ময়ূরপংখী রাজনীতি

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি
লিখেছেন ইশতিয়াক রউফ (তারিখ: মঙ্গল, ৩০/১২/২০০৮ - ৬:২২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১. কালের স্থিরচিত্র
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪-দলীয় মহাজোট বিপুল বিজয় অর্জন করেছে ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে। ফলাফল বলছে, দেশে এখন কার্যত কোন বিরোধী দল রইলো না। ইতিহাসের পরিহাস সবসময় নির্মম হয় না। এক কালে অনেক দুর্নাম কামিয়ে আওয়ামী লীগ 'বাকশাল' তৈরি করেছিল। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ, নাশকতা, দুর্ভিক্ষ সহ অনেক রকম কারণ হয়তো ছিল, কিন্তু তবু এই পদক্ষেপ চিরকালের জন্য প্রশ্নবিদ্ধ করে দিয়েছে আওয়ামী লীগকে। ২০০৮ সালে কার্যত আরেকটি 'বাকশাল' স্থাপিত হল। পার্থক্য হল, এবারে এটি জনগণের মত ও সমর্থনেই ঘটছে। গোড়া সমর্থকেরা সেই চোখেই দেখবেন বলে ভয় হচ্ছে। স্রেফ মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য বলা, এটি কালের স্থিরচিত্র ছাড়া আর কিছু নয়। ভোটের হিসাব অনেক আনন্দের হলেও বাস্তবতা কিছু সচেতনতা দাবি করে।

২. অস্বাভাবিক ঐক্যঃ
সময়ের প্রয়োজনে অনেক রকম অস্বাভাবিক ঐক্য হয়। এ-ধরণের কৌশলগত বা শর্তসাপেক্ষ ঐক্য দীর্ঘমেয়াদে ফাটলেই পরিণত হয়। দৃশ্য শত্রুর গতিবিধি জানা যায়, তার ব্যাপারে পরিকল্পণা করা যায়। অজানা, অদৃশ্য শত্রুর বেলায় এই সুবিধা নেই। আওয়ামী লীগ এই মুহূর্তে এমনই একটি ঐক্যের সুফল ভোগ করছে। জয় মহাজোটের হলেও শাসন করবে কার্যত আওয়ামী লীগ। যে-দলগুলো নিয়ে মহাজোট গঠিত, তারা কেউই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সমর্থক নয়। বিশ্বস্ত ভোটার বাদে যাঁরা মহাজোটকে ভোট দিয়েছেন, তাঁদের বৈশিষ্ট্য দেখা যাক।

  • তরুণ ভোটঃ এবারে প্রায় দেড় কোটি নতুন ভোটার অংশগ্রহণ করেছেন নির্বাচনে। এরা নতুন যুগের মানুষ, এরা নিত্য-নতুন সুযোগের মধ্যে বড় হয়েছে, এরা বাইরের দেশের অনুকরনে অভ্যস্ত, এরা বাইরের রাজনীতির সাথে দেশের তুলনা করে। এরা সাফল্যের পরিমাপ করবে বহির্বিশ্বের সাথে। তরুণ ভোটের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল, এরা খুব বেশি অস্থির। যুদ্ধাপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে আগামী নির্বাচনে এরা আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে না, এই ভোট আওয়ামী লীগের পক্ষে ধরে রাখা সম্ভব না। এই কাজটি করার অন্য দিক হল, আওয়ামী লীগ আর কখনও মুক্তিযুদ্ধের ক্ষত বেঁচে রাজনীতি করতে পারবে না।

  • জাতীয় পার্টিঃ লেজে অব হোমো এরশাদ বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে পল্টিবাজ ও সুবিধাবাদী রাজনীতিক। বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠী এত বড় গর্ত খুড়েছিল নিজের জন্য, যে যে-কেউ এই নির্বাচনে জয়লাভ করতো। হুমকি-ধামকি দিলেও এরশাদ মহাজোট ছেড়ে যাননি এই বাস্তবতা বুঝতে পেরেই। বিএনপি ও জাতীয় পার্টি একই কাতারের দল হওয়ার পূর্ণ সুবিধা নেবার ক্ষেত্র প্রস্তুত এখন তার জন্য। এই ভোটগুলোও আওয়ামী লীগ আর কখনও পাবে না।

    সিলেট বা ঢাকায় সকল আসন জেতার মত জনপ্রিয় দল আওয়ামী লীগ না। বগুড়ায় একাধিক আসন জেতার মত দল আওয়ামী লীগ না। এই ভোটগুলো আওয়ামী লীগ আর পাবে না। এগুলো স্রেফ দৈব দুর্বিপাক। তারেক জিয়া বাড়াবাড়ি রকম চুরিদারি না করলে, খালেদা জিয়া তাঁর ছেলেদের ব্যাপারে অন্ধ না হলে, পিন্টুর মত গুন্ডাদের মনোনয়ন না দিলে, কাউকে মনোনয়ন দিলে পুরো পরিবারশুদ্ধ মনোনয়ন না দিলে এই সৌভাগ্য আওয়ামী লীগের হত না। এই ঐক্য চরম অস্বাভাবিক। ব্যবসা-মনস্ক জাতীয়তাবাদীরা আওয়ামী লীগের সমর্থক নন। সেনাবাহিনী বা ইসলামী শাসনের প্রবক্তারা আওয়ামী লীগের সমর্থক নন। এঁদের নব্যপ্রাপ্ত সমর্থক ভেবে এঁদের আদর্শ অবলম্বন করেও আওয়ামী লীগ এই ভোটগুলো পাবে না।

  • বামপন্থী ভোটঃ অনেকটা বাধ্য হয়েই বাম ঘরানার মুক্তমনা মানুষেরা ভোট দিয়েছেন আওয়ামী লীগকে। ধর্মব্যবসায়ী দলগুলোর সাথে আঁতাত করার চেষ্টা করে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিকে নতুন করে মুসলমানী দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। আওয়ামী লীগ ড্যামেজ-কন্ট্রোল করার জন্য যতই "আমরা আসলে ওদের প্রগতিশীল করতে চেয়েছিলাম" বলুক না কেন, অসাম্প্রদায়িক কেউ এ-কথায় ভুলেননি। এই ভোটও আর পাওয়া যাবে না।

  • বীতশ্রদ্ধ মধ্য ও নিম্নবিত্তঃ বাংলাদেশের মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মৌলিক পার্থক্য খুব কম। যুদ্ধাপরাধী তোষণের দায়ে বিএনপি দুষ্ট হওয়ার ব্যাপারটি বাদ দিলে তেমন কোন তফাৎ নেই। বিএনপি'র বদলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেও দ্রব্যমূল্য ও দুর্নীতি বেড়েই চলতো (হয়তো এতটা নয়)। আওয়ামী লীগের এই বিজয় যতটা অর্জন, তার চেয়ে উপহার বেশি। অতএব, এই আশংকা অবাস্তব নয় যে আওয়ামী লীগ একে যথাযথ মূল্যায়ন করবে না। বিজয়ের মাত্রার সাথে সমানুপাতিক উন্নয়ন না করলে দলহীন এই সাধারণ মানুষ আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের সাথে থাকবে না।

