আয় তোর মুণ্ডুটা দেখি কালাইডোস্কোপ দিয়ে ০৪

সুজন চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন সুজন চৌধুরী (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৩/০২/২০১১ - ১:১৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গোয়েন্দা ঝাকানাকা কমিকের আঁকার কাজ শেষ। রঙের কাজ শেষ পর্যায়ে। গত কয়েকদিন ধরে রং করতে করতে করতে করতে করতে করতে করতে করতে করতে করতে করতে করতে ... এত রংবাজির পর কি আর পোস্ট লেখা যায়?

আজকে আর একটা মুণ্ডু না, কয়েকটা দেখাতে চাই। কমিক বইয়ের লেআউট আর টুকিটাকি নিয়ে কিছু কথা বলি।

ঝাকানাকা নিয়ে আমাদের প্রাথমিক ভাবনায় ফ্রাঙ্কো-বেলজিয়ান কমিকের কাঠামোর প্রভাব অস্বীকার করা যাবে না। আ্যানিমেশন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের সূত্রে আমাকে এই ঘরানার ওপর কাজ করতে হয়েছে অনেক। তাই সেই চার সারির প্যানেলবিন্যাসটাকেই আমরা বেছে নিয়েছি। এতে করে পৃষ্ঠাগুলোতে ছবি একটু ঠাসাঠাসি হলেও বৈচিত্র্যের সুযোগ বেড়ে যায় অনেক। কমিকের গল্পের গতি, আর কমিক স্পেসে চরিত্রগুলোর সরণ নিয়ন্ত্রণ করে পাঠককে পরের পাতার প্রতি আগ্রহী করে তোলার জন্যেও চার সারির প্যানেলবিন্যাস অনেক কাজে দেয়। তবে আরো কম প্যানেল নিয়ে আরেকটা কমিক সিরিজের কথা ভেবে রেখেছি আমরা, সেটা নিয়ে পরে কোনো এক সময় কথা বলা যাবে।

রঙের ব্যাপারটা নিয়ে এত কিছু বলার আছে, যে এক পোস্টে তা নিয়ে কথা বলা অর্থহীন। তবে এবার সময় সঙ্কটের কারণে আমরা এক টোনে কাজ করেছি বেশিরভাগ সময়। দুই মাস সময় নিয়ে নেমেছিলাম, জীবনের নানা ফেরে পড়ে আড়াই মাস লেগে গেলো শেষ করতে। এই কমিকের কাজটা করতে গিয়ে পুরো কাজের ডাইমেনশন নিয়ে আমাদের একটা পরিষ্কার ধারণা হয়েছে, আর এই চাপটা মোকাবেলা করতে গিয়ে বেশ ইউনিক কিছু কৌশলও আমরা কাজে লাগিয়েছি। পাঠকের কৌতূহল সবটুকু এখানেই মেটাতে চাই না।

কমিকের গল্প হিসেবে আমরা আপাতত দেশীয় পরিবেশটাই বেছে নিচ্ছি। গোটা দুনিয়া চষে বেড়ানোর আগে ঝাকানাকার উচিত অন্তত নিজের দেশটা একটু ভালো করে এক্সপ্লোর করা। এ কারণেই কমিক সিরিজের সূত্রপাত একেবারে ঢাকা শহরে, জাদুঘরে। আমরা এরপর ঝাকানাকাকে নিয়ে যাবো বঙ্গোপসাগরের নিরিবিলি দ্বীপে, সুন্দরবনের জঙ্গলে, বান্দরবানের পাহাড়ে, সুনামগঞ্জের হাওরে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের বনে, কীর্তনখোলার ওপর বজরায়, শ্রীমঙ্গলের চা বাগানে। তারপর নাহয় ঝাকানাকা রয়েসয়ে এভারেস্টে চড়বে, স্পেস স্টেশনে বদরু খাঁর বিটকেলপনা মোকাবেলা করবে, মঙ্গলগ্রহে যাবে কোনো রহস্যের সমাধান করতে, দক্ষিণ মেরুতে কিংবা কালাহারি মরুভূমিতে বদরুর নতুন কোনো ভীষণ বদখদ পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে নামবে।

আজ একটা ছোটো কিছুমিছু আপনাদের জন্যে, ঝাকানাকার বইয়ের একটা পৃষ্ঠা। স্টলে বই এলে বাকি তথ্য জানিয়ে দিয়ে যাবো।

দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুমমমমমমমমমমমমমম!

