নীড় সন্ধানী এর ব্লগ

বই প্রতিরক্ষা!

নীড় সন্ধানী এর ছবি
লিখেছেন নীড় সন্ধানী (তারিখ: সোম, ১৩/০১/২০১৪ - ৪:৫২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অভিজাত এলাকার এক ধনকুবের গেছেন নগরের সবচেয়ে বড় বইয়ের দোকানে। দোকানটা বিশাল একটা হলরুম যেন। প্রথমে ঢুকতে মনে হয় না বইয়ের দোকান, মনে হয় কোন প্রাচীন মিউজিয়াম।

শহরে বইপত্র বেচার এমন একটা জায়গা আছে তিনি কল্পনাই করেননি। নিউইয়র্কের বার্নস এণ্ড নোবলে একবার ঢুকেছিলেন। এক কাপ কফি খেয়ে বেরিয়ে এসেছিলেন ইতালীর বন্ধুর সাথে।


আশির দশকের চট্টগ্রামের প্রথম বিজয়মেলা

নীড় সন্ধানী এর ছবি
লিখেছেন নীড় সন্ধানী (তারিখ: রবি, ১৫/১২/২০১৩ - ৫:১৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সময়টা কি ১৯৮৮ নাকি ৮৯? ঠিক মনে আসছে না। তবে এই দুটো বছরের যে কোন একটা বছরে চট্টগ্রামে 'বিজয় মেলা' নামক একটা ব্যাপার চালু হয় সার্কিট হাউসের সামনের খোলা মাঠে। ওই মাঠটি তখন শিশুপার্ক হয়নি। সার্কিট হাউস তখনো জিয়া স্মৃতি যাদুঘর হয়নি। খোলা ময়দানটিতে আমার কোন কোন বিকেলে আড্ডা দিতাম। স্টেডিয়ামের উল্টোদিকের এই মাঠে কিছু কাঠের চেয়ার টেবিল বসানো থাকতো দারুল কাবাবের পক্ষ থেকে। স্টেডিয়াম মার্কেটে চট্টগ্রামের একমাত্র কাবাবের দোকান। সেখান থেকে ট্রেতে করে ধোঁয়া ওঠা কাবাব পরোটা নিয়ে আসা হতো সার্কিট হাউসের সামনের ঢালু ময়দানে। আমাদের পকেটে সেই সময়ে কাবাব খাওয়ার পয়সা হয়নি। তাই আড্ডা দিতে দিতে কেবল গন্ধ শুঁকেই অর্ধভোজন সেরে মনে মনে বলতাম, দেখিস একদিন আমরাও।


প্রতিপক্ষ যখন মানুষ

নীড় সন্ধানী এর ছবি
লিখেছেন নীড় সন্ধানী (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৮/১১/২০১৩ - ৩:৪৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১.
আমি নিরপেক্ষ মানুষ না। আওয়ামী লীগ দুর্নীতি বাটপারি করেছে বলে বিএনপিকে ভোট দিয়ে জামাতকে ক্ষমতায় আনবো না। বরং ভোটদানে বিরত থাকবো। কিন্তু জব্বার সাহেব দোদুল্যমান (তাঁর ভাষায় নিরপেক্ষ মানুষ)। গতবার নৌকায় ভোট দিলেও তিনি এবার বিএনপিকে ভোট দেবার নিয়ত করেছেন। টেক্সিতে যাচ্ছিলেন দোকানে। দোকানের কাছের মোড়ে এসে অবরোধের কবলে পড়ে হঠাৎ ছুঁড়ে দেয়া বোমায় টেক্সিসহ আপাদমস্তক ঝলসে যান তিনি। ঝলসানো শরীরে জব্বার সাহেব বুঝতে পারলেন যারা গণতন্ত্রের নামে আন্দোলন করছে, যারা তাঁর কাছে ভোট ভিক্ষা করবে কয়েকদিন পর, তারা আসলে তাঁর কথা ভাবছে না। তাদের চোখে অন্য স্বপ্ন, অন্য জিঘাংসা। তিনি বাধ্য হলেন তার ভোট দেবার নিয়ত বদলে ফেলতে।


বাড়ি ফেরা

নীড় সন্ধানী এর ছবি
লিখেছেন নীড় সন্ধানী (তারিখ: মঙ্গল, ১৯/১১/২০১৩ - ২:৩১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১.
সোজা পথগুলো রূদ্ধ। বাঁকা পথেই রওনা দিল সে।

