রক্তবীজের ঝাড়

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: রবি, ২৫/১০/২০১৫ - ১১:৫৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

টাল বাদশা জাহাঙ্গীরের বউ নূর জাহান ছিলেন ব্যাপক চালাক মহিলা। তার আগের ঘরের একটা মেয়ে ছিল, মোগলাই খুঁটি শক্ত করার উদ্দেশ্যে তিনি সেই মেয়ের সাথে বিয়ে লাগালেন জাহাঙ্গীরের ছোট ছেলে শাহরিয়ারের। এইবার নূর জাহান ভাবলেন জামাতা শাহরিয়ার বাদশা হলেই কিল্লা ফতে!

মুস্কিল বাধালেন নূর জাহানেরই ভাই আসফ খাঁ সায়েব, তার মেয়ে মুমতাজ মহলের সাথে তখন জাহাঙ্গিরের তিন নং ছেলে খুররমের ব্যাপক ভালোবাসাবাসি। আসফ খাঁয়ের টার্গেট পরিষ্কারঃ শাহরিয়ারের গুলি মারি, তখতে বসাতে হবে জামাতা খুররমকে।

এই লাগল ভাইবোনে জামাতা ঘটিত গিয়াঞ্জাম।

পিতা হিসাবে বাদশা জাহাঙ্গীর ছিলেন একটি খাড়া সাইকো। শোনা যায় একবার তিনি পুত্র শাহরিয়ারকে জিজ্ঞাসা করেন তার সাথে ঘুরতে যেতে চায় কিনা, শাহরিয়ার উত্তর দেন বাদশা চাইলে যাব নাইলে ঘরেই থাকব। ত্যাড়া কথা শুনে জাহাঙ্গীর চোখ রাঙিয়ে বললেন, বেদ্দপের বেদ্দপ! আমার মুখে মুখে কথা! এই বলে দিলেন ঠাস করে এক মোগলাই চড়। কিন্তু চড় খেয়ে শাহরিয়ার মোটেই কাঁদলেন না, বরং দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করলেন। শাহরিয়ারের বয়েস তখন সাত। চড় খেয়ে রা না শুনে বাদশা জাহাঙ্গীর আরো ক্ষেপে গিয়ে ভয়ানক চিৎকার দিয়ে কইলেন কিঁউ কিঁউ? কাঁদছিস না যে বড়? তখন শাহরিয়ার বলেন ব্যথা পেয়ে চোখের পানি ফেলা রাজপুত্রের মানায় না।

এই কথা শুনে নাকি জাহাঙ্গীর এমন ক্ষেপে গিয়েছিলেন যে পট করে একটা বড় সুঁই ছেলের গালে বিঁধিয়ে দেন রাগের চোটে। সকলে আঁৎকে ওঠে ঐ দেখে, শাহরিয়ারের গাল বেয়ে তখন দরদর করে রক্ত ঝরছে। কিন্তু তিনি তবুও চোখের পানি চেপে রেখেছিলেন।

সেইটা অবশ্য প্রমাণ করেনা যে শাহরিয়ার ছিলেন ব্যাপক বীর। বরং তিনি বড় হতে হতে অন্দরমহলে রটে যায় যে শাহরিয়ার একটা বেকুব, যেমনি নাচাও তেমনি নাচে টাইপ। শুনে অন্দরের হেডম্যাডাম নূর জাহানের মনটা খুশিতে হল উতলা। তিনি মেয়ের জন্য এমনটাই খুঁজছিলেন, যাকে কোমরের বিছার মধ্যে গুঁজে রাখা যাবে। কোমরে গোঁজা বাদশাহ খুব কাজের জিনিস নূর জাহানের জন্য। তিনি মেয়ের সাথে শাহরিয়ারের শুভ বিবাহের আঞ্জাম করলেন।

১৬২১ সালের এপ্রিলে মহা ধুমধামে হল বিবাহ। পিতা জাহাঙ্গীর ছেলেকে এই উপলক্ষে দিলেন পাথরখচিত জামা, পাগড়ি, কোমরবন্ধ আর ঝাকানাকা জিন লাগানো দুইটা ঘোড়া। ব্যাপক মনসবদারিও দেওয়া হল।

বিবাহের পুলাউ খেয়ে সকলে ঘুম গেলেও যে লোকটির পেটে কেবল গুড়গুড় কচ্ছিল, সেই লোকটি নূর জাহানের ভাই আসফ খাঁ। তার মেয়ে আর্জুমান্দ বানু ওরফে মুমতাজ মহল ততদিনে জাহাঙ্গীরের তিন নম্বর লেড়কা খুররমের বউ। খুররম বাদশা না হলে আসফ খাঁয়ের সমস্ত প্ল্যান গুবলেট হয়ে যাবে, তাই তিনি তীক্ষ্ণ নজরে খেয়াল করে থাকলেন বোনের কাজকারবার। নূর জাহান চায়টা কী, ওর চাওয়া পাওয়া কী? সে কি চায় তিন নম্বরের বদলে চার নম্বর লেড়কা তখতে বসুক? মহা মুস্কিলের কথা।

