সময় থমকে যায় কখনো। চারপাশের কোলাহল নিচু হতে হতে একসময় মিলিয়ে যায়। স্তব্ধ হয়ে যায় চারদিক। দপ করে চোখ খুলে আমি নিজেকে একেবারেই অন্য জায়গায় আবিষ্কার করি। যেখানে রাস্তা পরিষ্কার করার ট্রাকের লক্কর ঝক্কর মার্কা শব্দ নেই, পানি উষ্ণ করার যন্ত্রের বিরক্তিকর ফোঁসফোঁস শব্দ নেই। কোনো উৎপাত নেই। চোখের সামনে এক অবারিত প্রান্তর। প্রচণ্ড সবুজ। ছোট ছোট ঘাস। নাকে এসে লাগে সেই ঘাসের গন্ধ। বু...
১
আজকে সকালে অফিসে এসে দেখি, বৃহস্পতিবার একটা কাজে ভুল করেছি। কাজটার দায়িত্ব ঠিক আমার ছিল না, সুতরাং আমার কোন গালি, বকা ইত্যাদি খাওয়াও হয় নাই।
কিন্তু দোষবোধ আর লজ্জায় বসে থাকতে পারতেসি না।
আমার আগের সুপারভাইজর আমাকে নিয়মিত বলতো এই 'গিল্ট ট্র্যাপ'-এর কথা। বলতো, এটা দিয়ে মানুষ আমাকে দিয়ে কাজ আদায় করে নেয়, আমিও মানুষকে দিয়ে কাজ আদায় করে নেই। তবে সচেতনভাবে এইটা ব্যবহার করাই ভাল।
...
আমি যখন বই কিনি, সেটা খুব বিরক্তিকর। দোকানের সামনে দাঁড়ায়ে অনেকক্ষণ ধরে বই দেখি, চিন্তা করি... অনেক সময় লাগে। তাই এই কাজটা আমি সবসময় একাই করতে চাই, সঙ্গিছাড়া। কিন্তু মেলায় নূপুর নিধিকেও নিয়ে যাই। যথারীতি তারা আমার উপর মহা বিরক্ত। সেদিন তো নূপুর বলেই দিলো মেলায় সে ঘুরতেই পারতেছে না আমার জ্বালায়।
তাই গতকালকে সিদ্ধান্ত নিলাম, আমি বাদ, বসন্ত দিবসে মেলায় আমি নূপুরের পিছু পিছু ঘুরবো, ড...
আমার একটা নীল রঙের সাইকেল ছিল। কোম্পানীর নামটার আদ্যক্ষর ছিল এস্। এমটিবি লেখা ছিল কোথাও, অর্থাৎ মাউন্টেন বাইক। পাহাড়ী এলাকায় চালিয়ে নামের সার্থকতা যাচাই করা হয় নি।
আত্মবিশ্বাস শব্দটা আমার অভিধানে নেই, থাকলেও ভুল বানানে। তবু প্রাক্তন প্রাথমিক স্কুলের মাঠে আছাড় খেতে খেতে কিভাবে যেন শিখেই ফেললাম সাইকেল চালানোটা। ফাইভ কি সিক্সে পড়ি তখন। ভোরবেলা বাবা নিয়ে যেতেন সামনে বসিয়ে। ...
প্রস্তাবনা
সত্যিকার অর্থে ইতিহাসের কোনও মূল্যায়ন হয় না। ইতিহাস স্বকালের মূল্যায়ন। করতে পারলে ইতিহাস, নয়তো যেমন যাচ্ছে যাক। তাই, আমি খুব একটা মে ৬৮’র ফল কিংবা অফল কোনোটা নিয়েই ভাবি না। মে ৬৮ সফল না বিফল। ক্ষণস্থায়ী না দীর্ঘস্থায়ী। কিচ্ছু না। কোথায় কোন ফরাসি দেশে ছাত্রজনতার পাগলামি, বুনো কীর্তিকলাপ। বুনো বেড়ালপনাও বলতে পারেন, ওয়াইল্ড-ক্যাট প্রটেস্টের তর্জমায়।
১৯৬৮ সনের ছাত...