Page 24

বিস্তারিত জানতে চাইলে দেখুন ঝাকানাকার ওয়েবসাইট


মন্তব্য

কৌস্তুভ এর ছবি

ম্মুয়াহ!

আমরা এরপর ঝাকানাকাকে নিয়ে যাবো বঙ্গোপসাগরের নিরিবিলি দ্বীপে, সুন্দরবনের জঙ্গলে, বান্দরবানের পাহাড়ে, সুনামগঞ্জের হাওরে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের বনে, কীর্তনখোলার ওপর বজরায়, শ্রীমঙ্গলের চা বাগানে।

এটার জন্য ভীষণ ভীষণ ভীষণভাবে অপেক্ষা করে থাকব...

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

চাল্লু। আশায় রইলাম।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি ছোটকাল থেকেই কমিকসের মারদাঙ্গা ফ্যান। আর পুরোদস্তুর বাংলাদেশী কমিকস....ঝাকানাকাকে হাতে পাইতে তর সইতেছে না, জলদি ছাড়েন।

ধৈবত

অতিথি লেখক এর ছবি

খুবই সুন্দর। পড়ার অপেক্ষায় আছি। আপনাদের টীমকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত ভাল একটা কাজের জন্য। কিন্তু একটা প্রশ্ন, প্রভাবশালী মহল বস্তা খুলে আটকিয়ে যদি ধূলো ছিটিয়ে যায়, তাহলে? এই ক্ষেত্রে ধূলোর কোয়ালিটি টেস্টিঙের ব্যবস্থা আছে তো? অবশ্য টেস্ট করার কি দরকার, ঝাকানাকা নিশ্চই দেখেই বলতে পারবে, কোন ধূলা কোথা থেকে আসছে। আবার ধন্যবাদ জানাই।
-রু

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

অসাধারন টিজার!!! চলুক চলুক

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ঝাকানাকার জন্য শুভকামনা
শুভকামনা কালাইডোস্কোপের জন্য

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

অসামান্য রকম পছন্দ হয়েছে ঝাকানাকা। লেগে থাকুন, সুজন্দা। বাংলার টিনটিন এলো বলে। হাসি

তাসনীম এর ছবি

দুর্দান্ত।

টিনটিন (বেলজিয়ানরা মনে হয় বলে তানতা) পড়তাম নিয়মিত, সেই ছাপের কথা আপনি পোস্টেও বলেছেন। আপনি না বল্লেও কমিকসের প্রথম ছবিটা দেখেই টিনটিনের কথা মনে পড়েছে। আশা করব ঝাকানাকা একদিন সেই উচ্চতায় উঠে যাবে।

ঠিক কত তারিখে আসছে ঝাকানাকা? একজন ঢাকা থেকে আসছেন, তার মাধ্যমে আনাতে চেষ্টা করব।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অমিত এর ছবি

অনেক আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি এটার জন্য।

অবাঞ্ছিত এর ছবি

চলুক

বেস্ট অব লাক হাসি

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

ঝাকানাকা বাংলা কমিকস সিরিজের জন্য শুভ কামনা রইল ।

--------------------------------------------
আমার চারপাশ ডট কম

ধুসর গোধূলি এর ছবি

কালকে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কালাইডোস্কোপে এই নজরানা দেখলাম। তারপর ঘুমের মধ্যে পরের পাতাগুলোও পড়লাম, খোয়াবে। কয়েক পাতা পড়তে পড়তেই ঘুম গেলো ভেঙে। মনটাই খারাপ হয়ে গেছিলো। চোখ খুলে কতোক্ষণ গালাগালি করলাম, কারে তা জানি না! তারপরেও করলাম আরকি! অবশেষে আবার ঘুমায়ে গেলাম। কিন্তু বাকি পাতাগুলো আর পড়ার সৌভাগ্য হলো না। সেজন্য বইমেলাই ভরসা।

কালাকালাকুতুবিহি'র সবাইরে ব্যাপক অভিনন্দন।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ডি লা গ্রান্ডি মেফিস্টোফিলিস!
ইয়াক্!! ইয়াক্!!!


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আকতার আহমেদ এর ছবি

ব্যাপক আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় আছি
কালাইডোস্কোপের জন্য শুভকামনা!