অক্টোবর, ১৬২৭। জাহাঙ্গীর বাদশা পটল তুললেন। এর মধ্যে যমুনায় বহু কালো জল বয়ে গেছে, প্রয়াত বাদশার চার ছেলের মধ্যে বড় দুইটি ততদিনে অক্কা পেয়ে গন কেস। রইল বাকি দুই। সমস্যা হল মরার আগে বাদশা উত্তরাধিকার পছন্দ করে যাননি। অতএব ভাইবোন নূর জাহান আসফ খাঁ নড়েচড়ে বসলেন আর দুই ভাই শাহরিয়ার খুররমে লাগল টেরম টেরম যুদ্ধ।

খুররমই যে এই যুদ্ধে জিতে বাদশা শাজাহান হয়ে যান এ আপনারা জানেন। তারপরে তার খয়েরখাঁ লেখক আব্দুল হামিদ লাহোরি ব্যাপক ইতিহাস বই লেখেন “বাদশাহনামা”। শাজাহান বাদশার দুই চোখের বিষ নূর জাহানকে এই বইতে ধুয়ে সাফা করা হয়েছে এ আশ্চর্যের কিছু নয়। সেই বাদশাহনামা থেকে দুই ছত্র, জাহাঙ্গীরের মৃত্যু পরবর্তী নূর জাহানের কীর্তিকলাপ নিয়েঃ “নূর মহল, যে কিনা অসম্ভব কলহ আর দুর্বিষহ কুতর্কের কারণ, এইবার দেশ চালনার ভার নেওয়ার দুর্বুদ্ধি করল। ঠিক যেমনটি সে বাদশা বেঁচে থাকতেও করে থাকত।”

যাকগে ফিরি জাহাঙ্গীর পরবর্তী মোগল ভারতে। বোন নূর জাহানের তেড়িবেড়ি দেখে আসফ খাঁ নূর জাহানকে কানে ধরে তাঁবুর ভিতরে গৃহবন্দী করে রাখার ব্যবস্থা করলেন আর আদেশ নামল যে কাউকে ভেতরে যেতে দেওয়া চলবে না। খুররম তখন দাক্ষিণাত্যে নানান মারামারিতে লিপ্ত। শ্বশুর আসফ খাঁ রানার পাঠালেন দাক্ষিণাত্যে, ফাদার ইল কাম শার্প। সত্য বলতে কি চিঠি লেখার সময়টুকুও আসফ খাঁ দেরি করেননি, কেবল রানারের মুখে খবর পাঠালেন পিতা জাহাঙ্গীর মৃত জলদি আইস। খবর যে পাকা, তা প্রমাণ করতে রানারের হাতে ধরিয়ে দিলেন নিজের আংটি, যেন খুররম বিশ্বাস করে খবর।

এইবার আসফ খাঁ সায়েবের নতুন সমস্যা, খুররম আসা পর্যন্ত কী করা যায়। দি শো মাস্ট গো অন, বাদশা মরেছে চাই নূতন বাদশা। তিনমাস অপেক্ষা করা তো চলবে না। চিন্তা করে করে, খুররমের ভাতিজা (জাহাঙ্গীরের বড় ছেলে প্রয়াত খসরুর পুত্র) দেওয়ার বখশ কে খাড়া করিয়ে দেয়া হল। আসফ খাঁ ভাবলেন চালাক দেশ এই ছেলে কিছুদিন, পরে খুররম এসে পড়লে ফয়সালা হবে প্রকৃত দাবীদার কে ও কেন।

কিছু গিয়াঞ্জাম এইখানে লেগে গেল। দেওয়ার বখশ বাদশা হওয়ার পরে রটে গেল স্বয়ং বাদশা জাহাঙ্গীর মরার আগে হেঁচকি তুলে তুলে “দে-ও-য়া-র ব-খ-শ” নাকি বলে গেছেন। ইয়োরোপীয় পর্যটক মানুচ্চি তাভের্নিয়ে প্রমুখও একথা স্বীকার গেছেন, তাভের্নিয়ের মতে সেই যখন প্রিন্স খসরু মারা যায় তখন থেকেই নাকি জাহাঙ্গীর বাদশার পছন্দ দেওয়ার বখশ। আসফ খাঁ হ্যাঁ ও কইতে পারেন না না ও কইতে পারেন না, তিনি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে লাগ্লেন খুররম আসা পর্যন্ত।

বেকুবরতন শাহরিয়ারের দিকে তাকানো যাক। তার তখন মারাত্মক গার্লপাওয়ার, নূর জাহানের মত শক্ত কানেকশনওলা মহিলা তার পক্ষে। তার পকেটে পয়সাও প্রচুর, মনসবদারির আয় থেকে। এছাড়া নূর জাহানের বোনজামাই কাসিম খাঁ ছিলেন আগ্রার সুবাদার। সেই আকবরের আমল থেকে সোনার পাহাড় জমানো আগ্রার কোষাগারে। আর জাহাঙ্গীর নূর জাহানের কোষাগার তো রয়েছেই। সেইসব পয়সা ঢেলে নানান গণ্যমান্য কুতুবের কাছ থেকে শাহরিয়ারকে সহায়তার আশ্বাস কেনা হয়েছিল।

