বাংলাদেশের বিষণ্ণতম বিকেল

সুহান রিজওয়ান এর ছবি
লিখেছেন সুহান রিজওয়ান (তারিখ: শুক্র, ০৪/০৩/২০১১ - ৭:৫০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলাদেশের আজ বড় দুঃখের দিন।

ঢাকা শহরটা এই মুহুর্তে বড় নীরব, থমথমে। ইলিয়াস সাহেবের ম্লান,মনোরম,মনোটোনাস ঢাকা এখন মৃত। পথঘাটে মানুষের চলাচল বিস্ময়করভাবে কম বলে মনে হচ্ছে। পাশের গলিতে ছেলেরা দল বেঁধে ক্রিকেট খেলে বিকালে। সেই গলিতে ব্যাটবলের আওয়াজ পাওয়া যায়নি আজ। কেনো ??

কারণ কি এটাই, আমাদের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে দুঃস্মরণীয় দিনটিতে মীরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট-ইন্ডিজ লিখে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের একালের এলিজি ??

বাংলাদেশের ষোলো কোটি মানুষ আশা করে ছিলো। পরের পর্বে উত্তরণের জন্যে ওয়েস্ট-ইন্ডিজ বধ ছিলো আবশ্যক। সাম্প্রতিক রেকর্ড, খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস আর দেশের মাটির সমর্থনে কাজটা কঠিন হলেও অবাস্তব ছিলো না। মাঠে কি দেখা গেলো তার বদলে ??

ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ দল ৫৮ রানে অলআউট। মাত্র ৫৮ রানে !! জবাবে স্মিথের একটিমাত্র উইকেট হারিয়ে ১২.২ ওভারে ৫৯ রান তুলেছে ওয়েস্ট-ইন্ডিজ। বিশ্বকাপে কোন টেস্ট প্লেয়িং দলের এটি সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড। কানাডা ৩৬ আর নামিবিয়া ৪৫ করেছে এর আগে, তারা কেউই আইসিসির পূর্ণ সদস্য না।

আজই আহমেদাবাদের মাটিতে প্রায় একই সময়ে নিউজিল্যান্ডের কাছে দশ উইকেটে হেরেছে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ের চেয়ে শ'খানেক রান কম করেও হেরেছে নয় উইকেটে। খারাপ কি ??...

নাহ, এই সাফাই গাইবো না। খেলা যারা দেখেছেন, তারা মাত্রই জানেন কি ভয়ংকর ভঙ্গুর লেগেছে আজ বাংলাদেশের ব্যাটিং। আজ ছিলো ক্রিকেটের বিরলতম সেইসব দিনের একটি, যেদিন কোন কিছুই কাজ করে না ঠিকমত। রকিবুলের আলতো পাঞ্চচলে যাচ্ছে পয়েন্টের হাতে, তামিম-আশরাফুল বাইরের বলে সপাটে চালিয়ে পিছনে ধরা পড়ছেন পিছনে, সাকিব হচ্ছেন দোনামোনা সুইপে বোল্ড। এক জুনায়েদই যা কিছু খেলছিলেন। দিনের সেরা বলটিতে তাকেও ফেরালেন রোচ। বিপক্ষ বোলারেরা বিনা আয়াসে পেয়ে যাচ্ছেন একের পর এক উইকেট। প্রতিটি ফিল্ডারের জায়গা বদল হওয়া মাত্র সেখানে ক্যাচ যাচ্ছে। প্রতিটি বিরতি আর বোলিং পরিবর্তনে উইকেট পড়ছে। 'ম্যালেনা' ছবির মনিকে বেলুচ্চির মতোই রোচ, স্যামি আর সুলিমান বেন নগ্ন-উন্মুক্ত করে দিচ্ছেন আমাদের ব্যাটিং ভঙ্গুরতার স্বরুপ।

কেবল টিভির পর্দায় দেখেই আমার মত দর্শকদের মন খারাপ হয়ে গ্যাছে, মাঠের গ্যালারীকে লাল-সবুজে মাতাতে সেজে গিয়েছিলেন যেসব দর্শক; তাদের অবস্থাটা কতটুকু শোচনীয়, কে জানে।

ধিক্কার তো তামিম-সাকিব তাই পাবেই। পাওয়াটা উচিৎ। আরে ব্যাটা, জাতীয় দলের ক্রিকেটার হয়েছিস বলে মাথা কিনে নিয়েছিস নাকি ?? বয়েস ২৩-২৪ বলে টাকা কম পাস নাকি ?? ৫৮ রানে অলআউট মানুষে হয় ?? বা* ফেলা ছাড়া আর কিছু করতে পেরেছিস জীবনে ?? ...

কিচ্ছুটি না, কিচ্ছু করতে পারেনি এরা। বেশিরভাগ টেস্ট ম্যাচ চারদিনে হেরে এসেছে। শেষ ওভারে ১৭ রান দিয়ে ম্যাচ হারিয়েছে। কানাডা-আয়ারল্যান্ডের কাছে ম্যাচ হেরেছে।

অতএব, ভুলে যান বারবারই ষোলো কোটির চোখের পানি মুছিয়ে এরাই লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়েছে বারবার। ভুলে যান, 'জয়ে পরাজয়ে বাংলাদেশ দলের পাশে আছি' বলে ফেসবুকের ঠুনকো লাইক মারাটা। ভুলে যান, যা শেয়ার করেছেন বারবার- Never Stop Believing আপ্তবাক্য।

... ধিক্কার টাইগারদের অবশ্যই দেবেন। শেষ ওভারে ১৭ রান দিলে ধিক্কার দেবেন। ক্যাচ ছেড়ে ম্যাচ হারলে ধিক্কার দেবেন। সেট হয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসলে ধিক্কার দেবেন। ধিক্কার না দিলে বাস্তবতার চাপ সামলাবে কীভাবে ছেলেরা ?? তবে আজ নয়। আজ দুঃস্বপ্নের দিন। দুঃস্বপ্নে ধিক্কার আর দুয়ো দিয়ে লাভ কোথায়। দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ তো সহসাই আর আসবে না। ধিক্কার দেবার সময় পরে অনেক আসবে। আজ দুয়ো দিয়ে গেলে যে দলের একতায় ফাটল ছিদ্রান্বেষণকারী সাংবাদিকের সাথে একই কাতারে নামতে হয় আমাদেরও।

