সুখে থাকতে ভূতে কিলায় - ৪

সাইফ তাহসিন এর ছবি
লিখেছেন সাইফ তাহসিন (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৩/১২/২০০৯ - ১০:২৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে তৈরি হয়ে নিলাম, যেতে হবে বার্ড কলেজ নামের এক কলেজে, জঙ্গলের ভিতরে জনমনুষ্যহীন এক জায়গায়। কোন বাস বা ট্রেনও বলে যায়। তবে প্রাকৃতিক দৃশ্য খুব সুন্দর, আর সেই সৌন্দর্যের কবলে পড়ে নাকি সেখানের ছাত্ররা বছরের পর বছর এক নাম্বার স্থান পেয়ে আসছে। আপনারা হয়ত ভাবছেন, সেখানের পড়াশুনা এত ভালো হলে আপনারা নাম শুনেননি কেন? আপনাদের সন্দেহ অমূলক নয়, এরা প্রথম স্থান অধিকার করেছে গাঞ্জা সেবনের হার ও পরিমান দিয়ে। এমনকি এদের এক নীল নদের দেশের শিক্ষিকা ধরাও পরেছেন গাঞ্জার চাষ করতে গিয়ে। দেখেন ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যে কতটা সহানুভূতিশীল, ছেলেপিলে কষ্ট করে গাঞ্জা যোগাড় করতে শহরে যেতে হবে বলে নিজের সাপ্লায়ারের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছেন, পুরাই কস্কি মমিন (কপিরাইট আলমগীর ভাই)

যাক, আজাইরা প্যাচাল পারার সুযোগ পেলেই আমি খেই হারিয়ে ফেলি, যে কথা বলছিলাম, অনেক হাটাহাটি করতে হবে বলে আমার স্ত্রী বাসায় থেকে যায়, আমি আর উর্মি রওনা দেই, কুইন্স থেকে গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল স্টেশন যেতে হবে পাতাল রেলে, সেখান থেকে মেট্রো নর্থ নামের রেলে করে যেতে হবে পুকিপসি, সেখান থেকে ক্যাবে করে যেতে হবে রেড হুক নামের এক শহরের পাশে বার্ড কলেজে। ৪৫ মিনিট বাস ধাক্কিয়ে ২ বার পাতাল রেল পাল্টিয়ে গিয়ে পৌছালাম গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল স্টেশনে, বাপরে! শহরের ঠিক মাঝখানে বিশাল এক মিলনমেলা এই গ্যান্ড সেন্ট্রাল, আমেরিকার সবচেয়ে বড় রেলস্টেশন এটা। কাজেই হাকুল্লার মত হা করে দেখতে দেখতে আর উর্মির টান খেতে গিয়ে হাজির হই এক অটমেটিক টিকেট মেশিনের সামনে, কি তেলেসমাতি, কার্ড ঢুকিয়ে দিয়ে স্ক্রীনে টিপাটিপি করতেই বের হয়ে আসে টিকেট। তারপর পড়িমড়ি করে দৌড়ে গিয়ে খুজে বের করি ১৬ নাম্বার প্ল্যাটফর্ম, একটা বর্গের ২ পাশে ১৮টা করে মোট ৩৬ টা প্ল্যাটফর্ম ২ তালায়, অর্থাৎ একতলায় ৯টি উত্তর পাশে, আর ৯টি। যখন খুজে পেয়েছি প্ল্যাটফর্ম, ততক্ষনে ট্রেন ছেড়ে চলে গেছে, নিজেকে ১০ টা গালি দিয়ে গিয়ে বসলাম ফুড কোর্টে। খুব দুরে গেলাম না, কারন উর্মির পায়ের ক্ষত তখনও একদম কাঁচা, সেটা নিয়ে বেচারী দৌড়ে বেরাচ্ছে।

এক ঘণ্টা পরে গিয়ে উঠি মেট্রো নর্থে, এসি করা ট্রেন, তবে ভিতরে খুব আহামরি কিছু দেখলাম না। আমাদের মহানগরকে একটু ঝারপোছ করে এসি করলে আর সুন্দর করে রঙ করলে এমনই লাগবে। ট্রেন চলতে শুরু করল, শহর থেকে বের হয়ে ব্রংক্স পার হয়ে হাডসন নদীর পাশ দিয়ে ধেয়ে চলল কুঊঊ ঝিকঝিক, দারুন দৃশ্য। নদী যেমন বাঁক ঘুরে যেতে লাগল, রেললাইনও ঘুরে চলল সমান্তরালে। একটা জায়গা এখনো আমার মনে আছে, একটা প্রাসাদের চূড়া বের হয়ে আছে নদীর বুকে মাথা তুলে, কে জানে কিভাবে তা নদীর বুকে ডুবে গেল। দেড় ঘণ্টা পরে আমরা গিয়ে নামলাম পুকিপ্সি নামের একটা মাঝারী আকারের শহরে। সেখানে গিয়ে ট্যাক্সি নিয়ে পথ ধরলাম উর্মির কলেজের অভিমুখে। প্রায় ৫০ মিনিট পর পৌছে গেলাম বার্ড কলেজে। চারিদিকে চোখ জুড়ানো সবুজ, এতই সবুজ যে কি বলব, মাঠের পর মাঠ যেন সবুজ গালিচা।

