রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থান

অরফিয়াস এর ছবি
লিখেছেন অরফিয়াস (তারিখ: শুক্র, ১৫/০৬/২০১২ - ১:৪১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কিছুদিন যাবৎ বেশ জোরেসোরে আলোচনা চলছে মায়ানমারে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নিয়ে। এতে পার্শ্ববর্তী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের মানুষ নানা দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তাদের এবং তাদের সরকারের অবস্থানকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে চলেছেন। কিন্তু ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ থেকে যা ধারণা পেলাম তা হলো, অধিকাংশ ব্যক্তিই কোননা কোনোভাবে কিছু কিছু বাস্তব প্রেক্ষাপট এবং কারণ অগ্রাহ্য করে নিয়েই, নিজেদের অবস্থানে তর্ক করে চলেছেন। এতে করে পরিস্থিতির সামগ্রিক একটি ধারণা কারো বক্তব্যেই পাওয়া যাচ্ছেনা। বরং মনে হচ্ছে মায়ানমারে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাতে আক্রান্ত রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের লোকেদের আমাদের দেশে শরণার্থীর জায়গা দেয়া হবে কি হবেনা এই নিয়ে দুটি পক্ষ তৈরী হয়ে গেছে। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই যখন এই দেশের অধিকাংশ মানুষ স্বার্থ ছাড়া গলার স্বর জোরালো করেননা, এই বিষয়টিতেও অনেকেই নিজেদের স্বার্থ খুঁজে নিয়েছেন। একইসাথে ঘাপটি মেরে থাকা উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে রোহিঙ্গাদের ধর্মের ভাই পরিচয় দিয়ে তাদের জন্য মায়া কান্নার আয়োজনে। তাই মনে হলো রোহিঙ্গা শরণার্থী বিষয়ে একটি সামগ্রিক ধারণা নেয়া গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাড়িয়েছে।

প্রথমেই এটা পরিষ্কার হওয়া উচিত যে, মায়ানমারের অন্তর্গত ভূখন্ডে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের অবস্থানজনিত সমস্যা নতুন নয়। রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ভুক্ত জনগণ একদম শুরু থেকে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত ছিলো। ইতিহাস ঘাঁটলে মায়ানমারে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের অবস্থানজনিত ব্যাপারে কোনো স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যায়না। অধিকাংশ ইতিহাসবিদের মতে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের লোকজন একরকম দেশান্তর হয়ে বিভিন্ন সময়ে মায়ানমারের আরাকান অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে। এই দেশান্তরের পেছনের মূল কারণও স্বচ্ছ নয়। অনেকের ধারণা, স্বল্প ব্যায়ের জীবনযাত্রা কিংবা ব্রিটিশ অধ্যুষিত ভারতীয় উপমহাদেশে কাজের জন্য তত্কালীন বার্মায় স্থানান্তর। এছাড়াও একটি তথ্য প্রচলিত আছে রোহিঙ্গা ইতিহাসবিদদের মাঝে যার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে, এটি হলো, প্রাচীন আমলে আরব সওদাগরী জাহাজ আরাকানের নিকটবর্তী অঞ্চলে কোনো কারণে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। পরবর্তিতে এই জাহাজের লোকেরা আরাকানের রাজার দয়ায় এখানেই থেকে যায় এবং এই আরব সম্প্রদায়ের লোকেরাই পরে কালক্রমে রোহিঙ্গা হিসেবে পরিচিত হয়। তবে "রোহিঙ্গা" এই শব্দটি কিভাবে এলো তা নিয়ে সদুত্তর এখনো পাওয়া যায়না। তবে এই বিষয়ে মোটামুটি সকল ইতিহাসবিদই নিঃশ্চিত যে, রোহিঙ্গারা প্রথম থেকেই স্থানীয়দের বৈরী ব্যবহারের শিকার। এর পেছনের কারণ একটাই যেহেতু তারা স্থানীয় সম্প্রদায়ভুক্ত বাসিন্দা নয়। এছাড়াও ব্রিটিশ শাসিত ভারতীয় উপমহাদেশের সেই সময়ের বাংলা থেকে অনেক বাঙালি সেই সময় কাজের জন্য আরাকান অঞ্চলে গমন করে, পরবর্তিতে এরাও রোহিঙ্গা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের জনগণ ইসলাম ধর্মানুসারী।

মূলত লক্ষনীয় যে, রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের লোকেদের সাথে প্রথম থেকেই রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকেদের বৈরীতা বিদ্যমান ছিলো। রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকেরা বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। একারণে অনেকেই রোহিঙ্গা-রাখাইন বৈরীতাকে ধর্মীয় বৈরীতা হিসেবে চিহ্নিত করে থাকেন। কিন্তু এর পেছনের মূল কারনগুলো দৃষ্টির বাইরে থেকে যায়। যেহেতু আরাকান অঞ্চলের আদি বাসিন্দারা ছিলো রাখাইন তাই নতুন সম্প্রদায়ের লোকেদের আগমনে স্বাভাবিক ভাবেই যেই আর্থ-সামাজিক প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হয় বৈরীতা আসে সেখান থেকে, এখানে ধর্ম মূল কারণ নয়।আর যেহেতু নতুন বসতি গড়া রোহিঙ্গাদের কোনো বংশানুক্রমিক জায়গা ছিলোনা তাই এখানে জমি-জমা সংক্রান্ত একটি বিরোধ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। একারণে স্বাভাবিক ভাবেই রোহিঙ্গারা তাদের শুরুটা করেছিলো প্রতিকূল পরিবেশে। কিন্তু এই সমস্যা হয়তো মায়ানমারের সরকারের হস্তক্ষেপে সমাধান হতে পারতো, কিন্তু এটা জানার অপেক্ষা রাখেনা যে, মায়ানমারের সামরিক সরকার প্রথম থেকেই বিভিন্নভাবে সাধারণ জনতাকে নির্যাতন-নিপীড়ন করে এসেছে। তাদের রাষ্ট্র পরিচালনার অন্যতম নীতি ছিলো দমন-নিপীড়ন। এর মাঝে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কোকাং, পানথে এবং রোহিঙ্গাদের নির্যাতন ছিলো অন্যতম। এখানে লক্ষনীয় যে, সংখ্যালঘু হিসেবে শুধু রোহিঙ্গারাই নয় অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনও সামরিক জান্তার নির্বিচারে নির্যাতনের শিকার।

এখানে আরও একটি জিনিস লক্ষ্ করি, ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক সংঘটিত জরিপে ১৮৯১ সালে আরাকান রাজ্যে মুসলিম জনসংখ্যা ছিলো ৫৮,২২৫ জন যা কিনা পরবর্তিতে ১৯১১ সালে এসে দাড়ায় ১,৭৮,৬৬৭ জনে। অর্থাৎ ২০ বছরে দ্বিগুনেরও বেশি। এর পেছনে কারণ ছিলো ব্রিটিশ অধ্যুষিত এলাকা থেকে তত্কালীন বার্মা রাজ্যে কম মূল্যে শ্রমিক স্থানান্তর। এক্ষেত্রে স্থানীয় রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকেদের বিরাগভাজন হওয়ার আরও একটি কারণ হচ্ছে জনসংখ্যা বৃদ্ধি।

তাই ইতিহাস নিয়ে নাড়াচাড়া করলে রাখাইন-রোহিঙ্গা সাম্প্রদায়িক বৈরীতার কারণ হিসেবে যে কারণ গুলো চোখে পড়ে তার মাঝে ধর্মের গুরুত্ব একদমই গোড়ার দিকে। মূলত এটি স্থানীয়দের সাথে অবস্থানগত বৈরীতা, ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা এখানে মুখ্য নয়।

এখন রোহিঙ্গাদের এই অবস্থানগত সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে দেখতে হয় এই সমস্যা অতীতে কিরকম ছিলো। রোহিঙ্গারা বিভিন্ন সময়েই শাসক কিংবা আগ্রাসী গোষ্ঠির কাছ থেকে নির্যাতনের শিকার। এই ঘটনাগুলোকে মোটা দাগে ভাগ করলে কয়েকটি ঘটনা আলাদা করা যায়।

২৮শে মার্চ, ১৯৪২

মিনব্যা এবং ম্রহুং অঞ্চলের প্রায় ৫,০০০ মুসলিম রাখাইন জাতীয়তাবাদী এবং করেন্নি গোষ্ঠির আক্রমনে নিহত হয়। একই সময়ে উত্তর রাখাইন অঞ্চলের মুসলিমরা প্রায় ২০,০০০ আরাকানী ধ্বংস করে। এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে তত্কালীন ডেপুটি কমিশনার U Kyaw Khaing তাদের হাতে নিহত হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ

এইসময় জাপানি সৈন্যরা বার্মা দখল করে। কিন্তু তখন বার্মা ব্রিটিশ অধীনে ছিলো। ব্রিটিশ সৈন্যবাহিনী পিছু হটলে, জাপানি সৈন্যরা নির্যাতন শুরু করে স্থানীয়দের উপরে। এসময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে রোহিঙ্গা-রাখাইনদের মাঝে, এমনকি তখন বার্মা জাতীয়তাবাদীগোষ্ঠী এবং ব্রিটিশ অনুগতদের মাঝেও দাঙ্গা শুরু হয়। রোহিঙ্গা সম্প্রদায় ব্রিটিশদের সমর্থন করতো এবং জাপানিদের প্রতিরোধ করতে অংশগ্রহন করে,তাই স্বাভাবিক ভাবেই আগ্রাসী জাপানি সৈন্যবাহিনীর ক্ষোভের শিকার হয় এবং সেসময় অকথ্য হত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতন এর শিকার হয়। অনুমান করা হয় এই সময় প্রায় ২২,০০০ রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে তত্কালীন বাংলাতে প্রবেশ করে পালিয়ে যায়। পরবর্তিতে বার্মিজ এবং জাপানিদের লাগাতর নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রায় ৪০,০০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী সীমান্ত পার হয়ে চট্টগ্রাম প্রবেশ করে। যাদের অনেকেই বিভিন্ন সময় ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য অঞ্চলে কিন্তু অধিকাংশ সেখানেই শরণার্থী বসতি গড়ে তোলে।

বার্মার সামরিক জান্তা

বার্মার সামরিক জান্তা ক্ষমতা গ্রহনের পর থেকেই নির্যাতন শুরু করে। তাদের নির্যাতনের প্রধান লক্ষ্য হয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যার মাঝে রোহিঙ্গারাও ছিলো। সরকারের বিমাতাসুলভ আচরণ এবং স্থানীয়দের সাথে বিদ্যমান অস্থিতিশীলতা কখনই রোহিঙ্গাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা করতে দেয়নি। এমনকি সেই দেশের গণতন্ত্রপন্থীরাও রোহিঙ্গাদের অবস্থানগত ভাবে স্বীকার করতে চায়না, তাই রোহিঙ্গারা একরকম বহিরাগত ভাবে বসবাস করে এসেছে এই অঞ্চলগুলোতে।

১৯৭৮, বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট

মায়ানমার সৈন্যবাহিনীর "নাগামিন" অপারেশনের মাধ্যমে নির্যাতিত ও নিহত হওয়ার ভয়ে প্রায় ২,০০,০০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করে। "নাগামিন" এর মূল লক্ষ্য ছিলো এথেনিক ক্লিনসিং। তাই সরকার কর্তৃক বিতারিত হয়ে যেসকল রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে তাদের পক্ষে মায়ানমার আবার ফেরত যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে।

১৯৯১-৯২, বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট

মায়ানমার সরকার কর্তৃক নির্যাতিত হয়ে আবার অসংখ্য রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পরবর্তিতে জাতিসংঘের সহযোগিতায় এবং বাংলাদেশ-মায়ানমার সরকারের প্রতিনিধিদলের সিদ্ধান্তে কিছু সংখ্যক শরণার্থী মায়ানমার পুনঃপ্রবেশ করলেও অধিকাংশ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোতেই থেকে যায়।

এখন বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে প্রায় ৫,০০,০০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী অবস্থান করছে। ১৯৯১-৯২ সালে এদেশে আসা শরণার্থীদের অনেকেই দেশে ফেরত গেলেও যারা এখানে থেকে গেছে তাদের মাঝে মাত্র ৩০,০০০ নথিভুক্ত। বাকি প্রায় ২,০০,০০০ নথিভুক্ত নয়। তাই জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী এই নথিভুক্ত শরণার্থীরাই কক্সবাজারের কুতুপালং এবং নয়াপাড়া এই দুটি শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করছে। বাকিদের ব্যাপারে তথ্য অপ্রতুল।

এছাড়াও থাইল্যান্ড-মায়ানমার সীমান্তের থাইল্যান্ড শরণার্থী শিবিরে প্রায় ১,১১,০০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী অবস্থান করছে। বিভিন্ন সময়ে আরও কিছু শরণার্থী বিক্ষিপ্ত ভাবে সমুদ্র থেকে থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া এবং আরও কয়েকটি দেশের জাহাজের মাধ্যমে উদ্ধারপ্রাপ্ত হয়।

এখন কয়েকদিন ধরে সংঘটিত হওয়া সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় আবারও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়টি সবার সামনে চলে এসেছে। দাঙ্গার পেছনের কারণ সঠিক ভাবে জানা না গেলেও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার মতে একজন রাখাইন তরুণীর ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকেরা ১০ জন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের লোক হত্যা করে। পরে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষের প্রায় ৩০ জন নিহত হয় এবং প্রায় ৩০০রও বেশি বাড়ি-ঘরে আগুন দেয়া হয়। চলমান দাঙ্গায় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সাহায্য সংস্থাগুলো তাদের কর্মীদের এসব অঞ্চল থেকে সরিয়ে আনতে বাধ্য হয়। এমনকি জাতিসংঘের কর্মকর্তারাও ওই অঞ্চল থেকে সরে আসতে বাধ্য হন। এর পরেই বিভিন্ন জলযানের মাধ্যমে সমুদ্র পারি দিয়ে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের লোকেরা শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা শুরু করে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এবার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আর দেশের অভ্যন্তরের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় দেয়া হবেনা বলে জানিয়ে দেয়া হয়। সরকারের এই সিদ্ধান্তের পক্ষে-বিপক্ষে জনমত তৈরী হয়েছে এবং বিতর্ক চলছে। কিন্তু কোনো একটি পক্ষে সহজেই মত প্রদানের আগে "রোহিঙ্গা শরণার্থী" একটি জটিল প্রসঙ্গ এটি ভেবে দেখা উচিত। আবার কিছু সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি তাদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে। এরকমই একটি গুজবের নমুনা দেখুন "কোরানের আলো" নামের একটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক পেইজে এখানে

এই পেইজ যেই ছবিটিকে দাঙ্গায় নিহত রোহিঙ্গাদের মৃতদেহ হিসেবে দাবি করছে তা আসলে ১৩ জানুয়ারী, ২০০৯ সালে থাইল্যান্ড সমুদ্রসীমান্তে আটককৃত রোহিঙ্গা জেলেদের ছবি। এদের শাস্তি হিসেবে সমুদ্রতটে রোদে শুয়ে থাকতে বাধ্য করেছে থাইল্যান্ড সীমান্তবাহিনী। এই বিষয়ে খবর দেখুন এখানে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে জীবন্ত মানুষের ছবিকে যারা স্বার্থ সিদ্ধির জন্য মৃত মানুষের ছবি বানিয়ে প্রোপাগান্ডা হিসেবে ব্যবহার করে তারা ঠিক কতোটা মানুষ? এই ছবিটি ওই পেইজে ১৩ জুন, ২০১২ পোস্ট করা হয়। মাত্র একদিনের মাঝে শেয়ারের সংখ্যা দাড়িয়েছে ২,১৬৯। ধর্মের ভাই স্বীকৃতি দিয়ে এভাবে প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা উসকে দেয়ার এরকম নির্লজ্জ প্রচেষ্টাকে ধিক্কার জানানোর ভাষা নেই।

এখন প্রশ্ন উঠছে সরকারের অনমনীয় সিদ্ধান্তের প্রতি। মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করলে এই সিদ্ধান্তটি সমর্থনের প্রশ্ন আসেনা। একারণে অনেকেই মানবিক দিক বিবেচনা করে সীমান্ত খুলে দিতে বলছেন বাংলাদেশ সরকারকে। তাদের এই মানবতাবাদী প্রচেষ্টাকে অবশ্যই সাধুবাদ জানাই। কিন্তু একটি দেশের সরকারের পক্ষে এইধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া কতোটা যুক্তিযুক্ত কিংবা এরকম পরিস্থিতিতে কতোটা কার্যকর বা সহজ এটা নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। মত দেয়ার আগে কিংবা ঢালাওভাবে সরকারকে দোষ দেয়ার আগে একবার সমগ্র পরিস্থিতিকে চিন্তা করে নেয়া উচিত বলে মনে করি। যেসব বিষয় উঠে এসেছে সেগুলো আলাদা আলাদা করে দেখা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে জায়গা দিতে কতটুকু দায়বদ্ধ? মানবিক দিক বিবেচনা করলে এবং শুধুমাত্র এই দাঙ্গার কথা বিবেচনায় আনলে সরকার শরণার্থীদের জায়গা দেয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আনতে পারে। কিন্তু এখানে ভুলে গেলে চলবেনা, একটি দেশের সরকার আগে সেই দেশের মানুষের কাছে দায়বদ্ধ। মানবিক দিক বিবেচনায় আনলেও সরকারের কর্তব্য অস্বীকার করার কোনো অবকাশ নেই। যেহেতু বেশ কিছু ঘটনায় এখন ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ৫,০০,০০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে তাহলে নতুন করে যদি সীমান্ত খুলে দেয়া হয় তাহলে শরণার্থী সংখ্যা আরও বাড়বে কয়েক গুন। জনবহুল বাংলাদেশ নিজের দেশের মানুষের ভারেই নিমজ্জিত। সেখানে আগের পাঁচ লক্ষ এবং বর্তমানের অতিরিক্ত শরণার্থী স্থান দেয়া দেশের জনগনের স্বার্থ এবং সরকারের কর্মপরিধির সাথে সামঞ্জস্য কিনা তার প্রশ্ন চলে আসে। এছাড়াও এই অতিরিক্ত শরণার্থীদের নতুন জায়গার প্রয়োজন হবে, যা কিনা আমাদের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে একটি বিরাট সমস্যা। এছাড়াও এদের জন্য খাদ্য/বস্ত্র/চিকিৎসা অন্যান্য সুবিধা নিঃশ্চিত করা ঋণের ভারে জর্জরিত একটি দেশের সরকারের জন্য বাড়তি চাপ। তাই সরকারের পক্ষ থেকে শুধু মানবতার দিকটি চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভবপর নয়।

অনেকের মতে বর্তমানের শরণার্থীদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেয়ার কথা চিন্তা করা যায়। কিন্তু সমস্যা এখানেও। মায়ানমার সরকার প্রথম থেকেই রোহিঙ্গা সম্প্রদায়কে বিতারণে উত্সাহী। এর আগে যেই পরিমান শরণার্থী এসেছে বাংলাদেশে তার খুবই কম অংশও আবার ফেরত গেছে। মায়ানমার সরকার কখনোই এই ব্যাপারে আগ্রহী ছিলোনা। সামরিক শাসনামলে মায়ানমারের সাথে আমাদের দেশের সম্পর্ক আর যাই হউক মিষ্টি-মধুর ছিলোনা এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। এখন দেখা যাচ্ছে, মায়ানমার সরকার অতীতের শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতেই আগ্রহী নয় তাহলে এই সরকারের থেকে বর্তমান শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে যে সহযোগিতা পাওয়া যাবেনা এই কথা অনায়াসে বলা যায়। এছাড়াও মায়ানমারের অবস্থানগত দিক বিবেচনায় আনলে দেখা যায়, এর সাথে চারটি দেশের লাগোয়া সীমান্ত রয়েছে, ভারত, বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড এবং চীন। কিন্তু শরণার্থী সমস্যা সবসময়ই সামাল দিয়েছে বাংলাদেশ এবং থাইল্যান্ড। তবুও থাইল্যান্ডের থেকে ৫ গুন বেশি শরণার্থী বাংলাদেশে আছে। একের পর এক সমস্যায় রোহিঙ্গা শরণার্থী আসা নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে যা কোনো দেশের সরকারের পক্ষে একক ভাবে সহযোগিতা করা সম্ভব নয়। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে এই শরণার্থী সমস্যা সামলানো কঠিন। তারপরও এর আগে বাংলাদেশ কখনো বৈরী মনোভাব পোষণ করেনি। কিন্তু শরণার্থী আশ্রয় প্রদান কখনোই এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান নয়।

সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা মায়ানমারের প্রেক্ষিতে নতুন ঘটনা নয়। আন্তর্জাতিকভাবে কখনই সেরকম কোনো চাপ প্রয়োগ করা হয়নি কিংবা চাপ প্রয়োগ করা হলেও মায়ানমার সরকার তা অগ্রাহ্য করে গেছে অতীতে। তাই এই দাঙ্গায় যদি বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ও তাহলেও যে এই সমস্যার পুনরাবৃত্তি হবেনা এ আশা করা সহজ নয়। তাই জাতিসংঘ এবং উন্নত শক্তিশালী দেশগুলোর উচিত যেভাবেই হোক চাপ প্রয়োগ করে এই সাম্প্রদায়িক সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান করা। নাহলে অগুনিত শরণার্থী কোননা কোনো ঘটনায় বাংলাদেশে সমানত অতিক্রম করে আসতেই থাকবে। যা কোনভাবেই একটি দেশের সরকারের পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব নয়। তাই জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক উপদেষ্টার অনুরোধে নেতিবাচক উত্তর দিয়েছে সরকার। এছাড়াও যেসব অঞ্চলে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আশ্রয় গ্রহণ করেছে অতীতে সেসব অঞ্চলের সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকেও এই বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব পাওয়া গেছে।

বর্তমান শরণার্থী বিষয়টি যেকারণে আরও জটিল হয়েছে তা হচ্ছে বাংলাদেশের মায়ানমার সংলগ্ন এবং পার্বত্য অঞ্চলগুলোর আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। যেহেতু রোহিঙ্গা শরনার্থীরা অশিকাংশই নথিভুক্ত নয় তাই এদের বড় একটা অংশ সময়ের সাথে সাথে সমাজ বিরোধী নানা কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েছে। এই অঞ্চলগুলোতে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, অপহরণ এবং মাদক ব্যবসায় রোহিঙ্গাদের জড়িত থাকার প্রমান পাওয়া গেছে। কিছু প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই সব শরণার্থী শিবিরে মাদক এবং অবৈধ অস্ত্রের সহজলভ্যতার কথা। তাই পূর্বের শরণার্থীদের এহন কর্মকান্ড যেহেতু কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়, বর্তমানের শরণার্থী আশ্রয় দিয়ে এই সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলার দায়িত্ব কোনো সরকারের পক্ষেই নেয়া সম্ভবপর নয়। যেখানে নিজের দেশের জনগনের অবস্থান বিপন্ন সেখানে সরকারের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতাও কমে আসে এটা বোঝা উচিত। এছাড়াও অনেক শরণার্থীই বিভিন্ন উপায়ে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব লাভ করেছে এবং অনেক ক্ষেত্রে তারা যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠির প্রত্যক্ষ মদদে নির্বাচনে অংশ নিয়ে এদের হয়ে কাজ করেছে। এছাড়াও ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী অনেক সময়েই এদের নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য ব্যবহার করেছে।

অনেকেই এর সাথে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ের শরণার্থী আশ্রয়ের তুলনা করে যাচ্ছেন। কিন্তু এখানে তারা মূল বিষয়টি ভুলে গেছেন, বাংলাদেশের যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ভারতের সহায়তা প্রদান এবং শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্র একটি রাজনৈতিক ও অবস্থানগত সিদ্ধান্ত। এখানে অধিকাংশ শরণার্থী যুদ্ধ শেষে বাংলাদেশে ফেরত আসে এবং যুদ্ধকালীন এককালীন এই পরিস্থিতির উদ্ভবে ভারতের দীর্ঘ মেয়াদী কোনো নেতিবাচক প্রভাব ছিলোনা। কিন্তু মায়ানমার কোনো যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে আক্রান্ত নয়। আর রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা এককালীন নয়। আগে অনেকবার বাংলাদেশ নিজের সীমান্ত খুলে দিয়েছে কিন্তু এই সমস্যা লাঘব হয়নি। বরং রোহিঙ্গা শরণার্থী কর্তৃক বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থানে বিরূপ প্রভাব রয়েছে। একই সাথে এটাও দেখা উচিত যে বাংলাদেশে শুধু রোহিঙ্গা শরণার্থীই নয় ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধকালীন পরিস্থিতির পরে মিরপুরের বিপুল সংখ্যক শরণার্থীও রয়ে গেছে। তাই বাংলাদেশের মতো একটি দেশের পক্ষে একই সাথে এতগুলো অবস্থানে শরণার্থী সমস্যা মোকাবিলা করা আসলেই কঠিন। এসব ক্ষেত্রে সামাজিক প্রভাব যে বিরূপ তা সকলেই অবগত আছেন।

প্রশ্ন হচ্ছে শরণার্থী সমস্যার পেছনের কারণ কি? এখানে শরণার্থী সমস্যার পেছনের কারণ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা একটি দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এটি সামলানোর দায়িত্বও সেই দেশের সরকারের। এই ব্যাপারে সরকার অপারগ হলে সাহায্য অবশ্যই করা প্রয়োজন। কিন্তু মায়ানমার নিজের দেশের এই সমস্যা মোকাবিলা করতে সক্ষম কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনিচ্ছুক। দাঙ্গা আক্রান্ত অঞ্চলগুলোতে সামরিক আইন জারি করা হয়েছে কিন্তু মায়ানমার সরকার যেহেতু কখনোই রোহিঙ্গাদের স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করতে ইচ্ছুক নয় তাই এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার যদি শরণার্থী আশ্রয় প্রদান করে তাহলে বিষয়টি একটি দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে পরিনত হবে। বাংলাদেশেও অতীতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে কিন্তু কখনোই কি কোনো দেশের সীমান্ত এর জন্য খুলে দেয়া হয়েছে? সংখ্যালঘু অত্যাচার বাংলাদেশেও ঘটেছে বিভিন্ন সময়ে কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশগুলো কখনোই সেটিকে দুই দেশের মধ্যকার সমস্যায় পরিনত করেনি বরং বাংলাদেশের সরকার নিজেরাই এই অভ্যন্তরীণ বিষয় রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করেছে। তাই মায়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়টিকে বাংলাদেশ যদি দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে পরিনত করে এবং নতুন করে শরণার্থী আশ্রয় প্রদান করে তাহলে সেটি আগের সমস্যাটিকেই আরও জটিল করবে।

সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় উত্থিত এই শরণার্থী সমস্যায় কিছু উগ্র ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক অপশক্তি নিজেদের অপপ্রচার চালাতে ব্যস্ত। তারা এমনভাবে বিষয়টিকে তুলে ধরছে যাতে মনে হয়, বৌদ্ধ-মুসলমান ধর্মীয় দাঙ্গাই একমাত্র কারণ। এতে করে কিছু সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। শরণার্থী আশ্রয় প্রদানে এই অপশক্তির মূল বক্তব্য হচ্ছে ধর্মীয় দিক এবং রোহিঙ্গা মুসলমানদের ধর্মীয় ভাই হিসেবে তুলে ধরে পুরো বিষয়টিকে একটি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ হতে প্রোপাগান্ডা হিসেবে ব্যবহার করা। কিন্তু সাধারণ মানুষের এটা মনে রাখা প্রয়োজন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের যদি বাংলাদেশ সরকার আশ্রয় প্রদান করে তাহলে মানবিক দিক বিবেচনায় এনেই করবে, ধর্মীয় দিক নয়। আমরা সাধারণ মানুষ যদি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আমাদের দেশে আশ্রয়ের ব্যাপারে সমর্থন জানাই তাহলে তা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানবিক দিক বিবেচনা করে, কোনো একটি বিশেষ সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ হিসেবে নয়। আর যারা এই সংকটময় পরিস্থিতিতেও নিজ হীন সাম্প্রদায়িক স্বার্থের জন্য ব্যস্ত তাদের উদ্দেশ্য যে কতোটা মানবিক তা আর বলার প্রয়োজন পড়েনা। এদের প্রতিহত করা প্রয়োজন।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই সময়ে এই সব বিষয়ে চিন্তা প্রাধান্য পাওয়া উচিত নাকি মানবিকতা? কিন্তু পূর্ব পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় আনলে শরণার্থী আশ্রয়ের মতো ব্যাপারে সিদ্ধান্তে সরকার আসলেই একটি সংকটময় অবস্থানে পড়ছে। কিন্তু যথাসম্ভব ভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাহায্য করার, বিজেবি সদস্যরা আগত শরণার্থীদের খাবার,চিকিৎসা,জ্বালানি দান করছেন। আহত শরণার্থীদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে। কিন্তু এই সংকটময় পরিস্থিতিতে এই মানবিক সাহায্য যথেষ্ট মনে না হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আশ্রয় প্রদানের মত অবস্থা সরকারের আছে কিনা এই বিষয়ে আলোচনা প্রয়োজন।

জাতিসংঘ পর্যবেক্ষণদল মায়ানমার সরকারের সাথে আলোচনায় বসতে চাইছে এবং অনুরোধ করা হয়েছে যাতে যত দ্রুত সম্ভব এই পরিস্থিতি সামাল দেয়া হয়। কিন্তু পৃথিবীর অন্যান্য জাতিগত সহিংসতার দিকে তাকালেও কিন্তু আমরা ওই একই চিত্র দেখি। একটি ক্ষুদ্র বিষয় থেকে শুরু হওয়া দাঙ্গার শিকার অসংখ্য নিরাপরাধ মানুষ। সরকারগুলো হয়তো শেষপর্যন্ত এই ধ্বংসযজ্ঞ থামাতে সক্ষম হয় কিন্তু ততক্ষণে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে যায়। আর এই ক্ষতি অপূরণীয় যা কোনো আশ্বাসে কিংবা সাহায্যেই পূরণ হওয়ার নয়।

বর্তমান সময়ের মায়ানমারের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশে আশ্রয় প্রদান করলে অবশ্যই সেই সিদ্ধান্ত সাধুবাদ পেত, কিন্তু প্রশ্ন থেকে যেত সেটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত কিনা। অনেক সময়েই রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ স্বার্থ বিবেচনায় এনে এবং আন্তর্জাতিক অবস্থানের কথা চিন্তা করে সরকারকে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয় যা কিনা ঘোর মানবতাবিরোধী কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার জায়গায় যে মানুষগুলো বসে আছেন তাদের জন্য কাজটি যে সহজসাধ্য নয় সেটিও বোঝা প্রয়োজন।

সরকারের এই সিদ্ধান্ত আমি সমর্থন করছিনা ব্যক্তিগতভাবে কিন্তু এর পেছনের কারণগুলোকেও উড়িয়ে দিচ্ছিনা। আমি নিজে যদি এই আক্রান্ত মানুষগুলোকে কিছু সাহায্য করতে পারতাম তাহলে হয়তো কোনো কাজ হতো। কিন্তু এরকম পরিস্থিতিতে মানবিক দিক বিবেচনায় এনে সরকার ঠিক কতটা উদার আচরণ করবে তা সময়ই বলে দিবে।

মানবিক দিক বিবেচনা করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে অন্তত বাংলাদেশের সমুদ্রতট অঞ্চলে একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থা করে দেয়া হোক এই কামনা করবো। শুধু তাই নয়, জাতিসংঘ ও অন্যান্য দেশের সহযোগিতায় এই সকল শরণার্থীকে নিজের বাসভূমিতে নিরাপত্তা নিঃশ্চিত করে ফিরিয়ে দেয়ার বন্দোবস্ত করা হোক এই আশাও করবো। যতই রাষ্ট্রীয় স্বার্থ বিবেচনায় আনি না কেন, দিন শেষে আমরা মানুষ। তাই মানবিক গুনাবলী ভুলে শুধু কূটনীতি বিবেচনায় আনলে যে আত্মগ্লানির সৃষ্টি হয় তার সামনে আমরা দাড়াতে পারবো কি?

এখন দেখার অপেক্ষা শুভ-অশুভের এই অসম যুদ্ধে মানবিকতার জয় হয় কিনা ??


