চৌম্বক একক মেরুঃ অধরা মাধুরী

অনিকেত এর ছবি
লিখেছেন অনিকেত (তারিখ: রবি, ০৬/১২/২০০৯ - ৩:৪২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

খুব সম্প্রতি একটা খবরে পদার্থবিদরা অনেকেই নড়ে-চড়ে বসেছেন।
খবরে প্রকাশ--- শেষ পর্যন্ত চির আরাধ্য চৌম্বক একক মেরুকে নাকি পাকড়াও করা গেছে! আপনাদের অনেকেই হয়ত বিরক্তি মুখে নিয়ে ভাবছেন, বিরাট কাজ হয়েছে একটা! হুহ! একক মেরু না কী একটা ছাতা-মাতা পাওয়া গেছে!! তাতে কি বাজারে পেঁয়াজের দাম কমবে? তেলের দাম কমবে?

ছোট উত্তর হল-নাহ, সেরকম কোন সম্ভাবনা নেই। আপনি নিশ্চয়ই তড়াক করে লাফ দিয়ে উঠে বলবেন, তাহলে 'একক মেরু' বা 'দশক মেরু' নিয়ে বকবকানি শুনে আমার লাভ কী? আমার কোন উপকারে তো আসছে না।

এই প্রশ্নের জবাবেও আমাকে মাথা চুলকে বলতে হবে, হক কথা। তারপর হয়ত মাথা আরো খানিকটা চুলকে বলব, আমাদের সব কিছু কি আর তেল-ডালের হিসেব মাথায় রেখে করা হয়? না, হয় না। এবং ভাগ্যিস হয় না। মানুষ তার সবকিছু তেলের-ডালের দাম মাথায় রেখে করে না বলেই LHC এর মত একটা দারুন উচ্চাভিলাষী প্রকল্প শেষমেষ দাঁড়িয়ে যায়। প্রচন্ড ব্যয় বহুল এই প্রকল্পে পৃথিবীর নানা দেশ যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী অংশ নেয়---শুধুমাত্র একটি কারণে।

আমাদের জ্ঞান ভান্ডারে সবচাইতে জটিল, সবচাইতে কাঙ্খিত এবং সবচাইতে দামী একটা প্রশ্নের উত্তর যোগ করার জন্যে। এমনই একটা প্রশ্নের উত্তর যা জানতে পারলে আমরা উঁকি দিতে পারব ঈশ্বরের মনের ভেতর।

চৌম্বক একক মেরু আবিষ্কার এমনই প্রচন্ড দরকারী এক 'অদরকারী' প্রচেষ্টা।

আমাদের সকলের ছোটবেলাই খুব অনন্য। একই সাথে একই বাড়ীতে বড় হলেও প্রতিটি সন্তান যার যার নিজস্ব একটা ছোটবেলা পায়। আমাদের প্রত্যেকের মতই আমাদের ছেলেবেলাগুলোও অনন্য,স্বতন্ত্র ও স্বকীয়তায় ভাস্বর। এত স্বাতন্ত্র্যের মাঝেও আমাদের সবার অভিজ্ঞতার মাঝে কিছু কিছু মিল থেকে যায়। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় দৌড়ে প্রথম হবার আনন্দ বা লাস্ট হবার দুঃখ, প্রথমবার প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হবার যন্ত্রণা, প্রথমবার প্রেমপত্র লেখার সে উত্তেজনা আর ছোট ভাইকে নানান উৎকোচ দিয়ে প্রেমাস্পদের কাছে সে চিঠি পাঠানো এবং অবধারিত ভাবে সেই চিঠি উদ্দীষ্ট ব্যক্তিটির বড় বোন অথবা বাবা/মা-র হাতে পড়া---এমন সব দূর্দান্ত নাজেহাল হবার বা অনাবিল আনন্দে ভেসে যাবার অভিজ্ঞতাগুলো আমাদের সবারই কম-বেশি আছে।

আমাদের বেড়ে ওঠার দিনগুলোর সেইসব চমকপ্রদ অভিজ্ঞতার মাঝে যেসব ঘটনাগুলো সাধারণ গুণনীয়ক হিসেবে আলাদা করে নিতে পারি---তার মধ্যে একটি হল চুম্বকের সাথে আমাদের পরিচয়!

এই লেখাটা লেখার সময় অনেকখন গালে হাত দিয়ে ভেবেছি----ঠিক কখন চুম্বকের সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল? কিছুতেই বের করে উঠতে পারলাম না। কেবল মনে আছে, কেউ একজন জানিয়েছিল রেডিওর স্পীকারের ঠিক মাঝখানে একটা কাল মতন জিনিস থাকে। সেইটা বাসার স্টীলের আলমীরার গায়ে লাগিয়ে দিলে দিব্যি ঝুলে থাকে। শুধু তাই নয়, মায়ের সেলাই মেশিনের সূঁচগুলো নিয়ে যদি ঐ জিনিসটার গায়ে ঘষাঘষি করা যায়, তখন সূঁচগুলোর মাঝে একরকম 'আত্মীয়তা'র জন্ম হয়। যে সূঁচগুলো এতদিন নিজেরা নিজের মত করে রইত, ঐ কালো জিনিসের 'মায়া'-য় হঠাৎ তাদের মাঝেও একরকমের 'মায়া' সংক্রামিত হয়। এখন তাদের একসাথে রাখলে পরে কেমন আপনজনের মত ঘোট পাকিয়ে ফেলে। শুধু তাই নয়, একটুখানি বেশি ধৈর্য্য নিয়ে ঘষাঘষি করতে পারলে সূঁচগুলো একের পর এক জুড়ে দিয়ে চমৎকার একটা সূঁচ-মালা তৈরী করে ফেলে মা-কে চমকে দেয়া যায়!

