এখন দুঃসময়! এখনই আসল সময়!

স্বপ্নহারা এর ছবি
লিখেছেন স্বপ্নহারা (তারিখ: শনি, ০৫/০৩/২০১১ - ৫:০৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গতকাল আমরা খুব লজ্জাজনক ভাবে হেরে গেছি। আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারার কথা বলছি না, আমরা হেরেছি স্পোর্টসম্যানশিপের কাছে, আমরা হেরেছি শুভবুদ্ধির কাছে, আমরা হেরে গেছি সারা পৃথিবীর কাছে! আমরা জাতি হিসেবে অসম্ভব অতিথিপরায়ণ বলে পৃথিবীতে সুনাম ছিল, সব সুনাম ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। মাথা নিচু করে আমাদের নিজেদের ধিক্কার জানানো আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ও সারা পৃথিবীর কাছে করজোড়ে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর কিছু করার নেই। আমরা দুঃখিত, আন্তরিকভাবেই দুঃখিত!

প্রিয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আমরা ক্ষমা চাইছি...

।এক। ।দুই। ।তিন। ।চার। ।পাঁচ।

ছোটবেলা থেকে আমরা বড় হয়েছি ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলটিকে সাপোর্ট করতে করতে; দু-একজন ছিলেন যারা ইন্ডিয়া-অস্ট্রেলিয়া (আমার দেখা) সাপোর্ট করতেন, তা-ও '৮৩ এর বিশ্বকাপের পরে! '৯২ এর বিশ্বকাপে পাকিস্তান জেতার পর দেশে পাকিস্তান সাপোর্টার জ্যামিতিক হারে বাড়তে শুরু করার আগ পর্যন্ত, ওয়েস্ট ইন্ডিজই ছিল আমাদের বেশিরভাগের প্রিয় দল। সেই দলটি এখন যেকোন কারণেই হোক, একটু খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সেই দলটিকে বিশ্বকাপের গ্রুপ ম্যাচে হারানোর জন্য আমাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা-আশা ছিল সবচেয়ে বেশি। কিন্তু আমরা আজ আমাদের চেয়ে র‍্যাংকিংয়ে নিচে নেমে যাওয়া দলটির কাছে গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে জঘণ্যভাবে হেরে যাওয়ার পরও, বিশ্বকাপের সবচেয়ে কম রানে আউট হয়ে যাওয়ার পরও, সেভাবে লজ্জিত হতে পারছি না- যতটা লজ্জিত হচ্ছি আজকের এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায়।

ক্রিস গেইল ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল, আমরা আপনাদের আমাদের সবটুকু ভালবাসা জানিয়ে বলতে চাইঃ না, আমরা পাকিস্তান নই। আমরা পৃথিবীর সবচেয়ে শান্তিপ্রিয় জাতি, আমরা পৃথিবীর সবচেয়ে অতিথিপরায়ণ জাতি...আমাদের এবারের মত ক্ষমা করুন।

কেন এমন হয়?
--------------------

আমি নিজে ভয়াবহ আবেগপ্রবণ একটা মানুষ, কিন্তু মাঝে মাঝে বাস্তবতা এবং অভিজ্ঞতা আমাকে অতিরিক্ত সাবধানী করে তোলে। তাই খেলা দেখার সময় নিজের অজান্তেই যখন আমার মুখ দিয়ে গালির তুবড়ি ছোটে, নিজের কাছে অচেনা সেই আমি-কে ক্ষমা করে দেই। কিছুটা কুসংস্কারের বশে আমি বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের কানে ধরে মাঠ থেকে তুলে দিতে যাই, গাধা-ভেড়া বলে গালি দেই, আবার খেলায় পজিটিভ কিছু ঘটলে আনন্দে লাফিয়ে উঠি। আমার কাছে এই আবেগটাই খেলার প্রাণ, এই আবেগই খেলাকে বাঁচিয়ে রাখে...চায়ের কাপে, আড্ডায়, ফেসবুকে, চ্যাটরুমের ঝগড়াগুলোই বুঝিয়ে দেয় আমরা খেলাটাকে কতটা ভালবাসি। সবাই চাই বাংলাদেশ দলটা জিতুক...যার যার নিজস্ব পথে আমরা দলটার ভাল চাই। তাই আশরাফুল দ্বন্দ্বে আমরা ঘন্টার পর ঘন্টা জরুরি কাজ ফেলে তর্ক করতে থাকি। এই ব্যাপারগুলোই আমাদের আনন্দে রাখে...বাঁচিয়ে রাখে...কিন্তু সমস্যা হয়ে যায় তখনই যখন আমরা নিজেদের পুরোপুরি হারিয়ে ফেলি, আমাদের প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির মাঝে যখন তৈরি হয় যোজন যোজন ফারাক!