৩. জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধী সমীকরণঃ
এই নির্বাচনের মূল ম্যান্ডেট আওয়ামী লীগের পক্ষে না, যুদ্ধাপরাধীদের বিপক্ষে। সাম্প্রতিক সময়ে মূলত বিভিন্ন অরাজনৈতিক সংগঠনের চেষ্টায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি সামনে এসেছে। নির্বাচন পিছিয়ে জানুয়ারি মাসে নেওয়ার জন্য বিএনপি-জামায়াত জোটের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, গণহত্যা, অত্যাচার, যুদ্ধাপরাধী বিচার, ইত্যাদি ব্যাপারে যেই গণসচেতনতা গড়ে উঠেছে, তার পেছনে আওয়ামী লীগের তিল পরিমাণ অবদান না থাকলেও এর পূর্ণ সুফল ভোগ করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় মহাজোট।

অতীতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দু'টি সুযোগ পাওয়া গিয়েছিল। স্বাধীনতার পর একবার, ’৯৬ এর নির্বাচনের পর আরেকবার। সেই গণজাগরণ আওয়ামী লীগের তৈরি ছিল না, আওয়ামী লীগ সেই গণদাবির প্রতি কোন শ্রদ্ধাও দেখায়নি। জামায়াতের সাথে বরং আওয়ামী লীগ কৌশলগত আঁতাত করবার চেষ্টাও করেছিল এক কালে। মাত্র ক’দিন আগে তারা প্রায় রাজনৈতিক মুসলমানি করে বসেছিল মোল্লাদের সাথে চুক্তি করে। জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধী যে একই কাতারের, সেই সত্য আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেনি। এর সব কিছুই সামাজিক, অরাজনৈতিক অর্জন। এই নির্বাচনের আগে বিজয় দিবস নিয়ে বাঙালি গর্বে সরব হওয়ার পেছনে আওয়ামী লীগের অবদান একেবারেই নগণ্য, অথচ এই আন্দোলনগুলোই আওয়ামী লীগকে ২৬২টি আসন এনে দিয়েছে।

ক্রমে শক্ত হয়ে ওঠা জামায়াতকে একমাত্র এই সমীকরণটিই ডুবাতে পারতো যে ‘জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধী সমার্থক’। এই কথা মানুষের মনে ঢুকিয়ে দেওয়ার মত নৈতিক অবস্থান আওয়ামী লীগের ছিল না। জামায়াত দেরিতে হলেও এটি বুঝতে পেরেছে। মুক্তিযুদ্ধের কথা তাদের ইশতেহারে ঢুকিয়েছে, বিজয় দিবস বা বাংলাদেশের স্বাধীনতার মত ঘটনাগুলোকে মেনে নিয়েছে (যা এগুলোকে পর্যায়ক্রমে গুরুত্বহীন ও কথার কথা করবার প্রক্রিয়ায় আছে)। আগামী নির্বাচনের আগে জামায়াত নিজের শরীর থেকে যুদ্ধাপরাধের সব দৃশ্যমান চিহ্ন মুছে ফেলে স্রেফ একটি “ইসলামিক” দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। এই বিজয়ের পেছনে তাই জামায়াতের বিলম্বিত উপলব্ধির ভূমিকা ব্যাপক।

সংবিধানের যাবতীয় কলঙ্কজনক ধারা এবং যুদ্ধাপরাধীদের চূড়ান্তভাবে শেষ করে দেওয়ার সুযোগকে আওয়ামী লীগ দলীয় জয় হিসেবে নিয়ে কতটা সুনিপুণ ভাবে হারায়, সেটাই দেখার বিষয়।

৪. বিজয়ী কুপ্রার্থী
অতি-খুশিতে বগল বাজানো শুরু করবার আগে বিবেচনার নেওয়া উচিত যে এই দুর্যোগের কালেও জামায়াত প্রায় প্রতিটি আসনেই ভোট পেয়েছে বেশি। কমান্ডার নিজামি হেরে গেলেও আড়াই লাখ ভোটের মধ্যে মাত্র ২২ হাজার ভোটে হেরেছেন। সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর মত পাপীও জিতে গেছেন। এই বিষয়গুলো আমলে নেওয়া উচিত আওয়ামী লীগের, সাথে তাকিয়ে দেখা উচিত নিজ দলের এমন অনেক প্রার্থীর দিকে যাঁরা সাধারণ অবস্থায় জিততেন না। এই তালিকায় এরশাদ থেকে শুরু করে কামাল আহমেদ মজুমদার পর্যন্ত অনেকেই আছেন। নৌকার এই সুদিনেও ঢাকা শহরে কি এর চেয়ে ভাল প্রার্থী মিলতো না?

সাম্প্রতিক কালে বিএনপি’র মত আওয়ামী লীগের ভেতরেও রাজনৈতিক সার্জারির মাধ্যমে নেতা আমদানির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সজীব ওয়াজেদ জয় দেশে গেলে শিশুদের মেলা কিংবা অধুনা পত্রিকায় তাঁকে বিদগ্ধ রাজনীতিক হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা তারই নিদর্শন। আগামী কিছুদিনে এই প্রক্রিয়া অব্যহত থাকার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ ছিল সমাজতন্ত্রের পতন। বিএনপি ও জাতীয় পার্টি নিজ নিজ শাসনামলে অনেক কর্মী রিক্রুট করলেও আওয়ামী লীগ তেমন কিছুই করতে পারেনি। সোভিয়েত রাশিয়ার পতন একঝাঁক নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিক দিয়েছে। আওয়ামী লীগ তাঁদের যথাযথ মূল্যায়ন করেনি কখনই। সামনেও করবার সম্ভাবনা ক্ষীণ। প্রমাণ হল, দেশ থেকে খবরে জানলাম ছাত্রলীগ এরই মধ্যে হল দখলে নেমেছে।

৫. স্বপ্নের সিড়ি বেয়ে স্বর্গে নামি
সাময়িক এই বিজয় আওয়ামী লীগ কতটা কাজে লাগায়, সেই ব্যাপারে আমি ব্যক্তিগত ভাবে সন্দিহান। দেশটা কিছু লম্পটের হাত থেকে বেঁচে যাওয়ায় অনেক খুশি হলেও তাই পাশাপাশি রয়ে গেছে হতাশ হওয়ার ভয়। দিনভর অনেক রকম কথা শুনেছি। ‘যাকে মাথায় তোলা হয়, তার দেওয়া ছোট আঘাতও লাগে বেশি’। ‘দ্য হাইয়ার ইউ রাইজ, দ্য হার্ডার ইউ ফল’। ‘আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে কী লাভ, আগেও তো যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা বলেছিল’। এগুলো সত্যকথন, এগুলো আওয়ামী লীগ কানে তুলবে না।

