উর্দুতে নির্বাচনী প্রচারনা!

অভ্রনীল এর ছবি
লিখেছেন অভ্রনীল (তারিখ: শনি, ২৭/১২/২০০৮ - ৩:৪৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১.

এই পোস্ট নিয়ে কি লিখব বুঝতে পারছিনা। কেবল নীচের ছবিটা কেবল দেখুন! আওয়ামীলীগের নির্বাচনী প্রচারনার একটা পোস্টার।
auto

২.

মোহাম্মদপুরের বিহারী ক্যাম্পের ভোটারদের ভোট পাবার জন্য আওয়ামীলীগ উর্দুতে তাদের প্রচারনা চালাচ্ছে।

৩.

ভাবতে অবাক লাগে যে রাজনৈতিক দলগুলো কতটা নীচে নামতে পারে নির্বাচনে জেতার জন্য! উর্দুতে পোস্টার ছাপাতে অদের বুক এতটুকু কাঁপলনা??

[সূত্রঃ দি ডেইলী স্টার]


মন্তব্য

নির্জর প্রজ্ঞা এর ছবি

এই কয়েক বছরে বাংলাদেশের মিডিয়াগুলোতে যে বিপ্লব ঘটেছে তার সুফলতার নির্দশন হচ্ছে চোখের সামনে উঠে আসা এই সত্যগুলো। আপনাকে ধন্যবাদ পোষ্টের জন্য।
যদিও বাংলাদেশে যারা বিহারী রয়েছেন তাদের সম্পর্কে আমি অনেক কিছুই জানিনা। তবে এটা সত্যি তাদের পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের মতো জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। তাদেরকে বিহারী বলে আলাদা পরিচয় করানো আর উর্দু দিয়ে ভুলানো বাহুল্যতা?

*******************************
ব্যক্ত হোক তোমা-মাঝে অনন্তের অক্লান্ত বিস্ময়
(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর )

ব্যক্ত হোক তোমা-মাঝে অনন্তের অক্লান্ত বিস্ময়
(রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর )

রণদীপম বসু এর ছবি

যুগপৎ বিস্ময় ও হতাশার !
বিহারীরা কি বাংলা বুঝে না ? আমরা এখনো কোথায় বাস করছি ! এই দুঃসহ মানসিক পরাজয় মানতে কষ্ট হয় খুব। লজ্জা...লজ্জা...!!!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

রণদীপম বসু এর ছবি

auto

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অবাঞ্ছিত এর ছবি

শালারা বাংলা না বুঝলে বাংলাদেশের নির্বাচনে তাদের ভোটেরই বা কি দরকার?

অনাকাঙ্খিত ও দুঃখজনক...

I think , therefore i am - Descartes

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

১. খুবই আপত্তিকর লাগলো মন্তব্যটা। ভাষা আন্দোলনের প্রধান দাবি ছিল মাতৃভাষার অধিকার এবং সকল ভাষার সমানাধিকার। সেটা উর্দু বিরোধী আন্দোলন ছিল বলে ইতিহাস প্রমাণ করে না।

২. বিহারি বা হিন্দু বা চাকমারা এই রাষ্ট্রের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, ধর্ম বা জাতি। তাদের অধিকার রক্ষা বিনা সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্টীর অধিকার রক্ষা হওয়া কঠিন।

৩. বিহারি প্রজন্মের যারা এখানে জন্মেছে যারা এখানে থাকতে চেয়েছে যারা এই রাষ্ট্রের আনুগত্য স্বীকার করে উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তাঁরা এখনকারই নাগরিক ও ভোটার। তাদের জন্য তাদের ভাষায় প্রচার করাটাই সঙ্গত ও সম্মানজনক। আমি খুবই খুশি হতাম একই কাজ যদি পাহাড়িদের বেলায় করা হতো।

৪. আওয়ামী লীগের ঐ প্রার্থী হয়তো কৌশল হিসেবে এটা করেছেন, তাহলেও নীতিগতভাবে আমি একে অভিনন্দন জানাই। কারণ তিনি উদার জাতীয়তাবাদ ও অসাম্প্রদায়িক আচরণ করেছেন। অন্যভাবে বিহারিদের বিএনপি-জামাত বা এধরনের দলের বলয় থেকে সরিয়ে আনার জন্যও এটা কাজের।

৫. একাত্তরে যেসব বিহারি অপরাধ করেছিল তাদের বিচার হওয়া দরকার। যারা মুক্তিযুদ্ধে অবদান রেখেছেন তাদের ২/১জন পুরষ্কৃতও হয়েছেন। বাকিদেরও করা দরকার। বাংলাদেশের উর্দুভাষীদের মধ্যে প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনা আগে থেকেই প্রবল ছিল। দুঃখের বিষয় যে তাঁরা তাদের জনগোষ্ঠীর নের্তৃত্বে আসতে পারেননি। এসেছে কিছু ধান্দাবাজ লোক। রেহমান সোবহানরাও কিন্তু পারিবারিকভাবে উর্দুভাষী। তাই বলে তাঁকে ঘৃণা করা হয় না কেন? তাঁর প্রগতিশীলতার জন্য না তাঁর এলিট শ্রেণীর অংশ হওয়ার জন্য???

৫. আজ উর্দু নয় আমাদের ভাষার বিকাশের জন্য হুমকি ইংরেজি ও হিন্দি। ইংরেজরা দুইশ বছর শাসন করেছিল, তাদের হাতেও গণহত্যা ও দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়েছিল। বাংলার জাতীয় বিকাশের পথকে চিরতরে তারা ক্ষতিসাধন করেছে। আজ হিন্দি চ্যানেলের আগ্রাসন আমাদের তরুণদের ভাব ও চিন্তাকে দূষিত করছে। সে বিষয়ে কী করণীয়। তাই বলে হিন্দি বা ইংরেজির প্রতি ঘৃণা করার প্রস্তাব করছি না।

৬. সুতরাং এই পোস্টের চেতনাটি সমর্থনীয় নয়, একাত্তরের জায়গা থেকেও বায়ান্নর জায়গা থেকেও।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

অর্ক [অতিথি] এর ছবি

আমার মনে হয় এর সঙ্গে দলটির সম্পূক্ততা নেই। প্রার্থী নিজ উদ্যোগেই হয়তো কাজটি করেছেন আর বিহারীদেরও তাদের নিজ ভাষা চর্চা করার অধিকার আছে।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এখন কেউ যদি ইসলাম টিভির গানের মত উর্দুতে ভাষণ দেয়া শুরু করে তাহলে কেমন অবস্থা হবে চিন্তা করেছেন?

