ভক্ত

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: শনি, ০২/১০/২০১০ - ৩:৪২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এটা বেশ তাৎক্ষণিক তাড়ায় লেখা। একেবারেই গুছানো গাছানো না। কিন্তু ভিতর থেকে কেমন যেন একটা তাড়া, না লিখে আর পারা গেল না। আসলে যত দিন যাচ্ছে, আমি মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখার ভয়ানক ভক্ত হয়ে উঠছি। গত কয়েক মাসে তাঁর অনেক লেখা পড়তে পারলাম অনলাইনে।

আজকে পড়ছি সদ্য অনলাইনে ওঠা "স্কুলের নাম পথচারী"। গতকাল পড়েছি "রাজু ও আগুনালির ভুত"। পড়তে পড়তে একটা অদ্ভুত আনন্দ হয়। কচি নতুন পাতায় রোদ্দুর পড়ে ঝলকাচ্ছে দেখলে যেমন মনের মধ্যেটা ফুরফুরে হয়ে যায় তেমন একটা খুশি লাগে লেখাগুলো পড়ে। এখন ওঁর লেখা এমনি গল্পগুলো বেশী ভালো লাগে কল্পবিজ্ঞানের চেয়ে। গ্রামের সেই ডানপিটে মেয়ে বকুলাপ্পু যে কিনা অনেক অসাধ্যসাধন করে ফেলে তার সঙ্গে মিলে ছোটোবেলায় ফিরে যেতে ইচ্ছে করে, তেঁতুলগাছ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পড়ে ডুবসাঁতার দিতে ইচ্ছে করে।

বলতে বেশ সঙ্কোচ হচ্ছে তবু বলি কয়েক বছর আগেও আমি তাঁর বিষয়ে কিছুই জানতাম না। আসলে পশ্চিমবাংলার বাঙালি ছেলেমেয়েরা খুব কমই সুযোগ পায় পুবের দিকের দেশটায় কী হচ্ছে তা জানার। বিশেষ করে সাহিত্য জগৎ একবারেই একটি বিশেষ শক্তিশালী গোষ্ঠীর হাতে। তাদের স্পনসর্ড লেখকরা তাদের ফরমায়েশী লেখা লেখেন, সেই বিশেষ গোষ্ঠীর বাইরের যারা তাদের প্রকাশনাপ্রচেষ্টাগুলি বেশীরভাগই অঙ্কুরেই বিনষ্ট। তো যারা নিজেদের লোকের বাইরের কাউকেই জায়গা দিতে চান না, তারা যে দেশের বাইরের কারুর লেখা জনপ্রিয় করে তুলবেন তা তো হয় না এক যদি না নিজেদের কোনো ব্যবসাপরিকল্পনা থাকে।

তো এইসব ফেরে পড়ে বাংলার ভালো ভালো অনেক কিছুই বিশেষ পড়া হয় নি। কিন্তু কালচক্র তো থেমে নেই, সেতো ঘুরছে। ক্রমে এসে পড়লো গ্লোবালাইজেশন, এসে পড়লো গুগল, এসে পড়লো ফেসবুক, আরো নানা কান্ড। বেড়া দিয়ে আর কত আটকাবে?

কল্পবিজ্ঞান পড়তে ভালোবাসি শুনে এক বন্ধু ইমেইলে পাঠিয়েছিলো মুহম্মদ জাফর ইকবালের "ফোবিয়ানের যাত্রী" নামের কল্পবিজ্ঞান উপন্যাস। সেই তাঁর লেখার সঙ্গে প্রথম পরিচয়। চমকে উঠেছিলাম বেশ। এমন ধরনের বাংলা কল্পবিজ্ঞান আগে তো পড়ি নি।

তারপরে একে একে অনেক লেখাই পড়লাম। কল্পবিজ্ঞান কিছুদিনের মাঝেই একঘেয়ে লাগতে শুরু করলো কিন্তু ভক্ত হয়ে উঠলাম মানবিক গল্পগুলোর। একধরনের আশ্চর্য সতেজ আশাবাদ কাহিনিগুলিতে! হার না মানা দুষ্টু দুষ্টু জ্বলজ্বলে চোখের হাসিমুখ উঁকি দিয়ে যায় কাহিনিগুলোর ভিতর থেকে।

মানুষটাকে দেখতে ইচ্ছা করে, কথা কইতে ইচ্ছা করে। লেখাগুলোর মধ্য থেকে যে মনটা দেখতে পাই এরকম সতেজ সবুজ মন তো দেখি না কোথাও বিশেষ! কিজানি হয়তো দেখা কখনো হবে না, কিন্তু প্রত্যেকটা নতুন লেখা পড়লেই মানুষটাকে আরেকটু জানা হবে ভাবলেই ভালো লাগে।

(আরো লিখবো এই পোস্টে)


মন্তব্য

বিষণ্ণ বাউন্ডুলে [অতিথি] এর ছবি

দারুন লিখেছেন,আপু ।

আমার বন্ধু রাশেদ, বাচ্চা ভয়ংকর কাচ্চা ভয়ংকর, মেকু কাহিনীঁ...এ তিনটা জমিয়ে রাখেন,সবার পরে পড়ার জন্য ।এ তিনটা সবচেয়ে ভাল তো, তাই ।

পড়তে থাকুন, লিখতে থাকুন ॥ হাসি

বিষণ্ণ বাউন্ডুলে [অতিথি] এর ছবি

আরো দুয়েকটার কথা না বললেই নয়।।

*আধ ডজন স্কুল
*সায়রা সায়েন্টিস্ট
*কাজলের দিনরাত্রি
*বৃষ্টির ঠিকানা
*লাবু এলো শহরে
*রাশা

আরো কয়েকটা আছে কিন্তু সেগুলার নাম অন্যরাই বলে দিছে।

এসব বই আমি কিনব নাকি আমার বায়া তা নিয়ে কত্ত কাউমাউ যে করলাম এই জীবনে!!এখনো অবশ্য করি!!! দেঁতো হাসি

তুলিরেখা এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে।
অবশ্যই পড়বো।
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

হুম্মম্ম এর ছবি

স্যারের লিখা "আমার বন্ধু রাশেদ" বইটা অবশ্যই পড়বেন।

"দস্যি কজন" টাও মিস করবেন না।

আমার মনে হয় স্যার সায়েন্স ফিকশান এর চেয়ে কিশোর উপন্যাস ভালো লিখেন।

আর দেখা হবে না কেন? হঠাৎ করে একদিন চলে আসবেন আমাদের ক্যাম্পাসে।

তুলিরেখা এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে।
"আমার বন্ধু রাশেদ" পড়েছি, আলোচনায় লেখার ইচ্ছা আছে।
যেগুলো পড়িনি, অবশ্যই পড়বো।
আমারও তাই মনে হয় কিশোর উপন্যাস গুলোর অনেক বেশী ভালোলাগা দেয়, মনের কাছাকাছি লাগে ঘটনাগুলো, ভালো লাগে উজ্জ্বল আশাবাদ, অপরাজেয় জীবনীশক্তি ।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অনিকেত এর ছবি

আপনার এই লেখাটা দুর্দান্ত (অবশ্য আপনার সব লেখাই ঐ ক্যাটাগরীতে পড়ে)।
দুর্দান্ত এইজন্যে না যে আপনি আমার প্রিয় লেখক কে নিয়ে লিখেছেন, বা আমার খুব পছন্দের এক মানুষ কে নিয়ে লিখেছেন। দুর্দান্ত লাগল এইজন্যে যে আপনি আপনার নিজস্ব 'তুলিরৈখিক'-তার বাইরে এসে একটা লেখা লিখলেন। আপনার নিজের ফর্মভাঙ্গা লেখা!

জটিল লাগল।

আমি চাই, আপনি এমন আরো লিখুন। আপনার চোখ দিয়ে আমাদের প্রিয় মানুষগুলোকে দেখি, তাদের লেখার নিরপেক্ষ নির্মোহ আলোচনা শুনি।

সেই প্রত্যাশায় রইলাম---

আনন্দম!

