অন্ধ হলে কি প্রলয় বন্ধ থাকে?

অনিকেত এর ছবি
লিখেছেন অনিকেত (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৭/০৭/২০০৮ - ৩:৩৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অনেক দিন আগের কথা। আমি তখন বি সি এস দিয়ে সরকারী চাকুরিতে ঢুকেছি। পোষ্টিং হয়েছে দেশের এক প্রত্যন্ত প্রান্তরে। ভাবছিলাম যদি নিজের শহরে পোষ্টিং নেয়া যেত, কি যে ভাল হত। বি সি এস পরীক্ষায় আমার বিষয়ে আমি ছিলাম শীর্ষে (এখানটায় কথাগুলো 'গর্বোদ্ধত' শোনালে করজোড়ে ক্ষমা প্রার্থী)। তাই ভেবেছিলাম হয়ত ভালো কোন জায়গায় পোষ্টিং দিতে পারে। কতই না নাদান ছিলাম তখন!

পোষ্টিং এর খবর শুনে মন খারাপ। আমার চেয়ে মন খারাপ আমার বাবা মায়ের। তারা ভেবেছিলেন তাদের দু;খের দিন বুঝি ফুরালো। হা হতোস্মি।

বি সি এস পরীক্ষায় সাধারনত ২ বছর লেগে যায় সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ হতে। কাজেই ঐটা চালু রেখে পাশাপাশি বুয়েটে এম ফিল করছিলাম। সুপারভাইসার ছিলেন ড.আলী আসগর। অসাধারন মানুষ।যাই হোক চাকুরীতে জয়েন করবার আগে বুয়েটে গেলাম স্যারের সাথে দেখা করতে। ততদিনে এম ফিল শেষ হয়েছে। চেষ্টা চলছে বিদেশে যাবার।

স্যারকে খুব মন খারাপ করে বলছিলাম আমার পোষ্টিং এর ব্যাপারটা। স্যার কিছুক্ষন চুপ থেকে বললেন, তোমার বয়েস অল্প। এখনি তো তোমার এই কাজগুলো করার সময়। তুমি কি বুড়ো হবার পর গ্রামে পোষ্টিং চাও ? বয়েস অল্প থাকতেই ঝড়ের সাথে লড়ে নেয়া ভালো। এইটা তোমার নিজের 'অভিজ্ঞতা' ও বাড়াবে।

সেই সময়টায়,সত্যি বলতে কি, স্যারের কথাগুলো আমার তেমন ভালো লাগেনি। ভেবেছিলাম স্যার হয়ত আমার পক্ষ নিয়ে কিছু 'আহা উহু' করবেন। যখন ফিরে আসছি তখন স্যার বললেন, দেখো একটা বয়েসে এসে সবাই আপোষ করে। বয়েস বাড়ার সাথে সাথে মানুষ ভীতু হতে থাকে। অন্যায় দেখেও কিছু করে না।
তোমার তো সেই বয়েস এখনো হয়নি। কাজেই যতদূর
পারবে সৎ থেকো। আমি পোষ্টিং নিয়ে যাচ্ছি এক গ্রামের কলেজে। সেখানে কিইবা অন্যায় থাকবে আর কিইবা প্রলোভন থাকবে। আমি মাথা নাড়তে নাড়তে বেরিয়ে এলাম।

পরের দু বছর আমি ঐ গ্রামটাতেই কাটাই। ঘুষ দেবনা বলে বদলী হতে পারিনি। আমার সাথে জয়েন করে অনেকে তখন চলে গেছেন ভালো ভালো কলেজে----শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কেরানীদের ঘুষ দিয়ে। টিউশনি করানো খারাপ---তাই ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়াতাম না।আমার কথা ছিল, আমি যদি নিষ্ঠার সাথে পড়াই আর ছাত্র-ছাত্রীরা ও যদি মনোযোগ দেয় তাহলে 'প্রাইভেট' পড়ানোর কি দরকার? আর উপর এরা অধিকাংশই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। দিন গুজরান করাই তাদের কাছে সমস্যা। সেই হিসাবে তাদের কাছে এইটা তো হাতি পোষার মত।