এদিকে আসফ খাঁ মন দিলেন শাজাহানের পরিবার সুরক্ষায়। নূর জাহানের মহল থেকে বের করে শাজাহানের তিন পুত্র দারা শূকো, শা সুজা এবং আওরঙ্গজেবকে নিজের ঘরে এনে রাখলেন সাদিক খাঁর জিম্মায়।

প্রয়াত বাদশা জাহাঙ্গীরকে এইবার দাফন করার পালা। আগে ঠিক ছিল তাকে কবর দেয়া হবে লাহোরে, প্রিয় সঙ্গিনী নূর জাহানের হাতে তৈয়ার বাগানের গুলবাগিচায়। কিছু বিশ্বস্ত লোককে ছাড়া হল এই কাজে, আসফ খাঁ পইপই করে বলে দিলেন নূর জাহান যেন চোখের আড়াল এক মুহুর্তও না হয় এবং দেওয়ার বখশের দিকেও যেন নজর থাকে।

এত কড়া নজরের মধ্যেও নূর জাহান ঠিকই মাথা খাটাচ্ছিলেন। তিনি গোপনে লাহোরে শাহরিয়ারের কাছে খবর দিয়ে পাঠান যেন যথাসম্ভব সিপাই জড়ো করা হয়, তখত দখলে কাজে লাগবে। কিন্তু এই কাহিনী ধরা খেয়ে যায় ভাই আসফ খাঁ এর কাছে, আর তিনি নূর জাহানকে কান পাকড়ে আরেক বোন খাদিজার কাছে জিম্মা রাখেন।

শাহরিয়ার কিন্তু লাহোরে বসে বাদশার মৃত্যুর খবর শুনে হল বিচলিত ও চমকিত। তারপর দুর্বল কণ্ঠে তিনিও হাঁক দিয়ে গদি চেয়ে বসলেন। শাহরিয়ারের বাদশার গদির জন্য লড়ে যাবার মত চরিত্র, অভিজ্ঞতা বা দম কিছুই ছিল না, তার পাতলা হাউকাউয়ে নগণ্যসংখ্যক কিছু উজিরনাজির ছাড়া কেউ কান দিল না। অতএব শাহরিয়ার ভারে কাটবেন বলে ঠিক করলেন, তিনি রাজকোষ খুলে সকল ভবিষ্যত সমর্থকের হাত ভরে সোনামুক্তা দিতে থাকলেন কেজি দরে। ইকবালনামায় বলা আছে এক সপ্তাহের ভিতর তিনি সত্তুর লাখ রুপী বিলিবন্টন করে দিয়েছিলেন। শাহরিয়ারের চাচাতো ভাই (জাহাঙ্গিরের ভাই মির্জা ড্যানিয়েলের ছেলে) বাইসিঙ্ঘার এসে তার সাথে হাত মিলাল, আর তারস্বরে কইল গদির প্রকৃত মালিক শাহরিয়ার জিন্দাবাদ। আসফ খাঁ হুঁশিয়ার সাবধান। মানি না মানব না।

এদিকে আসফ খাঁ এবং দেওয়ার বখশ কোয়ালিশন ফোর্স তখন লাহোরের দোরগোড়ায়। লাহোর হতে মাইল তিনেক দূরে বাইসিঙ্ঘারের নেতৃত্বে শাহরিয়ারের বাহিনীর সাথে তাদের মোলাকাৎ হল। মোলাকাৎ এর বদলে শাহরিয়ারকাৎ ও বলা চলে, কারণ প্রতিপক্ষের হাতে পাইকারি মার খেয়ে শাহরিয়ারের ভাড়াটে বাহিনী নগদে হল কাৎ। ভীত শাহরিয়ার পায়জামার কষি ধরে দিলেন উল্টাদিক দৌড়, ছুটতে ছুটতে এসে লাহোর দূর্গের ভিতর ঢুকে খিল এঁটে বসে থাকলেন।

ঐ হল তার কাল।

আসফ খাঁ সায়েব লাহোর দূর্গের দরজায় আসলে পরে শাহরিয়ারের বেশীরভাগ ইয়ারদোস্ত নগদে পল্টি খেলেন, শাহরিয়ারের পক্ষে বলতে গেলে কেউই রইল না। মহা বেগতিক দেখে তিনি দূর্গের ভেতর জাহাঙ্গীরের হারেমে গিয়ে লুকানোর ভাও করলেন, আর সেইখান থেকে তাকে কান পাকড়ে ধরে নিয়ে আসলেন আসফ খাঁ এর ছেলে (পরবর্তীকালে টাকায় আট মণ চাউল খ্যাত) শায়েস্তা খাঁ। শিকলবন্দী করে এক অন্ধকার কুঠুরিতে চালান করা হল শাহরিয়ারকে, তারপর আসফ খাঁ এর নির্দেশে চক্ষু হইল উৎপাটন।

এইভাবে বেচারা শাহরিয়ারের টাকাও গেল সিপাইও গেল চক্ষুও গেল, গদিতে বসার আর কোন উপায়ই খোলা রইল না। হেভিওয়েট শাশুড়ি নূর জাহান তখন আসফ খাঁ এর বন্দী, কিন্তু এমনকি তিনি যদি স্বাধীন থাকতেন সেই সময় তবুও শাহরিয়ারের গদি হালাল করতে তার সুগন্ধী ঘাম ছুটে যেত। দুর্বল চারিত্রিক দৃঢ়তাসম্পন্ন শাহরিয়ারকে কেষ্টবিষ্টু কেউই গণায় ধরত না, তার উপর প্রতিপক্ষ আসফ খাঁ ছিলেন এক পাহাড়সম ব্যক্তিত্ব। তার বাহিনীও ছিল ব্যাপক ও বিপুল শক্তিশালী।