আমি নিশ্চিত, চুম্বক নিয়ে আপনাদের অভিজ্ঞতা আমার অভিজ্ঞতাগুলোর চাইতে অনেক বেশি সরেস ও আগ্রহোদ্দীপক হবে। কাজেই আমার চুম্বক বিষয়ক স্মৃতিগুলোর 'চুম্বক' অংশ নিয়ে আর আলোচনা নাইবা করলাম।

দৈনন্দিন জীবনে চুম্বকের সাথে এরপর আমাদের মাঝে মাঝেই দেখা সাক্ষাৎ হতে থাকে। আমাদের বাসার ফ্রীজের গায়ে ঐযে সুন্দর সুন্দর হাতিঘোড়া ঝুলছে--সে কিন্তু চুম্বকের কারণেই। একটুপরেই যখন রাস্তায় বেরুবেন কানে ইয়ার-ফোন লাগিয়ে, তখনও কিন্তু ছোট্ট কিছু চুম্বক ধুকপুক করে করে আমাদের কর্ণকুহরে মিলা কে টেনে নিয়ে আসে আর কানের পোকা নড়িয়ে দিয়ে মিলার আর্ত চিৎকার শোনা যায় "ডলা দে, ডলা দে, ডলা দে রে পাগলা--"

এইযে ল্যাপটপে বা ডেস্কটপে বসে ভ্রুঁ কুঁচকে লেখাটা পড়ছেন, সেইটারও প্রাণভোমরা কিন্তু এই চুম্বকই। হার্ড ড্রাইভ, র‌্যাম বা কম্পিউটারের স্মৃতিবিষয়ক যেকোন কাজে এখন পর্যন্ত এক নম্বর কাজী এই চুম্বক পাজীটা। এই লেখাটা পড়তে পড়তে মাথা গরম হয়ে গেলে যখন ফ্যানটা ছেড়ে দেবেন---তখন জানবেন, সেটা কিন্তু চলছে এই চুম্বকেরই জোরে। মোট কথা সৈয়দ মুজতবা আলী 'হরফুন মৌলা' বলতে যা বুঝিয়েছেন--আমাদের চুম্বক কিন্তু তাই।

চুম্বকের সাথে আমাদের এই পরিচয় আজকের নয়। প্রায় ২৬০০ বছর হতে চলল আমাদের চেনা-জানার। সেই ৬৪৫ খ্রীঃপূঃ থ্যালেসের বয়ানে চুম্বকত্বের আবির্ভাব। তারপর থেকে মানব সভ্যতা আর চুম্বক হাত ধরাধরি করে পথ হেঁটেছে। আমরা যত সময়ের পথে এগিয়েছি, তত আমরা চুম্বকের নানা ব্যবহার খুঁজে পেয়েছি। সেই প্রাচীন কালেই লোকজন জানতে পেরেছিল, চুম্বকের অন্যতম প্রধান গুণের কথা---তার দিকদর্শী গুণ। একটা চুম্বককে একটা সুতো দিয়ে বেঁধে ঝুলিয়ে দিলেই দেখবেন সে উত্তর-দক্ষিন মুখ করে আছে। চুম্বকের এই অনন্যসাধারন গুণকে কাজে লাগিয়ে যখন আমরা কম্পাস তৈরী করে ফেললাম, তখন আমরা বেরিয়ে পড়লাম ঘর ছেড়ে অজানার পথে, পাড়ি জমালাম ঝঞ্ঝাসংকুল উত্তাল সাগরে। সেই ভীষন অচেনা পথে দুঃসাহসী মানুষের একমাত্র বন্ধু ছিল চুম্বক। চুম্বক সাথে নিয়ে ম্যাগেলান, ভাস্কো দা গামা, কলম্বাস ঘুরে এলেন সারা পৃথিবী। এসে মানুষকে জানালেন পৃথিবীটা আসলে চ্যাপ্টা নয়---সে ভীষন রকমের গোল! আর এতদিন ধরে যা শুনে এসেছি, যে সাগরের ঐ পারে থাকে ভীষন ভীষন দৈত্য দানব, ---সেসব একদম ঠিক নয়। সারা পৃথিবী ঘুরে তারা দেখেছেন---সবখানে কেবল আমরাই আছি!

চুম্বক নিয়ে আমাদের মাতামাতি কিন্তু ক্রমেই বাড়তে থাকল। ইতোমধ্যে আমরা একটা কাজের কাজ করে ফেলেছি। যেহেতু চুম্বক কে 'আপন মনে' ঝুলতে দিলে সব সময় উত্তর-দক্ষিন দিকে মুখ করে থাকে, সেইটে মাথায় রেখে চুম্বকের উত্তর মুখী দিকটাকে উত্তর মেরু আর অন্যদিকটাকে দক্ষিন মেরু নাম দিয়ে ফেলেছি। শুধু তাই নয়, আমরা আরো আবিষ্কার করলাম যদি দুটো চুম্বক কে কাছে আনা যায়, তখন বেশ মজার একটা ঘটনা ঘটে। দেখা যায় একটার উত্তর মেরু অন্যটার উত্তর মেরুকে 'সহ্য' করতে পারেনা,কিন্তু দক্ষিন মেরুর প্রতি তার গভীর প্রেম। ঠিক তেমনি, একটার দক্ষিন মেরু অন্যটার দক্ষিন মেরুর সাথে ভীষন রকম আড়ি দিয়ে থাকলেও, অন্যটার উত্তর মেরুকে তার বেশ পছন্দ! এই দেখে আমাদের মাঝে জ্ঞানী-গুণীরা বললেনঃ চুম্বকের 'সমমেরু পরস্পরকে বিকর্ষন করে আর বিপরীত মেরু পরস্পরকে আকর্ষন করে'!