আমার এই আপাত 'সমাজ-বিরোধী' ভাব-মুর্তি আমাকে খুব দ্রুত কলেজের অন্যতম 'অ-জনপ্রিয়' শিক্ষকে পরিনত করেছিল। পরীক্ষায় নকল ধরে ধরে বিপুল দুর্নাম কামিয়েছিলাম। শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী নির্বিশেষে সকলেই আমাকে শীর্ষ পাঁচ ঘৃনিত ব্যাক্তির
তালিকার উপর দিকে বসিয়ে রেখেছেন। ছাত্র-ছাত্রীরা অপছন্দ করে----প্রাইভেট পড়াই না, নকল ধরি এবং কড়া বলে। শিক্ষকরা অপছন্দ করেন---প্রাইভেট পড়াই না বলে। আমার 'না পড়ানো' নাকি তাদের ভাবমুর্তি নষ্ট করছে। আমি কেবল আমার কলেজের না, সমস্ত এলাকার চক্ষুশূলে পরিনত হলাম।তখন বুঝলাম যে সৎ থাকার চেষ্টা করলে পৃথিবীর যে কোন জায়গাই হতে পারে বিপদ-শংকুল। আমি দাঁত কামড়ে পড়ে রইলাম।

একদিন খবর পেলাম এক ছাত্র মারফত, যে রাতের বেলা কিছু 'অনাহুত' অতিথি আমাকে দেখা দিতে আসবেন---সে সাথে উত্তম- মধ্যম থাকবে অনুপান হিসেবে। জীবনে পাবলিকের হাতে ধোলাই খাইনি। আজ রাতে আমার সেই অভিজ্ঞতা হতে চলেছে। উত্তেজনায় (পড়ুন--- 'ভয়ে') স্থির থাকতে পারছিনা। মজার ব্যাপার হল সন্ধ্যা হবার সাথে সাথে বেশ কিছু ছাত্র চলে এল আমার কাছে। রাত এগারোটা পর্যন্ত আমাকে ঘিরে বসে রইল। যদি ব্যাটারা আসে, আমাকে পেটানোটা খুব একটা সহজ হবে না। অনেক রাত করে যখন দেখা গেল বিপদের আশু সম্ভাবনা নেই, তারা একে একে বিদায় নিল। এর মাঝে দেখেছি কিছু কিছু ছায়ামুর্তির আবছায়াতে ঘোরাফেরা। তারা দূরে থেকেই চলে গেল।অবশ্য যাবার আগে প্রিন্সিপাল স্যারের অফিসে আগুন ধরিয়ে দিয়ে গেল। এতসব কিছুর মাঝে আমি অবাক হয়ে দেখছিলাম আমার ছাত্রদের। কতই বা তাদের বয়েস হবে----সতেরো, আঠারো। ব্যাপারটা তাদের জন্যও ভীতিকর। ছোট ছোট মুখগুলোতে দেখছিলাম পরিষ্কার ত্রাসের ছায়া। তবুও তারা ঘিরে বসে রয়েছিল আমাকে। গভীর রাতে আমি একা একা আমার ঘরে বসে স্তম্ভিত হয়ে ভাবছি---- নিজের ভয়কে তোয়াক্কা না করে অন্যের জন্য জীবন বাজী রাখা--- এইটা তো কোনো সহজ কাজ নয়। সেদিনের পর থেকে আমার 'নীতিমালায়' কিছু সংশোধনী যুক্ত হল। প্রাইভেট পড়ানো শুরু করলাম। প্রথমে ভেবেছিলাম বিনা মুল্যে পড়াবো। দেখা গেল সেইটা ঠিক ভাল বুদ্ধি না। বিনা মুল্যে পড়ানোর মাঝে অনেকেই 'অনেক' কিছুর গন্ধ পান।

আমি জানিনা এইটা আমার আপোষ করা কি না---কিন্তু আর যেসব জায়গায় পেরেছি, আমি চেয়েছি শেষ পর্যন্ত 'সৎ' থাকতে।অনেকের বিরাগভাজন হয়েছি। অনেকের কাছে হয়েছি উপহাসের পাত্র।কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি।

আমি যদি আমার সুবর্ন সময়ে আদর্শের জন্য লড়াই না করি, তবে কখন করব ? আমাদের নিয়তি হল সমাজের কাছে হার মানা। এককের সংগ্রাম সফল হয় কদাচিৎ। কিন্তু যে সময়টায় আমরা প্রতিরোধ গড়তে পারব, যে সময়টায় বুকে থাবা মেরে ঘাড় তেড়া করে বলতে পারব,' না, আমি এইটা মানি না'----সে সময়টায় আমি কেন আপোষ করব???