তেমন কোন প্রচার ছাড়াই ‘না’ ভোটের প্রতি স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন দেখা গেছে এবার। আমেরিকার রিপাবলিকান পার্টির খুব ঘৃণ্য একটি অভ্যাস হল তাদের সমর্থন না করলে ভোটারদের দেশাত্মবোধ নিয়ে প্রশ্ন তোলা। এবারেও নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা ‘না’ ভোট দেওয়াকে নির্বুদ্ধিতা কিংবা রাজাকারকে ক্ষমতায় আনার সাথে তুলনা করেছেন। কেউ ভেবে দেখেননি যে নিজামির সাথে মিটিং করা কিংবা দেশময় অতিরিক্ত আত্মপ্রচারের মত ‘বুদ্ধিমান’ কাজ আওয়ামী লীগই করেছে, সাধারণ ভোটারেরা না।

হয়তো উদ্দেশ্য বা আদর্শের বদলে ব্যক্তিপূজা থেকে গঠিত বলেই বিএনপি তুলনামূলকভাবে গতিশীল একটি দল। তারা নতুন ভোটারদের কাছে যাবে, অনেক ভাল ফল বয়ে আনবে। পরবর্তী নির্বাচনের সময় হয়তো দেশপ্রেম নামক চিজটি এমন “হিপ” থাকবে না। তখন হয়তো মুম্বাইয়ের নায়ক-নায়িকার মত “আমার বাংলাদেশ”ও “কুল” থাকবে না। হয়তো সেবার কোন ঠিকা বুয়া দু’দিন আগে থেকেই ঠিক মত ব্যালট পেপার ভাজ করার পদ্ধতি রপ্ত করতে লাগবেন না। হয়তো সেদিনও অলস দুপুরে গুগুলে “বাংলাদেশ” লিখে সার্চ করলে আদৌ আমার দেশ নিয়ে একটি মানসম্মত বাংলাদেশি ওয়েবসাইট পাওয়া যাবে না। হয়তো সেদিন আর ইন্টারনেট জুড়ে ‘মুক্তিযুদ্ধে মৃতের সংখ্যা অতিরঞ্জন’ দাবি করলে আর কোন তরুণ ছাত্র বা সাংবাদিক উদ্যোগী হয়ে প্রতিবাদ করবেন না। হয়তো সেদিন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রাজনীতিকদের উন্নাসিকতা উপেক্ষা করে কোন এমএমআর জালাল নিজ খরচে প্রবাসের পথে পথে ঘুরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সব রকম নথি সংগ্রহ করে যাবেন না।

সেদিনের বাংলাদেশের জন্য কাজ করতে যে স্থিতধী, মোহমুক্তি, ও প্রশ্নোর্ধ্ব দেশপ্রেম প্রয়োজন, তা আওয়ামী লীগকে দেখাতে হবে। মুক্তচিন্তার প্রসার, মানবাধিকার রক্ষা, আইনের সংস্কার, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, ও নারী অধিকারায়ন না করলে এ-দিনের অনেক ভোটার নীরব হয়ে যাবেন। অন্যদিকে হায়েনা ফিরে আসবে নতুন কোন রূপে, আরো শান দেওয়া নখরদন্ত নিয়ে।

২০০১ এর নির্বাচনের পর গৎ বাঁধা কিছু প্রতিশ্রুতির ময়ূরপুচ্ছ গায়ে লাগিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল কিছু হায়েনা। এবারে আওয়ামী লীগও একই ধারার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। সে-কারণেই আশা করতে সংকোচ হয়। ২৬২ টি আসনে জয়ের জন্য যেই নৈতিক উচ্চতা ও সার্বিক গ্রহণযোগ্যতা লাগে, তা আওয়ামী লীগের নেই। ভোটের আগে আওয়ামী লীগের প্রচারণাতেই বলা ছিল, তারা বিএনপি-জামায়াত জোটের তুলনায় উন্নততর দেখে তাদের ভোট দেওয়া উচিত। সেই মতেই, বিএনপি-জামায়াত জোট অনেক বেশি খারাপ দেখেই আওয়ামী লীগের অনেক বড় জয়।

আওয়ামী লীগের তাই সবচেয়ে বড় ধন্যবাদ দেওয়া উচিত তারেক জিয়াকে তার অবিমৃশ্যতার জন্য, ডিসেম্বর মাসকে বিজয়ের মাস হওয়ার জন্য, আর অগণিত দেশপ্রেমিককে মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে ব্যাপকভিত্তিক জনমত গড়ে তুলবার জন্য।


মন্তব্য

ভূঁতের বাচ্চা এর ছবি

ইশতি ভাইয়া, হাতিমার্কা পোস্ট দিলেও পড়তে পড়তে কখন যে শেষ হয়ে গেল তার উপলব্ধিই হয়নাই।
অসাধারন লিখেছেন। যুক্তিযুক্ত চুলচেরা বিশ্লেষন করেছেন আমাদের বর্তমান রাজনীতির প্রেক্ষাপটের।

--------------------------------------------------------

আরিফ জেবতিক এর ছবি

পুরো পোস্টটিই অসাধারন হয়েছে ।

চরম সত্য কথা ।
আওয়ামীলীগের উচিত বেচারা তারেকের কাছ থেকে খাম্বা কেনা অব্যাহত রাখা আর হাওয়া ভবনকে মিউজিয়াম বানিয়ে সংরক্ষন করা । চোখ টিপি

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ভাল বিশ্লেষণ করেছেন। ভূঁতের বাচ্চার সাথে একমত, হাতি মার্কা লেখা হলেও পড়তে পড়তে দ্রুতই শেষ হয়ে গেল। শোকেসে তুলে রাখার মতো লেখা। ধন্যবাদ।

লেখাটার সবচেয়ে শক্তিশালি দিক হলো নির্ভার হয়ে লেখা। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের সমর্থক হলেই তার কোন ভুল নাই এই চিরাচরিত দৃষ্টিভংগীকে সরিয়ে রেখে এই লেখা। মনে রাখতে হবে, ল্যান্ডস্লাইড ভিক্টরি কিন্তু ২০০১এও হয়েছিল। আমার স্পষ্ট মনে আছে সাইফুর রহমান আশংকার কথা জানিয়েছিলেন এই ম্যান্ডেট তারা রক্ষা করতে পারবে কী না। পারেনি।

মহাজোটের এই বিজয়ের পরেও আমার একই কথা মনে হয়েছিল। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। একটু বেশি আশা করছি হয়তো কিন্তু বিশ্বাস করতে চাই আ.লীগ এবার একই ভুল করবেনা।