চুম্বকের এই 'সমমেরুর আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক আর বিপরীত মেরুর মাঝে উথাল-পাথাল প্রেম' বিষয়টাকে কাজে লাগিয়ে আমরা দ্রুত নানা জিনিস আবিষ্কার করে ফেললাম। সময়ের সাথে সাথে আমরা জানতে পারলাম আরো কিছু চমকপ্রদ জিনিসঃ

------ বেশ অনেকগুলো ধাতুকে (যেমন ধরুন লোহা) চুম্বক দিয়ে ঘষে ঘষে চুম্বক বানিয়ে ফেলা যায়। ফলে এক চুম্বক থেকে আরো অনেক চুম্বক তৈরি করা গেল।

-----অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরুর দিকে বিজ্ঞানীরা দেখলেন চুম্বকের সাথে বিদ্যুতের এক রকমের 'আলগা খাতির' রয়েছে। শুধু তাই নয় উনবিংশ শতাব্দী শুরুর দিকে মাইকেল ফ্যারাডে বলে এক ভদ্রলোক দেখিয়ে দিলেন যে চুম্বক যদি একটা তারের কয়েলের মধ্যে দুম করে ঢুকিয়ে দেয়া যায়, তখন সে কয়েলের মাঝে বিদ্যুত তৈরী হয়! কিন্তু ঘটনা এইখানেই শেষ নয়। এর উল্টোটাও কিন্তু ঘটে। মানে, একটা তারের কয়েলের ভেতর দিয়ে যদি বিদ্যুত চালনা করা যায়, তাহলে সে কয়েল বেশ একটা চুম্বকের মতই আচরণ করে। এই জিনিসটা কিন্তু আপনি বাড়িতে বসেই পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। আপনার শুধু লাগবে একটা কম্পাস, একটা তার আর একটা ব্যাটারী। প্রথমে তারটা টেবিলের উপর লম্বালম্বি করে শুইয়ে দিন। পাশে রাখুন কম্পাসটা। দেখবেন আমাদের কম্পাস, ভক্তি ভরে উত্তর-দক্ষিন মুখ করে আছে। এইবার আপনার তারের দুই মাথা ব্যাটারীর দুই প্রান্তে জুড়ে দিন। যেই মুহূর্ত্তে জুড়বেন, ঐ মুহূর্তেই দেখবেন কম্পাসের কাঁটাটা বাই করে ঘুরে গেছে। মানেটা কী? আমরা জেনেছি, এক চুম্বক সাধারনত আরেক চুম্বকের ডাকেই সাড়া দেয়। আমি আপনি যতই ডাকাডাকি করিনা কেন, সে কিচ্ছুটি করবে না। এই যে ব্যাটারীতে জুড়ে দেয়া তারের ভেতর দিয়ে কারেন্ট গেল, সেই কারেন্টটা আসলে এই তারকে দিয়েছে নতুন 'মহিমা'---তার চারপাশে একটা চুম্বক ক্ষেত্র তৈরী হয়েছে। আর আমাদের কম্পাস বাবাজীও সেই চুম্বক ক্ষেত্রের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। কাজেই বুঝতেই পারছেন, বিদ্যুত চালনা চৌম্বকত্বের জন্ম দেয়। তেমনি এর বিপরীত কথাটাও সত্য।
এই ধর্মটা ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা বিদ্যুত-চুম্বক আবিষ্কার করে ফেললেন। শুধু তাই নয় চুম্বক দিয়ে জেনারেটর তৈরী করা হল, যেটা আমাদের জন্যে বিদ্যুৎ তৈরী করতে লাগল।

বিদ্যুত আর চুম্বকের এই লদকা-লদকি প্রেমের ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর বিজ্ঞানীরা ব্যাপারটা আরো তলিয়ে দেখতে চাইলেন। এইবার কিন্তু বেশ অদ্ভূত কিছু জিনিস সামনে চলে এল। প্রথমতঃ চুম্বকের যেমন দুইটা মেরু, বিদ্যুতের কিন্তু সেরকম কিছু নেই। তার বদলে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করলেন দুই ধরনের আধান বা চার্জঃ ধণাত্মক আর ঋণাত্মক। এই চার্জগুলোই কিন্তু বিদ্যুত তৈরী করে। ধনাত্মক বা ঋণাত্মক চার্জ নিজেরা নিজেরা বা দুই জনে মিলে একটা বিদ্যুত ক্ষেত্র তৈরী করে।

কি দিলাম জট পাকিয়ে?

