মঙ্গলে মনুষ্য বসতি: মিশন ২০২৩ !!

অরফিয়াস এর ছবি
লিখেছেন অরফিয়াস (তারিখ: সোম, ১৮/০৬/২০১২ - ১০:২৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিজ্ঞানভিত্তিক কল্পকাহিনীগুলোতে তো হরহামেশাই মানুষ এক গ্রহ থেকে অন্য গ্রহে যাতায়াত করে, আবার স্টিভেন স্পিলবার্গের চলচ্চিত্রে নতুন গ্রহে মনুষ্য বসতি স্থাপন করার গল্প দেখে চোখ বড় বড় হয়ে যায় আমাদের সবারই। পৃথিবীর বাইরে আমাদের সৌরজগত এর অন্যান্য গ্রহ নিয়ে আমাদের আজন্ম আগ্রহ। এমন কেউ নেই যার জীবনের কিছুটা সময় আকাশের দিকে তাকিয়ে তারা দেখে কাটেনি। কল্পনার পাখা মেলে আমরা ওই অসীম শূন্যতার দিকে তাকিয়ে কতো জিনিস নিয়ে ভাবতে পছন্দ করি। চাঁদের বুকে মানুষের প্রথম পদচিহ্ন এঁকে দেয়ার পর থেকেই জল্পনাকল্পনার শুরু, আবার কবে যাচ্ছে মানুষ নতুন আরেকটি গ্রহে। সায়েন্স-ফিকশন এর পাতা থেকে উঠে এসে কবে সত্যি হচ্ছে অন্য গ্রহে মনুষ্য বসতি স্থাপনের চিন্তা। মানুষ কবে শুরু করবে আন্তঃগ্রহ সমাজ ব্যবস্থা কিংবা কবে আমরা এই ঘুরে আসি বলে টুক করে প্যারিস ঘোরার বদলে চলে যাবো মঙ্গলে!!

তবে মনে হচ্ছে অপেক্ষার দিন ফুরোলো। হ্যাঁ, এরকমই আভাস দিয়েছেন "মার্স-ওয়ান" এর হর্তাকর্তারা। অন্য গ্রহে মানুষ পাঠিয়েই ক্ষান্ত দিতে চাইছেন না তারা, সরাসরি প্রস্তাব করেছেন বসতি স্থাপনের!! নাম দেখে এতক্ষণে নিঃশ্চয়ই ধারণা হয়ে গেছে তাদের গন্তব্যস্থল সম্পর্কে। হ্যাঁ, আমাদের পৃথিবীর মানুষের সাধের "লাল গ্রহে" প্রথম মনুষ্য বসতি স্থাপনের বিশাল দক্ষযজ্ঞে হাত দিয়েছেন তারা। শুধু হাত দেয়া বললে ভুল হবে, গোপনে গোপনে অনেক দূর এগিয়েও গিয়েছেন। এবার মনে হয় মঙ্গল গ্রহে মানুষের পা পড়লো বলে!!

MARS One

["মার্স-ওয়ান"]

কল্পবিজ্ঞানের এই স্বপ্নকে সত্যি করতে এগিয়ে এসেছেন ডাচ উদ্যোক্তা ল্যান্সডরপ। এই উচ্চাভিলাষী উদ্যোক্তার সাথে যোগ দিয়েছেন আরও কয়েকজন স্বপ্নবাজ মানুষ। যাদের নিয়ে "টিম মার্স-ওয়ান" । এরা প্রত্যেকেই স্ব স্ব ক্ষেত্রে সফল। এদের সাথে যোগ দিয়েছেন ১৯৯৯ সালের নোবেল বিজয়ী পদার্থবিদ প্রফেসর জেরার্ড। এরা সবাই মিলে হাতে নিয়েছেন ৬ বিলিয়ন ইউএস ডলার বাজেটের একটি আকাশছোঁয়া (মঙ্গলছোঁয়া !!) স্বপ্ন। তাদের লক্ষ্য ২০২৩ সালে মঙ্গলের লাল মাটিতে মানুষ পাঠানো।

তবে এর আগেও যে এধরনের প্রস্তাব করা হয়নি তা নয়। ২০০৮ সালে নাসার প্রকৌশলী ম্যাকলেন এরকমই একটি উদ্যোগের কথা জানান। তবে তিনি চেয়েছিলেন শুধু একজন মানুষকে মঙ্গলে পাঠাতে। তার এই মিশন নিয়ে অনেক আলোচনা হলেও পরবর্তিতে বিভিন্ন প্রতিকূলতার কথা চিন্তা করে এটি বাতিল করা হয়। ম্যাকলেনের এই অসম্পূর্ণ স্বপ্নকেই যেনো বাস্তবে রূপ দিতে নেমেছেন "মার্স-ওয়ান" এর সদস্যরা।

এরই মাঝে, ২০১১ সালে থেকে শুরু হওয়া এই গোপন প্রজেক্টে অনেকটা দূর অগ্রসর হয়েছেন তারা। যোগাযোগ করেছেন বেশ কয়েকটি বেসরকারী সংস্থার সাথে। তাদের সাথে ইতিমধ্যে চুক্তি হয়ে গেছে প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহের। তারা বলছেন, কোনো নতুন প্রযুক্তির প্রয়োজন পড়বেনা এই মিশনে। বর্তমানের প্রচলিত মহাকাশ অভিযানের বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করেই এই কাজ সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর তাদের সংস্থা "মার্স-ওয়ান"। আর এই বিশাল বাজেটের কাজটির জন্য অর্থ যোগানের এক দারুন পদ্ধতিও হাতে আছে তাদের। এই মঙ্গল অভিযানের জন্য অভিযাত্রী বাছাই হতে শুরু করে শেষপর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াটি "রিয়ালিটি শো" এর মাধ্যমে উপস্থাপন করবেন তারা। আর পুরো ১০ বছরের এই টিভিশো তে মঙ্গল অভিযানের শ্বাসরুদ্ধকর সব খুঁটিনাটি দর্শক ঘরে বসেই উপভোগ করতে পারবেন আর তার সাথে সাথে বিপণনস্বত্ব থেকে প্রজেক্টের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থও উঠে আসবে আরামসে। তাই বলতে গেলে পৃথিবীর সব থেকে উত্তেজনাকর টিভি রিয়ালিটি শো এর শুরু হলো বলে!! একই সাথে দুইটি পাহাড় সমান মিশন হাতে নিয়ে এরই মাঝে প্রচার মাধ্যমে বেশ সারা ফেলে দিয়েছে "মার্স-ওয়ান"। রিয়ালিটি শো এর দুনিয়াতে এবার বাকিদের অবস্থা দেখার বিষয় হয়ে দাড়াবে বৈকি।

mars_on_lander_580x343

[অবতরন দৃশ্য]