মন্তব্য

ইমা এর ছবি

অপেক্ষা করছিলাম এই বিষয়ে একটা লেখার জন্য। ধন্যবাদ আপনার সময় উপযোগী লেখাটার জন্য।

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকেও সময় নিয়ে লেখাটি পড়ে দেখার জন্য।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

দরকারী লেখা।

সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় উত্থিত এই শরণার্থী সমস্যায় কিছু উগ্র ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক অপশক্তি নিজেদের অপপ্রচার চালাতে ব্যস্ত। তারা এমনভাবে বিষয়টিকে তুলে ধরছে যাতে মনে হয়, বৌদ্ধ-মুসলমান ধর্মীয় দাঙ্গাই একমাত্র কারণ। এতে করে কিছু সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। শরণার্থী আশ্রয় প্রদানে এই অপশক্তির মূল বক্তব্য হচ্ছে ধর্মীয় দিক এবং রোহিঙ্গা মুসলমানদের ধর্মীয় ভাই হিসেবে তুলে ধরে পুরো বিষয়টিকে একটি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ হতে প্রোপাগান্ডা হিসেবে ব্যবহার করা। কিন্তু সাধারণ মানুষের এটা মনে রাখা প্রয়োজন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের যদি বাংলাদেশ সরকার আশ্রয় প্রদান করে তাহলে মানবিক দিক বিবেচনায় এনেই করবে, ধর্মীয় দিক নয়। আমরা সাধারণ মানুষ যদি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আমাদের দেশে আশ্রয়ের ব্যাপারে সমর্থন জানাই তাহলে তা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানবিক দিক বিবেচনা করে, কোনো একটি বিশেষ সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ হিসেবে নয়। আর যারা এই সংকটময় পরিস্থিতিতেও নিজ হীন সাম্প্রদায়িক স্বার্থের জন্য ব্যস্ত তাদের উদ্দেশ্য যে কতোটা মানবিক তা আর বলার প্রয়োজন পড়েনা। এদের প্রতিহত করা প্রয়োজন।

ঠিকাছে।

প্রথমেই মনে রাখা ভাল, 'শুভ-অশুভের এই অসম যুদ্ধে' বাংলাদেশ আসলে কোনো পার্টি না। আর গোটা সমস্যাটাকে যেযার পলিটিকাল ধান্দা থেকে ব্যাখ্যা করতেছে। কিছু লোক যারা ভারত-নাম উচ্চারণ বা সহ্যই করতেই পারত না, তারা এখন একাত্তরে ভারতের বন্ধুতা আর সাহায্যের কথা বলতেছে। প্রচ্ছন্ন উদ্দেশ্য, বাংলাদেশকে জাতি হিসাবে অকৃতজ্ঞ প্রমাণ করা। এবং কোনো একভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে 'ঘুরপথে' একটা তাৎক্ষণিক রিঅ্যাকশন হিসাবে সাব্যস্ত করা (এইটার একটা জটিল সাইকোঅ্যানালিসিস সম্ভব)। অন্যদিকে দেখেন সাম্রাজ্যবাদবিরোধি চেঁচামেচি করত যারা, তাদের অনেকেই্ এখন আমেরিকার রেফারেন্স দেয় - বলে, আমেরিকাও বাংলাদেশকে আহ্বান জানাইছে। এদের মধ্যেই আরেকদল লোক মুসলিম ব্রাদারহুডের জজবা তুলতেছে। এইসব মতলববাজীর মধ্যে ক্ষমতাকাঠামো আর নিপীড়িত জনগোষ্ঠির লড়াইটা ঢাকা পড়ে গেছে। সব ইস্যুকে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার সুশীল অসুস্থতাও এইসবে প্রকট-লক্ষণ। মিনহোয়াইল ফরেন মিনিস্টার হালকার উপ্রে ওয়েস্টের সামগ্রিক প্রবণতাকে ক্রিটিক করছেন :

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ কখনো, কোনোভাবে অমানবিক আচরণ করেনি এবং করবেও না।"

তিনি জানান, জলপথে যে সব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছেন, তাদের খাবার, ওষুধ এবং প্রয়োজনীয় জ্বালানি বিজিবি সরবরাহ করছে। আবহাওয়া খারাপ থাকার জন্য কিছু রোহিঙ্গা সেন্ট মার্টিনে অবস্থান করছেন, তাদের ফেরত পাঠানো হয়নি। সেখানে একজন রোহিঙ্গা নারী সন্তানও প্রসব করেছেন।

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে জাতিসংঘ সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে দীপু মনি বলেন, "তারা যে সহায়তাটা বাংলাদেশের ভেতর দিতে চাচ্ছেন, তারা যেন তাদের সহায়তাটা মিয়ানমারের ভেতর দিয়ে দেন।"

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর নাম উল্লেখ না করে তাদের মিয়ানমার সফরের কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "পাশ্চাত্য নেতারা এখন মিয়ানমারে যাচ্ছেন। আজ তো মিয়ানমার তাদের বন্ধু রাষ্ট্র। আজকের মিয়ানমার আগের মিয়ানমার নয়।

"আজ যদি তারা সম্ভাবনাময় বন্ধু রাষ্ট্রটিকে অনুরোধ জানিয়ে সংঘাত নিরসনের চেষ্টা করতেন, তাহলে বুঝতাম, সত্যিকারে তারা সমাধান চান।"

সূত্র


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ মন্তব্যে আরও গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য যোগ করার জন্য।

কয়েকদিন ধরে প্রচুর বিতর্ক-কুতর্ক দেখে লেখাটার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলাম। বাংলাদেশের যুদ্ধপরাধী শক্তি এবং সাম্প্রদায়িক শক্তি এরা কিছু পেলেই যেভাবে হামলে পড়ে তাতে যেকোনো পরিস্থিতি ঘোলাটে হওয়া স্বাভাবিক। আর বাংলাদেশের ফেসবুক আর অনলাইন মানবতাবাদী জনতা যেভাবে না জেনেই সব খবর-কুখবর-বানোয়াট খবর শেয়ার করতে উঠেপড়ে লাগে তাতে গুজব ছড়ানো তো সময়ের ব্যাপার মাত্র। মানুষ মনে করে কিছু না জেনেই মানবতাবাদী হওয়া একটা ফ্যাশন আর একটা মাউস ক্লিক করেই সস্তায় এর স্বাদ পাওয়া সম্ভব।

যদি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য এতো দরদ থাকে মানুষের তাহলে পুরনোদের খোঁজখবর কয়জন নেন জানা দরকার। এছাড়াও যারা ধর্মীয় ভাই এর রবে সাড়া দিয়ে লাফিয়ে যাচ্ছেন, বর্তমান সিরিয়াতে চলা গৃহযুদ্ধ সম্পর্কে তাদের মতামত জানতে মন চায়।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

মায়ানমারও এটাকে ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বলছেনা । মায়ানমারের ইসলামী সংগঠনগুলো নাকি বিবৃতি দিয়েছে যে এটা কোনো ধর্ম সংক্রান্ত সহিংসতা নয় ।এখানে কমেন্টস দেখুন
অথচ আমাদের দেশের হটাৎ মানবতাবাদী গোষ্ঠি একে নিয়ে ধর্মীয় ফায়দা লুটে নিচ্ছে ।

মায়ানমারের অন্যান্য গোষ্ঠিও রোহিঙ্গাদের তাদের দেশের বলে স্বীকার করে না । রোহিঙ্গাদের বহিরাগত এবং অনেকাংশে বাঙালি(এবং বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী) বলে প্রচার করে । সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও ওদের অবৈধ অনুপ্রবেশকারী কোনোকোনো ক্ষেত্রে সন্ত্রাসী বলে থাকে । বলাবাহুল্য ইসলামি সন্ত্রাসী ।

কড়িকাঠুরে

সৃষ্টিছাড়া এর ছবি

খুব সময়োপযোগী লেখা। বেশির ভাগ মানুষেরই রোহিঙ্গাদের সমস্যাটি নিয়ে কোনো ধারনাই নেই প্রায়। চলমান ধর্মীয় প্রপাগান্ডা তাদেরকে প্রভাবিত করছে শুধু। তবে দিনশেষে মানবতার জয় হোক এই প্রত্যাশা করি।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ লেখাটির জন্য।

অরফিয়াস এর ছবি

আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের প্রধান সমস্যা কিছু না জেনে গুজবে ভেসে যাওয়া, এটা যতদিন বন্ধ না হচ্ছে সামগ্রিক সামাজিক উন্নতি স্বপ্নের মধ্যেই থাকবে।

আপনার মতো আমিও আশা করি মানবতার জয় হবে।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হিমু এর ছবি

রাতারাতি প্রচুর মানবতাবাদী দেখে ফেললাম এই ইস্যুতে। সাতক্ষীরায় যখন কয়েক সপ্তাহ আগে একটা সাম্প্রদায়িক আক্রমণের ঘটনা ঘটলো, কয়েকটা গ্রামে জামায়াতে ইসলামীর মদদে হিন্দু এবং মুসলমানদের বাড়ি আক্রান্ত হলো, এই এক রাতের মানবতাবাদীরা তখন চুপ ছিলো। এখন তাদের হাহাকারে আকাশ ভারি হয়ে আছে রোহিঙ্গাদের দুঃখে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ইয়াঙ্গুন অভিযোগ করেছে, জামায়াতে ইসলামী রোহিঙ্গাদের বার্মার অভ্যন্তরে সক্রিয়তার জন্য সশস্ত্র মদদ দিচ্ছে।

সরকারের উচিত এই এক রাতের মানবতাবাদীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এদেরই বাড়িতে একটি করে শরণার্থী রোহিঙ্গা পরিবারকে আশ্রয় দেয়া। দেখি তারা মুসলমান ভাইদের জন্য কতটুকু করতে রাজি।

শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের মধ্যে কোনো ঘাপলা আছে মনে হয়। অং সান সু চি তার নিজের দেশের ভিতরে জাতিগত দাঙ্গার ইস্যুকে ঠিকমতো অ্যাড্রেস না করে ইয়োরোপে গেছেন বক্তিমা দিতে। ইউনূসের প্রতি আহ্বান, আপনি অং সান সু চিকে সামাজিক ব্যবসার লাইনঘাট চিনিয়ে দিন। উনাকে দিয়েও হবে।

অরফিয়াস এর ছবি

রাতারাতি প্রচুর মানবতাবাদী দেখে ফেললাম এই ইস্যুতে। সাতক্ষীরায় যখন কয়েক সপ্তাহ আগে একটা সাম্প্রদায়িক আক্রমণের ঘটনা ঘটলো, কয়েকটা গ্রামে জামায়াতে ইসলামীর মদদে হিন্দু এবং মুসলমানদের বাড়ি আক্রান্ত হলো, এই এক রাতের মানবতাবাদীরা তখন চুপ ছিলো। এখন তাদের হাহাকারে আকাশ ভারি হয়ে আছে রোহিঙ্গাদের দুঃখে।

চলুক নিঃসন্দেহে সহমত।

যেসব মানুষ দেশের সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে জেহাদের ডাক দেয় সময়ে সময়ে আজ তারাই সোচ্চার বেশি। মায়ানমারের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় মুমিন বান্দাদের ইমানে আঘাত লাগে কিন্তু নিজের দেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনে তারা অন্য দেশের ষড়যন্ত্র খুঁজে পান।

অং সান সু চি নিজেও রোহিঙ্গাদের সমর্থন করেননা যতদুর খবরের কাগজে দেখলাম। তার অবস্থান এই বিষয়ে এখনো স্পষ্ট নয়। রোহিঙ্গা অনেকেই তার কাছে আবেদন করেছে এই বিষয়ে কথা বলার জন্য। দেখা যাক আগে কি হয়।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

স্বপ্নহারা এর ছবি

চলুক

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

তিথীডোর এর ছবি

সরকারের উচিত এই এক রাতের মানবতাবাদীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এদেরই বাড়িতে একটি করে শরণার্থী রোহিঙ্গা পরিবারকে আশ্রয় দেয়া। দেখি তারা মুসলমান ভাইদের জন্য কতটুকু করতে রাজি।

হ।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সৈয়দ মাসুদ এর ছবি

এই সমস্যা সমাধানের জন্য অং সান সুচী এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মায়ানমার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। মায়ানমার সরকারের মতে এরা ইল্লিগাল বাংলাদেশি।মানবতার স্বার্থে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলে এদের ফেরত পাঠানোর কোন সম্ভাবনাই নাই।বিহারীদের গত ৪০ বছরেও ফেরত পাঠানো যায় নাই। জনংখ্যার ভারে বাংলাদেশ এমনিতেই ন্যুজ, এই পুশডব্যাকদের ভরণপোষণ করার সামর্থ বাংলাদেশের আছে কি?তাছাড়াও চট্টগ্রামে অলরেডি প্রায় ৩ লাখ রোহিঙ্গা আছে, এই সংখ্যা ৬ লাখ হলে তারা যদি স্বাধীন হতে চায়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদেরকে সমর্থন দিবে না, এরকম কোন গ্যারান্টি নেই। ফিলিস্তিনেও কিন্তু ইসরাইলীরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শ্বরণার্থী হিসাবেই বসতি স্থাপন শুরু করেছিল।

সৈয়দ মাসুদ এর ছবি

তাদেরকে একবার গ্রহণ করলে ফেরত পাঠাবার কোন সম্ভাবনা নাই। বাংলাদেশের এরকম লক্ষ লক্ষ রিফিউজিকে ভরণ-পোষণেরও সামর্থ্য নাই।তখন তাদের সামনে দুটি পথ থাকবে। ১) তারা আজীবন রিফিউজি হিসাবে মানবেতর জীবন যাপন করবে কিম্বা ২) তাদের নিজস্ব আবাসভুমি প্রতিষ্টায় সচেষ্ট হবে।এই দুটির কোনটাই বাংলাদেশের জন্য শুভ হতে পারে না।বরঞ্চ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে এনে মায়ানমার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে তাদের এই সমস্যার সমাধান করতে বাধ্য করাটাই বাংলাদেশের জন্য সঠিক পথ হবে।

অরফিয়াস এর ছবি

বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই সমস্যা বিবেচনা করলে এমনিতেই বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকেই রোহিঙ্গাদের ভরণপোষণ করে চলেছে, যদি মানবিকতার প্রশ্ন আসে তাহলে বলবো এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ এমন কোনো কাজ করে নাই যাতে আন্তর্জাতিক মহলে তার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়।

তবে এটাও ঠিক পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের একটা স্থায়ী সমাধান কাম্য, এভাবে তো আর অত্যাচার চলতে পারেনা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

নুসায়ের এর ছবি

চলুক
আজকে এই নিয়ে ইন্টারনেট ঘাটছিলাম (একটা লেখা দিবো ভাবছিলাম), বাংলাদেশে গত কয়েক দশকে রোহিঙ্গা এসেছে পাঁচ লাখের বেশি। এবং তাদের ফেরত নেবার ব্যাপারে মিয়ানমার সরকার তেমন কোন আগ্রহ দেখায় নাই। এবার এদের কে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিলেও প্রশ্ন থেকে যায়। বিবিসি, ওয়াশিংটন পোষ্ট সহ ইউরোপিয়ান বেশ কয়েকটা পত্র-পত্রিকায় দেখলাম মিয়ানমারের সরকার 'রোহিঙ্গা' নামটা পরিষ্কার করে মুখে আনছে না। এর বদলে অবৈধ বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী বলে চালিয়ে দিচ্ছে।

The Rohingya are a Muslim ethnic group and are stateless, as Burma considers them to be illegal immigrants from neighbouring Bangladesh.

(বিবিসি)

এমনকি কেউ কেউ এমনটাও বলতেছেন যে রাখাইন সেই তরুণীকে ধর্ষণ আর খুন করছে অবৈধ বাংলাদেশীরা।

A gang of illegal Bangladeshi Muslim settlers rob, rape and murder a Arakanese Buddhist girl in Myanmar, and when police arrest the Muslim culprits, they launch "Jihad riots" after Friday prayer,

(ইউরোপনিউজ)

রোহিঙ্গাদের প্রতি সে দেশের সরকারের মনোভাব যদি এই রকম হয়, তবে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র স্থায়ী হতে সময় লাগবে না।

ফেসবুকে আরেকটা প্রচারনা দেখলাম, এই ইস্যুটাকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ কালীন শরনার্থী এবং ভারতের সীমানা খুলে দেবার সাথে তুলনা দেয়া হচ্ছে। এমনকি শ্রদ্ধেয় মু। জাফর ইকবাল স্যার ও এমন একটা কথা বলে ব্লগ লিখে ফেললেন।
(সাদা-সিধেকথা ডট কম)

এই তুলনা দেয়ার বিষয়টা ভালো লাগে নাই। লেখার আগে উনার নাম না দেখলে সোনাব্লগের কারো লেখা ধরে নিতাম। কেন?

এটা বুঝতে হবে যে ১৯৭১ এ ভারত বাংলাদেশীদের জন্য তাদের সীমানা খুলে দেয় ২৭শে মার্চ (দায়ে পরেই হোক বা মানবিক কারনেই হোক)। বাংলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষণা দেবার একদিন পর। এইক্ষেত্রে বাংলাদেশী শরনার্থীরা ফেরত যাবে (বা বাংলাদেশ তাদের ফেরত নিবে), এই গ্যারান্টি ছিল। আর সেইসময়ে বাংলাদেশ আর পশ্চিম-বাংলার আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটও প্রায় সমান ছিল। শরনার্থী হিসেবে যারা গেছেন তারা প্রায় প্রত্যেকেই (আমার মতে ৯০ ভাগ) দেশে কিছু না কিছু ফেলে (মূলত কৃষিজমি) প্রাণের তাগিদে ভারতে গেছেন। মুক্তিযুদ্ধ শেষে ভারতে থেকে যাবার কোন ইচ্ছা তাদের থাকার কথা না। অপর পক্ষে, রোহিঙ্গাদেরকে তাদের রাষ্ট্র স্বীকার করে না, এদের নিয়ে মিয়ানমারে সমস্যা গত ৪০ বছরেরও বেশি। আবার তারা যে মিয়ানমার থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে এমনটাও না। এবং ইন্টারনেটে ঘাটাঘাটি করে যা দেখলাম, তা'তে ধারণা হয় রোহিঙ্গাদের বেশির ভাগই ভাসমান, আর সেটা না হলেও মিয়ানমারে তাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক অবস্থান বাংলাদেশের তুলনায় অনেক অনেক নিচে। কেবলমাত্র এই কারনেই বড় ধরনের কোন গোলযোগ ছাড়াই (এবারের দাঙ্গার মতো) রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী সমস্যা বিজিবিকে প্রতিনিয়ত মোকাবেলা করতে হয়। ভুলে গেলে চলবে না ইতিমধ্যে বাংলাদেশে প্রায় ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরনার্থী আছে। এবার যদি অস্থায়ী হিসেবেও এদের আশ্রয় দেয়া হয়, তাহলে আদৌ এর কতভাগকে ফেরত পাঠানো যাবে সেটা নিয়ে সন্দেহ থাকে। তাছাড়া এবার যারা পালিয়ে আসছেন, তাদেরকে গলা-ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়া হচ্ছে এমনটাও না।

The Foreign Minister also informed the House that Border Guard Bangladesh personnel were providing food, medicine and firewood to the refugees trying to intrude into Bangladesh through waterways.

Some Rohingyas are still staying at Saint Martin's Island and they could not be sent back due to inclement weather. A Rohingya mother has also given birth to a child on the island.

(বিডিনিউজ)

জাফর ইকবাল স্যারের কথায় হাজার হাজার তরুন-তরুনী অনুপ্রাণিত হয়। উনার মতো মানুষ স্রেফ আবেগের বশে অগ্র-পশ্চাৎ চিন্তা না করে যদি এমন একটা লেখা লিখে ফেলেন, সেটা খুবই হঠকারী সিদ্ধান্ত হয়ে যায়।

(লিঙ্ক দিলেই ইমেজ ভেরিফিকেশন চায়। কিন্তু ইমেজ দেখি না মন খারাপ কেউ আগ্রহী হলে লিঙ্ক গুলি ইমেইল করে দিতে পারি)

হিমু এর ছবি

থাইল্যাণ্ড মাঝে একবার তাদের দেশের রোহিঙ্গাদের ঘাড়ে ধরে নৌকায় তুলে সাগরে ভাসিয়ে দিলো। তারা নৌকায় করে এদিকে যায়, সেদিকে যায়, কোথাও আশ্রয় পায় না। এমনকি মুসলমান ভাইদের দেশ মালয়েশিয়াও তাদের আশ্রয় দেয়নি। জাফর ইকবাল স্যার মনে হয় তখন ঘুমাচ্ছিলেন। জেগে থাকলে নিশ্চয়ই মালয়েশিয়ার সমালোচনা করে একটা সাদাসিধে কথা বলে ফেলতেন।

অরফিয়াস এর ছবি

শুধু জাফর ইকবাল স্যার কেন হুমায়ুন আজাদ স্যার ছাড়া আর কোনো সুশীল কি আমাদের দেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনে কিছু বলেছেন কখনো? আগের সরকারের আমলে এতো অত্যাচার হলো কই আমার তো মনে পড়ে না এমন কোনো লেখার কথা কিংবা এই যে এই বছর সাতক্ষীরা এবং চট্টগ্রামে সংখ্যালঘু নির্যাতন হলো কই জাফর স্যার কেন কোনো সুশীলই তো কিছু বললোনা। এখানে প্রশ্ন হচ্ছে যিনি মানবতাবাদী উনি তো সবার আগে নিজের দেশের মানুষের জন্য বলবেন, আর ঠিক ঐখানটায় সবাই অনুপস্থিত।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হিমু এর ছবি

সংখ্যালঘুদের উচিত একটা নৌকায় করে পানিতে ভাসতে থাকা। তাহলে যদি জাফর ইকবাল স্যারের টনক নড়ে। নিরাশ্রয় হয়ে নৌকায় না ভাসলে উনি হয়তো প্রতিবাদ করে জুত পান না।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে জাফর ইকবাল স্যারের চেয়ে সরব কয়েকটা নাম আপনার কাছ থেকে শুনতে ইচ্ছে করছে!

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

হিমু এর ছবি

আমারও সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নিয়ে গত পাঁচ বছরে জাফর ইকবাল স্যারের প্রকাশিত লেখাগুলো আবার পড়তে ইচ্ছা করছে। এক্সক্লেমেশন মার্ক। সন্ধান দিতে পারেন? এক্সক্লেমেশন মার্ক।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

খুঁজে দেখেন, পেয়ে যাবেন আশা রাখি। আর নামগুলো বললেন না! হাসি

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

হিমু এর ছবি

নামগুলো বলার জন্য তো আগে জানতে হবে জাফর ইকবালের অবস্থান কোথায়। আপনি তো কোয়ানটিটেটিভ উত্তর চান। কার সরবতা জাফর ইকবালের চেয়ে বেশি, সেই উত্তর চাইলে আগে একটু দেখান না ভাই, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ইস্যুতে সরবতার স্কেলে জাফর ইকবাল স্যার কই আছেন।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

হাসি

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

হিমু এর ছবি

শয়তানী হাসি

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

তালগাছটা আপনাকে দিলাম

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

ঠাডার এক্টা ইমো লাগে।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

অরফিয়াস এর ছবি

হো হো হো

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

আপনার জন্য একটা ভালো হোমওয়ার্ক হতে পারে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে জাফর ইকবাল স্যারের কলামগুলো খুঁজে বের করে পড়া!

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

জাফর ইকবাল বিম্পি-জামাতের সময় হাতিঘোড়া মেরে থাকলে (যদি মেরে থাকেন) তার অ-বিম্পি-জামাত আমলের হঠকারিতা (যদি করে থাকেন) পার পেয়ে যাবে নাকি?


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

না পার পেয়ে যাবেন না! তবে আপনি মনে হয় এখানে কনটেক্সট গুলিয়ে ফেলেছেন -- এই মন্তব্যটা হঠকারিতা নিয়ে করা মন্তব্যের জবাবে করা হয়নি, বরং উদাসীনতা নিয়ে মন্তব্যের জবাবে করা হয়েছে!

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

সাফি এর ছবি

সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে জাফর ইকবাল যে নিরব, এই তথ্য থেকে ওনার সম্পর্কে কী উপসংহারে আসা যায়?

অরফিয়াস এর ছবি

দেখুন এখানে জাফর স্যার সম্পর্কে কেউ কোনো উপসংহারে আসতে যাচ্ছেনা। আমি নিজেও তার ভক্ত কিন্তু কথা হচ্ছে এই ভক্তি অন্ধ কিনা। মানুষ খুব কম সময়েই একজনকে পীর বানাতে ওস্তাদ, আর যখন তা করে তখন শুধু তার ভালো কাজগুলোই দেখে যেসব কাজ প্রশ্নাতীত নয় সেগুলো চোখে পড়লেও হয়তো এড়িয়ে যায় কিংবা চুপ করে থাকে। অবশ্যই জাফর স্যার দেশের সব সমস্যা নিয়ে কলম ধরতে বাধ্য নন। বরং তিনি তার ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে যতোটা প্রতিবাদ করছেন তাতে অবশ্যই তাকে আমি সাধুবাদ জানাই এবং তাকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু যেসব কাজে তিনি নিঃশ্চুপ না থাকলেও পারতেন সেসব জায়গায় স্বাভাবিকভাবেই যদি প্রশ্ন করি তা নিয়ে হল্লা করার তো কিছু দেখিনা। একজন পাঠক এবং ভক্ত হিসেবে একজন গুনী মানুষের কাছে এই প্রশ্ন রাখার অধিকার আমার এবং অনেকেরই আছে। আর দেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে সবসময়ই মানুষের মাঝে একটি নিরবতা কাজ করে যা কিনা গ্রহনযোগ্য ব্যাখ্যা হতে পারেনা। সেই একই ব্যাপারে অন্যদের থেকে ভিন্ন ও মুক্তমনের জাফর স্যারও যদি চুপ থাকেন অথবা ব্যস্ততার অজুহাতে এড়িয়ে যান তাহলে হয়তো একটি প্রশ্নসুচক অবস্থানের সৃষ্টি হয়। যা থেকে একটি ক্ষোভ আমার মতো পাঠকের মনে তৈরী হতে পারে। আশা করি বোঝাতে পারলাম।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

নুসায়ের এর ছবি

স্পাইডারম্যানের ডায়লগ মনে পড়ে যাচ্ছে

with great power comes great responsibility

আফসুস, "পাওয়ারফুল" আলাল-দুলাল, কোন ভাই ই সেই দায়িত্ব বুঝে কাজ করলেন না। উনারা আলু পেপারে উনাদের ওহী নাজিল করেই খালাশ। আর বাংলার জনগণ সেই ওহী চোখ-কান বন্ধ করে গিলে যাচ্ছে।

অরফিয়াস এর ছবি

with great power comes great responsibility

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

সেটাই -- দুনিয়ার সব প্রশ্নের উত্তর আর সব সমস্যার সমাধান মুহম্মদ জাফর ইকবালকেই দিতে হবে -- নইলে মুক্তি নাই! আর রোহিঙ্গারা নিশ্চয়ই কোনো জন্তু প্রজাতির নাম -- জাফর ইকবাল ভুল করে বঙ্গোপসাগরে জীবন-মৃত্যুর মাঝখানে দুলতে থাকা কোনো এক রোহিঙ্গা শিশুর জায়গায় নিজেকে কল্পনা করে একটা ভুলভাল কলাম লিখে ফেলেছেন -- এত বড় হঠকারিতা নিশ্চয়ই মেনে নেয়া যায় না!

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

হিমু এর ছবি

সাতক্ষীরায় মিনতি রাণী নামে এক শিক্ষিকার তিন বছরের প্রতিবন্ধী শিশুকে ঘরে ধরিয়ে দেয়া আগুনে ছুঁড়ে ফেলতে গিয়েছিলো এক জামায়াতি ক্যাডার। প্রতিবেশী এক মহিলা মিথ্যা কথা বলে সেই শিশুকে নিজের শিশু পরিচয় দিয়ে রক্ষা করেন পুড়িয়ে মারার হাত থেকে। ঐ শিশুটাও নিশ্চয়ই কোনো জন্তুশাবক ছিলো। কিংবা স্যারকে কেউ তিন বছর বয়সে আগুনে পুড়িয়ে মারতে যায়নি দেখে উনি নিজেকে সেই শিশুর জায়গায় কল্পনা করতে না পেরে চুপচাপ ছিলেন। ঐ শিশুর উচিত ছিলো একটা টায়ার যোগাড় করে পাশের পুকুরে ভাসতে থাকা, অথবা কোনোভাবে এই আক্রমণকে ইউনূসের অপমানের সাথে ইকুয়েট করা। ভোদাই বাচ্চাটা দুইটার একটাও করতে পারে নাই দেখে মনে হয় স্যার আর তেমন গা করেন নাই। কিংবা হয়তো ব্যস্ত ছিলেন। বাংলাদেশের সঅঅঅব ব্যাপার নিয়ে তো উনি আর কথা বলার ঠিকা নেন নাই, তাই না? উনি কথা বলবেন কেউ নৌকায় করে পানিতে ভাসলে, অথবা ইউনূসের মানসম্মান নিয়ে টানাটানি পড়লে।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

আগেই তো বলেছি -- মুহম্মদ জাফর ইকবালকেই নিশ্চয়ই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে -- নইলে মুক্তি নাই। ফেসবুকে একটা পেজ আছে নিশ্চয়ই দেখেছেন -- " জাফর ইকবাল এই প্রশ্নের উত্তর দেন !" তা সাতক্ষীরার ওই ঘটনার সময় সংখ্যালঘুবান্ধব সরকার যেন কি করছিলো? জোট সরকারের সময় প্রশাসন যে ভূমিকা পালন করতো সেই একই ভূমিকা রাখছিলো কি যে জাফর ইকবালকে এটা নিয়েও কলাম লিখতে হবে!

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

হিমু এর ছবি

পুলিশের বড়কর্তা নাকি হামলাকারীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলো, তার গায়ে উর্দি না থাকলে সেও হামলাকারীদের সাথে যোগ দিতো। স্যার মনে হয় বিডিনিউজ পড়েন না। খালি আলুপেপার পড়েন। এ কারণে হয়তো ওনার চোখ এড়িয়ে গেছে। কিংবা স্যার ব্যস্ত ছিলেন। আফটার অল, এটা তো আর ইউনূসের মানসম্মানের ব্যাপার না যে শত ব্যস্ততার মাঝেও কিছু লিখতেই হবে, তাই না?

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

যাক, স্যারের আরেকটা কাজ পাওয়া গেলো -- এখন থেকে বাংলাদেশের সব অনলাইন আর অফলাইন পত্রিকা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়তে হবে এবং অতি অবশ্যই আপনি যে চোখে ড: ইউনূসকে দেখেন ঠিক একই চোখে দেখতে হবে - নইলে মুক্তি নাই।

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

হিমু এর ছবি

হ, জাফর ইকবাল যে চোখে ইউনূসকে দেখেন, সে চোখে ইউনূসকে না দেখলে পাবলিক-সরকার কারও মুক্তি নাই। আর যাহা আলুপেপারে ছাপে নাই, তাহা মাটির পৃথিবীতেও ঘটে নাই।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

আমি তো বললামই জাফর ইকবালকে অবশ্যই আপনার চোখেই ড: ইউনূসকে দেখতে হবে এবং অবশ্যই বাংলাদেশসহ বিশ্বের যাবতীয় পত্রপত্রিকা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়তে হবে -- নাহলে উনি কি করে জানবেন থাইল্যাণ্ডের রোহিঙ্গাদের অবস্থা।

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

হিমু এর ছবি

স্যারকে এই সাইটটার অ্যাড্রেস দিয়েন। খুব কাজে আসে মাঝেমধ্যে।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

সাথে এই সাইটটার এড্রেসও দিয়ে দিব ঠিক করেছি -- তাহলে আপনি কি ভাবেন এইটা দেখে স্যার তাঁর নিজের চিন্তাভাবনা পরিচালিত করতে পারবেন! আপনার না-পছন্দ কোনো কলাম লেখার দু:সাহস দেখানোর আগে দুইবার ভাবনা-চিন্তা করার সুযোগ পাবেন।

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

হিমু এর ছবি

দিয়েন প্লিজ। আমি তাহলে আমার সব পোস্ট "প্রিয় জাফর" দিয়ে শুরু করবো। ওনার মতো একশো জন মুরিদ পেলেই আমি দেশ পাল্টায় ফেলতে পারবো, ইয়েয়েয়েয়েয়ে।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

হা হা হা! কিন্তু মাত্র একশ মুরিদে কি আপনার হবে ?

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

হিমু এর ছবি

আপনার সিগনেচার তো বলছে, হবে।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

হুমম, সব দোষ আমার সিগনেচারের।

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

নুসায়ের এর ছবি

জ্বী না। জাফর ইকবাল স্যারের থেকে কেউ সমস্যার সমাধান চাচ্ছে না। কিন্তু উনি একটা সমস্যার অগ্র-পশ্চাৎ না ভেবে কেবল আবেগ দিয়ে যখন একটা কলাম লিখে ফেলেন, তখন সেটা বাংলার অপরিণত মনের শিশু-কিশোর-তরুণ-যুবকদের (উনার পাঠক) মনে খারাপ প্রভাব বিস্তার করে। আর তারা আপনার মতো অন্ধ-মুরিদ হইলে তো কথাই নাই।

কথাটা এই জন্য বললাম, কারন উনার কলামটা কেন ভালো লাগে নাই সেইটা আধা-পৃষ্ঠা জুড়ে ব্যাখ্যা করার পরেও আপনি পড়ছেন কেবল শেষ লাইনটা। আগের কথা গুলা আপ্নের কান দিয়া ঢুকে নাই। স্যারের কথাই আপনাদের কাছে শেষ কথা।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

মন্তব্যের চেইন একটু খেয়াল করে মন্তব্য করলে তো আর এই রকম বেহুদা মন্তব্য করতে হয় না! আপনার কোন মন্তব্যের জবাবে তো আমি কিছু লিখি নাই -- আর আপনি ওইদিকে আন্ধা-মুরিদ বানিয়ে বসে আছেন। নিজেরেই পৃথিবীর একমাত্র আলোকিত মানুষ মনে করা একটু সমস্যা না ভাইজান!

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

নুসায়ের এর ছবি

আমি তো আপনার লেখা পড়েই মন্তব্য করলাম। নাকি নিচের এই কথা গুলা আপ্নে আমার কমেন্টের লেজ টেনে বলেন নাই?

জাফর ইকবাল ভুল করে বঙ্গোপসাগরে জীবন-মৃত্যুর মাঝখানে দুলতে থাকা কোনো এক রোহিঙ্গা শিশুর জায়গায় নিজেকে কল্পনা করে একটা ভুলভাল কলাম লিখে ফেলেছেন -- এত বড় হঠকারিতা নিশ্চয়ই মেনে নেয়া যায় না!

যতদূর মনে পড়ে উনার এই লেখাটা হঠকারী এইটা আমি লিখছিলাম।

আমি আলোকিত মানুষ না, তবে তাদের থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি। এতো আলো চোখে সয় না, আর আলোকিত মানুষদের আশে-পাশে থাকলে অন্ধকারে কি ফুল ফুটতেছে সেইটা দেখতে কষ্ট হয়।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

না,আপনার মন্তব্যের জবাবে ওই মন্তব্যটা করা না। আর আপনি কই থাকবেন এইটা আপনার ব্যাপার , কিন্তু কথায় কথায় আন্ধা-মুরিদ খেতাব দিলে আমার সমস্যা আছে!

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

নুসায়ের এর ছবি

তাইলে চোখ খুলে ডানে-বামে তাকান।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

আমাকে কি করতে হবে এইটা আমাকেই ঠিক করতে দিলে হয় না?

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

নুসায়ের এর ছবি

গুরু গুরু

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

কোলাকুলি

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

অরফিয়াস এর ছবি

@রাজিব মোস্তাফিজ, আপনার সবগুলো মন্তব্য পড়লাম, এখানে নিজের বক্তব্যটা দিচ্ছি। তার আগে সাফি ভাই এর মন্তব্যে দেয়া আমার লেখাটা তুলে দেই-

দেখুন এখানে জাফর স্যার সম্পর্কে কেউ কোনো উপসংহারে আসতে যাচ্ছেনা। আমি নিজেও তার ভক্ত কিন্তু কথা হচ্ছে এই ভক্তি অন্ধ কিনা। মানুষ খুব কম সময়েই একজনকে পীর বানাতে ওস্তাদ, আর যখন তা করে তখন শুধু তার ভালো কাজগুলোই দেখে যেসব কাজ প্রশ্নাতীত নয় সেগুলো চোখে পড়লেও হয়তো এড়িয়ে যায় কিংবা চুপ করে থাকে। অবশ্যই জাফর স্যার দেশের সব সমস্যা নিয়ে কলম ধরতে বাধ্য নন। বরং তিনি তার ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে যতোটা প্রতিবাদ করছেন তাতে অবশ্যই তাকে আমি সাধুবাদ জানাই এবং তাকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু যেসব কাজে তিনি নিঃশ্চুপ না থাকলেও পারতেন সেসব জায়গায় স্বাভাবিকভাবেই যদি প্রশ্ন করি তা নিয়ে হল্লা করার তো কিছু দেখিনা। একজন পাঠক এবং ভক্ত হিসেবে একজন গুনী মানুষের কাছে এই প্রশ্ন রাখার অধিকার আমার এবং অনেকেরই আছে। আর দেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে সবসময়ই মানুষের মাঝে একটি নিরবতা কাজ করে যা কিনা গ্রহনযোগ্য ব্যাখ্যা হতে পারেনা। সেই একই ব্যাপারে অন্যদের থেকে ভিন্ন ও মুক্তমনের জাফর স্যারও যদি চুপ থাকেন অথবা ব্যস্ততার অজুহাতে এড়িয়ে যান তাহলে হয়তো একটি প্রশ্নসুচক অবস্থানের সৃষ্টি হয়। যা থেকে একটি ক্ষোভ আমার মতো পাঠকের মনে তৈরী হতে পারে। আশা করি বোঝাতে পারলাম।

দেখুন আপনার কথা যৌক্তিক। এমনকি কেউই বলছেনা কিংবা অন্তত এখানে কেউ প্রমান করার চেষ্টা করছেনা যে, জাফর স্যার দেশের সব সমস্যার বিরুদ্ধে সরব হতে বাধ্য। আমি মনে করি, তিনি তার ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে যতটুকু করছেন তা অনেকের থেকেই অনেক বেশি এবং এর জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা অনুভব করি। কিন্তু আমার মতো মানুষ যখন স্যারকে দেখবে খুব কম সময়ের ব্যবধানে পর পর দুটো সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনায় স্যার এর কলাম শক্ত অবস্থানে নেই তখন স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন জাগবে। এটি স্যারকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য নয় বরং স্যার এর থেকে আমরা একটু বেশি আশা করি দেখে। হয়তো স্যার কলম ধরলে কিছুই হতোনা কিন্তু পাঠক মনের একটি আশা হয়তো পূরণ হতো। এখন অনেকেই এই প্রশ্নকে অযৌক্তিক মনে করতে পারেন, সেটা তাদের ব্যক্তিগত মতামত। কিন্তু আমার মত যাদের মনে এই প্রশ্নটির উদয় হয়েছে তারা কিন্তু উত্তর খুঁজবে। কারণ দেশে সংখ্যালঘু, তা সে হিন্দু/বৌদ্ধ/খ্রিস্টান যেই হোকনা কেন, তাদের পক্ষে কথা বলার মানুষ কম। [আপনি নিজেও বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকার কি করছিলো সে সময়।] তাহলে আশা করি বুঝতে পারছেন, আমাদের দেশের সংখ্যালঘুদের অসহায়ত্বও কোনো অংশে কম না!!