প্রিন্স খুররম ওরফে শাজাহান এইবার গুজরাত হতে শ্বশুর আসফ খাঁ কে হুকুম করে পাঠালেন যেন গদির অন্য সকল দাবীদারের কল্লা নামিয়ে দেওয়া হয়। সাথে সাথে মীর্জা ড্যানিয়েল এর দুই ছেলে তাহমুরাস আর হোসাং, প্রিন্স খসরুর বড় ছেলে দো দিনকা বাদশা দেওয়ার বখশ এবং নূর জাহানের ভালোবাসার জামাতা শাহরিয়ারের কল্লা হল গণ ঘ্যাচাং।

শুরু হল প্রেমের বাদশা শাজাহানের পথের কাঁটাবিহীন ভারতশাসন।

(শেষ)

মূলতঃ এলিসন ফিন্ডলি রচিত নূরজাহান অবলম্বনে। বাইসিঙ্ঘার ঘটিত গিয়াঞ্জাম সমাধা করে দেবার জন্য ষষ্ঠ পাণ্ডবকে বিশেষ কৃতজ্ঞতা।


মন্তব্য

তারেক অণু এর ছবি

নিয়মিত লেখা চাইই- চাই !

সত্যপীর এর ছবি

নিয়মিত দুই লাইন কইরা লিখি, তারপর লাল ছা খাইতে ব্যস্ত হইয়া পড়ি বিধায় পোস্টানো হয়না। আপনে চীন্দেশ কেমন দেখলেন বলোগাইলেননা?

..................................................................
#Banshibir.

স্পর্শ এর ছবি

কিন্তু 'দলছুটের লাল চা' খেলে তো প্রডাক্টিভিটি বেড়ে যাবার কথা।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

সত্যপীর এর ছবি

উঁহু হইল না। লাল ছা ইজনটিকোল্টু লালা ছা।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

খাইছে...

স্বয়ম

সত্যপীর এর ছবি

হ খুবই বাজে অবস্থা মন খারাপ

..................................................................
#Banshibir.

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

তার আগের ঘরের একটা মেয়ে ছিল, মোগলাই খুঁটি শক্ত করার উদ্দেশ্যে তিনি সেই মেয়ের সাথে বিয়ে লাগালেন জাহাঙ্গীরের ছোট ছেলে শাহরিয়ারের

এ তো পালকপুত্র নয়, একেবারে সৎপুত্র! ধর্মপুত্ররা হৈ হৈ রৈ রৈ করেনি?
নাকি রাজপুত্র ইজ মাইটিয়ার দ্যান ধর্মপুত্র? ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স? চিন্তিত

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সত্যপীর এর ছবি

খালি আজিরা তর্ক। রূপের রাণী নূর জাহান যা ঠিক করব ওই ই আইন। এইসব প্যাকপ্যাক মোগল আমলে বেজায়গায় করলে আপনে হইতেন মিয়া মরহুম কল্লাকাটা সত্যানন্দ মন খারাপ

..................................................................
#Banshibir.

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

তারমানে মোগল আমলে নূরজাহানের কোডনেম আসলে ৫৭? চোখ টিপি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

শাহ্‌রিয়ারের বাবা-মা (জাহাঙ্গীর ও রাজকুমারী শ্রী মানবতী বাইজিলাল সাহিবা) এবং লাডলি বেগমের বাবা-মা (আলী কুলী খান ইস্তাযলু শের আফগান ও মেহের-উন-নিসা)'র মধ্যে কোন কমন ব্যক্তি নেই। সুতরাং শরিয়ত মোতাবেক এই বিবাহ বৈধ।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

বুঝি নাই বস, নূর জাহান গেল কই? ইয়ে, মানে...

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সত্যপীর এর ছবি

মেহেরুন্নিসা ম্যাডামেই নূর জাহান।

..................................................................
#Banshibir.

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

রক্তাক্ত প্রান্তরে "আতা খান" ক্যারেক্টারটা এম্নে প্যাঁচ দিত। ইয়ে, মানে...

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

মুঘলদের প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের পেছনে কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ কারণ আছে যেগুলো খুব বেশি আলোচিত হয় নাঃ

১। কার মা কে? অর্থাৎ, কোন প্রিন্সের পিতা জাহাঙ্গীর হলেও তার মাতা জাহাঙ্গীরের ৪০+ বিবির মধ্যে কোন জন সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। কারণ, সেই বিবি কোন পরিবার থেকে এসেছেন, সেই পরিবারের প্রতিপত্তি কতটুকু, জাহাঙ্গীরের সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনে সেই পরিবারের লোকজন কী পরিমাণ ও কী কী পদে আছেন - এমনসব প্রশ্ন অবশ্য বিচার্য।