তবে গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে অভিযানের বিষয়টি কখনই সহজ ছিলোনা। এখনো নেই। বরং বেশ কিছু প্রতিকূলতার সম্মুখে দাড়িয়ে আছে এটি। এর মাঝে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো, মনুষ্যবাহী মহাকাশযান কিভাবে মঙ্গলের হালকা ঘনত্বের বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করবে এবং একই সাথে কি করে মাটিতে অবতরণ করবে, এই বিষয়ে কোনো সমাধান এখনো আলোর মুখ দেখেনি। নয়তো এতদিনে হয়তো আরও অনেকেই আগ্রহ দেখাতো এই বিষয়ে, তাই দেখা যাচ্ছে গোড়াতেই আটকে যাওয়ার অবস্থা। মহাকাশযান অবতরন নিয়ে এত ঝামেলার কারণগুলো একটু দেখা যাক।

মঙ্গলের বায়ুমন্ডলের ঘনত্ব আমাদের পৃথিবী থেকে অনেক কম। তাই কোনো মহাকাশযান পৃথিবীতে ফেরত আসার সময় যেমন করে বায়ুমন্ডলের ঘনত্বের কারণে স্বাভাবিকভাবেই তার গতিরোধ হয় এবং পরবর্তিতে প্যারাসুট এর সাহায্যে কিংবা রকেট প্রপালশন এর সাহায্যে মাটিতে নেমে আসে, সেরকম করে সম্ভব নয়। বরং তীব্র গতির এই মহাকাশযান যখন মঙ্গলে অবতরণ করতে যাবে তা অন্তত ১০ গুন বেশি গতিতে মাটিতে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে। এই বিষয়টি নিয়ে ২০০৪ সালে নাসা কর্তৃক আয়োজিত সভাতে বেশ গুরুগম্ভীর আলোচনা হয়। কিন্তু প্রস্তাবিত সব কয়টি পদ্ধতিরই কোনোনা কোনো সমস্যা থেকে যায়।

যদি অবতরণের জন্য এয়ারব্যাগ ব্যবহার করা হয় যা কিনা মহাকাশযানটিকে একটি আপাত ভারসাম্যপূর্ণ এবং সংরক্ষিত অবস্থানে নামিয়ে আনবে তাতেও সমস্যা দেখা দেয়। প্রথমত মানুষ বহনকারী যানের ওজন অনেক বেশি হবে এবং এতটা ওজনের মহাকাশযান এরকম তীব্র গতিতে যখন অবতরন করবে, মঙ্গলের বায়ুমন্ডলের কম ঘনত্বের জন্য কোনো এয়ারব্যাগই এর পতন রোধ করতে সক্ষম হবেনা। এছাড়াও যখন মানুষকে বাসস্থান তৈরির উপযোগী সব কিছু বহন করে নিয়ে যেতে হবে তখন সেই মহাকাশযানের ওজন কোনভাবেই ১০ মেট্রিক টনের কম হবেনা যা এয়ারব্যাগ দিয়ে অবতরণের জন্য অকল্পনীয় একটি ওজন। পূর্বে যেসব মিশনে রোবট পাঠানো হয়েছিল তার মাঝেও প্রায় ৬০ ভাগ ব্যর্থ হয় শুধু মাত্র এই অবতরণজনিত সমস্যার জন্য।সেখানে মহাকাশযান কিংবা রোভারের ওজন ছিলো এর তুলনায় অনেক কম।

এছাড়াও প্যারাসুট ব্যবহার করার পদ্ধতি নিয়েও আলোচনা হয়। কিন্তু এখানেও সমস্যা, একে মঙ্গলের বায়ুমন্ডল যথেষ্ঠ কম ঘনত্বের। এর উপরে নামার সময় হঠাৎ বাতাসে জায়গা পরিবর্তন হয়ে যাওয়া অসম্ভব কিছু নয়। এতে অবতরণের জায়গা ছেড়ে অন্য জায়গায় নামলে পুরো যানটি আবার আসল জায়গায় নিয়ে যাওয়ার ঝামেলা। আর তাতে যা জ্বালানি খরচ হবে তা চন্দ্রাভিযানের কয়েকগুন বেশি। আর এই ভারী জ্বালানি পৃথিবী থেকে মঙ্গল পর্যন্ত বহন করে নিয়ে যাওয়া কোনো ভাবেই সমাধান হতে পারেনা। এছাড়াও এই বিশাল ওজনের যানটি মাটিতে অবতরণের আগে ঠিক কয়েক মিনিট সময় পাবে প্যারাসুট খোলার। তাতে যে পরিমান চাপ আসবে প্যারাসুটের উপর তাতে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেক। এছাড়াও সঠিকভাবে যদি অবতরন করতে হয় তাহলে অন্তত ১০০ মিটার পরিধির সুপারসনিক প্যারাসুট প্রয়োজন, যা কিনা সঠিক ভাবে খুলে কাজে লাগতে লাগতে মাটিতে আছড়ে পড়বে অভিযাত্রীরা।

হিট শিল্ড এবং থ্রাস্টার ব্যবহার করে অবতরণের কথা চিন্তা করা হয়েছে। কিন্তু রকেট প্রপালশন একটি অতি বিপদজনক পদ্ধতি। এই অস্থিতিশীল পদ্ধতিতে নামার জন্য বিপুল পরিমানের জ্বালানি প্রয়োজন এবং তাও প্রচন্ড তাপ ও গতিতে নির্গত হবে মহাকাশযান থেকে। এই পদ্ধতিতে যেকোনো মুহুর্তে এরকম ভারী মহাকাশযানের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা শতভাগ। এছাড়াও প্রপালশন এর জন্য যে পরিমান প্রচন্ড চাপ ও ঝাকুনি সৃষ্টি হবে তাতে যানটি নামার আগেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হবার সম্ভাবনা শতকরা ৯৯ ভাগ। কিন্তু যদি প্যারাসুট, হিট শিল্ড এবং থ্রাস্টার ব্যবহার করা হয় তাহলে একটা সম্ভাবনা দেখা দেয়। কিন্তু আবার ওই প্যারাসুট ঠিকমত কার্যকর হওয়া নিয়ে সমস্যা এতে লাঘব হয়না।

পরবর্তিতে সুপারসনিক ডিএক্সিলারেটর কিংবা স্পেস এলেভেটর ব্যবহারের উপর জোর দেয়া হয়।কিন্তু স্পেস এলেভেটর এখনো একটি পরীক্ষাধীন প্রক্রিয়া। তাই এর কার্যকারিতা নিয়ে এখনো কিছু বলা সম্ভব হচ্ছেনা। তাই নাসার বিজ্ঞানীদের কাছে অন্তত এই অভিযান এখনো সুদূর ভবিষ্যত। এছাড়াও তাদের মাথাব্যথার আরেকটি কারণ হচ্ছে এর উচ্চ বাজেট। একটি প্রজেক্টেই ৬ বিলিয়ন ডলার দেয়ার মতো বাজেট নাসার কাছে নেই যখন এই প্রজেক্টের ফলাফল সম্পূর্ণ অনিঃশ্চিত।

