পিটিয়ে মারা মেছো বাঘ এবং আমাদের ভবিষ্যৎ

তারেক অণু এর ছবি
লিখেছেন তারেক অণু (তারিখ: বুধ, ২৮/০৩/২০১২ - ৬:০৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গত কদিন ধরে মন বড্ড খারাপ হয়ে আছে, চোখ বুজলেই খবরের কাগজের একটি ছবি বার বার মনের পর্দায় ভেসে উঠছে, একটি লাশ, ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে দড়ি দিয়ে বাঁশের সঙ্গে, মুখ থেঁতলানো, আঘাতের পর আঘাতে দাঁত বিকৃত হয়ে বেরিয়ে পড়েছে, খুব খেয়াল করে দেখলে হয়ত সেখান থেকে টপ টপ ঝরে পড়া রক্তবিন্দুও দেখতে পেতাম।

নিচে উৎসুক জনতা, কৌতূহলী জনতা ভিড় করে লাশটা দেখছে, যেন কল্পলোকের ভয়াবহ দানবকে বধ করেছে বীর গ্রামবাসী, আজ এই আঁধারের জীবকে তাই এমন দিনের আলোতেই আশ মিটিয়ে অবলোকনের পালা। অথচ লাশটি এক দীপ্ত প্রাণীর খানিকটা বড় আকারের এক বুনো বেড়ালের, এর নাম আমরা দিয়েছি মেছোবাঘ।

2012-03-24-19-52-40-4f6e2608db12f-untitled-1

কি চমৎকার একটি প্রাণী, তার সাদা-ধূসর চামড়া যেন হিমালয়ের রাজা তুষার চিতার কথা মনে করিয়ে দেয়, কেন পিটিয়ে হত্যা করা হল প্রাণীটিকে? উত্তর- সে ক্ষমার অযোগ্য এক ভুল করেছিল, মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামির অনেক সময় একটি ভুল ক্ষমা করা হয়, কিন্তু এই প্রাণীটির সেই একটি ভুল ছিল মৃত্যুর দরজায় কেবল কড়া নাড়া নয়, সেই দরজা দিয়ে অন্য ভুবনে পৌঁছে যাওয়া, সে ভুল করে ক্ষুধার জালায় লোকালয়ে মানে মানব বসতির আসে-পাশে চলে এসেছিল!

যে বীরপুরুষেরা বাঘটিকে নিজের রাজ্যে ফিরে যাবার বিন্দুমাত্র সুযোগ না দিয়ে কোণঠাসা করে অন্য জগতে পাঠিয়ে দিল বাঁশের- বল্লমের ক্রমাগত আঘাতে, তারাই আবার ব্যপক উৎসাহে বর্ণনা করছিল আরেকটি বাঘও দেখা গেছে, তারা সেটির প্রতিক্ষায় আছে, মানে সেটিরও পটল তুলতেই হবে, এদের সাথে দেখা হলে !

আরেকটি মেছো বাঘ, মানে তারা কি একটি দম্পতি ছিল? অজানা আশঙ্কায় ঘনীভূত হয়ে উঠে মনের গোপন কোণ, তারমানে কি তাদের বেশ কটি নাদুস-নুদুস বাচ্চা ছিল যারা কোন খোঁড়লের মাঝে মা-বাবার অপেক্ষায় সময় গুনছে, প্রতীক্ষায় রয়েছে পরিচিত উষ্ণ স্পর্শের , খাবারের। যদি তাই হয়, তাহলে কি বাচ্চাগুলো আর আগামী সূর্যের মুখ দেখবে? নাকি জগতের নিষ্ঠুরতম প্রাণীর মানুষের সাথে পরিচয় ঘটবার আগেই তাদের চিরবিদায় নিতে হবে এই পৃথিবী থেকে?

কেন এমনই হয় সবসময়? এই ঘটনাটি এই সপ্তাহেই ঘটল ভোলাতে, বছর দুই আগে ঘটেছিল মানিকগঞ্জে, এর মাঝে, আগে, পরে কত যে ঘটে কেউ কি তার সঠিক সংখ্যা, তথ্য দিতে পারবে? কেউ পারবে না ।

2010-04-06__back02
( ছবি ২টি খবরের কাগজের ওয়েবপেজ থেকে নেওয়া)

২০১০- এর নভেম্বরে খবরের কাগজে দেখলাম বিরল প্রজাতির এক সারসকে সিলেটের সুনামগঞ্জে গুলি করে আহত করে পরে জবাই করা হয়েছে! বিরল প্রজাতি শুনেই বুক কেপে উঠল, দেশে ফোন দিয়ে জানতে পারলাম সারা বিশ্বে মহা বিপন্ন ডেমোজিল সারস ছিল সেটি, যা আজ পর্যন্ত মুক্ত পরিবেশে দেখা হয় নি আমার। সেই বিরল বিহঙ্গটিই উড়ে যাচ্ছিল বাংলার আকাশ দিয়ে, প্রভাবশালীর বন্দুকে টোটা ঠেসে তাকে ভুপাতিত করা হল, তারপর ধর্মমতে জবেহ পর্যন্ত!