এই বিশ্বকাপের শুরু থেকেই আমরা, বাংলাদেশ দলের সাপোর্টাররা, ঠিক করেছিলাম, যা-ই করুক এই দল, আমরা পাশে থাকব। আমি নিজে এই ধারাটায় যুক্ত হইনি, কারণ আমার মনে হয়েছিল, আমি সেই কথা রাখতে পারব না...আমার ভয় ছিল আমার দলের খেলোয়াড়দের আর সমর্থকদের নিয়েই। আর আমি ব্যক্তিগতভাবে অবদমনের বিপক্ষে (দমন ঠিকাছে, অবদমন নয়!), কারণ আমি দেখেছি, মেয়েদের সামনে সবচেয়ে মুখচোরা লাজুক ছেলেটিকেই সবচেয়ে বেশি পারভার্ট চিন্তা করতে; চার্চ-মসজিদ-মন্দিরের ব্রম্মচারীদেরই সবচেয়ে বেশি উলটাপালটা কাজ করতে। কিন্তু তাই বলে যেকোন কিছুতে বল্গাহীন-লাগামহীন হওয়াও মনুষ্যত্বকে মহত্ব দেয় না। তাই "সবই চলুক, অন্যের ক্ষতি না করে, সহনশীল ভাবে"- এই ছিল আমার মত।

সেকারণে আমি ভারতের সাথে খেলায় বোলিংয়ে খুশি হতে পারিনি, পারিনি পাওয়ার প্লে বা শেষ দশ ওভারের ব্যাটিংয়ে বিন্দুমাত্র উৎসাহী হতে। মনে হয়েছে এই দলটা কেন যেন হোমওয়ার্ক করেনা ঠিক মত! টসে জিতে ব্যাটিং নিলে কী হত সেটা নিয়ে বিতর্ক তোলার চেয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে ওঠা। আমরা অনেক অনেক আনন্দ করলাম ভারতের কাছে বেশ বড় ব্যবধানে হেরে! দ্বিতীয় খেলা আয়ারল্যান্ডের সাথে, সাম্প্রতিক কালে আমরা তাদের সাথে খুব বেশি ভাল করতে পারছিলাম না...কিন্তু দেশের মাটিতে আমরা তাদের থোড়াই কেয়ার করি! 'গোহারা হারাব' এই চিন্তা নিয়ে খেলা শুরু করে কোনরকমে জিতলাম (ধন্যবাদ শফিউল ও তামিম)! কিন্তু সেই খেলায় ভয়াবহভাবে লক্ষ্য করলাম, হোমওয়ার্কের আবারও ভীষণ ভীষণ অভাব...আধুনিককালের ক্রিকেট যতটা মাঠে খেলা হয়, তার চেয়ে বেশি হয় সংবাদ মাধ্যমে-মানসিক শক্তি পরীক্ষায়- সমালোচনায়, আর হয় ল্যাপটপের সফটওয়ারে! প্রত্যেক দল বিপক্ষের প্রত্যেককে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে খেলতে নামে...খেলার মাঠে বেশ কয়েকটা প্ল্যান থাকে, একের পর এক সেগুলো কাজে লাগানো হয়।

যাই হোক, সে ম্যাচ জেতার পর আমাদের আনন্দ বাঁধ হারালো, আমরা ভুলে গেলাম আমরা কী কী ভয়াবহ ভুল করেছি...আনন্দের আতিশয্যে প্রাণও হারাল এক সমর্থক! কিন্তু, আমার মনে হচ্ছিল, এত আনন্দের পর সামান্য বেদনাও অনেক বেশি হয়ে বাজবে (থিওরি অভ রিলেটিভিটি!). আমি মনে করেছিলাম, বিশ্বকাপ আমাদের জন্য একটা মিশন, যাতে আমাদের অনেক কিছু প্রমাণ করতে হবে - অনেক কথার জবাব দিতে হবে। যুদ্ধকালীন সময়ে মিশন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এত্ত ফূর্তি করে কোন বোকা! আশেপাশের সবার ঝাড়িতে, "ব্যাটা তুই বেশি বুঝস, হতাশাবাদী একটা", আমি কেন যেন আরও বেশি হতাশবাদী হয়ে গেলাম। মনে হল এই 'সুগার কোটিং' (বলাইদা, আমিও এভাবেই ভাবছিলাম!), মানুষের এই ফেরেশতা ভাবটা ন্যাচারাল না, আরোপিত জিনিস কতক্ষণ থাকবে? কেন সমর্থনের খাতিরে আমাদের এতগুলো সিরিয়াস ভুলকে ওভারলুক করতে হবে? আয়ারল্যান্ডের সাথে খেলার আত্নঘাতী ভুলগুলো কেন সবাই ভুলে যাচ্ছে? "আত্মঘাতী দেশকে সমর্থন দেয়া দেশপ্রেম না, এটাতো দেশদ্রোহিতারই আরেক নাম!" সাথে তো সবসময়ই থাকব, কিন্তু ভুলতো শুধরাতে হবে...!!