নিঝুম এর ছবি

কিছু কিছু জায়গায় অমত থাকলেও , পোস্টের পুরা টোন টা চমত্‌কার লাগলো । একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, আওয়ামী লীগের ভোট ফ্লোটিং ভোট না । যে লীগ রে একবার জীবনে ভোট দেয়,সাধারণত সে আজীবন লীগ রেই দিবে । আর জামাতের বেলাতেও এই যুক্তি খাটে । আর বি এন পির ভোট গুলো অনেক বেশী বায়বীয় । কেবল ভাসে ।

যাই হোক, আওয়ামীলীগ ওদের ম্যানিফেস্টোতে যুদ্ধঅপরাধী নিয়া কিছু বলল না তো , ( তাদের শূলে চড়ানো হবে কি না )নাকি আমি মিস করলাম ।
--------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

নিবিড় এর ছবি

আপনার সাথে একমত হতে পারলাম না নিঝুম ভাই কারন আমার দেখা মতে এবার আমার আশে পাশে এমন কিছু লোক লীগ কে ভোট দিয়েছে যারা জীবনেও লীগ কে ভোট দেয়নি আর পরের বার তাদের আশা অনুযায়ী লীগ দেশ চালাতে না পারলে তারা লীগ কে ভোট দিবে বলে মনে হয় না । তাই ফ্লোটীং ভোট ফ্যাক্টর টা থেকেই যাবে ।

রণদীপম বসু এর ছবি

নিঝুম, আপনার কমেণ্টেই কিন্তু ফ্লোটিং ভোট প্রতিষ্ঠিত করে রেখেছেন।

আর বি এন পির ভোট গুলো অনেক বেশী বায়বীয় । কেবল ভাসে ।

তাহলে কী দাঁড়ালো !
ভাসে বলেই কিন্তু ভাসতে ভাসতে কখনো আওয়ামী লীগে যায় আবার ফিরে আসে আবার অন্য কোথাও যায়...
অর্থাৎ এগুলা আওয়ামী লীগের জন্যও ফ্লোটিং।

একই ফ্লোটিং ভোট আসলে সবার জন্যই ফ্লোটিং...।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

নিঝুম এর ছবি

মনে হয় আমি ঠিক করে বুঝিয়ে বলতে পারিনি কিংবা বোঝার কোথাও ভুল হচ্ছে । যারা লীগকে সব সময় ভোট দেন তারা আজীবন দিবেনই । কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম যার সংখ্যা অত্যন্ত নগন্য । কিন্তু ফ্লোটিং ভোট সেগুলাই যেগুলা কখনো বিএনপি কখোনো লীগ কে দেয় । এইসব ফ্লোটিং ভোটার রা ভাল না খারাপ এই প্রসঙ্গে আলোচনায় বনা যাই । এই ফ্লোটিং ভোট গুলো কখনই লীগের ভোট ব্যাঙ্ক নয় । এই কথা স্বীকার না করলেই নয় যে, প্রতিটি আসনেই লীগের নির্দিষ্ট একটি ভোট ব্যাংক আছে । যা ভাঙ্গা অত্যন্ত দূরহ । কখনো কখনো বিএনপি ছেড়ে আসা বা নতুন ভোটার রা এসে এর সংখ্যার হের ফের ঘটায় মাত্র । এবার যেমন জাতীয় পার্টি ভোট যুক্ত হয়েছে ।

রণ'দা বলেছেন,
ভাসে বলেই কিন্তু ভাসতে ভাসতে কখনো আওয়ামী লীগে যায় আবার ফিরে আসে আবার অন্য কোথাও যায়...

এইসব ভাসমান ভোটাররা কিন্তু কখনই লীগের ছিল না । এই জাতীয় বায়বীয় ভোটার রা সাধারণত পরস্থিতি খুব সন্তর্পনে বিবেচনা করে ভোট দেন । বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই এইসকল ভোটেই রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ঘটনা ঘটে ।

অন্যদিকে ভোটব্যাঙ্কের অবস্থানে বিএনপির'র স্থান অত্যন্ত নাজুক । বিশ্বাসী ভোটার তাদের তেমন নেই যেমনটি আছে জামাত ও লীগের ।

এর প্রমাণ ২০০১ নির্বাচনে । যেখানে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ৬২ টি আসন পেয়েও তাদের পক্ষে ভোট দেবার হার ছিলো ৪১%
--------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

নাসিফ এর ছবি

ইশতিয়াক রউফ, আপনি চমৎকার লিখেছেন ।

স্পর্শ এর ছবি

ভাল পোস্ট।
এখন দেখাযাক কি হয়!
....................................................................................
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

এলোমেলো ভাবনা এর ছবি

এই বিজয়ের ক্ষণে, চলুন, আশংকার কথা না বলে আশার কথা বলি...


এমন শহরে আমি ঘুরি , নাকি শহরটাই ভবঘুরে?


হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই,

দুইকে আমি এক করি না এক কে করি দুই৷

তারেক এর ছবি

অসাধারণ বিশ্লেষণ। চলুক
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

অভ্রনীল এর ছবি

ভালো লাগলো পড়ে...

আমি নিজে বেশ সন্দিহান আওয়ামীলীগ কি পারবে দেশকে একটা গর্ব করার মত অবস্থায় নিয়ে যেতে। আমার জন্ম এরশাদের সময়কালে, এর আগের শাসনকাল দেখা হয়নি। তবে এরশাদের চেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছিল পরবর্তী বিএনপি শাসনামলে, তারপরের আওয়ামী শাসনামলে আরো বেশি [মনে আছে হাসিনা আর রেহানা মিলে বংগভবন আর গণভবন নিজেদের করে নিতে গিয়েছিল], এরপরের বিএনপি শাসনামল তো গত বিশ বছরের সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত সময়কাল। গত বিশ বছরে প্রতিটা ইলেকশনে উন্নয়নের গ্রাফটা কেবল নীচেই নেমে গেছে... সে ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে এই বার আরো নীচে নেমে যাবার আশংকা আছে।

চোর-বাটপার আওয়ামী লীগেও আছে এবং সেটাই ভয়ের কথা। গত সাত বছর এই দল সেই অর্থে টাকা পয়সা বানাতে পারেনি, এখন যদি সেই বুভুক্ষ পেট পূরন করতে তারা হায়েনার মত নেমে পড়ে তবে সেটা হবে দুঃখজনক।
_______________

এক ছাগলের দুই কান,
তুই আমার জানের জান।

নজমুল আলবাব এর ছবি

চমৎকার। এই লেখাটা আওয়ামী থিঙ্কটেঙ্কের কাউরে পাঠানো দরকার।

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

রণদীপম বসু এর ছবি

আওয়ামী লীগের তাই সবচেয়ে বড় ধন্যবাদ দেওয়া উচিত তারেক জিয়াকে তার অবিমৃশ্যতার জন্য, ডিসেম্বর মাসকে বিজয়ের মাস হওয়ার জন্য, আর অগণিত দেশপ্রেমিককে মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে ব্যাপকভিত্তিক জনমত গড়ে তুলবার জন্য।

খুব ভালো লিখেছেন। বিশ্লেষণটাও চমৎকার।
তবে এবারের সংসদে বহুদিন পর বোধকরি আবার তুলনামূলকভাবে বেশি সংখ্যায় কিছু শিক্ষিত মানুষের আনাগোনা দেখবো, যাদের প্রতি জাতির চাওয়া থাকবে ভালো কিছু পাওয়ার। যদি তারা মনে রাখেন যে, ভোগ করার জন্য পাঁচ বছর খুব বেশি সময় নয় অথবা কাজ করার জন্য পাঁচ বছর অনেক সময়...!