-------------------------------------------------------

সচলায়তন দেশে ব্যান করা হয়েছে বলেই শুনছি। সচলায়তনকে ঘিরে আমার অনেক স্বপ্ন আছে। এইটা কেবল 'যেমন ইচ্ছে লেখার আমার কবিতার খাতা' নয়----এইটা আমার দুঃখ ভোলার জায়গা, এইটা আমার দুঃখ বলার জায়গা। এইটা আমার প্রানের সাথে গান আর গানের সাথে প্রান মেলানোর জায়গা। গত এক বছর ধরে এই জায়গা আমাকে বুকে করে রেখেছে। আমি জানি, দেশে যারা আছেন----তাদের অনেকের কাছেই সচলায়তন এমনি এক উপলব্ধির নাম।

আজ সচলায়তনের সব চাইতে গর্বের দিন, সেই সাথে দুঃখের ও দিন। আমরা জানতে পেরেছি যে আমাদের কথা 'ওরা' জানতে পেরেছে। আমরা জানতে পেরেছি আমাদের কন্ঠস্বরে তাদের নিদ্রায় ব্যাঘাত ঘটেছে---তাই 'তারা' ঠিক করেছে আমাদের কন্ঠ থামিয়ে দিতে।

আমি শুধু এইটুকু বলতে চাই-----আমাদের লড়ার মত শক্তি থাকতে আমরা যেন 'আপোষ' না করি। আমার এক সময়ের প্রিয় পত্রিকা 'প্রথম আলো' নির্লজ্জের মত জলপাই গাছের নীচে মাথা নীচু করেছে। কার্টুনিষ্ট আরিফের জন্য সমবেদনা দুরের কথা---- ম র নিজামী, খতিব, গো আযম দের পা চাটতে চাটতে তারা অস্থির। মতিয়ুর রহমান প্রায় হাতে পায়ে ধরে নাকে খৎ দিয়ে তবে রেহাই পেলেন। একটা হাস্যকর নির্দোষ কার্টুন আমার প্রিয় পত্রিকার অন্দর মহল উলঙ্গ করে দিল। আমি তীব্র বিবমিষায় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছি। প্রথম আলোর শক্তি ছিল এইটা মোকাবেলা করার----পরিবর্তে তারা নতজানু হয়েছে নিঃশর্তে। হয়ত তারা ব্যবসায়ী বলে হাত পা বাঁধা।

কিন্তু সচলায়তন তো সেইটা নয়।

আমি চাইনা সচলায়তন এমন কিছু করুক যাতে আমাকে এক তেপান্তরের মাঠে এসে দাঁড়াতে হয়।


মন্তব্য

লাইঠেল (লগানো বন্ধ) এর ছবি

আমি আজ প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণ আসার সাথে সাথে আতিপাতি করে খুজলাম। নাই, কোথাও খবরটা নাই। ছাপে নাই এরা। আজকে ব্লগসাইট, কাল যখন প্রথম আলোকে ধরবে তখন বুঝবে যে, চুপ থেকে ভালো থাকা যায় না।

হিমু এর ছবি

কলাম ১ বলে একটি অংশ আছে। সেখানে সংক্ষিপ্ত আকারে খবরটা এসেছে কিন্তু। মনোযোগ দিয়ে খুঁজে দেখুন।


হাঁটুপানির জলদস্যু

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍প্রথম আলো একটু লিখেছে

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

হিমু এর ছবি

আপনার আশাকে সচলায়তন হনন করবে না বলেই বিশ্বাস রাখি।

আজ আমরা উদয়ন পন্ডিতের পাঠশালার ছাত্রের মতো। আশার আলোটুকু যেন কারো বুকে অন্ধকারগ্রস্ত না হয়। আমরা লিখি, লিখি আনন্দে, দুঃখে, ভয়ে, আশঙ্কায়, উচ্ছ্বাসে, গর্বে, আমরা লেখার জন্যে জড়ো হয়েছি, লিখে চলবো। একজন আরেকজনকে ঘিরে বসে প্রহরা দিয়ে চলবো আশার আলোটুকুকে।

সচল থাকুন, সচল রাখুন।


হাঁটুপানির জলদস্যু

স্বপ্নাহত এর ছবি

কেমন যে লাগতেসে বলে বোঝাতে পারবোনা। কিছুক্ষণ পর পরই পেজ রিফ্রেশ দিয়ে দেখতেসি সর্বশেষ কি অবস্থা।

সচলায়তন দ্বিতীয় কোন প্রথম আলো কখনোই হবেনা। সচলের মানুষগুলোই কখনো হতে দেবেনা...

---------------------------

থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ভাল লাগলো আপনার ছাত্রদের কথা শুনে। আশাবাদী করে এসব গল্প।


রাজাকার রাজা কার?
এক ভাগ তুমি আর তিন ভাগ আমার!