২। কার অরিজিন কী? অর্থাৎ, মায়ের দিক বিবেচনায় কোন প্রিন্স কি চাঘতাই মুঘল, নাকি অন্য কোন তুর্কীস্তানী, নাকি পারসীক, নাকি রাজপুত, নাকি গুজরাতী, নাকি নিচু ঘরের কেউ।

৩। হুমায়ুনের শাসনামলের দ্বিতীয় পর্ব থেকে মুঘল সাম্রাজ্যে চলে আসা oligarchic ব্যবস্থায় কখন কোন গ্রুপ শক্তিশালী ছিল এবং কোন প্রিন্স কোন গ্রুপের স্নেহধন্য ছিল।

৪। রাজস্বপ্রধান (দিওয়ান-ই-হিসার), সেনাপ্রধান, কোষাগারপ্রধান (খান সামান), প্রধান বিচারপতি, প্রধান মুফতি, প্রধানমন্ত্রী (উযির-ই-আযম) কারা কারা আছেন এবং তারা কে কোন প্রিন্সের আত্মীয় বা কোন প্রিন্স কার প্রিয়পাত্র এগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

এইসব হিসাব অনুযায়ী ঠিক করা হয়ঃ

(১) চ্যাংড়া বয়সে খসরুকে তাতিয়ে বাপের সাথে যুদ্ধ লাগিয়ে দেয়া হবে। খসরু হারলে সাথে সাথে কল্লা না হারালেও আকন্দ গাছের কষ দিয়ে অন্ধ করে দেয়া হবে। পরে আবার খুর্‌রমকে দিয়ে তাকে খুন করা হবে।

(২) পারওয়িযকে ছোটবেলা থেকে মাদকদ্রব্যের নেশায় অভ্যস্ত করে ফেলতে হবে, যেন তার স্নায়বিক দুর্বলতা তৈরি হয়। ফলে তার পক্ষে যেমন কখনো কোন কাজ করা সম্ভব হবে না, তেমন উত্তরাধিকারের প্রশ্নে সে হিসাবের বাইরে থাকবে।

(৩) খুর্‌রমের নানা হচ্ছেন রাজা দ্বিতীয় উদয় সিংহ এবং নানী হচ্ছেন রাণী বীর কানওয়ার বড়েগুজ্জর। সুতরাং খুর্‌রমকে বেশিরভাগ সময় দাক্ষিণাত্যে রাখা হবে যাতে নানা-নানী-মামাদের প্রভাব বলয়ের মধ্যে থেকে সে নিরাপদে থাকে ও আস্তে আস্তে রাজধানী আক্রমণ করার মতো শক্তি সঞ্চয় করতে পারে।

এই তালিকা আরো লম্বা করা যায়। তাতে মেহের-উন্‌-নিসা আর তার ভাইয়ের দ্বন্দ্বের কারণগুলো উদঘাটন করা যায়। তাতে বোঝা যাবে বলির পাঁঠা শাহ্‌রিয়ার আর মীর্জা দানিয়েলের ছানাপোনারা অকালে প্রাণ হারালো কেন। তো এসব ঘাঁটাঘাঁটি করে কী লাভ! জালিমের গুষ্ঠি ইতিহাসের আস্তাকুঁড়েই পড়ে থাক।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সত্যপীর এর ছবি

চলুক

উপরোক্ত ১। এবং ৪। এর একটা চমৎকার ইন্ডিকেশন হতে পারে মোগল মিনিয়েচার পেইন্টিং। আকবর জাহাঙ্গীর শাজাহান মামুদের ঘিরে আছে কিন্তু ঘুরায় ফিরায় কয়েকজনই। আসফ খাঁ মামু সকল শাজাহানের ছবিতে হাজির, জাহাঙ্গীরের ছবিতে তসবি হাতে বুইড়া ইতামাতুদ্দৌলা। প্রিন্স কেডা সামনে কেডা পিছনে, কার গলায় মুক্তার মালা আর কার হাতে বাদশাহী পাথরের আংটি এইগুলা খুবই হিসাব কইরা আঁকা। ব্যাপক ধৈর্য এবং বুদ্ধি থাকলে এগুলা নিয়া পোস্ট নেওয়া যাইত, আফসুস এই ব্যাপারে শক্ত গ্রিপ নাই।

তো এসব ঘাঁটাঘাঁটি করে কী লাভ! জালিমের গুষ্ঠি ইতিহাসের আস্তাকুঁড়েই পড়ে থাক।

কী যে কন। আমি আছি না? খাইছে

..................................................................
#Banshibir.

মন মাঝি এর ছবি

চলুক হ, পীরের দোয়ায় আস্তাকুঁড় খাস্তাগুড় হয়ে যায়!

****************************************

সত্যপীর এর ছবি

"খাস্তাগুড়" হো হো হো

..................................................................
#Banshibir.

