অস্থিরতা ও অজানা আশঙ্কা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ২৯/০৩/২০১০ - ৫:২৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

একদিন দেখি জাফর ভাইয়া উৎভ্রান্তের মত রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে। ভাইয়া আমাদের হাসপাতালের শল্য বিভাগের রেজিস্টার। যে সময়ের কথা বলছি তখন আমরা ইন্টার্নী ডাক্তার। ভাইয়া আমাদের সাথে সবসময় বন্ধুর মত মিশতেন, কখনও তাকে রাগ করতে দেখতামনা। আগে আমাদের সাথে গল্প করার সময় তার পাঁচ বছরের ছেলেটা কি কি মজার কথা বলে তা শোনাত, ভাবির কথাও বলত। সে হঠাৎ করে এমন হয়ে গেল কেন বুঝতে পারছিলাম না। বহিঃবিভাগে তাকে আর আগের মত দেখা যায়না, অপরেশন থিয়েটারেও আগের সেই হাসি-খুশি ভাইয়া আর নেই। আমাদের ওয়ার্ডে ঠিক সময় মত না আসার জন্য কাউকে বকাও দেয় না, ডিউটি ভাগ করে দেয় না, আমাদের সাথে থেকেও যেন তিনি নেই। আমরা সবাই তা লক্ষ্য করি, ভাবি হয়ত পারিবারিক ঝামেলার জন্য তার এই বেহাল দশা।

ভাইয়ার একটা কথা আমার খুব মনে পড়ে, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নেই বলে আমাদেরকে আনেক ভাগ্যবান বলতেন তার নিজের তুলনায়। তিনি মেডিকেল কলেজের ভর্তি হবার পর পার্টি না করার কারনে তার সব বই নাকি কোন এক দলের ছাত্রনেতা ড্রেনে ফেলে দিয়েছিলেন, বইগুলো তার বাবার অনেক কষ্টের উপার্জনের পয়সা দিয়ে কেনা ছিল। এতকিছুর পরেও তিনি কোন দলে যোগ না দিয়ে এমবিবিএস পাস করেন। অনেকটা আর্থিক কষ্টের মধ্যে বেড়ে উঠা জীবনের পরের সময়গুলো বেশ সাচ্ছন্দে চলে যাচ্ছিল তার, প্রেমিকা কে জীবনসঙ্গী করা, পরিবারে সচ্ছলতা আনা এই সবকিছু। ভাবী এফসিপিএস পাস করেন, আর ভাইয়াও একটি মেডিকেল কলেজের রেজিস্টার হন। সব কিছু নিয়ে ভাইয়া কে খুব সুখি দেখতাম সবসময়। তার এতটা পরিবর্তন দেখে আমরা বিস্মিত হতাম কিন্তু কিছু জিজ্ঞেস করা হয় নাই কখনো। একদিন হঠাৎ করে শুনি ভাইয়া চাকুরি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। আন্দাজ করলাম কারো সাথে কিছু একটা হয়েছে কারন খুব বড় কিছু না হলে তার এই সিদ্ধান্ত নেবার কথা না।