রানা মেহের এর ছবি

কী আর বলবো
জঘন্য
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

ঢালাও বকাঝকায় যোগ দিতে পারলাম না। ইতিহাসের দিকে চোখ রেখেই বলছি সেটা। বয়স্ক বিহারীদের অনেকেই শুধু উর্দু পড়তে জানেন, এমনটা ভাবা অস্বাভাবিক না। তাদের জন্যে কি আলাদা প্রচারণা হতে পারবে না? এমনটা কোথাও বলা হচ্ছে না যে মোহাম্মদপুর বা ঢাকার আম-জনতার জন্যে এই লিফলেট ছাপানো হয়েছে। যতদূর বোঝা গেল, শুধু বিহারীদের জন্যেই। তাই আবারো এরকম করে বিভাজন সৃষ্টির বিপক্ষে। আর লিফলেট-টাও তো আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষেই।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

দিগন্ত এর ছবি

আমি আপনার সাথে একমত। এমনকি ভাষা-সংখ্যালঘু আদিবাসী বা চাকমাদের জন্যও এরকম ব্যবস্থা থাকলে খুশী হব। ভাষা-সংখ্যালঘুদেরও ভোটের অধিকার আছে আর তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকার সহ সংখ্যাগুরুদেরও। পশ্চিমা দেশগুলোতে এই ব্যাপারগুলো জলভাত ...


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

ধন্যবাদ দিগন্ত, সুবিনয় ও শিমুল, শতভাগ একমত। নেতিবাচক নয় আমি একে ইতিবাচক কাজ হিসেবেই দেখি।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

একমত।

অমিত আহমেদ এর ছবি

সুবিনয় মুস্তফীর সাথে একমত।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

থার্ড আই এর ছবি

নির্বাচনে উর্দু লিফলেট ব্যবহার নিসন্দেহে উর্দূভাষীদের সম্মান প্রদর্শণের অংশ হিসাবে দেখা উচিত। যাদের রাষ্ট্রভাষা বাংলা তাদের কাছে যেমন বাংলা ভাষা মায়ের ভাষা, তেমনি উর্দূভাষীদের কাছে উর্দূভাষা অনেক সম্মানের। অন্যের ভাষার প্রতি সম্মান দেখানো দোষের কিছু নাই। যদি না কোন বাংলা ভাষা ভাষীকে জোর করে উর্দু গেলানো না হয়।

সুবিনয়ের যুক্তির সাথে সহমত।

উদাহরণ দেই, বিলেতে টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকায় সরকারী অর্থে যে পত্রিকাটি বিনামূল্যে প্রচার হয় সেটির চারপাতা বাংলায় প্রচার হয়। কই আমিতো কোন ইংরেজকে দেখিনাই কেন এই পত্রিকাটার বাংলা অংশ রয়েছে তার প্রতিবাদ জানাতে।

বরং সংখ্যা লঘুদের তাদের নিজের ভাষার চর্চার সূযোগ দেয়া রাষ্ট্রের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

পলাশ দত্ত এর ছবি

একমত। আদিবাসীদের কথাটা কেউ ভাবলো না- এটাই দু:খের।

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

নির্বাক এর ছবি

একমত
_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!

_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!

প্রফাইল [অতিথি] এর ছবি

১. সহমত নই। যে উর্দুকে সম্পূর্ণভাবে ত্যাগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ গড়ে ওঠার রক্ত আর আগুনঝরা সংগ্রাম শুরু হয়েছিল ১৯৪৭-এ; যে সংগ্রামের ফসল এই 'বাংলা'দেশ সেখানে যেকোন ছুতায় ও পরিসরে উর্দু ব্যবহার গ্রহণযোগ্য নয়। শ্রদ্ধা দেখানো বা মনযোগ আকর্ষণের অন্যান্য উপায়ও নিশ্চয়ি আছে।

২. যেসব বিহারিরা বাংলাদেশে আছেন বাংলাদেশ সৃষ্টিতে তাদের অবদান কতটুকু তা ইতিহাসের দস্তাবেজে আছে। তাদের বেশিরভাগই পারলে চলে যায়। এদের করুণ অবস্থার অবশ্যই মানবিক সমাধান হওয়া দরকার। কিন্তু তা অবশ্যই উর্দুতে ভোট ভিক্ষার মাধ্যমে নয়।

৩. উর্দুতে নির্বাচনী প্রচার ভাষা-'সংখ্যালঘুদের' প্রতি সম্মান বা লালন নয় বরং এটা ভোটে জেতার কূটকৌশল যা প্রতারণার শামিল।

৪. মনে রাখা ভাল, দেশদরদী জনদরদী রাজনীতিকরা কোনদিনই ঐ রাষ্ট্রহীন মানবেতর জীবনযাপনকারীদের দিকে তাকাননি। পাকিস্তানে কোন বাঙালি এতবছর ক্যাম্পে আছেন কিনা জানা নেই।

অমিত আহমেদ এর ছবি

তাদের বেশিরভাগই পারলে চলে যায়।

বেশি না কম সে নিয়ে ধারণা নাই। তবে আমার পরিচিত কিছু বিহারি ছেলে আছে। তাদের মনোভাব দেখেছি এমন "পাকিস্তান আমাদেরকে পুছে না, আমরাও পুছি না।"
হতেই পারে তারা সেই কমভাগের লোক।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

রাগিব এর ছবি

সুবিনয়, দিগন্ত, এবং থার্ড আই এর সাথে একমত।

আচ্ছা, এখানে যদি বিহারীর বদলে মণিপুরী হতো, আর উর্দুর বদলে বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষা হতো, তাহলে কি কারো আপত্তি থাকতো? অথবা চাকমা ভাষা?

বাংলাদেশে থাকতে হলে সবাইকে বাঙালি হতে হবে এমন ধরে নেয়ার কোনো কারণ নেই। এই এক গোয়ার্তুমির জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামে গত ৩৫ বছর ধরে রক্ত ঝরছে।

ইসলামী টিভির উর্দু গানের সাথে এটার তুলনা করা চলেনা, কারণ পোস্টারটি পুরো বাংলাদেশ নয়, বরং একটি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষভাবে ফোকাস করে তৈরী।

জাতিতে বিহারী হলেও এরা এখন বাংলাদেশের নাগরিক। ঘৃণা ও জাতিগত বিদ্বেষ কেবল এদের দূরেই ঠেলে দিতে পারে, যা মোটেই কাম্য নয়।

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

চলুক চলুক চলুক চলুক চলুক

মুশফিকা মুমু এর ছবি

আপনি যে দেশেই যাবেন সেখানেই তাদের নিজেদের ভাষা নামবার ওয়ান রেখে তারা কখনো কখনো অন্যান্য ভাষায় ট্র্যা্সলেট করে। ইউরোপের অনেক দেশে ইংলিশ জানলেও তারা তাদের নিজেদের ভাষা ছারা কথার উত্তরই দিবেনা। এখানেও বাংলায় পুরোটা লিখে নিচে উর্দুতে হয়ত কিছুটা এক্সপ্লেইন করতে পারত। সরি রাগিব ভাই আপনার মত গুছিয়ে বলতে পারলাম না, আমি আপনার সাথে একমত না আর আমার ব্যপারটা ভাল লাগল না।
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

মুশফিকা মুমু তাহলে বলতে চাচ্ছেন, বাংলায় কিছু ভূমিকা দিয়ে তারপরে উর্দু দিলে সমস্যা ছিলো না?