আমার মনে হয় এই পোস্টটাকে বেশ কিছু সময়ের জন্য স্টিকি করে রাখা প্রয়োজন। ব্লগ কর্তৃপক্ষ বিষয়টা ভেবে দেখতে পারেন।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

রণদীপম বসু এর ছবি

ইশতিয়াক ভাই, ফেসবুকে আপনার এই পোস্টটির একটি শেয়ার লিঙ্ক দিয়েছি। এ মুহূর্তে সবার এই চমৎকার বিশ্লেষণ সমৃদ্ধ পোস্টটি পড়ে নেয়া দরকার বলে আমার কাছে মনে হয়েছে।
ধন্যবাদ আপনাকে। এ রকম লেখাগুলোর প্রয়োজন ও উপযোগিতা এখনই । আরো বেশি বেশি লেখা চাই...

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

শান্ত [অতিথি] এর ছবি

চমতকার বিশ্লষন। লেখাটা প্রিন্ট করে আওয়ামীলীগের অফিসে পাঠানো দরকার। উনাদেরকে এটা পড়তে দেওয়া উচিত। উনাদের জানা উচিত দেশের মানুষ কি ভাবছে।

হিমু এর ছবি

পোস্টটাকে স্টিকি করা হলো।


হাঁটুপানির জলদস্যু

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

দারুণ বিশ্লেষণ। গ্রেট জব!

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

দ্রোহী এর ছবি

অসাধারণ পোস্ট ইশতি।


গরীবের আবার সিগনেচার!!!

খেকশিয়াল এর ছবি

খুবই ভাল বিশ্লেষণ ।

------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

পড়বার জন্য ধন্যবাদ সবাইকে। আওয়ামী লীগ ঐতিহাসিক ভাবে দু'টি কাজে খুব পারদর্শীঃ ১) বিজয়ের গ্রাস থেকে পরাজয় ছিনিয়ে আনা ('৯১), এবং ২) অনেক বিশ্বাস আর ভালবাসা দেওয়ার পর দুঃখ দেওয়া ('৯৬)। দেখা যাক এবার কী হয়।

এই লেখা আওয়ামী লীগের কেউ পড়লে গৎ ছাড়া কিছু পাবো না। "আপা এবার অনেক বিচক্ষণতার সাথে নির্বাচন পরিচালনা করেছেন" কিংবা "জননেত্রী শেখ হাসিনা এবার ভিশন ২০২১ তে বলেছেন..." এর বাইরে কিছু পাবেন না।

শামীম এর ছবি

দারুন লেখা ....
আরেকটা পয়েন্ট কোন এক জায়গায় থাকতে পারতো: শেখ হাসিনার রাজাকার বেয়াইয়ের ব্যাপারেও পাবলিক জানে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

জিজ্ঞাসু এর ছবি

এখানেই বাঙলাদেশের রাজনীতির গোঁজামিলের উৎপত্তি। এখানে সমীকরণ সহজে সমাধান হয় না এই একটা কারণে। আপনি মুক্তিযোদ্ধা আপনার বেয়াই রাজাকার। অমুক দেশপ্রেমিক তার দুলাভাই দুর্নীতিবাজ। এসব নিয়ে আর মনে হয় দেশের জন্য ভাল কিছু করা সম্ভব হবে না। দুর্জন স্বজন হইলেও পরিত্যজ্য। দুর্জনের বিচার করতেই হবে। দেশের জন্য। মানবতার জন্য। শেখ হাসিনা কি পারবেন এসবের উর্ধ্বে যেতে?

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

আসলেই এই লেখাটা কেউ কষ্ট করে আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করলে ভাল হয়।
দলের চাটুকাররা তো কখনোই নেতা নেত্রীকে দেশের , জনগনের চাওয়া পাওয়াটা ভাল করে জানতে দেয় না। কাজেই এ জাতীয় লেখা গুলো তাদের হাতে পৌঁছানো দরকার।
দুর্দান্ত হয়েছে।!

রানা মেহের এর ছবি

অসাধারণ লেখা ইশতি
নির্মোহ বিশ্লেষন

এলেখা আওয়ামীলীগের কাছে পৌছালে গালি কিছু খাবেন।
তবু যদি পৌছাতো।

কিন্তু এইকথাগুলো না জানার মতো বোকা তো আওয়ামীলীগ নয়।
তারা ঠিকই জানে।
তবু গ্রাহ্য করেনা, কারণ তাদের নেত্রী জেলে ঢুকে আবার বেরিয়ে যান।
তারা ঠিকই জানে কিছু মানুষ শুধুমাত্র জামাত বিএনপি জোট কে হারানোর জন্য
আওয়ামীলীগকে ভোট দিয়ে যাবে।
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করা বোকা লোকগুলো
নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়িয়ে নথি সংগ্রহ করে বেড়াবেন।

এখন মনে হয় আওয়ামীলীগ আসলে নির্বাচনের ব্যাপারে খুব চিন্তিত নয়।
তারা জানে এবার জিতেছে বলেই তারা পরেরবার হারবে।
আবার তার পরের টার্মে ফিরে আসবে।
বাংলাদেশের কাছে আসলে খুব বেশী অপশনও নেই

আবারো চমতকার লেখার জন্য অভিনন্দন
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

লিখা ভাল লাগছে। চলুক
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

জিজ্ঞাসু এর ছবি

অসাধারণ বিশ্লেষণ। ধন্যবাদ।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

অবাঞ্ছিত এর ছবি

অসাধারন!
__________________________
I think , therefore i am - Descartes

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

ধ্রুব হাসান এর ছবি

ভালো বিশ্লেষন চলুক

তবে এর মানে বুঝলাম না। হল দখলের সাথে এর কি সম্পর্ক?

