিয়ে ঝাপিয়ে হাতের কাজ শেষ করেই পড়ে ফেললাম। ভাল্লাগলো অনেক। আচ্ছা ভাইয়া, বিটিভির সেই নাটকগুলোর মাস্টার কপি কি নেই তোমার কাছে? আমার খুব দেখতে ইচ্ছা করছে!! মন খারাপ

জাফর স্যারকে নিয়ে আসলে অনেক স্মৃতি আমার। লিখতে গেলে একটা ব্লগই হয়ে যাবে বলা যায়। মামার বুকশেলফ থেকে পাওয়া কপোট্রনিক সুখ দুঃখের প্রথম সংস্করনের একটা বই থেকে তার বই পড়া শুরু। তখন আমি সব কিছুর নামকরন করতাম সুকুমার প্রিয়তার জন্যে। আমার প্রিয় পার্কার কলমের নাম রেখেছিলাম প্রমিথিউস! দেঁতো হাসি তারপরে একদিন দেখলাম জাফর ইকবাল আমার বাবার চেয়ে মাত্র ২৩ দিনের ছোট, তখন থেকে আড়ালে তাকে জাফর চাচা/ছোটচাচা বলে ডাকতে শুরু করলাম।

ধূলাতে অ্যালার্জি বলে কেউ আমাকে বইমেলায় নিয়ে যেতোনা। জাবিতে পড়ার সময় বইমেলা ম্যানিয়া শুরু করি তাই জোরেশোরে, আর চুপিচুপি প্রত্যেক দিন দুই জনকে খুঁজে বেড়াতাম, কাজীদা আর ছোটচাচা। দুইবছর আগে এক শুক্রবারের সকালে তাকে পেয়েই গেলাম। অমনি তড়িঘড়ি করে দুই বান্ধবী কিনে আনলাম দুইখান বই। বান্ধবী দাঁড়িয়ে গেলো শিকারীদের লাইনে। কিন্তু আমার ইচ্ছা হলোনা সেখানে থাকার! বটতলা ঘুরে পিছন থেকে গিয়ে অতর্কিতে হামলা চালালাম তার উপরে। ঠেলেঠুলে বসে পড়লাম জাফর ইকবাল আর ইয়াসমিন হকের মাঝখানে। ব্যস, তারপরে আমার কথার ট্রেন চালু পুরোদমে। মিনিট চল্লিশেক পরে অটোগ্রাফ আর ছবি শিকার করে বান্ধবী যখন নড়লো তখন ক্ষান্ত দিলাম আমি। ইয়াসমিন হক বললেন আবার দেখা হবে, স্যার মনে হয় ভয়েই কিছু কন নাই। এরপর থেকে বহুবার বহু জায়গায় স্যার আর ম্যাডামের সাথে দেখা হয়েছে, ম্যাডাম এখন আমাকে ভালো করেই চিনেন। খাইছে এই বইমেলাতেও আশা করি হামলা চালাবো উনার উপরে! দেঁতো হাসি

ভাইয়া, তোমার সাথে দেখা হয়না বহুদিন। বইমেলার আড্ডার অপেক্ষায় আছি!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

তুমিও একটা লিখে ফেলো না। আমরা পড়ি।
আসছি বাংলাদেশে। বইমেলায় দেখা হবে। দেঁতো হাসি ভালো থেকো সায়কা।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ স্যার, আপনার অসাধারণ লেখাটি পড়ে মনে হচ্ছে যেনো মুহাম্মদ জাফর ইকবালকে নতুন করে চিনতে পারছি। পিছনের অনেক কথাই জানতাম না যা আজ জানলাম। ভালো থাকবেন।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

নবীন পান্থ এর ছবি

আমার গর্ব হয় আমি স্যারের ছাত্র। ব্যক্তি জাফর স্যার অনন্য। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ স্যারকে নিয়ে কিছু লিখায়........

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

ধূসর জলছবি এর ছবি

আপনার "ছোটদের কাগজ" নিয়ে আমার স্মৃতিটা খুব মজার । আমি জন্ম নেয়ার পর থেকেই আম্মু আমার জন্য ছোটদের কাগজ প্রতিমাসে কিনে জমিয়ে রেখেছিলো, আমি বানান করে করে সেগুলো পড়তাম পড়তে শেখার পর থেকেই । তাই তখন থেকেই আমি আপনার অসম্ভব ভক্ত। আর জাফর ইকবাল স্যারের বই পড়ে বড় হয়েছি, মানুষ হতে চেষ্টা করেছি। তাই আপনার এ লেখাটা খুব বেশিই ভাল লেগেছে। দুজন প্রিয় মানুষকে একসাথে পেলাম ।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

অনেকদিন পরে তোমার মন্তব্যটি চোখে পড়লো। ধুসর জলছবি তোমার মা-কে আমার অনেক ধন্যবাদ আর শুভেচ্ছা তাঁর সদ্য জন্মানো সন্তানের জন্যে আমার ছোটদের কাগজটি প্রতিমাসে কিনে জমিয়ে রেখেছিলেন জেনে। ভালো থেকো বন্ধু।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

রণদীপম বসু এর ছবি

খুব দুঃখ পাইলাম, এইরকম একটা লেখা যথাসময়ে আমার পড়া হলো না !

রিটন ভাই, ডাইরেক্ট বান্ধাইয়া রাখার মতো একটা লেখা !!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

চন্দ্রশেখর এর ছবি

জাফর স্যার কে স্যালুট । সেই সাথে আপনাকেও রিটন স্যার ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।