মুশফিকা মুমু এর ছবি

কি জানি, উর্দুতে লেখা দেখে অনেক অবাক হলাম। ভাল লাগল না ব্যপারটা, খারাপ লাগল। তবে ওদের নিজেদের স্বার্থে ওরা ওভাবে লিখতে পারত, বাংলাকে প্রধান করে।
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

মুমু, আপনার কথাগুলো রাগিব ভাইয়ের প্রতি ছিলো, তবুও আমি যেহেতু রাগিব ভাইয়ের বক্তব্যের সাথে একমত সেহেতূ দুয়েকটা কথা বলিঃ

আপনি বলেছেন -

আপনি যে দেশেই যাবেন সেখানেই তাদের নিজেদের ভাষা নামবার ওয়ান রেখে তারা কখনো কখনো অন্যান্য ভাষায় ট্র্যা্সলেট করে। ইউরোপের অনেক দেশে ইংলিশ জানলেও তারা তাদের নিজেদের ভাষা ছারা কথার উত্তরই দিবেনা। এখানেও বাংলায় পুরোটা লিখে নিচে উর্দুতে হয়ত কিছুটা এক্সপ্লেইন করতে পারত। সরি রাগিব ভাই আপনার মত গুছিয়ে বলতে পারলাম না, আমি আপনার সাথে একমত না আর আমার ব্যপারটা ভাল লাগল না।

কোন দেশে কোন জিনিশ কখন ট্রান্সলেট করা হবে সেটা সেটা ডিপেন্ড করে সিচুয়েশন অনুযায়ী। সব সময় ট্রান্সলেট করে বা একেবারে করে না, এরকম ধরাবাঁধা কিছু নেই। ইউরোপের অনেক দেশে তারা নিজেদের ভাষা ছাড়া উত্তর দিবে না। ঠিক্বলেছেন। ঢাকায় আমাকে কোনো বিহারী উর্দু/হিন্দিতে কথা জিজ্ঞেস করলে আমি জবাব দেবো না। কিন্তু, ভেবে দেখুন - আপনি যখন ইউরোপের কোনো দেশে থাকবেন, ধরি ওরা ইংরেজিতে কথা বলে, এখন আপনি ইংরেজী জানেন না। ঐ দেশের কোনো লোক/দল/সরকার আপনার কাছে জরুরী কিছু জানাতে চাচ্ছে, আপনার মতামত জরুরী। যেহেতু আপনি ইংরেজী জানেন না, সেহেতূ ওরা ক্ষমতা থাকলে বাংলায় ট্রান্সলেট করে ব্যাপারটি আপনাকে জানাবে। আপনি তো ইংরেজী একেবারেই জানেন না, তাহলে - শুধু শুধু ইংরেজীতে ভুমিকা দেয়ার দরকার কি? তবে হ্যাঁ, লিগ্যাল ডকুমেন্টে (যেমন বিজনেস কন্ট্রাক্ট) অনেক সময় ভিন্ন ভাষার পাশাপাশি ইংরেজীতে অনুবাদ থাকে, যাতে দ্বন্ধের সময় ৩য় পক্ষের আশ্রয় নেয়া যায়।
বিদেশের কথা না বলে, একেবারে দেশের কথাই বলি। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে ঘুর্ণিঝড়ের আশংকা থাকলে শুদ্ধ বাংলায় নয়, একেবারে খাস চিটাগোনিয়ান ভাষায় সতর্কবাণী দেয়া হয় রেডিওতে। আসল বাংলার হানি হয় না মোটেও।

বোঝাতে পারলাম কি? আর রাগিব ভাই পার্বত্য চট্টগ্রাম/আদিবাসী নিয়ে কী বলেছেন; সেটা আরেকবার বোঝার চেষ্টা করতে পারেন। তাহলে আশা করি আর সমস্যার কিছু বলে মনে হবে না।

মুশফিকা মুমু এর ছবি

ভাইয়া আপনি লিখিত ভাষার সাথে আন্চলিক ভাষা কমপেয়ার করছেন কেন? উর্দুর সাথে আন্চলিক ভাষার কমপেয়ার হয়না। আমি এতই অবাক এটা দেখে আর এটার সাপর্ট দেখে দেখে আরো বেশি অবাক। ভাইয়া আপনি এর পখ্খে হাজারটা কারন দেখালেও আমি এটা মানতে পারবনা। হয়ত আমি স্টাবর্ন তাই।
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

অমিত আহমেদ এর ছবি

চাটগাঁইয়া বুলি আঞ্চলিক ভাষা না [উইকিপিডিয়া]।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

রাগিব এর ছবি

আপনি যে দেশেই যাবেন সেখানেই তাদের নিজেদের ভাষা নামবার ওয়ান রেখে তারা কখনো কখনো অন্যান্য ভাষায় ট্র্যা্সলেট করে। .... বাংলায় পুরোটা লিখে নিচে উর্দুতে হয়ত কিছুটা এক্সপ্লেইন করতে পারত।

আমি ঠিক জানিনা আপনি যেখানে আছেন সেখানে কী অবস্থা, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বহু স্থানে সম্পূর্ণ স্পেনীয়, ভিয়েতনামী, বা চীনা ভাষায় লেখা বুকলেট দেখেছি। বিশেষ করে যেখানে এরকম সংখ্যালঘুদের সাথে যোগাযোগের ব্যাপার থাকে, সেখানে সম্পূর্ণ তাদের ভাষাই ব্যবহার করা হয়। অধিকাংশ ব্যাংক বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কাস্টমার সার্ভিসে ফোন দিলেও শুরুতেই বলে স্পেনীয় ভাষাভাষীরা ২ টিপে স্পেনীয় ভাষায় সেবা নিন। (স্পেনীয় ভাষাতেই বলে সেটা)। নিচের একটা কমেন্টে বলেছি, সবাই এই পোস্টের তর্কাতর্কিতে একটা জিনিষ বাদ দিয়ে যাচ্ছে, এই পোস্টারটি বাঙালিদের জন্য নয়, বরং একজন উর্দুভাষী আরেকজন উর্দুভাষীর সাথে যোগাযোগের জন্য বানিয়েছে। সেখানে বাংলা ভাষা কেনো ব্যবহার করাটা বাধ্যতামূলক, আমি বুঝতে পারলাম না। আমেরিকা বা অস্ট্রেলিয়াতে যদি স্পেনীয় ভাষাভাষীদের জন্য স্পেনীয় ভাষার টিভি চ্যানেল খোলা হয়, তার সিংহভাগ অনুষ্ঠান ইংরেজিতে রেখে স্পেনীয় সাবটাইটেল দেয়াটা কি যুক্তিযুক্ত মনে করবেন?

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

অমিত আহমেদ এর ছবি

বক্তব্য ঠিক আছে।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

সৌরভ এর ছবি

খবরটা আমি পত্রিকায় দেখলাম কাল।
আমি এতে দোষের কিছু পাই নি। বাংলাদেশে বাংলাভাষী ছাড়াও নাগরিক রয়েছেন - এটা আমরা ভুলে যাচ্ছি কেনো? সারাদেশে নিশ্চয়ই এই লিফলেট ছড়ানো হয় নি।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

এ ধরনের প্রচারে দোষের কিছু দেখছি না। বরং সাধুবাদ জানাই।

নজমুল আলবাব এর ছবি

চাকমা, মারমা বা অন্য ভাষায় কি পোস্টার লিফলেট করা হয়েছে? মনিপুরী ভাষায়?