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

অসম্ভব একটা দিন গেল। সন্ধ্যা পর্যন্ত অফিসে ছিলাম, বাংলা লেখা যায় না, তাও কেবল লগইন আর রিফ্রেশ-এর উপরে ছিলাম।

বিকালের দিকে খেয়াল করলাম ৩৫জন সদস্য - সচলের নতুন পুরান, আলেম জালেম - সবাই লগইন হয়ে আছেন। এই দুর্দিনে সবাই এক সাথে এক জায়গায়, হোক ভার্চুয়ালি - এটা মনে রাখার মত ছিল।

-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

জিফরান খালেদ এর ছবি

আমিও একি।

আপনার ঐ লিঙ্কটাতে গেলাম। পুরান সব ঘটনার মতো।

আপনি কি কোথাও কিছু লিখছেন?

জিফরান খালেদ এর ছবি

চমতকার লিখা।

হিমু ভাইয়ের মন্তব্য মনটা একটু ভাল করলো।

অনিকেত এর ছবি

হিমু কে অনেক ধন্যবাদ আমার ভয়টা দূর করার জন্য।

আপনজন হারাতে হারাতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। আর কোন আপনজন হারাতে চাই না

জাহিদ হোসেন এর ছবি

যেসব সচল বিদেশে থাকেন তাদেরকে বিশেষ করে বলছি। আমাদের কে লিখতেই হবে। দেশের মানুষ অনেক কষ্টে আছে, বারবার তাদের ভাগ্যে মিলেছে প্রতারনা আর মিথ্যে আশ্বাস, হুমকি। আমাদের কে এখন একটি নিস্কম্প শিখার মতো শান্ত হতে হবে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

স্নিগ্ধা এর ছবি

অনিকেত - মন ভালো করে দেয়া একটা লেখা। সেজন্য, ধন্যবাদ! সচলায়তন নিয়ে অবশ্য একটুও আশঙ্কা আমার নেই, থাকা কি সম্ভব, আপনিই বলুন?

দেখিই না কি হয়, কি করে?

আমরা কি আর এতোই ভঙ্গুর ? হাসি

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ, স্নিগ্ধা'পু

রেনেট এর ছবি

অনিকেতদা, আপনার মা বিষয়ক লেখাটির পর আমি আপনার লেখা খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ি। আপনার অনেক কথাই আমার নিজের মনের কথা মনে হয়।
গত ২/১ দিনের ঘটনায় খুবই উদ্বিগ্ন ছিলাম, এখনও আছি, কিন্তু আপনার লেখাটি পড়ে আবারও বুঝলাম, আমরা একা নই, আমরা অন্যায় ও করিনি। আমাদের ভয় পেলে চলবে না।
উতসাহব্যঞ্জক লেখার জন্য ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

অনিকেত এর ছবি

ভাই রেনেট, অনেক ধন্যবাদ

আমিও তোমার লেখার বিশেষ ভক্ত।

তোমার সাথে একমত-----এবং অনেক সাহস ও পেলাম।

ধন্যবাদ

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- অন্যসময় হলে হয়তো লেখাটা নিয়ে অন্যভাবে ভাবনার প্রকাশ ঘটাতাম। এখন কেবলই ইতিবাচক দিকটা চোখে পড়ছে।

---- নিজের ভয়কে তোয়াক্কা না করে অন্যের জন্য জীবন বাজী রাখা---

প্রত্যেকে আমরা পরের তরে, এটাই তো সচলায়তনের মূল ধারা হওয়া উচিৎ। সচলায়তনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ ছাঁকনি দিয়ে সদস্য বানায়, এটাই তো সেই ছাঁকনের ফল। বাইরের যে কোনো রক্তচাহনীতে সব সচল নিজেকে সর্বাগ্রে ঠেলে দেয়, এটাই তো সচলায়তনের সার্থকতা।

কীসের আপোষ আমাদের। কারো হয়ে তো আমরা লিখি না। কারো বিপক্ষেও না আমরা। শুধু দেশ মাতৃকার ব্যাপারে আমাদের অবস্থান অনড়। এটা যদি অন্যায় হয় তাহলে সে অন্যায় মাথা পেতে নিলাম, যেমনটা নিয়েছিলেন আমাদের পূর্বপুরুষেরা, মুক্তিযুদ্ধের সময়।