ভাইয়া চলে যাবার বেশ কিছুদিন পরের কথা, আমাদের হাসপাতালের আরেক ডাক্তার ভাইয়ার কাছে তার চলে যাবার কারন জানতে পারলাম। জাফর ভাই আমাদের হাসপাতালের কতৃপক্ষের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার দাড়োয়ানের হাতের সিস্ট আপরেশন করতে যেয়ে হাতে সুইয়ের খোঁচা খান। পরে অন্যদের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, লোকটি ঘাতক ব্যাধি এইডসে আক্রান্ত। এইডস সংক্রামনের অনেকগুলি উপায়ের মধ্যে একটি হচ্ছে রক্তসংবহনের মাধ্যমে। অপারেশনের সময় যেহেতু জাফর ভাইয়ের হাতে সুইয়ের খোঁচা লেগেছিল সেক্ষেত্রে লোকটির রক্ত ভাইয়ার ক্ষত স্থান দিয়ে তার নিজের দেহে প্রবেশ করার আশঙ্কা থাকে। সাধারনত আক্রান্ত হবার সাথে সাথেই এর উপসর্গ দেখা যায়না কিন্তু ভবিষ্যতে তার নিজের এইডস হবার সম্ভাবনা থেকেই যায়। এই মানসিক অস্থিরতা তাকে সবসময় তাড়িয়ে বেড়াত বিশেষ করে যদি তার কখনো এইডস হয় কি জবাব দেবে সে তার পরিবারের কাছে। বাংলাদেশে সাধারন মানুষ এইডস সংক্রমনের একটাই কারন মনে করে আর তা হলো অবাধ যৌনমিলন। এই অস্থিরতা তাকে আস্তে আস্তে অসুস্থ করে তুলে এবং একসময় সে চাকরী ছেড়ে চলে যায়।

আজ প্রায় দুই বছর হতে চলল, আমরা সেই ঘটনার পরে ভাইয়ার কোন খবর পাইনি, কোথায় আছে, কেমন আছেন, সুস্থ আছেন নাকি …। ঘটনাটি জানার পর আমরা সবাই এই জাতীয় বিষয় নিয়ে খুব অস্বস্তি বোধ করতাম, বিশেষ করে অপারেশন থিয়েটারে। কারন বহির্বিভাগের ছোট খাট অপারেশন গুলিতে বিশেষ কোন সতর্কতা অবলম্বন করা হতোনা। সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছিলাম একথা জেনে, যে লোকটির অপারেশন করতে যেয়ে ভাইয়া এই ঝুঁকিতে পড়তে হয়েছিল সে লোকটির যে এইডস আছে তা কতৃপক্ষের অনেকেই জানতেন, কিন্তু সেই অপারশনে সেজন্য বিশেষ কোন সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়নি এমনকি যে তাকে অপারেশন করবেন সেই জাফর ভাইকেও এ বিষয়টি অবহিত করা হয়নি।আজকে বাংলাদেশে এইডস রোগীদেরকে সঠিক ভাবে যদি চিহ্নিত করে রাখা হতো সেক্ষেত্রে এই ঝুঁকি হয়ত অনেক কমে যেত। যদি কোন না জানি এভাবে নিজের অজান্তেই ভাইয়ার মত আরো কতজন ভয়াবহ এই রোগটি বা অন্যান্ন সংক্রমন রোগে আক্রান্ত হবার ঝুকি নিয়ে নিরলস ভাবে মানুষের সেবায় ব্রত হয়েছেন।

বিদ্রঃ ব্যাক্তিগত কারনে আমি প্রতিষ্ঠানের নামটি উহ্য রাখলাম এবং ভাইয়ার সঠিক নামটিও ব্যবহার করিনি।

=======================

মিতু

রিফাত জাহান মিতু


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

খুবই দু:খজনক, আশা করি ভদ্রলোক ভালো আছেন, সুস্থ আছেন | আমার মনে হয় তাঁর স্ত্রী বুঝবেন, যদিও আমাদের সমাজে তাঁর ভালো সমস্যা হওয়ার কথা | সত্যি, আমাদের দেশের মানুষের আরো সচেতন হওয়া উচিত |

-আতিউর

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ আতিউর মন্তব্যের জন্য। আপনার সাথে একমত প্রকাশ করছি।

=============
মিতু

রিফাত জাহান মিতু

মূর্তালা রামাত এর ছবি

খুবউ দু:খজনক ব্যাপার। আমাদের দেশের মতো দেশেই এমনটি হওয়া সম্ভব। ভাইয়ার প্রতি সমবেদনা থাকলো।