আমি হতাশ।

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

প্রফাইল [অতিথি] এর ছবি

ঐসব উর্দুভাষী বিহারিরা তাদের বর্বর শাসককূল ও রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সময় ও পরে অসংখ্য বাঙালি-বুদ্ধিজীবী হত্যার সাথে জড়িত। তারা এদেশে আছে নিতান্ত অবস্থার চাপে পড়ে, জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী। শুধু মানবিকতার কারণে তাদের প্রতি মায়া হয়। নাহলে তারা ভয়ঙ্কর যুদ্ধাপরাধী হয়েও এদেশের আলোবাতাস খাচ্ছে। আর হালে তাদের উত্তরসূরিরা এদেশের "নাগরিক", "পার্বত্য চট্টগ্রাম/আদিবাসী" যারা বাঙালিদের মতই বীরযোদ্ধা তাদের সাথে এদের তুলনা করা হচ্ছে। বলিহারি!

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

প্রফাইল,
আপনার ক্রোধ/ক্ষোভ'এর কমেন্ট পড়লাম। হাসান মোরশেদ ভাইয়ের এই পোস্ট পড়তে পারেন। অন্যভাবে ভাবার সুযোগ তৈরি হতেও পারে।

প্রফাইল [অতিথি] এর ছবি

শিমুল, জ্বী, অন্যভাবে ভাবছি বলেই ভাষাটা এখনো সংযত আছে, তাদেরকে মানুষ বলে ভাবি। মনে করি, এদের অবস্থার মানবিক সমাধান হওয়া দরকার। তবে 'প্রেম' আর 'নির্বাচনে' সবকিছুই 'বৈধ' বলে মনে করি না। সব কিছুরই একটা সীমা থাকা দরকার।

-------------------------------------------------------------------------
আমার পিতার পিঠে এখনও স্বাধীনতার জ্বলজ্বলে দাগ
অথবা
"শ্যামলী রূপসী বাঙলাভাষা
তুমি আর আমি দুর্বিনীত দাসদাসী.........."

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ওরা তো দেশের নাগরিকত্ব পেয়েছে। ভোটাধিকার আছে।
তাহলে আপনি কোথায় 'সীমা' টানতে চাচ্ছেন?

নজমুল আলবাব এর ছবি

ভোটাধিকার কারা দিছে? গোলাম আযমেরও ভোটাধিকার আছে।

এইভাবে এদের জন্য আলাদা প্রচারনা করলে সবার জন্যই করা দরকার। মনিপুরী, চাকমা সবার জন্য। এমনকি সিলেটের নিজস্ব হরফ নাগরী লিপি দিয়েও করতে হবে।

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

@আলবাব ভাই,
বিহারীরা কি মগবাজারে ৬ তলা বাড়ীতে থাকে? দুধভাত খেয়ে দুধশাদা পাঞ্জাবী পড়ে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে উস্কানি দেয়? এ/সি ঘরে বসে বসে "৩৭ বছর পরে যুদ্ধাপরাধী নিয়ে রাজনীতি কেন" বই লিখে? বিহারীরা সবাই কি শান্তি কমিটির মিটিং'এ গিয়েছিলো? ধর্ম নিয়ে রাজনৈতিক ব্যবসা করে? গোলাম আজমের সাথে বিহারীদের তুলনাটা হাল্কা মনে হলো।

মনিপুরী/চাকমা সবার জন্য এমন প্রচার দরকার আছে বলে আমি মনে করি। সব ভোটারের কাছে নির্বাচনী ম্যানিফেস্টো নিয়ে যাওয়া দরকার। সেটা আদিবাসী হলে প্রয়োজনে তাদের ভাষায়। এ নিয়ে মোটেও আপত্তি নেই।

নজমুল আলবাব এর ছবি

না নাই। ক্ষুদ্র ভাষাভিত্তিক জাতিগুলার জন্য এইরকম কিছু নাই। আমি একশত ভাগ নিশ্চিত।

বিহারীরা মগবাজার যায় নাই তো কি হইলো? তারা কি করছে না করছে সেইটা কি নতুন করে জানান দিতে হবে?

গো.আযম আর বিহারির তুলনা ক্যান হাল্কা মনে হয়? এরা এমন কি সোয়াব করছে যে তারা দুধে ধোয়া তুলসি পাতা হয়ে গেল? গোলাম আর বিহারি একি পয়দায়েশ। একি রকম আজিব জীব।

এই দেশে থাকলে তাদের বাংলা শিখেই থাকতে হবে। বিহার থেকে এসে যদি পাকি পিরিতি তাদের এতই উথলায়, তো বাংলাদেশের জন্য, বাংলার জন্য ভালোবাসা জন্মায় না ক্যান?

উর্দুতে পোস্টার করাটা আমি কোনোভাবেই মানতে পারলাম না। পারবো না। এইটা একটা অশ্লিল কাজ হইছে। খুবি অশ্লিল। বমি আসার মতো ঘেন্না হইতেছে।

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

চলেন একটা কাজ করি, এইসব বিহারীদের নাগরিকত্ব/ভোটাধিকার বাতিলের জন্য বিশিষ্ট আইনজীবি, জাঁদরেল ব্লগার মোহাম্মদ আলী আকন্দের থ্রু'তে মামলা ঠুকি। কাগজপত্র সব আপনি রেডি করেন। আমি কাক্কুর ফি দেবো।

আর বিহারীদের পশ্চাতদেশে বাড়ি দিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তাড়ানোর জন্য কতগুলা বেত/লাঠি লাগবে সেইটার একটা এস্টিমেট করেন। আমি দেখতেছি এত বেত।লাঠি ক্যামনে জোগাড় করা যায়। তারপরে না হয় একটা ব্যবস্থা করা যাবে।

গো'আজমরে আপাততঃ ওভাবেই থাক। কী বলেন?

নজমুল আলবাব এর ছবি

আমার আর কিছু বলার নাই।

রায়হান আবীর এর ছবি

শিমুল ভাই, পরবর্তীতে ঢাকা আসলে মিরপুর ১২ এর বধ্যভূমিতে ঢু মেরে আসবেন। আশা করি তখন গোঃ আযমদের সাথে বিহারীদের তুলনা আপনার কাছে হালকা মনে হবে না।

এই টপিকের পোস্টে আপনি বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, অসুবিধা নেই। কিন্তু তা যুক্তিযুক্ত করতে যেয়ে ভজঘট পাকিয়ে ফেলবে না। জামাতের সাথে বিহারীদের তুলনা আপনার কাছে এমন হালকা মনে হলো ক্যান, বুঝলাম না।

=============================

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

উহু, রায়হান আবীর। পড়ে বুঝতে হবে 'ভজঘট' কোথায় হচ্ছে।
৭১এর খুনী আলবদর বিহারী শামসদের প্রতি আমার সহানুভূতি নেই। একেবারেই না। সেটা প্রকাশের জন্য কোথাও ঢুঁ মারার প্রি-রিক্যুইজিটও লাগে না, ব্রাদার। সুতরাং আপনি ঐভাবে ব্যাখ্যা করলে ভুল করবেন।