একটা বাগান

কলেজের ভেতরে জলপ্রপাত

জলপ্রপাতের আরেকটা অংশ

ইকন বিভাগ

একটা ডর্মের দেওয়াল

সেখানে গিয়ে ক্যাম্পাস সেন্টারে নামিয়ে দিল ক্যাব ওয়ালা, পুরা এলাকাটা একটা পাহাড়ের ধারে, আর পিছনে হাডসন নদীর উপত্যকা। উর্মির সাথে গিয়ে কিছুটা আফসোসই হল, বড়ই রোমান্টিক জায়গা, এখানে প্রথম আসা দরকার ছিল প্রেমিকার হাত ধরে। যাক, এসেছি গাড়ি দেখতে, তাই তাকে ফোন করে ডাকা হল, সে বেচারা ১৫ মিনিট পরে এসে হাজির হল। গাড়ি চালিয়ে দেখলাম, ১৯৯৫ সালের মিতসুবিশি গ্যালান্ট। সুন্দর ধাতব ছাই রঙা ছিমছাম একটা গাড়ি, তবে গাড়িটা মনে হয় চালানো হয়নি বেশ কয়েক মাস, ভেতরে কেমন সোদা গন্ধ। তাছাড়া আমার নিজেরও লাইসেন্স নেই, গাড়ী নিয়ে যাবার প্রশ্নই আসে না। গাড়ি পছন্দ হয়ে গেল, তাই ২০০০ ডলার দিয়ে তার কাছে থেকে গাড়ি নিয়ে রেখে আসতে বাধ্য হলাম কলেজের এক পার্কিং লটে।

তারপর সৌভাগ্যক্রমে কলেজের একমাত্র শাটলে চড়ে ফিরতি পথ ধরলাম, কিন্তু স্টেশনের দশ ব্লক দুরে এসে শাটল ঘুমিয়ে পড়ল, তখন যেন বাস আমাকে নিলেই দাড়িয়ে পড়ে, এটা স্বাভাবিক ঘটনা ধরে নিয়ে হাটা দিলাম আমি আর উর্মি। কিন্তু, এক্কেবারে ফিল্মি কায়দায়, "যাত্রী পৌছাইবা মাত্র ট্রেনটি ছাড়িয়া গেল", ২ জনে দৌড়ে আসায়, কোনমতে হাঁপাতে হাঁপাতে গিয়ে বেঞ্চিতে বসে পড়লাম। আগামী এক ঘণ্টায় কোন ট্রেন নেই, ফলে বসে থাকতে হল সেখানেই এক ঘণ্টা, কোন কিছুই করার নেই সেখানে, এমন এক নির্জীব শহর আগে কখনো দেখিনি, এমনকি খাওয়ার একটা জায়গা নেই কাছে পিঠে। কাঠের বেঞ্চিতে কতক্ষন বসে থাকা যায়!

শেষমেষ ট্রেন আসল, আমরা গিয়ে ট্রেনে চড়ে বসলাম, তারপর ছেড়ে দিল, ফিরতে ফিরতে সন্ধা হয়ে গেল, কিন্তু এরপরে ঘটল আমার জীবনে পরা সবচেয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল থেকে বের হয়ে আমরা পাতাল রেলে চড়ে বসলাম, আমাদের সামনে বসেছে ২ কপোত-কপোতি, বসেই যে তারা চুম্বঙ্ক্রিয়া শুরু করল, কি বলব, আমেরিকা এসেছি মাত্র ৩ দিন হল, এভাবে জনসম্মুখে এমন নাটক আগে দেখিনি, তবে খুব মজা করেই বিনে পয়সায় নাটক দেখতে পারতাম, বাধ সাধল আমার উর্মি, একে তো আমার ছোট বোন, ৬ বছরের ছোট, তারপরে পাশে বসে আছে, আর এদিকে উল্টামুখের ২ চান্দুর কোন থামাথামি নেই, যেন আঠা দিয়ে ২ টা মুখ জোড়া দেওয়া। এর মাঝে মেয়েটা বেশি এগ্রেসিভ, এমনভাবে টানা হেচড়া শুরু করল, আমি ভাবলাম, ছেলেটার অন্তত জিভ ছিড়ে চলে আসার কথা। সম্ভবত আমার অস্বস্তি উপলব্ধি করতে পেরে বেচারি ঘুমের ভান করে হেলান দিয়ে বসে রইল, আর ঘুমের ভান করার কারনে আমরা স্টেশন মিস করে চলে গেলাম একদম লাইনের শেষ স্টপে। সারাদিন দানাপানি জুটেনি, এর মাঝে গিয়ে বসে আছি ফ্লাশিং এর এক মাথায়, এদিকে ক্ষিদেয় পেট চোঁ চোঁ করতে করতে এখন বেশ জোরে জোরে আওয়াজ করতে লাগল। ডানপাশে এক মহিলা এসে বসেছিল, আমার পেটের আওয়াজ শুনে তিনি মনে করলেন আমি বায়ু ত্যাগ করে যাচ্ছি, তাই ১ মিনিটের মাথায় উঠে চলে গেলেন।