অত্যন্ত দুঃখ জনকভাবে তার আগের দিনই একটি শম্বর হরিণ দলছুট হয়ে লোকালয়ে উঁকি দেবার শেষ দুঃসাহসটি করে, তার স্থান হয় রান্নাঘরের পাতিলে।

কেন বুনো প্রাণীদের প্রতি আমাদের এই আক্রোশ? যাকেই দেখ, তাকেই মেরে খেতেই হবে, খাওয়া যাবে না, তাহলে ও নিশ্চয় আমাদের জন্য ক্ষতিকর, মেরে ফেলো- সে সাপ, কুমির, শুশুক, বাঘডাস যাই হোক না কেন।

ছোটবেলায় জেনেছিলাম রক্তচোষা নামের সরীসৃপ অনেক দূর থেকেই মানুষের রক্ত চুষে নিতে পারে, রক্ত চোষার সাথে সাথে তার শরীর হয়ে যায় টকটকে লাল! তাই, তাদের দেখা পেলেই মুখে আঙ্গুল পুরে চুষে ছিবড়ে বানিয়ে ফেলতাম সমানে, যাতে নিজের রক্ত শরীরের বাইরে যেতে না পারে! আর সেই সাথে হাতের কাছে ইট-পাটকেল, লাঠি যায় পাওয়া যায় তাই নিয়ে দলগত আক্রমণ চালানো হত সেই নিরীহ সরীসৃপদের উপরে। মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখাতেও দেখেছি এই কুসংস্কারের বর্ণনা, সেই সাথে অনেক বৃদ্ধের সাথে কথা বলে জেনেছি এমন ভ্রান্ত বিশ্বাস শিখিয়ে দেওয়া হয়েছিল নির্মল শৈশবেই।

যুগের পর যুগ চলে আসা এই ক্ষতিকর বিশ্বাসগুলোর রাজত্বের কারণে খুব কষ্ট পেলেও অবাক হব না যদি এখনকার স্কুলগামী শিশুরা বলে তারা কোন দিন রক্তচোষা নামের বহুবর্ণা গিরগিটিকে রঙ বদলে গাঢ় রক্তবর্ণ হতে দেখেনি, দেখেনি সোনালী গুইসাপ নামের অপূর্ব সুন্দর সরীসৃপকে, পানাপুকুরের পৃষ্ঠ ছুয়ে আলতো চলে যাওয়া জলসাপের কথা তাদের কাছে স্রেফ বইয়ের গল্পই হয়ে গেছে। দুর্ভাগ্য আমাদের। ( উপরের দুই প্যারা কিউবার এক লেখায় লিখেছিলাম পরিবেশ রক্ষা নিয়ে)

স্পষ্ট মনে পড়ে আমাদের প্রাইমারী স্কুলের ড্রেনে একবার একটি সোনাগুই চলে এসেছিল, শুনেছি কিছু ডানপিটে ছাত্র ড্রেনের পাশেই তার বাসাতে পাওয়া ডিম ভেঙ্গে দিয়েছিল, সেই রাগে দেখলাম হুবহু ছোট ড্রাগনের মত দেখতে অপূর্ব রঙিন এই প্রাণীটি ক্রোধে জোরে জোরে শ্বাস নিতে নিতে লালা নিক্ষেপ করছিল অবিরাম, বড়রা বলল- সাবধান, গুইসাপের থু থু শরীরে লাগবে সে জায়গায় পচবেই পচবে, কোণ ডাক্তার ঠেকাতে পারবে না! কি বাজে কথা, এই কারণেই কি মানুষ গুইসাপ দেখলেই মারতে যেত! এখন জানি, গুইসাপের লালাতে কোন বিষাক্ত কিছু নেই, সরাসরি চোখে না লাগলে তা কোন ক্ষতিই করতে পারে না মানুষের। কিন্তু তাহলে কেন বছর কয়েক আগে নওগাঁ জেলার মহাদেবপুরে পথের ধারে পিটিয়ে মারা গুইসাপ পরিবারের লাশের সারি দেখতে হয়েছিল আমাকে!

আরেকদিন এক হলদে বর্ণের সাপ চলে এসেছিল দেয়ালের ফাটলে আশ্রয় নিতে, কার জনে চোখে পড়ল, ব্যস গুজব রটে গেল সাপটির নাকি বিশাল এক ফণা আছে, গোখরা না হয়েই যায় না! পরপারে পাঠাতে দেরী হল না প্রবল প্রতাপশালী সর্পরাজকে।

এই জন্য দায়ী কে? শিক্ষা, ধর্ম, সরকার, জনগণ- কে? নাকি সবাই মিলেই তৈরি হয় এমন বিষাক্ত ভয়ংকর আবহাওয়া! যা বিন্দুমাত্র নিরাপত্তা দেয় না কোন প্রাণীকেই?

এখন অনেকেই বলবেন, ধুর মিয়া, বাংলাদেশে আকছার লঞ্চ ডুবিতে একশ মানুষ মারা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় শত শত মানুষ পৃথিবী মায়া ছেড়ে চলে যায়, আর আপনি এসেছেন বুনো জন্তু নিয়ে কথা বলতে!

হ্যাঁ, এসেছি, আমি তাদের নিয়ে কথা বলতে এসেছি, কারণ এই বিশ্বের তাদের অধিকার আমাদের চেয়ে বিন্দুমাত্র কম নয়! বলিভিয়াতে ইতিমধ্যেই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে, প্রকৃতি এবং মানুষের সম অধিকারের ভিত্তিতে, আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভুটানের সংবিধানে আছে দেশের বনভূমি মোট আয়তনের ৬০ ভাগ হতেই হবে, নামিবিয়া নামের দরিদ্র আফ্রিকান দেশটি নতুন নতুন আইন প্রণয়ন করে সচেষ্ট প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষাতে!