যার ভোটাধিকার আছে, ভোটের রাজনীতিতে যারা কাস্টমার, তাদের কাছে মার্কেটিং ক্যাম্পেইন হিসাবে 'তাদের ভাষায়' 'তাদের কাছে' পোস্টার নিয়ে যেতে সমস্যা কি? এইটাই হচ্ছে মূল ব্যাখ্যা।

উপজাত হিসাবে আলাপে যেমন এসেছে - বিহারীরা এইদেশে থাকার অধিকার রাখে কিনা, তাদের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হবে কিনা সেইটা অন্য প্রসংগ। বিহারীদের এই অবস্থান আপনার কাছে অস্বস্তিকর মনে হলে তাদের জন্য দেশে কী ব্যবস্থা করা যায়, নাকি কোনোভাবে দেশ থেকে তাড়ানো যায় সেই ব্যাপারে আপনার বক্তব্য রাখতে পারেন। প্রয়োজনে আমার সহায়তা পাবেন।

নজমুল আলবাব এর ছবি

ভাষাটা তাদের তবেতো থাকবেই এদেশে যেহেতু ওরা ,ফেলবো শিখে উর্দু দ্রুত খুব
।বেশ পাবো কাস্টমার ,উর্দুতে হবে করতে অনুবাদ গল্পগুলো ।হবে শিখতেই

উর্দু পারিনা। তাই উল্টা লিখে একটু মিছিল দিলাম।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আবারও ভুল হচ্ছে, ভাইজান। উপরেই বলেছি 'তাদের ভাষায়' 'তাদের কাছে' বার্তা পৌঁছানোর কথা। কেউ আপনার বাড়ীতে উর্দু লিফলেট নিয়ে গেলে গদাম লাত্থি দিয়েন, আপত্তি নাই। উর্দু অনুবাদ না, দেশের এইসব বিহারী উর্দুভাষীর পরের পুলাপাইনদের, যাদেরকে আজীবন বাংলাদেশে 'থাকতে হচ্ছে', তাদের কীভাবে বাংলা শেখানো যায়, বাংলা প্রেম জাগানো যায়; সেটা নিয়ে ভাবা যেতে পারে।

অমিত আহমেদ এর ছবি

১) রাজাকারদের সাথে বিহারীদের তুলনা ঠিক না এই কারণে যে রাজাকাররা বাঙালিই ছিলো। তারা যা করেছে তা হচ্ছে বেঈমানী। বিহারিদের তা বর্বরতা, নিষ্ঠুরতা, কিন্তু বেঈমানী নয়।

২) বিহারীদের ব্যাপারটা ইয়েস/নো করে ফেলা যাবে না। মিরপুরে ছেলেবেলা কেটেছে, বিহারী এলাকায় গিয়েছি। ওদের মধ্যেও বিভাজন আছে। একটা অংশ, বিশেষ করে তরুনেরা, নিজেকে বাংলাদেশীই ভাবে। তাদের ভাব এমন, পাকিস্তান আমারে পুছে না আমিও পাকিস্তানরে পুছি না। আবার পাকিস্তানের খেলার সময় অনেকেই পাকিস্তানের পতাকা নিয়ে লাফালাফি করতে দেখেছি। অনেকেরই বাঁশের ছাঁদে পাকিস্তানের পতাকা ওড়ে। বাংলাদেশের পতাকাও উড়তে দেখি। একটানে সবাইকে বাতিল করে দেয়া ঠিক না।

৩) উর্দুতে উর্দুভাষীদের জন্য লিফলেটে আমি সমস্যা দেখি না। অন্য ভাষার জন্যও করতে হবে। বাংলাদেশে নানান ভাষার মানুষ থাকে এটা স্বীকার করে নিতে হবে। সব ভাষাভাষীদের অধিকার আছে তাদের ভাষা চর্চা করার। আমরা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছি এটা আমরা কেনো বুঝতে পারবো না?

৪) আনোয়ার সাদাত শিমুল বলেছেন,

উপজাত হিসাবে আলাপে যেমন এসেছে - বিহারীরা এইদেশে থাকার অধিকার রাখে কিনা, তাদের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হবে কিনা সেইটা অন্য প্রসংগ।

সেটাই।

ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

রায়হান আবীর এর ছবি

১নং পয়েন্ট

মানতে পারলাম না। কারণ একই হিসেবে বলা যায়, রাজাকার যারা তারাও বাংগালী ছিল না- তারা পাকিস্তানী ছিল, আমরা সবাই পাকিস্তানী ছিলাম। দেশের সাথে বেইমানী যদি কেউ করে থাকে- তাহলে তা করেছে মুক্তিকামী জনগন- মুক্তিযোদ্ধারা। তারা দেশের সার্বভৌমত্ব নষ্ট করে নতুন দেশের জন্য আন্দোলন করেছে। আর রাজাকাররা চেয়েছে তাদের অতি প্রিয় পাকিস্তান যেন খন্ড বিক্ষত না হয়। বিহারীরাও তাই।

=============================

অমিত আহমেদ এর ছবি

না, একই হিসাবে রাজাকারদেরকে "অবাঙালি" বলা যায় না... ঠিক যেই হিসাবে পাকি সেনাকে "বাঙালি" বলা যায় না। বাঙালি জাতিসত্তা মনে নিয়ে যুদ্ধ হয়েছে। সেখানে বেইমানি ক্যামনে আসে? দুঃখিত তবে আমি এই কথায় কোনো যুক্তি দেখতে পেলাম না।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

পূর্বপ্রজন্মের পাপের জন্য বংশপরম্পরা ধরে শাস্তি দিতে হবে এটা কেমন কথা? এটাও কি একধরনের বর্ণবাদ নয় যে, পূর্ব জন্মের পাপের ফলে এই জন্মে শাস্তিভোগ করতে হবে?
আমরা আমাদের রাজাকারদের বিচার করতে পারিনি বলেই কি তাদের প্রতি এত বিরাগ। বাকি কথা ওপরে এক মন্তব্যে বলেছি।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

প্রফাইল [অতিথি] এর ছবি

দেশে ত' অনেককিছু আছে এবং অনেককিছুই হচ্ছে। ভোটটানার জন্য ভোটাধিকার-উর্দুতে পোস্টার সবকিছুকেই সমর্থন করতে হবে?

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

@প্রফাইল,
সমর্থন / অসমর্থন থাকতেই পারে। আপত্তি নেই।
কিন্তু যেখানে একটি জনগোষ্ঠী আছে এতদিন ধরে। ভোটের রাজনীতিতে যারা 'গুরুত্বপূর্ণ' হচ্ছে, তাদের জন্য তাদের ভাষায় পোস্টার করলে সমস্যা কী?