আমাদের দেশের পত্রিকাগুলো (আসলে সব দেশেরই) ব্যবসা ছাড়া আর কিছু বোঝে বলে মনে হয় না। তাই বাস্তবতাকে অগ্রাহ্য করে লেখা হল, আজ আমরাই ফেভারিট! মানুষের মাঝে সবগুলো পত্রিকা তৈরি করল এক বিশাল হাইপ, টিকেটের দাম হল আকাশচুম্বী! জনগণের এই আবেগকে পুঁজি করে লেখা হল শুধুই দিবাস্বপ্নের কথা, জয়ের কথা...সাকিব তাই প্রত্যাশা নামাতে বলে রাখলেন, আজকের ম্যাচ জিততেই হবে এমন নয় কিন্তু! আমরা ভুলে গেলাম, কেউ অতি প্রশংসা করলে আমরা সবসময় নিজেদের আসল অবস্থান ভুলে যাই। সেটাই ঘটল মনে হয়, আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ভীষণ আন্ডার এস্টিমেট করলাম!

স্কুলের এক স্যার বলতেন, "যে সবসময় তোর প্রশংসা করে, সে কোনভাবেই তোর বন্ধু না। কাউকে যদি জীবনে শেষ করে দিতে চাস, তাহলে তাকে সবসময় প্রশংসা করবি"। (স্যার কখনো ১০০ তে ১০০ দিতেন না, ঠিকই কোন খুঁত বের করতেন...উৎসাহ দিতেন ১০০ পাওয়ার জন্য, কিন্তু দিতেন না মন খারাপ. যেকারণে আমরা অনেকেই যারা ক্লাস নাইনে ৬০-৭০ পেতাম উচ্চতর গণিতে, তারা এসএসসিতে একশ পেয়েছিলাম!)

মাঠে খেলা শুরু হল, তামিম আউট হওয়ার সাথে সাথে বুঝে গেলাম...এই দলের অভিধানে হোমওয়ার্ক বলে কিছু নেই! কার বল কীভাবে খেলা হবে তার কোন ধারণা নেই, শুধু তাদের এক্টাই প্ল্যান, যেভাবে হোক তাড়াতাড়ি ২৫০ করতে হবে! একটু উইকেটে থেকে বল বোঝার বা সেট হওয়ার কোন ইচ্ছা কারও মধ্যে দেখা গেল না। আমি নিজে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের বুদ্ধিমত্তায় কখনওই ইমপ্রেসড না, তামিমকেই দেখি শেভাগের মত বলের পর বল ৬ মারার চেষ্টা করতে, ৬ মেরে ৫০ করতে! ব্যাটসম্যানরা বল অনুযায়ী খেলছে এমনটা খুব কমই ঘটে। যখন ঠেকানো শুরু হল ত হলই, আর রান নিব না! স্ট্রাইক রোটেট ব্যাপারটা দেখাই যায়না, হয় তুলে
৬ মারো অথবা ক্রিজে দাঁড়িয়ে থাকো! এই টিমের দলের সবার আরও একটা বড় সমস্যা কেউ কোচের কথার বাইরে গিয়ে ক্যারিয়ার বিপন্ন করতে চায় না! মাঝে মাঝে টিম পলিটিক্সের কথা শোনা যায়, যেকারণে হয়ত জুনায়েদ-ইমরুল-আশরাফুল-রকিবুল ব্যর্থ-ক্রমাগত ব্যর্থ হলেও নাফিসের-নাজমুলের-মাশরাফির সুযোগ আসেনা...

আজ উপরের সুগারটা সরে যেতেই তেতো বাস্তবতা আমাদের পুরোপুরি ধংস করে দেয়। "অতি আশা সর্বনাশা"- ফলশ্রুতিতে আমরা দেখে ফেলি আমাদের ঢেকে রাখা-চাপা দিয়ে রাখা লজ্জাস্থান! কাঁদতে কাদঁতে ভোর ৪টায় যখন ঘুমাতে যাচ্ছি, মনে মনে ভাবছি দুপুরে ঘুম থেকে উঠে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিবঃ "আমরা কতটা অতিথিপরায়ণ! :D" তখনই সেই গোহারা হারার চেয়েও বড় লজ্জার ঘটনা জানতে পেরে মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছা হতে থাকে...মন খারাপ

আমরা ক্ষমাপ্রার্থী হে বিশ্ববাসী!