ঠিক জানি, এটা আমাদের দলের প্রকৃত সামর্থ্য নয়। দুঃস্বপ্নের দিন বলে ইনসেপশনের মত লিম্বোতে আটকে গিয়ে এটাকেই দলের আসল অবস্থা বলে দাবি করবেন না, প্লিজ।

ফিনিক্স পাখির মতো ফিরে এসেছিলো ম্যালেনা আর ভোল পালটে শহরবাসী কুর্ণিশ করেছিলো তাকে।

বারবার বেশ বদলানো কষ্টের। আমি তাই টাইগারদের পাশেই থাকি। দুঃসময়ে প্রিয়জনের পাশে থাকতে হয়।


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

বাজে দিন গেছে। কোন কিছুই কাজ করেনি। ব্যাপার না। পরের খেলায় ওরা ভালো খেলবে, ইনশাল্লাহ। এরকম খেললে সমালোচনা তো হবেই। হোক। হওয়ার দরকারও আছে। তবে ক্রিকেটে এরকম হওয়া অসম্ভব নয়। আজ বাংলাদেশ করেছে, কাল এর থেকেও কেউ খারাপ করতে পারে।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

পাশেই আছি...

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

guest writer rajkonya এর ছবি

খুব ভাল লেগেছে আপনার ভাবনাগুলো।

দুঃসময়ে প্রিয়জনের পাশে থাকতে হয়।

ধন্যবাদ।

স্বপ্নাহত এর ছবি

ধন্যবাদ, সুহান।

হারুক ,জিতুক বাংলাদেশ দলের সাথে আছি

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

বিষন্নতম বিকেলটা গুমোট হয়ে কাটানো যেত। স্বপ্ন দেখা যেত আগামী জয়ের।
কিন্তু, এ খবরটা দিলো পরাজয়ের চেয়েও বেশি লজ্জা। একজন দর্শকের লজ্জা, ষোলো কোটি মানুষের লজ্জা।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

এই একটা জায়গায় এসে মুখে থুতু এসে যাচ্ছে। সমর্থক নামের এইসব ছাগলগুলো সব দেশে থাকে। ভারতে এরা ধোনির বাসায় ঢিল মারে, বাংলাদেশে সাকিবের বাড়ি।

দরকার নাই এইসব সমর্থক।

দুর্যোধন  এর ছবি

মন খারাপ ছিলো,এখন ক্রিস গেইলের টুইটারে দেখলাম বাংলাদেশি সমর্থকদের কান্ড click ,এছাড়া ইএসপিএনের নিউজ দেখুন এখানে

অতিথি লেখক এর ছবি

গেইল টুইট করেছেন

This is some bullshit.....Bangladesh stoning our bus!!! Freaking glass Break!!! This is crap,can't believe..what next bullets!!!! Kiss teeth

এইটা কিন্তু দেশের কান কাটা যাবার মত কথা!!!

ধৈবত

দ্রোহী এর ছবি

না। এটা দলের আসল চেহারা না। আমাদের সামর্থ্য আরেকটু বেশি, ১৮০-২২০। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই যুগে আয়ারল্যান্ডও ৩৩০ রান তাড়া করে ম্যাচ জেতে।

আমরা তো সবকিছুতেই পাকিস্তানকে অনুসরণ করি। আমাদের খবরের কাগজের খেলার পাতা ভরে থাকে পাকিস্তানী দলের জয়গানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়দের বহনকারী বাসে ইট মারার বুদ্ধিও লাহোর থেকে আমদানী করা। আরেকটু ভাল হয় যদি ইংল্যান্ড আর সাউথ আফ্রিকা পরের ম্যাচগুলো খেলতে রাজি না হয়।

ইউটিউবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল নিয়ে স্বপ্নজাগানিয়া একটা প্রোমোশনাল ভিডিও দেখেছিলাম "নেভার স্টপ বিলিভিং" নামে। আমিও বিশ্বাস করি একদিন আমরা বিশ্বকাপ জিতব।

দেখে নিয়েন একদিন আমরাও বিশ্বকাপের ফাইনালে নামিবিয়া কিংবা ভূটানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতব। দেখে নিয়েন, একদিন ঠিক ঠিক দেখে নেব সব শালাদের।

তাসনীম এর ছবি

চমৎকার এই লেখাটির জন্য ধন্যবাস সুহান। বিষণ্ণতা ৮০০০ মাইল দূরে বসেও অনুভব করছি। মন খারাপ

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল্লাগতেসে না।
কোন কিছুই ভাল্লাগতেসে না। পুরা ব্ল্যাঙ্ক হয়া আসি এখনো।

---আশফাক আহমেদ

সাইদ এর ছবি

ইটা মারতে চাইছিল বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের পরিবহণকারি বাসে।ভুলে ২টা গিয়ে পড়ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাসে।

তিথীডোর এর ছবি

জয় পরাজয় যাই হোক, আছি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পাশে.........
থাকব সবসময়!!

দুঃসময়ে প্রিয়জনের পাশে থাকতে হয়।

চলুক

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

জি.এম.তানিম এর ছবি

প্রতিপক্ষের বাসে পাথর মারার মতো ফালতু সমর্থকদের আমার দেশের দরকার নাই। দরকার এমন সমর্থক, যারা জয় পরাজয়ে দেশের গান গাইতে পারে... পরের খেলায় আবারও দলের জন্যে চিয়ার করবো, খারাপ খেললে গজগজ করবো! সমর্থকরূপী অসভ্যদের প্রতি ঘৃণা!

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে। পরাজয়ের গ্লানিতে না, বরং বাংলাদেশের দর্শক, সমর্থক আর মানুষের যে সম্মান এতোদিন শ্রদ্ধাভরে লালিত হতো বহির্বিশ্বে, সে সম্মানের শক্ত ভিতটা আমরাই নড়িয়ে দিয়েছি বলে! পরাজয় মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু এটা কী করে মেনে নেই?