আপনি আগের কমেন্টে সীমা টানার কথা বলছিলেন। কোথায় সীমা টানতে চান সেটা জানলাম না।

রায়হান আবীর এর ছবি

আমারও ভালো লাগে নাই, আমিও স্টাবর্ন বলেই হয়তো।

=============================

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

পৃথিবীর কোনো ভাষার প্রতি আমার বিদ্বেষ নেই, বাংলাদেশে থাকলেই বাংলা বলতে হবে এমন গোয়ার্তুমি নেই, ভাষা যেন সঠিক মেসেজটি সঠিক স্থানে পৌঁছে দেয়ায় বাধা সৃষ্টি না করে, সে ব্যাপারেও আমার কণ্ঠ সবসময়ই সোচ্চার হবে। বিহারীরা একাত্তরে কি করেছিলো, এই ভাষা প্রসঙ্গে সেদিকেও আমি ফোকাস করতে চাই না, আজকের বিহারীরা পাকিস্তানকে ভালোবাসে, নাকি বাংলাদেশকে, তা নিয়েও আপাতত মস্তিষ্কের প্রসেসর বিজি না করি।

সুতরাং যে ভাষায় মেসেজটা সবচেয়ে ভালোভাবে পৌঁছে দেয়া যায়, নির্বাচনের পোস্টারটি সে ভাষায় হোক। এক মিনিট! ভাষাটি কি? উর্দু!! আমার মুখের ভাষা কেড়ে নিয়ে যে ভাষাটি আমার ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছিলো! উহু, আমি আর সাধুপুরুষ হতে পারি না, আমি আর প্রগতিশীল হতে পারি না, রক্তের ইতিহাসগুলো অনেক বেশি ভারি হয়ে আমার সমস্ত মনন, মানবিকতা আর কিসব বড় বড় বুলি, বড় বড় চিন্তাভাবনার সাময়িক স্বস্তিকে দখল করে নেয়। এই ভাষাটিকে আমি মেনে নিতে পারি না, কখনো, কিছুতেই না। ৫২তে পারি নি, একাত্তরে পারি নি, আজও পারি না, হাজার বছর পরেও পারবো না।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

একজন [অতিথি] এর ছবি

সহমত

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

উর্দুভাষীদের যে-মানসিকতা একটি একুশে ফেব্রুয়ারির জন্ম দিয়েছিল, ৫৬ বছর পর বাংলাভাষীদেরও সেই মানসিকতা গ্রহণ করা ঠিক নয়।

অন্যের মুখের ভাষাকে অসম্মান করা মানে আমার নিজের ভাষাকেই খাটো করা, তার শক্তি ও গরিমাকে সন্দেহ করা।

উর্দুভাষী বলেই কেউ অপরাধী নন। বাংলাভাষী ইতরদের বেলায় কেউ সাহস দেখাতে পারি না, উর্দুভাষী ভদ্রজনকে নির্বাচনী প্রচারণা পৌঁছে দিলে চেঁচিয়ে বাড়ি মাথায় তুলি।

আমেরিকার নির্বাচনে হিসপ্যানিকদের জন্য তাদের ভাষায় প্রচার চলেছে। এতে অন্যায়ের কিছু নেই। "মেসেজ" ঠিক মত পৌঁছে দিতে গ্রহিতার ভাষা অবলম্বনে অন্যায় নেই।

পাকিস্তানী উপনিবেশে ছিলাম ২৪ বছর, আর ব্রিটিশ রাজের অধীনে প্রায় দুই শ' বছর। তবু ইংরেজি বলা নিয়ে কেউ কিছু বলে না।

বাঙালী ও বাংলাদেশীর সংগ্রাম আলাদা। '৫২ ছিল বাংলার জন্য সংগ্রাম (উর্দুকে হটিয়ে নয়, স্রেফ নিজের ভাষার যথাযথ সম্মান চেয়ে), '৭১ ছিল বাংলাদেশের জন্য সংগ্রাম। স্রেফ বাংলার কথা বললে অজান্তেই পাহাড়িদের অবজ্ঞা করা হয়। রক্ত তাঁদের কম ঝরেনি।

পলাশ দত্ত এর ছবি

উর্দুভাষীদের যে-মানসিকতা একটি একুশে ফেব্রুয়ারির জন্ম দিয়েছিল, ৫৬ বছর পর বাংলাভাষীদেরও সেই মানসিকতা গ্রহণ করা ঠিক নয়। চলুক

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

দিগন্ত এর ছবি

বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বিহারীদের অনেকেই দাঁড়িয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন দেখলাম। এই ব্যাপারটায় আলাদা একটা বিতর্ক হলে ভাল হয়, তবু বলি, একজন বিহারীর পক্ষে কি কোন দলে যোগদান করবে সে নিয়ে "ফেয়ার চয়েস" গ্রহণ করা সম্ভব ছিল? তার কাছে দুপক্ষের দাবী সম্পর্কে কতটা সম্যক জ্ঞান ছিল? ব্রেন-ওয়াশ হয়ে যাবার সম্ভাবনা কতটা?

বাঙালী রাজাকারদের সাথে মনে হয় এদের তুলনা চলেনা।


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

তার সঙ্গে এটাও কারণ ছিল যে, উদ্বাস্তু হিসেবে বিহারিদের সরকারের লেজুড়বৃত্তি ছাড়া টিকবার কোনো উপায় ছিল না। যারা অবস্থাপন্ন তারা তা করতে পারে। একই কাজ পার্বত্য এলাকায় করা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে। রিফিউজি রোহিঙ্গারা তাদের আশ্রয় ও খাদ্যের জন্য সরকারের ও জাতিসংঘের ওপর নির্ভরশীল। এই সুযোগে তাদের ইসলামী পলিটিক্সের লেঠেল বানানো হচ্ছে।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

প্রফাইল [অতিথি] এর ছবি

নৌকা মার্কার সাথে উর্দু দেখলে আর মনে হয়না যে, তাদের পূর্বসূরিরা উর্দুকে সম্পূর্ণভাবে ত্যাগের একটি সর্বব্যাপি গৌরবময় আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। বরং মনে হয় একটি অতি অভিযোজনশীল লকলকে জিভের কথা যা তার গৌরবময় ইতিহাসের ওপর দাঁড়িয়ে ক্রমাগত তাকেই পদাঘাত করছে। "ভোটের রাজনীতির" জন্য নিচে নামার একটা "সীমা" থাকা দরকার মনে করি।

উল্লেখ্য, বিহারিরা কিন্তু শুধু আলাদা ভাষাভাষী একটা জনগোষ্ঠী নয়, তারা আমাদের জন্য দানব শাসকগোষ্ঠীর অনন্য উপহারও বটে। ওদের একটা অংশ স্বাধীনতার পর চলে গেছে। জিয়াউল হকের কিছুটা সদিচ্ছা ছিল, কিন্তু তিনি অকালে তাদের মায়া ত্যাগ করলেন। পাকিস্তানের সঙ্গে এখনো আমাদের যে তিনটি প্রধান অমীমাংসিত সমস্যা রয়ে গেছে তার প্রথমটি এই "আটকেপড়া পাকিস্তানি"।

ভোটের লোভে আমরা যেন তাদের কাছে "তাদের ভাষায়" নতজানু না হই।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

যাক, এবার বুঝলাম দোষটা তাহলে উর্দুভাষী বিহারীদের নয়, দোষটা আওয়ামী লীগের। উর্দু ভাষায় পোস্টার করে 'সীমার নিচে নামলো' এবার? তাহলে ৯৬এর জোট কী ছিলো? নিজামী-গো'আজমের সাথে মোলাকাত (দুষ্টু লোকেরা বলে পায়ে ধরে সালাম), এর নিচে আরও কিছু আছে নাকি? হা হা।