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যেঃ
-------------------------------

ভাই আপনারা কেন কী করেন আমরা জানিনা, বুঝিও না। কিন্তু দয়া করে আর এরকম হাইপ-এরকম অন্ধত্ব তৈরি করবেন না। আজকের এই ঘটনার দায়ের অনেক অংশই আপনাদের! স্বপ্ন দেখান, কিন্তু সাথে বাস্তবতাটাকেও দেখাতে ভুলবেন না। কাউকে আকাশে তোলার দরকার নেই, পাতালে পোঁতারও মানে নেই। দয়া করে দলটাকে নিজের মত খেলতে দিন, আপনাদের পত্রিকার প্রেসারে যেন দলে পরিবর্তন না আসে...যেমন আপনারা আশরাফুলকে আনার চেষ্টা করেছেন, আপনাদের বিজ্ঞ মতামত যেন দলে সমস্যা-পলিটিক্স না তৈরি করে; দলে পলিটিক্স থাকলে সেটা নিয়ে আপনারা এক্সক্লুসিভ রিপোর্টিং করেন, কিন্তু ভাই হাতে ধরি-পায়ে পড়ি, এখন না। যুদ্ধ শেষে ঘরে ফেরার পর। আমরা চাই দলে যা কিছু হবে, তা দলের ভালোর জন্য হোক, দেশের ভালোর জন্য হোক- কোন ব্যক্তির জন্য না, কারও চাপে পড়ে না। ধন্যবাদ।

খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে
-------------------------

ভাই আপনারা যা খেলেছেন, খেলে ফেলেছেন। এখন থেকে একটু শেখার চেষ্টা করেন। সামনের তিনটা ম্যাচ আমাদের জিতে এনে দেয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করেন। একটু বুদ্ধি-কমন সেন্স কাজে লাগান। চিন্তাভাবনা করে খেলেন, দল নির্বাচন করেন, সবাই মিলে জান লড়িয়ে দেন। মনে রাখবেন, আজ যারা ঢিল মারছেন, কালই তারা আপনাদের আবার মাথায় তুলবেন। অনেক দিন হয়ে গেল আপনারা খেলছেন, অনেক অভিজ্ঞতা...সেগুলো কাজে
লাগান...। আমরা জিততে চাই, তার চেয়েও বেশি চাই যুদ্ধ, চাই "সংশপ্তক, বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী"!

আর দর্শকদের দিকে একটু খেয়াল রাখেন। উনারাই সব। আপনারা খেলার জন্য পয়সা পান, সম্মান পান, বাড়ি-গাড়ি পান। দর্শকরা কিন্তু ৫০০ টাকার টিকেট ১০,০০০ টাকা দিয়ে (অথবা ৬৩ ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে) কিনে, ভোর থেকে লাইন দিয়ে স্টেডিয়ামে ঢুকে খেলা দেখে, আপনাদের উৎসাহ দেয়, রাত ৩ টায় ৫-১০ কিমি হেঁটে বাসায় ফেরে, শুধু একটু ভার্চুয়াল গর্বিত হওয়ার অনুভূতি পাওয়ার আশায়। তাই তারা যদি একটু গালি দেয়, ওইটা তাদের অধিকারঃ "শাসন করা তারই সাজে, সোহাগ করে যে-গো"!

সিডন্স আর সাকিব ভাই, আপনারা একটু আপনাদের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ ত্যাগ করে যেটা সত্যিকারে দলের জন্য ভাল হবে তাই করেন। যদি আশরাফুল ভাল হয়, তাকে খেলান...যদি নাজমুল/নাফিস ভাল হয় তাদের খেলান। শুধু বুদ্ধি করে করেন...হোমওয়ার্ক করেন। নেদারল্যান্ড-ইংল্যান্ড-সাউথ আফ্রিকার সব খেলোয়াড়দের মুখস্থ করে ফেলেন, যেন কেউ পার না পায়।


সমর্থকদের উদ্দেশ্যে
-------------------------

মানুষ সবচেয়ে ভালনারেবল থাকে চূড়ায়, আমরা এখন তলানিতে পড়ে গেছি...এখন আমাদের এই দলকে টেনে তুলতে হবে, বাকি তিনটা ম্যাচ জিততে হবে...আগুন চাই আগুন! রাগ চাই রাগ! সাহস চাই সাহস! এখন অতি সমালোচনা করে বা গালি দিয়ে লাভ নেই। যখন চূড়ায় ছিলাম, আয়ারল্যান্ডের সাথে জয়ের পর আনন্দ করতে ব্যস্ত ছিলাম, তখন ছিল আসল সময় সমালোচনা করার, তখন ছিল ভুল শোধরানোর, সেটা না করাতেই এমনটা হয়েছে - এখন পাশে থাকুন। বাকি তিন ম্যাচ জিতবোই।

অনেকেই দেখি পাকিস্তান-ভারত বা অন্য দলকে সাপোর্ট করেন। তাদের বলি, ভাই, আগে আমাদের কোন দল ছিলনা, গত দশ বছর ধরে আছে। এখন আমাদের আর অন্য কোন দলের খেলা ভাল লাগা, সাপোর্ট করা মানায় না...তা আমাদের দৈন্য প্রকাশ করে। যদি একান্তই আপনার প্রিয় সে দলকে (বিশেষতঃ যদি হয় পাকিস্তান) আপনি সাপোর্ট করা বাদ দিতে না পারেন, আপনি ভাই এইদেশে কেন পড়ে আছেন? যারে সাপোর্ট করেন, তার কাছেই যান...আমাদের ভাই আপনারে রাখার যোগ্যতা নাই। আমরা গরীবের মধ্যে গরীব, ছোটলোকের মধ্যে আরও বেশি ছোটলোক...তবু এইটা আমাদের দেশের দল। বাঁচলে এদের সাথেই, মরলেও এদের সাথেই।

অনেকক্ষণ সিরিয়াস প্যাঁচাল পারলাম, এইবার আসেন একটু নানা দৃষ্টিভঙ্গিতে পোস্টমর্টেম করি!