সারাদিন অনেক দৌড় ঝাপ করে বাসায় ফিরে এসে ধপ করে বসে পড়লাম, এমন অবস্থা, খাবার শক্তিও যেন অবশিষ্ট নেই। তার পরের ২ দিন উইকেন্ড থাকায় মরার মত ঘুমালাম পরে পরে। তারপর লুঙ্গি কাছা দিয়ে তৈরি হলাম, হাসপাতালের বিলিং বিভাগে যাবো, এবার ৩ জনেই গিয়ে হাজির হলাম, এক জায়গায় সিরিয়াল নিলাম, তারপর ১ ঘন্টা পরে ডাক পেয়ে গেলাম, আমার সাথে কাউকে যেতে দিল না। কাজেই অন্ধকারে হাতড়ানো শুরু করলাম ইংরেজী শব্দের জন্যে। তখন আমার এমন অবস্থা, পেটে বোম মারলেও মনে হয় না ইংরেজীতে কিছু বলতে পারব। রুমে ঢুকার আগে একটু থুতু দিয়ে নিজের চোখের কোনা ভিজিয়ে নিলাম, কিন্তু এখানেও বিধিবাম। ভেতরে দেখি একজন দক্ষিন আমেরিকান লোক বসে আছে, আমি তাও সাহস করে এগিয়ে গেলাম। তার সাথে কথা শুরু করেই বুঝলাম, ইনার ইংরেজী জ্ঞান আমার চেয়েও কম। ভাঙ্গা ইংরেজীতে সে আমার কাছে জানতে চাইল কি সমস্যা, আমি ৪০০ ডলারের বিলটা তার সামনে মেলে দিয়ে কান্না কান্না ভাব আনার চেষ্টা করতে লাগলাম, যিনি আমার কথাই বুঝেননা, তিনাকে কথা বলে বুঝাবো কিভাবে? তাও ভাঙ্গা ভাঙ্গা করে বললাম, "আমি ৩ দিন আগে আইছি, সোশাল সিকুরিটি নাইকা, গ্রীন কার্ড অহনো পাই নাই, চাকরি নাই, থাকি একজনের বেজমেন্টে, হে দয়া কইরা থাকপার দিছে।" সে কয়, তো সে করবে? আমি কইলাম, "আরে মিয়াভাই, আমি ৪০০ ডলার দিয়াম কইথিক্কা? আমারে তো কেউ কামও করবার দিবো না যে আমি কিছু টাকা পাইয়া পরে তোমারে এই বিল দিমু"। হে আমারে অনেক ধুনফুন বুঝানোর চেষ্টা করল, কিন্তু আমি কুমিরের মত কামড় মাইরা বইয়া থাকলাম, যতক্ষন না সে বিল কমায়। প্রথমে সে কমায় ৫০ ডলার করে দিল, আমি বল্লাম, "আপনে কি শুনেন নাই, আমি এতক্ষন ধরে কি পেচাল পারলাম?" আরো ৫ মিনিট ভ্যানর ভ্যানর করার পর সে কয়, যাও ১৫ ডলার দিবা। আমি ভাবলাম, এর পরে ছেচড়ামি করলে এই মেহিকানো আমাকে দিয়ে পুরা বিল দেওয়াইতে পারে, কিছুই বলা যায় না, তাই ১৫ ডলারের বিলটা হাতে নিয়ে বের হয়ে আসলাম আর মুখে বিজয়ের হাসি।

বের হবার পথে দেখি টেবিল পেতে কতগুলো লোক বসে আছে, তাদের একজন আমাকে জিজ্ঞেস করল, আমার কোন সাহায্য লাগবে কিনা? আমি জানতে চাইলে সে বলল, হেলথ ইন্সুরেন্স করাতে চাই কিনা? আমি ভাবলাম কোন ফক্করবাজের পাল্লায় পরেছি, কিন্তু পরে সে আমাকে বুঝিয়ে বলল, তারা সরকারের প্রতিনিধি, তারপরে কিছু ফর্ম ধরিয়ে দিল, বুঝলাম, এবার মনে হয় ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করেছে। এদিকে আমার স্ত্রী আর উর্মি তো শুনে পারলে আনন্দে লাফাতে বাকী, আমি বল্লাম, চল, কোথাও খাই এই বিজয়ের আনন্দে। ১৬৪ নাম্বার রাস্তা যেখানে ইউনিয়ন টার্নপাইকের সাথে মিলে, সেখানে একটা 'পপাই' নামের দোকানে ঢুকলাম খেতে, হেল্ভেশিয়ার ব্রোস্ট তখনো চোখে ভাসছে। নিলাম একটা মুরগি ফ্রাই, আলুর ফ্রাই আর কোক। তারপর কোকাকোলার ঝরনার সামনে দাড়িয়ে চিন্তা করতে লাগলাম, এত্ত ফ্লেভার? আমাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে নিশ্চই উর্মির মাথা ইব্লিশ নামক মহা ভালু ব্যক্তিটা মাথা চাড়া দিল, সে এসে নির্বিকার মুখে বল্ল, এটা খান, ডক্টর পেপার, এর মত মজার ফ্লেভার আর হয় না। এ পর্যন্ত বেচারী যা বলেছে, তার সবই ঠিক ছিল। তাই, আমিও নিশ্চিন্তে গ্লাস ভরে ডক্টর পেপার নিয়ে দিলাম এক লম্বা চুমুক। মুখে ঢোকা মাত্র মনে হল, আমি গান্ধি পোকা দিয়ে বানানো কোন বদখত সরবত খাচ্ছি। এমন বাজে জিনিস দোকানে বেচার মানেটা কি ঠিক বুঝলাম না।

লিস্ট ধরে করে যেতে থাকি একটার পর একটা কাজ, আর বাকি সময় টো টো করে ঘুরে বেড়াতে থাকি নিউ ইয়র্ক শহরে। এর মাঝে গিয়ে হাজির হই ড্রাইভিং লাইসেন্সের অফিসে, এখানে একে বলে ডি-এম-ভি (ডিভিশন অফ মোটর ভেহিকেল)। ডি-এম-ভির গেটে বড় বড় করে লেখা "ডোন্ট স্টান্ড অন দ্যা লাইন, বি অনলাইন", দেখে খুব ভালো লাগলেও গেটের আর কাছে যেতে পারলাম না। আমি আগে থেকে ফর্ম নিয়ে এসেছি, কাজেই প্রথম লাইন বেশ গুতাগুতি করে পার হয়ে এগিয়া যায়, ২য় লাইনে দাড়াতে হল সিরিয়াল নাম্বার নেবার জন্যে। আমার সিরিয়াল দিল ৩২৪, অর্থাৎ তখন সকাল ১০ টা বাজে, এর মাঝে ৩২৩ জন আমার আগে লাইন দিয়েছে। বুকে ফুঁ দিয়ে গিয়ে বসলাম, দেখি সবার হাতেই একটা করে বই, বুঝলাম, এখন থেকে আমার হাতেও একটা করে বই নিয়ে ঘুরতে হবে। তারপরে কেটে গেল প্রায় ৫ ঘন্টা, ডাক আর আসে না, কাউন্টারে ডাক পেলাম, গিয়ে দাড়ানো মাত্র সে আমাকে বলে, সোশ্যাল সিকিউরিটি কার্ড, ক্রেডিট কার্ড আর রেসিডেন্টশিপ কার্ড লাগবে। আমি আমার পাসপোর্ট এগিয়ে দিতেই সে মাথা নেড়ে মুখ নাক কুচকিয়ে বলল, তুমি স্টুডেন্ট না হলে তোমার পাসপোর্ট আমাদের কাছে মূল্যহীন। আমি পুরা বেকুব বনে গেলাম। সে আমাকে বলল, সোশ্যাল, গ্রীনকার্ড আর ক্রেডিট কার্ড হলে তারপর আসবে।