তুলিরেখা এর ছবি

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ অনিকেত।
আসলে লিখতে ইচ্ছা করে যেকয়টা পড়েছি সেই সবগুলো বই নিয়েই, কিন্তু অনুভব যা করেছি তার আসলে কিছুই প্রকাশ করতে পারবো না।
ভালো থাকবেন।

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

রাজিব মোস্তাফিজ [অতিথি] এর ছবি

মানুষটাকে দেখতে ইচ্ছা করে, কথা কইতে ইচ্ছা করে। লেখাগুলোর মধ্য থেকে যে মনটা দেখতে পাই এরকম সতেজ সবুজ মন তো দেখি না কোথাও বিশেষ! কিজানি হয়তো দেখা কখনো হবে না, কিন্তু প্রত্যেকটা নতুন লেখা পড়লেই মানুষটাকে আরেকটু জানা হবে ভাবলেই ভালো লাগে।

শুধু এই কারণে মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা এখনও কোথাও দেখলে সব কাজ বাদ দিয়ে ওইটা আগে পড়ে ফেলি । আর ওই সতেজ, সবুজ মনের কথা বললেন না-- তাঁর লেখা পড়ে তাঁকে অনেক আপন মনে হয় বলে সারাদেশ থেকে শত শত বাচ্চারা তাঁকে শত শত চিঠি লিখে আর তিনি অনেক যত্ন করে সেগুলোর উত্তর দেন । আমি একজনকে চিনি যে একটা চিঠি লিখে তিনটি উত্তর পেয়েছে । আর ছোট বাচ্চাদের জন্য লেখালেখির জন্য কিন্তু তিনি অনেক চিন্তাভাবনা করে অনেক প্রস্তুতি নিয়েছেন । আর বইগুলো এমন করে লেখা যে এত বড় হয়ে যাওয়ার পরও ওগুলো পড়তে ভালো লাগে ।

আপনার লিস্টিটা একটু বড় করে দেই -- আমার বন্ধু রাশেদ, দুষ্টু ছেলের দল, দীপু নাম্বার টু, আমি তপু ইত্যাদি বইগুলো না পড়ে থাকলে জোগাড় করে পড়ে ফেলুন -- ঠকবেন না ।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি দুষ্টু ছেলের দল পড়ে ফিদা হয়ে গিয়েছিলাম। আর পরবর্তিতে আমার বন্ধু রাশেদ অনেক ভালো লেগেছিল। স্যারের সামনে অনেকবার যাওয়া হয়েছে, কিন্তু কী বলব আর খুঁজে পাইনাই মন খারাপ

সজল

তুলিরেখা এর ছবি

কী বলবেন খুঁজে পান নাই?
আসলে সামনে গেলে কথা খুঁজে পাবো না আমিও। হাসি
লেখার ভিতর দিয়ে মাল্টিডাইমেনশনাল যে মানুষটাকে দেখা যায় তাতো আর সামনে গেলে পাওয়া যায় না।

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আচ্ছা আমাকে একটা কথা বলুনতো কোন জাদুমন্ত্র বলে পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের বই, পত্রিকা, গানের সিডি, সিনেমার ডিভিডি, টেলিভিশন চ্যানেল এগুলোর প্রবেশ ঠেকিয়ে রেখেছে? সেটা আজকে থেকে না, গত ৬৩ বছর ধরেই। চোরাইভাবে কিছু হয়তো যায়, তবে নিয়ম মেনে কিছুই যায়না। পশ্চিমবঙ্গে পাকিস্তানের টেলিভিশন চ্যানেল দেখা যায়; পাকিস্তানের গানের সিডি, সিনেমার ডিভিডি পাওয়া যায় অথচ বাংলাদেশের প্রোডাক্ট একেবারে হারাম! শুধুমাত্র দেশ আলাদা বলে নিজেদের (বাঙালী) সাহিত্য-সংস্কৃতির একাংশকে ঠেকিয়ে রাখার এই প্রাণান্তকর চেষ্টা পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া দুনিয়ার আর কোথাও আছে বলে মনে হয়না। মজার ব্যাপার হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় কংগ্রেস থাকুক আর সংসদীয় বামেরা থাকুক তাতে এই ব্যাপারটা পাল্টায়না। ভবিষ্যতে কখনো তৃণমূল কংগ্রেস বা বিজেপি ক্ষমতায় আসলেও এই ব্যাপারটা পাল্টাবে বলে মনে হয়না। অথচ পশ্চিমবঙ্গের সাহিত্য-সংস্কৃতির রথী-মহারথীরা বাংলাদেশে আসলে এপাড় বাংলা-ওপাড় বাংলার অভিন্ন সংস্কৃতি, দুই দেহ-এক প্রাণ ইত্যাদি বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলেন। আরো মজার ব্যাপার হচ্ছে আপনার এই লেখার আগে ভারতে জন্মগ্রহনকারী কারো লেখা বাংলাদেশের কোনো লেখকের বইয়ের উপর আলোচনা পড়তে পাইনি। আপনাকে স্যালুট!



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তুলিরেখা এর ছবি

কী বলবো বলুন, বলতে গেলে তো মহাভারত!
কীভাবে যে এরা সবকিছু আটকায় তা যদি আমরা আমজনতা জানতামই তা হলে তো হয়েই যেতো! শুধু আটকানো না, সামান্য রকম জানার অবস্থাও সবজায়গায় নেই। বাক্সের ভিতরে বাক্স, তার ভিতরে আরো বাক্সো। মানুষকে খাপে খাপে পুরে রাখার ব্যবস্থা। পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা একেবারে লিম্বো! ত্রিশঙ্কু হয়ে ঝুলছে, অতীতের টাইম ক্যাপসুলে বসে বসে হারানো দেশের কথা বলবে(কাদের দোষে সব হারালো সে নিয়ে বিলাপ করবে) নাকি বর্তমানে সেখানে কী হলো, ভবিষ্যতে মিলেজুলে এগোনোর কোনো পন্থা আছে কিনা সেগুলো নিয়ে চিন্তা করবে সেই ব্যাপারটাই এখনো ঠিক করতে পারে নি কেউ। একদল বসে আছে চল্লিশের দশকে-তার পরে এতগুলো বছর যে চলে গেল এত যে ওলোটপালোট হয়ে গেল তা নিয়ে তাদের কোনো তাপউত্তাপ নেই। আরেকদল যারা জন্মেছে অনেক পরে তারা জানতেও পারে না, জানার চেষ্টাও করে না। কারণ জানার কুঁড়িটা তো দেখা দেয়া চাই, সেটা তো বড়োদের কাছ থেকে না শুনলে হবে না। এদিকে বড়োরা তো ৪০ এর টাইম ক্যাপসুলে।

এছাড়া আরো নানা সূক্ষ্ম জটিল ব্যাপার আছে যেগুলো ঠিক বুঝিয়ে বলা সম্ভব না। বলতে গেলে খোলামেলা বলতে হবে তাতে ভুল বোঝাবুঝির বিরাট সম্ভাবনা।

বিশ্বাস করুন, অনলাইনে ঘোরাঘুরির আগে বাংলাদেশের একজনমাত্র বিতর্কিত লেখিকা ছাড়া প্রায় কারুর কথা জানতাম না। ভাবতে পারেন, ছায়াপৃথিবী নন্দিত নরকে শঙ্খনীল কারাগারের মতন লেখা চিরকালের মতন না পড়া রয়ে যেতো টেকনোলজি এসে দরজা না খুলে দিলে!

আরে সচলে না এসে পড়লে ৯০% কথা তো জানতেই পারতাম না! শুধু ছাপা মিডিয়া নয় প ব ভিত্তিক ওয়েবসাইটগুলোতেও ঘরের পাশের দেশটির কোনো খবর নাই, প ব বিপ্লবীরা কিউবা দক্ষিণ আমেরিকা নিয়ে গলা ফাটিয়ে ফেলেন, কিন্তু ঘরের কাছের খবর নাই! বিস্ময়!

আমার মতন আমজনতা কিন্তু জানে মানুষ জানতে পেলে অনেক কিছু ভালো হতো। জানতেই যদি না পারে, তাহলে আর ভালোমন্দ নিয়ে বলবে কী করে?

যাই হোক, এখন তবু নেটের জোরে কিছু মানুষের কাছে কিছু জিনিস এসে পৌঁছায়। আশা করা যায় ক্রমে আরো বেশী পৌঁছাবে।

তবে শুনছি প বয়ের উচ্চ মধ্য ও নিম্নবিত্ত সব বাচ্চারাই আজকাল নাকি বাধ্যতামূলকভাবে ইংরেজী মিডিয়ামে যাচ্ছে, বাংলা নাকি আর কেউ লিখবে পড়বে বলবে টলবে না। তাহলে তো ল্যাঠা চুকেই গেল! মন খারাপ

দেখা যাক, সময় কী বলে!

আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

মূলত পাঠক এর ছবি

মহাভারত হলে বলতে সমস্যা কী, বলুন না বক্তব্য যা আছে। আমার বক্তব্যটা বরং এইখানে বলে ফেলি।

মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা প্রথম পড়েছি অনলাইনের অনেক আগেই। হুমায়ূন আহমেদও। জাফর ইকবালের কল্পবিজ্ঞান পড়ে প্রথম মনে হয়েছে যেটা, বাংলায় এমনটা আগে পড়ি নি। পরে ওঁর অন্য ধরনের গল্পও পড়েছি এবং মুগ্ধ না হয়ে পারি নি। কিন্তু সে সব তো মোটামুটি সকলেরই মত, নতুন কিছু নয়। যেটা বলতে চাইছি সসংকোচে, নতুন কোনো বিবাদ না সৃষ্টি ক'রে, তা অন্য একটা কথা। এই যে লিখেছেন: "আসলে পশ্চিমবাংলার বাঙালি ছেলেমেয়েরা খুব কমই সুযোগ পায় পুবের দিকের দেশটায় কী হচ্ছে তা জানার।" এইটেতে আমি সহমত নই। কলকাতা বইমেলায় বাংলাদেশের বইয়ের স্টল থেকে আমি নিজেই প্রথমবার হুমায়ূন আহমেদ ও মুহম্মদ জাফর ইকবালের বই কিনেছি অন্তত বারো কি চোদ্দো বছর আগে। তিনখানা অমনিবাস এবং কল্পবিজ্ঞানের কয়েকটা ভল্যুম, যথাক্রমে। এ ছাড়া যাঁদের বই দেখেছি সেখানে, তাঁদের মধ্যে মিলন, সেলিনা হোসেন, শাহরিয়ার কবীর, শামসুর রহমান, এঁদের কথা মনে আছে। কিছু প্রবন্ধ-নিবন্ধ সংকলনও দেখেছি, তখন সে সব লেখকদের নাম জানতাম না বলে কেনার কথা ভাবি নি। এছাড়া আমার বন্ধুর কাছ থেকে নিয়ে লাল শালু আর চিলেকোঠার সেপাই পড়েছিলাম বছর দশেক হবে, সে কোত্থেকে কিনেছিলো জানি না তবে তার কোনো বাংলাদেশ কানেকশন নেই বলেই জানতাম। কাজেই কলকাতার প্রকাশনা না হলেও সুদুর্লভ কিছু ছিলো না বাংলাদেশের বই। তবে লেখক বৈচিত্র্যটা প্রশ্নাতীত নয়। আর ব্যবসার কথাটা তো থাকেই। আমরা সে বই বেরোলে পয়সা খরচা করে কিনে পড়তাম, এই জাতীয় কোনো হিসেব পাওয়া গেলে হয়তো প্রকাশকেরা আগ্রহী হবেন। আর পাঠক হাতে নিয়ে নেড়েচেড়ে কিনবে, তাদের হাতে পর্যাপ্ত সংখ্যক বই না এলে সে ব্যাপারটাও আটকে যায়। এই ভিশাস সার্কেল ভাঙার পথ আমি জানি না, তবে অনলাইনে ডাউনলোড করে কোনো সুরাহা হবার কথা নয়। অভিযোগ করার আগে সে কথাটাও ভাবা দরকারি।

কিংবা এই কথাটা: "বিশেষ করে সাহিত্য জগৎ একবারেই একটি বিশেষ শক্তিশালী গোষ্ঠীর হাতে। তাদের স্পনসর্ড লেখকরা তাদের ফরমায়েশী লেখা লেখেন, সেই বিশেষ গোষ্ঠীর বাইরের যারা তাদের প্রকাশনাপ্রচেষ্টাগুলি বেশীরভাগই অঙ্কুরেই বিনষ্ট। তো যারা নিজেদের লোকের বাইরের কাউকেই জায়গা দিতে চান না, তারা যে দেশের বাইরের কারুর লেখা জনপ্রিয় করে তুলবেন তা তো হয় না এক যদি না নিজেদের কোনো ব্যবসাপরিকল্পনা থাকে।" তো এই প্রকাশনা সংস্থা তো ব্যবসা করতেই মাঠে নেমেছেন, দেশের ভিতরের বা বাইরের লেখকদের লেখা প্রকাশ করার সময় মুনাফার কথাটা ভাববেন না কেন, তা বুঝলাম না। আর জনপ্রিয়তার সম্ভাবনা থাকলে ছাপাতে এঁদের সমস্যা হবে কেন সেটাও বুঝি নি। সন্দীপন দেবেশ ঝড়েশ্বর স্বপ্নময় এঁরা কি ওখানে লেখা পাঠিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন এমন কিছু শুনেছেন? আপনি আমি দুজনেই তো এক লেখকের কথা জানি যাঁর প্রবল সন্দেহ ছিলো যে এঁরা গোষ্ঠীমনা, তারপর লেখা পাঠানো মাত্রই ছাপা হয়ে গেলো, এমনটাও তো দেখলাম। তাহলে এই দোষারোপের পেছনে যুক্তিটা কী জানতে ইচ্ছে হয়।

শেষ পাতে আরেকটা কথা বলে যাই। উর্দূভাষী ভারতীয়রা পাকিস্তানের সাহিত্য কদ্দূর কী পড়ে সে বিষয়ে জানতে চাই। কিম্বা তামিলভাষীরা শ্রীলঙ্কার সাহিত্য (ওটা ওঁদের অন্যতম সরকারি ভাষা)। আমার কাছে তথ্য নেই, আন্দাজ করি সে বিষয়েও ছবিটা খুব আলাদা হবে না। তো দেশ জুড়ে এই যেখানে পরিস্থিতি, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে আলাদা কিছু হবে এমন ভাবার কারণ কী থাকতে পারে। বিশেষত যেখানে সব লিস্টে অধোগতি হয়ে চলেছে, সেখানে এমনটা আশা করাটা আশ্চর্য নয়?

[লেখকদের নামের বানান ভুল হলে ক্ষমাপ্রার্থী।]

তুলিরেখা এর ছবি

মূলত পাঠক,
খুব ভালো লাগলো এমন ভেবেচিন্তে খোলামেলা মন্তব্য দিলেন বলে। আরে আপনি তো তবু ১২ /১৪ বছর আগে কিছু পেয়েছেন। বেশ কয়েকজনের লেখা পেয়েছেন। আমরা তো তখনো একজনমাত্র বিতর্কিত লেখিকা ছাড়া আর কারুকেই চিনি নি। আমরা বলতে আমার বন্ধুবান্ধবের বর্গটাকে বলছি, মোটামুটি বইপত্র সাহিত্য ভালোবাসা মানুষজন এরা। অনেকে নিয়মিত বইমেলায় ও যেতো।

তো যে বছর বইমেলায় বাংলাদেশ থীম হলো সেবছর তবু কিছু কিছু পাওয়া গেল, কিন্তু পাওয়ার আগে কিছুটা চেনাও তো চাই লেখকদের, সেই পথটা তো হয় নি। তো লোকে বিতর্কিত লেখিকার বই কিনতে লাইন দিলো কিন্তু তার বাইরে কত যে নানাধরনের বিষয়ের লেখক কবি রয়েছেন তাদের জানা হলো কই?

ভেবে দেখুন এই কপোট্রনিক সুখদুঃখ নন্দিত নরকে শঙ্খনীল কারাগার এসব বহু আগের লেখা, সত্তরের দশকে, এই লেখকদের অতি তরুণ বয়সে লেখা এসব। এসব আমাদের কাছে পৌছতে পৌছাতে নেটযুগ এসে গেল!

তারপরে দেখুন নানা ম্যাগাজিন, আমরা যখন আনন্দমেলা শুকতারা কিশোর জ্ঞান বিজ্ঞান কিশোরভারতী পড়ে বড় হয়ে উঠছি, ফেলুদার নানা গোয়েন্দা গল্পে উকি দিচ্ছি, তখন ওপাশে কিরকম কিশোর পত্রিকা বেরোয় তার কোনো খোজ কি আসতো? হয়তো কেউ কেউ পেতেন। আমি নিজে বা বন্ধুবর্গ সম্পূর্ণ অন্ধকারে, কোনো খবর পাই নি।

এখানে একজন বললেন বাংলাদেশে তিনি কিশোর জ্ঞান বিজ্ঞান এর জন্য অপেক্ষা করে থাকতেন প্রতি মাসে। এরকম হলে ভালো হতো না যে দুপাশের বইপত্র পত্রিকা বেশ স্মুদলি চলাচল হলো, আদানপ্রদান হলো? তা কিন্তু একেবারেই দেখিনি অন্তত আমার চোখে।

আর প্রকাশনাগোষ্ঠীর ব্যাপারটা তো? ওটা কিন্তু আছেই, একজন দুজন বাইরের লোকের ভালোলেখা কালেভদ্রে না হয় তারা ছাপালেন, তাতে ওভার অল চিত্রটা বদলায় না। একটা কনস্ট্যান্ট লিস্ট অব রাইটার্স অ্যান্ড পোয়েটস কিন্তু তাদের আছেই, তাদের জোলো লেখা পর্যন্ত নিয়মিত প্রকাশ হয়ে চলেছে। আসলে ব্যবসার জগত জটিল!

আর ভারতের নানা প্রদেশের অবস্থাও এরকম নাকি? বাইরের কিছু ঢুকতে মানা! তাহলে তো সত্যিই খুব খারাপ!