লজ্জাজনক পরাজয়ের কারণসমূহ
-------------------------------------

১। লে.জে.হু.মু এরশাদঃ "মাঠে সুন্দরী এবং আবেদনময়ী চিয়ার গার্লের ব্যবস্থা থাকলে দলের এই করুণ পরাজয় হতোনা" - কথায় যুক্তি আছে! শীতের দিনে প্লেয়ারদের মাঠে গরম করার ব্যবস্থা রাখা উচিত ছিল।

২। জনৈক অন্ধ জাতীয়তাবাদী সাপোর্টারঃ "সব দোষ হাসিনার, ডিজিটাল বাংলাদেশের ডিজিটাল স্কোরকার্ড। হতে পারে খেলোয়াড়রা সব আওয়ামী আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ বানানোর জন্য উৎসাহী ছিল। শুধু বীর জুনায়েদ আর আশরাফুল রাজি হয় নাই।" - সাবাশ, তগোরে আমার বিপ্লবী সেলাম।

৩। জনৈক ছদ্মছাগুঃ "আজকের খেলার এই হারের জন্য দায়ী হাসিনা, আওয়ামী লীগ, গ্রামীণ ব্যাংক ও ইউনূস! খেলোয়াড়রা এই বিষয়ে ব্যাপক চিন্তায় ছিল, কারও কারও শেয়ারও থাকতে পারে।"-একদম ঠিক কথা। ক্ষমতা বদলালে আশা করি একটা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হবে।

৪। জনৈক প্রাক্তন ক্রিকেটারঃ "এই খেলায় হারার কারণ আমাদের প্লেয়াররা দেশের গ্রাম্যসংস্কৃতি-খেলাধুলা থেকে বিচ্ছিন্ন। আগে ডাঙ্গুলি খেলতে খেলতে আমরা ক্রিকেট খেলা শিখতাম, তাই বেসিকটা স্ট্রং ছিল...প্লেয়াররা আগে ডাঙ্গুলি খেলা শিখে আসুক।"- ডাঙ্গুলি খেলার জন্য অস্ট্রেলিয়া থেকে কোচ নিয়োগ দেয়া হোক।

৫। উৎপল শুভ্রঃ "আশরাফুল আবারও দেশের পরিত্রাতা হিসেবে দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার!" -তার জন্য ১০ রানই সেঞ্চুরি, তাই বলা যায় সে বহুদিন পর আবার দু-দুটি চারের সহায়তায় সেঞ্চুরি করল।

৬। জনৈক ট্যাবলয়েড সাংবাদিকঃ "কাল রাতে বাংলাদেশ দলের খাবারে নাশকতামূলকভাবে ডায়রিয়ার জীবাণু দেয়া হয়েছে, তাই তারা মাঠে গিয়ে পেটের সমস্যা ও অস্বস্তির কারণে প্যাভিলিয়নে ফিরতে উদগ্রীব ছিল।" -তদন্ত চাই, ডায়রিয়ার জীবাণুর ফাঁসি চাই।

৭। জনৈক খেলোয়াড়ঃ "আমরা এভাবেই খেলি। আজকে ঘুম থেকে উঠে 'ধরে দেবানি' ভাবটা টের পাইনি"-উনারা যেন প্রত্যেকদিন 'ধরে দেবানি' ভাবটা টের পান সেই ব্যবস্থা নেয়া হোক।

৮। আশরাফুলঃ "ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছোটখাট টিম, আমাদেরও নিচে...ওদের হারাইয়া কী লাভ! আমরা বড় ম্যাচে-বড় টুর্নামেন্টের খেলোয়াড়।" -ওয়েস্ট ইন্ডিজ আবার উপরে উঠে গেল, নেক্সট টাইম হারানো জায়েজ আছে।

৯। জনৈক অতিথিপরায়ণ বাংলাদেশিঃ "ওয়েস্ট ইন্ডিজরে কিছুদিন আগে হারাইছি ওদের মাটিতে। তাই অতিথি হিসেবে কর্তব্য পালনের জন্য ওদেরকেও আমাদের মাটিতে হারাতে দেয়া উচিত।"- অতিথি নারায়ণ, তাদের মনোরঞ্জন অবশ্যকর্তব্য।

১০। জনৈক পাকিসমর্থক বাংলাদেশিঃ "আমরা পাকিস্তানের মত আনপ্রেডিক্টেবল! আজকে ফেভারিট ছিলাম তাই হারলাম...নেক্সট দিন আন্ডারডগ হিসেবে জিতে যাবো। এভাবেই পাকিস্তানের মত আমরা গ্রেট টিম হতে পারব।"- পাকিস্তান জিন্দাবাদ, আফ্রিদি প্লিজ ম্যারি হিম।

১১। বাংলাদেশি ক্রিকেট বিশেষজ্ঞঃ "ম্যাচ ফিক্সিং হইছে সিউর।" - হ, ঠিক ঠিক! ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্লেয়াররা ঘুষ খাইয়া ভাল খেলছে।

...বাকিগুলান আপনারা বলেন!