আমি এদিকে গাড়ি রেখে এসেছি এক জঙ্গল ঘেরা পার্কিং লটে, অথচ এরা আমাকে লাইসেন্স করতে দিবে না, আমার ইন্টারন্যাশনাল লাইসেন্স বা ঢাকার লাইসেন্সের কোন মূল্যই দিল না। আমি কিংকং হয়ে বের হয়ে আসলাম ডি-এম-ভি থেকে। তারপর ঘুরতে ঘুরতে এসে পাতাল রেল থেকে নামলাম গ্র্যান্ড এভিনিউ-নিউটন এর স্টেশনে। সেখানে একটা টার্গেট আছে, আমাদের গন্তব্যস্থল। সেখানে নেমে ভেতরে গেলাম, যার দামই দেখি, খালি ৭০ দিয়ে গুন দেই আর ঢোক গিলতে থাকি, কিন্তু গলায় কি যেন আটকে থাকে, হাজার ঢোকেও সেটা আর নামে না। এর মাঝে ছোট ঘরের ডাক পেয়ে গেলাম ছোট ঘরে। গিয়ে দাড়িয়েছি, আমার পাশে পঞ্চাশোর্ধ এক ভদ্রলোক ইউরিনালে দাড়িয়ে আছেন, আর ক্রমাগত গোঙ্গাচ্ছেন, আমি তো ভয় পেয়ে গেলাম। আমি কিছুটা লজ্জা পেয়ে ইউরিনাল বাদ দিয়ে গিয়ে বুথ মার্কা টয়লেটে ঢুকে পড়লাম। আসলে এই লোকের ঘটনাটা বোঝার জন্যে গ্যাঁট হয়ে বসে থাকলাম কমোডে। আর আমার নড়াচড়ার কারনে ফ্লাশের সেন্সর মিনিটে ২-৩ বার করে হুশ হুশ করে পানি ছাড়তে লাগল। প্রায় ৫ মিনিট গোঙ্গানির পরে তিনি বিদায় নিলেন। কি এক পাগলের দেশে আমদানী হলাম আমি?

এভাবে কেটে যেতে থাকে দিনকাল, প্রায় একমাসের মাথায় আমার সোশ্যাল সিকিউরিটি আর গ্রীন কার্ড চলে আসে, ২ টা কার্ড হাতে পেয়েই আমি দৌড়াই ডি-এম-ভি, গিয়ে লারনারস পারমিট নেই। তারপর এসে বাড়িওয়ালা আংকেলকে জিজ্ঞেস করি, এখন রোড টেস্টের কি ব্যবস্থা? উনি বললেন, "তোমাকে এমনিতেও কোন ড্রাইভিং স্কুলের শরনাপন্ন হতে হবে লাইসেন্স করানোর জন্যে, ২০ ঘন্টা গাড়ি চালানোর সার্টিফিকেট ছাড়া আমাকে রোড টেস্টে বসতে দেওয়া যাবে না। কাজেই গেলাম জ্যাকসন হাইটসের একটা বাঙালি ড্রাইভিং স্কুলে, নাম প্লাটিনাম। সেখানকার মালিক আমার আংকেলের পূর্বপরিচিত। যেয়ে পরিচিয় দিলাম, তিনি বললেন, ২০০ ডলার ফেল, ৫ টা লেসন নাও আর রোড টেস্টে তিনি নিয়ে যাবেন, আর আজকে ১ ঘন্টা পরে ক্লাস আছে, সেটা করতে হবে। গিয়ে বসলাম সেই ক্লাসে, ৬-৭ ঘন্টার এক ক্লাস, উনারা টেনে সেটাকে ২ ঘন্টা বানিয়েছেন। কিছুই না, কিছু ভিডিও দেখতে হয়, আর ডি-এম-ভি ম্যানুয়াল নিয়ে তিনি আলোচনা করবেন। ক্লাসে আমার মত আরো অনেক আবাল ভোদাই এসে বসল। সামনের রোতে বসল কয়েকজন মহিলা। তারপর সেই ভদ্রলোক এসে ভিডিও ছেড়ে দিয়ে গেলেন। সেটা চলল প্রায় ৪০ মিনিট। এরপর তার ক্লাস, তিনি এসে একটা করে অংশ আলোচনা করেন, প্রশ্ন করেন, কিন্তু প্রশ্নের কোন উত্তর আমাদের কাছে শুনতে চাননা। শুধু সামনের রোতে যারা বসেছেন, তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন। এই বেচারার বয়স কম করেও ৫০, আর তখন তার চলছে মাধ্যমিক জীবনের উচ্চমাধ্যমিক সমস্যা। বুঝেন ঠ্যালা, প্রত্যেক প্রশ্ন করে তিনি ভাবীদের দিকে তাকান, তারপর চোখ নাচিয়ে ভুড়ি দুলিয়ে তাদের উত্তরে ভূল ধরেন, আর এদিকে লোল পড়ে দুনিয়া ভেসে যায় আরেকটু হলে। এত ভেজালের পরেও এক সময় এই ক্লাস শেষ হয়, আমি উঠে দাড়াই, তারপর কাউন্টারে গিয়ে বলি, আমার রোড টেস্ট কবে? তিনি বলেন, ২ মাস পরে। আমার মাথায় যেন কেউ আটার বস্তা ফেলে দিয়েছে, আমি তাকে বল্লাম, আমার ২ মাস বসে থাকলে চল্বে না, গাড়ি কিনে ফেলেছি, কিন্তু কে শুনে কার কথা, এক ভাবী এসে পাসে দাড়াতেই সে ব্যাটা লুল্পুরুষি শুরু করে দেন।