তাসু এর ছবি

আমি তাই টাইগারদের পাশেই থাকি। দুঃসময়ে প্রিয়জনের পাশে থাকতে হয়।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আমাদের ক্রিকেটাররা ভালো খেলতে পারে, খেলে দেখায়ও। কিন্তু বারবার যে জিনিসটার অভাব বোধ করি তা হলো - প্রফেশনালিজম। ক্রিকেটের জাতীয় টিমে খেলার সুযোগ যে বাছাই করা খেলোয়াড়েরা পান, তাদেরকে খেলা শেখাতে যাবার জায়গা আমার মতো সাধারণ দর্শকের নয়। ইণ্ডিয়ার সাথে এই বিশ্বকাপেই হেরে গেলেও তাদের খেলার পার্ফর্ম্যান্স তাই সর্বজন প্রশংসিত। আয়ারল্যাণ্ডের সাথে সহজ জয় হতে পারতো মনে করে যে খেলা, সেখানেও খেলার মান আশানুরূপ না হলেও আয়ারল্যাণ্ডের নিজেদের তুখোড় খেলাটা হাততালির যোগ্য। কিন্তু আজকের খেলাটা যে আমাদের দলের স্বাভাবিক মানসম্মত হয় নি তা তোমার লেখার মাঝেও উল্লেখ করেছ।

তবুও খেলার কারণে মন খারাপ করার দরকার নাই। আমি তো এখনো আশা করি পরের ম্যাচটা খুব ভালো খেলবে টিম, একটা ভালো ম্যাচ দেখতে, তাতে পছন্দের টিমের হার হলেও, প্রতিপক্ষ দারুণ খেললেও ভালো লাগে দেখতে, আলোচনা করতে, হইচই করতে। আশা করি আমাদের খেলোয়াররা পরের ম্যাচে সেরকম খেলবে।

মন খারাপ করতে হলে করা উচিত ঐ তথাকথিত দর্শকগুলোর কাজের জন্যে, যারা আজকে বাংলাদেশের মাথা নিচু করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। খবরের লিঙ্কে দেখলাম বাংলাদেশের বাস মনে করে এই কাজ করেছে। পড়ে মনে হলো কোথাও পালায়ে যাই।
একবার-দুইবার বাজেভাবে হারলে দলের প্রতি, খেলোয়াড়দের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসা ধরে রাখাটা সহজ। কিন্তু বারবার নিজেদের পেশাদারিত্ব ভুলে গেলে, সেটার সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতাও থাকতে হবে। সমালোচনা বলছি, গালাগাল নয়, যেটার ফোয়ারা হয়তো ছুটবে আজকে টিভি চ্যানেলগুলোয় আর কালকের পেপারে। খেলোয়ারদের বাজে খেলাটা যেমন প্রশংসার দাবিদার না, দর্শকদের এই নিম্নগামী আচরণ তার থেকে অনেক বেশি লজ্জাজনক।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

হা হা হা! পোস্ট পড়ে এই কষ্টের ভিতরেও হাসলাম।

এটা আমাদের বিষণ্ণতম বিকেল হতে পারে, তবে সেটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাসে ইট ছোঁড়ার জন্য (দিন দিন পাকি হয়ে যাচ্ছি আমরা), তাদের কাছে ম্যাচ হারার জন্য না। বাংলাদেশ অনেক অনেকবারই এরচেয়ে জঘন্য খেলেছে, ইনফ্যাক্ট নিউজিল্যান্ডকে ওয়াশ করা সিরিজ কিংবা আয়ারল্যান্ডের সাথে জেতা ম্যাচটিও কোনোমতেই ব্যতিক্রম নয়। আয়ারল্যান্ডের সাথে ২০০ রানে বুকড হওয়ার পরে কোচ-ক্যাপ্টেনসহ ব্যাটসম্যানদের প্রত্যেককে আক্ষরিক অর্থে পাছায় লাথি মারা দরকার ছিলো। সেটা করা হয় নি, সেটা করা হয় না বলেই তারা আকাম চালিয়ে যায়। আমাদের গোলডফিশ মেমোরি এমনি এমনিতে হয় নাই। এই যে এখন ধুয়া চলছে, যা-ই খেলুক টীমকে সাপোর্ট করতে হবে! আহ! কী চমৎকার সুগারকোটিং দিয়ে সায়ানাইড ট্যাবলেটের পরিবেশন! সাপোর্ট মাই অ্যাস। সমর্থক হিসেবে খেলার দায়িত্বটা ঠিকমতো পালন করতে পারলে যেমন মাথায় তুলে নাঁচতে পারি, দায়িত্বটা পালন না করতে পারলে ধোলাই দেয়ার অধিকারটাও আমার আছে।

প্রফেশনাল ওয়ার্ল্ডে এরকম প্রিয়জন-প্রিয়জন খেলা চলে না। এই প্রিয়জনের আদর দেয়াতেই আমাদের ব্যাটসম্যানগুলা অতিআদরে নষ্টপুত্র হয়ে গেছে। দলে একমাত্র কম্পিটিশন দেখা যায় গ্রুপিংয়ের, খেলার উন্নয়নে কোনো কম্পিটিশন নাই। আমাদের প্রিয়জন আশরাফুল আন্ডার টুয়েন্টির ধারাবাহিক হাফ সেঞ্চুরি করার পরেও তাকে সাপোর্ট করতে হবে আর আফগানিস্তানের সাথে মান বাঁচানো ছেলেটা সৎপুত্র! এইরকম অপেশাদার নিজের পোঁদে বাঁশ দেয়া নীতির কারণেই এই অবস্থা। আবেগ ভালো জিনিস; কিন্তু আবেগের ব্যবসায়ের কাস্টোমার হয়ে গেলে প্রমলেমো, বিইগ প্রবলেমো।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

সেটা করা হয় নি, সেটা করা হয় না বলেই তারা আকাম চালিয়ে যায়। আমাদের গোলডফিশ মেমোরি এমনি এমনিতে হয় নাই। এই যে এখন ধুয়া চলছে, যা-ই খেলুক টীমকে সাপোর্ট করতে হবে! আহ! কী চমৎকার সুগারকোটিং দিয়ে সায়ানাইড ট্যাবলেটের পরিবেশন! সাপোর্ট মাই অ্যাস। সমর্থক হিসেবে খেলার দায়িত্বটা ঠিকমতো পালন করতে পারলে যেমন মাথায় তুলে নাঁচতে পারি, দায়িত্বটা পালন না করতে পারলে ধোলাই দেয়ার অধিকারটাও আমার আছে।

বলাইদার মন্তব্যগুলোতে লাইকানোর জন্যে মন্তব্যে লাইক অপশন ফিরায়ে দেবার দাবি জানাই! (শুধু আমাকে দিলেও চলবে)!

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

হা হা হা। আমার মন্তব্যে ডিসলাইক বাটনও থাকা দরকার। হাসি

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

একজন পাঠক এর ছবি

লাইক বাটন ফেরতের তীব্র দাবী জানাই!!