কিন্তু তাই বলে থেমে নেই মার্স ওয়ানের সদস্যরা। তারা ইতোমধ্যে একটি রোড ম্যাপ দিয়ে দিয়েছেন। ২০১১ সালের মাঝেই তারা এই অভিযানের জন্য সকল প্রাথমিক প্রস্তুতি এবং ড্রয়িং চূড়ান্ত করেন। এরপরেই তারা বসেন পৃথিবীর বেসরকারী সব প্রতিষ্ঠানের সাথে যারা মহাকাশ অভিযানের জন্য উপাদান তৈরী ও সরবরাহ করতে প্রস্তুত। ২০১৪ সালে তাদের কাজ শুরু হবে যেসব উপাদান এই মিশনে পাঠানো হবে তাদের প্রস্তুতি নিয়ে। ২০১৬ সালে প্রথম সরবরাহ যানটি ২৫০০ কে.জি সামগ্রী নিয়ে মঙ্গলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে এবং সব কিছু ঠিক থাক থাকলে পূর্বনির্ধারিত জায়গার আশেপাশেই অবতরণ করবে। ২০১৮ তে একটি রোবট পাঠানো হবে মঙ্গলের মাটিতে মানুষ অবতরণের জন্য গ্রহনযোগ্য একটি স্থান খুঁজে বের করার জন্য। এই কাজটি পৃথিবীর মানুষ সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে দেখতে পাবে ঘরে বসে। ২০২১ সালে মনুষ্য বসতি স্থাপনের উপযুক্ত সকল সামগ্রী নিয়ে কয়েকটি যান এবং রোভার মঙ্গলে অবতরণ করবে এবং অভিযাত্রীদের জন্য অপেক্ষা করবে তাদের জন্য নির্ধারিত অবতরনস্থলে। ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে অভিযাত্রীদের জন্য প্রয়োজনীয় সকল কিছুর প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। সবকিছু ঠিকঠাক ভাবে সম্পন্ন হলে ১৪ই সেপ্টেম্বর, ২০২২ হতে যাচ্ছে মানুষের সভ্যতার ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় দিন। এইদিনই মঙ্গলের উদ্দেশ্যে পৃথিবী ছেড়ে যাবে চার জন অভিযাত্রীর একটি দল। দীর্ঘ সাত মাসের যাত্রা শেষে ২০২৩ সালে প্রথম মঙ্গলের মাটিতে পা পড়বে পৃথিবীর মানুষের প্রথম দলটির। এরপর ২০২৫ সালে পাঠানো হবে দ্বিতীয় দল। আর হ্যাঁ, ২০১৩ সাল থেকে শুরু হতে যাচ্ছে এই রোমাঞ্চকর অভিযানের জন্য অভিযাত্রী বাছাই এর কাজ। প্রথম ৪০ জন অভিযাত্রী সারা পৃথিবী থেকে খুঁজে নেয়া হবে এরপর এদের নিয়ে শুরু হবে দীর্ঘ ১০ বছরের কার্যক্রম। এই ১০ বছরে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা উতরে পৃথিবীর কয়েক কোটি উত্সুক দর্শকের সামনে শেষ পর্যন্ত থাকবে ৪ জন অভিযাত্রী। যারা ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনো গ্রহে মনুষ্য বসতি স্থাপনের মতো একটি অসাধারণ মিশন সফল করতে যাত্রা করবে। এই মিশন সম্পর্কে সকল খুঁটিনাটি বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে এখানে

mars-one1

[মানুষের প্রথম মঙ্গল বসতি হবে কিছুটা এরকম]

এই মিশনে মহাকাশযান উৎক্ষেপনের জন্য মার্স ওয়ান ব্যবহার করছে স্পেস এক্স ফ্যালকন ৯ এবং অবতরণের জন্য ব্যবহার করছে স্পেস এক্স ড্রাগন। যদি অবতরণজনিত সব সমস্যা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভবপর হয় তাহলে আর মাত্র ১১ বছর পরেই মঙ্গল জয় করতে যাচ্ছে মানুষ। হয়তো সেই দিনটি সচক্ষে দেখার জন্য আমরা অনেকেই বসে থাকবো টিভি সেটের সামনে।

20080111_sunsetmoonrise

[স্পেস এক্স ফ্যালকন ৯]

SpaceX_Dragon

[স্পেস এক্স ড্রাগন]

আসলেই কি তাহলে কল্পবিজ্ঞানের সেই বহুবার পড়া গল্পগুলো সত্যি হতে চলেছে অদূর ভবিষ্যতে? মানুষ কি তাহলে পৃথিবীর পরে তাদের দ্বিতীয় কলোনি স্থাপন করবে মঙ্গলে? একসময় কি মানুষ বেড়িয়ে আসার নাম করে ঘুরে বেড়াবে গ্রহ-গ্রহান্তরে? নাকি শুধুই আর একটি কর্পোরেট পলিসির বাস্তবায়ন দেখতে চলেছি আমরা? এই সকল প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য আপাতত অপেক্ষা করতে হচ্ছে ২০২৩ সাল পর্যন্ত!

তাহলে আর দেরি কি? অভিযাত্রী বাছাইয়ে নাম লেখানোর প্রস্তুতি শুরু করে দিক আগ্রহীরা। হয়তো আমাদের মাঝেই কেউ একজন প্রথমবারের মতো পা রাখবে মঙ্গলের লালচে রুক্ষ মাটিতে। তবে ব্যাগ গুছিয়ে দৌড় দেয়ার আগে আসল কথা বলতে ভুলেই গেছি, এই মিশনের আর একটি নাম হচ্ছে "ওয়ান ওয়ে ট্রিপ টু মার্স"। কারণ যারা পৃথিবী ছেড়ে মঙ্গলে যাচ্ছে তাদের কেউই আর পৃথিবী ফেরত আসছেনা। তাদেরকে থেকে যেতে হবে ওই দুরের লালচে গ্রহটাতে মানব সভ্যতার পতাকা হাতে নিয়ে!!

শেষ করার আগে "মার্স-ওয়ানের" মনকাড়া এই ভিডিও প্রেজেন্টেশনটা দেখে নিলে মন্দ হবেনা।


মন্তব্য

সত্যপীর এর ছবি

ভাই তো গীয়ারে আসেন, একের পর এক দুর্দান্ত পোস্ট। কিপিটাফ চলুক

তবে ওয়ান ওয়ে ট্রিপের ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং। এদের লজিস্টিক সাপ্লাই এর প্ল্যানটা কি জানলে ভালো হত। আপনি কয়টা লিঙ্ক দিসেন দেখলাম, পড়ে দেখব বিকালে।

..................................................................
#Banshibir.