রাগ চেপে বের হয়ে আসি, মনে মনে ঠিক করে ফেলি, এর জন্যে বসে থাকলে চলবে না। তাই পরের দিন সকালে ডি-এম-ভি গিয়ে গাড়ি রেজিস্টার করি লারনার্স পারমিট দিয়ে। আগের বিকালেই ইন্সুরেন্স কিনে রেখেছিলাম। আমার গাড়ির প্লেট নাম্বার হয় DHA5766. সেটা দেখে আমার মনটাই ভালো হয় যায়। তারপরের দিন রওনা দেই বার্ড অভিমুখে, আবার পাতাল রেল, মেট্রো নর্থ, তারপর বার্ডের শাটল ধরে গিয়ে হাজির হই সেই পার্কিং লটে। তারপর গাড়ির নাম্বার প্লেট বদলিয়ে সেই গাড়ি নিয়ে বের হয়ে আসি। সাথে না আছে লাইসেন্স, আর না চিনি রাস্তা। উর্মি কম্পিউটার ল্যাবে গিয়ে ম্যাপকোয়েস্ট করে নিয়ে আসে, কিভাবে বাসায় যাবো তার বৃত্যান্ত। হাতে ফু দিয়ে বুকে থুতু দিয়ে বের হয়ে পড়ি বার্ড কলেজ থেকে। বের হয়ে নিকটস্থ ওয়াল্মার্টে যাই, কিছু কেনাকাটা করে কিছু মুখে দিয়ে আবার বের হয়ে আসি। ততক্ষনে প্রায় সন্ধ্যা। এরপর ম্যাপকোয়েস্ট দিয়ে যে যাবো, সেটার রুট করা হয়েছে বার্ড কলেজ থেকে, কিন্তু সেখানে যাবো কিভাবে সেটা আনা হয়নি। কাজেই পার্কিং লটে একজনকে পাকড়াও করে দিক চিহ্ন শুনে বের হয়ে পড়ি। তারপর ভাগ্যক্রমে কলেজের শাটল পেয়ে যায়, আর মাইল খানেক আসার পর দেখি রাস্তায় সাইনবোর্ড দেওয়া আছে। সেটা দেখে দেখে বার্ড কলেজে ফেরত আসি। তারপর ম্যাপকোয়েস্ট দেখে রওনা দেই নিউ ইয়র্কের দিকে পুরাই অজানা অচেনা রাস্তা দিয়ে।

(চলবে)


মন্তব্য

শান্ত [অতিথি] এর ছবি

পরের পর্বের অপেক্ষায়.....................

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ঠিকাছে
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

মুস্তাফিজ এর ছবি

পুরোনো কথা ভাবতেই মজা লাগে তাইনা?

.........................................
I think what I think because that's how I am. You think what you think because that's how you are.

...........................
Every Picture Tells a Story

সাইফ তাহসিন এর ছবি

মুস্তাফিজ ভাই, কি বলব, নিজেকে যখন বাক্সবন্দী মনে হয়, তখন অতীতের সুখ দু:খের স্মৃতিতে ডুব দিয়ে কিছুটা সময়ের জন্যে বর্তমান থেকে ছুটি নেই। আর অন্যকিছু লেখতে পারি না, তাই নির্লজ্জের মত নিজের কথাই বলে যাই। অসংখ্য ধন্যবাদ গুরু লেখা পড়ার জন্যে।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

প্রবাসিনী এর ছবি

চলুক
________________________________________________

হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে

________________________________________________

হইয়া আমি দেশান্তরী, দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী রে

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ধন্যবাদ, আশাকরি দেশে গিয়ে আনন্দ ফুর্তিতে কটা দিন কাটিয়ে আসতে পারবে
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনিকেত এর ছবি

ওরে-এ-এ-এ-এ
দারুণ সব রোমাঞ্চকর ঘটনা জানতে পারছি
অনবদ্য তোমার বর্ণনা-ভঙ্গী।
কিন্তু সবচেয়ে মজাটা কি জানো?
সবচেয়ে মজার জিনিসটা হল তোমার লেখার স্টাইলটা।
লেখা পড়লেই বোঝা যায়, এই লেখা অনায়াস, প্রগলভ।
চেষ্টাকৃত কোন কিছু নেই। ঠিক যেন আড্ডায় বসে তাস পেটানোর ফাঁকে ফাঁকে গল্প চলছে---

এইটাই সবচাইতে মজার
এইটাই সবচাইতে জরুরী

মাভৈঃ

সাইফ তাহসিন এর ছবি

আসলেই বস চেষ্টাকরেও আমি কিছু লেখতে পারি না। নিজে না দেখে থাকলে সেটা লেখলে অবাস্তব পাগলের প্রলাপের মত হয়। অনিকেতদা, অসংখ্য ধন্যবাদ লেখা পড়ার জন্যে আর সময়ে অসময়ে সাহস দিয়ে যাবার জন্যে।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

Ctrl + c অনিকেত'দার মন্তব্য Ctrl + v দেঁতো হাসি
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ওরে দুষ্টু, আমার ছাইপাশ লেখা পড়লে হবে শুধু, দাঁতভাঙ্গা কঠিন বিষয়গুলা সহজ করে বুঝায় লেখতে হবে না? মিয়া অনেকতো ফাঁকি মারলা, এইবার ছাড়ো একটা লেখা।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