সেই দেশগুলো অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এমন কোন সমৃদ্ধ দেশ নয়, কিন্তু তারা পরিবেশ রক্ষার জন্য সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে পারলে আমরা নিতে পারছি না কেন! এককালে শুনে আসা দেশের শতকরা ১৬ ভাগ বন আজ হয়ে গেছে মনে হয় ৩ ভাগ, তার মধ্যে সুন্দরবনটা কেবল মাত্র বাঘমামাদের জন্য বেঁচে আছে, না হলে কবে চুলার লাকড়ি হয়ে যেত সব সুন্দরী, গরান, গেওয়া।

ধর্ম একটি প্রধান বাঁধা তাও মানি, বিশেষ করে আব্রহামিক ধর্মমতে যেখানে বারবার মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে বলা হয়েছে, জানানো হয়েছে মানুষের ভোগের জন্য সব কিছু সৃষ্টি হয়েছে, কাজেই আমাদের ইচ্ছে উপরেই নির্ভর করতে হবে তাবৎ প্রাণীকুলকে! আবার প্রচলিত ধর্মমতই কিন্তু পরিবেশ রক্ষায় অবদান রেখেছে পাশের ভারত, নেপাল ও ভুটানে। যেহেতু হিন্দু ধর্মমতে অধিকাংশ প্রাণীই দেবতার আসনে অধিষ্ঠিত তাই তারা বেঁচে গেছে খুন হবার হাত থেকে, আর বৌদ্ধ ধর্মমতে তো বলাই হয়েছে- জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক! সেখানে প্রাণী হত্যা নিষিদ্ধ।

কিন্তু ধর্মীয় গোঁড়ামি মুক্ত গণচীনেও তো প্রকৃতির কল্যাণ সাধন হয় নি! ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবার পরেই চেয়ারম্যান মাও সে তুং বললেন- দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি মানুষের কাজে লাগাতে হবে! প্রতি ইঞ্চি জমি কাজে লাগাতে যেয়েই মারা পড়ল কোটি কোটি প্রাণী। তাহলে বোঝা যাচ্ছে, এর পিছনে দরকার এই বিষয়ে স্বচ্ছ জ্ঞান এবং তাকে কাজে লাগাবার প্রেরণা।

ধর্মের চেয়েও মূল বাঁধা জনগণের সচেতনতা, কিউবার একটা শিশুও জানে বাগানের গিরগিটি পোকামাকড় খেয়ে সাফসুতরো রাখে পরিবেশ, আর আমাদের শিশু গিরগিটি দেখলে ভয়ে চিৎকার করে বাবাকে ডাকে না হয় ঢিলের আঘাতে তেরটা বাজিয়ে দেয় সেই সরীসৃপের! আমরা কি করব? কোন পথে যাব? আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কি আদৌ কাক ছাড়া আর কোন বুনো পাখি দেখবে? চিড়িয়াখানার আর টেলিভিশনের সাপ ছাড়া কোন সরীসৃপ, ডলফিন ছাড়া কোন জলজ স্তন্যপায়ী প্রাণী! এখনো জেলেদের জালে শুশুক ধরা পড়লে পিটিয়ে মারা হয়, কুমির তো কবেই গেছে বিলুপ্ত হতে নদী-নালা থেকে, সেই সাথে একসময় বালু চরে আলসে রোদ পোয়ানো নিরীহ মেছো কুমির- ঘড়িয়াল। সেখানে কি আশা করব আমরা?

আমাদের বাড়ীর পেছনে এক মজা পুকুর ছিল, বিশাল এলাকা জুড়ে, সেখান থেকে কুব কুব আওয়াজ পেতাম, মা বলতেন ডাহুক পাখি। একদিন গ্রাম থেকে আসা অতি চাল্লু চাচাতো ভাই ফাঁদ পেতে সেই সাদা-কালো অসাধারণ পাখিটি চাক্ষুষ দেখালেন আমাদের,এই তো বছর কয়েক আগের ঘটনা । আমাদের খুব জানতে ইচ্ছে করে, এখনকার স্কুল পড়ুয়ারা শেষ কবে ডাহুকের ডাক শুনেছে? কিংবা ভোরের দোয়েলের সূর্য ওঠানো গান? নদীর বুকে শঙ্খচিলের উড়াল কি তাদের উতলা করে তোলে না? বর্ষার ব্যাঙের ডাক কি তাদের কাছে জগতের সবচেয়ে সমধুর সঙ্গীত বলে মনে হয় না? নাকি সেই সুযোগ তাদের আমরা পেতে দিই নি!