তাই স্যার যখন মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের অত্যাচারে দেশে ৭১ এর স্মৃতি রোমন্থন করে আবেগময় কলাম লেখেন তখন স্বভাবতই প্রশ্ন আসে, পূর্বে দেশের একই ধরনের ঘটনায় তিনি কি ইচ্ছা করেই নিঃশ্চুপ ছিলেন নাকি তিনি এড়িয়ে গেছেন। কারণ মানবতাবাদী হিসেবে আগে নিজের দেশের মানুষের প্রতি একটি কর্তব্য থাকে, যা কিনা তার মতো একজন মননশীল মানুষের কাছে আমরা আশা করি।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

এ্‌ইজন্যই আপনাকে হোমওয়ার্কটা দেয়া। হোমওয়ার্ক ঠিকমত করলে সংখ্যালঘু নির্যাতন বিষয়ে জাফর ইকবাল স্যারের অবস্থান ঠিকঠাক বুঝতে পারবেন আশা রাখি।

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

হিমু এর ছবি

স্যারের অবস্থান আকাশে নেপচুনের উপগ্রহের অবস্থানের মতো দুর্নির্ণেয় হয়ে গেছে দেখি। বাড়ির কাজ করে আঁক কষে বার করতে হয় গেছোদাদা কোথায় কোথায় নেই, কোথায় কোথায় থাকতে পারে সেসব। স্যারকে তো আমরা পছন্দই করি তাঁর স্পষ্ট অবস্থানের জন্য, তাই না? লসাগু গসাগু করে যদি স্যারের অবস্থান এক্সট্রাপোলেট করতে হয় তাহলে, ভ্যাজাল না?

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

কিছু মানুষের হোমওয়ার্ক ঠিকঠাক মত করা না থাকলে আরও বেশি ভ্যাজাল লাগে আর কি -- এইজন্যই হোমওয়ার্কের কথাটা বলা হাসি

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

হিমু এর ছবি

স্যারের অবস্থানের রাশিমালার উপর একটা পপি গাইড দেন। হোমওয়ার্ক করি।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

আপনার হোমওয়ার্ক করা লাগবে না, ওইটা তো আপনার জন্য বলা হয়নি হাসি

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

হিমু এর ছবি

তাহলে আপনাকে একটা হোমওয়ার্ক দিচ্ছি রাজিব। আপনি অমি রহমান পিয়ালের এই পোস্টটা পড়ুন। তারপর ঠাণ্ডা মাথায় কিছু দুয়ে দুয়ে চার মেলান। অনেক সময় বেশ কিছু হিসাব পরের পৃষ্ঠায় থাকে।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

অরফিয়াস এর ছবি

আপনি তো অনেকক্ষণ ধরেই হোমওয়ার্কের কথা বলে যাচ্ছেন, তাহলে আমার হোমওয়ার্ক সম্পর্কে আপনার সন্দেহ আছে দেখছি। ঠিক আছে সেই হিসেবে ধরে নিচ্ছি আপনার নিজের হোমওয়ার্ক যথেষ্ট শক্তপোক্ত, তাহলে দয়া করে আমার মতো মানুষদের জ্ঞানচক্ষু উন্মোচন করার জন্য সাতক্ষীরা এবং চট্টগ্রাম এর ঘটনায় স্যার এর অবস্থানজনিত কোনো তথ্য উপস্থাপন করুন। যদি করতে পারেন এবং আমি দেখি আমার অবস্থান ভুল তাহলে সেখান থেকে আমি সরে আসবো নিজের ভুল স্বীকার করে, আর যদি না পারেন [যেহেতু হিমু'দার প্রশ্নের জবাবে একবার এই বিষয় এড়িয়ে গেছেন!!] তাহলে আপনি অন্যকে হোমওয়ার্কের উপদেশ দেয়া বন্ধ করুন।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অরফিয়াস এর ছবি

আপনার মন্তব্যের সাথে সহমত পোষণ করি।

জাফর ইকবাল স্যার এর লেখাটা দেখেছি, কিন্তু মনে হয়েছে তিনি মানবতার দৃষ্টিভঙ্গি এবং তার মুক্তিযুদ্ধকালীন স্মৃতির উপরে বেশি জোর দিয়েছেন। অবশ্যই তিনি তার ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করতে স্বাধীন এবং মানবতার দিকটি আমিও উড়িয়ে দিচ্ছিনা। কিন্তু ওই যে এতো জটিল একটি বিষয়কে শুধু মানবতার দিক থেকে বিবেচনা করলে আরও অনেক কিছুই বাদ থেকে যায়।

লিঙ্কগুলো দেখেছি, ক্যাপচাতে সমস্যা হয় মাঝে মাঝে রিফ্রেশ করে দেখতে পারেন।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হিমু এর ছবি

আপনি কি সচলায়তনে নিবন্ধন করেছেন? করে থাকলে, কী নিকে নিবন্ধন করেছেন, একটু জানান। করে না থাকলে, করে ফেলতে পারেন।

রামগরুড় এর ছবি

আচ্ছা, হিমু ভাই একটা অফ টপিক কথা বলি, এই ক্যাপচাটা কিসের জন্য? সচলায়তনে কি খুবই স্প্যামের অত্যাচার ছিল? (আমি যেহেতু নতুন, আগের অবস্থা জানিনা), এই ক্যাপচার সমস্যা দিয়ে মেইল দিয়েছি অনেক আগে, কোন উত্তর পাই নাই।

তবে গত দু-তিন দিন থেকে কোন সমস্যা দেখতেছিনা, তার মানে ধরে নিতে পারি মেইলে কাজ হইছে। কিন্তু যারা নতুন, তাদের মন্তব্য করতে গিয়ে কি রকম ঝামেলা হইতে পারে ভেবে কথাটা পাড়লাম, মানে এই ক্যাপচার ব্যাপারটা কি পুরাই বাদ দেওয়া যায় না? মাঝে তো ক্যাপচার অত্যাচারে ভাবতে শুরু করছিলাম যে সচলায়তনে আর কোন ইন্টারেকশনে যাব না।

হিমু এর ছবি

ভাইরে কিছু স্প্যামবট কুতুব মিনার খাড়া করানোর ট্যাবলেট ক্যাপসুলের বিজ্ঞাপন স্প্যামায় বিনাশ করে ফেলে মন খারাপ । ক্যাপচা অফ করে রাখলে খবর হয়ে যায়।

ক্যাপচার সমস্যাটা রিপ্রোডিউস করা যাচ্ছে না আমাদের এন্ড থেকে। ফলে সমস্যাটা ঠিক কোন কারণে হয়, সেটা ধরা যাচ্ছে না, সমাধানও করা যাচ্ছে না। ডেভু টিম খুব চাপে আছে (বোঝেনই তো, সচলায়তনের পেছনে তাঁরা তাঁদের সামান্য অবসরের সময়টাই দিয়ে থাকেন)। আমরা ইচ্ছা করে সমস্যাটা ঝুলিয়ে রাখছি না, এই নিশ্চয়তা দিতে পারি। আপনাদের কষ্ট এবং রাগ হওয়া স্বাভাবিক, কিন্তু আমরা যতদূর পারি সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি। আপাতত একটা সাময়িক সমাধান হচ্ছে অতিথি লেখক অ্যাকাউন্ট থেকে মন্তব্য করা। আরও যারা এ সমস্যার মুখোমুখি হবেন, তারা এই অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করে মন্তব্য করতে পারেন, তবে অবশ্যই একটা নিক উল্লেখ করে দেবেন, যাতে বোঝা যায় কোন মন্তব্য কে করছেন।

রামগরুড় এর ছবি

ধন্যবাদ, আপনাদের প্রচেষ্টা সফল হোক। ব্লগে অনেক কম্পু-বিশারদ আছে বলে জানি, উনারা কোন আইডিয়া দিতে পারে কিনা দেখতে পারেন।

পাঠক এর ছবি

এই সমস্যাটা সমাধানের জন্য আমি ভলান্টিযার হতে আগ্রহী। যদি দরকার হয় যোগাযোগ করবেন।

নুসায়ের এর ছবি

'নুসায়ের' নামে নিবন্ধন করলাম।

পাঠক এর ছবি

অসাধারণ লেখা। টু-দি-পয়েন্ট, যুক্তিসম্পন্ন এবং বিশ্লেষণধর্মী লেখা আমি সবসময়ই পছন্দ করি। আপনার লেখা থেকে যে দুটি বিষয় আমার খুব ভালো লেগেছে -

সংখ্যালঘু অত্যাচার বাংলাদেশেও ঘটেছে বিভিন্ন সময়ে কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশগুলো কখনোই সেটিকে দুই দেশের মধ্যকার সমস্যায় পরিনত করেনি...

মানবিক দিক বিবেচনা করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে অন্তত বাংলাদেশের সমুদ্রতট অঞ্চলে একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থা করে দেয়া হোক এই কামনা করবো। শুধু তাই নয়, জাতিসংঘ ও অন্যান্য দেশের সহযোগিতায় এই সকল শরণার্থীকে নিজের বাসভূমিতে নিরাপত্তা নিঃশ্চিত করে ফিরিয়ে দেয়ার বন্দোবস্ত করা হোক এই আশাও করবো। যতই রাষ্ট্রীয় স্বার্থ বিবেচনায় আনি না কেন, দিন শেষে আমরা মানুষ

আশা করি ভবিষ্যতেও এ ধরনের বিশ্লেষণধর্মী লেখা আমাদের উপহার দেবেন।

অরফিয়াস এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ লেখাটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

রাগিব এর ছবি

অফটপিকে প্রশ্ন - রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে অং সান সু কীর অবস্থান কী? কোনোখানে তার কোনো মন্তব্য দেখেছি বলে মনে পড়ছেনা। বার্মার এই রাজনীতিবিদকে পশ্চিমারা কায়দা মতো মাথায় তুলে নাচছে এখন, নোবেল শান্তি পুরস্কার নিতে বিদেশেও বর্মী সামরিক জান্তা তাকে যেতে দিয়েছে। একই সময়ে বর্মী রোহিঙ্গাদের উপরে এরকম নির্যাতন হচ্ছে - এই শান্তির নোবেলটা প্রহসন বলেই মনে হচ্ছে এখন।

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

হিমু এর ছবি

উনি সতেরোদিনের ইয়োরোপভ্রমণে এসেছেন। আপাতত জেনেভায় হ্রদতীরবর্তী সুনির্মল পরিমল সেবন করছেন। আপনারা খালি শান্তিতে নোবেল পাওয়া লোকজনের নোবেলে হাত দেন কেন?

স্বপ্নহারা এর ছবি

এখানে পেলাম একটা কিছু!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

অরফিয়াস এর ছবি

অং সান সু চি নিজেও রোহিঙ্গাদের তেমন সমর্থন করেনা বলেই ধারণা পাচ্ছি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে।

পশ্চিমারাতো ঘাড়ে সমস্যা তুলে দিয়েই পগারপার। এতো বছর এদের হুশ ছিলোনা এখন তারা বিশাল হাউকাউ করে যাচ্ছে। আর এখন তো মায়ানমার সরকার পশ্চিমাবান্ধব, আন্তর্জাতিক চাপে তো কাজ হওয়া উচিত।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

স্বপ্নহারা এর ছবি

চলুক

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

অরফিয়াস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

রামগরুড় এর ছবি

তবে আমার পরিচিত কয়েকজন চট্টগ্রামের কলিগদের কাছে যা শুনলাম এই রোহিঙ্গা পূনর্বাসনের ব্যাপারটায় তাদের ঘোর আপত্তি, ১৯৯১-৯২ এ যত রোহিঙ্গা এই দেশে ঢুকছে তাদের নাকি বেশীর ভাগই ঐ এলাকায় বিভিন্ন অসামাজিক/অপরাধ্মূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত (মাদক পাচার, ছিনতাই ইত্যাদি)। বাংলাদেশে তাদের কর্মসংস্থানের তেমন সুযোগ না থাকাও একটা কারণ হতে পারে, (চট্টগ্রাম অঞ্চলে নাকি এদের কে কেউই কোন কাজে নিতে চায় না)।

তবে খবরাখবর দেখে যা মনে হচ্ছে দাঙ্গার মাত্রা মোটামোটি ব্যাপক।

অরফিয়াস এর ছবি

চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার এর লোকজন আপত্তি করবেই। কারণ শরণার্থীদের প্রথম ধাক্কাটা তাদের সামলাতে হয়। আর রোহিঙ্গা শরনার্থীরা অনেক আগে থেকেই সমাজবিরোধী কার্যকলাপের সাথে যুক্ত। এর বিরূপ প্রভাব তো সবার আগে এই অঞ্চলগুলোর মানুষেরই ভোগ করতে হয়।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সত্যপীর এর ছবি

চমৎকার চলুক

..................................................................
#Banshibir.

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ সত্যপীর দা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

দিগন্ত এর ছবি

মানবিক দিক বিবেচনা করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে অন্তত বাংলাদেশের সমুদ্রতট অঞ্চলে একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থা করে দেয়া হোক এই কামনা করবো।

খুব একটা একমত নই। মায়ানমারের অন্য দাঙ্গা-পীড়িত নয় এমন অঞ্চলে এরকম অস্থায়ী বাসস্থান তৈরী করা হোক না, বাংলাদেশে থেকে অনেকরকম সাহায্য যেতে পারে সেখানে।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অরফিয়াস এর ছবি

মায়ানমারের অন্য দাঙ্গা-পীড়িত নয় এমন অঞ্চলে এরকম অস্থায়ী বাসস্থান তৈরী করা হোক না

হ্যাঁ, এরকম একটি সমাধানের কথাও মাথায় এসেছিলো, কিন্তু দেখুন যারা সমুদ্র পার করে চলেই এসেছে বাংলাদেশের সীমান্তে তাদের জন্য হয়তো অস্থায়ীভাবে একটা ব্যবস্থা করলে করা যেত।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক প্রয়োজন ছিল লেখাটির । ধন্যবাদ অরফিয়াস ভাই ।

১৯৭৮, বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট

মায়ানমার সৈন্যবাহিনীর "নাগামিন" অপারেশনের মাধ্যমে নির্যাতিত ও নিহত হওয়ার ভয়ে প্রায় ২,০০,০০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করে। "নাগামিন" এর মূল লক্ষ্য ছিলো এথেনিক ক্লিনসিং। তাই সরকার কর্তৃক বিতারিত হয়ে যেসকল রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে তাদের পক্ষে মায়ানমার আবার ফেরত যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে।

১৯৯১-৯২, বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট

মায়ানমার সরকার কর্তৃক নির্যাতিত হয়ে আবার অসংখ্য রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পরবর্তিতে জাতিসংঘের সহযোগিতায় এবং বাংলাদেশ-মায়ানমার সরকারের প্রতিনিধিদলের সিদ্ধান্তে কিছু সংখ্যক শরণার্থী মায়ানমার পুনঃপ্রবেশ করলেও অধিকাংশ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোতেই থেকে যায়

মানবতার প্রশ্নে বাংলাদেশ সাহায্য অবশ্যই করবে, যেটা করে আসছে এতবছর ধরে । কিন্তু মায়ানমার তো তাদের দেশের লোকজন কে দেশে থাকতে দিচ্ছে না । আরকান রাজ থেকে বসবাস করা এক গোষ্ঠি সেই কোন আমল থেকেই বহিরাগত হিসেবে নির্যাতিত হচ্ছে, এখনো তারা স্থানীয় হতে পারলো না!? সমস্যাটা তো তাদের অভ্যন্তরীণ বলেই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

মানবাধিকার সংস্থা- জাতিসংঘ বাংলাদেশকে অনুরোধ না করেলেও চলবে তারা বরং মায়ানমারের অভ্যন্তরে একটু নাক গলাক । গনতন্ত্রের চর্চা তো অনেক করলো তারা, অনেক আমদানি-রপ্তানি, এবার গনতন্ত্রকে যারা বাস্তবায়ন করবে- সেই জনগণ, তাদের দিকে একটু নজর দিক, নিজেদের কিছুটা কর্মক্ষম প্রমাণ করুক ।

মানবতার জয় হোক...

কড়িকাঠুরে

অরফিয়াস এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ।

মানবতার প্রশ্নে বাংলাদেশ এখনও সাহায্য করে চলেছে। যারাই এসেছে তাদের খাদ্য/চিকিৎসা/জ্বালানি দেয়া হয়েছে এবং তাদের সাথে কোনো খারাপ আচরণ করা হয়নি। আমাদের অপারগতার কথা বুঝিয়ে বলা হয়েছে। তবে সংকটময় মুহূর্তে যৌক্তিক পদক্ষেপও কেমন জানি বেখাপ্পা লাগে অনেক সময়। এই ক্ষেত্রেও তাই ঘটছে।

মানবাধিকার সংস্থা- জাতিসংঘ বাংলাদেশকে অনুরোধ না করেলেও চলবে তারা বরং মায়ানমারের অভ্যন্তরে একটু নাক গলাক । গনতন্ত্রের চর্চা তো অনেক করলো তারা, অনেক আমদানি-রপ্তানি, এবার গনতন্ত্রকে যারা বাস্তবায়ন করবে- সেই জনগণ, তাদের দিকে একটু নজর দিক, নিজেদের কিছুটা কর্মক্ষম প্রমাণ করুক ।

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হিমু এর ছবি

দরিদ্র রোহিঙ্গা নারীদের ক্ষুদ্রঋণ দেয়ার জন্য নাফ নদীর মোহনায় একটি ভাসমান ব্যাঙ্ক শাখা খোলার আহ্বান জানাই। মানবিক পরিস্থিতির কারণে এক সপ্তাহের পরিবর্তে দুই সপ্তাহ পর থেকে কিস্তির টাকা তোলা যেতে পারে।

অতিথি লেখক এর ছবি

আর কতো কচলাইবেন। তিতা হয়ে গেলো তো।

হিমু এর ছবি

আপনার বাবাকে বলেন, আমাকে একটা জিন্সের প্যান্ট আর দশ কেজি গম কিনে দিতে। তখন বলতে পারবেন, আমি আপনার বাপের খাই-পরি। এই ধরনের মন্তব্য করতে তখন আপনি আরো জোর পাবেন।

অরফিয়াস এর ছবি

জিন্সের প্যান্ট আর দশ কেজি গম

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অরফিয়াস এর ছবি

আপনারটা তো কচলায়না, আপনার এত ব্যথা লাগে কেন?

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

পরমার্থ এর ছবি

সবাইকে এত উগ্র মেজাজে দেখলে খারাপ লাগে .. মানুষের উপর শ্রদ্ধা উঠে যায় .. তবে এই উদ্যোগটা কাছাকাছি গেছে .. আমাদের উচিত ত্রান উত্তোলন করে ঐখানে পাঠানো, সরকারের উপর ভরসা না করে .. সেক্ষেত্রে ব্রাক ব্যান্ক, গ্রামীন ব্যান্ক অথবা গ্রামীন ফোন সাংগঠনিক ভুমিকা রাখতে পারে .. আর গুরুত্বপূর্ণ মানুষের মত সরকারকে মত পাল্টাতে সাহায্য করতে পারে (উল্লেক্ষ আমি জাফর সারের সাক্ষাত ছাত্র) .. সবাই সুখী হোক ..

অরফিয়াস এর ছবি

আররে গুরু পরমার্থ যে !! শুভেচ্ছা স্বাগতম !! এহেন অর্বাচীন এর লেখায় আপনার মতো মহান জ্ঞানীর এহেন মন্তব্য !! সাধু সাধু !!

কিন্তু একখান প্রশ্ন মনে বড় কুটকুট করে, দেশে প্রতিদিন সহস্র মানুষ না খেয়ে ফুটপাতে কাটায়, তাদের জন্য গ্রামীন ব্যাঙ্ক/ব্র্যাক ব্যাঙ্ক/গ্রামীন ফোন কোনো উদ্যোগ নেয়না কেনু ?? দেশের মানুষের ত্রাণে জ্ঞানী মানুষরা তখন তাদের মহাজ্ঞান বিতরণ না করে কই হাওয়া খেতে যায়?? নাকি দেশের মানুষরে খাওয়ালে আন্তর্জাতিক ফুটেজ পাওয়া যাবেনা কিংবা মানবতাবাদী হিসেবে খ্যাতি হবেনা, এই কারণে চেপে খেলা ??

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হিমু এর ছবি

ওরে না রে! জাফর স্যারের সাক্ষাত ছাত্র এসেছেন রে! এ যে গরিবের ঘরে ম্যামথের ক্যাটওয়াক! কে আছিস, তোপ ফ্যাল! কার্পেট পাত! রূপার বাসনগুলি তোরঙ্গ থেকে বের কর! হুঁকা দে, শরবত দে! খাসি জবাই দে রে বাবুল!

গুণিজন বন্দন লহ ফুলচন্দন কর অভিনন্দন কর অভিনন্দন
আজি কি উদিল রবি পশ্চিম গগনে
জাগিল জগৎ আজি না জানি কি লগনে
স্বাগত সঙ্গীত গুঞ্জন পবনে কর অভিনন্দন কর অভিনন্দন
আলাভোলা বাবাজীর চেলা তুমি শিষ্য
সৌম্য মুরতি তব অতি সুখদৃশ্য
মজিয়া হরষরসে আজি গাহে বিশ্ব কর অভিনন্দন কর অভিনন্দন!

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

ওরে না রে !!! গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি খাসি জবাই দিতে মন চায় !! শয়তানী হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সাবেকা  এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অরফিয়াস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

লেখাটা খুবই তথ্যসমৃদ্ধ। অনেক ধন্যবাদ। এখানে যে ধর্ম কোনো ইস্যু না, এটা অনেক বড়ো এবং দরকারী ক্ল্যারিফিকেশন।

তবে মানবতার বিষয়টির গভীরে না যাওয়াতে আমাদের কি করা উচিত, এই সিদ্ধান্তে লেখায় অনিশ্চিত অবস্থান লক্ষ করা গেছে।

সরকারের এই সিদ্ধান্ত আমি সমর্থন করছিনা ব্যক্তিগতভাবে কিন্তু এর পেছনের কারণগুলোকেও উড়িয়ে দিচ্ছিনা। আমি নিজে যদি এই আক্রান্ত মানুষগুলোকে কিছু সাহায্য করতে পারতাম তাহলে হয়তো কোনো কাজ হতো। কিন্তু এরকম পরিস্থিতিতে মানবিক দিক বিবেচনায় এনে সরকার ঠিক কতটা উদার আচরণ করবে তা সময়ই বলে দিবে।

মানবিকতা কি? মানবিকতা কখনোই নিজের জীবন বিপন্ন করে অন্যের জীবন রক্ষা করতে বলে না। আজ আরো কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঢোকালে দীর্ঘমেয়াদে খুনোখুনি, মাইরপিট আরো বাড়বে। আগে যেটা মায়ামনারে হতো, সেটা তখন বাংলাদেশে হবে। আগে ঝামেলা ছিলো রাখাইন বনাম রোহিঙ্গা, এর সাথে এখন বা ভবিষ্যতে বাঙালিও যোগ হবে। বাংলাদেশে রাখাইনদের জমিজমা জবরদখল আর লুটপাটের কাজটা বাঙালিরাই করে, সাথে রোহিঙ্গারাও যোগ দিবে। রোহিঙ্গারা শুধু জনসংখ্যাই বাড়াবে না, তাদের ইন্টিগ্রেশনটা হবে বা ইতিমধ্যেই হয়েছে সেই অপশক্তির সাথে, যারা ৬৪ জেলায় একযোগে বোমা ফুটায়। সুতরাং তাদের প্রতি মানবতার ডালি উজাড় করতে গেলে দীর্ঘমেয়াদে মানবিকতারই বারোটা বাজবে। এই জিনিসটা যদি কেউ ক্লিয়ার হয়, তাইলে মানবিক দিক বিবেচনার নামে তাদেরকে এদেশে ঢুকতে দেয়ার পক্ষে মোটেই অবস্থান নিবে না।

ক্ষমা, উদারতা, মানবতা - এগুলার মিসইউজ অনেক ভয়ঙ্কর জিনিস।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অতিথি লেখক এর ছবি

ক্ষমা, উদারতা, মানবতা - এগুলার মিসইউজ অনেক ভয়ঙ্কর জিনিস।
চলুক

কড়িকাঠুরে

নুসায়ের এর ছবি

আপ্নের ট্যাগ লাইনটা এই ইস্যুর লগে যায়।

চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সবাই চাবি (মানবতা) নিয়া ব্যাপক বিজি। তালার খোঁজ কারো নাই।

নুসায়ের এর ছবি

সৌদিতে নিজ দেশের নাগরিকের কল্লা কাটলে মানবতার অপমান হয় না, সেইটা হয় ন্যায় বিচার। আর মিয়ানমার সরকারের অত্যাচারে রোহিঙ্গারা ঘরছাড়া হইলে, মানবতার খাতিরে তাদের আশ্রয় দেয়ার ঠিকা কেবল বাংলাদেশের।

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, বলাই দা।

হ্যাঁ, এটা ঠিক আমি লেখাতে একটি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি। বলতে পারেন দু নৌকায় পা দিয়ে আছি। কিন্তু এই অবস্থা থেকে সমাধানের পথ চিন্তা করলেও কোথায় যেনো একটু বাধে। জানি যে, মানবিকতা মানে নিজের ক্ষতি না করে কিন্তু মানুষ হিসেবে হয়তো এই পরিস্থিতিতে নিজেকে ঠিক একটা জায়গায় দাড় করাতে ব্যর্থ হচ্ছি।

এখানে যে ধর্ম কোনো ইস্যু না, এটা অনেক বড়ো এবং দরকারী ক্ল্যারিফিকেশন।

রোহিঙ্গারা শুধু জনসংখ্যাই বাড়াবে না, তাদের ইন্টিগ্রেশনটা হবে বা ইতিমধ্যেই হয়েছে সেই অপশক্তির সাথে, যারা ৬৪ জেলায় একযোগে বোমা ফুটায়। সুতরাং তাদের প্রতি মানবতার ডালি উজাড় করতে গেলে দীর্ঘমেয়াদে মানবিকতারই বারোটা বাজবে। এই জিনিসটা যদি কেউ ক্লিয়ার হয়, তাইলে মানবিক দিক বিবেচনার নামে তাদেরকে এদেশে ঢুকতে দেয়ার পক্ষে মোটেই অবস্থান নিবে না।

ক্ষমা, উদারতা, মানবতা - এগুলার মিসইউজ অনেক ভয়ঙ্কর জিনিস।

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

Man in The Iron Mask এর ছবি

ভাই খালি সাম্প্রদায়িক শক্তি না। ইউনুস আবেদ এর Follower রা ও আছেন। Jyoti Rahman এর লেখা টা পড়েন।
http://alalodulal.org/2012/06/14/myanmar/

অরফিয়াস এর ছবি

দেখলাম, ৭১ এর সাথে তুলনা খুবই অপরিনত একটি পদক্ষেপ।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

চরম উদাস এর ছবি

চলুক
ধন্যবাদ তথ্যসমৃদ্ধ লেখাটার জন্য

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ, উদাসদা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অমি_বন্যা এর ছবি

এই লেখাটির জন্য প্রথমেই চলুক । এই সময়ে সচলে এরকম একটি লেখার দরকার ছিল যা আপনি বিশদভাবে উপস্থাপন করেছেন। অনেক কিছুই জানতাম না। আপনার লেখা অনেক কিছুই জানালো। অসংখ্য ধন্যবাদ অরফিয়াস আপনাকে। ভালো থাকবেন।

অরফিয়াস এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অরিত্র অরিত্র এর ছবি

চলুক

অরফিয়াস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হিমু এর ছবি

কোকাকোলা বার্মায় ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছে। লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে, বার্মার সরকারের ওপর কোনো ধরনের চাপপ্রয়োগের নীতিতে যাবে না মামুরা। বাংলাদেশকেই ধমকধামক দেবে, এবং নব্বই দশকে যেমন হয়েছিলো তেমনটাই আবার ঘটতে পারে, একটা সময় পরে গিয়ে সমস্যাটা "বাংলাদেশের সমস্যা" হয়ে যাবে।

অরফিয়াস এর ছবি

পশ্চিমারা যখনই নিজ দেশ বাদে অন্য দেশে গণতন্ত্র নিয়ে চর্চা করতে যায়, বোঝা উচিত এর পেছনে তাদের অতি মহৎ কোনো উদ্দেশ্য আছে। মায়ানমার এখন তাদের জন্য "ওপেন ফিল্ড"। নতুন সরকার পশ্চিমাবান্ধব, নিজেদের ব্যবসা ছড়ানোর এবং পারলে এইদিকে সামরিক শক্তি এবং মিত্র বাড়ানোর এই সুযোগ তারা কখনোই ছাড়বেনা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

গোরা এর ছবি

কার্যক্ষেত্রে, এই বিশাল রোহিঙ্গা বিষয়ক সমস্যা সমুদ্রে এক মানবিকতা ছাড়া আর কোনো আশার ভেলার দেখা নাই। দেখার বিষয় দেশ মহাশয়ের নিকট এই মানবিকতার বাস্তব ও নির্দেশিত সংজ্ঞা কী এবং এর মূল্যমানই বা কতটুকু?
পুরানা জ্ঞানমতে, "রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতেয়ার রাষ্ট্রের নিযুক্ত কিছু ব‌্যক্তির হলেও এটি ব‌্যক্তিগত সিদ্ধান্তের বিষয় নয় বরং একটি রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত। রাষ্ট্র সৃষ্টির ধারনা'র মধ্যেই বাস করে আলাদাকরন চিন্তাধারার জয়গান।এই আলাদাকরনের ব্যাপ্তি শুধু পৃথক ঘুমানোর বিছানা নয়- বরং তা মানবজীবনের প্রায় সব ক্ষেত্রেই।মানতে বা শুনতে খারাপ লাগলেও রাষ্ট্র আগাগোড়া একটি স্বার্থবাদী প্রতিষ্ঠান- অনেকটা হিসেবী ব‌্যবসায়ীর মতো - এর স্ব মানে নিজের জনগণ, তাবৎ দুনিয়ার ন‌য়।ঐতিহাসিক বিচারেও রাষ্ট্রের রূপ সেটাই আর ধারনা করি তা তার চালিকাশক্তি সংবিধান বিরূদ্ধও নয়। জাতশ্রেষ্ঠ মহৎপ্রাণ মানবকুলের মতো নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো সুনাম রাষ্টের নাই- সুযোগও নাই, খেয়ালও নাই।নিজের খেয়ে-পড়ে আর যথেষ্ট রিজার্ভের পরে বাড়তি ফিরতি কিছু মিছু থাকলেই কেবল দেশ ভাইজানের গলায় বিশ্বজনীন মানবতার গান শোনার সৌভাগ্য হয়।চিকন বুদ্ধির নিন্দুকেরা আবার এর মধ্যেও স্বার্থর গন্ধ খুঁজে পান।যাই হোক।"

অরফিয়াস এর ছবি

আপনার রাষ্ট্র বিষয়ক ধারণা বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

চমৎকার বিশ্লেষণ হয়েছে। প্রায় সবদিক এসেছে। আপনার মতো আমিও বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্তে ব্যক্তিগতভাবে খুব খুশি নই। তবে আমার অখুশির এটাই একমাত্র বা বড় বিষয় না। জামায়াতে ইসলামী যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির পোড়া ঘরে আলু খাচ্ছে, সেটা আমার জন্যে অধিক অখুশির কারণ। আর এর ফাঁকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির ভাগ্যের দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের পথটাই যে বরবাদ হচ্ছে সবচেয়ে সফলভাবে সেটা সবচেয়ে মর্মান্তিক।

এখানে হাজার হাজার সমীকরণ মেলাবার বিষয়। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির উপর বহুদিন যাবৎ চলে আসা জাতিবৈরিতা। এটাকে মুসলমান ভাই ভাই রঙ দিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আলুপোড়া খাওয়া। রোহিঙ্গারা নিজেরাও এই টোপে পা দিচ্ছে। জামায়াতকে 'ভাই' ভেবে তাদের থেকে অস্ত্র নিচ্ছে, জঙ্গি ট্রেইনিং নিচ্ছে, বাংলাদেশে গিয়ানজাম পাকানোর জন্যে রিক্রুট হচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী পার্বত্য চট্রগ্রাম ও চট্টগ্রামের মুসলমান বাঙালিদেরকেও রোহিঙ্গাদের এই স্বাধীন ইসলামী আরাকান রাষ্ট্রের সংগ্রামের সাথে একাত্ম হবার স্বপ্ন দেখাচ্ছে। পশ্চিমারা একদিকে মায়ানমারের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে অন্যদিকে বাংলাদেশের বর্ডার খুলে দিতে বলছে, যাতে জামায়াতের আলু পোড়ার ভাগটা তারাও খেতে পারে।

রোহিঙ্গাদের ম্যানিপুলেট করার পরিকল্পনায় আওয়ামী লীগ নির্ঘাত জামায়াতে ইসলামীর চেয়ে পিছিয়ে আছে, আওয়ামী লীগের সেরকম ম্যানিপুলেট করার পরিকল্পনা আছে কিনাও সন্দেহ আছে, সেটা করা অনুচিতও। এই অবস্থায় রোহিঙ্গাদেরকে সম্ভাব্য-একটা-ভবিষ্যতে জামায়াতের ফ্রি রিক্রুট যে আওয়ামী লীগ হতে দিবে না সেটাই স্বাভাবিক ছিলো। কিন্তু সরকার কিন্তু কোনো অংশে বৈরি আচরণও করছে না তাদের প্রতি। এখানে অন্তত বাকি সবাই, মায়ানমার, জামায়াত, পশ্চিম কেউ-ই যে রোহিঙ্গার স্থায়ী সমাধান নিয়ে চিন্তিত নয় সেটা দেখার বিষয়। ফলে কোনো আলু পোড়াখোরেরই অধিকার জন্মে না বাংলাদেশ সরকারকে এখানে মানবতাবোধের শিক্ষা দেওয়ার।

আমার প্রস্তাব রোহিঙ্গাদের নিয়ে একটা দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনাতে যাওয়ার যেটা জামায়াতের ম্যানিপুলেটিভ পরিকল্পনাকে নাকচ করবে এবং একইসাথে আরাকান অঞ্চলের একটা দীর্ঘ শান্তিপূর্ণ সমাধান আনবে। অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র অবশ্যই মানবিক, কাম্য, কিন্তু নামেই অস্থায়ী একটি সমাধান। সুদূরপ্রসারী সমাধানটা নিয়েও ভাবতে হবে।