দাঁড়ান, দাঁড়ান এখুনি চম্পট দেবেন না।

মনে করুন আপনি আপনার ঘরে বসে কাজ করছেন। এমন সময় কারেন্ট চলে গেল। আপনার হাঁকডাক শুনে মা একটা মোমবাতি আপনার টেবিলে রেখে গেছেন। একটু তাকিয়ে দেখুন বাতিটার দিকে।
কেমন একটা দীপ্তিময় উজ্জ্বল তার প্রভা। কিন্তু কারেন্টের বাতির মত জোর বেচারার নেই। তাই টেবিলের কিছু অংশে আলো আছে। বাকীটা অন্ধকার। টেবিলের যে অংশটুকু আলোকিত---ঐটাকে আমি আলোক ক্ষেত্র বলতে চাই। বাকী অংশ কে যদি আপনি আঁধার ক্ষেত্র নাম দিতে চান দিন। আমি মানা করছি না। আমার কাজ আলোক ক্ষেত্রটা নিয়ে।
এই মোমবাতী যেমন তার চারপাশে একটা 'আলোময় এলাকা' তৈরী করেছে, ঠিক তেমনি একটা ধণাত্মক বা ঋণাত্মক চার্জ কোথাও রেখে দিলে তার চারপাশেও ওমন একটা 'ক্ষেত্র' তৈরি হয়। তফাত হল, আলোর ক্ষেত্রটা দেখা যায়---চার্জেরটা দেখা যায় না। দেখা যায় না বলে বার ভেবে বসবেন না যেন, আমি গুল মারছি।মনে করুন, টেবিলের মাঝখানে আপনি একগাদা ধণাত্মক আধান জমা করে রেখেছেন। আমি বলছি যে, ঐ আধান গুলোর জন্যে, মোমবাতিটার মতই একটা অদৃশ্য প্রভাব বলয় তৈরী হয়েছে(যেটাকে আমি বিদ্যুত ক্ষেত্র বলছি)। আপনি যদি এখন আরেকটা ধণাত্মক আধান কাছে পিঠে নিয়ে আসতে চান, তবে দেখবেন একটা দূরত্ব পর্যন্ত কোন কিছু টের না পেলেও আস্তে আস্তে যত ঐ আধানের স্তুপের দিকে এগুবেন, ততই আপনার ধনাত্মক আধানটা 'পালাই পালাই' করবে। স্পষ্টতঃই সে অন্য ধনাত্মক আধান গুলোকে ঠিক পছন্দ করছে না। তো আমাদের ধনাত্মক আধান যে সীমানা পার হবার পরেই অমন করে পালাই পালাই শুরু করেছিল, ঐ সীমানাটাই হল আমাদের আধান স্তুপের প্রভাব বলয়---যেটার কেতাবী নাম---বিদ্যুত ক্ষেত্র!

তো যা বলছিলাম। চুম্বকেরও কিন্তু বিদ্যুতের মতই একটা প্রভাব বলয় আছে---যার কেতাবী নাম-----ঠিক ধরেছেন--'চৌম্বক ক্ষেত্র'। বিদ্যুত ক্ষেত্রের আচার আচরণের সাথে তার আচার-আচরণের অনেক মিল। আর মিল হবেই বা না কেন? ওরা যে মাসতুতো ভাই!

কিন্তু একটা জায়গায় চুম্বক আলাদা হয়ে রইল। বিদ্যুতের ক্ষেত্রে আমরা যেমন আলাদা আলাদা ধণাত্মক বা ঋণাত্মক আধান পাই, চুম্বকের ক্ষেত্রে সেই রকম আলাদা আলাদা করে উত্তর মেরু বা দক্ষিন মেরু পাই না। সব সময় দেখা যায় উত্তর দক্ষিন মেরু জোট বেঁধে আছে। আপনি একটা চুম্বককে যত টুকরোই করুন না কেন---কখনোই পৃথক উত্তর মেরু বা দক্ষিন মেরু পাবেন না।

এতদিন ধরে বিদ্যুত আর চুম্বকের মিল নিয়ে যারা খুব মাতামাতি করছিলেন এই জায়গাটাতে এসে, তাদের কপালে গভীর চিন্তার ভাঁজ ধরা পড়ল।

(আগামী পর্বে সমাপ্য)


মন্তব্য

নাশতারান এর ছবি

আহা ! টেক্সট বুকগুলো যদি এভাবে লেখা হত !!
পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

সাফি [অতিথি] এর ছবি

আমিও তাই ভাবছিলাম।

অনিকেত এর ছবি

@ সাফি,
হাসি

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

আমিও। হাসি
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

অনিকেত এর ছবি

সময় নিয়ে পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ বুনোহাঁস।
ভাল থাকবেন,সব সময়।

এনকিদু এর ছবি

এরকম লেখা গুলো এক জায়গায় করে কিন্তু সুন্দর সহজপাঠ্য বই হতে পারে । মূল পাঠক হবে শিশু কিশোরেরা ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

সাইফ তাহসিন এর ছবি

অনিকেতদা, শেষমেষ আবার লেখা আসল আপনার LHC নিয়ে, ভোর ৫ টা্য জেগে এই লেখা নামাইসেন, চলুক

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু বস---

সাইফ তাহসিন এর ছবি

কোপা শামসুর বাসায় আইসা বেলাল্লাপনা করতে ব্যস্ত ছিলাম, তাই হুট করে পড়ে খুট করে মন্তব্য করে ফুট মেরেছিলাম, তাই আসল কথাগুলো বলা হয় না। চুম্বকের এই প্রীতি আপনার মত আমারও ব্যাপক হারেই ছিল প্রথম চুমব্ক কি জিনিস তা জানতে পারি বড় ভাই এর কল্যানে, একটা খেলনা গাড়ি নষ্ট হয়ে যাবার পর তার মোটর নিয়ে খেলছিলাম ২ ভাই, কি কারনে যেন পোড়া গন্ধ বের হল, আসলে মোটরটাকে কত জোরে দৌড় খাটানো যায় সেটা নিয়ে ট্রায়াল এন্ড এরর চলছিল, ৬-৭ টা ব্যাটারির ঠেলা খেয়ে মোটর যখন অক্কা পেল, তখন আমরা খুলে ফেললাম মোটরটা, ভেতর থেকে বের হয়ে এল একটা লাল, একটা সবুজ রঙের প্রথম ব্র্যাকেটের মত বাঁকা জিনিস, সেটা গিয়ে লেগে গেল স্ক্র-ড্রাইভারের মাথায়। ব্যাস, মোটর প্রজেক্ট বাদ দিয়ে ২ জন ২ টা চুম্বক নিয়ে লেগে গেলাম কোন কোন জিনিস এটার গায়ে লাগে সেটা বের করার জন্যে। আপনার কি সেই লাল-সাদা সুতার কথা মনে আছে? সেই সুতায় বেধে তারপর মাপা শুরু করলাম, কতটুকু ওজনের জিনিস ঝুলানো যায়। এরপরে যখন একটা বড় খেলনা নষ্ট হল, তখন ২ ভাইয়ের চোখ চকচক করে উঠল, এবার তো বড় মোটর পাওয়া যাবে, তারপর কিছু সময় পরে বড় বড় চুম্বকও পাওয়া যাবে। বড়ই মধুর ছিল সেই দিনগুলো।