সবচেয়ে সোজা ছিল সল্টগোলা বারিকবিল্ডিং হয়ে আগ্রাবাদ পেরিয়ে টাইগার পাস লালখান বাজার। এটা হবে না, বারিকবিল্ডিং থেকে আগ্রাবাদ হয়ে দেওয়ানহাট পর্যন্ত দাউ দাউ জ্বলছে।

দ্বিতীয় বিকল্প পোর্টকানেকটিং রোড হয়ে আগ্রাবাদ এক্সেস রোড দিয়ে বাদামতলি মোড় পেরিয়ে সোজা উত্তরে। তাতেও জ্বলছে আগুন আগ্রাবাদ এক্সেস রোডে।


সন্তানকে মাঝে মাঝে 'না' বলুন

নীড় সন্ধানী এর ছবি
লিখেছেন নীড় সন্ধানী (তারিখ: সোম, ০৪/১১/২০১৩ - ৫:০৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই বিষয়ে আমার লেখার কথা না। অন্ততঃ এখনো সময় হয়নি বলে মনে করি। কারণ পিতা হিসেবে আমি নবীন। মাত্র শিক্ষানবিশকাল পার করছি। তার উপর অযোগ্যতার নজির আমারো যথেষ্ট। তবু এই দেশে ফেল করা ছাত্র যেমন গাইড বই লেখে, তেমনি আমিও একখান লেখা তৈরী করে ফেললাম। লিখতে বাধ্য হয়েছি চারপাশের কিছু প্রবীনদের সন্তান মানুষকরণ প্রকল্পের বেহাল দশা দেখে। লিখতে যাচ্ছিলাম ক্ষোভ নিয়ে কিন্তু পরে ভাবলাম ক্ষোভকে দর্শনে পরিণত করি। (আহ!


হরতালের দিনলিপি এবং একটি আড়িপাতা বিদেশী সংলাপ

নীড় সন্ধানী এর ছবি
লিখেছেন নীড় সন্ধানী (তারিখ: মঙ্গল, ২৯/১০/২০১৩ - ৩:০৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

হরতালের তৃতীয় দিন আজ। চুড়ান্ত আন্দোলনের প্রথম কিস্তির হরতাল আজ শেষ হবে। এত বয়সেও হরতালে সরকারের কি ক্ষতি আজো বুঝতে পারিনি। তবে দেশের ক্ষতি, মানুষের ক্ষতি এটা কিছুটা বুঝি। সেই হিসেবে আমার নিজের ক্ষতি খুব কম, আমার সামর্থ্যের মধ্যে আছে এখনো। সংক্ষেপে বলতে গেলে দৈনিক আর্থিক ক্ষতি যাতায়াতের নানা বাহন বাবদ নগদ সাড়ে তিনশো টাকা + কয়েক মাইল হাঁটার পরিশ্রম + ঘন্টা দুয়েক সময় + আর কিছু পথের ভোগান্তি = সফল হরতাল। অফিস যাতায়াতে কিছুদূর হাঁটি, কিছুদূর রিকশায় চড়ি, কিছুদূর টেক্সি টেম্পুতে ঝুলি, অথবা যখন যা পাওয়া যায় তাতে ঝুলে পড়ি প্রাণটা পকেটে নিয়ে। একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য, একটা খাসা গণতন্ত্রের জন্য এইটুকু ভোগান্তি এমন কি বেশী ক্ষতি। জীবনের চেয়ে গণতন্ত্রের মূল্য অবশ্যই বেশী।


গোডাইফার

নীড় সন্ধানী এর ছবি
লিখেছেন নীড় সন্ধানী (তারিখ: শনি, ২৬/১০/২০১৩ - ৫:৫৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১.
সকাল থেকে মেজাজ খারাপ। বসের সাথে মুখ কালাকালি চলছে। ব্যাটা হাড় কেপ্পন টাকার কুমীর গতকাল এসেই হিসেব নেয়া শুরু করছে অফিসে মাথাপিছু কয় বোতল খাবার পানি লাগে। আন্তর্জাতিক গড় নাকি দৈনিক দেড় লিটার। গরীব হয়েও আমরা চার লিটার কেমনে খাই সেই হিসাব চাইল এডমিনের কাছে। এডমিন যথারীতি মিনমিন করে সুর মিলিয়ে বলেছেন তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন পানি খাওয়া কমাতে, কারণ তিনি জানেন পানি বেশী খেলে ঘনঘন বাথরুম পায় আর ঘনঘন বাথরুমে গেলে ফ্ল্যাশ টিপে প্রচুর পানি খরচ হয়। এর মধ্যে আর এক কামেল হিসেব করে বের করে ফেলেছে আধ লিটার জলত্যাগ করে এক গ্যালন পানি ফ্ল্যাশ করার ফলে কোম্পানীর মাথাপিছু ক্ষতির পরিমান সোয়া এক গ্যালন। এই বিষয়ে পানি সম্পদ বিষয়ক এক কমিটি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে দৈনিক দেড় লিটারের বেশী পানি খেলে সেই বাড়তি পানির নিষ্ক্রমণ ব্যয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বহন করতে হবে।