অরফিয়াস এর ছবি

হে হে সদ্য প্রাপ্ত বেকারত্বের ফল আর কি !! দেঁতো হাসি

আসলে ওয়ান ওয়ে ট্রিপ ছাড়া সমাধান নেই কারণ মঙ্গলের ওই পরিবেশে যেখানে অবতরনই সমস্যা সেখানে একটা মহাকাশযান আবার উৎক্ষেপন করা সম্ভবপর নয়। এই প্রযুক্তি এখনও ব্যবহার করা সম্ভবপর নয়। তবে "মার্স-ওয়ান" প্রস্তাব করেছে যে প্রথম গ্রুপ বসতি স্থাপন করার পরে দ্বিতীয় গ্রুপ যাওয়ার পরে মঙ্গল থেকে উৎক্ষেপনযোগ্য একটি পদ্ধতি হয়তো নির্মান সম্ভবপর হয়ে যাবে। তবে এখনও আসলে পুরো ব্যাপারটি একটি অনিঃশ্চয়তার উপরে আছে। আর দুর্ঘটনারও একটা সম্ভাবনা আছে যেখানে পুরো যান ধ্বংস হয়ে পুরো মিশন নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছেনা।

"মার্স-ওয়ান" এর ওয়েবসাইটে মোটামুটি সব প্রশ্নের উত্তর দেয়া আছে। ওদের সাপ্লাই প্ল্যানটাও ভালোই মনে হলো। ওরা প্রথমে একটি এক্সপ্লোরার রোবট পাঠাবে যেটা অবতরনযোগ্য একটি জায়গা খুঁজে বের করবে। এর পরে প্রথম প্রাথমিক সাপ্লাই যাবে। তাতে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাও থাকবে যার মাধ্যমে দরকারী কাজগুলো এগিয়ে রাখা সম্ভবপর হবে। এর পরে যাবে ফাইনাল সাপ্লাই, যাতে থাকার জায়গা হতে শুরু করে অক্সিজেন উত্পাদন, সোলার প্লেট ইত্যাদি সব থাকবে। সাথে যাবে স্বয়ংক্রিয় রোবট এবং রোভার। এরা বাকি কাজগুলো সম্পন্ন করবে। অভিযাত্রী যাওয়ার আগেই পর্যাপ্ত অক্সিজেন এবং বিদুৎ উৎপন্ন হয়ে যাবে। আর যেহেতু প্রাথমিক সাপ্লাই আগেই চলে যাচ্ছে সেহেতু এই দুই সাপ্লাই যানের মাঝে যোগাযোগ সহজ হবে। এরপরে সাত মাস পরে যাবে অভিযাত্রীদের যান। এদের যানটি গ্রহণ এবং জায়গামত নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব পালন করবে ট্রেলার এবং রোভারগুলো। আর এরপরে অভিযাত্রীরা নিজেদের কাজ শুরু করবে। সাধারণ জীবনযাত্রার সব উপাদান দেয়া হচ্ছে এবং বাইরে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত স্যুটও দেয়া হচ্ছে যা আগের স্যুটগুলোর থেকে প্রযুক্তিগত ভাবে বেশি উন্নত।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

কনগ্রাচ্যুলেশন!!!

অরফিয়াস এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ মুর্শেদ ভাই। দেঁতো হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

লেজ কাটা পড়েছে দেখছি!

অরফিয়াস এর ছবি

হ্যাঁ পিপিদা, লেজ শেষপর্যন্ত কাটা পড়লো !!

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তাপস শর্মা এর ছবি

দুর্দান্ত পোস্ট। বিকেলে ফেবুতে তোমার শেয়ার করা একটি ছবি দেখে ভাবছিলাম বিষয়টা নিয়ে তুমি হয়তো নাড়াচাড়া করছ।

বাই দ্যা ওয়ে অভিনন্দন।

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ তাপস দা। হ্যাঁ, আজকেই বিষয়টি নজরে এলো। পরে বিস্তারিত পড়াশোনা করলাম।

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি এর ছবি

উত্তম জাঝা!

অরফিয়াস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

দুর্দান্ত পোস্ট।

সচলত্বের অভিনন্দন।

হিল্লোল

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ হিল্লোল। হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা ভাল হয়েছে। উত্তম জাঝা! কিন্তু ভাইজান, খাবার ও পানির কি ব্যবস্থা হবে? একটু বুঝিয়ে বললে ভাল হত।

অরফিয়াস এর ছবি

খাবার/পানির ব্যবস্থার জন্য দেখুন এখানে। আরও প্রশ্নের জবাবও আছে ওখানে বিস্তারিতভাবে।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

বাহ, দারুণ ব্যাপার তো!
কিন্তু মানুষ ওখানে কতদিন বাঁচবে? বায়ুমন্ডল থেকে অক্সিজেন না এক্সট্রাক্ট করতে পারলে সাপ্লাই দিয়ে খরচ পোষানো যাবে! অথবা আরেকটা কাজ করা যেতে পারে-- জিএম-মানুষ তৈরি করা যে কিনা অক্সিজেন ছাড়া চলতে পারবে হাসি

অরফিয়াস এর ছবি

পিপিদা, এদের প্ল্যান তো পুরো নতুন একটা বসতি স্থাপন করা। তাই মানুষকে ওখানেই জীবন কাটানোর জন্য পাঠানো হচ্ছে। আর অক্সিজেনের জন্য এরা পানির অনু বিভাজন করার প্রক্রিয়া ব্যবহার করবে বলে দেখাচ্ছে। আর নাইট্রোজেন নেয়া হবে বায়ুমন্ডল থেকে। এছাড়াও ওদের সাইটে অনেক খুঁটিনাটি প্রশ্নের জবাব দেয়া আছে।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

পড়লাম; তবুও সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। এত এনার্জি কি পাওয়া যাবে? হয়তো যাবে। বাস্তবায়িত করার আগে এরকম সব মিশনই অবাস্তব মনে হয় বৈকি।

তার পরে ধরেন জৈবিক বিষয় আশয় তো আছেই। মানুষকে নিশ্চয় জোড়ায় জোড়ায় পাঠাতে হবে, নয়তো একজনের সাথে কয়জন থাকবে? এর পর ধরেন সন্তান জন্ম দেয়ার বিষয়টা আসবে। মঙ্গল গ্রহে বাচ্চা জন্মানো কি চাট্টিখানি কথা!