এক স্কুল বন্ধু খরগোশ পোষার জন্য পাগল ছিল, কিন্তু যেন তেন খরগোশ না, ছাগলের পা খরগোশ! সাধারণত দোকানে যে খরগোশ দেখা যায় সেগুলো কিন্তু বেড়ালের পা খরগোশ। তার আকাঙ্ক্ষিত প্রাণীটি নাকি বড়ই দুর্লভ, পরে আমরা জানতে পারি সেটি আদতে কোন খরগোশই নয়, এতই ছিল বাংলাদেশের ক্ষুদ্রতম হরিণ, যাকে অনেক অঞ্চলেই ফইট্টা বলে ডাকা হত, আজ আর ডাকা হয় না, কারণ এরা হারিয়ে গেছে চিরতরে।

খবরের কাগজে দেখেছিলাম বছর কয় আগে, সুন্দরবনের এক গ্রামে ঝড়ের সময় এক তরুণ দিকভ্রান্ত বাঘ চলে আসে, রান্না ঘরের উষ্ণতার সন্ধান পেয়ে সে চুলার পাশে গুটিসুটি মেরে ঘুমিয়ে পড়েছিল! যখন ঘুম ভাঙল বড় বেড়ালটির সে ততক্ষণে হিংস্র মানুষের ভিড়ে বাঘবন্দী হয়ে গেছে! কোন ক্ষতি করার জন্য নয়, মানুষখেকো হবার অপরাধে নয়, কেবল মাত্র সরল বিশ্বাসে আশ্রয় নেবার কারণেই নির্মম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হল সেই তরুণের। অথচ ঘূর্ণিঝড় সিডরের তান্ডবে যে বাঘটি মারা গিয়েছিল, সেই ঝড়ের মাঝে চোরাশিকারিরা তার গলার ও স্থান বিশেষের চামড়া কেটে নিয়ে যায়!

বাংলাদেশে এককালে গণ্ডার পাওয়া যেত শুনে চোখ কপালে তুলে ছিলাম! থাকত কোথায় তারা, খেত কি সেই বিশাল প্রাণীগুলো? অবাক হয়ে শুনলাম মাত্র শখানেক বছর আগেও যমুনা-ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় নদীর চরে দীঘল ঘাসের বনে মনের সুখে চরে বেড়াত গণ্ডারের পাল, জমিদারের বন্দুক আর আবাসন নষ্টের কারণে যাদের উপস্থিতি আর রূপকথা বলেই ভ্রম হয়।

পরিবেশ রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টিতে শিক্ষা বিস্তারের যেমন বিকল্প নেই, তেমন এটিও খেয়াল রাখতে হবে এটি কোন ধরনের শিক্ষা। সুন্দরবন যেয়ে হরিণের মাংস খাবার জন্য পাগল হয়ে যায় সে শিক্ষিত সম্প্রদায়, তারা আসলে কি শিক্ষায় শিক্ষিত! সুনামগঞ্জের হাওরে বিষ দিয়ে প্রায়ই হাজার হাজার হাঁস মারার খবর আসে, সেই মৃত হাঁসের মাংসের ভোক্তা নিশ্চয়ই খেটে খাওয়া দিন-মজুর নয়, পকেটে কাঁচা পয়সাওয়ালা যুব সম্প্রদায়। কোন প্রাণী রক্ষায় WWF, UNDP সহ নানা সংস্থা থেকে যখন মোটা টাকার প্রজেক্ট আসে তখন দেখেছি অনেক জ্ঞানীগুণীর, বিখ্যাত প্রাণীবিশেষজ্ঞের টাকার লোভের কামড়াকামড়ি, তারা কি আসলেই প্রাণীদের গুরুত্ব বোঝেন? তাদের ভালবাসেন?

দেশের প্রবীণ রাজনীতিবিদ, সাবেক অর্থমন্ত্রী অত্যন্ত শ্রুতিকটু ভাবে বলেছিল, দাওয়াত দিয়ে না আনলে আবার অতিথি কিসের! এই পাখিগুলো শস্য খেয়ে আমাদের দেশের অনেক ক্ষতি করছে! মাননীয় মন্ত্রী ভুলে গেছিলেন, অন্য সব জলাভূমি বাদ দিলেও কেবলমাত্র রামসার সাইট ঘোষিত সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষাতেই প্রতিদিন ২০০০ টন ইউরিয়া সার লাগে, এই পরিমাণ জৈব সার কিন্তু আসে সেই হাঁসগুলোর বিষ্ঠা থেকেই !!

তারা কি জানে, পৃথিবী থেকে একবার কোন প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেলে তাকে আর কোনদিন ফিরিয়ে আনা সম্ভব না? তারা কি এই এই শিক্ষাটুকু পেয়েছে যে প্রাণীজগতের সব প্রাণীই পরস্পরের উপর নির্ভরশীল! আজ কোন প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেলে তার ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া হয় সারা পরিবেশ জুড়েই, যেমন কয়েক শতাব্দী আগে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া মরিশাস দ্বীপের ডোডো পাখির অভাব এখন অত্যন্ত বেশী অনুভূত হচ্ছে, যখন দেখা যাচ্ছে তাদের ছাড়া গাছের বংশ বিস্তার ঘটছে না !

কোন পথে এগোচ্ছি আমরা ? কেমন হবে আমাদের ভবিষ্যতের পৃথিবী ?


মন্তব্য

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

এটা খুব জরুরি লেখা।

একটা জিনিস গ্রামেগঞ্জে অহরহ দেখতে পাওয়া যায়, প্রাণি নির্যাতন। বিশেষত কুকুর। দেখলেই, মারো। শালার শুয়োরেরা অযোগ্য হয়ে জন্মেছে, নীরিহ প্রাণির উপর হম্বিতম্বি করে বীরত্ব দেখায়!