হিমু এর ছবি

নিপীড়িত মুসলিম হিসেবে রোহিঙ্গাদের দেখিয়ে এককালে কিছু জামাতি এনজিও মধ্যপ্রাচ্য থেকে বিপুল ফাণ্ড এনেছিলো। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের প্রেক্ষাপটে দেশের বাইরে নানা জায়গায় লবিইস্ট নিয়োগ ও জনসংযোগ করতে গিয়ে জামাতের বিপুল অঙ্কের টাকা ব্যয় হয়েছে গত কয়েক বছরে। এখন তারা গাঁটের পয়সা খরচ না করে এই খাতে আবার সেই পুরোনো কুমীরের বাচ্চা বিক্রি করার চেষ্টায় আছে। দেশে আবার একটা রোহিঙ্গা সমস্যা দেখাতে পারলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আবার টাকা আসতে পারে, সেই আশাতেই হয়তো গ্যাঞ্জাম পাকানো চলছে।

অরফিয়াস এর ছবি

আসলেই রোহিঙ্গা সমস্যা এতোটাই জটিল, যে কোনো একদিকে বিচার করার অবকাশ নেই। আর এখানেই সমস্যা। কারণ পৃথিবীতে মানবতা বিক্রি হয় সস্তা দরে আর তাতে মন ভোলানোও অনেক সহজ। কিন্তু কষ্ট করে আপেক্ষিক এই জিনিসটি বিবেচনা না করে, কেউই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় যেতে ইচ্ছুক নয় নিজ নিজ স্বার্থের জন্য।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

সময়োপযোগী প্রয়োজনীয় একটি লেখা। মন্তব্য, প্রতিমন্তব্যের মাধ্যমে অনেক তথ্য ও বিষয় উঠে আসছে। নিজের জানার ক্ষেত্রও প্রসারিত হলো।
ধন্যবাদ আপনাকে, এমন একটি লেখার জন্য।

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকেও।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

উলম্ব এর ছবি

যতই রাষ্ট্রীয় স্বার্থ বিবেচনায় আনি না কেন, দিন শেষে আমরা মানুষ । তাই মানবিক গুনাবলি ভুলে শুধু কূটনৈতিক বিবেচনায় আনলে যে আত্মগ্লানি সৃষ্টি হয় তার সামনে আমরা দাড়াতে পারব কি? ধন্যবাদ সামগ্রিক বিশ্লেষণ করে লিখার জন্য । লিখা পরতে পরতে যে প্রশ্ন গুলো জাগছিল তার উত্তর গুলু ও লিখার মধ্যে ই আছে।

হিমু এর ছবি

বঙ্গোপসাগরে নৌকায় ভাসমান রোহিঙ্গাদের সমান বা তারচেয়েও বেশি দুর্দশাগ্রস্ত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মানুষ ছিলো সিডর আর আইলার পর, ভবদহে জলাবদ্ধতার সময়। ঢাকা শহরে হাজার হাজার ছিন্নমূল শিশু প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষের নির্বিকার চোখের সামনে জানোয়ারের মতো পরিশ্রম করে। বৃদ্ধ রিকশাওয়ালাকে দুই টাকা অতিরিক্ত রিকশা ভাড়ার ইস্যুতে চড় দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় মানুষ, কাজের বাচ্চাটাকে পশুর মতো পেটায়, অন্যের ক্ষেতের ফসল নষ্ট করে, মাছের পুকুরে বিষ ছেড়ে দেয়, এগারো বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণ করার পর খুন করে পাটক্ষেতে ফেলে রেখে যায়। সেগুলো নিয়ে কারো কোনো আত্মগ্লানির ফেসবুকীয় গণ-মনোস্রাব চোখে পড়েনি। আজ রোহিঙ্গা ইস্যু এই মৌসুমী মানবিক গুণের কাঙালদের মাঝে যে জাগরণ সৃষ্টি করেছে, তার লক্ষ ভাগের এক ভাগও দেখি না প্রতিদিনের জীবনে মনুষ্যত্বের দাঁত খিঁচানো অপমানগুলোতে। তাই সন্দেহ হয়, এই মানবিক আবেদনের দুধে বালতি বালতি মতলবের শ্যাওলাঘন জল মেশানো আছে।

অরফিয়াস এর ছবি

গুরু গুরু চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সায়ন এর ছবি

গুরু গুরু

ইয়াসির এর ছবি

আমার নিজের এমনভাবে লেখার ক্ষমতা নেই, কাজেই ধার করা হচ্ছে আমার জন্য একমাত্র সমাধান। আপনার অনুমতি সাপেক্ষে এই মন্তব্যটুকু ফেসবুকে উদ্ধৃত করতে চাই। আমি যেমনটা বুঝি, সেটা এইরকমই। ফিরতি মন্তব্যের জন্য আগাম ধন্যবাদ

হিমু এর ছবি

সানন্দ সম্মতি জানাচ্ছি। ধন্যবাদ।

রিসালাত বারী এর ছবি

চলুক

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

চলুক

---------------------
আমার ফ্লিকার

মরুদ্যান এর ছবি

হক কথা।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

রাগিব এর ছবি

(কিঞ্চিত অফ/বা অন টপিক), ইংরেজি উইকির রোহিঙ্গাদের উপরে নিবন্ধটা কেউ বিশ্বাস করতে যাবেন না। ঐটা আগে ঠিক ছিলো, কিন্তু আমি সেমি-রিটায়ার করার পরে বর্মীছাগুরা এসে ঐটার বারোটা বাজিয়েছে, রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশী মুসলমান প্রায় উপপাদ্যাকারে প্রমাণ করে দেয়ার চেষ্টা করেছে।

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

নুসায়ের এর ছবি

রাগিব ভাই, একটা প্রশ্ন আসলো মনে। রোহিঙ্গাদের ভাষা কি? ইংরেজি উইকির এই নিবন্ধে দেখতে পাচ্ছি "রোহিঙ্গা ভাষা" লেখা আছে (যেটা কিনা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার কাছাকাছি কিছু একটা ভাষা বলে বলছে উইকি)। সেক্ষেত্রে তাদের বাংলা ভাষাটাও জানা থাকা স্বাভাবিক বলে মনে হয়।

ফিলাডেলফিয়ায় হালাল মাংসের দোকানে (বাংলাদেশী পরিচালিত) দুই-এক জন বার্মীজ (সদ্য ডিভি পেয়ে আগত) মুসলমান কে কেনা-কাটা করতে দেখেছি। মিয়ানমার থেকে আগত এবং মুসলমান বলে ধরে নিচ্ছি তারা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ভেতরে পড়েন। তারা দেখলাম দোকানের বাংলাদেশী লোকজনের সাথে উর্দুতে কথা-বার্তা চালাচ্ছেন। আমি হিন্দি-উর্দুর তেমন মধ্যে পার্থক্য করতে পারি না, দোকানের বাংলাদেশী লোকটি আমাকে জানালেন মিয়ানমার থেকে আগত যে কয়েকজন তার দোকানে আসেন, তারা উর্দুতেই তার সাথে প্রয়োজনীয় কথা-বার্তা চালান। এর কারনটা বুঝতে পারি নাই।

রাগিব এর ছবি

রোহিঙ্গাদের ভাষাটা হলো রোহিঙ্গা ভাষা। ভাষাকে একটা স্পেক্ট্রাম ধরুন। বাম প্রান্তে রাখুন কুষ্টিয়ার বাংলা। মাঝে রাখুন কুমিল্লা/ফেনী। মাঝের একটু ডানে রাখুন চাটগাইয়া, তার ডানে রাখুন কক্সবাজারের ভাষা। এভাবে স্পেক্ট্রাম বানালে সবার ডানে যেটা পাবেন, সেটাই রোহিঙ্গা ভাষা।

রোহিঙ্গারা কুমিল্লা বা কুষ্টিয়ার ভাষা কিছুই বুঝবে না, যেমন আপনি আমি বুঝবোনা রোহিঙ্গা ভাষা। তবে চট্টগ্রামের, বিশেষ করে কক্সবাজারের লোকজনের ভাষার সাথে রোহিঙ্গা ভাষার অনেক মিল থাকবে। রোহিঙ্গা ভাষার উইকি পাতায় কিছু উদাহরণ আছে। যেমন ফাতা = পাতা। ওগুলা চাটগাইয়া ভাষার সাথে কিছুটা মিলে। তার মানে এই না যে ওটাকে বাংলা বলা যেতে পারে।

রোহিঙ্গারা আরবি হরফে তাদের ভাষা লিখতো। বছর দশেক/বিশেক হলো রোহিঙ্গালিশ নামে একটা প্রজেক্ট চলছে, যাতে ইংরেজি হরফে ওদের ভাষা লেখার চেষ্টা করা হচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের কাছে বাংলা যা, উর্দুও সেরকমই হওয়ার কথা। তদুপরি বাংলাদেশী দোকানদারেরা উর্দুপ্রেমিক/সমঝদার ভাব দেখায় ভারতীয়/পাকিস্তানী ক্রেতা ধরতে, কাজেই রোহিঙ্গারা তাকে উর্দূভাষী ধরে নিলে আমি অবাক হবোনা।

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

মন মাঝি এর ছবি

এটাকে মনে হয় সমাজভাষাতত্ত্বে "ডায়ালেক্ট কন্টিনিয়াম" বলে। নাকি এটা "ল্যাঙ্গুয়েজ কন্টিনিয়াম" এই বিশেষ ক্ষেত্রে?

****************************************

অরফিয়াস এর ছবি

কিছু পাবলিক দেখি এই লেখার অংশ কপি করে ওই নকল ছবির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেছে পোস্টার বানিয়ে!!!

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

পুরো লেখাটা শেয়ার করতে পারি?

কড়িকাঠুরে

অরফিয়াস এর ছবি

করতে পারেন, সমস্যা নেই। কিন্তু কোনো লাভ হবে বলে মনে হয়না। ওই পেইজে প্রতিবাদের সাথে সাথে ঐসব কমেন্ট মুছে দেয়া হচ্ছে।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

রাগিব এর ছবি

সবই দেখি একই গোয়ালের গরু! সুকী নিজের স্বার্থে মুখ বন্ধ করে রেখেছে, আর তার দলের লোক্জন বলছে, রোহিঙ্গারা বার্মার নাগরিকই না!

এই মহিলা চরমতর ভণ্ড এক রাজনীতিবিদ। পশ্চিমা বিশ্বের কাছে ভালো সেজে থাকে, অথচ গণহত্যার পেছনে মদত দিতে সবার আগে তাকেই পাওয়া যাবে হয়তো।

রয়টার থেকে

SUU KYI 'TIGHT-LIPPED'

Even the democracy movement in Myanmar is doing little to help the Muslim minority, Rohingya politicians say.

Democracy icon Aung San Suu Kyi last week urged "all people in Burma to get along with each other regardless of their religion and authenticity." But she has remained "tight-lipped" about the Rohingya, said Kyaw Min, a Rohingya leader and one-time Suu Kyi ally who spent more than seven years as a political prisoner. "It is politically risky for her," he said.

NLD spokesman Nyan Win wouldn't comment on Suu Kyi's position, but said: "The Rohingya are not our citizens." Suu Kyi is now on a European tour that will take her to Oslo, Norway, to accept the Nobel Peace Prize she won in 1991.

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

অরফিয়াস এর ছবি

রাগিব ভাই, এটাকেই বোধহয় রাজনীতি বলে !!

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

এখানে কিছু পেলাম-

Suu Kyi said she was "concerned" about ethnic and religious violence in the country after clashes between Buddhists and Muslims in the past week have left many dead or homeless.
"Of course I am concerned, as I think everybody else in Burma is," Suu Kyi said of the clashes in Rakhine state.
"We have said again and again rule of law is essential. ... Without rule of law, such communal strife will only continue," she warned, urging that the conflict be handled with delicacy, sensitivity and "cooperation of all people concerned."
She also addressed ethnic violence in Kachin state, saying: "A cease-fire is not enough. We have to have a political settlement if there is to be a lasting peace."
U.N. special envoy Vijay Nambiar, who returned from a visit to Rakhine on Thursday, said he had seen smoke rising from the remains of houses that had been burned.
"I'd like to say the worst is behind us," he told CNN's Kristie Lu Stout, but could not say that the unrest was over.
"Trauma, fear, insecurity" will continue for some time, he warned, and said that reconciliation in the area will be "a long haul."
Violent clashes between Buddhists and Muslims prompted the government of President Thein Sein to declare a state of emergency in Rakhine on Sunday, calling in the military to help impose order.
The unrest in the western coastal area of Myanmar, which borders Bangladesh, has left 21 people dead and thousands seeking shelter in refugee camps, Myanmar state TV reported Tuesday evening.
Suu Kyi said part of the problem was the "porous border" and "fear that there will be illegal immigrants."
"We need very clear and precise laws with regard to citizenship," she said.

সূত্র

কড়িকাঠুরে

হিমু এর ছবি

আয়রনি হচ্ছে, সু চি যে পুরস্কার নিতে যাচ্ছেন, তার প্রবর্তক শান্তি নিয়ে নিজের ভাবনা বেশ পরিস্কারভাবে লিখে গেছেন উইলে।

“The said interest shall be divided into five equal parts, which shall be apportioned as follows: /- - -/ one part to the person who shall have done the most or the best work for fraternity between nations, the abolition or reduction of standing armies and for the holding and promotion of peace congresses.”
(Excerpt from the will of Alfred Nobel)
[সূত্র]

দুই বা ততোধিক জাতির মধ্যে ভাতৃত্ব নিয়ে সু চি বদ্ধোষ্ঠ। নিয়মিত সেনাবাহিনীর শক্তিহ্রাস তো দূরের কথা, তিনি সেনাশাসকদেরই তোয়াজ করে দেশ ছেড়ে বেরিয়েছেন। আর শান্তি সম্মেলন তিনি ঘরে আয়োজন না করে তার খোঁজে ইয়োরোপে গেছেন।

এই মহিলা বার্মার ক্ষমতা গ্রহণ করলে তো পরিস্থিতির সহসা উন্নতি দেখি না।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

একদা একাত্তরে ত্রিশ লাখ বাঙালী নিধনের ব্যাপারে নিশ্চুপ থাকা জনৈক সুফী সাধুর লেবাননে শিশু-নারী হত্যা নিয়ে মানবতার মায়াকান্নায় ব্লগের আকাশ বাতাস ভারী হয়ে গিয়েছিলো। তখন তার এই মৌসুমী মায়াকান্নার জবাব ছিলো একটাই, "লেবানন মাই অ্যাস!"

আজকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে অনেকেরই মানবতা চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে। ব্লগে, ফেসবুকে এদের মানবতার আহাজারীতে আল্লার আরশ পর্যন্ত কেঁপে কেঁপে উঠছে। মুক্তিযুদ্ধের আমলের শরণার্থীর তুলনা দিচ্ছে বটে, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে সংগঠিত মানবতার অবমাননা সম্পর্কে তারা আবার স্পিকটি নট! বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রতিদিনের বিপন্ন মানবতায় এদের হ্যাজাকবাত্তি দিয়েও খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এদের এই নির্লজ্জ মৌসুমী মানবতার তালিম দেখে কেবল একটাই কথা বলতে ইচ্ছে করছে, "মানবতা মাই অ্যাস!"

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সাইদ এর ছবি

"মানবতা মাই অ্যাস!"

চলুক

দুর্দান্ত এর ছবি

পোস্টের বক্তব্য়ের সাথে সহমত।
***
অফটপিকঃ তিব্বতি পোস্টে আপনি জানালেন তিব্বতের সংখ্য়ালঘু মৌলবাদী সম্প্রদায়ের দাবী মেনে চীনের তিব্বত ছেড়ে দেয়া উচিত। এই পোস্টে জানতে পারলাম রাখাইন স্টেটের সংখ্য়ালঘু মৌলবাদী সম্প্রদায়ের মুক্তিকামনার দাবী মানা না মানা মিয়ানমার সরকারের নিজস্ব বিষয়।

তাহলে কি বুঝতে হবে তিব্বতি মৌলবাদী ভাল আর রাখাইন মৌলবাদী খারাপ?

অরফিয়াস এর ছবি

তিব্বতীদের সাথে তুলনা করার আগে দেখা উচিত রোহিঙ্গারা মায়ানমার এর আরাকান এর আদিবাসী কিনা, সমস্যাটা সেখান থেকেই শুরু, লেখাতে দেখেছেন হয়তো !! আর এখানে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কথা হচ্ছে, তিব্বতীদের আন্দোলন তাদের আগ্রাসী শাসকগোষ্ঠী চীন এর সাথে, ওই আন্দোলন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সাথে তুলনা করলে কেমনে হবে?

আর রোহিঙ্গা বিচ্ছিনতাবাদী তৈরী করার পেছনে চরম অবদান আমাদের দেশের মৌলবাদীগোষ্ঠীর, তিব্বতে বর্তমান আন্দোলনকারীরা কোন চরম সন্ত্রাসীপন্থা বেছে নিয়েছে কি? আপনি ওই পোস্টেও বারবার একইভাবে তিব্বতী আন্দোলনকারীদের সাধারণ সন্ত্রাসবাদীদের সাথে সরলীকরণ করতে চেয়েছেন, এখানেও তাই করে যাচ্ছেন।

তাহলে কি বুঝতে হবে তিব্বতি মৌলবাদী ভাল আর রাখাইন মৌলবাদী খারাপ?

এই প্রশ্ন করার পেছনে আপনার সেই একই যুক্তি লক্ষ্য করছি, তিব্বতীদের মৌলবাদী বানানোর পেছনে আপনার প্রয়াস দেখে ভালো লাগলো, কিন্তু সেই একই প্রয়াস যদি এদের আন্দোলনের আত্মত্যাগের প্রতি কিছুটা হলেও থাকতো তাহলে হয়তো পার্থক্যটা নজরে পড়তো। "তিব্বতী মৌলবাদী"- এই টার্মটা কি আপনার গবেষণালব্ধ? কারো আন্দোলনে আপনার সমর্থন নাই ভালো কথা, কিন্তু তাহলেই তাদের মৌলবাদী হয়ে যেতে হবে? আর সাধারণ রোহিঙ্গারাও মৌলবাদী হলো কবে থেকে? !!

তিব্বতি পোস্টে আপনি জানালেন তিব্বতের সংখ্য়ালঘু মৌলবাদী সম্প্রদায় দাবী মেনে চীনের তিব্বত ছেড়ে দেয়া উচিত।এই পোস্টে জানতে পারলাম রাখাইন স্টেটের সংখ্য়ালঘু মৌলবাদী সম্প্রদায়ের মুক্তিকামনার দাবী মানা না মানা মিয়ানমার সরকারের নিজস্ব বিষয়

আর দেখুন, আপনার এই একই প্রশ্নের একই উত্তর বারবার দেয়ার দরকার মনে করিনা। এই লেখায় আমি রোহিঙ্গা শরণার্থী হতে শুরু করে কাউকে সমর্থন করে কিছু লিখিনি, নিরপেক্ষ থেকে একটি জটিল বিষয়কে দেখার চেষ্টা করেছি মাত্র। এখানে আপনি কোথায় সমর্থন করার বিষয়টি দেখলেন সেটা জানতেও আমি আগ্রহী নই। আমি বলেছি আগেও, আপনার মতো করে আমি তিব্বতী আন্দোলনকারীদের সন্ত্রাসীদের কাতারে ফেলতে পারছিনা। আপনি যদি এর পরেও বলে যেতে চান এবং সরলীকরণ বজায় রাখতে চান, সে নিয়ে আমার সমস্যা নেই, আপনার মত ও যুক্তি আপনার কাছেই থাক। একই সাথে আমি সাধারণ রোহিঙ্গাদেরকেও মৌলবাদীর কাতারে ফেলতে আগ্রহী নই। কয়েকটা বিষয় একসাথে করে জগাখিচুড়ি বানানোর কোনো কারণ দেখিনা।

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের লোকেরা যে স্বাধীনতার আন্দোলন করছে সেই একই স্বাধীনতার আন্দোলন আমাদের দেশের পার্বত্যাঞ্চল এর লোকেরাও করেছিলো, সে সম্পর্কেও কি একই মত আপনার?

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

তিব্বত কী চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ? ইতিহাস-ঐতিহ্যগত ভাবে তিব্বত কী চীনের অংশই ছিল? সেখানকার জীবনযাত্রা, সামাজিক অবস্থা, ভৌগলিক অবস্থান, সাংস্কৃতিক এবং ইতিহাস-ঐতিহ্য দিক দিয়ে তিব্বতীরা চীনের থেকে আলাদা কিনা এবং কতটুকু আলাদা, এর উপর দৃষ্টি দিয়েই বিচার করা উচিত যে তিব্বতীরা আলাদা রাষ্ট্র গঠনের যোগ্য কিনা । তাদের মৌলবাদীত্বের উপর নয় এবং বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তরে সংগ্রামরত সকল স্বাধীনতাকামী মানুষের ক্ষেত্রেই এ ব্যাপারগুলো প্রযোজ্য বলে আমি মনে করি ।

রাখাইন মৌলবাদীরা স্বাধীনতা চাওয়ার প্রশ্নে উপর্যুক্ত যোগ্যতাগুলো পূরণ করুক । তারা এবং রাখাইন প্রদেশ সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ভৌগলিক ক্ষেত্রে দেখাক যে তারা মায়ানমার থেকে আলাদা ।

ভাল ও খারাপের প্রশ্ন অবশ্যই আছে- ইচ্ছেমত স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন, কোনো নিয়ম না মেনে- এটাও অবশ্যই ভাল কিছু না ।

কড়িকাঠুরে

তাপস শর্মা এর ছবি

অনেক তথ্যবহুল এই পোস্টের জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। অনেক কিছুই জানতাম না রোহিঙ্গাদের নিয়ে জানাও হল ভালোভাবে।

ওয়েল-ডান। চলুক চলুক চলুক

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ তাপসদা। কি আর করা বলো, এত অপ-প্রচারের মাঝে কিছু একটা করার তাগিদ ছিলো।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ধুসর জলছবি এর ছবি

অসাধারণ লেখা।রোহিঙ্গা দের ব্যপারে আসলে আমি নিজেও অনিশ্চিত অবস্থানে আছি। পুরো ব্যাপারটা অনেক বেশী জটিল, কিন্তু বিরক্তিকর ব্যাপার হল আমাদের দেশের ছাগুদের আচরন। নিজের দেশের সংখ্যালঘুদের পুড়িয়ে মেরে তারা অন্য দেশের সংখ্যালঘুদের জন্য নাকের পানি চোখের পানি এক করছে। গত কয়েকদিন ফেবু তে বিভিন্ন নব্য মানবতাবাদীর মায়াকান্না দেখে বিরক্ত লাগছিল,আজকে জাফর স্যারের লেখাটা পড়েও খুব অবাক হয়েছি, এত জটিল একটা ব্যাপার কে শুধু আবেগ দিয়ে বিশ্লেষণ করাটা কতটুকু যৌক্তিক? রোহিঙ্গা দের কথা ভেবে আমারও মায়া লাগছে । কিন্তু আমি নিজে একজন একা ঘরে বসে রোহিঙ্গাদের দুঃখে চোখের পানি ফেলতে পারি, কিন্তু আমাকে যদি সরকারের দায়িত্ব পালন করতে দেয়া হয় তখন চোখ মুছে নিজের দেশের ভালোটাই আগে চিন্তা করতে হবে। সরকারে যারা বসে আছে তারা আবেগ দিয়ে দেশ চালাচ্ছে না, দেশ আবেগ দিয়ে চালানোর জিনিষও না।

প্রশ্ন হচ্ছে শরণার্থী সমস্যার পেছনের কারণ কি? এখানে শরণার্থী সমস্যার পেছনের কারণ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা একটি দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এটি সামলানোর দায়িত্বও সেই দেশের সরকারের। এই ব্যাপারে সরকার অপারগ হলে সাহায্য অবশ্যই করা প্রয়োজন। কিন্তু মায়ানমার নিজের দেশের এই সমস্যা মোকাবিলা করতে সক্ষম কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনিচ্ছুক। দাঙ্গা আক্রান্ত অঞ্চলগুলোতে সামরিক আইন জারি করা হয়েছে কিন্তু মায়ানমার সরকার যেহেতু কখনোই রোহিঙ্গাদের স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করতে ইচ্ছুক নয় তাই এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার যদি শরণার্থী আশ্রয় প্রদান করে তাহলে বিষয়টি একটি দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে পরিনত হবে। বাংলাদেশেও অতীতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে কিন্তু কখনোই কি কোনো দেশের সীমান্ত এর জন্য খুলে দেয়া হয়েছে? সংখ্যালঘু অত্যাচার বাংলাদেশেও ঘটেছে বিভিন্ন সময়ে কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশগুলো কখনোই সেটিকে দুই দেশের মধ্যকার সমস্যায় পরিনত করেনি বরং বাংলাদেশের সরকার নিজেরাই এই অভ্যন্তরীণ বিষয় রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করেছে। তাই মায়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়টিকে বাংলাদেশ যদি দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে পরিনত করে এবং নতুন করে শরণার্থী আশ্রয় প্রদান করে তাহলে সেটি আগের সমস্যাটিকেই আরও জটিল করবে।

খুবই চমৎকার বিশ্লেষণ। এই লেখাটা খুব দরকার ছিল। চলুক চলুক

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকেও। আমিও সেটাই বলতে চেয়েছি, ঢালাওভাবে সরকারের দোষ দিলে অনেকগুলো বিষয় চোখের আড়ালে থেকে যাবে। মানবিকতা অবশ্যই আমাদের চর্চা করতে হবে, কিন্তু এটাও দেখা দরকার সরকারের মানবিক দায়িত্ব সবার আগে তার দেশের জনগনের প্রতি।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

নিঃসঙ্গ পৃথিবী এর ছবি

চলুক

অরফিয়াস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তানভীর এর ছবি

রোহিঙ্গা বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানকে সমর্থন জানাই। এইটুকু দেশে দেশের মানুষ থাকার জায়গা পায় না, আবার রোহিঙ্গা! মায়ানমারের আয়তন বাংলাদেশের ৫ গুণ, লোকসংখ্যাও মাত্র ছয় কোটি। জাতিসংঘ, পশ্চিমা কিংবা ইসলামি বিশ্ব এ বিষয়ে এত আন্তরিক হলে তাদের উচিত বাংলাদেশকে চাপ না দিয়ে নিজেদের দেশে উদ্বাস্তু রোহিঙ্গাদের জায়গা দেয়া অথবা মায়ানমারের একাংশ দখল করে সেখানে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।

অরফিয়াস এর ছবি

আপনার বক্তব্যের সাথে সহমত।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

উপরেই বলছিলাম যে এইসব কেইসে আলুপোড়াখোরের অভাব হয় না। জামায়াতে ইসলামী আর তার সমমনা ছাগুরা এটাকে একটা ধর্মীয় রঙ দিতে যারপরনাই ব্যস্ত। লেখক ও সাথে আমরা অন্যান্যরাও বলছি যে "অনেকেই রোহিঙ্গা-রাখাইন বৈরীতাকে ধর্মীয় বৈরীতা হিসেবে চিহ্নিত করে থাকেন ... মূলত এটি স্থানীয়দের সাথে অবস্থানগত বৈরীতা, ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা এখানে মুখ্য নয়।"

কিন্তু নির্মল বিনোদনের উৎস ধর্মকারী ওয়েবসাইট বাছবিচার না করে তাদের লিংকিন পার্ক সিরিজে (যেখানে ধর্মান্ধতার বিভিন্ন খবরকে লিস্ট করা হয়) রোহিঙ্গা-রাখাইন সহিংসতাকে স্থান দিয়েছে । লিখছে -

৫ জুনের খবর: মিয়ানমারে মুসলিমরা এক বৌদ্ধ মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করেছে অভিযোগে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা পিটিয়ে হত্যা করেছে দশজন মুসলিমকে। ৯ জুনের খবর: মুসলিম ও বৌদ্ধদের সংঘর্ষে ৪ জন বৌদ্ধ নিহত। একই দিনের আরেকটি খবরে দেখা যাচ্ছে, নিহতের সংখ্যা সাত (কোন ধর্মাবলম্বী, তা উল্লেখ করা হয়নি), আহত - ১৭ এবং ভস্মীভূত হয়েছে ৪৯৪টি বাড়ি, ১৯টি দোকান ও একটি গেস্ট হাউস। এবং দাঙ্গায় অংশগ্রহণকারী মুসলিমরা সেখানে অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশী!

ব্যাপারটাকে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক রূপ তো দেয়া হচ্ছেই, সাথে দাঙ্গায় অংশগ্রহণকারীদেরকে "অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশী" বলার মতো অপপ্রচারে গা ভাসাতেও বাঁধলো না?

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

সহিংস 'ধার্মিক' ধার্মিক না, সহিংস 'নাস্তিক' নাস্তিক না। এই দুইটাইপের কাজে অমিলের চেয়ে মিল বেশি থাকাই স্বাভাবিক। কারণ, তাদের উদ্দেশ্য একই: মানুষকে মানুষ হিসেবে না দেখে ধার্মিক এবং নাস্তিক হিসেবে দেখা। এক টাইপের হাতিয়ার 'ধর্ম', আরেকটাইপের হাতিয়ার 'নাস্তিকতা'।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

অরফিয়াস এর ছবি

ধর্মীয় মৌলবাদী যেরকম সমাজের জন্য ক্ষতিকর সেরকমই জঙ্গি নাস্তিকতা। নাস্তিকদের যৌক্তিক না হয়ে গুজবে ভেসে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। নাস্তিকতা তৈরী হয় যুক্তির উপর ভিত্তি করে, একজন নাস্তিক এর কাছ থেকে অন্তত ধর্ম বিষয়ে যৌক্তিকতা আশা করি। আমি নিজেও নাস্তিক, কিন্তু জঙ্গি নাস্তিকতা কখনই সমর্থনযোগ্য নয়।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

ধর্মকারীর উত্তর:

ধর্মকারী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে নাকি! আচ্ছা, দেখা যাক।

উপরোক্ত উদ্ধৃত অংশে ধর্মকারীর পক্ষ থেকে একটি তথ্যও যোগ করা হয়নি। এবং আপনার বোল্ড করা অংশটিও ধর্মকারীর মস্তিষ্কপ্রসূত নয়। এবিসি নিউজের সাইটে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সংবাদে বলা আছে: The rioting reflected long-standing tensions in Rakhine state between Buddhist residents and Muslims, many of whom are considered to be illegal settlers from neighboring Bangladesh. সেই কথাটাই বাংলায় বলা হয়েছে বিস্ময়বোধক চিহ্ন সহকারে। এর মানে অপপ্রচার ছড়ানো?

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

মানে মানে যদি চেপে যাইতেন, বেনিফিট অব ডাইট দিতাম। উত্তর করে আমার অভিযোগটা আরও পরিষ্কার করলেন। এপি তার সংবাদে বলছে "many of whom are considered to be illegal settlers from neighboring Bangladesh", আর আপনার বিস্ময়বোধকচিহ্ণযুক্ত বাক্যে লিখেছেন - "দাঙ্গায় অংশগ্রহণকারী মুসলিমরা সেখানে অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশী।"

"many of whom are considered to be"-টা অনুবাদে গায়েব হয়ে গেলো? "many of whom are considered to be" এর মধ্যে সব দাঙ্গাকারী নয়, বরং বলা হচ্ছে তাদের অনেকে। এবং তারা কোনো (উহ্য) কর্তা দ্বারা "অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশী" হিসাবে 'গণ্য' বলা হচ্ছে, তারা সত্যিই বাংলাদেশী কিনা সেই রায় দেয়া হচ্ছে না। আপনার অনুবাদে দাঙ্গায় অংশগ্রহণকারী মুসলিমদের "অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশী"ভিন্ন অন্য কোনো পরিচয়ের সুযোগ নাই। তাছাড়া তারা কোনো উহ্য কর্তা দ্বারাও "অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশী" হিসাবে গণ্য (considered) নন, আপনিই কর্তা হিসাবে রায় দিচ্ছেন যে "দাঙ্গায় অংশগ্রহণকারী মুসলিমরা" "অবৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশী"। বিস্ময়বোধক চিহ্ণ তারে খুব বাঁচাইতে পারতেছে না।

আরিফুর রহমান এর ছবি

মন্তব্যকারী'র অবস্থান ইন্টারেস্টিং। আমি ধ্রুব বর্ণনের কথা বলছি।

জাতিগত দাঙ্গায় ধর্মের ইন্ধন থাকতে পারে, এমন গন্ধে তিনি খুব একটা আরামবোধ করছেন না।

আশ্চর্যবোধক চিহ্ণের ব্যবহার আপনাকে স্বস্তি দিচ্ছে না। যদিও বিশাল একটা ইংরেজি পত্রিকার খবরের সারাংশ তেমনটাই বলতে চাইছে।

খবরে আরো বলছে //centering on resentment of the alleged cross-border outsiders- - there is fear that the trouble could spread elsewhere because the split also runs along religious lines.//

এটা পরিষ্কার যে মুসলমান ধর্মের যে সকল বাসিন্দা এই দাঙ্গার একটা পক্ষ সেখানে ধর্মীয় বিভেদই প্রধান। বৌদ্ধ রোহিঙ্গা খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আর বার্মা সরকার নিজেই রোহিঙ্গাদের মায়ানমারের নাগরিক স্বীকৃতি দেয় না

অনুবাদের ছিদ্র ধরে 'ধর্মকারী'কে একহাত নেয়া খুবই সহজ। বাংলাদেশের আদালতে গিয়ে বাতুল নাম্নী মহিলা ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের 'মুসলিমত্ব' আরেকবার প্রমাণ করে ছেড়েছেন, সেখানে ধ্রুব বর্ণন জাতীয় সুশীলগন যে দু'চার ঘা বসাতে চাইবেন 'ধর্মকারী'র ঘাড়ে, এ আর এমন আশ্চর্যের কি।

আসলে আরো একটু লজ্জা হওয়া উচিত আমাদের ইসলামত্ব নিয়ে। কিভাবে যেন বাংলাদেশ ভুখন্ডটা হয়ে পড়েছে সৌদি কালচারের একটা বস্তা। তাতেও সমস্যা ছিলো না, কিন্তু এই সৌদি প্রডাক্টখানা পুরো বিশ্বজুড়ে এমনই ছিছিক্কারের সন্মুখীন হচ্ছে যে মুসলমান হয়ে রোহিঙ্গা বেচারারা বরঞ্চ বিপদেই পড়েছে।

বিপদ কাটাতে ধ্রুবরা অনেক চেষ্টা তদবির করে যাবেন, তাদের জন্য 'গুড-লাক্‌' বলা ছাড়া আর কিই বা করতে পারি?

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

আরিফুর রহমান ভাইয়ের অবস্থানও 'ইন্টারেস্টিং' লাগতেছে। 'জাতিগত দাঙ্গায়' রোহিঙ্গার ধর্ম উপস্থিত, কিন্তু রাখাইনের ধর্ম নাই ('এটা পরিষ্কার যে মুসলমান ধর্মের যে সকল বাসিন্দা এই দাঙ্গার একটা পক্ষ সেখানে ধর্মীয় বিভেদই প্রধান')। আবার 'বৌদ্ধ রোহিঙ্গা খুঁজে পাওয়া মুশকিল' বইলাও কি রাখাইনের কোনো ধর্ম থাকতে পারে না? নাকি রাখাইনের ধর্ম ক্যাননে জায়গা পায় নাই বইলা তাদের ধর্ম (যদি থাইকা থাকে) গুনায় ধরা যাবে না?