সোভিয়েত রাশিয়ার পতন একঝাঁক নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিক দিয়েছে। আওয়ামী লীগ তাঁদের যথাযথ মূল্যায়ন করেনি কখনই। সামনেও করবার সম্ভাবনা ক্ষীণ। প্রমাণ হল, দেশ থেকে খবরে জানলাম ছাত্রলীগ এরই মধ্যে হল দখলে নেমেছে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

= এটি "পার্টি বিল্ডিং"-এর একটি বড় সুযোগ, যা আওয়ামী লীগ হারাবে। বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি এক টানা অনেক বছর ক্ষমতায় থাকায় তারা দল গঠন করতে পেরেছে, দলে নতুন ও মেধাবী মুখ আনতে পেরেছে। '৯৬-এ নির্বাচিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগ এটি করেনি। এবারেও এই সুযোগ তারা হারাবে। এমন মানসিকতাই না থাকার প্রমাণ হল আবাসিক হলগুলো দখল করতে নেমে যাওয়া। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন না হলে এখন যেই নেতারা আছেন, তারাও থাকতেন না।

ধ্রুব হাসান এর ছবি

তবে কি আপনি বলতে চান প্রাক্তন বামদের জন্য এই সাফল্য? আমার তা মনে হয়না। বরং উল্টোটা হয়েছে, অনেকে জীবনে প্রথম নির্বাচিত হয়েছেন শুধুমাত্র নৌকা প্রতীকের জন্য।
এই হল দখল অবশ্যই একটি অদূরদর্শী ও হঠকারী সিদ্ধান্ত, তবে এই দখল ঠেকাতে আগে চাই দখলমুক্ত করা। ছাত্রদল ও শিবিরের দখলে যেসব হল রয়েছে তা অনতি বিলম্বে দখলমুক্ত করা হোক। এটা করা সম্ভব হলে ছাত্রলীগ গায়ে পড়ে দখল করবেনা বলেই আমার বিশ্বাস।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

তবে কি আপনি বলতে চান প্রাক্তন বামদের জন্য এই সাফল্য?

উহু, এটি বলছি না। আমি বলছি যে আওয়ামী লীগ শত্রু চিনলেও বন্ধু চেনে না।

আওয়ামী লীগের শাসন ও রাজনীতি নিয়ে বামপন্থীদের এক ধরণের অ্যালার্জি আছে। "আমজনতা"র একটা বড় অংশ মার্ক্সের ক্যারিশমার চেয়ে বঙ্গবন্ধুর ক্যারিশমার উপর ভরসা করেছিল বেশি। তাদেরই বদৌলতে এরা কালক্রমে আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত সমর্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বড় কোন স্টিমুলাস পেছনে না থাকলে এই ভোটারদের নতুন করে "দুনিয়ার মজদুর" পরিচয়ে পরিচিত করা কষ্টকর। এক সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল সেই স্টিমুলাস।

সোভিয়েত রাশিয়ার পতনের পর বাস্তবতা মেনে নিয়ে অনেক বামপন্থীই "নেক্সট বেস্ট থিং" তথা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগ দেন। '৭৫ এর পর জিয়া ও এরশাদের লম্বা শাসনামলে অনেকগুলো প্রজন্ম হারিয়ে গেছে। এরা যোগ দিয়েছে আওয়ামী-বিরোধী শিবিরে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ দল থেকে একে একে শীর্ষ নেতাকে বের করে দিয়েছে, এবং ক্ষমতায় না থাকায় দলীয় সংগঠন উন্নতির সুযোগ পায়নি। অতএব, এই এক ঝাঁক এককালের-ছাত্র-ইউনিয়ন ছিল প্রায় ২১ বছরে আওয়ামী লীগের একমাত্র ইনফ্লাক্স।

'৯৬-এ ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ এদের বা এদের আদর্শের (অসাম্প্রদায়িকতা, গণমুখী নীতি, ইত্যাদি) প্রতি কোন শ্রদ্ধা জানায়নি। এবারের নির্বাচনের সাফল্য এদের অবদান, তা বলছি না আমি।

আমি বলছি, এই নির্বাচনের সাফল্যের জন্য রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত নন, এমন অনেক লোকের অবদান আছে। সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত থেকেও অতীতে অনেকে মূল্যায়ন পাননি। অতএব, এবারেও যে আওয়ামী লীগ দলবহির্ভূত উপকারীদের সম্মান দেবে, তা ভাবার কারণ নেই।

এটা আমার নিজের বিশ্লেষণ (ও হতাশা), ভুল হলে খুশিই হব।

একটু লম্বা হয়ে গেল বলে দুঃখিত।

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

পাঁচ-তারা পোস্ট! গুড জব ইশতি।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

বিরাট একটা অভিসন্দর্ভমূলক লেখার জন্য অভিকে অভিনন্দন। দেশকে নিয়ে অনেক ভাবে ছেলেটা।

তবে এবার আওয়ামী লীগের ও মহাজোটের ভূমি-ধ্বস বিজয়ের মূল কারণ এসব নয়।
অভি নিজেই উল্লেখ করেছেন নিজামী মাত্র ২২ হাজার ভোটে হেরেছে। এবং নিজামী বিপুল ভোট পেয়েছে। জানা থাকা ভালো যে নিজামী গত বারের নির্বাচনের চেয়ে মাত্র ৫ হাজার কম ভোট পেয়েছে।

হঠাৎ করে বাংলাদেশের লোকজন নৌকার হয়ে গেছে এরকম মনে করা ভুল। এবারের নির্বাচনেও দলীয় ভোটগুলো দলের বাক্সে পড়েছে। বিএনপি সম্ভবত: ৩২% ভোট পেয়েছে। ভোট অনুপাতে সংসদীয় আসন ভাগ হলে বিএনপির ভাগে ৯০-এর উপরে আসন যাওয়ার কথা।

তাহলে কেন এই ফলাফল?
খালেদা জিয়ার প্রতিক্রিয়াতে একটা ভালো ইঙ্গিত আছে। তিনি ধন্যবাদ দিয়েছেন সিইসি কে। যদিও এটা ব্যজস্তুতি। নীলনকশার নির্বাচন বলে খালেদা জিয়া সিইসি বা নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।

বিএনপি ও চারদলীয় জোটের পরাজয়ের কারণ এখানেই। এক কোটি ভোটার হারিয়ে যাওয়া। গত ভোটার লিস্টে থাকা এক কোটি ভোটার নতুন ভোটার লিস্টে হাওয়া হয়ে গেছেন। এই ভুয়া এক কোটি ভোটারের ভোট ভাগ করে দিয়ে দিন চারদলকে। দেখবেন ফলাফল আগের নির্বাচনের মত।

আওয়ামী লীগের/মহাজোটের বিজয়ের একটা বড় কারণ ছবিযুক্ত ভোটার লিস্ট। ভুয়া ভোটার এবার সিল মারতে পারেনি। দ্বিতীয়ত: আওয়ামী লীগের সংখ্যালঘু সমর্থকেরা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে পেরেছেন - যা স্বাভাবিক সময়ে তারা পারেন না। এবারও সা-কা'র কেন্দ্রে ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে ভীতি দেখানো হয়েছে। ফলও সা-কা-র অনুকূলে গেছে।