পুথিবী'টা দীর্ঘদিন থেকেই অমানুষের আখড়া হয়ে যাচ্ছে!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তারেক অণু এর ছবি

সত্য! কি আজব মানসিকতা ! কোন কারণ ছাড়াই নিষ্ঠুরতা !

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

এটা কিন্তু একটা মানসিক রোগ। পারসোনালিটি ডিজঅর্ডার!
নিরীহ পশুপাখী নির্যাতনকারীদের ধরে খাঁচায় পুরে রাখা উচিত!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তারেক অণু এর ছবি
অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

পিথিমির সমস্যাটা ধর্তে পারো নাই রতন, পিথিমি 'মানুষের' আখড়া হয়া গেছে মন খারাপ


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

মানুষ যে প্রকৃতির জন্য অযোগ্য একটা প্রাণি সেটা প্রমাণিত হতে চলেছে! এটা হয় যখন একটা প্রজাতি নিজেদেরকে বাকি সবার কর্তা মনে করে! ভাবে যে তারাই সবার উপরে খবরদারি করবে! প্রকৃতির হিসেবে কোনো প্রাণির অন্য কারো উপরে শ্রেষ্ঠত্ব নেই সেটা বুঝতে না পারলে বিনাশ অনিবার্য! হাঁটুবাহিনী যখন মাঝে মধ্যে বন্দুক দেখিয়ে দেশ পথে আনার চেষ্টা করে, মানুষের অবস্থা হয়ে যাচ্ছে সেরকম! হাঁটুবাহিনী যেমন, তেমনি মানুষের ক্ষেত্রেও একটি কথা প্রযোজ্য, পতনের জন্য নির্বোধ হওয়াই যথেষ্ঠ!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তারেক অণু এর ছবি

সত্য করা ভাইডি, মানুষ সম্ভবত নিজেদের অন্যদের সমান মানতে পারে না অন্তর থেকে, সেই থেকেই যত ঝামেলার সুত্রপাত। বিশেষ করে অন্যান্য এপদের মানুষ কেন দীর্ঘকাল ঘৃণা করে এসেছে সেই ইতিহাস পড়ে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম।

অবনীল এর ছবি

"মানুষ সম্ভবত নিজেদের অন্যদের সমান মানতে পারে না অন্তর থেকে, সেই থেকেই যত ঝামেলার সুত্রপাত। বিশেষ করে অন্যান্য এপদের মানুষ কেন দীর্ঘকাল ঘৃণা করে এসেছে" -- রুট অফ অল ইভল।

___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা

তারেক অণু এর ছবি

সত্য, আর একটা কারণ শিশির কাকুর সাথে কথা বলে মনে হল, মানুষ চিরকাল অন্য প্রাণীদের কাছে পীড়িত হয়েই এসেছে, লক্ষ লক্ষ বছর, এগুলো কি আমাদের জিনে ইমপ্রিন্ট হয়ে গেছে ! যে কারণে আজ আমরা সুযোগ পেলেই এর প্রতিশোধ নিই! যদিও এর ব্যতিক্রম আছে কিন্তু হারে অনেক কম।

নৈষাদ এর ছবি

অনার্যের হাইপোথিসিস ভাল লাগল। নিজেই নিজের উপর 'ইম্পোসড সুপিরিওরিটি'।

তারেক অণু এর ছবি

ঠিক।

কল্যাণ এর ছবি

চলুক গুল্লি

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

সুপ্রিয় দেব শান্ত এর ছবি

লেখা পড়ে শরীরে অস্বস্তি হচ্ছে। আমরা সৃষ্টির সেরা জীব নই, আমরাই সবচেয়ে বড় পশু।

তারেক অণু এর ছবি

সৃষ্টির সেরা জীব হবার প্রশ্নই আসে না, এটি তো আমাদের মনগড়া কথা, কিন্তু মানুষের আবার অনেক ভাল দিকও আছে, অদ্ভুত প্রাণী মানুষ।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

মন খারাপ হয়ে গেল।
মন খারাপ

তারেক অণু এর ছবি

এরপরে এমন আর বেশী না ঘটলেই আবার ভাল লাগতে শুরু করবে।

মাহবুব রানা এর ছবি

নিজেদের বাচ্চাকে মাটিতে গড়াগড়ি করতে দেখলেই 'ওহ্ নো' বলে চিত্কার করে উঠি, আশেপাশে কোনো নিড়িহ পোকা, মাকড়সা বা অন্য কোনো প্রানী থাকলে শিশুটিকে দ্রুত সরিয়ে আনি যেন ওগুলো ভয়ংকর কোনো শত্রু। এভাবে, ছোটবেলা থেকেই বাচ্চাদের আমরা একটা মেসেজ দিয়ে দিই যে প্রকৃতির সব বন্য জীবজন্তুই ভয়ংকর এবং আমাদের শত্রু, এদেরকে রাসায়নিক স্প্রে করে হোক, পিটিয়ে হোক মেরে ফেলতে হবে। এক ধরনের প্রতিশোধ প্রবণতা যেন কাজ করে।

উপরের কথাগুলো আমার নয়। মাত্রই ডেভিড সুজুকি'র 'Teaching the Wrong Lessons' নামে একটা প্রবন্ধ পড়ছিলাম। সেখানে তিনি বলছিলেন কিভাবে ছোট্টবেলা থেকেই আমরা প্রকৃতিকে ঘৃনা করতে শিখি, প্রকৃতিকে আমাদের শত্রু ভেবে নিই।