হিমু এর ছবি
সাইফ তাহসিন এর ছবি

নামায় দিমু তাহলে আরেক পর্ব অতি শীঘ্রই
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

সাফি [অতিথি] এর ছবি

খুবই সুন্দর যায়গাতো

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ছবি খুজে পাচ্ছি না, নাহলে আরো কিছু ছবি জুড়ে দিতাম, খুব শান্তি শান্তি ভাব ওয়ালা জায়গা। তাছাড়া সচলে এখন যে মানের ছবি আসে, আমার মত বেহায়ারও ছবি দিতে লজ্জা করে মন খারাপ
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অতিথি লেখক এর ছবি

আর তখন তার চলছে মাধ্যমিক জীবনের উচ্চমাধ্যমিক সমস্যা

আমার এইপোস্টে জয়েন করতে মনে চায় গো মনু। কু্নহানে CV ড্রপ করন লাগব কও দিনি...

---- মনজুর এলাহী ----

সাইফ তাহসিন এর ছবি

কুনু সমেস্যা নাইকা, লেহা শুরু কইরা দেন, আপনা আপনি আমাগো রাস্তা মিল্লা যাইবোগা চোখ টিপি

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হা হা হা হা... খুব প্রাঞ্জল... ভাল্লাগলো... ছবির জায়গাটা তো সুন্দর খুব... ইশ্ জীবনেও যাওয়া হবে না মন খারাপ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সাইফ তাহসিন এর ছবি

আপনার মন্তব্য পড়ে মন খারাপ হইল নজরুল ভাই, তবে আমি মনে প্রাণে দোয়া করব যেন আপনার এদেশে বেড়াতে আসা হয়, টিকেট ঠুইকা চইলা আসবেন, ঘুরাঘুরির দায়িত্ব আমার দেঁতো হাসি
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

খোদা কি কছম, পাঙ্খা লেখা হইছে। ঐ পাঙ্খার বাতাসে শরিল্লের চামরা হুদ্দা উড়বার লাগছে।

একটা কলেজের ক্যাম্পাস ঘিরা যদি ঝরণা, পাহাড়, নদী আর এত্ত সবুজ থাকে তবে ছাত্র-ছাত্রীরা গাঞ্জা খাইবোনা তো কি লেবেনচুস খাইবো??? আমি ঐ জাগাত যাইতাম চাই। ঐ জায়গা দেইখা ফটুক তুলতে মঞ্চাইতাছে।

আপনার ফটুক গুলান ভালা হইছে, ছফদার ডাগতর সাব।

================================================
সকলই চলিয়া যায়,
সকলের যেতে হয় বলে।

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

সাইফ তাহসিন এর ছবি

বস!! আপনার মন্তব্য বা লেখা যেটাই পড়ি, হাহাপগে হইয়া যাই, আপনার মন্তব্যগুলান দিয়া 'মধ্য রাতের দমফাটানো হাসির কৌতুক' নামে বই বাইর করতে মন্চায়। আর কথা ঠিক, এমন পরিবেশে গেলে গাঞ্জা না খাওয়াটাই অস্বাভাবিক। আরো কিছু ছবি লটকায় দিমুনে ভবিষ্যতে। আপনে আইয়া পড়েন, নিয়া যামুনে আমি। ছবি ভালু হইসে শুইনা কইলাম আর লইজ্জা পাইলাম। ২০০৫ এ একখান ধরো তক্তা মারো পেরেক ক্যামেরা দিয়া তুলা আলুকচিত্র, তবে একটু আকটু পোস্ট প্রসেসিং করলে ভালু হইত। যেমনে তুলছি, হেমনেই দিছি। আইলে খালি আওয়াজ দিয়েন, এমনসব জায়গায় লইয়া যামু, আলুকচিত্র খিচতে খিচতে যান হালুয়া হইয়া যাইব আপনার দেঁতো হাসি
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

মামুন হক এর ছবি

সাইফতো সিরিজ পুরা জমিয়ে দিলা। কিন্তু এতদিন পরপর একেক্টা পর্ব দাও যে পড়তে গেলে অনেক সময় তাল কেটে যায়। তিনদিনে এক খান করে ছাড়া যায়না ভাইডি?

সাইফ তাহসিন এর ছবি

কি যে কন না বস, জমাইলাম কই? সিরিজ তো কেবলে শুরু, তবে লেখা চলতে থাকবে। এই লেখাটাও রেডি ছিল, কিন্তু ছবি খুজে পাচ্ছিলাম না, আর আমার বাসায় আমার এক ছোট ভাই এসেছিল পরীক্ষা দিতে, তাকে নিয়ে মেতে ছিলাম এ কয়দিন। তবে আপনে আমার গুরু, আপনাকে ডিঙ্গায় লেখা দেওয়া বেয়াদবি হয়ে যায় কিনা, তাই আপনে লেখা দিলেই আমি আরেকটা ছাড়ব। আপনে আর আমি পাল্লা দিয়ে লেখি, কি বলেন?
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

শেখ নজরুল এর ছবি

আগের পর্বগুলো যে কারণেই হোক পড়া হয়নি। এ পর্বটি আলাদা ভেবেই পড়লাম। ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।

শেখ নজরুল

শেখ নজরুল

সাইফ তাহসিন এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ লেখা পড়ার জন্যে, খুব একটা অসুবিধা হবার কথা না বুঝতে, তারপরেও ভালো লেগেছে জেনে মনে সাহস পেলাম।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

রাহিন হায়দার এর ছবি

এরা প্রথম স্থান অধিকার করেছে গাঞ্জা সেবনের হার ও পরিমান দিয়ে। এমনকি এদের এক নীল নদের দেশের শিক্ষিকা ধরাও পরেছেন গাঞ্জার চাষ করতে গিয়ে।