ই-বুক রিডার

নীড় সন্ধানী এর ছবি
লিখেছেন নীড় সন্ধানী (তারিখ: রবি, ০৬/১০/২০১৩ - ১২:৫১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ফাঁকিবাজি জিনিসটা যে একটা আর্ট সেটা প্রথম দেখি মোস্তাফিজের কাছে। মোস্তাফিজ ক্লাস নাইনে আমাদের ফার্স্টবয় ছিল। ফার্স্টবয়দের কাছ থেকে আমি সবসময় দূরত্ব বজায় রাখলেও মোস্তাফিজ ছিল ব্যতিক্রম। কারণ মোস্তাফিজই প্রথম দেখা ফার্স্ট বয় যে ফার্স্ট বেঞ্চে বসে পাটিগনিতের নীচে 'মাসুদ রানা' রেখে নির্বিকার চেহারায় ফজলু স্যারের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারতো। আমাদের ফাঁকিবাজির প্রতিভা থাকলেও মুস্তাফিজের মতো দুর্লভ সাহস ছিল না বলে বসার জন্য পছন্দ ছিল দ্বিতীয় বা তৃতীয় বেঞ্চ। বুঝতেই পারছেন কর্মজীবনেও মোস্তাফিজ আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে। এখনো কি সে প্রথম শ্রেণীর ফাঁকিবাজি চালাচ্ছে? জানি না।


তৈল গর্জন

নীড় সন্ধানী এর ছবি
লিখেছেন নীড় সন্ধানী (তারিখ: রবি, ২৯/০৯/২০১৩ - ২:১৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সকালে অফিসে আসার আগে চা খেতে খেতে দশ মিনিট টিভির নিউজলাইনে চোখ বুলাই। ২৪ ঘন্টার মধ্যে টিভি জিনিসটার সাথে এটাই আমার একমাত্র যোগাযোগ।

আজ সকালে চ্যানেল ঘুরাতে গিয়ে এটিএন বাংলায় আটকে গেলাম অচিন এক ভদ্রলোকের গর্জিত ভাষণে। নিউইয়র্কের হিলটন হোটেল থেকে লাইভ সম্প্রচার চলছে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান। যুক্তরাষ্ট্রের পতাকাযুক্ত টাই পরে সেই ভদ্রলোকের বক্তৃতা গর্জন। সামনে মাইক থাকলেও রাজনৈতিক ভাষণগুলো কেন যেন গলা, কান ও গগন বিদারী হয়। এই ভদ্রলোকের চেহারা দেখে আমাদের পাড়ার খুইল্লা মিয়ার কথা মনে পড়লো। ইলেকশানের আগে তার গলায়ও অসুরের শক্তি ভর করতো।


অনাগত অন্ধকার

নীড় সন্ধানী এর ছবি
লিখেছেন নীড় সন্ধানী (তারিখ: বিষ্যুদ, ১২/০৯/২০১৩ - ৩:৫৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১.
অফিসের কাজগুলো গুছিয়ে দুপুরে ইন্টারনেটে ক্লিক করতেই বিরক্ত লাগলো। হোমপেজ এরর। আবারো গেছে নাকি? দুদিন পরপর এ এক হ্যাপা। কখনো ফাইবার কেটে যায়, কখনো আইএসপির ইউপিএস জ্বলে গেছে, কখনো সার্ভার ডাউন। আইটিতে ফোন করলাম। আইটির ছেলেটা এসে দেখে বললো, আপনার হোমপেজ সমস্যা। হোমপেজে ফেসবুক ছিল। ফেসবুক নাকি কোথাও খুলছে না। ওটা বদলে হোমপেজ গুগল করে দিল। এবার খুলছে। আমি তেমন রেগুলার ফেসবুকার নই। তাই পাত্তা দিলাম না ব্যাপারটাকে।