মূর্তালা রামাত

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

=============
মিতু

রিফাত জাহান মিতু

সচল জাহিদ এর ছবি

সচলে স্বাগতম মিতু। বাংলাদেশের চিকিৎসা পেশাজীবিদের একটি ঝুঁকির দিক তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ। হাসপাতালগুলির অন্তত এই সব ক্ষেত্রে আরো সাবধানী হওয়া উচিৎ বলে মনে করি। জাফর ভাইয়ার জন্য শুভকামনা রইল, আশা রাখি যেখানেই থাকুন তিনি ভাল থাকবেন।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমাকে সচলে আসার উৎসাহ প্রদানের জন্য ধন্যবাদ জাহিদ।

=============
মিতু

রিফাত জাহান মিতু

স্বাধীন এর ছবি

সচলায়তনে স্বাগতম মিতু। পুরো পরিবার এভাবে ব্লগে পরে থাকলে সংসার কিভাবে চলবে? শুভকামনা রইল তোমার জন্য। লিখে যাবে নিয়মিত এই প্রত্যাশা করি।

লেখার বিষয়ে বলার কিছু নেই। উনার প্রতি সমবেদনা জানানোর ভাষাও আমার নেই। তোমার এই লেখাটি যেন অন্যদের মাঝে সচেতনা বৃদ্ধি করে সেটাই কামনা করি।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ স্বাধীন ভাই।

পুরো পরিবার এভাবে ব্লগে পরে থাকলে সংসার কিভাবে চলবে

এইটা অবশ্য চিন্তার বিষয় ভাইয়া !!

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

স্যাড...

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

অতিথি লেখক এর ছবি

সহমত

মিতু

তাহসিন আহমেদ গালিব এর ছবি

দু:খজনক ব্যাপা

অতিথি লেখক এর ছবি

হ্যা আসলেই দুঃখজনক

========
মিতু

স্নিগ্ধা এর ছবি

লেখার সহজ, ঝরঝরে ভঙ্গিটিই যে শুধু ভালো লাগলো তা নয়, যে বিষয়টা নিয়ে লিখেছেন সেটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ! আমাদের সমাজে অনেককিছু নিয়ে এতো হাশ হাশ একটা ব্যাপার চলে যে যেখানে একটু সাবধান হলেই এরকম অনর্থক ঝুঁকি এড়ানো যায়, সেই সুযোগটাও পাওয়া যায় না।

আশা করি ডাক্তার জাফরের আশঙ্কা অমুলক প্রমাণিত হবে। আচ্ছা, উনি এইচ আই ভি পজিটিভ কিনা সেটা টেস্ট করালে নিশ্চিত হতে পারবেন না? নাকি সেই টেস্টে ধরা পড়তে হলে আরো কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে?

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ স্নিন্ধা আপু।


আচ্ছা, উনি এইচ আই ভি পজিটিভ কিনা সেটা টেস্ট করালে নিশ্চিত হতে পারবেন না? নাকি সেই টেস্টে ধরা পড়তে হলে আরো কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে?

এক্ষেত্রে আক্রান্ত হবার সাথে সাথেই এইচআইভি পরীক্ষা করালে পজিটিভ রেজাল্ট নাও আসতে পারে যদিও পরবর্তীতে পজিটিভ রেজাল্ট পাবার সম্ভাবনা থেকে যায়।

=========
মিতু

কাকুল কায়েশ এর ছবি

লেখা খুব সুন্দর হয়েছে ভাবী। অতিথিদের পক্ষ থেকে সচলে স্বাগতম আপনাকে।
লিখে যাবেন নিয়মিত এই প্রত্যাশা করি।

===================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ কায়েশ ভাই।

নাশতারান এর ছবি

ব্যাপারটা যারপরনাই দুঃখজনক। সমবেদনা যথেষ্ট নয়।

সচলায়তনে আপনাকে স্বাগতম। নিয়মিত লিখবেন আশা করি।

▀ ▄

b

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ।

মিতু

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

খুব দুঃখজনক ঘটনা। আমাদের সমাজের খুব রূঢ় একটা দিক তুলে আনলেন লেখায়। সচলায়তনে স্বাগতম।