ধর্মকারির অনুবাদে ছিদ্র দুষ্টু লোক ধরায়া দিলেও সেইটা ছিদ্রই থাকে। নাকি ঐ ওয়েবাসইটও একটা ঐশী আমদানি?


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

আরিফুর রহমান এর ছবি

ছিদ্রান্বেষণ একটা তৃপ্তিকর কর্ম। অনেকটা বসে বসে নাকের ময়লা ঘাঁটা'র মতো আর কি! চোখ টিপি

রাখাইনের ধর্ম নিয়ে আমি কিছু বলি নাই, তাই অনিন্দ্য ভাই, আপনার ইঙ্গিত আমার জন্য প্রযোজ্য নয় বোধ করি।

বিবিসি'র একই নিউজের বরাত দিয়ে বলা যায় রাখাইন স্টেট যদিও বৌদ্ধ রাখাইন সম্প্রদায়ের মিতা, সেই স্টেটের সবাই বৌদ্ধ নহেন।

//Rakhine state is named after the ethnic Rakhine Buddhist majority, but also has a sizeable Muslim population, including the Rohingyas. //

আরে দিতে থাকেন ধর্মকারীরে। ইচ্ছামতো!

এমনিতেই বাঙালী'র রসবোধ কাতুকুতু পর্যায় অতিক্রম করে নাই। তাই বাঙালী রসবোধ হুমকির মুখে পড়ে এমন সবকিছুই তো দু'চারঘা পাবার উপযুক্ত, কি বলেন? আফটার অল, ধর্ম মোতাবেক রসবোধ খুব খ্রাপ জিনিস। হাততালি

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

ধর্মাকারীর ভূত থেকে আরিফুর রহমানের আত্মা বের হবে জানলে এই নিয়ে তর্ক করা যে একটা বাজে সময় নষ্ট সেটা আগেই স্বীকার করে রাখতাম। তবে একটা বিষয় পরিষ্কার করা দরকার -

বাংলাদেশের আদালতে গিয়ে বাতুল নাম্নী মহিলা ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের 'মুসলিমত্ব' আরেকবার প্রমাণ করে ছেড়েছেন, সেখানে ধ্রুব বর্ণন জাতীয় সুশীলগন যে দু'চার ঘা বসাতে চাইবেন 'ধর্মকারী'র ঘাড়ে, এ আর এমন আশ্চর্যের কি।

ব্যাপারটা একটু বোঝার চেষ্টা করি। আসিফ মহিউদ্দিনকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো, তাই জন্যে এখন যদি তার লেখাচুরিকে লেখাচুরি বলি, তাইলে সেইটা ধ্রুব বর্ণন জাতীয় সুশীলগণের দ্বারা আসিফ মহিউদ্দিনের ঘাড়ে বসানো দু চার ঘা, এমন কিছু কি?

আপনি বসে বসে Appeal to pity পাড়বেন আর আমি বসে বসে আপনার এইসব ফ্যালাসি খণ্ডাবো? আরো কিছুক্ষণ ধ্রুবরা ধ্রুবরা করতে থাকেন।

আরিফুর রহমান এর ছবি

অতদুর যাচ্ছেন কেন, ধ্রুব বর্ণন। অতো জটিল ফ্যালাসির সুতোরও দরকার নাই।

প্লেন এন্ড সিম্পল মিথ্যাচার। আসিফ যেখানে 'গ্রেফতার'ই হয় নাই, সেখানে ন্যায় অন্যায় প্রসঙ্গ আসেতেই পারে না। ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তাকে ডিবি অফিসে 'ডেকে পাঠানো' যেভাবে ফেঁপে 'গ্রেফতারে' পরিণত হয়েছে, তাতে পুরো সচেতন ব্লগার ও একটিভিস্টদের সাথে একধরনের প্রতারণাই করা হয়েছে।

তবে আপনার এই পিছলে অন্য প্রসঙ্গে যাওয়া দেখে আমার পুর্বোক্ত মন্তব্য আরো পোক্ত হলো, এই আর কি! দেঁতো হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

অসাধারণ লেখা। আমরা উগ্র সাম্প্রদায়িকতা চাই না, আমরা আমাদের অধিকারের নিশ্চয়তা চাই।
প্রিয় লেখক, আপনাকে ধন্যবাদ। হাসি
জাদিদ

অরফিয়াস এর ছবি

উগ্র সাম্প্রদায়িকতা আমরা কেউই চাইনা। ধন্যবাদ আপনাকে।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

আলোকিতা এর ছবি

যারা এত মানবতা মানবতা বলে লাফাচ্ছে তাদের সবাইকে কয়েকটা করে রোহিঙ্গা ভাগ করে দেয়া দরকার।নিজের ভাগের রোহিঙ্গাগুলোকে খাওয়াক,পরাক,চাকরীর ব্যবস্থা করুক তারপর যেন মানবতা নিয়ে ফাল পারতে আসে।কিংবা বাজেটে রোহিঙ্গা ভরণপোষণে মানবতা-কর নামে একটা কর যুক্ত করলেও মন্দ হয় না।যাদের মানবতার বন্যা বইছে তারাই শুধু ওই কর দিল।ব্যাস!মুশকিল আসান।মানবতা জিন্দাবাদ॥

পুতুল এর ছবি

এখানে মানবতা হলো একটা সাম্প্রদায়ীক দাঙ্গাকে উসকে দেয়া। রোহিঙ্গারা দেখলাম শান্তিরাক্ষী বাহিনীর প্রহারায় ভিটে-মাটি ছেড়ে যাচ্ছে! সু চি-র সূচীতা কামনা করি।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

মন মাঝি এর ছবি

চলুক

চমৎকার, সুচিন্তিত, ভারসাম্যপূর্ণ লেখা!

****************************************

অরফিয়াস এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

রানা মেহের এর ছবি

অনেক ভালো লেগেছে লেখাটা।
বিরক্ত হচ্ছিলাম লোকজনের মানবতাবাদী কান্নাকাটি দেখে।
আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় মাথা উঁচু করে কথা বলছে, এটা খুব ভালো সাইন

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ। হ্যাঁ, কোনো কিছু নিয়ে যে বাংলাদেশ শক্ত অবস্থান নিলো এটাই বা কম কি?

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

প্রয়োজনিয় লেখা। খেটেখুটে লিখেছেন। ধন্যবাদ।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অরফিয়াস এর ছবি

খেটেখুটে লিখতেই হলো। ধন্যবাদ আপনাকে, অনার্য দা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হিমু এর ছবি

কক্সবাজারে শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করছে এমন কয়েকটি সংগঠনের বিরুদ্ধে কয়েকজন সাংবাদিক উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ করেন।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক বলেন, “এমন অভিযোগের কারণে ‘মুসলিম এইড’র কান্ট্রি ডিরেক্টরের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। এই সংস্থার কক্সবাজারে দায়িত্বরত কর্মকর্তা ডা. জাহিদ জামাল কট্টককে ইতোমধ্যেই প্রত্যাহার করা হয়েছে।”

[সূত্র]

মুসলিম এইড বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী চৌধুরী মঈনুদ্দিনের সংগঠন না?

সত্যপীর এর ছবি

হ, চৌধুরী মঈনুদ্দিন মুসলিম এইডের ট্রাস্টি।

..................................................................
#Banshibir.

অরফিয়াস এর ছবি

বুদ্ধিজীবি হত্যাকারীদের সরকার এখনো কেন যে সংগঠনের লাইসেন্স দিয়ে বসিয়ে রেখেছে বুঝিনা। চৌদি/বিরানের টাকায় এদের লাফ ঝাপ দেখলে মনে হয় ক্যাকটাস দিয়ে পোন্দাই।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হিমু এর ছবি

বদলেযাউবদলেদাউওয়ালা আলুপেপারে যখন এ খবর ছাপা হয়, তখন আনিসুলহকবর্ণিত তিনচারহাত সম্পাদনার ছাঁকনিতে মুসলিম এইডের নামটা আলগোছে আটকা পড়ে। ভাসুরের নাম নিতে মতিউর রহমান ভাইয়াদের অনেক লজ্জা।

পুতুল এর ছবি

পারারাষ্ট মন্ত্রীর বক্তব্য ভাল লেগেছে। মানুষের দুর্দশা, কষ্ট দেখলে যে কোন মানুষের খারাপ লাগে। আমারও লাগছে। সবার মত আমিও চাই তাদের কষ্ট না হোক। কিন্তু বাংলাদেশ তাদের আশ্রয়দিলে এধরণের নির্যাতন কমবে না। এবং এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ যা করেছে এবং করছে তা যথেষ্ট মানবীয়।

জার্মান টিভি দেখলাম মিয়ানমারের গনতন্ত্রের পথে এই ধরণের সাম্প্রাদায়ীক দাঙ্গার সমালোচনাই করেছে। অং সান সু চির ইউরূপ সফরকে দুর্যোগের যাত্রা বলেছে এআরডি।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

অরফিয়াস এর ছবি

মানবতাবাদী নেত্রী হিসেবে অং সান সু চি- এর থেকে এই সময়ে কোনো পদক্ষেপ আশা করেছিলাম, উনিও যেভাবে সরে দাড়ালেন তাতে অবাক হলাম।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হিমু এর ছবি

মেহেরজানের অ্যাপোলজিস্ট, রিকনসিলিশেয়ন তত্ত্বের অনলবর্ষী বক্তা, ৫০০ সিসি নরটন মোটর সাইকেলের অভাবে বিপ্লব ঘটাতে অপারগ বাংলার চে গুয়েবাড়া ফারুক তার অশ্রুভেজা লাদির বস্তা খুলে ধরেছে আলুপেপারে।

বাংলার গুয়েবাড়া লিখেছে,

মিয়ানমারের মুসলিম জনগোষ্ঠীর জঙ্গি বা বিদ্রোহী হওয়ার রেকর্ড অন্য বার্মিজদের তুলনায় শতগুণ কম। অপরাধপ্রবণতার দিক থেকেও তারা পিছিয়ে। সুতরাং মিয়ানমারের সরকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের মন্ত্রী যা বলেছেন, তা ঠিক নয়।

আমাদের মন্ত্রী মিয়ানমারের "মুসলিম জনগোষ্ঠী" নিয়ে কি কিছু বলেছেন? কোথায় বলেছেন, কী বলেছেন? গুয়েবাড়াদার আর্টিকেলে সেটার কোনো হদিশ নেই। প্রসঙ্গ রোহিঙ্গাদের নিয়ে, এবং তাদের সাথে জঙ্গি তথা জামায়াতে ইসলাম কানেকশন নিয়ে এক রাষ্ট্রের কাছে আরেক রাষ্ট্রের অভিযোগ, কিন্তু গুয়েবাড়াদা সেটাকে ঠেলে দিতে চাইছে মিয়ানমারের সামগ্রিক মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর। হলুদ বুদ্ধিজীবিতার এক উৎকৃষ্ট নিদর্শন এই গুয়েবাড়াপনা।

গুয়েবাড়াদা রাজনৈতিক কৌশলের উপরও নিনজা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন পরীবাগের বৈঠকখানায় বসে। তিনি লিখেছেন,

তবে, মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত, সমুদ্রসীমাসহ বহুবিধ সমস্যা রয়েছে। সেসব সমস্যা সমাধানের চাপ হিসেবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া কৌশলগত চাল হিসেবে খারাপ হয় না।

বাংলাদেশের সীমান্ত আর সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত "সমস্যা" সমাধানের জন্য রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়া ঠিক কীভাবে কৌশলগত চাল হতে পারে? তার ভালো-খারাপ বিচার পরে করি। এটা কী ধরনের কৌশলগত চাল? কুস্তি লড়ার আগে নিজের ঘাড়ে বালির বস্তা ঝুলিয়ে মাঠে নামার কৌশলগত চাল? সিলিঙের দিকে পেছন ঘুরিয়ে হাগু করার কৌশলগত চাল? লুঙ্গি খুলে ক্যাকটাস গাছে চড়ার কৌশলগত চাল? ওহে গুয়েবাড়াদা, আমরা তো ইতিমধ্যেই পাঁচ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে ঘুরছি গো, সীমান্ত আর সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে কোন কৌশলগত চাল চালা গেছে তাতে?

রামছাগলের নোকতা খসে গেলে সে হয় বামছাগল। স্তালিনের হাতে কয়েক মিলিয়ন মানুষ হত্যার সাফাই গাওয়া একদাবাম ও আলুপেপারের গৃহপালিত বামঘেউ আবৃত্তিকারক ফারুক গুয়েবাড়াদা, বুদ্ধিজীবী হতে চাইলে ঘটে বুদ্ধি থাকতে হয়। খালি গোল গোল কথা বললেই হবে?

নাকি তলে তলে রোহিঙ্গা কুমীরশাবক দেখিয়ে আনা ফান্ডের বখরাবাজি নিয়ে কোনো পরিকল্পনা চলছে রে এক্স-বামু?

পুতুল এর ছবি

পাঁচ লক্ষ !

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

অরফিয়াস এর ছবি

হ্যাঁ, সংখ্যাটা পাঁচ লক্ষ বা তার থেকেও বেশি, হিসেব অনুযায়ী।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

পাঠক এর ছবি

আপনার মন্তব্যের উপর মন্তব্য করার যোগ্যতা আমার নাই। শুধু এইটুকু বলি যে মন্তব্যটি পড়ার পরে আমার হাসতে হাসতে অবস্থা কাহিল। বিশেষ করে "বাংলার চে গুয়েবাড়া"র কৌশলগত চালের যে উদাহরণ দিয়েছেন তা অনেকদিন মনে থাকবে হাসি

অরফিয়াস এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

ওরে নারে, বাংলার "চে গুয়েবাড়া" !!

কুস্তি লড়ার আগে নিজের ঘাড়ে বালির বস্তা ঝুলিয়ে মাঠে নামার কৌশলগত চাল? সিলিঙের দিকে পেছন ঘুরিয়ে হাগু করার কৌশলগত চাল? লুঙ্গি খুলে ক্যাকটাস গাছে চড়ার কৌশলগত চাল?

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

নীড় সন্ধানী এর ছবি

১. রোহিঙ্গা সমস্যাটা মানবিক, ভৌগলিক, রাজনৈতিক, কিন্তু কোন মতেই ধর্মীয় সমস্যা নয়।

২. রোহিঙ্গাদের মানবিক সমস্যায় আমি উদ্বিগ্ন, দুনিয়াতে যেসব জাতির নিজেদের দেশ নেই, তাদের সবার মতো রোহিঙ্গাদের জন্যও আমি সমব্যথী। পত্রিকায় অসহায় শিশুদের ছবি দেখে আমার বুকেও কাঁপন দিয়েছে। একটু আশ্রয়ের জন্য হাত জোড় করে থাকা বাবাটা আমি হলে কিরকম অনুভুতি হতো ভেবে শিউরে উঠেছি।

৩. রোহিঙ্গাদের জন্য আমার কান্নাটা মানবিক হলেও, জামাতীদের কান্নাটা কিসের সেটা ১৯৯২ সালের পর থেকে আমরা জানি। যারা জানেন না তাদের বলি, দক্ষিণ চট্টগ্রামে রোহিঙ্গারা জামাতের অন্যতম একটা শক্তি।

৪. রোহিঙ্গাদের অতীতেও আশ্রয় দেয়া হয়েছিল বাংলাদেশে । এখনো বিশাল সংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আছে। এবারও আশ্রয় দিতে বলা হচ্ছে। কিন্তু এই সমাধানটা সাময়িক। একটা স্থায়ী সমাধানের দিকে না গিয়ে সকলেরই (জাতিসংঘ থেকে পশ্চিমা সকল শক্তি) এই অস্থায়ী সমাধানের দিকে এত ঝোঁক কেন? বার্মার জায়গা সম্পদের অভাব নেই। খনিজ সম্পদের হিসেব নিলে ওরা আমাদের চেয়ে অনেক বড়লোক। অবাক লাগে জাতি সংঘ বা আমেরিকা কখনো বার্মার ভেতরেই ওদের জন্য একটা নিরাপদ জোন প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেনি গত বিশ ত্রিশ বছরে। রোহিঙ্গাদের কিছু ঘটলে বাংলাদেশকেই বারবার তার দরোজা খুলে রাখতে হবে? তার মানে পশ্চিমা শক্তিগুলো কি পরোক্ষভাবে বলতে চাইছে, রোহিঙ্গারা বার্মায় অবস্থানরত অবৈধ বাংলাদেশী? রোহিঙ্গাদের সমস্যার দায় শুধু বাংলাদেশের?

৫. যে যাই বলুক, বাংলাদেশকে ক্ষতিগ্রস্থ না করে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অরফিয়াস এর ছবি

একটি দেশকে ক্ষতিগ্রস্থ করে আরেক দেশের মানুষের জন্য সমাধান খোঁজা কখনই মানবিকতা নয়।

আপনার বক্তব্যের সাথে সহমত। ধন্যবাদ।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

৩. রোহিঙ্গাদের জন্য আমার কান্নাটা মানবিক হলেও, জামাতীদের কান্নাটা কিসের সেটা ১৯৯২ সালের পর থেকে আমরা জানি। যারা জানেন না তাদের বলি, দক্ষিণ চট্টগ্রামে রোহিঙ্গারা জামাতের অন্যতম একটা শক্তি।

জামাতী দের মানবতা-র মায়া কাননা-র একটা মোটিভ পাওয়া গেলো। যত বেশী রোহিংগা আসবে তত বেশী ভোট।

-কাজী

হিমু এর ছবি

ভোটের ব্যাপারটা গৌণ। মুখ্য ব্যাপার হচ্ছে, রোহিঙ্গারা আবার নতুন করে এলে কিছু জামাতি এনজিও এই ইস্যু দেখিয়ে মধ্যপ্রাচ্য থেকে পয়সা তোলার নতুন উছিলা পাবে। এই টাকা তারা সরাসরি খরচ করছে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া বিরোধিতার জন্যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যে লবিইঙের পেছনে। টোবি ক্যাডম্যানের মতো লোকদের ফি অনেক চড়া। ক্যাসিডি অ্যান্ড অ্যাসোশিয়েটস নামে এক মার্কিন লবিইস্ট প্রতিষ্ঠানকে কয়েকশো কোটি টাকা ফি দিয়েছিলো মীর কাশেম আলী। এইসব খরচ তারা নিজেদের ভান্ডার থেকে না তুলে ধান্দায় আছে রোহিঙ্গা কুমীরছানা দেখিয়ে এনজিও খাতে এইডের পয়সায় যোগাড় করার।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অরফিয়াস এর ছবি

কথা সত্য। চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

বিশ্লেষণধর্মী এই লেখাটি একটি অত্যন্ত গুরূত্বপূর্ণ পোষ্ট।
এই বিষয়ে কোন একটা পোষ্ট আশা করছিলাম।
আপনি সেই আশা মেটালেন এবং চমৎকার ভাবে।

রোহিঙ্গাদের সমস্যার সমাধান হোক, তারা ফিরে পাক একটা সুস্থ জীবন এই কামনা রাখি।

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ দাদা। হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

কল্যাণ এর ছবি

খুব ভালো, তথ্যপূর্ণ লেখা। ধন্যবাদ। কিছু কিছু সময় আসে যখন সরাসরি না বলাই উচিত।

দেশের ভিতরে অসংখ্য মানুষ যখন প্রতিদিন কষ্ট করে যাচ্ছে, তখন এইসব মানবতা বিলাসিতা ছাড়া আর কিছু না - এটা শুনতে খারাপ শোনালেও সত্যি। দেশে এখনো অবস্থানরত বিহারীদের কোন ব্যাবস্থা কিন্তু হয়নি। নিজের নৌকার ফুটো বন্ধ না করে সেই নৌকায় লোক তুলতে বলার মত জীবগুলো ও তাদের সব আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হোক। সেই সাথে ভারতকেও সীমান্ত খুলে দিতে বলা হোক। সেখানেও ইসলাম ধর্মাবলম্বি আছে, বাংলাভাষী আছে, দেশটাও বাংলাদেশের থেকে অনেক বড়, টাকা পয়সাও আছে।

আর বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দিয়ে শরনার্থিদের আশ্রয় দেয়ার কথা যাদের মাথায় আসে তারা মিয়ান্মার সরকারের সাথে কথা বলে চাপ দিয়ে এই সমস্যার সমধান করে না কেন? যত্তসব বদমাইশের দল।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

কাজি মামুন এর ছবি

নিজের নৌকার ফুটো বন্ধ না করে সেই নৌকায় লোক তুলতে বলার মত জীবগুলো ও তাদের সব আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হোক।

নৌকা নড়বড়ে আর দুর্বল সত্য, কিন্তু ফুটো কোথায় পেলেন কল্যানদা? ফুটো থাকলে তো এদ্দিন তলিয়ে যেতাম আমরা! কিন্তু দেখেন, আমি-আপনি সমানে ব্লগিং করে যাচ্ছি! ডুবে গেলে কি পারতাম?
বরং ফুটো তো ঐ লোকগুলোর নৌকায়! দেখেন, তারা এখন বিক্ষুদ্ধ দরিয়ায়! প্রান বাঁচাতে হাতড়ে ফিরছে বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড বা মালয়শিয়ার উপকুলে! চাইছে যৎসামান্য খড়কুটোর আশ্রয়!
বলেছেন, দেশের ভিতর অসংখ্য মানুষ কস্ট করে যাচ্ছে! তাই মানবিকতাকে বিলাসিতাই মনে হচ্ছে আপনার! হতেই পারে, অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু খেয়াল করে দেখেছেন, দেশের ভিতরে কোথাও নাচা-গানা বন্ধ হয়নি কিন্তু! রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের বিলাসিতা আমরা চাইনে সত্য, কিন্তু দেশের অভ্যান্তরের মানুষের বিলাসিতা করার নিশ্চয়ই অধিকার আছে, কি বলেন কল্যানদা? কারণ তারা তো দেশের মানুষ, আমার নিজের দেশের মানুষ! আর কোথাকার কোন রোহিঙ্গারা, শিক্ষা নেই-সভ্যতা নেই-ভব্যতা নেই-চুরি-মাদক-যৌনবৃত্তিতে আকন্ঠ নিমজ্জিত-জামাতের কুকর্মের সঙ্গি- তাদের নিয়ে সত্যি মাথাব্যথার কোন মানে হয় না! অথৈ সমুদ্রে হাবুডুবু খেয়ে মরুকগে ব্যাটারা, আমাদের কি! মরলে বরং সম্ভাব্য কিছু বদমাইশের হাত থেকে বাচবে দেশ, নিজের দেশ!
সত্যি কল্যানদা, বেশ বলেছেন! এতটা সত্যিই আশা করিনি!

কল্যাণ এর ছবি

আমার কাছে এটা বিলাসিতাই মনে হয়রে ভাইডি, সেটাই বলেছি। ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো সাজে যখন সেটা করতে যেয়ে আর দশটা মানুষকে বেকায়দায় না ফেলা হয়। আর যারা রুখে না দাঁড়িয়ে, নিজের জায়গায় না দাঁড়িয়ে পালিয়ে যায় তাদের জন্যেও আমার খুব একটা মায়া লাগে না, কি আর করা।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

কাজি মামুন এর ছবি

আর যারা রুখে না দাঁড়িয়ে, নিজের জায়গায় না দাঁড়িয়ে পালিয়ে যায় তাদের জন্যেও আমার খুব একটা মায়া লাগে না

যদিও 'কি আর করা' বললে আর কিছু বলার থাকে না, তবু একটি প্রশ্ন জিজ্ঞেস না করে পারছি না, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের শরনার্থীদের জন্যও কি আপনার উপরের মত ধরে রাখবেন?
আর একটা কথা, রোহিঙ্গারা রোখার চেষ্টা করেনি, কে বলল? কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ বর্মী এবং তাদের পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে কতক্ষন দাঁড়িয়ে থাকা যায় বলেন? এটা তো আর বদরের যুদ্ধ নয় যে, ফেরেশতারা এসে অলক্ষ্যে সাহায্য করে গেল!

কালো কাক এর ছবি

রোহিঙ্গারা রুখে দাড়ালো কই? তারা তো সারা জীবনই বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করে যায়। এর আগে রোহিঙ্গা সংক্রান্ত খবর গুলো দেখেন্নাই কোনদিন?
বাংলাদেশিরা তাই করতো নাকি ? সবসময় ইন্ডিয়ায় ঢুকে পড়তে চাইতো ? আর বাংলাদেশিরা রুখে দাঁড়ায়নি? তো স্বাধীনতা কি পাকি হুজুররা গিফট করে গেসে ?

কল্যাণ এর ছবি

আপনি কুতর্ক করার চেষ্টা করছেন প্রথম থেকেই। কুতর্কের ব্যাপারটা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি কিন্তু তাও আপনি সেটা চালিয়ে যেতে চান। আপনার প্রশ্নগুলো ইতিমধ্যে আলোচনা হয়ে গেছে, এর পরেও আপনি যে প্রশ্ন করছেন তার অর্থ আপনি কনটেক্সট না জেনে আলোচনায় এসেছেন এবং এই লেখা সহ উপরের আলোচনা ওভারলুক করছেন।

আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ধৈর্য আমার না থাকলেও একটা বিষয় পরিস্কার করা দরকার। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের মানুষের ভারতে শরনার্থি হয়ে আশ্রয় নেয়ার সাথে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়াকে যারা তুলনা করতে চায় তাদের সাথে আরো আলোচনায় যাওয়া আমার কাছে সময় নষ্ট।

আপনি আগে চিন্তা করে দেখেন যে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা ইতিমধ্যে দেশে আশ্রয় নিয়েছে তারা কতদিন ধরে আছে? তারা কেনো ফিরে যায় না? তাদের দেশ কেনো তাদের ফিরিয়ে নিতে টু শব্দ করেনা? তাদের নিজের দেশে ফেরার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক দাদারাই বা কেনো টু শব্দ করেনা? নতুন নতুন মানুষকে শরনার্থি বানিয়ে অন্যদেশের ক্যাম্পে পুরে ফেলার থেকে তাদের নিজ দেশে বসবাসের ব্যাবস্থা নিয়ে কথা হয় না কেনো?

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

কাজি মামুন এর ছবি

আপনি কুতর্ক করার চেষ্টা করছেন প্রথম থেকেই।

কুতর্ক কাকে বলে যদি জানিয়ে দেন দয়া করে! আপনি ''যত্তসব বদমাইশের দল।'' বলে একটা রায় ঘোষণা করে দেবেন, আর তার প্রতিক্রিয়ায় কিছু বললেই তা কুতর্ক হয়ে যাবে? তাহলে সুতর্ক কি? ''হ্যাঁ, কল্যানদা, আপনি যাহা বলিয়াছেন, তাহা ঠিকই বলিয়াছেন, মানবতার মায়াকান্না (আপনার ভাষায়) দেখাচ্ছে যে লোকগুলি, তারা আসলেই এক একটা আস্ত বদমাশ''- এমনটা বললে তা বড় সুমধুর তর্ক হত, তাই তো?

আপনার প্রশ্নগুলো ইতিমধ্যে আলোচনা হয়ে গেছে, এর পরেও আপনি যে প্রশ্ন করছেন তার অর্থ আপনি কনটেক্সট না জেনে আলোচনায় এসেছেন এবং এই লেখা সহ উপরের আলোচনা ওভারলুক করছেন।

কই, আমি তো কোন প্রশ্ন করিনি! আর ওভারলুক এড়াতে এবার আন্ডারলুক করে বুঝলাম যে, কেউই আপনার মত এত শক্তিশালী ভাষায় মানবিক প্রশ্নে ''রোহিঙ্গা-পুশব্যাক বিরোধী''দের ধোলাই দিতে সক্ষম হয়নি! কনটেক্স জানার আর কি দরকার বলেন যখন আপনার ছোট্র মন্তব্যখানিই একটি মহাসমুদ্রের গভীরতা নিয়ে হাজির হয়েছে, নিজের দেশ আর মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে আমার মত অর্বাচীন পাঠককে! আমাকে বুঝতে শিখিয়েছে, নিজের দেশের মানুষের এমনকি নাচা-গানা-নিত্য লেটেস্ট মডেলের গাড়ির শখ-বিলাস নিজের দেশের অভাবী মানুষের জন্য কোন সমস্যা না, বরং, আমার দেশের গরীব মানুষের পাতে আসল ভাগটা বসাচ্ছে বাইরের দেশের বিক্ষুব্ধ সমুদ্র পাড়ি দিয়ে যমদূতের হাত থেকে পালিয়ে আসা কিছু ভীরু নাগরিক!

আপনি আগে চিন্তা করে দেখেন যে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা ইতিমধ্যে দেশে আশ্রয় নিয়েছে তারা কতদিন ধরে আছে? তারা কেনো ফিরে যায় না? তাদের দেশ কেনো তাদের ফিরিয়ে নিতে টু শব্দ করেনা? তাদের নিজের দেশে ফেরার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক দাদারাই বা কেনো টু শব্দ করেনা? নতুন নতুন মানুষকে শরনার্থি বানিয়ে অন্যদেশের ক্যাম্পে পুরে ফেলার থেকে তাদের নিজ দেশে বসবাসের ব্যাবস্থা নিয়ে কথা হয় না কেনো?

আপনি তাহলে নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিন, যদি না আপনার শান্তির জীবনে বিঘ্ন না ঘটায় সেগুলোঃ
(১)বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা অনেকদিন ধরে আছে, তাই বলে তারা শরণার্থী নয়? শরণার্থীদের অন্য দেশে থাকার আদর্শ সময় কতদিন বলে সেট করেছে ইউএনএইচসিআর?
(২)রোহিঙ্গারা ফিরে যায় না আস্তে আস্তে এদেশ দখল করে নেবে বলে?
(৩)তাদের দেশ তাদের ফিরিয়ে নেয় না বলে তাদের শরণার্থী জীবন ও প্রাসঙ্গিক দুঃখ-দুর্দশা মিথ্যা হয়ে যায় বোধহয়? নাকি তাদের দেশ তাদের নেয় না, সেই দায়টাও তাদের?
(৪)তাদের নিজের দেশে ফেরার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক দাদারা কেনো টু শব্দ করছে না কোন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে, সেই রহস্য খুঁজে বের করার দায়িত্বও তাহলে এই অসহায় মানুষগুলোর?
(৫)নতুন নতুন মানুষকে শরণার্থী বানিয়ে অন্যদেশের ক্যাম্পে পুরে ফেলার মহা্যড়যন্ত্রের দায়ভার মাথায় নিয়ে রোহিঙ্গাদের তাই ফিরে যেতে হবে যমের দুয়ারে?
(৬)মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশীদের ভারতে শরণার্থী হয়ে আশ্রয় নেয়ার সাথে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার তুলনা কেন হতে পারবে না, কল্যানদা? শরণার্থী কাকে বলে? শরণার্থীর সংজ্ঞাটা আপনার কাছ থেকে জানতে খুবই মঞ্চায়!

হিমু এর ছবি

মুক্তিযুদ্ধের সময় শরণার্থী আর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পরিস্থিতির পার্থক্যটা নুসায়ের তার একটি মন্তব্যে পরিষ্কার করেছেন। আপনি একটু কষ্ট করে পড়ে দেখুন।

রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে কেউ তো কিছু বলছে না। কিন্তু তাদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবের ইজারা বাংলাদেশ নেয়নি। আপনি এইসব প্রশ্ন সচলায়তনে না করে টেকনাফ যান, উখিয়া যান, ঐখানে গিয়ে লোকাল মানুষকে করেন। যাওয়ার আগে পিঠে দুইটা ছালা বাইন্ধা যায়েন।

নুভান এর ছবি

চলুক

কাজি মামুন এর ছবি

আপনি যে এভাবে এগিয়ে আসবেন, তা জানতাম হিমু ভাই! তবে অবাক হয়েছি, আপনি আরো আগে আসেননি দেখে! এসব বিষয়ে রেসপন্সরতে আপনি তো দেরী করেন না!
তবে মাপ করবেন, হিমু ভাই, নুসায়েরের মন্তব্যটা পড়ার আগেই মন্তব্য করে ফেলছি বলে! নুসায়েরের মন্তব্য অবশ্যই পড়ব, কিন্তু আমার মনে হয়েছে, আমার কথাটুকু (আপনার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে) ঐ মন্তব্য না পড়েই বলা যায়।
পৃথিবীর প্রতিটি শরনার্থী গোষ্ঠীর প্রেক্ষাপট ভিন্ন, উদ্দেশ্য ভিন্ন; কিন্তু এক জায়গায় তাদের মৌলিক মিল, তা হল, তারা সবাই আশ্রয় চায়! বাঁচার জন্য আশ্রয়! রোহিঙ্গাদের সমস্যা উদ্ভূত জাতিগত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা থেকে, আর মুক্তিযুদ্ধকালীন শরণার্থী সমস্যা উদ্ভূত স্বাধীনতাকামী মানুষের সশশ্র সংগ্রাম থেকে। কিন্তু পার্থক্যগুলোই শুধু আমাদের চোখ ধাধিয়ে দিচ্ছে, হিমু ভাই? মিলগুলো চোখে পড়ছে না? দুজনেই যে শরণার্থী (আপনার কাছে শরণার্থীর ভিন্নতর সংজ্ঞা থাকলে আলাদা কথা), দুজনেই যে আশ্রয়ের জন্য ছুটে এসেছে প্রতিবেশীর দোরে, মানবিক বিপর্যয়ের মুখে দাড়িয়ে রয়েছে উভয়েই- এগুলো হয়ত কথিত উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের পার্থক্যগুলোর তুলনায় নিতান্তই অপাংক্তেয় !

টেকনাফ যান, উখিয়া যান, ঐখানে গিয়ে লোকাল মানুষকে করেন।

সত্যি কথা বলতে কি, স্থানীয় জনগণ কখনোই আরেকটি দেশের শরণার্থীদের ভালভাবে নেয় না, যেহেতু তাদের নিরাপত্তা-হীনতার আশংকা তৈরি হয়! আপনি মনে হয় ভাল করেই জানেন, মুক্তিযুদ্ধকালীন ভারতের একটি ইন্টেলেকচুয়াল শ্রেণী ইন্দিরা গান্ধির তীব্র সমালোচনা করছিলেন এই বলে যে, উনি পাকিস্তানের কৌশলের কাছে মার খাচ্ছেন! তাদের ভাষায়, পাকিস্তান কৌশলে বাংলাদেশের এক কোটির উপর শরণার্থীকে ভারতের কাঁধে চাপিয়ে দিচ্ছে, উদ্দেশ্য ভারতকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করা, সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করে দেশটির নিরাপত্তাও সমূলে বিনষ্ট করা! তার উপ্রে রয়েছে উগ্র শহুরে জাতীয়তাবাদী বোধ! আমাদের দেশের হাবু শেখকে যখন বিএসএফ মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে, তখনো ভারতের আধুনিক ও শিক্ষিত মানুষদের একটা বড় অংশ তাদের নিজের দেশের বিএসএফকে জোর গলায় সমর্থন করেছে, তাদের কথা হল, তাদের প্রিয় দেশে কেন ঢুকবে 'হাবু শেখের' মত নোংরা মানুষগুলো?' সীমান্তে দেয়ালকে এরা দেশের বড় রক্ষাকবচ বলে মনে করে! তাদের ভাষায়, বাংলাদেশীরা ভারতের অর্থনীতির উপর চাপ সৃষ্টি করছে!
প্রশ্ন উঠেছে, স্থানীয় জনগণের অনেক ভোগান্তি ঘটিয়েছে চুরি-মাদক-যৌন-বৃত্তিতে নিমজ্জিত রোহিঙ্গারা! বলা হয়েছে, বাংলাদেশের না-খাওয়া মানুষের কথা! যদিও প্রতিদিনই সংবাদপত্রের পাতা ভরে উঠে অসংখ্য চুরি-মাদক-অপরাধকাহিনীতে এবং অবধারিতভাবেই সেগুলোর বেশীরভাগ অ-রোহিঙ্গাদের! তাছাড়া, সংবাদপত্রের পাতাতেই দেখা যায়, আধ-পেটা হাড় জিরজিরে শিশুর পাশে নিত্যনতুন গাড়িতে চড়ে নাচা-গানা-মাতলামো করে বেড়ানো ধনীর দুলালদের, এবং বলাই বাহুল্য তারাও বেশিরভাগ অ-রোহিঙ্গা!
বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের জামাতি কানেকশানের কথা! কিন্তু জামাতিদের হাতে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণে ব্যবহৃত নির্বোধ ও দরিদ্র রোহিঙ্গাদের উদ্ধারের কথা কেউ ভেবেছে?