নিলয় নন্দী এর ছবি

সুজনদা, পরের পর্বগুলোতে হাতে পাচটা করে আঙ্গুল দিয়ে দেবেন মনে করে। অ্যস্টেরিকস বা টিনটিনে দেখবেন পাচটা করে আঙ্গুল থাকে। শুধু মিকি বা ডোনাল্ড জাতীয় প্রানীর ক্ষেত্রে চারটা থাকে।
আমাদের দেশে মানসম্মত কমিকস সিরিজের খুব অভাব রয়েছে। আমি নিজে ৯৪-৯৫ সালে গোয়েন্দা ঝান্ডু নামে একটা 'বকের ঠ্যাং' খাইছে আকতে শুরু করেছিলাম। ৮/৯ টা পর্ব পত্রিকায় প্রকাশের পরে নানা প্রতিকূলতার কারনে সেটা বাদ দিতে হয়।
বইটা কি পাঠসূত্র থেকে আসছে? অপেক্ষায় আছি কিন্তু।

অমিত আহমেদ এর ছবি

গোয়েন্দা ঝান্ডু তো পড়েছি শিশুকালে। সংগ্রহে থাকলে স্ক্যান করে কোথাও তুলে দেন।

নৈষাদ এর ছবি

মারাত্মক একটা সিরিজ হতে যাচ্ছে।

দুর্দান্ত এর ছবি

রং ও ডিটেলিং এ এরযে-উদেরসো চাইতে হানা-বারবারার কথাই বেশী মনে পড়ল। তবুও বেশ সুন্দর।
কিছু কথা। ৫, ৭ ও ৮ নম্বর ফ্রেমে ঝাকানাকা দেখতে একই রকম। এত বড় একটা কাজে টেম্প্লেট/ট্রেসিং তো করতেই হবে। কিন্তু এরকম একদম পাশাপাশি না করলেই মনে হয় আরো বেশী সুন্দর হবে।
'স্পিচ বাবল' (কথাবুদ্বুদ?) এর লেখাগুলোর ফন্ট নিয়ে আরো ভাবা যেতে পারে। শিশুরা চোখা চোখা ছাপার অক্ষরের চাইতে একটু মোলায়েম ছাপার অক্ষরকে বেশী আপন করে দেখে বলেই তো আমার মনে হয়।

অমিত আহমেদ এর ছবি

আমারো হানা-বারবারার কথাই মনে পড়েছে। অপেক্ষায় থাকলাম সুজন্দা।

হিমু এর ছবি

ফন্ট একটা সিরিয়াস ইস্যু বস। ভালো কমিক্যাল বাংলা ফন্ট নাই। যেগুলো ব্যবহার করা হয় সেগুলোর লিজিবিলিটি খারাপ।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

টেক্সটের পরিমাণ তো খুব বেশি না। আর্টিস্টিক হাতের লেখা দিয়ে দেয়া যায় না প্লেটের উপরে? ফণ্ট কি থাকা আবশ্যিক?

হিমু এর ছবি

বেশ টাফ একটা অপশন এটা। আমরা ভেবেছিলাম শুরুতে, কিন্তু কার্যকর করা যায়নি এবার। তবে টেক্সট ইস্যু নিয়ে আমরা পরিবর্তনে আগ্রহী। সবচেয়ে ভালো হতো যদি একটা হাতে লেখা ফন্ট তৈরি করা যেতো।

নিলয় নন্দী এর ছবি

৫, ৭ ও ৮ নম্বর ফ্রেমে ঝাকানাকা দেখতে একই রকম। এত বড় একটা কাজে টেম্প্লেট/ট্রেসিং তো করতেই হবে। কিন্তু এরকম একদম পাশাপাশি না করলেই মনে হয় আরো বেশী সুন্দর হবে।

আমিও এটা বলতে চেয়েছিলাম। কম্পিউটারে কাজ করলে শিল্পীদের মধ্যে সময় ও শ্রম বাচানোর তাগিদটা প্রকট হয়ে ওঠে। সুজনদা এই দিকে একটু মনোযোগী হলে ভালো লাগবে।

অতিথি লেখক এর ছবি

সেইরকম হইছে!!!

শীঘ্রই পাবার আশায় রইলাম।

_____________________

মেঘদুত

রানা মেহের এর ছবি

জোরদার একটা কমিকস এর অপেক্ষায় আছি

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

নিবিড় এর ছবি
সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

শুধু এই পাতাটা আলাদা প্রিন্ট করে লিফলেট হিসেবে ছেড়ে দেন... কাজে দিবে

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তিথীডোর এর ছবি

ঝাকানাকার জন্য শুভকামনা!! হাততালি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।