___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍দুর্দান্ত মন্তব্য, ধুগো, দুর্দান্ত!

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

হাসান মোরশেদ এর ছবি

দুঃসময়ের ভালো দিক ও আছে,পরিবারের মানুষেরা নিজেদের আঁকড়ে থাকে ।
আজ সচলায়তনে সেটাই হলো ।

যারা ব্যান করলেন, তাদের বলি-থোড়াই আমরা কেয়ার করি তোমাদের হাসি
-------------------------------------
বালক জেনেছে কতোটা পথ গেলে ফেরার পথ নেই,
-ছিলো না কোন কালে;

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍খুবই আশা-জাগানিয়া লেখা, অনিকেত। আমরা, সচলেরা, একসঙ্গে আছি, থাকবো। সংকটের মুহূর্তে আমাদের ঐক্যবোধটিই আমাকে এই সাহস যুগিয়ে চলেছে।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অনিকেত এর ছবি

সন্ন্যাসী'দা,

একই আশাতে আমিও বুক বেঁধে আছি।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

একুশে ফেব্রুয়ারির পটভূমিতে জহির রায়হানের 'আরেক ফাল্গুন' উপন্যাসটি শেষ হয়েছিলো এরকম একটি বাক্য দিয়ে (হুবহু নয়, প্রায় ৩৫ বছর আগে পড়ার স্মৃতি থেকে লিখছি): ওরা আমাদের কতো আটক করবে? আসছে ফাল্গুনে আমরা দ্বিগুণ হবো।

সোজা পথে বাংলাদেশ থেকে সচলে ঢোকা যাচ্ছে না, কিন্তু বিকল্প তো আছে। তাহলে আর লাভ কী হলো তাদের? এই নিষেধাজ্ঞা চিরকাল থাকবে না। থাকা সম্ভব নয়।

আমার ধারণা, এই ঘটনার ইতিবাচক দিকটাই বেশি। প্রথমত, ব্লগের রচনা বা ভূমিকা যে রাষ্ট্রশক্তিকে নাড়া দিতে সক্ষম তা প্রমাণিত হলো। দ্বিতীয়ত, সচলায়তন মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তচিন্তার ধারক হিসেবে স্বীকৃত হলো। তৃতীয়ত, অনেক নতুন মানুষের কাছে সচলায়তন একটি পরিচিত নাম হয়ে উঠছে।

দেশের সচলায়তন সদস্যদের পুরনো পোস্ট বা মন্তব্যের কারণে তাঁদের 'জলপাই-আচার'-এর আওতায় আনার চেষ্টা হয় কিনা, সেটাই একমাত্র উদ্বেগের জায়গা। সতর্কতাটা এখন খুব জরুরি।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

আলমগীর এর ছবি

আপনি সিস্টেমের মধ্যে থেকেই প্রতিবাদটুকু করে গেছেন।
সচলের কেউ কেউ হয়ত আবেগ প্রকাশে ততটা সংযত নন।
সচলায়তনে ব্যান হয়ওয়া ক্ষতি যে কিছুটা হবে (বিশেষত দেশে যারা সদস্য নন) তা স্বীকার করতেই হবে। সচল কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই ভবিষ্যতের কথা ভাববে।

দ্রোহী এর ছবি

মানুষের উপর বিশ্বাস হারাতে হারাতে শেষ মুহুর্তে এসে কী যেন কী হয়ে যায়। মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো হয় না আমার.....


কী ব্লগার? ডরাইলা?

কীর্তিনাশা এর ছবি

এই লেখাটা আর সাথের মন্তব্যগুলো পড়তে পড়তে বুক ভরে উঠলো সাহসে আর গর্বে। আমি নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করছি - এমন অসাধারন কিছু মানুষের সঙ্গ পাচ্ছি বলে।

সচলায়তন যুগ যুগ জিয়ে!!

--------------------------
সচল আছি, থাকবো সচল!!

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

নিঘাত তিথি এর ছবি

দারুণ পোস্ট, আশা জাগানিয়া সব মন্তব্য।
দুর্দিনে সবাই একসাথে আছি, আর ভয় কি?
এই পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হবে না, সম্ভব না, এটা নিশ্চিত। এই অদ্ভুত অবস্থাটা বরং আমাদের জানিয়ে দিচ্ছে আমাদের খালের ওই পাড়ে দাঁড়িয়ে বলা কথা (জুবায়ের ভাইয়ের পোস্ট দ্রষ্টব্য) কত দূর পৌঁছে গিয়েছে।

সচলায়তন যুগ যুগ জিয়ো।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ সকল কে।

ভোরের অপেক্ষায় রয়েছি......যখন কাটবে আঁধার......

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।