মন্তব্য

নাশতারান এর ছবি

উত্তম জাঝা!

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

দারুণ!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তাসনীম এর ছবি

উত্তম জাঝা!

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অপছন্দনীয় এর ছবি

উত্তম জাঝা!

পাকিস্তান জিন্দাবাদ, আফ্রিদি প্লিজ ম্যারি হিম

বাকিগুলো সহ্য করতে পারলেও এইটাতে না হেসে পারলাম না।

সাইদ এর ছবি

মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন মন খারাপ

অঃটঃ আপণি কি মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন?

স্বপ্নহারা এর ছবি

হ্যাঁ ভাই! এসএসসি ৯৭।

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

সাইদ এর ছবি

আমি এস এস সি ৯৬।
প্রভাতি শাখা-D তে

স্বপ্নহারা এর ছবি

আমি প্রভাতী সি-তে ছিলাম!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

আমরা জিততে চাই, তার চেয়েও বেশি চাই যুদ্ধ, চাই "সংশপ্তক, বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী"!

খেলায় হার জিত থাকবেই । ভাল খেলে হারার মধ্যে কোন লজ্জা নেই । তবে, দেশের পতাকাটার দিকে তাকিয়ে জান বাজি রেখে লড়তে হবে, কাঁধে কাঁধ দিয়ে । তারপরে যদি ফলাফল ঘরে না আসে কোন আফসোস থাকবে না ।

আমার মা একটা কথা বলতেন, "যে মাটিতে আছাড় খায়, সেই মাটি ধরেই আবার উঠতে হয়" । বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমকেও এখন তাই করতে হবে । একটা পরাজয় তোমাদের সব অর্জনকে ঢেকে দেয় না । তোমাদের প্রতি সারা দেশের মানুষের ভালবাসাকে মুছে দেয় না । কাজেই মন থেকে সব হতাশা ঝেড়ে ফেলে সবাই মিলে হোম ওয়ার্কের টেবিলে ফিরে আসো, পরিকল্পনা করে দৃঢ়চিত্তে পরের খেলার জন্যে তৈরী হও ।

সমর্থকদেরও একটা কথা মনে রাখতে হবে, ক্রিকেট শেষ বিচারে একটি খেলাই । খেলার মাঠের হার জিত আমাদের জাতীয় মর্যাদার চেয়ে বড় হতে পারে না । সারা বিশ্ব তাকিয়ে দেখছে খরা, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের দেশ বাংলাদেশ বিশ্বকাপ আয়োজন করছে । বিদেশী প্রতিটি দল ও সংগঠকরা আমাদের দেশের অতিথি । তাদের নিরাপত্তা আমাদের সকলের এই মুহুর্তের দায়িত্ব । সেই পবিত্র দায়িত্ববোধ যেন আমরা এক মুহুর্তের জন্যেও ভূলি না । সারা বিশ্বে শান্তিপ্রিয়, অসাম্প্রদায়িক জাতি হিসেবে আমাদের যে গৌরব আছে তা কোন অবস্থাতেই ক্রিকেট মাঠের একটি ফলাফলের উত্তেজনার কাছে কম্প্রোমাইজ না করি ।

সবশেষে সবাইকে স্মরণ করতে বলি, "এই দিন দিন না, আরো দিন আছে..." সেই দিনের প্রত্যাশায় আসুন যার যার অবস্থান থেকে কাজ করি সবাই মিলে ।

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

স্বপ্নহারা এর ছবি

ধন্যবাদ...
কিন্তু আশাবাদী হওয়ার আগে বাস্তবটাও মনে রাখা জরুরি। আশা করি সমর্থকরা তা মনে রাখবে! খেলোয়াড়রাও!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

সবাই একটা না একটা স্কেপগোট খুঁজতে ব্যস্ত। কেউ হোমওয়ার্কের অভাবটা নিয়ে টুঁ শব্দ করে না। এই দিকটাই বুঝে পাই না। এই যুগে যথাযথ হোমওয়ার্ক করে না নামলে শচীনদের জন্যও দিনটা নিরাপদ না। খেলা হারলো, কত রানে হারলো, ইত্যাদি ব্যাপার না। কেন খেলা শুরুর আগেই জিতে যাওয়ার মানসিকতা আমাদের? আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে আমরা অনেক আত্মপ্রসাদে ভুগছিলাম। ওদের ব্যাটিং ব্যর্থতায় তালে-বেতালে জিতে গেছি। একই কাজ করে উইন্ডিজের বিরুদ্ধে পার পাইনি। খেটে খাওয়ার মতো মানসিকতা আমাদের নেই একেবারেই।