লেখায় চলুক
মানুষকে প্রকৃতির প্রতি সহানুভুতিশীল করে তুলতে না পারলে এগুলো চলতেই থাকবে। জনসচেতনতা প্রয়োজন খুব বেশি। আরো প্রয়োজন এই উপলব্ধির- আমরা নিজেরা প্রকৃতিকে যেভাবে দেখতে শিখে এসেছি, একটি শিশুকে সেভাবে শেখাবো না।

তারেক অণু এর ছবি

খুব গভীর কথা বললেন, ১০০ % সঠিক এবং একমত।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

অনেকদিন ভুল ধারণা নিয়ে ছিলাম। আমরা যখন "মানবিক" শব্দটা বলি, সেটা নিশ্চয়ই কোনো পজিটিভ অর্থে, মায়া-মমতা ইত্যাদির সমাহারে কিছূ একটা।
এখন জানি, মানুষের আচরণকেই আসলে আমরা "মানবিক আচরণ" বলি।
আমাদের এইসব নিষ্ঠুরতাও যথেষ্ট মানবিক!

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

তারেক অণু এর ছবি

মানুষকে যে তাড়না চালিয়ে নিয়ে যায় তার নামই কিন্তু রেপটাইল কমপ্লেক্সিটি ! এটি বিলিয়ন বছরের বিবর্তনের ফসল, আর ধারণা করা হয় আমাদের আদি পুরুষরাও যথেষ্ট নিষ্ঠুরই ছিলেন, কনরাড লোরেঞ্জের ON AGGRESSION বইটা পড়ে দেখতে পারেন।
কিন্তু এখন তো আমাদের এমনটা হবার দরকার নেই! অনেক মানুষই তো প্রাণীদের ভাল করছে, তবে আমরা কেন পারব না !

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

মন খারাপ

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

তারেক অণু এর ছবি
শিশিরকণা এর ছবি

এইটা বাংলাদেশের মানুষের স্বভাবের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। বিপুল উৎসাহে পশু পাখি তো বটেই, মানুষও মেরে ফেলতে আমরা বিরাট ওস্তাদ। ছোটবেলা থেকে আমাদের ঘৃণা করতে যত বেশি শিক্ষা দেয়া হয়, ভালবাসতে কোন শিক্ষাই দেয়া হয় না

মানুষকে শিক্ষিত করে মনমানসিকতা পাল্টাতে যে সময় লাগবে তার মধ্যে সব নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। একমাত্র উপায় জরিমানার ব্যাবস্থা করা। কেউ যদি এমন কোন প্রানীকে মেরে ফেলে তবে সম্পৃক্ত প্রত্যেক ব্যক্তিকে মোটা অঙ্কের (১০০০ টাকা??) জরিমানা দিতে হবে। যদি গ্রাম্য লোকজনের সামর্থ্যের বাইরে হয় তবে তাদের জনপ্রতিনিধিকে মোট জরিমানার পরিমাণ শোধ করতে হবে।

কিন্তু যেই দেশে বড় সাহেব এলে হরিণের মাংস দিয়ে খাওয়ানোর আদেশ দেন সেখানে বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাধবে কে?

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

কুমার এর ছবি

চলুক

তারেক অণু এর ছবি

বলেছেন তো ঠিকই, কিন্তু ব্যবস্থা কিছু নিতেই হবে। অনেক দেশে জরিমানা ব্যাপারটা ভালোই ফল দিয়েছে। ভারতে তো সালমান খানকে গ্রেফতার পর্যন্ত করা হল বিরল হরিণ শিকারের জন্য।

তাপস শর্মা এর ছবি

অণু অনেকে জেনে বুঝেই এই কাজ করে যাচ্ছেন। যাদের আমরা জানেনা বলছি সেই অজাত'রাই একই কাজটা আরও বেশী করে। এইতো সপ্তাহ খানেক আগের কথা আমার এক দূর সম্পর্কের মামি এসে বললেন আজ হরিণের মাংস দিয়ে ভাত খেলাম। আমি জিজ্ঞাসা করলাম- কোথায় পেলে? বলল-বাজারে চোরাভাবে তো প্রায় সময়ই বিক্রি হয়। অবাক হয়নি। হইনি একারণে যে আমিও ছেলেবেলায় হরিণ খেয়েছি, আর এখনো ওরা খাচ্ছে তাতে আর বলার কিই বা আছে। একসময় আমাদের গ্রাম থেকে কুড়ি-ত্রিশ মাইল দূরে ছোট্ট ছড়াগুলিতে ঝাঁকে ঝাঁকে হরিণ নেমে আসত। আর এখন রাজ্যের প্রত্যন্ত জঙ্গলেও হরিণের খোঁজ মেলা দুষ্কর। এগুলি গেলো কোথায়? হা হা , পেটে!! কার? মানুষের!!