অফটপিকঃ শেষ হয়ে গেলেন, জাহিদ ভাই। ভাবী তো আপনার চেয়েও দুর্দান্ত লেখেন!! দ্রোহিনী লেখা শুরু করা বাকি শুধু এখন। ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার দিন শেষ হয়ে যাবে তাহলে। খাইছে

সচল জাহিদ এর ছবি

অফটপিকঃ
ইশতি এক্কেবারে মনের কথা কইয়া দিছ বস। এখন থেকে একটু দেখে শুনে না লিখলে আর চলবেনা !!!

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

ধুসর গোধূলি এর ছবি
সচল জাহিদ এর ছবি

ধুগো তাড়াতাড়ি ফেইসবুকে জানাও !!!!!!

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ ইশতিয়াক।

মিতু

মূলত পাঠক এর ছবি

খুব ভালো লাগলো, সহজ সরল ভঙ্গি এবং এমন দরকারি একটা বিষয় বেছে নেওয়া। স্নিগ্ধার প্রশ্নটা আমাদের সকলেরই, সচলের ডাক্তারবাবু এ বিষয়ে আলোকপাত করবেন না কি একটু?

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ মূলত পাঠক।আপনার প্রশ্নের উত্তর আমি কিছুটা স্নিগ্ধা আপুর মন্তব্যের জবাবে দিয়েছি।

মিতু

ফারহানা [অতিথি] এর ছবি

মিতু...তোমার লেখাতো অসাধারন হইছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ ভাবী উৎসাহ দেবার জন্য।

মিতু

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- লেখার ধরণটা ব্যাপক ভালো লাগলো।

সাথে একটু আশংকাও। আমাদের দেশে চিকিৎসাকরা এতোটা কেয়ারলেস পরিস্থিতির সন্মুখীন হচ্ছেন বলে। মনে হয় এটা একটা অনুশীলনের ব্যাপার। যেকোনো রুগীকেই দেখতে গেলে অন্তত নিজের সতর্কতাটুকু মেনে চলা উচিত চিকিৎসকদের। পাশাপাশি ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের রোগীর ব্যাপারে জানা জিনিষও চেপে যাওয়া মেনে নেয়া কষ্টকর।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অতিথি লেখক এর ছবি

সহমত প্রকাশ করছি।ধন্যবাদ।

তিথীডোর এর ছবি

খুব দুঃখজনক ব্যাপার!
এমনিতেই দেশের চিকিত্‍সা ও স্বাস্থ্যসেবা অপ্রতুল..
তার ওপর কর্তৃপক্ষের এমন দায়িত্বহীনতা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেবে বহুগুণে!

সচলে স্বাগতম "রিফাত" আপু!

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ আপু!

মিতু

মাহবুব লীলেন এর ছবি

দু:খিত
জাফরের আচরণকে সমর্থন করতে পারলাম না
এইডস বিষয়েএকজন ডাক্তার যদি এরকম অনুমানের উপর অস্থির হয়ে যায় তবে সাধারণ লোকজন কী করবে?

বাংলাদেশের অনেক গ্রামে এইডস আক্রান্তদের গ্রাম থেকে বের করে দেয়া এমনকি পুড়িয়ে মারা চেষ্টার পেছনেও এরকম ডাক্তার ও চিকিৎসা সেবার সাথে যুক্ত লোকজনের অবদান আছে

আমি অনেক ডাক্তারকেও দেখেছি এইডস আক্রান্তদের সাথে প্রাচীনকালের কুষ্ঠ আক্রান্ত লোকজনের মতো আরচণ করতে

০২

বাংলাদেশে ডাক্তার এবং হাসপাতালগুলোর মধ্যে অনেক ধরনের কুসংস্কার আছে
যেগুলো রোগিকে এবং তার আশপাশের লোকজনকে আরো কুসংস্কারে আচ্ছন্ন করে ফেলে

অনেক হাসপাতাল চিকিৎসায় ব্যর্থ হয়ে রোগিকে বলে আল্লা আল্লা করেন
আল্লার ইচ্ছা হলে সুস্থ হবেন

অনেক ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনের নিচে লেখা থাকে- আল্লার উপর ভরসা রাখেন

আল্লা আল্লা করেই যদি রোগ ভালো হয় তবে ডাক্তারের কাছে যাওয়া কেন?