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

সমর্থক আমি, প্রফেশনাল না। মাঠে নেমে ক্রিকেট খেলি না। আমার কাছে দলের খেলোয়াড়েরা প্রিয়ই থাকবে। দুইজন ক্যাচ মিস করে ম্যাচ হারলে গালি দেবো, কিন্তু দলের এগারোজনেই যদি ক্যাচ মিস করে- তাহলে দৈবকেই দুষবো।

আয়ারল্যান্ডের সাথে জয়ে যদি তাদের লাথি মারার কথা চেপে রাখি, তাহলে ৯ উইকেটের পরাজয়েও লাথি মারার কথাটা চেপে যাওয়া উচিৎ। গ্রুপিং এর কথা আলোয় আনার জন্যেও ওয়ানডে ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে দিনটা মনে হয় বেছে নেয়া ঠিক না। এটা পাপীস্তান ক্রিকেটের অঙ্গ হয়ে গেছে। আমাদের ক্রিকেটেও এই রাজনীতি আসুক- চাই না।

সুগারকোট করতে চাইনি। লেখার দূর্বলতায় সুগারকোটিং ভাব প্রকাশ পেলে দুঃখপ্রকাশ করি।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

সমর্থক আমি, প্রফেশনাল না। মাঠে নেমে ক্রিকেট খেলি না। আমার কাছে দলের খেলোয়াড়েরা প্রিয়ই থাকবে।

খেলোয়াড়রা দর্শক-সমর্থকদের জন্য খেলে। দর্শক-সমর্থককে স্যাটিসফাই করতে পারলে হাততালি পাবে, না করতে পারলে গালি, সোজা হিসাব।

দুইজন ক্যাচ মিস করে ম্যাচ হারলে গালি দেবো, কিন্তু দলের এগারোজনেই যদি ক্যাচ মিস করে- তাহলে দৈবকেই দুষবো

এ তো আল্লার মাল আল্লায় নিয়ে যাওয়ার মতো হলো। উইকেট থ্রো করা আর ললিপপ ক্যাচ একের পর এক ছেড়ে দেয়ার সাথে দৈবের কি সম্পর্ক? এগুলো যদই দৈবের হাতে ছেড়ে দিতে হয়, তাহলে বিসিবিরও দরকার নাই, কোচ-ম্যানেজমেন্টেরও দরকার নাই। ১১ জন যদু-মধুকে মাঠে নামিয়ে দিলেই হয়। বাকিটা দৈবের উপর।

আয়ারল্যান্ডের সাথে জয়ে যদি তাদের লাথি মারার কথা চেপে রাখি, তাহলে ৯ উইকেটের পরাজয়েও লাথি মারার কথাটা চেপে যাওয়া উচিৎ।

বুঝলাম না। একই ফর্মূলা কি সামনের ম্যাচগুলোতেও অ্যাপলাই করতে হবে?

গ্রুপিং এর কথা আলোয় আনার জন্যেও ওয়ানডে ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে দিনটা মনে হয় বেছে নেয়া ঠিক না।

হ্যাঁ, বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসের গত ৩ দিনের মধ্যে এই দিনটা সবচেয়ে বাজে নিঃসন্দেহে। তবে সব ওয়ানডে মিলালে এরকম বাজে দিনের হাফ সেঞ্চুরি হয়ে যাবে। আমাদের ২০০৭ এর 'সফল' বিশ্বকাপ থেকেই উদাহরণ দেই:

শ্রীলংকার ৩১৮/৪ এর জবাবে ১১২ অলআউট
বারমুদার ৯৫ রানের টার্গেট তাড়া করতে পা কাঁপাকাপি, মুকুদ্দেম ১০ ওভার করতে পারলে আন্ডার ১০০ অলআউট হওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিলো
২২ ওভারের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার সাথে ১০৪/৬
নিউজিল্যান্ডের সাথে ১৭৪ অলআউট
আয়ারল্যান্ডের সাথে ১৬৯ অলআউট
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১৩১ অলআউট

এই উদাহরণগুলো এজন্য তুলে ধরলাম যে, এই ব্যর্থতাগুলোর ঠিকমতো কারণ অনুসন্ধান করা হয় নাই। ইন্ডিয়া আর সাউথ আফ্রিকার সাথে ২ ম্যাচ জিতে এই ভরাডুবিগুলো চোখের আড়ালে থেকে গেছে। সমর্থন মানে অন্ধ সমর্থন নয়। সমস্যা থাকলে সেটাকে ফেস করতে হবে, সমাধান খুঁজতে হবে, দৈবের ওপর চাপিয়ে দিয়ে ফলাফল ভালো হয় না।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

সর্বদা দৈবের উপর ভার চাপিয়ে দেয়ার কথা বলছি না বলাই'দা। খেলা মোটামুটি নিয়মিতই দেখি, কতটুকু সামর্থ্য আমাদের দলের- সেটাও অজানা নয়। এ দলের দূর্বলতার বিশ্লেষণ হিসেব করতে এমন দু'দশ পোস্টে কুলোবে না, সেটাও জানি। নিয়মিত খেলা দেখার অভিজ্ঞতা থেকেই আমি নিশ্চিত যে ঠিক ৫৮ রানের স্ট্যান্ডার্ডে আজকের বাংলাদেশ নেই। ২০০৭'এর বাংলাদেশের গড় ছিলো ঐ ১৮০ এর ঘরে। এখন গড় রান ২০০-২১০।

আমি বলতে চাইছি, অন্ততঃ আগামী তিনটা ম্যাচে সর্বোচ্চ ভালো ফলাফল আশা করতে হলে আজকের মতো তীক্ষ্ণ সমালোচনা না করাই ভালো। তিনম্যাচ পরেই নাহয় করলেন।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

সুহান,

আর ৩ ম্যাচ পরে খেলোয়াড়রা কোথায় থাকবে জানি না, তবে জেমি সিডন্সরা ভ্যাকেশনে থাকবে। সমালোচনা শোনার জন্য কেউ বসে থাকবে না। হাসি

৩ ম্যাচের জন্য বেশি দুশ্চিন্তার কিছু নাই। নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে অনায়াসে জিতবো, বাকি ২টা হারবো। গ্রুপে ৫ নম্বর হওয়াকে সাফল্য হিসেবে দেখা হবে। "গত বিশ্বকাপে ইন্ডিয়ার মতো শক্তিশালী দল প্রথম রাউন্ডে বিদায় নিতে পারলে আমরা কেন পারবো না?" অন্যের ব্যর্থতার উদাহরণই আমাদের এস্কেপ রুট, অন্যের সফলতার উদাহরণ কখনো নয়।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