আপনার সাবলীল গতির কারনে চুম্বক-বিদ্যুতের ভালোবাসা-লদকালদকি ভিন্ন মাত্রা পেল, সাফির সাথে একমত হয়ে বলতে চেয়েছিলাম আপনে পাঠ্যপুস্তক লেখলে আমাদের শৈশব ভিন্ন রকমের মজারু হত, কিন্ত পরে মনে পড়ল মু-জা-ই এর কথা, আমাদের দেশের প্রসাশনের কাজ হল, কেউ সত্যি দেশের ভালো চাইলে তারা মনে করেন, ভূতে তাদের 'হুহু' করছে, ফলে আপনে হয়ত কষ্ট করে লিখে দিতেন ঠিকই, কিন্তু তা স্কুলের বেঞ্চ পর্যন্ত পৌছাতো না।

লেখাটা চরম পেরিয়ে দুর্দান্ত পেরিয়ে এখন তেপান্তরের মাঠ পাড়ি দিচ্ছে, ভয় নাই এর পরে সাত সমুদ্র তের নদী পারি দিবে কিনা, যখন আমার কাছে পৌছাবে, তখন এসে তারায় তারায় ভাসিয়ে দিয়ে যাবো আপনার এই লেখাটা। ততক্ষন ভার্চুয়াল লক্ষ-কোটি তারা আর উত্তম জাঝা! নিয়ে খুশি থাকার চেষ্টা করেন।

গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু
চলুক চলুক চলুক চলুক চলুক চলুক চলুক চলুক চলুক

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অনিকেত এর ছবি

বাপ রে!!
বি-শা-ল মন্তব্যের জন্যে বি-শা-আআ-আ-আ-আল একটা ধন্যবাদ,বস।
তোমার ছেলেবেলার গল্পটা শুনে খুব মজা লাগল।
ভাল থেকো

সাইফ তাহসিন এর ছবি

আরেক পর্বে শেষ না করে দিয়ে আরেকটু আশে পাশের দৃশ্যও দেখান, ফাঁকতালে আমরা কিছু শিখি। আরেক পর্বে শেষ করে দিলে কইলাম গরুর জিহবা খাওয়ায় দিমু চোখ টিপি
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

অহনো পর্যন্ত পিউর ইন্টারের ফিজিক্স- অনিকেতদা। তাই তরতরিয়ে বুঝে নিলুম। তবে পরের অংশ এইরুপ সরল এবং আকর্ষনীয় না হইলে ... বুইঝেন...

_________________________________________

সেরিওজা

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা , কথা সত্য!
পরের অংশ নিয়া আমিও টেনশনে আছি---
ভাল থাইক বস।

শাহান এর ছবি

কঠঠিন! দারূণ! চুম্বক আর বিদ্যুতের এই মাখামাখি জিনিসটা কোনদিনই ভালভাবে বুঝতে পারি নাই। বইগুলা যদি এমনে লিখত!

চুম্বক নিয়া আমার প্রিয় কাজ ছিল স্ক্রু-ড্রাইভার চুম্বকে ঘষাঘষি করে সেইটা দিয়া স্ক্রু ঝুলানোর চেষ্টা করা!

ট্যাগ দেখে বুঝলাম LHC তে গিয়ে শেষ হবে। অপেক্ষা করব।

(এখন ঘুমাইতে যাই হাসি )

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু বস, এই ব্যস্ততার মাঝেও সময় বের করে নিয়ে পড়ার জন্য...।

হিমু এর ছবি
অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু হিমু!!
ভাল থেকো, সব সময়!

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আমি মহামুগ্ধ, অনিকেত দা। অন্তত আমার উপর মায়া দেখিয়ে পরের পর্ব তাড়াতাড়ি ছাড়ুন দয়া করে... হাসি
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু বস।
পরের পর্ব জলদিই দেবার ইচ্ছা।
ভাল থেকো, সব সময়

বইখাতা এর ছবি

দারুণ ! মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আপনি তো দেখি খুবই ভালো শিক্ষক !