বলে শেষ করা যাবেনা, তুমি কি বিশ্বাস করবে আমি যখন স্ট্যান্ডার্ড টু এর ছাত্র একদিন আমাদের স্কুলের বারান্দায় বাঘ চলে এসেছিল। আর এখনকার প্রজন্ম বাঘকে দেখে এক-চিড়িয়াখানায়, দুই-বই এর পাতায়। শেয়াল নামক একটা প্রাণীর হুয়াক্কা-হু ডাক এখন আর গ্রামের বাতাসেও শোনা যায়না। সব সাফ হয়ে যাচ্ছে।

এভাবেই সব শেষ হয়ে ইকো সিস্টেমের বারোটা বেজে যাবে। তাও মন্দের ভালো সরকার আইন করে কিছু অঞ্চলকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এর আওতাও এনে রেখেছেন। কিন্তু সেখানেও চোরের হানা অব্যাহত আছে নিরন্তর। অবাক লাগে উপরে রতন ভাই যে কুকুরের কথা বললেন, সেই কুকুরও আজকাল গণহারে খাওয়া হয়। বাদ নাই, কিছুই বাদ যায়না।

তবে মনে হয় শেষটা হতে আর বেশী সময় বাকি নাই। পাগল করার মতো কথাশুনি মানুষ হাতি পর্যন্ত খায়!! আর কিছু কি খাবারের ম্যানুতে যোগ করার বাকি আছে?

ব্যাস, আর কী, এভাবে শেষ করতে করতে সভ্যতার শ্রেষ্ঠ সভ্যরা একদিন নিজেদের ছিঁড়ে ফুঁড়ে খাবে, নিশ্চিত।

তারেক অণু এর ছবি

কিছু মানুষ চেষ্টা করে যাচ্ছে বিশ্বের নানা প্রান্তে, কিন্তু আমাদের অঞ্চলের অবস্থা ভাবতেই গায়ে কাঁপ উঠে যায়, দাদা ত্রিপুরার অবস্থা নিয়ে একটা পোস্ট দিয়ে ফেল, আমরাও জানি।

রামগরুড় এর ছবি

বাংলাদেশের প্রাইমারি স্কুলের বাচ্চারা গড়গড়িয়ে মুখস্ত বলতে পারে পৃথিবীর সব দেশের রাজধানীর নাম, মুদ্রার নাম, আরো কত কি, কিন্তু "শুয়াপোকা থেকে যে প্রজাপতি হয়" কিংবা "ভিমরুল (ওয়াস্প) কিভাবে মাটির খুপরি বানিয়ে মাকড়সা মেরে তার গায়ের ভিতর ডিম পাড়ে" -- এইসব ঘটনা মনে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসররাও জানেন না, জানার দরকার-ও মনে করা হয় না আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে -- যেইটা জানলে তোমার চাকরি হবে মোটা মাইনের, যেইটা জানলে তুমি বিশাল বিশাল গাড়ী হাঁকাইতে পারবা, কিংবা যেটা জানলে তুমি গ্রীন কার্ড বা পেট্রডলার কামাইতে পারবা, সেইটাই শেখানো হয় শুধু। সুতরাং লাল গিরগিটি দেখে যে ৩০ বছরের বুড়া শিশুরা যে ঢিল মারা শুরু করবে সেটাই কি স্বাভাবিক না?

তারেক অণু এর ছবি

এত কামায়ে লাভ কি! জীবনে তো সুখের দেখা পাবে না, পাবে কেবল লোভ আর অতৃপ্তি।

চারপাশের সুন্দরকে বিস্ময় নিয়ে না দেখলে বেঁচে থাকার সার্থকতা কোথায় !

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

প্রয়োজনীয় একটি লেখা।

তারেক অণু এর ছবি

যাদের জন্য লেখা তাদের কাজে যদি আসত!

তানভীর এর ছবি

চলুক

তারেক অণু এর ছবি
সৌরভ কবীর  এর ছবি

চলুক

তারেক অণু এর ছবি
নামনাই এর ছবি
তারেক অণু এর ছবি

মন খারাপ এটিই হয়ত ছিল বাংলার শেষ চিতাবাঘ !

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ক্রূরতা আর নৃশংসতা কখনওই কাম্য নয়। অ্যান এক্ট অব ক্রুয়েল্টি মাস্ট বি আ পানিশাবল অফেন্স। আর জীববৈচিত্র্য ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির সংরক্ষণ সেতো আমাদের নিজেদের স্বার্থেই করতে হবে। আপনার লেখাটি এ বিষয়ে নিঃসন্দেহে সচেতনতার পথ বাতলাবে।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

তারেক অণু এর ছবি

আশা রাখি, কিন্তু ভরসা কম, তারপরও চেষ্টা করতে হবে আমাদেরই।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

গ্রামেগঞ্জে যে বন্যপ্রাণীগুলো হত্যা করা হয় তার প্রধান কারণ সম্ভবতঃ ভয়। ভয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলে চিতাবাঘ কিংবা গুই সাপের মতো প্রাণীগুলো।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

তারেক অণু এর ছবি

সেগুলো না হয় ভয় পেল, কিন্তু সারস, পেঁচা, শকুন মারার কারণ কি ! সেই সাথে হরিণ !

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

আজকের প্রথম আলোতেই এরকম একটা খবর এসেছে, এবারে চিতাবাঘ!
মন খারাপ
আমাদের শিশুদেরকে আমাদেরই শিখাতে হবে; প্রাণীদের প্রতি ভালবাসা। প্রকৃতি ও প্রাণীদের পারস্পরিক বন্ধন।

তারেক অণু এর ছবি

হা, সেই সাথে নিজেদেরও শিখতে হবে।

শাব্দিক এর ছবি

যে প্রাণী স্বজাতি হত্যা করার জন্য মরনাস্ত্র তৈরির গবেষণা করে তার জন্য এ আর এমন কি অপরাধ?