আসলেই, পুরাই কস্কি মমিন! ধরা পড়ার লেইগ্যা শিক্ষিকারে মাইনাস।

আপনার এই সিরিজটা সচলের নীড়পাতায় দেখলেই মেজাজ খুশ হয়ে যায়। চললে হবে না, দৌঁড় চাই।
________________________________
তবু ধুলোর সাথে মিশে যাওয়া মানা

সাইফ তাহসিন এর ছবি

সেই মহিলার খবর শুনে আমি বিশ্বাস করতে পারি নাই প্রথমে, এক অনুষ্ঠান চলাকালে তার বাসায় দাওয়াত পেয়ে গিয়েছিলাম, মহিলা খুব ভদ্র শান্তশিষ্ট ছিল, ফাঁকতালে নীলনদের বিখ্যাত বেলি নাচের ভিডিও ও দেখিয়েছিলেন (নিজে নাচেন নি চোখ টিপি ), তবে কোন সন্দেহ নাই, পুরাই [কস্কী]

আগেও কইসি আবারো কই, সচলায়তন আমার কাছে একটা পরিবারের মতন, সবাই সবাইকে আপন করে নেই এখানে এসে কত সহজে, তারপরেও এমন প্রশংসা পেয়ে দাঁত, আলাজিহ্বা বের হয়ে যায়। ভালো থাকো বস আর বেশি বেশি লেখো।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

তানবীরা এর ছবি

ছবিগুলো বড়ই সৌর্ন্দয। পরের পর্বগুলোতো আগেই লেখা আছে, মামু কাহিনী নাকি?
ভালো লাগছে পড়তে

**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সাইফ তাহসিন এর ছবি

সচলায়তনে আমার ব্লগ জীবন সার্থক হল আজকে, আমার লেখা নিয়মিত পড়ে আবার সেটা কেউ মনে রাখতে পারে, সেটা জানতে এবং বুঝতে পেরে আজকে আমার খুব আনন্দ লাগতেছে। আপনার অনুমান ঠিক, তবে মামু কাহিনীর সুত্রপাত হয়েছিল আরো প্রায় ৫ মাস পরে। কষ্ট করে লেখা পড়েছেন বলে মেগা ধন্যবাদ! আপনার লেখা কিন্তু ফরয হয়ে আছে!
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

স্বপ্নহারা এর ছবি

ভালু লাগছে! আমার মনে হয় উত্তর আমেরিকা মহাদেশের মানুষের মাথায় চিকন বুদ্ধি কম...সব মোটা! যাউগগা...চালাইয়া যান! তিন বছরের উপর হইয়া গেল আমার এখনো লাইসেন্স নেয়া হয় নাই! সাম্নের মাসে নেয়ার ইচ্ছা!

ফটুকগুলা ভালা হইছে...হাসি
অফটপিকঃ কালকা আপ্নেরে খোমাখাতায় খুঁজতেছিলাম...আবার মাস্কুলোস্কিলেটাল পেইন হইছে। দুই রাত ঘুমাই না...কি যে ব্যথা! এইবার ডাক্তার ঠিক ধরতে পারছে...দেঁতো হাসি মাসল রিলাক্সেন দিসে...হাসি

-------------------------------------------------------------
স্বপ্ন দিয়ে জীবন গড়া, কেড়ে নিলে যাব মারা!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

সাইফ তাহসিন এর ছবি

আবার জিগায়, আমার হিসাবে এখানে সাধারন মানুষের বুদ্ধিমত্তা খুব আহামরি লেভেলের না, সম্ভবত ইংরেজীতে কথা বলতে শুনলেই আমরা সাহেব ধরে নেই ব্রিটিশ শাসনের কারনে চোখ টিপি, তোমার তো মিয়া আমার আশে পাশে থাকনের কাম, ১ মাসের মধ্যে লাইসেন্স করায় দিমু। না কইরা যাইবা কই? প্যানর প্যানর কইরা কানের খইল নড়ায় দিমু না!!

আসলে অনেকদিন যাবত খোমাখাতায় ঢুকি নাই, অফিসে লগাইতে দেয় না, বাসায় আইসাও সচলে ঢুইকা বইয়া থাকি। আমার জি-মেইল এডায় নিও, এইখানে সবসময় পাইবা, আর ফুন নাম্বার দেওয়া আসে খোমাখাতায়, সেইটাতেও কলাইতে পারো।

ব্যাথা কোন খানে, না জেনে অ্যাডভাইস করতে পারতেছি না, ঘাড় পিঠ বা মাজা হইলে বিশ্রাম + মাসাজ + বাথটাবে গরম পানিতে ম্যাগন্সেয়াম সালফেট দিয়া শুইয়া থাকবা, পানি ঠান্ডা হইতে নিলে আবার গরম পানি দাও। আর আশে পাশে কোলস্‌ বা ওয়াল্মার্ট থাকলে সেখানে যাও, দেখবা, একটা সিয়াৎসু মেসেজ প্যাড থাকবে ডিসপ্লেতে, সেখানে ঘন্টাখানেক বসে ফাউ ফাঊ গা ডলাডলি করায় আসো চোখ টিপি

যদি পেটে ব্যাথা হয়, তাহলে তো ডাক্তার সিরিয়াসলিই ডিল করার কথা। ছাত্রদের সাধারনত যারা দেখে তারা তো চিনে ২ টা ওষুধ, টাইলেনল আর রিলাক্সেন। গিয়া যদি কও, কাইল্কা সারারাত বায়ু ত্যাগ করসি, তাইলেও টাইলেনল দিবে, ঘাড় ব্যাথা কইলেও একই ওষুধ দিবে। তোমার পুরা বৃত্তান্ত জানলে ভালো হয়। জিমেইলে না চাইলে খোমাখাতায় মেসেজ কইরো।

saifmannaএটgmailডটcom
(তিন-শুন্য-দুই)- দুই-দুই-নয় তিন-তিন-দুই-আট (মুঠোফোন)
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