হিমু ভাই, আমি আসলে 'কনটেক্স' না বুঝে মন্তব্য করে ফেলি, কারণ 'কনটেক্স' শব্দটিকে আমার খুব ধোয়াটে মনে হয়! 'সুবিধাজনক অবস্থানের' এক অপরিহার্য শর্ত মনে হয় কখনো! যখন ফেলানিকে হত্যা করা হয়, তখন যারা গলা ফাটিয়েছিল, তাদের অনেককেই চুপ করে থাকতে দেখেছি 'সৌদি কর্তৃক আট বাংলাদেশী'কে জবাইয়ের সময়, প্রশ্ন করলে উত্তর দিয়েছে, দুটো ঘটনার কনটেক্স এক নয়। আবার, সীমান্তে ভারতীয় বর্বরতার সময়ে যে শহুরে বাঙ্গালিদের মানবিকতা-বোধ আকাশ ছুঁয়েছিল, তারাই রোহিঙ্গাদের দুর্দশার ক্ষেত্রে আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দিচ্ছে, কনটেক্সের ভিন্নতা, যেনবা মানবিকতার জন্যও কনটেক্সের প্রয়োজন হয়! যেমন, নিজের দেশ, পরদেশ! সেই কনটেক্স থেকেই তারা বলছেন, এই রোহিঙ্গাদের পুশ ব্যাক করে বিক্ষুদ্ধ দরিয়ায় ছেড়ে দিতে হবে!

কিন্তু তাদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবের ইজারা বাংলাদেশ নেয়নি।

এখানেই চরম কথাটা বলেছেন, হিমু ভাই! দুঃখ-দুর্দশা লাঘবের ইজারা নেয়ার জন্যও বুঝি একখানা কনটেক্স থাকতে হয়! ইন্দিরা বুঝি সেই কনটেক্সেই (মানে, পাকিস্তান দুই টুকরা করা!) বাংলাদেশী শরণার্থীদের সাহায্য করেছিলেন! আমাদের হাতে কোন কনটেক্স নেই, তাই ব্যাটারা মাঝ নদীতে ডুবে মরুকগে, আমাদের কি!

আপনি এইসব প্রশ্ন সচলায়তনে না করে

আসলেই একজন অতিথি হিসেবে এখানে খুব বেশী প্রশ্ন করে ফেলেছি! তাছাড়া, প্রশ্ন করতে হলে যে, এখন থেকে সব সময় পিঠের নিরপত্তার কথাও ভাবতে হবে! পিঠ বাচিয়ে প্রশ্ন করার দাওয়াইও শিখে ফেললুম, হিমু ভাই। অনেক ধন্যবাদ!

হিমু এর ছবি

আপনার এই গোল গোল কথাগুলো বলার পেছনে সবচেয়ে বড় সুবিধা কী জানেন? আপনি নিজে পারসোনালি এই রোহিঙ্গাদের একজনের দায়ও বহন করবেন না। সে কারণেই খুব সহজে আপনি টেনে আনছেন মুক্তিযুদ্ধকে। আরো পেছনে যান। তেতাল্লিশ সনের দুর্ভিক্ষের সময় তিন থেকে চার মিলিয়ন পূর্ববঙ্গের বাঙালি স্রেফ না খেয়ে মরে গিয়েছিলো। কেউ মানবতা দেখিয়ে তাদের একটু ভাত যোগায়নি। আবার সেই একই কমিউনিটি যখন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেশ ছেড়ে আশ্রয় নিতে গেছে, তাদের নয় মিলিয়নকে সেই তিরিশ বছর আগে মুখ ফিরিয়ে নেয়া মানুষেরাই আশ্রয় দিয়েছে। কেন? মানবতা আগে ছিলো না, পরে হয়েছিলো বলে? উঁহু। পরিস্থিতির কারণেই। শব্দটা কনটেক্স নয়, কনটেক্সট। আপনি মানবতার উলু দিতে পারছেন, কারণ আপনি জানেন, রোহিঙ্গারা এসে উঠবে টেকনাফের কোনো দরিদ্র জেলের কুটিরের সংলগ্ন জমিটুকুতেই। উজিয়ে ঢাকায় এসে আপনার বাড়িতে উঠবে না কেউ। ১৯৭১ সালের সাথে তুলনা দিচ্ছেন যখন, জেনে রাখুন, ত্রিপুরার ১৫ লক্ষ মানুষ ১৭ লক্ষ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিলো। সে শুধু পোড়ো জমিতেই নয়, নিজের বাড়ির উঠান আর বারান্দাতেও। আপনি আজকেই কক্সবাজার যান, শরণার্থী ক্যাম্প থেকে একটা রোহিঙ্গা পরিবারকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসুন, তারপর রাষ্ট্রকে মানবতার মারপ্যাঁচ শেখান। কেমন হয় কাজটা?

দুঃখ দুর্দশা লাঘবের ইজারা নেয়ার জন্য একটা কনটেক্সট থাকতে হয় বৈকি। ইন্দিরা গান্ধী কেন তিব্বতি শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে তাদের আবার সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন জেনারেল উবানের প্রশিক্ষণে, আর কাশ্মীরের মানুষকে কেন নিজভূমে পরবাসী করে রেখেছিলেন, সেগুলোর কনটেক্সট না বুঝে গোল গোল কথা বলতে থাকলে তো বিপদ। যদি কনটেক্সট না থাকে, আপনি যান না, বিনা কনটেক্সটে একটা রোহিঙ্গা পরিবারকে নিয়ে আসুন আপনার বাড়িতে, তাদের খাওয়ান পরান। আমরা আপনাকে দেখে শিখি।

যাবেন?

যারা গলার রগ ফুলিয়ে মানবতার গান গাইছেন, তাদের ফুলে ওঠা রগের আড়ালে চাপা পড়ে যাচ্ছে একটা ফ্যাক্ট, শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চিও নিজের দেশে এথনিক ক্লেনজিঙের ব্যাপারে নীরব। বাংলাদেশ একবার যদি রোহিঙ্গাদের জন্যে সীমান্ত খোলে, ওপারে অত্যাচার আরো বাড়বে। রোহিঙ্গারা কেন লড়বে, যদি তাদের পিঠ দেয়ালে না ঠেকে? কুড়ি বছর ধরে পাঁচ লক্ষ রোহিঙ্গাকে পৃথিবীর সবচেয়ে জনঘনত্বপূর্ণ দেশে আশ্রয় দিচ্ছি আমরা, কারো কোনো মাথাব্যথাই আর নাই এই পাঁচ লক্ষ লোককে নিয়ে। একটা সময় পার হওয়ার পর এরা আমাদের সমস্যায় পরিণত হয়েছে। মানবতার দায় একা বাংলাদেশের, আর বাকি দুনিয়ায় সব শুয়ারের বাচ্চা দিয়ে ভর্তি নাকি? মানবতা নিয়ে চাপ দিতে চান, রাস্তায় নেমে অং সান সু চিকে বলেন তার গলায় ঝুলতে থাকা নোবেল শান্তি পুরস্কারের দিকে তাকিয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে। চুলে-বালে গিটটু দেয়ার জন্য ঐটা দেয়া হয় না। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে না চাইলে উনি যেন ঐ মেডেল ওনার গোয়ায় ঢুকায় বসে থাকেন।

কাজি মামুন এর ছবি

আপনি নিজে পারসোনালি এই রোহিঙ্গাদের একজনের দায়ও বহন করবেন না।

সুবিধার কথাটা মেনে নিচ্ছি! তাহলে আপনাকেও মেনে নিতে হবে, বাংলাদেশের গরীব মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা বলে হরহামেশাই সমাজকে এক ঘা দেয় যেই সকল ব্লগাররা, তারাও এ সুবিধা সমানভাবে ভোগ করে থাকে! এই তো কিছুদিন আগে, বস্তি উচ্ছেদের ঘটনায় ব্লগে ব্লগে প্রতিবাদের জোয়ার বয়ে গিয়েছিল! তো আপনি দয়া করে মেনে নিন যে, ঐ ব্লগাররাও আপনার কথিত সুবিধা মারাত্মক এনজয় করে থাকে! এমনকি দেখুন, যে আধপেটা মানুষের কথা বলে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দেয়ার জোর দাবী জানানো হয়, সেই গরীব মানুষগুলোর অস্তিত্ব কিন্তু একটুও লঘু হয় না এমনকি রোহিঙ্গাদের অনুপস্থিতিতে; তো যে ব্লগাররা ঐ আধপেটা মানুষগুলোকে ঘরে এনে পেট পুরে না খাইয়েই এ কথা বলে, তাদের ভোগ করা সুবিধাটাও আশা করি আপনি স্বীকার করে নেবেন!

শব্দটা কনটেক্স নয়, কনটেক্সট।

একটা তাড়াহুড়াজনিত টাইপিং মিসটেকও আপনারও চোখ এড়িয়ে যায় না, হিমু ভাই! আর এখানেই আপনার স্বাতন্ত্র্য!

কেউ মানবতা দেখিয়ে তাদের একটু ভাত যোগায়নি।

তো অনুসিদ্ধান্ত কি দাড়াল? মানুষের ভিতর কখনো মানবিকতাবোধ কাজ করে না, করতে নেই, শুধু থাকে কনটেক্সট, থাকতে হয়!

মানবতা আগে ছিলো না, পরে হয়েছিলো বলে? উঁহু। পরিস্থিতির কারণেই।

এটাতো আর কষ্ট করে বলার দরকার ছিল না, হিমু ভাই! বিষয়টি তো আগেই বুঝেছিলাম, ভারত কনটেক্সট দেখে আমাদের শরনার্থীদের সাহায্য করেছিল, আমরাও রোহিঙ্গাদের করতাম, যদিবা আমাদের কোন কনটেক্সট থাকত! আমাদের কনটেক্সটও নেই, তাই রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ও নেই আমাদের কাছে, সুতরাং, মামলা ডিসমিস!

আর কাশ্মীরের মানুষকে কেন নিজভূমে পরবাসী করে রেখেছিলেন, সেগুলোর কনটেক্সট না বুঝে গোল গোল কথা বলতে থাকলে তো বিপদ।

ভাই, ইন্দিরা রাজনীতি করেন, উনি ভারতের প্রভুত্ব বাড়াবেন, তাই উনি কনটেক্সট খুঁজবেন, ছল করবেন, কৌশল করবেন! কিন্তু আমার মত সাধারণ মানুষের কাছ থেকেও আপনি যদি সবসময় কনটেক্সট আশা করেন তাহলে তো বিপদ! তবে একটা প্রশ্ন না করে পারছি না, চে গুয়েভারা কোন কনটেক্সটে পুরো লাতিন আমেরিকা এবং আফ্রিকার একাংশ চষে বেড়িয়েছিলেন? আপনি কনটেক্সটের অনেক হিসেব রাখেন, তাই আপনি নিশ্চয়ই জানবেন!

হিমু এর ছবি

রোহিঙ্গাদের উপস্থিতিতে গরিবের অস্তিত্ব লঘু হয় কি হয় না, সেটা আপনি টেকনাফ আর উখিয়ায় গিয়ে একটু জোর গলায় বলে দেখেন। পিঠে দুইটা ছালা বাইন্ধা যায়েন।

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঢুকতে না দিলেই মানবিকতা সব গায়েব হয়ে যায় নাকি? সেন্ট মার্টিনে লোকজন রোহিঙ্গাদের জন্য ভাত রান্না করে নিয়ে গেছে, বিজিবি তাদের নৌকায় খাবার তেল ওষুধ তুলে দিয়েছে, কাউকে তো গুলি করে মারে নাই বা না খাওয়ায় মারে নাই। নিষেধ একটাই, কাউকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়া হবে না। বার্মা আমাদের চেয়ে পাঁচগুণ বড়, কিন্তু রোহিঙ্গারা নিজের দেশের পাহাড়ের দিকে যাবে না, জঙ্গলের দিকে যাবে না, আসবে খালি বাংলাদেশেই। আর আমাদের কনটেক্সট আছে তাদের ঢুকতে না দেয়ার। যদি ঢুকতে দেয়া হয়, তারা আর ফিরে যাবে না, দুই দশকের অভিজ্ঞতা তা-ই বলে। আর শুধু তা-ই নয়, যদি বার্মার জান্তা দেখে, সীমান্ত খোলা, তারা যেসব রোহিঙ্গা সেটলমেন্টে গ্যাঞ্জাম লাগেনি, সেসব সেটলমেন্ট থেকেও মেরে রোহিঙ্গাদের তাড়াবে। এইটা কি আপনি বোঝেন? নাকি গোল গোল ভ্যানভ্যান করতেই থাকবেন?

আপনি চে গুয়েভারা চিনেন, অং সান সু চি চিনেন না? অং সান সু চি রে চিঠি লেখেন না কেন? রাস্তায় নামেন আপনার মতো সাধারণ মানুষদের নিয়ে, মানববন্ধন করেন, ব্যানারে ইংরেজিতে লেখেন, ডিয়ার মিস সু চি, ম্যানেজ ইয়োর ম্যাস, অর ইউ ক্যান শাভ দ্যাট নোবেল আপ ইয়োর অ্যাস। মানবিকতার উপর সু চিরে পারলে গিয়া সবক দ্যান।

কাজি মামুন এর ছবি

পিঠে দুইটা ছালা বাইন্ধা যায়েন।

পুনরুল্লেখের দরকার ছিল না! পিঠ বাচানো প্রশ্নের ছবক যে আপনার মন্তব্য থেকে পেয়েছি, তা তো আগেই স্বীকার করে নিয়েছি! এখন থেকে প্রশ্ন করার সময় সবসময় পিঠ বাচানোর কথা ভাব্ব!

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঢুকতে না দিলেই মানবিকতা সব গায়েব হয়ে যায় নাকি? সেন্ট মার্টিনে লোকজন রোহিঙ্গাদের জন্য ভাত রান্না করে নিয়ে গেছে, বিজিবি তাদের নৌকায় খাবার তেল ওষুধ তুলে দিয়েছে, কাউকে তো গুলি করে মারে নাই বা না খাওয়ায় মারে নাই।

যমদূতের হাত থেকে পলায়নপর একজন মানুষকে তার দিকেই ঠেলে দেয়ার ভিতরেও যে মানবিকতা আছে, তা জানতাম না, হিমু ভাই! যে মানুষটা খড়কুটো ধরে বাচতে চাইছে, তাকে ঔষুধ দেয়ার কথা বলছেন? রোহিঙ্গারা যেন স্বামীর সাথে ঝগড়া করে বাপের বাড়িতে আসা কোন মেয়ে; বাবার বাড়ির লোকজন বুঝিয়ে-শুনিয়ে খাইয়ে-দাইয়ে তাকে ফিরিয়ে দিয়ে এল শ্বশুর বাড়িতে!

কিন্তু রোহিঙ্গারা নিজের দেশের পাহাড়ের দিকে যাবে না, জঙ্গলের দিকে যাবে না, আসবে খালি বাংলাদেশেই।

হিমু ভাই, দয়া করে আবার রাগ করবেন না! মুক্তিযুদ্ধের শরনার্থীরাও তো বাংলাদেশের অভ্যন্তরস্থ পাহাড়/বনাঞ্চলে আশ্রয় নিতে পারত! তো এইসব দুর্গম জায়গায় যাওয়ার রিস্ক তারা নিতে পারলো না? সুগম সীমান্তের দিকেই তারা ধাবিত হল?

আর শুধু তা-ই নয়, যদি বার্মার জান্তা দেখে, সীমান্ত খোলা, তারা যেসব রোহিঙ্গা সেটলমেন্টে গ্যাঞ্জাম লাগেনি, সেসব সেটলমেন্ট থেকেও মেরে রোহিঙ্গাদের তাড়াবে।

তো এই বার্মার জান্তার এই অপকৌশলের দায় কার? মার খেয়ে, তাড়া খেয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা, নাকি বাংলাদেশের মানুষ যারা দয়াদ্র হয়ে আশ্রয় দিয়েছে হতভাগা লোকগুলোকে?

রাস্তায় নামেন আপনার মতো সাধারণ মানুষদের নিয়ে, মানববন্ধন করেন, ব্যানারে ইংরেজিতে লেখেন, ডিয়ার মিস সু চি, ম্যানেজ ইয়োর ম্যাস, অর ইউ ক্যান শাভ দ্যাট নোবেল আপ ইয়োর অ্যাস।

আপ্নার এই কথাডা আমি সর্বান্তকরনে সমর্থন করি। আসলেই আমাদের এমন করা উচিত! শুধু তাই না, বিশ্বব্যাপি জনমতও সৃষ্টি করা উচিত! মায়ানমারের জান্তা/সুচি সবাইকে বাধ্য করা উচিত রোহিঙ্গাদের পূর্ন ও স্থায়ী দায়িত্ব গ্রহণের। কিন্তু তার আগ পর্যন্ত এই লোকগুলোকে আশ্রয় দেয়ার মানবিকতার দায় আমরা কি করে অস্বীকার করব, হিমু ভাই?

হিমু এর ছবি

যমদূতদের মতলব আগে বুঝতে হবে তো। যমদূতরা রোহিঙ্গাদের দেশ থেকে তাড়াতে চায়। রোহিঙ্গারাও পান থেকে চুন খসলে সোজা এসে পড়ে বাংলাদেশে। তাদের জন্য যদি সীমান্ত খোলা থাকে, যমদূতরা আরো বড় যমদূত হওয়ার সুযোগ আর প্রণোদনা পাবে। খোলা সীমান্ত রোহিঙ্গার জীবন বাঁচানোর অপশন নয়, রাখাইনদের রোহিঙ্গাবিতাড়নের অপশন। এইটা আপনি নিজেও জানেন, কিন্তু তারপরও ত্যানা প্যাঁচাবেন।

মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের শরণার্থী অভ্যন্তরস্থ পাহাড় জঙ্গলে আশ্রয় নেয়নি, এই বোকাচোদা তথ্য আপনাকে কোন বোকাচোদা দিয়েছে? নয় মিলিয়ন মানুষ সীমান্ত টপকেছে, আর যে ছেষট্টি মিলিয়ন ভেতরে ছিলো, তারা কি সবাই বৈঠকখানায় বসে পাছা চুলকাচ্ছিলো? দেশের ভেতরে উদ্বাস্তু ছিলো না তখন? মেঘালয় ত্রিপুরা মিজোরাম সীমান্ত কি সুগম? কী বালের প্যাচাল পারেন?

বার্মার জান্তার অপকৌশলের দায় বার্মার জান্তা আর রোহিঙ্গাদের। আমাদের একেবারেই নয়। আমাদের কোনো দায় থেকে থাকলে, তা পৃথিবীর অন্য যে কোনো জাতির দায়ের সমান। ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর যে দায়, আমাদেরও সে দায়। যে ৫ লক্ষ রোহিঙ্গাকে আমরা বিনা বাধায় এতোদিন ধরে ঢুকতে দিয়েছি, তাদের জন্য পৃথিবীতে কোন জাতি কী দায় বহন করছে? ইউনাইটেড ফাকিং নেশনস কী করছে তাদের জন্য?

আপনার মানবিকতার মূল্য আপনি চোকাচ্ছেন না, সরি টু সে। সে মূল্য দিচ্ছে কক্সবাজার বান্দরবানের মানুষ। স্ট্যান্ড আপ টু ইয়োর প্রিচিংস অ্যান্ড অ্যাডপ্ট আ রোহিঙ্গা ফ্যামিলি। তাদের বিশ বছর খাওয়ান পরান। তারপর মানবিকতা নিয়ে কথা বলতে আসবেন, আই উইল বি অল ইয়ারস।

গলায় শান্তিতে নোবেল মেডেল ঝুলিয়ে অং সান সু চি যদি মানবিকতার দায় অস্বীকার করতে পারে, আপনি কাজি মামুন পারেন না কেন? আর না পারলে, বাসের টিকেট কেটে ফেলেন। যাওয়ার পথে একটা, আসার পথে সাতটা। শরণার্থী ক্যাম্পে রোহিঙ্গা ফ্যামিলির আকার গড়ে ছয়জন।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: আমি এখন বিদায় নিচ্ছি। কারণ টের পাচ্ছি আমার মেজাজ খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এতক্ষণ সু চির পেছন দিয়ে নোবেল ভরে দিতে বলছিলাম, এরপর হয়তো আপনার পেছন দিয়ে ভরে দিতে বলবো। সেই অভব্যতা করার আগেই বিদায় চেয়ে নিলাম, কাল কথা হবে আবার।

কাজি মামুন এর ছবি

খোলা সীমান্ত রোহিঙ্গার জীবন বাঁচানোর অপশন নয়, রাখাইনদের রোহিঙ্গাবিতাড়নের অপশন।

রাখাইনরা তাদের অপশন চালু রেখেছে পূর্ণ গতিতে, তো এখন করনীয় কি? বন্ধ সীমান্ত? তা হলেই, রাখাইনরা স্টপ হয়ে যাবে?

মেঘালয় ত্রিপুরা মিজোরাম সীমান্ত কি সুগম?

আমি বলছি সুগম? আমিতো কথাটা পাড়লাম, যেহেতু আপনির রোহিঙ্গাদের পাহাড়-বনে ঠেলে দিতে চাইলেন, এই আক্ষেপ করে যে, কেন তারা আমাদের সোনার সবুজ বাংলাদেশে এসে পড়ে!

যে ৫ লক্ষ রোহিঙ্গাকে আমরা বিনা বাধায় এতোদিন ধরে ঢুকতে দিয়েছি, তাদের জন্য পৃথিবীতে কোন জাতি কী দায় বহন করছে?

আচ্ছা হিমু ভাইয়, তাহলে মানবিকতার দায় চুকানোরও একটা লিমিট আছে? যেমন, আগে ৫ লাখ ঢুকতে দিয়েছি, সুতরাং, আর দায় নেই, তা যতই তারা আমাদের দোরে মাথা ঠুকে মরুক না! দায় নির্ধারনের এই সংখ্যাতত্ত্বটা আগে জানা ছিল না, হিমু ভাই!
আর কিছু পারি না, তাই মানবিকতার নামে খালি ত্যানা প্যাচায় যাইতেছি, মাপ কইরা দিয়েন!

হিমু এর ছবি

রাখাইনরা রোহিঙ্গাদের সাথে কী করবে, সেটা আমরা ঠিক করে দেবো? আমরা কি রোহিঙ্গাদের তালুই? দুনিয়ায় তাদের আর কোনো মুরুব্বি নাই? আমরা বাঁচি না নিজেদের যন্ত্রণায়।

রোহিঙ্গারা সোনার সবুজ বাংলাদেশে চলে আসে কারণ এখানে তাদের জামাতি বাপেরা তাদের টাকাপয়সা যোগায়, নকল বাংলাদেশী পাসপোর্ট যোগাড় করে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠায় দেয়। চট্টগ্রাম এলাকার দুই এমপি তাদের বোনের বিয়ে দিয়েছে জঙ্গি রোহিঙ্গা নেতার সাথে। এই আরাম তো নিজের দেশে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নাইরে ভাইডি।

মানবিকতার লিমিট চোকানোর দায় না থাকলে আপনি যান না রে ভাই, আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কয়ডিরে তুইলা বাসায় লন। তারপরে কথা কন। ঐটা করবেন, সেই লক্ষণ তো দেখি না।

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

কাজি মামুন এর ছবি

আমরা কি রোহিঙ্গাদের তালুই? দুনিয়ায় তাদের আর কোনো মুরুব্বি নাই? আমরা বাঁচি না নিজেদের যন্ত্রণায়।

প্রশ্নটা পড়ে অবাক হইনি খুব একটা; দুনিয়ার যেখানেই শরণার্থী সংকট সৃষ্টি হয়েছে, সেখানেই এ ধরনের প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে! ঐ যে শরৎচন্দ্রের 'মেজদিদি' গল্পে পড়েছিলাম:

পরিচয় পাইয়া এবং আগমনের হেতু শুনিয়া একেবারে অগ্নিমূর্তি হইয়া উঠিল। সে নিজের নিয়মে ছেলেপুলে লইয়া ঘরসংসার পাতিয়া বসিয়াছিল অকস্মাৎ এ কি উৎপাত!পাড়ার যে বুড়ামানুষটি কেষ্টাকে পথ চিনাইয়া সঙ্গে আসিয়াছিল, তাহাকে কাদম্বিনী খুব কড়া কড়া দু’চার কথা শুনাইয়া দিয়া কহিল, ভারী আমার মাসীমার কুটুমকে ডেকে এনেছেন, ভাত মারতে! সৎমাকে উদ্দেশ করিয়া বলিল, বজ্জাত মাগী জ্যান্তে একদিন খোঁজ নিলে না, এখন মরে গিয়ে ছেলে পাঠিয়ে তত্ত্ব করেছেন। যাও বাপু, তুমি পরের ছেলে ফিরিয়ে নিয়ে যাও এ-সব ঝঞ্ঝাট আমি পোয়াতে পারব না।

এই আরাম তো নিজের দেশে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নাইরে ভাইডি।

রোহিঙ্গারা তাহলে জামাতি টাকা আর মধ্যপ্রাচ্যের টিকিট কনফার্মের জন্যই পঙ্গপালের মত ভিড় জমায় বাংলার মাটিতে? ঐতিহাসিক রোহিঙ্গা নিধন, সাম্প্রতিক রক্তক্ষয়ী বর্মি-রোহিঙ্গা সংঘর্ষ, রাষ্ট্র-যন্ত্রের অন্ধ বর্মি সমর্থন রোহিঙ্গা নিধনে, প্রাণ বাচাতে বিক্ষুব্ধ সমুদ্রে নৌকা ভাসিয়ে পালিয়ে আসা---এসবই তাহলে সাজানো নাটক? নাটকের একক উদ্দেশ্য জামাতি টাকা আর মধ্যপ্রাচ্যের টিকিট?

মানবিকতার লিমিট চোকানোর দায় না থাকলে আপনি যান না রে ভাই,

লিমিটের কথাটা এসেছিল, কারণ আপনি রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে যথেষ্ট দায় মেটানোর কথা বলেছিলেন! কিন্তু বোকা রোহিঙ্গারা এই সংখ্যাতত্ত্ব কেন জানি বুঝে না; এক কাজ করলে কেমন হয়, হিমু ভাই? অনুপ্রবেশ-রত রোহিঙ্গাদের হাতে একখানা লিফলেট ধরিয়ে দেয়া যায়, 'তফাত যাও, রোহিঙ্গা, তফাত যাও! বাংলাদেশে তোমাদের জন্য বরাদ্দকৃত কোটা শেষ!'
আপনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কোটা (মানে সীমা লংঘন) দেখাচ্ছেন, পাহাড়-জঙ্গলে আশ্রয় নেয়ার আহবান জানাচ্ছেন, প্রতিবেশী দেশের অর্থনীতির উপর চাপ না দিতে বলছেন, জামাতের পাতা ফাঁদে ধরা না দিতে বলছেন! এখন আপনার এইসব সংজ্ঞা মেনে শরণার্থী হতে গেলে যে 'শরণার্থী' শব্দটির একটা নতুন অর্থ দাড় করাতে হবে ডিকশনারিতে! শরণার্থীরা বুঝি এতসব ভাবনা ভেবেই শরণার্থী হয়! তবু চূড়ান্ত বিচারে আপনার কথাই ঠিক যে, কন-টেক্সট দরকার! সুতরাং, চলুন আমরা কনটেক্সটের সার্বজনীন আবেদনকে উচ্চে তুলে ধরে বলি,

রাখাইনরা রোহিঙ্গাদের সাথে কী করবে, সেটা আমরা ঠিক করে দেবো?

খামোখা আর মানবতা, নৈতিকতা-এগুলিকে জোর করে এর ভিতর না ঢুকাই! কনটেক্সট, বাস্তব পরিস্থিতি, মানুষের জন্মজাত আর চরিত্রগত স্বার্থপরতা- এগুলোর সাথে মিলে গেলে মানবতার জয়গান গাইব, আর না থাকলে 'মানবতাকে' সোজা বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলে দেব!

আমি কিন্তু শেষ পর্যন্ত একমতই হলুম, হিমু ভাই! তাই আপনার অগ্নিগর্ভ জবাবে পুড়তে হবে না, সেই আশা করছি! কারণ আমি এখন পিঠ বাঁচিয়ে মন্তব্য করতে শিখেছি!

সাইদ এর ছবি

@কাজি মামুনঃ

সাম্প্রতিক রক্তক্ষয়ী বর্মি-রোহিঙ্গা সংঘর্ষ

এটা রাখাইন-রোহিঙ্গা সংঘর্ষ। আর এরা দুই দলই বর্মি।
শুধু বর্মি-রোহিঙ্গা বললে তো রোহিঙ্গাদের বার্মার অবৈধ নাগরিক মনে হবে।

হিমু এর ছবি

কাজি মামুনের কথাবার্তা মুসলিম এইডের কথাবার্তার সাথে বেশ মিলে যায়।

হিমু এর ছবি

ভাই, গত দুই দশক ধরে রোহিঙ্গারা আসছে বাংলাদেশে। গত দুই দশকে কয়বার আপনার গোল গোল কথায় ভরা দুনিয়ার "ঐতিহাসিক রোহিঙ্গা নিধন" হইছে আরাকানে? আপনার কি ধারণা, এই এক সপ্তাহ আগেই রোহিঙ্গারা নাও ভাসায়ে এসে ভিড়তেছে বাংলাদেশে? তার আগে কেউ আসে নাই, আসতো না?

শরৎচন্দ্রের মেজদিদির একটা কপি নিয়ে টেকনাফ যান, সেখানকার লোকজনরে পড়ে শোনান। গালের চামড়া পুড়ে গেলো পাছার চামড়া কেটে লাগানো হয়, পাছার চামড়া গায়েব হয়ে গেলে কী হয় জানি না, তাই শুধু বলবো সাবধানে আবৃত্তি কইরেন। ঐখানকার দরিদ্র মানুষেরা কাদম্বিনীর মতো রইস আদমি না, তারা দিন আনে দিন খায় এবং তারা সরাসরি রোহিঙ্গা সমস্যার শিকার। আপনি যেমন ঢাকা শহরে চেয়ারের উপর পাছা রেখে রোহিঙ্গাদে জন্য গোল গোল মানবিক কথা বলে ভাসায় ফেলতেছেন, আপনি যান না ভাই, একটা রোহিঙ্গা পরিবাররে তুলে এনে ঐখানকার চাপ একটু কমায় দেখান। আপনার ঘরের কাদম্বিনী তখন কী বলে, জানায়েন।

আপনার বালছাল কথাগুলি যতোবার পড়ি, ততোবারই মনে হয়, আপনি টেকনাফ এলাকায় জীবনেও যান নাই। আপনার কথা শুনলে মনে হয় ঐখানে পাবলিকের গোয়া দিয়ে রিসোর্স গড়ায় পড়ছে কিন্তু আমরা সেগুলি রোহিঙ্গাদের দিতেছি না।

বার্মার জনঘনত্ব বাংলাদেশের জনঘনত্বের ৮%, তাদের দেশে অন্য কোথাও রোহিঙ্গারা কেন যায় না, বলেন দেখি? কারণ ঐখানে কোনো জামাতি বাপ নাই, যারা তাদের ফান্ড যোগাবে। ঐ কারণে তারা কয়েকশো কিলোমিটার ঠেলে বাংলাদেশেই আসে। আপনি কাঠবলদ দেখে ব্যাপারটা বুঝবেন না।

আপনার মানবতা আর নৈতিকতা তো আপনি উদাহরণ দিয়ে দেখাচ্ছেন না। একটা রোহিঙ্গা ফ্যামিলিকে বাসায় নিয়াসেন। আপনি কনটেক্সট চোদেন না, বাস্তব পরিস্থিতি চোদেন না, মানুষের স্বার্থপরতা চোদেন না, চোদেন শুধু মানবিকতা আর নৈতিকতা, খুবই ভালো। প্লিজ, আজকেই যান টেকনাফ। একটা শরণার্থী পরিবারকে নিয়ে আসেন আপনার কাছে। তার আগ পর্যন্ত, গোল গোল কথা আর বাড়ায়েন না।

অরফিয়াস এর ছবি

ডিয়ার মিস সু চি, ম্যানেজ ইয়োর ম্যাস, অর ইউ ক্যান শাভ দ্যাট নোবেল আপ ইয়োর অ্যাস।

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অরফিয়াস এর ছবি

সুবিধার কথাটা মেনে নিচ্ছি! তাহলে আপনাকেও মেনে নিতে হবে, বাংলাদেশের গরীব মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা বলে হরহামেশাই সমাজকে এক ঘা দেয় যেই সকল ব্লগাররা, তারাও এ সুবিধা সমানভাবে ভোগ করে থাকে! এই তো কিছুদিন আগে, বস্তি উচ্ছেদের ঘটনায় ব্লগে ব্লগে প্রতিবাদের জোয়ার বয়ে গিয়েছিল! তো আপনি দয়া করে মেনে নিন যে, ঐ ব্লগাররাও আপনার কথিত সুবিধা মারাত্মক এনজয় করে থাকে!

প্রথমত যদি বাস্তব পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করি, তাহলে ঢাকার অসংখ্য বস্তি হচ্ছে শহরের শতকরা ৯৯ ভাগ অপরাধের আখড়া। এছাড়া যারা এই বস্তিগুলোতে স্থান করে নিচ্ছেন তারা বিভিন্ন সুবিধা [গ্যাস/বিদ্যুৎ ইত্যাদি] অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চোরাই লাইনের মাধ্যমে নিয়ে থাকেন। এছাড়াও শহরের জনসংখ্যা বাড়ানো তো রয়েছেই। এদের অধিকাংশ ঢাকার বিভিন্ন ফুটপাত ব্যবহার করে নাগরিক জীবনেও অসুবিধা সৃষ্টি করে যাচ্ছেন। এত কিছুর পরেও যেহেতু এই মানুষগুলো কাজের খোঁজে শহরে এসে কোনমতে মানবেতর জীবন যাপনের মাধ্যমে জীবনযুদ্ধে নিয়োজিত এদের প্রতি আমাদের মানবিক দৃষ্টি স্বাভাবিক। কিন্তু এর মানে এই না যে, বাস্তব সমস্যাগুলো আমরা অস্বীকার করবো। তারপরও এত কিছু চিন্তা করে শুধুমাত্র মানবিক দিক বিবেচনা করেই এই বস্তি উচ্ছেদের প্রতিবাদ করেছেন অনেকে। যদিও এটা কোনো সমাধান নয়। তবুও প্রতিবাদ সমালোচনার মাধ্যমে সরকার কিংবা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মনোযোগ আকর্ষণ করার একটি চেষ্টা মাত্র। এখানে যদিও ব্লগারদের কোনো ব্যক্তিগত সুবিধা আদায় হচ্ছেনা তারপরেও তারা প্রতিবাদ করছেন শুধু এই মানবিক দিক চিন্তা করেই। কিন্তু তার মানে এই নয়যে, সবাই একই মতের অনুসরন করে যাচ্ছেন, মতপার্থক্য আছে এখানেও। আপনার কথায় যেভাবে বলে দিলেন, ব্লগাররা নিজেদের এই অবস্থানগত সুবিধা আদায় করে চলেছেন তাতে মনে হলো এই সরলীকরণটা খুবই সোজা!!