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু বইখাতা, সময় নিয়ে লেখাটা পড়ার জন্যে।
ভাল থাকবেন।

বর্ষা এর ছবি

চমৎকার, অনিকেতদা। নমস্য। আমার চুম্বক কেনো যেনো ছোটোবেলা হতেই প্রিয়। এই সম্পর্কিত লেখা খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ি আর আপনি লিখেছেন ও খাসা ভাবে। পছন্দের পোস্টে নিলাম। ********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু বর্ষা!
ভাল থাকুন, সব সময়

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এতো সহজ সুন্দর করে লেখেন কীভাবে?
হিমুর ইমোটিকন কপি পেস্ট
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু বস, সময় নিয়ে লেখাটা পড়ার জন্যে।
আপনারা সাহস দেন বলেই তো মাঝে মাঝে এইসব ছাইপাশ লেখার দুঃসাহস দেখিয়ে ফেলি।

ভাল থাকবেন,বস।
সব সময়

রণদীপম বসু এর ছবি

যে বিষয়টারে শিরোনাম বানাইলেন, সেইটাই ঝুলাইয়া রাখলেন পরের পর্বের জন্যে ! বড় অন্যায় অনিকেত দা !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অনিকেত এর ছবি

রণ'দা,
কথা সত্য।
কিন্তু আমি ভাবছিলাম যে একেবারে দুম করে একক মেরু নিয়ে কথা বলা শুরু করলে লোকজন হয়ত হঠাৎ করে খেই পাবে না। সেইজন্যেই এই দীর্ঘ গৌরচন্দ্রিকা। কথা দিচ্ছি পরের পর্বেই হাটে হাড়িটা ভাঙ্গব।

ভাল থাকবেন বস,সব সময়!

এনকিদু এর ছবি

অনিকেদতা, আপনি গুরু, গুরুরো গুরু ।

ফিল্ডের ব্যপারটা খুব সুন্দর করে বুঝিয়েছেন আলো অন্ধকার দিয়ে । পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু বস!!
ভাল থাকো, সব সময়--

তুলিরেখা এর ছবি

দারুণ লেখা! অপেক্ষায় আছি ম্যাক্সওয়েলের অংশটায় যখন আসবেন। -----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অনিকেত এর ছবি

আরে সর্বনাশ!!
আপনি এখানে যে??!!
এখন থেকে তো দেখছি সাবধানে লিখতে হবে---হে হে হে ---
অনেক ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়ার জন্যে।

ভাল থাকবেন, সব সময়।

অতিথি লেখক এর ছবি

সচালায়তন এজন্যই এতো সমৃদ্ধশালী ও পরিপূর্ন । মনের খোরাক মেটায়।
প্রাঞ্জল ভাষায় লেখা, বুঝতে এতটুকুও কষ্ট হয়নি। ধন্যবাদ গুরু।

- বুদ্ধু

অনিকেত এর ছবি

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ লেখাটা সময় নিয়ে পড়ার জন্য।
ভাল থাকবেন, সব সময়।

সচল জাহিদ এর ছবি

অনিকেতদা এককথায় অসাধারণ। এইরকম সহজ ভাষায় বিজ্ঞান আমার খুব কম পড়া হয়েছে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়।

----------------------------------------------------------------------------
zahidripon এট gmail ডট কম


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ বস।
ভাল থাকবেন, সব সময়।

সচল জাহিদ এর ছবি

অনিকেতদা আপনি আমার বড় , তুমি করে বললে খুশি হব।

----------------------------------------------------------------------------
zahidripon এট gmail ডট কম


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু বস।

দুর্দান্ত এর ছবি

হিমু আর নজু ভাই ডিটো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে কি ছুতায় যেন আমাদের একবার একটা ভিডিও দেখিয়েছিল, সেটাতে দেখিয়েছিল যে মানুষের প্রতিটি স্নায়ুলব্ধ অনুভুতি আসলে চুম্বকীয় কারসাজি। এই যে আমি কি বোর্ডে আংগুল চেপে লিখছি, আমার মন বলছে যে আমার আংগুল কিবোর্ড স্পর্শ করছে, কিন্তু বাস্তবে আমার আংগুলের কোন পরমানুর সাথে কি বোর্ডের কোন পরমানুর ভৌত সংস্পর্শে আসছে, নাকি, যেমন আপনি বললেন, আমার হাতের বহু পরমানুকনার সাথে কি বোর্ডের পরমানুকনার প্রেম-বিরহকেই আমার মগজ স্পর্শ বলে ধরে নিচ্ছে। এই ভাবে দৃশ্য, শ্রবন, স্বাদ, গন্ধ - সব কিছুই।

খুব ভাল লেগেছে। পরের কিস্তি অতিসত্তর পড়তে চাই।

তুলিরেখা এর ছবি

এমনকি সংস্পর্শে আসছে না পর্যন্ত। মাটির উপরে পা রেখে দাঁড়িয়ে আছি মনে করছি, আসলে ভেসে আছি আলোর একটা লেয়ারের উপরে। পায়ের পাতা মাটি ছোঁয় না, এর কণা আর ওর ওর কণার মধ্যে অনবরত বিনিময় হয় ফোটন, আলোর কণা। মারতে চাইলে ফাইনম্যানেরে ধরেন, আমি শুধু তাঁর থিওরি কইলাম। হাসি
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অনিকেত এর ছবি

প্রথমেই অনেক ধন্যবাদ দুর্দান্ত, সময় নিয়ে লেখাটা পড়ার জন্য।

আমি যতদূর জানি যে আমাদের ভাবনা-চিন্তা-অনুভূতি আসলে আমাদের মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটার গুলোর মাঝে বিদ্যুত-চুম্বকীয় অন্তর্ক্রিয়া(interaction)। আমাদের নিউরনের প্রান্তগুলো, যেগুলো কে ডেন্ড্রাইট বলা হয়, তারা সাধারনতঃ অন্য নিউরনের ডেন্ড্রাইটের কাছাকাছি একটা জালের মত করে ছড়িয়ে থাকে। আমাদের যে কোন 'মস্তিষ্ক-ক্রিয়া' আসলে এই ডেন্ড্রাইট গুলোর মাঝে ছোট ছোট বিদ্যুত-চুম্বকীয় তরঙ্গের আদান প্রদান। এই পারস্পরিক আন্তঃক্রিয়া কে সিন্যাপ্স (Synapse) বলে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