স্বপ্নহারা এর ছবি

তুইতো জানিস, আমি কিন্তু বিশ্বকাপের আগে থেকেই "ধরে দেবানি" আর "আমরা এমনই" এই মতবাদের বিপক্ষে। আমি প্রথম থেকেই বলছি, হোম ওয়ার্ক দেখছি না কোন খেলায়। প্ল্যানে কাজ নাও হতে পারে, কিন্তু প্রতি ম্যাচেই যখন প্ল্যানে কাজ হয়না, আর সাকিবকে বলতে শুনি "আমাদের প্ল্যান ছিল, কাজ হয়নি, বলা যাবে না!", তখন সেই প্ল্যানগুলো কী জানতে ইচ্ছে করে। বিপক্ষের প্রত্যেকের দুর্বলতা যেমন জানা থাকতে হবে, তেমনি সেই অনুযায়ী প্র্যাক্টিস ও করতে হবে। "চোর পালানোর পর বুদ্ধি বাড়লে" কী লাভ!

যাই হোক, আমাদের বিশ্বকাপ মোটামুটি শেষ, ক্লিনিক্যালি ডেড...কিন্তু কোমা থেকেও মানুষ ফিরে আসে। দেখতে চাই, এই টিম হোমওয়ার্ক করে-সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে খেলছে! দুই ম্যাচে বিশাল বিশাল ব্যবধানে জয় অথবা বাকি সব ম্যাচেই জয়ে হয়তো সম্ভব, কিন্তু সেটা অসম্ভবই বলবো! তাই আমাদের এখন থেকেই শুরু করা উচিত, ভবিষ্যতে আমরা আমাদের টিমকে কী অবস্থায় দেখতে চাই।

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

একজন পাঠক এর ছবি

ব্যাপারটা অফটপিক হয়ে যায় তবুও না বলে পারছিনা। আমরা যখন জিতি তখনও কি আমাদের ব্যবহার বা জেতার পরে তার বিশ্লেষন ভদ্রতার গন্ডির মধ্যে পরে?

স্বপ্নহারা এর ছবি

জেতার পর আমরা সব ভুলে যাই, কিসের বিশ্লেষণ- কিসের কী..."জিইত্যা গেসি"! সেটা করার চেয়ে আমরা বীরপূজায় বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ি, পুরস্কার-বাড়ি-প্লট-গাড়ি এগুলা চলে আসে, তাই তেমন উন্নতি হয় না...নানা মহান বিশ্লেষণে অভিহিত খেলোয়াড়দের তখন দেবতূল্য করে মিডিয়া প্রকাশ করে...

সেই গঠনমূলক বিশ্লেষণগুলো হলে আমরা এই দশ বছরে আরও বিশগুণ বেশি আগাতে পারতাম...

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

দ্রোহী এর ছবি

মনে রাখতে হবে। জয়-পরাজয় বড় কথা নয়, অংশগ্রহণই বড় কথা।

ভূটান, নামিবিয়া, কানাডা, উজবেকিস্তান ইত্যাদি দেশ নিয়ে আলাদা ওয়ার্ল্ড কাপ আয়োজন না করতে পারলে আমাদের আর জেতা হবে না।

স্বপ্নহারা এর ছবি

হুম! ওই পর্বটা দুই দিন পরে দিমু, একটু ঘা শুকাক! আমরা এখন আর অংশগ্রহণের জন্য খেলি না, সেটা কাজে প্রমাণ করা আশু (আশরাফুল না) প্রয়োজন।

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

সজল এর ছবি

"আফ্রিদি প্লিজ ম্যারি হিম" হো হো হো

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

চমৎকার বিশ্লেষণ, আড়ম্বর ও আবেগ মিলে আত্মশুদ্ধির অভীপ্সাকে গলধঃকরণ করেছে! তবু আশা জেগে থাক।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

লিও হক এর ছবি

দারুণ লিখেছেন।
আপনার এই বিশ্লেষণের ১০ ভাগের এক ভাগও যদি আমাদের ক্রীড়া ফিচার লেখকদের থাকত...
আসলেই, প্রথমদিন ভারতের সাথে হেরে সবার মন খারাপ। এইটা কি করল? আগে ব্যাট নিত। আরেকটু পিটাইতো... ইত্যাদি। আমিও খুব মন খারাপ করে বসে... হঠাৎ খেয়াল হল- ভাই এইটা ছিলো ইন্ডিয়া! যা করছি তা কি অসাধারণ না? আমরা রীতিমতো তাদের 'তাড়া' করেছি। আসলে মিডিয়া জগৎ আমাদের একটা মিথ্যা অহমের পর্যায়ে ঠেলে দিয়েছে। আবেগে চলা আমাদের জাতিগত অভ্যাস বটে, কিন্তু তাই বলে ন্যূনতম যেই বাস্তবতা আমাদের মাঝে ছিলো- এই সব... লেখকরা কিভাবে যেন সেটাকেও নাই করে দিয়েছে। তাই জিতলেও আমরা অসভ্যের মত করি হারলেও তাই।
এই অপসাংবাদিকতা বন্ধ হোক।

স্বপ্নহারা এর ছবি

আসলেই, আমরা সবাই অতি প্রশংসা বা সমালোচনায় নিজেদের অবস্থান ভুলে যাই। এটাই মনে হয় সবচেয়ে খারাপ!