এমনকি দেখুন, যে আধপেটা মানুষের কথা বলে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দেয়ার জোর দাবী জানানো হয়, সেই গরীব মানুষগুলোর অস্তিত্ব কিন্তু একটুও লঘু হয় না এমনকি রোহিঙ্গাদের অনুপস্থিতিতে; তো যে ব্লগাররা ঐ আধপেটা মানুষগুলোকে ঘরে এনে পেট পুরে না খাইয়েই এ কথা বলে, তাদের ভোগ করা সুবিধাটাও আশা করি আপনি স্বীকার করে নেবেন!

এবার দেখুন, নিজেই বলে চলেছেন যে দেশের দরিদ্র মানুষের দুর্দশা তারপরেও লাঘব হবেনা। কিন্তু যদি এই ৫ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সাথে আরও কয়েক লক্ষ শরণার্থী আশ্রয় দেয়া হয় তাহলেও কি আমাদের দেশের দরিদ্র মানুষের অবস্থা পরিবর্তন হবে? না, সেটাও হচ্ছেনা। বরং দেখা যাবে কিছু মানুষ আরও দরিদ্র হবে এবং এই সংখ্যা ভারী করবে। তাহলে দেশের দারিদ্র্য সমস্যা সমাধান না করে উপরন্তু আরও দরিদ্র মানুষ আশ্রয় দিয়ে মানবিকতা প্রদর্শনের হেতু যদি দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থায় বিরূপ প্রভাব পড়ে তাহলে এখানে দোষ কার? তখন তো আবার সরকারকে গালি দিতে পিছুপা হবেননা!! আজ যেমন গালি দিচ্ছে টেকনাফ/কক্সবাজারের ভুক্তভুগী মানুষরা।

এবার আসুন আপনার মত মানুষের ক্ষণিক মানবিকতার হিসেবে। আপনি নিজে জানেন কি, প্রতি মাসেই মায়ানমার থেকে বেশ ভালো সংখ্যক রোহিঙ্গা বিনা বাধায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে কোনো কারণ ছাড়াই? যদিও শরণার্থীর হিসেবে সংখ্যাটা মোটামোটি ৫ লক্ষ, কিন্তু আসল সংখ্যা এর থেকেও অনেক বেশি। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে প্রতি বছর অনেক রোহিঙ্গা পরিবার প্রবেশ করছে এবং দেশের এই দরিদ্র গোষ্ঠির সাথে মিশে যাচ্ছে অবৈধ ভাবে। কিন্তু কখনো কি শুনেছেন বিজিবি কিংবা কোস্টগার্ড এমন কোনো রোহিঙ্গাকে সীমান্তে অনুপ্রবেশের দায়ে গুলি করে মেরে ফেলেছে? তাহলে যেই লাগাতর শরণার্থী ও সীমান্ত অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত সমস্যা বাংলাদেশকে একা সামলাতে হচ্ছে সেখানে এই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ক্ষণিক মানবিকতা দেখিয়ে আপনি কি উদ্ধার করে ফেলছেন বলবেন?

রোহিঙ্গারা যদি নিজেদের অবস্থানগত সমস্যা নিজেরা সামলাতে না পারে তাহলে এদের লাগাতর এই অনুপ্রবেশ যতই আপনি মানবিকতার দৃষ্টিতে দেখেন না কেন সেটা কোনভাবেই বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলকর নয়। আর মনে রাখুন, মানবিকতার একটা লাগাম আছে। আপনার ব্যক্তিগত মানবিকতার লাগামহীন অনুভূতি নিয়ে সরকার এবং রাষ্ট্র চলতে পারেনা। তাহলে অনেক আগেই অনেক সমাজ বিলুপ্ত হয়ে যেত। আপনার ঘরে পর্যাপ্ত খাওয়া না থাকলে আপনি কতদিন আরেকজনের সাথে ভাগ করে খাবেন সেটা একটা বড় প্রশ্ন। আর এই প্রশ্নের উত্তর যেকোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের জানা আছে।

তো অনুসিদ্ধান্ত কি দাড়াল? মানুষের ভিতর কখনো মানবিকতাবোধ কাজ করে না, করতে নেই, শুধু থাকে কনটেক্সট, থাকতে হয়!

যদি না জানা থাকে তো জেনে নিন মানুষ স্বার্থপর। শুধু তাই নয়, পৃথিবীর সব প্রাণীই স্বার্থপর। আজকে পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ সমাজতন্ত্রের নামে একারণেই আঁতকে ওঠে। মনে করে, নিজের সম্পদ অন্যকে দিয়ে দিতে হবে। যদিও সমাজতন্ত্র কখনই সেটা বলেনা। কিন্তু পৃথিবীজুড়ে অধিকাংশ মানুষের জন্য ভয়ের আর এক নাম এই সমাজতন্ত্র। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে "কমু" এখনো গালি হিসেবে ব্যবহার হয়। কেন? এই যে বিলিয়ন মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছে সোমালিয়া/কঙ্গো/সুদানে তারপরও কেন ধনী দেশগুলো সম্পদের বন্টনে আগ্রহী নয়? কারণ মানুষ ততক্ষণ মানুষের প্রতি মানবিকতা প্রদর্শন করে যতক্ষণ তার নিজের কোনো ক্ষতি না হচ্ছে। এটাই বাস্তবতা। সমষ্টিগতভাবে বাঁচতে হলে সমাজকে এধরনের কথি সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এতে ব্যক্তি অনুভূতির আঘাত হতে পারে কিন্তু তাতে সমাজ বদলে যায় না। তাই রেড ক্রস/রেড ক্রিসেন্ট আরও অন্যান্য দাতব্য মানবতাবাদী সংস্থাগুলোর হর্তাকর্তারা কয়েক লক্ষ টাকা মাইনে পান এবং তাদের আরামের ভাব হয়না।

পৃথিবীতে মানবিকতা সবচে সস্তা দরে বিক্রি হয়। এর নাম ভাঙিয়ে চলে ব্যবসা। আজকে সারা বিশ্বে যে সকল চ্যারিটি সংস্থা কার্যকর আছে তাদের বেতন কাঠামো খুঁজে দেখুন, নয়তো তাদের এক বছরের বাজেট দেখে আসুন।

এটাতো আর কষ্ট করে বলার দরকার ছিল না, হিমু ভাই! বিষয়টি তো আগেই বুঝেছিলাম, ভারত কনটেক্সট দেখে আমাদের শরনার্থীদের সাহায্য করেছিল, আমরাও রোহিঙ্গাদের করতাম, যদিবা আমাদের কোন কনটেক্সট থাকত! আমাদের কনটেক্সটও নেই, তাই রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ও নেই আমাদের কাছে, সুতরাং, মামলা ডিসমিস!

আপনাদের মতো যারা ত্যানা প্যাচাচ্ছে তারা কেউই বলছে না বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ৫ লক্ষ লোককে বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াচ্ছে। আর যারা বসে বসে বাংলাদেশের পুটু মারছে। আরও চারটা দেশের সাথে মায়ানমারের সীমান্ত আছে তাদের সীমান্ত কেন খোলার কথা বলা হয়না? কেন জানেন? কারণ দেশগুলো হচ্ছে ভারত,চীন এবং থাইল্যান্ড যারা ওই জাতিসংঘের চোখ রাঙানোকে বাল দিয়েও পাত্তা দেয়না। মাঝখান থেকে দরিদ্র বাংলাদেশের ঘাড়ে আরও বোঝা চাপানোর ইচ্ছে। এছাড়াও মায়ানমারের নিজস্ব জায়গার অভাব নেই, সে দেশের সরকার কেন আরাকান এর দাঙ্গা নিপীড়িত অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে সরিয়ে নিচ্ছেনা তাদের? কারণ আমাদের কনটেক্সট না থাকলেও তাদের সরকারের আছে। তারা রোহিঙ্গাদের বাড়তি চাপ আমাদের ঘাড়ে চাপাতে ইচ্ছুক অনেক আগে থেকেই। ভারতের গুজরাতের দাঙ্গায় পাকিস্তান তাদের সীমান্ত খুলে দিয়েছিলো কি তাদের মুসলমান ভাইদের জন্য?

ভাই, ইন্দিরা রাজনীতি করেন, উনি ভারতের প্রভুত্ব বাড়াবেন, তাই উনি কনটেক্সট খুঁজবেন, ছল করবেন, কৌশল করবেন! কিন্তু আমার মত সাধারণ মানুষের কাছ থেকেও আপনি যদি সবসময় কনটেক্সট আশা করেন তাহলে তো বিপদ! তবে একটা প্রশ্ন না করে পারছি না, চে গুয়েভারা কোন কনটেক্সটে পুরো লাতিন আমেরিকা এবং আফ্রিকার একাংশ চষে বেড়িয়েছিলেন? আপনি কনটেক্সটের অনেক হিসেব রাখেন, তাই আপনি নিশ্চয়ই জানবেন!

রাজনীতির প্যাচালে গেলামনা কারণ অনেক কথা এর আগেই বলা হয়ে গেছে। "চে" কে নিয়ে বললেন তাই বলি, রোহিঙ্গাদের কেও একজন "চে" এর মতো বিপ্লবী হয়ে অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নামুক দেখবেন সমর্থন তাকেও করা হবে। কিছুটা সমুদ্র পাড়ি দিলেই তো উন্মুক্ত দেশ এরকম অবস্থা থাকলে বিপ্লবী জন্মেনা। আর একারণেই রোহিঙ্গারা এত বছরের অত্যাচারেও রুখে না দাড়িয়ে শুধু পালিয়ে আসাকেই সমীচীন মনে করে। আর তারা অন্য কোনো দিকে পালায় না আসে শুধু বাংলাদেশের দিকে। কারণ তারা জানে সীমান্ত খোলার মতো বোকামি শুধু এই দেশের সরকারই করেছিলো কয়েকবার। ফিদেল কাস্ত্রো এর বিপ্লবে মুক্তি পেয়েছিলো কিউবা পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যের হাত থেকে, যদি কাস্ত্রো হুশ করে অন্য দেশে পালিয়ে যেতেন তাহলে হয়তো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা শোভা পেত আজকের কিউবার পতাকার জায়গায়।

যারা লড়াই না করে পালিয়ে বেড়ানোই মোক্ষম উপায় মনে করে তাদের সমস্যা কোনদিন সমাধান হয়না। আর এই সমস্যা বহন করার মতো মানবিকতা কোনো রাষ্ট্র দেখাতে সক্ষম নয়।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হিমু এর ছবি

আরেক পরমার্থ।

সাইদ এর ছবি

চলুক

অরফিয়াস এর ছবি

দিনে দিনে "পরমার্থ" পার্টি ভারী হলে তো সমস্যা, দেশ এমনিতেই অজস্র সমস্যা নিয়ে আছে। এত মানুষের মানসিক বৈকল্য সামলাবে কেমনে?

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মন মাঝি এর ছবি

ছোটবেলায় একটা প্রবচণ শিখেছিলাম - যে সত্যি সত্যি ঘুমন্ত তাকে জাগানো যায়, কিন্তু যে জেগে জেগে ঘুমায় - শত চেষ্টাতেও তার ঘুম ভাঙানো যায় না। আজ নতুন আরেকটা শিখলাম - যারা জেগে জেগে ঘুমায়, তাদের মধ্যে একদল আবার ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে এঁড়ে বিতর্কও করে। এদের সাথে বিতর্ক করে কস্মিণকালেও কোন যৌক্তিক সমাধানে পোঁছানো যায় না, কারন সেটা তাদের অভীষ্টই নয়। এদের ঘুমের ডিফেন্সটা, অর্থাৎ সব বুঝেও না বুঝার প্রিটেন্সটা বলবৎ থাকেই।

****************************************

হিমু এর ছবি

কাজি মামুনের মানবিকতুতো ভাইদের বকে দিয়েছে প্রশাসন।

কালো কাক এর ছবি

একটা তাড়াহুড়াজনিত টাইপিং মিসটেকও আপনারও চোখ এড়িয়ে যায় না, হিমু ভাই! আর এখানেই আপনার স্বাতন্ত্র্য!

নয়বার টাইপো ক্যাম্নে হয় ভাই ? অ্যাঁ

ক্রেসিডা এর ছবি

ধরে নেন হয়ে গেছে। উনি যেহেতু বলেছে টাইপো হয়েছে, এবং পরবর্তীতে সেটা ঠিক করেই লিখেছে, কেন হয়েছে কয়বার হয়েছে, সেটা জানার আগ্রহ না দেখানোই শ্রেয়। এটা তেমন কোন ইস্যু তো না।

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

হিমু এর ছবি

উনি জানেই না শব্দটা কনটেক্সট। কিন্তু সেইটা স্বীকার করবে না। এইটা এক ধরনের কাঠবলদামি। এইটারে শেল্টার দেওয়ারও কিছু নাই।

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

কালো কাক এর ছবি

ধরে নিবো কেন? নয়বার একজন টাইপো করে? কেন হয়েছে কয়বার হয়েছে জানার আগ্রহ দেখাইনি, না জেনে লিখেছেন আর নয়বার লিখেছেন দেখাই যাচ্ছে। আর উনার বর্তমান ইস্যু যেটা সেটা নিয়ে তো কথা বলার কিছু নাই। অনেকেই বলছেন, কিন্তু উনি তালগাছ ঘিরে ত্যানা পেচিয়েই যাচ্ছেন। তাই অন্য ইস্যু তুল্লাম খাইছে

অরফিয়াস এর ছবি

এখানে ধরে নেয়ার কিছু নেই। উনি যখন মন্তব্যে এতবার ভুল করেছেন সেখানে বোঝাই যাচ্ছে শব্দটি তার জানা নেই। কিন্তু উনি সেটা স্বীকার না করে আবার তর্কের খাতিরে তুলে এনেছেন!! একজন মানুষকে সব জানতে হবে এটা নয় কিন্তু ভুল স্বীকার না করে তার উপরেই তর্ক করা অভদ্রতা। আর এটাকে ডিফেন্ড করার কোনো প্রয়োজন দেখছিনা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

কাজি মামুন এর ছবি

সময়োপযোগী তথ্যসমৃদ্ধ লেখাটির জন্য ধন্যবাদ!

রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দান সমস্যাটির কোন সমাধান নয়, তা সত্য; আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করে মায়ানমারকে রোহিঙ্গাদের স্থায়ী দায়িত্ব নিতে বাধ্য করার মধ্যেই স্থায়ী সমাধান লুকানো, তাও সত্য; কিন্তু এই মুহূর্তের সবচেয়ে বড় সত্য কি এই নয় যে, শত শত রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে আমাদের দোরে হাজির হয়েছে বিক্ষুব্ধ সমুদ্র পাড়ি দিয়ে? পেছনে রেখে এসেছে ভিটে-মাটি-সম্বল আর রক্তচোষা হায়েনাদের? মানুষ হয়ে এখন আমরা চুল-চেরা বিশ্লেষণ করব? অকুল দরিয়ায় ফেলে দেব এই অসহায় মানুষগুলোকে?

বাংলাদেশের উচিত হবে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক জনমত তৈরি করা, রোহিঙ্গাদের দীর্ঘমেয়াদী আশ্রয়দানে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সীমাবদ্ধতাগুলো তুলে ধরা! ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের শরণার্থীদের দুর্দশা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেছিলেন, পাশাপাশি তাদের জন্য যথাসম্ভব আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। তখনকার ভারত কিন্তু আজকের ভারতের মত এত ধনী রাষ্ট্র ছিল না, পশ্চিমবঙ্গের অবস্থাও বিশেষ সুবিধার ছিল না, নকশাল আন্দোলনসহ নানা রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতায় আক্রান্ত ছিল সে।

ধরা যাক, আমার আজ খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা অ্যাসাইনমেন্ট আছে; এর উপর নির্ভর করছে আমার বাচা-মরা-উন্নতি। যাওয়ার পথেই পথ আটকে দাঁড়াল একটি লোক, তাকে হত্যা করার জন্য তাড়া করে ফিরছে কয়েকজন খুনি। এমতাবস্থায়, তাকে এড়িয়ে চলে যাওয়াটা খুবই সহজ; কিন্তু তা করলে শান্তি পাব মনে? সারাক্ষণ একটা অপরাধ-বোধ তাড়া করে ফিরবে না? আমাদের জীবনে চলার পথে এমন অনেক সমস্যা তৈরি হয়, যা একান্তই অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত এবং যার জন্য ব্যক্তিগত মাসুলও গুনতে হয়! তবু এই সীমাবদ্ধতা নিয়েই তো জীবন। রাষ্ট্রীয় জীবনও তদ্রূপ নয়কি?

অরফিয়াস এর ছবি

আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখাতেই আছে।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মন মাঝি এর ছবি

না, রাষ্ট্রীয় জীবন তদ্রূপ নয়।

****************************************

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

কাজি মামুন এর ছবি

না, রাষ্ট্রীয় জীবন তদ্রূপ নয়।

কেন ন‌‌য়? রাষ্ট্রকে একটি জনগোষ্ঠির জাতীয় নিরাপত্তার কথা ভাবতে হয় বলে? আর ব্যক্তিকে শুধু নিজের কথা ভাবলেই চলে?

কালো কাক এর ছবি

চলুক

তারেক অণু এর ছবি

গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট।

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ অনুদা। হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

আরাকান নামের উংপত্তি আরবী আল-রুকন হতে, যার অর্থ শান্তির ভূমি। রোহিঙ্গা শব্দের উংপত্তি আরবী রহম হতে।
কবি আলাওল আর দৌলত কাজীর লেখায় বহু পূর্বে রোসাঙ্গ জাতির উল্লেখ আছে। তাই এই কথা ভিত্তিহীন যে রোহিঙ্গারা ব্রিটিশ শাসনের পূর্বে ছিলো না। আরাকান মিয়ানমারের একমাত্র মুসলিম প্রধান প্রদেশ।
---আন্দালিব পান্থ

হিমু এর ছবি

আল-রুকন থেকে আরাকান আসছে, এটা কোথায় পাইছেন?

অরফিয়াস এর ছবি

মনে হয় গায়েবি আওয়াজ আসছে তার কাছে !!

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এ ধরনের মন্তব্য না করাই ভালো, অরফিয়াস ভাই।

অরফিয়াস এর ছবি

দুঃখিত, আসলে মেজাজ ঠিক রাখতে পারিনি। কিছুদিন যাবৎ অযৌক্তিক অজস্র প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে এখানে সেখানে একারণে সংযত আচরণ ছিলোনা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এই পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সময়োপযোগী--এর পুরো কৃতিত্ব আপনার। সচলায়তন মানসম্পন্ন লেখা এবং মন্তব্যের গুনেই এগিয়ে যাবে। অনেক ধন্যবাদ।

অরফিয়াস এর ছবি

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।

সচলায়তন মানসম্পন্ন লেখা এবং মন্তব্যের গুনেই এগিয়ে যাবে।

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

ইবনে বতুতা উল্লেখ করেছেন যে “আরকান” শব্দ এসেছে আল-রুকন থেকে। আরাকান প্রাচীন কাল থেকে ছিল হিন্দু অধ্যুষিত অঞ্চল। মরিস কলিস বলেছেন ৯৫৭ সালে মঙ্গোলয়েড দ্বারা দখল হয়। রাখাইন শব্দের ব্যুৎপত্তি এসেছে পালি “রাক্ষসা” শব্দ হতে। এখানে একটা বিষয় জানানো প্রয়োজন যে ১৪৩০ হতে ১৫৩০ সাল আরাকান শাসন করে মুসলিমরা। আরো মজার বিষয় এর পরেও আরাকান মগ রাজারা মুসলিম টাইটেল ব্যবহার করতেন।১৭৮৪ সালে আরাকান দখল করে নেয় বার্মিজ রাজারা। তাই এই বিষয়টা সবার লক্ষ্য রাখা উচিত যে আরাকান এর ইতিহাস সম্পূর্ণ নিজস্ব, যা রাখাইন এবং রোহিঙ্গাদের। আরো একটা বিষয় আরাকানে জাতিগত দাঙ্গা ব্যাপ্তি বৃদ্ধি পেয়েছে ১৯৪২ হতে। এই বিশয় নিয়ে পরে সময় পেলে বলব।
---আন্দালিব পান্থ

হিমু এর ছবি

হিন্দু-অধ্যুষিত অঞ্চলের নাম কেন আরবিতে আল-রুকন হতে যাবে, সেটা নিয়ে চিন্তার অবকাশ আছে, নাকি বলেন? ইবন বতুতা যখন এ অঞ্চলে আসেন, তখনও আরাকান হিন্দু-অধ্যুষিতই ছিলো। তাহলে ওখানে আরবিটা বলতো কারা?

সত্যপীর এর ছবি

পান্থ ভাই,

আপনি রাখাইন শব্দের উৎপত্তি পালি রাক্ষস থেকে এসেছে এটা যে বইতে পেয়েছেন ঐখানে আরাকান নামের উৎপত্তির কথা লিখা নাই? প্রায় তো ধরেই ফেলসিলেন। প্রথম জমানার বৌদ্ধরা এদের রাক্ষস ডাকত কারন এরা কনভার্টেড হয়নি, ঐ রাক্ষস থেকে তাদের জাতিগত নাম হয় রাখাইং বা রাখাইন। পর্তুগীজরা ডাকত রাকান, ইংরেজরা আরাকান, আরবেরা আল-রুকন। যে যার মত করে ডাকত। সুতরাং আরাকান আর আল-রুকন কোনটাই কোনটা থেকে আসেনি, দুইটাই এসেছে রাখাইন বা রাখাইং থেকে। এখানে বা এখানে ক্লিকিয়ে দেখতে পারেন।

রহম থেকে রোহিঙ্গা এই তত্ত্বটির ব্যাপারে আমি অরফিয়াস ভাইয়ের মতই সন্দিহান। বলা হয়ে থাকে অষ্টম শতাব্দীর দিকে আরব জাহাজ আরাকানের তীরে আছড়ে পড়ে আর আরবী লোকেরা "রহম রহম" বলে চ্যাঁচ্যাঁতে থাকে। আরাকানের লোক তাদের উদ্ধার করার সময় ভাবে এদের নামই বুঝি রহম, ঐ থেকে এদের ডাকা হয় রোহিঙ্গা যা রহম থেকে এসেছে। এই তত্ত্ব অনুযায়ী জাহাজভাঙ্গা মুসলিমের বংশধর রোহিঙ্গা আর স্থানীয় বৌদ্ধরা রাখাইন। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি এটা গল্পই মনে করি, এর ভিত শক্ত নয়। বরং অন্য যে থিওরি আছে, ম্রোহং > রোয়াং > রোয়াইঙ্গা > রোহিঙ্গা এইটা আমার কাছে বেশি গ্রহনযোগ্য মনে হয়। ম্রোহং হল প্রাচীন আরাকান রাজধানী ম্রাওক-উ।

আর রোহিঙ্গারা ব্রিটিশ শাসনের পূর্বে ছিলনা এই কথা আসলেও ভিত্তিহীন, ঠিক বলেছেন। বার্মিজ মিলিটারি সরকার একটা ছুতা বের করেছে মাত্র এদের পিটিয়ে খেদানোর জন্য।

..................................................................
#Banshibir.

হিমু এর ছবি

আরবের লোকেরা ভুল আরবিতে কেন রহম রহম বলে চ্যাঁচাচ্ছিলো, সেটাও প্রশ্নের দাবি রাখে। কারণ যতদূর জানি, আরবিতে "দয়া" হচ্ছে রাহমা, আর "দয়া করো" হচ্ছে ইয়ারহামু। এই তত্ত্বের প্রোপোনেন্টের উচিত ছিলো মাদ্রাসায় আরেকটু মন দিয়ে লেখাপড়া করা।

অরফিয়াস এর ছবি

এই তথ্যটির কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই, প্রচলিত লোককথার মতো। এটি দেখলাম রোহিঙ্গা সম্পর্কিত উইকিপিডিয়া পেইজে।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অরফিয়াস এর ছবি

রোহিঙ্গা শব্দের উংপত্তি আরবী রহম হতে।

এর ঐতিহাসিক ভিত্তি শক্ত নয় এবং ইতিহাসবিদদের মাঝে মতপার্থক্য আছে।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

নবম ও দশম শতাব্দী হতে আরবরা জাজিরাত-আল-রাহমা উল্লেখ করেছেন।ইবনে খোরদাদজে (৮৪৪-৪৮)নামে এক পারসি পর্যটক উল্লেখ করেছেন যে জাজিরাত-আল-রাহমা সরণ দ্বীপের পরে অবস্থিত।তাছাড়া সোলায়মান (৮৫১), ইবনে আল ফকীহ (৯০২)বার্মার বদ্বীপ অঞ্চলকে আল-রাহমা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আরবরা আরাকান হতে বার্মা হয়ে চায়না ভ্রমণ করতো।

এখানে ভালো হতো যদি আপনি কোন ইতিহাসবিদ দের রেফারেন্স দিচ্ছেন উল্লেখ করতেন।

---আন্দালিব পান্থ

অরফিয়াস এর ছবি

U Khin Maung Win একজন স্কলার যিনি ১৯৯১ এর রোহিঙ্গা সমস্যার পরে “Far Eastern Economics Review”-তে একটি আর্টিকেল লেখেন এবং হামবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের U Khin Maung Saw একটি পেপার পাঠ করেন মায়ানমার বিষয়ক একটি কনফারেন্সে ১৯৯৩ সালে। এদের প্রত্যেকের কাজই রাখাইন মিথ এবং লিজেন্ড ভিত্তিক ছিলো। তাদের কাজের যথেষ্ট সত্যতা নিরুপন একারণেই সহজ নয় কারণ প্রচলিত লোককথাকে যুক্তির ভিত্তি হিসেবে দাড় করানো কঠিন কারণ এতে নানা সম্প্রদায়ে তথ্য বিবর্তিত হয়ে থাকে। তাদের তথ্যে বিশেষ করে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে এটা উঠে আসে যে রোহিঙ্গারা আদি বাসিন্দা নয়। এরা এই তথ্যের সমর্থক ছিলেন। কিন্তু ইতিহাসবিদ Martin Smith এবং Professor Dr. than Tun. দুজনেই এই মতের বিরোধিতা করেন। তাদের তথ্য উপাত্ত অনুযায়ী রোহিঙ্গারা এই আরাকান রাজ্যে প্রথম থেকেই ছিলো এবং বৌদ্ধ রাজাদের সাথে তাদের যথেষ্ট সুসম্পর্ক বজায় ছিলো।

এই লিঙ্কগুলোতে আরাকান এবং মায়ানমার (পূর্বের বার্মা) এর সামাজিক পরিস্থিতি এবং রাজাদের বংশ পরম্পরা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়-

লিঙ্ক ১
লিঙ্ক ২
লিঙ্ক ৩
লিঙ্ক ৪
লিঙ্ক ৫
লিঙ্ক ৬
লিঙ্ক ৭
লিঙ্ক ৮

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে, আরাকান রাজ্য সংক্রান্ত যা ঐতিহাসিক কাজ হয়েছে তার অধিকাংশই ব্রিটিশ শাসনামলে। তাই পূর্বের ইতিহাস সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া অনেকাংশেই সম্ভব নয়। এছাড়াও তত্কালীন ব্রিটিশদের সমর্থনে যে ইতিহাস রচিত হয়েছিল তারও ভিত্তি ছিলো রাখাইন ফোকলর। তাই রোহিঙ্গাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থান অনেকাংশেই বাদ পড়ে।

এছাড়াও আরাকান সাম্রাজ্য নিয়ে রাখাইনদের যেসকল ইতিহাস রচিত হয়েছে তার অধিকাংশতেই রোহিঙ্গাদের বাইরের আগুন্তুক হিসেবে দেখানো হয়েছে। এর পেছনে হয়তো সাংস্কৃতিক/ধর্মীয়/অবস্থানগত ব্যবধান অন্যতম কারণ। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যখন ইতিহাসের উপাদান রাখাইন সম্প্রদায় কেন্দ্রিক তাই রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া সম্ভব নয়।

একজন রিসার্চ স্কলার Zul Nurain এই কাজগুলোর উপরে একটি আর্টিকেল প্রকাশ করেন "Rohingya History: Myth and Reality"- এই নামে, [যথেষ্ঠ বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে] যেখানে তিনি ইতিহাসবিদ Martin Smith এবং Professor Dr. than Tun কে সমর্থন করে রোহিঙ্গাদের আরাকান রাজ্যের বহিরাগত নয় বরং আদি বাসিন্দা হিসেবে দাবি করেন। কিন্তু আবার আরাকান রাজ্য প্রতিষ্ঠাকালে দেখা যায় যে, বৌদ্ধ ধর্ম ছিলো প্রধান এবং রাজারা ছিলেন প্রধানত বৌদ্ধ। এছাড়াও খোদ গৌতম বুদ্ধের জন্মকালে মায়ানমার (পূর্বের বার্মা) এ বৌদ্ধ ধর্মের প্রবেশ ও প্রসার ঘটে ব্যাপক ভাবে। তাই আরাকান রাজ্যে যে, ইসলামিক আধিপত্য ছিলো তা নিঃসন্দেহে বলা যায়না।

পার্সিয়ান ভূগোলবিশারদ Ibn Khordadbeh সেইসময়ে আরব সওদাগরদের উপরে কিছু প্রবন্ধ রচনা করেন যাতে সেই সময়কার সমুদ্র বানিজ্যপথ-এর বর্ণনা ছিলো।
এর মাঝে এই বইটি অন্যতম- "Book of Roads and Kingdoms"। উনার কাজ সম্পূর্ণ প্রি-ইসলামিক ইরানিয়ান ধারণা এবং ধরনের উপর ভিত্তি করে রচিত। তিনি এই অঞ্চলের বানিজ্য সংক্রান্ত বর্ণনা দিলেও সেটাকে রোহিঙ্গা আদি ইতিহাস হিসেবে ধরে নেয়া কতটা যুক্তিযুক্ত হবে জানিনা।

আমি অন্তত কোনো ইতিহাসবিদের একক সমর্থন দেয়ার মতো তথ্য খুঁজে পাইনি। সেটা লেখায় উল্লেখ করেছি এবং বলেছি রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে ধারণা স্বচ্ছ নয়। আপনিও যেভাবে শুধুমাত্র আরব ইতিহাসবিদদের ধারণা ও তথ্যের উপর ভিত্তি করে বলতে চাইছেন সেটাও আমার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছেনা। কারণ কোনভাবেই এই জটিল অবস্থানগত ব্যাপারে আমি যথেষ্ঠ তথ্য ছাড়া কোনো এক পক্ষকে সমর্থন করতে পারছিনা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

লাইটহাউজ এর ছবি

কিন্তু এখানে ভুলে গেলে চলবেনা, একটি দেশের সরকার সেই দেশের মানুষের কাছে দায়বদ্ধ। মানবিক দিক বিবেচনায় আনলেও সরকারের কর্তব্য অস্বীকার করার কোনো অবকাশ নেই।

আচ্ছা, একটা দেশের সরকার তো সেই দেশের মানুষের উপরে দায়বদ্ধ তাইনা? তা ধরুন বাংলাদেশের সংখ্যাগুরুরা চাইলো যে আদিবাসীদের খেদিয়ে দিতে কিংবা বৌদ্ধ-সনাতনদের পাশের দেশগুলোতে হিজরত করাতে; তো তারা কারণ স্বরূপ বললো যে এরা আসলে বাংলাদেশের স্বার্থের পরিপন্থী! যেহেতু সংখ্যগুরুদের ভোটেই সরকার নির্বাচিত হয়, কাজেই সেই সরকারও নিশ্চয়ই এই কমিটমেন্টের প্রতি দায়বদ্ধই হবে! তাই না?

আবার ধরুন বিষয়টা অমানবিক কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুললে তারা হয়তো বলবে যে, এরা দেশের সম্পদ বাইরে পাচার করে, এরা আসলে অন্যদেশের আদর্শে বিশ্বাসী, ইসলামি(!) ধর্মনিরপেক্ষ(!) বাংলায় বিশ্বাস করেনা, ইত্যাদি ইত্যাদি। তখন দেশপ্রেম ও অর্থনৈতিক স্বার্থের বিচারে সরকারের খেদিয়েই দেওয়া উচিত তাই না?

আবার ধরুন ঠিক রোহিংগা নয়, আসাম, ত্রিপুরার বাংগালীরা(যারা পঞ্চাশ-ষাট বছর ধরে বাংলাদেশের বাইরে, কাজেই বহিরাগত বা জাতীয়তাবাদী বাঙালিত্ব কিছুটা মোচন হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়) হঠাৎই উলফাদের চরম প্যাঁদানি খেয়ে বর্ডার ক্রস করতে চাইলো! তখনও আমরা একই যুক্তি দেখাতে পারি কি বলুন? হাজার হোক ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদী স্বার্থ বলে কথা!

কিংবা ধরুন ওরা প্যাঁদানী খেয়ে আসার সময় ভারতের বিজেপির নেতৃত্বে স্বাধীন 'হিন্দু বঙ্গভূমি' গঠনের আশংকায় ও তাদের ভোটব্যাঙ্ক বাড়ানোর দুশ্চিন্তাও কি আমরা মাথায় রাখবো? প্যাঁদানী খেয়ে ওরা আর কি ফেরত যাবে? নাকি ওদের স্বাধীন বাংগালী ত্রিপুরা ও আসাম রাজ্য প্রতিষ্টায় সাহায্য করা উচিত?

ও আরেকটা কথা, শরণার্থী ফেরত যাওয়ারই যখন কথা উঠলো, স্বাধীনতার পরে ৪৭ এ মাইগ্রেটদের (পরিবারের)ঠিক কতজন ফিরে এসেছিলেন? হাসি মানে যারা ৪৭ এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় আক্রান্ত(ফাকি বাস্টার্ডদের দ্বারা নয়) ছিলেন তারা?