নির্বাচন কমিশন সীমানা অদল-বদল করায়, আগে ভোটের খেলায় এলাকাভিত্তিক একটা চক্র তৈরি করে রাখা হতো - সেই পুরনো সিন্ডিকেট ভেঙে যাওয়াও বিরাট বিরাট জাতীয়তাবাদী নেতাদের পতনকে সহজ করেছে।

অভি যে কারণগুলো উল্লেখ করেছেন সেগুলো পরবর্তী পর্যায়ের প্রভাব রেখেছে। পরবর্তী পর্যায়ের প্রভাব মানে সুইং ভোটারদের প্রভাবান্বিত করতে ভূমিকা। ভোট, ভোটার লিস্ট আর ভোটের দিন ঠিকঠাক মত ভোট হওয়ার ওপর নির্বাচনের আসল ফলাফল নির্ভর করে।

সুতরাং আগামীবার নির্বাচনে জেতার জন্য মহাজোট যা করবে তাও পাঁক খাবে এই ভোটার লিস্ট, আসনের সীমা, আর ভোটের দিনের পরিবেশ নিয়ে।

ভোটের হিসেবে শুধু আসনের সংখ্যা দেখলে আসল চিত্রটা ধরা যাবে না। দেখতে হবে বিভিন্ন মার্কায় প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা। রিপাবলিকানরা যেমন রিপাবলিকান প্রার্থীকেই ভোট দেয়, ডেমোক্র্যাটরা ডেমোক্র্যাটদের। আওয়ামী - বিএনপির ক্ষেত্রেও তাই।

বেশিরভাগ নির্বাচনেই মানুষের সত্যকার ভোট নানা ইঞ্জিনিয়ারিং-এ শেষ মেশ পরিবর্তিত ফলাফল নিয়ে এসেছে। এবার জনগণের ইচ্ছার অনেকটা নির্ভুল প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে ফলাফলে। ফলে আওয়ামী লীগ জিততে পেরেছে।
আর অভি যে কারণগুলো উল্লেখ করেছে সেগুলো যোগ হওয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয়টা নিরঙ্কুশ হয়েছে।

আগের ভোটার লিস্ট থাকলে ফলাফল হতো বিপরীত।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

নির্বাচনী আসনের সীমানা পরিবর্তণ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ একটি কারণ। আমেরিকায়ও এর সুবিধা নিয়েছে বিজয়ী দলগুলো। তবে আগামী বারে এর সুযোগ বিএনপি-জামায়াত বেশি নেবে। দেখা যাক ভাসমান ভোট ধরে রাখার এই ব্যাপারটা আওয়ামী লীগ কীভাবে করে।

আরো জানা গেল যে বিএনপি-র হার্ডকোর ভোটার ৩২% মত। আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে এটি ৪০-৪৩% মত। বাংলাদেশের নির্বাচন তাহলে নিরূপিত হয় ১০-১৫% ভোটারের মতের উপর ভিত্তি করে। আশা করি আওয়ামী লীগ সঠিক ১৫% মানুষকে চিনবে।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আ.লীগের বুঝতে হবে উল্টা পাল্টা করলে ফলাফল কেমন ভয়াবহ হতে পারে। ক্ষমতায় থাকার একটাই উপায়-- দেশের জন্য কাজ করা, মানুষের জন্য কাজ করা, যে পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেয়া (মানুষ বোধহয় রাতারাতি পরিবর্তন আশা করেনা)।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

আওয়ামী লীগের তাই সবচেয়ে বড় ধন্যবাদ দেওয়া উচিত তারেক জিয়াকে তার অবিমৃশ্যতার জন্য, ডিসেম্বর মাসকে বিজয়ের মাস হওয়ার জন্য, আর অগণিত দেশপ্রেমিককে মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারে ব্যাপকভিত্তিক জনমত গড়ে তুলবার জন্য।
দারুণ বলেছেন। চমৎকার বিশ্লেষণপূর্ণ লেখা।

সৌরভ এর ছবি

গুড জব ডান।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

রায়হান আবীর এর ছবি

দারুন লেখা। চলুক

=============================

সবজান্তা এর ছবি
শিক্ষানবিস এর ছবি

চমৎকার বিশ্লেষণ। আওয়ামী লীগকে এগুলো বোঝানো দরকার। খুব বেশী পরিবর্তন আশা করি না। কিন্তু অন্তত ভালোর দিকে যেন যাত্রা শুরু হয়...

কীর্তিনাশা এর ছবি

চমৎকার বিশ্লেষন! চলুক

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

অতিথি লেখক এর ছবি

হ্যাঁ, দিয়ে দিলাম উজার করে, প্রথমবারের মত।

প্রফাইল

.....................................................................................................................
চায়ের সাথে টাও দিলাম সড়ক দেখে হেঁটো
গাছের মরা ডালটা দিলাম কুড়াল দিয়ে কেটো

পলাশ দত্ত এর ছবি

প্রিয় ইশতিয়াক,
আপনার পুরো লেখাটা পড়লাম। মন্তব্য তো সব হয়েই গেছে।।

শুধু এইটুকু বলি : নিচের ইটালিকস করা অংশটুকু পড়তে গিয়ে শরীর শিরশির করে উঠেছে (আর চোখে একটু বাষ্প অনুভব করছিলাম।)
পরবর্তী নির্বাচনের সময় হয়তো দেশপ্রেম নামক চিজটি এমন “হিপ” থাকবে না। তখন হয়তো মুম্বাইয়ের নায়ক-নায়িকার মত “আমার বাংলাদেশ”ও “কুল” থাকবে না। হয়তো সেবার কোন ঠিকা বুয়া দু’দিন আগে তেহকেই ঠিক মত ব্যালট পেপার ভাজ করার পদ্ধতি রপ্ত করতে লাগবেন না। হয়তো সেদিনও অলস দুপুরে গুগুলে “বাংলাদেশ” লিখে সার্চ করলে আদৌ আমার দেশ নিয়ে একটি মানসম্মত বাংলাদেশি ওয়েবসাইট পাওয়া যাবে না। হয়তো সেদিন আর ইন্টারনেট জুড়ে ‘মুক্তিযুদ্ধে মৃতের সংখ্যা অতিরঞ্জন’ দাবি করলে আর কোন তরুণ ছাত্র বা সাংবাদিক উদ্যোগী হয়ে প্রতিবাদ করবেন না। হয়তো সেদিন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রাজনীতিকদের উন্নাসিকতা উপেক্ষা করে কোন এমএমআর জালাল নিজ খরচে প্রবাসের পথে পথে ঘুরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সব রকম নথি সংগ্রহ করে যাবেন না।

একটা স্যালুট নেবেন।।

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

অমিত আহমেদ এর ছবি

দুই বার মন্তব্য হারিয়ে গেলো।
আবার বলি, লেখা অসাধারণ হয়েছে ইশতি।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

রাফি এর ছবি

অসাধারণ লেখা ইশতিয়াক ভাই।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

ফাহিম এর ছবি

অসাধারন লেখা। চমৎকার...