আরো আলোচনার আশায় রইলাম।

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

মূলত পাঠক এর ছবি

আমার কথাটা আমি হয়তো ঠিকভাবে বোঝাতে পারি নি, কিন্তু অন্তত কলকাতায় বসে বাংলাদেশের সাহিত্য সম্বন্ধে কিচ্ছুটি না জানা গেলে সেটা কপালের কিংবা অবস্থার দোষ নয়, স্রেফ সদিচ্ছার অভাব। মৌসুমী প্রকাশনীর কলেজ স্ট্রীটে স্থায়ী ঠিকানা আছে বলে শুনেছি। আগ্রহী পাঠক সবার লেখা না হলেও অনেকের বই-ই পেতে পারে কলকাতায় বসে। এবং নেটযুগের অনেক কাল আগে থেকেই। হুমায়ূন আহমেদ ও ইমদাদুল হক মিলনের লেখা শারদীয়া পত্রিকায় বেরিয়েছে, তসলিমার কথা না হয় বাদই দিলাম। এ ছাড়া কলেজ স্ট্রীটের ধারে ঢেলে পাইরেটেড কপি পাওয়া যায় বাংলাদেশী বইয়ের। বাংলাদেশেও পশ্চিমবঙ্গীয় লেখকদের বইয়ের পাইরেটেড কপি অনেক দিন ধরে লভ্য বলে শুনেছি। কোনো প্রকাশনা সংস্থা দু দেশের বাণিজ্য চুক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে না, কাজেই কেন লেনদেন হচ্ছে না সে দোষটা তাদের ঘাড়ে না চাপালেও হয়। ওভারঅল চিত্র কেন বদলায় না সে বিষয়ে আপনার ব্যাখ্যাটা কী? সন্দীপনরা প্রত্যাখ্যাত হন? না কি বুর্জোয়া পত্রিকায় লেখাই পাঠান না? পাঠালে কী হয়? ছাপা হয় না? এ বিষয়ে কিছু তথ্য দিন, জানতে চাই এই গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিটা কী। নইলে কেমন যেন সেই লতা মঙ্গেশকর বাকি গায়িকাদের গলা টিপে ধরতেন মার্কা শোনায়।

আহমেদ ছফা একদা পশ্চিমবঙ্গীয় সাহিত্য যাতে বাংলাদেশে না যায় সে বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির প্রচেষ্টা করেছিলেন। এ পথ সঠিক না ভুল সে অন্য বিতর্ক, কিন্তু সে জাতীয় কোনো আন্দোলন পশ্চিমবঙ্গে হয় নি। বড় দেশ ছোটো দেশ ডায়নামিক্স তো থাকেই, তাছাড়া অর্থনীতির সাপ্লাই-ডিমান্ডের যুক্তিও। এর কতকটা হয়তো রাজনৈতিকও। তবে এ সবের পরেও, যে সব পাঠক খোঁজ রাখবেন না, তাঁদের স্পুন ফিডিং করবে কে? এই যে লিখলেন, "যে বছর বইমেলায় বাংলাদেশ থীম হলো সেবছর তবু কিছু কিছু পাওয়া গেল, কিন্তু পাওয়ার আগে কিছুটা চেনাও তো চাই লেখকদের, সেই পথটা তো হয় নি।" সেই পথটা কী, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় সংযোজন? পাশের দেশ যার ভাষাও এক, তার সাহিত্যের খোঁজ বাড়ি বয়ে কে দিয়ে যাবে! আমি এবং আমার বন্ধুবান্ধব যারা ঠিক ততোটা সাহিত্যপ্রেমীও নয়, তারা জানতে পারলে বাকিদের জানতে সমস্যা কোথায়? আর্থার সি ক্লার্ক প্রতিবেশী দেশে থাকেন এই মহাজাগতিক স্ফূর্তির কথা বলতে বলতে যাদের দম ফুরিয়ে যায়, জাফর ইকবালের গল্প হাতে পেতে তাদের সমস্যা হয় কেন? ভালো জিনিস কিছু তো কিনেও পড়তে হয়, কিনতে পাওয়াও যায়। তার বদলে নেটযুগের আশায় বসে থাকলে আর বইপত্তর সব নেট থেকে ডাউনলোড করলে গরীব লেখক খাবে কী?

এবার অন্য প্রসঙ্গটায় আসি। আপনি লিখেছেন, "একটা কনস্ট্যান্ট লিস্ট অব রাইটার্স অ্যান্ড পোয়েটস কিন্তু তাদের আছেই, তাদের জোলো লেখা পর্যন্ত নিয়মিত প্রকাশ হয়ে চলেছে।" আমার বাড়িতে প্রতি বছর লিটল ম্যাগ বাদ দিলে যে ক'টা শারদীয়া বেরোয় সব রাখা হয় (এক গণশক্তি বাদে, তবে পত্রপত্রিকার কথাই যখন হচ্ছে তো ঠোঙা আর ঝান্ডার কথা থাক)। কোথাও কোনো ভালো লেখা কদাপি বেরোয় না এমন কথা বলবো না, তবে আপনার ভাষায় বললে ওভারঅল স্ট্যান্ডার্ড খুব কিছু আলাদা নয়, আপনার বলা ঐ জোলো লেখাগুলো তবু মুদ্রণপ্রমাদের থেকে মোটামুটি মুক্ত এবং দেখতে শুনতে ভালো। তো তারা না হয় ছাপে না ঐ কন্সট্যান্ট লিস্টের বাইরের লেখা, বাকিদের ছাপাতে বাধা কী?

অন্য প্রদেশের অবস্থা এই রকম (এই রকমের রকমটা নিয়েও সহমত নই), এ কথা আমি বলি নি। "বাইরের কিছু ঢুকতে মানা" এ কথাও না। আপনার লেখাটি যদি শুধু জাফর ইকবালের লেখা নিয়ে হতো, তাহলে এতো কথা বলতে হতো না। কিন্তু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও বাণিজ্য নিয়ে লিখতে গেলে পাঠকের স্বার্থেই এ বিষয়ে আরো অভিনিবেশের প্রয়োজন রয়েছে। একবার হিমু বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গীয় সাহিত্যের আদানপ্রদান বিষয়ে কিছু গঠনমূলক কথা লিখেছিলেন, তখন কিছু ভালো আলোচনাও হয়েছিলো। এ উদাহরণ দিয়ে পাঠক হিসেবে অনুরোধ রইল, লেখার বিষয় যদি ট্যানজিবল কিছু হয়, তাহলে কিছু তথ্যপ্রমাণ সমেত লেখার। না হলে সচলের পাঠকেরা অনেকেই বিভ্রান্ত হতে পারেন। এবং এতো সব কড়া কথা শুনে যদি মনে না করা সম্ভব হয়, তো সে অনুরোধও রইলো।

তুলিরেখা এর ছবি

না মূলত পাঠক, আমি কিছু মনে করিনি। এ লেখাটা আসলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়েও নয়। এ একজন সাধারণ মানুষের একটা লেখা, যে মানুষ আরেকজন মানুষের লেখালিখি পড়ে মুগ্ধ হয়েছে। সেই লেখালিখিতে জাতিধর্মবর্ণদেশ এইসব বেড়া পার হয়ে নির্মল মানবতার সন্ধান পেয়ে শিহরিত হয়েছে। এই মাত্র। এই পোস্টও হালকা ফুলকা "জারুলগন্ধ বকুলবাতাস"ই, বস্তু তেমন কিছুই নাই। আমার কোনো লেখাতেই বিশেষ থাকেও না বস্তু, কী করবো বলুন, ভারী কথা কইতে পারি না। বড় ভয়, পাছে বোঝাতে না পারি, পাছে লোকে ভুল বোঝে।

নইলে বলতাম কী করে একে একে ভালো ভালো কিশোর পত্রিকাগুলি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল, কী করে এককালের অনেক ভালো ভালো জিনিস ওয়ালা লেখা বেরোতো যেসব কিশোর ম্যাগাজিনে, তা কার্টুন আর ডেটিং টিপসের ম্যাগাজিন হয়ে গেল। বলতাম কেমন করে বড়ো বড়ো পাতাজোড়া বিজ্ঞাপণ বেরোতো ফুরিয়ে যাওয়া বন্দো গঙ্গো মুখো লেখকদের, অথচ একটি কথাও জানা যেতো না ঘড়াই তেলি ইসমাইলদের লেখালিখির। সেখানে প্রথম যেবার শারদীয় পত্রিকায় লেখা বেরোলো হুমায়ুন আহমেদের "হিমুর রূপালি রাত্রি", তার আগের ইতিহাস শোনাতে পারতাম হু আ য়ের নিজের লেখা থেকেই। কিন্তু না, আমি এসব বলতে চাই না, নানা ফোরামে এ নিয়ে অনেক কচকচি হয়ে গেছে, কিছুই হয় না। লাভের মধ্যে লাভ হয় বন্ধুদের মধ্যে মন কষাকষি। সে আর না হোক।

ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

মূলত পাঠক এর ছবি

ভালো লাগার অংশটুকু নিয়ে তো দ্বিমত নেই। তাছাড়া সেই প্রকাশনা সংস্থা সব নায্য কাজ করেন এমনটাও বলি না। কিন্তু ওঁরা ব্যবসায়ী, দাতব্য বা জনহিতকর কোনো কাজ করাই ওঁদের এজেন্ডা নয়, সে আশা করলে হতাশ হতেই হয়, এবং তার জন্য দোষারোপ করা যায় না।

এই মন্তব্যে আপনি একটা নতুন এবং ভয়ঙ্কর পয়েন্ট তুলেছেন, জাতপাত-সংক্রান্ত। আমি ওঁদের পলিসি জানি না, তবে ব্যবসায়ীদের ধর্ম যা, সে দিক থেকে ভাবলে এবং ফলাফলটা দেখলে আপনার অভিযোগটা মানতে ঘোর অসুবিধা হয়। যে লেখকের লেখা পাঠক পড়বে পয়সা খরচ করে, তার লেখা জোর করে ছাপবেন না কেন ওঁরা, এর ব্যাখ্যা জানতে কৌতূহল হয়। বোঝাতে পারবেন না এ কথা আগেই ধরে নেওয়ার কিছু নেই, পাঠকের বোঝার ক্ষমতার উপর আরেকটু ভরসা না হয় রাখলেনই? না হয় বিতর্ক হবে কিছু, শুরু করেছেনই যখন তো দায়িত্ব এড়াবেন কেন? আর তাকে বিবাদের পথে না নিয়ে গেলেই তো হয়। 'বন্দো গঙ্গো মুখো'রা ছিলেন ও আছেন, এ তো সত্যি কথা। সংখ্যায় অন্যরা কম, এ-ও আমার মনে হয় ভুল নয়। কিন্তু সেইটে ওঁদেরই চক্রান্ত, এই সিদ্ধান্তটা কোন পথে এলো জানতে চাইছি। বন্দো'দের পাশে ধর'দের লেখা কি ওঁরাই ছাপলেন না? ঘড়াই তেলি ইসমাইলদের কথা বলতে গিয়ে সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ - রমানাথ রায় - দিব্যেন্দু পালিত - বিমল কর - বলরাম বসাক - হর্ষ দত্ত - আবুল বাশার, এঁদের বেমালুম ভুলে গেলেন? আর অন্য মহৎ-হৃদয় পাবলিশার যাঁরা, তাঁদের লেখক তালিকায় জাতপাতের রেশিওটা সম্পূর্ণ অন্যরকম নাকি? আগে অন্য শিবিরের যাঁদের নাম লিখেছিলাম, তাঁদের মধ্যে স্বপ্নময় চক্রবর্তী, ঝড়েশ্বর চট্টোপাধ্যায় আর সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় কিন্তু খাঁটি বামুন! একটা অন্য প্রকাশনার যে কোনো সংখ্যা হাতে নিয়ে দেখুন, চিত্রটা বিরাট কিছু আলাদা হবে না। এটা সামাজিক সমস্যা হতে পারে, কিন্তু সব কিছুতেই "বেড়ে ব্যাটাকে ধর!" বললে যে সঙ্গত হয় না!

"কী করে একে একে ভালো ভালো কিশোর পত্রিকাগুলি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল", আপনি নিশ্চিত এর দায়ও একটি সংস্থার? বাঙালীর ব্যবসার ইতিহাস তো সাফল্যমণ্ডিত কিছু নয়, সে কথা বাদ দেবেনই দেবেন? আর আমি যদি আজ মুনাফা করতে নামি, আমি চাইবো আমার প্রতিদ্বন্দ্বীরা গোহারান হারুক, তাতে নতুন কী আছে? কোনো অনৈতিক পথ নিয়ে থাকলে অন্য কথা, সে বিষয়ে তথ্য শুনতে চাই। বিতর্ক এড়ানোর কথা বলে ব্যাখ্যাটা এড়িয়ে যাবেন না আবার, বলুন, আমরাও শুনি কী সেই গোপন কাহিনী। হুমায়ূন আহমেদের বক্তব্য আমি অন্ততঃ জানি, অনেকেই জানেন, এবং তাঁর মতো প্রথিতযশা লেখকের গপ্পো দিয়ে তো নমঃশূদ্রের ইতিহাস হয় না। আর কোনো তথ্য না থাকলে শুধু শুধু দোষারোপ করাটা কোনো কাজের কথা নয়, এবং ঘোর অনৈতিক কাজও হয়। ভারী কথা বলতে না চাইলে আপনাকে জোর করতে পারি না, কিন্তু তাহলে ভারী ইঙ্গিতও এড়ানো উচিত। আমি যদি আজ লিখি যে "নেহাত বন্ধুবিচ্ছেদের ভয়, নইলে লিখতুম সচলায়তনে অমুসলমানদের সাথে কীরকম ঘোর অত্যাচার করা হয়। কিন্তু না, আমি এসব বলতে চাই না, এ নিয়ে অনেক কচকচি হয়ে গেছে, কিছুই হয় না। লাভের মধ্যে লাভ হয় বন্ধুদের মধ্যে মন কষাকষি। সে আর না হোক।" তাহলে সে নিয়ে আপনার কী বক্তব্য থাকতো সে কথা জানতে চাই। উপমহাদেশে জাতপাত নিয়ে এমনিতেই অনেক সমস্যা রয়েছে, অমূলক ইঙ্গিত করে নতুন অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করবেন না।

প্রচুর জ্ঞানের কথা বললাম, মাফ চেয়ে নিচ্ছি তাঁদের কাছে যাঁরা এ লেখার মূল বক্তব্য থেকে একে অসম্পৃক্ত কিছু ভাববেন।

স্নিগ্ধা এর ছবি

নেহাত শত্রুবৃদ্ধির ভয়, নইলে লিখতুম জনৈক ইয়ে কীভাবে আমার দশ পর্বের একটা উপন্যাস হাপিস করে দিলো!! কিন্তু না, আমি এইসব বলতে চাই না, এ নিয়ে অনেক কচকচি হয়ে গেছে, কিছুই হয় না। লাভের মধ্যে লাভ হয় শ্রীযুক্ত ঋষিনাথ আমার পরের উপন্যাসগুলোও নিজের নামে ছাপিয়ে দেবার বিভীষণ সব ফন্দি আঁটতে থাকেন!!!

তুলিরেখা - মাফ চেয়ে নিচ্ছি। আপনার আর মূলত পাঠকের সিরিয়াস আলোচনার মধ্যে পড়ে এই ফচকেমিটা না করে পারলাম না, অনেক চেষ্টা করেও নিজেকে আটকাতে পারলাম না মন খারাপ কী করবো বলুন, জনৈক ইয়ের অত্যাচারিত চেহারাটা কল্পনা করে হাসতে হাসতে বিষম খাচ্ছি যে!

তুলিরেখা এর ছবি

স্নিগ্ধা, হাসি
আমিও। মানে হাসছি আর বিষম খাচ্ছি। আহারে বেচারা জনৈক ইয়ে! আর এই শ্রীযুক্ত ঋষিনাথ কে? তিনি কি ইয়ে বা ইয়ের ভায়রাভাই? হাসি

মূলত পাঠক, ব্যাপারগুলো প্রাসঙ্গিক থাকছে না বিধায় উত্তর প্রত্যুত্তর বন্ধ করি। পরে বরং ভিন্ন পোস্টে দ্বিপাক্ষিক সমস্যা দ্বিজাতিতত্ত্ব দ্বৈতবাদ অদ্বৈতবাদ নিয়ে আলোচনা করা যাবে। হাসি এখানে ক্ষমা করুন।

ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

তুলিরেখা এর ছবি

আর একটা ব্যাপার মূলত পাঠক, আপনার পোস্টগুলি ভারী রহস্যময় কান্ড করছে। এক্সপান্ডিং ইউনিভার্সের মতন একেকবার বেড়ে বেড়ে যাচ্ছে, আবার মাঝে মাঝে কিছু কথা স্রেফ গায়েব হয়ে যাচ্ছে। এই যেমন একবার দেখলাম জারুলগন্ধ বকুলবাতাস, দেখে উত্তর দিলাম , ফিরে এসে দেখি জারুল বকুল উধাও আপনার পোস্ট থেকে! ভারী রহস্যময়! এভাবে পালটে পালটে যেতে থাকলে তো মুশকিল! যাক গে, এসব বাদানুবাদ বন্ধ করাই ভালো।

সুকুমারও সেকথাই বলেন, ভেরি ভেরি সরি, মশলা খাবি? হাসি

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

মূলত পাঠক এর ছবি

ঐটা আমার করা এডিটের ফল, বুঝতেই পারছেন আপনার মন্তব্য আসার আগেই করা, আপনার মন্তব্যের পর আমার আর এডিট করার সুযোগ থাকে না। সে নিয়ে ব্যাখ্যা হিসেবে মন্তব্য জুড়তে গিয়ে দেখলাম আপনি কমেন্ট করে ফেলেছেন, তখন সে সব ব্যাখ্যা তামাদি হয়ে যাওয়ায় আর লিখি নি।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি


আহমেদ ছফা একদা পশ্চিমবঙ্গীয় সাহিত্য যাতে বাংলাদেশে না যায় সে বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির প্রচেষ্টা করেছিলেন। এ পথ সঠিক না ভুল সে অন্য বিতর্ক, কিন্তু সে জাতীয় কোনো আন্দোলন পশ্চিমবঙ্গে হয় নি। বড় দেশ ছোটো দেশ ডায়নামিক্স তো থাকেই, তাছাড়া অর্থনীতির সাপ্লাই-ডিমান্ডের যুক্তিও।

মূলত দাদা দেখি মাঝে মাঝে ভালো ভালো বাণী রেখে যান।

আহমদ ছফা একুশের বইমেলায় আনন্দ প্রকাশনীর বই যাতে না ঢোকে সেই চেষ্টা করেছিলেন। এটাকে তাল করে "পশ্চিমবঙ্গীয় সাহিত্য যাতে বাংলাদেশে না যায়" করলে তো মহাবিপদ। ছফাকে নিয়ে আপনার গাত্রদাহের কারণ এবার পরিষ্কার হল।

বড় দেশ ছোটো দেশ ............... গরীব ছোটোভাই বলতে চান নাকি?

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি


আনন্দ = পশ্চিমবঙ্গীয় সাহিত্য ?


বাংলাদেশের বই সম্পর্কে নানাজনের (ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ও বাংলাদেশের, দুই স্থানেরই) নানা মন্তব্য দেখে টমাস ব্যাবিংটন ম্যাকলে সাহেবের কথা মনে পড়ে যায়। তিনি ভারতবর্ষকে 'সভ্য' করতে ইংরাজি শিক্ষার বিকল্প নাই বইলা ব্যপক প্রচার চালাইসিলেন। Minute on education এ তার বিখ্যাত উক্তি : a single shelf of a good European library was worth the whole native literature of India and Arabia। কলনিয়াল মানসিকতা এইটাকে বলে। অনেকসময় মনে হয়, a single shelf of good পশ্চিমবঙ্গীয় বই is worth the whole বাংলাদেশী সাহিত্য - এইটাই মনে হয় আসল কথা।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

স্নিগ্ধা এর ছবি

ষষ্ঠ পাণ্ডবের সাথে সহমত। আপনার লেখার গুণ তো বটেই, কিন্তু আমার জন্য এই কারণটাও এই লেখাটা ভালো লাগানোর পেছনে একটু কাজ করেছে কিন্তু হাসি

আপনার কোন কোন লেখায় এর আগে মুহম্মদ জাফর ইকবালের সপ্রশংস উল্লেখ দেখেছিলাম মনে পড়ে। গোটা একটা পোস্ট দেয়াতে আপনার মনোভাব বা মূল্যায়নের পুরোটা (অবশ্য এখনও কিছু বাকি আছে, দেখতে পাচ্ছি) জানতে পারলাম। ধন্যবাদ!

আসলেই, কোন সে জাদুমন্ত্র!! বাংলাদেশ ভারতের বাণিজ্যচুক্তি সম্পর্কে জানি না, কিন্তু আর কতোদিন এই মন্ত্রের প্রভাব জারি থাকবে!

তুলিরেখা এর ছবি

ধন্যবাদ স্নিগ্ধা।

এই লেখকের লেখাগুলোর দিন দিন এত ভক্ত হয়ে উঠছি যে প্রত্যেকটা বই ধরে ধরে ভালো লাগা খটকা লাগা গুলো নিয়ে আলোচনা করতে ইচ্ছা করে। যেমন ধরুন "রঙীন চশমা", এতে ছোটো ছোটো আলাদা আলাদা মর্মস্পর্শী প্রত্যেকটা চ্যাপ্টার মনকে ছুঁয়ে গেছে, সবকটা নিয়ে লিখতে ইচ্ছা করে। তাতো আর সম্ভব না!

"আমার বন্ধু রাশেদ", চোখের সামনে যেন দেখতে পাই সব। পাতার পর পাতা ধরে ধরে বলতে ইচ্ছা করে।

কিবা "বকুলাপ্পু", দেখতে পাই ডানপিটে কিশোরী মেয়েটিকে যে কিনা মনমরা মৃত্যুপথযাত্রিণী আরেক কিশোরীকে টেনে ফিরিয়ে আনতে পারে জীবনের দিকে নিজের জীবনীশক্তির জোরে।

কোনটা ছেড়ে কোনটা বলবো!

ভালো থাকবেন। লিখবো আরো।
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

দ্রোহী এর ছবি

এগুলো সব আগে লেখা বই। ইদানীংকার বইগুলো তেমন ভাল্লাগে না। মন খারাপ

কারণটা হতে পারে সময়ের সাথে সাথে আমার চাহিদা বেড়েছে অথবা মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখার ধার কমেছে।


কাকস্য পরিবেদনা

তুলিরেখা এর ছবি

আমার তো পড়া নাই অনেকগুলো ওঁর আগে লেখা বই । সেগুলি পড়ে কেমন আনন্দ হবে ভাবতেই ভালো লাগছে।
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অনিকেত এর ছবি

জাফর স্যারের সাথে যখন মাঝে মধ্যেই আলাপ হত (এই সুযোগে নির্লজ্জের মত আরো একবার জানিয়ে দিলাম আমি কী রকম সৌভাগ্যবান--হে হে হে ) তখন অধিকাংশ সময়েই 'হাকারবিন', 'দীপু নাম্বার টু' এবং 'দুষ্টু ছেলের দল' এই তিনটা বইয়ের কথা কেন জানি এসে পড়ত। এই তিনটা বই নিয়ে আমার অনিঃশেষ মাতামাতিও এর একটা কারণ হতে পারে। ঐ সময়ে আকার ইঙ্গিতে বলার চেষ্টা করেছি---ঐ বইগুলোর মত আর বই কবে আসবে?

জাফর স্যার তার চিরাচরিত সহাস্য বদনে আমাকে বলেছেন, আসলে প্রত্যেক মানুষের ক্রিয়েটিভিটির একটা সীমা থাকে। এই সীমাটা সব সময়ে পেরিয়ে যাওয়া যায় না। আর বয়েসও হচ্ছে---

তখন আমি হাত নেড়ে এইসব কথা উড়িয়ে দিয়েছি। আমার মনে হত---স্যারের লেখা কখনোই জলো হবে না, তার কাহিনীর ভান্ডারে কখনোই টান পড়বে না। আজ এতদিন পর মনে হয়, স্যার হয়ত ঠিকই বলেছিলেন। স্যারের এখনকার সাই-ফাই গুলো একটা নির্দিষ্ট সিগ্নেচার বয়ে নিয়ে চলে। সেই ঘেরাটোপ থেকে তিনি এখন আর তেমন হয়ত বেরোন না।

হয়ত সময়ের অভাবে
হয়ত বয়েসের কারণে
হয়ত মানুষের ক্রিয়েটিভিটির একটা সীমা আছে বলে--

কিন্তু আমি এখনো বারবার ফিরে যাই হাকারবিনের কাছে, ঢাকায় মায়ের সাথে দেখা করতে যাওয়া দীপুর সাথে আমিও যাই,মায়ের গায়ের সুবাস নিয়ে ফিরি,দীপুর মতই কাঁদতে কাঁদতে--

স্যার হয়ত নিজেকে আর অতিক্রম করতে পারবেন না, কিন্তু তার দেয়া সেই আলো ঝলমল কৈশোরের দিন কোনদিন ম্লান হবে না।

আর একজন শক্তিশালী লেখকের এইখানেই জিতে যাওয়া!