অরফিয়াস এর ছবি

হ্যাঁ, সন্দেহ আমারও আছে। আসলে এখনও তো নাসার বিজ্ঞানীরা অবতরণের বিষয়ে দ্বিধাবিভক্ত তাই "মার্স-ওয়ান" এর সদস্যরা কিভাবে এই অবতরণের সমস্যা মোকাবেলা করবে সেটা অনেক বড় একটা বিষয়। আর বাদবাকি জিনিসগুলো আসছে তার পরে। এনার্জির ব্যাপারে তো এরা ওই একই কথা বলছে, তবে কিছু জায়গায় এদের জবাব দায়সারা মনে হওয়া স্বাভাবিক কারণ এখনও তো কিছুই নিঃশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা।

আর জৈবিক বিষয়েও দেখলাম এরা ভেবে দেখেছে এবং বংশবৃদ্ধিতে এদের কোনো আপত্তি তো দেখলাম না। আর এরা পাঠাবেও স্ত্রী-পুরুষ মিলিত অভিযাত্রী দল। আর সন্তান জন্ম নেয়ার বিষয়টি আসলেই জটিল। এই ব্যাপারে ধারণা পাইনি সঠিকভাবে।

তবে এরা বলতে চাইছে যে, মানুষের সভ্যতাই গড়ে উঠেছে এধরনের ঝুকিপূর্ণ মিশন দিয়ে। যেমন নর্থ পোল কিংবা সাউথ পোল এ কেও অভিযানে গেলে সে ভালো করেই জানে তার জীবিত ফেরত আসার সম্ভাবনা কম। আবার ফার্স্ট সেটেলাররা সব সময়ই কিছুটা আত্মত্যাগের মাঝে দিয়ে যায় ভবিষ্যতের জন্য। তাই কষ্টকর পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর জন্যই এদের ১০ বছরের দীর্ঘ প্রোগ্রাম যাতে মানসিক ও শারীরিক ভাবে অভিযাত্রীদের পুরোপুরি তৈরী করা সম্ভব হয়। তারপরও সন্দেহ তো থাকবেই।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

রাগিব এর ছবি

মঙ্গল গ্রহে সশরীরে গিয়ে লাভটা কী একটু বোঝার চেষ্টা করছি। এর চাইতে রোবট পাঠানো অনেক (১) কম খরচের (২) মানুষ পাঠালে যে ঝুঁকি থাকে, তার চাইতে অনেক কমের (৩) অনেক বেশি এফিশিয়েন্ট।

যদি উদ্দেশ্য হয় মঙ্গল গ্রহের খনিজ আহরণ বা বৈজ্ঞানিক গবেষণা করা, তাহলে রোবট পাঠালেই কাজ চলে। মানুষ পাঠাতে হলে পাঠাবার সময়েই এতো ঝামেলা, তার পরের দিকে আর কথাই নাই। ওয়ান ওয়ে জার্নিতে শুরুতে কেউ আগ্রহী হলেও পরে কেবিন ফিভার টাইপের মানসিক বৈকল্যে ভুগতে পারে। তার উপরে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় মানুষ পাঠিয়ে দুর্ঘটনায় তাদের অপমৃত্যু হলে (যার ৬০% এর বেশি সম্ভাবনা) পুরা ব্যাপারটা নিয়েই জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলবে। মঙ্গল গ্রহে যেহেতু অক্সিজেন বায়ুমন্ডল নাই, সেটার ব্যবস্থা করতে হবে, পানির ব্যবস্থা করতে হবে, বাথরুম লাগবে(!!), আর পৃথিবীর রোগজীবানু যাতে সেখানে গণ্ডগোল না পাকায়, সেটার কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করতে হবে।

সব মিলিয়ে এই প্রজেক্ট কেবল "করে দেখালুম" টাইপের একটা প্রজেক্ট ছাড়া আর কিছুই না। আপাত ভাবে অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক, এবং প্রযুক্তিগতভাবে এই প্রজেক্টের কোনো উপযোগিতা নাই। শখের দাম ট্রিলিয়ন ডলার হয়ে পড়লে সেটা আর বাস্তবসম্মত থাকে না। আর এই প্রজেক্টে বৈজ্ঞানিক যে লাভটা হতে পারে, রোবট পাঠিয়ে সেটা খুব সহজেই সম্ভব।

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

জাবেদুল আকবর এর ছবি

চলুক

অরফিয়াস এর ছবি

রাগিব ভাই, "মার্স-ওয়ানের" প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে মঙ্গলে মানুষের বসতি স্থাপন করা। অর্থাৎ পৃথিবীর পরে দ্বিতীয় মানব কলোনি। রোবটও এরা পাঠাচ্ছে কাজের জন্য আগে কিংবা পরে। কিন্তু যেহেতু উদ্দেশ্যটাই মনুষ্য বসতি স্থাপনের তাই মানুষ তো পাঠাতেই হচ্ছে। আর শুধু একবার নয়, এরা প্রথম মিশন সফল হলে পরের মিশনেও চারজন মানুষ পাঠাবে ২০২৫ সালে। এরপরে ধাপে ধাপে পাঠাতেই থাকবে। কিন্তু এই প্রথম দুই গ্রুপ হচ্ছে মঙ্গলে মানব সভ্যতার পরিচালক বলতে পারেন।

বাদবাকি সব কিছুরই প্ল্যান এরা করে রেখেছে। একটি কলোনি তৈরী করতে যা যা আবশ্যক তার সবই এরা পাঠাবে ধাপে ধাপে। আর বেশ কিছু উন্নত প্রযুক্তি এবং হাইব্রিড বীজ ব্যবহার করে উন্নত গ্রিন হাউজ এর মাধ্যমে এরা ওখানেই খাবার এর ব্যবস্থা করার কথা বলছে।

আর আপাতদৃষ্টিতে এটা বেশ বেখাপ্পা এবং অতি উচ্চাভিলাষী প্রজেক্ট মনে হলেও ভেবে দেখুন বিজ্ঞানের কোন স্বপ্নটা উচ্চাভিলাষী নয়। সেদিন যদি মানুষ চাঁদে যাওয়ার স্বপ্ন না দেখত তাহলে কি আর যেতে পারতো? যদিও চাঁদে বায়ুমন্ডল নেই এবং মানুষের কোনো কাজেও আসছেনা তাও তো মানুষ পৃথিবীর বাইরে সর্বপ্রথম চাঁদে পা রেখেছে।

ওদের ওয়েবসাইট দেখলে বোঝা যায় চিন্তা ভাবনা এবং প্রযুক্তিগত ব্যাপারে এরা অনেক বেশি উন্নত ধাপে ভেবে বসে আছে। কিন্তু এরা যেভাবে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে তাতে দেখার বিষয় হচ্ছে এটা আসলেই মানব সভ্যতার কোয়ান্টাম লিপ নাকি স্রেফ কর্পোরেট ধান্দাবাজি।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অরফিয়াস এর ছবি

রাগিব ভাই আরও একটা জিনিস, দেখলাম বারাক ওবামা ২০৩০ এর মাঝেই মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছেন। যদি খবর সত্য হয় তাহলে বোঝা যাচ্ছে, মানুষের দ্বিতীয় বাসভূমি খোঁজার দৌড় ভালই শুরু হয়েছে।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