০৩

বাংলাদেশে অনেক ডাক্তারকেই আমার মানসিকতার দিক থেকে খুবই প্রাচীন ধর্মন্ধ এবং কুসংস্কার আচ্ছন্ন মনে হয়েছে
এবং আমার মনে হয় চিকিৎসা শেখার সাথে সাথে ডাক্তারদের চিন্তায় আধুনিক হওয়াও অনেক বেশি জরুরি

০৪

হাসপাতালে অসতর্কতার জন্য শুধু ডাক্তার কেন রোগিরাও বিপদের মধ্যে পড়েন। এটা বদলানো দরকার। আপনার সাথে একমত

০৫

জাফরের জন্য সমবেদনা জানাতে পারলাম না। করুণা হয় তার জন্য। অযথাই তিনি ডাক্তারি পড়েছেন বলে

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ লীলেন ভাইয়া,আপনি অনেক ভাল মন্তব্য করেছেন।আমি এক এক করে আপনার সব প্রশ্নের জবাব দিছি।

১আই ভি টেস্ট পজেটিভ হতে ৩ থেকে ৬মাস সময় লাগে।সাথে সাথেই পজেটিভ হয়না।এই সময়টা কি কেউ সাভাবিক থাকতে পারে।তার সাভাবিক জীবনও যেখানে .....................।।
ডাক্তাররা মানুষ,তাই এদের মধ্য ভাল মন্দ দুইই থাকতে পারে।এই প্রশঙ্গে আমি আপনার সাথে সহমত প্রকাশ করছি।

২ভাইয়া আপনি কি কি কুস;স্কার আছে ,তা জানাননি তাই বুঝতে পারছি না।কোন প্রেস্কিপশনে এই ধরনের কথা থাকা উচিৎ না,আমি মনে করি।তার উচিৎ যথাসাধ্য চেস্টা করা।তবে আমাদের জানা কিন্তু বই পরেই।ডাক্তার দের কাছে যাদুর কাঠি থাকে না যে সে সব অসাধ্য সাধন করতে পারবে।তার ও অনেক বেপারে সীমাবদ্ধতা থাকে।তার পরও আমরা অনেক আশা নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাই, আরগ্য লাভের আশায়।

৪সহমত প্রকাশ করছি আপনার সাথে।

৫ভাইয়া আপনি কাকে সমবেদনা জানাবেন আর কাকে করুনা করবেন এটা আপনার ব্যক্তিগত ব্যপার, আমার লেখার উদ্দেশ্য ও তা ছিল না।অপরেশন করার সময় হাতে সুচের আঘাত লাগা ,খুব সাভাবিক ব্যপার,কারন এই সময় প্লাস্তিকের গ্লভস পরে নেয়া লোহার গ্লভস পরে নিলে হয়ত এটা হত না।হাত থেকে কলম পরে গেলেই যদি বলি বিদ্যাই বৃথা,তা হলে কেমন হবে!