রেশনুভা এর ছবি

৫ নম্বর হওয়াটাও নিশ্চিত নয়।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

পাশে আছি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অতিথি লেখক এর ছবি

Khub kosto pailam

অতিথি লেখক এর ছবি

এটা দলের আসল অবস্থা হতেও পারে। আগের দু ম্যাচে তামিম ছিল টপ স্কোরার, তার স্টার্টিং দলকে কিছুটা উতরে দিয়েছে। আজ সে ডাব্বা মারায় যদি এমন ত্রাহি মধুসূদন অবস্থা হয়, তাহলে হল্যান্ডের বিরুদ্ধেও কপালে খারাবি আছে।

বাংলাদেশের খেলাগুলো ছাড়া অনেকদিনই নিয়মিত ক্রিকেট দেখা হয়না, তবুও মনে একটা প্রশ্ন জেগেছে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের চর্চা করানোর জন্য কি কৃত্রিম বোলিং ম্যাশিন নেই? জেনুইন ফাস্ট বোলিংয়ের বিরুদ্ধে আমাদের আসলেই সমস্যা আছে। সাউদি-বেনেট-ওরাম আর কিমার রোচ এক জিনিস না। আমার মনে হয় ঘরের মাঠে রুবেল-সফিউলদের খেলে মানুষ হওয়া এই ব্যাটসম্যানগুলো ১৪৫ কি.মি/ঘন্টা ঊর্ধ্ব ডেলিভারিগুলো ঠিকমত চোখেই দেখে না। একটা গ্রাসি কন্ডিশনে জনসনকে স্টকে রেখে টেইট আর লি কে ক্রিজের দুপ্রান্ত থেকে লেলিয়ে দিলে এদের অবস্থা আরো খারাপ হবে। ওদেরকে চাকিং করা বল প্র্যাকটিস করানো উচিত। তা না হলে হাজার পাশে থেকেও কোন কাজ হবে না।

ধৈবত

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

বলাইদার কথাই আমারও কথা। সাপোর্ট মাই অ্যাস! এই পারফর্মেন্সের পর তো সুগারকোটিং করার কিছু নাই। বাংলাদেশ ১২০ রানে অলআউট হয় নাই যে "আহারে বাছারা!" বলবো! সাথে আছি, সমর্থন করি, সমর্থন করে যাবো, কিন্তু তাই বলে চূড়ান্ত দায়িত্বহীনতার পরও কেন পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে হবে? তাহলে তো সব দোষী ব্যাক্তিদেরই "আজকে বাজে দিন" বলে আদর করতে হবে!

৫৮ রান? এইটার পর কী বলা আছে আর? পুতুপুতু করা পয়েন্টলেস। আসমানে উঠে বসে আছে শালারা। ধরে ধরে প্রত্যেকটা ভুলের কড়া সমালোচনা করা উচিত। তখন এবং শুধুমাত্র তখন শিখবে কিছু। ঠিক প্রশ্নগুলা করো, সুহান। প্রথম আলো, উৎপল শুভ্র, নভজ্যোৎ সিঁধু, ইত্যাদি ইত্যাদি বাদ দিয়ে এবার বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকেই সমালোচনার সম্মুখীন করার সময় এসেছে। "খারাপ দিন" বড় দলেরও যায়। কিন্তু তারা বড় দল, নিজে থেকে বাউন্স-ব্যাক করে। আমরা সামান্য দল, আমাদের অসামান্য ফলাফল করার জন্য 'অপেক্ষা' এবং 'সমর্থন'-এর চেয়েও বেশি কিছু দরকার।

* কী ...লের হোমওয়ার্কটা করে বাংলাদেশ দল? সিডন্সের কাজ কি শুধু নেট প্র্যাক্টিস করিয়েই শেষ? কেন বাংলাদেশ আন্ধা ঘোড়ার মতো একই পথে চলে প্রতিদিন? আছে দলে দুইটা মাত্র ম্যাচ উইনার... যার একজনের আবার "খুন করার লাইসেন্স" আছে। ফর দ্য লাভ অফ গড, আমি বুঝে পাইতেসি না কেন গত দুইটা ম্যাচে সাকিবকে রকিবুলের আগে নামানো হলো। সাকিব ভালো, সাকিব হাল ধরলে জিতে যাবে, ইত্যাদি বুঝলাম। কিন্তু সাকিব আউট হয়ে গেলে?

* জুনায়েদ সেরা বলে আউট হইসে? রিয়েলি? এক বল আগে ফ্রি-হিটে যেই বলটা খেললো, ঠিক সেই বলে আউট হলো। কয়টা ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার আগে এভাবে শ্যাডো-প্র্যাক্টিস করার সুযোগ পায়?

* বাংলাদেশের প্লেয়ারদের ইয়র্কার ব্লক করা শিখাইসে কোন ছাগলের বাচ্চা কোচ? একটা প্লেয়ারের ব্যাট সোজা ছিলো ইয়র্কার ঠেকানোর সময়? সবাই একটু ঝুঁকে পাতালি করে ব্যাট নামিয়ে মাটির উপর একটা থাবড়া দেয়। অবাক হয়ে চেয়ে চেয়ে দেখলাম প্রত্যেকটা প্লেয়ারের এই "টেকনিক"। এগুলা কেউ দেখে নাই?