[justify]এই লেখাটা লেখার শুরু অনেকদিন আগে। ফান ম্যাগাজিন উন্মাদে কয়েকটা প্যারোডি ও শের লিখেছিলাম। তখনই ইচ্ছেটা আসে, উন্মাদের ভ্যালেন্টাইন ডে সংখ্যাতে একটা শেরগুচ্ছ উপহার দেব। কিন্তু বছরের পর বছর ঘুরেও লেখা শেষ হয় না, ভ্যালেন্টাইন ডে সংখ্যাতেও লেখা আসে না। গত বছরের শেষ দিকে প্রথম আলোর ফান সাপ্লিমেন্ট রস+আলোতে দু'টো প্যারোডি লিখি। জানুয়ারি মাসের শেষে আইডিয়াটা আসে লেখাটা সম্পূর্ণ ক...
সুখ সখিগণ
অরুণ চৌধুরী
প্রতিটি মানুষই এক একটি গ্রহ। প্রতিটি মানুষের ভাবনা, বিশ্বাস, ঘটনা আর জীবনযাপন আলাদা। মানুষকে আবিষ্কারের তাই শেষ নেই। আমাদের বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের সহশিল্পী অভিনেত্রীদের নিয়ে এই ধারাবাহিক রচনা...। যদি সচল পাঠকদের ভালো লাগে, তবে সবার আগে এখানে পোস্ট করেই তবে অন্য কাগজে পাঠাবো।
নাকের পাশে, গালের ওপর আঁচড়। খামচি খাওয়ার মতো। বেশ অনেকটা জায়গা জুড়ে লা...
অর্থে দরিদ্র মানুষদের ভুলে থাকার মতো সাধারন স্বার্থপর মানুষ হয়েও পাশের গ্রামের অষ্টম শ্রেনী পাশ সামান্য একজন আবসার হোসেনকে আমি ভুলতে পারিনা যে কারনে সেটাই বলবো এখন।
আবসার হোসেনকে খুবই সামান্য একটা চাকরী পেতে সাহায্য করেছিলাম বেশ কয়েক বছর আগে। বেতন ছিল মাত্র ১২০০ টাকার মতো। চাকরীটা পেয়ে শহরের কোথাও মেস নিয়ে বসবাস শুরু করে সে। আর আমি নিশ্চিন্ত হই একটা মানুষের উপকার হলো ভেবে...
ভ্যালেন্টাইন -২
(এসএমএসের যুগে একটি টিন-এজ বোকা কবিতা)
তোমাকে খান কয় চিঠি দিয়েছিলাম
তুমি তার দু’খানা দ্যাখালে হোস্টেলে -
ইশ! কী আনন্দ হলো তোমাদের সেদিন বিকেলে!
কেউ হেসে খুন,
ছেলেরা এত সময় পায় কি করে,
এতো সময় নষ্ট করে অকাজে, বাজে-বখাটের
দল সব! কেউ নিশ্চিত, ভাষাটা চোথা মারা,
কোন বিখ্যাত কবিদের চিঠির সংকলন
হবে নিশ্চয়। কারো মনে ক্ষীন অভিমান,
তাকেতো ল্যাখেনি এখনও কেউ। কেউ
বলে ওঠে, ছেল...
"আমরা বলতুম কত্তাবাবা। কত্তাবাবারা অনেক ভাই ছিলেন, তার মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন সবার ছোট। বড়-কত্তাবাবাদের সঙ্গে বিশেষ আমাদের যোগাযোগ ছিল না; দেখেছি তাঁদের অল্পই, কাকে কি বলে ডাকতে হবে তাও কেউ আমাদের শিখিয়ে দেননি। একমাত্র রবীন্দ্রনাথকে আমরা ছেলেবেলায় প্রায়ই জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে পেতুম - তাই তিনিই ছিলেন আমাদের কত্তাবাবা।
কত্তাবাবা জোড়াসাঁকো-বাড়িতে সব সময় থাকতেন না। তিনি থাক...