৩ আপনার কথা শুনে আমার মনে হয় ,ডাক্তার জাত তা কে আপনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ ভাইয়া,আমি যতটুকু পারি আপনার প্রশ্নের জবাব দেবার চেষ্টা করব।
১এইচ আই ভি টেস্ট পজিটিভ হয় ৩থেকে৬ মাস পর।এই সময় আগে কিছুই বলা যায়না।এই মানসিক অস্থিরতা নিয়ে সাভাবিক জীবন চলে??ভাল মন্দ নিয়ে মানুষ,ডাক্তাররাও মানুষ।

২কি কি কুস;স্কার আপনি বলেন নি,তাই বুঝতে পারছি না,কোন ডাক্তারের প্রেস্কিপশনে যদি এই ধরনের কথা লিখা থাকে সেটা ঠিক না বলে আমিও মনে করি।
ডাক্তার দেরও সীমাবধ্যতা আছে।তারা বই পরেই জানে।তাদের কাছে যাদুর কাঠি থাকে না,যে সব অসাধ্য সাধন করে ফেলবে।তার পরও একজন ডাক্তারের উচিৎ তার সাধ্যমত চিকিৎসা করা।এত কিছুর পরও কিন্তু আমরা অসুখ হলেই একবুক আশা নিয়ে যাই ডাক্তারের কাছে।মন মানসিকতার পরিবতন অবশ্যই দরকার।ডাক্তারদের উন্নত মানসিকতার হয়া প্রয়োজন।

৪ আপনার সাথে সহমত প্রকাশ করছি।

৫ভাইয়া আপনি কাকে সমবেদনা না করুনা করবেন এটা আপনার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যপার।তবে আমার লেখার উদ্দেশ্য কারও কাছ থেকে সমবেদনা অথবা করুনা পাবার জন্য নয়।

অপরেশনের সময় অনেক কিছু খেয়াল করতে হয়।কেউ যদি এই সময় হাতে দুই একটা সুচের আঘাত পায়,সেটা সাভাবিক।এতে কোন ডাক্তারের রেজিস্টেশন বাতিল হয়ে যায়না।হাতে রাবারের গ্লভস পরে কাজ করতে হয়,লোহার গ্লভস পরার নিয়ম থাকলে হয়ত আজ আমি এই লিখাটাই লিখতাম না,আর আমার জন্য ভাইয়া কে ডাক্তার হবার জন্য ধিক্কার ও শুনতে হত না।হাত থেকে কলম পরে গেলেই যদি বলি বিদ্দ্যই বৃথা তবে কেমন হবে!

মিতু

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সচলে স্বাগতম, মিতু! লেখার নিচে তোমার নাম দেখেই আমার সন্দেহ হয়েছিল, মন্তব্য পড়ে নিশ্চিত হলাম। আশা করি আর বছর আঠারোর মধ্যে নির্ঝরও সচল হয়ে যাবে।

তোমার বর্ণনা সুন্দর, লেখকের মমত্ববোধ পাঠককেও স্পর্শ করে। তবে ডাঃ জাফরের পরিণতি মেনে নিতে পারিনা। এইক্ষেত্রে লীলেনের মন্তব্যর সবগুলো পয়েন্টের সাথে আমি একমত।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ ভাইয়া,আমি লীলেন ভাইয়ার মন্তব্যর উওরে সব বলেছি

মিতু

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ ভাইয়া,আমি লীলেন ভাইয়ার মন্তব্যর উওরে সব বলেছি

মিতু

বোহেমিয়ান এর ছবি

কত যে অসংগতি মন খারাপ
চিকিৎসকরা ও বিপদে মন খারাপ

_________________________________________
বোহেমিয়ান কথকতা

_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ,আসলেই বিপদ।

মিতু

অতিথি লেখক এর ছবি

মিতু ভাবী,

কী আর বলবো ! 'সচল জাহিদ' এর পর সচলায়তন-এ 'মিসেস সচল জাহিদ' !! এবার 'সচল জাহিদ জুনিয়র'-নির্ঝর-এর অপেক্ষায় রইলাম ! আশা করি আর কয়েক বছরের মধ্যেই ...... হাসি

আমি নিজেই সচলায়তন-এ নতুন, আপনাকে কীভাবে স্বাগতম জানাই !

লেখা খুব ভালো লেগেছে হাসি

মুক্ত বিহঙ্গ

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ ববি।

মিতু
রিফাত জাহান মিতু

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।