"আমরা যা দেখি, যা শুনি, যা চেখে দেখি- কোনো কিছুই আসলে তেমন না যেমনটা আমরা দেখি। এর সবই ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক সিগন্যাল, যা আমাদের মস্তিষ্ক গ্রহণ করে প্যাটার্ণ মিলিয়ে আউটপুট দেয়!"
আসলেই কি অনিকেত'দা!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

তানবীরা এর ছবি

আমি সব সময় জ্ঞান - বিজ্ঞান এড়িয়ে চলি, মূখ্য, মূখ্য থাকতেই পছন্দ করি। আমার মেয়ের টিভি দেখে দুধ খাওয়ার মতো, কখন আমি ভাষার টানে এ লেখা পড়ে ফেলেছি আমি নিজেও অবাক হচ্ছি ভেবে। এবং পুরোটা বেশ মজা নিয়ে পড়লাম।

শুধু ভাবছি বিজ্ঞান বইগুলো এতো নীরস ভাষায় না লিখে কেউ যদি এভাবে লিখতো তাহলে আমার মতো মূখ্যরাও কিছু বেশি জানতো।

পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম নিদারুন ভাবে।
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ তানবীরা, আপনার সহৃদয় মন্তব্যের জন্য।
আমাদের মেঘলা মা মণি কেমন আছে?
ওর নতুন কান্ড-কারখানার খবর জানতে মঞ্চায়---

নিরন্তর শুভেচ্ছা...

অতিথি লেখক এর ছবি

মনে করুন আপনি আপনার ঘরে বসে কাজ করছেন। এমন সময় কারেন্ট চলে গেল। আপনার হাঁকডাক শুনে মা একটা মোমবাতি আপনার টেবিলে রেখে গেছেন। একটু তাকিয়ে দেখুন বাতিটার দিকে।
কেমন একটা দীপ্তিময় উজ্জ্বল তার প্রভা। কিন্তু কারেন্টের বাতির মত জোর বেচারার নেই। তাই টেবিলের কিছু অংশে আলো আছে। বাকীটা অন্ধকার। টেবিলের যে অংশটুকু আলোকিত---ঐটাকে আমি আলোক ক্ষেত্র বলতে চাই। বাকী অংশ কে যদি আপনি আঁধার ক্ষেত্র নাম দিতে চান দিন। আমি মানা করছি না। আমার কাজ আলোক ক্ষেত্রটা নিয়ে।
এই মোমবাতী যেমন তার চারপাশে একটা 'আলোময় এলাকা' তৈরী করেছে, ঠিক তেমনি একটা ধণাত্মক বা ঋণাত্মক চার্জ কোথাও রেখে দিলে তার চারপাশেও ওমন একটা 'ক্ষেত্র' তৈরি হয়। তফাত হল, আলোর ক্ষেত্রটা দেখা যায়---চার্জেরটা দেখা যায় না।

এই ধনাত্মক আর ঋণাত্মক আধানের ব্যাপারটা, ইন্টার/এ লেভেলের ছাত্রদেরকে আদিমতম সম্পর্ক দিয়ে বুঝাইলে ওরা দেখি বেশ মজা পায়, আর বিষয়টাও পরিষ্কার হয়।

ধনাত্মক আধান = একটা মেয়ে (যারা নিজেদের চারপাশে একটা কেমন মায়াপুরী তৈরী করে রাখে (আধানক্ষেত্রের মতোই অদৃশ্য দেঁতো হাসি), ওই মায়াপুরীর মধ্যে আইসা পড়লে পুরা ধরা।)
ঋণাত্মক আধান = একটা ছেলে (খালি এইহানে যায়, ওইহানে যায় । ধনাত্মক কিছু দেখলেই হইছে দৌড়ায় যায়।)

সাধারণত (ওই সব বাই টাই বাদ) মেয়েরা ছেলেদেরকে আকর্ষণ করবে। একটা মেয়ে আরেকটা মেয়েকে অথবা একটা ছেলে আরেকটা ছেলেকে কখনই 'ওই' ভাবে আকর্ষণ করবে না...

এইসব হাবিজাবি বলার পরে, খালি আসল টার্মগুলা বুঝায় দিলেই হয়... আমি দেখছি ওরা কেন জানি এইভাবে বললে অনেক মজা পায়।

---নীল ভূত।

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ নীল ভূত।
আপনার ব্যাখ্যার স্টাইলটা বেশ ইন্টারেস্টিং লাগল--

ভাল থাকবেন, সব সময়

দুর্দান্ত এর ছবি

একটা মেয়ে আরেকটা মেয়েকে অথবা একটা ছেলে আরেকটা ছেলেকে কখনই 'ওই' ভাবে আকর্ষণ করবে না...