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

আশফাক এর ছবি

এক কথায় অসাধারণ। ব্যক্তিগত ভাবে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত পরিপন্থা নিয়ে আমি খুবই সন্দিহান। ৯৬ তে তারা যে সুযোগটা পেয়েছিল তার খুব অল্পই ব্যবহার করেছিল তারা। আমার মনে হয় শেখ হাসিনা ইতিহাস বিক্রির রাজনীতিতেই বেশি বিশ্বাসী। আরও একটা ভয় আছে, লীগের ভেতরেই একটা চক্র আছে যাদের মুল কাজ হল ক্ষমতার আশে পাশে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করা, নির্বাচন চলাকালীন এই গোষ্ঠীটি আমার মতে নীরবই ছিল। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তাদের রুপটা ভিন্ন হবে, ৯৬ এর মত শেখ হাসিনা এবারও যদি তাদেরকেই তার পাশে রেখে দেশ পরিচালনা করেন, তবে ফলাফল খুব একটা আলাদা হবে না।

নতুন বছরের শুরুতে আমরা যারা নিজেদের শিক্ষিত, সচেতন বলে দাবি করে তাদের এই লেখাটি একটু পড়ে নেয়া উচিত। সাবাষ ইশতিয়াক, 'ইশতি' কখনই বলা হবে না তোকে, তবে এটা সত্য, তোর বিশ্লেষণী ক্ষমতার এবং চরম সত্য বলার অভ্যাস কখনই আমাকে বিস্মিত করতে ব্যর্থ হবে না।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আমার পড়া বছরের সেরা একটা লেখা

০২
অথবা লেখাটা আমারই

যুধিষ্ঠির এর ছবি

দেশের রাজনীতির ব্যাপারে নিতান্তই হতাশাবাদী হয়ে যাওয়াতে এবার নির্বাচনের খবর অনুসরণের তেমন কোন তাগিদ অনুভব করিনি। আপনার এই সুনিপুণ বিশ্লেষনে পুরো পরিস্থিতির একটা পরিষ্কার ধারণা পাওয়া গেলো। অনেক ধন্যবাদ।

আসলে যে দল শেখ হাসিনার মত মোটামুটিভাবে অযোগ্য একজন ব্যক্তিকে এখনো নেত্রী হিসেবে ধরে রাখতে না পারলে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার আশংকায় ভোগে, যে দল দেশের সবচাইতে পুরনো আর অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হয়েও এখনো দলের ভেতরেই অগণতান্ত্রিক আর পরিবারপন্থী, যে দলে এখনো নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা তৈরীর কোন প্রক্রিয়া বা পরিকল্পনা নেই, সে দলের কাছ থেকে দেশ পরিচালনার ব্যাপারে আমরা আর কতটুকুই বা আশা করতে পারি? তারপরও এটা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য একান্তই দুর্ভাগ্যজনক যে এরকম একটি দলকেই নির্বাচিত না করলে আমাদের অন্য অপশন ছিলো স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদীদের ডেকে নিয়ে আসা।

আমাদের রাজনীতি এরকমই থাকবে। আপনার এই লেখা আওয়ামী নেতারা পড়ুন বা না পড়ুন তাতে দেশের ভাগ্যের কোন হেরফের হবে না। পাঁচ-দশ বছর বিএনপি-র নেতারা চুরি করবেন, পরের পাঁচ-দশ বছর আওয়ামী নেতারা একই কাজ করবেন। আমাদের মনে হয় চুরি-বাটপাড়ির রাজনীতির নিরবিচ্ছিন্ন চক্র থেকে বেরিয়ে আসা আর হবে না। তবে হ্যাঁ, চুরিদারিতে পদ্ধতিগত আর কৌশলগত অনেক পরিবর্তন আসবে। যাতে তারেক জিয়ার মত মহান চোরেরা এত সহজে ধরা পড়বেন না। দেশের প্রাপ্তি ওটাই।

বিপ্রতীপ এর ছবি

চমৎকার বিশ্লেষণ ইশতি চলুক
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
খুঁজে যাই শেকড়ের সন্ধান...

Chandan এর ছবি

আমার কাছে বেশি পন্ডিত মার্কা মনে হচ্ছে লেখা টা।
বিশেষ করে ভবিষ্যত নিয়ে কথা গুলি।
৩ বছর বা ৭ বছর আগে কিন্তু কেউ ভাবেনি ২০০৮ এ এই অবস্থা হবে।
You can never say what will happen in future.

হিমু এর ছবি

ঠিক। আমরা কেউ বলতে পারিনা যে কয়েক বছর পর আমাদের মাথায় শিং কিংবা পাছায় লেজ গজাবে কি না। ভবিষ্যত অতীতের মতোই রহস্যময়!

আপনার ২০০৯ সাল কম পান্ডিত্যে কাটুক। হ্যাপি নিউ ইয়ার।


হাঁটুপানির জলদস্যু

একজন [অতিথি] এর ছবি

প্রিয় chandan

আমিও চাই ইশতিয়াক ভাইয়ের লেখাটা যেন ৫ বছর পরে 'বেশি পন্ডিত মার্কা' লেখা হিসাবে গন্য হয়। তবে তার জন্যই আ.লীগকে মূল বিষয় অনুধাবন করতে ও সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার চেষ্টা করতে হবে এখন থেকেই।
সমস্যা হচ্ছে বেশির ভাগ নেতা ও সমর্থকরাই এই লেখার যুক্তিগুলোকে এখনি 'বেশি পন্ডিত মার্কা' হিসাবে বাদ দিয়ে দিচ্ছেন। যা ৫ বছর পর '৫ বছর আগেই ইশতিয়াক রউফ এই আশংকা করেছিলেন। লিংক দেখুন এখানে' এই ধরনের লেখার সম্ভবনাই বাড়াচ্ছে খালি।

রানা মেহের এর ছবি

প্রিয় চন্দন
এইসব 'পন্ডিতি' কে পাত্তা না দিয়ে
আপনি একটু শোনান না
কেমন হতে পারে ভবিষ্যত

You can never say what will happen in future

But at least you can assume.
Eagerly waiting for your opinion
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

বিশাল পোস্ট ভয় পাই।
তবে এটা পড়ার সময় একবারো মনে হয়নি।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

অতিথি লেখক এর ছবি

অত্যুত্তোম বিশ্লেষন।তয় আওয়ামী লীগরে এবার অনেক সচেতন ও সংযমী মনে হইতাছে।লেখকের সব প্রেডিকশন নাও মিলতে পারে।

সিরাত এর ছবি

শিখলাম। চলুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।