আবার বলি, বিহারীদের থাকা না থাকার কিংবা ভোটের অধিকার ভিন্ন প্রসংগ।
ভোটের রাজনীতিতে ওদের কাছে আ'লীগ না গেলে বিএনপি/জামাত যাবে। এই খেলায় নতজানু হবেই রাজনীতির ক্রীড়ানকেরা। একপাশে ফেলে রাখার উপায় নেই।
আপনার নতজানু না হবার প্রত্যয়কে সাধুবাদ জানাই।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

প্রফাইলের অধিকাংশ বক্তব্যের সাথেই একমত, যদিও বক্তব্যগুলোকে আমেরিকার পরিস্থিতি, মানবতা, রাজাকার বা বিহারীদেরও কেউ কেউ দেশপ্রেমিক, কুকুরের কাজ কুকুর করেছে আমরা করুম না ইত্যাদি নানা ফর্মূলায় প্যাচে ফেলা যায়। সমস্যা হলো, প্রায় সব ফর্মূলাই প্রয়োগের ক্ষেত্রের সাথে রিলেটেড। আজ জিন্নাহ বাংলাকে লাথি মেরেছিলো বলে উর্দুকে আমি লাথি না মেরে বুকে তুলে নিলে উর্দুর জন্য আমার কাছে একটা অ্যাক্সেপ্ট্যান্স তৈরি হবে। খেলার সাথে রাজনীতি মিশাবেন না ফর্মূলায় পাকিস্তানের সাপোর্টার হলে পাকিস্তানের প্রতি আমার কাছে একটা অ্যাক্সেপ্ট্যান্স তৈরি হবে। ৩৭ বছরের পুরোনো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভুলে রাজাকারদের সাথে সহাবস্থানে গেলে তাদের প্রতি আমার কাছে একটা অ্যাক্সেপ্ট্যান্স তৈরি হবে। আমার মাবোনকে যে রেইপ করেছে, তার প্রতি মহানুভবতা দেখাতে গেলে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়, তা শুধু আবেগের নয়, বাস্তবেরও। এই ছোট্ট ছোট্ট অ্যাক্সেপ্ট্যান্সগুলোর যোগফল অতি ভয়াবহ।

একটি উদাহরণ হতে পারে রাজাকারদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর সাধারণ ক্ষমা। ক্ষমা মহত্বের, যদি ব্যাপারটা শুধুই পার্সোনাল হয় এবং যাকে ক্ষমা করা হচ্ছে, তার কাছ থেকে ভবিষ্যত ক্ষতির আশঙ্কা না থাকে। কিন্তু ব্যাপারটা সামষ্টিক হলে ক্ষমাটা একা করা যায় না আর ভবিষ্যত ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে ক্ষমা জিনিসটা মহত্ব দূরে থাক, পুরোপুরি অন্যায়।

বাংলাদেশে উর্দুকে অ্যাক্সেপ্ট করা আপাতদৃষ্টিতে একটি নিরীহ বিষয় হলেও এর ভবিষ্যত পরিণতি আমাদের জন্য সুখের হওয়ার কোনো কারণ নেই। হয়তো একসময় এমন একটা উর্দু ফ্যানক্লাব তৈরি হবে, যাদের চোখে এই ভাষাটি চমৎকার সুললিত ভাষা হবে এবং এমন চমৎকার ভাষাকে ঠেকানোর জন্য সালাম, বরকত, শফিকেরা ঘৃণার পাত্র হওয়াও বিচিত্র নয়। আমি সেই রিস্কটা কেন নিবো?

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

লীন [অতিথি] এর ছবি

ডেইলী স্টার এর লেখা দেখলামঃ
"Interestingly, a group supporting Ilias Uddin Mollah, AL-led grand alliance candidate for Mirpur-Pallabi (Dhaka-16), has published leaflets in Urdu to seek attention of fellow Biharis.
Mohammad Abbas, 74, and Shahzada Selim, 43, were distributing the leaflets when this correspondent got to speak to them. They said they have published these on their own as many in their community can read only Urdu."

আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে এই লিফলেট যারা ছাপিয়েছে, তারা বিহারী। আমি মনে করি নিজ ভাষাতে লেখার স্বাধীনতা অবশ্যই আছে।

নজমুল আলবাব এর ছবি

লমুশি তদাসা রয়ানোআ
নলঙ্কস রল্পেগ টছো রএ
য়মস নহীল্পগ বাথঅ
য়লামেইব ছেসআ
কেথে নশকাপ্র র্বপস্যশ

ইহা একটি বিজ্ঞাপন। আশাকরি বাড়তি কাস্টমারের মনোযোগ পাবো।

*এই পোস্টে ইনশাল্লাহ আর কমেন্টাইব না।

পলাশ দত্ত এর ছবি

আপনি কি বিহারীদের জন্য উর্দুতে প্রচারের বিষয়টিকে ব্যঙ্গ করে এভাবে বিজ্ঞাপন দিলেন হাসি

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

প্রফাইল [অতিথি] এর ছবি

যাহ, সব মাঠে মারা গেল তাহলে!

আসাশি'র "অগস"-এর মারকুটে সাফল্য কামনা করি।

রাগিব এর ছবি

১) বাংলাদেশের নাগরিকদের সবার ভাষা বাংলা হতেই হবে, এরকম দাবী করাটা জবরদস্তির পর্যায়ে চলে যায়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে "এদেশে থাকতে হলে বাঙালি হতে হবে" এই টাইপের কথাবার্তা বলা হয়েছিলো বলে শোনা যায়, এর মধ্য দিয়ে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীকে alienated করে ফেলা হয়েছে দেশের যাত্রার শুরুতেই। ৯৮% মানুষ বাংলা বললে বাকি ২%কেও বাংলা শিখতেই হবে, এটা দাবী করা চলে না। কারো মাতৃভাষা উর্দু হতেই পারে। তাকে জোর করে বাংলা গেলানোটা ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদদের চেতনার পুরোপুরি বিরোধী।

২) বিহারীদের মধ্যে যারা চলে যাওয়ার তারা গেছে। যারা বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে এদেশের নাগরিকত্বকে বেছে নিয়েছে, তাদের বাংলাদেশে বসে ইংরেজি বা উর্দু বা হিন্দি যেকোনো ভাষাকেই মাতৃভাষা বলে দাবী করার অধিকার রয়েছে।