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হো হো হো

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

শাহজাহান বাদশার ক্ষমতা দখলের কাহিনীটা অনেক আগে পড়েছিলাম, আবারও মনে করিয়ে দিলেন। ভালই লাগলো। জাহাঙ্গীরের আদেশে তাঁর প্রথম ছেলে খসরুর চোখ অন্ধ করে দেয়া হয়েছিল; কিন্তু খসরুকে শেষ পর্যন্ত খুররমই নাকি হত্যা করেন। "বাদশা শাহজাহানের জীবনকে এক বাক্যে প্রকাশ কর"-টাইপের প্রশ্ন যদি পরীক্ষায় থাকতো, তাহলে তার পারফেক্ট উত্তর হতো, "পাপ বাপকেও ছাড়ে না।" প্রথম জীবনে খুররম তাঁর বাপ, ভাই, ভাতিজাদের সঙ্গে যেভাবে ডিল করেছেন, শেষ জীবনে আওরঙ্গজেব সুদে-আসলে তাঁকে সেটা ফেরত দিয়েছেন।

কিন্তু কথা হইল বস, কবুতর ফারুক, খোরাসান, থিবো সাহেবের দৌলত - এইগুলা অর্ধেক লেইখে ফালায় রাখছেন! এইগুলা আগে শেষ করেন না!

Emran

সত্যপীর এর ছবি

আকবর বাদশার ভালুবাসার নাতি খসরু মিয়াকে তার বাপে অন্ধ আর ভাইয়ে হত্যা করেছিল ঠিকই। খসরু বাবাজি (এবং হয়তো এক চিমটি পারভেজ) এর গপ্প আরেকদিন হইবনি।

পঞ্চান্ন বছর বয়েসে রিটায়ার নিমু ঠিক করছি। রিটায়ারে গিয়া কেবল স্যুপ খামু (দাঁত নইড়া যাইব তাই) আর সব আধা ফিনিশ গপ্প শেষ কইরা পান চাবামু। চিন্তা নাই।

..................................................................
#Banshibir.

নীড় সন্ধানী এর ছবি

বাপ্রে ব্যাপক ভেজাল। কে কার মা, কে কার বাপ, কে কার বউ কে কার শাশুড়ি বুঝতে গিয়ে গণ্ডগোল লেগে গেছে মাথায়। শাহরিয়ারের বাবার বউ শাহরিয়ারের শাশুড়ি? খুররমের মা শাহরিয়ারের কে? শাহরিয়ারের বউ খুররমের কে?.....এরকম প্রশ্ন আসতেই আছে.......মোগল বাদশাদের এতগুলো বউ এত রকমের সম্পর্ক ইতিহাসবিদদের মগজের বারোটা বাজায়ে দিছে, সাথে ইতিহাসপাঠ করছে কঠিনসে কঠিন!! ওঁয়া ওঁয়া

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সত্যপীর এর ছবি

ধরেন, মুখস্ত করেন এই বেলা। কাল্কা পড়া ধরুমঃ

সূত্র, পৃষ্ঠা ২৮৮।

..................................................................
#Banshibir.

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আরেকটা প্রশ্ন। আনারকলি নামে জাহাঙ্গীরের(সেলিম) এক প্রেমিকা ছিল না? যার নামে সিনেমা রূপকথা বানানো হইছে। সে কি নুরজাহানের সতীন নাকি নুরজাহানই আনারকলি। লিস্টি দিয়ে তো মাথা আরো আউলায়ে দিলেন। প্রশ্নসংখ্যা বাড়তেই আছে খাইছে

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সত্যপীর এর ছবি

আনারকলি একটা সিনেমা। ইয়োরোপীয় ট্রাভেলারদের বানানো অর্ধেক রমণী অর্ধেক কল্পনা। নাদিরা বেগম অথবা শরীফাতুন্নেসা সম্ভবতঃ এই আনারকলি টাইটেলওয়ালির আসল নাম, আকবরের বউ। কেউ কয় মীর্জা ড্যানিয়েলের মাতা, এই ব্যাপারে ষষ্ঠ পাণ্ডবদা সঠিক কইতে পারবেন। সে যাক, আনারকলি হেরেমের যে কেউই হইতে পারেন আসলে। হয়তো মিষ্টি হাসি দিছিলেন একটা লাভারবয় সেলিম জুয়ান থাকতে, সেইটা দেইখা পিতা আকবর ক্ষেইপা আনারকলিরে গুম কইরা মাইরালান। সত্যমিথ্যা যাচাই করা শক্ত, তবে নূর জাহান আনার কলি না এইটা নিশ্চিত। আনার কলি সে যে ই হৌক, সত্যই সেই মহিলা যদি থাইকা থাকে তো সে ছিল একটা বাদাইম্যা প্রেমিকা। নূর জাহানের মত সুপ্রীম কমান্ডার মেটিরিয়াল সে আছিল না কোন হিসাবেই।

সিন্ধু নদীতে ভেসে আসা ইরানী গুলিস্তান নূর জাহান নিয়া নিকট অথবা দূর ভবিষ্যতে লেখা আইলেও আইতারে। দোয়া খায়ের কাম্য। বায়বীয় আনারকলিরে নিয়া লেইখা সময় নষ্ট করার মানে নাই।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আনারকলি সম্পর্কে উইকিপিডিয়ার আর্টিকেলটা পড়ে একটু ভাবলেই এই সম্পর্কিত সত্যটা বোঝা যাবে। এতে অন্য রেফারেন্সগুলো না পড়লেও চলবে। আর এই ব্যাপারে যদি আমার ভাষ্য জিজ্ঞেস করেন তাহলে আমি বলবো,

"মুহাব্বাত কি ঝুটি কাহানীপে রোয়ে
বড়ি চোট খায়ি জওয়ানীপে রোয়ে
না সোচা, না সামঝা, না দেখা, না বোলা
তেরি আরযুনে হামে মার ডালা"

(কথাঃ শাকীল বদায়ুনী, সুরঃ নৌশাদ, চিত্রায়ণঃ করিম আসিফ)


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

খাইছে! রাজার হৈল একবার জ্বর সারিল ঔষধে টাইপ টোটকা নাই?