* সমর্থন মাই অ্যাস... প্রথম বল থেকে সুইং করতেসে প্রচণ্ড, এর মধ্যে তামিম কী শট খেললো? সাকিবের আউটটা তো পাড়ার ক্রিকেটের জন্যও লজ্জার। রকিবুলের "আলতো পাঞ্চ"-ও আমি খুঁজে পেলাম না খেলায়। প্রায় ওয়াইড হয়ে যাওয়া একটা বল তাড়া করতে গিয়ে ৬ষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসাবে ৫১ রানের মাথায় আউট হয়েছে রকিবুল -- say it as it is. আমরা কমিয়ে বা ঘুরিয়ে বলাটা কাজে আসবে না কখনও।

বাদ দেই... আর না আগাই। সমর্থন সব সময় থাকবে, কিন্তু প্রকৃত সমালোচনা না করলে লাভ নেই। ইংল্যান্ডও আহত সিংহ। ওরা ছেড়ে কথা বলবে না। এই খেলা হেরেছি বলেই আমরা অটোমেটিক পরের খেলা জিতবো না।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

সমালোচনা করার সময় চলে যাচ্ছে না ভাইয়া, আর তিন ম্যাচ পরেই সমালোচনা করার অফুরন্ত সময়। চলন্ত বিশ্বকাপের সময় টস নিয়ে উৎপলের প্রতিবেদন করে ফেলাটা যদি বাড়াবাড়ি হয়; তবে আমাদেরও নিশ্চয়ই বাড়াবাড়ি হচ্ছে মুখের লাগাম ছেড়ে দেয়ায়।

আমার ফোকাসটা এখানেই যে আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ দিনটাই ছিলো আজ।

সাইদ এর ছবি

মানুষ ভুল করে, তাই বলে এক ভুল বার বার কিভাবে করে। ক্রিকেট সেন্স এদের কখনোই পরিবর্তণ হল না। ভাবটা এমণ যে আমি তো এমণ করেই খেলি। ঘরোয়া ক্রিকেটে যারা নিয়মিত ভাল খেলে যাচ্ছে তাদের দিকে ণজর দেয়ার সময় হয়েছে। এই টিমের সবাই তো ভাবে জাতীয় দলে তার অবস্থান পাকা।

জাহামজেদ এর ছবি

পাশে আছি ঠিকই, তবে পরবর্তী ম্যাচে দলে পরিবর্তন প্রয়োজন। শাহরিয়ার নাফিসকে আর মাহমুদুল্লাহকে প্রথম একাদশে নেয়ার সময় এসেছে। রকিবুল ছাগলটা সিডন্সের প্রিয় বলে দিনের পর দিন কি এভাবে জাতীয় দল তার বাপের হোটেল মনে করে খেলে যাবে !!!

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

স্বাধীন এর ছবি

এমন পরাজয়ে হয়েছিলাম বাকরুদ্ধ, কিছু অসভ্যের আচরণে এবার হলাম লজ্জায় অবনত।

পৃথ্বী এর ছবি

আমার দেশপ্রেম কম বলেই মনে হয় বাংলাদেশ জিতলেও খুব একটা পুলকিত হই না। আমি পারফরম্যান্সের কনসিসটেন্সীতে বিশ্বাস করি, বিচ্ছিন্নভাবে একটা-দুইটা ম্যাচে জয় আমার কাছে কোন অর্থ বহন করে না, তা সেটা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হোক অথবা কেনিয়ার বিরুদ্ধে হোক।

তবে আমি বাংলাদেশের এই কুৎসিত হারের জন্য লজ্জিত না, আমি লজ্জিত আমাদের মন-মানসিকতার জন্য। আমাদের সমর্থকরা বাংলাদেশের বাসে পাথর মারলেও আমার লজ্জা বিন্দুমাত্র কম হত না। যা ক্ষতি হওয়ার তা তো হয়েই গিয়েছে, আমি আশা করি "বিউটিফুল বাংলাদেশ" এর মানুষ আগামী দিনগুলোতে নিজেদেরকে বহিঃবিশ্বের কাছে জন্তু-জানোয়ার হিসেবে তুলে ধরবে না।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

সমর্থকদের আচরণে যার পর নাই লজ্জিত, কিন্তু আজকের খেলার জন্য অবশ্যই কঠোর সমালোচনা করতে হবে। এরাই আমাদের আনন্দে ভাসায়া দেয়, মিছিলের উপলক্ষ্য দেয় তাই বলে তারা এরকম চরম অপমান করার অধিকার রাখে না। প্রশংসা নিতে হলে বিপরীতটাও নেওয়ার অভ্যাস থাকতে হবে।
প্রথম দিকে যখন পটাপট উইকেট যাচ্ছিলো, তখন কাউকে অন্তত দায়িত্ব নিয়ে দাঁড়ানো উচিত ছিলো। কিন্তু দায়িত্বহীনতার চরম একটা উদারহণ দেখলাম।

তারা খেলার জন্য লাখ লাখ টাকা পায়, আমরা সমর্থন দেই নিজের গাটের পয়সা আর সময় খরচ কইরা... এই কথাটা তাদের বুঝতে হবে... তারা নিজেরা দায়িত্ববান না হয়ে দর্শক সমর্থকের কাছে দায়িত্ব আশা করতে পারে না। এই সমর্থকেরা যখন কান্ধে তুলে নেয়, মালা পরায়া দেয় তখন তো ঠিকই ভালো লাগে, তাহলে খারাপটা নিবে না কেন? সব ফলাফলেই একই প্রতিক্রিয়া হবে সমর্থকের? সমর্থকেরা কি রোবোট?

পরের ম্যাচে জিতুক, অবশ্যই তাদের জয়ধ্বনি দিবো। অবশ্যই তাদের পাশে আছি। কিন্তু আজকের জঘন্য খেলার অপবাদটুকু তাদের নিতেই হবে মাথা পেতে

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অমিত এর ছবি

এই উপমহাদেশের চারটা দেশে ক্রিকেট শুরু হয় মোটামুটি একই সময়ে। প্রায় দেড়শ বছরের কাছাকাছি হবে হয়ত।
আমরা তো মনে হয় বাকি তিনটা দেশ থেকে প্রায় ১০০ বছর পিছিয়ে আছি মন খারাপ
ক্রিকেটার হওয়া তো একটা প্রফেশন আমি যতদূর বুঝি। এই অবস্থা কেন আমাদের এই প্রফেশনের লোকজনের ?