সমকামিতা তো চুম্বকের মতই আরেকটা বাস্তবতা।

অতিথি লেখক এর ছবি

দুর্দান্ত দা,
এর আগে আমি একটা 'সাধারণত' লাগাইসি। এর মানে আমি কিন্তু বলি নাই যে 'আসাধারণ' কোন আকর্ষন সম্ভব না।
আর সমকামিতা কোনদিনই চুম্বকের মতো বাস্তবতা হতে পারে না, কারণ চুম্বকের বাস্তবতা হলো বিপরীত মেরু আকর্ষিত হবে, সমমেরু বিকর্ষিত হবে। সমকামিতায় যা অনুপস্থিত। আপনি অন্য কোন যুক্তি দিয়ে বলুন।

---নীল ভূত।

দুর্দান্ত এর ছবি

পৃথিবীর সব মানুষকে নিয়ম মেনে বিষমকামি হতে হবে না। এটা আমার মতামত।
উভ/সমকামিতা, সাধারন এর বাইরের কিছু, এটা আপনার মতামত।
আমাদের মতামতের এই বিরোধটা থাকুক না, ক্ষতি কি?
মূল বিষয় থেকে একটু দূরে চলে এসেছি। চলুন ফিরে যাই।

দময়ন্তী এর ছবি

কি চমত্কার সহজ ভাষায় লেখা৷ অনেক ধন্যবাদ৷
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ দমু'দি!
ভাল থাকবেন, সব সময়---

মামুন হক এর ছবি

বিজ্ঞানের সাথে আমার মন কষাকষির ইতিহাস অনেক পুরানো। তারপরেও এই লেখাটা রসিয়ে রসিয়ে, তারিয়ে তারিয়ে , চেটে পুটে পরলাম। পরের পর্বের অপেক্ষায়।

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

চলুক

___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু বস, সময় নিয়ে পড়ার জন্যে।
নিরন্তর শুভেচ্ছা---

অতিথি লেখক এর ছবি

ইয়ে, মামুনদা শব্দটা 'পড়লাম' হবে বলে মনে হয়।
---- মনজুর এলাহী ----

অবাঞ্ছিত এর ছবি

৬ টা তারা দিলাম... একটা মনেমনে
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা হা
অনেক ধন্যবাদ বস।
ভাল থেকো, সব সময়!

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ভয়ানক সুন্দর হচ্ছে। চলুক
বই তো এভাবেই লিখা উচিত, আর পাশাপাশি শিক্ষক হিসেবে মনে করি আপনার মতো মানুষদেরই এগিয়ে আসা উচিৎ অনিকেত'দা।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু বস।
তুমি যে কষ্ট করে সময় নিয়ে পড়েছ এতেই আমি ভীষন খুশি।
ভাল থেকো, সব সময়!

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনাদের মত লেখকরা ক্যান যে টেক্সট বই ল্যাখে না

স্পার্টাকাস

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা ,অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্যে, স্পার্টাকাস---!
ভাল থাকবেন, সব সময়।

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

পঁচিশ কোটি তারা নেন বস!
সিম্পলি অঅঅঅঅসাধারণ!

___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

অনিকেত এর ছবি

এহহে পঁচিশ কোটি একটু বেশি হয়ে গেল বস---
এত দিলে, নিমু না ---হে হে হে
অনেক ধন্যবাদ সময় নিয়ে পড়ার জন্যে
ভাল থেকো সব সময়

পান্থ এর ছবি

চলুক
..................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

অনিকেত এর ছবি

হাসি

স্বপ্নহারা এর ছবি

মারাত্মক অনিকেতদা! আমি মন্ত্রী হলে আপনাকে দিয়ে বিজ্ঞান বই লেখাব...দেঁতো হাসি

খুব ভাল লাগছে...পরের পর্ব তাড়াতাড়ি দেন।

-------------------------------------------------------------
স্বপ্ন দিয়ে জীবন গড়া, কেড়ে নিলে যাব মারা!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা ---যাক দেশে আমার একটা চাকরীর বন্দোবস্ত হল।
কিন্তু তুমি মন্ত্রী হচ্ছ কবে??

অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্যে---

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

প্রিয় অনিকেত, চুম্বকের মতোই আকর্ষণ করলো আপনার উপস্থাপনা ভঙ্গিটি।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

অনিকেত এর ছবি

রিটন ভাই,

আমি প্রচন্ড সম্মানীত বোধ করছি, আপনি আমার লেখাটা পড়েছেন বলে। শুধু তাই নয়--- এই অকিঞ্চিতকর একজন লেখক কে দয়ার্দ্র কিছু কথাও বলেছেন।

ভাল থাকবেন রিটন ভাই!

অনিঃশেষ মঙ্গলকামনা

সাইফ তাহসিন এর ছবি

অনিকেতদা, পরের পর্ব কই? এতদিন তো শুনছিলাম আপনার বস ইটালি থেকে ইটা মারতেছে, ডেলাওয়ার ফিরে এসে কি ঢিল দিতেছে জানতে মঞ্চায়।

তাড়াতাড়ি ছাড়েন বস।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

 অরণ্য বংশী এর ছবি

১ম মন্তব্যটা করার জন্য ভাল একটা লেখা খুঁজছিলাম। আমাকে সাহায্য করার জন্য ধন্যবাদ হাসি

চমৎকার ব্যতিক্রমী লেখা !

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ অরণ্য বংশী।
আমি সম্মানীত বোধ করছি।
আমাদের সচলায়তনে আপনাকে হার্দ্যিক স্বাগতম জানাচ্ছি।

দ্রোহী এর ছবি

চমৎকার! ঝরঝরে! সাবলীল!

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু বস

আরাফাত রহমান এর ছবি

দারুনভাবে উপভোগ করলাম বিদ্যুৎ বেগম আর চুম্বক মিঞার মাঝে উথাল-পাথাল প্রেমের গল্প।

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা, ধন্যবাদ আরাফাত

মাথা নষ্ট ম্যান এর ছবি

অস্থির রকমের সুন্দর হয়েছে। (গুড়)

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ বস

সো এর ছবি

চলুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।