তারেক অণু এর ছবি
ইস্কান্দর বরকন্দাজ এর ছবি

চলুক

তারেক অণু এর ছবি
পরী এর ছবি

আরেকটি পৈশাচিক কাজের বহিঃপ্রকাশ। মন খারাপ
আজ "দৈনিক সমকাল" পত্রিকায় দেখলাম পঞ্চগড়ে পিটিয়ে একটি চিতা বাঘ হত্যা করেছে। আরও মনটা খারাপ হয়ে গেছে। মারার দরকার কি ছিল। কোনভাবে আটকিয়ে কি চিড়িয়াখানা বা সুন্দরবনে ছেড়ে দেওয়া যেত না।

তারেক অণু এর ছবি

চিড়িয়াখানাও কিন্তু আসলে মৃত্যুকূপ, আমাদের দরকার তাদের নিজস্ব পরিবেশে ফেরত দেওয়া।

হাসান  এর ছবি

দরকারি লেখা ।

তারেক অণু এর ছবি

ধন্যবাদ, কিন্তু কোন আসল কাজে আসবে কি !

Sabir Bin Muzaffar এর ছবি

অনু, লেখাটা ভাল। চালিয়ে যাও। সাবের।

তারেক অণু এর ছবি

অনেক দিন পরে দেখা সাবের ভাই! কোথায় আপনি? আমাদের সেই টাঙ্গুয়া ভ্রমণ নিয়ে একটা পোস্ট আছে কন্তু সচলে।

উচ্ছলা এর ছবি

কী সুন্দর করে, আবেগ দিয়ে লিখেছ! পরিবেশ রক্ষা, বন্যপ্রাণী সংরক্ষন নিয়ে সচেতনতা জাগাতে এবং ছড়িয়ে দিতে এটি একটি অনবদ্য লেখা।

কিছু চিড়িয়াখানায় ও এ্যাকোয়ারিয়ামে কয়েকবার মাঝারী সাইজের কয়েক প্রজাতীর সাপ কোলে নেবার সুযোগ এসেছিল। কী আশ্চর্য মায়া নিয়ে ওরা আমার গলা, বাহু জড়িয়ে ধরেছিল! ছোট ছোট চোখ মেলে কী অবাক হয়ে ওরা আমার দিকে তাকিয়ে ছিল!

অকারণে কেন আমরা এদেরকে দেখলেই মারতে যাই?! এত কুৎসিত 'মার্-মার্-কাট্-কাট্' মানসিকতা কেন আমাদের?!

তারেক অণু এর ছবি

যদি লিখেই ওদের জীবন বাঁচাতে পারতাম, সারা জীবন তাই করে যেতাম।

আমাদের মানসিকতা খুব জটিল, এর পিছনে অনেক ব্যাখ্যা আছে, তবে মূল কারণ হিসেবে ধরা যায় অজ্ঞানতা, কুশিক্ষা, লোভ।

পরী এর ছবি

উচ্ছলা আপু, অনেকদিন তোমার লেখা পাই না। যদিও এখানে এটা বলা ঠিক হচ্ছে না। কিন্তু তোমাকে পাবো কই তাই এখানেই মনের কথাটা লিখে দিলাম। লেখা দাও, লেখা দাও। মন ভাল করার লেখা দাও। ম্যাঁও

সরি অণু'দা দেঁতো হাসি

তারেক অণু এর ছবি
ধুসর গোধূলি এর ছবি

ড্যাভিড অ্যাটেনবোড়োর 'লাইফ' দেখানো দরকার সবাইকে, বাধ্যতামূলক।

তারেক অণু এর ছবি

হ, সবগুলা এপিসোড চলুক

আমি শিপলু এর ছবি

উত্তম জাঝা!

তারেক অণু এর ছবি
আশালতা এর ছবি

কি আর বলব, পত্রিকায় প্রায়ই এইরকম ছবি আসে আর নিস্ফল আক্রোশে ফুঁসতে থাকি। যেই দেশে মানুষই অন্য মানুষের হাতে নিরাপদ না, পশুর মতই মার খেয়ে মরে পড়ে থাকে সেখানে জন্তু জানোয়াররা আর কতটুকুই বা আশা করতে পারবে ! অ্যাঁ

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

তারেক অণু এর ছবি

তারপরও গ্রাম পর্যায়ে চেষ্টা করা যেতে পারে। অনেক দেশেই এইভাবে চোরাশিকারিদের পশু সংরক্ষণকারীতে পরিণত করা হয়েছে। আমাদের তো বুনো প্রাণী এমনিই শূন্যের কোঠায়।

তারিক এর ছবি

পত্রিকা তে খবর টা পড়ে খুব খারাপ লেগেছে। মা-বাঘ টা কেও মেরে ফেললে বাচ্চা গুলোও বাচবেনা।
মন খারাপ

তারেক অণু এর ছবি
কল্যাণ এর ছবি

গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

তারেক অণু এর ছবি

দাদা, মনে আছে স্কুলের সেই গুইসাপটির কথা ?

কল্যাণ এর ছবি

আছে মন খারাপ । মানুষের থেকে ভয়ঙ্কর, অকারণ নিষ্ঠুর, নৃশংস প্রাণী এই পৃথিবীতে আর দুইটা নাই।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

তারেক অণু এর ছবি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।