রাগিব এর ছবি

রাগিব ভাই, "মার্স-ওয়ানের" প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে মঙ্গলে মানুষের বসতি স্থাপন করা। অর্থাৎ পৃথিবীর পরে দ্বিতীয় মানব কলোনি। রোবটও এরা পাঠাচ্ছে কাজের জন্য আগে কিংবা পরে। কিন্তু যেহেতু উদ্দেশ্যটাই মনুষ্য বসতি স্থাপনের তাই মানুষ তো পাঠাতেই হচ্ছে। আর শুধু একবার নয়, এরা প্রথম মিশন সফল হলে পরের মিশনেও চারজন মানুষ পাঠাবে ২০২৫ সালে। এরপরে ধাপে ধাপে পাঠাতেই থাকবে। কিন্তু এই প্রথম দুই গ্রুপ হচ্ছে মঙ্গলে মানব সভ্যতার পরিচালক বলতে পারেন।

বসতি স্থাপন করে লাভটা কী? মঙ্গলে বসতিটা বাড়াবাড়ি রকমের আনসাস্টএইনেবল (বাংলা কী?) ব্যাপার। পুরা ব্যাপারটাই রোমান্টিক লাগতে পারে, মহাশূণ্যে মানব বসতি স্থাপন স্টার ট্রেক ধরণএর আকাঙ্খা মনে হতে পারে। কিন্তু দিনের শেষে সব দিক থেকে একটা আকাশ কুসুম কল্পনা, যার কোনো অর্থনৈতিক ফায়দা নাই।

চাঁদে অভিযানের কথাই ধরা যাক। মহাকাশ বিজ্ঞানের বিকাশ ঘটেছে চাঁদে যাওয়ার দৌড়ে, কিন্তু চাঁদে মানুষ পাঠিয়ে মানবজাতির লাভ হয়েছে যা, তার চাইতে বহুগুণে লাভ হয়েছে কৃত্রিম উপগ্রহ দিয়ে। এমনকি চাঁদে কেউ না নামলেও আমাদের এই মুহুর্তে কিছু যায় আসতো না। একটাই কেবল ব্যাপার ছিলো, চাঁদে যাওয়ার রাজনৈতিক দৌড়ে মহাকাশ বিজ্ঞান এগিয়েছে। কিন্তু গত ৪০ বছরে কেউ চাঁদে যায়নি, চাঁদে যাওয়ার চেষ্টাটাও রুশরা বাদ দিয়েছিলো, কারণ ওটার প্রোপাগান্ডা ভ্যালু আছে, কিন্তু আর কোনো ভ্যালু নাই। বরং ৭২ এর পরে কার্যকর মহাকাশ বিজ্ঞানের বিকাশ ঘটেছে বেশ ভালো ভাবে।

আর আপাতদৃষ্টিতে এটা বেশ বেখাপ্পা এবং অতি উচ্চাভিলাষী প্রজেক্ট মনে হলেও ভেবে দেখুন বিজ্ঞানের কোন স্বপ্নটা উচ্চাভিলাষী নয়। সেদিন যদি মানুষ চাঁদে যাওয়ার স্বপ্ন না দেখত তাহলে কি আর যেতে পারতো? যদিও চাঁদে বায়ুমন্ডল নেই এবং মানুষের কোনো কাজেও আসছেনা তাও তো মানুষ পৃথিবীর বাইরে সর্বপ্রথম চাঁদে পা রেখেছে।

চাঁদে যাওয়াটা একটা রাজনৈতিক ব্যাপার। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে তার সম্পর্ক নাই। থাকলে রুশরা ৬৯ এর পরে চাঁদের প্রজেক্ট বাদ দিতো না।

রয়াল সোসাইটির সাবেক চেয়ারম্যান ও কেম্ব্রিজ ইউনিভারসিটির জ্যোতির্পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক মার্টিন রিসের এই সাক্ষাতকারে আমার অবস্থানের আরো কিছু যুক্তি পাওয়া যাবে। [লিংক]

আর একই পাতায় পড়লাম, ওবামার ধারণা ২০৩০ সাল নাগাদ মঙ্গল গ্রহের কক্ষ্পথে মনুষ্যবাহী যান পাঠাবার কথা বলেছে। মঙ্গল গ্রহে বসতি স্থাপনের সাথে এটার অনেক তফাৎ। ৪৩ বছর আগে চাঁদে গেলেও এখনো ওখানে বসতি স্থাপনের কথা কেউ বলে না। কারণ রাজনীতি ছাড়া এর কোনো যুক্তিই নাই। রোমান্টিকতা সাইন্স ফিকশনে মানায়, কিন্তু আজ পর্যন্ত প্রয়োজন ছাড়া কোনো আবিষ্কার ঘটেনি। আর যে আবিষ্কারের জন্য ভয়াবহ রকমের খরচ দরকার, সেটার পেছনে একটু যুক্তিও যদি না থাকে, তাহলে সেটার কারণ দেখিনা।

আর রিয়ালিটি টিভি করে অর্থায়ন করাটা বিশাল এক গাঁজাখুরি পরিকল্পনা। ওটা অসম্ভব। বিজ্ঞান রিয়ালিটি শো-র রেটিং দিয়ে নির্ধারিত হয়না।

সোজা বাংলায়, পুরা পরিকল্পনাটাই একটা বড় মাপের তামাশা।

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

অরফিয়াস এর ছবি

হ্যাঁ, কিন্তু ওদের কর্ণধার "ল্যান্সডরপ" কিন্তু বলছে ভিন্ন কথা। এরা কিন্তু বলছে যে, যেহেতু পুরো প্রক্রিয়াটি একটি বেসরকারী উদ্যোগ এবং দেশ/জাতি ভেদে অনেক বেসরকারী সংস্থা এর সাথে ইতিমধ্যে সংযুক্ত হয়েছে তাতে রাজনীতিমুক্ত একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়া গতিশীল থাকবে। ওদের তথ্যবিবরনী এবং সাক্ষাতকারেও এই রাজনীতিমুক্ত থাকার উপরে যথেষ্ট জোর দেয়া হয়েছে। তবে ১০ বছরের রিয়ালিটি শো থেকে ওদের প্রজেক্টের পুরো অর্থ উঠে আসবে কিনা এটা তো পরিসংখ্যানবিদরাই বলতে পারবে। আমি নিজেও ব্যাপারটায় খুব একটা সন্তুষ্ট হতে পারছিনা।

তবে দেখুন, দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য থাকতেই পারে। কর্পোরেট ধান্দা নিয়ে স্টান্টবাজি করার একটা প্রয়াসও হতে পারে এটা, কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা ফলাফল না পাচ্ছি কিছু বলতে তো পারছিনা। আর যদি এরা মঙ্গলে বসতি স্থাপনে সক্ষম হয় তাহলে পৃথিবীর বাইরে অন্য আর একটি গ্রহে শুধুমাত্র এদের দাবি থাকছে সম্পূর্ণভাবে এটাও খুব একটা হালকা বিষয় নয়। আর যদিও মঙ্গলে বসতি স্থাপন একটি বিশাল স্বপ্ন তবুও যদি সম্ভব হয় তাহলে সেটাকে কেন্দ্র করে যে রাজনীতি এবং বানিজ্য হবেনা তা বলা যায়না কোনভাবেই। এখন শুধু দেখার বিষয়। ২০১৩ থেকে তো এদের টিভি শো শুরু হতেই যাচ্ছে।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