ধন্যবাদ!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

গুল্লি

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

guest writer rajkonya এর ছবি

খুব ভাল লেগেছে।
প্রতিটা লাইন ভাল লেগেছে।

স্বপ্নহারা এর ছবি

ধন্যবাদ!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

নীড় সন্ধানী এর ছবি

উত্তম জাঝা!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

আতিক_রাঢ়ী এর ছবি

খেলয়াড় থেকে নির্বাচক সবাইকে মনে হচ্ছে ঘোরের মধ্যে আছে। আলোক সজ্জা এর জন্য দায়ি। বিশ্বকাপের মত বড় আসরের জন্য দলটা বেশী অনভিজ্ঞ হয়ে গেছে। এই
বিশ্বকাপ শেষ।

পরের বিশ্বকাপের জন্য শুভকামনা রইল।

স্বপ্নহারা এর ছবি

সেটাই...দেখা যায় আদৌ ততদিন পর্যন্ত আমাদের কোন উন্নতি হয় কিনা! নাকি আমাদের গোল্ডফিশের মেমোরি আরেকটা জয়ের পরই সব ভুলিয়ে দেয়!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

উত্তম জাঝা!

একজন পাঠক এর ছবি

সুন্দর লিখা, সুন্দর বিশ্লেষণ। সবই লিখলেন, তবে একটা বাদ পড়ে গেছে...। সরকারী দল কি বলবে সেটাও লিখা উচিত ছিল...

স্বপ্নহারা এর ছবি

সেইটা আপনারা বলেন...দেঁতো হাসি ওইটা ত সবারই জানা! "আগের বিএনপি সরকার ক্রিকেটের উন্নয়নে কিছু করেনি বলেই না আমাদের আজ এমন হার!"

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আপনার লেখাটা খুবই ভালো লাগলো। আমরা আত্মসমালোচনার ধারে কাছেও সেই কিন্তু আমাদের আত্মগরীমা তুঙ্গে। অনেককেই বলতে শুনেছি ওয়েষ্ট ইন্ডিজকে আরেকটা শোচনীয় পরাজয় উপহার দেওয়া হবে ঠিক যেমনটা দেওয়া হয়েছিলো ওদের সাথে সর্বশেষ সিরিজে। ক্রিকেটাররা, উৎপল বাবু, ম্যানেজমেন্ট, সবাই ছিলেন আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে যে ওয়েষ্ট ইন্ডিজকে আরেকটা রাম প্যাদানি দিতে। কিন্তু কার প্যাদানী কে দেয়। এরা সেই দল যারা প্রথম দুটো বিশ্বকাপ নিয়েছিলো, ১৯৯২তে পাকিস্তানের মতো পরাক্রমশালী দলকে ৪৩ রানে গুটিয়ে দিয়েছিলো। অনেকেরই হয়তো মনে পড়বে "বিগ" ফিল সিমন্সের সেই স্পেল ১০-৮-৩-৪।

আত্মানুসন্ধান আমাদের খুবই প্রয়োজন আর হোম ওয়ার্কেরও কোনও বিকল্প নেই। ওয়েষ্ট ইন্ডিজকে একবার সিরিজ ডিফিট দেওয়ার মানে এই না যে সারাজীবন ধরে আমরা ওদেরকে সিরিজ ডিফিট দিয়ে যাবো।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

স্বপ্নহারা এর ছবি

আমি মনে করি, যখন আমরা ভাল অবস্থায় থাকি, তখনই আত্মসমালোচনা-ভুল শোধরানোর শ্রেষ্ঠ সময়! আমরা যে টিমকে হারিয়েছিলাম, সেটা ছিল দ্বিতীয় সারির (প্রায় দ্বিতীয় বিভাগের) টিম, বর্তমান মূল টিমের মাত্র একজন-দুইজন হয়তো সেই টিমে ছিল। ভাঙ্গা অপরিপক্ক নিউজিল্যান্ড-জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে আমাদের অহংকার যে আকাশ্চুম্বী ছিল, পাকিস্তানের সাথে প্র্যাকটিস ম্যাচে গো-হারা হারার পর সেটার বোধোদয় হওয়া উচিত ছিল।
দেখা যাক...

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

প্রত্যাশা এর ছবি

সুন্দর বিশ্লেষণ। অতি প্রশংসা বা সমালোচনা...যথাযথ হোমওয়ার্কের অভাব...ইত্যাদি। দারুণ পোস্টমর্টেম।

স্বপ্নহারা এর ছবি

ধন্যবাদ!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।