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

ছবিতে যে আজিজ খান কোকার নাম দেখা যায়, তিনিই কি বলিয়াদি জমিদার বংশের পূর্বপুরুষ? সচলায়তনে এই বংশের কোন একজনরে নিয়ে তো মনে হয় একসময় একটা পোস্ট আসছিল।:-?

Emran

সত্যপীর এর ছবি

ইন্নালিল্লাহ ই কিতা শুনাইলেন মন খারাপ

..................................................................
#Banshibir.

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

কন্যা লাডলি বেগমের জন্য নুরজাহানের প্রথম পছন্দ ছিল খুররম। অনেক খাতির জমিয়ে তার সামনে কায়দা মত পাত্রি হিসেবে উপস্থাপন করা হয় লাডলিকে। মজার ব্যাপার, পাত্রী হিসেবে লাডলিকে বেশ মনে ধরে যায় খুররুমের। নুরজাহানের মনে আনন্দ আর ধরে না। কিন্তু সব কিছু ভজঘট করে দিয়ে বেঁকে বসে স্বয়ং লাডলি, কেমনে কেমনে যেন এসবের আগেই গাধা শাহরিয়ারের সাথে তার লাইন হয়ে গেছে। নুরজাহান অনেক বুঝায় লাডলিকে- আরে ভাবী বাদশা স্বয়ং তোমারে পছন্দ করছে, ভুলে যাও আহাম্মক শাহরিয়ারকে। কিন্তু অবুঝ প্রেম কিচ্ছু বোঝে না, লাডলির এক কথা- হয় শাহরিয়ার, না হয় মৃত্যু। এদিকে খুররম ঘন ঘন তাগাদা দেয় নুরজাহানকে- কি খবর, কতদূর? নুরজাহান তখন বুকে পাথর চেপে খুররমকে বলে- লাডলির চেয়েও শতগুনে ভাল, ঠিক তোমার জন্য উপযুক্ত পাত্রী হইল আমার ভাইঝি আরজুমান্দ বানু বেগম, ওরে একটু দেখ। আশ্চর্যের ব্যাপার, আরজুমান্দকেও বেশ পছন্দ হয় খুররমের। তারপর একদিন শুভক্ষণে খুররমের সাথে আরজুমান্দের বিবাহ সম্পন্ন হইয়া যায়। বলাইবাহুল্য, ভাল লাগালাগি ছাড়াও নুরজাহান এবং খুররমের পারস্পরিক লাভ ক্ষতির হিসাবও ছিল এই বিবাহে। কিন্তু মমতাজের প্রতি শাজাহানের প্রেমের মাত্রা এক হিসাবে সত্যি বিস্ময়কর- বিবাহ পরবর্তী উনিশ বছরের প্রায় সকল সময় গর্ভবতী হিসেবে জীবন যাপন করে চৌদ্দটি সন্তানের জন্ম দিতে হয়েছে বেচারী মমতাজকে। ভাগ্যিস মমতাজ শাজাহানের একমাত্র স্ত্রী নয়, মমতাজের আগে পরে আরও বৌ ছিল, শত শত উপপত্নিও ছিল।

সত্যপীর এর ছবি

মুমতাজ অবশ্যই শাজাহানের একমাত্র স্ত্রী নয়, চাইর নম্বর। তার আগে পিছে বউ আছে লাইনে, ইনক্লুডিং তার বইন। মুমতাজের মৃত্যুর পরে মহা শোকবিহ্বল বাদশা শাজাহান মুমতাজের বইনকে বিবাহ কইরে তার সাথে চুমুচাপাটি বিছানাবাজীর ফাঁকে তাজ মহল গড়ার আদেশ দেন। শালায় ছাতার প্রেমিক।

..................................................................
#Banshibir.

হিমু এর ছবি

খেলার সাথে তাজনীতি মেশাবেন না জনাব।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

তবে যাই বলেন না কেন- এতগুলা বউ, এতগুলা পাতিবউ ফাউবউ থাকার পরও নিরবিচ্ছিন্নভাবে একজনের গর্ভে এতগুলা পোলা মাইয়ার জন্ম দিতে হইলে হয় অকল্পনীয় রকমের প্রেমের জোয়ার থাকতে হয় হাততালি , না হইলে ভাড়াটে সৈন্যের প্রয়োজন হয়। ইয়ে, মানে...