অতিথি লেখক এর ছবি

স্যার হয়ত নিজেকে আর অতিক্রম করতে পারবেন না, কিন্তু তার দেয়া সেই আলো ঝলমল কৈশোরের দিন কোনদিন ম্লান হবে না।

আরেকবার স্যালুট অনিকেতদা।



তারাপ কোয়াস

সাবিহ ওমর এর ছবি

জাফর ইকবাল পড়তে পড়তে অনুভূতি ভোঁতা হয়ে গেছে, নাকি তার ইদানিংকার লেখা আসলেই দায়সারা হয় জানি না। কিন্তু এই লোক কিছু জিনিস লিখে ফেলেছে যেগুলা যেকোন বাঙ্গালি কিশোর/কিশোরীর জন্য অবশ্যপাঠ্য। লিস্ট করতে গেলে অনেক লম্বা হয়ে যাবে, যেগুলো ঝটপট মাথায় আসছে সেগুলোই বলি-- "দীপু নাম্বার টু", "দুষ্টু দুষ্ট ছেলের দল", "হাতকাটা রবিন", "জারুল চৌধুরির মানিকজোড়", "সঙ্গীসাথী পশুপাখি (এটা আত্মজৈবনিক)" আর "আমার বন্ধু রাশেদ"।

শেষোক্তটা একটা মাস্টারপিস। আমি শক্ত হৃদয়ের মানুষ, বই পড়ে বা সিনেমা দেখে কান্নাকাটি করাটা আমার ধাতে নেই। কিন্তু এক লোডশেডিং-এর রাতে মোমবাতির কাঁপা কাঁপা আলোয় বইটা শেষ করে বুকের মধ্যে যে প্রচণ্ড আলোড়ন অনুভব করেছিলাম, সেটা অনেকটা অলৌকিকতার কাছাকাছি ছিল। হয়তো একাত্তর নিয়ে আমাদের কোমল অনুভূতিটার একটা তীব্র অনুরণন এটার জন্য দায়ী, কিন্তু তারপরও এটা যেকোন জনরাঁর মধ্যে তার অন্যতম সেরা লেখা।

রাজিব মোস্তাফিজ [অতিথি] এর ছবি

জাফর ইকবাল পড়তে পড়তে অনুভূতি ভোঁতা হয়ে গেছে, নাকি তার ইদানিংকার লেখা আসলেই দায়সারা হয় জানি না।

স্যার একদিন কথায় কথায় বলেছিলেন-- আগে বইগুলো লেখার পেছনে যত চিন্তা-ভাবনা করতেন আর যত সময় দিতেন এখন তত সময় দেন না অথবা দিতে পারেন না ।

হয়তো একাত্তর নিয়ে আমাদের কোমল অনুভূতিটার একটা তীব্র অনুরণন এটার জন্য দায়ী

'আমার বন্ধু রাশেদ' নিয়ে আমারও এই রকম মনে হয়-- অন্তত নিজেকে দিয়ে যদি বিচার করি ।

'একজন দুর্বল মানুষ' নামক ছোটগল্পের বইটায় 'ইরা নামের একটি হরিণ' নামে আরেকটি অনন্যসাধারণ আত্নজৈবনিক গল্প(?) আছে যেটা নিয়ে আমি একদিন তাঁকে বলেছিলাম আমার মনে হয় না এর চেয়ে ভালো গল্প তিনি আর কোনোদিন লিখতে পারবেন। তবে স্যারের রিঅ্যাকশন দেখে মনে হয়েছিল আমি আসলে কী বলতে চেয়েছি তা তিনি বুঝতে পারেননি ।

আপনার মন্তব্যটা খুব ভালো লেগেছে ।

তুলিরেখা এর ছবি

সাই ফাই গুলোর কয়েকটা পড়ার পরেই প্লট গুলো অ্যাকশন গুলো প্রেডিকটেবল হয়ে গেল। একঘেয়ে লাগতে শুরু করলো।

কিন্তু কিশোর গল্পগুলোর ক্ষেত্রে উলটো, প্রত্যেকটার মধ এমন কিছু আছে যা কিনা বলা যায় না মুখে।

চিরকাল আবেগ-অনুভূতিহীন কাঠখোট্টা আধামেশিন আমি। কাবলিওলা দেখে কিছুই হয় নি, ইস্পাত পড়ে কান্নাকাটি করিনি, ন হন্যতে পড়ে ন্যাকামি দেখে জায়গায় জায়গায় বেশ রাগ হয়েছে।

সেই আমি এখন এই তিনকাল গিয়ে এককালে ঠেকে ওনার কিশোরকাহিনি গুলো পড়ে পড়ে চোখে জল আসে। দেখুন দেখি কী মুসিব্বতের ব্যাপার!

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

তার-ছেড়া-কাউয়া এর ছবি

হে হে। আপনার মজা নষ্ট করে দেই। ফরাশউদ্দিন (এইটাই ছিলো মনেহয় নাম) দের দেয়া স্কুলের কিছুই করতে পারবে না সরকারী কর্মকর্তাগুলো। কারণ এক রাতের মধ্যেই কাত স্কুল সোজা করে ফেলবে হারুন ইঞ্জিনিয়ার এন্ড কোং। হে হে হে।
আর বাকিরা স্যারের সব ভালো বইগুলোর নাম বলে দিয়েছে। নতুন করে কিছু বলার নাই।
স্যারকে একবার একদম কাছ থেকে দেখেছিলাম (চাচার লেখা বইয়ের প্রকাশনা উতসবে)। ক্লাস ৮ এ পড়তাম। তখন তার-ছেড়া ছিলোনা। তাই ভয়ে কোন কথা বলতে পারি নাই। এখন অনেক আফসোস হয়।

তুলিরেখা এর ছবি

হাসি
স্কুল সোজা করে দেয়ার ব্যাপারটা তো কালই পড়ে ফেললাম।
যত্ন নিয়ে করতে পারলে খুব ভালো বাচ্চাদের মুভি হতো এই গল্পটা থেকে।
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

মানুষ চাইলে না পড়ে থাকতে পারে? বাংলায় লেখা বই। বাঙালির আগ্রহ থাকবে না? কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, রাষ্ট্র, মন্ত্রণালয়, প্রকাশকের জোট ইত্যাদি ইত্যাদি কি মানুষের চাহিদাটাকেও নিয়ন্ত্রণ করে?


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বিজ্ঞান বলে চাহিদা থাকিলে যে কোন প্রকারে সরবরাহ হইবেই। যদি সত্যি সত্যি চাহিদাটাই না থাকে তাহলে ব্যাপারটা বেশ ইন্টারেস্টিং। তখন চাহিদাকে নিয়ন্ত্রণ করার টুলটা কী সেটা জানা দরকার হয়। বেশ আগ্রহজাগানিয়া গবেষণা হবে একখানা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তুলিরেখা এর ছবি

মানুষের চাওয়াটাকে নিয়ন্ত্রণ করে আসলে অনেক কিছুই।
প্রাপ্তিযোগ্যতা, অর্থনীতি, সমাজ, সমাজের মগজধোলাই---সবকিছুই।
কত পরিমাণ লোক যে মগজধোলাই হয়ে বসে আছে তা যদি জানতেন, চমকে উঠতেন।
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

১ ...

জাফর স্যারের সেরা বই হচ্ছে "আমার বন্ধু রাশেদ" ... এইটা নিয়ে কোন সন্দেহ নাই এবং থাকতে পারে না দেঁতো হাসি

যদি না পড়ে থাকেন তাহলে এইখান থেকে নামায়ে পড়ে ফ্যালেন ...

এই বইটা নিয়ে চমৎকার একটা ব্লগ আছে সচলেই, সেইটাও পড়তে পারেন ... তবে স্পয়লার না চাইলে আগে বইটা পড়ে তারপর ব্লগ পড়বেন ...

২ ...

আরো কয়েকটা বইয়ের লিংক না দিয়ে পারলাম না ... যদি না পড়ে থাকেন তাহলে পড়ে ফ্যালেন দেঁতো হাসি

হাতকাটা রবিন

দুষ্টু ছেলের দল

প্রেত [এইটা পিশাচ-কাহিনী]

বিজ্ঞানী সফদার আলীর মহা মহা আবিষ্কার [কমেডি সায়েন্স-ফিকশন, অন্য সাই-ফাইগুলির ফরম্যাট থেকে আলাদা]

৩ ...

স্যারের সেরা লেখাগুলির মধ্যে অবশ্যই তারঁ ছোটগল্পগুলি, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা ছোটগল্পগুলি থাকবে ... চেষ্টা করেও এই বইগুলির কোন ই-বুক পাই নাই, কোন মুমিন বান্দার সন্ধানে থাকলে লিংক দিয়ে কৃতার্থ করবেন ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

বাংলা ভাষায় স্যারের চেয়ে ভালো সাইফাই কেউ লিক্তে পারবে বলে মনে হয় না...

কিংকু ভাই, পারলে তুলিদিরে কপোট্রনিক সুখদুঃখ, যারা বায়োবট, টুকুনজিল, বিজ্ঞানী সফদর আলীর লিঙ্ক দিয়ে দেন...