স্বপ্নহারা এর ছবি

চলুক

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

প্রান্তিক রহমান এর ছবি

সমস্যা হয়ে গেছে রিয়েলিটি শোর ধান্ধা করতে যেয়ে। আমার কাছে এটাকে আর বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে টাকা পয়সা হাতিয়ে কিম কার্দাশিয়ান টাইপ এর একটা বছর খানেক প্রলম্বিত ট্যাবলয়েড ধাপ্পাবাজি হবে।
আমার জ্ঞান এই বিষয়ে নাই বললেই চলে। তবে উপরে রাগিব ভাই এর কমেন্ট এর সাথে একমত। এই প্রজেক্টের কোন উপযোগীতা নাই।

অরফিয়াস এর ছবি

হতে পারে কর্পোরেট ধাপ্পাবাজি কিন্তু এখনই কিছু বলা যাচ্ছেনা। তবে এই মিশনের উদ্দেশ্যর যে কোনো উপযোগিতা নেই তার সাথে একমত হতে পারছিনা। এরকম করে ভাবলে তো পৃথিবীর বাইরে যাওয়ারই কোনো উপযোগিতা নেই তার পরও কোটি কোটি ডলার খরচ করে মহাশূন্যে অভিযান তো চলছে। পৃথিবীর বাইরে যাওয়ার জন্য মানুষের যে চেষ্টা তা অবশ্যই পূর্ণতা পাবে যদি এই মিশনটি সফল হয়। তবে এর জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে আরও ১১ বছর!!

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চমৎকার পোস্ট। এত বিতর্কে না গিয়ে বরং দেখি না কী হয়!
সচলত্বের অভিনন্দন।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ ত্রিমাত্রিক কবি, হ্যাঁ দেখি কি হয় কারণ ২০১৩ থেকে এদের অভিযাত্রী বাছাই পর্ব শুরু হতে যাচ্ছে!

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

তোমার লাস্ট পোস্ট আর বিভিন্ন মন্তব্যে তোমার করা প্রতি-মন্তব্য পড়ে আমি নিশ্চিত ছিলাম খুব শীঘ্রই সুখবরটা শুনবো হাসি । অনেক অনেক অভিনন্দন ভাই বাঘের বাচ্চা । সচল সবসময়ই তোমার মত পরিশ্রমী লেখকের সমঝদার চলুক


_____________________
Give Her Freedom!

অরফিয়াস এর ছবি

দেঁতো হাসি অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- কোলাকুলি

এবার তোমার পালা। চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অনিকেত এর ছবি

চমৎকার আগ্রহোদ্দীপক পোষ্ট।
সচলত্বের অভিনন্দন রইল

শুভেচ্ছা নিরন্তর!

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ অনিকেত দা। হাসি

শুভেচ্ছা আপনাকেও, ভালো থাকুন।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

হিমু এর ছবি

আমার মনে হচ্ছে, মঙ্গলকে কলোনাইজ করার আইডিয়াটা মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে দেয়ার জন্যেই এই রিয়্যালিটি শো। চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের ব্যাপারটা যেমন পুঁজিবাদী আমেরিকা আর সমাজতন্ত্রী সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে একটা ইগোর লড়াই দিয়ে রাষ্ট্রীয় তহবিলচালিত প্রকল্পের ফসল, মঙ্গলের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা তেমন নয়। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, বিজ্ঞানের পকেটে পয়সা কম। মঙ্গলজয় বেসরকারী খাত থেকে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কিন্তু এতো হুড়াহুড়ি করে গেলে মূল উদ্দেশ্য মার খেয়ে যেতে পারে।

যারা স্পেস প্রসপেক্টিঙের ব্যবসা করতে চাইছে, তারা আরেকটু রয়েসয়ে করতে চায়। এই কাজে তারা চাঁদকে যাবতীয় এক্সপ্লোরেশনের লঞ্চপ্যাড হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। কারণ সহজ, চাঁদের অভিকর্ষ কম, বায়ুমণ্ডলও নেই, টেইক অফের জন্যে অনেক কম জ্বালানি লাগে। মঙ্গলের মতো দূরবর্তী গ্রহে কোনো মিশন পাঠাতে গেলে স্বাভাবিকভাবেই বর্তমান প্রোপালশন ব্যবস্থার চেয়ে সাশ্রয়ী ও শক্তিশালী কোনো কিছু প্রয়োজন, সেটা ম্যাচিওর করতেও খানিকটা সময় লাগবে। এখন যেমন মঙ্গলে যেতে আটমাস সময় লাগে, প্লাজমা ড্রাইভ ব্যবহার করলে লাগবে হয়তো দুই সপ্তাহ, বা এক মাস। বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের রোডম্যাপ হচ্ছে এমন, তারা গ্রহাণুমেখলা থেকে বিভিন্ন গ্রহাণুতে খনন চালাবে, সেটার খনিজ আর বরফ চাঁদে নিয়ে জমা করবে। সেখানে পানিকে ভেঙে অক্সিজেন আর হাইড্রোজেন আলাদা করা হবে জ্বালানির জন্যে, আর ভবিষ্যতে যে কোনো মনু্ষ্যবাহী মিশনের ভারি পেলোড (জ্বালানি, পানি, বায়ু) চাঁদের "পেট্রলপাম্প" থেকে লোড করা হবে। কারণ পৃথিবী থেকে প্রতি কেজি ওজন বাইরে পাঠানোর জন্যে বিপুল খরচ হয়, যেটা পোষানো মুশকিল।

এই রিয়্যালিটি শোতে চমক আছে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে কার্যকারিতা কম। মঙ্গলগ্রহে বসতি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া উচিত গোটা পৃথিবীর অংশগ্রহণে। বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত একটা বড়সড় কনসোর্টিয়াম গঠন করা এবং সেইসাথে বিভিন্ন রাষ্ট্রকে এতে ইনভলভ করা।

ইন দ্য মিনটাইম, আমরা কিছু কল্পবিজ্ঞান গল্প লিখে যাই।

রাগিব এর ছবি

কারণ পৃথিবী থেকে প্রতি কেজি ওজন বাইরে পাঠানোর জন্যে বিপুল খরচ হয়, যেটা পোষানো মুশকিল।

উইকির কোনো এক পাতায় পড়লাম, এখন পর্যন্ত এই খরচটা হলো ৪০০০ থেকে ৪০০০০ ডলার, প্রতি কিলোগ্রামে। তবে সেটা আবার মাল পাঠাবার খরচ। জ্যান্ত প্রাণী পাঠাবার খরচ এর চেয়ে বহুগুণ বেশি হওয়ার কথা।