হিমু এর ছবি

খুররম যেমন শাহজাহান হয়ে উঠলো, আসফ খাঁর নামটাও তেমন সসুরজাহান রাখা দরকার ছিলো।

সত্যপীর এর ছবি

হ, আর নূর জাহান পালটায় আন্ধারজাহান। জারিজুরি খতম।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ইয়োরোপীয় পর্যটক মানুচ্চি তাভের্নিয়ে প্রমুখও একথা স্বীকার গেছেন, তাভের্নিয়ের মতে সেই যখন প্রিন্স খসরু মারা যায় তখন থেকেই নাকি জাহাঙ্গীর বাদশার পছন্দ দেওয়ার বখশ।

-এই দুই ব্যাটার কথায় বিশ্বাস করলেন কীভাবে? নিকোলাও মানুচ্চি জন্মেছেন ১৬৩৯ সালে। তার মানে জাহাঙ্গীরের ওফাতের এক যুগ পরে। তারমানে মানুচ্চি ভারতে আসতে আসতে খসরু, জাহাঙ্গীর, দাওয়ার বখ্‌শ সবার কবরে বড় বড় গাছ জন্মে গেছে। এই ব্যাটা আবার হামবড়াই করে বলেছে, "I must add, that I have not relied on the knowledge of others; and I have spoken nothing which I have not seen or undergone"। যতো সব বাকোয়াজ! তাভের্নিয়ে প্রথম বার ভারতে আসেন ১৬৩৯ সালে। সুতরাং আর কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হাসিব এর ছবি

সুতরাং আর কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না।

ইওরোপীয় এবং সে ভারতবর্ষের কোন একজায়গায় ভিস্তি ছিল - এরকম কারো বয়ানও যেকোন নেটিভ আদমীর থেকে মূল‍্যবান ও রেফারেন্সযোগ‍্য। এই জন‍্যই আসলে বলার কিছু নাই। প্রভুরা যা বলেন সেটাই মাথাপেতে নেই।

সত্যপীর এর ছবি

আরে ক্ষ্যাপেন ক্যা। ইম্রাজি বইয়ে কিছু সাদা চামড়ার রেফারেন্স তো থাকবই।

..................................................................
#Banshibir.

সত্যপীর এর ছবি

মানুচ্চি তাভের্নিয়ে নয় আসফ খাঁ সায়েবের মূল হেডেক আছিল গুজবটা, এবং এইটা প্রাসাদের ভিতরের লোকেই ছড়াইছিল নিশ্চয়, অ্যান্টি খুররম পার্টি। আসফ খাঁ দেওয়ার বখশরে খাড়া করায় দিছিল স্টপগ্যাপ বাদশা হিসাবে, খুররম আইসা পড়লেই তার প্রয়োজন ফিনিশ। এখন লোকে যদি বলাবলি করে না খুররম নয় জাহাঙ্গীর বাদশা দেওয়ার বাবাজীকে গদিতে দেখতে চাইছে তাইলে তো মহা মুস্কিল। তাভের্নিয়ে প্রমুখ ভিজিটররা এগুলিই শুনছে কানকথা আর লেইখা গেছে হ জাহাঙ্গীরে চাইছিল দেওয়ার বাদশা। তাতে তাদের ফ্যাক্ট নিয়া প্রশ্ন আসতেই পারে, মানুচ্চি আরো জায়গায় চাপা মাইরা গেছেন। কিন্তু লোকমুখে ছড়ানো গুজবটা ইন্টারেস্টিং, ঠিক কিডা চাইতেছিল সেই মুহুর্তে শাহরিয়ার বা খুররমের বদলে দুধের পুলা দেওয়ার বখশ বাদশা হোক এইটা সঠিক করে জানতে পারলে ভালোই লাগত।

..................................................................
#Banshibir.

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

পুরাটা পইড়া আইসা শুরুতে কি পড়ছিলাম আর খেয়ালজাহান নাই। মনে হইল টেলিফোন ডাইরেক্ট্রি পড়লাম। মুঘলরা তো দেখি সব গিরিংগি।

যাইজ্ঞা, নিয়মিত লেখা দিয়েন। দেখি ডাইরেক্টোরির কতটুকু মনে রাখতে পারি।

গুরু গুরু চলুক

-----------------------------------------------------------
আঁখি মেলে তোমার আলো, প্রথম আমার চোখ জুড়ালো
ঐ আলোতে নয়ন রেখে মুদবো নয়ন শেষে
-----------------------------------------------------------

সত্যপীর এর ছবি

নামের বদলে ধাম খেয়াল রাখেন বস। ঘুরায় ফিরায় গুটিকয় পরিবারে ছড়ি ঘুরাইতেছে। বাবুর বাদশার বংশ কেবল এই কয়েকটা বৃহৎ পরিবারের অংশ, যেইটা ষষ্ঠ পাণ্ডবদা উপরে অলিগার্কি হিসাবে চিহ্নিত করছেন। বিবিধ পরিবার নিয়া খাবলা খাবলা লেখা আরো আসিতেছে ভয় নায়।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

মাথা আউলানো ইতিহাস রে, বাবা। আরও লিখুন না, আমরাও একটু ইতিহাস জানি হাসি

দেবদ্যুতি

সত্যপীর এর ছবি

লেবুর শরবৎ খান মাথা আউলাইব না। মাথা ঠিক রাখা জরুরি।

..................................................................
#Banshibir.

মন মাঝি এর ছবি

চলুক দারুন!
অনেকদিন পর লিখলেন। নায়াগ্রার পানি খেয়ে এবার আবার নতুন জোশে ঝাপায় পড়ে উপর্যুপরি.... আহেম... গল্প লিখতে থাকেন!

****************************************

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।