তোমার এই পোস্ট না পড়ে ঘুমাতে গেলে অন্যায় হতো। এত হাসির পোস্ট পেট-ভরা-ভাত হজমে সহায়ক। কয়েক জায়গায় শব্দ বাদ পড়েছে। তবুও ফ্লো ঠিক আছে। চলুক

সাইফ তাহসিন এর ছবি

পিপিদা, অনেক অনেক ধন্যবাদ, আমি তো ভাবছিলাম আপনে ঘুমান না, সারাদিন রাত কাজ করেন। যখনই জিটক খুলি, দেখি প্রকৃতিপ্রেমিক অনলাইন নাহলে আপনার অন্য একাউন্ট অনলাইন। সেগুলা না থাকলেও সচলে অনলাইন থাকেন। আপনারা ভালু পান দেইখাই তো লেখি, তবে ভুল ধরায় দিলে তা ভবিষ্যতের ভুল দুর করতে সাহায্য করবে, কাজেই কোপায় দিবেন পুরা। আমার লেখা যদি আপনার জন্যে হজমি হিসাবে কাজে দেয় তাহলে আমার লেখা সার্থক দেঁতো হাসি
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

ভেজা নক্ষত্র [অতিথি] এর ছবি

ভাইজান অতো কষ্ট করে বার্ড কলেজে ক্যান? মাউন্ট এভারেষ্ট ও তো আরও সহজ..আবার একটা ইতিহাস ও হইতো।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

হো হো হো হো হো হো, আপনে পথ দেখায় নিবেন? তাইলে অবশ্যই যাবো। আর ইতিহাস হবে কেন? এভারেস্ট এখন বগা লেকের মত যে কেউ যাইতে পারে। পাত্তি ঝাড়বেন, হেলিকপ্টারে কইরা নিয়া চূড়ার কাছে নামায়া দিবে। একটু হেটে গিয়ে এভারেস্টের চুড়ায় খাড়াইবেন চোখ টিপি, এর মাঝে আমি কোন অ্যাডভেন্চার দেখতে পাইতেছি না। বরং আমার এখানে আসেন, টার্কি পয়েন্টে নিয়ে যাবো, পাহাড় বাইতে চাইলে, কোন ৪২০ নাই, ১০০ ফুট উঠতে জান নিয়ে টানাটানি শুরু হয়ে যাবে।

টার্কি পয়েন্টটার্কি পয়েন্ট

টার্কি পয়েন্টে আরো একটা ছবিটার্কি পয়েন্টে আরো একটা ছবি
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

ভেজা নক্ষত্র [অতিথি] এর ছবি

মিয়াভাই কি রাগ করছেন? আপনি বললেন আমাকে পথ দেখাইতে আবার আপনিই কন হেলিকপ্টারে করে যেতে…আপনিতো সব জানেন…তাইলে এই অধমের লগে কেনো খেলিছেন…..

ভেজা নক্ষত্র

…………………………………………………..
বৃষ্টিটা তুলিতে নিয়ে নদীর জলে আকাঁ ঝুঁকা

সাইফ তাহসিন এর ছবি

রাগ করুম কেন ভাই, মস্কারি করি একটু। হেলিকপ্টারে কইরা এভারেস্ট জয় করার কুনু ইচ্ছা নাই, তাই একটু ফাইজলামি করি আরকি। তয় আপনার নিকখান দেখলেই ভেজা স্বপ্নের কথা মনে হয় কিনা! এত সুন্দর একখান নিক মাথায় আসছে, আপনে লেখেন না কেন? ফাটায়া লেখেন!!

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

গুরু গুরু চলুক।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ধন্যবাদ বস, তুমি কিন্তু সিরিকাস ঋণ খেলাপি হয়ে যাচ্ছো, মাসে ১ টা করে লেখা দাও, আর রেনেট ব্যাটা তো ৩ মাস ধরে আত্মগোপন করে আছে মন খারাপ
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

সচল জাহিদ এর ছবি

অনেক কিছু মিলে যাচ্ছে শুরু থেকে

----------------------------------------------------------------------------
zahidripon এট gmail ডট কম


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

একটু আগেই বলে আসলাম, বস, আপনে শুরু করেন, বিদেশে জীবন কত সুখের, এখানে সোনার হরিণের পিছনে দৌড়ানো কত মজার, সবাই বুঝুক।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

মৃত্তিকা এর ছবি

ভাইয়া, লেখটা মজার হয়েছে! কয়েক জায়গায় বেশ জোরেই হেসে ফেললাম!
ছবিগুলি খুব সুন্দর! ২ নং আর শেষটা--খুবই সুন্দর!

এখানেও আবার লিখে যাই, ধন্যবাদ। আমার জন্মদিনে এমন অবাক করা ও অসম্ভব সুন্দর একটা জন্মদিনের পোস্ট ছাপানোর জন্য! আমি আবেগে অভিভূত!
ভালো থাকুন।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মৃত্তিকাপু, ছোট বোনের জন্মদিনে এইটুকু তো করবোই, তবে তারিখ মাথায় ছিল না, জন্মদিনের দিন তারিখ ভুলে যাওয়া আবার আমার পুরানো অভ্যাস।

লেখা পড়ার জন্যে ধন্যবাদ। তোমার লেখা কিন্তু পেন্ডিং থেকে ওভারডিউ হয়ে ওভারড্রাফ্ট হই হই করছে। নিউ ইয়র্কে বসে আছো, পড়াশুনা তো করতে পারছ না, সেই সুযোগে লেখা নামিয়ে দাও হালি খানেক।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।