অতিথি লেখক এর ছবি

গত ২৫ শে মার্চের আলুর সাহিত্য পাতায় হুমায়ূন আহমেদ লিখেছেন উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ও তার বন্ধু-বান্ধব কর্তৃক কিশোরগঞ্জের একগ্রামে প্রথম ক্রিকেট খেলা হয়।উপমহাদেশে সেটাই ছিলো প্রথম।সালটা উনিশ শতকের মাঝামাঝি ছিলো ।

রব

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

তবে তাই বলে ঢিল মারা সমর্থন করি না...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

একজন পাঠক এর ছবি

আমাদের শ্রমিক ব্যাটসম্যান দরকার, 007 মার্কা কাউকে দরকার নাই। "আমি এমনই খেলি, এমন খেলেই রান পাই", "আমি বিগ ম্যাচ প্লেয়ার", "আমি অমুক নাম্বারে নেমে চাপমুক্ত হয়ে খলতে পারব"....এই জাতীয় কথা বার্তা শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা। প্রতিটা খেলার আগে খেলোয়াড়দের মুখ দিয়ে যেসব বাণী বের হয় তাতে মনে হয় শুধু মাঠে নামাটা দরকার আর কিছু না করলেও চলে। ৫ উইকেট পরার পরে রকিবুল আর আশরাফুলের ব্যাটিং এর সময় তারা দুজনে কয়টা বল ব্লক করেছে বা ছেড়ে দিয়েছে। ঐ বিপর্যয়ের মধ্যে তাদের ব্যাটিং দেখে তো মনে হল না তাদের কেউই পিচটা বোঝার চেষ্টা করছে। আজকে আশরাফুলের সামনে সবচেয়ে ভাল সুযোগটা ছিল নিজের সেরা খেলাটা খেলার জন্য। আলু পেপারে তার বয়ফ্রেন্ড (উৎ)পোদ শুভ্র যাতে তার বুমিং ড্রাইভ নিয়ে আলাদা একটা প্যারা লিখতে পারে সেই জন্যই কিনা সে দিল ঘুমাকে !!! ছাগল একটা। নেক্সট টাইম এই ধ্বজ কে দলে রাখলে সাউথ আফ্রিকার বিরুদ্ধে গাটার গার্ড ছাড়া নামানো উচিত।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

৫৮ রানে অলআউট হওয়াটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে যে এক আশরাফুলকে স্কেপগোট করার উপায় নাই, পুরা ব্যাটিং লাইনআপটাই দোষী। আশরাফুল প্রথম রেকলেস শটেই আউট হয়ে গেছে, কিন্তু ঐ অবস্থায় মারতে যাওয়া ছাড়া কিচ্ছু করার ছিলো না। নাঈম আউট হয়ে যাওয়ার পর বাকি ছিলো শুধু শফিউল-রুবেল। ওর জায়গায় থাকলে যে-কেউ ধরে খেলার বদলে মারতে চাইতো। তার আগ পর্যন্ত আশুর খেলা অনেক গোছানো ছিলো। বাউন্ডারিগুলাও খুব ভালো ছিলো।

ব্যাটিং-এর দোষ এই ক্রমে... তামিম (কিছু কি বলার আছে আর?), সাকিব (বিব্রতকর আউট), রকিবুল (ঐ অবস্থায় বাইরের বল তাড়া করা?), জুনায়েদ (বল ভালো ছিলো, কিন্তু এক বল আগেই ঐ বল খেললো), মুশফিক (পরিস্থিতি বিবেচনায় বাজে শট), ইমরুল (নন-শট খেলে আউট), আশরাফুল (মারবিই যদি, ব্যাটে তো লাগা ঠিক মতো)। নাঈম একমাত্র ব্যাটসম্যান যে ভালো বলে আউট হয়েছে।

এক নাঈম বাদে দলের সবাই মোটামুটি দোষী। একজনের ঘাড়ে অহেতুক সব দোষ দেওয়া ঠিক না।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমাদের শ্রমিক ব্যাটসম্যান দরকার

এই কথাটা গত ম্যাচেই মনে হইছিলো। এই ম্যাচে তো সারাক্ষণ এই কথাটা মাথায় হাতুড়ি পেটালো।

রব

অতিথি লেখক এর ছবি

খুবই মন খারাপ... ওঁয়া ওঁয়া ওঁয়া ওঁয়া ওঁয়া ওঁয়া
ভেউ ভেউ করে কান্না করতে ইচছা করছে।।
beautiful bangladesh... school of life... admission going on...
এইসব দেখানোর পর ঢিলাঢিলি করে মান সম্মান টা শেষ...

সজল এর ছবি

দল এইরকম হারায় সামান্য মন খারাপ লাগছিলো, তবু নানা রকম রসিকতা করে উড়িয়ে দিচ্ছিলাম। সামনের ম্যাচগুলোতো আমরা জিতে যেতেই পারি। আর যদি হারিও, তাতেই দুনিয়ার শেষতো হয়ে যায়নি। কিন্তু আজ সকালে সাকিবের বাসায় আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাসে পাথর ছুড়ে মারার ঘটনার খবর পড়ে লজ্জায়, অপমানে মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছা করছে। প্রচন্ড অসহায় লাগছে, জানিনা কোনদিন এই হারানো ইমেজ আর ফিরিয়ে আনা যাবে কিনা!

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

ক্রীড়া এখন একটা প্রফেশন (পেশা)। এর জন্য তাঁরা বেতন পাচ্ছে, ট্রেনিং পাচ্ছে, আমরা সমর্থকরা তাঁদের ভাতার ব্যবস্থা করছি। তবে এর চেয়েও বড় একটা ব্যাপার, এই ১১ জন, যারা মাঠে খেলছে, তাঁরা দেশের অ্যাম্বাসাডর। যে সময়টুকু খেলা হয়, সে সময়টায় এই ১১ জন হচ্ছে পুরো দেশ। এটা একটা বিশাল দায়িত্ব। আমি তাঁদের মাঝে আজকে সেই বিশাল দায়িত্বের জন্যে যে দায়িত্ববোধ, সেটার চরম মাত্রায় অভাব দেখলাম। একজন সমর্থক হিসেবে আমার কথা খুব সহজ, আমি হতাশ- খেলার ধরনে, খেলোয়াড়দের আচরনে।

বাংলাদেশের ক্রীড়া ইতিহাসে আজ কলঙ্কজনক দিন, একটা বিদেশি দল জেনে গেলো, আসোলে উগ্্রপন্থার সাথে কোনো ভিন্নতা নাই। ফাকিস্থান গুলি ছুড়ে, আর আমরা ঢিল ছুড়ি। ছিঃ

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

মানবী-০৩ এর ছবি

Lets say sorry to our guest .