------------------------------
হিটলারের নাৎসী পার্টির যেকোনো একটা মেনিফেস্টো বাংলায় অনুবাদ করলে ঠিক এরকম একটা চমৎকার প্রবন্ধ দাঁড় করিয়ে দেওয়া যাবে। 'ডিস্ট্রিক্ট নাইন' মুভিটাও আবার দেখতে পারেন। হুবহু একইরকম হয়েছে শুধু এলিয়েনের মত লেখককেও রোহিংগা বানিয়ে তপ্ত কড়াইয়ে ছেড়ে দেওয়াটা বাদে।

ও আরেকটা কথা, ফ্যাসিজম বিষয়ে একটু পড়াশুনা করে এই প্রবন্ধটা আরেকবার পড়তে পারেন। হাসি ভালো লাগবে।

ধন্যবাদ।

হিমু এর ছবি

সংখ্যাগুরুদের ভোটে সরকার নির্বাচিত হয়, কিন্তু সংখ্যাগুরুদের সংবিধানবিরোধী আবদার পূরণের সুযোগ বা দায়বদ্ধতা সরকারের নাই। আজ বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু যদি বলে চড় দিয়ে আপনার দাঁত ফেলে দিতে হবে, সরকার সে দাবি মানতে বাধ্য নয়। আপনার দেয়া উদাহরণগুলো ঐরকমই।

হিটলারের নাৎসি পার্টির যে কোনো একটা মেনিফেস্টো বাংলায় অনুবাদ করে দেখান না ভাই। তারপর বাকি কথা হোক।

পাঁচ লাখ রোহিঙ্গারে ঘাড়ে নিয়ে আরো রোহিঙ্গারে ঘাড়ে নিতে না চাওয়ায় বাংলাদেশ যদি ফ্যাসিস্ট হয়, তাহলে সৌদি আরবও বাংলাদেশী শ্রমিক নিতে না চেয়ে ফ্যাসিস্ট। মালয়েশিয়াও ফ্যাসিস্ট। ইন ফ্যাক্ট গোটা দুনিয়াই এই বিচারে ফ্যাসিস্ট। পাঁচটা অ-ফ্যাসিস্ট দেশের নাম বলে যান। শুনতে ভালো লাগবে।

বি.দ্র. মেঘনাদ বধ পড়ে দেইখেন। ফ্যাসিস্ট রাবণ ঐখানে সমুদ্রপথ ধরে এগিয়ে আসা বানরবাহিনীকে নিয়ে টেনশনে ছিলো। দত্ত বংশেরই একজনের লেখা, আপনার ভালো লাগবে। আর কবে একটু মাজার জোর পাবেন স্বপরিচয়ে মন্তব্য করার জন্য? এরকম ফাকিং কাওয়ার্ডের মতো আজকে এই নিক কালকে সেই নিক ধরে আর কতোদিন ছুছুন্দরবৃত্তি করে যাবেন? হাবড়া হয়েছেন তো কি হয়েছে, লজ্জা হওয়ার বয়স নিশ্চয়ই পার হয়নি? এইরকম ইন্দুরের কইলজা হৈলে ক্যাম্নেকী?

বৌদির শরীরটা এখন কি একটু ভালোর দিকে? শুভকামনা রইলো ওনার জন্য। উনি সুস্থ হয়ে উঠুন, আর আপনিও।

অরফিয়াস এর ছবি

আপনি হয়তো জানেননা, মুসোলিন আমার গুরু আর হিটলার আমার কাকা !! লেখায় কই দেখলেন যে আমি রোহিঙ্গা খেদাও আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতেছি, তা যদি একটু কষ্ট করে তুলে দিতেন ভালো লাগতো। যেই লাইন দিলেন (তাও অর্ধেক !!) তাতে সরকারের দায়িত্বের কথা বলাতে আপনার কেন মনে হলো যে আমি "জাতিগত খেদাও আন্দোলনের" সমর্থক তা ঠিক বুঝলামনা, তবে এটা জানি অনেকের নিদ্রা ব্যারাম থাকলে দিনের আলোতেও ভূত দেখে !!

আচ্ছা, একটা দেশের সরকার তো সেই দেশের মানুষের উপরে দায়বদ্ধ তাইনা? তা ধরুন বাংলাদেশের সংখ্যাগুরুরা চাইলো যে আদিবাসীদের খেদিয়ে দিতে কিংবা বৌদ্ধ-সনাতনদের পাশের দেশগুলোতে হিজরত করাতে; তো তারা কারণ স্বরূপ বললো যে এরা আসলে বাংলাদেশের স্বার্থের পরিপন্থী! যেহেতু সংখ্যগুরুদের ভোটেই সরকার নির্বাচিত হয়, কাজেই সেই সরকারও নিশ্চয়ই এই কমিটমেন্টের প্রতি দায়বদ্ধই হবে! তাই না?

বাংলাদেশের সংখ্যাগুরুরা যে বছরে বছরে সংখ্যালঘুদের দাবড়ানি দিয়ে সীমান্ত পার করাচ্ছে সে ঘটনা তো নতুন কিছুনা। পাহাড়িদের জায়গায় তাদের লাথি দিয়ে বের করে বসতি তো স্থাপন করেছে ভারত-বাংলাদেশ উভয় দেশের লোকই!! আর আপনি যেভাবে বলছেন সরকার নির্বাচিত হয় সংখ্যাগুরুদের ভোটে সেটাও তো একপাক্ষিক চিন্তা, দেশের নির্বাচনে সংখ্যালঘুদেরও তো ভোট গণনার মধ্যে পড়ে, নাকি? আর মায়ানমারে কবে গণতন্ত্র ছিলো জানাবেন?

আবার ধরুন বিষয়টা অমানবিক কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুললে তারা হয়তো বলবে যে, এরা দেশের সম্পদ বাইরে পাচার করে, এরা আসলে অন্যদেশের আদর্শে বিশ্বাসী, ইসলামি(!) ধর্মনিরপেক্ষ(!) বাংলায় বিশ্বাস করেনা, ইত্যাদি ইত্যাদি। তখন দেশপ্রেম ও অর্থনৈতিক স্বার্থের বিচারে সরকারের খেদিয়েই দেওয়া উচিত তাই না?

"ইসলামী ধর্মনিরপেক্ষ" এটা কি আপনার গবেষণা? আর বাংলাদেশ ঠিক কবে ধর্মনিরপেক্ষ ছিলো, জানাবেন তো দিন তারিখ সহ, দেখি সেটা শুধু সংবিধানের কাগজেই ছিলো নাকি বাস্তবেও। মায়ানমারের সরকার দেশপ্রেমের ঠেলায় পড়ে রোহিঙ্গা খেদাচ্ছে এটা আপনারে কে বলছে, অং সান সুচি ???

আবার ধরুন ঠিক রোহিংগা নয়, আসাম, ত্রিপুরার বাংগালীরা(যারা পঞ্চাশ-ষাট বছর ধরে বাংলাদেশের বাইরে, কাজেই বহিরাগত বা জাতীয়তাবাদী বাঙালিত্ব কিছুটা মোচন হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়) হঠাৎই উলফাদের চরম প্যাঁদানি খেয়ে বর্ডার ক্রস করতে চাইলো! তখনও আমরা একই যুক্তি দেখাতে পারি কি বলুন? হাজার হোক ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদী স্বার্থ বলে কথা!

ভাই, শরীর ভালো তো ? নাকি অসুস্থ ? ত্রিপুরার বাংলা ভাষা-ভাষীরা ভারত ছেড়ে বাংলাদেশে আসবে উলফার দাবড়ানি খেয়ে এরকম স্বপ্ন তো মনে হয় মানসিকভাবে অসুস্থ রোগীরাও দেখেনা !! ভাই এত হাই লেভেল এর চিন্তা ভাবনার জবাব আমার কাছে নাই !!

কিংবা ধরুন ওরা প্যাঁদানী খেয়ে আসার সময় ভারতের বিজেপির নেতৃত্বে স্বাধীন 'হিন্দু বঙ্গভূমি' গঠনের আশংকায় ও তাদের ভোটব্যাঙ্ক বাড়ানোর দুশ্চিন্তাও কি আমরা মাথায় রাখবো? প্যাঁদানী খেয়ে ওরা আর কি ফেরত যাবে? নাকি ওদের স্বাধীন বাংগালী ত্রিপুরা ও আসাম রাজ্য প্রতিষ্টায় সাহায্য করা উচিত?

উত্তরে আমি বলবো- !!!!!!

ও আরেকটা কথা, শরণার্থী ফেরত যাওয়ারই যখন কথা উঠলো, স্বাধীনতার পরে ৪৭ এ মাইগ্রেটদের (পরিবারের)ঠিক কতজন ফিরে এসেছিলেন? মানে যারা ৪৭ এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় আক্রান্ত(ফাকি বাস্টার্ডদের দ্বারা নয়) ছিলেন তারা?

৪৭ এর পরে দেশটা কি বাংলাদেশ ছিলো ? দ্বিজাতি তত্ত্ব এর উপরে বিভক্ত দেশে ফেরত আসবে ঠিক কোন কারণে? আর যারা ভারত থেকে পাকিস্তানে এসেছিলো তারাও তো ফেরত যায় নাই !! এই মাইগ্রেশনের সাথে রোহিঙ্গা মাইগ্রেশন এর তুলনা ??

হিটলারের নাৎসী পার্টির যেকোনো একটা মেনিফেস্টো বাংলায় অনুবাদ করলে ঠিক এরকম একটা চমৎকার প্রবন্ধ দাঁড় করিয়ে দেওয়া যাবে। 'ডিস্ট্রিক্ট নাইন' মুভিটাও আবার দেখতে পারেন। হুবহু একইরকম হয়েছে শুধু এলিয়েনের মত লেখককেও রোহিংগা বানিয়ে তপ্ত কড়াইয়ে ছেড়ে দেওয়াটা বাদে।

ও আরেকটা কথা, ফ্যাসিজম বিষয়ে একটু পড়াশুনা করে এই প্রবন্ধটা আরেকবার পড়তে পারেন। হাসি ভালো লাগবে।

ফ্যাসিজম নিয়ে পড়াশোনা করে হয়তো আপনি উদ্ধার করেছেন, আপনার মতো না হলেও, আমার কিঞ্চিত জ্ঞান আছে বৈকি। তাতে অন্তত আপনার এই আবোল-তাবোল যুক্তি লেখা নাই এটা পাক্কা বলতে পারি।

ভাই, দেখেন, কেউ যৌক্তিক কথা বলে আর কেউ বলে আবোল-তাবোল। যারা আবোল-তাবোল বলে তারা অধিকাংশই মনে করে তারা যুক্তি দিয়ে ফাটাইয়া ফেলছে। আমার লেখা আমাকে দ্বিতীয়বার পড়তে বলার আগে নিজের যুক্তি নামক আবোল-তাবোল কুযুক্তিগুলো আবার পড়েন !!

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হিমু এর ছবি

এই বোকাচোদার কথা শুনলে মনে হয় হিটলারের নাৎসি পার্টির সব ম্যানিফেস্টো তার মুখস্থ। একটা অনুবাদ করে দিতে বললে সাত দিন আর ওর দেখা পাবেন না। খেটে খেতে ডরপোকদার ব্যাপক অনীহা। ওর দৌড় একটা নিক নিয়ে এসে চিমটি কাটা পর্যন্ত। চিমটি কাটা শেষ, উনিও নিরুদ্দেশ।

অরফিয়াস এর ছবি

হুমম, এধরনের লোকেরা তর্ক উসকে দিয়ে ভাগে, যেটা মেজাজ খারাপ করে!!

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হিমু এর ছবি

তর্ক তো হয় যুক্তির পিঠে পাল্টা যুক্তি দিয়ে। ও তো যুক্তি দিতে আসে নাই। "আমার বগলতলায় বটগাছ গজাইলে কী ঘটিত" এইরকম হাইপোথেটিক্যাল সিনারিও দিয়ে সে দেখাতে আসছে, সরকার আসলে "সংখ্যাগুরুর" কাছে দায়বদ্ধ। আপনার লেখা "দেশের মানুষের কাছে দায়বদ্ধতা"কে "সংখ্যাগুরুর কাছে দায়বদ্ধতা" হিসাবে দেখানোর একটা কাঠবলদীয় চেষ্টা। সবচেয়ে ফানি ব্যাপার কি জানেন? এই লোক কিন্তু স্বপরিচয়ে বেশ গোল গোল কথাবার্তা বলে বেড়ায়। নিজেকে সে হালের বুদ্ধদেব বসু ভেবে বসে আছে। ঐ পরিচয় ধরে তো আর এই বোকচোদমার্কা কথাগুলো বলা যায় না, তাহলে লোকে বুঝে ফেলবে সে একটা কাষ্ঠুভুদাই। এই কারণে আজ এই নিক, কাল আরেক নিক ধরে সে হাজির হয়। কারণ তার এই চিমটিবাজির দায় নেয়ার ইচ্ছা বা সাহস, কোনোটাই তার নাই।

অরফিয়াস এর ছবি

হাইপোথেটিক্যাল সিনারিও দিয়ে যারাই তর্ক করতে আসে তারাই বলদ কারণ এদের কাছে তর্কের জন্য বাস্তব ভিত্তি নাই একেই মনে হয় খাস বাংলায় বলে "এড়ে তর্ক"। এ যেমন এতগুলো হাইপোথেটিক্যাল সিনারিও দিলো সেরকম এরে প্রশ্ন করলে ভালো হয়- "আজকে ভারত-চীন যুদ্ধ লাগলে চিপায় পড়ে বাংলাদেশের পাবলিক কই যাবে অথবা চীন যদি হামলা করে মায়ানমার দখল করে নেয় তাহলে পুরা মায়ানমারের গুষ্ঠির জন্য কি বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দেয়া যৌক্তিক কিনা !!!!"

এই পরমাত্মার পরিচয় জানতে মন চায় !!

তর্ক তো হয় যুক্তির পিঠে পাল্টা যুক্তি দিয়ে।

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

কানিজ ফাতেমা এর ছবি

অতিপ্রয়োজনিয় লেখা।

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

খিন মোং সোও নামক এক বার্মিজ ইতিহাসবিদ এই মতের প্রচারক যে রোহিঙ্গারা আদি বাসিন্দা নয়, এমনকি ১৯৫০ এর পূর্বে রোহিঙ্গা শব্দের কোন অস্তিস্ত ছিল ন। কিন্তু কবি আলাওল আর দৌলত কাজীর লেখায় রোহিঙ্গা শব্দের উল্লেখ বহু পূর্বেই আছে।
---আন্দালিব পান্থ

অরফিয়াস এর ছবি

বিস্তারিত উত্তর আপনার পূর্বের মন্তব্যে লক্ষ্য করুন।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অরফিয়াস এর ছবি

পত্রিকার সংবাদ অনুযায়ী, কক্সবাজার এবং টেকনাফ এর ৩১টি গ্রামের স্থানীয় জনতা, বিজিবি এবং কোস্টগার্ড এর সাথে রাত জেগে সীমান্ত পাহারা দিচ্ছে যাতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ না ঘটে। যারা পূর্বে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে জায়গা করে দিয়েছিলো সেই স্থানীয়রাই এবার রুখে দাড়িয়েছে, এর পেছনের প্রধান কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছে, পূর্বে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার ফলে নিজেদের ভোগান্তির কথা।

শহরের মানবতাবাদীদের এবার নিজের দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি নিয়ে কি বলার আছে?

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

মানবিকতার জায়গা টুকু দেখানো যাচ্ছে না কারণ এমন নিশ্চয়তা বিন্দুমাত্র নেই যে রোহিঙ্গাদের আবার পুশব্যাক করা যাবে মায়ানমারে। তাছাড়া জামাতের অপতৎপরতা তো রয়েছেই।

যাই হোক, চমৎকার বিশ্লেষণধর্মী পোস্টটির জন্য অনেক ধন্যবাদ অর্ফিয়াস চলুক

(পড়েছিলাম আগেই আজ মন্তব্য করলাম।)


_____________________
Give Her Freedom!

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ তোমাকেও। হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সাবেকা  এর ছবি

চমৎকার বিশ্লেষণ পূর্ণ জরুরী এই লেখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ হাততালি

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকেও। হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মরুদ্যান এর ছবি

বাকি কথা পরে হবে, ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সাথে সাম্প্রদায়িক রায়ট কে তুলনা করে কেম্নে?

পোস্ট ব্যাপক ভাল হইসে, আর সচলত্বের অভিনন্দন জানবেন।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

অরফিয়াস এর ছবি

আমার প্রশ্নও তো সেটাই !! এদের এই যুক্তি আসলেই অপরিনত চিন্তার ফসল।

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হিমু এর ছবি

কুতুবখানার সাম্প্রতিক তারকা কুতুব আ.চৌ.দা যুক্তি দিয়েছেন, আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিয়ে নিজেদের পায়ে কুড়াল মারছি। কারণ আমরা যখন জলবায়ুগত পরিবর্তনের কারণে শরণার্থী হবো, তখন তো আমাদের আর কেউ আশ্রয় দেবে না।

আচৌদার কথা শুনলে মনে হতে পারে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলে আমাদের জলবায়ু শরণার্থীদের জন্য বিরাট এক শরণার্থী লাইসেন্স তৈরি হয়ে যাবে। ভারত আমাদের জলবায়ু শরণার্থীদের বুকে জড়িয়ে ধরে বলবে, ওরা তোরা তো রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলি, এখন তোদের আশ্রয় না দিয়ে কি আমরা পারি?

আচৌদারা বোঝেন না, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েও আমরা শরণার্থী হিসেবে প্রত্যাখ্যাত হতে পারি। কারণ এগুলো বুঝলে রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে যে এইড বাণিজ্যের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, সেখানে টুকিটাকি কনসালট্যান্সি আর মিডিয়াবাজির খ্যাপ তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ক্রেসিডা এর ছবি

আচৌদা অ্যাঁ

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

অরফিয়াস এর ছবি

উনার লেখার ভূমিকা দেখেই আর পড়তে ইচ্ছা হলোনা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হিমু এর ছবি

আচৌদা ইইউকে কড়া করে বকে দিয়ে একটা লেখা লিখবেন আশা করি।

অরফিয়াস এর ছবি

বাংলাদেশ আজকের এই সিদ্ধান্তে অটল না থাকলে "ইইউ" এর গলার স্বর এত নরম কখনোই হতোনা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

দ্রোহী এর ছবি

যারা রোহিঙ্গাদের জন্য কানতেছে তারা কি নিজের বাড়িতে একটা করে রোহিঙ্গা পরিবার রাখতে পারবে? দেঁতো হাসি

অরফিয়াস এর ছবি

তারা রাখবে না আবার পরে ভাগে কম পড়লে নিজেরাই গালি দিবে !!

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হিমু এর ছবি

বার্মা তার মানুষদের পাছায় লাথি মেরে বের করে দেয়ার পরও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশংসায় ভাসছে। আর হিউম্যান রাইটস ওয়াচের আবালচোদাগুলি দুইদিন পরপর কাউকাউ করছে আমাদের মানবিকতা নিয়ে। শুয়োরের বাচ্চারা, মানবিকতা নিয়ে বার্মারে কিছু কস না ক্যা?

সাইদ এর ছবি

আপনার এই মন্তব্যটি কি আমি ফেসবুকে দিতে পারি?? দয়া করে একটু জানাবেন

হিমু এর ছবি

ভাই, সিরিয়াসলি, আপনি কি নিজে নিজে একটা গালি দিতে পারবেন না এই হাগুচোরগুলিকে? আমার মন্তব্য নিতে হবে?

সাইদ এর ছবি

দু:খিত ভাই আমি ঠিক মত বুঝাইতে পারি নাই। গালি আমি নিজেই দিব ।

বার্মা তার মানুষদের পাছায় লাথি মেরে বের করে দেয়ার পরও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশংসায় ভাসছে।

শুধু এই লাইনটা আর লিঙ্কটা

হিমু এর ছবি

স্বচ্ছন্দে ব্যবহার করতে পারেন। অসহিষ্ণু মন্তব্য করে থাকলে দুঃখিত। প্রচণ্ড বিরক্ত লাগছে। বাংলাদেশী হয়ে বেঁচে থাকা একটা টয়েলসাম ব্যাপার রে ভাই। কিছু মনে কইরেন না।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

ঠিক কী কারণে বার্মারে যুক্তরাষ্ট্র প্রশংসা করলো রিপোর্ট পরে তার আগা মাথা উদ্ধার করা গেলো না, খালি প্রশংসা যে করছে সেইটা বুজছি। শান্তিতে নোবেলরে লোকাল সরকার কতোটা বেল দেয় তার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশংসার একটা সম্পর্ক আছে বলে মনে অয়। হাততালি

হিমু এর ছবি

কোকাকোলার বোতল পাহারা দিতে বঙ্গোপসাগরে মার্কিন উপস্থিতি এখন সুমায়ের দাবি।

মন মাঝি এর ছবি

যদ্দিন কওয়ার ছিল, তদ্দিন তো কইসেই! এখন ঐসব কওয়াকওয়ির ফলটা রসে টইটুম্বুর আর পেকে লাল টুকটুকে হয়ে অবশেষে গাছে মর্ত্যমান হয়ে ঝুলা শুরু করসে যখন, ওরা তখন সেটা টুপ করে মুখে পুরে ফেলার চেষ্টা করবে না, আপনি সেটা ভাবলেন ক্যাম্নে? হাসি

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ নিয়া নতুন কিছু বলার নাই। এইটা পশ্চিমা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থের একটা এডভান্স পার্টি। এর প্রতিষ্ঠাই হইছিল শীত-যুদ্ধকালে সোভিয়েত ইউনিয়নকে টার্গেট করে। কয়লা যায়না ধুলে, স্বভাব যায়না মলে... না কি যেন বলে? এখন ওরা বাংলাদেশ নিয়াই পড়বে, বার্মা ওদের বসদের জন্য অনেক বড় কেক। এরা যত না 'আবালচোদা', তার চেয়ে মনে হয় অনেক বেশি মিচকা শয়তান।

আমাদের এক প্রবীণ কূটনীতিক টক-শোতে কিছুদিন আগে বললেন, '৭৮ (সম্ভবত, নিশ্চিত মনে পড়ছে না) -এর রোহিঙ্গা বিতাড়নের সময় মার্কিনিরা নাকি সেসময় আমাদের সরকারকে বার্মার সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তেও প্রচুর উষ্কানি দিয়েছিল। আর এখন দেখেন কেমন উলটা অবস্থা। এটাই মনে হয় রিয়াল-পলিটিক।

সোজা কথায়, বার্মার সম্ভবত প্রচুর আনট্যাপ্‌ড প্রাকৃতিক সম্পদ/রিসোর্সেস আর নানাধরণের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাজনিত বানিজ্যিক পোটেনশিয়াল আছে। পশ্চিমাদের সেসবে ভাগ বসানোর জন্য আর তর সইছে না, চায়নারে তো অনেক ওয়াক ওভারই দিল তারা। তাছাড়া চায়নার প্রভাব-বলয় থেকে বার্মাকে বের করে আনার ইচ্ছাও থাকতে পারে তাদের। আর চায়নারও মনে হয় বেশি কিছু করার নাই, বার্মা নেপাল বা ভুটান না।

****************************************

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হিমু এর ছবি

আমার মনে হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে "সামরিক সমাধান"-এর জন্য একটা সমস‌্যা চায়। ভারতের সাথে বাংলাদেশের যুদ্ধ লাগানো কঠিন, বার্মার সাথে লাগানো সহজ। একবার যদি সীমান্ত খুলে দেয়া হয়, ঐ পারে বার্মিজরা সৈন্য এবং বেসামরিক গুণ্ডাদের যুগ্ম আক্রমণে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দেবে। বার্মার সাথে বছর দুয়েক আগেও যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিলো (মিডিয়াতে খুব একটা আসেনি ব্যাপারটা), আর নানা কারণে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কটা তিক্ত। একবার যদি একটা স্বল্পমেয়াদী যুদ্ধও লাগানো যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার সী-বর্ন নাক বঙ্গোপসাগরে ঢোকানোর একটা উছিলা পাবে। ইদানীং তাদের সামরিক লোকজন আমাদের সশস্ত্রবাহিনীর সাথে নানা মহড়াটহড়া করে। "শান্তি" আর "গণতন্ত্র" যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের গোয়া দিয়ে বের হয়, তারা এটাকে এই অঞ্চলে ফেরি করতে আসবেই। এ অঞ্চলে চীনের নৌ-সামরিক প্রভাবের নকশায় চট্টগ্রাম-আরাকান একটা গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল, কাজেই একটা যুদ্ধ বাধাতে পারলে মার্কিনদের লাভ। নিজেদের দেশে নানা সমস্যা মোকাবেলায় ব্যর্থতাকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য পৃথিবীতে কোথাও না কোথাও "শান্তি" আর "গণতন্ত্রের" খাতিরে একটা যুদ্ধ দরকার তাদের। ইরাক আর আফগানিস্তান থেকে তাদের পাছা গুটিয়ে বেরিয়ে আসতে হবে, লিবিয়া-মিশরও ঠাণ্ডা হয়ে গেছে, এখন সময় ইয়েমেন আর আরাকানের। আরাকানে একটা গ্যাঞ্জাম একবার লাগাতে পারলে আল-কায়েদার কুমীরছানাকে ঐখানেও পাঠানো যাবে।

এর মূল্য তারা দিতে বলছে বাংলাদেশকে। আর মানবিকতার জন্য কাঁদছে কিছু মৌসুমী বেবুন।

সাইদ এর ছবি

চায়না তো এদ্দিন বার্মারে সব দিক দিয়া সাহায্য দিত। ঠিক কী কারণে চায়না মার্কিনিদের বার্মা ঢুকা মেনে নিচ্ছে এইটাও অবাক করার মত। নাকি চায়না মার্কিন ভাই ভাই হয়ে গেছে ???

হিমু এর ছবি

দুইটা কারণ থাকতে পারে। এক, চীন চায় বার্মার লোকজনকে গণতন্ত্র ধরানোর খরচটা ইউএসএর উপর দিয়ে যাক। মার্কেট ভেঙেচুরে কোক-ফান্টার মতো জিনিসগুলি ঢোকানোর যে প্রারম্ভিক হাঙ্গামা, সেটা মার্কিনিরা করার পর ওরা বাজারের নিয়মে সেটা নিজেদের হাতে নিয়ে নেবে।

দুই, কালা আদমি ওবামা যেমন প্রেসিডেন্ট হয়েছে, কয়েক দশক পর হয়তো এক চিঙ্কু আদমি প্রেসিডেন্ট হবে। চীন তখন গোটা দুনিয়া দখলে নিয়ে নেবে। তাই বার্মা নিয়ে ওদের মাথাব‌্যথা নাই। যে জমি আপনি কয়েক বছর পর দখলই করবেন, সেখানে কেউ আমগাছ লাগালে আপত্তি করবেন কেন? আমগাছশুদ্ধু দখল করবেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

যে জমি আপনি কয়েক বছর পর দখলই করবেন, সেখানে কেউ আমগাছ লাগালে আপত্তি করবেন কেন? আমগাছশুদ্ধু দখল করবেন।

হ, সেটাই হবে মনে হয়!

হিমু এর ছবি

ড. ইব্রাহীম রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে না পারার দুঃখে জারেজার। শরণার্থী শিবিরের বাইরে কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা মানবেতর জীবন যাপন করছে। ইব্রাহীম এমন একটি রোহিঙ্গা পরিবারকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিয়ে উদাহরণ স্থাপন করতে পারেন, বাঙালির আতিথ্যের সুনাম বজায় রাখতে পারেন, নিজের বিবেককেও ঠাণ্ডা করতে পারেন।

কিন্তু তিনি কি তা করবেন?

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

শুরুতে তোমার পোস্টের কয়েকটি বিষয়ের সমালোচনা করবো:

অনেকের ধারণা, স্বল্প ব্যায়ের জীবনযাত্রা কিংবা ব্রিটিশ অধ্যুষিত ভারতীয় উপমহাদেশে কাজের জন্য তত্কালীন বার্মায় স্থানান্তর।

ব্রিটিশরা বার্মায় শাসক হিসেবে আসার অনেক আগে থেকেই রোহিঙ্গারা মায়ানমারে ছিল। পঞ্চদশ শতাব্দী হতে অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত আরাকানে রোহিঙ্গাদের নিজেদের রাজ্য ছিল। (সূত্র: আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অরগানাইজেশান)
রোহিঙ্গারা হচ্ছে চাঁটগাইয়া, রাখাইন, আরাকানী, বার্মিজ, ভারতীয়, মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষদের মিশ্রণে উদ্ভুত সংকর জাতি।

এছাড়াও একটি তথ্য প্রচলিত আছে রোহিঙ্গা ইতিহাসবিদদের মাঝে যার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে, এটি হলো, প্রাচীন আমলে আরব সওদাগরী জাহাজ আরাকানের নিকটবর্তী অঞ্চলে কোনো কারণে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। পরবর্তিতে এই জাহাজের লোকেরা আরাকানের রাজার দয়ায় এখানেই থেকে যায় এবং এই আরব সম্প্রদায়ের লোকেরাই পরে কালক্রমে রোহিঙ্গা হিসেবে পরিচিত হয়।

এটা তথ্য নয়, রোহিঙ্গা লোক-কথা। কোন রোহিঙ্গা ইতিহাসবিদের রেফারেন্স এটা?

যেহেতু আরাকান অঞ্চলের আদি বাসিন্দারা ছিলো রাখাইন তাই নতুন সম্প্রদায়ের লোকেদের আগমনে স্বাভাবিক ভাবেই যেই আর্থ-সামাজিক প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হয় বৈরীতা আসে সেখান থেকে, এখানে ধর্ম মূল কারণ নয়।

রোহিঙ্গারা আরাকানে হঠাৎ করে বাইরে থেকে আসা কোন জাতি নয়, অর্থাৎ, রোহিঙ্গারা মাইগ্রেটেড জাতি নয়। তাই, এই যুক্তিটি ধোপে টিকছে কি?

২৮শে মার্চ, ১৯৪২
মিনব্যা এবং ম্রহুং অঞ্চলের প্রায় ৫,০০০ মুসলিম রাখাইন জাতীয়তাবাদী এবং করেন্নি গোষ্ঠির আক্রমনে নিহত হয়। একই সময়ে উত্তর রাখাইন অঞ্চলের মুসলিমরা প্রায় ২০,০০০ আরাকানী ধ্বংস করে। এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে তত্কালীন ডেপুটি কমিশনার U Kyaw Khaing তাদের হাতে নিহত হয়।

এই তথ্যর উৎস: মা ক্যাওয়া জান থার ২০০৮ সালে প্রকাশিত একটি নথি। মা ক্যাওয়া জান থা নিজেই একজন রেসিস্ট। এই রকম ব্যাক্তিত্বের রেফারেন্স কতটা যুক্তিসঙ্গত?

এই রকম গুরুত্বপূর্ণ পোস্টের তথ্যসূত্র হিসেবে এই সাইটটি কতটুকু নির্ভরযোগ্য। ব্লগার ডট কম-এ সহজেই তারিখ-পোস্ট-ছবির অস্ত্রপচার করা যায়। তারপরও, ছবি ও খবরের বিষয়ে কোন তর্কে যাচ্ছি না।

সংখ্যালঘু অত্যাচার বাংলাদেশেও ঘটেছে বিভিন্ন সময়ে কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশগুলো কখনোই সেটিকে দুই দেশের মধ্যকার সমস্যায় পরিনত করেনি বরং বাংলাদেশের সরকার নিজেরাই এই অভ্যন্তরীণ বিষয় রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করেছে।

বাংলাদেশে কোন জাতিকে ইথনিক্যালি ক্লিন্জিং করা হয়েছে বলে জানা আছে কি? তাই, বাংলাদেশের সাথে বার্মার রোহিঙ্গা নিপীড়ণের তুলনা হয় কি?
----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
*** বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সাথে বার্মার রোহিঙ্গা ইস্যুর তুলনা হয় না। তবে, উদ্বাস্তু মাত্রই উদ্বাস্তু, এখানে কে, কেন, কি কারণে উদ্বাস্তু, তা নিয়ে নীতিগত অবস্থান বিষয়ক আলোচনার অবকাশ থাকে না। উদ্বাস্তু মাত্রই নিপীড়িত, অসহায়। উদ্বাস্তুরা আশ্রয়দাতা দেশে সমস্যা সৃষ্টি করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশী উদ্বাস্তুরাও ভারতের আইন-শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, আর্থিক বিষয়ে সমস্যা সৃষ্টি করেছিল। ভারতও বাংলাদেশী উদ্বাস্তু নিয়ে দীর্ঘমেয়াদীভাবে আক্রান্ত হয়েছে; এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ: আসাম। তাই, উদ্বাস্তু ইস্যুতে নীতিগত অবস্থান বিষয়ক সমালোচনা বড়ই বিতর্কিত।
তবে, "রোহিঙ্গা-রাখাইন'২০১২" দাঙায় নিপীড়িত হয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের সীমান্ত না খুলে বিজিবি দিয়ে তাদের সাহায্য করার বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমার অবস্থান:
রোহিঙ্গারা মায়ানমারে নিপীড়িত হয়ে বাংলাদেশে আসছে। ইথনিক্যালি, চাঁটগাইয়াদের সাথে রোহিঙ্গাদের মিল থাকলেও, রোহিঙ্গারা আরাকানের স্থায়ী বাসিন্দা। বার্মায় নিপীড়িত হয়ে বাংলাদেশ-বার্মা সীমান্ত দিয়ে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা প্রকাশ্যে-গোপনে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে, যা আভ্যন্তরীণ সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশের জন্য একটি অনেক বড় ঝামেলা। ইতিমধ্যে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে কয়েক দশক ধরে রিফিউজি ও স্হায়ী বাসিন্দা হিসেবে থাকছে এবং প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গারা বার্মায় নিপীড়িত হয়ে বাংলাদেশে আসছে। "রোহিঙ্গা-রাখাইন'২০১২" দাঙায় নিপীড়িত হয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাইছে। বাংলাদেশ মানবিকতা দেখিয়ে সীমান্ত খুলে দিলে, বাংলাদেশের সমস্যা আরো বাড়বে আর এতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে বার্মিজ সরকার, কারণ, বার্মিজ সরকার চাইছে, যেভাবেই হোক রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিতে। রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দেয়ার জন্য আমি পক্ষপাতি নয়; কারণ, বার্মা এই রোহিঙ্গাদের কখনোই ফেরত নিবে না। নতুন রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুরা জনবহুল-নানান সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশের জন্য বিষফোঁড়া ছাড়া আর কিছু নয়। এছাড়া, বিজিবি নতুন রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের সীমান্ত না খুলে দিয়ে সাহায্য করছে। সীমান্ত বন্ধ রাখা ও বিজিবি দিয়ে নতুন রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের সাহায্য করা বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসনীয় সিদ্ধান্ত।
তবে, একটা কথা মনে রাখা দরকার, "রোহিঙ্গা নিপীড়ণ" যতদিন বার্মায় থাকবে, ততদিন বাংলাদেশও "রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু" নিয়ে সমস্যায় থাকবে। কারণ, দুর্গম সীমান্ত দিয়ে প্রচুর রোহিঙ্গা বার্মা হতে নিপীড়িত হয়ে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশে আসছে, যা ঠেকানো অসম্ভব(সীমান্ত বন্ধ করেও সম্ভব না)।
তাই, আমার দৃষ্টিতে, বাংলাদেশ সরকারের উচিত, আন্তজার্তিক ফোরামে "রোহিঙ্গা নিপীড়ণ ও উদ্বাস্তু" ইস্যুতে সমাধানকল্পে আলোচনা করা ও কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া এবং বার্মিজ সরকারের উপর সকল প্রকারে আর্ন্তজাতিক ও স্থানীয়ভাবে চাপ সৃষ্টি করা।

-----সবশেষে, সময়পোযোগী পোস্টের জন্য তোমাকে অনেক ধন্যবাদ।

বার্মায় রোহিঙ্গা নিপীড়ণ বন্ধ হোক। রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুরা নিজেদের আবাসে ফিরে যাক, এই কামনা করি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।