_________________________________________

সেরিওজা

তুলিরেখা এর ছবি

এগুলি সব পড়েছি, ওনার ৯০টার এর বেশী বই অনলাইনে, সেগুলি সব পড়ছি।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা গল্পগুলি আমারও পড়ার ইচ্ছা।
ভালো থাকবেন।

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

শিশিরকণা এর ছবি

আমার বন্ধু রাশেদ যে কতবার পড়লাম!! প্রতিবার শেষ পাতায় এসে চোখের পানি মুছি। উনার মেয়ে ইয়েশিম ইকবাল এর ইংরেজি অনুবাদ করেছে। এই বিদেশে দ্বিতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশি বাচ্চাগুলো যারা বাংলা পড়তে পারে না, তাদেরকে আমি এইটা গিফট করি।
এই চমৎকার বইগুলোর অনুবাদ থাকা দরকার।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

শিশিরকণা এর ছবি

ব্যস্ততার কারণে তাঁর লেখায় মনোযোগ কমে গেছে। প্রকাশকদের ঠেলায় যেসব লেখা হয় সেগুলোও মান ধরে রাখা হয় না। কিন্তু তারপরেও উনি আমাদের প্রজন্মের সবার অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় একজন মানুষ, কারন তিনি এই বইগুলোর মধ্য দিয়েই আমাদেরকে শিখিয়েছেন দেশকে বুকের মধ্যে ধারণ করতে, স্বপ্ন দেখতে, সেই অপূর্ব অনুভূতির সাথে এর আগে কেউ আমাদেরকে এভাবে পরিচয় করিয়ে দেয়নি।

আর কিছু না হোক, তার মত কর্মস্পৃহা পেলেও ধন্য হতাম। পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরে কিছু করবো এই স্বপ্নও তাকে দেখেই বিশ্বাস করে।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

অতিথি লেখক এর ছবি

যদি বলি, আমার শৈশব কৈশর জাফর স্যারের লেখা পড়ে সার্থকতা পেয়েছে, খুব একটা বাড়িয়ে বলা হবে বলে মনে হয় না। প্রতিটা লেখায় আশ্চর্য আশাবাদ আর সারল্য হিরার মত ঝকমক করে ওঠে। ওনার সায়েন্স ফিকশনগুলোর থেকে মানবিক কিশোরউপন্যাসগুলোই বেশি ভাল পেতাম। এখনও 'স্কুলের নাম পথচারী', 'বিজ্ঞানী সফদর আলীর মহা মহা আবিষ্কার', 'টুকি এবং ঝায়ের (প্রায়) দুঃসাহসিক অভিযান', 'বাচ্চা ভয়ংকর কাচ্চা ভয়ংকর' বইগুলোর কথা ভাবি, সেই পুরনো ভাল লাগায় মনটা ভরে ওঠে। ওনার ভৌতিক কাহিনীগুলোও অসাধারণ- 'প্রেত' আমি তিন-চারবার পড়েছি, তবু এখনো সেই বইটার প্রতি একটা অদ্ভুত আকর্ষণ বোধ করি। এই বইটা হরর-প্রেমীদের জন্য আমার অবশ্যপাঠ্য বলে মনে হয়। একটু বড় বড় হতে হতে যখন ওনার লেখার মহত্ত্ব বোধ করতে শিখলাম, বই পড়তে পড়তে শতবার ওনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছি। এখনো জানিয়ে যাই।

সাবিহ ওমর এর ছবি

টুকি-ঝা আর সফদর আলী-- এগুলা মানুষে লিখে কেম্নে? একটা মানুষ কতটা ভাল লেখক আর কতটা ভাল বিজ্ঞানী হলে এরকম লিখতে পারে, সেটা চিন্তা করতে গিয়েই তো ভেবড়ে যাই।

তুলিরেখা এর ছবি

সত্যি।
চমৎকার সব লেখা।
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

তুলিরেখা এর ছবি

"রাজু ও আগুনালির ভুত" পড়তে পড়তে একজায়গায়
"মুড়ি জিনিসটা খেতে খারাপ না কিন্তু কখন খাওয়া বন্ধ করতে হবে তা বোঝা যায় না" পড়তে পড়তে খুব হাসছি।
হাসি
----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অদ্রোহ এর ছবি

স্যারের কিছু ছোটগল্প আসলেই মাস্টারপিস, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিকগুলো।

--------------------------------------------

আজি দুঃখের রাতে, সুখের স্রোতে ভাসাও তরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

তাসনীম এর ছবি

কপোট্রনিক সুখ দুঃখ আর দীপু নম্বর টু মিস করবেন না।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তুলিরেখা এর ছবি

না এ দুইখান মিস করি নাই। হাসি
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

টিউলিপ এর ছবি

এখানে বইয়ের নাম পড়তে পড়তে একটা বইয়ের নাম নেই দেখে একটু অবাক হলাম। "ট্রাইটন একটি গ্রহের নাম"। অবশ্যপ এটা আমার পড়া প্রথম জাফর ইকবালের প্রথম বই বলে আমার ভাল লাগাটা অন্যরকম, তবু পড়ে দেখতে পারেন।
___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

সাবিহ ওমর এর ছবি

আমার নয় নয় শূণ্য তিন! লি-রয়...আমার কিশোরবেলার নায়ক! এর কাছাকাছি 'মহাকাশে মহাত্রাস'-এর জাহিদ-কামাল, ক্রোমিয়াম অরণ্যের নায়ক, নিঃসংগ গ্রহচারীর সুহান (ওঃ কী রুমান্তিক হাহা)...

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

'আপত্তি জানান' বোতামে চিপি দিতে গিয়াও দিলাম না... মডুদের নিকট আবেদন, এই ব্যাটা আমায় প্রায়শই ব্যক্তি আক্রমণ করে। এর একাউন্ট জব্দ করা হোক দেঁতো হাসি

_________________________________________

সেরিওজা

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

হো হো হো
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

বাউলিয়ানা এর ছবি

চলুক

কোথায় যেন পড়েছিলাম, "আমার বন্ধু রাশেদ" অবলম্বনে চলচ্চিত্র তৈরী হচ্ছে। তাহলে দারুন একটা কাজ হয়। আশা করি সেটাও আপনার ভাল লাগবে।

তুলিরেখা এর ছবি

"আমার বন্ধু রাশেদ" নিয়ে চলচ্চিত্র হলে খুব ভালো হয়। অবশ্যই দেখবো।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

মর্ম এর ছবি

একটু অফটপিক, তবু পড়তে পড়তে মাথায় এসেছিল তাই বলছি,

হুমায়ূন আহমেদের ছোটদের জন্য লেখা বইগুলো পড়েছেন?
সময় সুযোগ আর ইচ্ছা থাকলে পড়ে দেখতে পারেন-

হিমু মামা, বোতল ভূত, সূর্যের দিন, ভূত ভূতং ভূতৌ, নীল হাতি, নুহাশ ও আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপ, ভয়ংকর ভুতুড়ে- আরো আছে, নাম মনে নাই!

মহম্মদ জাফর ইকবাল নিয়ে বলার কিছুই নাই, সবাই মিলে বলে ফেলেছে!!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

তুলিরেখা এর ছবি

যেগুলো বললেন তার কিছু কিছু পড়েছি, নীল হাতি হিমু মামা এইসব। তেমন জুইতের লাগে নাই। মন খারাপ
তবে হুমায়ুন আহমেদের পুরানো বড়দের লেখা ভালো লাগে। পুরানো কিছু হিমু আর পুরানো সেই আশ্চর্য উপন্যাস দু'খানা, নন্দিত নরকে আর শঙ্খনীল কারাগার।

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

ইগল এর ছবি

জাফর ইকবালের প্রথম বইটার নাম বা লিংক কেউ দিলে কৃতজ্ঞ থাকব। আমি পাবলিক লাইব্রেরীতে পড়েছিলাম। খুব সম্ভবত তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের লেখা। মানব শিশু ভক্ষণ টাইপের (জঘন্যবিভৎসপৈশাচিকসাইফাই না কি জনরা আমি জানিনা) ব্যপার নিয়ে ছিলো।

দ্রোহী এর ছবি

আমি যতদূর জানি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে মুহম্মদ জাফর ইকবালের "কপোট্রনিক ভালোবাসা" গল্পটি প্রকাশিত হয়। পাঠ প্রতিক্রিয়া হিসাবে কোন এক পাঠক দাবি করেন গল্পটি বিদেশী গল্পের অনুবাদ। পাঠকের অভিযোগের জবাবে মুহম্মদ জাফর ইকবাল একই চরিত্র ও ঘটনাবলী নিয়ে আরো কয়েকটি গল্প লিখেন। তার ভাষায় তিনি "কপোট্রনিক গল্পের কুটির শিল্প" শুরু করে দেন। পত্রিকায় প্রকাশিত গল্পগুলো পরবর্তীতে সংকলিত করে "কপোট্রনিক সুখ দুঃখ" বই নামে ছাপা হয়।

মানুষের বাচ্চা কেটেকুটে খেয়ে ফেলা গল্পটির নাম "ছেলেমানুষী"।


কাকস্য পরিবেদনা

ইগল এর ছবি

হ্যাঁ "ছেলেমানুষী" !

আমারও ঠিক মনে নেই। তাহলে কপোট্রনিক সুখ দুঃখ ই হবে। এতকিছু মনে রাখেন কিভাবে!

উত্তরের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ দ্রোহীদা।

পড়াচোর [অতিথি] এর ছবি

দুষ্ট ছেলের দল আর টুকুনজিল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।