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

অরফিয়াস এর ছবি

হিমুদা, আপনার প্রস্তাবটা আসলেই দারুন। আমিও সেই একই জিনিস পড়লাম কালকে, চাঁদে অবতরণ এবং উৎক্ষেপন এ কোনো সমস্যাই নেই কারণ তাতে বায়ুমন্ডল অনুপস্থিত। এতে ল্যান্ডিং এর জন্য আলাদা কোনো প্রযুক্তি উদ্ভাবনেরও প্রয়োজন পড়ছেনা আপাতত। প্রচলিত এয়ারব্যাগ কিংবা প্রপালশন ব্যবহার করেই মনুষ্যবাহী যান চাঁদে আরামসে কাজ করতে পারবে কিন্তু মঙ্গলে এটা সম্ভব নয়, এছাড়াও দেখলাম মঙ্গলে মানুষ পাঠানো নিয়ে নাসা যে চিন্তা একেবারেই করেনি সেরকম নয়। যেহেতু সেই প্রযুক্তি হাতে নেই তাই আপাতত সম্ভবপর হচ্ছেনা।

পৃথিবীর বাইরে কলোনি স্থাপনের চিন্তাটা রাজনৈতিক হোক কিংবা অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক দুনিয়া হতে শুরু করে সাধারণ সমাজেও এটা প্রচলিত। এর কারণ আমার কাছেও স্পষ্ট নয়, আর মহাকাশ নিয়ে ইগোর লড়াই-এ এখন নতুন পরাশক্তি হচ্ছে চীন এবং ভারত। অনেকদিন আগে একটা খবর চোখে পড়েছিল পুরো বিষয়টা মনে নেই কিন্তু দেখলাম যে মহাকাশে কলোনি স্থাপনের বিষয়ে ইতিমধ্যে রাশিয়া,চীন,আমেরিকা,ভারত,জার্মানি এরা বেশ গভীর আলোচনা করেছে। এটাও আলোচনায় উঠে এসেছে যে, কোনো দেশকে একক ভাবে এই ক্ষমতা দেয়া হবেনা। খবরটা সংগ্রহে থাকলে ভালো হতো।

এই রিয়্যালিটি শো আসলেই বর্তমান টিভি দুনিয়াকে কাঁপিয়ে দেবে, আর এর বিষয়বস্তুও অসাধারণ। মহাকাশ অভিযানের জন্য দল গঠন করার প্রক্রিয়াটি খুবই কষ্টকর এবং শ্রমসাধ্য এটা সবাই জানে। তার উপরে মঙ্গলে যাওয়া হতে শুরু করে আলাদা দ্বীপে অভিযাত্রীদের রেখে ট্রেনিং দেয়া সব কিছু যখন টিভিতে আসবে এটা রেকর্ড ভাঙবে বলাই যায়।

আপনার নতুন গল্পের অপেক্ষায় আছি। হাসি [চন্ডিশিরা কিন্তু শেষ হয়নি, ভুলিনি এখনও]

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ওই মঙ্গল-বিমানগুলার নীচে ট্রাকের মরা টায়ার লাগিয়ে দিলে হয় না? আমাদের দেশে কত বিশাল বিশাল নৌকা আর ফেরি তো ওই ট্রাকের মরা টায়াল লাগিয়েই ধাক্কা থেকে বেঁচে যায়

আর যদি টায়ারে কাজ না হয় তাইলে পাকিসোহাগিদের বিমানের তলায় ঝুলে মঙ্গলে যাবার প্রস্তাব দেয়া যেতে পারে। এতে কাজ হবে দুইটা (এক) বাংলাদেশ পাকিমুক্ত হবে আবার মঙ্গলের ধাক্কায় পাকিফুটুসও হবে

অরফিয়াস এর ছবি

ওই মঙ্গল-বিমানগুলার নীচে ট্রাকের মরা টায়ার লাগিয়ে দিলে হয় না? আমাদের দেশে কত বিশাল বিশাল নৌকা আর ফেরি তো ওই ট্রাকের মরা টায়াল লাগিয়েই ধাক্কা থেকে বেঁচে যায়

দেঁতো হাসি

আর যদি টায়ারে কাজ না হয় তাইলে পাকিসোহাগিদের বিমানের তলায় ঝুলে মঙ্গলে যাবার প্রস্তাব দেয়া যেতে পারে। এতে কাজ হবে দুইটা (এক) বাংলাদেশ পাকিমুক্ত হবে আবার মঙ্গলের ধাক্কায় পাকিফুটুসও হবে

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

লীলেন দা, এই আইডিয়া অতি শীঘ্র নাসার পরবর্তী সভায় উত্থাপনের দাবি জানাই।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

কঠিন বিজ্ঞানের পোস্ট... আমি দূরে গিয়া মরি...
সচলাভিনন্দন

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অরফিয়াস এর ছবি

দেঁতো হাসি হে হে কি যে কন !! ধন্যবাদ নজরুল ভাই। হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

অরফিয়াস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

না, আমি কিছুতেই মঙ্গলে যামু না।
এত সুন্দর পৃথিবী ছাইড়া যামুই বা কিসের লিগা?

তয়, কেউ যুদি যায়, মাঝে মইধ্যে টি,ভি তে ফুচি পাড়ুম। খাইছে

লিখা জব্বর হইছে ভাই। হাততালি

অরফিয়াস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

দীপালোক এর ছবি

চলুক

অরফিয়াস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

বন্দনা এর ছবি

এমন জটিল একটা লেখার জন্য ধন্যবাদ, মনে হচ্ছে আমি ও অভিযাত্রির দলে নাম লিখিয়ে ফেলি,কিন্তু আমি মানুষ্টা পুরাই বেগুন, আমারে নিবেনা মন খারাপ
আর হ্যা সচল হবার শুভেচ্ছা জানবেন।

অরফিয়াস এর ছবি

আরে মোটেইনা, পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষ তার নিজ নিজ গুনে অতুলনীয়। আপনি অবশ্যই নাম লেখাতে পারেন অভিযাত্রীদের দলে, তবে সবাইকে ছেড়ে ওখানে গিয়ে সারাজীবন কাটাতে ইচ্ছুক হবেন কিনা সেটা প্রশ্ন!! চোখ টিপি

আপনাকেও ধন্যবাদ। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তারেক অণু এর ছবি

অভিনন্দন!
এখন আমি আমজনতার পক্ষে থেকে ভলান্টিয়ার হিসেবে মঙ্গলে যেতে ইচ্ছুক, দরকার হলে মস্কো যেয়ে ৫০০ দিন মাটির নিচে একা থাকার ট্রেনিং নিমু, যাইতে হবে মঙ্গল ওঁয়া ওঁয়া , এই নিয়ে একটা পোস্ট ঝেড়ে দ্যান! আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অরফিয়াস এর ছবি

আমি জানতাম, আমি জানতাম, কেউ না গেলেও অনুদা যাবেন!! দেঁতো হাসি তবে ট্রেনিং নিয়ে আপাতত কিছু তো বলেনি, নাসার অভিযাত্রী ট্রেনিং নিয়ে লেখা যায়।

অসংখ্য ধন্যবাদ অনুদা। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।