"Some days to remember some days to forget ".Supporter please forget this day , Bangladesh Team please remember the day

অদ্রোহ এর ছবি

এই মুহুর্তে আয়ারল্যান্ডের সাথে কষ্টার্জিত জয়টা মিরাকলই মনে হচ্ছে। ওইদিন ব্যাটিংএ অমার্জনীয় সব ভুল করে ফেলার পরও বোলিং এর বরাতে সাকিবের মুখের হাসিটা মিলিয়ে যায়নি। ম্যাচ শেষে সমর্থকদের বাঁধভাঙ্গা উল্লাস, মিডিয়ার আত্মতৃপ্তির ঢেঁকুর তোলা আর মিথ্যে স্তোকবাক্যে ভুলে এই কয়দিনে এই হাসিটা চওড়া হয়েছে, কিন্তু ভুলগুলো খতিয়ে দেখার অবকাশ কেউ পায়নি। আমরা নিজেদের পুরোদস্তুর পেশাদার বলে দাবি করি, কিন্তু সমর্থক-মিডিয়ার আচরণে প্রভাবিত হয়ে পড়া সেই দাবিকে কিন্তু প্রশ্নের মুখে ঠেলে দেয়। আশরাফুলের উদ্বাহু নৃত্যে ভুলে আমরা ত্রুটিগুলোকে মাইক্রোস্কোপিক দৃষ্টিতে দেখতে ভুলে যাই, আবেগের ভারে আমরা বেসামাল হয়ে পড়ি। নিউজিল্যান্ডের সাথে ক্রমিক জয়ে আময়াদের উল্লাসটা এতটা মাত্রা ছাড়ায়নি, আমরা কিন্তু পা মাটিতেই রাখতে পেরেছিলাম। কিন্তু এই জয়ের পর আমাদের প্রশান্তির স্রোতে গা ভসিয়ে দেওয়া প্রমাণ করে, পেশাদারিত্বের পরিচয় দিতে আমাদের এখনও ঢের দেরি। আজকের এই ভরাডুবির পর যদি দৈবের দোহাই পেড়ে আমরা সবকিছু এড়িয়ে যেতে চাই সেটা হবে পলায়নপর মানসিকতারই নামান্তর। সামনে আরও তিন ম্যাচ বাকি, এখনও দলটালে মেরামত করার মেলা সময় পড়ে আছে। আর কিছু না হোক, আগের দু ম্যাচের দায়িত্বজ্ঞানহীনতাকে যদি ঠিকঠাক ব্যবচ্ছেদ করতে পারি তাহলেও আখেরেও কিছু ফায়দা হয়। সেটা করার মোক্ষম সময় এখনই, আর এজন্য আত্মসমালোচনার চেয়ে উত্তম বটিকা আর কিছু হতে পারেনা। দুর্ঘটনা একদিনই ঘটে, কিন্তু সেটার জন্য যথাযথ সতর্কতা না নিলে সেটা কিন্তু আদপে ঘটনাই হয়ে যায়। আজকের দিনটাকে আমরা দুর্ঘটনা হিসেবেই দেখতে চাই, ঘটনা না।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

হারি-জিতি; বাংলাদেশ দলের সাথে আছি।
পরের খেলায় ভালো খেলবে, ইনশাল্লাহ।

West Indies দলের গাড়িতে ঢিল ছোঁড়া বা, সাকিবের বাড়িতে আক্রমণ করা; কোন ভাবেই সহ্য করা যায় না।
যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

কিছু দর্শকের বাজে আচরণের জন্যে ওয়েস্ট ইণ্ডিজ দলের কাছে আপামর বাংলাদেশীদের তরফ থেকে দুঃখ প্রকাশ করে একটা অনলাইন পিটিশন তৈরি করা হয়েছে, এখানে সাইন করতে হবে

আর ঢাকায় যারা আছেন, তারা বাংলাদেশের টুরিজম সেক্টর রক্ষার্থে, বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখতে কালকে সকালে ঢাকা শেরাটনে অবস্থানরত ওয়েস্ট ইণ্ডিজ দলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বা কালকে সন্ধ্যার অপ্রীতিকর ঘটনার প্রেক্ষিতে দুঃখ প্রকাশ করে ফুল পাঠাতে পারেন, এই ফেসবুক ইভেন্টে বিস্তারিত পাবেন।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সালাউদ্দিন ফেরদৌস এর ছবি

সুহান রিজওয়ান, চলন্ত বিশ্বকাপের সময় টস নিয়ে উৎপলের প্রতিবেদন করে ফেলাটা আসলেই একটু বাড়াবাড়ি হতে পারে, সেটা সময়জ্ঞানের বিচারে, অন্য কোন কারণে নয়...কিন্তু আমি উৎপল শুভ্রের ঐ প্রতিবেদনের সাথে সম্পূর্ণ একমত। আমাদের 'রুপকথার রাজপুত্র' সাকিব-ও যে রক্তমাংসের প্রোডাক্ট, এইটা ভুলে যাওয়ার কোন সুযোগ দেখি না...ঐ দিন টস জিতে যদি আমরা ব্যাটিং নিতাম, আজ বিশ্বকাপের এই মুহূর্তে আমাদের ক্রিকেটের অর্জন-অবস্থান অনেক ভাল হত ব'লে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, টসের পরে ফিল্ডিংয়ে নামার মুহূর্তটিতেই আমরা ভঅরতের সাথে ম্যাচটা থেকে ছিটকে পড়েছি এটা ঐসময়েই মনে হয়েছে, তা সে উৎপল শুভ্র চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিক আর না দিক...

দ্রোহী এর ছবি

কিন্তু উটপোঁদদার কথা মত গতকাল আগে ব্যাটিং নিল, আশুকেও দলে নিল। এখন কী বলবেন?

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

সুপ্রিয় সালাউদ্দিন ফেরদৌস, লেখার মূল বিষয় নিয়ে কোন মতৈক্য বা দ্বিমত পোষণ না করে আপনার মন্তব্যে আপনি অপ্রাসঙ্গিক গৌণ বিষয়টি কেন আলোচনায় আনলেন- বুঝলাম না।

ভারতের সাথে টসের সিদ্ধান্তেই আমরা ম্যাচ হেরেছি- কথাটি দৃঢ় করে বলায় অবাক হলাম। টসে ব্যাটিং নিলেই আমরা ম্যাচে থাকতাম, আপনি নিশ্চিত ?? প্রাসঙ্গিক এই লেখাটি পড়ে দেখুন দয়া করে।

প্রসঙ্গত জানাই, উৎপল শুভ্র আমার অত্যন্ত পছন্দের ক্রীড়ালেখক। খেলা নিয়ে তার প্রকাশিত বইগুলোর প্রায় সবকটাই আমার সংগ্রহে রয়েছে।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

শোধ নিলাম চোখ টিপি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।