৩) পোস্টের সব কথার ভীড়ে যেটা হারিয়ে যেতে বসেছে, সেটা হলো পোস্টারটি কয়েকজন বিহারী তাদের এলাকার বিহারীদের জন্য বানিয়েছে। এটা সেই বিহারীদের জানা ভাষাতে (ঘটনাচক্রে যা উর্দু) প্রকাশ না করে কী ভাষায় প্রকাশ করা উচিৎ ছিলো বলে মনে করেন সবাই? আরবী? হিন্দি? ইংরেজি? বাংলা? মণিপুরী? ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের গ্রামে গঞ্জে গিয়ে ভোট চাইবার সময়ে কী চোস্ত ইংরেজি ভাষার পোস্টার লাগিয়ে কাজ হবে? বিহারীরা কী বাংলাভাষীদের কাছ উর্দু পোস্টার নিয়ে এসে উর্দু ফ্যান ক্লাবে যোগ দিতে বলছে? উঁহু, তিলকে তাল না করে মূল ঘটনার দিকে ফেরত আসুন, একজন বিহারী আরেকজন বিহারীর কাছে উর্দুতে পোস্টার লিখে ভোট চেয়েছে, ঘটনাটা এটাই। একজন চাকমাভাষী আরেকজন চাকমাভাষীর কাছে চাকমা ভাষাতে লেখা পোস্টারে ভোট চাইলে যদি আপত্তি না থাকে, তাহলে উর্দুতেও আপত্তি থাকার কারণ দেখি না। পুরান ঢাকার অনেক অ-বিহারী পরিবারেও উর্দুর চল আছে, পাকিস্তানীদের ভাষা উর্দু (আসলে সব পাকিস্তানীর মোটেও উর্দুতে কথা বলে না, মাত্র ৮% এর মাতৃভাষা উর্দু, বাংলাদেশে ৭১ সালে আগত অধিকাংশ "খানসেনা" দের মাতৃভাষা পাঞ্জাবী) বলেই কি এই পুরানো ঢাকাবাসীদের আমরা ঘৃণা করতে শুরু করবো?

৪) বাংলাদেশ হাইকোর্টের মে ২০০৮ এর রায় অনুসারে নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে ১৫০,০০০ বিহারীকে, যারা ১৯৭১ সালে নাবালক ছিলো, কিংবা স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মেছে। এরা যদি বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে এদেশে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, কোন যুক্তিতে তাদের ভোটাধিকার নিয়ে বা মাতৃভাষায় কথা বলা ও পোস্টার লেখার অধিকার নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলবো? বাঙালি কেউ উর্দু নিয়ে গলাবাজী করলে তাকে গদাম লাথি দিতে আমার বাধে না, কিন্তু একজন উর্দুভাষী আরেকজন উর্দুভাষীকে উর্দুতে লিখে পোস্টার দিলে তাতে আমার আপনার সমস্যাটা কোথায়? বিহারী বংশোদ্ভুত বাংলাদেশী নাগরিকেরা যদি বংশ পরম্পরায় উর্দুকে মাতৃভাষা হিসাবে রেখে দেয়, আমাদের কি তাহলে বংশ পরম্পরায় তাদের সাথে বৈষম্য করে চলতেই হবে? "অচ্ছুত"/ দলিত করে রাখতে হবে? বলতে বাধ্য হচ্ছি, এটা সব ভাবেই একটা racist মানসিকতা। পাকিস্তান আমলে বাঙালিদের সাথে পাঞ্জাবীরা যা করতো, এটা তারই নামান্তর।

---

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের সংখ্যালঘুদের উপর জবরদস্তি আর নিপীড়ন অনেককাল ধরেই চলে আসছে। সবাইকে ঠিক এক মাপের এক ছাটের বাঙ্গালি না বানিয়ে বোধ হয় খুশী হওয়া যাবে না। মূল্যবান কমেন্টের জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

শিক্ষানবিস এর ছবি

এই পোস্টের বক্তব্য ও মনোভাবের সাথে তীব্র দ্বিমত পোষণ করছি। সেই পুরনো কারণেই, আবেগের চেয়ে যুক্তিকে প্রাধান্য দেই। স্থানীয় কয়েকজন বিহারীকে নিজের দলে ভোট দেয়ার আহ্বান জানানোর জন্য তারা যে ভাষায় কথা বলে ও যে ভাষা বুঝে সে ভাষাতে প্রচারণা করাটা দোষের হতে পারে না।
একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনা পৃথিবীর সবার মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার চেতনা, উর্দূকে ঘৃণা করার চেতনা না। আমরা ভুলে যাচ্ছি একুশে ফেব্রুয়ারিকে সেই চেতনার জন্যই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা দেয়া হয়েছে। তাই এই পোস্টে ও কিছু মন্তব্যে যে ধরণের বর্ণবাদী কথা বলা হয়েছে তাকে একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনাবিরোধী মনে করি।

একজন [অতিথি] এর ছবি

একটা বিষয় জানতে চাচ্ছি - আজকে উর্দু যাদের মাতৃ্ভাষা তারা যদি তাদের মাতৃভাষায় পড়ালেখা করতে চায় তাহলে কি আমাদের কারিকুলামে তা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত?

হিমু এর ছবি

সচলে বহু আগে একটি পোস্ট পড়েছিলো, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষায় শিক্ষা প্রসঙ্গে। খুঁজে পেলে আবার আপনাকে লিঙ্কটা জানিয়ে যাবো, সেই পোস্টে যতদূর মনে পড়ে বেশ তপ্ত বিতর্ক হয়েছিলো।

উর্দু যাদের মাতৃভাষা না, তাদেরও তো দেখছি মাদ্রাসায় উর্দু গেলানো হচ্ছে। ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানলাভের জন্যে উর্দুশিক্ষা কেন জরুরি, তা আমার বোধগম্য নয়।

আমি ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশে সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলা ও ইংরেজির সুষম বন্টনের সপক্ষে, এবং তৃতীয় যে কোন ভাষাকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারের বিপক্ষে।


হাঁটুপানির জলদস্যু

হিমু এর ছবি

আচ্ছা, উর্দুভাষী বিহারীদের মধ্যে বাংলা বর্ণমালার সাথে পরিচিত নন, কিন্তু উর্দু বর্ণমালার সাথে পরিচিত, এমন বিহারীর সংখ্যা কত?


হাঁটুপানির জলদস্যু

রানা মেহের এর ছবি

ওরেবাবা
এলেখায় এতো বিতর্ক হয়ে গেছে?

আগে একট ঢালাও মন্তব্য করেছিলাম।
এখন পরিস্কার করি।

বাংলাদেশে থাকতে হলে সবাইকে বাংলাভাষি হতে হবেনা।
সবাই যার যার ভাষাতেই মা কে মা ডাকুক।

পাহাড়িদের ভাষা তাদের সব অধিকার পাক।

কিন্তু উর্দু কে কোন ভাবে বাংলাদেশে স্বীকৃতি দিতে
কোনভাবেই আমি রাজী নই।
আজ যদি বাংলাদেশে কোন যুদ্ধাপরাধী বা পাকিস্তান প্রেমী না থাকতো
তাহলে সমস্যা ছিলনা। কিন্তু তারা যেহেতু আছে এবং মনের আনন্দেই আছে
সেখানে উর্দুকে সামনে আসতে দেয়া মানে তাদের কে সামনে আসার সুযোগ দেয়া।

আজ মাতৃভাষার সম্মানে উর্দু প্রচারে উতসাহ দিলে
কাল কি আমরা বিহারিদের যে অংশ পাকিস্তানের প্রতি অনুগত
দেশপ্রেমের সম্মানে তাদের পাকিস্তানী পতাকা ওড়ানোর স্বাধীনতা দেবো?

শুনতে একটু অদ্ভুত শোনাচ্ছে।
কিন্তু এভাবেই গ্রহনযোগ্যতা তৈরী হয়। বলাই যেমন বলেছেন।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।